ভাষার আলাপ- ১
ভাষার কোন গায়েবি শক্তি নেই তাই যতো আবেগ দিয়েই মাতৃভাষার বন্দনা করিনা কেন, দিন শেষে ভাষার অস্তিত্ব ও শক্তি দেশের অর্থনীতি ও জনগোষ্ঠীর সমাজ-সংস্কৃতির উপর নির্ভরশীল। নবী ইসা নবীর ভাষা ছিল আরামাইক। এই লিপি থেকেই মধ্যপ্রাচ্যের আরবি এবং পারস্য অঞ্চলের ফার্সি ভাষার লিখন পদ্ধতির উদ্ভব ঘটেছিল। পরবর্তীতে এই ভাষা বিভিন্ন শাসকের হাতে বাতিল হয়ে যায়। কালের পরিক্রমায় ভাষার শক্তি ক্ষয় হয়ে আজকের যুগে শুধু ধর্মীয় কারণে এখানো সিরিয়া, লেবানন, ইরাক ও তুরস্কে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের ভিতর এই ভাষার চর্চা রয়েছে। কোন ধার্মিক খ্রিস্টান খুব বেশি উৎসাহিত না হলে আজকের দিনে কেউ এই ভাষা শিখতে যাবে না।
১৬ শতকে ইংল্যান্ড এবং দক্ষিণ স্কটল্যান্ড মিলিয়ে প্রায় ৪০ লক্ষ মানুষ ইংরেজিতে কথা বলতেন। এই ভাষার প্রতি মানুষের তেমন শ্রদ্ধা ভক্তিও ছিল না, বরং অনেকে এই ভাষাকে অশিক্ষিত ও বর্বরদের ভাষা বলতেন। কারণ সেই আমলে ফরাসি, ইতালিয়, লাতিন ও গ্রিক ছিল শক্তিশালী ভাষা। ১৬৮৯ সালে নিউটন গতিসূত্র বিষয়ক যে বই রচনা করেন তার ভাষাও ছিল লাতিন। অথচ এই ইংরেজি ভাষা এখন পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী ও সহজ যোগাযোগ মাধ্যমে পরিণত হয়েছে।
১৫ কোটি বাঙালির পশ্চিম বাঙলার ছেলেমেয়েরা রাস্তায় বের হলে কিংবা বড় শপিং মলে গেলে ইংরেজি কিংবা হিন্দি ভাষায় কথা বলে! কারণ ভারতে বাংলা ভাষায় ভবিষ্যৎ নেই এটা তারা ধরে নিয়েছে। তাই বাংলা ভাষার অস্তিত্ব ও ভবিষ্যৎ পুরোটাই বাংলাদেশে উপর এসে পড়েছে। বাংলাদেশ রাষ্ট্র সৃষ্টি হতে পারলে বাংলা ভাষার ভবিষ্যৎ যে আরও বেশি হুমকির মধ্যে পড়ত তা সহজে অনুমান করা যায় কুর্দিদের দিকে তাকালে। অন্যদিকে ইসরাইল রাষ্ট্র সৃষ্টি হওয়াতে ইহুদিদের হিব্রু বিলুপ্তি থেকে রক্ষা পেয়েছে।
“ওরা আমার মুখের ভাষা কাইরা নিতে চায় কথা” (আব্দুল লতিফ সুর: আব্দুল লতিফ) এই গানে অনেকে আপত্তি তোলেন যে-পাকিস্তানের সংখ্যালঘু শাসক শ্রেণি তাদের উর্দুভাষাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে চাপিয়ে দিতে চেয়েছে, আমাদের মায়ের ভাষা কেড়ে নিতে চায় নাই। তারা হয়তো ভুলে যায় উর্দু রাষ্ট্রভাষা হলে এক দুই প্রজন্মের হয়তো কষ্ট হতো উর্দুকে ঠিকমতন আয়ত্তে আনতে কিন্তু পরবর্তী প্রজন্ম যখন দেখবে; এই ভাষায় শিক্ষা, চাকরি ও সম্মান আছে তাহলে সে কেন বাংলা ভাষায় সাহিত্য রচনা করতে যাবে! বাংলাদেশের অনেকে তো ইংরেজি বই ছাড়া বাংলায় বই লেখেন না কারণ বাংলা বই লিখে আন্তর্জাতিক খ্যাতি পাওয়া সম্ভব নয়। তাই উর্দু রাষ্ট্রভাষা হলে আমাদের ভদ্র পাড়ায় মুখের ভাষাও একদিন উর্দু হতো। আর বাংলা হতো আঞ্চলিক লোকাল ভাষা যা দিয়ে সাহিত্য কিংবা কবিতা রচনা করা মূল্যহীন হতো।
হিন্দি সিনেমার প্রভাবে (অখাদ্য-কুখাদ্য পরের আলাপ) আফ্রিকার সোমালিয়ার মতন লোকজন হিন্দি বোঝে, এশিয়ার কথা তো বাদই দিলাম। অন্যদিকে ৪০ লাখ হয়তো জনসংখ্যা অথচ আইফোনে তাদের ভাষা লিপিবদ্ধ করা আছে অথচ ৩৫ কোটি মানুষের বাংলা ভাষার কোন চিহ্ন নেই। ভাষার শক্তি ও প্রসার অর্থনীতি ও সংস্কৃতির উপর নির্ভর করে তাই ভাষার মাসে আমরা ভাষার জন্যে দুই কলম স্ট্যাটাস লিখলেও নিজের সন্তানকে ইংরেজি স্কুলে পাঠানোর জন্যে রাতে ওভার টাইম করি। কারণ আমরা জানি ইংরেজি ভাষার শক্তি ও ভবিষ্যৎ আছে। যেখানে আমাদের রাষ্ট্র নিজেই বাংলা ভাষায় বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠদান করা, হাই কোর্টে বাংলায় রায় লেখাতে বিশ্বাস করে না সেখানে সাধারণ মানুষ কী ভরসায় বাংলা ভাষায় ভরসা রাখবে?
ভাষার আলাপ- ২
যেহেতু বাংলা ভাষা নিয়ে আলাপ শুরু করেছি তাই ৫২-এর ভাষা আন্দোলনের বিষয়টা স্বাভাবিকভাবে চলে আসে। ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলন হয়েছি রাষ্ট্র ভাষা বাংলা করার দাবীতে। পাকিস্তানীরা রাষ্ট্রভাষা উর্দু (উর্দু পশ্চিম পাকিস্তানের ক্ষুদ্র একটি অংশের ভাষা ছিল। সবচেয়ে বেশি উর্দুভাষী বাস করে ভারতে) করল। রাষ্ট্রভাষা যদি উর্দু হয় তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া বাঙালি ও মাঠে কাজ করা বাঙালি এক শ্রেণিতে নেমে যাবে। কারণ দুইজনই উর্দু পারে না ফলে শিক্ষিতরা চাকরির বাজারে অযোগ্য বলে বিবেচিত হবে। যেখানে পাকিস্তান আমলে বাঙালিদের চাকরি হতো খুবই কম সেখানে শিক্ষিত বাঙালি চাকরি পেতে আরও বেশি কঠিন হবে। এছাড়া আমরা যেহেতু ইংরেজিতে অভ্যস্ত হয়ে এসেছি সেহেতু নতুন করে উর্দু রাষ্ট্রভাষা হলে মধ্যবিত্তের চাকরি পাওয়ার আর কোন জায়গা থাকবে না। মূলত চাকরির স্বার্থেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষিতদের হাত ধরে শুরু হয় রাষ্ট্রভাষা বাঙলা চাই আন্দোলন। এই ইতিহাসটা এখানে বলার কারণ মধ্যবিত্ত স্বার্থের সাথে রাষ্ট্রভাষার ইস্যুতে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। আর এভাবে ভাষা আন্দোলনের হাত ধরেই পাকিস্তানী জাতীয়তাবাদের বিপরীতে বাঙালি জাতীয়তাবাদের যাত্রা শুরু হয়। রাষ্ট্রভাষা ইংরেজি হলে হয়তো ইতিহাস অন্যরকম হতে পারতো।
২১ আমাদের যেমন মাথা নত করতে শেখায় নি, তেমনি অন্য কোন ভাষাকে ঘৃণা করতেও নয়। ভাষা ভাষাই সেটি শক্রুর, মিত্র, আদিবাসীর ভাষা কিংবা আঞ্চলিক ভাষাই হোক না কেন। আমরা আঞ্চলিক ভাষাকে অচ্ছুত হিসেবে গণ্য করি। অথচ আমরা ভুলে যাই আঞ্চলিক ভাষাটাই আমার প্রথম মানুষ ভাষা যা আমরা জন্মের পর শিখেছিলাম। তাই কারু মাতৃভাষার প্রতি শ্রদ্ধা থাকলেই কেবল অন্যের ভাষার প্রতিটি শ্রদ্ধা আসা স্বাভাবিক।
“একমাত্র” শব্দটার মধ্যে এক ধরনের অহং ও গৌরব মিশে আছে। ফলে আমরা ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসের বর্ণনা করতে গেলেই বলে বসে আমরা পৃথিবীর একমাত্র জাতি যারা ভাষার জন্যে প্রাণ দিয়েছে। অথচ আমরা কী অবলীলায় আসাম রাজ্যের ইতিহাসটুকু ভুলে যাই। ১৯৬১ সালের ১৯শে মে ভারতের আসাম রাজ্যের শিলচরে বাংলাকে সরকারি ভাষার মর্যাদা দানের দাবিতে ১১ জন শহীদ হন। আসামের বরাক উপত্যকার বাংলা ভাষা আন্দোলন ছিল আসাম সরকারের অসমীয়া ভাষাকে রাজ্যের একমাত্র দাপ্তরিক ভাষা করার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, যেহেতু ঐ অঞ্চলের জনসংখ্যার সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ ছিল বাংলাভাষী। ৫২-এর ২১শে ফেব্রুয়ারির মতন আসামেও এক রক্তস্নাত অধ্যায়ের সূচনা হয়। আর ১১ জন ভাষা শহিদের রক্তের বিনিময়ে আসামে বাংলা সরকারী ভাষা হিসেবে মর্যাদা লাভ করে। এছাড়া তামিলদের হিন্দি বিরোধী আন্দোলন ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে আছে। ১৯৫০ সালে ভারতীয় সংবিধান বলল, ১৯৬৫ সালের ২৬ জানুয়ারি ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসে সব রাজ্যে সর্বস্তরের হিন্দি হবে প্রধান ভাষা। এমন প্রস্তাবের বিরুদ্ধে আন্দোলন ও প্রতিবাদ শুরু হতে থাকে। এরপর ১৯৫৮ সালে নেহরু মাদ্রাজ সফরে গিয়ে তামিলভাষীদের ভাষা আন্দোলনকে ‘ননসেন্স’ বলায় একটি রক্তক্ষয়ী প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়ে। হিন্দীকে একমাত্র সরকারী ভাষার করার দিন (২৬ জানুয়ারি, ১৯৬৫) হিসাবে, হিন্দি-বিরোধী আন্দোলনগুলি কলেজের শিক্ষার্থীদের বর্ধিত সমর্থন সহ মাদ্রাজে প্রবল গতির সৃষ্টি করেছিল। ২৫ শে জানুয়ারী, দক্ষিণের শহর মাদুরাইতে একটি পূর্ণাঙ্গ সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে, পরবর্তী দুই মাসের জন্য ক্রমাগত অব্যাহত থাকে এবং সহিংসতা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, পুলিশের গুলিতে এবং লাঠি চার্জের ঘটনা ঘটে। সরকারী মতে এই দাঙ্গায় পুলিশ সদস্যসহ প্রায় ৭০ জন ব্যক্তিকে (আনুমানিক) মৃত্যু হয়। যদি আন্দোলনকারীদের মতে প্রায় ১৫০ জন মানুষ মারা যায়। পরবর্তীতে পরিস্থিতি শান্ত করার জন্য, ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী লাল বাহাদুর শাস্ত্রী এই আশ্বাস দিয়েছিলেন যে, যতদিন অ-হিন্দী ভাষাভাষী রাজ্যগুলো চায়, ততদিন ইংরেজী ভাষাটি ব্যবহার করা হবে।
একটি দেশের ভাষার অবস্থান জানা যায় সেই রাষ্ট্রের শাসক শ্রেণির সন্তানেরা কোন শিক্ষায় পড়ছে তা পর্যবেক্ষণের মধ্য দিয়ে। বাংলাদেশে যারা শাসন ও শোষণ করছে তাদের কোন সন্তান দেশের বাংলা মিডিয়াম কিংবা সরকারী স্কুলে পড়তে আগ্রহী নয়। পরিশেষে বলতে হয়; বাংলা ভাষার সংরক্ষণের সময় সম্ভবত এসে গেছে। কারণ বাংলাদেশে ইতোমধ্যে দুইটি ভাষার রাজত্ব শুরু হয়েছে তার মধ্যে একটি হল-ইংরেজি! যে ভাষাটি ইহলোকে যশ, সম্মান, জ্ঞান ও জীবনে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার একমাত্র হাতিয়ার। অন্যটি হল আরবি! যা পরলোকের হাতিয়ার। যেহেতু বাংলা ভাষা ইহলোক কিংবা পরলোক দুটোই ছিনতাই হয়ে গেছে তাই ভবিষ্যতে একে সংরক্ষণ করতে হবে। হয়তো ৫০-৬০ বছর পর কোন এক ফেব্রুয়ারি মাসে কোন এক ইতিহাস পাগল মানুষ ইংরেজিতে বাংলা ভাষার ইতিহাস ও এই ভাষার জন্যে রক্ত দানের ইতিহাস বর্ণনা করবে। এরপর অনুষ্ঠান শেষে আমরা টিভিতে ইংরেজীতে সাক্ষাৎকার দেব এবং সব শেষে বাংলা ভাষার জন্যে মাগফিরাতের (আরবি ভাষায়) মধ্য দিয়ে একুশে ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা হবে!
কিন্তু আমার মনে হচ্ছে বরং পশ্চিম বাংলাই শুদ্ধ বাংলা টিকিয়ে রাখবে আগেও ছিল আর ভবিষ্যতেও।
আগামী দিনে ভাষা ও সাহিত্যের গুরুত্বই কমে যাবে। প্রযুক্তি নির্ভর শিক্ষা ভাষার গুরুত্ব অস্বীকার করে। তা সত্ত্বেও আমি কিন্তু অন্য একটা আশার আলো দেখছি। আগামী দিনে পশ্চিম বঙ্গে আর্থিক কারনেই বড় অংশের নিম্ন মধ্যবিত্ত সরকারী বাংলা মাধ্যম স্কুলে যেতে বাধ্য হবে। বেসরকারি ইংরাজি মাধ্যমে সাফল্য যেমন আছে তেমনি ছেলে মেয়েদের বিপথে যাওয়ার সম্ভাবনাও বাড়ছে। অতি প্রাচুর্যের অভিশাপ আর কি! প্রযুক্তির কারনে ভাষা আগামী দিনে কোন বাধা হবে না। যে কোন ভাষায় দক্ষতা থাকলেই যন্ত্র অনুবাদ করে দেবার মত প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়বে বলে মনে হয় । তাই শুধু মাত্র ইংরাজি ভালো শিখে চাকরির দিন শেষ। এখন চাকরি প্রযুক্তি দক্ষতার উপর নির্ভর করে। উদাহর- T.C.S. , infosys জাতীও soft ware কোম্পানিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে ছাত্র কোন মাধ্যম থেকে এল সেটা বিচার্য হয় না । আর একটা কথা নিম্ন মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলে মেয়েরা কিন্তু লড়াকু হয়।
বরং বাংলাদেশের অবস্থা খারাপ । বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করেছে যারা তারা কিন্তু বিগত দিনের প্রধানত হিন্দুরাই। সঙ্গিত সাহিত্য সংস্কৃতি সবেতেই পশ্চিম বা অবিভক্ত বঙ্গের হিন্দুদেরই প্রাধান্য। আগামী দিনে বাংলাদেশে এদের কোন স্থান হবে না। তার স্থলে ইসলাম পন্থিরাই আসবে এবং বাংলা ভাষায় আরবি শব্দ ব্যাপক পরিমানে ঢুকিয়ে বাংলা ভাষার বারোটা বাজাবে। এ ছাড়া প্রতি পদে পদে ধর্মের চোখ রাঙ্গানি থাকলে কোন ভাষা সাহিত্য ও সংস্কৃতির স্বাভাবিক গতিপথ রুদ্ধ হয়ে যায়। ভাষা ও সংস্কৃতি সাবলিল ভাবে ডানা মেলতে পারে না। সেই হিসাবে বাংলাদেশের বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির গতি রুদ্ধ।
পশ্চিম বঙ্গের বাঙ্গালিদের হাতেই থাকবে মূল বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির চাবি কাঠি। ঠিক আগের মতই।
পশ্চিম বঙ্গে এখনো বাংলা ভাষায় ভাল সিনেমা, গান, বই লেখা হলেও ভাষার ভবিষ্যত কিন্তু হুমকির মুখে।।
যে দেশের প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়ে জ্ঞানচর্চা উস্কে না দিয়ে তেলচর্চা উস্কানো হয় সেই দেশে শুধু ভাষা কেন, সবকিছুর অবস্থানই নড়বড়ে। তবে শোষক শাসকদের আচরণ সব সময় তো এমনই ছিল। আগে হয়ত পাগড়ী হ্যাট বা অন্য পোশাকের শোষক শাসক চাপিয়ে দিত তাদের স্বার্থপর আবদার আর এখন চাপিয়ে দেয় স্থানীয় পোশাকের শাসক শোষকের দল। ছদ্মবেশে ধাপ্পা দিতে সুবিধা হয় বেশ। নাগরিক যতদিন পর্যন্ত না খুব অভাবে পড়বে, হোক তা সংস্কৃতির যে কোন অঙ্গে, সম্ভবত ততদিন তাদের ঘুম ভাঙবে না। আয়েশি বাঙালি কি এত সহজে মশাল জ্বেলে রাজপথে নামে? নাগরিকের আইনের বদলে, জ্ঞানের শিক্ষার বদলে যে দেশে ধর্মের আইন চলে, ধর্মের মত স্থবিরতার অ-জ্ঞান শিক্ষা শিশুকাল থেকে চাপিয়ে দেওয়া হয় বিদ্যালয়ে; সেই দেশে ভাষার মত এত গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক উপাদানের যত্ন হবে কি করে? প্রগতির ভাবনা কি শুধু অর্থে, যন্ত্রে না কি জীবনাচরণের প্রতিটি ক্ষেত্রে?
সহজ করে খুব ভালো একটা লেখা পড়তে দেবার জন্য সুব্রত শুভ’কে অনেক ধন্যবাদ।
আপনার মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ কাজী দা।
Noam Chomsky would definitely have disagreed with you.