২০১২ সালের ডিসেম্বরের সাতাশ তারিখ দুই স্যুটকেসে জীবনটাকে ভরে সামিয়া উঠে পড়লো ভাড়া করা সাদা রঙের টয়োটা গাড়িটায়। আগে এই ধরনের রজনীগন্ধা সজ্জিত গাড়ি রাস্তায় চলতে দেখতাম, আর এবার গাড়ির ভেতর থেকে দেখলাম রাস্তাটাকে। সেই রাস্তাটা, রাস্তাগুলোকে পার করে একসময় চলে আসলাম মিরপুরের এক চিপায় তুরাগ নদীর পাড়ের এক বাড়িতে, যে বাড়িটা আমার মা-বাবা বানিয়েছিলেন তাদের জীবনীশক্তি নিঃশেষ করে দিয়ে। ডিসেম্বরের সাতাশ তারিখ মধ্যরাত থেকে সেই ছোট বাড়ির ছোট এক ফ্ল্যাটে শুরু হলো আমার আর সামিয়ার সংসার। যে সংসারে আমাদের প্রতিদিনের জন্য বরাদ্দ তিন বালতি পানি। সকাল সাতটায় উঠে সেই পানি ধরতে হয়, সারাদিন আর পানির দেখা মেলে না, মেলে আবার পরের দিন ভোরে। ভাগ্য ভালো থাকলে সে পানি হয় সত্যিকারের পানির মতো, অন্যান্য দিন ঘোলা কিংবা আমার গায়ের রঙের মতো।
বিয়ে উপলক্ষে উপহার পেয়েছিলাম মাইক্রো-ল্যাবের একটা ছোট স্পিকার। সেই ছোট স্পিকারে রাহিন ভাইয়ের বাঁশি আর আনন্দ ভাইয়ের কণ্ঠের শঙ্খ শুনে ঠিকই আমরা বেঁচে থাকা শুরু করেছিলাম, বেঁচে থাকা শুরু করেছিলাম বুক ভরা আনন্দ নিয়ে। একটা মাস পার করে আমরা চলে এলাম ফেব্রুয়ারিতে, আমাদের প্রিয় ফেব্রুয়ারিতে। ফেব্রুয়ারির শুরুতেই দুর্দান্ত এক ব্যাপার ঘটে গেলো, জয় আমাকে চেনালো সোহরাওয়ার্দি উদ্যানে লুকিয়ে থাকা মুক্ত মঞ্চ। সে মঞ্চে বিকালের পর সবাই আসে মুক্ত হতে, কেউ গিটার হাতে, কেউ তাস নিয়ে, কেউ বা শুধুই ঘাস পাতা নিয়ে। ফেব্রুয়ারির চার তারিখে সন্ধ্যায় ডান পাশে বইমেলা রেখে বাম পাশের মুক্ত মঞ্চ পরিষ্কারে ঝাড়ু হাতে নেমে পড়লাম সামিয়া, জয়, সাফি, জারিফ, সুইডেনের এরিকা ও অন্যান্যদের সাথে। শতবছরের পড়ে থাকা আবর্জনা আমরা ঝাড়ু হাতে এক পাশে সরাতে থাকলাম। এরিকার হাতে ঝাড়ু ছিলো না সেদিন, সে তাই হাত দিয়ে সেই ময়লা ঢোকাতে থাকলো বস্তায়। একটা সময় পর আমাদের মুক্ত মঞ্চ পরিষ্কার হয়ে গেলো, গিটার হাতে ততক্ষণে চলে এসেছে ফরহাদ। পরিষ্কার সেই মুক্ত মঞ্চে মুক্ত হয়ে যখন আমরা ফরহাদের কণ্ঠে শুনতে থাকলাম মহীনের ঘোড়াগুলি, তখন তিন বালতির কথা ভুলে গিয়ে আমরা স্বীকার করে নিতে বাধ্য হলাম জীবনানন্দময়। এরপর আমরা দলবেঁধে গেলাম বইমেলাতে, প্রাণের মেলাতে। মুক্ত মঞ্চে থাকতেই টুটুল ভাইয়ের ক্ষুদে বার্তা পেয়েছিলাম, মেলায় চলে এসেছে ‘মানুষিকতা’- আমার প্রথম আস্ত বই। সামিয়া সবাইকে সরিয়ে দিয়ে প্রথম বইটা কিনলো, তারপর জয়, জারিফ, লীনা। ঠিক যেমন হবার কথা ছিলো ফেব্রুয়ারির, তেমনই হচ্ছিলো সবকিছু।
কিন্তু এখানেই ফেব্রুয়ারি থেমে গেলো না। পরের দিন জন্ম নিলো শাহবাগ, আমাদের সবাইকে সে এক নিমেষে গ্রাস করে নিলো। সকালে বিশ্ববিদ্যালয় আসা, চা খাওয়া, বিড়ি খাওয়া, বিকাল না হতেই ছবির হাট পেরিয়ে শাহবাগ। সামিয়া চলে আসে অফিস থেকে এমনকি তৌহিদও তার ভুড়িটা দোলাতে দোলাতে হাজির হয় নিয়ম করে। তারপর টিএসএসি থেকে জাদুঘর পর্যন্ত ক্রমাগত হাঁটাহাঁটি, পথে মধ্যে পাওয়া চিংড়ি বড়া, ঝালমুড়ি সহ যাবতীয় যা পছন্দ হয় তা ভক্ষণ, রাতকে গভীর করা এবং এক সময় আবার সেই তিন বালতির কাছে ফিরে আসা। তরুণ প্রজন্ম যখন একাত্ম যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবীতে তখন অনেকেই বলা শুরু করলেন দেশে তেল নাই, গেস, নাই, বিদ্যুৎ নাই। আমার আর সামিয়ারও কিছু ছিলো না, কিন্তু আমরা সে কথা বলতে পারি না। আমরা বিচার চাই, বিচার চাই আমাদের দেশটাকে যারা ধ্বংসের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলো তাদের, আমার দেশের মানুষকে যারা হত্যা করেছিলো তাদের, যারা ধর্ষণ করেছিলো আমার দেশকে, আমরা তাদের বিচার চাই।
হাজার হাজার, কখনও লাখ লাখ মানুষ মিলে আমরা শাহবাগকে আগলে ধরে রাখলাম। নিলয় এরমধ্যে গঠন করলো ‘শহীদ রুমী স্কোয়াড’- উদ্দেশ্য শহীদ জননীকে গণজাগরণের কেন্দ্রবিন্দুতে প্রতিস্থাপন করা। চারুকলার ছাদকে সাক্ষী রেখে শুরু হলো কাজ। জননীর ছবি আঁকা শেষে সেটাকে প্রতিস্থাপনের চ্যালেঞ্জ। ‘আর্কিটেকচার’ সামিয়া সহ আরও অনেকে উপায় খোঁজে। সেই উপায় খোঁজার দলে থাকে রাজীব ভাই, আমাদের থাবা বাবা। রাজীব ভাইয়ের সাথে আমার পরিচয় আরও হয়তো বছর খানেক আগে কোনো এক আড্ডায়। নিয়মিত দেখা হওয়া শুরু শাহবাগ আন্দোলনের সময় থেকে। সোনালী ফ্রেমের চশমা, উশকো খুশকো চুল নিয়ে রাজীব ভাই শাহবাগেই থাকতেন, কখনও চটপটির দোকানে বিপ্লব ভাইয়ের সাথে, কখনও একা। একদিনের কথা মনে পড়ে। শাহবাগের প্রথম সপ্তাহেই- পরিচিত এক জটলায় আলাপ হচ্ছিলো একটা গ্রুপ নাকি গঠিত হয়েছে যারা মগবাজারে জামাতের কার্যালয় ঘেরাও করবে, আরও অনেক কিছুই করবে, তারা সুইসাইড স্কোয়াড। সেই আলাপে রাজীব ভাই সবাইকে বোঝাচ্ছিলেন, এমন সহিংস আন্দোলনে না যেতে, সহিংস আন্দোলন কখনই ভালো কিছু বয়ে আনবে না।
দিন রাত শাহবাগ শাহবাগ করে, প্রতিদিন গভীর রাতে বাসায় ফিরে যখন আমরা একটু ক্লান্ত সে সময় হুট করেই পরিকল্পনা হলো সুন্দরবন দেখার। আমি কখনও সুন্দরবন দেখি নাই। ফেব্রুয়ারির তেরো তারিখে শাহবাগে শহীদ জননী জাহানারা ইমামকে রেখে আমরা ছুটলাম এয়ারপোর্ট রেল স্টেশনের দিকে- খুলনা যাবার ট্রেন ধরতে। আমি, সামিয়া, জামান, আমিন ভাই, তানভীর ভাই, ইমতিয়াজ, লাজিমা, নিলয়, এরিকা এবং নিলয় যাতে এরিকার সাথে নজিরবিহীন বেলেল্লাপনা করতে না পারে তাই তার মা।
পনেরো তারিখ রাতে যখন আমরা রাত দুইটায় মাথায় উপর লক্ষ-কোটি তারা নিয়ে শুয়েছিলাম লঞ্চের ছাদে, দুইপাশে সুন্দরবনকে রেখে ঠিক তখন জানতে পারলাম রাজীব ভাইকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। রাজীব ভাই মরে গেছে, নিথর হয়ে পড়ে আছে পলাশ নগরের সেই রাস্তায়, যেই রাস্তা দিয়ে দুপুরেই তিনি যখন হেঁটেছিলেন তখন ছিলেন জীবিত, ছিলেন স্বপ্নবাজ এক তরুণ। আনন্দময় সেই রাত রূপ নিলো গভীর বিষাদে, সামিয়ার সারা রাত কান্না, আমাদের সবার হতভম্বতা। ঢাকায় ফিরে শাহবাগে আর রাজীব ভাইকে দেখবো না।
প্রথম সপ্তায় শাহবাগ সবাইকে ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছিলো। ফেসবুকের আরিফ আর হোসাইনের মতো ছুপা ছাগুরাও বাধ্য হয়েছিলো শাহবাগ সম্পর্কিত কিছু একটা লিখে, শেয়ার করে নিজেকে জাতে উঠাতে, রাজীব ভাইয়ের মৃত্যুর পর সে স্রোত কমে গেলো, আলোচনায় চলে আসলো মাহমুদুর রহমান, বাঁশের কেল্লা, হেফাজত এবং সেই চিরায়ত আস্তিকতা, নাস্তিকতা। রাজীব ভাই নাস্তিক হওয়া না হওয়ার সাথে শাহবাগের আন্দোলনের কোনো সম্পর্ক ছিলো না, এ আন্দোলন হায়েনাদের হাত থেকে দেশকে বাঁচানোর আন্দোলন ছিলো- যাদের কোনো ধর্ম নেই, যারা স্বার্থান্বেষী শয়তান, ঈশ্বরের নাম ভাঙ্গিয়ে যারা সকল ধরনের খারাপ কাজ করতে পারে, যারা আর যাই হোক, মানুষের মঙ্গল চায় না কখনও। অথচ এই কথাগুলো স্পষ্টভাবে না বলে শাহবাগও টুপি পরে ফেললো নিরাপদে। ধর্ম ভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধের মতো প্রাণের দাবীকে সঙ্গোপনে সরিয়ে ফেলা হলো। রাজীব ভাইয়ের লেখাগুলো তার নিজের নয় এই প্রোপাগান্ডা চালানো হলো কিছুদিন তাকে নিরপরাধ বানাবার খায়েশে, মৃত্যুর পর তাকে আবার মুসলমানি করানো হলো। রাজীব ভাই যা লিখেছিলেন, সেটা লেখা তার অধিকার, সেটা কোনোভাবেই কোনো অপরাধ নয়, অথচ তাকে নিরপরাধী হিসেবে দেখাতে আমরা তাকে মুসলমান বানালাম, আমরা ভুলে গেলাম বাক-স্বাধীনতার কথা, আমরা ভুলে গেলাম যেমন ইচ্ছা, যা ইচ্ছে তাই লেখার আমাদের কবিতার খাতার কথা।
তারপরও রয়ে গেলাম শাহবাগে। আর কিই বা ছিলো আমাদের? তেলে, গেস, পানি না থাকলেও আমাদের শাহবাগ ছিলো, একবুক হতাশার মাঝে একটুখানি আলো ছিলো। কিন্তু যাবতীয় জরা-জীর্ণতা-হিপোক্রেসিকে গ্রাস করার বদলে একসময় আমরাই গ্রাস হয়ে গেলাম হিপোক্রেটদের দ্বারা, একটু একটু করে। টুপি পরেও বাঁচতে পারলো না শাহবাগ। রাজীব ভাই খুন হবার পরেই এক ওয়েবসাইটে তার নির্বাচিত কিছু লেখা প্রকাশ করেছিলো তাকে যারা হত্যা করেছিলো তারা। তাদের পরিকল্পনা ছিলো ব্যপক সফল। রাজীব ভাইয়ের মৃত্যুর পর টুপি করা মুসলমানরা প্রতিবাদের পরিবর্তে বলে উঠেছিলেন- ছিঃছিঃ এগুলো কী লেখা। অর্থাৎ এমন লেখা লিখলে জবাই হতেই হবে। অপরদিকে আরেকদল উঠে পড়ে লাগলো তার লেখাগুলো মুছে ফেলতে। কারণ ‘ওসব’ লেখা নাকি তিনি লিখেন নি। আদতে এরাও স্বীকার করে নিয়েছিলো এমন লেখা লিখলে রাজীবের মতোই পরিনতি হবে। অথচ
রাজীব ভাই কোনো অশ্লীল পোস্ট করেন নাই, রাজীব ভাই কাউকে আঘাত করেন নাই, রাজীব ভাই কোনো মিথ্যা কথা বলেন নাই। রাজীব ভাই যুক্তিভিত্তিক সমাজের স্বপ্ন দেখেছেন, রাজীব ভাই শুওরদের ভন্ডামি নিয়ে লিখেছেন, রাজীব ভাই কুত্তাদের মুখোশ খুলতে চেয়েছেন। যারা ‘থাবা বাবা এটা কেনো লিখছে’, ‘ওটা কেনো বলছে’ এ প্রশ্ন নিয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন তারা সবাই খুনী, তারা মানুষ নামের কলংক। তারা বায়বীয় বেহেস্তের জন্য মানুষ হত্যার প্রতিবাদ করে না। প্রতিবাদ করা দূরের কথা, সামান্য কষ্টও তারা পায় না, নিজের ভাইয়ের লাশ দেখে তারা আনন্দ পায়। যারা রাজীব ভাইকে হত্যা করছে আমার দৃষ্টিতে তাদের মতোই সমান অপরাধী যারা হত্যাকান্ডের প্রতিবাদের বদলে ‘এমন’ লেখার কথা বলেছেন। আজকের বাংলাদেশে এমন মানুষই দেখি চারপাশে।
রাজীব ভাইয়ের লেখাগুলো খুব দ্রুত ইন্টারনেট থেকে হারিয়ে যাচ্ছিলো দেখে আমি নিজের কাছে তার অনেক লেখা সংরক্ষণ করে রেখেছিলাম ভবিষ্যতে বই আকারে যদি কিছু করা যায় এমন পরিকল্পনা নিয়ে। রাজীব ভাইয়ের লেখা নিয়ে বই ছাপানোর প্রেক্ষাপট এখন নেই। তবে তবে ব্লগার কৌস্তুভ তার লেখাগুলো সযতনে সংগ্রহ করে ‘থাবার থাবড়া’ নামে চমৎকার একটা ই-বই তৈরি করেছেন। এক বছরে অন্তত একটা কিছু তো হলো। এমন এক বাংলাদেশের স্বপ্ন আজও দেখি যে বাংলাদেশে আমরা ‘থাবা বাবা’কে ‘থাবা বাবা’ হিসেবে দেখে তার কর্মের যোগ্য সম্মান দিবো, পলাশনগরের সেই রাস্তায় পাশে তৈরি করবো ‘থাবা বাবা’র স্মৃতি সৌধ। রাজীব ভাই বেঁচে থাকবেন আমাদের কর্মে।
অতকিছু বোঝার দিন বোধ হয় নেই। পরিষ্কার একটা বিষয় বলতে চাই, সেটা হলো আমাদের স্বাধীনতা আমরাই লড়াই করে এনেছি। যারা বিরোধীতা করেছিলো, করেছিলো মানবতা বিরোধী অপকর্ম, তাদের যথাযথ সর্ব্বোচ্চ শাস্তি চাই। শাস্তি চাই সেইসব পাকীদেরজো যারা আমাদের ভূখন্ডে এসে আমাদের নিপীড়ন করেছিলো। আমাদের সাম্প্রতিক শাহবাগ ছিলো সেই স্ফূলিঙ্গ, যেখানে আমাদের নূয়েপরা স্বধীকার চেতনা, জাতীয়তার চেতনা, মূল্যবোধের চেতনার শিখা চিড়ন্তনের মতোই মাথা তুলে দাঁড়িয়েছিলো। রাজীবেরা ছিলো সেই উন্মীলিত শিখার স্পর্ধিত আলো। সেই আলোকে নিভিয়ে দেবার চেষ্টা হয়েছে কদর্যভাবে। সবাই ভুলে গেলেও আমার স্পষ্ট মনে আছে আমাদের বিরোধী নেত্রী (খালেদা জিয়া) সেদিন জঘন্য ভাবে এই সার্বজনীন জাগড়ণকে ‘নাস্তিক’দের সমাবেশ বলে সেটাকে ভিন্নখাতে বইয়ে দেবার অপপ্রয়াস চালিয়েছিলেন!আর আজকের প্রধানমন্ত্রী পাখা হাতে বাতাস দিয়েছিলেন বিরোধী নেত্রীর সেই কথায়। নিতান্ত ন্যক্কারজনক ভাবে গ্রেফতার হয়েছিলেন চারজন মুক্তচিন্তক ব্লগার।
তবে শেষ কথা হলো শাহবাগের প্রজ্জ্বলিত আলো কোনদিনও নির্বাপিত হবে না, যদি আমাদের তরুণ প্রজন্ম নিজেদের শেকড়ের সন্ধান করতে শেখে।
@কেশব কুমার অধিকারী, আপনার মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ 🙂
রাজীবকে নিয়ে নুতন কিছু বলার নেই। ধর্ম ওয়ালা লোকজনের আচরন নিয়ে তেমন কিছু বলার নেই, এমন কিছু অপ্রত্যাশীত কিছু তারা বলেনি। এই পৈশাচিক হত্যাকাণ্ডের পর তার দায় অস্বীকারের যে নজির দেশের মুক্তচিন্তার অধিকারী বলে অংশটি দেখিয়েছে,নিজেদের ধার্মিক প্রমানের যে প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছিল তা অনন্য। সেক্যুলার শক্তি দেশে কতটা কোনঠাসা তার আরেকবার প্রমান হয়েছে। এভাবে যে কোন লাভ নেই তা কে কাকে বোঝায়।
ব্লগার ওয়াহিদুজ্জামান ইস্যুটা আমি পরিষ্কার জানতাম না।
সফিক যে কারন উল্লেখ করে তাকে মামলায় জড়ানোর কথা বলেছে মামলার কারন শুধু সেটাই হলে মামলা দিয়ে তাকে হয়রানি করা কোন মতেই সমর্থনীয় নয়। ঘটনা সেরকম হলে উক্ত ব্লগার যেমন লেখাই লিখুক না কেন (অবশ্যই কাউকে হত্যার হুমকি দেওয়া জাতীয় পরিষ্কার ক্রিমিনাল এক্ট ছাড়া) তার বিষয়ে আমরা মুক্তচেতনার দাবীদারদের নীরব থাকা আমিও বড় ধরনের ব্যার্থতাই বলব।
সৈকতের ফেসবুক ষ্ট্যাটাসে জেনেছি যে এই ভদ্রলোক অতি উগ্র ধরনের ধর্মোন্মাদ প্রকৃতির উগ্র কমেন্টেও লাইক দিয়ে আসেন যা ভদ্রলোকের ব্যাক্তিগত রুচি/মানসিকতা সম্পর্কে কিছু ধারনা দেয়। সেটা কি আইনত দন্ডনীয় কিনা তা অবশ্য আমি বলতে পারবো না। তবে সফিকের কথায় যা মনে হয় ওনাকে সে কারনে মামলায় জড়ানো হয়নি, জড়ানো হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে সম্পর্কে মন্তব্যর কারনে, যা বক্তব্য কতটা সূস্থ রুচির সে নিয়ে প্রশ্ন করা যায়, কিন্তু মামলা করার মত কিনা সে নিয়ে প্রশ্ন ওঠার কথা নয়। ফেসবুকে প্রতিদিন খালেদা জিয়াকে নিয়ে আরো শতগুন ভয়াবহ মন্তব্য নিয়ত দেখি।
@আদিল মাহমুদ ভাইয়া, ওয়াহিদুজ্জামানের মতো লোকেরা সমর্থন করে তারেক জিয়াকে আর ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয় দূর্নীতি নিয়া। আর ফারাবী মতো ছেলের স্ট্যাটাসেও যে সমর্থন প্রদান করে তার কী হলো না হলো তা নিয়ে আমি আসলেই বিন্দুমাত্র চিন্তিত হতে পারি না। একই সাথে বুঝতে পারি না, এই ব্লগে ওয়াহিদুজ্জামানের প্রসঙ্গ উত্থাপন। সফিক সাহেবরা কী চান সেটা এতোদিনে ভালো বুঝেছি।
আপনার মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
@রায়হান আবীর,
ওয়াহিদুজ্জামান ভাইয়া তারেক, গোআ, অনেককেই সমর্থন দিতে পারে। আমার জানা মতে বাংলাদেশের আইনানুযায়ী এসব চরিত্র সমর্থন দেওয়া অপরাধ নয়। আজকাল ফেসবুকে শামীম ওসমানের গুনকীর্তনও অনেকে গায়।
ফারাবির মত চরিত্রের আশেপাশে যারা থাকে তাদের সাথে আমার বন্ধুত্বপূর্ন সম্পর্ক হবে না, মজার ব্যাপার হল এই রত্ন কদিন আগে দেখি কি কি হাবা জাবা লিখে অনেকের সাথে আমাকেও ট্যাগ করেছে, মজা করতে আমিও সেখানে লাইক মেরে এসেছি।
শুধু এসব চরিত্রের হয়ে কথা বলায় কাউকে জেল খাটতে হবে মানা যায় না। লেখনীর জবাব হবে লেখনীতে। মামলা আইনী প্রক্রিয়া চালাতে শুধু অভিযুক্তেরই নয়, রাষ্ট্রেরও প্রচুর অর্থ শ্রম খরচ হয়, পুরোই ফালতু অর্থ এবং শ্রম নষ্ট। শুধু এই কারনে এই লোকের জেল হলে আমি দূঃখই পাবো, আরো দূঃখ পাব এর জের ধরে আজ হোক কাল হোক যখন আমাদেরও অনেককে যখন আরো ভয়াবহ পরিনতি ভোগ করতে হবে সে চিন্তা করে।
রাজীবের হয়ে কথা বলার মূল পয়েন্ট হল মুক্তকন্ঠের স্বাধীনতা, রাজীব ভাল না খারাপ লেখক ছিল তার বিচার করা নয়। সে হিসেবে ওয়াহিদুজ্জামান প্রসংগ খুব একটা অপ্রাসংগিক নয়।
এটা কিন্তু এখনও অনেকে বুঝতে চায় না।
সামিয়াকে নিয়ে সুখে থাকুন আর তার আঁকা প্রচ্ছদে আপনার বইয়ের সংখ্যা বাড়ুক এ প্রত্যাশা।
@গীতা দাস,
ধন্যবাদ গীতা দাস শুভকামনার জন্য। হ্যাঁ, অনেকেই অনেক কিছু বুঝতে চায় না।
মুক্তমনা ব্লগের একদা খুবই সহনশীল আর উদার ব্লগাররা আজকাল যেভাবে বি এন পি বি এন পি করে মুখে ফেনা তুলে ফেলছে, এতেই প্রমানিত হচ্ছে যে সত্যিকার সহনশীলতা আসলে কি জিনিস। নিজের লেজে পাড়া পড়লেই যদি কথায় কথায় বি এন পির ব্লগারদের গ্রেফতার,ইলেকশনের নামে মানুষ মারা হল ইলেকশন ঠিক করার মেকানিজম, এর বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করলেই সেটা হল কান্নাকাটি, আর পরবর্তীতে মুনতাসীর মামুনের মত লোকের কথার ভুল ব্যখ্যা দিয়ে তাকে কুকুর বলে সম্বোধন করা, এইসবই তাদের আসল মুখোশ খুলে দিচ্ছে।
এরা আবার জামাতের রাজনীতি করার অধিকার নিয়েও খুবই সরব যেহেতু এটা গনতন্ত্র এবং আমেরিকাতে হিটলারের ছবি নিয়ে যেহেতু র্যালী করা হয় কাজেই জামাত কেন রাজনীতি করতে পারবে না ইত্যাদি ইত্যাদি। একেই মনে হয় ভেড়ার ছদ্মবেশে নেকড়ে বলা হয়। এই ব্লগে অতীতে যেমন মুক্তমনার ছদ্মবেশে কিছু হিন্দুত্ববাদী টাইপ হেইটফুল লোক ছিল, এখন সুশীল মুক্তমনার ছদ্মবেশে কিছু ইস্লামিস্ট দেখা যাচ্ছে। এদের মুল নীতিটাই হল মুজিবকে নিয়ে ভাল কিছু লিখতে হলে অবশ্যই আগে বাকশাল নিয়ে মুজিবকে ইয়ে করা লাগবে ফরজ কাজের মত, এমনকি দেখা যাচ্ছে যে মানুষের মৃত্যু নিয়ে লিখার সময়েও অবধারিত ভাবেই বি এন পি সমর্থক ফেসবুক সেলিব্রেটির গ্রেফতার নিয়েও লিখতে হবেই ( যে ব্যাপারটা এমনকি অনেকে নাও জানতে পারে, তবে বি এন পির সমর্থক ব্লগার বলে কথা এর গ্রেফতারের খবর না জানাও পাপ!!!) ফরজ কাজ, না হলে কিছুই সিদ্ধ হবে না।
খালি দাড়ি রেখে টুপি আর জোব্বা পড়লেই ইস্লামিস্ট হয় না। দাড়িছাড়া ইস্লামিস্টরা আরো ভয়াবহ ( যার প্রমান এইখানের একদা সুশীল আর বর্তমানে নগ্ন প্রতিক্রিয়াশীল ( অনেক লেখাতেই দেখেছি)), অনেকটা হায়নার মত। আর দাড়ির সাথে স্যুট সাথে টুপি, ওফফ জাকির নায়েকের এই ফ্যাশনের জন্যেই সে মনে হয় ফেসবুকে যেকোন পপতারকার চেয়েও জনপ্রিয়।
@অর্ফিউস,আপনার মতো মানসিকভাবে অসুস্থ লোকের কথাবার্তায় অংশগ্রহন করাই অরুচিকর, তবু বার বার মিথ্যা কথা যখন বলেন তখন কখনো কখনো ড্রেনে নামতে হয়।
আমি আমার লেখায় বার বার বলেছি যে আমি জামাতকে নিষিদ্ধ করার পক্ষে। ১৯৭১ এ যুদ্ধাপরাধের সাথে সংযুক্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে জামাত কে প্রতিষ্ঠানগত ভাবে অনায়াসেই নিষিদ্ধ করা যায়।
জামাত নামের প্রতিষ্ঠানকে নিষিদ্ধ করা আর মানুষের বিশ্বাসের ভিত্তিতে রাজনীতি করার অধিকারের মধ্যে যে পার্থক্যটুকু রয়েছে যেটুকু বোঝার মতো ক্ষমতা আপনার ঘিলুতে নেই।
আপনি আমার পেছনে খামোকা লাগবেন না। জানাশোনা লোক স্টকার হলে তর্ক-বিতর্কে ভালোই লাগে কিন্তু অপরিনত বুদ্ধির লোক গোয়ারের মতো পিছে লেগে থাকাটা চরম বিরক্তিকর।
@সফিক,
আমি মানসিক ভাবে অসুস্থ এটা প্রমান করতে পারবেন? প্রমান ছাড়া এইসব কথা বার বার বলার অধিকার আপনাকে কে দিল? আসলে আপনি হলেন প্রথম শ্রেনীর একজন ফ্যানাটিক আর হেইটফুল লোক। এতদিন আপনার ইতরামি অনেক সহ্য করেছি আর না। আমি অবশ্য ব্লগে আপনাকে বিশেষ কিছুই করতে পারি না শুধুমাত্র থুথু ছুঁড়ে দেয়া ছাড়া। অবশ্য প্রতিদিনই কেউ না কেউ আপনার দিকে থুতু ছুঁড়ে দিচ্ছে, অবশ্য আপনার গায়ে সেটা লাগে না। আর লাগবেই বা কিভাবে? কচুপাতায় পানি কেন থুতুও লাগে না। আর আপনার মত অত্যন্ত নিমশ্রেনীর একজন লোকের সাথে কথাবার্তা বলার রুচি আমার হয় না আর তাই সরাসরি আপনাকে quote করে মন্তব্যটাও করিনি। যাইহোক পুরো মন্তব্যটা শুধু আপনার একার উদ্দেশ্যে করা ছিল না, তবু যখন নিচু স্তরের রিয়াক্ট করে নিজের পরিচয়টা দিয়েই দিলেন, সেখানে আমিও আর চুপ থাকতে পারলাম না। রসিকতা এর আগে অনেক করেছি, কিন্তু আপনার মত একটা হীন শ্রেনীর দাম্ভিক লোকের সাথে কথাবার্তা চালাতে আমার বিবমিশা বোধ হয়।
মুক্ত মনা নামক ব্লগটি সব শ্রেনীর পাঠকের জন্যেই উন্মুক্ত বলেই জানি। যদি আমার ঘিলু এতই কম হয়, তবে সাধারন পাঠকরা পড়বে এমন ব্লগে না লিখে এমন কোথাও লেখেন না কেন যেখানে শুধু আপনার সমমানের লোকরাই পড়বে? অন্যের ঘিলূ বিচার করার আগে নিজের টা করেন না কেন?
হাহাহাহা আপনার কি মনে হয় যে আপনার কিছু ফাতরামির সমালোচনা করা মানে আপনার পিছনে লাগা? খেয়ে দেয়ে আর কি কাজ নেই মানুষের? নিজেকে এত বড় ভাবেন? এতই সুপিরিওরিটি কমপ্লেক্সে ভোগেন পাকিদের মত? নাহ আপনার পেছনে আমি লাগি না, বরং আমি আপনার কথার সমালচনা করলেই আপনিই আমার পেছনে লাগেন। এর আগেও একাধিকবার আমাকে বাইপোলার রোগী বলেছিলেন প্রমানহীন ভাবে, এতে করে এটাই প্রমান হয় যে আপনি নিজেই মানসিক ভারসাম্যহীন লোক।
আপনাকে একটা কথা আমি পরিষ্কার জানিয়ে দেই আর তা হল, আপনার পিছনে আমি লাগি না আর লাগার ইচ্ছেও নেই, কারন আপনি যদি ছোটলোক না হয়ে নিদেন পক্ষে ভদ্রলোক হতেন তবেই আপনার পিছনে আমি লাগতাম।
@অর্ফিউস, অসংখ্য ধন্যবাদ। সুখে থাকুন। স্বাধীনভাবে ব্লগিং করতে থাকুন।
@সফিক,
মজার ব্যাপার কি জানেন?? এই দাবিটি বিএনপির নেতারাও করেছেন, তবে নিজেদের কাছে না, সরকারের কাছে, আ’ওয়ামীলিগের কাছে! অসংখ্য টিভি টকশোতে বিএনপি নেতাদের বলতে শুনেছি, সরকার তো চাইলেই জামাতকে নিষিদ্ধ করতে পারে! আপনার তো অনেক বুদ্ধি, বলুন তো, কেন বিএনপি নেতারা এই দাবীটি করেছিলেন? যে জামাতকে ছাড়া তারা চলতেই পারেন না, তারা কিনা বলেন, সরকার জামাতকে নিষিদ্ধ করছে না কেন???
আরও মজার কি জানেন? আপনি জামাতকে নিষিদ্ধ করার পক্ষে, কিন্তু এ যাবত আপনার একটি লেখাও পাওয়াও যায়নি, যেখানে আপনি বিএনপির সামান্য সমালোচনা করেছেন, জামাতের সঙ্গে শক্ত গাটছড়া বাঁধার কারণে! আপনি জামাতের নিষিদ্ধকরন চান, অথচ আস্থা রাখেন বিএনপির উপর, বিষয়টা খুব মজার, তাই না??
স্বাধীন বাংলাদেশে জামাত নিষিদ্ধকরনে সবচেয়ে বড় বাঁধা কি জানেন??? বিএনপি, জামাতের অসীম শক্তিশালী প্রতিপালক!!!
অথচ আপনি কিনা জামাত নিষিদ্ধকরণ করিয়ে নিতে চাইছেন আ’লীগ সরকারকে দিয়ে??? অসংখ্য বিএনপি সমর্থক লোকের সাথে কথা বলে দেখেছি, তারা চান জামাত নিষিদ্ধ করুক আ’লীগ, ফলে জামাতের সাথে আ’লীগের মারামারি-কাটাকাটি লাগুক, আর অন্যদিকে জামাতের ভোটগুলো উপচে ভরুক বিএনপির বাক্সে! এইখানেও সেই সুযোগসন্ধানি গোল দেয়া!! হেফাজত মরবে, জামাত মরবে, কিন্তু গোল দেবে বিএনপি!
বাংলাদেশের ইতিহাস ঘাটলেই বিএনপির এই চিরায়ত কৌশলের আরও অসংখ্য উদাহরণ পাওয়া যাবে!
১.বিপ্লব করলেন কর্নেল তাহের, নায়ক হলেন জিয়া।
২.স্বাধীনতার ঘোষনা পাঠের মূল কাজটি করলেন বেলাল আহমেদ, রফিকুজ্জামানরা, কিন্তু নায়ক হলেন জিয়া।
৩.নব্বইয়ে রাজপথ কাঁপাল আ’লীগ, কিন্তু ক্ষমতায় এলেন খালেদা জিয়া।
৪.জামাত-হেফাজত কর্মিরা কাতারে কাতারে কতল হলেন, কিন্তু সিটি কর্পোরেশনে বিপুল ভোটে জয়ী হলেন বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থীরা, অথচ সরকার বিরোধী আন্দোলনে বিএনপি কি এক ফোটা রক্তও ঝরিয়েছে????
এখনও জামাতকে নিষিদ্ধ করলে বিএনপিরই লাভ, কারণ সুফলটা তারাই নেবে। এজন্যই বিএনপি সমর্থকগণ জামাতের নিষিদ্ধকরন মনেপ্রানে কামনা করেন; অন্য কারনে নয়; যদি জামাতকে তারা ঘৃনা করতেনই, তাহলে জামাতের সবচেয়ে বড় রক্ষক ও প্রতিপালক বিএনপির সামান্য সমালোচনা অন্তত তারা করতেন!
@অর্ফিউস,
(Y) (Y)
চার ব্লগারকে গ্রেপ্তার করার পর টিএসসি প্রথম যে প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়েছিল সেখানে গিয়ে বক্তাদের বক্তব্য শুনে আমি হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম। তারা ব্লগারদের মুক্তি দাবি করছিলেন কিন্তু অধিকাংশ বক্তার বক্তব্য অনেকটা এরকম,’এই নিরপরাধ ছেলেগুলোগুকে নাস্তিক অপবাদ দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে’ ।
আমার প্রশ্ন হচ্ছে, ‘নাস্তিক’ কেন অপবাদ হবে? নাস্তিকতা তো অপরাধ নয়। জোর করে একজনকে আস্তিক বানানোর তো দরকার নাই। কারণ নাস্তিক হলেই তো সরকার কাউকে গ্রেপ্তার করার অধিকার রাখে না। কাজেই রাজিব ভাই, সুব্রত শুভ–নাস্তিক নয়, তাই তাদের উপর নির্যাতন করা অনুচিত-এমন বক্তব্য দেয়ার কোন দরকার নেই। সত্য কথাটা হচ্ছে, এরা নাস্তিক।সচেতনভাবেই নাস্তিক। কিন্তু এরা কারো কোন ক্ষতি করেনি,সুতরাং এদের উপর কোন ব্যবস্থা নেয়ার অধিকার কারও নাই। কিন্তু এই সিম্পল ব্যাপারটা বলতেই অনেকের অনেক অনীহা,অনেক ভয়।
ড সলীমুল্লাহ খান এক টকশোতে এটা নিয়ে একবার বেশ স্পষ্ট কথা বলেছিলেন। উনি বলেছিলেন যে বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদ জনগণকে বিবেকের স্বাধীনতা দিয়েছে শর্তহীনভাবে-unconditional freedom of mind. কাজেই কেউ নাস্তিকতা চর্চা করলে তাকে আমরা দোষী সাব্যস্ত করতে পারি না। কাজেই ওমুকে নাস্তিক না এটা প্রমাণের দরকার নাই। বরং এটা প্রমাণ করতে হবে যে তার দ্বারা কারও ক্ষতিসাধন হয়নি। কিন্তু আমরা সেটি না করে জোর করে ব্লগারদের টুপি পড়াবার চেষ্টা চালাচ্ছি। এটা খুব একটা সৎ প্রচেষ্টা হচ্ছে না।
@আমি কোন অভ্যাগত নই,
কী যে বিরক্ত লাগতো ঐসময়। চুপচাপ থাকি বিধায় কিছু বলি না।
@মুক্তমনা মডারেটর,
লেখক একটি মন্তব্য বলেছেন,
এই পরিপ্রেক্ষিতে আমার প্রস্তাব হল-
১. ইংরেজি কিংবা বাংলায় নতুন কয়েকটি ট্যাগিং কিংবা বিভাগ সৃষ্টি করা – যেমন একান্ত স্মৃতিচারণ, অবিচুয়ারি, ইউলজি, শোকের উদ্দেশ্য লেখা কিংবা পেনেজিরিক ইত্যাদি ইত্যাদি। যদি কারও লেখাটি সাধারণ আর্টিকেল না হয়ে থাকে, বিশেষত কোন মৃত ব্যক্তির সম্পর্কে হয় তাতে যেন লেখক এসব ট্যাগ করতে পারেন।
২. কেননা তাতে পাঠক বুঝতে পারবেন কি উদ্দেশ্য লেখা এবং করা। কেননা – মৃত ব্যাক্তিকে সম্মান জানিয়ে শুধু স্মৃতিচারণ মূলক পেনেজেরিকে, কাজের সমালোচনা করা কারও কাম্ম্য হতে পারেনা। আর কারও অবিচুয়ারিতে তো নয়ই। এতে লেখকের এবং তার লেখার উদ্দেশ্যরও প্রতিফলন হয়না।
৩. কোন কোন সময়, একই বিষয়ে মুক্তমনায় বেশ কয়েকটি লেখা আসে যেমন এবার এসেছে – এসব ক্ষেত্রে কোনটা ক্রিটিসিসম যোগ্য আর কোনটাতে শুধু কনডলেন্স করা উচিৎ – তা বোঝার জন্য উক্ত ট্যাগের প্রয়োজন আবশ্যক।
@সংবাদিকা,
যতই ট্যাগ দেওয়া হোক না কেন, কমন সেন্সের অভাব তাতে পূরণ হবার নয়।
@তানভীরুল ইসলাম, হা হা হা। সত্যি তাই!
@তানভীরুল ইসলাম,
ট্যাগ দিলে অন্তত বোঝা যাবে। সব কিছুর উপর কমন সেন্স, সবার জন্য এত কমন হলে পৃথিবীতে শুধু শান্তিই থাকত !
রাজীবের নৃশংস হত্যার নিন্দা করাটাও অপ্রতুল। এই ধরনের বর্বরতাকে সভ্য সমাজে কোনো ভাবেই সামান্যতম ছাড় দেবার অবকাশ নেই।
কিন্তু বাংলাদেশে মুক্তচিন্তার ধ্বজাধারীদের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো যে তাদের মটে চিন্তা ও প্রকাশের স্বাধীনতা কেবল তাদের পছন্দের বিষয়ের জন্যেই প্রযোজ্য। তাদের বিরুদ্ধমতের চিন্তা প্রকাশের বিরুদ্ধে সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় সকল নিপীড়নকে সমর্থনের ক্ষেত্রে তাদের সমর্থনের উৎসাহে কমতি নেই।
কয়েকমাস আগে ফেসবুকের সবচেয়ে জনপ্রিয় বিএনপি সমর্থক ব্লগার ওয়াহিদুজ্জামানকে গ্রেফতার করে দুই মাস জেলে রাখা হয়েছিলো কারন তিনি নাকি তার একটা স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন যে হাসিনার মেয়ে পুতুল কেবল প্রতিবন্ধী শিশুর মা হয়েই আন্তজাতিক প্রতিবন্ধি বিশেষজ্ঞ হয়ে গেছেন। তিনি এখন জামিনে আছেন এবং তার মামলা দ্রুত বিচার কোর্টে নেয়া হয়েছে। তাকে যে কোনো সময়ে বড়ো কারাদন্ড দেয়া হতে পারে। রাষ্ট্রের এই চরম ঘৃন্য ফ্যাসীবাদী পদক্ষেপের বিরুদ্ধে ব্র্যান্ডের মুক্তমনাদের কোনো সাড়া তো নেইই বরং অনেক চেতনাবাদী মুক্তমনা আবার প্রচুর উল্লাস প্রকাশ করেছেন যে একজন জাতীয়তাবাদী ‘ছাগু’ কে জেলে ঢোকানোর ব্যবস্থা হয়েছে। এছাড়া এরা আগে শেখ হাসিনা কিংবা শেখ মুজিবকে নিয়ে ব্যংগ করায় অনেক মানুষের জেল হয়েছে। এসব নিয়েও মুক্তমনাদের খুব একটা বিকার দেখা যায় না। মুক্তচিন্তার অধিকার কেবল ইসলাম ও রাজাকার-বিরোধিতার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। অন্যরকম মুক্তচিন্তা করলেই ‘ডিম থেরাপী’!
চেতনাবাদী মুক্তচিন্তকেরা তো ৭১, মুজিব পরিবার এইসবের পবিত্রতার অলংঘনীয়তা নিয়ে অনেক লেখাই প্রকাশ করে। সচলায়তনী-তালেবান গোষ্ঠী তো ক্রমাগত আন্দোলন করেই চলেছে ১৯৭১ নিয়ে ব্লাসফেমী আইন দ্রত যেনো প্রনয়ন করা হয় এই জন্যে। সুতরাং রাজীবের লেখা সামাজিক অপরাধ ছিলো কি না এটা আলোচনা করা আগে মুক্তচিন্তক দের নিদর্শন দেখাতে হবে যে তারা আসলেই মুক্তচিন্তার পক্ষে, কেবল নিজচিন্তার পক্ষে নয়।
@সফিক,
ধন্যবাদ।
আপনার মন্তব্যের সুনির্দিষ্ট কোনো জবাব দেয়া সম্ভব নয়। কারণ মুক্তচিন্তার ধ্বজাধারী বলতে কী বুঝিয়েছেন তা পরিষ্কার নয়। আমার আশেপাশের কাউকে ওয়াহিদের গ্রেফতারে সমর্থন করতে দেখি নাই। বরং অনেকেই এর বিরুদ্ধে বলেছেন। ব্যক্তিগতভাবে বিষয়টা আমি নিজেও মেনে নিতে পারি নি এবং কোনো সন্দেহ নাই এ ধরণের গ্রেফতার নি:সন্দেহে নিন্দনীয়।
কিন্তু এই ওয়াহিদ লোকটা কি করে তা কী জানেন? হত্যার হুমকি দেয়া লোকদের উস্কানিমূলক ফেবু স্ট্যাটাসে অনবরত লাইক দিতেও দেখেছি তাকে। মিথ্যাচার এবং সাম্প্রদায়িকতা ছড়াতেও দেখেছি। যাই হোক,আপনি কথাগুলো যেহেতু এখানে বলছেন তাতে মনে হচ্ছে এখানকার কেউ ওর গ্রেফতার ইত্যাদিতে সমর্থন জানিয়েছেন, এরকম হলে সরাসরি বলেন যেখানে তা দেখেছেন সেখানে গিয়ে, এখানে অহেতুক ঘ্যানঘ্যান না করে।
আর প্রশ্ন হচ্ছে, মুক্তচিন্তকদের কেন সকল দায়িত্ব নিতে হবে? কেন কেউ গ্রেফতার হলে, নির্যাতিত হলে মুক্তচিন্তকদেরই বাধ্যতামূলক প্রতিবাদ জানাতে হবে আর তা এমনভাবে জানাতে হবে যাতে তা আপনার চোখে পড়ে। কেন? মুক্তচিন্তকদের কেউ কি বলেছে তারা জাতির বিবেক? এ ধরণের ব্যাপারকে ‘জাফর ইকবাল এই প্রশ্নের উত্তর দেন সিনড্রম’ বলা হয়।
@সৈকত চৌধুরী,মুক্তচিন্তকদের মুক্তচিন্তার দ্বায়িত্ব অবশ্যই নিতে হবে। তা না করে কেবল একদিকের চিন্তার স্বাধীনতা নিয়েই লাফালাফি করলে তার মুক্তচিন্তাকে অবশ্যই প্রশ্নবিদ্ধ করা যাবে। জাফর ইকবাল তো বহু আগেই প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে গেছেন তার চরম কূপমন্ডুক এবং অন্ধ সমর্থনের কারনে। সববিষয় নিয়ে কথা বলার দরকার নেই। যে বিষয়ে ক এবং খ, দুজনেই দোষী, সে বিষয়ে শুধু ক কে নিয়ে দিনের পর দিন লিখলে তার নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠেই।
মুক্তচিন্তকদের সকলক্ষেত্রে মুক্তচিন্তার দ্বায়িত্ব নিতে হবে। ধর্মবিদ্বেষ আর মুক্তচিন্তা এক জিনিষ নয়। ধর্মবিদ্বেষের ক্ষেত্রে মুক্তচিন্তার বর্ম থাকবে, অন্যক্ষেত্রে নয়; এই মানদন্ড মুক্তচিন্তার ফোরামে চলতে পারে না। এই মুক্তমনাতেই দিনের পর দিন ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করা নিয়ে অনেক কথা হয়েছে। বার বার দেখানো হয়েছে যে পৃথিবীর কোনো গনতান্ত্রিক দেশেই ধর্ম ভিত্তিক রাজনীতি করার অধিকার খর্ব করা হয় নি, তবু এখনো মুক্তচিন্তকেরা কথায় কথায় রব তোলেন ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করার জন্যে। মুক্তচিন্তার ফোরামে মুক্তচিন্তা নিয়ে ঘ্যান ঘ্যান হবেই।
@সফিক,
আপনার প্রথম প্যারা নিয়ে বলি। সাধারণত কেউ বলে বেড়ায় না সে মুক্তচিন্তক। আর কাউকে মুক্তচিন্তক যদি বলেন তার মানে আপনার সংজ্ঞায় সে পড়ে গেছে। আপনি যদি ভুল কাউকে মুক্তচিন্তক বানিয়ে সকল দায়িত্ব তার উপর চাপিয়ে দেন সেটার দায় কার? আর কে কীভাবে চিন্তা করে, কাজ করে এবং সিদ্ধান্ত নেয় সেগুলো শুধু ব্লগ আর ফেইস বুকের কাজ দেখে বুঝা সম্ভব নয়। জাফর ইকবাল বিষয়ে যা বলেছি সেটা বুঝেন নি, বাদ দেই।
ধর্মবিদ্বেষ তো ধর্মবিদ্বেষ, মুক্তচিন্তা তো মুক্তচিন্তাই, দুটো ভিন্ন জিনিস। তো এ প্রসঙ্গ কেন আসল জানি না।
মুক্তচিন্তকরাও মানুষ, তারা গাছে ধরে না, খায়দায়-ঘুমায়। আর রাজনৈতিক ব্যাপার আলাদা বিষয়। রাজনীতিকে মুক্তচিন্তার সাথে গুলিয়ে এলোমেলো করে দিলে তো সমস্যা। শুধু মত প্রকাশের স্বাধীনতা নয়, বিভিন্ন বাস্তব ভিত্তিক কারণে মানুষ রাজনৈতিক ব্যাপারে বিভিন্ন মত দেয়। এরকম যদি পরিস্থিতি হয় আওয়ামীলীগ-বিএনপি দুটির মধ্যে একটা বেছে নিতেই হবে তখন ভুল হোক শুদ্ধ হোক কেউ দুটির একটা বেছে নিবে। একজন মুক্তচিন্তক মহাজ্ঞানী হবেন, উনার সকল সিদ্ধান্ত পুরো সঠিক ও মানবিক হবে এ ধরণের চিন্তা কেউ করলে তা নিশ্চয়ই আজগুবি। ধর্মভিত্তিক দলকে সমর্থন করা যাবে কিনা সে সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক। কেউ তাদের চাপে রাখার জন্যও নিষিদ্ধ করার দাবি তুলতে পারেন। আর সারা পৃথিবীতে করা হয়নি বলেই এদেশে হবে না এ ধরণের যুক্তির সমস্যা আছে। আমি একটি ধর্ম তৈরী করলেন যা মারাত্মক বেশ কিছু অপরাধ সমর্থন করে। সেক্ষেত্রে এই ধর্ম কোথায় কী অধিকার পাবে তা বলা মুশকিল। পৃথিবীর কোনো দেশ যে পরিস্থিতিতে পড়ে নাই আমাদের দেশ সে পরিস্থিতিতে পড়তেই পড়ে। কেউ বলতেই পারে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করার কথা, আপনি জেনে নিবেন তিনি কেন তা বলেন।
একজন লোককে হত্যা করা হল, আমরা শোক প্রকাশ করছি, সেখানে কোথাকার কোন ওয়াহিদ জেলে ঢুকছে আর তার প্রতিবাদ কেন করি নাই। আপনাকে দিয়ে হবে, চালিয়ে যান।
@সৈকত চৌধুরী, দেখুন আপনার কোনো লেখায় আমি কমেন্ট করি নি। এই খানে এই লেখকের লেখায় আমি কমেন্ট করেছি যেখানে উনি সকাতরে বলছেন যে রাজীব লেখা লিখে কোনো সমাজিক অপরাধ করে নি। নিজের লেখায় আবার সগৌরবে বলছেন যে, “অথচ রাজীব ভাই কোনো অশ্লীল পোস্ট করেন নাই, রাজীব ভাই কাউকে আঘাত করেন নাই, রাজীব ভাই কোনো মিথ্যা কথা বলেন নাই। রাজীব ভাই যুক্তিভিত্তিক সমাজের স্বপ্ন দেখেছেন, রাজীব ভাই শুওরদের ভন্ডামি নিয়ে লিখেছেন, রাজীব ভাই কুত্তাদের মুখোশ খুলতে চেয়েছেন।” নিজে আবার তার লেখায় রাজীবের লেখনীসমগ্র নিয়ে সংকলনের লিংকও দিয়েছেন।
লিংক যখন দিয়েছেন তখন সেই লিংকে কি আছে এটা দেখানোও নিশ্চই জায়েজ। রাজীব কোনো অশ্লীল লেখা লিখে নি। কাউকে আঘাত করতে চায় নি, এটাও নিশ্চই এতে বোঝা যায়।
[img]http://blog.mukto-mona.com/?attachment_id=39804[/img]
@সফিক,
অসংখ্য ছাগু পেইজ রয়েছে, আপনার এই কমেন্টটা সোনা দিয়ে বাঁধিয়ে রাখবে, অথচ আপনি কেন এইখানে এসব বর্ষন করছেন, তা বোধগম্য নয়!!!
আপনি নিজেকে যতই জ্ঞ্যানী দাবী করুন না কেন, একজন জাফর ইকবালকে বুঝতে হলে আপনাকে আরও কয়েকবার জন্মগ্রহণ করতে হবে!
“চরম কূপমন্ডুক” শব্দটির অর্থ আপনি জানেন? না হলে জাফর ইকবাল স্যারের ক্ষেত্রে শব্দটি ব্যবহারে সামান্য হলেও আপনার আঙ্গুল কাঁপত!
আজকাল মনে হয় ছাগুপেইজ ভ্রমন করছেন খুব বেশী, নইলে বুঝতেন, গহীণ অন্ধকার কূপের ভিতর বাস করলেই শুধু জাফর ইকবাল স্যারকে ‘চরম কূপমন্ডুক’ বলা যায়!! কূপবাসীরা এমনিতে হাজার বছর পেছনে পড়ে আছে, কূপে আবদ্ধ থাকতে থাকতে অন্ধকারেই অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে, সেজন্যই জাফর ইকবাল স্যারের আলো এই কূপবাসীদের জন্য ভয়ানক অসহনীয়, এত তীব্র আলো ওরা সহ্য করবে কি করে!
প্রকৃত জ্ঞানীদের কি দরকার হয় নিজের ঢোল নিজে পেটানোর? নিউটন বলে গেছেন না যে তিনি জ্ঞান সমুদ্রের তীরে নুড়ি কুড়িয়ে বেড়াচ্ছেন মাত্র?এইবার বুঝে নিন তাহলে 😀
লেখাটা দেয়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ রায়হান। লেখাটা পড়তে পড়তেই ভাবছিলাম – তোমার লেখার হাত অসাধারণ। এত সহজ সরল শব্দে জীবনের রূঢ় বাস্তবতা ফুটিয়ে তুলতে সবাই পারে না। তোমার লেখা আসলেই মিস করি আমি!
@অভিজিৎ দা, ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য। আমাদের বন্ধুদের মধ্যে একটা কথা প্রচলিত আছে- ‘বুঝি পাম, তাও আরাম’ 🙂
১. আপনাকে ধন্যবাদ এটার জন্য… এটা মিথ্যা প্রমান করার জন্য অনেকেই অযথা সময় নষ্ট করেছিল।
২. এখন মনে হচ্ছে ভেন ডায়াগ্রাম কিংবা সেট ফাংশানের গুরুত্ব!!! সবাই কোন ব্যাপারে শতভাগ একমত হতে পারবেনা – তবে অনেক কিছুতেই মতের মিল হবে।
৩. রাজীব যা করেছে ওটাকে আমি কোন মতেই “অধিকার” কিংবা “অপরাধ নয়” বলতে পারবনা – ওটা যে কোন সামাজিক স্ট্যান্ডার্ডেই !! তবে এর জন্য রাজীবের সাথে যে আচরণ করা হয়েছে তাও আরও বেশি অপরাধ । রাজীব তার লেখনীর মাধ্যমে একটা সামাজিক অপরাধ করেছিল – যার জন্য জরিমানা হতে পারত তবে তাকে যারা হত্যা করেছে প্রচলিত আইনে তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড প্রাপ্য – ফার্স্ট ডিগ্রী মার্ডারের জন্য।
৪. মানবতা বিরোধী অপরাধের বিচার আন্দোলনে তাঁর কর্মকান্ড অবশ্যই প্রশংসনীয়।
@সংবাদিকা,
একমত নই। কেনো সেটা পোস্টেই পরিষ্কার করেছি। ধন্যবাদ।
@সংবাদিকা,
আমি দ্বিমত করছি। লেখা কোন অপরাধ হতে পারে না। আর মি রাজীবের লেখা যদি সামাজিক অপরাধ হয়, এবং তাতে যদি জরিমান হতে পারে বলে মনে করেন তবে, মৌলানা শফীর তেঁতুল তত্বও কি আপনার কাছে সামাজিক অপরাধ বলে মনে হয় না? যদি না হয় তবে কেন, আশা রাখি জানাবেন। ধন্যবাদ।
@অর্ফিউস,
নিঃসন্দেহে ওটা একটি সামাজিক অপরাধ – এই মিসড্যামিনর প্রচলিত আইনে শাস্তি যোগ্য
১. আদালত দ্বারা সমালোচনা যোগ্য।
২. জরিমানা যোগ্য
৩. আদালত কারণ দর্শানো নোটিশ জারি করতে পারেন “ক্ষমা চাওয়ার” কিংবা “দুঃখ প্রকাশের” চাপ সৃষ্টির লক্ষ্য।
৪. তাছাড়া, আমাদের আইনে “কম্যুনিটি সার্ভিস” এর কোন বিধান নেই – আমার যতটুকু মনে হয় – তবে এসব অপরাধের ক্ষেত্রে পাশ্চাত্য যা হয়।
মৌলানা শফি সম্ভবত পরে এই তেঁতুল তত্ত্বের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
@সংবাদিকা,
মৌলানা শফি সম্ভবত পরে এই তেঁতুল তত্ত্বের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
জ্বি করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, তিনি তেঁতুল বলতে ফুল বুঝিয়েছেন। আর রাস্তাঘাটে নগ্ন ফুল দেখলে উনার তো শুকতে ইচ্ছা হবেই।
@রায়হান আবীর, 😀
@সংবাদিকা,
কেন কারো লেখনী সামাজিক অপরাধ হবে বুঝিয়ে বলুন।
@মনজুর মুরশেদ,
কাউকে কিংবা কারও বিশ্বাসকে ভারবালি এবিউস করা, হেয় প্রতিপন্ন করা, গালাগাল করা, রিভাইলিং, বুলিইং কিংবা অন্যান্য ধরণের “নন ফিজিকাল” আক্রমণ করলে তা প্রচলিত ভাবে অপরাধ বলেই ধরা হয় – আইনের দৃষ্টিতে এবং অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে কোথাও ছোট অপরাধ আবার কোথাও বড় অপরাধ – তবুও “অপরাধ”.
এসবকে আবার বিভিন্ন ছাঁকে ফেলা হয়/যায় যেমন কন্টেম্প, লেইসে মেজেস্টি, হেট ক্রাইম, ডিফেমেশন, ব্ল্যাসফেমি কিংবা ডেসেক্রেশন ইত্যাদি ইত্যাদি – বিষয়টা যেহেতু বেশিরভাগ সময়ে “সিভিল” এবং “সামাজিক” তাই এর কোন আদর্শ স্ট্যান্ডার্ড নেই দেশে-দেশে।
এসব আবার প্রকাশ করার মাধ্যম আছে – কথা, বক্তব্য, লেখনী, ছবি, অঙ্গভঙ্গি ইত্যাদি ইত্যাদি।
সুতরাং, লেখনীও একটি অপরাধের মাধ্যম হতে পারে।
@সংবাদিকা,
ধন্যবাদ! আপনি বলেছেন ‘কাউকে’ বা ‘কারও বিশ্বাসকে’—এখানে ‘কাউকে’ মেনে নিতে অসুবিধা নেই; কিন্তু ‘বিশ্বাসকে’ মেনে নিতে সমস্যা হচ্ছে। উদাহরন হিসাবে বলা যায় যে লেখনীর মাধ্যমে কাউকে আত্নহত্যায় প্ররোচিত করলে তা অপরাধ বলে গন্য হবে। একইভাবে লেখনীর মাধ্যমে কাউকে হেয় প্রতিপন্ন করলে ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তি আইনের আশ্রয় নিতে পারেন। কিন্তু কারো বিশ্বাসের ক্ষেত্রেও কি একই বিচার প্রযোজ্য? বিশ্বাস যুক্তি নির্ভর বা ধ্রুব সত্য নাও হতে পারে। আবার দু’জন মানুষের বিশ্বাস পরষ্পর বিরোধী হতে পারে। এখন একজন যদি অন্যজনের বিশ্বাসের সমালোচনা করে, হোক না তা গালাগাল, তাহলে কি তাকে অপরাধী বলা যাবে? ধরুন আমি ডারউইন তত্ত্ব পড়াই যা কিছু প্রচলিত ধর্মমতের বিরোধী। এখন ধর্মপ্রান কেউ যদি বলে বসে আমি তাদের ধর্মবিশ্বাসের অবমাননা করছি, অতএব আমি অপরাধী, তাহলে কি হবে? আমি জানি অনেক দেশে ধর্মের বিরুদ্ধাচারন অপরাধ; কিন্তু তা নিয়ে আমার প্রশ্ন নয়; আসলে আমি এক্ষেত্রে আপনার যুক্তি-নির্ভর মতামত জানতে চাইছি।
@মনজুর মুরশেদ,
১. আমার মনে হয় – “বিশ্বাস” এবং “ধর্ম” এই দুটি শব্দ পরিপূরক ভাবা আমাদের আগে ত্যাগ করা উচিৎ। “বিশ্বাস” শব্দটি আরও ব্যপক ভাবে ব্যবহার করা হয় যেমন –
আমার বিশ্বাস – পাকিস্তানের বিশেষত পাঞ্জাবী এবং মুহাজির সাথে কিছু সিন্ধি-পাঠান শাসক গোষ্ঠীর অন্যায় আচরণের কারণে আমরা পাকিস্তান ফেডারেশন থেকে আলাদা হবার সিদ্ধান্ত নেই। শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আমাদের দেশের সাধারণ মানুষ “যার কাছে যা আছে” তা নিয়ে দেশ স্বাধীন করতে ঝাঁপিয়ে পরে – যার মধ্য আমার পরিবারের সদস্যও ছিল। আমি আমার অন্য কিছু নিয়ে “ব্র্যাগিং” না করলেও বাস্তব জীবনে খুবই বোস্টফুলি গর্ব করে বলি – আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার পুত্র, যিনি মাঠে-ঘাঁটে যুদ্ধ করেছিলেন – যার বয়স তখন আমার বর্তমান বয়স থেকেও কম ছিল। আমি এমন একজনের পৌত্র যিনি চল্লিশ জনেরো অধিক মুক্তিযোদ্ধাকে একমাস আশ্রয় দিয়েছিলেন এবং সাথে বহু পরিবারকে আশ্রয় দিয়েছিলেন। আমি এটাও বিশ্বাস করি যে তারা ঐ সময়ে আসলে বিশেষ কেউই ছিলেন না – ছিলেন অন্যতম মাত্র। তাদের মতই লক্ষ লক্ষ মানুষ একই কাজ করেছিল – যার যতটুকু সামর্থ্য ছিল। আমি এটাও বিশ্বাস করি যারা পারেনি তারা হয়ত সুযোগ পায়নি কিংবা তেমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়নি।
এখন, কেউ যদি উপযুক্ত প্রমান সাপেক্ষে একাডেমিক আলোচনা করতে চায় যে মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে আমি তর্কে যেতে রাজি আছি – হয়ত তার কিছু কথা মিথ্যা নাও হতে পারে -হয়ত সে তার যুক্তিতে এমন এমন কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার নাম নিয়ে আসবে যারা ব্যাক্তিগত ভাবে অনুচিত কাজ করেছিল – আমি তখন হয়ত যুক্তি দেব এটা ব্যাক্তিগত অপরাধ – সঙ্ঘটনের কোন দায় নেই যেহেতু সেসব ব্যাক্তিকে কৃত কর্মের জন্য শাস্তি পেতে হয়েছে।
তবে, সে যদি মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযোদ্ধা, দেশের স্বাধীনতা কিংবা বীরাঙ্গনাদের নিয়ে অশ্লীল রচনা লেখে এবং বক্তব্য দেয় সে নিশ্চয়ই আরেকজনের অধিকার খর্ব করছে এবং আইনের দৃষ্টিতে অপরাধ করছে। আমি চাইব তার আইনগত উপযুক্ত শাস্তি হউক – এটাও আমার বিশ্বাসের একটি লঙ্ঘনের মত।
যুক্তি-প্রমান এবং অশ্লীল গালাগাল এক জিনিষ নয়!!
২. সামাজিক অপরাধ কে কোন ক্রমেই বিশ্বের সকল দেশের জন্য স্ট্যান্ডার্ড করে বলা যাবেনা। কেন যাবেনা এটা বলাই বাহুল্য।
পুনশ্চ, এই নোটের লেখক ইঙ্গিত দিয়েছেন এটা ওনার ব্যক্তিগত স্মৃতিচারণ মূলক লেখা। তাই এই বিষয়টি নিয়ে এখানে আর কিছু বলতে চাচ্ছিনা। আশা করি অন্যকোন লেখায় এটা আলোচনা করা যাবে।
ধন্যবাদ।
@সংবাদিকা,
আমার মন্তব্যের সরাসরি জবাব আমি পাই নি। ঠিক আছে, অন্য কোথাও এনিয়ে আলোচনা হবে। আবারও ধন্যবাদ।
কলুষমুক্ত সমাজ গড়ার আন্দোলোনে আত্মদান ইতিহাসের সব অধ্যায় জুড়েই বিস্তৃত। রাজীব আমাদের সেরকমই এক সংগ্রামের প্রথম শহীদ। তার এই আত্মদান ইতিহাসেই শুধু নয়, বাংলার মানুষের হৃদয়েও পাবে অমরতা।
@শফি আমীন,
(Y) (Y)