শোক, ক্ষোভ, সমবেদনা আর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত-না, এসব কিছুই আর জানাব না। প্রশাসনিক-সামাজিক-রাজনৈতিক চরম অব্যবস্থাপনার নির্মম শিকার হয়ে যারা অকালে জ্বলন্ত অগ্নিকুণ্ডে আত্মাহুতি দিল-তাদের স্বজনদের কাছে নি:শর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করছি-একাত্তুরের একজন অখ্যাত মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে।
(হাসেম ফুড এ্যাণ্ড বেভারেজ কারখানার অগ্নিকাণ্ডে নিহত শ্রমিকদের স্বজনদের উদ্দেশ্যে প্রতিক্রিয়া)

 

প্রিয় স্বজনহারা জনগণ,

তোমরা বিশ্বাস করো, যে দেশ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে নিতান্ত কিশোর বয়সে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম-আজকের এ স্বদেশ আমার সে স্বপ্নের দেশ নয় অর্থনৈতিক মুক্তি, সামাজিক সাম্য ও ন্যায় বিচার ভিত্তিক একটি সেকুল্যার সমাজের স্বপ্ন নিয়ে আমরা সেদিন বনবাদাড়ে শত্রু হননের জিঘাংসা নিয়ে ঘুরে ফিরেছিলাম। লক্ষ লক্ষ শহীদ ও মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে দেশকে আমরা শত্রুমুক্ত করেছি। আজ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালিত হচ্ছে। কিন্তু আমাদের সে স্বাধীনতা আজ যে নির্লজ্জ লুঠেরা, দুর্নূীতিবাজ,ভূমি-দস্যু,চাঁদাবাজ, বাজিকর ও রাজনৈতিক মাফিয়াদের দখলে চলে গেছে।
আমরা চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সে স্বপ্নের দেশ গড়ে তুলতে। তাই আমি ও আমরা-যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম-তারা রক্ষা করতে পারিনি আমাদের স্বাধীন স্বদেশকে।অকপটে স্বীকার করছি এ আমাদের ব্যর্থতা।

আমাদের সংবিধানে উল্লেখিত সুবচন-জনগণ ক্ষমতার মালিক-তা আজ চরম মিথ্যা বাক্যে পর্যবসিত হয়েছে।জনগণ আজ নিতান্ত প্রজারও অধম-খাদেম। তাই আজ স্বাধীন দেশ দাঁড়িয়ে আছে এক চরম বৈষম্যমূলক সমাজে-যেখানে মানুষ-বিশেষভাবে গরীব মানুষের জীবনের মূল্য নেই কানাকড়িও। তারা মরছে করোনা মহামারীতে, তারা মরছে সড়কে পিষ্ঠ হয়ে, তারা মরছে অনাহারে-অর্ধাহারে, তারা মরছে নিরাপত্তা-হেফাজতে, তারা খুন ও গুম হচ্ছে নিরন্তর, তারা জীবন্ত অগ্নিদগ্ধ হয়ে মরছে কারখানা নামক বিভিন্ন শ্রম শিবিরে-ফি বছর-একটি স্বাধীন দেশে !

তাই তাদের জন্য আর কোন শোক-ক্ষোভ-সমবেদনা কিংবা তাদের তথাকথিত বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা নয়-তাদের স্বজনহারা বেদনাতুর পরমাত্মীয়দের কাছে ক্ষমা, শুধু নি:শর্ত ক্ষমা চাই। তোমরা আমাদের ক্ষমা করো-হে শোকাহত স্বজনহারা প্রিয় জনগণ।

দুই
সরকারের কাছে নয়, প্রশ্নটি জাতির বিবেকের কাছে-যাদের চুড়ান্ত অবহেলা ও কর্তব্য পালনে চরম ব্যর্থতার কারণে এতগুলো প্রাণ ঝরে গেল-তারা কি্ এমনিই পার পেয়ে যাবে?

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শ্রম ও জনশক্তি মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি বিশাল অধিদপ্তর আছে-যার নাম কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর। তার প্রধানের নাম ছিল আগে প্রধান পরিদর্শক; মান বড়িয়ে তাকে করা হয়েছে মহাপরিদর্শক। আর জেলায় জেলায় তার যে শাখা দপ্তর তার প্রধানদের পদবী করা হয়েছে উপ-মহা পরিদর্শক।

বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ এ ২০ অধ্যায়ের ৩১৯ ধারায় তাদের দায়িত্ব সম্পর্কে বলা হয়েছে, যা নিন্মরূপ-

৩১৯৷ (১) এই আইনের উদ্দেশ্যে, প্রধান পরিদর্শক বা কোন উপ-প্রধান পরিদর্শক, [সহকারী প্রধান পরিদর্শক, পরিদর্শক বা
সহকারী পরিদর্শকের, তাহাদের এখতিয়ারাধীন এলাকায়, নিম্নরূপ ক্ষমতা বা দায়িত্ব থাকিবে, যথাঃ-
(ক) প্রয়োজনীয় সহকারী সহকারে, তাহার বিবেচনায় কোন প্রতিষ্ঠান হিসাবে গণ্য বা ব্যবহৃত কোন স্থান, আংগিনা, নৌযান বা যানবাহনে যে কোন যুক্তিসংগত সময়ে প্রবেশ, পরিদর্শন এবং পরীক্ষা কার্য পরিচালনা;
(খ) এই আইন বা কোন বিধি, প্রবিধান বা স্কীম মোতাবেক রক্ষিত কোন রেজিস্টার, রেকর্ড, নথিপত্র, নোটিশ, প্রত্যয়নপত্র বা অন্য কোন দলিল-দস্তাবেজ তলব করা, এবং ইহা আটক, পরিদর্শন বা পরীক্ষা করা বা ইহার নকল করা;
(গ) কোন প্রতিষ্ঠান বা উহাতে নিযুক্ত কোন শ্রমিক সম্পর্কে এই আইন বা কোন বিধি, প্রবিধান বা স্কীমের কোন বিধান যথাযথভাবে মানা হইতেছে কিনা ইহা নির্ধারণের জন্য প্রয়োজনীয় অনুসন্ধান বা পরীক্ষণ;
(ঘ) কোন প্রতিষ্ঠানে পাওয়া গিয়াছে বা কোন প্রতিষ্ঠানে অব্যবহিত পূর্ববর্তী দুই মাসের মধ্যে চাকুরীতে নিযুক্ত ছিলেন বা আছেন বলিয়া বিশ্বাস এরূপ কোন লোকের এই আইন বা কোন বিধি, প্রবিধান বা স্কীম সম্পর্কিত কোন বিষয়ে জবানবন্দী গ্রহণ;
(ঙ) জবানবন্দী বা পরীক্ষা গ্রহণ করা হইয়াছে এরূপ প্রত্যেক ব্যক্তির নিকট হইতে সত্যতা প্রতিপাদনের জন্য জবানবন্দী বা পরীক্ষা সংক্রান্ত রেকর্ড বা কাগজপত্রে স্বাক্ষর গ্রহণ;
(চ) প্রয়োজন হইলে কোন মালিক কর্তৃক রক্ষিত কোন রেজিস্টার, রেকর্ড, প্রত্যয়নপত্র, নোটিশ বা অন্য কোন দলিল-দস্তাবেজ সম্বন্ধে তাহার বা তত্কর্তৃক নিযুক্ত কোন ব্যক্তির নিকট হইতে কৈফিয়ত্ বা ব্যাখ্যা তলব করা; এবং
(ছ) এই আইন বা কোন বিধি দ্বারা আরোপিত অন্য কোন ক্ষমতা প্রয়োগ বা দায়িত্ব সম্পাদন৷

(২) এই আইন বা কোন বিধি, প্রবিধান বা স্কীমের অধীন ক্ষমতা প্রয়োগ বা দায়িত্ব পালনের জন্য প্রয়োজনীয় কোন প্রবেশ, পরিদর্শন, পরীক্ষণ, অনুসন্ধান বা অন্য কোন কাজ করার জন্য সকল পন্থা বা ব্যবস্থা পরিদর্শকের তলব অনুযায়ী কোন প্রতিষ্ঠানের মালিককে করিতে হইবে৷

(৩) প্রত্যেক মালিককে এই আইন বা কোন বিধি, প্রবিধান বা স্কীমের উদ্দেশ্যে, সকল রেকর্ড, রেজিস্টার, এবং অন্য কোন দলিল-দস্তাবেজ পরীক্ষার জন্য পরিদর্শকের নিকট তাহার তলব অনুযায়ী হাজির করিতে হইবে, এবং উক্ত পরিদর্শকের চাহিদা অনুযায়ী তত্সম্পর্কে অন্য কোন তথ্যও সরবরাহ করিতে হইবে৷

(৪) এই আইন বা কোন বিধি, প্রবিধান বা স্কীমের প্রয়োগ সংক্রান্ত কোন ব্যাপারে ইহার অধীন দায়িত্ব পালনের প্রয়োজনে কোন পরিদর্শক কোন মালিকের নিকট হইতে কোন রেকর্ড, রেজিস্টার, বা অন্য কোন দলিল-দস্তাবেজ তলব করিতে এবং ইহা আটক করিতে পারিবেন৷

(৫) প্রধান পরিদর্শক, অথবা তাহার নিকট হইতে এতদ্উদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত তাহার অধস্তন কোন কর্মকর্তা, এই আইন বা কোন বিধি, প্রবিধান বা স্কীমের অধীন, তাহার এখতিয়ারাধীন কোন বিষয়ে, কোন অপরাধের জন্য কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে শ্রম আদালতে অভিযোগ পেশ করিতে পারিবেন৷

(৬) প্রধান পরিদর্শক বা তাহার নিকট হইতে এতদুদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত তাহার অধীনস্থ কোন কর্মকর্তা, কারখানা কিংবা শিল্প প্রতিষ্ঠান এর নকশা অনুমোদন, লাইসেন্স প্রদান ও নবায়ন, শ্রেণী পরিবর্তন ও সম্প্রসারণের অনুমতি প্রদান ইত্যাদী সকল ক্ষেত্রে সরেজমিনে পরিদর্শনপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন
বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ এ ৬ষ্ঠ অধ্যায়ের বিধান নিন্মরূপ-

নিরাপত্তা
ভবন ও যন্ত্রপাতির নিরাপত্তা

৬১৷ (১) যদি কোন পরিদর্শকের নিকট ইহা প্রতীয়মান হয় যে, কোন প্রতিষ্ঠানের কোন ভবন বা ইহার কোন অংশ অথবা ইহার কোন পথ, যন্ত্রপাতি বা প্ল্যান্ট [বা ভবনের অভ্যন্তরীণ বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা] এমন অবস্থায় আছে যে, ইহা মানুষের জীবন বা নিরাপত্তার জন্য বিপজ্জনক, তাহা হইলে তিনি মালিকের নিকট লিখিত আদেশ জারী করিয়া, উহাতে উল্লিখিত নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে, তাহার মতে কি কি ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন-উহা গ্রহণ করিবার নির্দেশ দিতে পারিবেন৷

(২) যদি কোন পরিদর্শকের নিকট ইহা প্রতীয়মান হয় যে, কোন প্রতিষ্ঠানের কোন ভবন বা উহার কোন অংশ বা উহার কোন পথ, যন্ত্রপাতি বা প্ল্যান্ট বা ভবনের অভ্যন্তরীণ বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা] এর ব্যবহার মানুষের জীবন বা নিরাপত্তার জন্য আশু বিপজ্জনক, তাহা হইলে তিনি মালিকের উপর লিখিত আদেশ জারী করিয়া, উহা যথাযথভাবে মেরামত বা পরিবর্তন না করা পর্যন্ত উহার ব্যবহার নিষিদ্ধ করিতে পারিবেন৷
অগ্নিকান্ড সম্পর্কে সতর্কতা অবলম্বন

৬২৷ (১) প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানে বিধি দ্বারা নির্ধারিতভাবে অগ্নিকান্ডের সময় প্রত্যেক তলার সাথে সংযোগ রক্ষাকারী অন্ততঃ একটি বিকল্প সিঁড়িসহ বশহির্গমনের উপায় এবং 70[প্রত্যেক তলায় প্রয়োজনীয় সংখ্যক] অগ্নিনির্বাপক সরঞ্জামের ব্যবস্থা করিতে হইবে৷

(২) যদি কোন পরিদর্শকের নিকট ইহা প্রতীয়মান হয় যে, উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত বিধি অনুযায়ী বহির্গমনের ব্যবস্থা করা হয় নাই 71[অথবা অগ্নি নির্বাপন দপ্তরের লাইসেন্স মোতাবেক প্রয়োজনীয় সংখ্যক অগ্নিনির্বাপক সরঞ্জাম রাখা হয় নাই], তাহা হইলে তিনি মালিকের উপর লিখিত আদেশ জারী করিয়া, উহাতে উল্লিখিত সময়ের মধ্যে, তাহার মতে কি কি ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন- তাহা তাহাকে অবহিত করিবেন৷

(৩) প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানে কোন কক্ষ হইতে বহির্গমনের পথ তালাবদ্ধ বা আটকাইয়া রাখা যাইবে না, যাহাতে কোন ব্যক্তি কক্ষের ভিতরে কর্মরত থাকিলে উহা তত্ক্ষণাৎ ভিতর হইতে সহজে খোলা যায়, এবং এই প্রকার সকল দরজা, যদি না এইগুলি স্লাইডিং টাইপের হয়, এমনভাবে তৈরী করিতে হইবে যেন উহা বাহিরের দিকে খোলা যায়, অথবা যদি কোন দরজা দুইটি কক্ষের মাঝখানে হয়, তাহা হইলে উহা ভবনের নিকটতম বহির্গমন পথের কাছাকাছি দিকে খোলা যায়, এবং এই প্রকার কোন দরজা কক্ষে কাজ চলাকালীন সময়ে তালাবদ্ধ বা বাধাগ্রস্থ অবস্থায় রাখা যাইবে না৷
(৩ক) প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানে কর্মকালীন অবস্থায় কোন কক্ষ হইতে বহির্গমনের পথ তালাবদ্ধ বা আটকাইয়া রাখা যাইবে না এবং বহির্গমনের পথ বাধাগ্রস্থ কিংবা পথে কোন প্রতিবন্ধকতাও তৈরী করা যাইবে না।
(৩খ) কোন কর্মকক্ষের ভিতর হইতে তাৎক্ষণিকভাবে এবং উহা বাহিরের দিকে খোলা যায় এমনভাবে সকল দরজা তৈরী করিতে হইবে।
(৩গ) যদি কোন দরজা দুইটি কক্ষের মাঝখানে হয়, তাহা হইলে উহা ভবনের নিকটতম বহির্গমনের পথের কাছাকাছি খোলা যায় এইরূপভাবে তৈরী করিতে হইবে এবং এইরূপ সকল দরজা কক্ষে কাজ চলাকালীন তালাবদ্ধ বা বাধাগ্রস্থ অবস্থায় রাখা যাইবে না।]

(৪) প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানে সাধারণ বহির্গমণের জন্য ব্যবহৃত পথ ব্যতীত অগ্নিকান্ড কালে বহির্গমনের জন্য ব্যবহার করা যাইবে- এরূপ প্রত্যেক জানালা, দরজা বা অন্য কোন বহির্গমন পথ স্পষ্টভাবে লাল রং দ্বারা বাংলা অক্ষরে অথবা অন্য কোন সহজবোধ্য প্রকারে চিহ্নিত করিতে হইবে৷

(৫) প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানে, উহাতে কর্মরত প্রত্যেক শ্রমিককে অগ্নিকান্ডের বা বিপদের সময় তৎসম্পর্কে হুশিয়ার করার জন্য, স্পষ্টভাবে শ্রবণযোগ্য হুশিয়ারী সংকেতের ব্যবস্থা থাকিতে হইবে৷

(৬) প্রতিষ্ঠানের প্রত্যেক কক্ষে কর্মরত শ্রমিকগণের অগ্নিকান্ডের সময় বিভিন্ন বহির্গমন পথে পৌঁছার সহায়ক একটি অবাধ পথের ব্যবস্থা রাখিতে হইবে৷

(৭) যে প্রতিষ্ঠানে উহার নীচ তলার উপরে কোন জায়গায় সাধারণভাবে দশজন বা ততোধিক শ্রমিক কর্মরত থাকেন, অথবা বিষ্ফোরক বা অতিদাহ্য পদার্থ ব্যবহৃত হয়, অথবা গুদামজাত করা হয়, সে প্রতিষ্ঠানে অগ্নিকান্ডকালে বহির্গমনের উপায় সম্পর্কে সকল শ্রমিকেরা যাহাতে সুপরিচিত থাকেন এবং উক্ত সময়ে তাহাদের কি কি করণীয় হইবে, তত্সম্পর্কে তাহারা যাহাতে পরিপূর্ণ প্রশিক্ষণ লাভ করিতে পারেন সেই বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে হইবে৷

(৮) পঞ্চাশ বা ততধিক শ্রমিক/কর্মচারী সম্বলিত কারখানা ও প্রতিষ্ঠানে প্রতি 73[ছয় মাসে] অন্ততঃ একবার অগ্নিনির্বাপন মহড়ার আয়োজন করিতে হইবে, এবং এই বিষয়ে মালিক কর্তৃক নির্ধারিত পন্থায় একটি রেকর্ড বুক সংরক্ষণ করিতে হইবে৷

(২) প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানে প্রত্যেক হয়েস্ট ও লিফটের চলাচল পথ দরজা সংযুক্ত ঘিরা দ্বারা ভালভাবে সংরক্ষিত থাকিবে, হয়েস্ট অথবা লিফ্ট এবং উক্তরূপ ঘিরা এমনভাবে তৈরী করিতে হইবে যেন কোন ব্যক্তি বা বস্তু উক্ত হয়েস্ট অথবা লিফটের কোন অংশে এবং কোন স্থির কাঠামো বা চলমান অংশের মাঝখানে আটকাইয়া না যায়৷

(৩) প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানে প্রত্যেক হয়েস্ট এবং লিফটের গায়ে উহার নিরাপদ বহন ক্ষমতা পরিষ্কারভাবে লিখিয়া রাখিতে হইবে এবং এই ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত কোন বোঝা বহন করা যাইবে না৷

(৪) প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানে মানুষ বহনকারী প্রত্যেকটি হয়েস্ট ও লিফটের খাঁচার উভয় পার্শ্বে উঠা-নামা করার জন্য প্রবেশ পথ থাকিবে৷ প্রত্যেক হয়েস্ট ও লিফটের সর্বোচ্চ ধারণ ক্ষমতা বাংলায় স্পষ্ট অক্ষরে লিখিয়া রাখিতে হইবে৷

(৫) উপ-ধারা (২) এবং (৪) এ উল্লিখিত প্রত্যেক দরজায় এমনভাবে ইন্টারলক অথবা অন্য কোন কার্যকর ব্যবস্থা থাকিবে যাহাতে ইহা নিশ্চিত করা যায় যে, যখন ইহা অবতরণ না করে তখন যেন খোলা না যায়, এবং দরজা বন্ধ না করা পর্যন্ত খাঁচাটি যাহাতে চলমান না হয়৷

(৬) এই আইন প্রবর্তনের পর স্থাপিত অথবা পুনঃনির্মিত কোন প্রতিষ্ঠানের প্রত্যেকটি হয়েস্ট অথবা লিফটের ক্ষেত্রে নিম্নবর্ণিত অতিরিক্ত ব্যবস্থাবলী প্রযোজ্য হইবে, যথাঃ-
(ক) যে ক্ষেত্রে খাঁচা রশি বা শিকলের উপর নির্ভরশীল, সে ক্ষেত্রে কমপক্ষে দুইটি রশি বা শিকল পৃথকভাবে খাঁচার সঙ্গে সংযুক্ত থাকিবে এবং উহার ভারসাম্য রক্ষা করিবে, এবং প্রত্যেক রশি ও শিকল এমন হইতে হইবে যেন ইহা সর্বোচ্চ ভারসহ খাঁচাটি বহন করিতে পারে;
(খ) রশি এবং শিকল ছিড়িয়া যাওয়ার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ভারসহ খাঁচাটি যেন ঝুলাইয়া রাখা যায়, ইহার কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে হইবে;
(গ) খাঁচার অতিরিক্ত গতি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য যথাযথ স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা থাকিতে হইবে৷
(৭) এই আইন বলবত্ হইবার পূর্বে উপ-ধারা (১), (২), (৩), (৪) ও (৫) এর ব্যতিক্রমভাবে কোন প্রতিষ্ঠানে স্থাপিত কোন হয়েস্ট বা লিফট্-কে প্রধান পরিদর্শক, তত্কর্তৃক নির্ধারিত উহার নিরাপত্তা সম্বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের শর্তে উহার ব্যবহার অব্যাহত রাখিতে অনুমতি দিতে পারিবেন৷
ঘূর্ণায়মান যন্ত্রপাতি

৭০৷ (১) কোন প্রতিষ্ঠানে গ্রাইন্ডিং প্রক্রিয়া পরিচালিত হয়- এ রকম প্রত্যেক কক্ষে ব্যবহৃত প্রত্যেক যন্ত্রের গায়ে অথবা উহার নিকটে স্থায়ীভাবে নিম্নলিখিত বিষয় বর্ণনা করিয়া একটি নোটিশ লটকাইয়া বা সাটিয়া দিতে হইবে যথাঃ-
(ক) প্রত্যেক গ্রাইন্ড স্টোন অথবা এব্রোসিভ হুইলের সর্বোচ্চ নিরাপদ গতিসীমা;
(খ) যে শেফট্ অথবা স্পিন্ডল এর উপর চাকাটি স্থাপিত উহার গতি;
(গ) নিরাপদ গতি নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় উক্তরূপ শেফট্ বা স্পিন্ডলের উপর স্থাপিত পুলির পরিসীমা।
(২) উক্ত নোটিশে উল্লিখিত গতি অতিক্রম করা যাইবে না৷
(৩) প্রত্যেক গতিশীল আধার, খাঁচা, ঝুড়ি, ফ্লাই-হুইল, পুলি ডিস্ক অথবা শক্তি দ্বারা চালিত অনুরূপ যন্ত্রপাতি তাহাদের নির্ধারিত গতি যাহাতে অতিক্রম না করিতে পারে ইহার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে হইবে৷
প্রেসার প্ল্যান্ট
৭১৷ যে ক্ষেত্রে কোন প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন প্রক্রিয়ায় নিয়োজিত কোন প্ল্যান্ট বা যন্ত্রপাতির কোন অংশ স্বাভাবিক বায়ু চাপ অপেক্ষা অধিক চাপে পরিচালিত হয়, সে ক্ষেত্রে যেন উহা উহার নিরাপদ চাপ অতিক্রম না করে তজ্জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে হইবে৷
মেঝে, সিঁড়ি এবং যাতায়াত পথ

৭২৷ প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানে-
(ক) সকল মেঝে, সিঁড়ি, চলাচল পথ মজবুতভাবে নির্মাণ করিতে এবং যথাযথভাবে সংরক্ষণ করিতে হইবে এবং প্রয়োজন হইলে উহাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য মজবুত রেলিং এর ব্যবস্থা করিতে হইবে 74[এবং কর্মকালীন নিবিঘ্নে চলাচলের জন্য পথ ও সিঁড়ি উন্মুক্ত রাখিতে হইবে];
(খ) যে স্থানে কোন সময়ে কোন ব্যক্তিকে কাজ করিতে হয়, সে স্থানে যাতায়াতের জন্য, যুক্তিসংগতভাবে যতদূর সম্ভব নিরাপদ যাতায়াতের ব্যবস্থা করিতে হইবে; এবং
(গ) কর্মস্থলের চলাচলের পথ ও সিঁড়ি পরিচ্ছন্ন, প্রশস্ত ও বাধা-বন্ধকহীন হইতে হইবে 76[;
(ঘ) মালিক কারখানা ও শ্রমিকদের সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে কর্মস্থলের চলাচলের পথ, সিঁড়ি, গেইট, গুদাম ও সাধারণ ব্যবহারি স্থানসমূহ (Common Utility Area) ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার আওতায় আনিতে পারিবে।]
পিট, সাম্প, সুড়ঙ্গ মুখ ইত্যাদি

৭৩৷ যে ক্ষেত্রে কোন প্রতিষ্ঠানের কোন স্থির আধার, কূপ, গর্ত অথবা সুড়ঙ্গ পথ এমন হয় যে, উহার গভীরতা, অবস্থান, নির্মাণ, অথবা অভ্যন্তরস্থ বস্তুর কারণে ইহা বিপদের কারণ হইতে পারে, সে ক্ষেত্রে উহাকে মজবুতভাবে নিরাপদ ঘেরা অথবা ঢাকনা দিয়া রাখিতে হইবে৷
অতিরিক্ত ওজন

৭৪৷ কোন প্রতিষ্ঠানে কোন শ্রমিককে, তাহার ক্ষতি হইতে পারে এমন কোন ভারী জিনিস উত্তোলন, বহন অথবা নাড়াচাড়া করিতে দেওয়া যাইবে না৷
চোখের নিরাপত্তা

৭৫৷ উৎপাদন প্রক্রিয়া পরিচালিত হয় এরূপ কোন প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে সরকার বিধি দ্বারা এই নির্দেশ দিতে পারিবে যে, উক্তরূপ কোন প্রক্রিয়ায় যদি নিম্নবর্ণিত কোন আশংকা থাকে, তাহা হইলে উক্ত প্রক্রিয়ায় নিয়োজিত প্রত্যেক শ্রমিকের চোখের নিরাপত্তা বিধানের জন্য উপযুক্ত চশমা বা চোখাবরণের ব্যবস্থা করিতে হইবে, যথাঃ-
(ক) প্রক্রিয়ার কারণে উৎক্ষিপ্ত বা বিচ্ছুরিত কণা বা টুকরা হইতে চোখের বিপদের আশংকা;
(খ) অতিমাত্রায় আলো বা উত্তাপের কারণে চোখের ক্ষতির আশংকা৷
ত্রুটিপূর্ণ যন্ত্রাংশ নির্ণয় অথবা উহার স্থায়িত্ব পরীক্ষার ক্ষমতা

৭৬৷ যদি কোন পরিদর্শকের নিকট ইহা প্রতীয়মান হয় যে, কোন প্রতিষ্ঠানের কোন ভবন বা উহার অংশ বিশেষ, অথবা উহার কোন পথ, যন্ত্রপাতি অথবা প্ল্যান্ট এমন অবস্থায় আছে যে, উহা মানুষের জীবন ও নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ তাহা হইলে তিনি প্রতিষ্ঠানের মালিকের উপর লিখিত আদেশ জারী করিয়া, উহাতে উল্লিখিত সময়ের মধ্যে, নিম্নলিখিত কাজ করার জন্য নির্দেশ দিতে পারিবেন, যথাঃ-
(ক) উক্ত ভবন, রাস্তা, যন্ত্রপাতি বা প্লান্ট নিরাপদভাবে ব্যবহার করা যায় কি না- উহা নির্ধারণের জন্য প্রয়োজনীয় নকশা এবং অন্যান্য তথ্য বা বিবরণ সরবরাহ করা;
(খ) কোন নির্দিষ্ট অংশের মান বা শক্তি নির্ধারণের জন্য প্রয়োজনীয় পরীক্ষা পরিচালনা করা এবং উহার ফলাফল পরিদর্শককে অবহিত করা৷
বিপজ্জনক ধোঁয়ার বিরুদ্ধে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা

৭৭৷ (১) কোন প্রতিষ্ঠানের কোন কক্ষ, আধার, চৌবাচ্চা, গর্ত, পাইপ, ধূমপথ, অথবা অন্যান্য সীমাবদ্ধ স্থানে, যেখানে বিপজ্জনক ধোঁয়া এই পরিমাণে থাকার সম্ভাবনা আছে, যাহা দ্বারা কোন ব্যক্তির আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকিয়া যায়, কোন ব্যক্তি প্রবেশ করিতে পারিবেন না বা তাহাকে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হইবে না, যদি না সেখানে বিধি দ্বারা নির্ধারিত পরিমাপের কোন ম্যানহোল অথবা বাহির হইবার কার্যকর ব্যবস্থা থাকে৷
(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত কোন সীমাবদ্ধ স্থানে ২৪ ভোল্টের অধিক ভোল্টেজ যুক্ত কোন বহনযোগ্য বৈদ্যুতিক বাতি উহার অভ্যন্তরে ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়া যাইবে না এবং যে ক্ষেত্রে কোন ধোঁয়া দাহ্য হওয়ার সম্ভাবনা থাকে সে ক্ষেত্রে দাহ্য নিরোধক বস্তু দ্বারা নির্মিত বাতি ছাড়া অন্য কোন বাতি উক্ত স্থানে ব্যবহার করার জন্য অনুমতি দেওয়া যাইবে না৷
(৩) কোন প্রতিষ্ঠানের উক্তরূপ কোন সীমাবদ্ধ স্থানে কোন ব্যক্তি প্রবেশ করিবেন না বা প্রবেশ করিবার অনুমতি দেওয়া যাইবে না, যদি না উহা হইতে ধোঁয়া নিষ্কাশন এবং প্রবেশ প্রতিরোধ ব্যবস্থা করার জন্য সম্ভাব্য সকল পন্থা গ্রহণ করা হয় এবং যদি না নিম্নলিখিত যে কোন একটি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়-
(ক) কোন উপযুক্ত ব্যক্তি কর্তৃক পরীক্ষান্তে এই মর্মে প্রত্যয়ন পত্র প্রদান করা হয় যে, স্থানটি বিপজ্জনক ধোঁয়া হইতে মুক্ত, এবং উহা প্রবেশের জন্য উপযুক্ত; অথবা
(খ) সংশ্লিষ্ট শ্রমিক একটি উপযুক্ত শ্বাস-প্রশ্বাস যন্ত্র ব্যবহার করিতেছেন এবং তাহার কোমরবন্ধের সঙ্গে এমন একটি রজ্জু বাধা আছে যাহার খোলা প্রান্ত উক্ত স্থানের বাহিরে অবস্থানরত কোন ব্যক্তির হাতে আছে৷
(৪) প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানে উপযুক্ত শ্বাস-প্রশ্বাস যন্ত্র, সজ্ঞান করার যন্ত্র, কোমরবন্ধ এবং রজ্জু তাৎক্ষণিক ব্যবহারের জন্য উক্তরূপ স্থানের নিকটেই মওজুদ রাখিতে হইবে, এবং উক্তরূপ সরঞ্জাম কোন উপযুক্ত ব্যক্তি কর্তৃক সময় সময় পরীক্ষিত হইতে হইবে, এবং উহা ব্যবহারের যোগ্য- এই মর্মে তৎকর্তৃক প্রত্যয়িত হইতে হইবে, এবং প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানে কর্মরত যথেষ্ট সংখ্যক ব্যক্তিকে উক্তরূপ সরঞ্জাম ব্যবহার এবং শ্বাস-প্রশ্বাস প্রবাহ করার পন্থা সম্পর্কে প্রশিক্ষণ প্রদানের ব্যবস্থা করিতে হইবে৷
(৫) কোন প্রতিষ্ঠানে কোন ব্যক্তিকে বয়লার, বয়লারের চুল্লি, ধূমপথ, আধার, চৌবাচ্চা, পাইপ অথবা কোন সীমাবদ্ধ স্থানে উহাতে কাজ করার জন্য অথবা উহাতে কোন পরীক্ষা পরিচালনার জন্য প্রবেশ করিবার অনুমতি প্রদান করা যাইবে না যতক্ষণ পর্যন্ত না ইহা বায়ু প্রবাহের দ্বারা যথেষ্ট ঠাণ্ডা করা হইয়াছে অথবা অন্য কোনভাবে মানুষের প্রবেশের জন্য উপযুক্ত করা হইয়াছে৷
বিষ্ফোরক বা দাহ্য গ্যাস, ধুলা ইত্যাদি

৭৮৷ (১) যে ক্ষেত্রে কোন প্রতিষ্ঠানে কোন উত্পাদন প্রক্রিয়ার কারণে উত্থিত গ্যাস, ধোঁয়া, বাষ্প বা ধুলা এমন প্রকৃতির বা এমন পরিমাণের হয় যে, উহা বিষ্ফোরিত বা প্রজ্জ্বলিত হইবার সম্ভাবনা থাকে, সে ক্ষেত্রে উক্তরূপ বিষ্ফোরণ বন্ধ করার জন্য নিম্নলিখিত পন্থায় সম্ভাব্য সর্বপ্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে হইবে, যথাঃ-
(ক) প্ল্যান্ট বা যন্ত্রপাতি ব্যবহারের সময় উহা কার্যকরভাবে ঘিরিয়া রাখিয়া;
(খ) উক্তরূপ ধুলা, গ্যাস, ধোঁয়া বা বাষ্প নিষ্কাশন বা উহার সঞ্চয় নিরোধ করিয়া;
(গ) দহনীয় হইবার সম্ভাব্য সকল উত্স কার্যকরভাবে ঘিরিয়া রাখিয়া৷
(২) যে ক্ষেত্রে কোন প্রতিষ্ঠানে কোন প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত কোন পস্্ন্যান্ট বা যন্ত্রপাতি এমনভাবে নির্মাণ করা হয় নাই যাহাতে উহা উক্তরূপ বিষ্ফোরণের ক্ষেত্রে উত্পন্ন সম্ভাব্য চাপ সহ্য করিতে পারে সে ক্ষেত্রে উক্ত পস্্ন্যান্ট বা যন্ত্রপাতিতে চোক, বেফল্স, ভেন্টস বা অন্য কোন কার্যকর যন্ত্রপাতি ব্যবস্থা করিয়া উক্ত বিস্ফোরণের বিস্ত্মার বা প্রভাব রোধ করার জন্য সম্ভাব্য সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে হইবে৷
(৩) যে ক্ষেত্রে কোন প্রতিষ্ঠানের কোন পস্্ন্যান্ট বা যন্ত্রপাতির কোন অংশ কোন বিস্ফোরক বা দাহ্য গ্যাস বা বাষ্প স্বাভাবিক বায়ু চাপ অপেক্ষা অধিক চাপে থাকে, সেক্ষেত্রে উক্ত অংশ নিম্নলিখিত পন্থা ব্যতীত খোলা যাইবে না, যথাঃ-
(ক) উক্ত কোন অংশের ঢাকনার মুখের সঙ্গে সংযুক্ত কোন পাইপের সংযোগ খুলিয়া দেওয়ার পূর্বে উক্ত অংশে কোন গ্যাস বা বাষ্প প্রবেশ অথবা উক্তরূপ পাইপ ষ্টপ-বালব্ দ্বারা বা অন্য কোন পন্থায় বন্ধ করিতে হইবে;
(খ) উক্তরূপ কোন বন্ধন অপসারণ করিবার পূর্বে উক্ত অংশের অথবা পাইপের গ্যাস বা বাষ্পের চাপ স্বাভাবিক বায়ু চাপে কমাইয়া আনার জন্য সম্ভাব্য সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে হইবে;
(গ) যে ক্ষেত্রে উক্তরূপ কোন বন্ধন শ্লথ বা অপসারণ করা হইয়াছে, সে ক্ষেত্রে কোন বিষ্ফোরক বা দাহ্য গ্যাস অথবা বাষ্প উক্ত অংশে অথবা পাইপে, বন্ধন শক্ত করিয়া বাধা না হওয়া পর্যন্ত এবং নিরাপদভাবে প্রতিস্থাপিত না হওয়া পর্যন্ত, প্রবেশ নিরোধ করিবার জন্য সর্ব প্রকার কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে হইেবঃ
তবে শর্ত থাকে যে, যে ক্ষেত্রে কোন প্ল্যান্ট বা যন্ত্রপাতি খোলা মাঠে স্থাপিত হয়, সেক্ষেত্রে এই উপ-ধারার বিধান প্রযোজ্য হইবে না৷
(৪) যে ক্ষেত্রে কোন প্রতিষ্ঠানে কোন প্ল্যান্ট, আধার বা চৌবাচ্চাতে কোন বিস্ফোরক বা দাহ্য পদার্থ থাকে বা কোন সময় ছিল, সে ক্ষেত্রে উহাতে তাপ ব্যবহার করিয়া কোনরূপ ঝালাই বা কাটার কাজ করা যাইবে না, যদি না উক্ত বস্তু বা ধোঁয়া অপসারণ অথবা অদাহ্য বা অবিষ্ফোরক অবস্থায় রূপান্তর করার জন্য প্রথমে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়, এবং উক্তরূপ কোন পদার্থ উক্ত প্ল্যান্ট, আধার বা চৌবাচ্চায় উক্তরূপ কোন কাজ করার পর প্রবেশ করিতে দেওয়া যাইবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না সংশ্লিষ্ট ধাতু উক্ত বস্তুকে দাহ্য করার বিপদ রোধ করার মত যথেষ্ট ঠাণ্ডা হয়৷
ব্যক্তিগত সুরক্ষা যন্ত্রপাতি ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা

৭৮ক। (১) প্রযোজ্য ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ শ্রমিকগণের ব্যক্তিগত সুরক্ষা যন্ত্রপাতি সরবরাহ ও ব্যবহার নিশ্চিত করা ব্যতীত কাউকে কর্মে নিয়োগ করিতে পারিবে না এবং এই বিষয়ে মালিক কর্তৃক নির্ধারিত পন্থায় একটি রেকর্ড বুক সংরক্ষণ করিতে হইবে।
(২) ব্যক্তিগত সুরক্ষা যন্ত্রপাতি সরবরাহের পর উহা ব্যবহার করা না হইলে সংশ্লিষ্ট শ্রমিকগণ দায়ী হইবেন।
(৩) কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকের পেশাগত স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও সেইফটি নিশ্চিত করণের জন্য প্রত্যেক শ্রমিককে কাজের ঝুকি সম্পর্কে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সচেতন করিতে হইবে।]

বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ এ প্রদত্ত উপরোক্ত বিধিবিধান পালনে মালিক পক্ষকে বাধ্য করার কোন দায়িত্ব কি আদৌ পালন করেছে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর ? যার ফলে এতগুলো প্রাণহানী যে ঘটল তাকেতো নিছক দুর্ঘটনা বলা যাবে না। এতো বাংলাদেশ ফৌজদারী দণ্ড বিধি অনুসারে অপরাধজনক নরহত্যার সামিল।(Culpable homecide)। তারপরও কি তারা দায়মুক্তি পাবে??