তবে অনুবাদ নিয়ে এখানে যে দুটি কথা না বললেই নয়, তাহলো “ভাব” ভাষান্তরিত হলে অনুদিত ভাবার্থের মাঝে প্রায়শই কিছু না কিছু অন্তরায় থেকে যায় । যেমন “আমড়া কাঠের ঢেঁকি” কিংবা “উদোর পিণ্ডী বুধোর ঘাড়ে” কথাগুলোর ভাবার্থ পরিপূর্ণভাবে অন্যসব ভাষায় অনুবাদ করা প্রায় অসম্ভব । কেননা যে ভাষায় অনুবাদ করতে হবে সেই ভাষা- সংস্কৃতিতে আমড়া গাছ, ঢেঁকি বা পিণ্ডীর ধারণাগুলো থাকতে হবে । এসবের অনুপস্থিতিতে অন্য কোন উপমা দিয়ে অনুবাদ করা যদিও যায় তাতেও মূল ভাবের আদি রসে টান পড়ে বৈকি । দ্বিতীয়ত, বিবিধ বিষয়বস্তু অনুবাদের মধ্যে কবিতা আর গানের অনুবাদ সবচেয়ে বেশি দুরূহ । এর কারণ, কবিতা আর গানে ভাবের প্রকাশ ঘনীভূত; অল্প কথায় বেশি ভাব, তা রূপক আর ঘটনায় বৈচিত্র্যময় । কবিতার অন্তর্নিহিত অর্থ অনেকাংশেই স্থান, কাল, পাত্র ও সমসাময়িক সমাজ নির্ভর, যার প্রসঙ্গ উল্লেখপূর্বক ব্যাখ্যা বুঝতে বিদ্যালয়ে কখনোবা পণ্ডিত মশাইয়ের বেত্রও অপরিহার্য হতো । তদুপরি এই কলামের কবিতা অনুবাদের ক্ষেত্রে কতগুলো বিশেষ লক্ষ্য সামনে রাখা হয়েছে । যেমন, প্রাচীন চীনা কবিতাগুলো বাংলায় অনুবাদের সময় মূলভাব অপরিবর্তিত রাখা, হুবহু বা সমার্থক প্রচলিত উপমা ব্যবহার করা, মূল কবিতার ছন্দ ও মাত্রা অনুদিত বাংলা কবিতাতেও অক্ষুণ্ণ রাখা এবং সর্বোপরি সহজ ও প্রাঞ্জল ভাষার ব্যবহারে এই “কবিতানুবাদকে” স্বতন্ত্র কবিতার কাছাকাছি নিয়ে যাওয়া ।
এতগুলো শর্ত মেনে লেখকের সীমাবদ্ধ জ্ঞানে সর্বাঙ্গ সুন্দর অনুবাদ হয়ত সম্ভব নয় । তাই এই কলামটি আগ্রহী পাঠক, বিজ্ঞ অনুবাদক ও সমালোচকদের জন্য উন্মুক্ত রইল । অনুবাদগুলো পড়ে কারো যদি কোন মূল্যবান মতামত , সংশোধন বা দিকনির্দেশনা থাকে আমরা তা সবিনয়ে স্বাগত জানাই । যাহোক, কবিতানুবাদের অনেক সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও আশা করি কোন কাব্য প্রেমিক একে দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানো বলে ভাববেন না । বরং অচেনা চীনা দুগ্ধামৃতের ননি একটু একটু করে তুলে ধরে, চীনা ভাষা জানা বা না জানা সবার কাছে কিঞ্চিত চৈনিক কাব্য রস পৌঁছে দিতে পারলেই লেখকের এ উদ্যোগ সার্থক হবে । চলুন এবার “ধান ভানতে” মনোনিবেশ করা যাক …]
পৃথিবীর প্রাচীনতম সভ্যতার অন্যতম কাণ্ডারি চীন, যার সহস্রাব্দ পুরনো ইতিহাস, ঐতিহ্য আর সাহিত্য মানবতার উৎকর্ষতায় মূর্তিমান দৃষ্টান্ত । মাতৃভাষাভাষীর সংখ্যায় চীনা ভাষার স্থান সারা বিশ্বে প্রথম [১]। এ ভাষায় লিখিত সাহিত্য বৈচিত্র্যময়; রূপ-মাধুর্য ও নান্দনিকতায় প্রাণোচ্ছল; ভাব-গাম্ভীর্য, বিষয়বস্তু, তত্ত্ব আর দার্শনিকতায় সুগভীর । চীনা সাহিত্যের রস উপভোগ তাই কখনো বীর ডুবুরির সিন্ধু সেচে মুক্তা আনার মতো, আবার কখনোবা ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলে ধানের শিষে শিশির বিন্দু দেখার মতো । কিন্তু পরিতাপের বিষয় এই যে, প্রতিবেশী বিশাল বাংলার অনেকেরই নানা কারণে সেই দুই পা ফেলার ফুরসত হয়ে ওঠে নি । এর অন্যতম প্রধান কারণ, চীনা ভাষা ভীতি । আশা করি এই কলামের অনুবাদ সেই ভীতি ভাঙ্গাতে কিছুটা হলেও সহায়তা করবে । যাহোক, আজকের অনুবাদের জন্য চয়ন করা হয়েছে কবিগুরু লি পাই (lǐ bái) এর বিখ্যাত “নিঝুম রাতের মায়া (静夜思 jìng yè sī চিং ইয়ে ছ্রি)” এবং লি সেন (lǐ shēn)এর “অভাগা কৃষক (悯农mǐn nóng মিন নোং)” কবিতা দুটি [২,৩,৪] ।
কবি পরিচিতি_১ [৪,৫]:
চীনা কবিগুরু লি পাই (খৃষ্টপূর্ব ৭০১ – ৭৬২ ) প্রাচীন চীনে থাং রাজত্বকালের (খৃষ্টপূর্ব ৬১৮ – ৯০৭) বিখ্যাত কবি । জন্ম বর্তমান চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমে ছ্রি ছোয়ান প্রদেশের চিয়াং ইঔ শহরে । রোমান্টিক, উচ্চাকাঙ্ক্ষী, প্রাণচঞ্চল এই মহান কাব্যপ্রতিভা লিখে গেছেন প্রায় সহস্র কবিতা যা বিষয়বস্তু, ছন্দ ও মাত্রায় মধুর, ব্যঞ্জনাময় । এর মধ্যে “নিঝুম রাতের মায়া” ছাড়াও “পথ চলা দুরূহ (行路难 xíng lù nán সিং লু নান)”, “লু গিরির জলপ্রপাত (望庐山瀑布 wàng lú shān pù bù ওয়াং লু সান ফু পু )”, “বিদায় পাইতি পুরী (早发白帝城 zǎo fā bái dì chéng জাও ফা পাই তি ছ্যং)”,“মদের নিমন্ত্রণ (将进酒 qiāng jìn jiǔ ছিয়াং চিন চিও)” প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য । তার কবিতাগুলো নাতিদীর্ঘ, সহজ শব্দ চয়নে অল্প কথায় গভীর ভাব প্রকাশের অনন্য উদাহরণ। তিনি শুধু কলম হাতেই নন, তরবারি কুংফুতেও ছিলেন যথেষ্ট পারদর্শী । তাঁর সমগ্র কাব্য রচনায় “তলোয়ার” শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে মোট ১০৭ বার । আর তরবারির মতোই ছিল তার ক্ষুরধার যুক্তি। তবে লি পাইয়ের স্বভাব চারিত মত্ত মদ্যাসক্তি তাঁর সৃষ্টি সুখের উল্লাসে উদযাপনের উপকরণ নাকি সাহিত্য সৃষ্টির প্রাক প্রেরণা ছিল, তা নিয়ে হয়ত বিতর্ক হতে পারে।
কবিতার প্রেক্ষাপট_১ [৪,৬]:
কবি একদা নিজ গৃহ ও পরিবার থেকে অনেক দূরে অবস্থান করছিলেন । কোন এক জ্যোৎস্না স্নাত নিঝুম নিশিতে নিভৃতে নির্ঘুম হয়ে ওঠেন তিনি । সেদিন তাঁর নির্জন কুটীরে চাঁদের আলোর ছড়াছড়ি । জানলার ফাঁক গলে বিছানার সামনে এসে পড়া এক চিলতে জোছনা তাঁর কাছে মাটির উপর বিছানো শুভ্র তুষারের মতো মনে হয় । মুখ তুলে তাকান আকাশে ঝুলানো বিশাল চন্দ্র বৃত্তের দিকে । তাঁর মনে জেগে ওঠে নিজ ভূমের কথা, প্রিয়জনের স্মৃতি । এই চাঁদের আলোয় তাঁর বহু দূরের স্বজনরাও একই ভাবে সিক্ত । আজ তাদের কথা খুব বেশি মনে পড়লেও শুধু এই মায়াময় চাঁদ ছাড়া তাদের সাথে একসাথে ভাগাভাগি করে নেবার মতো কবির যে আর কিছুই নেই । নত মস্তকে আপন মনে ভেসে ওঠে তাঁর নিজ দেশের কত কথা । সেই ক্ষণে জেগে ওঠে কাব্যপ্রতিভা আর আমরা পাই লি পাই এর নিম্নোক্ত অমর সৃষ্টি –“নিঝুম রাতের মায়া”।
কবিতা, ভাবার্থ ও অনুবাদ_১:
《静夜思》__李白
( নিঝুম রাতের মায়া )__লি পাই
মাত্র চার লাইনের মোট ২০ টি চীনা অক্ষরে (Chinese character) লেখা এই কবিতাটি পুরা পূরা চীনা কাব্যের প্রতিনিধিত্ব করে বলেই সাহিত্য-বোদ্ধাদের অভিমত । কারণ কবিতাটি শব্দ চয়নে সরল, ভাব প্রকাশে সবল আর তা অগণিত পরবাসী মনের দেশের প্রতি ব্যাকুল টানের আকুল প্রকাশ । কবিতাটি বোঝার সুবিধার্থে আসুন নিচের শব্দার্থে একটু চোখ বোলানো যাক ।
—————————————————-***————————————————–
কবি পরিচিতি_২ [৪,৭]:
প্রাচীন চীনে থাং রাজত্বকালের আরেক প্রতিভাবান কবি এবং বিতর্কিত রাজনীতিবিদ লি সেন (খৃষ্টপূর্ব ৭৭২ – ৮৪৬) । জন্ম বর্তমান দক্ষিণ চীনের জো চিয়াং প্রদেশের হু চৌ শহরে । শিশুকাল থেকেই মেধার স্বাক্ষর রাখা কবি ২৭ বছর বয়সে কেন্দ্রীয় সরকারের তৎকালীন “বিসিএস পরীক্ষায়” মেধাতালিকায় প্রথম সারিতে স্থান করে নেন । অসাধারণ জ্ঞান গরিমায় স্বয়ং সম্রাটের দৃষ্টি আকর্ষণ ও সান্নিধ্য লাভ করে তিনি রাজনীতির উচ্চপদও আরোহন করেন। তাঁর ঘটনাবহুল কর্মজীবনে তিনি সমসাময়িক আরও দুই বিখ্যাত কবি ইউয়েন জেন (খৃষ্টপূর্ব 779 – 831) ও পাই চুই ই (খৃষ্টপূর্ব 772 – 846) এর সংস্পর্শ পান । তাঁদের প্রেরণায় লি সেনের অন্যতম কৃতি কর্ম হল সেযুগের সাহিত্য ও কাব্য বিপ্লবে তাঁর সক্রিয় অংশগ্রহণ । তাঁর রচনাবলীর মধ্যে “অভাগা কৃষক” ছাড়াও “কাব্য সংকলনের নতুন ধারা (乐府新题 lè fǔ xīn tí ল্যো ফু সিন থি)” এবং চার খণ্ডের “থাং কবিতাঞ্জলি (全唐诗 quán táng shī ছুয়েন থাং শৃ)” বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য । স্পষ্টভাষী এই কবি, রাজনীতিবিদ ৭৪ বছর বয়সে রাজনৈতিক কোন্দল ও অনাকাঙ্ক্ষিত মামলায় জড়িয়ে পড়েন এবং তাঁর মরণোত্তর প্রতীকী দণ্ডে দণ্ডিত হন তাঁর বংশধরেরা ।
কবিতার প্রেক্ষাপট_২[৪,৮]:
কোন এক তপ্ত গ্রীষ্মে কবি ছুটি কাটাতে দেশের বাড়ি যান । সেখানে দেখা হয়ে যায় তার এককালের সহপাঠী, সহকর্মী ও কাব্য-মিতা লি ফোং চি এর সাথে । বহুদিন পর পুরনো বন্ধুর সাক্ষাতে আবেগে আপ্লুত, দিশাহারা তারা । ঠিক করলেন একটা দিন একসাথে কাটাবেন । সেদিন এদিক সেদিক ঘুরতে ঘুরতে একসময় বেয়ে উঠলেন শহরের পূর্বে অবস্থিত বিখ্যাত “মাঠ পর্যবেক্ষণ মিনারে” । বিস্তীর্ণ কৃষিজমি আর এতে কৃষিকাজ তদারকির নিমিত্তে স্থাপিত এই সুউচ্চ মিনার থেকে দূরে বহুদূরে চোখ রাখা যায় । মিনারে চড়ে তারা উপভোগ করতে লাগলেন তেপান্তরের ফসলি মাঠ আর তার নৈসর্গিক সৌন্দর্য । মৌ মৌ মৌ গন্ধে ভেজা দখিনা হাওয়ায় ফসলের ঢেউ, কবি মনে তরঙ্গের শিহরন বইয়ে দেয় । কাব্য-মধু প্রভাবক সেই ক্ষণে লি ফোং চি মনের অজান্তেই স্বতঃস্ফূর্ত হেঁকে ওঠেন দুটি কাব্য পদ। সহজ কথায় যার মর্মার্থ তার মনের গহীনে থাকা উচ্চাভিলাষ— আহা, ক্ষমতার উচ্চপদ আরোহণ যদি এই মিনারে ওঠার মতই এত দ্রুত হতো ! ওদিকে কবি লি সেনের মানস-পট আর দৃষ্টিকোণ সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রবাহে । উপর থেকে তাঁর চোখ পড়ল জমিতে কাজ করা কিছু ক্লান্ত শ্রান্ত কৃষকের পানে । গ্রীষ্মের এই দাবদাহে ভরা দুপুরের চড়া রোদ উপেক্ষা করে তারা আগাছা নিড়ানো আর হালচাষে মত্ত। পরিশ্রমের প্রতি বিন্দু ঘাম ঝর ঝর ঝরে পড়ে মাটিতে, সেদিকে ভ্রুক্ষেপ করার ফুরসতও যেন তাদের নেই । এই ঘর্ম-সিক্ত কষা মাটিতে একদিন চুপিসারে ফলবে ফসল, জন্ম নেবে আমাদের থালাভরা প্রতি দানা অন্ন । পূর্ণ-উদর বিলাসী বা সচ্ছল আমরা কতজনই বা বুঝব ঐ মেহনতি কৃষকের শ্রমবেদনা! কবি লি সেনের এই উপলব্ধি থেকেই আমরা পাই তাঁর নিম্নোক্ত অমর কবিতা, “অভাগা কৃষক”।
কবিতা, ভাবার্থ ও অনুবাদ_২:
《悯农》— 李绅
(অভাগা কৃষক) – লি সেন
এই কবিতাটিও মাত্র চার লাইনের, প্রতি পদে ৫টি করে মোট ২০টি চীনা অক্ষরে লেখা যা ছন্দ ও মাত্রায় সুমধুর । যেন মনে করিয়ে দেয় আমাদের ছন্দের যাদুকর কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের কবিতার কথা । প্রায় প্রতিটি স্কুলগামী চীনা শিশুর অবশ্য পাঠ্য এটি, যা হতে পারে শ্রমের মূল্য রচনা বা ভাব সম্প্রসারণ লেখার অপূর্ব উপাদান। আসুন এবার কবিতাটির শব্দার্থ জেনে নেয়া যাক।
তথ্যসূত্র:[১] https://en.wikipedia.org/wiki/List_of_languages_by_number_of_native_speakers[২] 唐诗三百首新译. 中国对外翻译出版公司, 1988.[৩] Harris, Peter. Three Hundred Tang Poems. Everyman’s Library, 2009.[৪] http://baike.baidu.com/[৫] https://en.wikipedia.org/wiki/Li_Bai[৬] https://en.wikipedia.org/wiki/Quiet_Night_Thought[৭] https://en.wikipedia.org/wiki/Li_Shen[৮] http://cn.hujiang.com/new/p474340/
চিত্রসূত্র:[1] http://image.baidu.com/[2] https://www.google.com/
(চলবে …)
:good:
বড় ভূমিকার ছোট্ট অনুবাদ। কবিতার চেয়ে অনুবাদককে বেশি সময় দিতে হলো।
পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ । কবিতার চেয়ে অনুবাদে বেশি সময় দিয়েও হয়ত কবির মূল ভাব পুরোপুরি ছড়িয়ে দেয়া যায় না । হয়ত যায় 🙂 চেষ্টা তো করি 🙂
২য় কবিঃ
ওরেব্বাস, কবি লি সেন ও দেখছি বাজিমাৎ অবস্থা,
চমৎকার।
তৎকালীন “বিসিএস পরীক্ষায়” কথাটার বদলে তৎকালীন চীনা “মেধা পরীক্ষা” (বাংলাদেশের বিসিএস পরীক্ষার মত) …… ….. লিখলে কেমন হয়?
ঠিক জায়গায় ধরেছেন । আসলে আমার ইচ্ছা ছিল “বি সি এস (BCS =Bangladesh Civil Service)” এর জায়গায় “সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা” লিখব । পরীক্ষাটা আসলে যোগ্য রাজনৈতিক নেতা বেছে নেবার নিমিত্তেই ছিল । যাদের মূল কাজ নাগরিক সেবা প্রদান । তাই ভাবলাম “বি সি এস” বা “সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা”ই বুঝি এর কাছাকাছি ভাবানুবাদ হবে । যাহোক, আপনার পরামর্শের জন্য ধন্যবাদ 🙂
দারুন দারুন লেখাগুলো উপহার দেবার জন্য অনেক ধন্যবাদ কিশোর। যেখানে চীনা সাহিত্য নিয়ে বাংলায় লেখা মোটেও সহজলভ্য নয় সেখানে অত্যন্ত গোছানো, তথ্যবহুল এবং সহজ করে এমন চমৎকার লেখা তো সোনার খনি। লেখার ভঙ্গি; সেটাও অসাধারণ।
তো চীন কবি লি পাই মাত্র চার লাইনেই বিশ্বজয় করে নিলো? কি সাঙ্ঘাতিক; একথা জানতামই না।
পরের পর্বটির জন্য অপেক্ষায় থাকলাম। আবারো ধন্যবাদ।
অন্য অনেকের মতো আমিও একটু প্রশংসার কাঙ্গাল । আপনার এই উচ্চকিত প্রশংসা আমার লেখার আগ্রহ আরও বাড়িয়ে দিল । অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে 🙂
কবি লিপাই আসলে বিশ্বজয় না, চীন জয় করেছেন । তার সাহিত্য কর্মের সংখ্যাও খুব বেশি নয় । মোট ৯৯৮ টি কবিতা । কিন্তু সময় কাল, পরিস্থিতি বিচারে নিলে, মানে খৃষ্টপূর্ব ৭০১ – ৭৬২ সালের দিকে, কাগজ আবিষ্কারেরও প্রায় ৬০০ বছর আগে তিনি যা লিখে গেছেন তা সত্যিই অসাধারণ । অন্তত চীনাদের সাহিত্য বিচারবোধে 🙂
এই পর্বটি চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছার কমতি নেই । দেখা যাক কি হয় 🙂
এই যে প্রায় তিন হাজার বছর আগের এক চীনা কবির সাহিত্যকর্ম নিয়ে আমরা বাংলায় আলোচনা করছি এটাই তো বলে দেয় যে লি পাই ওই চার লাইন পরিসরেও এখনো অনেক দূর পর্যন্ত ঝাঁকাতে পারে। লি সেন’এর ও সেই চার লাইনের ব্রম্মাস্ত্র; একই সময়ের দূরত্বে আজ কথা হচ্ছে। কতই না জানার আছে 🙂
:good:
চাইনিজ ভাষা ও সাহিত্য সম্পর্কে আসলে কিছুই জানি না। আশেপাশে কখনো কাউকে চাইনিজ ভাষায় কথা বলতে শুনলে হাঁ করে তাকিয়ে থাকি। আপনার অনুবাদের মাধ্যমে কিছুটা জানতে পারবো। শব্দের উচ্চারণ ও অর্থ দিয়ে দেওয়ায় খুব সহজ হবে ব্যাপারটি। আইডিয়াটা দারুণ।
বেশ, শুনে ভালো লাগলো । মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ 🙂