প্রথম পর্ব: নাৎসি ক্যাম্প: মৃত্যু হেঁটে গেছে জীবনের পথ ধরে, পর্ব ১
পৃথিবীতে সকল দেশ, সরকার, জাতি সব সময় মানবতা বিরোধী অপরাধে কম-বেশি জড়িত ছিল/আছে। কিন্তু নাৎসিরা ছিল সেক্ষেত্রে অনন্য! আর এই কারণেই নাৎসিদের এখনো ঘৃণা করা হয়। নাৎসীবাদীরা ইউরোপে উগ্রজাতীয়তাবাদকে কাজে লাগিয়ে যে অপরাধ সংগঠিত করেছে এই কারণে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপে জাতীয়তাবাদের চর্চা হ্রাস পেতে থাকে। উগ্র জাতীয়তাবাদ ও ধর্মীয়বাদের মধ্যে তেমন কোন তফাৎ নেই দুটোই ঘৃণা ও উগ্রমতবাদকে পুঁজি করে বেড়ে উঠে। যদিও জাতীয়তাবাদ সব সময় খারাপ নয়, কারণ একটি দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রধান মূল ভিত্তির একটি হল জাতীয়তাবাদ।
নাৎসিরা জার্মানির বের্গেন-বেলসেন (Bergen-Belsen concentration camp)-এ হাজার খানেক বন্দি রাখা যাবে এমন একটি ক্যাম্প তৈরি করে। অথচ খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে হাজার খানেক মানুষ রাখার ক্যাম্পটি ৪৫ হাজার মানুষে ভরে যায়। ক্যাম্পটিতে বন্দিদের জন্যে বৃষ্টি, বাতাস ও তুষার প্রতিরোধের কোন ব্যবস্থা ছিল না। ফলে ইউরোপের ভয়ংকর ঠাণ্ডা প্রতিকূল আবহাওয়ার মধ্যে বন্দিদের বেঁচে থাকার যুদ্ধ করতে হতো। যে রুমগুলোতে স্বাভাবিক অবস্থায় ১২ জনের বেশি মানুষ বসবাস করার উপযোগী ছিল না, সেখানে কম করে ৫০ জন বন্দিকে রাখা হতো। ফলে রুমগুলোতে বন্দিদের নড়াচড়া করা ছিল অসাধ্য! প্রতিটি মানুষের জন্যে বরাদ্দ ছিল দুই স্কয়ার ইয়ার্ডস জায়গা। বন্দিদের সবাই একসাথে ঘুমানোর সুযোগ পেত না কারণ এতো ছোট জায়গায় সবাই ঘুমাতে পারত না! তাই কেউ বেরিয়ে গেলে কিংবা কেউ পাশ ফিরলে অন্যরা সেই সামান্য জায়গায় নিজেকে গুজে দেওয়ার চেষ্টা করত। বেশির ভাগ ক্যাম্পে জানালার কোন ব্যবস্থা ছিল না। আর এভাবেই থাকতে হতো সবার। বৃষ্টি, স্নো প্রতিরোধের যেহেতু কিছু ছিল না তাই এমনও হয়েছে রাতের ঠাণ্ডা বৃষ্টিতে সবাই ভিজে গেছে! বন্দিদের ব্যক্তিগতভাবে কিছু রাখার যেহেতু অনুমতি ছিল না তাই এমন পরিস্থিতিতে নির্মমতা সহ্য করা ছাড়া নিজেদের প্রতিরোধে তাদের হাতে আর কিছু ছিল না। গবাদি পশুর মতন বন্দিতে ক্যাম্পে রাখা হতো। যেখানে ১২ জন সৈনিকের থাকার মতন জায়গা সেখানে কম করে ৫০ জন বন্দিরে রাখা হতো। বিশেষ করে পোল্যান্ডের ক্যাম্পগুলোর অবস্থা ছিল সবচেয়ে খারাপ। যে ক্যাম্পে তিন হাজার সিভিলিয়ান ও ১৩ হাজার সৈনিকের জন্যে উপযুক্ত সেই ক্যাম্পে তারা ৫৫-৬০ হাজার বন্দিকে গাদাগাদি করে বন্দি করে রাখতো। ১৫০ ফিট দৈর্ঘ্য ও ৩০ ফিট প্রস্থের এক ব্যারাকে ৭৫০ জন বন্দিকে রাখা হতো। যদিও যুদ্ধের মাঝখানে মাঝে মধ্যে একটি সিঙ্গেল ব্যারাকগুলোতে ২১০০ মানুষকে বন্দি রাখা হয়েছে। ১৯৪৫ সালের ৪ এপ্লিলের পরিসংখ্যানে দেখা যায় সিঙ্গেল ব্যারাকগুলোতে বন্দি ছিল ১৩৫০ জন। এতো কষ্টের মধ্যে কষ্ট করে মাত্র ৯৩৬ জন মানুষ গাদাগাদি করে শুতে পারতো। অন্যরা রাতে দাঁড়িতে থাকতো। বন্দিদের মধ্যে তারাই ভাগ্যবান ছিল যারা পরপর দুই রাত ঘুমানোর সুযোগ পেত। থাকার জন্যে জনপ্রতি বরাদ্দ ছিল ২ বর্গাকার গজ।
পূর্বেই উল্লেখ করেছি যে, শীত নিবারণের জন্যে বন্দিদের তেমন কোন জামা-কাপড় ছিল না। তারপরও অনেকে মৃত ব্যক্তিদের শরীর থেকে জামা-কাপড় খুলে নিয়ে শীত থেকে বাঁচার চেষ্টা করলেও নাৎসি সৈনিকরা তাতে বাঁধা দিত এবং এর জন্যে বন্দিদের শাস্তি পেতে হতো। বেশির ভাগ বন্দির আন্ডারওয়্যার বলে তেমন কিছু ছিল না। আর জুতা বলতে বন্দিরা নিজেদের পায়ের সাইজ মতন জুতা খুঁজে নিত। এক পায়ে হয়তো কালো জুতা অন্য পায়েরটা লাল। বন্দিদের খুব সামান্যই খাবার দেওয়া হতো। বন্দি জীবনের স্মৃতিচারণ নিয়ে জোশেফ বাউ (Joseph Bau, Shlomo Yurman) লিখেছেন-Dear God, Have You Ever Gone Hungry? জোশেফ Kraków-Płaszów concentration camp-এ বন্দি ছিলেন পরবর্তীতে তাঁকে Schindler’s camp-এ প্রেরণ করা হয় এবং যুদ্ধ শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি সেখানে বন্দি ছিলেন। সত্য ঘটনার উপর নির্মিত “Slender list” সিনেমা যারা দেখেছেন সেই বেঁচে যাওয়া মানুষগুলোর মধ্যে জোশেফও ছিলেন।
কিছু তথ্য:
* ১৯৩৩ সালে জার্মানিতে ৫৬৬,০০০ ইহুদি বসবাস করতো।
* হিটলার ক্ষমতায় আসার পরই ১৯৩৪ সালে আইন করে ইহুদিদের স্বাস্থ্য ইনস্যুরেন্স কেড়ে নেওয়া হয়।
* প্রথম কনসেনট্রেশন ক্যাম্প দাখুয়া তৈরি হয় ২২.৩.১৯৩৩. নাজি ক্যাম্পগুলোতে অপরাধী, কমিউনিস্ট, অ-ইহুদি, শিল্পী, সমকামী, সোশ্যাল ডেমোক্রেট রাজনীতিবিদদের রাখা হতো।
* ৯০% জার্মান হিটলারকে সমর্থন দেয়।
* ১৯৩৫ সালে নুরেমবার্গ আইন অনুসারে-কোন ইহুদি আর্য রক্তের কারো সাথে সেক্স কিংবা বিয়ে করতে পারবে না। আর্যদের ঘরের কাজে জন্যে নিয়োগ দিতে পারবে না এবং ইহুদিরা জার্মানির নাগরিক হতে পারবে না।
* ১৯৩৭ সালে আইন করা হয় যে-কোন ইহুদি জার্মানদের শিক্ষাদান করতে পারবে না। এমনকি হিসাবরক্ষক ও দাঁতের ডাক্তারও হতে পারবে না। এছাড়া ইহুদিদের বিরুদ্ধে ঘৃণা উস্কে দেওয়ার জন্যে বিভিন্ন এক্সিবিশনের ব্যবস্থা করা হয়।
* ১৯৩৮ সালে ইহুদিরা ডাক্তারি পড়তে পারবে না এমন আইন করা হয়।
* ১৯৩৯ ইহুদিরা তাদের কাছে থাকা সকল স্বর্ণ ও সিলভার জমা দেবে।
* জার্মান নারী অপরাধীদের হাতে নারী ক্যাম্পগুলোর দায়িত্ব দেওয়া হতো।
বাচ্চার বয়স ৬ বছর হলে ইহুদি সন্তানদের স্কুলে পাঠানো হতো এটা ছিল ইহুদিদের একটা প্রাচীন প্রথা। ফলে দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের পর হলোকাস্ট নিয়ে অনেক কাজ হয়েছে। বিশেষ করে যারা বেঁচে ফিরতে পেরেছেন তারা হলোকাস্টের উপর বই-পত্র লিখেছেন, অন্যরা হলোকাস্ট নিয়ে কাজ করেছেন। নাৎসিদের হাতে নিহত মানুষগুলোর নাম সাইটে বর্তমানে বিভিন্ন সাইটে লিপিবদ্ধ করা আছে।
নাৎসি ক্যাম্পগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভয়ংকর ক্যাম্পটির নাম পোল্যান্ডের অসভিৎজ (Auschwitz)। ১৯৪০-৪৫ সাল পর্যন্ত সেখানে কম করে ১,৩ মিলিয়ন মানুষকে আনা হয় যাদের মধ্যে আনুমানিক ১,১ মিলিয়ন মানুষকে হত্যা করা হয়। অসভিৎজ ক্যাম্পে ১,০৯৫ ০০০ ইহুদিকে আনা হয় যাদের মধ্যে ৯৬০,০০ জনকে হত্যা করা হয়। এছাড়া নন ইহুদি ৭৪, রোমা (জিপসি) ২১,০০০, রাশিয়ান যুদ্ধ বন্দি ১৫,০০০ এবং অন্যান্য ১৫,০০০ মানুষকে হত্যা করা হয়।
আগ্রহীদের জন্যে: Holocaust encyclopedia,Photo collection
ক্যাম্পের জীবন কতোটা যন্ত্রণাদায়ক ও ভয়ংকর ছিল তা বেঁচে যাওয়া মানুষগুলোর লেখা ও বয়ানের থেকে জানা যায়। ক্যাম্পের জীবন কেমন ছিল সে সম্পর্কে রুথ এলিয়াস (Ruth Elias) বলছে- “আমরা আসলে বন্যপ্রাণীর মতন জীবন ধারণ করতাম। প্রতিমুহূর্তে আমাদের বেঁছে থাকার জন্যে সংগ্রাম করতে হয়েছে। একটা বুটের জন্যে আমরা একে অপরের সাথে মারা-মারি করেছি, নিজেদের আহত করেছি! কারণ পায়ে যদি বুট থাকে তাহলে এই খারাপ পরিবেশে হয়তো বেশিদিন টিকে থাকতে পারবো। আমাদের যে শুধু জুতার অভাব ছিল না নয়, আমাদের পরার জন্যে তেমন কোন কাপড় ছিল না। অথচ এভাবেই প্রতিদিন আমাদের দিয়ে অমানুষিক কাজ করানো হতো।“
ক্যাম্পের খাবার নিয়ে লিভিয়া বিটন জেকসন (Livia Bitton Jackson) স্মৃতিচারণ এভাবে করছেন, “প্রথম দিন বাটিতে করে স্যুপ দেওয়া হয়। স্যুপ দেখতে গাঢ় সবুজ সাথে বিদঘুটে গন্ধ! যা খাওয়া আমার পক্ষে কোনভাবেই সম্ভব হচ্ছিল না। খাবারের গন্ধেই আমার বমির ভাব হচ্ছিল। আমি বাটিটা আমার মায়ের কাছে দিলাম, আমার মারও একই অবস্থা। তারপরও নাক বন্ধ করে অনেক কষ্টে স্যুপটা গলায় ঢেলে দিলাম। কিন্তু পরক্ষণেই আবার বমি করে সব বের করে দিলাম। অনেকের সাথে আমিও ঐদিন অসুস্থ হয়ে পড়লাম। এরপর সবাই আমাকে পরামর্শ দিল যে, বেঁচে থাকার জন্যে কিছু না দেখে চোখ নাক বন্ধ করে খাবার খেয়ে নিতে হবে। এমন খাবার খেয়েই আমাদের বেঁচে থাকার লড়াই করতে হয়েছে। ভাগ্য-ভালো হলে কখনো কখনো চা খাওয়ার সুযোগ হতো।” তবে অন্যান্য ক্যাম্পে সেদ্ধ আলু, মসূর স্যুপ, কিংবা সৈনিকদের পঁচে যাওয়া খাবারগুলো বন্দিদের দেওয়া হতো।
অসভিৎজ (Auschwitz) ক্যাম্পে সবার জন্যে বাটি ছিল না (চামচ কখনোই দেওয়া হতো না) তাই ৫ জনের গ্রুপ করে ৫ জনের খাবার ও রুটি এই বাটিতে দেওয়া হতো। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গ্রুপ হলে সবাই সমানভাবে ভাগ করতে খাবার খেত কিন্তু অন্যদের নিয়ে গ্রুপ হলে যার হাতে খাবার দেওয়া হতো সেই প্রথম খুদার যন্ত্রণায় রুটির বড় অংশটি নিয়ে নিত। ফলে অন্যদের ভাগে তেমন কিছু পড়ত না। এভাবেই ক্যাম্পের মানুষগুলোর বেঁচে থাকতে হয়েছে।
লিভিয়া বিটন জেকসন(Livia Bitton-Jackson) তাঁর I have lived a thousand years: growing up in the Holocaust বইতে একটি ঘটনার বর্ণনা দিচ্ছেন এভাবে; ”আজকের বেশ সকাল সকাল খাবার চলে আসল। খাবার অনেকক্ষণ খোলা রোদের ফেলা রাখা হল। কিছুক্ষণ পর লক্ষ্য করলাম; খাবারের মধ্যে অসংখ্য জীবন্ত ক্রিমি নড়াচড়া করছে! আমার মায়ের বাটিতেও বিশাল বড় এক সাদা ক্রিমি ছিল এবং সেটি খাবারের সাথে মায়ের মুখে চলে গেল। তা দেখে আমি ভয়ে শক্ত হয়ে গেলাম। মা, আমার অবস্থা দেখে বেশ অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল; কী হয়েছে রে? আমি বললাম; মা তোমার খাবারে ক্রিমি ছিল। দেখো, দেখো খাবারের বাটিতে অসখ্য ক্রিমি দেখা যাচ্ছে। মা বলল, ননসেন্স এখনে কোন ক্রিমি নেই। আমাকে একটু শান্তিতে খাবারটুকু খেতে দে। আমি একটা জ্যান্ত ক্রিমি হাতে তুলে দেখিয়ে বললাম, এই যে দেশ কতো বড় ক্রিমি। এরপর আরেকটা ক্রিমি হাতে নিয়ে মাকে দেখালাম। এবার মা, খুব অসহায় ভঙ্গিতে বলল, তুই কী করতে চাচ্ছিস? তোর অভিযোগটা কী বল? হঠাৎ করে মা আমার উপর খুব ক্ষেপে গেলেন। এই বিষাক্ত ক্রিমি খেয়ে আমার মা যেন মারা যান সেই জন্যে মাকে সাবধান করছিলাম। আজ আমার মা এমন নোংরা খাবার খাচ্ছে, অথচ এখনও আমার স্মৃতিতে জ্বলজ্বল করছে-আমার মা খুব খুঁতখুঁতে রুচিশীল মহিলা ছিলেন, তিনি ভাল ও পরিষ্কার রেস্টুরেন্টে না হলে কখনো খাবার খেতেন না, এমনকি বন্ধুদের রান্নাঘর কিংবা রান্না করার সামগ্রী সম্পর্কেও খুব খুঁতখুঁতে ছিলেন। এবার মা গলারস্বর উঁচিয়ে আমাকে বলছেন, আমি এই খাবার ফেলে দিতে পারব না, আমি খিদায় মারা যাচ্ছি। তুই কী চাস আমি না খেয়ে মরে যাই? আমি বলে দিচ্ছি, খাবারে কোন ক্রিমি নেই। খাবারের বিষয়ে এমন কথা যেন আর না শুনি। মা আবার খাওয়া শুরু করল। আমি খাবারের বাটি ফেলে দিয়ে, ফুফাতে ফুফাতে মা’র থেকে দৌড়ে চলে যাই।”
ক্যাম্প যে শুধু যে খাবারের স্বল্পতা ছিল তা নয়, সাথে ছিল পানির সমস্যা। অসভিৎজ ক্যাম্পে পানির সংকট ছিল মারাত্মক। শরীরে পানি স্বল্পতার কারণে সবাই শারীরিক সমস্যায় ভুগত। কখনো বৃষ্টি হলে, অনেকে হাত তুলে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানানো যে ঈশ্বর তাদের এখনো ভুলে যায়নি। খাদ্যের সংকট, পানির সংকটের সাথে “মরার উপর খাঁড়ার ঘা” মতন ছিল টয়লেটের সমস্যা। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে সবাইকে টয়লেট করতে হতো। এমনকি নোংরা জায়গা পরিষ্কার করার কোন ব্যবস্থা ছিল না। বার্গেন-বেলসেন ক্যাম্পে (Bergen-Belsen concentration camp) পঁয়ত্রিশ হাজার মানুষের জন্যে শুধু একটা স্নানাগার ছিল। ফলে কোন কোন বন্দিকে গোসলের জন্যে ৫ মাস অপেক্ষা করতে হতো। এরপর ভাগ্য ভাল হতে ৫ জনের সাথে একসাথে স্নান করার সুযোগ হতো। এছাড়া মোট ৫৪ হাজার মানুষের জন্যে টয়লেট ছিল মাত্র ৯৮৮ টি। বাথরুম দিনে একবারই ব্যবহার করা যেত এছাড়া রাতে কেউ টয়লেটে যেতে পারতো না। এভাবেই নিয়মের সাথে নিজের শরীরকে অভ্যস্ত করে নিতে হতো বন্দিদের। কারণ টয়লেটের জন্যে সবাই যখন লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতো তখন সৈন্যরা দূর থেকে তাদের পাহারা দিত। দূর থেকে পাহারা দেবার একমাত্র কারণ ছিল টয়লেটের দুর্গন্ধ। টয়লেটের যাওয়ার সময় সুযোগ ছিল খুবই সীমিত তারপরও এই সময়টার জন্যে বন্দিরা অপেক্ষা করতো কারণ প্রতিদিন সকালে বাথরুমে যাবার পথে নিজের প্রিয়জন কিংবা পরিচিত মানুষের সাথে দেখা কিংবা কয়েক সেকেন্ডের কথার বলার সুযোগ হতো।
চলবে……………………………..
Leave A Comment