শীতের ছুটি যত ঘনিয়ে আসে ততই আমাদের সুইডেনের ছোট্ট শহর গথেনবার্গ থেকে বিভিন্ন দেশের বন্ধুরা নিজ নিজ দেশে ফিরে যাবার জন্য প্রস্তুতি নিতে থাকে। আমি আর আমার রুমমেট আলাভীর ছুটির এই এক মাসে কোথাও যাবার আপাতত কোন পরিকল্পনা নেই। আমি যদিও ছুটির প্রায় শেষের দিকে এক সপ্তাহের জন্য সুইডেনের নর্থে যাব, কিন্তু আলাভী সেখানে আমার সাথে যাচ্ছে না। ছুটি যত ঘনিয়ে আসে, আমার বেচারি রুমমেট তত অস্থির হয়ে যায়, আর বিড়বিড় করে বলে যেতেই থাকে- কোথাও একটা যেতে হবে, কোথাও যেতেই হবে। কিন্তু, কোথায় যাব! ইউরোপিয়ান বন্ধুরা সবাই নিজের পরিবারের কাছে যাচ্ছে। আমাদের পরিবারতো আরেক মহাদেশে!
যখন প্রায় মেনেই নিচ্ছি এই গথেনবার্গের মাইনাস বিশ ডিগ্রিতে ঘরে কাঁথা মুড়ি দিয়ে এক মাস সিনেমা দেখা ছাড়া আর কিচ্ছুই করার নাই, ঠিক তখনি আমাদের ফরাসি বান্ধবী এমিলি দ্যুবো এক অসাধারণ প্রস্তাব দিলো। ওর পরিবারের সাথে ছুটির শেষের দিকে আট-দশদিন থাকতে পারবো, ওর জার্মান-ফ্রান্স সীমান্তবর্তী শহর ফোবাক্ থেকে ঐ কদিনে বেশকটা ফ্রান্সের শহর ঘুরে দেখব। প্রতিদিন ভোর বেলা ট্রেনে করে বিভিন্ন শহরে যাব, তাই কোন হোস্টেলে থাকতে হবে না; প্রতিরাতে আবার ওর বাসাতে ফিরে আসব আমরা, খাওয়া-দাওয়া-থাকা ফ্রি। শুধু উড়াল দিয়ে জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্টে যেতে হবে আমাদের। তারপর এমিলির বাবা-মা আমাদের এয়ারপোর্ট থেকে তুলে নিবেন! আমি-আলাভী কোন হিসাব নিকাশ না করেই সাথে সাথে রাজি। বাসায় এসে দুইজন গথেনবার্গ-ফ্রাঙ্কফুর্ট-গথেনবার্গ টিকেট কিনেই দেখি টাকা পয়সা প্রায় সব শেষ। এখন এমিলির বাসা থেকে অন্য শহরে আসা-যাওয়া করব কি করে! দুইজন মিলে বাকি কদিন টেনেটুনে ঠিক ঠিক আরো কিছু টাকা জমিয়ে ফেললাম। ঠিক করলাম এইবার ট্যুরে কোন সুভেনিয়র কিনব না, পানি-রুটি কিনে দশ দিন চালিয়ে দিব। অবশেষে, নতুন বছরের দুইদিন আগে শুরু হল আমাদের হঠাৎ প্ল্যান করা সেই ট্যুর।
ঠিকই কোন সুভেনিয়র কিনি নি আমরা! ছোট একটা ডিজিটাল ক্যামেরা নিয়ে ঘুরে বেড়িয়েছি শহর থেকে শহরে। যদিও শুধু রুটি-পানি খেয়ে থাকতে হয় নি। এমিলির বাবা মা আমাদের কি পরিমাণ সাহায্য করেছেন, ভালবাসা দিয়েছেন তা বলে বোঝানো যাবে না। তিন ঘন্টা ড্রাইভ করে আমাদের আরেকদেশের এয়ারপোর্ট থেকে তুলে এনেছেন, প্রায় প্রতি ভোরে দুই ঘন্টা ড্রাইভ করে “মেটজ” শহরের স্টেশানে পৌঁছে দিয়েছেন, আর হেন কোন ফরাসি খাবার নাই যা তারা রান্না করা বাকি রেখেছেন। প্রতিদিন সকালে মিসেস দ্যুবো আমাদের খাবার তৈরি করে দিতেন যাতে বাইরে খাবার কিনে অযথা টাকা নষ্ট না হয়! কোথাও হারিয়ে গেলে যাতে ন্যূনতম ফরাসি ভাষায় কথা বলে সাহায্য নিতে পারি তাই অনেক নোট লিখে দিতেন মিস্টার দ্যুবো। অতিথিপরায়ণ এই ফরাসি পরিবার আমাদের যেই আদর করেছে তার সাথে কোন কিছুর তুলনাই হয় না। “দ্যুবো” পরিবারের কল্যাণে আমার আর আলাভীর একটি নয় দুটি নয়, দেখা হলো পাঁচ পাঁচটি শহর- প্যারিস, স্ট্রাসবুর্গ, মেটজ, এমিলির নিজ শহর ফোবাক্ আর জার্মানীর জারবুকেন।
আমরা ফ্রান্সের প্রথম যেই শহর ঘুরতে যাই সেটা হলো দুই হাজার বছর পুরোনো শহর- স্ট্রাসবুর্গ। খ্রিস্টের জন্মের মাত্র বারো বছর আগে রোমানরা স্ট্রাসবুর্গে নতুন শহর স্থাপণ করে। এটি কখনো রোমানদের হাতে, কখনো জার্মানদের হাতে বা কখনো ফরাসিদের হাতে ঘুরতে থাকে। কেউ এই শহর সহজে ছেড়ে দিতে চায় না। ইল নদীর তীরে অসংখ্য ক্যানালে ভরা পুরোনো এই শহর। এর অনেক নাম- সিটি অভ ক্যানাল, দ্যা ইউরোপিয়ান সিটি, ক্যাপিটল অভ ক্রিসমাস, দ্যা সিলভার সিটি, ইত্যাদি।
আমরা ফোবাক্ থেকে দ্রুতগামী ট্রেইনে এক ঘন্টা পনের মিনিটে একশ পঁচিশ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে পৌঁছে গেলাম স্ট্রাসবুর্গে। ফরাসির আন্তঃনগর অনেকগুলো ট্রেইন পৃথিবীর সবচেয়ে দ্রুত ট্রেইনগুলোর মধ্যে পড়ে। “বুলেট ট্রেইন” থেকে নেমেই একটু অবাক হয়ে গেলাম। স্ট্রাসবুর্গের এই ট্রেইন স্টেশান দেড়শ বছরের পুরোনো। কিন্তু, এই স্টেশানের কোন অংশ খুবই পুরোনো ডিজাইনের তো ঠিক তার পাশেই আধুনিক চলন্ত সিঁড়ি, অত্যাধুনিক মেশিন- স্ক্যানার। সবই তাও কেমন যেন খাপ খেয়ে যাচ্ছে। স্টেশান থেকে বের হতেই উঁচু দেয়ালে অতি পুরাতন বিশাল এক ঘড়ি ঢং ঢং করে জানিয়ে দিল সকাল আটটা বেজে গেছে। এমিলি দেখি উসখুশ করে এদিক ওদিক কি যেন খুঁজে যাচ্ছে, একটু পর বোঝা গেল কাকে খুঁজচ্ছে! স্টেশনের বাইরে রাস্তার ওপারে দেখি আমাদের সারপ্রাইজ দিতে জার্মানি থেকে ড্রাইভ করে চলে এসেছে আমাদের আরেক বন্ধু ম্যাটিয়াস উরফে ম্যাট। আমরা সবাই মহানন্দে স্টেশন থেকে বের হয়ে স্ট্রাসবুর্গের ব্যস্ততম রাস্তা দৌঁড়ে পার হই। হঠাৎ পিছে ঘুরে হতবাক হয়ে গেলাম! দেড়শ বছরের পুরোনো ঐ স্টেশন কোথায় গেল! এতো রীতিমত গ্লাস-স্টিলে মোড়ানো স্টেডিয়ামের মত গোলাকৃতির এক বিশাল ভবন। আমার বাকরূদ্ধ চেহারা দেখে এমিলি হাসতে হাসতে বলে, “রাতের বেলা ফিরে যাবার সময় তুমি বুঝবে ওই পুরোনো স্টেশান আসলে কই গেল!” আমি ওর কথার আগামাথা কিছু না বুঝে রওয়ানা দিলাম স্ট্রাসবুর্গের বিখ্যাত প্রায় ছয়’শ বছরের পুরোনো ক্যাথেড্রালের দিকে- নটরডেম দো স্ট্রাসবুর্গ।
- সকালবেলা স্ট্রাসবুর্গের প্রধান স্টেশান এবং ক্যাথেড্রালের সামনে থেকে তোলা ছবি
যদিও এই ক্যাথেড্রালের বয়স ছয়শ বছর, কিন্তু প্রায় এক হাজার বছর আগে এই চার্চের গোড়াপত্তন হয় রোমানদের দ্বারা। প্রথমে সম্পূর্ণ রোমান ইম্পেরিয়াল আর্কিটেকচারে নির্মাণের পরিকল্পণা থাকলেও প্রায় কয়েক’শ বছর ধরে নানান পরিবর্তণ ও পূণনির্মাণের পর অবশেষে ১৪৩৯ সালে এটির মূল ভবন গথিক ভিক্টোরিয়ান ডিজাইনে নির্মাণ শেষ হয়। মধ্যযুগের অন্যতম এক নিদর্শন এই ক্যাথেড্রাল। এর প্রধান ফটকের সূক্ষ্ম মূর্তিগুলো একাধিক শতকের ইতিহাস ও শিল্পকলা তুলে ধরে। ১৬৪৭ সাল থেকে ১৮৭৪ সাল পর্যন্ত এটি ছিল পৃথিবীর উচ্চতম ভবন। কখনো আগুনে পুড়ে সম্পূর্ন ধ্বংস হয়ে গেছে এই ভবন, কখনো বিদ্ধস্ত হয়েছে যুদ্ধে। বহুবার একে পূণনির্মাণ করা হয়েছে। সর্বশেষ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ১৯৪৪ সালে এই চার্চ মিত্রবাহিনীর বোমার আঘাতে জর্জরিত হয়। স্ট্রাসবুর্গ-এর পুরোনো শহর এই ক্যাথেড্রালকে ঘিরেই তৈরি হয়েছে, তাই আক্ষরিক অর্থেই শহরের মধ্যখানে এই ভবন। অনেক দূর থেকেও এই ভবনের কোন না কোন অংশ দেখা যায়।
আমি ছবির পর ছবি তুলেই যাচ্ছি, উদ্দেশ্য পুরো ক্যাথেড্রালকে এক ফ্রেমে আনা। কিন্তু, যতই হেঁটে হেঁটে ক্যাথেড্রালের কাছে যাচ্ছি, ততই যেন এটি ঢাকা পড়ে যাচ্ছে অন্য ভবনের পিছে। ক্যাথেড্রালের একদম সামনে এসেও যখন মন মত কোন ছবি তুলতে পারলাম না, তখন রাস্তায় প্রায় সটান হয়ে শুয়ে গিয়ে পুরো ভবনের ছবি তোলার চেষ্টা করে গেলাম। হঠাৎ মনে হলো মানুষ নিশ্চয়ই আমাকে পাগল ভাবছে। একটু লাজুক হয়ে, আসে-পাশে তাকিয়ে দেখি আমার মত অনেক টুরিস্টই নানারকম হাস্যকর ভঙ্গিতে ছবি তোলার চেষ্টা করছে। অসাধারণ এই ভবনের প্রতিটি ইঞ্চি যেন প্রাণবন্ত শিল্প। এমিলি যদি আলাভী আর আমাকে টেনে ভিতরে না ঢুকাতো তাহলে হয়তো এর সামনেই আমাদের সারাদিন কেটে যেত।
ভিতরে ঢুকে মুগ্ধ হব এটাতো অজানা কিছু ছিল না। গথিক পুরোনো ক্যাথেড্রালগুলো সবই ভিতরে কেমন যেন ভৌতিক অন্ধকার। তবুও, একটা সৌম্যভাব মনকে শান্ত করে দেয়। ক্যাথেলিক চার্চের নির্মাণশৈলীর উদ্দেশ্য হয়তো এটাই- “আমার বিশালতা দেখে ভীত হও, তবুও আমার নিরবতায় শান্ত হয়ে যাও”। বহু শত বছরের ঐশর্য্য দিয়ে সাজানো এই ক্যাথেড্রাল। অনেক উঁচুতে বারশো শতকের রঙ্গিন কাচের বিশাল জানালা দেখে মনে মনে প্রশ্ন জাগে এত বছর আগে কি করে নির্মাণ করেছে এগুলো। এই চিন্তা মন থেকে যেতে না যেতেই চোখ পড়ে যায় বিশাল এক সঙ্গীতযন্ত্রে, একটি তেরশো শতাব্দীর পাইপ অরগান আরেক দেয়াল জুড়ে ঝুলে আছে। আমি মহানন্দে ছবি তুলে যাচ্ছি, এখানে ছবি তোলার সম্পূর্ণ অনুমতি আছে, শুধু ক্যামেরায় ফ্ল্যাশ ব্যবহার নিষেধ। আধো অন্ধকারে ছবি আরো ভুতুড়ে হয়ে উঠে, কিন্তু, আমি দমে যাবার পাত্র নই। ক্যাথেড্রালের ভিতরের বিভিন্ন শতকের অসাধারণ ভাস্কর্যের একটার পর একটা ছবি তুলে যাচ্ছি। একটি চৌদ্দশো শতকের বিখ্যাত ভাস্কর্য হলো “ক্রাইস্ট অন মাউন্ট অভ অলিভ,” এই ভাস্কর্যের উপর আঠারশো শতকে যিশুর ক্রস সহ একটি বিশাল মূর্তি সংযোগ করা হয়। ক্যাথেড্রালের আরেকটি অমূল্য রত্ন হলো আঠারশো শতকের একটি অ্যাস্ট্রনমিক্যাল ঘড়ি, যেটির মূল সংস্করণ তৈরি হয়েছিল তেরশো শতকে। উল্লেখ্য, পৃথিবীর সবচেয়ে পুরোনো, কিন্তু, এখনো চলছে এমন একটি অ্যাস্ট্রনমিক্যাল ঘড়ি চেক রিপাব্লিকের প্রাগ শহরে আছে যা কিনা চৌদ্দশো শতকে তৈরী। অর্থটা দাঁড়ালো, স্ট্রাসবুর্গের এই ক্যাথেড্রালের আদি ঘড়ি প্রাগের আরো একশ বছর আগে তৈরি হয়েছিল। কিন্তু, সময়ের তাড়ণায় স্ট্রাসবুর্গের ঐ ঘড়ি নষ্ট হয়ে যায়, যে কারণে আঠারশো শতকে এই ঘড়ি পূণনির্মাণ করা হয়। কথিত আছে, প্রাগের ঘড়ির মত স্ট্রাসবুর্গের এই আদি ঘড়ির নির্মাতারও চোখ উপড়ে ফেলা হয়। এই অ্যাস্ট্রনমিক্যাল ঘড়ির ঠিক বাম দিকেই বিশাল কাঠের উপর খোদাই করা অনন্য সুন্দর এক পিলার, বারশো শতকের বিখ্যাত এই পিলারের নাম “পিলার অভ এঞ্জেলস।”
- ক্যাথেড্রালের ভিতরে ক্রাইস্ট অন মাউন্ট অভ অলিভ, অ্যাস্ট্রনমিক্যাল ঘড়ি এবং পিলার অভ এঞ্জেলস
ক্যাথেড্রালের ভিতর দেখার পর এখন উপরে উঠার পালা। সিঁড়ি দিয়ে উঠার সময় দেখি তিন ইউরো দিয়ে টিকিট কেটে উঠতে হবে। দ্যুবো পরিবার ধর্মহীন পরিবার। সাধারণত এমিলি এরকম ক্যাথেলিক চার্চকে টাকা দিয়ে উপরে উঠে না। তার ভাষ্যমতে, “চার্চের তো টাকার অভাব নাই”! তারপরেও, সে নিজেই উৎসাহ দিল টিকিট কাটতে। স্ট্রাসবুর্গ নাকি দেখার জন্য এর চেয়ে আর ভাল কোন জায়গা নেই। টিকিট কেটে আঁকাবাঁকা, ঘুরানো সিঁড়ি দিয়ে উঠতে উঠতে এমিলি আচ্ছা করে অরগানাইজড রিলিজিয়ন আর ক্যাথেলিক চার্চ-এর টাকার লোভ নিয়ে খুব রাগ ঝাড়লো। ম্যাট চুপচাপ শুনে গেল, ধর্মীয় বিষয়ক তর্ক সে পারতপক্ষে এড়িয়েই চলে। সে নিজে প্রটেস্টাইন, আর প্রটেস্টাইন চার্চগুলোর জৌলুশ সাধারণত ক্যাথেলিক চার্চ থেকে একটু কমই হয়। মজার ব্যপার হলো এই ক্যাথেড্রাল একসময় অল্প সময়ের জন্য প্রোটেস্টাইন চার্চের অংশ ছিল, কিন্তু, পরে আবারো ক্যাথেলিক চার্চের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। জোর যার রাজ্য তার। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এই চার্চে হিটলারও একবার এসেছিলো, এবং এটিকে সকল জার্মানদের জাতীয় সম্পত্তি হিসেবে ঘোষণা দিয়ে কুক্ষিগত করতে চেয়েছিলো। সিঁড়ি দিয়ে উঠতে উঠতে মনে হলো এই দেয়ালের ফাঁক দিয়েই হয়তো একদিন লোলুপ দৃষ্টিতে হিটলার তাকিয়ে দেখেছিল পুরো স্ট্রাসবুর্গকে!
- ক্যাথেড্রালের উপরে উঠার সময় শহরের বিভিন্ন ছবি
মেঘ ভেদ করে সূর্য্য ততক্ষণে আকাশে উঠে গেছে। ছাদে পৌঁছে কোন্দিকে যে তাকাবো বুঝতে পারছিলাম না! পুরো শহরটা পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে। একদিকে দূরের পাহাড়, অন্যদিকে পুরোনো শহর আর তার অলিগলি, অপরদিকে নতুন শহর- যেখানে ইউরপিয়ান ইউনিয়নের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভবন আছে। এক পাশ থেকে আরেক পাশে ঘুরে ঘুরে পুরো শহরটা সময় নিয়ে দেখলাম। শান্ত অভিজাত একটি শহর। কিছুক্ষণ পর আবার নামার পালা। এবার আমরা ক্যাথেড্রালের পিছন দিক থেকে নামতে থাকলাম। যদিও একই ভবনের অংশ, কিন্তু, ক্যাথেড্রালের পিছনের অংশ যেহেতু আরেক যুগের শিল্পকর্মকে তুলে ধরে, তাই সামনের ফটক থেকে ভিন্ন আরেক আঙ্গিকে তৈরি হয়েছে এই ভবনের পিছনের অংশ।
- ক্যাথেড্রালের পিছনের অংশ
রাস্তায় নেমে আসতেই চোখ পড়ে যায় ইল নদীর থেকে সৃষ্টি হওয়া প্যাঁচানো ক্যানালে। পুরোনো শহরের এই অংশ অনেকগুলো ক্যানালকে ঘিরেই গড়ে উঠেছে। এখানকার বাড়িগুলো আধা কাঠের-আধা ইটের। ইউনেস্কো ১৯৮৮ সালে শহরের এই অংশকে বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করে। রঙ্গিন পুরোনো বাড়িগুলোর দেয়াল ঘেঁষেই ইল নদীর খালগুলো। এইজন্য স্ট্রাসবুর্গকে অনেকে ভেনিস অভ ফ্রান্সও বলে থাকে। আমরা ক্যানালের পাশ দিয়ে বাঁধানো রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছি আর শহরের সৌন্দর্য্য দেখে মুগ্ধ থেকে মুগ্ধতর হচ্ছি। শীতকাল হওয়ায় ক্যানাল ট্যুর বন্ধ। তা না-হলে নৌকায় করে শহর ঘোরা যেত! আমরা অনেক ব্রিজ পার হয়ে শহরে এই প্রান্ত থেকে ঐ প্রান্তে হেঁটে বেড়ালাম।
- পেতিত ফ্রান্স
শহরের মাঝে একটি দ্বীপের মত জায়গা, পুরোটার চারপাশে ক্যানাল দিয়ে ঘেরা। ছোট এই দ্বীপের নাম পেতিত ফ্রান্স বা ছোট্ট ফ্রান্স। এ দ্বীপের বাড়িগুলো মনে হয় শহরের সবচেয়ে সুন্দর। একটা বিশাল আকৃতির নান্দনিক ভবন দেখে এমিলির কাছে জানতে চাইলাম ওটা কি ভবন হতে পারে! শুকনো মুখে ওর উত্তর, “ওটা একটা পুরোনো কশাইখানা, আর এর আশে পাশে সবগুলো বাড়ি একসময় ট্যানারি ছিল”! আমি চমকে উঠবো কিনা বুঝতে পারলাম না! ভাবতেই পারছিলাম না, আজকে যেই ক্যানাল আর বাড়ি এত সুন্দর লাগছে, এটাই কয়েক’শ বছর আগে ছিল ব্যস্ত ট্যানারিশিল্প এলাকা। ঐ বিশাল ভবনে বহু পশু আসত আর এই ক্যানালের স্রোতের সাথে সাথে ইল নদীতে গিয়ে মিশত তাদের রক্তাক্ত দেহাবশেষ! হেঁটে যেতে যেতে পৌঁছে গেলাম শহরের বিশাল এক বাঁধে। যত আগ্রহ নিয়ে বাঁধ দেখতে গেলাম তত আগ্রহদায়ক মনে হলো না। কিন্তু, এই বাঁধের পরেই শুরু হয়েছে আধুনিক স্ট্রাসবুর্গ। দূরে দেখা যায় বিশাল গ্লাস-স্টিলের চৌকোনা নীল আধুনিক শিল্পকলার জাদুঘর। আধুনিক হলেও এমনভাবে তৈরি যেন পুরোনো শহরের সাথে বেমানান না হয়ে যায়।
- স্ট্রাসবুর্গের বাঁধের পিছনে মিউজিয়াম অভ মডার্ন এন্ড কন্টেমপোরারি আর্ট
স্ট্রাসবুর্গে ছোট ছোট অনেকগুলো চার্চ। কোনটা ফেলে কোনটা দেখি! পথের মাঝেই পড়ে গেল ঐতিহাসিক সেন্ট থমাস চার্চ। শহরের ক্যাথেড্রালটি ক্যাথেলিক চার্চের অধীনে চলে যাবার পর প্রোটেস্টাইনরা এই চার্চটি তৈরি করে। ক্যাথলিক চার্চের মত ভৌতিক অন্ধকারপূর্ণ না হলেও এরও গাম্ভীর্য কম নয়। শ্বেত পাথরে মোড়ানো বিশাল এক চার্চ।
- সেন্ট থমাস চার্চের ভিতরের ছবি
একপাশে দেখি নানান দেশ থেকে সংগ্রহিত ক্রিসমাস ডেকোরেশন। কঙ্গোর, চায়নার, মেক্সিকোর, আর হঠাৎ দেখি পাটের তৈরি বাংলাদেশের ক্রিসমাস ডেকোরেশন! আমাকে আর আলাভীকে পায় কে! মহানন্দে এমিলি আর ম্যাটকে ধরে এনে বাংলাদেশের জিনিস দেখালাম। এই দূর দেশের অচেনা শহরে ছোট্ট সাদা কাগজে “বাংলাদেশ” লেখা কাগজ আমাদের কি যে নির্মল আনন্দ দিয়েছে এটা হয়তো ওদের বুঝাতেই পারি নি।
- সেন্ট থমাস চার্চের ভিতরে নানান দেশের থেকে সংগৃহীত ক্রিসমাস ডেকোরেশন
এবার এই চার্চ থেকে বের হতেই দেখি সন্ধ্যা নেমে আসছে। স্ট্রাসবুর্গের আরেকটি সাড়ে চারশ বছরের ঐতিহ্য হলো এরা ক্রিসমাস উপলক্ষ্যে পুরো শহরকে কল্পনার রাজ্যের মত করে সাজায়। স্ট্রাসবুর্গকে ডাকা হয় ক্যাপিট্যাল দো নয়েল বা ক্রিসমাসের রাজধানী। নামের সার্থকতা রাখতেই যেন পুরো শহরের ভিতরের অলিগলিগুলো সাজানো হয়েছে নানান রঙের নানান আকৃতির পুতুলে, ঝালরবাতিতে, ছোট বড় ক্রিসমাস ট্রি-তে। কোনোটা ঝিকিমিকি করছে তো কোনোটা লাফাচ্ছে। সন্ধ্যার সাথে সাথে একটু একটু করে শহরের কোনায় কোনায় ক্রিসমাসের বাতিগুলো জ্বলে উঠছে। ধীরে ধীরে প্রাচীন একটি শহর চোখের সামনে যেন স্বপ্নের শহর হয়ে উঠলো।
- রাত বাড়ার সাথে সাথে রাস্তায় আলোকসজ্জার খেলা
আমরা শহরের ভিতরে এই রাস্তা থেকে ঐ রাস্তায় ঘুরতে ঘুরতে ছবি তুলতে লাগলাম। শুধু আলোকসজ্জা দিয়ে যে একটা শহরকে এত স্বপ্নিল করা যায় এটা জানতাম না! একটি রাস্তায় দেখা গেল সবগুলো ভবন লাল-সবুজ আলো দিয়ে সাজানো। ক্যামেরা ফোকাস করে ছবি তুলতে যাব, অমনি আলো পালটে রং হয়ে গেল নীল-বেগুনী। শহরের মূল স্কয়ারে বিশাল এক ক্রিসমাস ট্রি। কত ধরনের আলোকসজ্জা দিয়ে যে সাজানো তা গুনে শেষ করা যাবে না! ক্রিসমাস ট্রি-এর ঠিক নিচে আবার এই শহরের আদলে ছোট পুতুল শহর তৈরি করা হয়েছে। সেগুলোতে আলো এত উজ্ঞ্বল, মনে হয় যেন ক্রিসমাস ট্রি-এর নিচের পুতুল শহরে আগুন ধরেছে। আমার আবার ক্যামেরার ব্যাটারির চার্জ কমে আসছে। যত পারি ছবি তুলছি। কোথায় যে ফোকাস করব, কিসের ছবি যে তুলব, কোনটা যে বাদ দিব- আমি কিছুই ঠিক করতে পারছিলাম না!
- রাস্তার একটি বাতি
বেশিরভাগ দোকানের সামনের কাচের ডিসপ্লেতে ক্রিসমাস উপলক্ষ্যে বিশেষ সাজ। চকলেটের দোকানের সামনে সাজানো আছে এক চকলেটের ঝরনা, যাতে আবার এক যান্ত্রিক পুতুল একটু পর পর হাত ডুবিয়ে গানের সাথে সাথে নেচে উঠে। গান শেষ হলে অন্য পুতুলেরা যান্ত্রিকভাবে হাত তালি দিচ্ছে। এই যান্তিক পুতুলের খেলাই দেখতে এসেছে সারা পৃথিবীর টুরিস্টরা। পুতুলের দোকানের সামনে নকল বরফের উপর শত শত পুতুল শুয়ে আছে। মাঝে মাঝে একটা দুটা পুতুল হাত নাড়ে, কেউ কেউ আবার চোখ পিট পিট করে তাকায়। ছোট শিশুরা খুশিতে হাত তালি দেয়, আমারো ইচ্ছা করে ওদের সাথে হাত তালি দিতে! শুধু যে পুতুল দিয়ে দোকান সাজানো তা নয়! ফ্রান্স ফ্যাশন-বুটিক আর সুগন্ধির জন্য বিশ্ববিখ্যাত। স্ট্রাসবুর্গে মুদির দোকানের মত বিখ্যাত সব জিজাইনার দোকান ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। ওই দোকানগুলো দামী ক্রিসটাল, হীরে-জহরত দিয়ে সাজানো। কিন্তু, ওইদিকে কারো কোনো আগ্রহ নেই। সব আগ্রহ উলটো এই যন্ত্রচালিত ক্রিসমাস ডেকোরেশনে। একটা যান্ত্রিক স্যান্টাক্লজ রাস্তার মাঝে দিয়ে দড়ি বেয়ে নামার সময় ঠিক আমার নাকের সামনে দিয়ে টুপি উঠিয়ে একটু নেচে গেল! এত সুন্দর এত সুন্দর! মনেই হয় না এগুলো কলকব্জা দিয়ে বানানো। প্রতিটি রাস্তার মোড়ে যেন জাদুর ছোঁয়া।
- বিভিন্ন দোকানের ক্রিসমাস উপলক্ষে বিশেষ ডিসপ্লে
আমরা ঝালরবাতি দিয়ে সাজানো একটার পর একটা রাস্তা পার হয়ে এবার স্টেশানে ফিরে যাচ্ছি। মন একেবারেই যেতে চায় না। কোনোভাবেই একদিনে পুরো শহর মন মত দেখা হয়নি। কত কিছু দেখার বাকি! শেষবারের মত ক্যাথেড্রালের সামনে দিয়ে হেঁটে গেলাম। রাতের বেলায় এ যেন এক অন্য ভূবন! শহরের প্রধান স্কয়ারের মাঝে দিয়ে পার হয়ে যাবার সময় দেখি নীল আলোতে সাজানো এক গাছ। আলোকসজ্জা এমনভাবে করা হয়েছে দেখে যেন মনে হয় গাছটা কাঁদছে। বহুবার নানা ভাবে ছবি তুলেও এর পুরো সৌন্দর্য্য ছবিতে তোলা সম্ভব না। ক্যামেরার ব্যাটারিও প্রায় শেষ! কি মনে করে দশ সেকেন্ড এর এক ভিডিও তুললাম।
- রাতের শহর
হেঁটে হেঁটে স্টেশানের প্রায় সামনে পৌঁছে যাচ্ছি। আধাঘন্টা পরেই ট্রেইন। ম্যা্টকে বিদায় দিয়ে ক্লান্ত পায়ে শেষবারের মত স্ট্রাসবুর্গকে দেখে নিলাম । হঠাৎ সামনে তাকিয়ে দেখি কোথায় সেই আধুনিক স্টেডিয়াম মার্কা স্টেশান! স্বচ্ছ গ্লাসের পিছনে, কালো আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে আছে দেড়শ বছরের পুরোনো সেই জমকালো স্টেশান! ক্যামেরাতে কোনোমতে একটা ছবি তুলতেই পিপ পিপ শব্দে ক্যামেরা জানিয়ে দিল, চার্জ একদম শেষ! আজকের মত ভ্রমণও শেষ। এবার বাসায় ফেরার পালা। কাল ভোরে আবার যেতে হবে প্যারিসে!
- শেষ কিছু ছবি
বিঃ দ্রঃ ভ্রমণের আরো কিছু ছবি এখানে।
আহা, ঘুরতে কি মজা…… চমতকার লাগলো, আপু। কবে এরকম ঘুরতে পারব কে জানে। 🙁 🙁
:thanks: (F)
@জহর,
আশা করি খুব তাড়াতাড়ি আপনি নতুন কোথাও ঘুরতে যেতে পারবেন। শীতের ছুটি আছে, ঘোরার জন্য ভাল সময়। :)) খালি একটা নতুন জায়গা নির্বাচন করে চলে যেতে হবে।
আমি আগে ভ্রমণ কাহিণী খুব একটা পড়তাম না। ইদানিং এ বিষয়ে নেশাগ্রস্তের মত পড়ছি। এ মুহূর্তে নবনীতা দেব সেনের ভ্রমণ সমগ্র পড়ছি। কাজেই ‘স্ট্রাসবুর্গের পথে পথে’ও এ নেশার অংশ হিসেবেই আমাকে টানল বা আমি টানলাম।
পৃথিবী ভ্রমণ তো এভাবেই সমাপ্ত করতে চাই।
আপনার লেখা
আমাকে আমার দেখা সুজারল্যান্ডের Montreux এর Château de Chillon নামক castle এর কথা মনে করিয়ে দিল।
@গীতা দাস,
ভ্রমণকাহিনী আমার খুবই ভালো লাগে। দেখা যায় একই শহরের বর্ণনা লেখক বিশেষে ভিন্ন। অন্নদাশংকর রায়ের “পারী” পড়ে ছোটবেলা থেকেই প্যারিস দেখার স্বপ্ন ছিল। কিন্তু প্যারিসে গিয়ে তাঁর অভিজ্ঞতার সাথে আমার কোন অভিজ্ঞতার মিলই পাই নি!
কোন শহরে গেলে চার্চ/ উপাসনাগৃহ ঘুরে দেখা আমার অন্যতম প্রিয় কাজ। বিশেষ করে শহরের প্রধান চার্চ বা ক্যাথেড্রালটি একদম ঢেলে সাজানো থাকে। তার উপর ফ্রি এন্ট্রি। :)) স্টুডেন্টরা যেভাবে পৃথিবী ভ্রমণ করে, ওভাবে মনে হয় আর কেউ করে না!
এক জীবনে এটা কি সম্ভব! (F)
চমৎকার ভ্রমণ কাহিনী। লেখা ও ছবি দুই-ই উপভোগ্য। ফ্লিকার লিংকের সৌজন্যে কয়েকটি প্রাকৃতিক দৃশ্যের ছবিও দেখলাম। মুক্তমনার গুরু-গম্ভীর প্রবন্ধের ভীড়ে সহজ-সাবলীল এই ভ্রমণ কথাটিকে অনেকদিন মনে থাকবে।
আর একটি কথা, গুটেনবার্গ-এর জার্মান উচ্চারণই কি গথেনবার্গ ? এই শহরেই বোধহয় প্রথম মুদ্রন যন্ত্র/ প্রেস আবিস্কার হয়েছিলো। গুটেনবার্গ প্রকল্পের কথা অবশ্য আগেই জেনেছিলাম। সম্ভব হলে এই শহরটি নিয়ে ছবিসহ আপনার নিজস্ব অভিজ্ঞতার কথা/ভাবনা লিখুন।
চলুক। (Y)
@বিপ্লব রহমান,
আমি সুইডেনের যে শহরে থাকতাম, তার ইংরেজি নাম গথেনবার্গ(Gothenburg) আর সুইডিশ নাম হলো ইয়োতেবরি(Göteborg)। এই শহরের নাম এসেছে সুইডিশ শব্দ götar/ইয়োতার থেকে যেটি জার্মানিতে goten/গটেন। কিন্তু সুইডেনের গথেনবার্গ মুদ্রণশিল্পের সাথে জড়িত ছিল না।
জোনাস গুটেনবার্গ, এক জার্মান ছিলেন, যার নামে জার্মানিতে গুটেনবার্গ শহরও আছে। তিনি সর্বপ্রথম বহনযোগ্য ছাপাখানা আবিস্কার করেছিলেন ১৪৫০ সালের দিকে। কিন্তু তারও আগে ইউরোপে স্বল্প পরিসরে মুদ্রণের কাজ হতো। গুটেনবার্গ বাইবেল পৃথিবীর প্রথম মুদ্রিত বাইবেল ছিল। যতদূর মনে পরে ফেলুদার একটা বই ছিল, যেখানে গুটেনবার্গ বাইবেলের একটা কপি খুঁজে পাওয়া যায়। আমি মনে হয় সেখানে প্রথম গুটেনবার্গের নাম পড়েছিলাম।
স্ট্রাসবুর্গের প্রধান স্কয়ারে গুটেনবার্গের একটি মূর্তি আছে। লেখার সাথে ছোট যে একটি ভিডিও আছে, ঐ জায়গারই নাম au gutenberg/ place gutenberg. এটি জোনাস গুটেনবার্গের সম্মানে নামকরণ। গুটেনবার্গ জার্মানিতে গিয়ে তার মুদ্রণ যন্ত্র তৈরি/আবিস্কারের আগে এই স্ট্রাসবুর্গ শহরের এই জায়গাতেই মুদ্রনশিল্পে কাজ করতেন। আরো সময় হলে আমি কোন পুরোনো ছাপাখানার খোঁজ নিতাম, নিশ্চয়ই শহরের কোন না কোন মিউজিয়ামে পাওয়া যেত! কিন্তু সময় ছিল না।
ভাবছি একটু একটু করে যেই শহরগুলো ঘুরেছি, ওগুলো নিয়ে নিজের অভিজ্ঞতা থেকেই কিছু না কিছু লিখবো। ভ্রমণকাহিনী পড়তে তো খুবই ভালো লাগে, ভ্রমণ করতে তো আরো ভাল, কিন্তু, লিখতে গেলে অনেক পড়ে তথ্য যাচাই করে লিখতে হয়। 😛
@সুম সায়েদ,
কি কাণ্ড! কোথায় আগরতলা, আর কোথায় চৌকিরতলা! হা হা হা … 😀 ভ্রান্তিটুকু ধরিয়ে দেওয়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
আরো লিখুন। (Y)
ভ্রমণ কাহিনী আমার বরাবরই দারুন লাগে।ইচ্ছা আছে ভবিষ্যতে টাকাপয়সা জমিয়ে( আমি দরিদ্র মানুষ, যখনতখন বিদেশ ভ্রমন সম্ভব না 😉 ) একবার মিশর ঘুরে আসতে, পিরামিডের ভিতরটা দেখাই আমার জীবনের সবথেকে বড় শখ।মাঝখান থেকে দিলেনতো আরেক লোভ ধরিয়ে। এবার টিকেটটাও কেটে দিন 😛
অসাধারণ লেখাটির জন্য অনেক অনেক শুভেচ্ছা আপনাকে। (F) (F)
@অর্ফিউস,
ছোটবেলা থেকেই পৃথিবীর নানা জায়গায় ঘোরার স্বপ্ন দেখতাম। সেই তালিকায় এখনো অন্যতম- মিশর দেখা, সাহারাতে রাত যাপন, পিরামিডের ভিতর হারিয়ে যাওয়া, ইত্যাদি। 😛 ওখানেও এক বন্ধুর বাড়িতে থাকা-খাওয়া-গাইড ফ্রি, শুধু উড়াল দিতে হবে! কিন্তু অর্থ একটা বিশাল যন্ত্রণা! :-Y
লেখা পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
@অর্ফিউস,
ছোটবেলা থেকেই পৃথিবীর নানা জায়গায় ঘোরার স্বপ্ন দেখতাম। সেই তালিকায় এখনো অন্যতম- মিশর দেখা, সাহারাতে রাত যাপন, পিরামিডের ভিতর হারিয়ে যাওয়া, ইত্যাদি। 😛 ওখানেও এক বন্ধুর বাড়িতে থাকা-খাওয়া-গাইড ফ্রি, শুধু উড়াল দিতে হবে! কিন্তু অর্থ একটি বিশাল যন্ত্রণা! :-Y
লেখাটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ।