২০১৫ সালের ৩১ তারিখ জাগৃতির প্রকাশক ফয়সাল আরেফিন দীপনকে খুন করে ধর্মান্ধচক্র আজিজ মার্কেটে তাঁর প্রকাশনীর ভেতরেই।
লালমাটিয়ায় শুদ্ধস্বরের কার্যালয়েও একই সময়ে হামলা করেছিল ধর্মান্ধচক্র। সেখান থেকে আহত হয়ে প্রাণে বেঁচে ফিরেছেন প্রকাশক আহমেদ রশীদ টুটুল, লেখক – ব্লগার রণদীপম বসু ও তারেক রহিম।
যুদ্ধপরাধীদের বিচারের দাবিতে শাহবাগে গড়ে উঠা গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য ও ব্লগার – প্রকাশক – লেখকদের ভয় দেখাতে ধর্মান্ধ চক্র খুনের রাজনীতি কায়েম করেছিল প্রতিশোধের নেশায়।
এই প্রতিশোধের রাজনীতি, বিএনপি নেত্রী বেগম জিয়া ও জামাত চক্রের রাজনৈতিক সহায়তা পেয়েছে। বিএনপি নেত্রী শাহবাগে জড়ো হওয়া ব্লগার ও লেখকদের, নাস্তিক – ফাস্তিক – নষ্টদের আন্দোলন বলে অভিহিত করেছিলেন; একইসাথে প্রতিটি সমাবেশে তিনি যুদ্ধপরাধী – রাজাকার জামাত নেতাদের রাজবন্দী বলে মুক্তি দাবি করছিলেন।
হাটহাজারি থেকে তেঁতুল মোল্লা শফি রাজাকার ২০১৪ সালের এপ্রিল মাসে ফতোয়া দিয়েছিল, ‘নাস্তিকরা তোমরা মুরতাদ হয়ে গেছ, তোমাদের কতল (হত্যা) করা আমাদের উপর ওয়াজিব হয়ে গেছে’। এ সবই করা হয়েছে ৭১’র ঘাতক দালালদের রক্ষার জন্য।
ব্লগার, প্রকাশক, লেখক ও চিন্তাবিদদের খুন করা ও হত্যাকে সহনীয় করার সামাজিক মনস্তত্ত্ব নির্মাণে এ সমস্ত আলাপ বাজারে ছাড়া হয়েছিল, যেন ধর্মান্ধ খুনীচক্র ধর্মের জন্য লড়ছে এটি খাওয়ানো যায়!
হলি আর্টিজান রেঁস্তোরায় হামলা করে ২২ জনকে খুন করা হয়েছিল, এরই ধারাবাহিকতায়।
এখন পর্যন্ত এ সমস্ত খুনের একটিরও বিচার সম্পন্ন হয়নি, খুনের সাথে রাজনৈতিক ছত্রছায়ার যোগসূত্র খোঁজা হয়নি!
রাজনৈতিক কারণেই কিনা কে জানে? ক্ষমতাসীনরা ব্লগার – লেখক – প্রকাশক হত্যাকান্ড নিয়ে কথা বলতে চান না।
মাঝখান থেকে বিচার বিলম্বিত হচ্ছে। ঘাতকরা অন্য কারও উপর ছুরি চালানোর জন্য ছুরিতে শান দিচ্ছে।
এখন সাম্প্রদায়িকতার আগুনে পুড়ে ছাই হচ্ছে স্বদেশ। ক্ষমতাসীনরা ধরি মাছ না ছুঁই পানির ভূমিকা নিয়েছে। হেফাজত তোষণে ক্ষমতাসীনদের কিছুই অর্জিত হয়নি, তাও ক্ষমতাসীনদের মোহভঙ্গ ঘটেনি। ধর্মের বর্মে আস্থা খুঁজছে ক্ষমতাসীনরা!
সরকারবিরোধী রাজনীতির নামে প্রগতিশীলতার মোড়কে মোড়ানো নষ্ট রাজনৈতিক নেতা – কর্মীরা রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম ও রাজনীতির সাথে ধর্মের মেলবন্ধনের বিরুদ্ধে একটি বাক্যও ব্যয় করে না। বিএনপি- জামাত প্রযোজিত ব্লগার-প্রকাশক খুনের ঘটনায়ও এসমস্ত কূপমণ্ডূকরা নীরব।
সরকারবিরোধী রাজনীতির নামে প্রগতিশীলতার মোড়কে মোড়ানো নষ্ট রাজনৈতিক নেতা – কর্মীরা রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম ও রাজনীতির সাথে ধর্মের মেলবন্ধনের বিরুদ্ধে একটি বাক্যও ব্যয় করে না। বিএনপি- জামাত প্রযোজিত ব্লগার-প্রকাশক খুনের ঘটনায়ও এসমস্ত কূপমণ্ডূকরা নীরব।
কি নিষ্পাপ চেহারা আর চোখের চশমা দিয়ে মিটমিট করে চাহনি। সেই চোখ দিয়ে তথাকথিত শিক্ষিত ভদ্র বুদ্ধিজীবীদেরসহ সো কল্ড গনতন্ত্রের ধব্জাধারীসহ আরও বেশি প্রগতিশীল নামের পার্টি এবং তার অংগে জড়িত নেতা,নেত্রী ও সদস্যদের কে গভীর চাহনি দিয়ে বলছে তোমরা কি করছ? তোমাদের এই কান্ড কিত্তনের জন্যই কি আমাকে অকালে হত্যা করা হলো।
উত্তর দাও,উত্তর দাও।
মনে করো না যে তোমরা সুখে শান্তিতে বসবাস করতে পারবে যতক্ষণ আমি দীপেন সহ অভিজিৎ, অনন্ত সহ আমাদের সহযাত্রীদের খুনিদের মুখোশ খুলে তাদের বিচারের কাঁঠগড়ায় না দাঁড় করাও।
তা না হলে বেশী দিন দেরি নেই তোমাদেরও আমাদের মতো একই পথের পথিক হতে হবে।
এবার, সিদ্ধান্ত তোমাদের। তোমরা কি করবে?