১
২০১০। মধ্য-কলকাতার এক প্রখ্যাত মিশনারি স্কুলের এক নিস্তব্ধ আপিসঘরে বসে আমি লিখছি। সামনের দেয়ালে নির্বাক ‘যিশুর মুকুটে কাঁটা’… তাঁর দেহে রক্তের ফোঁটা। জানলার শতাব্দীপ্রাচীন রঙিন কাচ দিয়ে আলোর তীক্ষ্ণ রেখা পড়েছে তাঁর গায়ে। সেই অদ্ভুত রঙিন আলোয় বিদ্ধ হয়ে তিনি ক্রুশ থেকে ঝুলছেন নির্বাক-নিঃশব্দ। আমিও দারুণ দ্বিধার ক্রুশে ঝুলছি।
ক’দিন আগেই এই স্কুল থেকে চাকরির একটি ইন্টারভ্যুর জন্য ডেকেছে। আমি সেসময় একটি পাবলিক স্কুলে চাকরি করি। কিন্তু এই প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী স্কুলের ডাক পেয়ে আহ্লাদে আটখানা হয়ে এসেছি ইন্টারভ্যু দিতে। এখানে আসতে প্রথমেই দিয়েছে একটা বিরাট ফর্ম… তাতে নানা অবান্তর প্রশ্ন ভর্তি। সে ফর্মে জিজ্ঞেস করেছে আমার ধর্ম কী। আর সেখানেই আমি পড়েছি আতান্তরে। ভাবছি সত্যি কথাটা লিখব নাকি হিন্দু লিখব। শেষে লিখলুম হিউম্যানিস্ম।
ইন্টারভ্যু বোর্ডে তিনজন ৪৫ মিনিট ধরে আমাকে একটিই কথা জিজ্ঞেস করে চললেন যে আমি কেন হিউম্যানিস্ট। মানে মানুষকে আমি কোন সাহসে ঈশ্বরের থেকে বড় ভাবি! যতই বলি আজ্ঞে আমি তো ধর্ম পড়াতে যাইনি… কে কার কথা শোনে! শেষে যখন জানলেন আমি নিরীশ্বরবাদী, তাদের তো প্রায় ভূত দেখার মত চমকে ওঠার জোগাড়। সে বিস্তর কথা কাটাকাটি, তর্ক-বিতর্ক ইত্যাদি। বলাই বাহুল্য চাকরিটা আমার হয়নি। কিন্তু যেটা হল সেটা হচ্ছে সেক্যুলার স্কুলের চিন্তাটা চেতনে জাজ্জ্বল্যমান হয়ে উঠল। কেবল অবচেতনের আলস্যে সে চিন্তা আর শুয়ে-বসে আড়ালে থাকল না।
সেক্যুলার স্কুল বলতেই প্রথমেই আমাদের মাথায় আসে যে স্কুল সেক্যুলার নয় সেই স্কুলের কথা। আর সেইসব অ-সেক্যুলার স্কুলের মধ্যে প্রথমে আসে মাদ্রাসা। সেখানে বাংলা, ইংরেজি, বিজ্ঞান ইত্যাদির সাথে ইসলাম ধর্মশিক্ষাও হয়ে থাকে। সে আমাদের কারুর-ই পছন্দ নয়; আমরা তো নিঃসন্দেহ জানি-ই এবং বিজ্ঞাপিত-ও করি যে সেগুলি আসলে তালিবান কি আল-কায়দা কি আইসিস চালায়। সেখানে পড়েও নিশ্চয়ই তাদের-ই ছেলেপুলে! তার পরে আসে মিশনারি স্কুলগুলো। যদিও সে সব স্কুলগুলোকে নেহাত আর এস এস বা বজরং দলের সদস্য না হলে আমাদের অতটা সাম্প্রদায়িক বা অ-সেক্যুলার বলে মনে হয় না। চাই কি খুঁজলে অক্সিলিয়াম কি ডন বস্কো কি সেন্ট পল্সে দু’চারটে বিজেপি নেতার ছেলেমেয়েও বেরিয়ে পড়তে পারে। তা সেখানে অন্যান্য বিষয়ের সাথে বাইবেল পাঠ-ও করতে হয় বৈকি। হয়ত অনেক স্কুলেই তার জন্য আলাদা ক্লাস থাকে না কিন্তু অ্যাসেম্বলি ইত্যাদি সময় ছেলেমেয়েদের বাইবেলের নির্যাস বাধ্যতামূলকভাবে আস্বাদন করতে হয় বৈকি!
যে স্কুলকে সংখ্যাগুরু সম্প্রদায় প্রায় মোটেই সাম্প্রদায়িক মনে করে না সেটি হল রামকৃষ্ণ মিশন। সেখানে ভাল ভাল ছেলেরা পড়ে। সেখানে কী পড়ানো হয় দেখতে গিয়ে দেখতে পাচ্ছি বাংলা ইংরেজি ইতিহাস ভূগোল বিজ্ঞান ইত্যাদি বিষয়ের সাথে রয়েছে ইন্ডিয়ান কালচার নামক একটি বিষয় যা ১০০ নম্বরের একটি পূর্ণ পত্র। রামকৃষ্ণ মিশন বয়েস্ হোম হাইস্কুল রহড়ার পঞ্চম শ্রেণীর সিলেবাসে যা আছে তা এই রকম –
[তথ্যসূত্রঃ http://www.rkmissionrahara.org/syllabusDoc/Bengali%20Medium%20-V.pdf ]
আমাকে বলুন সুধী পাঠক মাদ্রাসা ধর্মশিক্ষা করায় বলে সাম্প্রদায়িক, অ-সেক্যুলার ইত্যাদি হলে কোন যুক্তিতে রামকৃষ্ণ মিশন সেক্যুলার? দুটো আলাদা ধর্মশিক্ষা কিন্তু সমান ক্ষতিকর। কোন যুক্তিতে রামকৃষ্ণ মিশন প্রগতিশীল? প্রগতিশীলতার কথায় মনে পড়ল প্রত্যেক রামকৃষ্ণ মিশন কিন্তু কেবল ছেলেদের জন্য। সঙ্ঘের মেয়েদের স্কুল অনেক কম আর সেগুলি আলাদা। কিন্তু পিছিয়ে পড়া সাম্প্রদায়িক মাদ্রাসার যা হিসেব দেখছি তা এই রকম :
পশ্চিমবঙ্গে মোট অনুমোদিত মাদ্রাসার সংখ্যা ৬১৪। তন্মধ্যে ৫৫৪ টি কো-এডুকেশন, কেবল মেয়েদের ৫৭টি এবং কেবল ছেলেদের ৩ টি।
[তথ্যসূত্রঃ http://www.wbbme.org/recognisedMadrasahs.aspx ]
এইবেলা আর একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দিকে সুধী পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে রাখি। দেখা যাচ্ছে রহড়া রামকৃষ্ণ মিশন স্কুলে এই হিন্দু ধর্মশিক্ষাটি কিন্তু চলছে ভারতীয় সংষ্কৃতির নামে। সুতরাং বাচ্চারা জানছে ভারতীয় সংস্কৃতি মানেই কেবল হিন্দু ধর্ম। কেবল রামকৃষ্ণ-সারদা-বিবেকানন্দ-চৈতন্য ইত্যাদি! মুসলিম-খ্রিস্টান পার্শিদের কথা তো ছেড়েই দিলাম। এমনকি আদিবাসী ধর্মগুলিও, যেমন ধরা যাক সাঁওতাল ধর্মও কিন্তু ভারতীয় নয়। যদিও নৃতাত্ত্বিক দিক থেকে সাঁওতাল ধর্ম (যা ভারতীয় সংবিধান অনুযায়ীও আলাদা একটি ধর্ম এবং মোটেও হিন্দু ধর্মের অন্তর্গত নয়) যতটা ভারতীয়, সনাতন হিন্দু ধর্ম ততটা ভারতীয় মোটেই নয়। এক দিকে ‘বিবিধের মাঝে দেখো মিলন মহান’ আর অন্যদিকে ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্র হিসাবে দেখানোর এই অসাংবিধানিক চেষ্টা! চমৎকার শিক্ষাব্যবস্থা!
যে স্কুলগুলো সততই সেক্যুলার বলে দাবি করে সেই ইংরেজি মাধ্যম বাণিজ্যিক স্কুলগুলির দিকে তাকানো যাক। না, কেন্দ্রীয় শিক্ষাপর্ষদ CBSE তে ধর্মশিক্ষা সিলেবাসে নেই। আর এই পাবলিক স্কুলগুলি ধর্মশিক্ষার আলাদা ক্লাসও নেয় না। (এখানে বলে রাখা ভাল, আমরা কিন্তু ইংরেজি মাধ্যম কর্পোরেট স্কুলগুলির এক সামগ্রিক চিত্র সামনে রেখে আলোচনা করছি। ভারতবর্ষে অগনিত এমন স্কুলের অগনিত ট্রাস্টির মধ্যে কোনও স্কুলে যদি ধর্মশিক্ষার আলাদা ক্লাস নেওয়া হয় তবে তা সত্যিই ব্যাতিক্রম।) ব্যবসায়িক কারণেই কর্পোরেট স্কুলগুলিতে সরাসরি কোনও ধর্মশিক্ষার ক্লাস রাখা হয় না কারণ কোনওভাবেই তারা কোনও ধর্মেরই ছাত্রকে বিমুখ করতে চান না। ছাত্র বা তার অভিভাবক সেখানে ক্লায়েন্ট। সুতরাং ধর্মনিরপেক্ষতার একটা বাতাবরণ না রাখলে ক্লায়েন্ট হারাতে হতে পারে যা ব্যবসায়িক দিক থেকে মোটেই কাম্য নয়।
কিন্তু ধর্ম অতি সাঙ্ঘাতিক কাঁঠালের আঠা। ব্যবসায়িক কারণে সেকুলার জামা পড়লেও সে জামার হাতার নিচে ধর্মের আঠা চিটচিট করে। জানান দেয় তার অস্তিত্ব প্রতি মুহূর্তে। ফলে আলাদা ক্লাস না থাকলেও বিভিন্ন অছিলায় ধর্মের বীজ কচি মাথায় ঢুকিয়ে দিতে সেই আপাত সেক্যুলার স্কুল ছাড়ে না।
মর্নিং অ্যাসেম্বলি যেমন। সকাল-সকাল সব ছাত্রছাত্রী এক যায়গায় জড়ো হ’য়ে প্রার্থনাসঙ্গীত গায় ও অতঃপর নানা কার্যক্রম ও প্রয়োজনীয় ঘোষণা চলে ১০-১৫ মিনিট ধরে এবং এ সব শেষে ছাত্ররা পুনরায় নিজ নিজ ক্লাসঘরে ফিরে যায় ও তাদের দৈনিক পঠন-পাঠন শুরু হয়। এখন এই প্রার্থনাসঙ্গীতটির যে শিক্ষায় কী প্রয়োজন, তা পরিষ্কার নয়। এই গানগুলো ধর্মসঙ্গীত এবং মূলত হিন্দু ধর্মসঙ্গীত। কিছু খ্রিস্টান হিম(Hymn)-ও গাওয়া হয় কিন্তু সেগুলোও খুবই সাবধানে চয়ন করা হয়ে থাকে। সেই হিম-গুলোই কেবল বেছে নেওয়া হয় যেগুলো আলাদা করে খ্রিস্টধর্মের কোনও কথা বলে না, কেবল সাধারণ ভাবে কোনও এক ঈশ্বরের কথা বলে। সুফি অঙ্গের গান যদি নেওয়া হয় সেখানেও একই নিয়ম মানা হয়… যে সব গানে মালিক, উপরওয়ালা ইত্যাদি বলে ঈশ্বরকে সম্বধন করা আছে কেবল সেই সব গানগুলি-ই অনুমতি পায়। মানে মোদ্দা কথা হল, যেগুলোকে হিন্দু বলে চালাতে তেমন অসুবিধে হয় না।
ফলে বোঝা যায় এই গানগুলির প্রয়োজন শিক্ষার্থীর নয়, শিক্ষাব্যবস্থার। এই গান গুলির উদ্দেশ্য শিক্ষা নয়, বরং গোপন রাজনৈতিক অভিসন্ধি।
দ্বিতীয়ত, স্কুলগুলির বিভিন্ন অনুষ্ঠানের প্রারম্ভে নানা ধর্মীয় শ্লোক ব্যবহার করা হয়। যেমন উদ্বোধনী গান : গনেশ বন্দনা—“বক্রতুন্ডায় একদন্তায়ঃ গৌরীতনয়ঃ” ইত্যাদি। এই হল সেক্যুলার স্কুলের সেক্যুলার অনুষ্ঠান।
তৃতীয়ত, স্কুলে বিভিন্ন অনুষ্ঠান উদযাপন। যেমন দিওয়ালি। বা গণেশ চতুর্থী। পশ্চিম বাংলায় সরস্বতীপুজো ইত্যাদি। কোনও কোনও স্কুলে সেক্যুলার নামক ধোঁকার টাঁটি বজায় রাখতে ক্রিস্টমাস-ও উদযাপন করা হয়। বলাই বাহুল্য এক দশকের ওপর বিভিন্ন স্কুলে কাজ করে কোথাও দেখলাম না একই রকম সমারোহে ঈদ পালিত হচ্ছে! এছাড়াও নানা ছোট ছোট অ্যাক্টিভিটি, যেমন বাচ্চাদের সুতো গিয়ে গণেশ মূর্তি বানানো। সুতো দিয়ে জিরাফও বানানো যেত। বোঝাই যাচ্ছে স্কুলগুলি ধর্মেই আছে নিঃসন্দেহে, জিরাফে নেই।
২
এখন একবার সেক্যুলার শব্দটির আভিধানিক অর্থটা ঝালিয়ে নেই।
Chamber’s Dictionary-তে আছে :
“The belief that the state moral education etc. should be independent of religion.”
Oxford Dictionary-তে আছে :
“The doctrine that morality should be based solely in regard to well-being of mankind in the present life to the exclusion of all consideration drawn from belief in God.”
Webster’s Dictionary বলছে :
“The belief that religion and ecclesiastical affairs should not enter into the functions of the state.”
আর একটি বিকল্প সংজ্ঞাও এখানে পাওয়া যায়—
“A system of doctrine and practices that rejects any form of religious faith and worship.”
স্পষ্টতই দেখা যাচ্ছে যে সেক্যুলার শব্দের অর্থ কোনওরকম ধর্মীয় সংস্পর্শ না-রাখা। যাকে চলতি কথায় বলা হয়, ‘separation of church and state.’ সুতরাং সেক্যুলার শিক্ষায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ ধর্মীয় প্রভাবমুক্ত থাকবে এটাই দস্তুর হওয়া উচিৎ। কিন্তু তেমন আর হল কই!
আমরা ভারতীয়রা যেটা করলাম সেটা ভারি মজার। আমরা সেক্যুলার শব্দের ওই ধর্ম-মুক্ত সংজ্ঞাটাকে অস্বীকার করে বললাম যে ওই সব সংজ্ঞা হল সেক্যুলার শব্দের পাশ্চাত্য ধারণা — ‘Western Secularism’!১ এবং একই সাথে আমরা আমাদের মতো একটা সংজ্ঞা বানিয়ে নিলাম যাতে সেক্যুলার বলতে বোঝালাম সব ধর্মের সমাহার — ‘সর্বধর্ম সমাভব’। কী কাণ্ড! যে শব্দের মানে ছিল কোনও ধর্ম না থাকা, তার মানে হয়ে দাঁড়াল সব ধর্ম থাকা। এই অদ্ভুত অর্থভেদের কারণ বিশ্লেষণ করতে গিয়ে সমাজ গবেষক ডঃ স্বর্ণ রাজগোপালান বলেছেন, যেভাবে ইয়োরোপে রাজনৈতিক পথে রাষ্ট্র ও ধর্ম আলাদা হয়ে গিয়েছিল তেমনটি ভারতবর্ষে সম্ভব হয়নি। তার প্রধান কারণ প্রথমত ভারতের বিভিন্নতা আর দ্বিতীয়ত ভারতে এমন কোনও সর্বোচ্চ ও একমাত্র ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান কোনওদিন ছিল না যার কাছ থেকে সেক্যুলার ক্ষমতা নিয়ে নেওয়া যেত তথা ‘separation of Church and State’ সম্ভব ছিল না, যেহেতু তেমন কোনও স্পষ্ট চার্চ-ই ছিল না বা এখনও নেই। ফলত সেক্যুলারের সংজ্ঞা এক অদ্ভুত অস্পষ্ট ও অনির্দিষ্ট ধোঁয়াশায় রয়ে গেছে।২
এই দ্বন্দ্ব স্বভাবতই শিক্ষাক্ষেত্রেও অবশ্যম্ভাবীভাবে রয়েছে। ধরা যাক, ভারতীয় সংবিধানে বলা আছে সম্পূর্ণ সরকারি অর্থে পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোনও রকম ধর্মশিক্ষা নিষিদ্ধ।৩ আবার ১৯৫৯ সালে সেন্ট্রাল অ্যাডভাইসারি বোর্ড অফ এডুকেশান এক বিশেষ কমিটি নিয়োগ করে, তারা স্কুলে সুপারিশ করে যে ধর্মীয় ও নৈতিক ক্লাস থাকা বাঞ্ছনীয়।৪ ১৯৬৬ সালে কোঠারি কমিশন-ও বলে যে রুটিন করে কিছু সময় ধর্মশিক্ষার জন্য সংরক্ষিত করা বাঞ্ছনীয়। কমিশন এও বলে, ‘…as all religions stress certain fundamentals of character.’৫
যেটা স্পষ্ট বোঝা যায় না তা হল, যে সব ‘ফান্ডামেন্টালস অফ ক্যারেক্টার’ বাচ্চাদের শেখানো প্রয়োজন বলে কোঠারি কমিশন মনে করেন সেগুলি এমনিই শেখালেই হয়; তার জন্য ধর্ম পড়াতে হবে কেন? আর এইসব সুপারিশগুলি সংবিধানের উক্ত ধারার সাথে কি আদৌ সংগতিপূর্ণ?
স্ববিরোধ এখানেই শেষ নয়। সম্পূর্ণ রাষ্ট্র পরিচালিত স্কুল গুলিতে যদি ধর্মশিক্ষা নিষিদ্ধ হয় তবে সরকারী সাহায্যপ্রাপ্ত ও বেসরকারী স্কুলগুলোতে তা নয় কেন? শিক্ষা ব্যবস্থায় ধর্মের অনুপ্রবেশ যদি ভারতীয় সেক্যুলার প্রকৃতির পরিপন্থী হয় তবে তা সব স্কুলেই পরিপন্থী। এবং সব স্কুলেই তা বন্ধ করা প্রয়োজন। তাহলে মাদ্রাসা, বা মিশনারি স্কুল বা রামকৃষ্ণ মিশন বা আর এস এস পরিচালিত স্কুলগুলি ধর্মশিক্ষা চালিয়ে যেতে পারে কোন যুক্তিতে? এ তো হতে পারে না যে, কেবল সরকারি হাসপাতালে ভুল চিকিৎসা করা নিষিদ্ধ। কিন্তু বেসরকারি নার্সিংহোমে ভুল চিকিৎসা চলতেই পারে সে ক্ষেত্রে সরকারের কোন মাথাব্যথা নেই!
এখন সেক্যুলার বলতে যদি সর্ব ধর্ম সমাভব ধরি তাহলে স্কুলে ধর্মের অনুপ্রবেশ ঢুকলেও তাকে সেক্যুলার বলতে হয়। কারন স্কুল যদি সব ধর্মকে সমান ভাবে দেখে এবং গুরুত্ব দেয় তাহলে সে ভারতীয় মতে সেক্যুলার।
এখন এটা একটা নিখাদ আকাশকুসুম। সব ধর্ম বলতে কী বোঝায়? কতগুলো ধর্মকে গুরুত্ব দেওয়া হবে। মানে হিন্দু, ইসলাম, খৃষ্ট, বৌদ্ধ জৈন, শিখ, পার্শি, কনফুসিয়ান… সব বলতে আর কত? এই সব ধর্মের উৎসব পালিত হবে তো স্কুলে? সব ধর্মের শিক্ষা হবে তো ক্লাসে? এটা কি আদৌ সম্ভব? কোন বুদ্ধিমান মানুষ তা মনে করেন না। এবং স্বাভাবিক ভাবেই সেটা হয়ও না। যেটা চলে সেটা ওই সর্ব ধর্ম সমাভব-কে সামনে রেখে একটা সেক্যুলার ঢাল বানানো আর তার পেছনে যে কোনও একটি বিশেষ ধর্মের প্রচার। শিশুদের ছেলেবেলা থেকে একটি বিশেষ ধর্মের প্রতি বাধ্য করে তোলা।
মোহনদাস গান্ধী বলেছিলেন, ‘The State would look after secular welfare, health, communications, foreign relations, currency, and so on, but not your or my religion. That is everybody’s personal concern.’ এ কথা শোনাও যায় ইতিউতি যে ধর্ম যার যার ব্যক্তিগত। সেটাই হওয়া উচিত। কিন্তু স্কুলে তাকে টেনে আনলে কীভাবে আর ধর্ম ব্যাক্তিগত থাকে! স্কুল তো আর শৌচাগারের মত ব্যক্তিগত জায়গা নয়। এখানে বলে রাখা ভাল, ১৯৭২ সালে UNESCO কর্তৃক গঠিত ‘ইন্টারন্যাশনাল কমিশন অন দ্য ডেভেলপমেন্ট অফ এডুকেশন’ কিন্তু পরিষ্কার করে বলে যে সম্পূর্ণ মানুষ তৈরি করতে স্কুলে ধর্ম শিক্ষার মোটেই কোনও প্রয়োজন নেই।
বিবর্তনবাদী জীববিজ্ঞানী রিচার্ড ডকিন্স বলেছিলেন, ‘…but if you hear anybody speak of a ‘Catholic child’, stop them and politely point out that children are too young to know where they stand on such issues, just as they are too young to know where they stand on economics or politics.’৬ এই সহজ সত্যিটা না বুঝলে এইরকম একের পর এক পঙ্গু প্রজন্ম তৈরি হতে থাকবে। ফলে এ কথা সহজেই বোধগম্য যে, শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে সচেতনভাবে সব রকম ধর্মীয় অনুষঙ্গ বাদ দিতে হবে। ওই সর্ব ধর্ম সমাভব নয়, বরং সম্পূর্ণ ধর্মমুক্ত স্কুলই প্রকৃত বাস্তবোচিত সেক্যুলার স্কুল।
১ Problems of Education in India, Ramnath Sharma and Rajendra Kumar Sharma, Atlantic Publisher; p: 227-228।
২ Secularism in India, Swarna Rajgopalan; published in William Safran, ed. Democratic Republic and the Problems of Religion; Frank Cass London 2001।
৩ “no religious instruction shall be provided in any educational institution wholly maintained out of State funds.” Article 28(i), Indian Constitution.
৪ Secular Education, A.K. Ghosh, The Statesman, April 18, 2015.
৫ ibid.
৬ The God Delusion, Richard Dawkins, Bantam Press. p: 3।
এই লেখাটি প্রসঙ্গে আমি একটি মন্তব্য লিখেছিলাম…সেটি প্রকাশিত হয়নি। কোনো সমস্যা?
জীবন দর্শন থেকে ধর্মের উৎপত্তি , ধর্ম থেকে জ্ঞানের উৎপত্তি , জ্ঞানের থেকে বিজ্ঞানের উৎপত্তি । ধর্মনিরপেক্ষতা আর ধর্মনিরপেক্ষীয় মৌলবাদ এক জিনিস নয় । নিজের পরিচয়কে অস্বীকার করা প্রবঞ্চনা মাত্র । ধর্ম মানুষকে মূল্যবোধের শিক্ষা দেয় । গভীর অরণ্যে তপোবনের ঋষিরা তাপস তাপসীদের লিঙ্গ ও সামাজিক কৌলীন্য নির্বিশেষে শিক্ষাদান করতেন । সেখানে মানুষের সঙ্গে পশুদেরও মর্যাদা দেওয়া হত । ঋষিরা হবিষ্যি খেয়ে কুশাসনে ঘুমাতেন । তাঁদের মুক্তচিন্তা আপনাদের মুক্ত চিন্তা থেকে অনেক উপরে । চার্বাক ঋষিরা নাস্তিক ছিলেন , কিন্তু মৌলবাদী ছিলেন না । বুদ্ধদেব নাস্তিক ছিলেন অধার্মিক ছিলেন না । শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সাম্প্রদায়িকতা প্রচার করছে কি না সেটা দেখার , ধর্মীয় শিক্ষা দেওয়াটা অন্যায় না । তবে আপনার লেখা ভালো লেগেছে , মত সকলেই প্রকাশ করতে পারে , তা যাই হোক । হিন্দু একটা বিশেষ কোন ধর্মের নাম নয় , বৃহত্তর ভারতের যাবতীয় জীবন দর্শন এর সমষ্টি ।
লেখাটি অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক এবং চমৎকার। ধন্যবাদ অনিন্দ্যকে…
এখানে একটি মন্তব্য করলে অপ্রাসঙ্গিক হবে না মনে হয়, সেটি হল—‘সেক্যুলার’ শব্দটি যতক্ষণ ইংরেজিতে ব্যবহার করা হচ্ছে ততক্ষণ কোনো গন্ডগোল নেই। চার্চ আর রাষ্ট্রের দীর্ঘ সংগ্রামের ফলশ্রুতি হিসাবে ‘সেক্যুলার’ ধারনাটির উৎপত্তি হয়েছিল। পরবর্তী কয়েক শতাব্দীতে ‘সেক্যুলারিজম’ একটি শক্তিশালি মতবাদ হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে। এই মতবাদ অনুযায়ী ধর্মভিত্তিক আইন ও সমাজের পরিবর্তে সকল প্রকার ধর্মীয় ভেদাভেদমুক্ত সমাজ গঠনের আহবান জানানো হয়। এবং বলা হয়- নাগরিকদের কর্মকাণ্ড ও যে-কোনো ধরনের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত কোনো ধর্মবিশ্বাসের ওপর নির্ভর করবে না। চার্চ শুধুমাত্র ধর্মীয় আচার-আচরণের ব্যপারে সিদ্ধান্ত নেবে, আর ধর্ম ছাড়া অন্যান্য বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবার অধিকারী হল রাষ্ট্র। রাষ্ট্র কোনো প্রকার ধর্মীয় ব্যপারে হস্তক্ষেপ করবে না, কোনো ধর্মীয় বিশ্বাসে বিশ্বাসী হবে না এবং কোনো ধর্মকে কোনো প্রকার সুবিধা প্রদান করবে না, বা কোনো ধর্মকে হেয় প্রতিপন্নও করবে না। ধর্ম হবে নাগরিকদের সম্পূর্ণ ‘প্রাইভেট’ ব্যপার। অর্থাৎ রাষ্ট্র হবে ধর্মের সঙ্গে সম্পূর্ণ সম্পর্ক বর্জিত, রাষ্ট্র হবে ধর্মহীন।
কিন্তু গন্ডগোলটা বাধল যখন সেক্যুলারিজমের অর্থ হিসাবে ধর্মনিরপেক্ষতাকে গ্রহণ করা হল। ধর্ম ও রাজনীতির কারবারিরা তখন তাকে নিজের নিজের মতো করে ব্যাখ্যা দিলেন এবং সেটাই ব্যপকভাবে প্রচারের আলোয় নিয়ে এলেন। শুধু তাই নয়, এটাকেই ব্যপকভাবে বানিজ্যিকিকরণ করা হল। সেই ধরা আজও চলছে।
আর একটি কথা, সম্প্রতি কলকাতা থেকে প্রকাশিত আরেক রকম পত্রিকায় ‘ধর্মশিক্ষা শিশুমনের প্রতিবন্ধক’ নামে আমার একটি লেখা প্রকাশিত হয়েছে, আমি জানি না কোনো পত্রিকায় প্রকাশিত লেখা মুক্তমনায় দেওয়া যুক্তিযুক্ত হবে কীনা। যদি কারো আপত্তি না থাকে, তবে লেখাটি আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করতে চাই।
আমেরিকান হেরিটেজ ডিকশনারিতে বলা আছে, The view that religions considerations should be excluted from civil affairs or public education. শিক্ষালয়ে ধর্মশিক্ষা দেয়ার চেয়েও জরুরী বিজ্ঞান ও দর্শন শিক্ষা দেয়া।ধর্মের ইতিহাস, উৎপত্তি ও বিকাশ একটা বিষয় হতে পারে।ধর্মপালন এবং ধর্মশিক্ষা চলতে পারে একদম ব্যক্তিগত পর্যায়ে,নিজ বাড়িতে অথবা নিজ ধর্মের উপাসনালয়ে।আজকাল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলোতে ধর্মীয় প্রার্থনাকক্ষ থাকতে দেখা যায়,আমি এটার বিরুদ্ধে।
We all are against it.
But, what can we do? What should we do?
…
We can’t take an AK47 like a religious fundamentalist.
…
We can raise our voices on facebook twitter etc.
We can raise our voices to our social friends and relatives.
We can raise our voices to the Board(s) that control our education system.
…
ভারতের শিক্ষাব্যবস্থা এমন সেক্যুলার হলে বাংলাদেশের কথা আর কী বলবো।
আমি এই সিস্টেমের মধ্যে দিয়ে গেছি বলেই লিখছি-এতে খারাপ কিছু নেই । কারন মিশনে বিজ্ঞান শিক্ষার ওপরেও জোর দেওয়া হয়-কারন এগুলোতে লোকে ছেলেদের পাঠায় ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার বানাতে-ফলে জয়েন্টের ফল ভাল করানোর জন্য চাপ থাকেই। সেই থেকেই বিজ্ঞান শিক্ষার জন্যে এরা মোটেও কম কসুর করে না। নরেন্দ্রপুরের লাইব্রেরীতে বিজ্ঞানের বই এর বিশাল কালেকশন। সুতরাং এইদিক দিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আর আমাদের ব্যাচের ১৪০ জনের মধ্যে প্রায় সবাই পেশাদার লোক-কেউ ধার্মিক নয়। একজন শুধু সন্নাসী হওয়ার জন্য ৭ বছর চেষ্টা করে-শেষ মেস এক মহিলার সাথে বিয়ে করতে পালিয়ে যায়। সুতরাং ধর্ম শিক্ষা দিলেই মহাভারত কিছুই অশুদ্ধ হয় না-যদি পাশাপাশি বিজ্ঞান শিক্ষায় জোর থাকে।
এটা ভুললে চলবে না নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনে পশ্চিম বঙ্গের +১০ এর পাশ করা সেরা ২০ জন ছাত্রের প্রায় ৯৫% ওখানেই পড়ে। কুড়ি-ত্রিশ বছর আগে আমাদের সময়ও ব্যাপারটা একই ছিল-রাজ্যের সেরা ছেলেদেরই সেখানে চান্স দেওয়া হত। তারা কি ধর্ম শিক্ষার জন্য ওখানে যায় ? সবাই কেরিয়ারের জন্যই যায়। এবং সেখানে গিয়ে বিজ্ঞান এবং অঙ্কই করে-এবং সেরা ছেলেরা এই স্কুলে পড়তে আসে-কারন এখানে বিজ্ঞান অঙ্কের মাস্টার মশাই, লাইব্রেরী-সব কিছুই ভারতের অন্যতম সেরা।
আই সি বা এই ভারতীয় সংস্কৃতির ক্লাস হত সপ্তাহে মোটে একদিন-একঘন্টা। সিলেবাসে থাকত বিবেকানন্দ, অরবিন্দ রচনাবলী। আমি এতে খারাপ কিছু দেখি নি। এর বাইরেও মহারাজরা ঐচ্ছিক আড্ডা দিতেন ধর্ম এবং দর্শন নিয়ে। সেগুলোতেও গেছি। খারাপ কিছু চোখে পড়ে নি। হ্যা, তারাও ধর্মে বিজ্ঞান এবং জিরাফ দুই পেতেন। কিন্ত ওই লেভেল বুঝতে যে দর্শন বুঝতে হয় সেই দর্শন জ্ঞান কজনেরই বা আছে? মিশনের সন্ন্যাসীদের ও নেই-কারন তারাও পাশ্চাত্য দর্শন অনেকেই ভাল করে পড়েন নি।
ফলে কেউই ওসব সিরিয়াসলি নিত না- আমিই বোধ হয় নিয়েছিলাম-তাই ধর্মজ্ঞানের সার অসার নিয়ে বোঝার ক্ষমতা কিছু এসেছিল।
কিন্ত পাশাপাশি এই ধর্মজ্ঞানের বাইরে সন্ন্যাসীরা নিজেদের থেকে যা কিছু শিখিয়েছেন তার অনেক কিছুই মুল্যবান। যেমন স্বামী সূপর্নানন্দ মহারাজ ( যিনি এখন গোলপার্কের অধিকর্তা এবং সম্ভবত নেক্সট মিশন প্রেসিডেন্ট) বেশ বাস্তববাদি ছিলেন এবং তার কিছু মুল্যবান শিক্ষা যা কাজে এসেছে -লিখে গেলাম। এগুলো কোন ধর্মগ্রন্থ থেকে দিয়েছেন কি না জানা নেই-উনার মুখ থেকে শোনা
(১) এই জীবনটা হচ্ছে জিরো সাম গেম। কিছু পেতে গেলে কিছু হারাবে-কিছু হারালে কিছু পাবে। সুধু এটা বোঝার মতন রিয়ালাইজেশনটা জীবনে আনতে হয়
(২) জীবন হচ্ছে বহতা নদীর মতন, বাঁক নেবেই। বন্যাখরা সবই আসবে। কিন্ত একটা নদী যেমন সমুদ্রের সাথে মিশবে বলে যাত্রা শুরু করে, তেমন আমরাও জীবনে একটা “পরম উপলদ্ধির” বা কনক্লুশনের দিকে যাব বলেই এগোতে থাকি।
অবশ্য (২) এর সাথে অনেকেই একমত হবেন না। কারন খুব কঠিন লজিকে জীবনটাই এক্সিডেন্ট, মৃত্যু এবং জীবন ও তাই।
কিন্ত বাস্তব হচ্ছে জীবনের একটা আপাত উদ্দেশ্য না থাকলে জীবন টানাও কঠিন।
সব থেকে বড় কথা-এটাই উনারাই শিখিয়েছিলেন-এসব জ্ঞান, পরম জ্ঞানের থেকেও বড় অন্যদের সেবা করা। আমাদের শেষ দিনে এটাই উনি বলেছিলেন-উনার প্রত্যাশা একটাই আমরা যেন স্বার্থপরের মতন শুধু নিজেদের কথা না ভেবে, বৃহত্তর স্বার্থের কথা ভেবেই কাজ করি। সার্ভিস ট্যু হিউম্যানিটিকে উনারাই সেরা ধর্ম বলেছেন-বিবেকানন্দও বলেছেন। আবার নিজে প্রথাগত ধর্মকে উস্কেছেন ও।
সুতরাং রামকৃষ্ণ মিশনের সাথে মাদ্রাসার তুলনা টানলে যে কেউ হাস্যকর হিসাবেই নেবে। ধর্মকে বাচ্চার ওপরে চাপিয়ে দিলে হিন্দু বা ইসলাম সব ধর্মই বাজে। কিন্তু যখন ধর্ম শিক্ষক ধর্মের ওপরে ওঠে মানুষকে সিংহাসনে বসাতে সমর্থ হোন-তখন আমি ভুল কিছু দেখি নি।
হ্যা । সাথে হাজিবাজি অনেক ধর্ম শিক্ষাও ছিল। কিন্ত এই রামকৃষ্ণেরই উপদেশ -জ্ঞান এবং বানী দুধেজলে মিশে থাকে। ভেজাল থেকে দুধ আলাদা করাটাই প্রজ্ঞা।
পশ্চিমবংগে আলামিন মিশনের মতো মুসলিম
মিশনগুলো ছাড়া আর কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে কি যেখানে কেবল একটা ধর্মেরই ছাত্রছাত্রী ভর্ত্তি হয়।
আপনি কিন্তু পশ্চিমবংগে অননুমোদিত মাদ্রাসার সংখ্যা ব লেন নি।
Madrasa is a bad decision, or I better say is a wrong decision.
I think all the Government aided schools need to be under a single Board.
I’ve no problem if all the schools will be under Madrasa Board.
All that need to follow is ”follow the Indian Constitution”.
.
.
But, Alas!
Our rulers aren’t secular.
And they never think that ”the Constitution is to follow.”
…
গোটা লেখাটা এমন ভাবে তৈরী করা হয়েছে যেন হিন্দু ধর্ম ও খ্রিষ্ট ধর্ম শিক্ষা দেয়া মানে সেকুলার নয় | ধর্ম শব্দটা উচ্চারণ করা হয়েছে বটে কিন্তু প্রজেক্ট করা হয়েছে হিন্দু ধর্মকে, মাঝে মাঝে অবশ্য খ্রিষ্ট ধর্মের একটু উল্লেখ আছে | তাই আমি ধর্ম = হিন্দু ধর্ম + খ্রিষ্ট ধর্ম করলে মনে হয়না ভুল বুঝব |
লেখক বোধহয় জানেন না যে ভারতের ম্যাক্সিমাম লোক প্রচন্ড বোকা তথা গন্ডমুর্খ আর হস্তিমুর্খের কম্বিনেশন | এরা কখনো আসল ধর্ম করে না , কিন্তু ধর্মের নামাবলিটুকু গায়ে চড়াতে খুব ভালবাসে | যাতে করে স্কুলে ছাত্র আসে , তাই সেকুলার স্কুলগুলো বাধ্য হয়ে হিন্দু ধর্মের নামাবলিটুকু গায়ে চড়ায় |
আর খ্রিস্টান স্কুলগুলো সবই ভাটিকানের টাকায় চলে , তাই তারাও খ্রিষ্ট ধর্ম প্রচার করতে বাধ্য হয় |
তাহলে দেখাই গেল যে ধর্মের নামাবলী গায়ে চড়ালেই কোনো স্কুল অসেকুলার হয়ে যায় না | সেটা হয়ে যায় যখন তারা ধার্মিক কাজে কর্মে (গুন্ডামি ও পূজাপাঠ) অংশ গ্রহণ করে যেমন আর এস এস ও বজরং দলের স্কুলগুলো করে থাকে |
রামকৃষ্ণ মিশনে এটাকে আই সি বলে। এখানে ৭০% মার্কস না পেলে ফেইল করিয়ে দেওয়া হত। যাইহোক ধর্মকর্মে বিপুল উৎসাহ থাকাতে আমি ৯০% মার্কস পেতাম ওই ধর্মের পেপারে এবং মহারাজদের বেশ প্রিয়পাত্র হয়ে উঠেছিলাম!!
আমি কিন্ত স্কুলে ধর্ম গ্রন্থ পড়ানোর ১০০% পক্ষে। যদি বিজ্ঞান শিক্ষাটা ঠিক ঠাক দেয় । পাশাপাশি দর্শনের শিক্ষাও ঠিক ঠাক দেওয়া হয়।
ধর্মের মোহ কাটাতে ধর্মশিক্ষা জরুরী। এবং পাশাপাশি বিজ্ঞান শিক্ষাতে জোর থাকলে-এটা ভাল দিকেই যাবে।
ধর্ম শিক্ষাটা বাড়িতেই হোক আর বিজ্ঞান ও দর্শনের শিক্ষা স্কুলে । ছাত্রছাত্রীরা পরিনত হলে তারাই ঠিক করবে কোনটা তারা নেবে ।
Yes,
Everybody should have the right to have it’s religion by choice, not by birth.
এক কথায় অসাধারণ। একদম Root Level থেকেই কথাটা চিন্তা করার মত। আমি অস্ট্রেলিয়া থাকি, দেখলাম যে অস্ট্রেলিয়া থেকে যে কয়েকটা নমুনা সাম্প্রতিক সময়ে ইসলাম গ্রহন করে আইসিস এ যোগ দিল গত বছর, এই sample গুলি প্রত্যেকেই ছিল আধুনিক ছেলেপেলে। ১৮ – ৩০ বছর বয়স। তরুন বয়েসে হই-হুল্লোড়, wine/weed, দামি গাড়ী, গার্ল ফ্রেন্ড সব ছেড়ে হঠাৎ ইসলাম গ্রহন, নামাজ পড়া, জনগনকে হেদায়েত দেওয়া, অতঃপর সিরিয়া গমন, আইসিস-এ যোগদান এবং তার কয়েকদিনের মধ্যেই ইসলামের পথে শহীদ। টোটাল ব্যাপারটাই আসছে Fantasy থেকে। প্রথম অস্ত্রের স্বাদ নেয়া, নিজে একটা আস্ত AK47 এর মালিক হওয়া, আসরের মধ্যমনি হওয়া, সমগ্র ব্যাপারটাই যেন Adventurous । ধর্ম সম্পর্কে পড়াশুনা না থাকার ফলেই এটা হয়েছে। আমরা যারা ধর্মের অসারতা বুঝতে পেরেছি, তারা কিন্তু ধর্মের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়েই যুক্তির পথে এসেছি। হঠাত করে নয়। বিপ্লব ভাইয়ের কথা প্রথমে বুঝা যায়না, কিন্তু একটু সময় নিয়ে চিন্তা করলে বোধগম্য যায়।
:good:
Mr Ganguly,
Our constitution provides the right to set up a religious foundation, and anybody can teach their religious faith by the right.
And,
Our constituion provides the right to keep educational institutes secular.
and the fundamentalists, ofcourse religious fundamentalists are abusing the public institutes by making them religious foundations.
When an Islamic group of fundamentalists wants to make a institute islamic, if we call it a terrorist group.
The groups of hindu fandamentalists who are trying to make an educational institute into a hindu religious foundation,
we must call them terrorists.
মহাশয়
লেখাটি ভাল লাগল। তবে একটা কথা না বলে পারছি না। নিজের পরম্পরা শেখানো এর সঙ্গে সাম্প্রদায়িকতা কে গুলিয়ে ফেলা উচিত নয়। রাম কৃষ্ণ মিশনে আমার পরিচিত অনেকে পড়েছে এবং জীবনে সফল। একটা প্রার্থনা সঙ্গীতে খুব বেশি তারতম্য হয় না। মানুষ তাতে মানুষী থাকে, সাম্প্রদায়িক হয় না। যোগ চর্চা করলে শরীর মন দুই ভাল থাকে ,এটা সাম্প্রদায়িকতা নয়। আর মিশনারি ইস্কুল শিক্ষা দেয় ভাল ভাবে , তাতেও তাদের প্রাথনা সঙ্গীত থাকে , কিন্তু আরো একটা ব্যাপার যে , খ্রিস্টান দের একটা সুক্ষ অন্য জাত বিদ্বেষী তা আছে , পারলে হিন্দু কে খ্রিস্টান করে দেয়। ভাল করে খেয়াল করলে যানতে পারবেন , ভারতীয় সংস্কৃতি সম্পর্কে খ্রিস্টান্দের মানসিকতা কি রকম। তারা অন্য যাতকে নিজেদের চেয়ে নিচু মনে করে (তাই তো গ্যালিলিওর মত বিজ্ঞানী, যোয়ান অফ আর্কের মত বিপ্লবি দের জীবণ শেষ করে দেয়)। তাদের সুক্ষভাবে বিদ্বেষ ভাব রয়েছে আপনি খেয়াল করবেন। আর অনেক মাদ্রাসা তো উগ্রবাদি বানাবার আখড়া বানিয়ে ফেলেছে, শিক্ষা দিক্ষা সেখানে কি হয় অনেক সন্দেহ আছে। বাকি ব্যাপারে আপনার সঙ্গে আমি একমত যে ধর্ম কে শিক্ষায় আনতে নেই , কিন্তু প্রচলিত ধর্ম আর নিজেদের পরম্পরা এক জিনিস না কিন্তু। আর আমাকে হিন্দু মৌলবাদী ভেবে বসবেন না কিন্তু আমি আপনাদের মতই একজন।
পশ্চিমবংগে অঅনুমোদিত/খারিজি/কওমি মাদ্রাসার সংখ্যা কতো?
You can’t justify a man who takes bribe by saying ”Bribery is a common practice.”
You can better say,
Bribery is a bad practice. And it doesn’t matter who is/are the practitioner(s).
.
Smoking causes cancer.
None can justify smoking by saying my roommate is a smoker too, or by saying my brother is/was a chain smoker.
It’s a different issue that, none of the devotees have the right to question on the religion that he was adviced to follow as his father was a follower of it by birth
and hence they think: it is the best one.
And it doesn’t matter if he never reads a single sentence of it.
All that he does is to support and make other to support the same religion by hook and by crook.
…
পশ্চিমবংগে আলামিন মিশনের মতো অনেক মুসলিম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হয়েছে যেগুলোতে কেবলমুসলিম ছেলে মেয়েরাই পড়তে পারে। অমুসলিমদের ভর্তি নেওয়া হয় না।
আজ্ঞে, আমি কখনো বলিনি তো তারা ভালো কাজ করছেন। আমার গোটা লেখাটির মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হোলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে যে কোন ধর্মীয় সংষ্পর্শ থেকে দূরে রাখা উচিত।
চমৎকার লেখা। অনিন্দ্যসুন্দর চক্রবর্ত্তীর লেখা অনিন্দ্যসুন্দরের মতোই। লেখককে ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ জোবায়েন।