নাফিস আসলে ফেড উড়ানোর কথা চিন্তা করেনি, ওবামার দ্বিতীয় টার্ম নিশ্চিত করার জন্য নাফিসকে ব্যবহার করা হয়েছে।
নাইন-ইলেভেন আসলে আমেরিকার সাজানো ঘটনা, আফগানিস্তান এবং ইরাক দখলের জন্য ঘটানো হয়েছে।
শাহবাগ আসলে স্বতঃস্ফূর্তভাবে সৃষ্টি হয়নি, বরং এটি সরকারের একটি পরিকল্পিত প্রজেক্ট, কাদের মোল্লার প্রথম রায়টি ছিল এই পরিকল্পনার ফসল।
অবরোধের ককটেলগুলো বিম্পি-জামাত নিক্ষেপ করেনি, সরকারই বিরোধী দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য এই ককটেলবৃষ্টি ঘটিয়েছে!
ফাইভ-ওয়ান পরবর্তী সাম্প্রদায়িক হামলা বিম্পি-জামাতের কাজ না, একদলীয় ইলেকশান থেকে আন্তর্জতিক মহলের দৃষ্টি ভিন্ন প্রবাহিত করার একটি সরকারী অপচেষ্টা।
উক্তিগুলো আমার না, বাংলাদেশের এক শ্রেণীর অতি শিক্ষিত ও জ্ঞ্যানি লোকের, যারা আমার-আপনার চেয়ে অনেক বেশী রাজনীতি বোঝেন! এমন না যে, উপরের মত করে ঘটনাগুলি ঘটতে পারে না। কিন্তু আমার-আপনার সাথে এই ক্রমবর্ধিষ্ণ রাজনীতি বুঝনেওয়ালা শ্রেণীটির পার্থক্য হলঃ আমরা সত্যি জানি না, কারা ঘটিয়েছে, কেন ঘটিয়েছে, তাই আমরা আপাত সহজ-সরল কারণ নিয়েই চিন্তা করি, অন্যদিকে রাজনীতি বুঝনেওয়ালারা কোন তদন্ত ছাড়াই শুধুমাত্র ‘রাজনৈতিক ব্রেন’ খাটিয়ে বলে দিতে পারে, এগুলি সব সাজানো। সব চক্রান্ত।
নাফিস ফেড উড়িয়ে দিত চেয়েছিল, কিন্তু কেন? খুব সহজ ব্যাখা ছিল, নাফিস শয়তান আমেরিকার ধ্বংস চায়। আমরা আমাদের চারপাশে কি নাফিসদের মত তরুনদের দেখি না, যারা আমেরিকাকে প্রচন্ড ঘৃনার চোখে দেখে? উঠতে-বসতে গাল দেয়? এদের অনেকেই আবার লাদেনকে কি ভয়ানক সমর্থন করে না আমেরিকাকে উচিত শিক্ষা দেয়ার জন্য? এদের পক্ষে কি সম্ভব না, লাদেনবাদিদের দলে খুব সহজেই রিক্রুট হওয়ার? কিন্তু রাজনীতি বুঝনেওয়ালারা এই আপাত সহজ-সরল একটা সমাধানকে এক লহমায় উপেক্ষা করে কি ভয়ানক জটিল উপসংহার টানে দেখুনঃ ওবামার রিইলেকশান নিশ্চিত করতেই নাফিসের মত এক নিরীহ ছেলেকে বলির পাঁঠা হতে হল!! এমন না যে, আমেরিকা শয়তানি করে না, বা তাকে ঘৃনা করার মত কারণের কমতি আছে! কিন্তু রাজনৈতিক বুঝনেওয়ালাদের কোন ইনভেস্টিগেশন চালানোর দরকার পড়ে না, ঈশ্বর যেমন আগে থেকেই জানেন, তেমন তারাও আগে থেকেই জানে, নাফিস ঘটনাটা পুরাই সাজাইনা! সবচেয়ে হাস্যকর হল, নিজেকে ঈশ্বরভক্ত দাবীকারী লোকগুলোই এমন ঈশ্বরগিরি ফলায় সবচেয়ে বেশী!
কিন্তু কেন? নাফিসের ঘটনাকে সাজানো তকমায় আটতে কেন এত মরিয়া এই শ্রেণীটি? আমেরিকা শয়তান, সুতরাং, তাকে ঘৃনা বা তার বিরুদ্ধে ধর্মযুদ্ধ করা স্বর্গের টিকিট পাওয়ারই নামান্তর, তাই নাফিস তো এমন করতেই পারে, নাফিস করলে তার প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বীকার করাই তো সঠিক রাস্তা ছিল একজন ধর্মবিশ্বাসীর জন্য? কিন্তু জটিল রাজনীতি বুঝনেওয়ালারা আমেরিকাকে কখনো ওয়াকওভার দিতে চান না! আমেরিকা ইরাক আক্রমন করলে তারা নিন্দা অবশ্যই করবেন, কিন্তু আক্রান্তরা যদি খুব স্বাভাবিক কারণেই আবার আমেরিকা আক্রমন করে, তখন সেখানেও দুশমনের দুষ বের করার পায়তারা করবেন আমাদের বুঝনেওয়ালারা!! এই শ্রেণীটিই কিন্ত আমাদের উঠতে-বসতে সতর্কবাণী শোনান যে, আমেরিকার আগ্রাসন জঙ্গী ছড়িয়ে দেবে সারা বিশ্বে, অথচ নাইন ইলেভেনের জঙ্গী বারুদ যখন সত্যি সত্যি বিষ্ফোরিত হয়, তখন তাকে বলবেন সাজানো! স্বজাতির ঘাড়ে ছিটেফোঁটা কালিমা পর্যন্ত দেখতে প্রস্তুত নন এই শ্রেণীটি!
এবার এক পাড় বিম্পি সমর্থকের কথা শুনুন। বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনাগুলোর পরই সে মনে মনে একটি সংবাদের লিংক খুঁজতে শুরু করে, সেই সময়টিতে যখন এমনকি বিম্পি মহাসচিবের “দৃষ্টি অন্যখাতে প্রবাহিত করার” স্টেটমেন্টও বের হয়নি। কোন সরেজমিন তদন্ত ছাড়াই তার ছাগু অন্তর আগেই জেনে ফেলে যে, এই সবগুলি ঘটনা ঘটিয়েছে আ’লীগ, অন্তর্জ্বালা তীব্র হয়ে দেখা দেয়, হবারই কথা, কোথায় একদলীয় ইলেকশানের তামাশা নিয়ে কথা কইবে লোকে, সেখানে টক অব দ্যা ব্লগ হয়ে গেল কিনা ‘হিন্দু নির্যাতন’!!!! হিন্দু নির্যাতন তার মনে একটুও বেদনা জাগাল না, বরং সরকারের সমালোচনার পরিবর্তে মানুষ যে ‘হিন্দু নির্যাতন’ নিয়ে কথা কইছে, এইটাই হল তার গাত্রদাহের কারণ। তীব্র ক্ষোভে ফেটে পড়ল সে এবং খুঁজতে শুরু করল লিংক!
যাইহোক, যথারীতি ছাগুব্লগ থেকে সে পেয়ে গেল তার খাদ্য, কারণ সেখানকার ফ্যাক্টরিতে ঘন্টায় ঘন্টায় কাঁঠালপাতা উৎপাদন করা হয়, এবং কিভাবে উৎপাদন হয়, তা দিগন্তদা দেখিয়েছিলেন একবার।
হিন্দুদের কারা মেরেছে, হিন্দুরা তা জানে, কারণ আক্রমনকারীরা অন্যগ্রহের কেউ না, যারা মেরেছে তারা আক্রান্ত হিন্দুদের আশে-পাশের গ্রাম বা বাড়িতে থাকে। এই প্রতিবেদন টা পড়ে দেখতে পারেন। খবরটিতে কি আছে? হিন্দুদের ভোট দিতে না করা হয়েছিল, কিন্তু হিন্দুরা তাতে কর্নপাত না করায় তাদের উপর একযোগে হামলে পড়ে জামাত কর্মিরা! আমরা যারা রাজনীতি বুঝি না, তাদের কাছে এ খবরটি বিশ্বাসযোগ্যই মনে হয়। কারণ আমরা আমাদের আশেপাশে চলতে ফিরতে এমন অনেক সাম্প্রদায়িক মানুষ দেখি, যারা কথায় কথায় মালাউন, মালাউন বলে গাল দেয়, হিন্দুদের নিকৃষ্টতম জীব মনে করে! আমাদের সাধারণ চিন্তাশক্তি আমাদের বলে যে, বিএনপি-জামাত কর্মিদের আক্রমন করার রয়েছে আরও সহজ বুঝ্য কারণ, যেহেতু তাদেরকে সর্বান্তকরনে বিশ্বাস করানো হয়েছে যে, যুদ্ধাপরাধীর ফাসি হচ্ছে শুধুমাত্র হিন্দুদের সাক্ষ্যের কারণে, বা সরকার ক্ষমতা আকড়ে থাকতে পারছে শুধু হিন্দু ভারতের কারণে। কিন্তু আলোচ্য ‘রাজনীতি বুঝনেওয়ালা’ শ্রেণীটির দরকার নেই এসব সংবাদ প্রতিবেদনের। কারণ তারা আগে থেকেই জানে এমনটাই ঘটবে, সরকার একটি খেলা খেলবে!
সাঈদির রায়ের পর যখন হিন্দু নির্যাতন হয়, এক বুদ্ধিজীবি ব্লগার বলেছিলেন যে এইটা ইন্ডিয়ার কারসাজি। শাহবাগবিরোধীরা হাজার হাজার লোক নিয়ে অনেক শহীদ মিনার ভেঙ্গেছিল, কিন্তু পাড় বিম্পি সমর্থকরা আবিষ্কার করে ফেলল এক আ’লীগ কর্মিকে, যাকে নাকি দেখা গেছে শহীদ মিনার ভাঙতে। ঘটনাটি হয়ত সত্যি, কিন্তু এরপর থেকে যে আক্রমনই হোক না কেন, যত পরিষ্কারই হোক না কেন আক্রমনকারীদের পরিচয়, পাড় বিম্পি সমর্থকেরা শুধু ঐ সংবাদের লিংক দিতে শুরু করল। যেন বা সংবিধিবদ্ধ আইন তৈরি হয়েছে যে, একজন মাত্র আ’লীগ কর্মির শহীদ মিনার ভাঙনের দৃশ্য এ ধরনের যত ঘটনা ভবিষ্যতে ঘটবে, তাকে ব্যাখ্যা করার জন্য যথেষ্ট হবে।
যারা সাম্প্রতিক হিন্দু নির্যাতনের প্রতিবাদে সরব, তারা কেউ আ’লীগের হয়ে কথা বলেনি, সবাই শুধুমাত্র হৃদয়বিদারক ঘটনাগুলোর নিন্দা করেছে, কিন্তু পাড় বিএনপি সমর্থকেরা আলাদা। তাদের কোন কষ্ট নেই আক্রান্তদের জন্য, বরং কেন এই ঘটনাটা এমন সময়ে ঘটল, তা নিয়েই মর্মজ্বালা তাদের। এ ঘটনা যে বিএনপি-জামাত ঘটায়নি, তা প্রমাণ করতেই শশব্যস্ত তারা।
নির্যাতনের ঘটনাগুলো যাদের উপর হয়েছে, তাদের উপরই আমরা ছেড়ে দেই না আক্রান্তকারী কারা? তারা যখন বলছে বিম্পি-জামাত ঘটিয়েছে, তখন আপনার-আমার আর কি বলার থাকতে পারে! তারা যদি আ’লীগের কর্মির কথা বলে, সেক্ষেত্রেও কি আমাদের কিছু বলার আছে? এমনকি আ’লীগ কর্মি যদি নাও করে থাকে, তবু কি আ’লীগ সরকার দায় এড়াতে পারে?? কারণ নিরাপত্তার দায়িত্ব তো তাদেরই যেহেতু তারা সরকারে আছেন?
আমরা সাধারণ মানুষ এমন করেই ভাবি। নাফিস তো জঙ্গি হামলা করতেই পারে, কারণ তার মত জঙ্গিমনা একেবারে কম নেই আমাদের দেশে, প্রসিকিউশান শক্তিশালী না হলে কাদের মোল্লার রায় তো বেঠিক হবেই, শাহবাগে তো স্বাধীনতাপ্রিয় মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবেই সমবেত হবে, সরকারের দুর্বল রায়ের দুর্বল প্রসিকিউশানের বিরুদ্ধে তারা ফেটে পড়বে না? আমাদের অবুঝ মন এও বলে, বিম্পি-জামাত যেহেতু খুবই কোনঠাসা হয়ে পড়েছে, তাদের হতাশ কর্মিদের হাতে ককটেল খেলা করতেই পারে! এসব সাধারণ চিন্তা কিন্ত জটিল রাজনৈতিক বিশ্লেষনওয়ালাদের মাথা অব্দি কখনই পৌঁছুবে না, অ্যান্টেনা সাতআসমান অবধি বিস্তৃত তিনাদের!
কেন নির্যাতনের ঘটনাকে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের নিক্তি দিয়ে মাপবে একজন সুস্থ-স্বাভাবিক-সাধারাণ মানুষ, যখন তার আশেপাশে এমন অসংখ্য মানুষ দেখতে পায় সে, যারা হিন্দুদের এতটাই ঘৃনা করে যে, পারলে কচুকাটা করে! সুতরাং, যারা নির্যাতন করে, তারা বিদ্বেষ থেকেই করে, বিম্পি-জামাত করলে বিদ্বেষ ও ঘৃনা থেকেই করে, আম্লিগ কর্মি করলেও বিদ্বেষ থেকেই করে! কারণ আম্লিগের ভিতরেও সাম্প্রদায়িক মনোভাবাপন্ন লোক কম নেই। এই যখন অবস্থা, তখন কেন কষ্ট করে ষড়যন্ত্র তত্ত্ব খুঁজবে একজন সুস্থ স্বাভাবিক সাধারণ মানুষ??
দলান্ধরা সবকিছু দলীয় মগজ দিয়ে চিন্তা করে, এবং এ করতে গিয়ে তারা একসময় মগজশূণ্য হয়ে পড়ে। কথায় বলে, বুঝতে বুঝতে বোঝা, আমাদের দেশের দ্রুত বর্ধনশীল রাজনীতি-বুঝনেওয়ালা শ্রেণীটি খুব বেশী রাজনীতি বুঝতে গিয়ে যে ক্রমশ বোঝায় পরিণত করছেন নিজেদের, তা হয়ত তাদের জানা নেই। সবকিছুই ঈশ্বরের মত আগে-ভাগে বুঝে ফেলতে পারলেও শুধু এই বুঝটিতেই তাদের রয়ে গেছে যা কিছু ঘাটতি!
মনে অপরাধ পোষণ করে রাখা এবং সেই অপরাধীর অপরাধ জনসম্মুখে প্রকাশ, দুই দিকে বেশ শক্ত যুক্তি আছে। নাফিজ অপরাধী তাই সে শাস্তি পাচ্ছে, অপরাধীর শাস্তি যেমন সমর্থন করি তেমনি তার সারা জীবন ও পরিবারের জন্য কষ্ট আমার মধ্যে কাজ করে। অ্যামেরিকা নিজের স্বার্থের জন্য এমন কাজ করেছে অন্যদিকে নাফিস ধর্মের লোভে জীবনের চরম ভুল করেছে। অ্যামেরিকা অন্যকে বিপদে ফেলে নিজের জায়গায় সফল হয়েছে।
@শুভ মাইকেল ডি কস্তা,
আপনি মানুষ বলেই আপনার এমনটা করে। দেখুন, নাফিসকে তার পিতা আমেরিকায় পড়তে পাঠিয়েছিল কত অর্থ খরচ, ছেলেকে নিয়ে কত স্বপ্ন ছিল তার বাবা-মার দু’চোখে! ছেলে মস্ত বড় ইঞ্চিনিয়ার হবে, বাবা-মার মুখ উজ্জ্বল করবে! শুধু কি নাফিসের পরিবার? নাফিস যদি একজন বড় ইঞ্চিনিয়ার হত, দেশ তার থেকে কত কিছু পেত বলুন তো? এমনকি নিজ ধর্মের লোকদের জন্য আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানের রাস্তা দেখাতে পারত নাফিস!
আপনি কষ্ট পেলেও কষ্ট পায়নি দুজাতের ছাগু;
প্রথম প্রজাতির ছাগু হল তারা যারা নাফিসের এই ধর্মযুদ্ধকে নিয়ে অহংকার করে, নাফিসের পরিবার এক সাগর শোকে ভেসেছে তো কি হয়েছে, শয়তান আমেরিকাকে তো শাস্তি দেয়া গেছে!
দ্বিতীয় প্রজাতির ছাগু হল তারা যারা নাফিসের ঘটনাকে সাজাইনা বলে প্রচারণা চালায়, নাফিসের প্রতি কোন মায়া নেই, বরং নাফিস ইস্যুকে কেন্দ্র করে নিজের রাজনৈতিক মতাদর্শকে শক্তিশালী করাই তাদের একমাত্র লক্ষ্য!
আপনি কি বলতে চাচ্ছেন, ফেড উড়িয়ে দেয়ার পরই শুধু নাফিসকে আটক যুক্তিযুক্ত ছিল?
@শুভ মাইকেল ডি কস্তা,
সেটাই কি স্বাভাবিক না ? অবশ্যই আম্রিকা নিজের দেশের স্বার্থই আগে দেখবে, যেমন বাংলাদেশ নিজেদের স্বাৰ্থ আগে দেখবে ।
বাংলাদেশে নাফিসের মত বিদেশী কোন ছেলে জঙ্গি হামলা ঘটালে/ঘটানোর ইচ্ছা পোষন করলে, আমরা কি সেই জঙ্গির বয়স বিবেচনা করে ছেড়ে দিব? আমাদের কাছে তো বাংলাদেশের নিরাপত্তাই ফাস্ট প্রাইওরিটি পাবে, তাই না ??
আম্রিকা নাফিসকে বিপদে ফেলে নাই। নাফিস এদেশের “হিজবুত তাহরীর” নামক জঙ্গি সংগঠনের সমৰ্থকদের মত এক ধরনের বিশ্বাসের ভাইরাসে আক্রান্ত। তার মৌলবাদী মন ও মস্তিষ্ক তাকে বিপদে ফেলেছে।
আবেগ নির্ভর অন্ধবিশ্বা/অবিশ্বাস মনে গাঁড়া থাকলে চরম ডবল ষ্ট্যান্ডার্ড, স্ববিরোধীতা, নানান কল্পিত ষড়যন্ত্র তত্ত্ব আনয়ন ও তা প্রমানে সূত্র সন্ধান (স্বাভাবিকভাবেই সূত্র পেতেও সমস্যা হয় না, বিশেষ করে নেট জগতে আপনি যাইই চান পেয়ে যাবেন) এসব অত্যন্ত স্বাভাবিক।
বলা ভাল যে ৯১১ ইনসাইডার জব এটা কিন্তু বহু আমেরিকানও বিশ্বাস করে, যদিও তাদের বিশ্বাসের কারন ধর্ম নয়। এটাও সত্য যে সাম্প্রদায়িকতার নগ্ন চর্চার কারনে এখন আওয়ামী ধারার লোকের ভেতরও সাম্প্রদায়িকতার চর্চা গোপন কিছু নয়, সাম্প্রতিক সময়ে তাদেরও বেশ কিছু কার্যকলাপ নানান সূত্রে এসেছে। এটাও গোপন করে কেবল জামাত বধের উপায় হিসেবে সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে গলা ফাটিয়ে সংখ্যালঘুদের তেমন উপকার হবে না।
বিরোধী দলের জ্বালাও পোড়াও আন্দোলনে এ পর্যন্ত কত জনে পুড়ে মরেছে কে জানে। কিছু স্যাবোটাজ হলেও হতে পারে, কিন্তু সাধারন যুক্তিবোধ বলে এসব কার কারবার কাদের। গত সপ্তাহে মনে হয় দেখলাম যে কোথায় যেন ছাত্রলীগের ছেলে কেরোসিনের বোতল দিয়াশলাই সহ ধরা পড়েছে। এখন চমতকার রাস্তা পাওয়া গেল, আসলে সরকারই দলই মানুষ পুড়িয়ে মারছে, নাম দিচ্ছে নিরীহ বিএনপি জামাতের।
আমাদের সমাজে যুক্তিবাদের চর্চা কোনদিনই ছিল না। বেশীরভাগ লোকেই ঝাঁকের কই। বর্তমানের চরমপন্থী অবস্থা এই প্রবনতাকে করে তুলছে আরো ভয়াবহ। প্রোপাগান্ডায় সকলেই নেমে যাচ্ছে, যে যা বিশ্বাস করতে চায় তার পক্ষে সবই পাওয়া যায়।
এই মানসিকতার আরেকটা উদাহরন বড় মজার লাগে। যুদ্ধপরাধী বিচারের বিরুদ্ধে বিএনপি জামাতি ধারার ডানপন্থী লোকজনের একটি বড় যুক্তি থাকে বংগবন্ধুই বিচার বন্ধ করে দিয়েছিলেন…ক্ষমা করে দিয়েছিলেন…অমূক রাজাকারকে জেল থেকে ছেড়ে দিয়েছিলেন……মজার কারন হল এসব যুক্তি যারা দেন তাদের কাছে আবার বংগবন্ধু একজন ব্যার্থ, অযোগ্য, নিষ্ঠূর শাসক যার ভাল গুনাবলী তেমন নাই, এমনকি মুক্তিযুদ্ধেও আসলে কোন অবদান নাই। এমন একজন বদ কিসিমের নেতার উদাহরন সুবিধেমত হয়ে যায় অকাট্য যুক্তি।
“আমাদের দেশের রাজনীতি বুঝনেওয়ালা শ্রেণীটি খুব বেশী রাজনীতি বুঝতে গিয়ে যে ক্রমশ বোঝায় পরিণত হচ্ছে, তা হয়ত তারা নিজেরাই জানে না!”
যথার্থ বলেছেন কাজি মামুন।
এইটা আবার কোন নতুন ঘটনা নাকি মামুন ভাই? ২১ আগস্টে হাসিনাকে হত্যা চেষ্টাও যে সাজানো এইটা বুঝেন না আপনি!!
আসলে হাসিনা যেমন নিজের নেতাকর্মীদের বলেছিল নিজের জনসভায় গ্রেনেড ফাটাতে,তেমনি বলেছিল,”স্নাইপার দিয়ে আমাকে গুলি করো তোমরা”।
হুহু বুঝতে হয়, এইসব আপনার আমার মত লোক বুঝবে না, এইসব বুঝতে হলে আগে ষড়যন্ত্র তত্ব নামে এক বিশেষ ধরনের তত্ব বুঝা লাগে, নিরপেক্ষ ভাবে সংগ্রাম , আমার দেশ, নয়াদিগন্ত ( আগে ছিল ইনকিলাব) পড়ে বুঝা লাগে।ওই তত্ব না বুঝলে আপনি ( আমি, আমরা অনেকেই) শিক্ষিতই না!
এই সব বিশ্বাস আক্রান্ত মানষদের বিশ্বাস গুলি খুবই কৌতুককর। তারা টুইন টাওয়ার ভেঙ্গে পড়ার ঘটনায় ব্যাপক আনন্দ লাভ করে। অথচ বিশ্বাস করে এই সব ইহুদিদের ষড়যন্ত্র!
তারা বেশ গর্ব করে বলে বেড়ায়, ইসলাম শান্তির ধর্ম, এখানে সন্ত্রাস বাদের কোন স্থান নেই। তলে তলে আবার তালিবানের ব্যাপক সমর্থক।
-ধর্মনিরপেক্ষতাকে তারা ঘৃণা করে প্রাণ ভরে। অথচ তারা ভারতে ধর্মিয় দল ক্ষমতায় আসুক একেবারেই চায় না!
মডারেট মুসলিমরা মুলত এক্সট্রিম স্ববিরধী!
@মুরশেদ,
ধর্মনিরপেক্ষতার মানে জিজ্ঞেস করে দেখুন তাদের। দেখবেন কেমন তোতলাবে! তবে তোতলানো শেষে একটি উত্তর দেবে, যা হতে পারে এমনঃ ধর্মনিরপেক্ষতা মানে আমার ধর্মকে অন্য ধর্মের কাছে ছোট করা, ধর্মনিরপেক্ষতা মানে সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়েও নিজ দেশে সংখ্যালঘু হয়ে থাকা!
এ ছাড়া আর কোন অর্থ নেই ধর্মনিরপেক্ষতার এই লোকগুলির কাছে!
@কাজি মামুন,
এই জ্ঞান পাপীরাই ডোবাচ্ছে।কেউ কেউ তো রাজনৈতিক নেতাদের পোষা বুদ্ধিজীবী ।
মানুষের পক্ষপাত যখন অযৌক্তিক পর্যায়ে চলে যায়, তখন নিজের পক্ষের সব ভুল- ত্রুটিই ব্লাইন্ড স্পটে থাকে, কিছুই তার চোখে পড়ে না। যে কোনো কিছুর জন্যেই তখন বিরোধীপক্ষকে দায়ী করার অদ্ভুত একটা মানসিক রোগ তৈরি হয়। সাম্প্রতিক সময়ে আমার যে অভিজ্ঞতা হলো তা থেকে বলতে পারি যে, বিএনপি-জামাততো আছেই, আওয়ামী লীগের একটা গোঁড়া সমর্থক গোষ্ঠীও এই রোগে আক্রান্ত।
সিরিয়াস লেখায় বিএনপিকে বিম্পি বলা দৃষ্টিকটু ঠেকলো।
@ফরিদ ভাই,
এমন না যে, আ’লীগ করতে পারে না, কিন্তু হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর যারা হামলা চালিয়েছে, তারা তাদেরই পাড়া-প্রতিবেশী, এলাকাবাসী, ভাড়া করা গুন্ডা না। ঘটনাগুলো ঘটার পেছনে খুব সহজ-স্বাভাবিক লৌকিক ও স্থানীয় ব্যাখ্যা রয়েছে, যদি তদন্ত করে বের করা যায় যে, আসলেই এগুলো রাষ্ট্রিয় ষড়যন্ত্রের অংশ, তাহলে বলার কিছু নেই, কিন্তু কোন তদন্ত বা প্রমান হাতে পাওয়া ছাড়াই যখন দাবী করা হয় এগুলি সবই সাজানো নাটক, এবং প্রতিবাদ করতে গেলেই বলা হয়, আমরা রাজনীতি বুঝি না, তখন খুব খারাপ লাগে এইজন্য যে, লোকগুলি শুধু একটি দলকে নগ্নভাবে সমর্থনই করছে না, তার শয়তানি কর্মকান্ডকেও এক প্রকার উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছে। ভাবুন এহেন কুকীর্তি করা দলটির কথা, তারা দ্বিগুন উৎসাহে ঝাপিয়ে পড়বে এমনতরো আরো কম্ম সাধনে, যেহেতু তাদের খারাপ কাজের দায়ভার তাদের নিতে হয় না, তারা যে খারাপ করে, এমনটা বিশ্বাসই করে না তাদের নির্বাচকমন্ডলি!!
দেখুন, ভাইয়া, বেশিরভাগ ঘটনাই ঘটিয়েছে বিএনপি-জামাত। হয়ত কিছু ঘটাতে পারে অতি উৎসাহী আ’লীগ কর্মিরা। কিন্তু যেই করুক, আমরা চাইব এবং চাইছি দোষী লোকগুলোর বিচার, কিন্তু রাজনীতি বুঝনেওয়ালারা চাইছেন, শুধু সরকারের পতন, কারণ সরকার একদলীয় ইলেকশান থেকে দৃষ্টি সরাতেই এই ঘটনা ঘটিয়েছে। আমাদের সাথে রাজনীতি বুঝনেওয়ালাদের পার্থক্য এখানেই।
সবচেয়ে দুঃখজনক হল, যারা দলীয় মগজের ভারে এমন ষড়যন্ত্ররোগে ভুগতে থাকে, তারা নির্যাতিত মানুষগুলোর দুঃখ নিয়ে বিন্দুমাত্র বিচলিত হয় না, দলের ইমেজ নষ্টের দুঃখে এতই ভারাক্রান্ত থাকে তারা! প্রায় সবটা সময় ব্যায় করে প্রিয় দলটির ইমেজ পুনরুদ্ধারে, মানুষের নির্যাতন, দুঃখ, কষ্ট ইত্যাদি নিয়ে ভাবার অবকাশ কোথায়?
রাজনীতি হলো বিভিন্ন গোষ্ঠি বা শ্রেনীর স্বার্থের লড়াই । বিজ্ঞান যেমন বিধি-বিধান, অর্থ্যাৎ তত্ত্ব দ্বারা নিয়ন্ত্রিত, তেমনি সমাজবিজ্ঞানের অন্তর্ভূক্ত রাজনীতিও তত্ত্ব দ্বারা পরিচালিত । যার নাম বস্তুবাদ ।
শ্রমে সম্পদ উৎপাদিত হয় । এক কালে দাসেরা ছিল সম্পদ উৎপাদন শক্তি, কিন্তু ভোগ করতো দাস প্রভুরা । উৎপাদিত সম্পদ ভাগে দাস প্রভুদের মধ্যে সমতা না থাকায়, দাস প্রভুদের মধ্যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয় । ফলশ্রুতিতে ইউরোপে ভেটিকানদের আগমন এবং মিসরে মোজেসের মাধ্যমে যুডিইজমের আগমন । ভেটিকান ও যুডিইজমের হাত ধরে সামন্তবাদি ব্যবস্থার উৎভব । আলোচ্য সামান্তবাদি ব্যবস্থায় কোন কোন সামান্ত প্রভুর হাতে পুজি সঞ্চয় হয় এবং এক মধ্যবিত্ত শ্রেনীর উন্মেষ ঘটে । পুজি বিজ্ঞান ও মধ্যবিত্ত শ্রেনীর প্রচেষ্টায় পুজিবাদের উদ্ভব ঘটে ।
মহিউদ্দীন
বিশ্বাসের ভাইরাসে আক্রান্ত মানুষই এই ধরনের উদ্ভট চিন্তা করে !!
@তারিক
!!
উদ্ভট কিনা জানি না , অবশ্যই এটাও এক ধরনের বিশ্বাসের ভাইরাস। তবে, এ ধরনের আচরণ নতুন নয়। ১৯৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় এরাই বলছিল যে , মুক্তিযুদ্ধ হচ্ছে দুই কুত্তার কামড়া কামড়ি ! অর্থাৎ । এদের চোখে মুক্তিযোদ্ধারা এবং পাকিস্তানী আর্মি উভয়ই কুকুর বিশেষ। নিরপেক্ষতার বলিহারি কাকে বলে ! সৌভাগ্যক্রমে এদের কথায় বাংলার মানুষ চলেনি এবং দেশ ঠিকই স্বাধীন হয়েছে। এখন আবার নতুন করে এদের গুরুত্ব দেয়ার প্রয়োজন নেই কারণ এরা না চুরি করতে পারে , না চোর ধরতে পারে। চোর ঘরে ঢুকলে এরা বিশ্লেষণে ব্যস্ত হয়ে বলে , “আগে দেখি না ব্যাটা কি করে ?” :))
@সংশপ্তক,
😀 😀
:hahahee: :hahahee: :hahahee:
@সংশপ্তক,
এই তথ্যের সোর্স কী? কে এই বিশ্লেষক? দুই কুকুরের লড়াই কথাটা ব্যাবহৃত হয়েছে এটা তো ঐতিহাসিক সত্য। আমি জানতে চাচ্ছি এই দুই কুকুর যে আসলে “মুক্তিযোদ্ধারা এবং পাকিস্তানী আর্মি”রা এটা কে বলেছে? নাকি আপনার নিজস্ব ব্যাখ্যা এটা?
@সাইফুল ভাই,
আর আমাদের জিজ্ঞাস্য: এই দুই কুকুর যে আসলে “মুক্তিযোদ্ধারা এবং পাকিস্তানী আর্মি” না, বরং অন্য কেউ, সেটা কে বলেছে? ফরহাদ মজহার?
খুব সম্ভবত দুই কুকুর বলতে “আ’লীগ আর জামায়াত (রাজাকার গোষ্ঠী)” কে বলা হয়েছে বলেই আপনি জানেন, তাই নয় কি?
বিষয়টা খুব গুরুত্বপূর্ণ। যদি একটু পরিষ্কার করে বলতেন আপনি কি জানেন এই ব্যাপারে? আপনার প্রশ্ন থেকে মনে হচ্ছে, আমাদের প্রচলিত জানাটি মারাত্মক ভুল ছিল, আপনি সত্যিটা জানেন। সেক্ষেত্রে আমাদেরও সত্যিটা জানালে কৃতজ্ঞ থাকব, সাইফুল ভাই!
জানার জন্যই কিন্তু জিজ্ঞেস করলাম, সাইফুল ভাই! আবার রাগ কইরেন না যেন!