এক
স্বপ্নের ঘোর যেন কাটতে লাগলঃ
যুদ্ধ! জীবন-মৃত্যুর খেলা। তাও আবার মুক্তিযুদ্ধ-যে যুদ্ধের রক্তস্নাত সূতিকাগারে একটি জাতিরাষ্ট্রের জন্ম-সে যুদ্ধের এক কিশোর গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা আলম। এক ঘর পালানো ছেলের নিতান্ত একা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে যাওয়া, মাসব্যাপী কষ্ঠসাধ্য গেরিলা যুদ্ধের প্রশিক্ষণ, অতঃপর যুদ্ধ, যুদ্ধ শেষে বিজয়ীর বেশে ঘরে ফেরা-এর সবই স্বপ্নের মত লাগছে আলমের। যেন এক ঘোরের মধ্যে এতসব ঘটনা ঘটে গেছে। চোখ বুজে সে যখন তার নিকট অতীতের ঘটনার স্মৃতি রোমন্থন করে, তখন সেলুলয়েডের ফিতার মত একটির পর একটি ঘটনা তার মানসপটে ভেস ওঠে । তার নিজেরও তখন সংশয় হয়-একি তার স্বপ্ন দেখা ! তার দু’হাতে কনুই ও দু’হাটুর দগ্ধ ঘা স্পর্শ করে সে নতুন করে যেন নিশ্চিত হয়-তার কৈশোরের এ এক অমোচনীয় ইতিকাব্য ।
মুক্তিযুদ্ধে যখন অংশ নেয় আলম, তখন তার বয়স চৌদ্দের কোঠায়-নিতান্ত কিশোর কিংবা বলা চলে কৈশোর-যৌবনের সন্ধিকাল । ষাটের দশকে বাঙালি জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের প্রবল আবেগোচ্ছাস সেদিন আলমের মত অনেক কিশোরকেও যুদ্ধে যেতে উদ্বুদ্ধ করেছিল। তাই বাবা মাকে না বলেই আলমও মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিতে অতি সংগোপনে বাড়ি ছেড়ে ছিল। রাজনীতি বলত সে শুধু বুঝেছিল-এগার শ’ মাইল দূর থেকে পশ্চিম পাকাস্তানী অবাঙ্গালী শাষকগোষ্ঠী বাঙালি জাতিকে রাজনৈতিক ভাবে শাসন ও অর্থনৈতিক ভাবে শোষণ করছে। এ কাজে পশ্চিমারা পবিত্র ধর্মকে ব্যবহার করছে। এটুকু উপলব্ধিও আলম অর্জন করেছে রাজনৈতিক নেতাদের, বিশেষভাবে আওয়ামী লীগ নেতাদের বক্তৃতা শুণতে শুণতে। তাই ১৬ই ডিসেম্বর এর বিজয়ের পর আলম ভাবল-এ স্বাধীনতা সব সমস্যার সমাধান করে দেবে। কাঙ্ক্ষিত মুক্তি পাবে জাতি।
এ ভাবনা বুকে ধারণ করে আলম ফিরে যায় তার স্কুল জীবনে। অষ্টম শ্রেণীর বার্ষিক পরীক্ষা তাকে দিতে হয় নি জুনিয়র স্কলারশীপ পরীক্ষা দেওয়ার জন্য। নবম শ্রেণীর বছর গেছে মুক্তিযুদ্বের মধ্যে। যুদ্ধের পর অটো-প্রমোশনে দশম শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হয় সে। পরবর্তী বছর এস,এস,সি পরীক্ষার অবতীর্ণ হতে হবে তাকে। মুক্তিযোদ্ধার প্রশিক্ষণের সুবাদে তাকেই স্কুলে ক্লাস শুরু হওয়ার পূর্বে এ্যাসেম্বলীর সময় সকল ছাত্রকে পিটি করানোর দায়িত্ব দেওয়া হল। প্রতি দিন ক্লাস শুরুর পূর্বে সমবেত সকল ছাত্রদের পিটি করাত আলম। প্রথম প্রথম আলমের বিষয়টি স্বস্তিকর মনে না হলেও ক্রমে তার কাছে তা স্বাভাবিক হয়ে আসে। একজন অতি সাধারণ ছাত্র হিসাবে আলম তার লেখা পড়ায় মনোনিবেশ করে। তার এখন স্বপ্ন-সে তার স্বাভাবিক লেখা পড়া চালিয়ে যাবে । পিতা-মাতার স্বপ্নের সাথে সামঞ্জস্য রেখে সে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করবে।
পতেঙ্গায় মেয়েদের জন্য আলাদা কোন স্কুল নেই। সহশিক্ষা এখনো পতেঙ্গার মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হয় নি। তাই পতেঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়েও কোন ছাত্রী ভর্তি করা হয় না। সমগ্র পতেঙ্গায় হাতেগোনা দু’একটি মেয়ে মাত্র এসএসসি পাশ করেছে। প্রাইমারী শিক্ষার বেশী পতেঙ্গার মেয়েরা এখন পর্যন্ত লেখা পড়া করতে পারে না। পতেঙ্গার পশ্চাৎপদতার এ ছিল বড় দৃষ্টান্ত। মেয়েদের জন্য আলাদা স্কুল নির্মাণ ও পরিচালনা মোটেও সহজসাধ্য নয় । তাই পতেঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি সাহসী সিদ্ধান্ত নিল, পতেঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ে সহশিক্ষা চালু করার-বাহাত্তর সালে এসে। আলম ও তার কয়েক বন্ধু- রফিকুল ইসলাম, দেলোয়ার, শেখ আহাম্মদ, একদিন বের হল সহশিক্ষার পক্ষে ও ছাত্রী ভর্তির আহবান জানিয়ে পোস্টার লাগানোর জন্য। বিভিন্ন স্থানে অনেক বিরূপ প্রতিক্রিয়ার মুখোমুখী হল তারা । কোন কোন ব্যক্তি তাদের সাথে যাচ্ছেতাই ব্যবহার করল। না, তাদের ব্যঙ্গ, বিদ্রুপ ও উষ্মায় আলমেরা দমল না, মাথা নত না করে এগিয়ে গেল তারা। কিন্তু ফুলছড়ি পাড়ার আবদুল মজিদ কেরানী-একজন স্বল্প শিক্ষিত অথচ আলোকিত মানুষ, তাদের প্রচণ্ড উৎসাহ দিয়ে বলল, তোমারা এগিযে যাও, আমি আমার মেয়েকে সে স্কুলে পাঠিয়ে তোমাদের সাহায্য করব।
শত বিরূপ মন্তব্য, টিকা-টিপ্পনী ও বাধাঁকে চ্যালেঞ্জ হিসাবে নিয়ে আলম নিজের ছোট বোন আনোয়ারাকে নন্দন কানন স্কুল থেকে এনে পতেঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি করাল এবং আনোয়ারা ও মজিদ কেরানীর মেয়ে জোহরাকে দিয়েই পতেঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহশিক্ষা শুরু হল। কাটগড় হিন্দু পাড়ার নন্দী বাবুর মেয়ে সবিতা, কবিতা, নমিতা, ওরা তিন বোন এক সাথে ভর্তি হল। পতেঙ্গায় ছেলেদের পাশাপাশি মেয়রাও শিক্ষার আলো পেতে লাগল। এ যেন স্বাধীনতার তাৎক্ষণিক সুফল ।
দেখতে না দেখতেই বছর ঘুরে আসে। আলমকে এ বছর-১৯৭৩ ইং সাল- এসএসসি পরীক্ষায় অবতীর্ণ হতে হবে। পতেঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ে এই প্রথম বিজ্ঞান বভাগ চালু করা হবে। আলম ও তার আরো চার জন সহপাঠি-তাহের,দেলোয়ার,রফিক,শেখ আহাম্মদ-বিজ্ঞান বিভাগে পরীক্ষা দেবে। বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র হিসাবে সে ও তার চার সহপাঠি স্কুল পরিবর্তন করতে চাইল। কারণ তাদের স্কুলে তখনো বিজ্ঞান বিভাগের প্রয়োজনীয় শিক্ষক ছিল না। ছিল না কোন ল্যাবরেটরী । কিন্তু স্কুল কর্তৃপক্ষ তাদের কোনভাবেই স্কুল থেকে যাওয়ার অনুমতি দিবে না। স্কুল কর্তৃপক্ষের আকাঙ্ক্ষা, আলমদের ফলাফল স্কুলের মান-সন্মান বৃদ্ধি করবে-সাথে সাথে বিজ্ঞান শাখা খোলার ব্যাপারে চুড়ান্ত সরকারী অনুমোদন পেতে সহায়ক হবে।
অবশেষে স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবীর মুখে তাদের নতি স্বীকার করতে হয়। শেষ পর্যন্ত পতেঙ্গা হাই স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অবতীর্ণ হয় তারা। তারা চার জন- স্কুলের প্রধান শিক্ষক শ্রী দ্রুববতী চক্রবর্ত্তী যাদের ফোর স্কলার বলে ডাকতেন-স্কুল কর্তৃপক্ষের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটিয়ে পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে পাশ করল। তাদের ফলাফল নিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষও খুশী। প্রথম বিজ্ঞান বিভাগ চালু করে বিজ্ঞান বিভাগে পরীক্ষায় উত্তীর্ণের হার শুধু একশ শতাংশ নয়, তার মধ্যেই সবাই প্রথম বিভাগে পাশ করেছে।
আলমের একই গ্রুপের সহযোদ্ধা সহ পতেঙ্গা এলাকা থেকে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছে তেতাল্লিশ জন যুবক। যুদ্ধ শেষ । এখন কী করবে তারা ? সরকারী ভাবে কোন উদ্যোগ গ্রহণ কিংবা নীতি ঘোষণা করা হল না। সদ্য যুদ্ধফেরত মুক্তিযোদ্ধারা কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে লক্ষ্যহীন জীবন যাপন করতে লাগল। কেহ কেহ জীবিকা নির্বাহের জন্য বিভিন্ন কাজে স্বেচ্ছা-নিয়োজিত হতে লাগল।
কলেজে ভর্তি হবে আলম। একাধিক কলেজে ভর্তি পরীক্ষার অবতীর্ণ হল সে। চান্স পেল একাধিক কলেজে। কিন্তু পরিশেষে সে ভর্তি হল চট্টগ্রাম কলেজে। তার বাড়ি থেকে প্রায় ১৫/১৬ কিলোমিটার দূরে এ কলেজ। প্রতিদিন আলম সুদূর পতেঙ্গা থেকে চিটাগাং কলেজে যাতায়াত করে। বাড়ি থেকে প্রায় আড়াই কিলোমিটার পথ পায়ে হেটে সে গুপ্তখালের মাথায় ৯নং বাস স্টান্ডে উপস্থিত হয়। সেখান থেকে বাসে করে বার/তের মাইল পথ অতিক্রম করে কলেজ গেইটে নামে।
কর্ণফুলী নদীর পশ্চিম পাড়ে পনের নম্বর বাস স্ট্যাণ্ড।নদীর পূর্ব পাড় থেকে আনোয়ারা-বাঁশখালী থানার গ্রামের শহরগামী লোকে বাস প্রায় ভর্তি হয়ে যায়। তাই আলমকে প্রায়শঃ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে পুরা রাস্তা যেতে হয়। কখনো কখনো পথিমধ্যে কোন লোক নেমে গেলে সে আসন পায়। প্রায়শঃ লোকগুলো নামত কোর্ট বিল্ডিং স্টপেজে গিয়ে। আলম বুঝতে পারে, নদীর ওপারের গ্রামের মানুষ, বগলে ছাতা, হাতে কাগজের পোটলা, কারো কারো কোমড়ে চওড়া বেল্ট, তারা কোর্ট বিল্ডিং যাচ্ছে জায়গা জমি নিয়ে মামলা করতে। পরস্পরের বিরুদ্ধে মামলা করতে করতে একদিন এ সহজ-সরল মানুষগুলো হয়ত নিঃস্ব হয়ে যাবে।
কলেজে একাদশ শ্রেণীতে ক্লাস করার অভিজ্ঞতা তার অভিনব মনে হল। এক এক ক্লাস এক এক কক্ষে। কোনটি ফ্লাট ক্লাস রুম, কোনটি গ্যালরী। এক ক্লাস শেষ হতে না হতেই আরেক ক্লাসে যাওয়ার জন্য ছাত্র-ছাত্রীদের সে কি দৌড়-পছন্দসই আসনে বসার জন্য। সে দৌঁড়ে আলম কখনো অংশ নেয় না। ফলতঃ যে কোন একটি আসনে সে বসে পড়ে। সিনিয়র ক্লাসের ভাইয়েরা তাদের এ দৌঁড়াদৌঁড়ি নিয়ে হাসাহাসি করে। ইলেভেন ক্লাস বলে ব্যাঙ্গ-বিদ্রুপ করে। অথচ একই অবস্থা তারাও করত যখন তারাও ইলেভেন ক্লাসে পড়ত।
কলেজের পরিবেশ আলমের ভাল লাগে। কেবল কিছু কিছু ছাত্রের বাড়াবাড়ি রকমের দুষ্টুমি তার বিরক্তির উদ্রেক করে। তারা প্রায় হয় কলিজিয়েট স্কুল, নয়তোবা সানপ্লাসিড স্কুলের ছাত্র। ক্লাসে তারাত মনোযোগী নয়ই, অন্য ছেলেদের ও অহর্নিশ ডিসটার্ব করে। বেশভুষায় বুঝা যায় তারা সবাই ধনীর দুলাল। প্রত্যেকে তারা আলাদা আলাদা বিষয়ে আলাদা আলাদা শিক্ষক রেখে লেখা পড়া করে বাসায়। আর আলমদের মত যাদের গৃহ শিক্ষকের কাছে পড়ার সামর্থ্য নেই, তারা ক্লাস অনুসরণ করতে না পারলে তাদের উপায় নেই। অথচ এ সমস্ত ছেলেরা অনেক ক্লাসে সে সুযোগ রাখে না। কোন কোন শিক্ষকেরা তাদের দুষ্টুমির সামনে এত অসহায় যে, তারা যখন ক্লাসে আসে, তখন এ সমস্ত ছেলেরা বিভিন্ন প্রাণী-বিশেষ করে শৃগালের , ঘোড়ার, মোরগের ডাক দেয়, কাগজের রকেট বা বিমান বানিয়ে ছুঁড়ে মারে মেয়েদের দিকে। গ্যালরীর উপরের সিড়িঁতে মার্বেল গড়িয়ে দেয়-ঠক্ ঠক্ করে সে মার্বেল ফ্লোরের দিকে গড়িয়ে পড়ে। শিক্ষক মহোদয় কিছুই বলতে পারেন না। তাদের ব্যক্তিত্বহীনতা আলমকে যারপরনাই ব্যথিত করে। অথচ কেমিষ্ট্রির স্যার সিরাজুল ইসলাম সাহেব যখন ক্লাসে আসেন, তখন ঐ সকল ছেলেদের অস্থিত্বও খুঁজে পাওয়া যায় না। ক্লাসে তখন পিন-পতন নীরবতা। স্কুলের মত তিনি ছাত্র-ছাত্রীদের পড়া জিজ্ঞেস করেন। না পারলে তার বকুনীর কষাঘাতে জর্জরিত হতে হয়। কখনো কখনো তিনি কাউকে কাউকে ক্লাস রুম থেকে বেরও করে দিতেন। কেমিস্ট্রির মত নিরস বিষয়কে তিনি এমন রসাত্বক ও সাবলিল করে বুঝাতেন, যা বাড়িতে এসে আলমকে আর পড়তে হয় না।
আলমদের সেকশনে ছাত্রীর সংখ্যা গুটিকয়েক। অন্যান্য সেকশানে, বিশেষ ভাবে কলা বিভাগের শাখা গুলোতে ছেলে মেয়ের সংখ্যা প্রায় সমান সমান। মাঝে মধ্যে সে তার বন্ধু রফিকের সাথে তাদের বাংলা ও ইংরেজির ক্লাসে উপস্থিত থাকত। সেখানেও সে দেখতে পেত কিছু ছেলের লাগামহীন দুষ্টুমী। ভাল লাগত না আলমের। এত দূর থেকে এত কষ্ট করে বাবার পয়সা খরচ করে ক্লাস করতে এসে বস্তুতঃ লেখা পড়া কিছুই হয় না। চেষ্টা করেও সে ক্লাসের পড়া অনুসরণ করতে পারে না। শিক্ষকেরা নিজের মত করে লেকচার দিয়ে চলে যাচ্ছেন। কেউ শুনল কি শুনল না, তার প্রতি কারো ভ্রুক্ষেপ নেই। অঙ্কের স্যারেরা কেবল তাদের নোট করা খাতা দেখে দেখে বোর্ডে অংক কষে আর বিড় বিড় করে কি জানি বলে। আলম মরিয়া হয়ে চেষ্টা করে ক্লাসের পড়া বুঝার জন্য, কারণ সে জানে তার পক্ষে কোন সাবজেক্টেই শিক্ষকের কাছে পড়া সম্ভব না। আলম উপলব্ধি করে সরকারী কলেজ হিসাবে চট্টগ্রাম কলেজের যে সুনাম, তাতে বস্তুতঃ কলেজের কোন ভূমিকা নেই। ধনীর মেধাবী দুলালেরা এ কলেজ পড়ে। বাবা-মার প্রচুর টাকার শ্রাদ্ধ করে তারা রেজাল্ট ভাল করে। নাম হয় কলেজের।(চলবে)
ব্যক্তির টাটকা স্মৃতিতে চাওয়া-পাওয়ার খতিয়ান, জন্মভূমির কথা, সময়ের আলেখ্য এক নিঃশ্বাসে পড়লাম । উত্তম পুরুষে লেখা হলে হয়তো আরো স্বচ্ছন্দে পড়া হতো। কর্ণফুলির মোহনায় এক পতেংগা সমুদ্র সৈকত ছাড়া কি ইতিহাস কি ঐতিহ্যে সুনসান নিরাভরণ পতেঙ্গার ইতিহাসের ভিত্তি কী এখান থেকেই রচিত হবে ? হয়তোবা। দূরে থেকেও জড়িয়ে থাকা স্মৃতিকাতর কেউ অপ্রাসঙ্গিকভাবে বলতেও পারে ” যায় যদি লুপ্ত হয়ে যাক শুধু থাক এক বিন্দু নয়নের জল, কালের কপোল তলে শুভ্র সমোজ্বল এ’ তাজমহল।” আমাদের আশায় বসতি। পরবর্তি কিস্তির অপেক্ষায় থাকলাম।
@মোঃ আলী আজম,
লেখাটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ। আসলে লেখাটি অনেক বছর পূর্বের। িকন্তু নানা কারণে প্রকাশ করতে সাহস পাই নি। কারণ নিজের কাহিনী নিজের মুখে বলা সত্যিই বিব্রতকর মনে হয়েছে সব সময়। তাছাড়া আত্মজীবনি লেখার মত বিশিষ্ট জন হয়ে ওঠেছি বলে কখনো নিজকে মনে হয় নি। তাই তৃত্বীয় পুরুষে অন্যের মুখে স্মৃতি কথা বলার প্রয়াস এবং পাঠক পড়বে কিনা সে দ্বিধা নিয়ে পরিশেষে মুক্তমনায় পোষ্টিং। যাক, বিলম্বে হলেও তা প্রবাসী আলী আজমের নজরে পড়েছে লেখাটি।ভাল লাগল।
ভালো লাগছে সিরিজটি পড়তে।
@তামান্না ঝুমু,
অশেষ ধন্যবাদ। অনেক দিন কারো মন্তব্য না পেয়ে ভাবছিলাম, মুক্তমনার পাঠকদের বোধহয় লেখাটি ভাল লাগছেনা, আর পোষ্ট করব কিনা ।আপনার মন্তব্যে সাহস পেলাম।
মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তী সীমাহীন লুঠপাঠ, দুর্নীতি, অনিয়ম, অন্যদিকে মুক্তিযোদ্ধাসহ যুব সমাজের দিশেহারা পরিস্থিতি, ১৯৭৪ এর দুর্ভিক্ষ, রক্ষী বাহিনী গঠনসহ নানা বিষয়ে আরেক মুক্তিযোদ্ধা, প্রয়াত পপ সম্রাট আজম খানও খোলামেলা বলেছিলেন:
মুক্তমনাতেই বেশ আগে এ নিয়ে নোট লিখেছিলাম [লিংক]
খুব আগ্রহ নিয়ে ধারাবাবিকটি পড়ছি। একজন মুক্তিযোদ্ধার জবানীতে মুক্তিযুদ্ধের অকথিত ইতিহাস পাঠের মর্যাদা অনেক বড়ো।
চলুক। (*) (Y)
@বিপ্লব রহমান,
আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ। আপনার মন্তব্যে লেখা চালিয়ে যাওয়ার জন্য অনুপ্রেরণা পেলাম। মুক্তিযোদ্ধা আজম খানের এ উপলব্ধি আমার লেখার পরের কিস্তিগুলোতে পাবেন।
(Y)
দারুণ, চালিয়ে যান। আশা করি আগামীতে আরো ভাল হবে।
@আবেদ হোসেন,
অনুপ্রেরণা দেওয়ার জন্য অশেষ ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।
অসাধারণ! শুধু সামান্য সম্পাদনা লেখাটিকে আরও আকর্ষনীয় করে তুলতে পারে!
(Y)
একটুও ভিন্নতা নেই আমার অভিজ্ঞতায়! এই বিষয়গুলি বোধহয় ইউনিভার্সাল!
যাই হোক, চলুক স্যার!
@গুবরে ফড়িং,
লেখাটি পড়া ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।