লিখেছেনঃ রিমেল
আজ অভি’র জন্মদিন, আমাদের আলোকিত অভিজিৎ রায়। তিনি কখনোই অবর্তমান নন, তিনি কখনোই খুব দূরের কেউ নন, তিনি অদৃশ্য হয়েও দৃশ্যমান, আমাদের অন্তরে। আজকের দিনটিতে আমি অনুভূতিশূন্য হয়ে যাই, বোধহয় হারিয়ে ফেলি দিক-বেদিক। অভি যদি দৃশ্যমান থাকতেন, প্রজ্ঞার ঝর্ণার পাশে বসে হয়তো আমাদের আলাপ হতো অনেক। অভি’কে আমি কখনোই মৃত ভাবি না, অভিজিৎ রায়ের মৃত্যু হয় না, অভিজিৎ, হাজারো অভিজিৎ হয়, রয়ে যায় এই পৃথিবীতেই, কালের গর্ভে।
বইমেলা থেকে বেরিয়ে সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের গেট পার হতেই হঠাৎ পেছন থেকে হামলার সম্মুখীন হন ব্লগার, লেখক ডঃ অভিজিৎ রায়। সকলেই দাঁড়িয়ে থাকেন কাপুরুষের মতন, যেনো সকলেই অথর্ব, পুঙ্গ, বিকলাঙ্গ। ফটো সাংবাদিক জীবন আহমেদ রক্তস্নাত অভিজিৎ ও বন্যাকে দ্রুত নিয়ে যায় হাসপাতালে। কারা সেই হত্যায় জড়িত, কী করে কী হয়েছে, আপনারা হয়তো কিছুটা জানেন। না জানলে জানিয়ে রাখি, পরিকল্পিত সেই জঙ্গি হামলায় নিহত হন অভিজিৎ রায়।
একদিন আমরা কয়েকজন আলাপে বসেছিলাম, মুক্তচিন্তা নিয়ে। সেই আলাপচারিতায় অভিজিতের পূর্বপরিচিত একজন নারী শুভাকাঙ্খী বেলছিলেন “অভিজিৎ দা, সমালোচনা করতেন, অসম্মান নয়, তিনি অত্যন্ত সহনশীল ছিলেন, উগ্র নয়। তিনি ভাবুক ছিলেন, চিন্তক ছিলেন, লেখক ছিলেন, কোনো র্যাডিক্যাল মনস্টার নয়, নিতান্তই সাদামনে সেক্যুলারিজমকে তিনি ধারণ করতেন”
আজ সারাদিন শাহবাগ থাকতে হয়েছে এক বিশেষ কারণে, আমার চোখ মৃতের মতন স্থির হয়ে যাচ্ছিলো বার বার, ভাবছিলাম, অভি’ও তো এই পথেরই মানুষ, আদতেই “মানুষ”। আমি বার বার খুঁজতে চেয়েছি অভি’কে। পাই নি! পেলাম না! কেনো? তবে এক পশলা বৃষ্টি যেনো মনে করিয়ে দিলো, “আমার ভেতর ও বাহিরে অন্তরে-অন্তরে আছো তুমি হৃদয় জুড়ে”
“বড়ো বেদনার মতো বেজেছ তুমি হে
আমার প্রাণে, বেদনার মতো
মন যে কেমন করে, মন যে কেমন করে
মনে মনে তাহা মনই জানে
বড়ো বেদনার মতো বেজেছ তুমি হে
আমার প্রাণে, বেদনার মতো”– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
অভিজিৎ, আমাদের ক্ষমা করবেন। আমরা আপনাকে আজও তীব্র ভালোবাসি, মনে করি, ধারণ করতে চেষ্টা করি, আমাদের খুব কম আড্ডাতেই বোধ হয় আপনি অনুপস্থিত থাকেন ।
অভিজিৎ রায়, আলো হাতে আঁধারের যাত্রী। আমাদের অভিজিৎ দা, অভি, শুভ জন্মদিন।
Leave A Comment