দাস
১.
ঊষার নরম আলো ছড়িয়ে পড়েছে পৃথিবী জুড়ে। এক অদ্ভুত সুন্দর আদিম হাওয়া বইছে সর্বত্র। বুনো গন্ধের মৌতাত চারদিকে। এরই মাঝে পৃথিবীর এক নির্জন কোনে চলছে ধরিত্রী পুজো। পুজারীর খালি গা, শুধু এক টুকরো কাপড় দিয়ে ঢেকে রেখেছে শরীরের নিম্নাংশ। নিবিষ্ট মনে সে আওড়ে যাচ্ছে মন্ত্র।
প্রতিদিনের মত আজও পৃথিবী দেবীর অর্চনা দিয়েই শুরু হয়েছে বিক্রমের সকাল। মন্ত্র শেষ হতেই দেখতে পায় স্ত্রী বসুমতীকে। ইতিমধ্যে রান্নার সাজ-সরঞ্জাম নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। পাশেই দাড়িয়ে রয়েছে তার ৬ বছরের ছেলে প্রসূন। অন্যদিনের তুলনায় সে আজ একটু আগেই উঠেছে ঘুম থেকে। ছেলেকে দেখে বিক্রমের হৃদয় মমতায় আর্দ্র হয়। আর একবার প্রণাম করে পৃথিবী দেবীকে। দেবীর কৃপাতেই তো তার আর বসুমতীর কোল জুড়ে এসেছে এই সন্তান।
কিছুক্ষণ বাদে হঠাৎ একটা দৃশ্য দেখে শিউরে উঠে বিক্রম! তার ছেলে প্রসূন মাটিতে লাথি মারছে সর্বশক্তি দিয়ে। দৌড়ে যায় ছেলের দিকে, ‘বাবা, কি হয়েছে? তুমি এমন করে মাটিকে লাথি মারছ কেন?’
প্রসূন জবাব দেয়, ‘কিছু হয়নি বাবা। আমি তো মাটির সাথে খেলছিলাম। ওর সাথে যুদ্ধ করছিলাম।’
বিক্রম বলে, ‘না, বাবা, আর কখনো মাটির সাথে খেলবে না। মাটি হলেন আমাদের অন্নদাত্রী দেবী। মাটিকে আঘাত করলে দেবী ভয়ানক রুষ্ট হন। চল আমরা দেবীর কাছে ক্ষমা চেয়ে নেই।’
বলেই বিক্রম চোখ বুজে দেবীর কাছে ক্ষমা ভিক্ষা করে। প্রসূনও তড়িঘড়ি করে বাবাকে অনুসরণ করে। দেবীর রুষ্ট হওয়ার কথা শুনে সে প্রচন্ড ভড়কে গেছে!
বাবার প্রার্থনা শেষ হতেই প্রসূন জিজ্ঞেস করে, ‘দেবীকে তুষ্ট করা যায় কিভাবে, বাবা?’
বিক্রম বলে, ‘দিন-রাত দেবীর জন্য কাজ করলেই উনি তুষ্ট হন।’
প্রসূন বলে, ‘কি কাজ করলে দেবী সবচেয়ে খুশী হন, বাবা?’
বিক্রম বলে, ‘তুমি তোমার চারপাশে যা দেখতে পাও, যেমন, মাটি, গাছ, পাহাড়, নদী- এ সবই পৃথিবী দেবীর সম্পদ। তুমি যদি দিন-রাত এগুলোর সেবা করতে পার, এগুলিকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে পার, তাহলেই দেবী তোমার প্রতি মহাতুষ্ট হবেন।’
ছোট্র প্রসূন কৌতূহল ধরে রাখতে পারে না, ‘দেবী তুষ্ট হলে আমাদের বর দেবেন?’
বিক্রম বলে, ‘হ্যাঁ, বাবা, আমাদের সব মনোবাঞ্ছা পূর্ণ করবেন। আমাদের ক্ষেত ফসলে ভরিয়ে দেবেন। পেট ভরে ভাত আর ফলমূল খেতে পারব আমরা। আমাদের কোন দুঃখ থাকবে না তখন।’
ছোট্র প্রসূনের চোখ চিকমিক করতে থাকে। মনে মনে প্রতিজ্ঞা করে, এখন থেকে দেবীর সম্পদগুলির যত্ন করবে সে, আর কেউ যদি এগুলোর ক্ষতি করতে চায়, তাহলে তার নিস্তার নাই! যুদ্ধ করে তাকে হারিয়ে দেবে প্রসূন!
২.
অনেক অনেক দিন পর। বেশ কিছু মানুষ গোল হয়ে বসেছে এক পয়গম্বরকে ঘিরে। পয়গম্বর তার ঝাঁঝালো যুক্তির বানে মন্ত্রমুগ্ধ করে রেখেছে উপস্থিত দর্শকদের, ‘যে বস্তু মানুষের মত হাটতে চলতে পারে না, কথা বলতে পারে না, তার কি মানুষের ভক্তি-শ্রদ্ধা পাওয়া উচিৎ? মাটি, গাছ বা পৃথিবীর উপাসনা করার কোন যুক্তি নাই, বরং এগুলি যিনি পয়দা করছেন, সাত আসমান পার হলে যার দেখা মেলে, সেই সর্ব শক্তিশালী প্রভুর উপাসনা করা উচিৎ আমাদের, তার বন্দনাই করা উচিৎ। উচিৎ কিনা বলেন?’
সমবেত জনতা সমস্বরে জানায়, ‘উচিৎ, উচিৎ!’
পয়গম্বর খুশি হয়ে বলেন, ‘তাহলে এখন থেকে পার্থিব যেকোন বস্তুর উপাসনা থেকে বিরত থাকতে হবে আমাদের। আমরা একমাত্র সেই প্রভুর উপাসনা করব, যিনি পৃথিবীর বাইরে থেকে আমাদের দেখভাল করেন।’
একজন যুবক উঠে দাঁড়ায় জনতার মাঝ থেকে, ‘কিন্তু ঔ প্রভুকে তো আমরা দেখতে পাইনা, তা হলে তার উপাসনা কিভাবে করব?’
পয়গম্বর জবাব দেন, ‘আমরা উনাকে দেখতে না পেলেও উনি আমাদের ঠিকই দেখেন। উনাকে কল্পনা করে এক নিরাকার সত্তার উপাসনা করতে হবে আমাদের।’
যুবকটি বলে, ‘কিন্তু উনার পাশাপাশি যদি আমরা পৃথিবী দেবীর উপাসনাও….’
যুবকের কথা মাঝপথেই থামিয়ে দেন পয়গম্বর, ‘না, এটা করলে প্রভু ভয়ানক রুষ্ট হবেন। এই পৃথিবী উনার সৃষ্টি। সৃষ্টিকর্তার সাথে সৃষ্ট বস্তুর কোন অংশিদারিত্ব চলতে পারে না। সেটা করলে মহাপ্রভুর গজবের হাত থেকে কেউই রেহাই পাবে না। সুতরাং, আজ থেকে সব প্রকার পার্থিব বস্তুর উপাসনা সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করা হল।’
যুবকটি অতঃপর জিজ্ঞেস করে, ‘কিন্তু কেউ যদি তাদের পুরানো দেব-দেবীকে ত্যাগ করতে না চায়?’
পয়গম্বর ধৈর্য হারান না, ‘প্রথমে তাকে সত্যের পথে আহবান করতে হবে। কিন্তু আহবানের পরও যদি সে না আসে, তাহলে তাকে বাধ্য করতে হবে। প্রভুর বিরোধিতা করে প্রভুর দুনিয়ায় কেউ থাকতে পারবে না। মনে রাখবেন, নরকে যে শাস্তি দেয়া হবে, পৃথিবীর শাস্তি সে তুলনায় কিছুই না। একটা শিশুকেও অনন্তকাল নরকবাস করতে হবে, যদি সে প্রভুর উপর বিশ্বাস স্থাপন না করে মারা যায়।’
যুবকটি অবশেষে বলে, ‘কিন্তু প্রভুর একক কর্তৃত্ব মেনে নিলে প্রভু কি আমাদের পুরুষ্কৃত করবেন?’
পয়গম্বর উৎসাহী কণ্ঠে বলেন, ‘কেন নয়? এই পৃথিবী, মাটি, গাছ, পাহাড়, নদী- এগুলো প্রভু আপনাদের জন্য বানিয়েছেন। আপনাদের দাসত্বে থাকবে এগুলো। আপনারা ইচ্ছেমত ভোগ করবেন। যত খুশি। যেভাবে ইচ্ছা। শুধু ব্যবহার করার আগে প্রভুর নাম নিতে ভুলবেন না।’
যুবকটি অবাক হয়ে নিজের জাতির বোকামির কথা ভাবে। যে জিনিস মহাপ্রভু তাদের ভোগের জন্য বানিয়েছেন, সেই জিনিসকেই কিনা তারা পুজো করছিল? কিন্তু আর নয়, এবার পৃথিবী নামক দাসের যথাযথ ব্যবহার করতেই হবে। মাটি, গাছ, পাহাড়, নদী প্রভৃতি থেকে নিংড়ে নিতে হবে যা কিছু পাওয়া যায় তার সবটুকু। একটুও ফেলে রাখা যাবে না। কেননা প্রভুতো বলেই দিয়েছেন, যত খুশি, যেভাবে ইচ্ছা, প্রভুর নামে…
দেশের কাজ
১.
বশির সাহেব আজ খুব ভোরে উঠেছেন। পার্টি অফিসে জরুরি মিটিং। গোসল সেরে শার্টটা কোনমতে গায়ে চাপিয়েই বের হয়ে যাচ্ছিলেন, কিন্তু বিধি বাম, স্ত্রী নিলুফার বেগম পিছু ডাকলেন, ‘এত ভোরে কই যাচ্ছ?’
বশির সাহেব ঝাঝের সাথে জবাব দিলেন, ‘যাচ্ছি একটা জরুরি কাজে।’
নিলুফার বেগম বললেন, ‘ছেলেটার অনেক জ্বর। ওকে ডাক্তার দেখাতে হবে।’
বশির সাহেব বিরক্তিতে ভ্রু কুঁচকে রইলেন। কি ভেবে পকেট থেকে তিনটা ১০০০ টাকার নোট খুঁজে বের করলেন। তারপর তা স্ত্রীর হাতে গুঁজে দিয়ে বললেন, ‘ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেও।’
নিলুফার বেগম বললেন, ‘তুমিও আমার সাথে যাবে। একদিন দলের কাজ না করলে মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যাবে না।’
‘মূর্খের মত কথা বল না। এখন সাংসারিক কাজ নিয়ে মাথা ঘামানোর বিন্দুমাত্র সময় নেই আমার। অনেক জরুরি কাজ পড়ে আছে। দেশের কোটি কোটি মানুষের ভাগ্য জড়িত এই কাজের সাথে!’-স্ত্রীর মুখে কথাগুলো ছুড়ে দিয়ে ঘর থেকে ঝড়ের গতিতে বেরিয়ে গেলেন বশির সাহেব।
পার্টি অফিসে যাওয়া মাত্রই জনা পঞ্চাশেক মাঝারি সাইজের কর্মি ঘিরে ধরে বশির সাহেবকে । বিরোধী দলের উঠতি নেতা সে। সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন জমানোয় পার্টিতে তার জুড়ি নেই। সবসময় কর্মিদের চাঙ্গা রাখতে পারেন।
সময় নষ্ট না করে তার কর্মিদের জন্য দিক-নির্দেশনামুলক বক্তব্য শুরু করলেন বশির সাহেব, ”দেশের অবস্থা খুবই খারাপ। সরকার সবক্ষেত্রে ব্যর্থ। জনগণ চরম ক্ষুদ্ধ। জনগণের এই ক্ষোভকে আমাদের পরিপূর্ণভাবে কাজে লাগাতে হবে। এই সময় সরকারকে যদি আর একটু ঝাঁকুনি দেয়া যায়, সে নিজে থেকেই ভেঙ্গে পড়বে। তার জন্য আমাদের কিছু প্লট সাজাতে হবে। কয়েক জায়গায় ছোটখাটো ইস্যুতে গণ্ডগোল বাধিয়ে দিতে হবে। দেশের কিছু স্থানে বিচ্ছিন্ন বোমাবাজি চালাতে হবে। চাই কি দুই একটা লাশও ফেলতে হতে পারে। দেখবেন, পুরো দেশ কিভাবে অচল হয়ে যায়। সরকার পালাবারও পথ পাবে না। দেশের ও দলের বৃহত্তর স্বার্থে এই কাজগুলো আমাদের করতে হবে। এ জন্য যেকোন ত্যাগ স্বীকারে আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।’
২.
সরকারের অন্যতম প্রভাবশালী মন্ত্রী সালাম সাহেব ঘর থেকে বেরুচ্ছিলেন, এমন সময় মেয়ে উর্মি বলল, ‘বাবা, আজকে আমাদের স্কুলে প্যারেন্টস দে। তুমি গতবার ফাকি দিয়েছিলে, এবার তোমাকে যেতেই হবে।’
সালাম সাহেব মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন, ‘মা, এবার আমারও যাওয়ার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু কি করব, আজ এত জরুরি একটা কাজ পড়ে গেছে যে…’
বাবাকে কথা শেষ করতে দেয় না উর্মি, অভিমানী কণ্ঠে বলে, ‘কি এমন কাজ, যে তুমি মেয়ের জন্য একটু সময় বের করতে পার না!’
সালাম সাহেব আবারো মেয়েকে বোঝানোর চেষ্টা করেন, ‘মা, তোমার বাবা আর দশজন সাধারণ মানুষের মত নয়। তাকে দেশের অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়। যে কাজের সাথে দেশের কোটি কোটি মানুষের ভবিষ্যৎ জড়িত।’
উর্মি বাবার কথা পুরো বুঝতে পারে না। তবে আর কথা বাড়ায় না। শুধু মুখ ভার করে থাকে।
অসন্তুষ্ট মেয়েকে বাসায় রেখেই মন্ত্রণালয়ের অফিসে চলে যান সালাম সাহেব। অফিস কক্ষে দেখতে পান পুলিশের আইজি ও গোয়েন্দা প্রধানকে। প্রাথমিক আলাপচারিতার পর আসল কথায় চলে যান, ‘আপনাদের লিস্ট ফাইনাল তো? ওদের প্রত্যেককে মামলার ফাঁদে জড়ানো হবে। আন্দোলন শুরুতেই ভণ্ডুল করে দিতে হবে। রাস্তায় নামলেই লিস্ট ধরে গ্রেফতার করবেন। তবে গ্রেফতারের পূর্বে ভালমতো ধোলাই দেবেন। যাতে বাপধনদের আন্দোলনের খায়েস জন্মের মত মিটে যায়। দেশকে কিছুতেই অস্থিতিশীল করতে দেয়া যাবে না। আপনাদের ব্যাপক প্রস্তুতি নিতে হবে এ জন্য। অত্যন্ত সতর্কভাবে এগুতে হবে। আপনাদের উপরও অনেক হামলা হবে। কিন্তু কোন ভুল করা চলবে না। এই কাজে আপনাদের সফল হতেই হবে। দেশের বৃহত্তর স্বার্থে আপনাদের যেকোন ত্যাগ স্বীকার করার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।’
আপনার গল্প সমসাময়িক চারপাশকে মনে করিয়ে দেয়। গল্পের সার্থকতা এখানেই।
@প্রদীপ দেব,
অনেক ধন্যবাদ, প্রদীপদা!
গল্পের উপস্থাপনা, এবং বিষয় নির্বাচন দুটোই ভালো লাগলো। লেখা চালিয়ে যান।
@আফরোজা আলম,
অনেক ধন্যবাদ, আপু! (F)
গল্প দুটিতে আমাদের সমাজেরই কিছু মানুষের চিন্তা-চেতনার প্রতিফলন দেখতে পেলাম। অনেক উচ্চশিক্ষিত কিছু মানুষকে দেখি যারা নিজেদেরকে অত্যাধুনিক ও উদারপন্থী দাবী করেন কিন্তু বিশ্বাস করেন আজগুবিতায়। এই আধুনিকতা ও আজগুবিতার তাজ্জব সংমিশ্রণ দেখে সব গুলিয়ে যায়। জোড়ায় জোড়ায় অনু গল্প নাজিল হতে থাকুক।
@তামান্না ঝুমু,
অণু গল্প দুটোর কোথায় বা কোন চরিত্রে এ মিশ্রণ পেলেন তা যদি একটু স্পষ্ট করে বলতেন!
@তামান্না ঝুমু,
অনেক অনেক কাল আগে মানুষ পৃথিবী পুজো করতো, পৃথিবীকে অন্নদাত্রী দেবী ভেবে তাকে খুশী করতো চাইতো; খুশী করার উপায় ছিল দেবীর উপাদানগুলোর (মানে মাটি, নদী, গাছ, পর্বত প্রভৃতির) সুরক্ষা, সর্বোচ্চ শ্রম দিয়ে এগুলো থেকে ফসল ফলানো আর তার অকিঞ্চিৎকর অংশ (যেমন, একটা মুঠো ভাত) পৃথিবী দেবীকে প্রদান করা। এই দেবধর্মের সকল কার্যক্রম ছিল পৃথিবীকেন্দ্রিক, মানুষের নিজেদের প্রয়োজনেই পৃথিবীর সর্বোত্তম মঙ্গল সাধন ছিল এই ধর্মের সারকথা।
অথচ একটা সময় এলো, পৃথিবীর বাইরের কোন অতিপ্রাকৃত শক্তিকে মহাপ্রভু বানানো হল, যে প্রভু তার প্রতি আনুগত্যের পুরুষ্কার হিসাবে পৃথিবী বা তার উপাদানসমূহকে (মাটি, গাছ, নদী, পাহাড়) মানুষের দাস বানিয়ে দিল। এভাবেই পৃথিবী হয়ে গেল ‘দেবী থেকে দাসী’। মানুষ নির্বিচারে নিংড়ে নিতে লাগল পৃথিবীর সব কিছু, যে প্রক্রিয়া এখনো চলছে। আর ফলাফল তো আমরা দেখতেই পাচ্ছি।
মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ, আপু। (F)
পরিবেশবাদের মূলকথা, যদিও অলৌকিকতার ছোঁয়া দেয়া হয়েছে এবং অনেক গোষ্ঠির ধর্মীয় ইতিহাসেরও প্রতিফলন রয়েছে। ‘দাস’ গল্পটি ভাল লেগেছে, আর ‘দেশের কাজ’ গল্পটি গতানুগতিক অবস্থার প্রতিফলন।
মামুনের অনু গল্পের সম্ভার হোক অফুরন্ত এ প্রত্যাশা করছি।
@গীতা দাস,
মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ, দিদি।
যে অলৌকিকতা আমাদের এই পৃথিবীর সুরক্ষার কথা বলে, এর উপাদানগুলোর সেবা করার কথা বলে, সেই অলৌকিকতাকে দেবীর আসনে অধিষ্ঠিত করতে আমার কোন আপত্তি নেই, কারণ এই দেবী-ভক্তি আদতে আধুনিক কালের প্রকৃতি-ভক্তিরই নামান্তর, যার ফলে আমাদের ধরিত্রীই শুধু রক্ষা পায় না, সঙ্গে মানুষের আবাসস্থলও বিপদমুক্ত হয়, জীবনের সম্ভাবনাগুলো উন্মোচিত হয়।
সময়ের বিবর্তনে আমরা অন্নদাত্রী পৃথিবীকে দেবীর আসন থেকে সরিয়ে দিয়েছি, পৃথিবীর বাইরের অচেনা অদেখা অজানা শক্তিকে মহাপ্রভুর মর্যাদা দিয়েছি, যে প্রভু আবার এই পৃথিবীর বস্তুসমূহকে আমাদের ভোগের জন্য সৃষ্টি করেছেন, এবং আমাদের পূর্নাংগ দাসত্বে ছেড়ে দেবেন যদি আমরা তার নাম কীর্তন করি। ফলাফল, দুনিয়া জুড়ে প্রকৃতির যথেচ্ছ ব্যবহার, নির্বিচার ধ্বংস আর মানুষের তার সাধের আবাসভুম থেকে বিলুপ্তির আশংকা।
আমাদের নেতারা, হোক সরকারী দল বা বিরোধী দলের, পরিবারকেও সময় দিতে দেশের জন-গুরুত্বপূর্ণ কাজ করতে গিয়ে। কিন্তু আসলে তারা কি কাজ করেন? তারই একটি চিরচেনা চিত্র তুলে আনতে চেষ্টা করেছি অনুগল্পের আদলে।
লেখকের কাছে আন্তরিক ভাবে দূঃখ প্রকাশ করছি পোষ্ট সংক্রান্ত না হওয়া সত্বেও এখানে মন্তব্য করার জন্য।
মুক্তমনা মডারেটর@
ইংরেজী এবং বাংলা মুক্তমনা ব্লগের মডারেটর কী একই?
যারা সদস্য নন তাদের তথ্য প্রদানের উপায়টি কী (যদি তা নীতিমালায় না থাকে?)?
@পলাস,
মডারেশন প্যানেল একই। আপনার প্রশ্নটি ঠিক বুঝতে পারলামনা,মডারেটরদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করতে এবং লেখা পাঠাতে [email protected] ঠিকানায় মেইল করতে পারেন।
@রামগড়ুড়ের ছানা,
আমি একটি মেইল করেছিলাম এই ঠিকানায়। কোনো জবাব পাইনি, তাই এখানে মন্তব্য করা। চাইলে পুরনো মেইলটি আবার পাঠাতে পারি।