প্রবাদ আছে যে, কোনো ব্যাক্তি যদি সারা জীবন তালোয়ার নিয়ে “খেলে” তবে তালোয়ার দ্বারাই তারা মরণ ঘটে। কথাটি লিবিয়ার “সম্রাট” গাদ্দাফীর বেলায় অক্ষরে অক্ষরে সত্যি হলো।
আজ (অক্টো. ২০ তারিখ) খবরে প্রাপ্ত যে গাদ্দাফী তার পৈতৃক বাস-ভূমি সারটি তে লিবিয়ার মুক্তিসেনাদের হাতে আহত হয়ে আটক অবস্থায় নিহত হয়েছে। গাদ্দাফীর জীবনের শেষ মহূর্তটি একটি ভিডিওতে দেখানো হচ্ছে ‘ইয়াহু’ খবরের সাইটে। সে এক ভয়াবহ দৃশ্য বটে! রক্তাক্ত সেই দৃশ্য না দেখাই ভাল বলে আমি মনে করি।
লিবিয়ার মুক্তি সংগ্রামীরা সারটি আবরোধ করে রেখেছিল বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে। সবার ধারণা ছিল যে গাদ্দাফী সেখানে তার ছেলেগুলোকে নিয়ে দুর্গের সমতুল্য কোনো জায়গায় আছে। শেষ পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে যে সেই ধারণাটা সঠিকই বটে! আজ সকালে নাকি সারটি থেকে ৭০-৮০ টি গাড়ী ‘কনভয়’ করে পশ্চিম দিকে রওয়ানা হয়েছিল। এই খবরটি ফ্রান্স এয়ারফোর্সকে জানানো হলে ফ্রান্সের জঙ্গী বিমান এসে এই ‘কনভয়’ এর অপর বোমা বর্ষন করে। প্রথম দিকে খবরে বলা হয় যে এই উপর থেকে বোমা বর্ষনের ফলে গাদ্দাফী সাংঘাতিক ভাবে আহত হয় আর এটাই তার মৃত্যুর কারণ।
আজ সন্ধ্যার দিকে অন্য এক খবর বেরিয়ে আসে যুদ্ধ ভূমি থেকে। ফ্রান্সের জঙ্গী বিমান আক্রমণ করার পর নাকি মুক্তিসেনারা এক জায়গায় দেখতে পায় যে কিছু অস্ত্রধারী সেনা একটি জল নিষ্কাষণের পাইপ বা ড্রেনের ভিতর আশ্রয় নিচ্ছিল। তারা সেদিকে ধাবিত হয়। সেখানে দুই পক্ষের মধ্যে অস্ত্রের বিনিময় হয়। মুক্তিসেনারা এখন বলছে যে গাদ্দাফী নাকি ড্রেনের ভিতর ঢুঁকে বসেছিল তার সৈন্যদের নিয়ে। গাদ্দাফীকে সেখান থেকে বের করা হয় জীবিত অবস্থায়। কেউ কেউ আবার বলছে যে গাদ্দাফী তখনই আহত অবস্থায় ছিল। ক্ষেপা মুক্তি সেনারা বোধ হয় গাদ্দাফীকে তখনই বুলেট দ্বারা মেরেছে। গাদ্দাফীর এই অপমৃত্যুর জন্য ‘এম্নেস্টি ইন্টারন্যাশানাল’ একটি তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। লিবিয়ার মুক্তি সেনারা একটি বিশেষ ভুল করে ফেলেছে গাদ্দাফীক এ’রকম ভাবে মেরে। গাদ্দাফীর বিচার হবার দরকার অবশ্যই ছিল যে রকমটি হয়েছিল সাদ্দাম বা হুস্নে মুবারকের বেলায়। একনায়কত্ত্বের হিরোরা তাদের জীবদ্দশায় যদি শাস্তি পায় তাহলে সেটি মানবতার জন্য একটি বলিষ্ট পদক্ষেপ। তবে অনেকেই হয়তো এটাও বলবেন যে, গাদ্দাফী তার মৃত্যুর জন্য নিজেই দায়ী। অতএব, এই জল্লাদের জন্য খামাখা কুম্ভীরঅশ্রু বর্ষণ করে কিবা লাভ? তবে, ‘লো অফ্ দ্যা ল্যান্ড’ বলে একটি কথা আছে। এই নরাধমের বিচার ত্রিপলিতে হওয়া উচিত ছিল যা তে মধ্যপ্রাচ্যে এ’রকম হীন মনোবৃত্তির লোক ভবিষৎ এ বন্দুকের ভয় দেখিয়ে আর কোনোদিন ক্ষমতার গদিতে আসীন হতে না পারে।
এখন আসা যাক গাদ্দাফীর ‘লিগ্যাসী’তে। আগেই বলে রাখি যে আমি এই ইংরেজী শব্দের সমতুল্য আর কোন বাংলা শব্দ পাই নি কোনো বই বা অবিধানে। তাই নিতান্ত বাধ্য হয়ে এই ‘লিগ্যাসী’ শব্দটি ব্যবহার করছি। তবে ‘উদাহরণ’ শব্দটা ব্যবহার করলে তা করা যেত।
আমার সুস্পষ্ট মনে আছে যে ১৯৬৯ সনের সেপ্টেম্বর মাসে আমি যখন আমেরিকায় উচ্চ শিক্ষার জন্য আসি তখন লিবিয়ার কিছু কর্নেল-কেপ্টেন জাতীয় উঠতি বয়সের সেনারা তাদের দেশের বাদশাহ্ ইদ্রিসকে ঘাড় ধরে দেশ থেকে দেশান্তরী করে দেয়। এই নওজোয়ান সেনাদের রিং-লিডার ছিল ২৭ বছরের কর্নেল যার নাম মুয়ামার গাদ্দাফী। সে মিশরের আরেক সেনা অফিসার – গামাল নাসের – এর ভক্ত ছিল। নাসের ১৯৫২ সনে যে ভাবে মিশরের বাদশাহ্ ফারুককে দেশ থেকে বের করে মিলিটারী কুঁ করেছিল ঠিক তেমন ভাবে গাদ্দাফী লিবিয়ায় সামরিক শাসন চালু করেছিল। ক্ষমতা পুরোপুরি হাতের মুঠোয় নিয়ে আসে অল্প সময়ের মধ্যেই। গাদ্দাফী মিশরের সাথে কন্ফেডারেসী বা অর্ধ-যুক্ত থাকার জন্য চেষ্টা করেছিল ‘প্যান-আরাবিজম’ দীক্ষায় উদ্ভুদ্ধ হয়ে। পাগলাটে স্বভাবের এই মিলিটারী নেতা খেয়ালের বশবর্তী হয়ে তার জীবনে অনেক কিছুই করেছে লিবিয়ার জন্য। ১৯৬০ দশকে চীনে মাও সেতুং একটা লাল রঙের চটি বই বের করেছিল চীনের জনতাকে উদ্ভুদ্ধ করার জন্য। সেটির নাম দেয়া হয়েছিল “রেড-বুক”। সেই বই এ মাও এর উক্তি সন্বলিত করা হয়েছিল চীনেদের মগজ ধোলাই করার জন্য। লিবিয়ার গাদ্দাফী অনুরূপ ভাবে তার উক্তি একটি চটি বই এ ভরে দিয়ে তার নাম দিয়েছিল – “গ্রীণ-বুক”।
গাদ্দাফীর পাগলামীর দৃষ্টান্ত এত বেশী যে সেটি একটি লিখায় তার বিবরণ কুলিয়ে উঠবে না। প্রথম দিকে সে ছিল প্যান-আরবিস্ট কিন্তু সেটি যখন আর হয়ে উঠলো না, তখন সে পরে প্যান-আফ্রিকানিস্ট হয়ে গেল। কিছু দিন আগে আমি কোথাও যেন পড়েছিলাম যে সে নিজেকে আফ্রিকার বাদশাহ্ বলে দাবি করেছিল।
প্রেসিডেন্ট বুশের পররাষ্ট্র সচিব ডঃ কন্ডেলিস্সা রাইসকে সে তার মানসীর মত মনে করতো। ত্রিপলির রাজপ্রাসাদে মাত্র কিছুদিন আগে মুক্তি সেনারা একটি ফোটো এলবাম খুঁজে পেয়েছিল মিস্ রাইসের। সেই এলবামে গাদ্দাফী নাকি কন্ডির প্রেমে হাবুডুবু খেয়ে অনেক কবিতা লেখেছিল।
বেদুইনদের মত গাদ্দাফীর উঠ ও তাঁবুর প্রতি ছিল অনেক টান। ত্রিপলিতে সে রাজপ্রাসাদতুল্য ইমারত বানিয়েছিল বটে কিন্তু সে সেই প্রাসাদসম বাড়ীর উঠানে তাঁবু খাটিয়ে ঘুমাতে খুবই পছন্দ করতো। বেশীদিন আগের কথা নয় যখন গাদ্দাফী জাতীসংঘের বাৎসরিক সভায় যোগ দিতে এসেছিল নিউ ইয়ুর্কে তখন সে নিউ জার্সিতে একটি বাসা ভাড়া নিয়ে উঠসমেত এসে হাজির হয়েছিল। তাঁবুও খাটাতে চেষ্টা করেছিল সেখানে। এলাকার লোকরা প্রতিবাদ করাতে সেই যাত্রায় গাদ্দাফীর আর তাঁবুতে থাকা হয়ে উঠে নি।
গাদ্দাফী প্রাশ্চাত্তের দেশগুলোকে মোটেও পছন্দ করতো না আর ইজরাইলকে তো নয়ই। এ’সব দেশের পেছনে সে লেগেই থাকতো একটা না একটা অজুহাত নিয়ে। ১৯৮৮ সনে প্যানএম এর একটি প্লেনকে তার চর দ্বারা আকাশচ্যুত করায়। প্রথম সে অস্বীকার করে যে লিবিয়া এই কাজের সাথে লিপ্ত ছিল না, তবে পরে ক্ষতিপূরণও দিতে বাধ্য হয়। গাদ্দাফীর লাজ-লজ্জা খুব কমই ছিল। আন্তর্কজাতিক পর্যায়ে নানান বেআইনী কাজের সাথে সে লিপ্ত ছিল। ১৯৭৫ সনে শেখ মুজিবের হত্যাকান্ডের পর সে মুজিব হত্যাকারীদের অনেককে লিবিয়ায় চাকুরী দেয়। তার বিবেক বলে যে কিছু ছিল তা আমার জানা নেই।
গাদ্দাফী তার প্রতিরক্ষা বা নিরাপত্তার জন্য লিবিয়ার লোক না নিয়ে আফ্রিকার আন্যান্য দেশ থেকে ভাড়া করে মহিলা সৈনিক নিয়ে এসেছিল। এই ‘আমাজন’ এর বাহিনী তার ত্রিপলির প্রাসাদ রক্ষা করতো। সে রাশিয়া বা ইউক্রেন হতে এক মাঝ বয়সী সুন্দরী নার্স জোগাড় করেছিল তার নিজের জন্য। আর বেদুইনদের মত একাধিক বিয়ে করেছিল। তার পাশে যে বউকে দেখা যেত সেটি ছিল তার ছোট বউ।
গাদ্দাফী তার চেহারার ও সৌন্দর্যের প্রতি অত্যন্ত যত্নবান ছিল। খুব সম্ববতঃ ইটালী বা অন্য ইউরোপিয়ান এক দেশ থেকে প্লাস্টিক সার্জন আনিয়ে সে কয়েকবার মুখের উপর স্কালপেল চড়িয়ে বয়স কমিয়েছে কয়েকবার। সে সার্জনকে বলেছে যে তার দেশে কম বয়সী জনগণ বেশী তাই বুড়ো চেহারার হলে নওজোয়ানরা তাকে আর নেতা হিসাবে পছন্দ করবে না। মাথায় টাঁক পড়ার জন্য সে সবসময় পাগড়ী বা টুপি পড়ে থাকতো। কী আশ্চর্য যে আজ ভোরে মুক্তি সেনারা যখন তাকে নর্দমার ড্রেন থেকে বের করে নিয়ে আসে তখন তার মাথায় টুপি পর্যন্ত ছিল না। তাকে সে সময় দেখে চেনাই যাচ্ছিল না!
এই বছর ফেব্রুয়ারী মাসে বেন্গাজীতে যখন জনতা রাস্তায় নেমে এসে তার শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানালো তখন সে প্রতিবাদীদের ইঁদুর বলে আখ্যায়িত করলো। ক্ষমতার লোভে সে হাজার হাজার লিবিয়াবাসীদের মৃত্যুর পথে ঠেলে দিল। সারা পৃথিবীর লোক প্রতিবাদ জানালো তবুও সে কারু কথা শুনলো না। সাত মাস ধরে গিদিতে ঠায় বসে রইলো। একমাত্র পাগল বা ‘মেগালোমেনিয়াক’ না হলে কেউই এরকম ভাবে নিজের দেশের লোকদের এত অত্যাচার বা হত্যা করতো না। আফ্রিকার অন্য দেশগুলো যেমন তিউনিশিয়া বা মিশরে এরকমটি হয়নি যেটি হলো লিবিয়ায়। গাদ্দাফী মিস্রাটা শহরকে বলতে গেলে ধূলিসৎ করে দিয়েছে তার ভাড়াটে সেনা দিয়ে। তার একাধিক ছেলেকে সামরিক বাহিনীর সেনাপতি বানিয়ে সে মনে করেছিল তার ডাইনেস্টি বহাল তবিয়ৎ এ থাকবে। আমার মতে গাদ্দাফী ছিল সল্প-বুদ্ধি সম্পন্ন নেতা। অন্য আর কেউ তার জায়গায় থাকলে আতি সহজেই বুঝতে পারতো যে তার দেশের লোকরা তাকে আর চাইছে না। পৃথিবীর ইতিহাস তাকে এক দয়ামায়াহীন ও নিষ্ঠুর নেতা বলে আখ্যায়িত করবে এবং তাকে জোসেফ স্টালিন, এডোলফ হিটলার, ইদি আমিন, ও সাদ্দাম হুসেনের দলে ফেলবে।
পিপিলিকার পাখা যেমন গজায় মরিবার তরে, তেমনি গাদ্দাফীর গদিতে এত সুদীর্ঘ দিন (৪২টি বছর) বসে থাকাটিও হয়েছিল তার মরিবার তরে। তার মহাপ্রয়াণে পৃথিবী হারালো একটি অতি আলোচিত ও পাগলাটে অধিনায়ক। তাকে নকল করে পৃথিবীর আর কোনো দেশে অন্য কোনো নেতা একনাগাড়ে ৪০-৪২ বছর রাজত্ব করতে পারবে বলে আমার মনে হয় না। যে লোক জীবিত অবস্থায় কখনো শান্তি খুঁজে পায় নি, সে যেন মৃত্যুর মাঝে শান্তি খুঁজে পায় – এই কামনাই করি।
খলনায়কের ম্রিত্যুর পর নতুন লিবিয়া কি হবে?আরব,ইসলাম,নাকি আমেরিকা পন্থি।সমগ্র লিবিয়ানদের জন্য একটি যুগান্তকারি প্রশ্ম হওয়া উচিত।
@ovro banarjee,
নতুন লিবিয়া কোন পথে যাবে সেটি নিয়ে পরে আমি না হলেও কেউ না কেউ লিখবে। আমার এই লিখাটি গাদ্দাফীর ভয়াবহ মৃত্যুর পর সঙ্গে সঙ্গে লিখা হয়েছে। তাই আমি শুধু মাত্র গাদ্দাফীর লিগ্যাসি এর উপর দৃকপাত করেছি। আপনি যখন জানতে চেয়েছেন লিবিয়া কোন পথে যাবে, তাই আমি দুটো কথা লিখবো এই বিষয়ে।
আমার মনে হচ্ছে যে লিবিয়ার নয়া সরকার জণগনের আস্তা কুড়ানোর জন্য ইসলামী বা শরিয়া আইন তাদের দেশে কার্যকরী করবে খুব শীগ্রই। তবে দেশটি যে ইউরোপ ও আমেরিকার ধামাধরা হবে সেই ব্যাপারে নিশ্চিত থাকবেন। ন্যাটো জোটের বিমান বাহিনী যদি এরিয়াল বোম্বিং সমেত মুক্তিসেনাদের সাহায্য না করতো, তবে গাদ্দাফীকে এত তাড়াতাড়ি গদীচ্যুত করা যেত না। লিবিয়ার নয়া সরকার এই সত্যটি বেশ ভাল করেই জানে। সেই জন্যে লিবিয়া ফ্রান্স, আমেরিকা, এইসব দেশকে ভজভজ করে তাদের দেশ চালাবে।
তবে যে ব্যাপারে আমি সংকিত সেটি হচ্ছে এই – লিবিয়া শীঘ্রই একটি ইসলামিক রিপাবলিক দেশ হিসাবে গণ্য হবে। তবে গাদ্দাফী যেমন প্রো-আরব ও প্রো-আফ্রিকা নীতি মেনে দেশ চালাতো, এই নয়া সরকার তেমনটি করবে না। প্রো-ওয়েস্ট হবে এদের মূল নীতি। গাদ্দাফী লিবিয়াকে রক্ষনশীল ইসলামিক বলয় থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছিল নিজের গদী ঠিক রাখার জন্য। এবার কিন্তু হবে উল্টোটা। দেশটি যে ইসলামিস্টদের হাতের মুঠোয় যাবে সে ব্যাপারে সন্দেহের কোন অবকাশ নেই। এটি হচ্ছে আমার ব্যক্তিগত অভিমত। মুক্তি সেনারা প্রায়ই “আল্লাহু আকবর” স্লোগান ছেড়েছে এই সংগ্রাম চলাকালীন। গাদ্দাফীকে যখন ড্রেন-পাইপ থেকে বের করে এনেছে, তখন মুক্তি সেনারা “আল্লাহু আকবর” বলে স্লোগান দিচ্ছিল। এই স্লোগানটি আমার মোটেই ভাল লাগেনি।
কী আর বলবো? গাদ্দাফীও নিজে ইসলামকে ব্যবহার করেছে তার গদী টিকাতে। দেখা যাক ভবিষৎ এ লিবিয়ার কি হয়।
@ovro banarjee,
গাদ্দাফীর মৃত্যুর মাত্র ৫ দিন পরই এই নীচের দেয়া খবরটি প্রকাশিত হলো ফ্রেঞ্চ সংবাদ প্রতিষ্ঠান এ এফ পি দ্বারা। খবরটির উপর গুরুত্ব দেয়া অতি প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি। লিবিয়ার মহিলাদের অনেকে যখন আজ শুনলো যে দেশটি নিকট ভবিষৎ এ শারিয়া আইন দ্বারা শাসিত হবে, তখন অনেক কর্মতৎপর মহিলা বা ‘উইম্যান এক্টিভিস্টরা’ শঙ্কিত হয়েছে এই জন্য যে শারিয়া শাসিত লিবিয়ায় পুরুষরা ৪টি পর্যন্ত বউ একসাথে ঘরে রাখতে পারবে যেটি বর্তমান ম্যারেজ বা বিবাহ আইনের বহির্ভূত। এই শারিয়া আইন সেই দেশে চালু হলে সেটি মহিলা সমাজের উন্নতির প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি অবশ্যই করবে।
—————
Sharia law declaration raises concerns in new Libya
By Simon Martelli
AFP – Mon, Oct 24, 2011
The announcement that Islamic sharia law will be the basis of legislation in newly liberated Libya has raised concerns, especially among women, despite Islamists insisting moderation will prevail.
Interim leader Mustafa Abdel Jalil said on Sunday, during his speech to the nation in Benghazi to formally declare the country’s liberation from the ousted regime of Moammer Kadhafi, that sharia would be Libya’s principal law.
“Any law that violates sharia is null and void legally,” he said, citing as an example the law on marriage passed during the slain dictator’s 42-year tenure that imposed restrictions on polygamy, which is permitted in Islam.
“The law of divorce and marriage… This law is contrary to sharia and it is stopped,” Abdel Jalil said.
His comments have provoked criticism and calls for restraint both in Libya and in Europe, amid fears that the Arab Spring may give rise to a potentially intolerant Islamist resurgence.
Many Libyans awaiting Sunday’s historic speech expressed surprise at the decision by the National Transitional Council leader to mention the role of sharia law in the new country before addressing such important issues as security and education.
“It’s shocking and insulting to state, after thousands of Libyans have paid for freedom with their lives, that the priority of the new leadership is to allow men to marry in secret,” said Rim, 40, a Libyan feminist who requested anonymity.
“We did not slay Goliath so that we now live under the Inquisition,” she told AFP.
In his speech, Abdel Jalil also announced the introduction of Islamic banking in Libya in keeping with sharia which prohibits the earning of interest, or riba in Arabic, that is considered a form of usury.
Adelrahman al-Shatr, one of the founders of the centre-right Party of National Solidarity, launched just last week, said it was premature for the NTC leader to speak about the policies of the new state.
“It is a subject that should be discussed with the different political groups and with the Libyan people,” he said.
“These declarations create feelings of pain and bitterness among women who sacrificed so many martyrs,” in the eight-month battle against Kadhafi loyalists, he added.
“By abolishing the marriage law, women lose the right to keep the family home if they divorce. It is a disaster for Libyan women.”
Western leaders also responded swiftly to Abdel Jalil’s comments, with EU foreign policy chief Catherine Ashton saying on Monday Libya’s introduction of sharia law must respect human rights and democratic principles.
Abdel Jalil, a respected former justice minister of Kadhafi who distanced himself from the old regime, is seen as a pious man and a Sufi follower of Islam who is at odds with extremism.
He has already said that the new Libya would not adopt any extremist ideology, and sought to reassure the international community by stating on Monday that Libyans were moderate Muslims.
Nevertheless, Libya’s Islamists are a rising force in the country’s political arena, some of whom, such as Abdelhakim Belhaj, the founder of the Al-Qaeda linked but now-disbanded Libyan Islamic Fighting Group (LIFG), are expected to hold prominent positions.
After suffering decades of persecution by Kadhafi, they are also working hard to present themselves as proponents of tolerant, democratic values and policies.
“The rules and laws (in new Libya) should take Islam as a basic reference,” Islamist leader Sheikh Ali Sallabi, a supporter of Belhaj, told AFP.
He insisted that freedom, justice, equality and respect for human dignity should be enshrined in the new constitution, along with the peaceful rotation of power.
“We believe in the rights of others to show their programmes to the people, and to let the people decide,” said Sallabi, who was jailed for eight years during the 1980s in Tripoli’s notorious Abu Salim prison.
“We also believe in the freedom of the press and the right to self expression. We believe that our religion accommodates these rights,” he added.
হাছিনা আর খালেদা গনতান্ত্রীক পদ্ধতির ভিতর দিয়ে ক্ষমতায় আসলেও তাদের আচারন কখনও কখনও এক নায়কের মত হয়ে যায়। তারাও বহুদিন জাতির ঘাড়ের উপরে চেপে বসে আছে। তেমন কিছু করছে না আবার কাউকে কিছু করতেও দিচ্ছে না। এই দুই জনেরও নিজস্ব গুন্ডা বাহিনী আছে। গাদ্দাফির অপমৃত্যু থেকে তাদেরও কিছু শিখে নেওয়া উচিত সময় থাকতে।
আমার তা মোটেই মনে হয় না। স্বল্প বুদ্ধি সম্পন্ন নয়। লোভী ও হিংস্র লোক বলতে পারেন।
অস্বস্তিকর সমাপ্তি নয় কি ? গাদ্দাফির জন্য শান্তি কামনা ! যে কি না ৪২ বছর ধরে কত লোকের অশান্তির কারণ। উপরন্তু, মৃত ব্যক্তির জন্য শান্তি কামনা !!
লিবিয়াকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিয়ে হাজার হাজার লিবিয়াবাসীদের মৃত্যু ঠেকাতে গাদ্দাফির গ্রেফতার অথবা মৃত্যু অবিলম্বে দরকার হয়ে পরছিলো। ক্ষমতার লোভে মানুষ যে কত অমানুষ হতে পারে গাদ্দাফি তার উদাহরন।
সুদীর্ঘ ২২ বছর না-কি ৪০ বা ৪২ বছর এই ঘৃন্য বর্বর একনায়কটি ক্ষমতার মসনদে রাজত্য করেছিল ?
আশা করি লিবিয়াবাসী যেন স্বৈরশাসকের বদলে হামাসের মত ধর্মীয় উগ্রপন্থীদের খপ্পরে না পড়ে জনগনতান্ত্রিক সরকারের জন্ম দেয়।
জয় হউক মানুষের মানবতার মুক্তি।
@মাহবুব সাঈদ মামুন,
অসংখ্য ধন্যবাদ অনিচ্ছাকৃত ভুলটি ধরিয়ে দেবার জন্য। আমি লিখাটির গোড়াতেই বলেছি যে ১৯৬৯ সনে সেপ্টম্বর মাসে আমি যখন মার্কিনমুল্লুকে পা রাখি প্রথমবারের মত সেই তখন গাদ্দাফী সামরিক ক্যুঁ করে ক্ষমতা দিখল করেছিল। আবারো ধন্যবাদ আমার সাধারণ গণিতে ভুল ধরিয়ে দেবার জন্য। ভুলটা এখন ঠিক করে দিয়েছি।
@মাহবুব সাঈদ মামুন,
খবরের কাগজে দেখলাম, গাধাফির রাজত্ব ছিল ৪২ বছর। আমরা যখন বিস্ববিস্যালয়ে শেষ বর্ষের ছাত্র ছিলাম তখন থেকেই গাদাফির শাসন দেখে আসছি। তারপর থেকে গাদাফি ছাড়া লিবিয়া চিন্তাই করতে পারতাম না।
শেখ মুজিব ও তাজুদ্দিনের হত্যকারীরা কেমন করে গাদ্দাফীর আশ্রয় পেল এটা আমার কাছে এখনো একটা বিস্ময়ের বিষয়। তার অনেক কিছুর মত এটার যুক্তিটা বোঝা মুশকিল। বাংলাদেশে এটা নিয়ে খুব বেশী আলোচনা হয় নি।
অন্য একটি প্রসঙ্গে বলি, তার ইউক্রেনীয় নার্সের একটি সাক্ষাৎকার পড়েছিলাম। সে অবশ্য তার প্রতি গাদ্দাফীর ব্যবহার ভদ্রজনোচিতই বলেছে।
@দীপেন ভট্টাচার্য,
হাসিনা সরকার ও বাংলাদেশের সুশীল-সমাজ অনেক আগে গাদ্দাফীর মুজিব খুনিদের প্রতি এই হীনমনোবৃত্তি আচরণ এর প্রতি আংগুল প্রদর্শন করে একটা কড়া কূটনৈতিক নোট পাঠানো উচিত ছিল ত্রিপলিতে। কেন যে এটা করা হয় নি তা আমি জানিনা!
ইউক্রেনীয় নার্সের ব্যাপারে আমি একটা খবরের কাগজে পড়েছিলাম যে গাদ্দাফীর নাকি কোন মাংসপেশীতে বেদনা ছিল। সে খুব সম্ভবতঃ তাকে ম্যাসাজ করে দিত। সেই নার্সটিকে বেশ বিচক্ষণই বলবো। মার্চ-এপ্রিলের দিকে সে তল্পিতল্পা গুটিয়ে ত্রিপলি থেকে সরে পড়েছিল।
@এ.এইচ. জাফর উল্লাহ,
লিবিয়াতে অনেক বাঙালি চাকুরি করে–এখনও হয়ত করে। আমার এক ছাত্র বলছিল অনেক বাঙালি ভাড়টিয়া সৈন্য হিসাবে নাকি লিবিয়ায় ছিল, যদিও এই সংবাদের কোন সমর্থন আমি দেখি নাই।
সৌদিতে নাকি ২৫ লাখের মত বাঙালি চাকুরি করে। তাই বাঙলাদেশের সরকারের মুরোদ নাই যে সোউদি বাদশাহর বিরুদ্ধে টুঁ শব্দটি করে। একই কারণ লিবিয়ার ব্যাপারে।
যত সব পাগল ছাগল উন্মাদ নেতা আরব দেশ গুলোতে। বিষয় কি ?
আর অধিকাংশ একনায়ক স্বৈরশাসক হলো মুসলিম দেশ গুলোতে , এর কারন কি ?
পৃথিবীতে বাংলাদেশই একমাত্র মুসলিম দেশ যেখানে গণতন্ত্র একটু হলেও ভিত্তি গড়তে পেরেছে।
অপেক্ষা করছি , সৌদি বাদশার মত বর্বর রাজা বাদশাকে কবে সৌদিরা খেদানোর আয়োজন করে।
@ভবঘুরে,
ঠিক, পালের গোঁদাটাকে ধরার ব্যাপারে আমি আশাবাদী। স্যোশাল মিডিয়ার যুগে এটা অসম্ভব বলে কিছু না!
@ভবঘুরে,
সৌদিতে সেটা সম্ভব হবে বলে মনে হচ্ছেনা। ওরা নিজেরাই ত গণতন্ত্র চায়না। সব একনায়কের অপমৃত্যু কামনা করছি।
@ভবঘুরে,
আমার মনে হয় আরেকটা কারবালা হবে তবে তা হবে এই সৌদিতেই।
@ভবঘুরে,তুরষ্ক, ইন্দোনেশীয়া, মালয়েশীয়া।