আমাদের আধুনিক উচ্চ শিক্ষিত মুসলিম বন্ধুদের মাঝে উতসবের আমেজ তৈরি হয়েছে কুরআন এবং ইসলাম বিষয়ে কিছু নতুন বয়ান প্রচার করবার জন্যে। যদিও এই বয়ানের মূল লক্ষ ইসলামের অনুসারী বা মুসলমান পাঠকেরা হতে পারেন, কিন্তু লক্ষ্য কখনও কখনও উপলক্ষের কাছে হেরে যায়। আমাদের বন্ধু পারভেজ আলমের এই ধরনের লেখার উপলক্ষ হচ্ছেন অভিজিত রায়। অর্থাৎ অভিজিত রায়কে সাধারণ মুসলমানদের “শত্রু” বানানোর একটি মিশনে ক্লান্তিহীনভাবে শ্রম দিয়ে যাচ্ছেন পারভেজ। এটা কোনও বড়ো সমস্যা নয়। কারন, ইতিহাসে ব্যক্তির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে বটে, কিন্তু ব্যক্তি শেষ পর্যন্ত ইতিহাসের অংশ মাত্র। অভিজিত রায় বাংলাদেশের মুক্তমনা আন্দোলনের প্রধান মানুষদের অন্যতম, কিন্তু সভ্যতার কাছে তিনি একজন অংশ গ্রহণকারী, তার পরেও আরো হাজার হাজার বাঙ্গালী ছেলে মেয়ে কাজ করবেন। তাই, পারভেজ যতই চেষ্টা করুন না কেনও, অভিজিত রায়কে মুসলিম কমিউনিটির বিরুদ্ধে দাঁড় করানোর, এটা খুবই পরিশ্রমের কাজ হয়ে যাবে, কারন, পারভেজ না চাইলেও, ইতিহাসের গতিমুখ সামনের দিকে। এবং সেই গতিমুখ কোনও কথিত “র্যাশনাল ইসলাম” দিয়ে সংজ্ঞায়িত হবেনা, গত এক হাজার বছর ধরে তা হয়নি। কথাগুলো এভাবে বলতে হচ্ছে এই জন্যে যে, আমাদের বন্ধু পারভেজ আলমের সাম্প্রতিক সময়ের লেখা গুলো প্রায়শই শেষ হচ্ছে অভিজিত রায়ের নাম জপ করে। পারভেজ কি স্বপ্নে কিম্বা দুঃস্বপ্নেও অভিজিত কে দেখছেন? দেখুন পারভেজ এর সর্বশেষ পাঁচটি ব্লগ এর তালিকা। রিল্যাক্স পারভেজ !
আসুন ব্যক্তি অভিজিত এবং পারভেজ কে শিকায় তুলে রেখে, মূল লেখায় প্রবেশ করি। পারভেজ আলম ইশটিশন ব্লগে একটি লেখা লিখেছেন “কুরানের ঐতিহাসিক কন্টেক্সট নির্ভর ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে” এই শিরোনামে। লেখাটিতে বেশ ইসলামী জারগন আছে, অসংখ্য নাম ধাম আছে, মেলানো একটু কষ্টকর, কিন্তু লেখাটি প্রয়োজনীয়, এই জন্যে প্রয়োজনীয় যে, যুগে যুগে শ্রুতিমধুর আবেগী শব্দের মোড়কে ধর্ম কিভাবে মানুষকে বিষ গেলানোর চেষ্টা করে গেছে ক্লান্তিহীন ভাবে, এই ধরনের লেখা তার উৎকৃষ্ট প্রমান। আমার ইন্টারপ্রেটেশন এর উপর নির্ভর না করে, পাঠক নিজেই লেখাটি পড়তে পারেন এখানে , পারভেজ এর মূল বক্তব্য টি হচ্ছে – কুরআনের বক্তব্য কে আক্ষরিক অর্থে নেয়া যাবেনা, অন্তত ইসলামের ইতিহাসে স্কলার দের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ মনে করতেন যে কুরআন কে বুঝতে হবে সেই সময়কার প্রেক্ষিত বা “কন্টেক্সট” এর আলোকে। অর্থাৎ কুরআনের কোনও কোনও আয়াত শুধু মাত্র সেই সময়ের জন্যে প্রযোজ্য, বা সার্বজনীন ভাবে সকল কালের জন্যে প্রযোজ্য নাও হতে পারে। পারভেজ বলেছেন, কুরআনের এই “কন্টেস্কচুয়াল” ব্যাক্ষ্যা টি প্রতিষ্ঠিত করা না গেলেও, সেই সময় ফুরিয়ে যায়নি। আশাবাদী পারভেজ লিখেছেন এভাবে
“ইতিহাস পালটানো না গেলেও ভবিষ্যত নির্মান করার সুযোগ এখনো শেষ হয়ে যায় নাই। বর্তমানের সংকট মোকাবেলায় এই বিতর্কের দিকে মুসলমানরা দৃষ্টি দেবেন সেই প্রত্যাশা করি। আমাদের জন্যে আশার বিষয় যে, এই বিতর্ক সম্বন্ধে জেনে অথবা না জেনেও কুরানের কন্টেক্সচুয়াল ব্যাখ্যা মুসলমানরা ঠিকই করে যাচ্ছেন।“
যাক পারভেজ “আমাদের” শব্দ টি দিয়ে অন্তত নিজেকে একটি দলভুক্ত করলেন, এটা ভালো লক্ষন। কিন্তু এই “আমাদের” কারা? কাদের? মুসলমানদের? পারভেজ লিখছেন –
“আধুনিক ইসলামী পন্ডিতদের মধ্যে ফজলুর রহমানের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তার পিতা ছিলেন দেওবন্দে পড়ালেখা করা আলেম। ফজলুর রহমান পড়াশোনা করেছেন পাশ্চাত্যের বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়ে। প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য দুই জায়গাতেই ইসলাম সম্বন্ধে তিনি একজন বিশেষজ্ঞ মর্যাদা সম্পন্ন ব্যক্তি। কুরানের যে আয়াতটিতে পুরুষকে নারীর উপর অধিকার দেয়া হয়েছে, তার পরের আয়াতটিকে গুরুত্ব দিয়ে ফজলুর রহমান দাবি করেছিলেন যে পুরুষের এই শ্রেষ্ঠত্ব অর্থনীতির দিক থেকে ফাংশনাল শ্রেষ্ঠত্ব, নারীর উপর পুরুষের কোন জন্মগত শ্রেষ্ঠত্ব নয়। অর্থাৎ, ঐতিহাসিক এবং অর্থনৈতিক বাস্তবতা পরিবর্তিত হলে এই অধিকারের হায়ারিচি পরিবর্তিত হয়ে যাওয়ার দাবি রাখতে পারে। মজার ব্যাপার হচ্ছে, হেফাজতের নারী নীতি বিরোধী আন্দোলনের সময় আমিও একিভাবে কুরানের এই আয়াতের ব্যাখ্যা করেছিলাম ইসলামের ভেতর থেকে হেফাজত বিরোধীতার ডিসকোর্স দাঁড় করানোর চেষ্টা থেকে। “
অর্থাৎ সুরা নিসায় পুরুষ কে নারীর উপরে মর্যাদা দেয়া হয়েছে সেটি সেই সময়কার অর্থনৈতিক কাঠামোতে পুরুষের প্রাধান্য বা নেতৃত্বের কারনে। যদি অর্থনৈতিক কাঠামোর পরিবর্তন হয় তাহলে এই হায়ারারকিরও পরিবর্তন হতে পারে। এই “পরিবরতিত হয়ে যাওয়ার দাবী রাখতে পারে”, কথা টির মানে কি? যদি পরিবর্তিত হয়ে যাবার প্রেক্ষিতে নারীর অবস্থান টিকে পরিবর্তন করার দাবী করা যেতে পারে, তাহলে কি কুরআনের এই সকল অংশের পুনর্লিখনের দাবী টি করা যেতে পারে? পারভেজ কুরআনের কোনও কোনও অংশও পুনর্লিখনের সম্ভাবনার কথা বলছেন? যদি বলে থাকেন, তাহলে সন্দেহাতীত ভাবে আমি এবং বোধ করি অনেক নাস্তিক – মুক্তমনা – এক্টিভিস্ট তার সাথে একমত হবেন। অর্থাৎ কুরআনের একটি বিশদ পুনরলিখন এর দাবী টি অযৌক্তিক নয়, কারন “কন্টেক্সট” বা প্রেক্ষিত বদলে গেছে আমুল। প্রসঙ্গ টিকে যদি আরেকটু বর্ধিত করা হয় তাহলে কেমন হয়? ধরুন পারভেজ সুরা নিসার যে আয়াত টির কথা বলেছেন তাহল এই রকমের ……
পারভেজ, বিশিষ্ট পন্ডিত ফজলুর রহমানের বয়ানে, এই আয়াতটির কেবল একাংশের “কন্টেস্কচুয়াল” ব্যাখ্যা করলেন, কিন্তু বাকি অংশের ব্যাক্ষ্যা টুকু চেপে গেলেন। এই আয়াত টিতে তিনটি অংশ আছে-
১- নারীর উপরে পুরুষের শ্রেষ্ঠত্ব বা কর্তৃত্ব, যা আল্লাহ তায়ালা কর্তৃক নির্ধারিত এবং যার সাথে আয় ও ধন সম্পদের সম্পর্ক আছে।
২-যে সমস্ত নারী ভালো এবং পুণ্যবতী, তারা পুরুষের আনুগত্য করে এবং আল্লাহর ইচ্ছা সংরক্ষন করেন
৩-কিছু নারীর মধ্যে অবাধ্যতা দেখা দেয়, সেক্ষেত্রে, আল্লাহ তায়ালা বলছেন, প্রথমে তাদেরকে সদুপদেশ দেয়ার জন্যে, তারপরে বিছানা থেকে আলাদা করে দেবার জন্যে এবং তারপরে প্রহার করার জন্যে।
আমি ব্যক্তিগত ভাবে আন্দাজ করতে পারিনা সুরা নিসার এই আয়াত টির বাকি অংশের ব্যাক্ষ্যা মুফতি ফজলুর রহমান কি দিয়েছিলেন, পারভেজ নিশ্চয়ই জানেন। যদিও তিনি তার লেখায় সেটুকু আর উল্লেখ করেন নাই। আপনারা পাঠক হিসাবে একটু বলবেন এই অংশ টুকুর আক্ষরিক আর “কন্টেক্সচুয়াল” ব্যাক্ষ্যার মধ্যে কি পার্থক্য থাকতে পারে? তার মানে কি এই যে, অর্থনৈতিক ক্ষমতা যেমন পুরুষ কে নারীর উপরে অবস্থান দেয়, পুরুষ কে ক্ষমতা দেয় নারীকে বিছানা থেকে আলাদা করে দেবার, পুরুষ কে ক্ষমতা দেয় নারীকে প্রহার (কিম্বা পারভেজ দের ভাষায় “মৃদু প্রহার” বা “মৃদু লাঠি চার্জ” ধরনের কিছু একটা) করবার, যদি নারী কখনও সেই অর্থনৈতিক সক্ষমতা অর্জন করে, তাহলে নারী সুরা নিসায় বর্ণিত পুরুষের স্থানে অধিষ্ঠিত হতে পারে? যদি তাইই হয়, সে ক্ষেত্রে পারভেজ কি সুরা নিসার সংশ্লিষ্ট অংশও টুকু পুনর্লিখনের দাবী জানাবেন?
সুরা নিসায় এগার নাম্বার আয়াত বলছে –
“আল্লাহ তায়ালা তোমাদের সন্তান দের সম্মন্ধে তোমাদেরকে নির্দেশ দিচ্ছেন যে, এক পুত্রের জন্যে দুই কন্যার অংশের তুল্য”।
“
– অর্থাৎ আক্ষরিক ভাবে যদি বলা যায় তাহলে বলতে হবে, দুই কন্যা মিলে যা পাবে একজন পুত্র তা পাবে, মানে হোল ছেলের অধিকার মেয়ের চাইতে দ্বিগুণ। কিন্তু পারভেজ এর মতো লেখকেরা তাহলে আমাকে “সালাফি” উপাধি দিয়ে গর্বিত করবেন, কারন আমি কুরআনের আক্ষরিক অর্থ করছি। পাঠক আপনারাই বলুন এই আয়াতটির “কন্টেক্সচুয়াল” ব্যাক্ষ্যা আর কি হতে পারে? আচ্ছা ধরেই নেয়া গেলো যে, সেই সময়ের প্রেক্ষিতে হয়ত এটাই সঠিক এবং যৌক্তিক ছিল, কিন্তু এখনও কি মেয়েরা ছেলে সন্তানদের অর্ধেক উত্তরাধিকার হবে? এই পরিবর্তিত “কন্টেক্সট” এ? পরিবর্তিত “কন্টেক্সট” এও সুরা নিসার এই বিধান কার্যকর থাকে তাহলে কোনও কথা নেই, কিন্তু যদি তা না হয়, তাহলে কুরআনের সুরা নিসার এই অংশের পুনর্লিখনের দাবীর সাথে কি পারভেজ একমত হবেন?
সুরা নিসার পরতে পরতে রয়েছে নারীর জন্যে অমর্যাদাকর কথা ও বানী। আর এই বানী গুলোকেই মুসলমানেরা হাজার বছর ধরে প্রচার করেছে নারীর প্রতি “মর্যাদা” হিসাবে। পারভেজ দের মতে, কুরআনের সকল বানী যেহেতু কোনও না কোনও “কন্টেস্কট” এর সাপেক্ষে নাজেল হয়েছিলো, তাই হয়ত বলা যেতে পারে, নারীর প্রতি এই সকল অমর্যাদাকর টেক্সট হয়ত কোনও এক “কন্টেক্সট” এ জায়েজ ছিল ……… ! আজ হয়ত সেই “কন্টেক্সট” আর নেই, তাই কুরআনের এই সকল আয়াত এর পুনর্লিখনের দাবী টি অযৌক্তিক হবেনা। পারভেজ তার লেখায় “আমাদের” বলে নিজেকে যেভাবে ইনক্লুড করলেন, তাতে তিনি কি এই দাবিটি নিয়ে এগিয়ে যাবেন?
আমি নিশ্চিত, আপনি যদি পরিবর্তিত “কন্টেক্সট” এর কারনে কুরআনের পুনর্লিখন দাবী করেন, তাহলে তিনি অভিজিত সহ আরও হাজারো বাঙ্গালী মুক্তমনা-নাস্তিকদের কে তার পাশে পাবেন। আসুন পারভেজ, আমরা একসাথে শ্লোগান তুলি – পবিত্র গ্রন্থ কুরআন এর একটি বিস্তারিত পুনর্লিখন আশু প্রয়োজন। এটা মুসলমানদের টিকে থাকার স্বার্থেই প্রয়োজন।
আমার খুব আপত্তি লাগে, যে সজ্ঞানে যা গ্রহণ করলাম না তার জন্য আমাকে প্রতি নিয়ত জবাবদিহি করতে হয়! “মুসলমানের ঘরে জন্মে এ করিস, তা করিস”। ভাই আমি ঝামেলা ছাড়া র্ধম ত্যাগ করতে চাই, চাই রাস্তাঘাটে, ওনলাইনে এসব নিয়ে আমাকে বিরক্ত না করে। সম্ভব?
“তাই আমার যুক্তি বলে, ইসলামের কিছু বিষয় যেমন নারীদের প্রহার, পুরুষদের আধিপত্য এগুলো সাধারণ দৃষ্টিতে দেখলে অমানবিক মনে হতে পারে, কিন্তু সামগ্রিক দিক থেকে বিবেচনা করলে তা অমানবিক নয়।”
– আপনি যাই বলেন এরা এর বাইরে কিছুতেই যাবে না!
“একটি জরিপে দেখা যায় যে, কো-এড স্কুলগুলোর থেকে ইউনিসেক্স স্কুলগুলোর রেজাল্ট ভালো এবং ছাত্ররাও অধিক মনোযোগী। কারণ কো-এড স্কুলগুলোর ছাত্ররা সেক্স নিয়েই মনোযোগী থাকে বেশী। অপরদিকে কলেজ-ভার্সিটি গুলোতেও যেখানে নারী-পুরুষ একসাথে ক্লাস হয় সেখানে ইভটিজিং, ধর্ষণ ক্রমাগতভাবে ঘটছেই। এমনকি শিক্ষকদেরও পরীক্ষার খাতা জিম্মি করে ছাত্রী ধর্ষণের মতো জঘন্য ঘটনার নজিরও আছে। একজন ছাত্রী যখন কোন প্রতিষ্ঠানে ধর্ষণের স্বীকার হয় তখন তার উক্ত প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা গ্রহণের কোন মন-মানসিকতাই থাকে না। তাহলে শিক্ষার প্রসার ঘটবে কীভাবে?”
– ভাই ইহা কোন জরিপ? আমার তো তাইলে র্ধষনে রেকর্ড করার কথা! সারাজীবন তো কো-এডুকেশনে পড়ছি!!!
বর্তমানে প্রচলিত সব ধর্মগুলিই মিথ্যা। কারণ সঠিক ভাবে ধর্ম কি তা কে উ জানে না। একটি বিষয় খুবই অবাক লাগে বিশেষ করে ইসলামে অন্যদের প্রতি তীব্র ভাবে আক্রমন করা হয়েছে। অন্যদের ক্ষতি করে নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধি করে তা ধর্ম নামে অভিহিত করা হয়। এগুলি প্রকাশে ত্যাগ করা উচিত। শুধু ভয়ের কারণে এখনো এগুলি মুখে মুখে টিকে আছে। বাস্তবে কেউ ই ধর্মের বিধানগুলি অনুসরণ করতে না।
ইসলামের নানান সুনিদির্ষ্ট সমালোচনার জবাবে অনেকেই প্রায়ই বলে থাকেন যে অন্যান্য ধর্মে আরো বেশী এইসব ব্যাপার আছে।
সেসব ধর্মাবলম্বী লোকের তাহলে ধর্মে আরো বেশী সমস্যা নিয়েও কেন ইসলাম পালনকারীদের মত সমস্যা হচ্ছে না? কেউ কি শুনেছেন সহি খৃষ্টান বা সহি হিন্দুত্বের সন্ধানে সেসব ফলোয়ারদের জেরবার হতে, নিজ ধর্মেরই একে অপরকে ফেতনা সৃষ্টিকারী বলে নির্বিচারে মেরে ফেলতে?
সেসব ধর্মালম্বীরা কি নুতন করে তাদের ধর্মগ্রন্থ ইন্টারপ্রেট করে লিখে সহি ভার্ষন বার করে সমস্যা দূর করেছে? পাগলকে সাঁকো নাড়ানোর বুদ্ধি না দিলেই কি নয়?
(F) (F) (Y)
মুহাম্মদ গোলাম সারওয়ার ভাইকে আবারো ধন্যবাদ দুর্দান্ত আরেকটি লেখা উপহার দেয়ার জন্য।
পারভেজ সাহেব আমাকে এবং আমার লেখা ঠেকাতে গিয়ে নিজেকে ক্রমশঃ তলানিতে নিয়ে যাচ্ছেন। অনেকেই এখন বলছেন উনি উনার আয়াতের যে সমস্ত ব্যাখ্যা-প্রতিব্যাখ্যার মায়াজাল বুনছেন তার অনেক কিছুই নাকি মওদুদী এবং জাকির নায়েকের ব্যাখ্যার সাথে মেলে। ব্যাপারটা যে কতটা বিপজ্জনক পথে চলে যাচ্ছে তা বোধ হয় পারভেজ নিজেও বোঝে না।
আসলে দেহে রোগ বালাই বসতি গড়লে সেটা সরাসরি স্বীকার করে রোগের চিকিৎসা করা জরুরী। ‘রোগ হয়নি’ ভেবে চোখ বুজে বসে থাকলে কেবল রোগ ছড়ানোর রাস্তাটাই প্রশস্ত করা হয়। আমার সাম্প্রতিক একটি ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলামও সেটা।
‘বাংলাদেশের স্বার্থে’ আমাকে আক্রমণ না করে, আর যাবতীয় ইন্টারপ্রিটেশন- মিসইন্টারপ্রিটেশনের ত্যানা না পেঁচিয়ে বরং এই চিঠিটার মর্মার্থ উপলব্ধি করলে বরং কাজে দিত –
An Open Letter to Moderate Muslims – Ali A. Rizvi
আমাদের ঝাণ্ডু-বাম-কাম-ইসলামিস্ট মার্কা ত্যানা-প্যাচানি ইন্টারপ্রেটরের দরকার নেই, যেটা দরকার সৎ এবং সাহসী রিফর্মারের ।
কাউকে না কাউকে জমে থাকা ময়লা পরিস্কারের দায়িত্ব নিতেই হবে, এতো ময়লা জমে গেছে চারদিকে! মুহাম্মদ গোলাম সারওয়ার ভাইকে অভিবাদন সবার অপছন্দের কিন্তু প্রয়োজনীয় কাজটা করার জন্য।
আল-কোরআনের বিভিন্ন আয়াতের পুর্নলিখনের বিষয়ে এমন ভাবনা কি এটা প্রমানিত করে না, যে মুক্তমনারা অবশেষে মানুষের জীবনে ইসলাম এর গুরুত্ব কতটা তা আনুধাবন করতে পেরেছে ?
একজন মুক্ত চিন্তার মানুষ হিসবে আমি মনে করি জ্ঞান ও যুক্তির অনুউপস্হিতে দাবিকৃত কোন মতকেই সত্য হিসাবে গ্রহন বা প্রত্যাক্ষান করা যাবেনা। যে কোন ধর্মের মধ্যেই এই যৌক্তিক এবং
অযৌক্তিক উপাদান প্রচুর পরিমানে রয়েছে । তাই বলে এটি নতুন করে সম্পদনার কোন প্রয়োজন আছে বলে আমার মনে হয় না এবং বাস্তবে এটির কোন সুযোগও নেই ।
তবে ইসলাম সম্পর্কে আমার যে জ্ঞান তাতে আমি মনে করি ইসলামে যেমন ধর্মীয় বিষয় রয়েছে তেমনি এর একটি রাজনৈতিক কর্মসুচিও রয়েছে । ইসলামের এই রাজনৈতিক কর্মটিই হচ্ছে মানুষের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ সৃষ্টির মাধ্যমে বিশ্বে শান্তি স্হাপন ।
বিশ্বে এ পর্যন্ত যত ধর্ম এসেছে তার মধ্যে একমাত্র কণফুসিয়াস ধর্ম ব্যতিত কেবল মাত্র ইসলাম ধর্মেরই রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি রষেছে ।
ইসলামের ধর্মীয় বিধি বিধান নিয়ে ক্ষেত্র বিশেষে বিতর্ক থাকতে পারে কিন্তু এর রাজনৈতিক কর্মসুচি আসাধারণ । আর বিশ্বে এ কর্মসুচি বর্তমানে বাস্তবায়ন সম্বব , শুধু মাত্র মার্কসবাদ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ।
@চলেপথিক,
আমি নিজেকে “মুক্তমনা” বলতে ভালবাসিনা, মুক্ত চিন্তার চেষ্টা করি মাত্র। তাই আপনার মন্তব্যের লক্ষ্য আমি নাও হতে পারি। পৃথিবীতে ইসলামের অনুসারী হচ্ছে ১,২ বিলিয়ন মানুষ। এদের জীবনে ইসলাম ধর্মের প্রয়জনীয়তা কতটুকু তা আমার বা আমার মতো অনেকের প্রত্যাশা দিয়ে নির্ধারিত হবেনা। ইসলামের গুরুতর রিফর্ম বা সংশোধন জরুরী – মুসলমানদের স্বার্থে এবং পৃথিবীর স্বার্থে। উন্নত বিশ্বের খৃস্ট ধর্মের মতো, ইসলাম যদি ঐচ্ছিক ধর্মে পরিনত না হয়, তাহলে তা শুধু মুসলিমদের জন্যেই নয়, সারা পৃথিবীর জন্যেই ভয়াবহ পরিনতি ডেকে আনবে।
সম্পাদনার প্রস্তাব টি আমার নয়। এটি একটি প্রশ্ন, যারা বলেন কুরআনের আয়াতগুলোকে সেই সময়ের আরব প্রেক্ষিত অনুযায়ী বুঝতে হবে এবং প্রয়োগ করতে হবে, তাদের কাছে আমার প্রশ্ন ছিলো – তাহলে যে সমস্ত আয়াত প্রাসঙ্গিকতা হারিয়েছে বলে মনে করা হয়, সেই গুলো কি পুনর্লিখন করা হবে? বা যাবে?
যদিও, এটা সত্যি ধর্ম গ্রন্থ সম্পাদনা করে নিস্ক্রিয় করা যায়না, বরং সমাজ থেকে ধর্মের আপদ গুলি কে নিস্ক্রিয় করাটাই বেশী উপকারী।
আপনার মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ।
আপনাদের ব্যাপারটা অনেকটা এরকম যে, যে খায়নি তার জন্য রাধ, আর যে খেয়েছে তার জন্য বাড়।
পবিত্র কুরআ’ন শরিফে নারিদের অধিকার অবশ্য পালনিয় হিসাবে স্পস্টাক্ষরে লেখা আছে। তাই এটা নিয়ে আপনাদের সমালচনার শেষ নেই। অন্য ধরমে তাদের অধিকারের কোন সিক্রিতি নেই অথচ সে ব্যাপারে অপ্নাদের কোন বক্তব্য দেখা যায় না।
আল্লাহ মহা জ্ঞ্যানি, সর্বজ্ঞ।
অতি সিরিয়াস কোন লেখায় কেন বারে বারে হাঁসি চলে আসে কে জানে।
লোকের সারল্য দেখলে রীতিমত মোহিত হতে হয়। মর্ত্যের পৃথিবীতে বসবাস করলেও সম্ভবত অনেকের মন মস্তিষ্ক অন্য ভূবনে থাকে।
– পারভেজ সাহেব বা যিনিই এই যৌক্তিক প্রজেক্টে এগিয়ে যাবেন তার জন্য ফি আমানিল্লাহ। বায়তুল মোকারম মসজিদ বা শফি হুজুরদের পবিত্র ইসলাম শিক্ষালয়ে আশা করি ওনারা এই প্রস্তাবনা নিয়ে হাজির হবেন। ওনাদের সাফল্য অনিবার্য কারন ওনার কথার মাঝেই আছে। খালি কেয়ামত পর্যন্ত বেঁচে থাকার তওফিক আমার কপালে নেই এই যা।
কোরানের পুনর্লিখনের প্রয়োজন কি ? এখন কি এই গ্রন্থের খুব প্রাসঙ্গিকতা আছে ? এটাকে পিছনে ফেলে কি এগিয়ে যাওয়ার সময় হয়নি ? তাছাড়া কোরান একটি সময়ের ঐতিহাসিক নথি। তার পুনর্লিখনে কি ইতিহাসকে বিকৃত করা হবে না ? কোরানের critical analysis প্রয়োজন, পুনর্লিখন নয়। critical analysis -এর মধ্য দিয়ে তার নেতিবাচক প্রভাবকে অতিক্রম করেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।
কোরআন এবং এর চর্চাকারীরা তো দিনরাত বলছে যে কোরআন শ্বাশত এবং সার্বজনীন এমন কি এটি কোড অব লাইফ। তাহলে সময়ের পরিবর্তনে যদি কোরআনের কোন না কোন আয়াত বা ভার্স যদি তার উপযোগীতা হারিয়ে ফেলে তাহলে কোরআন তো আর সার্বজনীন এবং শ্বাশত রইল না । সময়ের ব্যবধানে একটি আয়াত/ভার্স যদি অতীতে প্রায়োগিক এবং উপযোগী হয় তাহলে আজ যদি ওই একই ভার্স তার উপযোগীতা হারায় তাহলে তো ভবিষ্যতে আরো নতুন নতুন আয়াত তাদের উপযোগীতা হারাবে । সামগ্রিক ব্যাপারটা এমন যে কোরআন সময়ের সাথে পাল্লাদিয়ে পিছিয়ে পড়ছে । কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন – সারভাইভ্যাল ফর দি ফিটেস্ট। যারা ফিট না তারা ক্রমেই হারিয়ে যাবে এবং গিয়েছে। লেখাটা বিশ্লেষণ ধর্মী এবং তথ্য সম্বৃদ্ধ তো বটেই সবসময়ের মতো । ধন্যবাদ লেখক কে।
(Y) (Y) (Y) (Y) (Y)
ভাইরে; কোরআনে একই কথা বারবার বারবার আসা আয়াত গুলা থেকে একটা করে নিয়ে এবং রিপ্লেস বা বাতিল হয়ে যাওয়া আয়াত গুলা বাদ দিয়ে কোরআন নতুন করে সঙ্কলন করলে সেটাই সাইজ কি দাড়াবে সেটা চিন্তা করেছেন???
চটি সাইজের ওই বইটা তখন কোন দিক থেকেই কি আর ধর্মগ্রন্থের মতন দেখাবে কি ???
এই রিস্ক মুসলমানেরা কখনোই নেবেনা। পাছে কেউ সেই বই দিয়ে বাতাস খাইয়া কোরআনের অবমাননা করে বসে সেই ভয়ে 😀
আমাদের দেশে ইসলামকে যে ভাবে প্রচার করা হয়, খোদ সৌদীতে কিন্তু তা নয়। জিহাদ এবং বিবাহ নিয়ে যা যা আছে কুর’আনে, তা কিন্তু কেয়ামত পর্যন্ত বহাল থাকার বিষয়। তাই আমার মনে হয়, কন্টেক্সচুয়াল ব্যাখ্যা করা বা সালাফিদের মত লাইন বাই লাইন ব্যাখ্যা করা, দুইটাই ইসলামের ভুল ব্যাখ্যাতেই পর্যবসিত হবে। যেমন এই লেখায় লেখক খুব সুন্দর করেই দেখিয়েছেন সুরা নিসার আয়াত কতটা অসামঞ্জস্যপূর্ণ এই কালে। এমন কি চার বিয়ের যে হুকুম আছে, তা কিন্তু এতিম মেয়েদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য, এবং তাও কিন্তু অনেক শর্ত সাপেক্ষে। কিন্তু অন্য জায়গায় যুদ্ধ বন্দীদের ও দাসীদের সম্ভোগের ব্যবস্থা খুব সুন্দর করেই বলা আছে।
প্রশ্ন হচ্ছে, দিনকাল পাল্টালে এবং মেয়েদের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি হলে কুর’আনের সব আয়াত উলটে যাবে? তার মানে দাঁড়াচ্ছে, কুর’আনের আরেকটা নতুন রূপ তৈরী করা যেতে পারে শুধুমাত্র কন্টেক্সচুয়াল ব্যাখ্যার অযুহাতে? এর অর্থ কিন্তু দাঁড়ায় এই যে, কুর’আনকে রক্ষা করার অঙ্গীকার ভেস্তে যাবে এর মধ্য দিয়ে।
তুর্কির এক ধর্মবিদ কুর’আনের অনেক ‘রিপিটেড’ আয়াতকে বাদ দিয়ে সংক্ষিপ্ত একটা কিতাব লিখেছিলেন। তার ভেতরে আয়াত সংখ্যা অনেক কমে গিয়ে একটি ছোট্ট কিতাবে তা পরিণত হয়েছিল। সেই কিতাবের বিরুদ্ধে কোন আওয়াজ উঠে নাই। তাই আমার মনে হয়, কুর’আনের একটা মর্ডান কিতাবিরূপ এখন দেওয়ার সময় এসেছে। মূল কিতাব থাকবেই (যদিও এইটাই মূল কিতাব কিনা তা নিয়েও অনেক সংশয় আছে)।
পারভেজের কথা অনুসারে তাহলে বর্তমানে এই আয়াতগুলোর প্রেক্ষিত বর্তমান! আমেরিকাকে করজোরে জিজিয়া প্রদানে বাধ্য করা! অবশ্য যদি প্রেক্ষিত বুঝে থাকি!
@সুষুপ্ত পাঠক, ভালো বলসেন :lotpot:
@সুষুপ্ত পাঠক,
একথা সত্যি, কুরআন আসলে মুহাম্মদের প্রয়োজনে নাজেল হয়েছিলো, সেই অর্থে প্রেক্ষিত বিশয়টা প্রাসঙ্গিক। কিন্তু আলোচনা টি কে কি শুধু “প্রেক্ষিত” বোঝার ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ রাখবেন নাকি কোনও রকমের প্রয়োগের দিকে নিয়ে যাবেন আমাদের বন্ধুরা, সেই বিশয়টি বোঝা জাচ্ছেনা। প্রেক্ষিত বুঝতে হলে কেনও একটি দুটি আয়াত, কেনও সমগ্র কুরআন নয়? প্রকৃত উদ্দেশ্য যেহেতু নাস্তিক – মুক্তমনাদের কে একহাত নেয়া, তাই পারভেজ বা অন্যান্য বন্ধুদের এই ধরনের লেখার উপযোগিতা খুবই কম।
@সুষুপ্ত পাঠক, ভাই চোখ দুইডা বন্ধ কইরা কল্পনা করার চেষ্টা করতাছি, আমেরিকা এবং ইজরাইলের প্রসিডেন্টদ্বয় করোজোড়ে সৌদি আরবরে কর দিতাছে।খালি বিনুদন আর বিনুদন। :hahahee: :rotfl: :lotpot: 😀
@সুষুপ্ত পাঠক,
আমি নিম্নোক্ত আয়াতগুলোর প্রতি আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি:
[৯:৬] আর মোশরেকদের মধ্য থেকে যদি কোনো ব্যক্তি তোমার কাছে আশ্রয় চায় তবে অবশ্যই তাকে তুমি আশ্রয় দেবে, যাতে করে (তোমার আশ্রয় থেকে) সে আল্লাহ তায়ালার বাণী শুনতে পায়, অতপর তাকে তার (কোন) নিরাপদ জায়গায় পৌঁছে দেবে;
[২:২৫৬] (আল্লাহর) দ্বীনের ব্যাপারে কোন জোর জবরদস্তি নেই, (কারণ) সত্য (এখানে) মিথ্যা থেকে পরিষ্কার হয়ে গেছে;
[৮:৬১] (হে মোহাম্মদ,) তারা যদি সন্ধির প্রতি আগ্রহ দেখায়, তাহলে তুমিও সন্ধির দিকে ঝুঁকে যাবে এবং (সর্বদা) আল্লাহর ওপরই ভরসা করবে;
এসব আয়াত পড়ার পরেও কি আপনার মনে হয় যে ইসলাম নিষ্ঠুর ধর্ম?
ইসলামে জিহাদের কথা আছে। জিহাদ অর্থ চেষ্টা করা। অর্থাৎ ইসলাম প্রচার করার জন্য চেষ্টা করা। যেখানে আল্লাহকেই বিশ্বাস করতেই কষ্ট হয় সেখানে আল্লাহর আইন মানার তো প্রশ্নই আসে না। আপনি হয়তো কোরআন পুরোটা পড়েননি। পুরোটা পড়লে কোরআনের উদ্দেশ্য বুঝতে পারবেন। কোরআন মদ, জুয়া, শুকরের মাংস, ব্যভিচার ইত্যাদি হারাম করেছে। এগুলো যে মানবজাতির জন্য হুমকি তা সব বিজ্ঞানীরাই একমত। তবুও অনেক উন্নত দেশেই এগুলো বৈধ। কারণ তারা মনে করে যে এটা ব্যক্তি স্বাধীনতা। কারও ইচ্ছা হলে মদ খাবে না হলে খাবে না। কিন্তু এটা চিন্তা করে না যে, সেটা শুধু সেই ব্যক্তির জন্য নয় বরং আশে পাশের পরিবেশের জন্যও ক্ষতিকর। মদ্যপায়ী অবস্থাতেই দুর্ঘটনা ঘটে বেশি। ধূমপান করলে তা শুধু নিজের জন্য নয় বরং আশে-পাশের লোকদের জন্যও ক্ষতিকর। কেউ আত্নহত্যা করলে সে আর দশ জনকে কষ্ট দিয়ে তারপর মরে। স্বামী-স্ত্রী ডিভোর্স হলে তার বেদনা শুধু তাদের দুজনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে না বরং তাদের সন্তানের প্রতিও মারাত্নক প্রভাব ফেলে। পশ্চিমা বিশ্বে আত্নহত্যা ও ডিভোর্সের হার সর্বোচ্চ। একথা এজন্য বললাম কারণ তারা এইসব ভাইরাস শুধু নিজ রাষ্ট্রের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখে না বরং তা আশে পাশের রাষ্ট্রেও ছড়িয়ে দেয়। তাই ইসলাম এসকল অনৈতিক বিষয়গুলোর বিরুদ্ধে জিহাদ করার নির্দেশ দেয়। আরেকটি কথা বলতে চাই: কোরআন যে সবচেয়ে মানবতাবাদী গ্রন্থ তা বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত। এবং তা প্রমাণ করা হয়েছে বাস্তব পরিসংখ্যানের মাধ্যমে। কারও ব্যক্তিগত মতবাদকে অস্বীকার করা যায় কিন্তু বাস্তব পরিসংখ্যানকে অস্বীকার করার উপায় নেই। কোরআন যদি মানবতার বিরোধী না হয় তবে তার প্রসারে সমস্যা কোথায়?…………. (C)
এবার লেখকের (গোলাম সারওয়ার) উদ্দেশ্যে কিছু বলতে চাই:
# পুরুষদের ওপর নারীদের যেমন ন্যায়ানুগ অধিকার রয়েছে, তেমনি রয়েছে নারীদের ওপর পুরুষের অধিকার, (সূরা বাকারা: ২২৮)
# তোমাদের মধ্যে সেই উত্তম যে তার স্ত্রীর নিকট উত্তম (তিরমিযী : ৩, ১১০০)
# তোমরা স্ত্রীদের সাথে সদ্ব্যবহার কর (ইবনু মাজাহ : ১৮৫১)
# মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেশত (ইবনে মাজাহ,সুনান : ২৭৭১)
ইসলাম ধর্মের উদ্দেশ্য যদি নারীদের ছোট করাই হতো তবে উপরোক্ত রেফারেন্সের কোন অস্তিত্ব থাকতো না। ইসলাম শুধু এক ধরনের অধিকারে বিশ্বাস করে না। বরং সন্তান লালন-পালনের ক্ষেত্রে নারীকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। ইসলাম নারীর কর্মক্ষেত্রে বাধা দেয় না। কিন্তু নারীদের সন্তান জন্মদানের ক্ষেত্রে দীর্ঘ সময় বিশ্রামের প্রয়োজন হয়, তাই তাদের অর্থ উপার্জন Optional রাখা হয়েছে। আপনি পরিসংখ্যান দেখলেই বুঝতে পারবেন যেখানে নারী পুরুষের অবাধ মেলামেশা রয়েছে সেখানে নারীরা নিজেরাই নিজেদের অসম্মান করছে। নিজেরাই ইভটিজিং, ধর্ষণ এর মতো অপরাধ সৃষ্টি করছে। তাই তাদের নিরাপত্তার স্বার্থে ও বিশৃঙ্খলারোধকল্পে বিশেষ নিয়ম প্রবর্তন করা হয়েছে যা আপনার চোখে মানবতা বিরোধী। আপনি পশ্চিমা বিশ্বের নওমুসলিম নারীদের জিজ্ঞাসা করলেই বুঝতে পারবেন যে তারা ইসলাম গ্রহণ করার আগে বেশি স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা অনুভব করেছেন নাকি ইসলাম গ্রহণ করার পরে।………………………………. (^)
@দ্য লাস্ট সামুরাই,
মন্তব্যের জন্যে আপনাকে ধন্যবাদ। কিন্তু ভাইয়া, আপনার এই চমৎকার আয়াত গুলো কি সুরা নিসার বয়ান টিকে নাকচ করে? তরল বা নিস্ক্রিয় করে? সুরা নিসা অনুযায়ী, আমার ছেলে এবং মেয়ে কি আমার সম্পদের উপরে সমান অধিকার লাভ করবে?
কুরআনের “ভালো” আয়াতগুলোর বিরোধিতা বা সমালোচনা করতে দেখেছেন কোনও নাস্তিক কে? বাইবেল এ স্বামী – স্ত্রীর সম্পর্ক এবং অধিকার নিয়ে বেশ কিছু ভালো বয়ান আছে, খোজ করলে হয়ত অন্যান্য ধর্মেও পাওয়া যাবে, সেই সকলের সমালোচনা করা হয়না, কারন তা প্রয়োজনীয় নয়। কোনও বিশেষ আয়াত এর সমালোচনা করা মানে কি সেই সকল “ভালো” বয়ান গুলোকে নাকচ করা? আমি তা মনে করিনা।
সুতরাং, আলোচনা যখন সুরা নিসা নিয়ে, সেটা নিয়ে খানিকটা কথা বলুন। অন্তত স্বীকার করুন, সুরা নিসার বয়ান নারীর জন্যে অবমাননাকর।
আবারও ধন্যবাদ।
@মুহাম্মদ গোলাম সারওয়ার,
কথা হচ্ছিল সূরা নিসার আয়াতগুলো নিয়ে:
যদি বিজ্ঞানকে মানদন্ড হিসেবে ধরা হয়, তাহলে বলবো সূরা নিসা নারীর জন্য অবমাননাকর নয়। কারণ বিজ্ঞান বলে পুরুষের ব্রেন ও নারীর ব্রেনের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। এ পার্থক্য তাদের শারীরিক ও মানসিক ক্ষেত্রেও পার্থক্য এনে দিয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে পুরুষদের দক্ষতা বেশি, আবার কিছু ক্ষেত্রে নারীদের দক্ষতা বেশি।
http://www.psychologytoday.com/blog/the-scientific-fundamentalist/200803/male-brain-vs-female-brain-i
পুরুষরা শারীরিক ক্ষেত্রে বেশি পারদর্শী, অপরদিকে নারীরা মানসিক ক্ষেত্রে বেশি পারদর্শী। পুরুষরা কোন কঠিন বিষয় খুব সহজেই মেনে নিতে পারে কিন্তু নারীদের এই সহ্য করার ক্ষমতা কম। নারীরা নম্র স্বভাবের এবং তারা খুব সহজেই অপরের মন জয় করতে পারে। এগুলো আমার কথা নয়, বিজ্ঞানই আমাদেরকে এগুলো শিক্ষা দেয়। তাই আর্থিক ক্ষেত্রে পুরুষদের দায়িত্ব ইসলামে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। নারীদের ক্ষেত্রে তা করা হয়নি। যদি নারীদের কর্মক্ষেত্রে যাওয়া বাধ্যতামূলক করা হতো আর পুরুষরা বসে বসে তা ভোগ করতো তাহলে অবশ্যই নারীদের প্রতি অত্যাচার করা হতো। কিন্তু কোরআন তা করেনি। বরং বলা হয়েছে পুরুষরা নারীদের Protector।
একটি জরিপে দেখা গেছে, নারীরা সন্তানদের প্রতি পুরুষদের তুলনায় বেশি মায়া-মমতা প্রদর্শন করে এবং নৈতিক শিক্ষার ক্ষেত্রে নারীরাই সন্তানের উত্তম শিক্ষক।
http://time.com/2859665/do-fathers-love-their-children-less-than-mothers-do/:
কোরআনে নারীদের প্রহারের কথা উল্লেখ্য আছে, কিন্তু পুরুষদের প্রহারের কথা উল্লেখ্য নেই। কারণ পুরুষকে বিশেষ মর্যাদা দেয়া হয়েছে। আমার মা যদি আমাকে প্রহার করে, আর আমিও যদি মাকে প্রহার করার অধিকার চাই তবে তা হবে অনৈতিক ও অযোক্তিক। কারণ মা আমাকে গর্ভধারণ করেছেন আমাকে লালন-পালন করেছেন, অত:পর নৈতিক শিক্ষা দিয়েছেন। তাই মার অধিকার আছে আমাকে শাসন করার। অনুরুপভাবে পুরুষকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে ভরণ-পোষণের। সে যদি ভরণ-পোষণে অযোগ্য হয় তবে তাকে স্ত্রীর কাছে জবাবদিহিতা করতে হবে।
পুরুষরা নারীদের প্রহার করবে, তার মানে এই নয় যে পুরুষরা তাদের উপর সেচ্ছাচারিতা করবে। বরং কোন নারীর যদি মনে হয় যে তার husband তাকে অত্যাচার করছে, সে তাকে divorce দিতে পারে। স্বামী নির্বাচনের ক্ষেত্রেও নারীর স্বাধীনতা আছে। নারী-পুরুষ স্বাভাবিকভাবেই একরকম নয়। আপনি যদি তাদের উভয়কে জোরপূর্বক এক লাইনে দাঁড় করাতে চান তবে সামাজিক বিশৃঙ্খলার আশংকা রয়েছে।
একটা উদাহরণ দিলেই বুঝতে পারবেন:
একটি জরিপে দেখা যায় যে, কো-এড স্কুলগুলোর থেকে ইউনিসেক্স স্কুলগুলোর রেজাল্ট ভালো এবং ছাত্ররাও অধিক মনোযোগী। কারণ কো-এড স্কুলগুলোর ছাত্ররা সেক্স নিয়েই মনোযোগী থাকে বেশী। অপরদিকে কলেজ-ভার্সিটি গুলোতেও যেখানে নারী-পুরুষ একসাথে ক্লাস হয় সেখানে ইভটিজিং, ধর্ষণ ক্রমাগতভাবে ঘটছেই। এমনকি শিক্ষকদেরও পরীক্ষার খাতা জিম্মি করে ছাত্রী ধর্ষণের মতো জঘন্য ঘটনার নজিরও আছে। একজন ছাত্রী যখন কোন প্রতিষ্ঠানে ধর্ষণের স্বীকার হয় তখন তার উক্ত প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা গ্রহণের কোন মন-মানসিকতাই থাকে না। তাহলে শিক্ষার প্রসার ঘটবে কীভাবে?
http://www.essayforum.com/writing-3/single-sex-schools-many-benefits-equally-good-39467/
http://svpe.uoregon.edu/GetEducated/Statistics.aspx
তাই আমার যুক্তি বলে, ইসলামের কিছু বিষয় যেমন নারীদের প্রহার, পুরুষদের আধিপত্য এগুলো সাধারণ দৃষ্টিতে দেখলে অমানবিক মনে হতে পারে, কিন্তু সামগ্রিক দিক থেকে বিবেচনা করলে তা অমানবিক নয়।
সুষুপ্ত পাঠকের উদ্দেশ্যে:
“যেখানে পাও হত্যা কর” এখানে যুদ্ধক্ষেত্রের কথা বলা হয়েছে। শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন হওয়ার পর হত্যা করা বৈধ নয় তা আমি আগেই উল্লেখ্য করেছি। আপনি Overall দিক বিবেচনা করেননি। তাই এ ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু বলতে চাই না।
মোহাম্মদ (সা:) সম্পর্কে যে উক্তি করেছেন সেই প্রসঙ্গে:
নবী-রাসূলরা যে মিথ্যাবাদী তার কোন বাস্তব প্রমাণ নেই। বরং মোহাম্মদ (সা:) যে সত্যবাদী তার বৈজ্ঞানিক প্রমাণ রয়েছে। ১৪০০ বছর আগে কোরআন বিজ্ঞান সম্পর্কে যা বলেছে, বিজ্ঞান তা আবিষ্কার করেছে কিছুকাল আগে। তিনি কিভাবে জানলেন এসব তথ্য? বিস্তারিত জানতে:
http://www.irfi.org/articles3/articles_4301_4400/recently%20%20discovered%20science%20-1400%20yr%20old%20qur%27anhtml.htm
মদ, শুকরের মাংস, জুয়া, পতিতাবৃত্তি ইত্যাদি যে ক্ষতিকর তা জানতে চেয়েছিলেন:
http://en.wikipedia.org/wiki/Alcohol_and_health
http://animalsciencejournal.usamv.ro/index.php/scientific-papers/131-a56
http://www.medicalnewstoday.com/articles/15929.php
http://news.bbc.co.uk/2/hi/health/154140.stm
কোরআন সঠিক না বেঠিক? আধুনিক বিজ্ঞানীদের মতামত দেখুন:
http://www.youtube.com/watch?v=FUUPYs0gElU
@দ্য লাস্ট সামুরাই,
ভাইয়া দ্যা লাস্ট সামুরাই, আপনার এই সকল বক্তব্যের সপক্ষে কয়েকটি Peer Reviewed Journal article এর রেফারেন্স দেয়া যাবে? যদি তা দিতে পারেন, তাহলে সত্যিই আপনার সাথে বিতর্কে অংশ গ্রহন করবো।
ব্যাক্তিগত ভাবে নেবেন না, ইন্টারনেট বাজার চলতি সাইট গুলোকে রেফারেন্স হিসাবে ধরে আলোচনা বেশী দূর এগোয় না। ভালো থাকবেন।
@মুহাম্মদ গোলাম সারওয়ার,
নিচের ওয়েবসাইটগুলো try করতে পারেন:
http://www.bbc.com/news/science-environment-29405467
http://www.cnn.com/2013/09/10/world/asia/asia-rape-report/
http://www.cnn.com/2013/10/09/opinion/foubert-fraternities-rape/
http://edition.cnn.com/2011/12/17/us/vermont-rape-survey/
http://www.dailymail.co.uk/news/article-1325770/Children-better-school-mother-stays-home-year.html
http://timesofindia.indiatimes.com/life-style/relationships/parenting/Why-being-housewife-is-a-big-deal/articleshow/14594870.cms
@দ্য লাস্ট সামুরাই,
ভাইয়া দ্য লাস্ট সামুরাই, আমি দুঃখিত যে আপনাকে Peer Reviewed Journal বিশয়টা বোঝাতে ব্যর্থ হয়েছে। আপনার যুক্তিগুলোর সপক্ষে পপুলার ওয়েবসাইট না দিয়ে, কিছু গবেষণা কাজের উল্লেখ করতে পারলে, আলোচনায় আগ্রহী হতে পারতাম।
@দ্য লাস্ট সামুরাই,
আপনার মন্তব্যের দ্বিতীয় অংশ নিয়ে আমার বলার কিছু নেই, কারন ওই অংশ টুকুকে মনে হচ্ছে, হেফাজত এ ইসলামী’ র ঘোশনাপত্র থেকে কাট এন্ড পেস্ট করা হয়েছে। দেলাওয়ার হোসেন সাইদীর বয়ানও ঠিক আপনার মতই। তাই উত্তর দেয়া থেকে বিরত থাকলাম।
@দ্য লাস্ট সামুরাই,
মুহাম্মদ মক্কায় থাকার সময় যখন তার অনুসারী কম, পায়ের নিচে মাটি নেই- তখন “যেখান পাও সেখানেই আক্রমন কর” টাইপ আয়াত দিয়ে চ্যালাদের উসকে দিয়ে নিজেই বিপদে পড়তেন। সেটা তিনি ভাল করেই জানতেন। কাজেই মদিনায় প্রতিষ্ঠিত হয়ে ঐ উগ্র আয়াত নাজিল করা তা জন্য খুব সহজ ছিল। কুরআনের “দ্বিন নিয়ে বাড়াবাড়ি করো না” টাইপ আয়াত যেমন আছে তেমনি “যেখানে পাও হত্যা করো” টাইপ আয়াতও আছে। আপনি কিন্তু অস্বীকার করেননি আমার উল্লেখ করা আয়াত-এর ভাবার্থ সঠিক নয়। আমার এটা জেনে খুব ভাল লাগছে যে আপনি “মডারেট মুসলিম” নন! সত্যকে স্বীকার করে নিয়েছেন।
পুরোটা পড়েছি জানলে হয়ত বলতেন, আরবী না জানলে কুরআন বুঝা যাবে না!
বিজ্ঞানের কোন শাখা এগুলোকে মানব জাতির জন্য হুমকি আবিস্কার করছে অনুগ্রহ করে জানালে কৃতার্থ হবো!
একটা সিরিয়াস লেখায় আপনি হঠাৎ জোকস শুনাবেন এতটা আশা করিনি কিন্তু! কেমন করে কোন বই “সবচেয়ে মানবতাবাদী” বিজ্ঞান প্রমাণ করে এটা সিরিয়াসভাবে জানতে চাইছি। বিজ্ঞানে কি নীতিকথা বিষয়ক কোন শাখা আছে?…
“আসুন পারভেজ, আমরা একসাথে শ্লোগান তুলি – পবিত্র গ্রন্থ কুরআন এর একটি বিস্তারিত পুনর্লিখন আশু প্রয়োজন। এটা মুসলমানদের টিকে থাকার স্বার্থেই প্রয়োজন।”-না, জনাব গোলাম সারোয়ার-কুরআনের পুনর্লিখন করে মুসলমানদের টিকিয়ে রাখা যাবে না। কারণ পুনর্লিখিত কুরআনকেত আর আল্লার বাণী বলা যাবে না। আল্লার বাণী না হলে সব মুসলমান তা মানবে কেন। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অভাবিত বিকাশের এ যুগে শুধু ইসলাম কেন, সকল ধর্মের অনেক বিশ্বাস ও আচরণ (Ritual) অপ্রাসঙ্গিক হয়ে গেছে এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বিকাশের সাথ এধারা অব্যাহত থাকবে । পারভেজ সাহেবদের প্রাণান্তকর শত প্রয়াস সত্ত্বেও অনাগত ইতিহাসই একদিন ধর্মের প্রাপ্য অবস্থান নির্ধারণ করে দেবে।
@মোঃ জানে আলম,
ধন্যবাদ আপনাকে। আপনার বক্তব্যের সাথে সহমত।