শাহাদুজ্জামানের একটা গল্প, তাঁর “পশ্চিমের মেঘে সোনার সিংহ” বইতে; নাম “কাগজের এরোপ্লেন”। গল্পটা পড়ে আমার খুব হাসি পায়, এবং করুণা হয়- নিজের প্রতি। হাসির সাথে মিশে থাকে গা শিরশির করা একটা তরঙ্গ, নিজের হাসিতে দুঃখমাখা অশ্রুও হয়তো আসে, অবশ্য সেটা দু-এক ফোঁটার বেশী নয়। কারণ আমি এই গল্পটা নিয়ে কিছু লিখতে চাই এই মুহূর্তে। নিজের লেখার সাথে নিজেকে মিলিয়ে ফেলাকে, বা ব্যক্তিগত সুখ-দুঃখ উপস্থাপন করাকে আমি কখনোই ভালো চোখে দেখতে পারি না, কারণ আমার মনে হয় সেটা আত্মবয়ান হয়ে দাঁড়ায়। নির্দিষ্ট একটা দূরত্ব থেকে লেখি, আবার লেখা শেষ হলে হেঁটে হেঁটে আমি এসে পড়ি আমার রুমে, বারান্দায়। ইতস্তত বই পড়ি, সিগারেট খাই, ফেইসবুকে ঢুকে গুঁতাগুঁতি করি, বিক্ষিপ্ত চিন্তা ভর করে। কিন্তু যে অক্ষরগুলো প্রসব করে আসলাম, সেটার কথা তখন, সেই মুহূর্তে ভাবতে চাই না। অন্তত এই লেখাটিতে নয়।
তাহলে কী ভাবি? রবীন্দ্রনাথের গানের সাথে এই প্রজন্মের দূরত্ব কতোখানি? শহীদ কাদরী দেশে কি ফিরবেন? প্রশান্ত মৃধার “অনামিকার অন্য চোখ” গল্পটা আমার এতো ভালো লাগে কেন? আমার কি কিছু লেখা উচিত এ নিয়ে?
অতঃপর একটা সিগারেট ধরাই এবং মা ডাক দেয় ভাত খাবার জন্যে। বাস্তবতা এই যে, ভাত ছাড়া আমরা, যারা কী না অনামিকার অন্য চোখের দিকে তাকিয়ে থাকি, কিংবা কাদরী সাহেবের কবিতা পড়ে খাবি খাই- তাঁদেরও ক্ষুধা লাগে, এবং এই ক্ষুধাটা একান্তই ব্যক্তিগত ব্যাপার। জীবনের তাগিদে। হঠাৎ প্রশ্ন আসে- তাহলে জৈবিক তাড়নার সাথে মনুষ্যত্বের বিরোধ কতোখানি?
সেটা জানি না, অথবা জানি। তবে আমার চিন্তার সাথে বাস্তব জগতের দূরত্ব কতোখানি, পাঠকেরা সেটা হয়তো বুঝতে পেরেছেন এই মুহূর্তে। সেটা না হয় বোঝা গেল। আমি জ্যাক দেরিদা নই, তাই ভাত খাওয়ার সময় মাথার ভেতর যে জিনিশগুলো লিখছি- সেটা অবলীলায় বোঝা যাচ্ছে। জলবৎ তরলং। এবং যারা শাহাদুজ্জামানের পাঠক, তাঁরা আরেকবার বুঝে গিয়েছেন, আমার মাথায় ঘুরছে তাঁর ছোটগল্প “কাগজের এরোপ্লেন”। রফিক, যেই ছেলেটা কী না আত্মহত্যা করেছে ট্রেনের নিচে চাপা পড়ে, তাকে নিয়েই এই গল্পটা।
কথা হচ্ছে, এই গল্পটাকে কিন্তু বলা যায় জীবনানন্দ দাশের “আট বছর আগের একদিন” কবিতাটার গদ্যরূপ এবং “বোধ” কবিতারও কিছুটা ছায়া আছে। কেননা, ভাতের সাথে ডাল, ডালের সাথে লেবু মেশাতে গিয়ে যখন বিপত্তিতে পড়লাম- তখন আমার মনে হোল, বইটার নামও যেহেতু জীবনানন্দের কাছে ধার করা, তাই প্রচ্ছন্ন প্রভাব থাকাটা অসম্ভব না। এবং আরও দুটা জায়গায় আমরা সেটা মনে করতে পারি। যেমন ধরুন, কবি জীবনানন্দ দাশ লিখেছেন-
জানি – তবু জানি
নারীর হৃদয়-প্রেম-শিশু-গৃহ-নয় সবখানি;
অর্থ নয়, কীর্তি নয়, সচ্ছলতা নয় –
আর এক বিপন্ন বিষ্ময়
আমাদের অন্তর্গত রক্তের ভিতরে
খেলা করে;
আমাদের ক্লান্ত করে,
ক্লান্ত – ক্লান্ত করে;
লাশকাটা ঘরে
সেই ক্লান্তি নাই;
তাই
লাশকাটা ঘরে
চিৎ হ’য়ে শুয়ে আছে টেবিলের পরে।
ব্যাস। শেষ। লাশকাটা ঘরে যে মানুষটা মরে গিয়েছে, তাকে নিয়ে টানাটানির কী দরকার? তথাপি ব্যাপারটা হৃদয়বিদারক বটে। কিন্তু হৃদয়কে চূর্ণ করেই, আসুন আমরা এগিয়ে যাই। কারণ রফিক একদিন বলল তাঁর বন্ধু অর্থাৎ, গল্পকারকে, যে- নারীরা কতোটা দিগন্ত, সোনালি রুপালি শিখর, সেটা নারীদের কাছে না গেলে বোঝা যায় না। এই আকর্ষণের মধ্যে আছে জৈবিক চাহিদার প্রলাপে আপাত প্রেম ভালবাসার নাম। ফিরিস্তি তো অনেক দেয়া হোল রোমিও জুলিয়েটের নামে, কিন্তু এবার অন্ধকারটাও একটু দেখতে চাই, দেখাতে চাইলেন জীবনানন্দ এবং তাঁর উত্তরসাধকেরা। নারীর হৃদয় বা প্রেমই সবকিছু নয়, জৈবিক চাহিদাও নয় সবকিছু। এটা রফিক বুঝতে পেরেছিল, যদিও সে একসময় অপেক্ষা করত এমন একজনের, যাকে সে সব দিয়ে ভালোবাসবে। এই বোধটাই তাঁর একদিন পরিবর্তিত হয়ে যায়। হয়তো তাঁর প্রিয় মানুষের মৃত্যুর কারণে, হয়তো অন্য কোন কারণে- আমি সঠিক জানি না। সঠিক কী- তা জানে না শাহাদুজ্জামানও। তবে “বোধ” কবিতায় জীবনবাবু বলেছিলেন-
ভালোবেসে দেখিয়াছি মেয়ে মানুষেরে,
অবহেলা করে আমি দেখিয়াছি মেয়ে মানুষেরে,
ঘৃণা করে দেখিয়াছি মেয়েমানুষেরে;
আমার সে ভালোবাসিয়াছে,
আসিয়াছে কাছে,
উপেক্ষা সে করেছে আমারে,
ঘৃণা করে চলে গেছে — যখন ডেকেছি বারেবারে
ভালোবেসে তারে;
তাহলে কী আত্মহত্যাই সমাধান যখন এই নির্লিপ্ততা কিংবা বিপন্ন বিস্ময় এসে ভর করে আমাদের ওপর, যা আমাদের ক্লান্ত করে? না বোধহয়। সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়, যখন আট বছর আগের একদিন কবিতায় লোকটি আত্মহত্যা করে বসে রফিকের মতো। যেমন কী না কন্যাসন্তানের জন্ম দিতে গিয়ে তাঁর শ্যামা স্ত্রী মারা গেলেও রফিকের বেঁচে থাকার কথা ছিল তাঁর শিশুর জন্যে। কিন্তু অই যে, বললাম, কবিতার প্রভাবের কথা- শিশু পাশে থাকার পরেও লোকটিকে লাশকাঁটা ঘরে নিয়ে যেতে হয়েছিল, কোন দায়িত্ববোধ, পার্থিব কোন আকর্ষণ রফিককে বা অই লোকটিকে- কাউকেই বাঁধতে পারে নি। কারণ কী? জীবনানন্দ বলেন-
তাহাদের মন
আমার মনের মতো না কি?
–তবু কেন এমন একাকী?
তবু আমি এমন একাকী!
আত্মহত্যাকে শুধু অহম প্রবৃত্তি হিশেবেও তিনি মানতে পারেন নি, কারণ তিনি লিখেছিলেন, “আমরা কেউ ভাতের উপর উঠতে পারলাম না। ভাতের ক্লেদের উপর”।
আমিও ভাত খেতে গিয়ে তা বুঝতে পারি এবং খাওয়া শেষ করে হাত ধুতে গিয়ে আমি ভাবছিলাম, তাহলে দাঁড়াচ্ছেটা কী? বোঝা যাচ্ছে, তাকেও কিছু একটা ক্লান্ত করেছিল। কিন্তু কী? জীবন নিয়ে তো অসহ্য আনন্দ ছিল তাঁর, বুকে ভালবাসার বিস্তীর্ণ চরাচরও ছিল- অন্তত গল্পকার তাই বলেন। তাই সে ভেবেছিল, যখন সে দেখা পাবে তাঁর স্বপ্নের মানুষকে, যা তাঁর ভালো দিয়ে দিবে তাকে সব। কিন্তু এটা দুর্ভাগ্য যে, আমাদের এও ধারণা করতে হচ্ছে- আত্মহত্যার বীভৎসতার দিক থেকে কে বেশী এগিয়ে ছিল? রফিক না কী সেই লোকটি? গল্পকার রফিকের ছিন্নবিচ্ছিন্ন দেহ দেখেছেন, যা ভয়ংকর। আবার জীবনানন্দ আমাদের দেখিয়েছেন, রক্তফেনা-মাখা মুখে মড়কের ইদুঁরের মত একজনকে। কী ভয়াবহ সত্য!! একজীবনের স্বপ্নগুলো কতো সহজেই না ফিকে হয়ে যায়, মিথ্যে হয়ে যায়, ধ্বংস হয়ে যায়।
আসলে শাহাদুজ্জামান হয়তো বলতে চান, অথবা আমি এভাবেই বুঝতে চাইছি- আমরা বাস করছি একাকী নিঃসঙ্গতায়। অজস্র বন্ধন ভেদ করে আমরা শেষমেশ একাকী, মহাজাগতিক নিঃসঙ্গতায় দ্বিধাচ্ছন্ন। আবার কোন ক্ষণে আমরা হয়ে যাই সেই বেবুনটির মতো- যে কী না পানিতে ডুবে যাওয়ার সময় সন্তানের মাথা উঁচুতে ধরে রাখে, আবার সেই বেবুনের নাকে পানি স্পর্শ করার সাথে সাথেই সন্তানকে পায়ের তলায় ফেলে প্রাণ ভরে শ্বাস নেয়। কিন্তু বেঁচে থাকার যে তাড়না, সেটা কখনো কেউ হারিয়ে ফেলতে পারি কোন এক জটিলতায়, অথবা প্রহেলিকায়- যার কারণ আমরা জানি না, জানবো না। মানুষ এখনো জানে না তাকে। কামু যথার্থই বলেছিলেন, বিংশ শতাব্দীর আত্মহত্যা মহৎ শিল্পকর্মের মতোই হৃদয়ের নীরবে সঙ্ঘটিত হয়। যেমন নীরবে সঙ্ঘটিত হয়েছিল রফিকের, আট বছর আগের একদিন কবিতার সেই মানুষটির। আমাদের চরম উদ্দেশ্যহীনতাই হচ্ছে আমাদের মর্মান্তিক জীবন উদ্দেশ্য। কাগজের প্লেনের মতো আমরা ইতস্তত ভেসে বেড়াই, আবার নিজের ইচ্ছেতেই ভূপতিত হই- অথবা আর উড়তে পারি না। উড়াউড়ি আমাদের ক্লান্ত করে, ক্লান্ত করে, ক্লান্ত করে।
বারান্দায় দাঁড়িয়ে সিগারেট ধরালাম। সামনে শব্দহীন জগত। চারতলা থেকে থুঃথুঃ ফেললেও প্রতিধ্বনি শোনা যায়। এবং সেই সময় আবারও গল্পটা নিয়ে ভাবতে ভাবতে আমার মনে পড়ে যায়, আমি কিছু লাইন বাদ দিয়ে এসেছি। আমার নিজস্ব কিছু প্রিয় লাইন। একজন গল্পকার এভাবেই মানুষের ভেতরটা জানেন, তাই জানিয়ে দিতে চান। আমিও তাই লিখতে চাই সেই গল্প নিয়ে, যেখানে আমার কথা থাকে। কী আশ্চর্য! রফিক আত্মহত্যার আগে লিখেছিল-
সাহিত্য আমার কাছে ধন উপার্জন কিংবা খ্যাতির পরিপূরক কোন মাধ্যম নয়। এ আমার বেঁচে থাকার প্রয়োজনীয় খাদ্য মাত্র। ভেবেছিলাম বেঁচে থাকার একটাই তাৎপর্য, লিখব। লেখালেখি ছাড়া পৃথিবীর বাকি যাবতীয় কাজ আমার কাছে হাস্যকর। কিন্তু ক্রমশ টের পাচ্ছি লেখালেখি আমাকে দিয়ে হবে না। সৃষ্টির জন্য প্রয়োজন সৃষ্টিক্ষম প্রজ্ঞার। সেই প্রজ্ঞার উৎসভূমি আমার কাছে নেই। আছে প্রবঞ্চনা। এ ছাড়া লিখতে পারি অন্যের সাহিত্য নিয়ে আলোচনা। কিন্তু তাতে কী লাভ? যার ভালোলাগার আমি না লিখলেও পড়বে। বাকি রইলো সাহিত্যপাঠ। এ যাবতকাল বেশ কিছু পরিমাণ সাহিত্য পড়ে মনে হয়েছে, না পড়লেও বিশেষ ক্ষতিবৃদ্ধি ছিল না। অতএব বুঝতে পারছি আমার যাবতীয় প্রচেষ্টা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছিল, হয় এবং হবে।
আমি তাই ভাবি। যা লিখি, তাতে কোন লাভ নেই এবং যা লিখব- তাও পর্যবসিত হবে ব্যর্থতায়। তাই লিখছি একের পর এক সাহিত্য আলোচনা। হয়তো নিজের অক্ষমতাকে ঢাকতেই, আমি বুঝে গিয়েছি নিজের সাথে সেই প্রবঞ্চনা। কিন্তু তাতে লাভ নেই, আমি লিখলেও পাঠক পড়বে, না লিখলেও পড়বে।
এটা বুঝতে পেরে তখনই আমি সেই হাসিটা দেই। যেই হাসির সাথে মিশে থাকে গা শিরশির করা একটা তরঙ্গ, নিজের হাসিতে দুঃখমাখা অশ্রুও হয়তো আসে, অবশ্য সেটা দু-এক ফোঁটার বেশী নয়। কারণ আমি এই গল্পটা নিয়ে কিছু লিখতে চাই এই মুহূর্তে।
আত্মহত্যার আগে রফিকের উপলব্ধি,জীবনানন্দের ট্রামের নীচে পরা,শফিউল জয়এর
অনুভুতি — এ সবের সাথে কেমন যেন নিজের কিছু বোধের একাত্মতা খুঁজে পাই মাঝে মাঝে।
লিখুন। সাহিত্য নিয়ে লেখার লোক মুক্ত-মনায় খুবই কম। বিশেষ করে বাংলাদেশের সাহিত্য নিয়ে পড়ুয়া ও আলোচক যে আছে তা আনন্দ দেয়।
আপনি সুন্দর লেখেন।লেখাটির ভিতর এক করুণ সুর আছে যা মনকে আদ্র করে তোলে।আমার তো মনে হ্য় জীবনের উদ্দেশ্য একটাই- বেঁচে থাকা । আমার আমি কে তো আমি বানাইনি। এর পেছনে আছে শত শত প্রাণের আত্মত্যাগ। নিজের এবং আগামি দিনের মানুষের জন্য এ পৃথিবীকে সুন্দর এবং বসবাস যোগ্য করার সাধনাই মনে হ্য় সঠিক পথ।
ভাল থাকবেন।
আসলে আমরা এমন এক সময়ের খোঁয়াড়ে ঢুকে গেছি, ভাবছি, নগদ নারায়ণ অথবা মৃত্যু। আমাদের সামনে কোন প্রশ্ন নেই, আছে প্রতিযোগিতা। তাই –
এরকম আমারও মনে হয়, মনে হয় লাভ নেই। তারপর ‘নেই’ থেকে আবার চলতে শুরু করি। একদিন আমিও নেই হয়ে যাবো। তখন, কে ‘তাল গাছের চূঁড়ায় বসে মদ’ খেয়ে আক্ষেপ করলো কি করলো না, তাতে আমার কী আসে যায়?
‘ভাবনা ভাষান্তর’ পড়ে তাঁর ভাবনার সাথে পরিচয়। বিশেষ করে হাওয়ার্ড জিন এর ‘কলম্বাসঃ অন্য চোখে’ পড়ে । আমি জানতাম না, উনি গল্প লেখেন। আপনি পরিচয় করিয়ে দিলেন, তাই জানা হলো। পড়ার আগ্রহ বেড়ে গেলে। কি হবে, এতসব ভেবে কোন লাভ হয়তো নেই। তবুও। ‘শেষ পর্যন্ত’ বলে একটা কথা চালু আছে, তাই স্বপ্ন দেখা।
আত্মানং বিদ্ধি ( এটি কোন মন্তব্য নয়,স্মরণ)
কাগজের এরোপ্লেনে দাম্পত্য নিয়ে একটা উক্তি আছে না?- ‘দম্পতির বিছানায় অশ্লীলতাই নৈতিক, নান্দনিক ।’ খুব গভীর একটা লাইন । সৃষ্টিশীলতা আর নান্দনিকতার ধ্যান চিরে দেয় । মানুষ নান্দনিকতায় খুব বেশি দূর উঠতে পারে না কখনোই । সত্যিকারের নান্দনিকতায়, ভেতরের নান্দনিকতায়…. প্রকাশের নান্দনিকতায় না । ওটা অনেকাংশেই ভুয়োমির মতই লাগে ।
যদিও গল্পটি পড়া হয়নি, কিন্তু আপনার আলোচনায় পড়ার আগ্রহ তৈরি হলো।
সুন্দর। গল্পটির মূল রসটি ধরতে পেরেছেন। আপনাকে সার্থক সমালোচকই বলা উচিত।
হার্ডির এ ম্যাথমেটিশিয়ান্স অ্যাপলজি পড়েছেন?
@তানভীরুল ইসলাম,
এ প্রসঙ্গ?
শ্রী জীবনানন্দ দাশগুপ্ত এর পরিচয় দরকার।
চোখ বুলিয়ে নিই,
জীবনানন্দ দাশ কে চিনি কিন্তু শ্রী জীবনানন্দ দাশগুপ্ত কে? কোথাও কোন ভুল হচ্ছে নাতো।
দারুণ বরাবরের মত।
আপনার রিভিউর পর ”কেশের আড়ে পাহাড়” পড়েছিলাম। শাহাদুজ্জামানের গল্প লেখার ঢং বেশ পছন্দ হয়েছে,বিশেষ করে ওনার স্টাইল। উত্তম পুরুষে গল্প বলতে গেলে হিম্মত লাগে। সেক্ষেত্রে শাহাদুজ্জামান সত্যি প্রশংসার দাবিদার। কিন্তু একটার পর একটা গল্প পড়তে গিয়ে কেমন জানি শেষে টাইপড্ হয়ে গেছি। সাহিত্যে ছাত্র নই বলে হয়তঃ সে আমার বোঝার অক্ষমতা।
আপনার লেখা থেকে সাহিত্য প্রেরণা পাই। অসংখ্য ধন্যবাদ।
সুন্দর লিখেছেন জয় ভাই। 🙂
শাহাদুজ্জামানের বই পড়ি নি। ফলে তাঁর লেখনির মন্তব্য করতে পারছি না এ বিষয়ে। তবে রফিক কিংবা জীবনানন্দের ‘আট বছর আগের একদিন’-এর লোকটির আত্মহত্যা থেকে উপলব্ধি করতে পারছি- জীবনের জটিলতম সম্পর্কের জাল যখন বিবেচনাবোধের মাত্রাকে অতিক্রম করে, তখন এক অজ্ঞাত-অস্পৃশ্য শক্তি আত্মহত্যাকে গ্রহণ করার প্রেরণা জাগায়। সাহিত্যে যাকে ‘লিবিডো’ বলে ! যেটিকে কাজে লাগিয়ে শাহাদুজ্জামান “কাগজের এরোপ্লেন” গল্পটি লিখেছেন হয়ত।
তোমার নোটে পড়ছিলাম আগেই। ঐ সময়ও কইছি এহনও কই, এতো বই কিন্যা পড়তারমুনা ভাইডু। আমারে পড়তে দেয়ন লাগব।
দিলডা বড় কইরা দিয়া ফেলাও পড়তে। :))
লিখতে হবে নজরুলের সৃষ্টি সুখের উল্লাসে। সহব্লগার রণদীপম বসু যেমনটি তার পুরনো স্বাক্ষরে বলেন:
শুভ কামনা রইলো। (F)
মাঝে মাঝে আমারও মনে হয় লিখে কি লাভ। লেখা যদি আনন্দের জন্যেই হয় তো চিন্তাটা তো মগজে খেলেই গেছে, আনন্দ তো পাওয়া শেষ, কাজেই চিন্তাটাকে আবার লেখার কি প্রয়োজন? কিন্তু আমি তবুও টুকটাক লিখি। কিন্তু কেনো? আমার মনে হয় যে ব্যাপারটা শুধুই নিজেকে তুলে ধরার একটা গোপন ও হিংস্র আদিম ক্ষুধা। আর সরল ভাষায় বলা যায় যে এক ধরণের বদমায়েসি।
আপনার লেখা ভালো লাগলো। গল্পটি আমি পড়িনি, তবে আমার মনে হয় রফিকই জিতে গেছে জীবনে! আত্মহত্যার থেকে বড়ো মনুষ্যত্বের পরিচয় রফিকের মতো একজন মানুষ আর কিভাবে দিতে পারে?
ধন্যবাদ!
ভালো লাগলো আপনার লেখাটি।তবে সমালোচনাকে অতো ছোট করে দেখছেন কেন?আমাদের এখানে সৃষ্টিশীলতার একটা তত্ত্ব খাড়া করে রাখা হয়েছে এমনভাবে যে,মনে হয়, সাহিত্যের নিচে সমালোচনার স্থান।সাহিত্যের পরে সমালোচনা আসবে-এটাই স্বাভাবিক;কিন্তু তার মানে এই না যে সমালোচনা অনেক নিম্নমানের কোন একটা ব্যাপার।বরং সমালোচনাও সৃষ্টিশীল ও সুখপাঠ্য হতে পারে,যেমন- আপনার এই লেখাটি কিংবা অন্যলেখাগুলো যেগুলো আমার নজরে এসেছে। ড. জনসন এর নাম উল্লেখ করতে পারি যিনি আমাদের কাছে গুরূত্বপূর্ণ হয়ে আছেন তাঁর অনবদ্য ও সৃষ্টিশীল সমালোচনার জন্য।ধন্যবাদ।