আপনারা হয়তো এর মধ্যে জেনে গেছেন যে, গত ছাব্বিশে ফেব্রুয়ারি মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা এবং এর অন্যতম মডারেটর অভিজিৎ রায় গুপ্তঘাতকদের দ্বারা আক্রান্ত হয়ে অত্যন্ত নির্মমভাবে নিহত হয়েছেন। অসুস্থ মা-কে দেখার জন্য তিনি ঢাকায় গিয়েছিলেন। ঢাকায় থাকাকালীন সময়ে ফেব্রুয়ারির বইমেলায় যাবেন – এটা ছিল স্বাভাবিক। এবারের বইমেলায় তাঁর দুটো বই প্রকাশিত হয়েছে। ‘শুন্য থেকে মহাবিশ্ব’ (অধ্যাপক মীজান রহমানের সাথে) ও ‘ভিক্টোরিয়া ওকেম্পোঃ এক রবিবিদেশিনীর খোঁজে’। বইগুলো পাঠকপ্রিয়তাও পেয়েছে। বন্ধু-বান্ধব এবং তাঁর গুণগ্রাহী পাঠকদের সাথে বইমেলায় অন্তরঙ্গ পরিবেশে আলাপচারিতা ছিল তাঁর জন্য অত্যন্ত সুখকর অভিজ্ঞতা। অত্যন্ত সুন্দর একটা সময় তিনি উপভোগ করছিলেন এবারের বইমেলায়।
বইমেলা থেকে ফেরার পথে তিনি এবং তাঁর স্ত্রী বন্যা আহমেদ, যিনি নিজেও মুক্তমনার সাথে সংশ্লিষ্ট, টিএসসির ঠিক সামনেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানসংলগ্ন জনাকীর্ণ সড়কে অজ্ঞাতনামা দুই আততায়ীর হামলার স্বীকার হন। আততায়ীরা চাপাতি নিয়ে দুজনকে গুরুতরভাবে আহত করে। অভিজিৎ রায়কে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই ডাক্তাররা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। গুরুতর আহত বন্যা আহমেদকে শুরুতে ঢাকা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরবর্তীতে তাঁকে স্থানান্তর করা হয় স্কোয়ার হাসপাতালে। বর্তমানে তিনি উন্নত চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে এসেছেন।
অভিজিৎ রায় শুধুমাত্র মুক্তমনার প্রতিষ্ঠাতাই ছিলেন না, ছিলেন বাংলাদেশের মুক্তচিন্তা আন্দোলনের প্রধান পুরুষ। বাংলাভাষাভাষীদের মধ্যে যুক্তিবাদ, মুক্তবুদ্ধিচর্চা, মানবতাবাদ প্রতিষ্ঠা এবং বিজ্ঞানমনস্কতা ছড়িয়ে দেবার জন্য শুধুমাত্র মুক্তমনা প্রতিষ্ঠা করেই থেমে থাকেন নি, প্রতিনিয়ত লেখালেখি এবং বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের সাথে নিজেকে জড়িয়েছিলেন সক্রিয়ভাবে। এই আন্দোলনের প্রধানপুরুষ এবং আইকন হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তাঁর অসাধারণ মেধা, নিরলস প্রচেষ্টা এবং গভীর আন্তরিকতা দিয়ে। তিনি ধর্মের অপ্রয়োজনীয়তা নিয়ে লিখেছেন, ধর্মের ত্রুটি নিয়ে লিখেছেন, লিখেছেন ধর্মীয় কুসংস্কার নিয়ে, লিখেছেন ধর্ম কীভাবে সমাজ প্রগতিতে বাধা দেয় তা নিয়ে। কিন্তু, এটাই তাঁর একমাত্র কাজ নয়। তিনি বাংলাভাষীদের যুক্তিবাদী হতে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছেন প্রতি মুহুর্তে। অন্ধের মতো কোনো কিছু বিশ্বাস করাটা শুভ কিছু বয়ে আনে না সমাজের জন্য। প্রতিটা বিষয়কে দেখতে হয় যুক্তির মাপকাঠি দিয়ে। তিনি বাংলায় বিজ্ঞান বিষয়ক লেখালেখি করেছেন। বাংলা ভাষায় জনপ্রিয় বিজ্ঞান লেখনিতে তিনি নিজেকে এমন এক উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিলেন, যাকে স্পর্শ করার ক্ষমতা বর্তমান সময়ে কারো নেই। বিজ্ঞানের একেবারে সদ্য প্রাপ্ত জ্ঞান নিয়ে বাংলা ভাষায় এরকম লেখা আগেও কেউ লেখে নি, তাঁর সময়েও কেউ লিখতো না।
তাঁর স্ত্রী ও সহযোদ্ধা বন্যা আহমেদ নিজেও একজন প্রথম সারির মুক্তমনা, নিজ নামেই পরিচিত তিনি। মুক্তমনার সৃষ্টিলগ্ন থেকেই তিনি এর সাথে জড়িত রয়েছেন। বিবর্তনের উপর লেখা তাঁর বই ‘বিবর্তনের পথ ধরে’ নিঃসন্দেহে বাংলা ভাষায় লেখা বিবর্তনের উপর শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ।
এই দুজন মুক্তচিন্তার অগ্রপথিক। সাম্প্রদায়িকতা, ধর্মীয় কুপমণ্ডুকতা, কুসংস্কার এবং ছদ্ম-বিজ্ঞানের বিরুদ্ধে লড়াই করে আসছেন অনেকদিন ধরে। আর এই লড়াইয়ের কারণেই মৌলবাদীরা টার্গেট বানিয়েছে তাঁদের। এঁদের উপর হামলা তাই শুধুমাত্র দুজন ব্যক্তির উপরে হামলা নয়। মুক্তমনার চলমান আন্দোলনকে নস্যাৎ করার অপচেষ্টা মাত্র।
অভিজিৎ রায় নিহত হবার চার পাঁচদিন আগে থেকেই বাংলাদেশ থেকে মুক্তমনায় ঢোকাটা সমস্যা হচ্ছিলো। অনেকেই ভেবেছেন যে মুক্তমনা ওয়েবসাইটটি বাংলাদেশ সরকার ব্লক করে দিয়েছে। আমরা নানা উৎস থেকে সংবাদ সংগ্রহ করেও এর সত্যতা নিশ্চিত করতে পারি নি। আমাদের টেকনিক্যাল টিমের ধারণা কারিগরি ত্রুটির কারণেই এই সমস্যা হচ্ছে। তাঁরা এই সমস্যাটি সমাধান করার জন্য দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। আমরা আশা করছি যে, অতি দ্রুত আপনাদের এই অসুবিধাটি দূর করতে সক্ষম হবো। এর মধ্যে যাঁরা মুক্তমনা ভিজিট করতে চান, তাঁরা টর ব্রাউজার (https://www.torproject.org/projects/torbrowser.html.en) ডাউনলোড করে নিতে পারেন। এর মাধ্যমে মুক্তমনায় ঢুকতে কোনো অসুবিধা হবে না। আপনাদের পরিচিত যাঁরা মুক্তমনায় ঢুকতে পারছেন না, তাঁরা এই সংবাদটি শেয়ার করে দিলে আমরা কৃতজ্ঞ থাকবো।
যুগে যুগে মুক্তচিন্তা যাঁরা করেছে, প্রতিক্রিয়াশীলেরা তাঁদের সহ্য করতে পারে নি, নৃশংসভাবে হামলে পড়েছে। সক্রেটিসকে হেমলক পান করে মৃত্যুবরণ করতে হয়েছে, হাইপেশিয়াকে আলেকজান্দ্রিয়ার রাস্তায় ছিন্নভিন্ন করা হয়েছে, ব্রুনোকে আগুনে পুড়িয়ে মারা হয়েছে, গ্যালিলিওকে বন্দি করা হয়েছে অন্ধকার কারাকক্ষে, অভিজিৎ রায়কে হত্যা করা হয়েছে ধারালো অস্ত্র দিয়ে, বন্যা আহমেদ মারাত্মক আঘাত নিয়ে শয্যাশায়ী। কিন্তু, তারপরেও মুক্তচিন্তা, প্রগতিশীল আন্দোলনকে থামানো যায় নি। আমরা অভিজিৎকে হারিয়েছি, কিন্তু অভিজিৎ হারে নি। মুক্তমনারাও হারবে না।
সমাজ সামনের দিকেই এগোবে, পেছন থেকে তাকে যতোই টেনে ধরে রাখার চেষ্টা করা হোক না কেন। কিন্তু, তারপরেও প্রতিটি আন্দোলন হয় রক্তক্ষয়ী। রক্ত দেয়া ছাড়া কোনো আন্দোলনই সফল হয় না। তাই তো অভিজিৎ রায় লিখেছিলেন,
যারা ভাবে বিনা রক্তে বিজয় অর্জিত হয়ে যাবে তারা বোকার স্বর্গে বাস করছেন। ধর্মান্ধতা, মৌলবাদের মত জিনিস নিয়ে যখন থেকে আমরা লেখা শুরু করেছি, জেনেছি জীবন হাতে নিয়েই লেখালিখি করছি। জামাত শিবির, রাজাকারেরা নির্বিষ ঢোরা সাপ না, তা একাত্তরেই আমরা জনেছিলাম। আশি নব্বইয়ের দশকে শিবিরের রগ কাটার বিবরণ আমি কম পড়িনি। আমার কাছের বন্ধুবান্ধবেরাই কম আহত হয় নাই।
বাংলাদেশে বিচারহীনতার যে সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে, সেটাই হত্যাকারীদের উৎসাহ দিয়ে চলেছে অবিরাম। আমরা দেখেছি, হুমায়ূন আজাদ হত্যার কোনো বিচার হয় নি, রাজীব হায়দারের হত্যার কোনো বিচার হয় নি। আমরা চাই না অভিজিৎ রায়ের ক্ষেত্রেও সেরকম কিছু ঘটুক। সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রকৃত অপরাধীদের খুঁজে বের করে দ্রুত তাদের বিচারের আওতায় আনা হোক, এটাই এই মুহুর্তে বাংলাদেশ সরকারের কাছে মুক্তমনার দাবী।
মুক্তমনা এই মুহুর্তে একটি দুঃসময় পার করছে। এই দুঃসময়, বিপর্যস্ত অবস্থা সামাল দেবার জন্য আপনাদের কাছ থেকে সর্বোচ্চ সাহায্য এবং সহযোগিতা আশা করছি। সাথে থাকুন, পাশে থাকুন, একত্রিত হয়ে শক্তি যোগান একে অন্যকে। আপনাদের পাশে থাকাটা আমাদের সাহসকে বহুগুণে বৃদ্ধি করবে।
যে আদর্শ এবং উদ্দেশ্য নিয়ে অভিজিৎ রায় মুক্তমনা প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন, সেই আদর্শ এবং উদ্দেশ্য থেকে একচুলও নড়বে না মুক্তমনা। অভিজিৎ রায় এবং বন্যা আহমেদের উপর হামলা থেকেই প্রমাণিত যে, আমরা প্রতিক্রিয়াশীলতার দূর্গে আঘাত হানতে পেরেছি। ব্যাপক ছাত্র-তরুণ ও সমাজের প্রগতিশীল অংশের কাছে অভিজিৎ রায় ও মুক্তমনার গ্রহনযোগ্যতা ও জনপ্রিয়তা গাত্রদাহের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল প্রতিক্রিয়াশীল ধর্মান্ধদের কাছে। অভিজিত-এর ধারালো যুক্তিতর্কের মুখোমুখি হওয়ার ক্ষমতা এই কাপুরুষদের ছিল না। তাই তারা হাতে তুলে নিয়েছে চাপাতি। চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেও অভিজিৎ এর বিজয়কে তারা ঠেকাতে পারে নি। মানবতাবাদী এই মহৎপ্রাণ ব্যক্তিটি নিজের মরদেহ বিজ্ঞানের কাজে লাগানোর জন্য দান করে গেছেন জীবিত থাকার সময়েই। বেঁচে থাকতে তিনি কাজ করেছেন মানুষের কল্যানে, মরণেও সেই মহৎ কাজ থামে নি।
অন্ধকারের হিংস্র প্রাণীরা মরণ কামড় দিচ্ছে। সবাই শক্ত হয়ে থাকুন, ঘন হয়ে থাকুন, বিজয় আমাদের সুনিশ্চিত। অভিজিৎ রায়ও মৃত্যুর আগে সেই আশাবাদ ব্যক্ত করে গিয়েছিলেন।
জামাত শিবির আর সাইদী মাইদী কদু বদু যদু মোল্লাদের সময় যে শেষ এ থেকে খুব ভাল করেই আমি বুঝতে পারছি। এরা সব সময়ই মরার আগে শেষ কামড় দিতে চেষ্টা করে। ৭১ এ বিজয় দিবসের দুই দিন আগে কারা আর কেন বুদ্ধিজীবী হত্যায় মেতে উঠেছিল শকুনের দল, মনে আছে? মনে আছে স্বৈরাচারের পতনের ঠিক আগে কি ভাবে প্রাণ দিতে হয়েছিল ডাক্তার মিলনকে? এগুলো আলামত। তাদের অন্তিম সময় সমাগত। পিপিলিকার পাখা ওঠে মরিবার তরে!
বিজয় আমাদের অবশ্যম্ভাবী।
হ্যাঁ, বিজয় আমাদের অবশ্যম্ভাবী। কোপ দিয়ে গলা কাটা যায়, কিন্তু কণ্ঠস্বরকে দমানো যায় না।
সবাই কণ্ঠ ছাড়ুন জোরে।
আমরা এমন একটি পৃথিবীর কথা চিন্তা করি যেখানে মানুষ পরিমাপের মাপকাঠি হবে শুধুমাত্র মনুষত্ব। যে পৃথিবী মানুষকে হাজার ধর্ম ও বিশ্বাসে ভেঙেছে সেই পৃথিবীর পরিবর্তন আমাদের আনতে হবে । আমরা আশাবাদী, আমারা পরিবর্তনে বিশ্বাসী । এটা সত্য যে অভিজিত রায়ের সাথে কোথাও না কোথাও আমাদের চিন্তার জায়গাটি মিলে যায় । অথবা অন্যভাবে বললে বলতে হয় অভিজিত রায়ের মতোন লোকেদের চিন্তা আমাদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে । দাদার এই অকাল মৃত্যু হয়তো তার শারিরীক ক্ষতি পোষাতে পারবে না কিন্তু যে আইডিয়া আর দর্শন তিনি ধারণ করেছেন আজন্ম তা সবার মাঝে ছড়িয়ে পড়ছে আর আগামীতেও পড়বে। একটা চিন্তার-যুদ্ধ চলছে, দর্শনের সাথে দর্শনের সংঘর্ষ চলছে । আমি শুধু এটাই বলব যা সত্য তা একদিন বীরদর্পে বেরিয়ে আসবে, আসতেই হবে, আমারা আনব ।
হুমায়ূন আজাদ, রাজিব, অভিজিৎ রায়দের মতো আলোর পথের যাত্রীদের উপর হামলা আর বাংলাদেশের মানুষের চুপ করে থাকা এবং বিচারহীনতার প্রক্রিয়া বলে দেয় বাংলাদেশ কতোটা আঁধারে হারাচ্ছে। এই আধারের মধ্যে এইসব মুক্তবুদ্ধির মানুষেরা খুবই অল্প যারা জোনাকির মতো ঘোর অন্ধকারে আলো দিয়ে যাচ্ছে যদিও অন্ধকারের বন্ধঘরের মানুষদের কাছে এই জোনাকির আলো দেওয়া বিনোদন মাত্র। আশার কথা জোনাকি বাড়ছে দিন দিন, কিন্তু জোনাকির এই অতিক্ষুদ্র প্রচেষ্টার ছোট্ট একটু আলো দিয়ে আলোকিত হবে কি বাংলাদেশ? দিন দিন সেই সম্ভাবনা ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হচ্ছে :-Y :-Y :-Y
:good:
এখন বলা যায় ঠিকই আছে। মুক্তমনায় ঢুকতে পারছি। তেমন সমস্যা হচ্ছেনা। অভিজিৎ দাদা খুন হওয়ার পর থেকে মুক্তমনায় ঢুকতে সমস্যা হচ্ছিল। আমিও তখন ভাবছিলাম যে বোধহয় বাংলাদেশ সরকার সাইটটা ব্লক করে দিয়েছে। কিন্তু যখন আইপি-হাইড, চেঞ্জ করেও ঢোকা যাচ্ছিলোনা তখন বুঝলাম সাইটটাতেই কোন সমস্যা হয়েছে। ভাবছিলাম সাইট বোধহয় আর চালানো হবেনা। বন্ধ করে দেওয়া হবে ভেবে কষ্ট পাচ্ছিলাম। কিন্তু এখন দেখছি আমার সব ধারণাই ভুল।
বিজয় হয়তো দেখে যেতে পারবো না তবে যুদ্ধ চালিয়ে যাবো
যে যুদ্ধে প্রতিপক্ষ কলমের বদলে হাতে ছুরি তুলে নেয় সে যুদ্ধে আমরা তো জিতেই আছি। তবুও আমাদের বলতে হয় “বিজয় আমাদের অবশ্যম্ভাবী”। কী অদ্ভুত তাই না?
মানবতার জয় হবেই।
নচিকেতার সেই গানটা বারবার গাইতে ইচ্ছে করে:
একদিন ঝড় থেমে যাবে, পৃথিবী আবার শান্ত হবে।
বসতি আবার উঠবে গড়ে
আলোয় আবার উঠবে ভরে
জীর্ণ মতবাদ সব ইতিহাস হবে
পৃথিবী আবার শান্ত হবে . . .
একটি বিষয়ে আলোকপাত করতে চাই। এই সময়ে, যখন অভিজিৎ রায় হত্যার বিষয়টি থিতিয়ে আসবে মিডিয়াতে এবং সোশাল নেটওয়ার্কিং সাইটগুলোতে, মানুষকে এর ব্যাপারে সম্পৃক্ত রাখতে বেশি বেশি করে তাঁর লেখাগুলো, তাঁকে নিয়ে লেখাগুলো ছড়িয়ে দেওয়া দরকার। আস্তে আস্তে যাতে ইস্যুটা বিস্মৃতির তলে তলিয়ে না যায়, সেটা নিশ্চিত করা খুবই জরুরী। যারা অভিজিৎ রায়ের শুভানুধ্যায়ী, যারা এই হত্যার বিচার নিশ্চিত করতে চান, তাদের সবারই দায়িত্ব এ নিয়ে লেখালেখি করতে থাকা, এ বিষয়টিকে লোকচক্ষুর আড়ালে না যেতে দেওয়া। শধু মুক্তমনাতেই নয় অন্যান্য সব ওয়েবসাইট/ব্লগগুলোতেও যেন নিয়মিত লেখা হয়, সেই ব্যাপারে লক্ষ্য রাখা দরকার।
test comment 1 – admin
@মুক্তমনা মডারেটর,
মান্যবর, বাংলাদেশ, ভারতসহ আরো দু-একটি দেশ থেকে মুক্তমনা দেখতে সমস্যা হচ্ছে। উদ্যোক্তাদের অনুরোধ করি, দ্রুত মুক্তমনাকে যান্ত্রিকত্রুটি মুক্ত করুন। কোনোমতেেই চলমান মতাদর্শিক যুদ্ধে আপোষ নাই। চলম চলবে। :good:
আমি মুক্তমনার একজন নিয়মিত পাঠক। আভিজিৎ রায় কে চিনেছি এই মুক্তমনার মাধ্যমেই। পরে তার লেখা বই পড়েছি। তাঁকে হত্যা করার খবর প্রথমে পেয়েছিলাম ফেসবুকে। নিজের আপনজন কারো মৃত্যুতে যেমন কষ্ট হয় তাঁর চেয়েও অনেক বেশি কষ্ট পেয়েছি এই মৃত্যুতে। তবে ভেঙ্গে পড়িনি, জানি একদিন সত্যেরই জয় হবে, কারন একজন অভিজিৎকে তারা হত্যা করেছে কিন্তু তাঁর চেতনা বেঁচে আছে লক্ষ অভিজিৎ এর মাঝে।
চমৎকার! ধন্যবাদ।
অভিজিৎদা মরেনি,শুধুমাত্র দেহ ত্যাগ করেছে কিন্তু চেতনা ত্যাগ করেনি।ওরা কজন কে মারবে?মুক্তচিন্তার অধিকা্রী একজন বেচে থাকলেও তার চেতনা বেঁচে থাকবে……………….
জয় বাংলা! জয় মুক্ত চিন্তা!
” ধর্মের সমালোচনাই হচ্ছে সব আলোচনার মূল ভিত্তি ” —– কার্ল মার্ক্স ।
ধর্মের আলোচনায় প্রয়োজন অন্ধবিশ্বাস আর কল্পনার কিন্তু ধর্মের সমালোচনায় প্রয়োজন হয় যুক্তি আর জ্ঞানের। যুক্তিহীন বিশ্বাসে আচ্ছন্ন এক বিশাল জনগোষ্ঠীর এই দেশে এক অভিজিৎ কে খুন করা মানে জ্ঞান আর প্রজ্ঞা কে খুন করা । অভিজিৎ , তোমার এই আত্মদান মুক্তচিন্তার এই আন্দোলন কে আরও একধাপ এগিয়ে দিলো ।
মুক্তচিন্তার জয় হোক ।
কিন্তু কিভাবে ?
এবার পদ্মা সেতু উদ্বোধন করা হয়েছে দুইটা মুরগী, দুইটা হাঁস আর দুইটা ছাগলের রক্ত পদ্মার পানিতে ঢেলে। সরকার একদিকে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে চায় অপরদিকে কুসংস্কারের চর্চা করে। ছোটবেলায় শুনতাম বাচ্চা ছেলেদের চুরি করা হতো- কারন কোন এক জায়গার সেতু নাকি জোড়া লাগছে না, রাতে এক দেবী/জ্বীন ইঞ্জিনিয়ারকে স্বপ্ন দেখিয়েছে যে, (২১/৫১/১০১/১০০১)টা—–অতগুলো বাচ্চার মাথা দিলে সেতু জোড়া লাগবে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে মায়েরা বাচ্চাদের দুপুরে ঘুম পাড়ানোর জন্য এসব গল্প বলতো, কিছু ক্ষেত্রে এরকম বাচ্চা চুরির ঘটনাও বিরল নয়।
বাংলাদেশে পুলিশের আইজি একবার বিটিভিতে স্বীকার করেছিলেন যে,দেশের যে কোন প্রান্তে সংঘটিত অপরাধের অপরাধীকে পুলিশ ৪৮ ঘন্টার মধ্যে গ্রেপ্তারে সক্ষম। এখন, প্রযুক্তির কল্যানে এ সময়টা নিশ্চয়ই কমে আসবে।
এফবি আই বাংলাদেশে এসেছে শুধু আইওয়াস হিসেবে। আমাদের পুলিশের সেই ক্ষমতা আর দক্ষতা আছে খুনিদের বের করার যদি তাদের নির্বিঘ্নে কাজ করতে দেয়া হয়।অথচ অভিজিত হত্যার এক সপ্তাহ হয়ে গেল, পুলিশ এখনো কিছুই করতে পারেনি।
একথাগুলো বলেছিলেন বিভিন্ন বক্তা প্রেসক্লাবের সামনে অভিজিত হত্যার বিচার চাইতে গিয়ে।
[img]http://blog.mukto-mona.com/?attachment_id=44888[/img]
ব্যক্তিগত ভাবে আমি বিশ্বাস করি যে স্থানে অভিজিতকে হত্যা করা হয় তা সিসি ক্যামরার আওতায় ছিল। তাই হত্যাকারিদের সনাক্ত করা এমন কঠিন কিছু নয়। টিএসসি থেকে অভিজিত হত্যাকাণ্ডের স্থানের একটা ছবি তুলেছি। ছবিটা দেখেন–
[img][http://blog.mukto-mona.com/?attachment_id=44889[/img]
আমার হিসেব অন্য জায়গায়। আসিফ মহীউদ্দিনের এক স্ট্যাটাস থেকে জেনেছি, তাকে হত্যাপরিকল্পনাকারীদের একজন হল- একজন প্রতিমন্ত্রীর ভাগ্নে। সরকার মনে হয় আপরাধীদের সনাক্ত করতে পেরেছে, যে কারনে সরকার প্রধান বলেছে দেশে ৫০০ মসজিদ নির্মান করা হবে। আচ্ছা, এই মুহুর্তে কি দেশে ৫০০ মসজিদের দরকার আছে?
@বিপ্লব কর্মকার,
দুঃখজনক হলেও, বাস্তবতা হল চরিত্রের দিক থেকে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি আলাদা কিছু নয় ।
তাই অভিজিৎ হত্যার ন্যায় বিচার পাওয়ার আশা করাটা ঠিক হবে না ।
রক্তাক্ত অভিজিৎ ও বন্যা আহমেদের ছবিগুলো যারা তুলেছে তারা কি শুধুই কাপুরুষ না কি খুনিদের থেকেও বেশী নিষ্ঠুর। দাড়িয়ে দাড়িয়ে তাড়িয়ে তাড়িয়ে ছবি তুলে গেল!
আমি মুক্তমনার একজন নিয়মিত পাঠক ২০১০ থেকে মুক্ত মনার সাথে আছি পাঠক হিসাবে,কিন্তু মুক্ত মনা আমাদের কছে আছে অনেক রূপে। কারও কাছে নতুন করে ভাবনার উৎস হিসাবে,কারও কাছে জ্ঞানের উৎস হিসাবে কেউবা আবার নিজের জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা এবং তার ভিত্তি মজবুত করতে, কেউবা প্রশ্নের উত্তর দিতে পাশে পেয়েছে মুক্তমনা কে পেয়েছে নিজের মাতৃভাষায় । তাই মুক্ত মনা প্রথম যখন বন্ধ দেখালাম তখন ইন্টারনেটের এই বিরাট ক্ষেত্র শুধু তপ্ত, রূক্ষ মরুভমি মনে হচ্ছিল যেখানে প্রাণ নেই, ছন্দ নেই আছে শুধু গরম নির্দয় বালি । অভিজিতের মৃত্যু সংবাদ সেই মরুর বিশালতা বাড়িয়েছিল বহুগুণ । মনে মনে প্রশ্ন উঠেছিল ,অদ্বিতীয় সত্তার দয়ায় চলা এই পৃথিবীতে সত্যিই কি জীবনের মৃত্যু এত সহজ এতই সাধনার ? কেউ দিল না উত্তর সেই অদ্বিতীয় সত্তার টানা বিশ্বাসের যে ছেদ আগেই পড়েছিল তা বুঝল না বাড়ল বহু গুন । সত্যই পৃথিবী জড়,সত্যই সেই অদ্বিতীয় সত্তা সে জড়,কিন্তু আধাঁরের যাত্রির হাতের জে আলো তাতো নেহায়তই জড় নয়,তাতে ওঠে প্রাণের স্পন্দন,তাতে লাগে আবেগের ঢেউ, তাতে হয় সত্যের প্রকাশ আর জাগে জ্ঞানের বিকাশ । সে আলো মৃত্যুহীন, জীবন হতে জীবনের মধ্য দিয়ে তার প্রকাশ অভিজিত সেখানে চির সত্যি চির জিবি । যদি কোনদিন কেউ দূর আকাশে সেই নিদ্রাহীন সপ্তর্ষী মন্ডলের দিকে তাকিয়ে একটিবার প্রশ্ন করে ”কোথা দিয়ে এলাম কোথা ইবা যাব ? তাহলে যেন সেই অচেনা পথিকের হৃদয় যেন আলোকিত হয় সেই সত্যের আলোয় যা জাগিয়েছিল অভিজিতেরা,অবিশ্বাসীরা । লেখক কে আশ্বাস দিতে চাই কোলকাতা থেকে মুক্তমনা আমি কোনরকম সমস্যা ছাড়াই খুলতে পারছি ।
মডারেটর দের প্রতি অনুরোধ অভিজিতের মৃত্যুতে নতুন মুক্তমনাদের মনে যে আল জ্বলেছে তা যেন মুক্ত মনা প্রকাশ করার ব্যাবস্থা নেয় তাদের যেন সুযোগ পায়।
USA থেকে মাঝে মাঝে অসুবিধা হচ্ছে। যেমন গতকাল থেকে ইংরাজি ব্লহ পেতে অসুবিধা হচ্ছে।
প্রিয় মুক্তমনা,
লেখার শেষে দেয়া ছবিটি খুব কষ্টের; তবে হয়তো মৌলবাদের বীভৎস রূপ তুলে ধরতে, আর নির্লিপ্ত মানুষদের ঘুমিয়ে থাকা বিবেককে জাগিয়ে তুলতে এর প্রয়োজন আছে।
আপনাদের পাশে আছি সব সময়।
মুর্খদের যুক্তি-তর্কের ক্ষমতা নাই বলেই দাদাকে খুন করেছে…