দেশে তখন গণজাগরণ মঞ্চের উত্তাল জোয়ার। এর মধ্যে সাঈদী সাহেব চাঁদে গেলেন। চারধারে টালমাটাল অবস্থা। কাদের মোল্লার ফাঁসির দাবিতে গণজাগরণ শুরু হয়েছে। এদিকে ইমানদার ব্যক্তিরা আছেন ফাঁপড়ে, মোল্লা হুজুরের মতো পরহেজগার মানুষের প্রতি আঙুল-তোলা! এর মধ্যে আবার সাঈদী গেলেন চাঁদে। ইমান নিয়ে পুরাই ধ্বস্তাধ্বস্তি যাকে বলে।
সাজিয়ার মা হুজুরদের প্রচণ্ডই ভক্তিশ্রদ্ধা করেন কিন্তু বাসায় তাঁর ছেলেমেয়েরা রোজ গণজাগরণ মঞ্চে যায়, লেডিস ক্লাবেও গণজাগরণের প্রতি সমর্থন বাড়ছে। তিনি দোদুল্যমান অবস্থায় আছেন। বাড়িতে বাসন মাজতে যে-মেয়েটি আসে সে পরদিন বেশ দেরিতে এসেও খুব উত্তেজিত। উত্তেজনার কারণ আগের রাতে হুজুরকে চাঁদে দেখা গেছে।
সকালে নাস্তার টেবিলে এই নিয়ে ছেলেমেয়েদের এক প্রস্থ হাসাহাসি উনি অলরেডি গিলেছেন। তাই আর আগের মতো ইমান তাঁর পোক্ত নেই। মেয়েটির উচ্ছ্বসিত গলার বর্ণনা শুনে দ্বিধা নিয়ে গলায় তিনি জিজ্ঞেস করলেন, তুই নিজে দেখেছিস?
সাথে সাথে উত্তেজিত গলার উত্তর, এতো সোজা নাকি গো খালাম্মা? এতোই সোজা? ইমানের জোর থাকতে হয় গো খালাম্মা, শক্ত ইমান লাগে। সবাই কি দেখতে পায়? সব পাক জিনিস কি সবাই ভাগে পায়?
সাজিয়ার মা অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলেন, তাহলে?
আমি দেখি নাই, তয় আমাদের বস্তির রাশেদের বাপ চাচা আর রহিমা খালায় দেখছে। তারা সক্কলরে কইছে, চাচায় রুজ মসজিদে যায়, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে, পাক সাফ মানুষ। বস্তির কারো কিছু হইলে চাচায় পানি পড়ায় দিলে, রুগ বালাই এক্কেরে খতম। রহিমা খালা তাহাজ্জুদের নামাজ পইড়া, জায়নামাজে বইসা তসবিহ টিপতে ছিলো আর জানালা ছিলো খুলা।
আঁৎকা খালার চোখ গেলো উপরে, খালাম্মাগো খালাম্মা, কী কইতাম। এই দেহেন আমার শইলের লুম গুলা কেমন খাড়া খাড়া হইয়া গ্যাছে। খালায় দেহে, চান্দের মইধ্যে জানি কী দেহা যায়! জায়নামাজ ছাইড়া, জানালার কাছে যাইয়া দেহে, নূরানি চেহারা চান্দের ভিতরেগো খালাম্মা। ইয়া চাপ দাড়ি, মাথায় টুপি, হুজুরে হাসতাছে। একটুক্ষণ না অনেকক্ষণ আছিলো গো হুজুর চান্দের ভিত্রে।
রহিমা খালারতো পুরা বেহুঁশ হইয়া যাওনের অবস্থা। সকালে উইঠ্যা না আমরা হুনি এই কিচ্ছা। এমন পাকসাফ দাড়িওয়ালা মানুষটার পিছে শ্যাখের বেটি লাইগগা রইছে। হ্যার নাকি বিচার হইবো। দ্যাশ আর দ্যাশ থাকবো না গো খালাম্মা, আল্লাহর গজবে সব শেষ হইয়া যাইবো গো সব শ্যাষ।
তো হুজুর যদি অন্যায় করে তো বিচার হবে না?
কন কী খালাম্মা, তওবা তওবা, আল্লায়ও গুসসা করবো শুনলে। এমন নূরানি চেহারা, এমন নেক বান্দা, আল্লাহর ওলি হ্যায় কী কুনু দুষ করতে পারে?
দোষ না করলে কি এমনি এমনি ধরছে?
সেটাই তো কই খালাম্মা, সেটাইতো কই। সব তো আমি আপনে বুঝুম না জানুম না। ইন্ডিয়ার পইসা খাইয়া শেখের বেডি এখন এসব করতেছে। হিন্দুগো পইসা খাইয়া, আল্লাহ খোদার পিছে লাগছে। গজব হইয়া যাইবো গো খালাম্মা, দেইখেন আবার আইবো ঝড়, তুফান, বইন্যা…
সাজিয়ার মা বিরক্ত হয়ে বললেন, আসলে আসবে, তুই এখন কাজ শেষ কর। বাসন মাজা ঝি আরো কিসব যেন বকতে বকতে কাজ করছিলো, সাজিয়ার মা আর সেখানে দাঁড়ান নি তার সেসব শুনতে।
এ ঘটনার কিছুক্ষণ পর সাজিয়া বাড়িতে ফোন করলো। রুটিন মাফিক খোঁজ খবর কথাবার্তা শেষ হওয়ার পর দেশের কথা আর অন্যান্য খবর নিয়ে আলোচনা শুরু হতে সাজিয়ার মা বেশ রসিয়ে রসিয়ে সাজিয়াকে ঝি এর সাঈদীকে চাঁদে দেখার গল্প বলতে লাগলো। ঘটনা শুনতে শুনতে সাজিয়া বিরক্ত হয়ে মা’কে বলেই ফেললো, মা তুমি হেসে যাচ্ছো মজার ঘটনা ভেবে? তোমার কোন ধারনা আছে এই নিয়ে দেশে কী তুলকালাম হয়ে যাচ্ছে?
সাজিয়ার বিরক্ত গলা শুনে মা একটু থতমত খেয়ে গেলো, তিনি এতোকিছু ভাবেননি তখনো। সাজিয়া ক্লান্ত গলায় বললো, মা টিভি খোল, দেখো এই মূর্খের দেশে একটি গুজব ছড়িয়ে কী তান্ডব বাঁধিয়ে দিয়েছে। মানুষ পর্যন্ত খুন হয়েছে মা, হাসির পর্যায়ে আর নেই।
সাজিয়ার মা অবাক হয়ে গেলেন। ক্লান্ত কন্ঠে সাজিয়া বললো, সবকিছু এতো হালকাভাবে নিয়ে হাসাহাসি করার পরিস্থিতি আর বাংলাদেশে নেই মা। সবকিছুই উদ্দেশ্যে নিয়ে করা হয় আর তাতে কিছু মানুষের বাড়িঘর পোড়ে আর কিছু মানুষ প্রাণ হারায়। সহজ সরল এই মানুষগুলোকে যা বোঝানো হয় তাতেই তারা উত্তেজিত হয়।
এরপর আবার এক কথায় সে কথায় কথার মোড় ঘুরে গেলে সাঈদী প্রসংগ চাপা পরে যায়। ফোন ছেড়ে দিয়ে বাড়িতে যখন একা একা সাজিয়া সংসারের কাজ করছিলো তখন আবার এ ভাবনা মাথায় ফিরে আসতেই তিক্ততায় মন ভরে উঠলো তার।
তেতো মন আর জ্বালাধরা বুক নিয়ে সে ভাবতে লাগলো, যুদ্ধাপরাধের বিচারে দু’চারজন চিহ্নিত অপরাধীর গ্রেপ্তার ও বিচার হলো না-হয়, যদিও সেটাও পুরো নিশ্চিত হওয়াই অসম্ভব হয়ে পড়েছে আজকাল, কিন্তু তারপর সারাদেশ জুড়ে এই যে অপরাধীদের ছানাপোনারা তাদের বিষদাঁত নিয়ে নীরবেনিভৃতে ছড়িয়ে আছে, তার খবর কে রাখছে? কাল যদি সুযোগ আসে, তাদের সব হলাহল নিয়ে তারা একাত্তরের মতোই আবারো ঝাঁপিয়ে পড়বে বিরোধীপক্ষের ওপর। মুক্তচিন্তার মানুষ তো বটেই, সাধারণ জনতাও তো তাদের রুদ্ররোষ থেকে বাঁচবে না। বিরোধীদলে থাকার পরও যারা নির্বিচারে মানুষ হত্যা, থানা আক্রমণ, পুলিশ হত্যা করে যাচ্ছে শুধু চিহ্নিত, জঘন্য, খুনি যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচাতে, ক্ষমতায় তারা যদি যায়, তাহলে যে কী রক্তগঙ্গা বইয়ে দেবে তারা ভাবতেই শিউরে উঠলো সে। ঘনকৃষ্ণ হতাশ অন্ধকারে সে বড্ড অসহায় বোধ করতে লাগলো, প্রচণ্ড হীনবল। কোথায় আলো, কোথায় ওরে আলো?
যুদ্ধাপরাধ মামলায় মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর চেহারা চাঁদে দেখা গেছে বলে ২ মার্চ শনিবার দিবাগত রাতে বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, সৈয়দপুর ও চট্টগ্রামের কিছু কিছু এলাকায় গুজব ছড়িয়ে পড়ে। অনেক স্থানে মসজিদের মাইকযোগে চাঁদে সাঈদীকে দেখতে পাওয়ার ঘোষণা দেয়া হলে শত শত মানুষ রাস্তায় নেমে আসেন।
গত শনিবার রাত আনুমানিক ১০ টার পর সাতকানিয়া উপজেলার অনেক মসজিদ থেকে মাইকে হঠাত্ ঘোষণা দেয়া হয় আকাশে চাঁদের মাঝে সাঈদীকে দেখা যাচ্ছে। আপনারা সবাই ঘুম থেকে উঠুন। এভাবে কয়েকবার ঘোষণা দেয়ার পর সংশ্লিষ্ট মসজিদের আশেপাশে শত শত নারী-পুরুষ জড়ো হয়ে আকাশের চাঁদের দিকে তাকিয়ে থাকেন। এ গুজবকে কেন্দ্র করে রাত সাড়ে ১০টা থেকে ২টা পর্যন্ত সাঈদীর মুক্তির দাবিতে পাড়ায় পাড়ায় মিছিল করা হয়। হাতিয়ারপুল জামে মসজিদ, ভোয়ালিয়া পাড়া মসজিদ, দক্ষিণ ভোয়ালিয়া পাড়ার ভাঙ্গা মসজিদ, খলিফা পাড়া মসজিদ, সামিয়ার পাড়া মসজিদ, ছিটুয়া পাড়া মসজিদ, দক্ষিণ সামিয়ার পাড়া লামবইত্তাবো মসজিদ, ছগিরা পাড়া মসজিদ, মিয়াজান পাড়া মসজিদ, সাইল্ল্যা বো মসজিদ, চাঁদগাজী মসজিদ, কেওচিয়া মসজিদ, সোনাকানিয়া মসজিদ, পূর্ব-পশ্চিম গাটিয়াডাঙ্গা মসজিদ, রামপুর মসজিদ, মন্তার বো মসজিদ, উত্তর ছমদর খন্দকার পাড়া মসজিদসহ উপজেলার বিভিন্ন মসজিদে মাইকে এগুজব প্রচারে অগ্রণী ভূমিকা রাখে। বেলকুচি (সিরাজগঞ্জ) সংবাদদাতা জানান, চাঁদে সাঈদীকে দেখতে পাওয়ার গুজব ছড়িয়ে পড়লে শত শত মানুষ বাড়ির বাইরে বেরিয়ে আসেন। http://archive.ittefaq.com.bd/index.php?ref=MjBfMDNfMDRfMTNfMV8yXzFfMjM1NjI=
হঠাত্ জামায়াত-শিবির কর্মীরা হরতাল সমর্থনে ও সাঈদীর মুক্তির দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। তারা বেলকুচি উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় ভাংচুর করে ও আসবাবপত্রে আগুন ধরিয়ে দেয়। সেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদকের মেরাজ কম্পিউটারের দোকান লুট করে। এরপর বেলকুচি থানা ঘেরাও করার চেষ্টা করলে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে ২০ রাউন্ড রাবার বুলেট ও টিয়ার সেল ছোঁড়ে। পরে সেখান থেকে ফিরে বিক্ষোভকারীরা শ্রমিক লীগের অফিস ভাংচুর করে। দুপুরে বিক্ষোভকারীরা উপজেলার কান্দাপাড়া বাজার ১১টি দোকান ও ৩টি আওয়ামী লীগ সমর্থকদের বাড়ি ভাংচুর ও লুট করে চলে যায়। পরে বেলকুচি উপজেলায় আওয়ামী লীগ কার্যালয় ভাংচুরের ঘটনায় বিক্ষুব্ধ আওয়ামী লীগ কর্মীরা প্রতিরোধ গড়ে তোলে। আওয়ামী লীগ কর্মীরা উপজেলা জামায়াত অফিস, জামায়াত নেতা আব্দুল মান্নানের বাড়ি ভাংচুর ও অগ্নি সংযোগ করে। এছাড়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি জামাল উদ্দিন ভূইয়ার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মোহাম্মদীয়া স্টিল করপোরেশন, বিএনপি নেতা নুর হোসেন মণ্ডলের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মণ্ডল ট্রেডার্স, বিএনপি সর্মথকদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আল্লার দেয়া ভাণ্ডার, রিতা ফার্মেসি, শামিম ফার্মেসি, মিম ডেন্টাল, কমফোড প্যাথোলজি, খান অটো হাউজ ভাংচুর, অগ্নি সংযোগ করে বিক্ষুব্ধরা। দুপুরে উপজেলা বিএনপি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মান্নান আওয়ামী লীগ কর্মীদের হাতে লাঞ্ছিত হন। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে বেলকুচি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে তার অবস্থা খারাপ হলে তাকে এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এলাকায় বিজিবি, পুলিশ ও র্যাব মোতায়েন রয়েছে। http://archive.prothom-alo.com/detail/date/2013-03-03/news/333589
পরবর্তী পর্যাবেক্ষনে দেখলাম নিশিরাতে বিভিন্ন মসজিদ হতে মাইকের এই কান্ডজ্ঞানহীন আহ্বান কি প্রমাণ করে না , সহজ-সরল ধর্মপ্রাণ মহিলা পুরুষ জামাত-শিবিরের ধর্মীয় মিথ্যাচার বা ধর্মীয় ভন্ডামির আরেকবার প্রকাশ্য এবং হাস্যকরের খোরাক হয়ে পড়লেন। যখনি ধর্মান্ধ মানুষরা রাস্তায় নেমে আসল কিছুক্ষনের মধ্যেই নারায়ে তাকবির শ্লোগান আছড়ে পড়তে শুরু করল। চাপাবাজ কুলঙ্গাররা বজ্রকন্ঠে মাইকে সমানতালে মিথ্যাচার করতে লাগল এই সরকার নাস্তিক, এই সরকারের জন্যে দেশের আলেমরা আজ কারাগারে, এই সরকার ইসলাম ধর্মকে নিশ্চিহ্ন করবে, অচীরেই এই দেশে গজব নামবে আল্লাহ পাক এই জন্যে সাঈদী সাহেব কে চাঁদে হেফাজত করে রেখেছেন। মূর্হুমূহ শ্লোগানের মধ্যে দিয়ে তারা ফজরের নামাজের সাথে সাথে পাখি জাগার আহে-ভাগেই লাঠিসোটা, দেশি অস্ত্র নিয়ে পুলিশের উপর হামলে পড়ে, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, বাসা-বাড়িতে ভাংচুর শুরু করে, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, রেলওয়ে ষ্টেশনে আগুন, উপজেলা প্রশাসনে আগুনে দিয়ে শত শত কক্টেল বিস্ফরন করে , প্রকাশ্যে অস্ত্র উঁচিয়ে গোলাগুলির এক পর্যায়ে ইতিমধ্যে ৭ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। ভোর ৬টা থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত পৌরা এলাকা জুড়ে বিভিষিকাময় তান্ডবের সৃষ্টি হলে, সরকার ১৪৪ ধারা জারি করে উত্তপ্ত পরিবেশকে এখন পুরোপুরি শান্ত করতে সক্ষম হয়েছে।
http://www.shobdoneer.com/kazladidi/41585
তানবীরা
০৪/০৫/২০১৫
ধর্মের চেয়ে বড় মাদক পৃথিবীতে এখনো আবিষ্কার হয়নি। মানুষকে স্রেফ অমানুষ করে তোলে…
ধর্মকে তার নিজস্ব জায়গাতে রেখে চলাই উত্তম। কিন্তু কেউ সেটা মানে না। সমাজে ধর্মই হল এমন একটা হাতিয়ার যেখানে কোন যুক্তিবোধ কাজ করে না। মানুষ ধর্মের সৃষ্টি না, ধর্মই মানুষের সৃষ্টি। লেখাটি অত্যন্ত চমৎকার হয়েছে। পড়ে ভাল লাগল। আশা করছি ভবিষ্যৎতেও এই ধরনের লেখা পড়তে পারব।
খুব হাস্যকর আমার কাছে । ধর্মের নামে আরো কিছু দেখতে হবে । ধর্ম মানবের কিছু অংশ পঙ্গু করে রেখেছে আজো পর্যন্ত । অসাধারণ লেখা হলো ।
ধর্মই সবচেয়ে বড় সিডেটিভ যা মানুষের বিবেককে ঘুম পাড়িয়ে রাখতে পারে অন্ততকাল
চমৎকার উপস্থাপন হয়েছে । গল্প, মিথ , বাস্তব ঘটনা আর সংবাদ পত্রের খবর মিলে মিশে আছে। এসব বলা অব্যাহত রাখুন।
ধন্যবাদ জানবেন, পাশে থাকবেন
অশিক্ষিত ও অরধশিক্ষিত লোকদের ধর্ম বিশ্বাসকে কাজে লাগিয়ে, একদল ধর্মান্ধের আরাজক্তা সৃষ্ঠি করাকে সমর্থন করা যায়না। সরকারকে কঠোর হাতে দমন করতে হবে।
সরকার ভোট গুনতে ব্যস্ত, অরাজকতায় তাদের কিছু যায় আসে না
ফটোশপের মাধ্যমে সাঈদী সাবের নুরানি চেহারা দেখানো হল চাঁদে। যে বা যারা এই কাজ করে বাংলাদেশের বিশ্বাসীদের বোকা বানিয়েছে তারা মিথ্যাচারী এবং ভণ্ড। কিন্তু সাঈদী এই অপকর্মের কোন প্রতিবাদ না করে নীরবে সমর্থন করায় বোঝা গেল সে আরও বড় মিথ্যাচারী ও ভণ্ড। আর কেউ না জানুক অন্তত সে তো জানে এটা ফটোশপের কারসাজি। আমাদের দেশের বিশ্বাসীদের চিন্তা করা উচিত যে কারো এধরনের অলৌকিক ক্ষমতা থাকলে সে চাঁদের বুড়ির হাত ধরে বৈকালিক ভ্রমণে না গিয়ে অযথা কেন দেইল্যা রাজাকারের পাপের বোঝা মাথায় নিয়ে জেলের ঘানি টানবে।
সাঈদীতো আজকের ভন্ড না, তাই আমি অবাক হই নি
বিশ্বাসীরা নিজেরাই এই সমস্ত গাঁজাখুরি হজম করার জন্য মন মানসিকতা গড়ে তুললে দায় কি তাদের নিজেদের ঘাড়েও বেশ খানিকটাই পড়ে না?
তারা নিজেরা গাভীর পেটে আল্লাহু আকবার লেখা দেখা গেছে, গাছের ভেতর নকশায় আল্লাহর নাম দেখা গেছে…কাবা শরিফের ওপর কদরের রাতে ফেরেশতার ছবি দেখা গেছে এসবের জগতে বসবাস করলে চাঁদে সাঈদী হুজুর দেখা যাচ্ছে এমন সংবাদের অবিশ্বাস করবে কেমন করে? যারা এই জাতীয় সংবাদ লাইক দেন, শেয়ার করেন তাদের অন্তত জামাত শিবির গালিগালাজ করার আগে আয়নায় নিজ চেহারা দেখা উচিত।
আমার নিজের চেনা মহলে অন্তত দুই জন আছেন যারা এই ঘটনার পর জামাত শিবির ধর্মব্যাবসায়ীরা দেশ শেষ করে ফেলল…সাধারন মানুষের বিশ্বাস নিয়ে নোংরা খেলা খেলল বানী দিয়েছেন, মজার ব্যাপার হল এদের বছর কয়েক আগে দেখেছি নেপালে মসজিদের গম্ভুজ নিজে উড়ে যাচ্ছে সেই ফেক ভিডিও দেখে ভাবে গদগদ হয়ে শেয়ার করতে।
বিশ্বাসীরা অন্ধভাবে বিশ্বাস করে বলেই এসব রুপকথার প্রচার আর প্রসার ঘটে। আর অলৌকিকতার প্রশ্ন যখন আসে তখন আমাদের দেশের বেশীরভাগ মানুষই বোধহয় এই দোষে দোষী। আপনি যেমন বলেছেন, ফটোশপ করা, ধর্মীয় মাহাত্নের উদ্ভট দাবীর স্ট্যাটাসগুলোতে লাইকের সংখ্যা আর ভক্তদের গদ গদ মন্তব্য দেখলে মনেই হয় না যে মানুষ নামের প্রজাতিটিরই একাংশ জ্ঞান-বিজ্ঞানে এতো এগিয়ে গেছে।
যে দেশে যেখানে সেখানে মূত্র ঠেকাতে আরবী ওয়ালে লিখে রাখলেই কাজ হয় সেখানে শেয়ার দেয়াতো পবিত্র দায়িত্ব মাত্র
… … … আর সব’চে ভয়ঙ্কর ব্যপার এদেরকে আবার ধর্ম বা কুসংস্কার শেখাবার দ্বায়িত্ব নিয়ে ফেলে সুশীল কিছু ধর্মান্ধ। সহজ সরল মানুষ; যারা সংখ্যায় অনেক, ওরা শেখে জ্ঞানপাপী এইসব সুশীলদেরকাছ থেকে। শিখিয়ে চলে ওদের আশপাশের আরো অনেক সহজ সরল মানুষদের। নতুন প্রজন্ম আর খেটে খাওয়া নারীরা’ই হয়তো প্রতিরোধে প্রতিবাদে মুক্ত করবে মানুষ, ছড়াবে মুক্তির আলো।
আমি কোন আশা রাখি না কারো কাছে। যতো বড় ডিগ্রীধারী কিংবা পেশাগত ক্ষেত্রে যতো সফল মানুষই হোক না কেন ধর্মের ব্যাপারে সবাই বড্ড দুর্বল