রাজশাহীর পুঠিয়াতে বেড়াতে গিয়েছি রাজবাড়ি এবং এর সংলগ্ন মন্দিরগুলির ছবি তুলবো বলে। সাথে ট্রাইপড রয়েছে, ট্রাইপড নিয়ে ঊর্ধ্বগতিতে হেঁটে চলেছি এই মন্দির থেকে সেই মন্দির। সেটি দেখে এক পথচারী কৌতূহলী হয়ে আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘ভাই এই তেপায়া জিনিষটির নাম কি?’ আমি বললাম, ‘এর নাম ট্রাইপড, এটির ওপর ক্যামেরা বসিয়ে ছবি তোলার কাজ চলে।’ ভদ্রলোক তার পরেই জিজ্ঞেস করলেন, ‘তা আপনার ক্যাম্রাখানি কোথায়?’ আমি বললাম, ‘পকেটে।’ ভদ্রলোক আমার দিকে অবিশ্বাসের ভঙ্গি নিয়ে চেয়ে রইলেন, বললেন, ‘তেপায়া এই জিনিষটি তো দেখেছি আগেই, নাম জানতাম না। কিন্তু এর ওপর তো ভায়া বড় বড় ক্যামেরা রাখতে দেখেছি। আপনার এই লিলিপুট ক্যামেরা দিয়ে তার কি কাম।’ আমি তখন সহাস্যে তাঁর উৎসুক ভরা মুখের দিকে তাকালাম। আসলেই তো, লিলিপুট ক্যামেরার এই জগতে কি কাম??
পকেট ক্যামেরা, কমপ্যাক্ট ক্যামেরা কিংবা অনেকে এর নাম দিয়েছেন পয়েন্ট এন্ড শুট। মানে সাবজেক্টের দিকে চাও, সাটার প্রেস কর, ব্যাস, বাকি সব কাজ ক্যামেরার। মানে আমার কোন ঝামেলা নেই, শুধু কম্পোজিশনটা খানিক ঠিক করে নেয়া। তবে যে কাজ ক্যামেরাটি করবে তা আসলে কেমন? মানে ছবি ভাল উঠবে তো? এইসব পকেট ক্যামেরা দিয়ে কিই বা এমন ছবি ওঠে? ওইতো সেই ডাইন্যামিক রেঞ্জের ঘাটতি, ওভার এক্সপোজের সমস্যা, রঙের গভীরতা নেই, সাবজেক্ট কেমন ফ্যাকাসে টাইপ হয়ে থাকে, আর অন্ধকারে তোলা ছবি সেইতো চরম গ্রেইন, গ্রেইনের চোটে ছবিই স্পষ্ট হয়না। এগুলি হচ্ছে মোটা দাগে কমপ্যাক্ট ক্যামেরার প্রতি ছুঁড়ে দেয়া অভিযোগের বাণ।
এখন এইসব বাণ থেকে রক্ষা পাবার জন্য ক্যামেরাগুলির কি করা দরকার? সোজা উত্তরে ক্যামেরার ইমেজ গুন বাড়ানো দরকার। ইমেজ গুন বাড়াতে গেলে কি করতে হবে? ক্যামেরার সেন্সরের আকার বাড়াতে হবে, লেন্সের অ্যাপারচার মূল্য বাড়াতে হবে, আই এস ও মূল্য বাড়াতে হবে, রঙের গভীরতা বাড়াতে হবে, আর একটা জরুরি কাজ করতে হবে, সেইটা হল, ক্যামেরার কন্ট্রোল বাড়াতে হবে, ম্যানুয়াল ছবি তোলার সুযোগ বাড়াতে হবে, ফটোগ্রাফার যেন ছবি তোলার সময় কেবল ক্যামেরা নির্ভর না হন এটা ভাবতে হবে! তবে এইসব করতে হবে কমপ্যাক্ট ক্যামেরার আকারকে ছোট রেখে। আবার চাহিদার এখানেই শেষ নয়। ক্যামেরার এল সি ডি-ই যেহেতু ভিউ ফাইন্ডারের কাজ করবে, কাজেই তার আকার বাড়াতে হবে, রেজোলিউশন বাড়াতে হবে, এছাড়া কানেক্টিভিটি এখন একটা ফ্যাক্ট। কাজেই ক্যামেরায় ওয়াই ফাই সহ জি পি এস সুবিধা নয়া থাকলে কেম্নে কি!
এখন ওপরের সব কথা চিন্তা করে কিছু বৈশিষ্ট্য বাদ দিয়ে কিছু সংযোজন করে ক্যামেরা কোম্পানিগুলি পকেটে ঢোকানোর মতন করে ক্যামেরা উৎপাদনের চিন্তা করতে লাগলো। এ যাত্রায় প্রথম এলো প্যানাসনিক তাঁদের এল এক্স ৩ নিয়ে। ঈষৎ বর্ধিত সেন্সর আকার নিয়ে। সাধারণত কমপ্যাক্ট ক্যামেরায় যে সেন্সর থাকে অর্থাৎ ১/২।৩ ইঞ্চি তার জায়গায় এল ১/১.৬৩ ইঞ্চি সেন্সর। সেই সাথে র শুটিং, ম্যানুয়াল কনট্রোল সবকিছুর প্রাপ্যতা দিয়ে একটু অতি আগ্রহীদের ক্যামেরা। তবে তারা যেটি করতে পারলনা, সেটি হচ্ছে ক্যামেরার আকারকে প্যান্টের পকেটের ভেতর ঢোকাতে তারা ব্যার্থ হল। আর তার পরপরই ক্যানন নিয়ে এল ক্যানন এস ৯০।
ক্যানন এস ৯০ যে কারণে একটি অসাধারণ পথ প্রদর্শনকারী ক্যামেরা তা হল, এটিই সর্বপ্রথম আ্যাডভান্স লেভেলের ক্যামেরা যা প্যান্টের পকেটে অনায়াসে ঢোকানো যায়। মানে এক ঢিলে দুই পাখি মারার মতন। এক তো ক্যামেরাটি আমার প্যান্টে ঢোকানো যাচ্ছে, মানে ক্যামেরার চলনশীলতা বেড়ে গেল বহুগুন আবার সেইসাথে ক্যামেরার ইমেজগুন, ম্যানুয়াল কন্ট্রোল স্থিরচিত্রগ্রাহকদের হাতের মুঠোয় চলে এল। এতেই শেষ নয়, ক্যানন তাঁর সেন্সর আকার আরও বাড়িয়ে দিল, ১/১.৭ ছিল তখন বাজারের সর্বোচ্চ কমপ্যাক্ট সেন্সর সাইজ। যেইনা এই ক্যামেরা কমপ্যাক্ট জগতে ঝড় বইয়ে দিল, বাজারে একের পর এক আসতে থাকল আ্যাডভান্স লেভেলের কমপ্যাক্ট ক্যামেরা। একে একে এল অলিম্পাস, নিকন, তারপর এল সনি, ফুজিফিল্ম স্যামসাং এবং সর্বশেষে পেনট্যাক্স। তবে কয়েক বছর পর্যন্ত আকারে ক্যাননকে টেক্কা দিতে পারে এমন কোন ক্যামেরার সন্ধান দিতে পারেনি কেউ শুধু একটি ক্যামেরা ছাড়া, সনি আর এক্স ১০০। এটি হঠাৎ এলো আর বাজারে এসেই মাত করে দিল। তারা কমপ্যাক্ট সেন্সরের আকার বাড়িয়ে একবারে ১ ইঞ্চি করে ফেলল। এটিও পকেটে ঢোকানো যায় কিন্তু এর দাম $ ৬৫০ , তাই অনেকের নাগালের বাইরেই রয়ে গেল।
পাঠকরা লক্ষ্য করুন, ক্যামেরার এই জগতে কত দ্রুত কত পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। ২০১০ সালে বাজারে আসে ক্যানন এস ৯০। সেই সময় এই লেন্সের সেন্সর আকার ছিল যুগান্তকারী, তার সাথে ম্যানুয়াল কনট্রোলের প্রাপ্যতা, লেন্সের অসাধারণ আলোক সংগ্রহ ক্ষমতা বাজারে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছিল। কিন্তু তার দুই বছর যেতে না যেতেই ১ ইঞ্চি সেন্সর সনির মাধ্যমে এসে হাজির। আর সেই সঙ্গে ক্যামেরার বডির সাথে জি পি এসের সংযুক্তি এই ছোট ক্যামেরাগুলিকে ব্যাপক জনপ্রিয় করে তুলল। আর বছর যেতে নয়া যেতেই রিকো সাহেব পুরো এ পি এস সি সেন্সর কমপ্যাক্ট ক্যামেরার ভেতর এনে দিল, নিকন ই বা পিছিয়ে থাকবে কেন। তারা কুল্পিক্স এ যা কিনা একেবারেই পকেটে ঢোকানোর মতন, সেটি সজোরে ঘোষণা দিয়ে উপস্থিত হয়ে গেল। যদিও দাম রাখল একেবারে ধরা ছোঁয়ার বাইরে।
কিন্তু এথেকে আমরা কি দেখছি, আমরা ক্যামেরার এই বিশেষ অঙ্গনে এক ব্যাপক কর্মচাঞ্চল্য দেখতে পাচ্ছি। ক্যামেরার ডি এস এল আর যেখানে প্রযুক্তির বন্ধ্যাত্বের চরমে পৌঁছে গেছে, যেখানে আর নতুন কোন আবিষ্কার কিংবা উদ্ভাবন নেই কিংবা হবার সম্ভাবনাও নেই, বছর বছর শুধু মেগাপিক্সেল আর আই এস ওর পরিবর্ধনই যার একমাত্র গন্তব্য সেখানে আমরা ক্যামেরার নতুন সব উদ্ভাবনী জারিজুরি এখানেই দেখতে পাচ্ছি। আর একটু গভীরভাবে ভাব্লে বুঝতে অসুবিধে হয়না যে স্মার্ট ফোনের সাবলীল পদচারণে ক্যামেরা জগতে ঘটে যাচ্ছে অভাবনীয় সব পরিবর্তন। স্মার্ট ফোন এসে কমপ্যাক্ট ক্যামেরার নীচের দিকের বাজার একেবারে ধ্বংস করে দিয়েছে। এখন কমপ্যাক্ট ক্যামেরা যদি পকেটে পোরা না যায়, কমপ্যাক্ট ক্যামেরায় যদি কানেক্টিভিটি না থাকে, কমপ্যাক্ট ক্যামেরায় যদি এ পি এস সি সেন্সর যুক্ত করা না যায়, তাহলে এই মাধ্যমের আর ভবিষ্যৎ রইল কোথায়?
আসুন, আমরা এইবার এই ক্যামেরাগুলির একটু স্পেসিফিকেশন দেখে এদের ভেতরকার পার্থক্য গুলি বোঝার চেষ্টা করি।
ওপরের তালিকায় নির্দেশিত ক্যামেরাগুলির মধ্যে স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী খুব বেশী পার্থক্য কিন্তু আমরা দেখিনা। বিশেষ করে কিছু বৈশিষ্টে তাঁদের অবস্থান উনিশ বিশ। সেন্সর আকৃতি, লেন্সের বৈশিষ্ট্য, আই এস ও মূল্য, এল সি ডি র মান, মেগাপিক্সেল এবং সাটার স্পিডে আমরা খুব বেশী পার্থক্য দেখিনা। তবে ক্যামেরার আকৃতি, ওজন এবং মুল্যে বেশ পার্থক্য দৃশ্যমান। এই ক্যামেরাগুলির মধ্যে শেষ তিনটি ক্যামেরা পকেটে ঢোকানো যাবেনা, হয়ত জ্যাকেটের পকেটে ঢুকলেও ঢুকতে পারে। বাকি চারটি ক্যামেরাই পকেটে ঢুকবে। ওজনে জিতে গেছে কেবল ক্যানন এবং প্যানাসনিক ক্যামেরা দুটি। এই ক্যামেরা গুলি হালকা হলে কি হবে এদের প্রতিটিই কিন্তু ইস্পাত দিয়ে তৈরি, প্লাস্টিক নয়, অনেকগুলি জাপানেই নির্মিত, অবশ্যই স্যামসাং বাদ দিয়ে। মুল্যের দিক দিয়েও সব ক্যামেরার মিল রয়েছে। পার্থক্য মাত্র দুটো ক্যামেরায়, সনি এবং ফুজিফিল্মে। হয়ত সেন্সরের আকার বাড়ানোর কারণেই এমনটি হয়েছে।
সবশেষ কথা হচ্ছে, ক্যামেরার আকার দিন দিন ছোট হচ্ছে। ভুলে গেলে চলবে না, ক্যামেরার ইতিহাস ব্যাবহারিক সুবিধের ইতিহাস। এই ইতিহাস নতুন করে লেখা হচ্ছে স্মার্ট ফোনের আগমনে। এখন কানেক্টিভিটি একটি বাস্তবতা আর এর সাথে পকেটে ঢোকানো সম্ভব এমন ক্যামেরার গ্রহনযোগ্যতাকে আর অস্বীকার করার কোনই উপায় নেই। এ পি এস সি সেন্সর কমপ্যাক্ট ক্যামেরায় প্রবেশ করিয়ে দাম যদি একেবারে কমিয়ে দেয়া যায় সময়ে সাথে তাহলে কি হবে ডি এস এল আর ব্যাবহারকারিদের ভবিষ্যৎ? কে জানে হয়ত এইসব কমপ্যাক্ট ক্যামেরা আর স্মার্ট ফোনের মাঝেই লুকিয়ে আছেন শৌখিন ক্যামেরা ব্যাবহারকারিদের ভবিষ্যৎ!
:line:
( এটিই মুক্তমনায় আমার প্রথম লেখা জমা দেয়া। প্রকাশ হবে কিনা জানিনা। এই ধরণের ক্যামেরা সংক্রান্ত লেখা প্রকাশ হয় কিনা, তাও জানিনা। ভেবেছিলাম কিছু ছবি যুক্ত করব, কিভাবে করা যায় তাও ছাই জানিনা। জিল্লুর ভাই, আমার রুমমেট মুক্তমনা-র একনিষ্ঠ পাঠক। তাঁর পিড়াপিড়িতেই লেখাটি প্রস্তুত করা গেল। )
মনি ভাইকে মুক্তমনায় অভিনন্দন! (F) (F) (F)
মুক্তমনায় আপনাকে দেখে খুব ভালো লাগছে! আপনি ভালো করে অবগত আছেন যে, আপনি যে বিষয়টি নিয়ে অলোকপাত করেছেন, তার জ্ঞান আমার নেই বললেই চলে! তারপরও আপনার উৎসাহে ছবি তুলে যাচ্ছি!!
জিল্লুরের বদৌলতে মুক্তমনায় এ অধমের আত্মপ্রকাশ হয়েছিল ঠিকই কিন্তু যোগ্যতার অভাবে তার ধারাবাহিকতা রক্ষা করে সচল থাকতে পারেনি; সেজন্য আমি দুঃখিত! ক্ষমাপ্রার্থী! কিন্তু আপনি তো সেক্ষেত্রে অনেক সুযোগ্য। মুক্তমনায় আপনার ধারাবাহিক অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকুক। সেসাথে জিল্লুরকে বলছি, সে শুধু ফেসবুকিং না করে আপনার সাথে সাথে সে যেন মুক্তমনায় সচল হয়ে উঠে! ধন্যবাদ।
@শামিম মিঠু,
ধন্যবাদ মিঠু ভাই। মুক্তমনায় আসাটা অনেকটা আপনাদের ধারাবাহিক পিড়াপিড়ির ফল বলা যায়। আর মিঠু ভাই, আপনি কেন মুক্তমনায় লেখা থামিয়ে দিলেন, ঠিক বুঝলামনা। যোগ্যতা কিন্তু লিখতে লিখতেই অর্জন করা সম্ভব। আপনার একটা লেখা নিজের কাছে ভালো লাগলোনা, তারপর সেটাকে কাটাছেঁড়া করে আবার লিখলেন। লেখালেখি এক নিরন্তর চর্চার বিষয়। রাতারাতি তা হয়না।
আলোকচিত্রের ব্যাপারে একটি কথা যেটি আপনাকে প্রায়ই বলি আজ এখানে আবার বলি। প্রযুক্তি আমাদের সুপ্ত প্রতিভা বিকাশের একটা বদ্ধ দুয়ার উন্মুক্ত করে দিয়েছে। আজ আপনি একটা স্মার্ট ফোন ব্যাবহার করছেন। আমি বিদেশে বসবাসরত বেশীর ভাগ বাংলাদেশী মানুষকে তা ব্যাবহার করতে দেখেছি। স্মার্ট ফোন দিয়ে অসাধারণ ছবি তোলা সম্ভব। আবার বলি, অ সা ধা র ণ ছবি তোলা সম্ভব। কিন্তু আপনাকে তো কোথাও না কোথাও থেকে তা শুরু করতে হবে, তাইনা? আমি শুনছি, আমাদের বাংলাদেশে অনেক ছাত্র ছাত্রীর কাছেই তা সহজলভ্য হতে শুরু করেছে। এখন কাজ হল যেন তেন ভাবে নয়। সিরিয়াসলি ছবি তোলা, কম্পোজিশন নিয়ে ভাবা।
আমি সবাইকে ফটোগ্রাফার হিসেবে দেখতে চাই। সবাই কবি হোক। সবাই লিখুক, গান গাক। সবাই সচল থাকুক। শিল্পের বিচিত্র ক্ষেত্রে সবার পদচারনা ঘটুক। নইলে কিভাবে আমরা ধর্মীয় কুসংস্কার, অবৈজ্ঞানিক চিন্তা চেতনা, সাম্প্রদায়িকতা- এসবের বিরুদ্ধে লড়াই করব, বলুন?
আমাদেরকেই তো এই অচলায়তন ভাংতে হবে, তাইনা? এই কাজ তো অন্য কেউ এসে করে দেবেনা। আমাদেরকেই তা করতে হবে।
পরিশেষে ভাল থাকুন, শুভেচ্ছা!
এই বাক্যগুলি বড্ড কঠিন আমার মত গাধাদের জন্য, তবু শেষ পর্যন্ত পড়ে ফেললাম, তেমন কিছু না বুঝেই! মাস্টারদের মত বুঝাতে চাননি বলেই হয়ত লেখাটা আগ্রহ ধরে রাখল শেষ পর্যন্ত।
অনেক কিছুই জানলাম এবং শিখলাম, কিন্তু আমার বাজেটের মধ্যে কুলোয় এমন একটা টেকসই ক্যামেরার সন্ধান যদি দিতেন! এমন একটা ক্যামেরা কিনতে চাই, যা আমার অজ হাত দিয়েও তুলবে মারাত্মক সব ফডু!
আপনার লেখা আগেও পড়েছি, তবে এখানে নয়, অন্যখানে। মুক্তমনার পাঠকদের জন্য আপনি আরও বেশী বেশী লিখবেন, সেই প্রত্যাশা!
@কাজি মামুন,
ধন্যবাদ মামুন ভাই। আপনিও কিন্তু আমার অচেনা নন। আপনার লেখা আমি পড়েছি সচলায়তনে। দুই সপ্তাহ আগে ‘নিসর্গ’ নামক একটি অনলাইন পত্রিকায় আমার একটি রচনা প্রকাশিত হয়েছে। প্রবন্ধটি ছিল ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকার বাজেটের ভেতর কোন ক্যামেরাটি কিনবেন। আমি জানিনা মন্তব্যের এই অংশে লিংক টি দেয়া ঠিক হবে কিনা। আপাতত সেটি থেকে বিরত থাকছি। ক্যামেরা কেনার ক্ষেত্রে আমার নিজের তেমন কোন সিদ্ধান্ত নেই এবং আমি উপযাজক হয়ে কারো জন্য এই কাজটি করতেও চাইনা। আমি আলোকচিত্রের বিশ্লেষক হতে চাই আমার সীমিত সামর্থের ওপর ভর করে। কিন্তু ক্যামেরা রিকমেন্ড করার মতন যোগ্যতা আমার নেই আর তা আমি করতেও চাইনা।
ওই লেখাতে আপনি অনেক বিশ্লেষণ পাবেন। অর্থাৎ স্পেসিফিকেশন দেয়া রয়েছে আবার পাশাপাশি অনেক খুঁটিনাটি দিকের বিশ্লেষণ রয়েছে। আপনি একবার ঢুঁ মেরে দেখতে পারেন। আপনার কাজে লাগলেও লাগতে পারে।
এই লেখাতে খেয়াল করে দেখবেন আমি স্পেসিফিকেশন দিয়েই শেষ করেছি, বিশ্লেষণে যাইনি। এর কারণ হল আমার মনে হয়েছে, আগ্রহীরা স্পেসিফিকেশন থেকেই অনেক কিছু নিজেরা ধারণা করে নিতে পারবেন। আর তাছাড়া এই ক্যামেরাগুলির নিজেদের মধ্যে এতই কম পার্থক্য যে আলাদা করে তা উল্লেখ করতে চাইনি। আর তাছাড়া আমি খুব নিশ্চিত ছিলাম না মুক্তমনায় লেখাটি প্রকাশ হবে কিনা। এখানে নতুন কিনা।
আপনি যদি উপরোক্ত কয়েকটি মন্তব্য খেয়াল করেন মামুন, বুঝবেন আমার আগ্রহ মুলত আলোকচিত্রের ইতিহাস, দর্শন, অতীত-বর্তমান-ভবিষ্যৎ এসব নিয়ে। তাই বলে আমার যে এর কৌশলগত দিক নিয়ে আগ্রহ নেই তা নয়। রয়েছে, ভালই রয়েছে। তবে সেটি অন্যদের জন্য যতটা নয় তার চাইতেও নিজের জন্য বেশী।
সাথে থাকুন। আলোচনা করবার সময় হয়ত আপনার আগ্রহের অনেক কিছু পেয়েও যেতে পারেন। তবে মামুন ভাই, আপনি হয়ত জানেন, তারপরেও বলি, ক্যামেরা আসলে শেষ পর্যন্ত একটি বাক্স বৈ আর কিছু নয় যা দিয়ে ছবি তোলার কাজটি চলে। ক্যামেরা এমন কিনবেন যা আপনার কথা শুনবে, যা আপনার ছবি তোলার কাজকে সহজ করবে, বাঁধা হয়ে দাঁড়াবেনা। এখন ক্যামেরা প্রযুক্তি যে পর্যায়ে চলে গেছে, আমার তো মনে হয় যে কোন ক্যামেরা কিনেই মাঠে ঝাঁপ দেয়া সম্ভব। আমি ডিএসএলআর এর পাশাপাশি এখানে কমপ্যাক্ট ক্যামেরা আর স্মার্ট ফোন নিয়ে আলোচনা করব, ছবিও যুক্ত করব। তখন হয়ত আর একটু ভাল ধারনা পাবেন।
এই যাত্রায় ছবি যুক্ত করতে পারিনি। সামনে থেকে সেটাও থাকবে, আশা রাখি।
মনি শামিম,
মুক্তমনায় স্বাগতম। আপনার কাছ থেকে চিত্রকলা আর ক্যামেরা বা আলোকচিত্র সম্পক্যে জানবো বলে ভালো লাগছে। সেই সাথে বোনাস হিসেবে অনেক ভালো ভালো আলোকচিত্র উপভোগের আশাটাও থাকছে। আলোকচিত্রের উপড়ে আমার একটা স্বভাবিক আগ্রহ আছে, কিন্তু আমি আলোকচিত্রী নই। ভালো থাকুন।
@কেশব কুমার অধিকারী,
ধন্যবাদ কেশব।
প্রথম লেখায় ছবি যুক্ত করতে পারিনি। নতুন যে একেবারে। তবে অভিজিৎ দা সুযোগ করে দিলেন। এরপর থেকে ছবিও যুক্ত করতে পারব।
কিন্তু আলোকচিত্র নিয়ে আলোচনা করতে চাই। আলোচনা করতে চাই এর দর্শন, ইতিহাস, বিজ্ঞান এবং কৌশল নিয়ে। আলোচনা করতে চাই বিজ্ঞানের এই প্রায়োগিক ক্ষেত্রে ছোট খাটো নানান পরিবর্তন এবং তাঁর সম্ভাব্য পরিণতি নিয়ে। সবসময় ছবি যুক্ত করা কিন্তু সম্ভব হবেনা ভাই।
বিজ্ঞানের এই ক্ষেত্রে অভাবনীয় গতিতে পরিবর্তন হচ্ছে। প্রতিদিন জমা পড়ছে নতুন নতুন পেটেন্টের আবেদন। স্মার্ট ফোন এসে বড় বড় কোম্পানির রাতের ঘুম হারাম করে দিয়েছে। স্মার্ট ফোনের কাছে বড় বড় ক্যামেরাই এখন অস্তিত্তের হুমকির মুখে। সেগুলি নিয়েও আলোচনা করতে চাই। আলোচনা করতে চাই লেন্স নিয়ে, বিভিন্ন ক্যামেরা নিয়ে, তাঁদের বৈশিষ্ট্য নিয়ে। আলোকচিত্রের ওপর অগুনতি বই আছে, সেগুলি নিয়ে আলোচনা চলতে পারে। তবে আমার নিজের জন্যেও অনেক প্রস্তুতির দরকার, অনেক বই পড়া দরকার। কিন্তু জানেন তো, কামলা খেটে বড় সড় কিছু করা দুরূহ। আমার নিজের গবেষণার বিষয় আলোকচিত্র হতে শত হস্ত দূরে। তাই যেটুকু সময় পাই, এগুলি নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করি।
জানিনা কতটুকু আপনাদের প্রত্যাশা পুরন করতে পারব। তবে চেষ্টা থাকবে।
তথ্যবহুল লেখা, ভালো লাগলো। মুক্তমনায় স্বাগতম। ব্যক্তিগতভাবে জিনিসটা আমার যেটা খুব বিরক্ত লাগে সেটা হলো সুন্দর জায়গায় ঘুরতে গিয়ে চোখ দিয়ে ভালোমত উপভোগ করার আগেই ক্যামেরা তাক করে ফেলা। তারপরেও গুণী ফটোগ্রাফারের তোলা ছবি দেখতে ভালো লাগে, ছবি তোলাকে তারা শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে যান, আর বাকিরা ফেসবুকে মানুষকে দেখানোর জন্য অস্থির হয়ে নিজেই দেখতে ভুলে যায়।
@রামগড়ুড়ের ছানা,
ধন্যবাদ। ফেসবুকে ছবি দেয়াই ছবি তোলার উদ্দেশ্য হলে বুঝতে হবে, বিনিময় করার জন্যই তা করা হয়েছে। বন্ধুদের অনেকে তা দেখে আনন্দ পায়, এটি আমার মতে ঠিক আছে। যে সত্যি সত্যি ভালো ছবি তুলতে চায়, অনেক সময়ে ফেসবুকে পাওয়া পছন্দের বাহার তার আত্মবিশ্বাস বাড়াতে সাহায্য করতে পারে। এটি খারাপ নয়। আসলে ফেসবুক ব্যাবহারকারি এখন আগের চাইতে অনেক স্মার্ট। যেন তেন ছবিতে তাঁরা লাইক দিয়ে আর সময় অপচয় করতে চাইছেনা।
কে কিভাবে ছবি তুলে তা ব্যাবহার করবে এইটা সাব্জেক্টিভ ব্যাপার। কথা হচ্ছে আমি নিজে কি ছবি তুলে আনন্দ পাচ্ছি? উত্তর যদি হ্যাঁ হয়, তবে কোন মাধ্যমে তা দেখানো হল সেইটা বোধ করি ততটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। আমি কি আরও ভালো ছবি তুলতে চাই? উত্তর হ্যাঁ হলে সেক্ষেত্রে ইদানিং ফেসবুক তেমন উপযুক্ত প্ল্যাটফর্ম নয়। এর চাইতে ভাল হল একনাগাড়ে ছবি তুলে যাওয়া। ভাল হচ্ছে না খারাপ হচ্ছে তা ছবি তুলতে তুলতে এবং ছব দেখতে দেখতে টের পাওয়া সম্ভব বলে মনে করি।
বিষয়টা হল আপনার পছন্দ অপছন্দ আমার মতামতের চাইতে অনেক বেশী গুরুত্বপূর্ণ। বিচিত্র এই জগত। কেউ ছবি দেখানোর জন্য তুলবে, কেউ আরও ভাল ছবি তোলার জন্য বিনিময় করবে, কেউবা আবার ছবি তুলে কোথাও বিনিময়ই করবেনা। বৈচিত্র্য একটু থাকুক না?
@মনি শামিম,
অাপনার সাথে একমত, এজন্যই “ব্যক্তিগতভাবে” শব্দটা যোগ করেছি, এটা শুধুই আমার ব্যক্তিগত মতামত, কেও ছবি তুললে অবশ্যই তাকে গিয়ে বাধা দিবোনা 🙂 ।
@রামগড়ুড়ের ছানা,
ঠিক আছে। ধন্যবাদ।
স্বাগতম মুক্তমনায়, ভাল লাগল দরকারী লেখাটি।
টেকনোলজি এত প্রবল মাত্রায় এগুচ্ছে যে এর সাথে তাল রাখা একেবারেই দুষ্কর। আমি ক্যামেরার জগতে এখনো বলা যায় প্রস্তর যুগে পড়ে আছি। সেই ২০০৬ সালে শেষ কিনেছিলাম প্যানাসনিক লুমিক্স, সেটা কিছুতেই নষ্ট হবে না বলে পন করেছে, হারায়ও না, চোরেও মনে হয় দেখলে লজ্জা পায়। ছবিও কিন্তু মন্দ না, কাজ চলে যায়, জিনিসটা বানিয়েছিল ভাল।
আশা করি সামনে ডিএসএল ক্যামেরা নিয়ে কিছু লিখবেন; সাথে ওয়াইড এংগেল, শাটার স্পিড, ম্যানুয়েল/অটো এ জাতীয় বিষয়গুলি বিস্তারিত জানাবেন।
@আদিল মাহমুদ,
ধন্যবাদ আদিল মাহমুদ। আপনার লেখা আমি পড়েছি মুক্তমনায়। আপনার কিছু মন্তব্যও দেখার সৌভাগ্য হয়েছে।
প্রযুক্তি এগুচ্ছে, আরও এগুবে। মানুষ হিসেবে আমরা তার সুফল ভোগ করব। সত্তর কিংবা আশির দশকেও আমাদের দেশে ক্যামেরা জনতার হাতের নাগালের বাইরেই ছিল। এখন এর প্রধান ভোক্তা সেই জনসাধারণই। গ্রামের যে কিশোরী কিংবা কিশোরের হাতে একটি ছবি তোলার মাধ্যম বর্তমান, সে কোন একদিন তা দিয়ে ছবি তুলে অপার আনন্দ উপভোগ করছে- এই ইমেজ চিন্তা করলেই একটা শিহরণ জাগে মনের ভেতর। এই আনন্দ, এই স্বপ্ন এখন আমাদের হাতের মুঠোয় এনে দিয়েছে প্রযুক্তি। এটাকে দ্রুত আরও সামনে এগিয়ে নিতে হবে আদিল ভাই।
আপনি ক্যামেরার জগতে মোটেই প্রস্ত্র যুগে পরে নেই। এগিয়ে আছেন অনেক। ক্যামেরার ভবিষ্যৎ আমার মতে দুটো জায়গায়, এক হল কানেক্টিভিটি এবং দুই হল মুভমেন্ট। আপনি বড় সেন্সর পকেট ক্যামেরায় ঢুকিয়ে কানেক্টিভিটি বাড়িয়ে দিন। ডিএসএলআর মুখ থুবড়ে পরবে। এক স্মার্টফোনের যন্ত্রণায় এখন ক্যামেরা কোম্পানিগুলির দিশেহারা অবস্থা।
ডিএসএলআর নিয়ে আমি লিখি। তবে ক্যামেরার টেকনিক্যাল দিক নিয়ে লিখতে তেমন আগ্রহ বোধ করিনা আর যোগ্যও নই, আর এইসব নিয়ে এত মাল মসলা আছে নেটে যে এ নিয়ে আর সেধে কিছু লিখতে ইচ্ছে করেনা। আমি বরং আলোচনা ফাঁদতে চাই বিভিন্ন ক্যামেরার ছোটোখাটো পরিবর্তন নিয়ে, ক্যামেরা জগতে এইসব পরিবর্তনের প্রভাব নিয়ে। আর লেন্স নিয়ে আমার ব্যাপক আগ্রহ আছে। সেগুলি নিয়েও লিখি।
তবে আপনি আমার আলোচনায় কিছু সারবস্তুর সন্ধান পেলেই খুশী হব। ক্যামেরার বিবর্তন হচ্ছে, পাল্টাচ্ছে সবকিছু খুব দ্রুতগতিতে। এগুলি সম্পর্কে সজাগ এবং আগ্রহী আছি, শুধু এটুকু বলতে পারি এই মুহূর্তে। বাকিটা সময় বলুক।
@মনি শামিম,
আমি প্রথম ডিজিটাল ক্যামেরা কিনি ২০০০ সালের মাঝামাঝি, সেটা ছিল ১.২ এমপি, দাম ১৯০ ডলার, তাও ছিল রিফার্বিশড! কোন অপটিক্যাল জুম ছিল না। কানেক্টিভিটি? সে আমলে অত্যাধুনিক ছিল সনির গুলো, সেগুলিতে ফ্লপি ডিস্ক ঢুকিয়ে সরাসরি ছবি তোলা যেত, এক ফ্লপিতে ভাল রেজু ছবি ৬/৭টার বেশী উঠতো না, ব্যাগে করে গাদা খানেক ফ্লপি নিয়ে ঘুরতো হত। সেই জিনিসের নাম ছিল যতটা মনে পড়ে ৩৫০-৪০০ ডলারের মত।
অপটিক্যাল আর ডিজিটাল জুমের তফাত বুঝতেই লেগেছে আরো ঝাড়া ৫টি বছর। সাথে খুচরো কিছু জ্ঞান যেমন এমপি বেশী মানেই অর্থবহ নয় এমনকি একই এমপি শস্তা ব্র্যান্ডে নীচু মানের ছবি দেয় এসব ধীরে ধীরেই শিখেছি। এসএলআরের ব্যাপারে এখনো খুবই প্রাথমিক বিদ্যার জগতেই আছি।
স্মার্ট ফোন যে ক্যামেরার বাজারে প্রভাব ফেলছে আমার ধারনা ছিল না, ধারনা ছিল যে স্মার্ট ফোনের ক্যামেরায় তেমন ভাল মানের ছবি হয় না, লোকে ব্যাবহার করে দ্রুত হাতের কাছে পাওয়া যায় বলে তবে আসল ক্যামেরার বিকল্প ভাবে এমন পাবলিক এখনো পাইনি।
সেন্সর, এপার্চার, আইএসও, শাটার স্পিড এসব সম্পর্কে মনে হয় বেশীরভাগ লোকেরই আমার মতই তেমন ধারনা নেই। ছবির কোয়ালিটিতে এসবের প্রভাব একটু বর্ননা করলে ভাল হয়।
@আদিল মাহমুদ,
ধন্যবাদ আদিল মাহমুদ ভাই,
দারুণ লিখেছেন। খুব ভাল লাগল আপনার স্মৃতিচারণ। ক্যামেরা নিয়ে আমারও অনেক সুখ স্মৃতি আছে। তার কিছুটা আগেই সচলায়তনে ব্যাক্ত করেছি। ২০০৩ সালের শেষে আমার হাতে একটি মাইনলটা এস টি ১০১ আসে হাতে, পাঠান প্রিয় আনন্দ আপা সুদুর যুক্তরাষ্ট্রের আ্যারিজোনা থেকে। তখন আমি বাংলাদেশের এক প্রত্যন্ত গ্রামে উন্নয়ন কর্মী হিসেবে কাজ করছি। সেই শুরু। তারপর থেকে কিভাবে যেন ভালোবেসে ফেললাম এই মাধ্যমকে। আরও জানার চেষ্টা করলাম। আজকের এইসব ক্ষুদ্র লেখালেখির প্রচেষ্টা সেই ভালবাসা থেকেই আসলে জারিত।
আমি নিজে সত্যি বলতে কি ডিএসএলআর এর কোন ভবিষ্যৎ দেখিনা। এটার অবস্থা হবে অনেকটা সাদা কালো টেলিভিশনের মতন। আমার মতে আলোকচিত্রের ভবিষ্যৎ পকেটেবল ক্যামেরার মধ্যে নিহিত। কিন্তু শুধু ভবিষ্যৎবানী করে কি হবে বলুন? আমি আসলে আলকচিত্রের নানান বিষয় আসয় নিয়ে উৎসুক, কৌতূহলী। আমার ভাবনা মূলত পর্যবেক্ষণ, স্পেস, আলোর গতি প্রকৃতি, রঙের রূপ পরিবর্তন, প্রকৃতি দর্শন এইসবের মধ্যেই ঘুর পাক খায়। যেমন ধরা যাক আমি আলোকচিত্রের চর্চা করতে চাই, প্রথমে আমার কি শেখা দরকার? ক্যামেরা কিভাবে ধরব নাকি আমার পর্যবেক্ষণ শক্তির বিকাশ কিভাবে হবে- কোনটা? ক্যামেরা না হয় ধরতে শিখে গেলাম মুহূর্তের ভেতর কিন্তু আমি যদি আগ্রহী পর্যবেক্ষক নয়া হই, আমার তোলা আলোকচিত্রের বিকাশ হবে কি?
আমি কিছুদিন হল একটি স্মার্ট ফোন ব্যাবহার করছি। গুগল নেক্সাস ৫, আমি আরও কিছুদিন এই ফোন দিয়ে ছবি তুলে আপনাদের সবাইকে দেখাতে চাই। এইসব ছোট গ্যাজেটের ফোন হিসেবে ব্যাবহারজনিত সমস্যা আছে অনেক। কিন্তু সম্ভাবনাও নেহাত কম নয়। সেগুলি নিয়েই আলোচনা করব।আশা করি সাথে থাকবেন আর আপনার মুল্যবান পরামর্শ দেবেন।
ধন্যবাদ পুনরায়।
স্বাগতম মুক্তমনায়।
@তামান্না ঝুমু,
ধন্যবাদ আপনাকে। আপনার কিছু লেখা আমি পড়েছি, নজরুল সম্পর্কিত, বন্ধু মিঠু শামিম ভাইয়ের সুবাদে। আপনি তাই আমার অচেনা নন। শুভেচ্ছা থাকছে।
– মনি শামিম
মুক্তমনায় স্বাগতম। লেখাটির জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
@অভিজিৎ দা,
জিল্লুর ভাই অনেক দিন থেকে লেগে আছে, শামিম ভাই মুক্তমনায় লেখা দিন, মুক্তমনায় লেখা দিন। আমি সচলায়তনে লিখি, দ্বিধায় ছিলাম এখানেও লিখব কিনা। তবে কেটে গেল দ্বিধা গতকাল। মুক্তমনার আমি অনিয়মিত পাঠক। ব্লগ যে খুব পড়ি এমনও নয়, সময় পাইনা অনেক সময়। গবেষণা করি বলে দিনের বেশীর ভাগ সময় কেটে যায় কম্পিউটারে। ব্লগে লেখা দেখতে মাঝে মাঝে মাথা ব্যাথা করে। তবে ইদানিং আমার নিজের ব্লগ পড়ার হার বেড়েছে। জিল্লুর ভাইয়ের মাধ্যমে আপনার লেখাগুলি পড়ছি। বন্যা আপার বইটিও পড়া হল। বিপ্লবদার লেখা এখানেই পড়েছি। লেখার আগে দ্বিধায় ছিলাম যে আমি যে বিশয়গুলি নিয়ে লিখি তা মুক্তমনায় ছাপা হবার মতন কিনা। আমি মূলত দুটি বিষয় নিয়ে লিখে থাকি, চিত্রকলা এবং আলোকচিত্র। আরেকটি বিষয়ে আমার ব্যাপক আগ্রহ আছে, ফুটবল। অচিরেই আধুনিক ফুটবলের কিছু বিষয় নিয়েও আলোকপাত করতে মন চায়। আর যে বিষয়টির প্রতি আগ্রহ আছে কিন্তু লেখালেখি করা হয়নি কখনো সেটি হল, বিজ্ঞান।
যাই হোক, মুক্তমনায় আসতে পেরে ভালো লাগছে। কৃতজ্ঞতা জানুন অভিজিৎ দা।
-মনি শামিম
@মনি শামিম,
জিল্লুর রহমান এবং আপনাকে – দুজনকেই ধন্যবাদ জানাচ্ছি মুক্তমনায় লেখার ব্যাপারে উৎসাহ দেওয়া এবং দেখানোর জন্য।
চিত্রকলা, আলোকচিত্র, ফুটবল – এগুলো নিয়ে আপনি লেখেন জেনে খুবই আগ্রহী হলাম। আপনি মহামান্য শয়তানকে উত্তর দিতে গিয়ে যে ‘ধর্ম, বিজ্ঞান, সমাজ, শিল্প সাহিত্য নিয়ে যে আধুনিক বিশ্লেষণগুলি ‘ পাওয়ার কথা গুলো মুক্তমনা সম্বন্ধে বলেছেন সেটা সত্য, কিন্তু মোটাদাগে বিষয়বস্তুর বৈচিত্রের কিছুটা অভাব রয়েই গিয়েছে বলে আমি মনে করি। আপনাদের অবদান সে অভাবগুলো দূর করবে বলেই আমি মনে করি।
আমি মডারেটরদের বলব আপনার জন্য ব্লগ একাউন্ট করে দিতে। একাউন্ট হয়ে গেলে নিজেই ছবি আপলোড করে দিতে পারবেন।
ধন্যবাদ আবারো।
@অভিজিৎ দা,
ধন্যবাদ। আমি এখন সাচ্ছন্দের সাথে মুক্ত বিচরণ করতে পারছি মুক্তমনায়। যাক, এরপরে ছবি যুক্ত করা যাবে। আমি টুকটাক ভ্রমন করে থাকি। চিত্রকলায় আগ্রহ আছে বলে, রোম-মিলান- ফ্লোরেন্স-ভেনিস এইসব শহরে মাঝে মাঝে যেতে হয় মাল মসলা সংগ্রহের জন্য। আগ্রহটাকে যদি ধরে রাখতে সমর্থ হই তাহলে মুক্তমনার পাঠকদের সাথে তা বিনিময় করা যাবে। ভাল লাগছে যে, আমি ছবিও যুক্ত করতে পারব এখন থেকে।
ধন্যবাদ পুনরায়।
যাক, শেষ পর্যন্ত শামীম ভাই মুক্তমনায় লেখা দিল! সাধারণত শামীম ভাইয়ের লেখাগুলো ছবিযুক্ত হয় (মানে ছবিব্লগ), আর তাঁর লেখা ও ছবির মধ্যে দারুণ একটা বৈচিত্র দেখা যায়। কিন্তু মুক্তমনায় সে এখনও সদস্য না থাকার কারণে ছবিগুলো এ্যাটাচ করা সম্ভব হয়নি। আশা করি আগামীতে তাঁর ছবিসহ লেখা দেখতে পাবো….
@জিল্লুর রহমান,
বছরখানেক হল আপনার সাথে পরিচয়, মাস চারেক এক সাথে থাকা। ধন্যবাদ জিল্লুর ভাই, আপনার আগ্রহেই মুক্তমনায় পদার্পণ। আমাদের বন্ধুতা দীর্ঘজীবী হোক। আপনাকে কিন্তু বছরখানেক হল ঠেলছি লেখালেখির জন্য। এইটা যেদিন বাস্তবায়িত হবে, জানবেন আমার মতন খুশী আর কেউ হবেনা!
-মনি শামিম
সচলে তো আপনার লেখা পাইলে আর মিস করিনা , যদিও মন্তব্য করা হয়নি কখনো , আর মুক্তমনায় আপনাকে দেখে আরো ভালো লাগলো , মুক্তমনায় স্বাগতম দাদা ! সারাদিনে দুটো ব্লগেই ঘুরি প্রিয় লেখকেরা দুই জায়গাই থাকলে ভালোই লাগে ।
@মহামান্য শয়তান,
ধন্যবাদ। কৃতজ্ঞতা জানাই রচনাটি পড়বার জন্য। সচলায়তনে আমি প্রথম লেখা শুরু করি বছরখানেক হল। ছবি তুলছি ২০০৯ সালের গোড়া থেকে। একেবারেই শিক্ষানবিস বলা চলে। তবে আলোকচিত্র ভালবাসি। এর ইতিহাস, দর্শন, অতীত- বর্তমান- ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবি। আঝে মাঝে ভাবনাগুলি প্রবন্ধের আকার পায়। চিত্রকলা নিয়েও আমার আগ্রহ রয়েছে। আশা রাখি সেগুলিও কোন একসময় আলোচনা আকারে আসতে পারে। আরেকটি বিষয়ে আমার আগ্রহ আছে, সেটি হল ফুটবল। তবে এখন পর্যন্ত এটি নিয়ে লেখার সুযোগ এবং সময় পাইনি।
আমি মুক্তমনা নিয়মিত ভাবে পড়ি তা নয়। ব্লগ পাঠের জগতে আমার বিচরণ অল্প কিছুদিন। কিন্তু আমি এই ব্লগের সম্ভাবনা এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে খুবই আশাবাদী। ব্লগে ধর্ম, বিজ্ঞান, সমাজ, শিল্প সাহিত্য নিয়ে যে আধুনিক বিশ্লেষণগুলি পাই তা এক কথায় অনন্য। লেখক সৃষ্টির ক্ষেত্রে ব্লগের ভুমিকা অসাধারণ। ব্লগ না থাকলে, লেখালেখির জায়গায় হয়ত আসাই হতনা!
আর ব্লগের মাধ্যমে সমমনা এত মানুষের সাথে অল্প দিনে পরিচয় হল, সখ্যতা হল যা বলবার নয়। অনেক অনেক বিজ্ঞানমুখী, আধুনিক এবং সংস্কারবিহীন মানুষের সাথে ঘনিষ্টতা হল শুধু ব্লগেরই সূত্র ধরে।
লিখি না লিখি, আপনারা আমরা একই পথের পথিক, মিছিলের সেই মুখ। চেনা হল, জানা হল, বন্ধুত্ব হল,এখন একসাথে হেঁটে চলা, হাতে হাত রেখে!
ভালো থাকুন। শুভেচ্ছা নিন।
-মনি শামিম