বাঙালি সংস্কৃতির সবচেয়ে শক্তিশালী উৎসবে যদি গ্রেনেড আতঙ্কের উপরে যৌনাতঙ্ক প্রতিষ্ঠা হয়ে যায় তা’হলেই তো কেল্লা ফতে। আর জমজমাট বৈশাখী মেলাও হবে না আবার ইসলামী খেলাফতও কায়েম হবার পথও সুগম হবে। এই ধরনের কাজ কারবার নির্বিঘ্নে করে যারা পার পেয়ে যায় তারাই দেশের আসল প্রভু? বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছড়ানো হিজাব যদি দেশশুদ্ধ মেয়েদের ওপর চাপানো যায় তা’হলে কারা দেশ প্রভু? পথেঘাটে উৎসবে সভায় যদি মেয়েদের দাবড়ে, খামচে জামা কাপড় ছিড়ে মজা লুটা যায় বিনা বাধায় তা’হলে দেশ চালাচ্ছে কারা? পুলিশ যদি বলে এখনো বিবস্ত্র হয়’নি নারী; তা’হলে কোন দেশে বাস করে নারী? রাষ্ট্র কি বিবস্ত্র নারী দেখার পর বলবে মেয়েরা সামলে চলে না তাই এমন হয়; আমরা কি করব তখন? বেশিরভাগ মেয়েরা কবে বুঝবে পুরুষ সমর্থিত ধর্মের দেশে যৌনসন্ত্রাস কেন হয় নির্বিঘ্নে? কবে শিখবে নিজকে তুলে ধরতে হলে প্রতিবাদ আর প্রতিরোধ ছাড়া উপায় নেই? কবে জানবে অধিকার আদায় করে নিতে হয়? পহেলা বৈশাখে টিএসসি এলাকায় নারীদের ওপর পরিকল্পিত মৌলবাদী যৌন সন্ত্রাস চালানো হয়েছে। গত দু দিন ধরে বিভিন্ন মিডিয়ায় দেখা নানান তথ্য দেখেশুনে বিশ্লেষণ করে মনে হয়েছে বাঙালির প্রানের উৎসব’কে অনৈসলামিক বলে দেশের সংস্কৃতিকে ত্রাসের সাগরে ডুবিয়ে দেবার জন্যই করা হয়েছে এসব।
সহজ সরল আনন্দোচ্ছল উৎফুল্ল রঙ্গপ্রিয় বাঙালি মানুষ। দেশ বিভাগের পর ক্রমান্বয়ে বাংলা হয়ে গেল আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশ, এক সাগর রক্তের বিনিময়ে। যদিও এর আগেই এলো আরবী প্রভাব। যে বাঙালি ছিল বাঙালি তিনি হয়ে গেলেন মোসলমান বাঙালি। তবু বাঙলা সংস্কৃতি আপন গতিতে প্রানের আবেগে ক্রমান্বয়ে হোল শক্তিশালী। দেশ স্বাধীনতার পর স্বাধীন বাঙালির প্রানের উৎসবগুলো আবার সগর্ব চর্চায় ফিরে পেলো বাঙালি। কিন্তু সেই কুচক্রী প্রতিক্রিয়াশীল খুনে বদমাশরা; যারা ৭১’এ খুন ধর্ষণ করেছিলো নিরীহ মা বোনেদের; তারা আবার দেশ দখল করলো মাত্র চার বছরেই। স্বাধীন বাংলাদেশে রাজাকার উচ্চারণ নিষিদ্ধ হয়ে গেল। প্রায় দু যুগ লেগে গেল ছদ্মবেশী দেশপ্রেমিক খুনেদের হাত থেকে বেরুতে সেই সহজ সরল আনন্দোচ্ছল উৎফুল্ল রঙ্গপ্রিয় বাঙালির। কিন্তু মুক্তি নেই, হেরে যাওয়া প্রতিক্রিয়াশীল জামাত শিবির আর তাদের দোসররা এখন ধর্মের আবরণে বাংলাদেশের মানুষদের টুপি হিজাব পরিয়েছে। আর কারা পরছে সে’সব? সেই আমাদের সহজ সরল আনন্দোচ্ছল উৎফুল্ল রঙ্গপ্রিয় বাঙালি মানুষ। স্বেচ্ছায় না’কি আনমনে? চাপে পড়ে না’কি আনন্দে? তা’হলে তাদের স্ত্রী, কন্যা সন্তানদের ওপর যে যৌন সন্ত্রাস হয়েছে তা’কি দাঁড়ি, টুপি হিজাব হালাল পন্থী না’কি বাঙালির প্রানের আবেগ পরিপন্থী? কি জবাব তাদের? এবার কোন পথ ঠিক পথ? মেহেদী রঞ্জিত হিজাব মন্ডিত আরবি যৌন সন্ত্রাসের শরিয়া পথ না’কি হাজার বছরের প্রানের দাবির সহজ সুন্দর বাঙালি সংস্কৃতির পথ?
বাংলাদেশের মেয়েরা এখন বিদ্যান; স্বাবলম্বী, উপার্জনক্ষম এবং পরিবার প্রধানও বটে। দেশটি যখন নারী পুরুষ নির্বিশেষে প্রচন্ড শক্তিশালী হচ্ছে ঠিক সেই সময়ে দেশের শত্রুগুলো আবার শুরু করেছে নতুন তান্ডব। শুরু করেছে বাংলাদেশের মেয়েদের ঘরে পুরে যৌনদাসী বানাবার অপচেষ্টা। ওদের হিরো শফি মোল্লার মত ফতোয়াবাজরা, ওরা হয়েছে দেশের চোখের মনি। কিন্তু চিন্তার ব্যপার তেতুল শফি কিন্তু কোরান থেকে বুঝে শুনেই বলেছে, মেয়েদের ঘরে থাকবার কথা [১], তেতুল তেতুল কারণ বলেছে, আরো বলেছে পুরুষের মনোযোগ আকর্ষণ না করবার কথা [২], পর্দার কথা। আরো নানা ফতোয়াবাজ কোরান ঘেঁটেই বলেছে নারীদের ছোট করা আরো নানান ভয়ঙ্কর কথা [৩], [৪], [৫],। কিন্তু অন্যদিকে আবার সেই আমাদের সহজ সরল আনন্দোচ্ছল উৎফুল্ল রঙ্গপ্রিয় বাঙালি মানুষ তাদের স্ত্রী কন্যাদের বড় করছে হিজাবি বিদ্যালয়, আয় রুজির কার্য্যক্ষেত্র এবং বিউটি পার্লারে যেতে দিয়ে। আবার বৈশাখী মেলাতেও যেতে দিতে হচ্ছে প্রানের টানে। কি অদ্ভুত বাঙালি মুসলমান।
আজকের মা বাবা আর গুরুজনদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা হেফাজতে শফিদের পথ ধরে সফিপন্থী হয়ে নিরাপদ ইতর হবে; তাদের সন্তানদেরও নুরানী নির্দেশ মোতাবেক ঘরকুনো যৌনদাসী তেতুল বানাবে না’কি সন্তানদের বিদ্যাশিক্ষা অর্জন করে খোলামনে মুক্তবিশ্বে বড় হতে দেবে। কথায় কথায় আলহামদুলিল্লা বলবে না’কি ভালো আছি; আপনি কেমন আছেন ধরনের স্বাভাবিক কথা বলবে। তারা কি ওই সব যৌন সন্ত্রাসকে হালাল এবং ঠিক’ই আছে বলবে না’কি সুস্থ আচরণ করে বলবে এইসব চলবে না। সুস্থ ভাবনানির্ভর সিদ্ধান্ত না নিলে ধর্মের ওয়ান ওয়ে সুড়ঙ্গে সেঁধিয়ে গেলে ওখান থেকে বের হওয়া মুশকিল। প্রায় অসম্ভব। তাই বাঁচতে হলে গড্ডালিকা প্রভাবে গা ভাসাবার আগে, বাংলাদেশকে ফাকিস্তান আফগানিস্তান আইসিস বানাবার আগে আজকের মা বাবা সমাজকে, নারীকে মৌলবাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়তে হবে; প্রজন্মকে সাহায্য করতে হবে প্রতিবাদ করতে। মেয়েদের দিতে হবে স্বাধীনতা, সম্মান এবং যথাযথ নিরাপত্তা। এটা সমাজকে করতে হবে। কঠোর আইন ও শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। জনগণ প্রচন্ড চাপ সৃষ্টি করুন। বিচার; কঠোর আইন এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত পথ ছাড়বেন না। সু-নাগরিক, প্রয়োজনে সারা দেশের নারী এক হয়ে হুঙ্কার ছাড়ুন। নারী নির্যাতন, যৌন নিপীড়নের বিচারের জন্য নতুন কঠোর আইন না হওয়া পর্যন্ত নিজের রাস্তা ছাড়বেন না। নিজেদের অধিকার নিজেদের আদায় করে নিতে হবে। সরকার, পুলিশ বা রাষ্ট্রের সময় কোথায়? ওদের সময় যায় গদি বাঁচাতে; নাগরিক সেবার সময় তাদের নেই। এবার দেখা যাক আসলে মানুষকে পোড়াবার রাজনীতি কারা করে?
x
x
x
সূত্র: আল-কোরান।
[১] কোরানের ৪ নম্বর সূরা আন নিসার ৩৪ তম আয়াত:
পুরুষেরা নারীদের উপর কৃর্তত্বশীল এ জন্য যে, আল্লাহ একের উপর অন্যের শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন এবং এ জন্য যে, তারা তাদের অর্থ ব্যয় করে। সে মতে নেককার স্ত্রীলোকগণ হয় অনুগতা এবং আল্লাহ যা হেফাযতযোগ্য করে দিয়েছেন লোক চক্ষুর অন্তরালেও তার হেফাযত করে। আর যাদের মধ্যে অবাধ্যতার আশঙ্কা কর তাদের সদুপদেশ দাও, তাদের শয্যা ত্যাগ কর এবং প্রহার কর। যদি তাতে তারা বাধ্য হয়ে যায়, তবে আর তাদের জন্য অন্য কোন পথ অনুসন্ধান করো না। নিশ্চয় আল্লাহ সবার উপর শ্রেষ্ঠ।
(দেখতেই পাচ্ছেন, কি কারণে পুরুষরা নারীদের ওপরে। তবে এখন নারী যদি স্বামীর অর্থব্যায় না করে নিজেই কামাই করে, ব্যায় করে তা’হলে? তা’হলে যে আবার কোরানকে একটু পাশ কাটানো হয়ে গেল, তাই না? পুরুষের উপর নারী নিজের শ্রেষ্ঠত্ব জাহির করতে গিয়ে আল্লার দেওয়া কোরানের পুরুষ শ্রেষ্ঠত্বকে বেকায়দায় ফেলে দিলো না?)
[২] কোরানের ২৪ নম্বর সূরা আন-নূর, আয়াত ৩১:
ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও।
(বুঝতেই পারছেন নারী মনোযোগ আকর্ষণের জন্য পায়ের আওয়াজ করলেও অপরাধ হয়ে যাবে)
[৩] কোরানের ৩নম্বর সূরা আল ইমরান, আয়াত ১৪:
মানবকূলকে মোহগ্রস্ত করেছে নারী, সন্তান-সন্ততি, রাশিকৃত স্বর্ণ-রৌপ্য, চিহ্নিত অশ্ব, গবাদি পশুরাজি এবং ক্ষেত-খামারের মত আকর্ষণীয় বস্তুসামগ্রী। এসবই হচ্ছে পার্থিব জীবনের ভোগ্য বস্তু। আল্লাহর নৈকট্যই হলো উত্তম আশ্রয়।
(মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন)
[৪] ২নম্বর সূরা আল বাকারা, আয়াত ২২৩:
তোমাদের স্ত্রীরা হলো তোমাদের জন্য শস্য ক্ষেত্র। তোমরা যেভাবে ইচ্ছা তাদেরকে ব্যবহার কর। আর নিজেদের জন্য আগামী দিনের ব্যবস্থা কর এবং আল্লাহকে ভয় করতে থাক। আর নিশ্চিতভাবে জেনে রাখ যে, আল্লাহর সাথে তোমাদেরকে সাক্ষাত করতেই হবে। আর যারা ঈমান এনেছে তাদেরকে সুসংবাদ জানিয়ে দাও।
(মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন)
[৫] কোরানের ৬৪ নম্বর সূরা আত তাগাবুন, আয়াত ১৪:
হে মুমিনগণ, তোমাদের কোন কোন স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততি তোমাদের দুশমন। অতএব তাদের ব্যাপারে সতর্ক থাক। যদি মার্জনা কর, উপেক্ষা কর, এবং ক্ষমা কর, তবে আল্লাহ ক্ষমাশীল, করুনাময়।
(মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন)
মানুষের মানে হল মান ও হুঁশ দুটোই যার আছে। সেক্ষেত্রে মানসিকতা শালীন হতে লাগে । পোশাকের শালীনতা অশালীনতা বলে কিছু হয় না , শালীন
বা অশালীন হয় মানুষের মন। সানিয়া মির্জা সংক্ষিপ্ত স্কার্ট পরে টেনিস খেলতেন বলে মোল্লারা তাঁর বিরুদ্ধে ফতোয়া জাহির করে তাঁর খেলা বন্ধ করতে চেয়েছিল। সানিয়া যদি পিছিয়ে জেতেন ফতোয়ার ভয়ে তাহলে ভারতে উইম্বলিডন চ্যাম্পিয়ান্স ট্রফিটা আসতোই না। পুরুষ দের ক্ষেত্রে যেখানে ধুতি পরবে না প্যান্ট পরবে , শার্ট পরবে না পাঞ্জাবি পরবে এই নিয়ম নেই , মেয়ে দের ক্ষেত্রে একগাদা নিয়ম চাপান কেন ? মনটাকেই শুধু শালীন করতে লাগে , আর কিছুই লাগে না ।
বাংলাদেশে অন্য অনেক আইনের মতো যৌনহয়রানির বিরুদ্ধেও যথেষ্ট কঠিন আইন আছে। কিন্তু আইনের প্রয়োগ নেই। তাছাড়া দিন দিন আমাদের প্রতিরোধের সক্ষমতা তো দূরের কথা, প্রতিবাদের ভাষাও ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হয়ে যাচ্ছে। তাই এত বড় অন্যায় চোখের সামনে ঘটতে দেখার পরেও প্রশ্ন তুলতে আমাদের লজ্জা হয় না – “নারীর পোশাক কেমন ছিল?” নারীর পোশাক কেমন ছিল সেই প্রশ্ন তোলা তো দূরের কথা, নারীর পোশাক না থাকলেও কি নারীর গায়ে হাত দেয়ার অধিকার জন্মায় কারো?
কলম চলুক।
কাদের মোল্লাকে সর্বোচ্চ কঠিন শাস্তি দিতে আইন পোক্ত করতে হয়েছিল।
যৌন নির্যাতনের কারনেও সর্বোচ্চ শাস্তির জন্য আইন পোক্ত করতে হবে।
কাদের বদমাশের শাস্তিটা এমনি এমনি হয়নি।
যৌন নির্যাতনের শাস্তিও এমনি এমনি হবে না।
আন্দোলন; আন্দোলন; আন্দোলন; আন্দোলন।
দৃষ্টান্তমূলক কঠিন শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
আন্দোলন করেই আইন প্রয়োগ আদায় করতে হবে।
সারাদেশের নারী একযোগে আন্দোলন না করলে মোল্লারা তাদের খেদিয়ে ইরানের মত ওয়ান-ওয়ে খোঁয়াড়ে ভরবে শীঘ্রই। বাংলাদেশের কাপুরুষ পুরুষেরা আর মডারেটরা তামাশা উপভোগ করবে। নারীরা আপনা থেকেই নিজেদের বস্তাবন্দী করবে; হিজাব নেকাব ওটার শুরু। ইরানও মাত্র ক’বছর আগেও অতি আধুনিক, সভ্য শিক্ষিত, ধর্মশাসন মুক্ত একটি সুন্দর দেশ ছিল। নারী শিক্ষা ও পোশাক নিয়ে কোন নিষেধ ছিল না। আর আজ ওটা পুরোপুরি ইসলামী ধর্মরাষ্ট্র। নারী অধিকার নিয়ে কথা বললে চাবকে চাল তুলে নেওয়া হয় অথবা ফাঁসিতে ঝোলানো হয়। বাংলাদেশের নারীরা পাকি-আফগান-ইরান-আরব নারী হতে চাইবে কি? খুব বেশি দেরী হবার আগে নারী অধিকার আদায় না করে নিলে নারীদের কিছু করবার থাকবে না।
কাজী রহমানকে লেখাটির জন্য ধন্যবাদ। পহেলা বৈশাখের দুঃখজনক ও লজ্জাস্কর ঘটনা যে আমাদের সবাইকে নাড়া দিয়েছে ওনার প্রাঞ্জল লেখা তারই প্রমাণ। কেশব অধিকারী মানুষের শিক্ষা ও রুচির কথা বলেছেন। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় কখোনই রুচি বলে কোনো কিছু পড়েছি বা শিখেছি বলে মনে পড়ে না। বড় হবার সাথে সাথে নারীদের প্রতি কিরকম আচরণ হওয়া উচিত সেরকমভাবে আমাদের কিছু বলা হয় নি। আমরা যা শিখেছি পারিবারিক পরিবেশে নানান ধরনের ইঙ্গিতে শিখেছি। একটি দেশের বা জাতির রুচিবোধের ন্যাক্কারজনক অবস্থা আমাদের পথঘাটের আবর্জনায়, শৌচাগারের অনুপস্থিতিতে যত্রতত্র জলত্যাগে, কিংবা “ছ্যাপ” ফেলার চ্যাম্পিয়নগিরিতে। সমাজসংস্কারক মার্ক্সবাদীরা এতে ক্লাস ডিফারেন্সের গন্ধ পাবেন, কিন্তু যে তিনটি উদাহরণ দেয়া হল তার নিরাময়ের জন্য একটি দেশ বা জাতিকে ধনী হতে হবে না। অনেকে বলবেন পান্তা ভায়ে ঘি, কিন্তু কেন জানি না আমার মনের মধ্যে জাতির অসুস্থতার মধ্যে রাস্তায় নারীদের প্রতি পুরুষের দৃষ্টি ও ব্যবহার ঐ তিনটি জিনিসের সঙ্গে গুলিয়ে যাচ্ছে, কারণ আমি কখোনো কোনো নারীকে প্রকাশ্যে ঐ তিনটি জিনিস করতে দেখি নি। একটি দেশের নারীরা যদি রুচিবান হতে পারেন, তো পুরুষরা কেন হতে পারবেন না? দারিদ্র এখানে ইস্যু নয়। অপ্রাসঙ্গিক কিছু কথা বললাম। কাজী রহমান বলেছেন বাবা মাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, আশা করি ভবিষ্যতের বাবা মা তাদের সন্তানদের ভবিষ্যতকে সুস্থ রাখবেন।
মন্তব্যটির জন্য ধন্যবাদ।
বাংলাদেশের মানুষ এই ক’বছর আগেও এখনকার চেয়ে ঢের সভ্য ছিলো। আমার মনে হয় আরামপ্রিয় মানুষের খুব প্রাথমিক ভব্যতাও এখন হারিয়ে গেছে। সভ্যতা ভব্যতা এখন আবেশিত হয় ধর্ম ঘষে। মানুষের স্বাভাবিক ভাবনাবলয়ের কোন মূল্যই যেন আর নেই। এতটাই নিলিপ্ত যখন আজকের নাগরিক তখন কি আশা করব ওদের থেকে? আশা শুধু নতুনদের কাছে। ওরা স্বাভাবিক, সুন্দর, সুস্থ, মুক্ত মানুষ হোক, হোক স্বাভাবিক মা বাবা।
বিজন ঘোষ,
পুরুষের আধুনিক পোশাক যেখানে তার বক্তিত্ব প্রকাশের সহায়ক হিসাবে এসেছে ( বোধয় বাক্তিত্তের দ্বারাই নারীর কাছে আকর্ষনীয় হওয়া যায় / বলছি না অন্য উদ্দেশ্য নেই ) সেখানে নারীর অনেক পোশাকই তার বাক্তিত্তের প্রকাশের চেয়ে শরীরী সৌন্দর্যের আবেদন যেন বেশি হয়ে উঠেছে। আমার প্রশ্ন শুধু এইখানে।
এরও সহজ ও বোধগম্য কারণ ও উত্তর আছে। আজকের কর্পোরেট বিশ্বের আর্থনৈতিক বুনিয়াদী ব্যবস্থা বিশ্লেষন করলেই এর উত্তর পেয়ে যাবেন। প্রত্যেকটি ব্যবসা ও ব্যবস্থার উপড়ে প্রভূত্ত্বকরছে আর একটি। একে অন্যের উপড়ে নির্ভরশীল। সামান্য একটি সাবান ফ্যক্টরীর কথাই ধরুন। বিশ্ব যেহেতু উন্মুক্ত, তখন বানিজ্যের দরজা-তো অবারিত। সেখানে প্রতিযোগীতা আছে! হোক-না সে ফ্যাক্টরী আমার বাঙলাদেশের কোন অজো পাড়াগাঁয়ে। সুতরাং এই ব্যবসার জন্যেই সংস্থাকে বসাতে হচ্ছে একজন আকর্ষনীয়া রিসেপসনিষ্টকে যিনি উৎপাদনকে সম্প্রসারিত করার কাজটি করবেন। একজন পুরুষের যেমন কর্মক্ষেত্রে তার চৌকষ বুদ্ধিমত্তার এবং শারিরীক ক্ষিপ্রতার প্রয়োগ দরকার হয় ঠিক তেমনি উৎপাদনের সম্প্রসারনে বাজারীকরণে একজন নারীকেও তার বুদ্ধিমত্ত্বা ও ক্রেতা আকর্ষনের সক্ষমতা অর্জন করতে হয়। এ আকর্ষন কামনা সম্প্রসারনের নিমিত্তে নিশ্চয় নয় বুঝতেই পারছেন, এটি পেশাগত দক্ষতার অবশ্যম্ভাবীতা। এর সাথে পোষাকের একটি অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক বিদ্যমান। এর চেয়েও গুরুত্ত্বপূর্ণ হচ্ছে এর ডাইনামিসিটি। আজ যে সাজে একজন রিসেপশনিষ্টকে আকর্ষনীয় মনে হচ্ছে কাল তা পাল্টাতেও পারে আর সব অন্যান্য ব্যক্তিত্ত্ব উপস্থাপনার মাধ্যমের মতো। সমুদ্র সৈকতে পুরুষ ও নারী যে পোষাকে সাজেন তা নিশ্চয়ই তাদের ব্যক্তিত্ত্ব প্রকাশে কোন বাধা হয়না, কিন্তু সে পোষাক অফিসে বেমানান! সেটা বুঝবেন। আর সেটা অবধারিতও। নারীকে সেখানে হিজাবে রৌদ্র স্নানে বেমানান মনে হবে বৈকি, এমনকি ব্যক্তিত্ত্বহীন ও রুচীহীন বলেও মনে হতে পারে। দুঘৃটনার সম্ভাবনার কথা বাদ-ই দিলাম। ঠিক তেমনি অফিস ডেস্কের নির্ধিরিত পোষাক আছে। নির্ধারিত পোষাক আছে পথে ঘাটে পার্কে বেড়াবারও। আসলে প্রত্যেকটি পোষাকই কোন না কোন ভাবে শরীরি আবেদনে পূর্ন। তার প্রয়োজনও আছে। যুগের সাথে সাথে মানুষের মননে রুচিতে পরিবর্তন আসে, সে ধারাবাহিকতাতেই পোষাক তার কলেবর নিয়ে আবির্ভূত হয়। এখানে কখনোই শরীর মূখ্য নয় বরং নিজেকে সমপূর্ন ভাবে প্রকাশই মূখ্য! নারী-পুরুষ নির্বিশেষে এইটুকুই চেষ্টা করেন যার যার সাধ্যমতো। এতে আমি অভব্যতার কিছু দেখি না। কাজেই পোষাক কোনভাবেই এসব ঘটনার প্রভাবক নয় বরং শিক্ষা ও রুচি, সেই সাথে অতি রক্ষনশীল মনোভাব, অতিধার্মিকতা ও পশ্চাদপদতাই কারণ।
দুঃখ – হতাশা আর লজ্জা
মেয়েদের এগিয়ে আসতেই হবে সক্রিয় প্রতিবাদ আর প্রতিরোধ নিয়ে। আমার ধারণা এখন দেয়ালে পিঠ ঠেকা অবস্থা। দাঁতাল শুয়োরদের কামড় খাবার আগেই মেয়েদের এক হতে হবে। বস্তাবন্দী হয়ে চাবুক খাবার আগেই। আর সময় নেই। দোষী কাদের মোল্লা’র গলায় ফাঁসির রশি এমনি এমনি ওঠেনি; দেশের মানুষ এক হয়ে ঘটিয়েছে সেটা। কঠিন আইন করতে বাধ্য করেছে রাষ্ট্রকে; শাসন করেছে দুগ্ধাপরাধীদের; তারপর হয়েছে নাগরিকের অধিকার আদায়। নারী অধিকার’ও ঠিক তেমনি ভাবেই আদায় করে নিতে হবে। এর কোন বিকল্প নেই।
@ কেশব অধিকারী , আপনার সাথে একমত যে আধুনিক যুগের প্রয়োজনে নারী -পুরুষ উভয়ের পোশাকেই ‘আধুনিকতা’ এসেছে। তবে আমি সব আধুনিক পোসাককেই এক ব্রাকেটে ফেলিনি। শুধুমাত্র শরীরী আবেদন পূর্ণ পোশাকের ক্ষেত্রেই বলেছি। পুরুষের আধুনিক পোশাক যেখানে তার বক্তিত্ব প্রকাশের সহায়ক হিসাবে এসেছে ( বোধয় বাক্তিত্তের দ্বারাই নারীর কাছে আকর্ষনীয় হওয়া যায় / বলছি না অন্য উদ্দেশ্য নেই ) সেখানে নারীর অনেক পোশাকই তার বাক্তিত্তের প্রকাশের চেয়ে শরীরী সৌন্দর্যের আবেদন যেন বেশি হয়ে উঠেছে। আমার প্রশ্ন শুধু এইখানে।
@ গীতা দাস , আমি সত্যি বৈশাখী উত্সবে কি হয়েছে তার ভিডিও দেখিনি। অসভ্যতা করেও কি করে তারা পার পেয়ে যায় সেটাও আমার আলোচ্চ নয়। আমি সুধু বোঝার চেষ্টা করেছি কেন কিছু আধুনিক আবার হিজাবে ফিরে যেতে চাইছে ?
লীগের সোনার ছেলেরা নারীর কাপড় খুলে নেয় নববর্ষ উপলক্ষ্যে। শেখ হাসিনা নিশ্চয় পুরস্কৃত করবেন এই বীর ছেলেদের।
ঘৃণ্য বদমাশগুলোর আসল পরিচয় হয়তো বা বহুরূপী’র মত অনেক আবরণে ঢাকা। আসল কথা হচ্ছে যৌনসন্ত্রাস এখন প্রকাশ্য দিবালোকে হচ্ছে। রাষ্ট্র করছে ঘোড়ার ডিম। অসহায় মানুষ কিল খেয়ে কিল হজম করে নিচ্ছে। হিজাব আর দাঁড়ি টুপি পরে আলহামদুল্লাহ জপছে অচেতন নাগরিক। এরপর জোর করে মেয়েদের পর্দানশীন করা হবে; আবার আম জনতা তা হজমও করে নেবে। ওয়ান ওয়ে জার্নি বহু আগেই শুরু হয়েছে নীলাঞ্জনা; এখন শুধু স্টেশনের পাগলা ঘন্টা বাজানো বাকি।
না বিজন ঘোষ, আপনার মন্তব্যের সাথে আমি সম্পূর্ন এক নই, আংশিক। কারণ, আধুনিক নারীর পোষাক পুরুষ জেতার পোষাক বলেই বা আপনার মনে হলো কেনো? সমাজের প্রত্যেকটা ক্ষেত্রেই কিন্তু আধুনিকতার একটা চলমান প্রকৃয়া বিরামান! যেমন ধরুন, আমাদের প্রাচীন স্থাপত্য ডিজাইন এবং আধুনিক স্থাপত্যের মধ্যে ব্যাপক চেতনা গত ও কৌশলগত পার্থক্য আছে! প্রাচীন টেরাকোটাতে যে সৌন্দর্য আমরা দেখি তা আজকের আধুনিক স্থাপত্যের সাথে বেমানান! সমাজে নারীর পোষাক শুধু নয় পুরুষের পোষাকের রংএ ঢংএ-ও ব্যাপক পরিবর্তন ঘটেছে! যেখানে পুরুষের পোষাকে কোন অভিযোগ নেই সেখানে নারীর পোষাকে কেনো হবে? পাশ্চাত্যের নারীরা সমাজ বিনির্মানে, অর্থনীতির বিনির্মানে ভূমিকা রাখছে। সেই সাথে সামজ্যস্যপূর্ন পোষাক অবধারিত! সেটাকে তাদের সমাজে যদি বাঁকা চোখে না দেখা হয় তাহলে একই হোমোস্যাপিয়েন্স হয়ে আমরা আবার কোন মহা গ্রহ থেকে উড়ে এলাম যে আমাদের সমাজে তা বিসদৃশঃ মনে হবে? আসল কথা হলো শিক্ষাবিস্তারের সাথে সাথে যে দৃষ্টিভঙ্গীগত উৎকর্ষতার বিকাশ ঘটে তা এক সমাজে ঘটলেও পশ্চাদপদতার কারনে আমাদের সমাজে ঘটেনি! সাথে যুক্ত হয়েছে স্বার্থপর ব্যক্তিকেন্দ্রীক রাজনীতি। এ রাজনীতিতে নেই কোন আদর্শ! আদর্শশীন রাজনৈতিক কালচারে হীনমন্যতা, পশ্চাদপদতা আর আফিমের মতো ঘোরনেশাসক্ত ধর্মীয় সুড়সুড়ি গুলিয়ে দেযা গেলে তো ক্ষমতাবানদের পোয়া বারো! দেখেন নি আমাদের প্রকৃত বাংলাদেশ যখন গনজাগরণে মঞ্চে উত্তাল সমুদ্রের ঢেউ হয়ে আছড়ে পড়েছিলো, সেই ঠিক তখনই এর সপক্ষের রাজনৈতিক শক্তি ক্ষমতার প্রতিদ্বন্দ্বীতার চেয়ে বরং এই জাগরণের পিঠে ছুরি মারতেই বেশী স্বাচ্ছন্দ্ব্য বোধ করেছিলো? মদীনা সনদ আমদানীর ঘোষনা এসেছিলো!
আধুনিক শিক্ষিত মেয়েরা যতটানা স্বুচ্ছায় হিজাব ধারন করেন, তার চেয়ে বরং পরিবারের পুরুষের চাপে বেশী করেন! একথা আমার পরিচিত জনের অনেকেই মন্তব্য করতে গিয়ে বলেছেন!কাজেই হিজাবের আগমন অভ্যর্থনার বেঞ্চে চাকুরীতে অপেক্ষাকৃত সুন্দর মুখের দাপটের কারণে নয় বরং অধুনা পরিবারে পুরুষের চাপেই বেশী হচ্ছে! মডারেট পুরুষেরা সমাজে, ফেসবুকে নিজেদের মডারেট বলে জাহির করতে যতোটা স্বচ্ছন্দ্ব্য বোধ করেন, নিজেদের কার্যকর যাপিত জীবনে তা করেন না। যেটা চেতনার ভারসাম্যহীনতা ছাড়া কিছুই নয়। শিক্ষা আমাদের সমাজে একটা ফন্দিফিকিরের ধান্দার কাগুজে ডকুমেন্ট সংগ্রহের মেশিনে পরিনত হয়েছে। আর সে জন্যেই বলা হয় বিজ্ঞান চাই বিজ্ঞানবাদীতা চাই না! বলুন হাস্যকর নয় কি? যে সমাজ এসব সহ্যকরে গন্য করে মান্যবরের উক্তি হিসেবে সেই সমাজে এর থেকে বেশী কি আশা করা যায়? আর এ পরিস্থিতির সুযোগ যাদের নেবার কথা তারা কি হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকবে? সতর্কতার পর্যায় আমরা আতিক্রম করে এসেছি। একন সতর্কতার সময় নেই আসলে, দরকার কার্যকর প্রতিরোধ, কিন্তা তা বোধ হয় হবার নয়…..
আগে গোটা জাতিকে এখনই সিদ্ধান্ত নিতে হবে, কি আসলে চাই আমরা। আমরা কি আগে মুসলিম হবো (পাকিস্তান, আফগানিস্তান, আইসিস বা বোকোদের মতো) নাকি আগে মানুষ, পরে বাঙ্গালী ও তারপরে মুসলিম হবো!
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ কেশব’দা।
Sorry for mistake. Please read the opening line as “Jamaat-Shibir-Hefajot will make us like…….”
লিংকটি তো দিতে পারছি না মনে হয়। আবার চেষ্টা করছি। এবার না পারলে পাঠক ক্ষামা করেও দেবেন।
Amra-আমরা uploaded a new video: Pahela Boishakh vs Communal Forces-1.
ওয়েব এড্রেসটা তো দেন; দেখি আপলোডের চেষ্টা করে। ইনবক্স’ও করে দিতে পারেন।
১লা বৈশাখে অপকর্মের ইন্ধন যুগিয়েছে কে? কারা? বাংলা নববর্ষ উদযাপন নিয়ে সাম্প্রদায়িকতার বিষ ছড়াচ্ছে কারা?ভিডিও টি দেখুন।
Amra-আমরা’s video.
বিষয়টিকে একটু অন্য দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার চেষ্টা করছি। জানিনা আমার ভাবনা সঠিক কিনা।
অশিক্ষিত নারী যখন বোরখা বা হিজাব পরে তার অর্থ বোঝা যায়। কিন্তু শিক্ষিত নারী যখন এই পোশাক পরে তখন তার কারণ কি ? আমার মনে হয় নারী যতক্ষণ শিক্ষা, আত্মনির্ভরতা, অর্জন করেছে ততক্ষণ কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু নারী যখন শরীর দেখানো পোশাক পরে পুরুষ ‘ জেতার ‘ প্রতিযোগিতায় নামল তখনি গোল বাধলো। যে সব নারী এই প্রতিযোগিতায় নামতে সক্ষম নয় তারা ওই সব ‘আধুনিক’ নারীদের কাছে পুরুষ ‘ দখলের ‘ প্রতিযোগিতায় হেরে গেল। নারীর আধুনিক ‘ পোশাক নিশ্চিত ভাবেই নিজেকে পুরুষের কাছে ‘ আকর্ষনীয় ‘ করার চেষ্টা। তা ছাড়া কে না জানে অফিসে রিসেপশনিস্ট এর পদের জন্য এক জন ‘ সুন্দরী ’ নারীর কাছে একজন শিক্ষিত কিন্তু তত সুন্দরী নয় এমন নারী প্রতিযোগিতায় হেরে যায়। হয়ত সেই জন্যই সে ওই প্রতিযোগিতা থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিল। তাই যতক্ষণ পর্যন্ত আদর্শ সমাজ না গঠন করা যাবে ততক্ষণ পর্যন্ত কিছু ভালো নারীও যোগ্য স্থান পাবে না এবং তারা হয়ত বোরখা হিজাবে ঢুকে পড়বে।
নানান মিডিয়ার রিপোর্টে যতটা মনে হচ্ছে এবারের ঘটনা সংঘবদ্ধ এবং পূর্ব পরিকল্পিত। তেমন সন্দেহের অবকাশ নেই যে লং টার্ম কোন পরিকল্পনা থেকেই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। আমাদের সমাজে বহু ভদ্রবেশী সুশীল জানোয়ার ঘুরে বেড়ায়, শুরুটা ণাটের গুরুরা করে দিলেও তারাও মুফতে মজা লোটার এই সুযোগ ছাড়তে পারেনি। পুলিশের নিস্ক্রিয় ভূমিকা ঘটনা নিয়ে গেছে চরম ন্যক্কারজনক পর্যায়ে। সেদিন ছাত্র ইউনিয়নের কিছু ছেলে নিজেদের বিপন্ন করে এগিয়ে না এলে নিঃসন্দেহে আরো বহু ভয়াবহ ঘটনা ঘটতো।
মূল পরিকল্পক কারা ছিল নিঃসন্দেহে সেটা আমরা কোনদিনই অফিশিয়ালী জানতে পারবো না ধরেই নেওয়া যায়। ইতোমধ্যেই ৭১ টিভির উপস্থাপিকাকে সপরিবারে হত্যার হুমকি দিয়েছে জংগী আনসারুল্লাহ।
অনেকটা ক্লুলেস অভিজিত হত্যা (পুলিশী ভাষ্যে), ওয়াশিক বাবুর খুনীদের বয়ানে খুনের বিস্তারিত বর্ননায় এটা পরিষ্কার যে এসবের পেছনে বেশ সূক্ষ্ম মাথা ওয়ালা দীর্ঘ পরিকল্পনা কাজ করছে। নেহায়েত কিছু মাদ্রাসা ছাত্র/হুজুর মাথা গরম করে এসব হত্যাকান্ড ঘটায়নি। পহেলা বৈশাখের ঘটনাও একই সূত্রে বাধা হতে পারে।
বেশ ক’মাস আগে আক কায়েদা নেতা আইমান আল জাওয়াহিরি বাংলাদেশের ওপর নেক নজর দেবেন বলে ওয়াদা করেছিলেন। হতে পারে এসব তারই অংশ? সবচেয়ে দূঃখজনক হল জাওয়াহিরিদের মিশনে স্বেচ্ছায় বা পরিনতি সম্পর্কে অজ্ঞানতা বশত সমর্থন দেবার লোকের তেমন অভাব হবে না।
তেমন আশংকা সত্য হলে বুঝতে হবে সামনে আরো খারাবি আছে। কিছুদিন পর শুধু ব্লগার নয়, মূল ধারার প্রগতিশীল বুদ্ধিজীবিদের ওপর হামলাও হতে পারে।
ধারণা করা হয় যে ৭১’এ লাথি খাবার পর ৭৫’এ আবার ওরা দেশবিরোধীদের কোলে ফিরেছে। সেই থেকেই পেনিট্রেশন। দেশের সরকারী বেসরকারী সকল সেক্টরে ঢুকিয়েছে সুনির্দিষ্ট জামাত শিবির চেতনার কর্মী। ধর্ম চেতনা এখন উম্মাদনা পর্যায়ে। কাজেই ধর্মবাজরা এখন খুব বড় আঘাত হানতে প্রুস্তুত। হয়ত বা কোন এক বাদ্জুম্মা ঘটে যাবে সারা দেশ হেফাজতের ঘটনা। দেশ প্রগতির পথ ছেড়ে গায়েবের ম্যাজিকেই বেশ সন্তষ্ট। ভালবাসে হিজাব নেকাব আর মেহেদী রঞ্জিত দাঁড়ি। ধীরে ধীরেই বাঙালি বিরোধী ভাবনাকে বদলাবদলি করেছে অচেতন এবং সচেতন ভাবেই।
প্রতিরোধ না করলে মুক্তি মিলবে না। সক্রিয় শক্তিশালী প্রতিবাদ না হলে নারী’ই হবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। নতুনদের দিকে চেয়ে আছি পরিবর্তনের পথ চেয়ে।
লিঙ্ক এবং মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
ধর্মের ওয়ান ওয়ে সুড়ঙ্গে সেঁধিয়ে গেলে ওখান থেকে বের হওয়া মুশকিল। প্রায় অসম্ভব। – এবং আম্রা অনুধাবন করতে পারছি না যে আম্রা এই সুড়ংগের অনেকটাই পেরিয়ে এসেছি। স্বভাবতই এখন বাইরের আলো সুড়ংগের যেখানে আছি সেখানে পৌঁছতে পারছে না। এ বড় অন্ধকার সুড়ংগ!
মন্তব্যের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
‘Jamaat-Shibir-Hefajoti’ Islam is a social disease. They don’t understand that by monkeying Arabic culture they will not be Arab. They will always remain Bengali whom Arab people consider ‘lesser Muslims’. Jamaat-Shibir-Hefajoti use Islam as a tool for deriving power in Bangladesh.
মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ। বাংলা কিবোর্ড অভ্র ডাউনলোড করে নিলে অনায়াসে বাংলা লিখতে পারবেন। খুব সহজেই এটি করা সম্ভব। এই ব্লগে সব লেখা বাংলাতে লেখা হবার কথা।