বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অগ্রগতির সাথে তাল মিলিয়ে কথিত “আসমানী” গ্রন্থসমূহের উপর আস্থা হারিয়ে ফেলতে শুরু করেছে মানুষ। এখনকার ওয়াজসমূহে ওয়াজিয়ানরা জাকির নায়েক স্টাইলে কোনো একটা সায়েন্টিফিক আবিষ্কারের সাথে কুরানের একটা আয়াতের তুলনা করে কুরানের গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানোর প্রচেষ্টা চালান। যদিও এসব ক্লাস ফাইভে পড়া বিজ্ঞানের জ্ঞান দিয়ে কোয়ান্টাম ফিজিক্স পুঙ্খানুপুঙ্খ বোঝাবার ব্যর্থ প্রচেষ্টা!
এভাবে ভাবলে মনে হয় উন্নতি একেবারে মন্দ হয়নি! ধর্মের ষাঁড়েরা যেখানে বিজ্ঞানী ব্রুনোকে পুড়িয়ে মেরেছিলো সেখানে আজ বিজ্ঞানকে একটা ফিল্টার হিসেবে ধরা হচ্ছে; এটা নেহায়েত কম অগ্রগতি নয়। ইদানিং আবার দেখছি বিজ্ঞানের সাথে সাংঘর্ষিক হাদিসগুলো হজম করতে না পেরে মোল্লামহলে হাদিস জাল না সহি সে ব্যাপারে মতভেদ তৈরি হচ্ছে। এসব ভালো লক্ষণ! বিজ্ঞানের যে স্ফূৎলিঙ্গ অনেকের মধ্যে প্রবেশ করেছিলো সেসব অনল হয়ে বেরুচ্ছে, আর আঘাত করছে দীর্ঘদিনের লালিত কুসংস্কারের গোড়ায়!
অপরাপর ধর্মগুলোর কিছুটা জীর্ণ দশার কারণেই হোক বা সবচেয়ে তরুণ ধর্ম বলেই হোক, বর্তমানে ইসলামিস্টরা চোটপাট বেশি বেশি করছে- ফলে মিডিয়া কাভারেজ পাচ্ছে- সেই সাথে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতেও থাকছে; সম্ভবত তারা ভুলে গেছে যত বড় করে জ্বলে উঠার চেষ্টা করবে তত দ্রুত তাদের জ্বালানী শেষ হয়ে আসবে। ইতিহাস বলে, সব ধর্মই যার যার যেৌবনে ভালো পসার করেছে। উপমহাদেশের কথাই ধরা যাক। সনাতন ধর্মের যখন যৌবন তখন হিন্দু ধর্মের নামে কত কী অনাচার, কুসংস্কার, অত্যাচারের প্রচলন ছিলো। অচ্ছুৎ প্রথা তথা শ্রেণিবিভাগ জাঁকিয়ে বসেছিলো। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে যাদের মধ্যে এসব নির্দিষ্ট কোনো কিছুর থেকে গা বাঁচানো কিংবা খুঁতখুঁতে ভাব কাজ করতো তারাও দিব্যি “আধুনিক” যুগের সাথে তাল মিলিয়ে ধুতি-লুঙ্গি ছেড়ে শার্ট-প্যান্ট পড়ে একেবারে ইংরেজ সাহেব সেজে গেছে! অবশ্য মুসলমানেরা প্রগতির উল্টোদিকে সবসময়ই ছিলো। মুহাম্মদ আরো কয়েক শতক পর জন্মালে হয়তো আরো স্মার্ট হতো! যাহোক, ইসলামের ক্ষেত্রেও যে অনেকটা পরিবর্তন এসেছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। একে একে ছবি, টেলিভিশন, মোবাইল ফোন ব্যবহারের ব্যাপারে কড়াকড়ি (অনেক আলেম হারাম বলে ফতোয়াও দিয়েছিলেন এবং অনেকে এখনও দিচ্ছেন) আরোপ করলেও প্রগতির গতির কারণেই হোক কিংবা সহজলভ্যতার কারণেই হোক ধীরে ধীরে বাঁধন হালকা করতে হয়েছে আলেম সমাজের। মেয়েদের বাইরে কাজ করার ব্যাপারে অনেকখানি নমনীয়তা চলে এসেছে। অনুমান করছি ধর্মগুলো এ শতাব্দীর শেষদিকে দেউলিয়া হয়ে যাবে! তবে মধ্যবর্তী সময় যে খুব ভালো যাবে সে নিশ্চয়তা দেয়া যাবে না। পৃথিবীজুড়ে রক্তগঙ্গা রচনা করে প্রতিষ্ঠা পাওয়া তীক্ষ্ণ অনুভূতিসম্পন্ন ধর্ম ইসলাম নিঃচিন্হ হওয়ার আগমুহূর্তে আবারো রক্তক্ষয় ঘটাবে এটা তো এখনই বোঝা যাচ্ছে।
একটু ভিন্ন প্রসঙ্গে আসি। “অন্যায়” শব্দটার অর্থ অনুচিত কাজ, ন্যায়বিরুদ্ধ কর্ম, অবিচার কিংবা জুলুম আর পাপ হলো কলুষ, দুষ্কৃতি, অন্যায়, অধর্ম কিংবা শাস্ত্রবিরুদ্ধ কাজ। তাহলে এখান থেকে বলা যায়, সকল পাপই অন্যায় কিন্তু সকল অন্যায় পাপ নয়। আরেকভাবে বললে, পাপের জন্য পৃথিবীতে আলাদা করে কোনো শাস্তি নেই কিন্তু অন্যায়ের জন্য চেৌদ্দ শিক মোটামুটিভাবে নিশ্চিত।
ধরে নিলাম প্রথম ধর্মের প্রচলন হয়েছিলো মহৎ একটি উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে। আর সেটি হলো সামাজিক শৃঙ্খলা আনয়ন। আজকের এই একবিংশ শতাব্দীর প্রারম্ভে দাঁড়িয়ে বলতেই হয় সে কাজে ধর্ম পুরোপুরি ব্যর্থ। যদি তেমনটাই ঘটতো তাহলে পৃথিবীতে সবচাইতে সুশৃঙ্খল জাতি হতো বাংলাদেশ, ভারত কিংবা সৌদি আরব। অথচ তালিকা করলে শৃঙ্খলার দিক দিয়ে এসব দেশের অবস্থান শেষদিকেই হবে। অর্থাৎ ধর্ম শৃঙ্খলা আনার পরিবর্তে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে।
এখানে এসে মমিনরা বলা শুরু করে খেলাফতের কথা। কিন্তু খেলাফত যেসব দেশে কায়েম আছে সেসব দেশের দিকে তাকালে কতটুকু শৃঙ্খলা দেখতে পাওয়া যায়? এখন তারা বলবে কোনো দেশেই পরিপূর্ণ খেলাফত কায়েম নেই। সেক্ষেত্রে আমরা ইসলামের প্রধান দুটি গ্রন্থ কোরান ও হাদিস থেকে কয়েকটিমাত্র আয়াত পড়ে নিই। কারণ এগুলোই মুসলমানদের জন্য “পরিপূর্ণ” জীবন বিধান।
মহান আল্লাহ্ বলেন –
“ তোমরা সৎকর্ম প্রকাশ্যে করলে অথবা গোপনে করলে অথবা দোষ ক্ষমা করলে আল্লাহও দোষ মোচনকারী, শক্তিমান”
(আন-নিসা : ১৪৯)।
একজন মুসলমানকে কোনো একটা দোষের কাজ করতে দেখে (হতে পারে তা চুরি, মিথ্যা বলা, ঘুষ খাওয়া ইত্যাদি) নিজের দোষত্রুটি ক্ষমা করানোর নিমিত্তে তার দোষ গোপন করা যেতেই পারে?
মহান আল্লাহ্ বলেন –
“মন্দের প্রতিফল অনুরূপ মন্দ, কিন্তু যে মাফ করে দেয় এবং আপোষে নিষ্পত্তি করে, তার পুরস্কার আল্লাহর নিকটই রয়েছে। তিনি যালিমদের পছন্দ করেন না। তবে অত্যাচারিত হওয়ার পর যারা প্রতিবিধান করে, তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না। কেবল তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা অবলম্বন করা হবে, যারা মানুষের উপর যুল্ম করে এবং পৃথিবীকে অন্যায়ভাবে বিদ্রোহাচরণ করে বেড়ায়। এদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। অবশ্য যে ধৈর্য ধারণ করে এবং মাফ করে দেয়, এতো হবে দৃঢ়সংকল্পের কাজ। আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন তার জন্য কোন অভিভাবক নেই। যালিমরা (কিয়ামতের দিন) যখন শাস্তি দেখবে, তখন আপনি তাদের বলতে শুনবেন প্রত্যাবর্তনের কোন পথ আছে কি?”
(সূরা শূরা (৪২) : ৪০-৪৪)
একই ধরনের কথা আবারো বলা হলো। এ সংক্রান্ত কয়েকটি হাদিস দেখা যাক-
আবদুল্লাহ্ ইবনু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত,রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন-
” মুসলমান মুসলমানের ভাই। সে তার উপর যুল্ম করবে না এবং তাকে যালিমের হাতে সোপর্দ করবে না। যে কেউ তার ভাইয়ের অভাব পূরণ করবে, আল্লাহ তা‘আলা কিয়ামতের দিন তার বিপদসমূহ দূর করবেন। যে ব্যক্তি কোন মুসলমানের দোষ ঢেকে রাখবে, আল্লাহ কিয়ামতের দিন তার দোষ ঢেকে রাখবেন।”
(হাদিস- বুখারী-২৪৪২)
সাফওয়ান ইবনু মুহরিব আল–মাযিনী (রাঃ) থেকে বর্ণিত,
তিনি বলেন, একদিন আমি ইবনু ‘উমর (রাঃ) –এর সাথে তাঁর হাত ধরে চলছিলাম। এ সময় এক ব্যক্তি এসে বলল, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা‘আলা ও তাঁর মু’মিন বান্দার একান্তে কথাবার্তা সম্পর্কে আপনি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) –কে কি বলতে শুনেছেন? তখন তিনি বললেন, আমি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) –কে বলতে শুনেছি যে, আল্লাহ তা‘আলা মু’মিন ব্যক্তিকে নিজের কাছে নিয়ে আসবেন এবং তার উপর স্বীয় আবরণ দ্বারা তাকে ঢেকে নিবেন। তারপর বলবেন, অমুন পাপের কথা কি তুমি জান? তখন সে বলবে, হ্যাঁ, হে আমার প্রতিপালক! এভাবে তিনি তার কাছ হতে তার পাপগুলো স্বীকার করিয়ে নিবেন। আর সে মনে করবে যে, তার ধ্বংস অনিবার্য। তখন আল্লাহ তা‘আলা বলবেন, “আমি পৃথিবীতে তোমার পাপ গোপন রেখেছিলাম। আর আজ আমি তা মাফ করে দিব”। তারপর তার নেকের আমলনামা তাকে দেয়া হবে। কিন্তু কাফির ও মুনাফিকদের সম্পর্কে সাক্ষীরা বলবে, এরাই তাদের প্রতিপালক সম্পর্কে মিথ্যা বলেছিল। সাবধান, যালিমদের উপর আল্লাহর অভিসম্পাত।
(হাদিস -বুখারী)
অর্থাৎ ভুলভাল কিছু করলে সেটা থেকে নিষ্কৃতির জন্য একটা ছোট্ট ফাঁক আল্লাহ রেখে দিয়েছেন এবং এটা বিশেষ করে ইমানদারদের জন্য। স্বয়ং সৃষ্টিকর্তা যখন এমন অফার দেন তখন সে সমাজে স্বজনপ্রীতি শিকড় গেড়ে বসবারই কথা!
তাছাড়া বিভিন্ন আমলের (প্রার্থনা) মাধ্যমে গুনাহ মাফের কথা আসার মানে হলো পরোক্ষে সেসব গুনাহ করার ইন্ধন দেয়া। এ সহজ ব্যাপারটা আল্লাহ বুঝলেন না?! এখানে কি ইসলামিক নৈতিকতা প্রশ্নবিদ্ধ হয় না?
আমরা যদি “পাপ” টার্মটা সমাজ থেকে তুলে দিতে পারি, প্রত্যেক অন্যায়কে অপরাধ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারি আর একটা শক্ত সংবিধান তৈরি করে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে পারি তাহলে কিন্তু অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। পরকালীন শাস্তির ভয় কিংবা শান্তির লোভ দেখিয়ে মানুষকে খারাপ কাজ থেকে নিবৃত্ত করার সিস্টেমটির কার্যকারিতা যৎসামান্য। (…চলবে)
আল্লাহ্র ক্ষমা করার সম্ভাবনা রয়েছে আয়াতটিতে, এবং তিনি অবশ্যই কাঠখোট্টা নয়।
ভুল হলে, এবং সেটা ক্ষমার যোগ্য হলে এবং ভুল স্বীকার করে অনুতপ্ত হলে এবং ভবিষ্যতে না করার অঙ্গীকার করার কারনে আল্লাহ্ ক্ষমা করবেন, এটা নিয়ে দ্বিধার কিংবা সমালোচনার কিছু আমি অন্তত খুজে পাইনা।
যেখানে বর্তমানেও কেউ কোন অপরাধ করলে ক্ষমা প্রার্থনা করতে পারে এবং ক্ষমা করে দেয়া হয়, সেখানে সৃষ্টিকর্তা আমাদের কোন সুযোগই দিবেননা সেটা ভাবাটাই চূড়ান্ত বোকামি।
তবে কয়েকটা ব্যাপার উল্লেখ করাই আছে যা সম্পূর্ণ ক্ষমার অযোগ্য। সেটাও অস্বাভাবিক কিছুই নয়।
আশা করি পরের মন্তব্য আরও জোরালো যুক্তিপূর্ণভাবে আসবে।
ধন্যবাদ 🙂
এখানে কোরআন ও হাদীসের ভুল ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে । সূরা নিসার ১৪৯ নং আয়াত এটা —
”’যদি তোমরা প্রকাশ্যে ও গোপনে সৎকাজ করে যাও অথবা কমপক্ষে অসৎকাজ থেকে বিরত থাকো, তাহলে আল্লাহও বড়ই ক্ষমা-গুণের অধিকারী। অথচ তিনি শাস্তি দেবার পূর্ণ ক্ষমতা রাখেন”’ সূরা নিসা ১৪৯
আর বুখারী শরীফের যে ২৪৪২ নং হাদীস বলা হয়েছে তা বুখারী শরীফে নেই ।
إِن تُبْدُوا خَيْرًا أَوْ تُخْفُوهُ أَوْ تَعْفُوا عَن سُوءٍ فَإِنَّ اللَّهَ كَانَ عَفُوًّا قَدِيرًا ( 149 ) আল-নিসা – Ayaa 149
তোমরা যদি কল্যাণ কর প্রকাশ্যভাবে কিংবা গোপনে অথবা যদি তোমরা আপরাধ ক্ষমা করে দাও, তবে জেনো, আল্লাহ নিজেও ক্ষমাকারী, মহাশক্তিশালী।
লিংক:
http://homs-l-m.com/quran/translate-4-17.html
পড়ে ভালো লাগলো। বিশ্লেষণ আরও করলে ভালো হবে।
ব্যাখ্যা প্রয়োজন।
এতো কিছু লিখলেন, মাইক্রোস্কোপের কথা লিখলেন না! মানুষ নিজের ক্ষমতায় তার দৃষ্টিজনিত দুর্বলতা কাটিয়ে উঠেছে।
ঘুমের ব্যাপারে বেশ ভালোরকম ব্যাখ্যা আছে। ডানে বামে তাকান। মৃত্যুর ব্যাপারে গবেষণা চলছে।
পয়েন্ট বাড়ানোর সেই বাল্য কেৌশল?
এক আল্লাহর উপর বিশ্বাস আর কিছু নয়। আমিত তাকে না দেখে বিশ্বাস করি আর
যাদু : যা আমি দেখি, যা আমার চোখ এবং মনের উপর ক্রিয়া করে আমি কিভাবে তা অবিশ্বাস করি ?
মানুষের চোখের ক্ষমতা : মানুষের চোখের কাছের বিন্দু ২০-২৫ সে:মি: দুরের বিন্দু অসীম দূরত্ব। মানুষ খালি চোখে ১০০মাইক্রো মিটার (১*১০^-৪) এর চেয়ে ছোট কোন বস্তু দেখতে পায়না। তাহলে
কোয়ান্টাম ফিজিক্স: ক্লাসিক্যাল ইলেকট্রন(৫*১০^-১৫), প্ল্যাঙ্ক এর দৈর্ঘ্য থেকে ৩.৪*১০^২৪ গুন বড়। যেখানে সূর্যের ডায়ামিটার মাত্র ৬.৯*১০^১১ গুন বড় একটি বালু কণা থেকে। এখন এগুলি কি মানুষ দেখতে পায়? না অনুভব করতে পাড়ে? না সাধারণ মানুষ এর কোন মানে বুঝতে পাড়ে? তাহলে সবই কি অস্বীকার করা উচিত নয়?
মৃত্তু ও ঘুম : কোন দৃশ্যমান ব্যাখ্যা মানুষের কাছে আছে কি?
মানুষ : স্বার্থপর সঙ্কীর্ণ মনের এক ভীরু জীব [ এটা দোষ নয় বৈশিষ্ট্য বলতে পারেন]
এগুলি বাদ রেখে আমরা বরঞ্চ সেই মহান সৃষ্টিকর্তাকে নিয়ে চিন্তাভাবনা করি।
তিনি কি শিবলিঙ্গের সমতুল্য ? নাকি তিনি মহান ।
তাঁর বৈশিষ্ট্য কি? কেন তাকে আমরা মানব?
কেন তাকে আমরা বিশ্বাস করব?
তিনি এক ,একক,অদ্বিতীয় কেউ?
নাকি তার সমতুল্য কেউ আছে?
যদি তার সন্তান থাকত তাহলে একজন কেন অনেকই ত থাকতে পারত?
তিনি কোন বস্তু গত স্বত্তা?
সৃষ্টি হয়ে স্রষ্টা সম্পর্কে কতটুকু আমরা ভাবতে পাড়ি?
আমাদের ভাবনার সীমা কতটুকু? মানব ইন্দ্রিয়ের সীমা কত? সেটা কি অসীম?
আরও গভীর বিশ্লেষণ আশা করছি ।
চেষ্টা থাকবে। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সৃষ্টিকর্তা একজনই, শুধুমাত্র একজনই । বিভিন্ন ধর্মর নরিখে যদি বিচার করেন, তবে একই ঈশ্বর বিভিন্নতা লাভ করবে । একই সৃষ্টিকর্তা ধর্মের নিরিখে নয়, এই পৃথিবীতে একমাত্র বসবাসকারী মানুষের কথা মানবতার খাতিরে বিচার করতে হবে । মানবতা যেখানে ধর্ষিত হয়, মানবতা যখন লান্ছিত হয়, মানবতাকে যেখানে হত্যা করা হয়, সেখানে যা কিছুই আসুক না কেন, তাকে যে কোনো মূল্যেই প্রতিহত করতে হবে । তা না মনুষ্য জন্ম বৃথা । আসুন শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষরা, হাতে হাত মিলিয়ে একটি নিরেট প্রতিরোধের প্রাচীর গড়ে তুলি ।
আপনি আপনার মন্তব্যে এক নয়া মতবাদ (যেহেতু আগে দেখিনি সুতরাং অন্তত আমার কাছে এটা একেবারেই নতুন) প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছেন। আমি চেষ্টা করছি সেসবের অসঙ্গতি তুলে ধরার।
কেবল এ দোষগুলো উল্লেখ করার মাধ্যমে আপনি মানুষের অর্ধাংশের বর্ননা দিতে সক্ষম হয়েছেন।
ভাগ্য/ নিয়তি বলতে কোনো কিছুর অস্তিত্ব নেই। আপনি যেমন মাটি দিয়ে পুতুল বানান, পুতুলের দৃঢ়তা নির্ভর করবে মাটি ও পারিপার্শ্বিক পরিবেশের উপর।
যত দিন যাবে বিজ্ঞানের হাত ধরে মানবসভ্যতা ততই এগিয়ে যাবে; ফলে তৈরি হবে নতুন পরিস্থিতি। সেসব পরিস্থিতির সাথে সঙ্গতিপূর্ণ অাইন করা যেতেই পারে। খোদ ইসলামেও এমনটাই হয়ে আসছে। আইনের দ্বারা মানুষ চালিত হয়না, মানুষই আইনের নির্মাতা।
এ ব্যাপারে পরবর্তী লেখায় বিশদ আলোচনা করার ইচ্ছা আছে। শুধু একটা তথ্য দেই- কিছুদিন আগেই একটি উন্নত দেশে (খুব সম্ভবত নরওয়ে/ ডেনমার্ক) অপরাধীর অভাবে জেলখানা বন্ধ করে দিতে হয়েছে!
আপনি জাদু বিশ্বাস করেন? তাহলে আর বলার কীইবা আছে!
যারা এক আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস রাখেনা তাদের মাবুদ হচ্ছে চারটি : ১। [ দেশ, জাতি, ভাষা, বর্ণ ] ২। তাদের নিজেদের বানানো আইন ৩। নিজ প্রবৃত্তি ৪। মানবীয় জ্ঞান
মানুষ : স্বার্থপর সংকীর্ণ মনের এক ভীরু জীব।
১। [দেশ,জাতি,ভাষা, বর্ণ] এই যে দেশ জাতি ভাষা বর্ণ নিয়ে মানুষের এত মায়া কান্না এর কোনটাই তার নিজের সৃষ্টি নয়, নিজের নির্ধারিতও নয় তার জন্মের পূর্বেই এটা নির্ধারিত হয় তার ভাগ্যের মাধ্যমে এটা সে ইচ্ছা করলেও বদলাতে পারে না।
২। নিজের বানানো আইন : মানুষের বানানো আইন যা সে নিজেই এর রচনা করে আবার সংশোধনও সে নিজেই করে, এভাবে করতে করতে দেখা যায় যে এক সময় তার বানানো এই আইন একটার সাথে আর একটা সাংঘর্সিক হয়ে আছে। আর নানান গোজামিল আর তালি দিতে দিতে তার মুল আইন আর খুঁজে পাওয়াই দুষ্কর হয়ে উঠে।তথাপি নানান স্বার্থপরতার কারনে সমাজের একদল আর একদলের আইন কখন মানতে চায় না আর এ ভাবেই দেশে দেশে মানুষে মানুষে হানাহানি লেগেই থাকে। যার অবসান সে তার ক্ষুদ্র মস্তিষ্কে কখন করতে পারে না।
৩। প্রবৃত্তি : মানুষ জন্মের পর থেকে মৃত্তু অবদি নিজ প্রবৃত্তির দাসত্তে নিয়োজিত থাকতে পছন্দ করে অর্থাৎ তার মন যা চায় সে তাই করতে পছন্দ করে। আর এই ব্যপারে কার কাছে জবাবদিহি করতে সে পছন্দ করে না। ফলে সমাজের ভাল মন্দ আইন কানুন যেটাই তার পথে বাধা হয়ে আসুক না কেন তার প্রবৃত্তি তাকে তা ভাঙতে উৎসাহিত করে আর মানুষের সীমাহীন প্রবৃত্তির যথাযথ চাহিদা পুড়ন বৈধ পথে কখন সম্ভব হয়ে উঠে না।
৪। মানবীয় জ্ঞান : অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যৎ। মানুষের জ্ঞান কখন কালের এই সীমা অতিক্রম করতে পারে না। ফলে কালের আবর্তনে মানুেষর অনেক হাইফোথিসিস এক সময় পাল্টে যায়। আবার অনেক কিছু পরিত্যক্ত হয় যা অর্জন করতে মানুষকে অনেক কাঠখোর পোহাতে হয়েছিল। মানুষের জ্ঞান সম্পূর্নতই বস্তুু কেন্দ্রিক, বস্তুুর বাইরে সে কিছুই ভাবতে পারে না আর এভাবে সে তার জন্ম মৃত্তু ভাগ্য যাদু কোনটিরই ঠিক মত ব্যাখ্যা দিতে সক্ষম হয় না ফলে তার বিকারগ্রস্ততা আরো বেড়ে যায়, আর আন্দাজ-অনুমান তার নিত্য সাথি হয়।
খাসা লিখেছেন, একজন পদার্থবিদ হিসেবে বলি, কোয়াণ্টাম ফিজিক্সের জন্মের মূল কারণ হল অতি ক্ষুদ্র কণার (Quantum Particle) আচরণের বিশ্লেষণের প্রয়াস। অতি ক্ষুদ্র কণার ধর্ম (properties, not religion 🙂 ) বিশ্লেষণ- অর্থাৎ সাধারন দৃষ্টিসীমার অনেক গভীরে গিয়ে ভাবা- এটিই আধুনিক কোয়াণ্টাম ফিজিক্সের পথপ্রদর্শক। সেরকম ইসলাম অনুগামীরা এবং বৃহৎ অর্থে সকল ধর্মাবলম্বীরা যদি অনেক গভীরে গিয়ে পার্থিব ঘটনাগুলির কার্যকারণ সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেন, অমনি গম্বুগ/স্বর্ণমণ্ডিত চূড়া সবই ধ্বংস হবে বা ব্যক্তিমননে (এবং অবশ্যই ব্যক্তিপরিসরের ভেতরেই) সীমাবদ্ধ হয়ে যাবে। তাঁরা বরং ব্যাপারটাকে এভাবে দেখতে পারেন- সমস্ত ঘটনার কার্যকারণ ব্যাখ্যা করে যাওয়া ঈশ্বরাল্লাহ্-র পক্ষে আর সম্ভব হচ্ছে না, কাজটি বিরক্তিকর, একঘেয়ে এবং ভক্তদের বিচিত্র মানসিকতার কথা স্মরণে রাখলে- কাজটি নিতান্ত কঠিনও বটে। কাজেই এইসব ছোটখাট কাজ ওনার পক্ষে অপমানজনক, এসব থেকে উনি ইস্তফা দিলেন। বরং তাঁর অগণিত ভক্তকে তিনি পরামর্শ দিচ্ছেন- মগজ নামক তাঁর উপহার দেওয়া যে বস্তুটি তাঁর ভক্তরা বিনা ব্যবহারে মরচে ধরিয়ে ফেলেছে- সেটিকে কাজে লাগাতে, এবং তাঁকে কিঞ্চিৎ বিশ্রামের অবসর দিতে।
হাহ হাহ হা। বেশ বলেছেন।
দৈনন্দিন কাজে কিন্তু বিশ্বাসী-অবিশ্বাসী নির্বিশেষে সবাই চেষ্টা করে যথাসম্ভব মাথা খাটিয়ে চলার। কেবল ধর্মের বেলাতেই মগজ চর্চায় বড্ড অনীহা।