টুইন টাওয়ার হামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী মুহম্মদ আত্তার আরবি ভাষায় লিখিত চার পাতার এই দলিলে গুটিকয় অনুঘটকের মধ্যে সম্ভবত সবচেয়ে দৃশ্যমান মানসিক দ্বন্দ্ব এবং প্রস্তুতির শেষ-পর্ব উঁকি দিয়ে যায় যেখানে ফুটে ১১ সেপ্টেম্বরে টুইন টাওয়ারে হামলাকারীদের মনোজগৎ। টুইন টাওয়ার হামলার পরিকল্পনাকারী মুহম্মদ আত্তার এই লেখাটি ছিল মূলত হামলাকারীদের উদ্দেশ্যে অন্তিম নির্দেশাবলী এবং হামলার জন্য সাহস ও প্রণোদনা। লেখাটি পাওয়া যায় মুহম্মদ আত্তার ব্যাগেজের মধ্যে।
প্রথম ধাপ:
১) মৃত্যুর জন্য শপথ নাও এবং জীবনের উদ্দেশ্য নবায়ন করো। শরীর থেকে অবাঞ্ছিত লোম দূর করে, গোসল করে নাও। তারপরে সুগন্ধি আতর মাখো।
২) নিশ্চিত হয়ে নাও তোমার কী পরিকল্পনার খুঁটিনাটি এবং প্রস্তুত থাকো শত্রুর প্রতিক্রিয়া এবং পালটা আঘাতের জন্য।
৩) কোরানের আল-তওবা এবং আনফাল ভালো করে পড়ো এবং কোরানের অর্থ বুঝে নাও এবং স্মরণ করো আল্লাহ দ্বীনের রাস্তায় শহীদদের কী কী পুরষ্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
৪) তোমার রুহুকে স্মরণ করিয়ে দাও সে যেন আল্লাহ প্রদত্ত সব আদেশ শ্রবণ করে এবং মান্য করে। স্মরণ করো তোমাকে একদিন বিচারের সম্মুখীন হতে হবে এবং আল্লাহর প্রতি শতভাগ অধীনতা পারে তোমাকে রক্ষা করতে। সুতরাং তোমার রুহুকে দমন করো, শুদ্ধ করো, রাজি করাও, বোঝাও এবং সব সময় আল্লাহর নাম জিকির করো। আল্লাহ বলেছেন, “আল্লাহকে এবং প্রেরিত পুরুষকে মান্য করো। তোমরা নিজেদের মাঝে যুদ্ধ করো না অন্যথায় ধ্বংস হয়ে যাবে। ধৈর্য ধারণ করো, আল্লাহ ধৈর্য-ধারণকারীদের সাথে আছেন”।
৫) রাতে নামাজ পড়বে এবং চূড়ান্ত বিজয়, সংযমের লক্ষ্যে ক্রমাগত আল্লাহর কাছে অনুগ্রহ চাও যাতে আল্লাহ তোমার কাজ সহজ করে দেন এবং তোমাকে শত্রুর সামনে প্রকাশিত না করেন।
৬) আমি যতটুকু জানি সমস্ত ইসলামি পণ্ডিতদের মতে ঘনঘন আল্লাহর নাম স্মরণ করার জন্য উত্তম পন্থা হলো পবিত্র কোরান পড়া। আমাদের জন্য কোরান পড়াই যথেষ্ট কারণ আল্লাহ এই পৃথিবী, এই গ্রহ নক্ষত্র সৃষ্টি করেছেন এবং শেষ বিচারের দিন তিনি আমাদের সাথে মিলিত হবেন।
৭) তোমার রুহুকে দুনিয়ার জিনিস থেকে কলুষমুক্ত করো। এই দুনিয়া এই জীবন সব ভুলে যাও। হেলাফেলায় সময় নষ্ট করার সময় শেষ এবং আমাদের উপর খুব গুরুত্বপূর্ণ সময় আরোপিত হয়েছে। আমাদের জীবনের কতটা সময় আমরা বাজে কাজে অপচয় করে ফেলেছি? আমাদের কি উচিত নয় শেষ সময়ের সুবিধা গ্রহণ করে কিছু ভালো কাজ করি এবং আল্লাহর প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করি?
৮) পরিপূর্ণ প্রশান্তি অনুভব করো কারণ তুমি এবং তোমার বন্ধনের মাঝে দূরত্ব খুব কম এবং বেহেশত অতি সন্নিকটে। তারপরে শুরু হবে সুখের জীবন যেখানে আল্লাহ তোমার উপর সবসময় খুশি থাকবেন এবং নবী মুহম্মদের সাথে অনন্তকাল সুখে বসবাস করার আশীর্বাদ পাবে। তোমাকে সংগ দেবে সব শহীদ আর নেক মানুষ। আল্লাহর অনুগ্রহ প্রার্থনা করো এবং আশাবাদী হও কারণ প্রিয় নবী মুহম্মদ সবসময় তার কাজের উপর আশাবাদী ছিলেন।
৯) মনে রেখো, যদি তুমি বিপদে পড়ে যা তখন তুমি কী করবে এবং কীভাবে লক্ষ্যে অবিচল থাকবে? এবং মনে রেখো তুমি আল্লাহর কাছে ফিরে যাবে এবং স্মরণ করো, যা তোমার উপর ঘটবে তাকে এড়ানো সম্ভব না এবং যা তোমার সাথে ঘটার কথা না তা কখনো তোমার সাথে ঘটবে না। এটাই হলো তোমার উপর আল্লাহর পরীক্ষা যার মাধ্যমে নির্ধারণ হবে বেহেশতের কোন স্তরে তুমি পৌছাতে পারবে এবং তোমার গুনাহ মুছে ফেলতে পারবে। এবং তুমি নিশ্চিত থাকো পরীক্ষা হবে একটা মুহূর্তের এবং আল্লাহর ইচ্ছায় যখন সেই পরীক্ষা তোমার সামনে আসবে তখন আল্লাহর আশীর্বাদ প্রাপ্তরাই পুরস্কৃত হবে। সর্বশক্তিমান আল্লাহ বলেছেন, “তুমি কি ভেবেছিলে আল্লাহ জানার আগেই তুমি বেহেশতে চলে যাবে এবং তোমাদের মাঝে আল্লাহর জন্য যুদ্ধ করেছো এবং ধৈর্য ধারণ করেছো?”
১০) সর্বশক্তিমান আল্লাহর বাণী স্মরণ করো।যুদ্ধে জড়ানোর আগে তুমি যুদ্ধের ময়দানের দিকে তাকিয়ে থাকতে আর এখন নিজের দুই চোখের সামনে যুদ্ধ দেখতে পাচ্ছ। মনে করো, কত ছোট্ট একটা সৈন্যদল কিভাবে আল্লাহর ইচ্ছায় বিশাল সৈন্যবাহিনীকে পর্যদস্তু করেছিল। আল্লাহর বাণী স্মরণ করো, “যদি স্বয়ং আল্লাহ তোমাকে বিজয়ী ঘোষণা করেন তবে কোন শক্তি নেই তোমাকে পরাজিত করে।” কিন্তু তিনি যদি তোমার থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন, তাহলে আল্লাহর সাহায্য ছাড়া কে তোমাকে বিজয় এনে দেবে? সুতরাং হে বিশ্বাসী, আল্লাহর উপর আস্থা স্থাপন করো।
১১) নিজেকে নামাজের কথা মনে করিয়ে দাও, তোমাদের সাথীদের কথা মনে রেখো এবং কোরানের অর্থ বুঝে চলবে। সকালে, সন্ধ্যায়, শহরে প্রবেশের এবং শত্রুর সাথে দেখা করার দোয়া পড়বে সব সময়।
১২) কোরানের আয়াত পড়ে এক হাত অন্য হাতের উপর ঘষে তোমার শরীরে ফু দিবে। তোমাদের ব্যাগপত্র, কাপড়-চোপড়, ছুরি, ব্যবহার্য জিনিসপত্র, পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট এবং অন্যান্য দরকারি কাগজপত্রে দোয়া করবে।
১৩) চলে যাওয়ার বহু আগে থেকে তোমাদের অস্ত্রগুলো পরীক্ষা করে দেখবে। অবশ্যই ছুরি ধারালো করে নেবে যাতে তোমার শত্রুদের(পশু) জবাই করার সময় কষ্ট না পায়।
১৪) তোমাদের কাপড় শক্ত করে পরিধান করবে। নিশ্চিত হবে যেন শরীরের সব গোপন অঙ্গ সব সময় ঢাকা থাকে। নবীর পরের ধার্মিক প্রজন্ম এভাবেই নিজেদেরকে হেফাজত করতেন। তারা যুদ্ধের পূর্বে তাদের পোশাক শক্ত করে বেধে নিতেন। তোমাদের জুতা শক্ত করে বাধবে। মোজা পরবে যাতে পায়ের সাথে জুতা খাপেখাপে মিলে যায়। এসবই দুনিয়ার জিনিস যা দিয়ে মানুষ তার নিজের ভাগ্য পরিবর্তনের চেষ্টা করে যদিও আল্লাহ ঘোষণা দিয়েছেন কিসে ভাগ্য পরিবর্তিত হবে আর কিসে হবে না। সবই আল্লাহর হাতে ছেড়ে দিতে হবে কারণ একমাত্র তার উপরই নির্ভর করা যায়।
১৫) ফজরের নামাজ জামাতে আদায় করবে এবং ধরে নাও নামাজের মাধ্যমে শ্রেষ্ঠ নিয়ামত আসছে তোমাদের জন্য। এরপরে দোয়া পড়তে থাকো এবং ওযু না করে বাসা থেকে বের হয়ো না কারণ পাক পবিত্র অবস্থায় থাকলে তোমাদেরকে ক্ষমা করে দেয়ার জন্য ফেরেশতাগণ আল্লাহর কাছে আর্জি করবেন। নাওয়ায়ি থেকে বর্ণিত হয়েছে, নবী মুহম্মদ সব সময় আল্লাহর নাম স্মরণের উপর গুরুত্ব দিয়েছেন। আল্লাহর বাণী পড়ো। আল মুমিনুন অধ্যায়ে বলা হয়েছে, “তুমি কি মনে করো আল্লাহ কোন কারণ ছাড়াই আমাদের সৃষ্টি করেছেন?”
দ্বিতীয় ধাপ:
যখন ট্যাক্সি তোমাদেরকে এয়ারপোর্টে নিয়ে যাবে তখনো মনে রেখো আল্লাহ তোমাদের সাথে গাড়ির মধ্যেই আছেন। গাড়িতে, শহরে, কোন স্থানে প্রবেশের সময় দোয়া পড়বে। যখন এয়ারপোর্টে পৌঁছে যাবে এবং ট্যাক্সি ছেড়ে দিবে তখন কোন স্থানে প্রবেশের দোয়া পড়বে, “হে আল্লাহ, এই স্থানের যা কিছু সর্বোত্তম তা তুমি আমাকে দাও এবং আমাকে শয়তানের ফিতনা থেকে রক্ষা।” যেখানেই যাও না কেন আল্লাহর কাছে এই দোয়া পড়তে থাকো এবং মুখে হাসি রাখবে এবং শান্ত থাকবে। নিশ্চয়ই বিশ্বাসীদের সাথে আল্লাহ আছেন। ফেরেশতাগণ তোমাদের রক্ষা করবেন, এমনকি তারা তোমাকে কিছু বুঝতেও দেবে না। মনে মনে এই দোয়া পড়বে, “আল্লাহর সব সৃষ্টি থেকেও আল্লাহ আমার কাছে বেশি প্রিয়, এবং বলবে, হে আল্লাহ, যেমন তোমার ইচ্ছা, শয়তানের হাত থেকে আমাকে তুমি রক্ষা করো। তারপরে বলবে, হে আল্লাহ, শয়তানের উপর তোমার লানত বর্ষণ করো এবং তাদের শয়তানি থেকে আমাদের রক্ষা করো। হে আল্লাহ, তাদের চোখের দৃষ্টি সীমাবদ্ধ করে দাও যাতে তারা দেখতে না পায়। হে, আল্লাহ তুমিই সব যা যা আমার দরকার, তুমিই আমার শ্রেষ্ঠ ভরসা।
আল্লাহর বাণী স্মরণ করবে। আল্লাহ ইরশাদ করেছেন, তাদেরকে বল, “মানুষ সমবেত হয়েছে তোমাকে ভয় দেখাতে, তাই জনতার মাঝে ভীতি সঞ্চার করে দাও।” সমবেত মানুষ দেখে বিশ্বাসীদের মনে বিশ্বাস আরও বেড়ে যায় এবং তখন তারা বলে, “হে আল্লাহ, তুমিই সব যা যা আমার দরকার, তুমিই আমার শ্রেষ্ঠ ভরসা”। তুমি যখন দোয়া পড়ছিলে, তখন দেখবে আল্লাহ ফেরেশতাদের আদেশ দিচ্ছেন।
১) তারা যুদ্ধক্ষেত্র থেকে আল্লাহর আশীর্বাদ নিয়ে ফিরে আসবে।
২) তাদের কোন ক্ষতি হয়নি
৩) এবং আল্লাহ তাদের কাজের জন্য সন্তুষ্ট
আল্লাহ ফেরেশতাদের বলছেন, “দেখো আমার বান্দারা তারা যুদ্ধক্ষেত্র থেকে আল্লাহর আশীর্বাদ নিয়ে ফিরে এসেছে, তাদের কোন ক্ষতি হয়নি এবং আল্লাহ তাদের কাজের জন্য সন্তুষ্ট এবং আল্লাহ তাদেরকে সর্বদা আশীর্বাদ করছেন।” একমাত্র আল্লাহর ইচ্ছায় তাদের সব যন্ত্রপাতি এবং নিরাপত্তা দরজা এবং আধুনিক প্রযুক্তি কিছুই তোমাদের প্রতিহত করতে পারবে না, তোমাদের কোন ক্ষতিও হবে না। বিশ্বাসীরা এসবে ভয় পায় না। তারা শুধু শয়তান চক্রের উছিলা নিয়ে সতর্ক থাকে কারণ দুষ্টরা শয়তানের ভাই। দুষ্ট বেধেছে শয়তানের সাথে গাটছড়া। হে আল্লাহ, তুমি আমাদের রক্ষা করো। আল্লাহকে উপাসনার শ্রেষ্ঠ উপায় আল্লাহকে ভয় পাওয়া এবং উপাসনা পাওয়ার একমাত্র যোগ্য আল্লাহ। সকল প্রশংসা একমাত্র আল্লাহর। কোরানের আয়াতে বলা আছে, শয়তানেরা তাদের মিলিত শক্তি দিয়ে ভয় দেখায়। তারা পশ্চিমা সংস্কৃতির সাথে মিলেমিশে শয়তানের ভালোবাসা গ্রহণ করেছে এত সহজভাবে যেন পানি পান করছে। এখন তারা তাদের দুর্বলতা জেনে গেছে। সুতরাং তাদের ভয় করো না, যদি তুমি বিশ্বাসী হও আমাকে ভয় করো।
আল্লাহ ভীতি একটা বড় উপাসনা। একমাত্র আল্লাহ ছাড়া বহু-ঈশ্বরকে কখনো উপাসনা করো না। একমাত্র আল্লাহই সব নিয়ন্ত্রণ করেন। এটা সুনিশ্চিত যে আল্লাহ অবিশ্বাসীদের সব কার্যক্রম দুর্বল করে দেবেন। আল্লাহ পবিত্র কোরানে এরশাদ করেছেন, “আল্লাহ অবিশ্বাসীদের সব কার্যক্রম দুর্বল করে দেবেন” অবশ্যই তোমার সাথী ভাইদের কথা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে। তুমি মনে মনে দোয়া পড়বে যাতে কেউ না দেখতে পায়। আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নাই। মনে মনে তুমি যদি হাজারবারও আল্লাহর নাম স্মরণ করো কেউ বলতে পারবে না তুমি চুপ করে আছো নাকি দোয়া পড়ছো। প্রিয়-নবী হযরত মুহম্মদ (সা:)বলেছেন, “আল্লাহর নামের অলৌকিক ক্ষমতা আছে। যদি কেউ মনে প্রাণে বিশ্বাস করে জিকির করে আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নাই তবে সে বেহেশতে যাবে। যদি তুমি সমস্ত পৃথিবী এবং মহাবিশ্ব দাঁড়িপাল্লার একপ্রান্তে রাখো আর অন্য প্রান্তে আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নাই লাইনটা রাখো তবুও আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নাই বাক্যটি ওজনে বেশি হয়ে যাবে।”এই শব্দগুচ্ছের এমনি শক্তি যে ক্রমাগত উচ্চারণ করার সাথে সাথে আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায়। আল্লাহর নামের এত মহিমা যে, যারা আল্লাহর নাম গভীরভাবে নিমগ্ন হয়ে চিন্তা করে তাদের সব বালা মুসিবত দূর হয়ে যায়। আল্লাহ তাদের ভার লাঘব করে দেন। এক আল্লাহর নাম তোমাকে যুদ্ধের ময়দানে স্থির দৃঢ় প্রতিজ্ঞ রাখবে। মহানবী হযরত মুহম্মদ (সা:), নবীর সাহাবীগণ এবং যারা পরে এসেছেন সবাই কেয়ামত পর্যন্ত আল্লাহর উপর অবিচল বিশ্বাসে আস্থা স্থাপন করে আছেন।
কখনো দ্বিধান্বিত হবে না বা বিচলিত হবে না। চেহারায় প্রশান্তি ধরে রাখবে, আশাবাদী হও, শান্ত থাকো কারণ তুমি আল্লাহর পছন্দনীয় কাজের পথে অগ্রসর হয়েছো এবং আল্লাহ তোমার কাজ গ্রহণ করবেন। তারপরেও তোমার সুদিন আসছে, আল্লাহর ইচ্ছায় বেহেশতে তুমি অসাধারণ সুন্দরী নারীদের সাথে অনন্ত সুখে জীবন কাটাবে। কঠোর পরিশ্রমী মর্দ পুরুষ মুখে হাসি রাখো কারণ তুমি চির সুখের বেহেশতে প্রবেশ করতে যাচ্ছ। যেখানেও যাও সব সময় আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করবে এবং যা কিছু করবে আল্লাহকে স্মরণ করবে। আল্লাহর বিশ্বাসী অনুগত ফেরেশতারা তোমার সাথেই থাকবে। আল্লাহ তোমাকে রক্ষা করবেন এবং তোমার কাজ সহজ করে দেবেন। তোমাদের জন্য আছে সাফল্য, ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ, চূড়ান্ত বিজয়, এবং সবকিছু।
তৃতীয় ধাপ:
বিমানের সিঁড়িতে প্রথম পা দেয়ার মুহূর্তে এবং বিমানের ভিতরে প্রবেশের আগে নামাজ পড়বে এবং মনে মনে আল্লাহকে স্মরণ করবে। মনে রাখবে এটা হলো আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য যুদ্ধ। প্রিয় নবী হযরত মুহম্মদ (সা:) বলেছেন, “দুনিয়ার সব কাজের থেকে উত্তম কাজ হলো আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কিছু করা।” বিমানের সিটে বসে আল্লাহর নাম স্মরণ করে দোয়া পড়বে। আল্লাহর চিন্তায় নিজেকে ব্যস্ত রাখবে। আল্লাহ বলেছেন, “ওহ আমার বিশ্বাসী বান্দা যখন তোমরা শত্রুর মুখোমুখি হবে তখন স্থির দৃঢ় প্রতিজ্ঞ থাকো এবং সর্বদা আল্লাহকে স্মরণ করবে, সাফল্য তোমার সুনিশ্চিত।” যখন আস্তে আস্তে বিমান চলা শুরু করবে তখন ভ্রমণের দোয়া পড়বে, কারণ তুমি তো আল্লাহর পথে যাত্রা শুরু করেছো সুতরাং সবসময় মনোযোগী থাকবে।
বিমান উড়াল দিলে তোমাদের ছোট দলগুলো একত্রিত হয়ে যাবে। আল্লাহকে স্মরণ করো কারণ আল্লাহ তার পবিত্র কিতাবে বলেছেন, “হে মালিক, আমাদের উপর তোমার ধৈর্য বর্ষণ করো, আমাদের পা দৃঢ় করে দাও এবং কাফেরদের সাথে যুদ্ধে আমাদের বিজয় এনে দাও, আমাদের সমস্ত গুনাহ এবং অবাধ্যতা মাফ করে দাও।” এবং আল্লাহর নবী বলেছেন, “হে আল্লাহ, তুমি এই পবিত্র কিতাব তুমি আমাদের সামনে প্রকাশিত করেছো, আমাদের সামনে থেকে সরিয়ে নিয়েছ মেঘের আস্তরণ, তুমি আমাদেরকে শত্রুর সাথে বিজয় এনে দিয়েছ এবং শত্রুর পায়ের নিচের মাটি কেপে উঠেছে।”নিজের এবং সাথী-ভাইদের জন্য নামাজ পড়ো যাতে তারা বিজয়ী হতে পারে, তাদের লক্ষ্য-স্থানে আঘাত হানতে পারে। নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে বল, শত্রুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আমরা শহীদ হয়ে গেছি, আমাদের গ্রহণ করো, আমরা যুদ্ধ থেকে পালিয়ে যাই নি এবং আল্লাহর কাছে ধৈর্য চাও এবং এমন অনুভূতি চাও যাতে মনে হয় আমাদের উপর যা কিছু ঘটে গেছে সব তোমার জন্য। এরপর প্রত্যেকের উপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করবে যাতে আল্লাহ খুশি হন। তোমার দাতে দাঁত চেপে রাখতে পারো যা তোমার পূর্বের ধার্মিক প্রজন্ম করতেন।
যখন মুখোমুখি লড়াই শুরু হয়ে যাবে তখন একজন বিজয়ীর মত আঘাত করবে যে আর নিজের আগের দুনিয়াতে ফিরে যেতে চায় না। গলার সবচেয়ে উঁচু পর্দায় বলবে, আল্লাহু আকবর, কারণ আল্লাহ নামের ধনি অবিশ্বাসীদের মনে ভীতির সঞ্চার করে। আল্লাহ বলেছেন, “গর্দানের উপর আঘাত করো তোমার সর্বশক্তি দিয়ে।” তুমি তো জানো, তোমার জন্য বেহেশতের বাগান সমস্ত সৌন্দর্য নিয়ে অপেক্ষা করছে, বেহেশত হুর তোমাদেরকে ডাকছে, ওহ আল্লাহর বন্ধুরা, তোমরা এখানে আসো। তারা সবথেকে সুন্দর পোশাকে তোমাদের আহবান করছে।”
যদি আল্লাহ তোমাদের কাছে কোরবানি চান তাহলে আল্লাহর ইচ্ছায় তোমাদের পিতা এবং প্রিয়জনের নামে কোরবানি উৎসর্গ করে দেবে কারণ তোমাদের উপর প্রিয়জনের হক আছে। কখনো অবাধ্য হবে না বরং মান্য করবে। যখন কোরবানি করবে তখন কোরবানীক্রিত যেন কষ্ট না পায়, কারণ এটাই নবী হযরত মুহম্মদের (সা:) শিক্ষা। একটা গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম মেনে চলবে, কখনো লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হবে না এবং শক্তিশালীকে অবজ্ঞা করবে না এবং কখনো শত্রুর উপর থেকে মনোযোগ সরাবে না। তাহলে ভয়ানক অনর্থ হয়ে যাবে এবং তখন ভালোর থেকে বেশি খারাপ হয়ে যাবে। যদি এটা ঘটেই যায় তাহলে তোমরা যা কিছু করতে বাধ্য সেটাই করবে। কারণ বাধ্যতা আর নিজের ইচ্ছার মধ্যে পার্থক্য আছে। ইচ্ছার থেকে বাধ্যতার গুরুত্ব বেশি এবং অবশ্য পালনীয়।
কখনো নিজের জন্য প্রতিশোধ নেবে না বরং আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য আঘাত করবে। একদা নবীর প্রিয় সাহাবি এবং কাছের আত্মীয় আলি বিন আবু তালিব একজন কাফেরের সাথে যুদ্ধ করছিলেন। যুদ্ধের সময় সেই কাফের আলির মুখে থুথু নিক্ষেপ করে। আলি উদ্যত তলোয়ার নামিয়ে ফেলেন এবং তাকে আর আঘাত করেন নাই। যখন যুদ্ধ শেষ হয়ে যায় তখন নবীর সাহাবিরা আলিকে জিজ্ঞাসা করেন কেন তিনি যুদ্ধের ময়দানে কাফেরটিকে হত্যা করলেন না। আলি বললেন, “যখন সে আমার উপর থুথু নিক্ষেপ করে তখন আমার রাগ হয়ে গেছিল এবং কিছুটা শঙ্কিত হয়ে পড়েছিলাম এই ভেবে যে, আমি হয়ত নিজের অপমানের জন্য প্রতিশোধ পরায়ণ হয়ে আঘাত করে ফেলতে পারি, তাই আমি তলোয়ার নামিয়ে ফেলেছিলাম।” নিয়ত সহি করে আলি আবার যুদ্ধে ফিরে গেলেন এবং সেই কাফেরকে হত্যা করেন। এর থেকে এই শিক্ষা পাই যে, যে কোন কিছু করার আগে তোমার রুহু যেন পুরোপুরি প্রস্তুত করো যাতে যা করা হচ্ছে তা শুধু আল্লাহকে উদ্দেশ্য করে সেটা নিশ্চিত করা যায়।
তারপর নবীর দেখানো পথ অনুসরণ করে বন্দীদের নিয়ে যাও। বন্দীদের হত্যা করো। কারণ সর্বশক্তিমান আল্লাহ বলেছেন, “মাটি রক্তে ভিজে যাওয়ার আগ পর্যন্ত নবীর উচিত হবে না কোন বন্দীকে জীবিত রাখা। বন্দীদের বিনিময়ে মুক্তিপণ নিতে পারো এবং আল্লাহ তোমার জন্য বেহেশত প্রত্যাশা করেন এবং আল্লাহ সর্বশক্তিমান এবং সর্বজ্ঞ।”
যদি সবকিছু ভালোই ভালোই ঘটে যায় তাহলে আত্মবিশ্বাসের পাখায় চড়ে তোমরা চূড়ান্ত পরিণতির দিকে এগিয়ে যাবে। তোমাদের সাথী ভাইদের মনে করিয়ে দাও এসব কাজই আল্লাহর জন্য নিবেদিত। তাদেরকে দ্বিধান্বিত বা লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত করো না। তাদের সাথে হাসিমুখে কথা বল, শান্ত রাখো, সাহস যোগাও এবং আল্লাহর কথা স্মরণ করিয়ে দাও। আল্লাহর বানী পড়া কতই না মনোরম! “যারা আখেরাতের জীবনকে অধিক গুরুত্বপূর্ণ মনে করে তাদের উচিত আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কাজ করা। তারা অন্যদের সাথে বেহেশতের বাগানে জীবিত থাকবে। তারা মনোবল বাড়ানোর জন্য আল্লাহর প্রশংসা করে হামদ নাত পড়তে পারে। যুদ্ধের ময়দানে তীব্রতা বাড়াতে, শান্ত থাকতে, চিত্তের প্রশান্তি এবং আনন্দের জন্য ইসলামের প্রথম প্রজন্ম এমন বিনোদনের ব্যবস্থা করতেন।
সঙ্গের যা কিছু আছে সাথে নিতে ভুল করবে না। এমনকি সেটা যদি হয় তৃষ্ণায় পানি পান করার গ্লাস অথবা তোমার সাথী ভাইদের দরকারি কিছু সম্ভব হলে সাথে নেবে। যখন বাস্তবের সম্মুখীন হবে সেই সময়ে সর্বান্তকরণে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য মৃত্যুকে আলিঙ্গন করবে। সর্বদা আল্লাহকে স্মরণ করবে। জীবনের শেষ সময়ে নামাজ পড়বে, লক্ষ্যে আঘাত হানার মুহুর্তে তোমার শেষ বাক্যটা যেন হয় “আল্লাহ ব্যতীত অন্যকোন উপাস্য নাই এবং হযরত মুহম্মদ (সা:) তার প্রেরিত পুরুষ।” এরপরে আল্লাহর ইচ্ছায় আমরা আবার সর্বশ্রেষ্ঠ বেহেশতে মিলিত হবো।
যদি মনে হয় শত্রু বেশি শক্তিশালী তখন মনে করবে হযরত মুহম্মদের (সা:) বিরুদ্ধে গঠিত দশ হাজার সৈন্যের বিশাল বাহিনী। স্মরণ করো আল্লাহ কিভাবে অনুগত বান্দাদের জন্য বিজয় এনে দিয়েছিলেন। হযরত মুহম্মদ বলেছেন, “যখন অনুগত বিশ্বাসী বিশাল সৈন্যবাহিনী দেখলেন, তখন আল্লাহ এবং তার রসুল এমন প্রতিশ্রুতিই দিয়েছিলেন এবং তাহাদের বিশ্বাস আরও পাকাপোক্ত হয়েছিল।”
[২০০১ সালে টুইন টাওয়ারে হামলার পরে এফবিআই এই গুরুত্বপূর্ণ দলিলটি প্রকাশ করে। তারপরে ওয়াশিংটন ভিত্তিক আন্তর্জাতিক পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠানের ‘ক্যাপিটাল কমিউনিকেশন’ গ্রুপের অনুবাদক ইমাদ মুসা ‘দ্য নিউইয়র্ক টাইমস’র’ জন্য আরবি থেকে ইংরেজিতে অনুবাদ করেন]
সব মুসলমানদের এটাই মনের কথা । ভারতের হিন্দুদের সর্বনাশ করার সময় এভাবেই তারা চিন্তা করে ।
পত্রিকা লিখলেই বিশ্বাসযোগ্য?
হ্যাঁ । পত্রিকার কথা বিশ্বাসযোগ্য কারন কাগজটা নিউইয়র্ক টাইমস । আর মুসলমানদের ব্যাপারে আমিও কিছু জানি । 😀😀
এক নিস্বাসে পরে ফেললাম। পুরো নিশ্চুপ হয়ে গেলাম।