আজ ২৬শে ফেব্রুয়ারী। ডঃ অভিজিৎ রায়ের সুতীক্ষ্ণ লেখা বেদুইন ধর্ম এবং ভারতীয় হিন্দু ধর্ম বিশ্বাসীদের মধ্যে ত্রাহি ত্রাহি অবস্থার সৃষ্টি করে। হিন্দুরা নীরবে সহ্য করতে পারলেও ভীত-সন্ত্রস্ত বেদুইন ধর্মপূজারিরা অভিজিতের লেখাকে সহজে গ্রহন করেনি। চাপাতি-তরবারি ধর্মের মূল শক্তি। তারা অভিজিতকে খুন করে ফেলে।

আমার হৃদয়ে ছোট ছোট স্থায়ী জায়গা আছে। সেখানে বাস করে আমার মা-বাবা সহ হৃদয়ের কাছের মানুষেরা। এসব ছোট জায়গার একটিতে বাস করে ডঃ অভিজিৎ রায়। আমার হৃদয়ে এরা সদা জাগ্রত থাকে। আমাকে সঠিক দিক নির্দেশনা দেয়।

 

—— বিষাদ কাটাতে কিছুক্ষনের জন্য চলুন আশেপাশেই অহরহ দেখা যায় এমনি কিছু নিত্যকার স্ববিরোধী চরিত্রকে আরো একবার দেখি ——

ইনি কোন এক তিনি

একটা চরিত্র। একজন শিক্ষিত ব্যক্তি। ধরি, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ডিগ্রী অর্জন করেছেন এবং ছাত্রদেরকে পৃথিবীর সর্বোচ্চ ডিগ্রী দান করেন। হয়ত তিনি ডারউনের থিওরীকে প্রকাশ্যে প্রশংসা করেন এবং ক্লাশে ছাত্রদেরকে পরিষ্কার ব্যাখ্যা দিয়ে বুঝিয়ে থাকেন। তিনি মহাবিশ্বের ব্যাপকতা জানেন এবং হয়ত মানেন। সময়ের বিশালতা বুঝেন এবং হয়ত মানেন। হয়ত সবই লোক দেখানো। টাকা কামানোর ধান্ধায় এবং শিক্ষিত সমাজে বিজ্ঞানকে প্রকাশ্যে অস্বীকার করলে নিজের সন্মানহানী হয়, ভাবমূর্তি নষ্ট হয়, সেজন্য বাইরেই শুধু বিজ্ঞানকে মান্যতা দেখান। কিন্তু অন্তরে বাস করে অপবিশ্বাস। সেকারণে তিনি শিবের যৌনাঙ্গ পূজা করেন। এসব দেখে আমি অবাক হই, আশ্চর্য্য হই। কিন্তু তিনি হন না। তাঁর মধ্যে যে এরকম দ্বৈত চরিত্র বা বিকলাঙ্গ চরিত্র বাস করে তা হয়ত তিনি নিজেও ভেবে দেখেন না।

ইনিও একটা চরিত্র

একজন শিক্ষিত ব্যক্তি। ধরি, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ডিগ্রী তিনি অর্জন করেছেন এবং ছাত্রদেরকে পৃথিবীর সর্বোচ্চ ডিগ্রী দান করেন। তিনি ডারউনের থিওরীকে প্রকাশ্যে প্রশংসা করেন এবং ক্লাশে ছাত্রদেরকে পরিষ্কার ব্যাখ্যা দিয়ে বুঝিয়ে থাকেন। হয়ত তিনি মহাবিশ্বের ব্যাপকতাও জানেন এবং মানেন। সময়ের বিশালতা বুঝেন এবং হয়ত মানেনও। হয়ত সবই লোক দেখানো। টাকা কামানোর ধান্ধায় এবং শিক্ষিত সমাজে বিজ্ঞানকে প্রকাশ্যে অস্বীকার করলে নিজের সন্মানহানী হয়, ভাবমূর্তি নষ্ট হয়, সেজন্য বাইরেই শুধু বিজ্ঞানকে মান্যতা দেখান। কিন্তু অন্তরে বাস করে অপবিশ্বাস। ফলত, তিনি বিশ্বাস করেন পৃথিবী সমতল, পৃথিবীর পর্বতমালা আকাশকে ঠেস দিয়ে রেখেছে। তা না হলে আমাদের মাথায় পড়ত এবং আমরা মারা যেতাম। তিনি বিশ্বাস করেন – সূর্য প্রতিদিন ঘোলা পানিতে ডুবে, সেজন্য রাত হয়। তিনি বিশ্বাস করেন কেউ বরাক হোসেন ওবামায় চড়ে সাত আশমানের উপরে নিজের সাথেই দেখা করে এসেছেন। তাকে এসব বিশ্বাস করতে হয় কারণ এসব বিশেষ কিতাবে লেখা আছে। এসব দেখে আমি অবাক হই, আশ্চর্য্য হই। কিন্তু তিনি হন না। তাঁর মধ্যে যে এরকম দ্বৈত চরিত্র, বিকলাঙ্গ চরিত্র আছে তা তিনি নিজেও ভেবে দেখেন না।

মানুষের এসব আজব বিশ্বাস দেখলে মনে হয় একটা আজব গাছ আছে। তার একপাশে রসালো, সুমিষ্ট ফল ধরে এবং অন্য পাশে ধরে ধুঁতুরা ফল, যা খেলে মানুষ আর মানুষ থাকে না। উন্মাদ হয়।

আচার্য প্রফুল চন্দ্র রায় তাই দুঃখ করে বলেছেন – “আমি ক্লাশে এত করিয়া ছাত্রদের পড়াইলাম, যে পৃথিবীর ছায়া চাঁদের উপরে পড়িয়া চন্দ্রগ্রহণ হয়। তাহারা তা পড়িল, লিখিল, নম্বর পাইল, পাস করিল। কিন্তু মজার ব্যাপার হইল যখন আবার সত্যি সত্যি চন্দ্রগ্রহণ হইল তখন চন্দ্রকে রাহু গ্রাস করিয়াছে বলিয়া তাহারা ঢোল, করতাল, শঙ্খ লইয়া রাস্তায় হইয়া পড়িল। ইহা এক আশ্চর্য ভারত বর্ষ।”

নাহ, শুধু ভারত বর্ষ আশ্চর্য নয়। সারা পৃথিবীর শিক্ষিত লোকেরাই আশ্চর্য জনক দ্বৈত চরিত্রধারী। ইহাদের মাথার একপাশে উৎকর্ষতা আছে কিন্তু ধর্ম বিশ্বাসের কারণে অন্য পাশ পুরোটাই পঙ্গু।

অভিজিৎ রায় আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের কথাটাই অনেক লেখালেখির মাধ্যমে প্রকাশ করেছেন। তার লেখায় আছে মহাবিশ্বের কথা। মানুষের বিশ্বাস-অবিশ্বাসের কথা। ভালবাসার কথা, মানবতার কথা। কিন্তু দ্বৈত এবং বিকলাঙ্গ চরিত্রের লোকদের বদহজম হয়েছে। এরা নিতে পারেনি। মস্তিষ্কের পঙ্গু অংশটা এতটাই আহত হয়েছে যে তারা অভিজিৎ রায়কে খুন করে ফেলল।

আজকের এই দিনে অভিজিৎ রায়কে ধার্মিকরা খুন করে। ওরা ভেবেছিল অভিজিতকে মারলেই মিথ্যা বিশ্বাসটা টিকে যাবে। নাহ, নিশ্চয়ই নয়। অভিজিৎ রায় দিন দিনই শক্তিশালী হচ্ছে। নতুন প্রজন্মের মানুষের চোখ খুলে যাচ্ছে। বাংলাদেশে এদের সংখ্যাটা কত তা কেউ অনুমানও করতে পারবে না।

আজ অভিজিৎ দিবস,
মুক্তচিন্তা দিবস।

এই দিবসে আমার প্রত্যাশা – পৃথিবী ধর্ম মুক্ত হউক। পৃথিবী থেকে ভগবানাল্লাহ বিলুপ্ত হউক।