সারারাত ধরে পাশের ঘরে খুটখাট-ধুম-ধাম আওয়াজে ঘুমানো যায়নি। ৪ দিন আগে পাশের ঘর থেকে আমাদের প্রিয় বন্ধু কেনিয়ার জর্জ তার গার্লফ্রেন্ডকে নিয়ে নতুন ফ্ল্যাটে উঠে গেছে তাই ধারণা করছিলাম নতুন কেউ এলো। জাপানের নাগাসাকি কোকসাই কোরিও কাইকান( ইন্টারন্যাশনাল হস্টেল) এ তখন আমাদের একসাথে থাকার প্রথম দিনগুলি প্রবল প্রেমে-স্বপ্নে কাটছে। ফলতঃ পাশের ঘরের শব্দে আমাদের কোনো অসুবিধে হয়নি, আমরা বারান্দায় গিয়ে ২ বোতল বিয়ার নিয়ে দুজনের আড্ডা বসিয়েছি, আড্ডায় রাত কেটে সুন্দর সকাল এসেছে। আমার বর সকালে চোখ ডলতে ডলতে ল্যাব এ চলে গেছে, আমি আমার স্কুলে ফোন করে দিয়েছি শরীর খারাপ বলে।
-হাঁন জ়্বী ক্যায়সে হো?
বারান্দা পরিস্কার করতে গিয়ে পেছন থেকে মেয়ে কন্ঠের ডাকে তাকাই। ত্রিশের কোঠার মাথায় হিজাব পরা আমার সদ্য প্রতিবেশী ডাকছেন।
-আমি তাকাই। ভদ্রমহিলা আবার বলেন–আপ ইন্ডিয়া সে অঊর বাংলাদেশ সে?
আমি কেন যেন তাকিয়ে থাকি। এবার তিনি সুন্দর ইংরেজীতে বলেন,
– আমার নাম তাস্নিম, পাকিস্তান থেকে এসেছি। তোমাকে দেখে তো মনে হচ্ছে ইন্ডিয়া বা বাংলাদেশ থেকে এসেছ।
-আমি বাংলাদেশের, আপনি?
আমার প্রশ্নের জবাব না দিয়ে তিনি বলেন,’ তাহলে তো তুমি উর্দু জান, জবাব দিলে না যে?’
ছাত্রজীবনে আমাকে বিপদে পড়ে উর্দু শিখতে হয়েছে। রুমমেট লখনৌ এর সিদ্দিকা একটি ভাষায়ই সাবলীল ছিল- সে তার মাতৃভাষা উর্দু। ওর সাথে আমার চমৎকার কয়েকটি বছর কেটেছিলো যাদবপুরের লেডিস হস্টেলে। ওর সাথে সিনেমা দেখতে দেখতে, স্টাডি লিভ এ একত্রে রান্না করতে করতে, মন খারাপের, মন ভালোর গল্প বলতে বলতে আমি উর্দু-হিন্দি বলতে মোটামুটি শিখে গেছিলাম। কিন্তু সমস্যা হলো আমার পাকিস্তানী দেখলে অবচেতন মনে মাথার মধ্যে কী যেন হয়ে যায়। এই মহিলা যে ভেবেই নিল আমি যেহেতু বাংলাদেশের তাই উর্দু আমাকে জানতে হবে- এই চিন্তা আমার বিস্বাদ আরো বাড়িয়ে দিল প্রথম আলাপেই। আমি বললাম-‘ আমি তোমার ভাষা জানি, কিন্তু উর্দু বলতে পছন্দ করি না!’ ভদ্রমহিলার ভ্রু কুঁচকে গেল। কথাবার্তাও এগুলোনা সেদিন আর।
আমাদের দারুন ব্যস্ত জীবনে আসলে কিছুদিন ভুলেই গিয়েছিলাম পাশের ঘরে পাকিস্তানী প্রতিবেশীর উপস্থিতি। আমরা বেরোতাম খুব সকালে, ফিরতাম সন্ধ্যায় তাই সুযোগ ও ছিল না দেখা সাক্ষাতের। ইংরেজী নববর্ষের পার্টিতে আবার তার সাথে দেখা। বেছে বেছে আমার পাশে এসে বসলেন।
-তুমি যে কোথায় থাকো, দেখিই না!
-আসলে খুব ব্যাস্ত থাকতে হয়।
তাসনিম এর আন্তরিকতায় আমার একটু লজ্জ্বাই লাগল। প্রথমদিন মনে হয় খুব ভাল ব্যবহার করিনি ওর সাথে। তাছাড়া আমি নিজে বুঝি আমাদের মতন পারিবারিক কাঠামো ছেড়ে একটি মেয়ে যখন বিদেশে স্বামীর সাথে থাকতে চলে আসে, তখন তার একেকীত্ব কঠিন হয়ে যায় খুব। এই একাকীত্ব একসময় আমি বয়েছি, তাসনিম এর নিশ্চই সেই সময় চলছে…আমার নিজেরই ওর খোঁজ-খবর নেয়া উচিৎ ছিল।তাছাড়া ওর ব্যাকগ্রাউন্ড তো আমি কিছুই জানিনা। এটুকু শুধু বোঝা যায় যে ও যথেষ্ট শিক্ষিত। এরপর আমরা অনেক কথা বলেছি নিজেদের সম্পর্কে। তাসনিম আসলেই একাকীত্বের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, কিছু একটায় ঢুকে যেতে চাচ্ছে, কাজ হোক বা পড়াশুনা। আর কোনোকিছু না হলে তারা ঠিক করেছে একটা বাচ্চা নিয়ে নেবে। এ পর্যন্ত ঠিকঠাকই চলছিল। আমার বর আমাদের টেবিলে রেড ওয়াইন নিয়ে এসে হাজির হলে শুরু হয় বিপত্তি। গ্লাস রেখে ও চলে গেলে তাসনিম হঠাৎঅই আমায় জিজ্ঞেস করে ওঠে-‘তুমি মদ খাও, মুসলমান মেয়ে হয়ে তুমি মদ খাও!’
আমি বলি,’ এটা তো ব্যক্তিগত পছন্দের ব্যপার।’
-তুমি কি জান এর জন্য মৃত্যুর পরে তোমার কি ধরণের শাস্তি হবে?
-শুনেছি কিছুটা! তবে বিশ্বাস করিনি। মানে করিনা আর কি!
-বিশ্বাস করোনা! তুমি কি মহাগ্রন্থ আল-কুরআন পড়েছো?
-পড়েছি।
তাসনিম এর চেহারা এবার দেখার মতন হয়। আমাদের কথা আর এগুবার মতন কোনো কারণ থাকে না।
(চলবে)
পড়ছি জানিয়ে গেলাম
পাকিস্তান এমন একটা শব্দ যেটা শুনলেই আমার মাথা খারাপের মত হয়ে যায়। যে জাতি আমাদের উপরে ইতিহাসের বর্বরতম অত্যাচারের নজির স্থাপন করেছিল এবং এর জন্য তারা বিন্দুমাত্র লজ্জিত নয়, তাদের সম্মোধন করার আগে আমাদের যদি সম্মানের কথা ভাবতে হয় তো আমি বলব ঐ সম্মানের মুখে আমি থুথু মারলাম।
জানি এর মধ্যে হয়তবা যুক্তির কোন ছোয়া নেই, কিন্তু এই একটা ব্যাপারে আমি অন্তত যুক্তি খুজব না।
@সাইফুল ইসলাম, সহমত ।
শুধু মাত্র উর্দু ভাষা-ভাষীরাই না, হিন্দী ভাষা-ভাষীরাও আশা করে আমরা তাদের সাথে তাদের ভাষায় কথা বলব। এ রকম পরিস্হিতিতে কয়েক বার নয় কয়েকশ’ বার পড়েছি। আর বাংলাদেশীদেরও দেখেছি, তারা এদের সাথে সেভাবেই কথা বলে। কখনো বলেনা যে আমি হিন্দী-উর্দু জানিনা, বাংলা বা ইংরেজীতে কথা বলো।
আর আমার ক্ষেত্রে আরেক কাঠি উপরে; সাউথ আমেরিকান বা হিস্পানিকরা আমাকে দেখলেই স্প্যানিশ বলা শুরু করে। 🙁
@আইভি,
কথা পুরোপুরি সত্য।
টেক্সাস ফ্লোরিডায় থাকলে হাবলা স্পেনল আরো ভালভাবে টের পাওয়া যায়।
গল্পটি পরে ছোট বেলার একটা কথা মনে পড়ে গেল, আমাদের মাদ্রাসায় কিছু পাকিস্তানী পড়ত, তাদের কে আমরা মাউরা বলতাম, কি কারণে ওদেরকে আমরা এক্টুও সহ্য করতে পারতাম না তা জানিনা, হয়তবা সংখালঘু দেখে আমরা দাপট দেখাতাম, ওদেরকে মাউরা বললে খুব খেপে যেত, এরুপ সমস্যার কারনেই হুজুর রা ওদেরকে আলদা থাকতে বলেছিল, আমরা সুযোগ পেলেই খেপাতাম, একটা ছেলের নাম ছিল আশার, মানে দশ, ওকে বলতাম মাউরা তুই তো দশটা বিয়া করবি, তাই তো্র এরকম নাম, একদিন ওরা দূরে খেলছিল, ওদের বল্টা আমাদের কাছে আসে, কোন কারন ছাড়াই বল্টা আমরা নষ্ট করে ফেলি, ওরা আসলে আমরা মারপিট ও করি, মনে আছে আশার সেদিন বলেছিল হাম মাউরা নেহি, হাম ইন্সান হু, সেদিন বুঝিনি ইন্সান কি জিনিস বা এর মুল্য কি।
আজ আমরা নানা কারনে মানুষকে অপছন্দ করি, অতীত শক্রুতা, মতের ভিন্নতা, বিশ্বাসে অন্ধ ভক্তি, জ্ঞানের গরিমা আমদেরকে ভুলিয়ে দেয় সবকিছুর পরো মানুষ বলে কিছু আছে, অভিজিৎ দা এরকম একটি মন্তব্য না করলে আমারও চোখে পড়ত না। লেখিকার কোন ভুল নয়, সকল ক্ষেত্রে এরকম সুক্ষ দৃষ্টি থাকলে এ পৃ্থিবী আরো সুন্দর হবে।
পরের পর্বগুলর প্রত্যাশায় রইলাম।
@anas,
আপনার মন্তব্যগুলো বেশ সুচিন্তিত। কিন্তু বানানে এত ভুল বা টাইপো থাকে যে চোখে লাগে। আশা করি কিছু মনে করবেন না, আমাদের সবারই বানা্ন ভুল হয়। কিন্তু ভুলের সংখ্যাটা একটু কমিয়ে না আনলে আমার মনে হয় লেখকের ক্রেডিবিলিটি বিনা কারণেই ক্ষুন্ন হয়।
@রাহাত খান,
বানান নিয়ে কিছু সমস্যা আছে আমার, আমি অনেকদিন ভূল লিখেছি, এখনো ঠিক ভুল লিখেছি কিনা সন্দেহ, তবে কেউ যদি বানান ভুল নিয়ে সাহায্য করতে আগ্রহী হো্ন, তবে মন্তব্যের সাথে দুই একটা ভুল ধরিয়ে দিলে উপকৃ্ত হব, যতটা সম্ভব হলেও আপত্তি নেই 😀
@anas,
ধন্যবাদ আপনাকে ভালোভাবে কথাটা নেওয়ার জন্য। আসলে কোন সাইটে অনেক বানান ভুল বা টাইপো থাকলে তার মান মনে হয় অযথাই কমে যায়। নীচে কয়েকটা উদাহরণ দিলাম…
এক্টুও, সংখালঘু, এরুপ, আলদা, বল্টা, পড়ত, শক্রুতা, মুল্য, সুক্ষ, পর্বগুলর,
ধন্যবাদ আবারও…
পরের পর্বটাও তাড়াতাড়ি দিয়ে দিন!
ত্রিশের কোঠার মাথায় হিজাব পরা আমার সদ্য প্রতিবেশী ডাকছেন। :rotfl:
শুধু বোঝা যায় যে ও যথেষ্ট শিক্ষিত। :lotpot:
জমবে ভালো এটুকু বুঝা যায়।
@মাহবুব সাঈদ মামুন,
শুধু হিজাব পরলেই কিন্তু কারো বিদ্যা, যুক্তিবোধ পুরোপুরি বোঝা যায় না।
হিজাব ধর্মীয় কারন ছাড়াও অনেক কালচারের পার্ট হিসেবেও কেউ কেউ পরে থাকে। দেখা যায় যে বাস্তব জীবনে এরা ধর্মের আর কিছুই পালন করে না।
@আদিল মাহমুদ, আমার ইউনিভারসিটি তে freethought society এর হেড একজন হিজাবি। তাই হিজাবি মানেই ইসলামি নয়।
@anonymous,
সেটাই বলতে চেয়েছি। খ্রীষ্টানদেরও কিছু সেক্ট আছে যারা অর্থডক্স তারাও হিজাবের মত কি যেন পরে। শুধু হিজাব পরা দিয়ে কিছু বলে ফেলা ঠিক না।
@anonymous,
“আদিল মাহমুদ, আমার ইউনিভারসিটি তে freethought society এর হেড একজন হিজাবি। তাই হিজাবি মানেই ইসলামি নয়।”
ইসলামী হয়তো নয় কিন্তু ফ্রীথিঙ্কার কীভাবে, আমি সেটি বুঝলাম না।।
উইকি ইসলামে লিভিং ইসলামের টেস্টিমনি থেকে আমার ই-মেইল এড্রেস সংগ্রহ করে আমাকে হেদায়াত করার জন্য চ্যাটের আমন্ত্রণ দেয় এক পাকিস্থানি যুবক। আমি রাজি হলাম। আমি পাকিস্থান সম্পর্কে জানতে চাইলে ও বললো-PAKISTHAN IS THE IMAGE OF ISLAM, মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে আলোচনায় আসলে বললো- IT IS BIG MISTAKE OF SHEIKH MUJIBUR ROHMAN আর ধর্ম নিয়ে কিছুক্ষণ আলাপ করার পর যা বললো – SHUT UP STUPID. I WILL KILL U MURTHAD BYE
মণিকা রশিদ চমৎকার সূচনা করেছেন। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
@সৈকত চৌধুরী,
আমার প্রবাস জীবনে অনেক পাকিস্তানীর সাথেই ওঠাবসা করতে হয়েছে। আপনার উদাহরন বেশ কমন ট্রেন্ড। এক পাকিস্তানীকে এও বলতে শুনেছি যে পাকিস্তান আছে বলেই ইসলাম এখনো টিকে আছে 😀
বংগবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কেও একই কথা। তবে যারা একটু উদার তারা অন্তত স্বীকার করে যে তাদের দোষ ছিল, যদিও হিন্দু ভারতের সহায়তায় মুসলমান পাকিস্তান ভাঙ্গা কোনরকমেই মানে না।
ধর্ম আলোচনা তাদের সাথে না করাই ভাল।
তবে সাধারণভাবে পাকিস্তানীদের যেটা আমাকে মুগ্ধ করে তাহল তাদের দেশের সব গোলযোগের দায় অন্যের ঘাড়ে চাপানোর অসাধরন মেধা। ৭১ এর দেশভাগ ভারতের ষড়যন্ত্র, বর্তমান সন্ত্রাস, রাজনৈতিক দূর্ণীতি, সামরিক শাসন সবই পাশ্চাত্যের ষড়যন্ত্র। এই মানসিকতা থেকে বুঝি যে তাদের সমস্যার আশু কোন সমাধান নাই।
@আদিল মাহমুদ,
আপনাকে ধন্যবাদ। একাত্তরের গণহত্যা সম্পর্কে পাকিস্থানি লোকটা বলেছিল-
তাকে কি বলব খুঁজে পাই নি।
@সৈকত চৌধুরী,
আসলেই, এদের সাথে তর্কে নামার কোন অর্থ হয় না। সেজন্যই বলেছিলাম যে ভোগানি শেষ হতে এখনো অনেক দেরী আছে।
যারা নিজের ভুল তো স্বীকার করেই না উল্টো গলাবাজী করে তাদের আর কি হবে।
মণিকা, মুক্তমনায় সুস্বাগতম :rose:
মানিক ভাই, এখানে আপনাকে পেয়ে খুব ভালো লাগছে।
আরে মনিকা আমি তো এখানে আছি পাঁচ বছর ধরে । অর্ন্তজালে আমার লেখালেখি মুক্তমনা দিয়েই সূচনা । অভি আর নন্দিনীর উৎসাহ আর তাগিদেই লেখালেখিতে ফিরে এসেছিলাম ।
@নুরুজ্জামান মানিক,
জানি তো মানিক ভাই, আপনাকে বলেওছিলাম যে মুক্তমনায় আপনার লেখা পড়েছি অনেক।
শিরোনামে পাকি শব্দটি এমন সুন্দর গুরুত্তপূর্ণ প্রবন্ধটিকে কিঞ্চিত হলেও হালকা করে দেয়।
@আকাশ মালিক,
আপনার মন্তব্যের উত্তর হিসেবে বলছি, ভুল বোঝাবুঝির মধ্যে আমি যেতে চাইনা , তাই নামটি পরিবর্তন করে দিচ্ছি।
মনিকা, অন্য ব্লগে আপনার লেখা পড়েছি। মুক্তমনায় দেখে সত্যই ভাল লাগছে। সুস্বাগতম।
আপনার গল্পের সূচনাটা দারুণ হয়েছে। মনে হলো চোখের সামনে ঘটনাগুলো দেখতে পেলাম। বোঝাই যাচ্ছে তাসনিম এর সাথে বহুভাবেই ঠোকাঠুকি লেগেছে 🙂 । এই পর্বে কেবল শুরুটা বুঝলাম। পুরো গল্প জানার আগ্রহ রইলো। আশা করছি বাকী পর্বগুলো তাড়াতাড়িই দেবেন।
কেবল একটা ব্যক্তিগত মতামত দেই। ‘পাকি’ শব্দটা আমার পছন্দ নয়। পশ্চিমে এটা জাতিবিদ্বেষী শব্দ হিসেবেই ব্যবহৃত হয়। ধরুন কেউ যদি লিখতো ‘আমার মালু প্রতিবেশী’ কিংবা ‘মাই নিগ্রো ফ্রেন্ড’ তাহলে যেমন আমরা সবাই অপমানবোধ করতাম, এটাও ঠিক তেমনি। জানি, ১৯৭১ সহ বহু জায়গাতেই পাকিস্তানের প্রতি আমাদের ঘৃণা জমা হয়ে আছে, কিন্তু তার পরেও পুরো জাতি তুলে ‘পাকি’ বলে গালাগাল দেয়াটা আমি আসলে ঠিক মনে করি না। তসনিমের মত চীজ আসলে কম বেশি সব জায়গাতেই আছে, পাকিস্তানে হয়তো একটু বেশিই। তারপরেও যদি শিরোনাম থেকে ‘পাকি’ শব্দটি পরিবর্তন করাটা কোন অপশন মনে করেন, তবে খুব খুশি হবো।
মুক্তমনায় লেখার জন্য ধন্যবাদ।
@অভিজিৎ,
অভিজিৎ দা, আপনার মন্তব্য পেয়ে ভালো লাগছে সে প্রথমেই বলি। পাকি শব্দটি কিন্তু তাসনিম নিজেই অনেকবার ব্যবহার করেছে( পবিত্র স্থানের মানুষ- এই অর্থে হয়ত) সে প্রসঙ্গে পরে আসব। এই শব্দটি যে গালি হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে সেটি আমার আসলেই মনে ছিল না। এখানে ভুল বুঝবার অবকাশ নিশ্চই আছে- আমি তার মধ্যে যেতে চাই না বলেই নামটি পরিবর্তন করে দিচ্ছি।
@মণিকা রশিদ,
অনেক ধন্যবাদ – অনুরোধটি রাখার জন্য।
@অভিজিৎ,
মণিকা মুক্তমনায় নতুন কেউ নন। অন্তর্জালে মণিকার লেখালেখির সূত্রপাত খুব সম্ভবত মুক্তমনা দিয়েই। মুক্তমনায় মণিকার প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয়েছিল এখন থেকে বছর তিনেক আগে। মাঝে বেশ কিছুদিন মুক্তমনায় লেখালেখি করেননি বলে হয়তো মুক্তমনায় নতুন মনে হচ্ছে। মুক্তমনায় প্রকাশিত মণিকার কিছু লেখার লিংক নিচে দিয়ে দিলাম।
http://blog.mukto-mona.com/?p=1314
http://www.mukto-mona.com/Articles/Monika_Rashid/papon.htm
http://www.mukto-mona.com/Articles/Monika_Rashid/na.pdf
ব্লগে প্রকাশিত মণিকা রশিদের আগের লেখাটি তার নিজস্ব ব্লগের আওতায় আনা হল।
@অভিজিৎ,
আমি সম্পূর্ণ দ্বিমত পোষণ করছি। মনিকা পাকি শব্দটা ব্যাবহার করে ওখানে একদম নিখু্ত লিখেছে। এটা সাহিত্য-প্রবন্ধ না। পাকি, দেশী-শব্দ গুলির মধ্যে যে একটা শ্লেষার্থ থাকে, তাই ওই বাক্যে যথাযত-কারন লেখিকা মনোলগে লিখছেন এবং পাকিস্থানের প্রতি তার মনোভাবও সেখানে ন্যাস্ত। ওখানে পাকি না লিখে পাকিস্থানি লিখলে সাহিত্যের ভার কমবে।
সাহিত্যের কাজ বাস্তবতার সন্ধান-প্রতিটা বাক্যে সেই বাস্তবতাকে আঁকা-যা পাকি শব্দে এখানে অনেক বেশী পরিস্কার। সাহিত্যে লেখিকার দায়িত্ব বাস্তবতা আর সত্যের প্রতি-সৌজন্য দেখিয়ে প্রব্ন্ধ হয়, সাহিত্য হয় না।
মণিকা,
স্বাগতম মুক্ত-মনায়।
পাকি চরিত্র বিশ্লেষণ মনে হচ্ছে জমবে ভাল, বিশেষ করে যার সাথে যুক্ত হচ্ছে রাজনৈতিক ধারণা। যেমনঃ
অপেকষায় থাকব পরবর্তী পর্বের জন্যে।
@গীতা দাস,
আপনাকে ধন্যবাদ। আমি আসলে আমার দেখা পাকিস্তানী একটি সাধারণ শিক্ষিতা মেয়ের জীবন নিয়ে বলতে চেয়েছি। আমাদের দুই দেশের মানুষের সরল সাধারণ সম্পর্কও রাজনীতির উর্ধ্বে উঠতে কোনোদিন পারবে না বলেই আমার বিশ্বাস।কিন্তু তারপরও মানুষ হিসেবে বা বলা ভালো একটি মেয়ে হিসেবে এই মেয়েটিকে বোঝার চেষ্টা আমি করতে চেয়েছি, জানিনা কতটুকু পেরেছি বা পরবর্তী লেখায় তা উঠিয়ে আনতে পারার ক্ষমতা আমার রয়েছে কি-না।