প্রারম্ভিকা
গত ২৬শে ফেব্রুয়ারী বাংলা ব্লগ জগতের অন্যতম দিকপাল অভিজিৎ রায়কে হারালাম। অভিজিৎ রায় হত্যা হওয়ার পর একদল ‘মডারেট’ স্বভাবতই দাঁড়িয়ে গেল। বলতে লাগল, “হত্যাকান্ডকে সমর্থন করি না কিন্তু… অভিজিৎ রায় উগ্রবাদী নাস্তিক। তার লেখায় ধর্মানুভূতি আহত হয়েছে…ব্লা ব্লা ব্লা”। প্রায় সময়ই দেখা যায় মৌলবাদীরা হত্যা করে যে রক্তের দাগ রেখে যায় পরবর্তীতে এই দলটি এসে ‘কিন্তু…অথবা…’ ফিনাইল দিয়ে সে দাগ পরিষ্কার করে শেষমেশ ‘শান্তি’ অনুস্বিদ্ধান্তে এসে পৌছায়। কারা এরা?
২০১৩ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারী থাবা বাবা মারা যাওয়ার পরও এই ক্লীবের দল এখনকার মতই ‘কিন্তু… অথবা…’ ইত্যাদি বলে হত্যাকান্ডের সাফাই গাইতে শুরু করেছিল। সেসময় সদ্য প্রয়াত অভিজিৎ রায় ‘উগ্র নাস্তিক বনাম উগ্র আস্তিকদের চিপান্বেষী ‘সেলিব্রেটি’ ব্লগারদের জন্য’ নামে অসাধারণ একটি নোট লিখেছিলেন। যা দিয়ে ধুয়ে দিয়েছিলেন এই ক্লীবদের। আজ তার মৃত্যুর পর এই ক্লীবেরা আবারও একইভাবে সক্রিয়। অভিজিৎ রায় নেই। বিষাদের এ সময়ে তাই আবারো ক্লীবদের বিরুদ্ধে লেখার ক্ষুদ্র একটা প্রয়াস এটি।
গত ২৮ তারিখ হতে ২০-২৫ জন ক্লীবের(মডারেট সেলিব্রেটিদের) গত দু-বছরের স্ট্যাটাস ঘাটাঘাটি করলাম। তারপর তাদের ছায়া অবলম্বনে সৃষ্টি করলাম ‘শাব্দিক রেহান’কে। অভিজিৎ রায় পূর্বে উল্লেখিত নোটে দেখাতে চেয়েছিলেন যে এই সব ক্লীবেরা অনেক ‘পিছলা’ প্রকৃতির। এদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য এরা নিজেরাই জানে না। তেমনি জানে না তারা কি বিশ্বাস করে। তাই ছাই হিসেবে তাদের গত দু-বছরের স্ট্যাটাস ব্যবহার করে তাদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য বের করেছি। তারপর মুখোমুখি করে দিয়েছি so called উগ্র আস্তিক এবং উগ্র নাস্তিকদের। কি ঘটল তারপর? জানতে চাইলে নিচে ক্রল করতে থাকুন। ও হ্যাঁ, গল্পটি কিন্তু অভিজিৎ রায়ের লেখা ‘উগ্র নাস্তিক বনাম উগ্র আস্তিকদের চিপান্বেষী ‘সেলিব্রেটি’ ব্লগারদের জন্য’ নোটটি থেকে উৎসাহিত হয়ে লেখা।
১.সকালবেলা ঘুম ভাঙলো ফোনের শব্দে।
-“শাব্দিক রেহান বলছেন?”
-“জ্বি। কে বলছেন?”
-“আমি প্লাজমা টিভি থেকে বলছি। আমাদের ‘আগামীর বাংলাদেশ’ অনুষ্ঠানের জন্য আমরা একজন ফেবু সেলিব্রেটি অথবা ব্লগার খুঁজছিলাম। আপনার প্রোফাইল আমাদের পছন্দ হয়েছে। আপনাকে আলোচক হিসেবে আমাদের মধ্যে আশা করছি। আপনি কি রাজি আছেন?”
ধড়মড় করে বিছানা থেকে লাফিয়ে উঠলাম। তারপর নিজেকে কোনোভাবে সামলে কাঁপা গলায় বললাম
-“আসলে আমার সময় খুব একটা নেই। তা কোনদিন আসতে হবে?”
-“মার্চ মাসের ৩ তারিখে। আসতে পারবেন তো? আমরা কিন্তু আপনার জন্য গাড়ি পাঠাবো। ও হ্যাঁ, বলতে ভুলে গেছি, অনুষ্ঠানটি লাইভ দেখানো হবে”।
আমায় আর পায় কে!কিছুক্ষণ ইচ্ছাকৃতভাবে হোল্ড করে রাখার পর ‘আসবো’ জানিয়ে দিলাম। তারপর তড়িঘড়ি করে ফেবুতে স্ট্যাটাস দিলাম।১০ হাজার ফলোয়ারযুক্ত একাউন্টের সর্বকালের রেকর্ড ছাড়ানো লাইক(২০০০ লাইক) আর কমেন্ট(৫০০ কমেন্ট) পেলাম।আগের স্ট্যাটাস(তুমার সাথে লুতুপুতু খাবো হে বালিকা) যদিও ৭০০লাইক, ৮০ কমেন্ট আর ১২ শেয়ার খেয়েছে। অপেক্ষায় রইলাম সেদিনের জন্য।
২. টিভি ভবনের ভেতরে ঢুকে অনেক কষ্টে রেকর্ডিং রুম খুজে বের করলাম। হালকা মেকওভার নেওয়ার পর ওয়েটিং রুমে বসলাম। কিছুটা নার্ভাস ছিলাম। অনুষ্ঠানটির উপস্থাপক আবদুল আলীম ভাই নিজেই এসে রেকর্ডিং রুমের দিকে নিয়ে যেতে থাকলেন। রেকর্ডিং রুমের প্রাথমিক কাজ শেষ করে অনুষ্ঠান শুরু হল।
-“বসন্তের এ সুন্দর সকালে সবাইকে স্বাগতম আমাদের ‘আগামীর বাংলাদেশ’ অনুষ্ঠানের পক্ষ থেকে। আমি আলীম। বরাবরের মত এবারও আমাদের সাথে উপস্থিত আছেন একজন বিশিষ্ট মানুষ। তাকে ব্লগার কিংবা ফেবু সেলিব্রেটি বললে কম বলা হবে। তাকে বলা হচ্ছে ‘নতুন হুমায়ুন আহমেদ’। তিনি আর কেউ নন, তিনি হলেন সবার প্রিয় শাব্দিক রেহান। আপনারা উনার সাথে কথা বলতে ডায়েল করুন ৯৮৮৭৭৬৫ এই নাম্বারে। আর টিভির ভলিউম অবশ্যই কমিয়ে রাখবেন। রেহান ভাই কেমন আছেন”?
-(আপ্লুত হয়ে বললাম)“আছি ভালই”।
-“ফেবুতে তো আপনার তুঙ্গস্পর্শী জনপ্রিয়তা। আপনার প্রায় স্ট্যাটাস হাজার খানেক লাইক-কমেন্ট পায়। অনেকেই আপনাকে নতুন হুমায়ূন আহমেদ বলে।এটাকে আপনি কিভাবে দেখেন?
-(এখন একটু ঠাট বজায় রাখলাম)“আসলে লেখা কারো ভাল লাগতেই পারে। আমি তো আসলে লেখার মাধ্যমে পাঠকদের দৈনন্দিন জীবনের নানা ঘটনাকে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করি। এতে যদি কারো আমার লেখা ভাল লেগে যায়, তা তো দোষের কিছু না”।
-“লেখার জন্য লেখক নাকি পাঠকের জন্য লেখক”?
-(বলদ নাকি!)“পাঠক যদি একটা লেখা পড়ে যদি তা বুঝতে না পারে তখন তা অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যাবে। বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর কথা চিন্তা করে লেখা লিখতে হবে”।
-“এতে করে কি লেখকের স্বকীয়তা কি টিকে থাকে বলে আপনি মনে করেন? বাংলা ভাষায় লেখা নিরিক্ষাধর্মী এবং গবেষণাধর্মী অনেক লেখাই তো তাহলে অপ্রাসঙ্গিক”।
-(একটা ব্যাপার নিয়ে এত্ত ত্যানা প্যাচাচ্ছে কেন!)“আসলে আমি এটা বোঝাতে চাই নি। বর্তমানে আধুনিক যুগে ফেসবুক, ব্লগ ইত্যাদি যেমন তথ্য তথা লেখা আদানপ্রদানকে সহজ করছে। এগুলোর ব্যবহারের ফলে আমরা সহজভাবে আমাদের মনের ভাব প্রকাশ করতে পারছি। আধুনিক যুগের বৈশিষ্ট্য তাই সহজ লেখা বলে মনে করি”।
-“আপনি এখন আধুনিক যুগের কথা বললেন। আধুনিক যুগ বলতে আপনি কি বোঝাতে চেয়েছেন”?
-“এখন হচ্ছে গ্লোবালাইজেশনের যুগ। ব্লগ, ইন্টারনেট, স্মার্টফোন ইত্যাদির ব্যবহার উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। গার্মেন্টস সেকটরে আমাদের নারীদের অবদান অনস্বীকার্য। তাছাড়া আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নারীদের উপস্থিতি দিন দিন বাড়ছে। অত্যাধুনিক তথ্য-প্রযুক্তির সুবিধা নিয়ে আমরা এখন পুরো বিশ্বের সাথে সংযুক্ত। এটাই তো আধুনিক যুগ”।
-“একটু আগে আপনি বলেছেন সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতকে প্রাধান্য দেয়া উচিত। বাংলাদেশের তো একটা বড় অংশই আলেম-ওলামা সমাজ। তারা দাবী নিয়ে এসেছিল যে, মেয়েদের ক্লাস ফাইভের বেশি পড়াশুনা করা উচিত না। ঘরের বাইরে তো যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। তারমানে দেখা গেছে যে, মেয়েদের এভাবে বহির্মুখী হওয়া ধর্ম সম্মত না”।
-“দেখুন ধর্মের প্রতি অগাধ বিশ্বাস রেখেই বলছি তারা আসলে ধর্মের ভুল ব্যাখ্যা করছেন। ধর্মে আসলে এ ধরনের কোনো কথা লেখা আছে বলে আমি মনে করি না। কিছু মানুষ এটার ভুল ব্যাখ্যা করেন”।
ক্রিং ক্রিং করে টেলিফোন বেজে উঠল। উপস্থাপক বললেন
-“অনুষ্ঠানের এ পর্যায়ে দর্শকদের মতামত জানতে চাইছি। হ্যালো, স্লামালিকুম। কে বলছেন”?
-“ওয়ালাইকুম আসসালাম। আমি খরিদপুর কওমি মাদ্রাসার প্রধান হাসেম আলী মাদ্রাজী বলছি। এইমাত্র এই বল্গার বললেন যে আমরা ধর্মের ভুল ব্যাখ্যা প্রদান করি। উনি কি জানেন যে আমাদের ধর্মে আছে-‘“আর তোমরা গৃহে অবস্থান করো এবং জাহিলী যুগের মতো নিজেদেরকে প্রদর্শন করে বেড়াবে না।” [সূরা আল আহযাব : ৩৩]। সুতরাং আমরা যা বলেছি তা ধর্মসম্মত। না জেনে ধর্মের কথা বলতে আসবেন না”।
-“ধন্যবাদ হুজুরকে। ফিরে আসছি রেহান ভাইয়ের কাছে। হুজুরের বক্তব্য সম্পর্কে কি কিছু বলার আছে”?
-(খাইছে আমারে!)“আমি নিজে একজন খুবই ঈশ্বরে বিশ্বাসী মানুষ। আমি নিয়মিত নামাজ পড়ার চেষ্টা করি। শুক্রবারে কখনই নামাজ মিস করি না। আসলে ধর্মের সংজ্ঞা শিক্ষিত-অশিক্ষিত, শ্রেণীভেদে একেক রকম। আমি হয়তো হুজুরের মত ধর্মের ব্যাপারে এতো প্রাজ্ঞ নই। তবে ধর্মের প্রতি আমার গভীর বিশ্বাস আছে”।
-“ধর্ম এবং সংস্কৃতি এই ব্যাপারদুটোকে আপনি কিভাবে দেখেন”?
-(হেহ! এইটা কুনু প্রশ্ন হইল! দাঁডা…)“সংস্কৃতি হচ্ছে সমাজের মানুষের সার্বিক কর্মকান্ড এবং তা একটা নির্দিষ্ট সময়কে প্রতিনিধিত্ব করে। আর তার একটা অংশ হচ্ছে ধর্ম। ধর্ম হচ্ছে মানুষের বিশ্বাস সম্বলিত সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড। যেমন আমাদের আছে বিভিন্ন ধর্ম, বিভিন্ন বিশ্বাস সম্বলিত বাঙালী সংস্কৃতি। এখানে মানুষ যার যার ধর্ম পালন করে। আমরা সবাই মিলে মেলায় যাই, ঘোরাঘুরি করি। আবার ঈদ,পূজাও একসাথে পালন করি। কিন্তু আমাদের ধর্ম আলাদা। আশা করি ধর্ম আর সংস্কৃতি দুটোই আলাদা জিনিস”।
ক্রিং ক্রিং। আবার ফোন বেজে উঠল। আতঁকে উঠলাম আমি। উপস্থাপক বললেন,
-“আবার সময় হলো দর্শকদের কাছ থেকে মতামত জানার। চলে যাচ্ছি দর্শকদের কাছে। হ্যালো, স্লামালিকুম। কে বলছেন”?
-“আমি হরিহরপুর জামে মসজিদের ইমাম আব্দুল মতিন মিয়া। আমি রেহান সাহেবের সাথে কথা বলতে চাই”।
বললাম,
-“জ্বি বলুন। আমি শুনছি”।
-“আপনি এই মাত্র বললেন যে ধর্ম সংস্কৃতির অঙ্গ। আমাদের ধর্মগ্রন্থে আছে “নিঃসন্দেহে ইসলামই আল্লাহর কাছে একমাত্র দীন তথা জীবন ব্যবস্থা”। [আল ইমরান : ১৯] তারমানে ইসলামে মানবজাতির যতধরনের সমস্যা আছে এবং কিভাবে জীবন ধারণ করতে হবে তার সল্যুশন একমাত্র ইসলামেই দেয়া আছে। তারমানে ইসলাম নিজেই একটি সংস্কৃতি। তাই আমরা যদি মুসলান হই তবে বাঙালির মত একটা কুফ্রি ব্যাপার পালন করতে পারি না।(কিছুটা উত্তেজিত হয়ে) আপনি একটা কুফ্রি ব্যাপারকে আমাদের উপর চাপিয়ে দিতে পারেন না। যদি করেন তাহলে বুঝে নিতে হবে আপনি মুরতাদ!…”
এই পর্যায়ে ফোন কেটে দেয়া হয়।
-“ধন্যবাদ হুজুরকে। রেহান ভাই এ সম্পর্কে আপনার বক্তব্য কি”?(উপস্থাপক)
-“আসলে হুজুর যেটা বলেছেন এ ব্যাপারটার সাথে আমি কিছুটা ভিন্নমত পোষণ করি। হুজুরের প্রতি সম্মান রেখেই বলছি, ধর্ম আসলে যার যার রাষ্ট্র কিন্তু সবার। আমার দেশ ধর্ম নিরপেক্ষ। আর আমাদের যে ধর্মটা আছে এর অন্তর্নিহিত সৌন্দর্য বারবার আমাকে বিমোহিত করে। এ গ্রন্থ আসলেই চিরকালের জন্য। খোদ খোদাতালা লিখে পাঠিয়েছেন। শুধু তাই নয় এ গ্রন্থ থেকেই আসলে আধুনিক বিজ্ঞানের জন্ম। এর মধ্যে লুকিয়ে আছে অনাবিল শান্তি। তাই এটা নিয়ে আমি সবসময়ই গর্ববোধ করি”।
এমন সময় আবার ক্রিং ক্রিং করে উঠল ফোন। আবার কেঁপে উঠলাম আমি! উপস্থাপক বললেন,
-“আবারো দর্শকদের মতামত নিচ্ছি। হ্যালো স্লামালিকুম। কে বলছেন”?
-“আমি ব্লগার অনিঃশেষ যাত্রী বলছি। শাব্দিক ভাইয়ের সাথে কথা বলতে চাই। কেমন আছেন শাব্দিক ভাই”?
-“এই তো অনিঃশেষ, কি খবর তোমার?(হালা নাস্তিক। তুই আমারে ফোন দিছস কেন!রেগে গেলেও প্রকাশ করি নি)
-“এই তো ভাই ভালো আছি। আপনার কাছে দুটো প্রশ্ন ছিলো”।
-“বলো…”(এরে যদি ব্লক মারা যাইতো!)
-“আপনি জানেন কিছুদিন আগেই আমাদের প্রিয় ব্লগার অভিজিৎ রায়কে হত্যা করা হয়েছে। এ নিয়ে আপনি স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন, “অভিজিৎ রায় একজন উগ্রবাদী নাস্তিক। আর তার প্রতিষ্ঠিত ব্লগ ‘মুক্তমনা’ ক্রমাগতই ধর্মকে আঘাত করে। ঐ ব্লগে গেলে আমার গা ঘিন ঘিন করে। আর তা সমাজে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করে। তবে এ হত্যায় আমার সমর্থন নেই।কতিপয়ের আচরণে এটা প্রমাণিত হয় না যে ইসলাম শান্তির ধর্ম নয়”। আপনার কাছে আমার প্রশ্ন দুটো হচ্ছে-
১. অভিজিৎ রায় তো অন্য ধর্ম সম্পর্কেও সমালোচনা করে লেখালেখি করেছেন। তারা কেন তাকে হত্যা করলো না?
২. অভিজিৎ দা মারা যাওয়ার পর এতো অবিশ্বাসী স্ট্যাটাস দিল। কই, কেউ তো বলল না যে ‘ঐ দুটো খুনিকে হাতের কাছে পেলে থাবড়াইয়া মেরে ফেলবো’! অথচ অভিজিৎ রায় জীবিত থাকতে শান্তিপালনকারীরা তো তাকে হত্যার জন্য উঠে পড়ে লেগে শেষমেশ হত্যা করেই ফেললো। এতে কি প্রতীয়মান হয় না যে কোনটা বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করে; কোন মতবাদ আসলেই শান্তির? ধন্যবাদ”।
-“রেহান ভাইয়ের কাছে চলে যাচ্ছি। রেহান ভাই”।
-(এই শালারে কোপাইল না কেন!) “আসলে অভিজিৎ দা আমারও একজন প্রিয় ব্যক্তিত্ব ছিলেন। তবে উনার সাথে সবসময় আমার মতের মিল হতো না। উনার এভাবে ধর্মকে নিয়ে লেখা ঠিক হয় নি। কতিপয় দুষ্কৃতকারীর জন্য একটা ধর্মকে অপবাদ দেয়াটা বোকামী”।
আবার ক্রিং ক্রিং করে উঠল ফোন। কেঁপে উঠলাম আবার!হাত ঘামছে।
-“আমি অসীম পান্থ বলছি ভাই, চিনতে পেরেছেন”?
-(আরেক নাস্তিক ফোন দিছে!ইশ! ফেসবুকে থাকলে এর লিঙ্ক বাশেরকেল্লায় পাঠাইয়া দিতাম! ফাউল প্রশ্ন করলে বাসায় গিয়াই পাঠাইতাছি!) “আরে পান্থ সাহেব কি খবর কেমন আছেন”?
-“আছি ভালই। আপনার কাছে প্রশ্ন ছিল”।
-“নিশ্চয়ই। করুন”।
-“আপনি বলেছেন যে ধর্ম বিজ্ঞান সম্মত। কিন্তু আমার মনে হয় এটা আসলে আপনার অনুস্বিদ্ধান্ত। বিজ্ঞানের উপর আমাদের বিশ্বাসটা এখন আস্থায় পরিণত হয়েছে। কোনো কিছু বিজ্ঞান সম্মত হলেই কেবল তা চিরস্থায়ী হতে পারে- এ ধারণা অসচেতনভাবে আপনার মস্তিস্কে রয়েছে। তাই আপনি বিজ্ঞান আর ধর্মের মিল খুঁজতে যান এবং খুঁজে পান। ধরে নিচ্ছি আপনি আপনার ধর্মগ্রন্থ পড়েছেন। আপনার কাছে পৃথিবী সূর্যের চারিদিকে ঘুরছে। একই সাথে কিছুদিন আগে সৌদি আরবের একজন আলেম গবেষণা করে পেয়েছেন যে পৃথিবী স্থির। একই বিষয় পড়ে যখন সম্পূর্ণ বিপরীত দুটো ধারণা দুজনের মধ্যে জন্মায়-এটাকে কিভাবে বিজ্ঞান বলবেন?
-“ধন্যবাদ পান্থকে। রেহান ভাইয়ের কাছে ফিরে যাচ্ছি; রেহান ভাই…”
-(শালা! দাড়া, বাসায় যাইয়া লই!)“আসলে ধর্মকে বুঝতে হলে ধর্মের পাশাপাশি বিজ্ঞানও পড়তে হবে। সৌদি আরবের হুজুর বিজ্ঞান সম্পর্কে জানেন না তাই হয়তো তিনি আসল ব্যাপারটা বুঝতে পারেন নি”।
আবার ক্রিং ক্রিং করে ফোন বেজে উঠল। মেজাজটা ধীরে ধীরে চড়ে যাচ্ছে ফোনের শব্দে। উপস্থাপক ফোন রিসিভ করে দিলেন-
-“বাবা, আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃ-বিজ্ঞান বিভাগের সাবেক প্রফেসর গোলাম রাব্বানী বলছি। আমি অনেকক্ষণ যাবৎ তোমার অনুষ্ঠান দেখছি। তুমি তো কোনো নির্দিষ্ট মতামত বা বক্তব্যই তো এখনও পর্যন্ত দাও নি।আর তোমার বক্তব্য মতে বিজ্ঞান পড়তে পড়তে ধর্মের সাহায্য লাগে না কিন্তু ধর্ম পড়তে বিজ্ঞানের সাহায্য লাগে। তারমানে ধর্ম পরকাষ্ঠা! তুমি তো ধর্মের অবমাননা করলে! যাই হোক তোমাকে কিছু কথা বলার ছিল”।
-“জ্বি বলুন”।(কান গরম হয়ে গেল। শালা বুইড়া! ফিলোসফি কপচায়!)
-“১৯৫৩ সালে পাকিস্তানে দাঙ্গার পর বিচারক মুনীর চৌধুরীকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্তের স্বার্থে ‘সহি মুসলমানের’ সংজ্ঞার দরকার পড়ল। ১৭জন আলেমকে নিয়ে গঠন করা হলো বোর্ড। বোর্ড মিটিং শেষে দেখা গেল যে সহী মুসলমানের কোনো সংজ্ঞা নিয়ে একমত হতে পারছেন না আলেমরা। সহী মুসলমানের একটা সংজ্ঞা দিতে পারবে কি? না পারলে এটা অন্তত বলো যে জিনিসের ব্যাপারে কেউ একমত হতে পারে না তা চিরস্থায়ী কিভাবে হয়? ধন্যবাদ”।
-“আমি হয়তো সব কিছু জানি না। কিন্তু একজন যিনি সবাইকে সৃষ্টি করেছেন তিনি হয়তো এগুলোর উত্তর জানেন”।
আবার ক্রিং ক্রিং করে উঠল ফোন। কান পুরোপুরি গরম হয়ে উঠল। উপস্থাপক বললেন,
-“হ্যালো, স্লামালিকুম”।
-“কুত্তারবাচচা মুরতাদ! তুই সৌদির হুজুররে নিয়ে খারাপ কথা কইছস! তোর পুটকি…”
ফোন কেটে গেল। উপস্থাপক বললেন,
-“দুঃখিত। আসলে কিছু কিছু মানুষ এখনও মত প্রকাশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা মানে ওদের কাছে গালাগালি করার স্বাধীনতা। এ ঘটনার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত”।
ঠিক এমন সময় আবার ক্রিং ক্রিং করে বেজে উঠল ফোন। এবারে সত্যি সত্যি মেজাজ খিচড়ে গেল! উপস্থাপক বলতে শুরু করলেন,
-“এটাই আমাদের শেষ ফোন এরপর আমরা অনুষ্ঠানটির সমাপ্তি টানবো। হ্যালো স্লামালিকুম। কে বলছেন”?
-“আমি অবলা অগ্নিকন্যা ওরফে শাহনুমা হাসান। আমি এ অনুষ্ঠানটি পুরোটাই দেখেছি। অনুষ্ঠানটিতে আপনি আধুনিকতা, নারীবাদ, ধর্ম, সংস্কৃতি, বিজ্ঞান ও ধর্মের সাথে বিজ্ঞানের সম্পর্ক- এ বিষয়গুলোর উপর কথা বলতে চেয়েছেন। প্রতিবারই আপনি যুক্তির আঘাতে ক্ষত বিক্ষত হয়েছেন। বিরুদ্ধ যুক্তি দাঁড় করানো তো দূরের কথা আপনি সেফসাইডে থেকে এমন বক্তব্য দিয়েছেন যা আসলে কোনো অর্থ প্রকাশ করে না। শেষমেশ প্রফেসরের কাছে তো উড়েই গেলেন। আপনারাই যদি জনপ্রিয় হোন তাহলে দেশের যে কি অবস্থা তা তো বোঝাই যাচ্ছে। আপনার কাছে শেষ প্রশ্ন হচ্ছে-‘ধর্ষণের জন্য মেয়েরা কতটুকু দায়ী কিংবা আদৌ দায়ী কি না”?
আর সহ্য করা সম্ভব হলো না! বললাম,
-“অবশ্যই মেয়েরা দায়ী। বুকে ওড়না না দিয়ে গলায় দিয়ে মাগীগিরি করে বেড়াবে তো মানুষ ধর্ষণ করবে না তো কি বসে বাল ছিড়বে”?
কিছুক্ষণের জন্য আশপাশ থমথমে হয়ে উঠল। বুঝলাম কি করেছি আমি!! মাথা পুরো ফাঁকা। শুনতে পেলাম ফোন হতে শব্দ আসছে,
-“এইতো ল্যাঞ্জা বেরোলো! আমি আগেই…”
ফোন কেটে গেল। সাথে সাথে সম্প্রচারও।
৩. ঘন্টা দেড়েক পরে সম্মানী নিয়ে বের হয়ে এলাম টিভি ভবন থেকে। বাইরে প্রচন্ড রোদ উঠেছে। বাতাস বইছে। কেমন জানি অবসন্ন লাগছে নিজেকে। প্রতাড়িতও। ট্যাক্সি ডাকলাম। ট্যাক্সিতে উঠতে যাবো এমন সময় ঘাড়ের কাছে প্রচন্ড ব্যাথা অনুভব করলাম। কানে শুনলাম-“নারায়ে তাকবীর, আল্লাহু আকবর”। মাথা চিড়ে কিছু একটা যেন প্রবেশ করল। একবার! দুবার!! তিনবার!!! ঢলে পড়লাম ট্যাক্সির দরজায়। তারপর মাটিতে। মস্তিস্ক এখন সারা শরীরের খবর জানান দিতে ব্যর্থ। এটাই কি মৃত্যু? এদেরকেই তো বাঁচাতে চেয়েছিলাম আমি!!
৪. ২০২৫ সাল। এখন আমরা ১০০% বলে গর্ববোধ করি। কিন্তু কাদের কাছে গর্ব করি কে জানে! গুলশান ২ এর চৌরাস্তার দুপাশে জড় হচ্ছে মানুষ(?)। একই বেশভূষা তাদের। একদল কবরপন্থী, আরেকদল বিরোধী। রাস্তাটার ঠিক মাঝামাঝি দাঁড়িয়ে সৌম রেহান।কিশোর সৌমের কাঁধে স্কুল ব্যাগ। দুপক্ষ এগোচ্ছে। কোনদিকে যাবে সৌম বুঝতে পারছে না। দুপক্ষই তেড়ে আসতে থাকলো চৌরাস্তার দিকে। কারা সঠিক, কারা ভুল কিভাবে বুঝবে সে? কি করবে সে? পূর্বে এর তো কোনো বিচার হয় নি! আর এসবের কখনও বিচার হয়ও না!
আর দেখুন ওরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ!
আমার দৃষ্টিতে ডান বা বামপন্থী থেকে এই “মডারেট” পন্থীরা হলো সবচেয়ে ভয়ঙ্কর জীব। অভিজিৎ ভাইয়ের মৃত্যুর প্রতিক্রিয়া দেখে এই বার জীবনে প্রথম এতো লোক ফেসবুক থেকে ছাঁটাই করলাম। মডারেটদের সহ্য করা মুশকিল যারা একটা নিন্দনীয় ঘটনায় ঠিক করে নিন্দা পর্যন্ত করতে পারে না, এতো তাদের কূল হারানোর ভয়।
নিউটন এর তৃতীয় সুত্র মতে – ঘৃণা বদলে ঘৃণাই পাবেন ।
ব্যাপারটি অনেক মজার – কল্পনা থেকে একজন ব্যাক্তিকে আক্রমণ , যদিও ব্যাক্তিটি ও কাল্পনিক তবে যাদের উদ্দেশ করে বলা তারা কাল্পনিক নন ।
অথাথ যেই উদ্দেেশ্যে করেছেন তা টিক পূরণ হয়েছে ।
আপনাদের উদ্দেশ্য স্পষ্ট আবার ঘোলাটে মনে হয়, কখনও মনে হয় প্রচলিত সব ধর্ম কে ভুল বলে আপনারা সটীক ধর্ম বা সটীক সৃষ্টি কর্তা কে খুজছেন আবার মনে হয়, কিভাবে খোঁড়া এবং পরিবর্তনশীল বিজ্ঞান দিয়ে, ঈশ্বর কে পাশ কাটিয়ে যাওয়া যাই সেই স্বপ্নে আপনারা বিভর ।
একবার কি কখনও ভেবছেন আপনাদের এই কথাই কোনো ধর্ম আঘাত পাই কি না ?
উত্তর পাই না । পায় ওই মানুষগুলো যারা এটাকে আদর্শ ভেবে জীবন যাপন করে ।
তাহলে তাদের আঘাত দিয়ে কোন মানবতা কে আপনারা প্রতিস্টিত করতে চান ।
পৃথিবীতে যাহা ভুল বা মিথ্যা তা এক সময় টিক হারিয়ে যাবে ।
ধর্মে যা বলা হয়েছে তা অন্ধ ভাবে বিশ্বাস না করে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে যাচায় করে নেওয়া উত্তম তা না হলে এত গুলো ধর্ম যেখানে বিদ্দমান সেখানে আপনি সটীক ধর্মকে কিভাবে পাবেন ।
তবে আপনি আপনার উত্তর আপনার মত করে বুঝবেন এটাই স্বাভাবিক এবং আপনার আর আমার বোঝার ধরন টাও ভিন্ন হবে , , যদি ভিন্ন হয়ে থাকে তবে এটাও আপনাকে বুঝতে হবে যেটা আপনার কাছে সটীক তা আমার কাছে ভুল মনে হতে পারে , আবার যাহা আমার কাছে সটীক তাহা আপনার কাছে ভুল মনে হতে পারে ।
আর মানুষ এর যে জ্ঞানের সিমাবদ্ধতা আছে এটাও সত্যি । তাহলে একটু কষ্ট করে বুঝবেন যেটাকে আপনি সটীক বলে চালাচ্ছেন তা কালকে ভুল ও প্রমানিত হতে পারে, তাই অতিমাত্রাই পরিবর্তনশীল বিজ্ঞান এর উপর বিশ্বাস করে কাওকে আঘাত দিবেন না, হতে পারে আপনি যেটাকে আজকে সটীক ভাবছেন আপনার বিজ্ঞান কালকে সেটাকে ভুল বলে দিতে পারে ।
যখন ই সমাজে অশান্তি সৃষ্টি হয়েছে তখন ই ধর্ম এর আগমন হয়েছে । তখন কিন্তু বিজ্ঞান অবসর এ ছিলো না । সেখানেও বিজ্ঞান ছিল । অর্থাৎ বিজ্ঞান এর উপস্তিতিতেই ধর্ম নিজেকে মানুষ এর মাঝে প্রচার পেয়েছে । হয়তো বলবেন তখন বিজ্ঞান এত টা উন্নত ছিল না । আধুনিক বিজ্ঞান এর সবথেকে বড় দাবি এলিয়েন , অর্থাৎ মানুষ এর থেকেও বেশি বুদ্ধিমান ভিন্ন গ্রহের প্রাণী যার পেছনে বছর বছর কোটি কোটি টাকা বিসর্জন চলছে, যা নিয়ে মাঝে মাঝে হট্টগোল শোনা যায় তারা জীবাশ্ম দেখতে পেয়েছে । যার অর্থ বিজ্ঞান এখনও ভুল এবং সটীক এর মাঝেই আছে , তারা কখনও সটীক কখনও ভুল । সেই বিজ্ঞান কে বিশ্বাস করলে করতে পারেন এটা আপনার ব্যাক্তি ইচ্ছে তবে আমার মনে হয় না এই বিজ্ঞান কে বিশ্বাস করে অন্য ধর্মের মানুষকে গালি গালাজ বা ছোট করা যায় ।
আর একবার ভাবুন বিজ্ঞান কতবার একই বিষয় এ কতবার মত পরিবর্তন করেছে ।
তাহলে আপনার অন্ধ বিশ্বাস যেই বিজ্ঞান নিয়ে তা কি নির্ভুল ??
বিজ্ঞান কি সবসময় সটীক ??
যদি তা না হয় তাহলে আপনার পথে আজকে আমি যদি যাই , কালকে বিজ্ঞান তার মত পরিবর্তন করলে আপনিও তো আপনার মত পরিবর্তন করে নিবেন আর এর মাঝে আমার বা আমার মত অন্যদের যদি ক্ষতি হই সেটাকে কি আপনি গবেষণাধিন বিষয় এর পরিক্ষামুলক ফলাফল বলে চালিয়ে দেবেন ।
ধর্ম নিয়ে আলোচনা হতে পারে , কিন্তু সমালোচনা কখনও না ।
তাই বলব ‘হে ভাই আপনি হয়তো জ্ঞানের আধার আপনি যাহা বোঝেন তাহা বুঝিবার শক্তি আমাদের নাই, তাই বলে আমাদের আঘাত করবেন না আমরাও মানুষ আমরাও কষ্ট পাই ।
“নিউটন এর তৃতীয় সুত্র মতে – ঘৃণা বদলে ঘৃণাই পাবেন ।”
নিউটনের সূত্র কোন ক্ষেত্রে কাজে লাগে তা একটু খোঁজ নিয়ে দেখবেন। মানবিক অনুভূতিতে নিউটনের সূত্রের কোনো ব্যবহারই নেই। তাই আমি ঘৃণা যদি করে থাকিও ঘৃণা পাবো না। আপনি যে বিজ্ঞান সম্পর্কে কি বলবেন তা এই কমেন্ট যারা পড়বে তারা বুঝে যাবে।
“ব্যাপারটি অনেক মজার – কল্পনা থেকে একজন ব্যাক্তিকে আক্রমণ , যদিও ব্যাক্তিটি ও কাল্পনিক তবে যাদের উদ্দেশ করে বলা তারা কাল্পনিক নন ।
অথাথ যেই উদ্দেেশ্যে করেছেন তা টিক পূরণ হয়েছে ।”
হুম। তবে কারা আক্রমণ করেছে,ভাইয়া?:P :/
“একবার কি কখনও ভেবছেন আপনাদের এই কথাই কোনো ধর্ম আঘাত পাই কি না ?
উত্তর পাই না । ”
আপনারাও যখন মাইক লাগিয়ে আমাদের বিরক্ত করেন তখন কি আমাদের ‘শান্তিনুভূতি’ আঘাত পায় না?
“পায় ওই মানুষগুলো যারা এটাকে আদর্শ ভেবে জীবন যাপন করে । তাহলে তাদের আঘাত দিয়ে কোন মানবতা কে আপনারা প্রতিস্টিত করতে চান ।”
মানবতা আর অনুভূতির যাচাই যদি সংখ্যায়ই বিবেচনা করা হতো তবে এখনও সূর্য পৃথিবীর চারিদিকেই ঘুরতো!
“ধর্মে যা বলা হয়েছে তা অন্ধ ভাবে বিশ্বাস না করে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে যাচায় করে নেওয়া উত্তম তা না হলে এত গুলো ধর্ম যেখানে বিদ্দমান সেখানে আপনি সটীক ধর্মকে কিভাবে পাবেন ।”
উপরের কমেন্টটা তো মুরতাদসুলভ কমেন্ট। ধর্মের কোন জায়গায় আছে যে আপনি ধর্ম নিয়ে প্রশ্ন করতে পারবেন? আর আপনার ধর্মে নিশ্চয়ই আছে যে,আপনার ধর্মই সেরা? আর যদি তা না মানেন বা সেটা নিয়ে আপনার সন্দেহ হয় তাহলে তো আপনার ইমান বড়ই দুর্বল! আবার আপনিই বললেন-
“ধর্ম নিয়ে আলোচনা হতে পারে , কিন্তু সমালোচনা কখনও না ।”
বুঝলাম। আপনিই ‘শাব্দিক রেহান’! 😀
“আধুনিক বিজ্ঞান এর সবথেকে বড় দাবি এলিয়েন , অর্থাৎ মানুষ এর থেকেও বেশি বুদ্ধিমান ভিন্ন গ্রহের প্রাণী যার পেছনে বছর বছর কোটি কোটি টাকা বিসর্জন চলছে, যা নিয়ে মাঝে মাঝে হট্টগোল শোনা যায় তারা জীবাশ্ম দেখতে পেয়েছে । …”
এলিয়েন মানে ভিনগ্রহবাসী প্রাণী। সেটা এমিবা সাইজেরও হতে পারে কিংবা বিশালাকার ডায়নোসরও হতে পারে। মানুষের মতো কিংবা তারচেয়ে বুদ্ধিমান হতে পারে কিংবা তারচেয়ে কম বুদ্ধিমানও হতে পারে। সুতরাং আপনার জানায় যে ‘ঘাপচিং’ আছে সেটা বোঝাই যাচ্ছে। আর বিজ্ঞানীরা ‘হতে পারে’ কিংবা ‘পাওয়া যেতে পারে’ বললেই মিডিয়া এমনভাবে শিরোনাম করে যে আপনাদের মত মানুষের মনে হওয়াটা স্বাভাবিক যে এলিয়েন বোধহয় এই নামল নিউইয়র্কের রাস্তায় থরের সাথে মাস্তি নেয়ার জন্য। তাই আপনাদেরকে পুরোপুরি দোষী বলাও যায় না। আপনি কি জানেন আমেরিকার একদল মানুষ আছে যারা বিশ্বাস করে আমরা ভিনগ্রহ থেকে এসেছি ঐ গ্রহে ক্রাইসিসের ফলে। এবং আমাদের মাঝেও এলিয়েন আছে! এলিয়েন একটি সম্ভাবনা। একে দিয়ে যদি পুরো বিজ্ঞানকে বিচার করতে যান তাহলে তো ব্যাপারটা মারাত্মক হবে!
আপনার কমেন্টে আপনি বারবার ‘পরিবর্তনশীল বিজ্ঞান’ কথাটি উল্লেখ করে বিজ্ঞানকে ‘পরিত্যাগ’র পরামর্শ দিলেন। তা-ও বিজ্ঞানের অন্যতম একটি আবিস্কারের মাধ্যমে আমাকে জানাচ্ছেন; হিপোক্রেসি বোধহয় একেই বলে! হা…হা…
হ্যাঁ। বিজ্ঞান পরিবর্তনশীল। আর বিজ্ঞানের সুক্ষতা ক্রমশই বাড়ছে। আগে আমরা অণু সম্পর্কে জানতাম। তারপর অণুকে ভেঙে পরমাণু আসল গত শতকের শুরুতে। তারপর পরমাণুকে ভেঙে পেলাম ইলেক্ট্রন,প্রোটন, নিউট্রন। তারপর সেগুলো ভেঙে কোয়ার্ক,লেপটন ইত্যাদি। এখন আমরা তত্বগতভাবে জানি কিভাবে কোয়ার্ক থেকে স্ট্রিঙের দিকে যেতে হয়। প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে একদিন তা ভাঙবো। বিজ্ঞান আগে উন্নতি করে আর তারপর তার প্রযুক্তি। এই যে তিন বছর আগে আপনি যে দামে নকিয়া এক্স-২০১ পেতেন এখন সে দামে একটা সুন্দর স্মার্টফোন পাবেন। অথচ যে মোবাইলফোনের কথা তিনবছর আগে এ দামে চিন্তাও করতে পারতেন না। এটা কেন জানেন? আপনার মতে ‘ভুলে ভরা’ কোয়ান্টাম মেকানিক্সের প্রযুক্তিগত উন্নতির জন্য। আর বিজ্ঞান যখন একবার বলেছে ‘পৃথিবী সূর্যের চারিদিকে ঘুরে’ তারপর আর কখনই তা গিলে নেয় নি। তেমনি ‘ঈশ্বর ছাড়াই যখন সবকিছু ব্যাখ্যা করে যাচ্ছে তখন ঈশ্বরের কি দরকার?’ আপনাকে একটা প্রশ্ন করি,’ঈশ্বর বলতে যদি কেউ থেকে থাকে তবে তাকে কে বানিয়েছে?’ যে বানিয়েছে তাকেই বা কে বানিয়েছে? আর কেউ না বানিয়ে থাকলে আপনিই বা তা জানলেন কিভাবে?’
“‘হে ভাই আপনি হয়তো জ্ঞানের আধার আপনি যাহা বোঝেন তাহা বুঝিবার শক্তি আমাদের নাই, তাই বলে আমাদের আঘাত করবেন না আমরাও মানুষ আমরাও কষ্ট পাই ।”
‘পৃথিবী সূর্যের চারিদিকে ঘোরে’-বিজ্ঞান একথা প্রথম বলার আগে বেশিরভাগ মানুষই বিশ্বাস করতো উল্টোটা। কারো বিশ্বাসে-অবিশ্বাসে সত্য পরিবর্তন হয়না। সে যুগেও সত্যকে সবাই মেনে নিতে পারে নি। যারা সত্য প্রচার করতো তাদেরকে নিপীড়নের শিকার হতে হতো আপনাদের মতো মানুষদের দ্বারাই। তারপর অন্যযুগের আপনাদের মত মানুষরাই নিজেদের ‘পবিত্র’ গ্রন্থকে পরিবর্তন করে বিজ্ঞানময় গ্রন্থ দাবী করে।বিজ্ঞান এতে থোড়াই কেয়ার করে! সে নিভৃতে খুঁজে চলেছে সবকিছুর ব্যাখ্যা।
আর আপনি তো জানেনই আপনি লেখা পড়লে আঘাত পাবেন তারপরও লেখা পড়েছেন। তারমানে আপনি সচেতনভাবেই আপনি আপনার নিজেই নিজেকে আঘাত করেছেন। আমার লেখা না পড়লেই তো হতো।
ভালো বলেছেন । কিছুদিন পূর্বে আমি একটা জায়গায় বলেছিলাম আসলে মর্ডারেট নামে কোন কিছু থাকতে পারে না। এরা হচ্ছে সাময়িক। যে ব্যক্তি নিজ ধর্মে বিশ্বাস করে সে ধর্মনিরপেক্ষ কিভাবে হয় ? কারণ তার ধর্মই বলছে এটাই শ্রেষ্ঠ ধর্ম আর অন্যগুলো অযৌক্তিক। তাহলে সে ওই সকল অযৌক্তিক ধর্মকে কেন শ্রদ্ধা করবে ? তবুও যুগে যুগে বেশ কিছু মধ্যসত্ত্বভোগী জন্মায় যারা সুবিধা অনুযায়ী যখন যে সামনে থাকে তার ঘাড়েই চড়ে বসে। তবে এদের যে সবাই বদ তা নয় । কিছু তো ভালো থাকতেই পারে । হয়তো ভয় বা তাড়নার কারণে তারা পিছিয়ে যায় । এবং বিড়ম্বনা হচ্ছে এদের এই ভালো মানুষীতার সুযোগ নেয় ফ্যানাটিকসরা। ধরে নেই এক সময় এদেশে কোন নাস্তিক বা সংখ্যালঘু থাকবে না। তখন নরপিশাচদের এই রক্ত ক্ষুধা কি কমে যাবে ? – না কমবে না ; বরং কালক্রমে বাড়তেই থাকবে । তখন তাদের এই রক্ত ক্ষুধার নিবারণ করবে এই মর্ডারেট বা সেক্যুলার ধর্মধারীরা।
এই পরিণাম যদি ওরা বুঝতো 🙁
অসাধারণ। ভেকধারী চিনতে সুবিধা হবে পাঠকদের। দুর্দান্তভাবে হিপোক্রেট সেলিব্রেটিদের তুলে এনেছেন আপনি। ধন্যবাদ।
@দেব প্রসাদ দেবু,
অসংখ্য ধন্যবাদ ধৈর্য ধরে লেখাটি পড়ার জন্য। যাদের জন্য লিখেছি তারাই এখন ধৈর্য ধরে পড়লেই হয়। মনে হয় না এরা এতটুকু ধৈর্য নিয়ে পড়বে। হিপক্রেটরা ইগো চালিত।
এসব তথাকথিত প্রগতিশীলদের সনাক্ত করতে গিয়ে যে ঠগ বাছতে গাঁ উজাড় হবার যোগাড় হলো! যেদিন থেকে ধর্মের অনাচার নিয়ে মুখ খুলেছি, আসেপাশ থেকে একে একে সব চেহারা উন্মোচিত হচ্ছে, প্রিয় বন্ধু, খালা, অফিসের কলিগ, আরো কত। নাস্তিক শব্দটাই যেন এলার্জিক। আর নাস্তিকেরা সব ভিন্ গ্রহের প্রাণী, তবে নিকৃষ্ট প্রাণী, কারণ তারা ঈশ্বরের রহমতবঞ্চিত। জানি আমাদের দেশে প্রকাশ্য নাস্তিক হওয়ার মানে এখনো সমাজের বিরুদ্ধে যাওয়া, হারিয়ে ফেলা বন্ধু, পরিজন আত্বীয়। সব জেনে শুনেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম আমার নাস্তিকতা নিয়ে সরব হওয়ার। তবু যখন একে একে মুখোশ খুলে যায় খুব কাছের মানুষগুলোর, এখনো খুব কষ্ট হয়। নিজ দেশে পরবাসী হওয়া বোধহয় একেই বলে 🙁
…আর জীবনে সবচেয়ে বেশি শুনতে হয় ফেসবুকে এসব কি লেখস? সেদিন আমার এক বান্ধবী ব্যাডমিন্টোন কোর্টে আমাকে পাকড়াও করলো,
আর কথাবার্তা এগোলো না।একটু পরে সে-ই আরেক বান্ধবীকে বলছে,
বুঝুন অবস্থা!
এতো চমৎকার বিদগ্ধ ব্যঙ্গধর্মী রচনা সচরাচর চোখে পড়ে না। অসাধারণ লিখেছো সুদীপ্ত। নিয়মিত লেখা আশা করছি তোমার কাছে।
@সালমান রহমান,
কষ্ট করে পড়ে দেখেছেন এজন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ।
একটানা পড়ে গেলাম। অসাধারণ! দারুণ! সেই সাথে মনে করিয়ে দিতে চাই ভভিজিৎদার মৃত্যুর পর কিছু “মডারেট নাস্তিককে” দেখা যাচ্ছে যারা অভিদার পরিণতির জন্য “উগ্র নাস্তিকদের ইসলাম নিয়ে লেখালেখিকে” সমান দায়ী করছে। “ঘৃণার চাষ” করে তারা নাকি ইসলামপন্থিদের হাতে অস্ত্র তুল দিয়েছে। এদের চরিত্র নিয়েও লেখা উচিত। ধন্যবাদ লেখককে।
@সুষুপ্ত পাঠক, আপনার ‘মোঃ মডারেট ইসলাম’ লেখাটাও অনেক অসাধারণ।
সেই সাথে মনে করিয়ে দিতে চাই ভভিজিৎদার মৃত্যুর পর কিছু “মডারেট নাস্তিককে” দেখা যাচ্ছে যারা অভিদার পরিণতির জন্য “উগ্র নাস্তিকদের ইসলাম নিয়ে লেখালেখিকে” সমান দায়ী করছে। “ঘৃণার চাষ” করে তারা নাকি ইসলামপন্থিদের হাতে অস্ত্র তুল দিয়েছে।
এখন নতুন একটা দল বেরিয়েছে যারা প্রতিবাদ কিংবা যৌক্তিক আলোচনা শুরু করলে বলে “নিজেদের মধ্যে ঝগড়া বাড়ানোর কি দরকার”! মানে যৌক্তিক আলোচনাগুলোকে ওরা ব্যক্তিগতভাবে নিয়ে নিচ্ছে! যৌক্তিক আলোচনা কিভাবে ব্যক্তিগত আক্রমণের পর্যায়ে যায় এটা আমি ভেবেই পাই না। :-Y
@সুষুপ্ত পাঠক,
আপনার লেখার জন্য ধন্যবাদ। অভিজিৎ-র মৃত্যুর জন্য উগ্র নাস্তিকদের ইসলাম নিয়ে লেখালেখিকে সমভাবে বা আদৌ দায়ী করা যায় কিনা সে আলোচনার বিষয়। তবে এধরণের লেখালেখিতে ধর্মের নৈর্ব্যক্তিক আলোচনার চেয়ে বিদ্বেষের প্রকাশই বেশী চোখে পড়ে। আমিও খুব দৃঢ়ভাবেই মনে করি “ঘৃণার চাষ” করে মহৎ কিছু অর্জন করা সম্ভব নয়। আপনি যাকে কোট করেছেন বা যার/যাদের চরিত্র নিয়ে লেখা উচিত বলে মনে করেন তিনি বা তারা মুক্তমনার প্রকৃত সুহৃদ, আমাদের সহযাত্রী। যে কারও বক্তব্যেরই যুক্তিনিষ্ঠ সমালোচনা করা যায়, তবে এমন কিছু করা উচিত হবে না যা আমাদের মধ্যকার বিশাল মতৈক্য কে অবজ্ঞা করে কেবল সামান্য মতপার্থক্যকেই তুলে ধরে নিজেদের মুখোমুখি অবস্থানে দাঁড় করিয়ে দেয়। আমরা সবাই অজ্ঞানতা, অন্ধ-কুসংস্কার, অনিয়ম আর অবিচারের বিরুদ্ধে লড়ছি। খুব অল্পদিন আগেই এই লড়াইয়ের একজন প্রধান পুরুষকে আমরা হারিয়েছি, এই সময়ে আমাদের মূল লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হলে চলবে না, কেননা তা অন্ধকারের অপশক্তিদের কালো হাতকেই আরও শক্তিশালী করবে। আসুন আমরা আমাদের সামান্য মতপার্থক্য ভুলে অভিজিৎ-র আদর্শকে সামনে রেখে নিজ নিজ অবস্থানে কাজ করে যাই।
@মনজুর মুরশেদ,
আমি জানিনা অভিজিৎ জীবীত থাকলে এই মন্তব্য পড়ে কী বলতেন, তবে এতটুকু জানি অভিজিৎ ‘ধর্মহীন’ পৃথিবীর স্বপ্ন দেখতেন।
প্রয়োজনবোধে অন্য কোথাও অন্য কোনদিন এ নিয়ে তর্ক করা যাবে, এই মুহুর্তে এখানে সে তর্কে জড়াবার মানসিকতা মোটেই আমার নেই। অভিজিৎ তার শত্রু সম্মন্ধে ভালভাবেই অবগত ছিলেন। ২০০১ থেকে ২০১৫ অভিজিৎ (এন এফ বি, ভিন্নমত, সদালাপ, সাতরং ও মুক্তমনায়) যা লিখেছেন তা মনযোগ সহকারে পাঠ করলে সকল সত্য আপন আলোয় উদ্ভাসিত হয়ে উঠবে, আমাদের কোন কিছু নিয়ে তর্কের দরকার হবেনা।
আসুন আমরা অভিজিৎ ষ্টাডি করি।
@আকাশ মালিক,
আপাতত এই বিষয়ে আলোচনা তোলা থাক। একদিন সময় করে আপনি, আমি এবং সংশ্লিষ্টরা এই নিয়ে বিশদ আলোচনা করে নিজেদের মতপার্থক্য দূর করে নেব বা মতপার্থক্য মেনেই পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ধরে রাখব। তবে আমি যতদূর বুঝি আমাদের মধ্যে মতের অমিলের চেয়ে মিলই বেশী। এখন এর চেয়ে বেশী আর বলার কিছু নেই। ধন্যবাদ।
@মনজুর মুরশেদ,
জ্বি, শুধুমাত্র এইসব দিকচিন্তা করে যে বিতর্ক ও গৃহদাহের সুযোগ কেউ নিয়েছিল, সব দেখেও চুপ থেকেছি এক বড় ভাইয়ের অনুরোধে এবং অভিদার প্রতি সম্মান দেখিয়ে। লেখাটা প্রস্তুত করেও পোস্ট করিনি। ভেবেছি অভিদার স্বপ্নে মুক্তমনা আমাদের অভ্যন্তরিন কোন্দলে ব্যর্থ হলে বিরোধীরাই হাসবে। অথচ পুরোনো ঝগড়াকেই কেউ উসকে দিয়েছিল!
@সুষুপ্ত পাঠক,
ধন্যবাদ!
@মনজুর মুরশেদ,
সময় আসুক। ধৈর্য নিয়ে অপেক্ষা করছি সে সময়ের।
চমৎকার, চমৎকার। এই বিষাদঘন পরিস্থিতির মাঝেও হাসিয়ে ছাড়লেন। গর্দভ সুশীল মার্কা, গুহা যুগের মডারেইট নামের খচ্ছরদের চরিত্রের একদম বাস্তব রূপ তোলে ধরেছেন। তাদের ত্যানাপেচানী চুদুরবুদুর দেখলে মাঝে মাঝে মাথা বিগড়ে যাওয়ার উপক্রম হয়। আমি বেশ কিছুদিন যাবত এমনি একটা লেখা সাজাবার চেষ্টা করেছিলাম। পরে ঘৃণা ধিক্ষার দিয়ে বাদ দিয়ে দিছি। আর কোনদিন টকশো এর্যাঞ্জ করলে এই পিছলাটাকে দাওয়াত দিয়েন।
@আকাশ মালিক, উদ্দেশ্য ছিলই হাসানোর জন্য লেখা। কিন্তু আমার কাছে মনে হয় লেখাটা বিষাদময়। এখনও অবিশ্বাস্য লাগছে অভিজিৎ রায় নেই এটা ভেবে। প্রথম এক সপ্তাহ রাতে ঘুমাতে পারি নি। আপনার প্রায় লেখাই পড়া আছে। আসলে পিছলা তারাই যারা এ বিপদে নিজেদের গায়ের রঙ পরিবর্তন করে নি। রাগে এখন ফেবু ব্যবহারই করি না এসব ক্লীবের জন্য। ‘কিন্তু’… ‘অথবা’… এগুলো বলা যে হত্যার সাফাই,এরা কবে তা বুঝবে? নাকি বুঝেই তারা এগুলো করছে?