গত ১৫ তারিখ শুক্রবার রাতে তুরস্কে একটি ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থান ঘটে। প্রথম কয়েক ঘণ্টায় মনে হয়েছিল প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইয়িপ এরদোয়ানের পতন অনিবার্য। কিন্তু কয়েক ঘণ্টা পরে পরিস্থিতি পরিবর্তন ঘটতে থাকে। এরদোয়ান জনগণকে রাস্তায় নামার আহবান জানানোর আগেই জনগণ রাস্তায় নেমে পড়ে। প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান যখন ইস্তাম্বুলের কামাল আতাতুর্ক বিমানবন্দরে এসে নামেন, হাওয়া পুরো ঘুরে গেলো। সেখানে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি কড়া ভাষায় অভ্যুত্থানকারীদের দেখে নেয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিলেন, বললেন, তুরস্কের নিয়ন্ত্রণ তার হাতেই।
নির্বাসিত নেতা ফেতুল্লা গুলেন কে এই অভ্যুত্থানের পেছনে দায়ী তুরস্ক সরকার। ২০১৩ সালে এরদোয়ানের ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত শুরু হয়েছিল। তখনই এরদোয়ানের একসময়ের ঘনিষ্ঠ ধর্মীয় নেতা ফেতুল্লাহ গুলেনের সঙ্গে মতবিরোধ শুরু। দেশ থেকে বিতাড়িত হয়ে গুলেন বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়ায় থাকেন। ফেতুল্লাহ একজন ধর্মীয় নেতা। তার হিজমেত আন্দোলনের বিরাট সমর্থন আছে তুরস্কে। এরা নানা ধরণের স্কুল, কলেজ, এনজিও এবং ব্যবসা পরিচালনা করে। তাদের আছে অনেক মিডিয়া প্রতিষ্ঠান। সে সময় এরদোয়ান সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য ‘গুলেন মুভমেন্ট’কে একটি হুমকি মনে করে। কারণ শিক্ষানীতিসহ বেশ কয়েকটি ইস্যুতে সরকারের সঙ্গে গুলেন অনুসারীদের বিরোধ আছে। আর গণমাধ্যম, ব্যবসায়ী, সামরিক কর্মকর্তা—সব স্তরেই ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে এই আন্দোলনের। গুলেন অনুসারী হিসেবে চিহ্নিত শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিদের শায়েস্তা করতে গত কয়েক বছরে ব্যাপক ধরপাকড় চালায় এরদোয়ান সরকার। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে রাষ্ট্রীয় ব্যাংকের পরিচালক থেকে শুরু করে পুলিশ ও সামরিক বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারাও ছিলেন। এ ছাড়া বহিষ্কারের পাশাপাশি অনেক সামরিক কর্মকর্তাকে বদলি করেন এরদোয়ান। এসব কারণে সেনাবাহিনীর বড় একটা অংশ ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। এ ছাড়া বেশ কয়েকজন বিচারকের সঙ্গেও সরকারের সম্পর্ক ভালো নয়। বলা হচ্ছে, এসবের অসন্তোষের কারণেই হয় অভ্যুত্থান চেষ্টা। শুক্রবারের অভ্যুত্থানের পেছনে ফেতুল্লাহ গুলেনের হাত আছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান এবং তার দলের নেতারা। তবে ফেতুল্লা গুলেন জোর গলায় তা অস্বীকার করেছেন। যাই হোক, পত্রিকা মারফত জানা যায় এই ব্যর্থ অভ্যুত্থানে সামরিক, বেসামরিক নাগরিক সহ ২৬৫ জন নিহত ও ৬০০০ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
তুরস্কে সেনা অভ্যুত্থান নতুন কিছু ছিল না কারণ ১৯৬০, ১৯৭১, ১৯৭৯, ১৯৯৭ সালে সেনা অভ্যুত্থান ঘটে। এছাড়া ২০১০ সালেও একবার সেনা অভ্যুত্থানের সংবাদ পত্রিকায় আসে। যাই হোক অভ্যুত্থানের রাত থেকে বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে পক্ষে-বিপক্ষে এক ধরনের স্পষ্টত অবস্থান লক্ষ্য করা যায়। প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান ইসলামিক ডানপন্থী দলের নেতা। বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধী ইস্যুতে তার অবস্থান যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ইস্যুকে কেন্দ্র করে অনেকবারই এরদোয়ান ও তার সরকার নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। বিশেষ করে যুদ্ধাপরাধী নিজামীর ফাঁসির কারণে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ইস্যুতে তিনি মন্তব্য করলেও সৌদি আরবের শিয়া ধর্মীয় নেতার শিরশ্ছেদ ইস্যুর সময় তিনি বলছেন-সেটি সৌদি আরবের অভ্যন্তরীণ বিষয়। যুদ্ধাপরাধী এর পক্ষে অবস্থানসহ, আইএসআইএস’কে সহায়তা, আইএস-এর তেল বিক্রির সাথে তার পুত্রের সম্পৃক্ততাসহ বিভিন্ন কিছুতে বর্তমান প্রেসিডেন্ট জড়িত এমন অভিযোগ আছে। এতো কিছুর পরও বলতে হবে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতেই এদোয়ানকে সরাতে হবে কোন ক্যুয়ের মাধ্যমে নয়। তবে এই সেনা ক্যু ইস্যুকে পুঁজি করে এরদোয়ান আরো বেশি স্বৈরাচারী ভূমিকায় হাজির হবেন। সেক্যুলার কিংবা উদার ধর্মীয়পন্থীসহ কুর্দিদের উপর আরো বেশি দমন নিপীড়ন চালানো হবে। এছাড়া সেনা বাহিনীতে ডানপন্থীরা আরো বেশি শক্তিশালী ভূমিকায় হাজির হবে।
বর্তমান শাসন ব্যবস্থায় এখন পর্যন্ত গণতন্ত্র সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য ও কল্যাণমূলক শাসন ব্যবস্থা। যেখানে সাধারণ মানুষ তার পছন্দ ও স্বার্থ অনুযায়ী রাজনৈতিক দলগুলোকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় নির্বাচিত করার ক্ষমতা রাখে। তুরস্কের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডানপন্থী হলেও তিনি ক্ষমতায় এসেছেন গণতান্ত্রিক উপায়ে। গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় একজন স্বৈরতান্ত্রিক চেতনা কিংবা ফ্যাসিবাদী চেতনার মানুষও নির্বাচন করার সুযোগ রাখে, ক্ষমতা দখল করে। গণতান্ত্রিক উপায়ে স্বৈরাচার কিংবা ফ্যাসিস্ট নির্বাচনে জিতে যেতে পারে তার জন্যে আপনি গণতন্ত্রকে অস্বীকার করতে পারেন না। গণতন্ত্রের মাধ্যমে যেমন ফ্যাসিস্ট ক্ষমতা আরোহণ করে তেমনি গণতান্ত্রিক উপায়েই তাকে ক্ষমতা থেকে সরাতে হবে। অন্যথ্যা, দেশ ও জনগণের জন্যে ভালো কিছু বয়ে আনবে না।
সেনা ক্যু’র বিরুদ্ধে যে শুধু এরদোয়ান এর সমর্থকরা কিংবা ইসলামিকরা রাস্তায় নেমেছে তা কিন্তু নয়। বরং তুরস্কের জনগণ রাস্তায় নেমেছে। কারণ জনগণ সেনা শাসন চায় না। এরদোয়ান –এর সাথে আমেরিকার ভাল একটি সম্পর্ক আছে। এছাড়া তুরস্ক ন্যাটোর সদস্য। এরদোয়ান তুরস্কের অর্থনীতিকে ঘুরিয়ে দিয়েছে ফলে গণতান্ত্রিক মানুষ কোনভাবেই সেনা শাসনে যেতে চাইবে না এটাই স্বাভাবিক। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে মজার বিষয়টি হল; অধিক সংখ্যক লোক যারা অভ্যুত্থানের পক্ষে তারা বাংলাদেশে অভ্যুত্থান হোক এটা চায় না! আবার যারা তুরুষ্কের অভ্যুত্থানের বিপক্ষে ছিল তারা আবার মনে মনে প্রত্যাশা করে বাংলাদেশে বর্তমান রাজনৈতিক সংকট কাটানোর জন্যে একটি সেনা অভ্যুত্থান ঘটুক। মূলত রাজনৈতিক অবস্থানের ফলেই এমন প্রত্যাশার ভিন্নতা দেখা দেয়।
বাংলাদেশে সেনা অভ্যুত্থানে দুইজন রাষ্ট্রপতি নিহত হোন। বাংলাদেশের প্রথম সফল সেনা অভ্যুত্থান ঘটে ১৫ অগাস্ট, ১৯৭৫ সালে। প্রেসিডেন্ট শেখ মুজিবের এক দলীয় শাসন ব্যবস্থার কায়েমের ৭ মাস পর তিনি তার পরিবারসহ (শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা বাদে) নিহত হোন। শেখ মুজিব যখন বাকশাল কায়েম করলেন তখন তাজউদ্দীন আহমেদ মন্তব্য করেছিলেন-মুজিব ভাই তাঁর স্বাভাবিক মৃত্যুর পথ আর রাখলেন না। শেখ মুজিব এক দলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করলেও তাকে সরানোর জন্যে নৈতিক কোন অধিকার সেনা বাহিনীর ছিল না। কিন্তু ধানমন্ডি ৩২ নাম্বার-এ হত্যালীলার পর সেনা বাহিনী মানুষের ক্ষোভ, সরকারের ব্যর্থতাগুলোকে সামনে এনে সেই হত্যাকাণ্ডের বৈধতা দাবী করছিল। সেই সেনা অভ্যুত্থানে গুটি কয়েক রাজনৈতিক ও সেনা অফিসার ছাড়া সাধারণ মানুষের কোন লাভ হয়নি। ফলে দেশ ডুবে যায় আরো বেশি সংকটে।
কোন শাসক যদি স্বৈরাচারের ভূমিকায় আবির্ভূত হয় সেই স্বৈরাচারকে গদি থেকে নামানোর একমাত্র অধিকার জনগণের। যেমনটি ৯০-এর গণঅভ্যুত্থানে মাধ্যমে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দল ও মানুষ আবারো প্রমাণ করেছে। পাকিস্তান শাসনামলে প্রতিটি স্বৈরাচারী পদক্ষেপের বিরুদ্ধে এই দেশের মানুষ নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন করে পশ্চিম পাকিস্তানীদের প্রতিহত করেছে, নিজেদের দাবী আদায় করতে সক্ষম হয়েছে। গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ২৪ বছরের ফলাফল হচ্ছে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ। বাংলাদেশের মতন গণতন্ত্রের জন্যে সংগ্রাম করা একটি দেশের নাগরিক হয়ে কখনো জলপাই রঙ্গের অভ্যুত্থান সমর্থন করা সম্ভব নয়। সেটি নিজের রাজনৈতিক শক্রর বিরুদ্ধেও নয়। কারণ আজ যদি আমরা সমর্থন করি তাহলে আমাদেরকেও একই ভাবে উচ্ছেদ করার নৈতিক অধিকার আমাদের শক্ররাও লাভ করবে।
আরও সহজ করে বলি; ইরাক, লিবিয়ায় স্বৈরশাসক সাদ্দাম কিংবা গাদ্দাফিকে সরিয়ে সেখানে আমেরিকায় গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা কায়েম করার জন্যে হামলা ও আগ্রাসন চালায়। ইরাকে সাদ্দামের পতনের পর গণতন্ত্র ফিরে আসার কথা। মানুষ আরো বেশি ভালো থাকার কথা। কিন্তু ইরাকে শিয়াদের অত্যাচারের কারণে সুন্নিরা কট্টরপন্থী জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর দিকে ঝুঁকে পড়ছে, ইরাকের জনগণের সার্বিক অবস্থা স্বৈরতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা থেকেও নাজুক হয়েছে। ইরাক হামলার ধারাবাহিকতায় মধ্যপ্রাচ্যে বিভিন্ন উগ্রবাদী ইসলামিক জল্লাদ গোষ্ঠীর সৃষ্টি হয়েছে। সুতরাং যে দেশে গণতন্ত্র নেই সেই গণতন্ত্র উদ্ধারের দায়িত্ব ঐ রাষ্ট্রের পৃথিবীর কোন গণতান্ত্রিক মোড়লের নয়।
এরদোয়ান-এর শাসন আমলে ২ হাজারের বেশি সাংবাদিক জেলে বন্দি হয়। এছাড়া রাষ্ট্রীয়ভাবে মানুষের বাকস্বাধীনতা হরণ, সমকামীদের উপর জুলুম, স্বাধীনতাকামী কুর্দিদের উপর হামলাসহ অসংখ্য ঘটনা ঘটছে। এরদোয়ান অর্থনৈতিকভাবে সফল হলেও মুদ্রার অন্য অংশে আছে নিপীড়ন নির্যাতনের ইতিহাস। তুরস্কে ক্যু’র মাধ্যমে একটি বিষয় স্পষ্ট হয়েছে যে, তুরস্কের সমাজে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে একটি অংশের চাপা ক্ষোভ আছে। যখন সমাজে মানুষের চিন্তা-চেতনা কিংবা বাক-স্বাধীনতার হরণ চলতে থাকে তখন বিভিন্ন অভ্যুত্থানের আলামত লক্ষ্য করা যায়। একটি অংশ সেই চাপা ক্ষোভকে কাজে লাগাতে চায়। তবে মানুষ ও সমাজের মুক্তির জন্যে এটি কোন গ্রহণযোগ্য পথ নয়। কারণ এর মাধ্যমে মানুষ ও রাষ্ট্রের মুক্তি ঘটে না। লাভের অংশে থাকে কিছু রাজনৈতিক, সেনা অফিসার ও ব্যবসায়ীদের এবং দিন শেষে মূল ক্ষতির ভাগটা নিতে হয় জনগণকেই। তাই যে কোন ফ্যাসিস্ট, স্বৈরাচার যে কোন রাজনৈতিক নেতাকে গদিচ্যুত করতে হলে সেটি জনগণকে সাথে নিয়ে গণআন্দোলন ও গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমেই করতে হবে অন্য কোন রাস্তায় নয়।
তবে অনেক আর্ন্তজাতিক গণমাধ্যম এই সেনা অভ্যুত্থানের সঙ্গে ১৯৩৩ সালে হিটলারের একটি কূটকৌশলের মিল খুঁজছেন। অনেকে এটিকে নকল বিদ্রোহ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। ১৯৩৩ সালে হিটলার নিজের ক্ষমতার ভিত্তি মজবুত করতে জার্মানির সংসদভবনে আগুন লাগিয়ে দেন হিটলার। প্রচার চালানো হয় অভ্যুত্থান হয়েছে। ইতিহাসে এই ঘটনাকে বলা হয় ‘রাইখসট্যাগ ফায়ার’। তুরস্কের ব্যর্থ অভ্যুত্থানের ফলে সেনাবাহিনীর ভেতর গুলেন সমর্থকদের নিশ্চিহ্ন করার সুযোগ সৃষ্টি হওয়ায় বেশ খোলামেলাভাবেই সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান এরদোগান। তাই এমন অগোছালো সেনা অভ্যুত্থানের কারণে এরদোয়ানের আরো স্বৈরাচারী পদক্ষেপ সামনে আসবে। ফলে অনেকেই মনে করছেন এরদোয়ান হতে যাচ্ছেন তৃতীয় বিশ্ব যুদ্ধের হিটলার! এছাড়া বিভিন্ন সময় হিটলারের প্রশংসা করে বক্তব্য দিতেও এরদোয়ানকে দেখা গিয়েছে।(www.theguardian.com)
ষড়যন্ত্র, বিদ্রোহ, ডানপন্থীদের উত্থানের মাঝেও সুখের বিষয় হচ্ছে ইসলামিকরাও আজকাল ইহজাগতিকবাদী হচ্ছেন! অবশেষে এরদোয়ানও ইহজাগতিকবাদীদের ভাষায় কথা বলতে বাধ্য হলেন! জনতা সামরিক অভ্যুত্থান ঠেকিয়ে দেয়ার পরে বলেছেন-“জনতার ক্ষমতার চাইতে উচ্চ আর কোন ক্ষমতা নাই” একজন ইসলামিক নেতার মুখে এই উক্তি শোনার অদ্ভুত এক আনন্দ আছে।
তুর্কীদের সাহস আছে!
জনগন পারে!
ইরাকে শিয়ারা সংখ্যালঘু নয়, সংখ্যাগরিষ্ঠ।
এবং ওবামা তড়িঘড়ি করে ইরাক থেকে সৈন্য উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার পর ক্ষমতাসীন শিয়াদের সুন্নীদের প্রতি খারাপ আচরণ, অত্যাচার-নির্যাতন ইত্যাদি সংখ্যালঘু সুন্নীদেরকে চরমপন্থার দিকে (আল-কায়েদা/আইসিসক) ঝুকে পড়ার জন্য বড় অংশে দায়ী।
হা, ইরাকে শিয়ারা সংখ্যাগুরু…। তথ্যটি ভুল লিখেছি। ঠিক করে দিচ্ছি।
প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইয়িপ এরদোয়ান অসাম্প্রদায়িক লোক। তুরুস্ককে অর্থনৈতিক মুক্তি দিয়েছেন। তাঁর কথায় জনগন রাস্তায় নেমে এসেছেন। সেনাবাহিনী ট্যাংক থেকে গুলি করছে আর জনগন সেই ট্যাংকের সামনে দাঁড়িয়ে রুখে দিচ্ছেন। দেশের জন্য,নেতার জন্য এমন আত্ম বলিদান যে দেশের লোক দিতে পারে আমি সেই নেতা ও জনগণের জয়ধ্বনি দিচ্ছি।
সেনাবাহিনীর এই ক্ষমতা দখলের খবর শুনে আনন্দিত হতে পারি নাই। একটু পরে যখন জানতে পারলাম কামালপন্থি, সেক্যুলার গ্রুপ এই অভ্যুত্থানের পেছনে জড়িত তখনও না। জবর দখল করে ধর্মনিরপেক্ষতার সংস্কৃতি আনার চেষ্টা কেবল ধর্মান্ধতাই বাড়াতে পারে। তুরস্কে এখন আমরা তাই দেখবো। একদিন না যেতেই আড়াই হাজারের বেশি বিচারককে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেনাবাহিনীতে চলছে ব্যপক ধরপাকড়, গ্রেফতার এবং হত্যা। এরদোগান গতকাল এসে বলেছে এই ঘটনা আল্লাহর পক্ষ থেকে উপহার স্বরূপ, সে এখন সেনাবাহিনীতে শুদ্ধি অভিযান চালাতে পারবে। ধর্মনিরপেক্ষতা আনতে যেয়ে ধর্মান্ধতার পথ পরিষ্কার করা হলো। সেনাবাহিনীর কামালপন্থীরা তাদের সময়ের সবচেয়ে বড় শত্রুর কাছে পরাজিত হলো। এখন এই উচিলায় তুরস্কের ধর্মনিরপেক্ষ অংশটাকে এরদোগান মাটির সাথে মিশিয়ে দেবার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে।
দিন শেষে লাভ ডানপন্থীদের হল। সেনা বাহিনী থেকে শুরু করে সব জাগয়া থেকে উচ্ছেদ অভিযান চলবে। দিন শেষে তুরস্কের ধর্মনিরপেক্ষ অংশটাকে এরদোগান মাটির সাথে মিশিয়ে দেবার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে।
এটাও বলতে হবে সেনাবাহিনীরা এতটা চড়াও হয়নি ফলে জনগণ সুযোগটি লুপে নিয়েছে।বিদ্রোহী সেনাবাহিনীর শিরচ্ছেদ এর মত খবর আসতেছে তা থেকে বুঝা যায় সফল যজ্ঞে শুধু সাধারণ জনগণ নয় অনেকের হাত ছিল।