অনেকদিন ধরেই ধর্মের সাথে নারীকূলের সম্পর্ক নিয়ে কিছু লেখার ইচ্ছে মাথায় ঘুরছিল। কিন্তু সাম্প্রতিককালে যেভাবে বন্যার স্রোতের মত নতুন নতুন ঘটনা ঘটতে শুরু করেছে তাতে আমার মাথা থেকে বিষয়টি প্রায় হারিয়ে যাবার উপক্রম হয়েছিল। আর এই বিষয়ে অনেক প্রাত:স্মরণীয় লেখকই লিখে গেছেন বা লিখে চলেছেন, সেখানে আমি নতুন করে কি যোগ করব? এটাও মাঝে মাঝে মনে হচ্ছিল। কিন্তু অতিসম্প্রতি ঘটে যাওয়া পাকিস্তানি মডেল কান্দিল হত্যা ও পরবর্তী প্রতিক্রিয়াসমূহ দেখার পর মনে হল নাহহ এবার অন্তত কিছু লিখি। পাশাপাশি ফেসবুকে সমগ্র বাংলার নারী ছাগকূলের বিভিন্ন বালখিল্য ও কৌতুকউদ্রেককারী কর্মকান্ড দেখে ভাবলাম একটা কিছু লিখেই ফেলি। যা হবার হবে।
শুরুতেই একটা জিনিস বলে রাখি এই পোস্টে অনেক জায়গাতেই পুরুষতন্ত্র প্রসঙ্গটি আসবে। আর ধর্ম ত তার দন্ড নিয়ে দাঁড়ানো আছেই। আমি কিন্তু এই দুটোকেই এক বস্তু হিসেবে বিবেচনা করব। কারণ সৃষ্টির শুরু থেকেই এরা একে অন্যের পরিপূরক,পৃষ্ঠপোষক ও অনুমোদনকারী। অনেক জায়গায় কোনো পার্থক্যই নেই। তাই আমি ধর্ম বা পুরুষতন্ত্র যেই শব্দটিরই উল্লেখ করি না কেন তা আসলে দুটো জিনিসকেই বোঝাবে।
নারীর সাথে ধর্মের মিথ:স্ক্রিয়া নিয়ে আমার কৌতুহল সেই ছোটবেলা থেকেই। যখন কোন বিয়েতে নিমন্ত্রণ পেয়ে অতিথি হিসেবে গিয়েছি বা বরযাত্রী হিসেবে তখনই বিয়ে শেষ হবার পর,মেয়েকে তার বাপের বাড়ী থেকে বিদায় দেবার সময় যে উচ্চস্বরে কান্নার রোল পরে যেত তা আমার মনে যথেষ্ট প্রশ্ন তৈরি করত। কেন? মেয়েকে কেন তার বাপের বাড়ি ছেড়ে দিতে হবে? সারাজীবনের জন্য তার বাড়িতে সে কেন অতিথি হয়ে যাবে? পক্ষান্তরে ছেলেটিকে ত কিছুই ত্যাগ করতে হচ্ছে না। চারপাশে এত জ্ঞানীগুণী,আধুনিক শিক্ষিত মানুষ থাকা সত্ত্বেও তারা সবাই বিনা প্রশ্নে এই বর্বর প্রথাগুলো কেন মেনে চলছে? উল্লেখ্য আমি এখানে মূলত হিন্দু বিয়ের অভিজ্ঞতার কথাই বলছি। পারিবারিকসূত্রেই সেই অভিজ্ঞতাই আমার বেশি। অবশ্য বিয়ের ধর্মীয় রীতিনীতি ছাড়া মুসলিম বা অন্যান্য ধর্মের বিয়ের দৃশ্য প্রায় একই। আর ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতার কথা যদি বলতে হয় তাহলে ত হিন্দু ধর্মীয় বৈবাহিক প্রথা বা আচার আচরণ মধ্যযুগীয়,বর্বর,পুরুষতান্ত্রিকতার চুড়ান্ত। ধর্ম যার একশভাগেরও বেশি অনুমোদন দেয়।
এছাড়া বিয়ের পর স্বামীর পদবী গ্রহণ করা ও সন্তানের নামের শেষে স্বামীর পদবী যোগ করা জিনিসগুলো সেই ছেলেবেলা থেকেই আমার কাছে কেমন অদ্ভুত লাগত। আজকাল অবশ্য অনেকেই আর নামের শেষে স্বামীর পদবী গ্রহণ করেন না। তবে সংখ্যাটা শতাংশের হিসেবে খুব বেশি হবে না। আর সার্টিফিকেট সংক্রান্ত জটিলতাও একটি বড় কারণ। তবে বিশ্বজুড়ে প্রতিষ্ঠিত,বিখ্যাত নারীদের মধ্যে আবার এর ব্যাপক প্রাদুর্ভাব। বর্তমানে পৃথিবীর শক্তিশালী নারী বলে যারা পরিচিত যেমন হিলারী ক্লিনটন,এঞ্জেলা মের্কেল,তেরেসা মে,সোনিয়া গান্ধী তারা সবাই তাদের স্বামীর পদবী গৌরবের সাথে ব্যবহার করছেন। অথচ এরা প্রায় সবাই কিন্তু নিজের যোগ্যতায় এতদূর এসেছেন। এতে কি সফল,ব্যক্তিত্বসম্পন্ন,আত্ননির্ভর নারীদের মনোজগতেও ঘাপটি মেরে বসে থাকা পুরুষতন্ত্রের ভূতের এক ঝলক দেখতে পাওয়া যায় না? এমনকি খুঁজলে অনেক প্রগতিশীল, মুক্তমনা,নাস্তিক নারীদেরকেও এর মধ্যে পাওয়া যাবে। সুকৌশলে এর সমর্থনকারী একই গোত্রের পুরুষদের কথা বাদই দিলাম।
এসব ব্যাপার নিয়ে যতবারই আমার পরিচিত মানুষদের সাথে কথা বলতে গিয়েছি সবচেয়ে বেশি আক্রমণের শিকার হয়েছি নারীদের কাছ থেকেই। অবশ্য তাদের মূল সুরটা ছিল ধর্মকে এর বাইরে রাখা। যেন ধর্মের এর পেছনে কোন দায় নাই। কিন্তু ধর্ম আর পুরুষতন্ত্রের অস্তিত্ব যে অঙ্গাঙ্গীভাবে গাঁথা সেটা নিয়ে চিন্তা করার ইচ্ছা মনে হয় তাদের ছিল না। প্রসঙ্গত বলে রাখি এই নারীদের অধিকাংশই উচ্চশিক্ষিত,আর্থিকভাবে মোটামুটি আত্ননির্ভর ও স্বাবলম্বী। এই পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ও ধর্মই যে তাদের চোখে ঠুলি পড়িয়ে রেখেছে এই জিনিসটা বোঝার ক্ষমতাই তাদের নেই। উপরন্তু তাদের ধর্মই যে নারীদের সবচেয়ে বেশি মর্যাদা দিয়েছে এই কথা বলতে বলতে তারা মুখে ফেনা তুলে ফেলেন। উল্লেখযোগ্যভাবে এই দলে উচ্চশিক্ষিত নারীদের সংখ্যাই বেশি। কেউই বোধহয় এ বিষয়ে দ্বিমত করবেন না। আজকাল ফেসবুকের ছাগসমাজে এই নারীদের ক্রমবর্ধমান সংখ্যা চোখে পড়ার মত। তাদের সম্মিলিত ব্যা ব্যা রবে তারা পুরুষদেরকেউ ছাড়িয়ে যাচ্ছেন। তা সে জাকির নায়েক রক্ষা মিশন,এরদোগান সমর্থক পরিষদ,হিজাব বোরকা রক্ষা ও প্রচলন সমিতি,সহীহ মুসলমান খোঁজা কমিটি বা অন্য যেকোনো বিষয়ই হোক না কেন।
দুদিন আগে পাকিস্তানে ঘটে যাওয়া মডেল কান্দিল হত্যার পরেও তারা যথারীতি ধর্মরক্ষা মিশন নিয়ে মাঠে নেমে পরেছে। মানে এর সাথে ধর্মের কোনোই সম্পর্ক নেই। কান্দিলের ভাই ছাড়া আর কারোরই কোন দায় নেই। সম্ভবত সেও রহস্যময় কেপ্টাগন ওষুধ খেয়েই এই কাজটি করেছে ভাবখানা এমন। কিন্তু এই বর্বর অনার কিলিং প্রথা প্রায় একশভাগ ক্ষেত্রেই মুসলমান সমাজেই কেন ঘটে এই কথাটি কি তারা কখনো ভেবে দেখেছেন? এমনকি পাশ্চাত্যেও এধরণের ঘটনা মুসলমান কমিউনিটিতে মোটেও বিরল নয়। আর কান্দিল যেধরণের ফ্যাশন বা ড্রেসের মাধ্যমে খ্যাতি অর্জন করেছিল তা কতটুকু ইসলামসম্মত ছিল? তার সাহসী, আত্নপ্রত্যয়ী ও নারীবাদী চিন্তাভাবনা কতটুকু ইসলাম অনুমোদিত ছিল? এসব বিষয়ে তারা কি বলেন তা জানতে পারলে অবশ্য খুব ভাল লাগত। এধরণের আধুনিক,পাশ্চাত্যধাঁচের পোশাক ও নারীবাদী আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গির বিরুদ্ধে ইসলাম ধর্মে যে পরিমাণ ঘৃণা বর্ষিত হয়েছে সেটাই যদি কান্দিলের ভাইকে হত্যাকান্ডে উস্কিয়ে দিয়েছে বলে ধারণা করা হয় তবে কি খুব ভুল বলা হবে?
তাই বলতে হয় হাজার বছর ধরে যারা ধর্মের দ্বারা সবচেয়ে বেশি নিষ্পেষিত, নির্যাতিত, লাঞ্ছিত সেই নারীসমাজের মধ্য থেকেই যখন ধর্মের সবচেয়ে দৃঢ়চিত্ত সমর্থকগোষ্ঠির উৎপত্তি হয়;তখন মনে হয় পথ শেষ হতে এখনো অনেক দেরী। অন্ধকার কেটে আলোর রেখা সহসাই দেখা দিচ্ছে না।
@Nafisa :rose: :rose: :rose: :rose: :rose: :rose:
আমার পার্সোনালি ধারণা ভালো মেয়ে হওয়ার এক উদ্যগ্র আকাঙ্ক্ষা আছে মেয়েদের ভেতর। এই আকাঙ্ক্ষা থেকে যারা মুক্তি পায় নি, তাদের পুরুষতান্ত্রিকতা থেকেও মুক্তি নেই। সমাজ যদি ঠিক করে যে চাকরি বাকরি করা মেয়েরাই ভাল মেয়ে, তারা সেদিকে যাবে, যদি মনে করে যে ঘরে বসে থাকা মেয়েরাই ভালো, তারা ঘরেই বসে থাকবে। আমরা এতদিন মেয়েদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার দিকে মন দিয়েছি, কিন্তু মুক্তচিন্তার দিকে বা নিজের মতামত গঠনের দিকে মনে দেই নি। এজন্য মৌলবাদের রিটার্নের সাথে সাথে কিছু উচ্চশিক্ষিত মেয়ে তাদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে পর্দাপ্রথায় ফিরে গিয়েছে।
এখন আসি সেক্যুলার সমাজে বড় হওয়া যেসব মেয়ে এইসব ব্যাপার নিয়ে আসলে চিন্তা করে,কারিকুলামের বাইরে কিছু পড়াশোনা করে এবং স্ট্রং ওপিনিওন ফর্ম করে (সংখ্যায় কম) তাদের নিয়ে। ধর্ম এবং আধুনিক নারীসমাজে আমরা যা যা বিশ্বাস করি যেমন শিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রের স্বাধীনতা, পোশাকের স্বাধীনতা, স্বামীর অধীনে না থাকার স্বাধীনতা, ফ্রি মিক্সিং এর স্বাধীনতা (মোটা দাগে বললাম) ইত্যাদি যে সাংঘর্ষিক এবং মডারেটদের অনেক এপোলজিস্ট টাইপের বিশাল কথাবার্তার পরেও বেসিক জিনিস যে একই থাকে এটা রিয়েলাইজ করার পরে সামনে একটা চয়েস আসে। যেহেতু এরা স্ট্রং ওপিনিওনের, মাঝামাঝি কোন ওপিনিওনে তারা অবশ্যই আসে না, ইসলামও আবার অর্ধেক মানা অর্ধেক না মানার ধর্ম না (দ্বীনি ভাই-বোনেরা মডারেটদের উঠতে বসতে এই কথা স্মরণ করিয়ে দেন)। তার মানে ইসলাম পুরোপুরি মানা অথবা নাস্তিক হয়ে যাওয়া। এখন যার ইনক্লিনেশন যেদিকে সে সেদিকে যাবে। যার ধর্মের দিকে ইনক্লিনেশন সে তার আগের জীবন ছেড়ে দিয়ে পুরাপুরি ফ্যানাটিক দ্বীনি আপু হয়ে যায় (ইনারা নিজেদের নওমুসলিম ভাবেন এবং আগের জীবনকে জাহেলী অতীত ভাবেন ) এবং মহোৎসাথে কুরআন হাদীসের বাণী (স্পেশালি পর্দার বাণী) প্রচার করতে থাকে সোশ্যাল মিডিয়ায়। একই সাথে আগের জাহেলী জীবন কত খারাপ এবং কিভাবে উনি দ্বীনের পথে আসলেন কত পারিবারিক ও সামাজিক বাধা ডিঙ্গিয়ে সেটা প্রচার করতে থাকেন। এদের প্রভাব উচ্চশিক্ষিত সমাজে (আগের বন্ধুত্বের সূত্রে) এবং একই সাথে কম শিক্ষিত মানুষদের দ্বীনের লাইনে আনতে কনভিন্স করতে সবচেয়ে বেশি জন্য এদের কথা উল্লেখ করলাম। তার সাথে অবশ্যই আছে পারিবারিকভাবে গোঁড়া পরিবারের আপুরা এবং কওমী মাদ্রাসার আপুরা।
অন্যদিকে নারী স্বাধীনতার প্রতি ইনক্লিনেশন থাকলেও ধর্মের সাথে ছোটবেলা থেকে থাকা এক আবেগপূর্ণ সম্পর্কের কারণে, খোদা, বেহেশত দোজখ ইত্যাদির চিন্তায় ধর্ম পুরোপুরি ছাড়াটা খুব কষ্টের এবং ইমোশনাল টার্ময়েলপূর্ণ কাজ। সেটা পার করেও যারা নাস্তিক হন অথবা এট লিস্ট তার আগের সেক্যুলার ভিউয়ের প্রতি অটল থাকেন তারা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার ভয়ে স্পেশালি পোশাকের স্বাধীনতা আর ফ্রি মিক্সিং এর স্বাধীনতা নিয়ে উচ্চকিত লেখালেখি বা নিদেনপক্ষে কমেন্টও করতে পারেন না (মেয়েরা ঝামেলা এড়াতে একটু ভালবাসে)। একই সাথে আছে লিবারেলদের ডিলেমা- তোমরাই ত বল, পোশাকের স্বাধীনতা, আমার বোরকা, আমার অধিকার, তোমরা হিপোক্রেট ইত্যাদি। যদিও যে বিশ্বাস থেকে তারা ওই পোশাকটি নিয়েছেন তা পোশাকের স্বাধীনতা সাপোর্ট করে না। শিক্ষা আর চাকরির স্বাধীনতা তাও ইসলামের একটু অপছন্দনীয় হলেও চলে বলে এটার পক্ষে তাও যা কথা বলা যায়, বুয়েট পাশ দ্বীনি আপু আল্লাহ নারীদের ঘরে থাকা পছন্দ করেন বলে চাকরি ছেড়ে দিয়ে নিন্দুকদের উদ্দেশ্যে যখন বলেন ঘরে বসে থাকাও আমার স্বাধীনতা, তখন আর বলার কিছু থাকে না। এই আপুরা আবার ইসলাম বাদ দিয়ে সমাজের অন্য বঞ্চনা যেমন শ্বশুরবাড়ির অত্যাচার, মানুষের কথা, যৌতুক এগুলা নিয়ে খুব উচ্চকন্ঠ। ইহারা ইসলামী নারীবাদী, ইসলাম যা দিয়েছে ওটাই অধিকারের সীমা এবং সেই সীমার ভেতরের অধিকার আদায়ে তারা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
দ্বীনি আপুদের উচ্চকন্ঠ, সেক্যুলার নারীবাদীদের নিম্ন কিংবা নাই হয়ে যাওয়া কন্ঠ সোশ্যাল মিডিয়াকে ইসলামী মিডিয়া বানিয়ে ফেলেছে। এর সাথে অবশ্যই আছে পার্সোনাল লেভেলে বান্ধবী বা আত্মীয়দের ইসলামের পথে নিয়ে আসার একটিভ চেষ্টা। এখানেও সেক্যুলার নারীবাদীরা পিছিয়ে। প্রাইভেসি এনক্রোচমেন্ট, মেয়েরা ইস্যু নিয়ে বেশি কথা বলে না ইত্যাদি কারণে আমরা মেয়েদের একটিভলি নিজেদের দলে নিয়ে আসার চেষ্টা করি না পার্সোনালি। দ্বীনি আপুদের প্রাইভেসি নিয়ে বেশি চিন্তা নাই। উনারা আমরা জাহান্নামে যাবো, উনারা সহ্য করতে পারবে না এই মায়া বশত বারবার দাওয়াত দিয়ে আসেন। অবশ্য আশার কথা, এই কাজে উনারা নারীজাতির কাছ থেকে যে কিছু বাধার সম্মুখীন হন সেটাও মাঝে মাঝে ব্যাক্ত করেন। কিছু নারী ঠিকই উনাদের দলে ভিড়ে যান এবং তাতে উৎসাহ পেয়ে উনারা আরও ঝাঁপিয়ে পড়েন।
এই দিনরাত প্রচারের ফলে ধর্মভীরু এবং ভালো মেয়ে তকমাপ্রত্যাশী আপুরা এবং এম্পটি হেডেড জাস্ট ট্রেন্ডি আপুরা যার যার পছন্দমত মাঝামাঝি এক রাস্তা বেছে নেন। আর গুটিকয়েক কিছু শক্ত মেয়ে এর সামনে আগের লাইফস্টাইলে থাকে।
মূল লেখাটির চেয়ে আপনার মন্তব্যেই সার কিছু কথা রয়েছে। লিখুন না কেন মুক্ত -মনায়?
ধন্যবাদ আপনার উৎসাহের জন্য। মুক্তমনায় লেখার মত অত পড়াশোনা আসলে নেই। তারপরও বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে একটা কালচারাল রেভলিউশন দরকার আমাদের, যাতে এখনও যারা মডারেট আছে তারা যাতে মৌলবাদী না হয়ে যায়। সেখানে যদি কোন ছোট অবদান রাখার সুযোগ থাকে, তাহলে অবশ্যই যতটুকু পারি লিখবো।
আপনার সুন্দর ও বিশ্লেষণাত্মক মন্তব্যটির জন্য ধন্যবাদ। মেয়েরা মেয়েদের মনস্তত্ত্ব ভালো বুঝবে এটাই স্বাভাবিক। ছোটবেলা থেকে সমাজ, ধর্ম, পরিবার থেকে গেঁথে দেওয়া অনিশ্চয়তাবোধই হয়ত এই দোদুল্যমানতার কারণ।
যার ফলে আর্থিক ভাবে স্বাধীনতা অর্জন করলেও মনের স্বাধীনতার পরিসরটা গন্ডীবদ্ধই থেকে যায়। খুব কম ক্ষেত্রেই নারীদের বড় অংশই তার সকল সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও এই গন্ডী ভেদ করতে পারে।
ধর্ম ও পুরুষতন্ত্র তার জাল এমনভাবে বিছিয়ে রাখে যে মেয়েরা কখন তার শিকারে পরিণত হয়েছে বুঝতেই পারে না।
সহমত।
বুয়েট পাশ দ্বীনি আপু…. :yahoo: দারুণ বলেছেন!
খুব ভালো লাগলো আপনার লেখা পড়ে!
“……যাতে এখনও যারা মডারেট আছে তারা যাতে মৌলবাদী না হয়ে যায়।” খুবি জরুরি একটা কথা বলেছেন।
তাই বলতে হয় হাজার বছর ধরে যারা ধর্মের দ্বারা সবচেয়ে বেশি নিষ্পেষিত, নির্যাতিত, লাঞ্ছিত সেই নারীসমাজের মধ্য থেকেই যখন ধর্মের সবচেয়ে দৃঢ়চিত্ত সমর্থকগোষ্ঠির উৎপত্তি হয়;তখন মনে হয় পথ শেষ হতে এখনো অনেক দেরী। অন্ধকার কেটে আলোর রেখা সহসাই দেখা দিচ্ছে না।
সহমত । লেখা চমৎকার হচ্ছে । ভালো থাকবেন।।
ধন্যবাদ।
আমাদের সমাজের নারীরা কুয়োর ব্যাঙ অবস্থান থেকে নিজেদের মুক্তি কি আদৌ চায়? বেশিরভাগ এখন হিজাব বোরকাকে নিরাপদ আশ্রয় মনে করে।মগজ ওয়ালা মাথার চেয়ে হিজাব ওয়ালা মাথা এখন বেশি আদরনীয়।নারীরাই নারীর মূল্যায়নের মাপকাঠি হিসেবে হিজাব বোরকাকে আদর্শ মনে করে।চারপাশে যেন প্রতিযোগিতা চলছে কে কতটা পর্দানশীন, ধার্মিক, সতী তা প্রমানে।মুক্তি এখানে বহুদূর
সহমত। তবে মগজ বলতে যদি আধুনিক, প্রগতিশীল, মুক্তচিন্তা ধারণ করা বোঝায় তাহলে কোনো দ্বিরুক্তির অবকাশ নেই।
কিন্তু মগজ বলতে যদি তথাকথিত প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় শিক্ষিত, মেধাবী, উচ্চ বা মর্যাদাশীল পদে চাকরী করা বোঝায় তবে এরমধ্যে হিজাব বা বোরকাধারী বা শাঁখা সিঁদুরধারীদের সংখ্যাই বেশী।
এখানে মগজ বলতে প্রগতিশীল ও মুক্তচিন্তাকেই বোঝানো হয়েছে,তথাকথিত শিক্ষায় শিক্ষিত কে নয়।লেখক কে ধন্যবাদ