বর্তমানে দেশে অনেকটা নিয়ম মেনেই সরকার শেষের পর নির্বাচন কেন্দ্র করে ব্যাপক গোলযোগ চলছে, আশা করতে দোষ নেই যে এই গোলযোগেরও আপাতঃ একটি সমাপ্তি আসবে, উতসব মূখর পরিবেশে আবারো লোকে সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ন অবাধ নির্বাচনের মাধ্যমে পরবর্তি সরকার নির্বাচন করবে। যে কোন জাতীয় নির্বাচনের সময়ই সব দেশে গুরুত্বপূর্ন বা জ্বলন্ত ইস্যুগুলি সম্পর্কে প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলি তাদের দৃষ্টিভংগী জানায়; সেভাবে চেষ্টা করে জনমতকে প্রভাবিত করতে। জনতার পক্ষেও তখন সহজ হয় তাদের প্রায়োরিটি অনুসারে যোগ্য দল বিবেচনা করে ভোট প্রদান করায়।
বর্তমান গোলযোগ (বলা ভাল সন্ত্রাস) এ মুহুর্তে আলোচনার সকল কেন্দ্রবিন্দুতে থাকলেও এক সময় স্তিমিত হয়ে গেলে নির্বাচনী ইস্যুগুলি সামনে আসবে। হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফা আন্দোলন এ বছর ছিল জাতীয় রাজনীতির এক অতি গুরুত্বপূর্ন অধ্যায়। বলাই বাহুল্য যে ধর্মীয় সংস্কৃতি প্রধান এই দেশে হেফাজতের ১৩ দফার গুরুত্ব অগ্রাহ্য করা যায় না। তার প্রমান নানান সূত্রে দেখা যায় যে গত সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ইস্যু জনমতকে প্রভাবিত করেছে, সামনের জাতীয় নির্বাচনেও এর প্রভাব থাকবে আন্দাজ করাই যায়। তাই হেফাজতের ১৩ দফা সম্পর্কে বড় দুই দলের দৃষ্টিভংগী স্বচ্ছতার জন্যই পরিষ্কার হওয়া দরকার। সবাই মোটামুটি জানি যে সরকারে থাকা আওয়ামী লীগ প্রথম দিকে কিছুটা আপোষের সুরে থাকলেও পরে ষ্পষ্ট ভাষায় ১৩ দফা মানা যাবে না বলে তাদের অবস্থান পরিষ্কার করেছে। প্রতিদ্বন্দ্বী, জনপ্রিয়তায় আরেক অন্যতম বড় দল বিএনপি হেফাজতের বিখ্যাত ১৩ দফা সম্পর্কে কি বলে? সে নিয়েই এই লেখা। বলে রাখা ভাল যে এ লেখার সাথে হেফাজতের ১৩ দফা দাবীর যৌক্তিকতা কিংবা তত সংক্রান্ত আলোচনা ঘটনাক্রমের তেমন গুরুত্ব নেই, তাই হেফাজত/১৩ দফার আলোচনার তেমন অবকাশ এখানে নেই। আলোচনা সম্পূর্নই কেন্দ্রীভূত থাকবে ১৩ দফা সম্পর্কে বিএনপির দৃষ্টিভংগী সম্পর্কে।ে
হেফাজতের ১৩ দফা সম্পর্কে বিএনপির অবস্থান বুঝতে আমাদের শাহবাগ আন্দোলনের সময়কালে হেফাজতের উত্থান পর্ব থেকে শুরু করতে হবে। তাদের অবস্থান বোঝা অত্যন্ত বিভ্রান্তিকর, আগেই বলে রাখছি, যে কারনে এ লেখা। হেফাজত ঢাকায় প্রথম বড় সমাবেশ করে এ বছরের ৬ই এপ্রিল। সে সমাবেশে খালেদা জিয়ার পক্ষ হতে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল যায়, তাদের সিনিয়র দুই নেতা খোন্দকার মোশারফ হোসেন এবং সাদেক হোসেন খোকা মঞ্চে আরোহন করে [হেফাজতের দাবীর সাথে ‘সংহতি’ প্রকাশ করেন]। এ থেকে সাধারন জনতা হিসেবে আমি সাদা চোখে বুঝি যে বিএনপি হেফাজতের ১৩ দফা দাবীর প্রতিই সমর্থন জানিয়েছে। হেফাজতিদেরও নিশ্চয়ই অন্তত বিএনপি ক্ষমতায় গেলে তাদের ১৩ দফা পূরন করবে এমন ধারনা হওয়া খুবই স্বাভাবিক। দলের পক্ষ থেকে এভাবে মঞ্চে উঠে দাবীর প্রতি সংহতি জানানোর আর কি মানে হতে পারে? সেটা হলে আমার আপত্তির কিছুই নেই, গনতান্ত্রিক দেশে এমন একাত্মতাবোধ করাটা অবশ্যই মত প্রকাশের স্বাধীনতা। আমি একমত না হতে পারি তাতে কিছু এসে যায় না।
এরপর যাই এই অভূতপূর্ব নিঃশর্ত একাত্মতা ঘোষনার মাত্র ২ দিন পর; ৮ই এপ্রিল বিবিসির সাথে এক সাক্ষাতকারে হেফাজতের মঞ্চে উঠে সংহতি প্রকাশকারী বিএনপি নেতা খোন্দকার মোশারফ সাহেবেরই বক্তব্য যথেষ্ট বিভ্রান্তিকর। উনি বিবিসিকে স্পষ্ট ভাষায় দেখি বলছেন যে ওনারা ১৩ দফার সবগুলি দাবী মানেন না। সংগত কারনেই প্রশ্ন আসে যে ঠিক কোন দাবীগুলি ওনারা মানেন, আর কোনগুলি মানেন না? কোনগুলি মানেন আর কোনগুলি মানেন না সে কথা কি ওনারা ৬ই এপ্রিল হেফাজতের মঞ্চে উঠে হেফাজতি নেতাদের পরিষ্কার বলেছিলেন? না বলে থাকলে কেন বলেননি? যেখানে হেফাজতের অবস্থান অতি কঠোর এবং দৃঢ়, তাদের একটি দফার সংগেও আপোষ নেই। অর্থাৎ ১৩ দফার একটি দফাও অস্বীকার মানে সবই অস্বীকার করা। এখন পর্যন্ত কোন মিডিয়ায় ওনাদের এই মানা না মানার কোন তালিকা আমি অন্তত দেখিনি। যা ওনারা মানেন না তার প্রতি কিভাবে সশরীরে সংহতি জানানো যায়? আরো বিস্ময়কর ব্যাপার হল যে হেফাজতের বর্তমান আন্দোলন মূলত যেই দাবী কেন্দ্র করে শুরু হয়েছিল অর্থাৎ ধর্ম অবমাননার বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদন্ড ওয়ালা ব্লাসফেমি আইন সেই ব্লাসফেমি আইনই ওনারা মানেন না বলে পরিষ্কার ইংগিত দিয়েছেন। বাকিগুলি সম্পর্কে কোন কথাই তিনি বলেননি। ওনাদের সভায় আলোচনা হয়নি বলে এড়িয়ে গেছেন, অথচ ‘আলোচনা না হওয়া’ বিষয়টিতে আরো ২ দিন আগে হেফাজতের সভায় পদধূলি দিয়ে ঠিকই একাত্মতা প্রকাশ করতে পেরেছেন। কোন বিষয়ে পূর্ব আলোচনা বা চিন্তাভাবনা ছাড়া সংহতি প্রকাশ বিবেচনাবোধ সম্পর্কে সংশয় জাগালেও সম্ভব, কিন্তু দাবী না মেনেও কিভাবে সংহতি প্রকাশ সম্ভব তা আমি বুঝতে অক্ষম।
এর একদিন পর ৯ই এপ্রিল অনেকটা একই রকমের প্রতিক্রিয়া দেখালেন আরেক সিনিয়র বিএনপি নেতা ও প্রাক্তন সেনাপ্রধান লেঃ জেঃ (অবঃ) মাহবুবুর রহমান। হেফাজতের ১৩ দফা সম্পর্কে ওনার বক্তব্যঃ “তাদের কর্মসূচির প্রতি বিএনপি সমর্থন দিলেও দাবির ব্যাপারে অনেক কিছু বিবেচনা করবে। কারণ এ দাবি মেনে নিলে আমাদের গার্মেন্টের যে লাখ লাখ মেয়ে অর্থনীতির চাকা সচল রেখেছে, সেখানে ছেলেমেয়েরা একসঙ্গে বসে কাজ করতে পারবে না। ব্লাসফেমি আইন পাকিস্তানে আছে বলেই বাংলাদেশে থাকতে হবে এমন কোনো কথা নেই। ব্লাসফেমি আইন কোনো মানদণ্ডেই সমর্থনযোগ্য নয়।“ অর্থাৎ সেই একই কথা, ১৩ দফার কোনটা মানেন আর কোনটা মানেন না সে নিয়ে পরিষ্কার কোন বক্তব্য নেই, তবে হেফাজতের অন্যতম দাবী ব্লাসফেমি আইন যে ওনারাও সমর্থন করেন না এটা অন্তত পরিষ্কার। এখানে আপাতত অপ্রাসংগিক হলেও উনি বেশ একটা ইন্টারেষ্টিং কথা বলে ফেলেছেন জামাতের সাথে বিএনপির মৌলিক পার্থক্য বর্ননায়। “আর জামায়াত দেশে ইসলামী শরিয়া আইন চায়। আমরা তা চাই না।“ বিএনপির মত ইসলাম ভক্ত দল কেন শরিয়া আইন চায় না কে জানে, আপাতত এই প্রশ্ন বাদ থাক।
আরো বিভ্রান্তিকর হল এরপরেও দেখা যায় যে স্থানীয় পর্যায়ে বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা হেফাজতের সমাবেশে হাজির হয়ে ১৩ দফার সাথে সংহতি প্রকাশ করছেন, যদিও অফিশিয়ালী তারা নিজেরাও জানেন না ১৩ দফার কোনটা তারা মানেন আর কোনটা মানেন না। অদ্ভূত না? একটি উদাহরন দেখতে পারেন ফরিদপুরে প্রাক্তন মন্ত্রী বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট চৌধূরী কামাল ইউসুফের এমন একাত্মতা ঘোষনার।
এরপর হেফাজত ঘটায় ৬ই মের ঢাকা অবরোধ কর্মসূচী। ঘাত প্রতিঘাতময় সে অবরোধ কর্মসূচীর অবসান ঘটে মধ্যরাতে সরকারী বাহিনী কর্তৃক হেফাজতিদের বলপূর্বক সরিয়ে দেওয়ার মধ্য দিয়ে, যা কেন্দ্র করে ছড়ায় গণহত্যার অভিযোগ সমৃদ্ধ বহু সত্য মিথ্যার মিশেল ওয়ালা কাহিনী। বিএনপি দেশের অন্যতম প্রধান বড় দল হিসেবে মানবিকতা এবং বেশ দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়ে সে কথিত গণহত্যায় নিহতদের (গনহত্যার দাবীদারদের ভাষায় হাজার হাজার নিহত) স্মরনে পরদিন ১৮ দলের ব্যানারে এক গায়বানা জানাযার আয়োযন করে। সেখানে জানাযার আগে শোকার্ত বিএনপি নেতা সাদেক হোসেন খোকা এক জ্বালাময়ী সংক্ষিপ্ত ভাষন প্রদান করেন। আমাদের আলোচনা বিষয়ক ওনার বক্তব্যঃ “আগামী দিনে একদিন না একদিন হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীদের ঢাকায় এনে, দাবি পূরণ করে হাসিমুখে ফেরত পাঠানো হবে।’” এ কথায় অন্তত কোন অষ্পষ্টতার প্রশ্ন নেই। অত্যন্ত পরিষ্কার কথা, ওনারা ক্ষমতায় আসলে (কারন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় ১৩ দফা মানবে না বলেই দিয়েছে) হেফাজতিদের দাবী দাওয়া নিয়ে ঘেরাও অবরোধ এসব হুজ্জতেরও কোন দরকার পড়বে না, কারন বিএনপি সরকার তাদের স্ব-উদ্যোগে ঢাকায় দাওয়াত করে যাবতীয় সব দাবী পূরন করে ফেরত পাঠাবেন। বেশ, আগেই বলেছি যে হেফাজতের দাবীর প্রতি একাত্মতা প্রকাশের অধিকার যে কারোরই আছে।
শুধু বেশ বিস্ময়কর ব্যাপার হল যে সেই একই দিনে আরেক ডাকসাঁইটে বিএনপি নেতা এম কে আনোয়ার হেফাজতের ১৩ দফা সম্পর্কে প্রশ্ন করা সত্ত্বেও অবস্থান পরিষ্কার করেননি, আবারো পাঁকাল মাছের মতই এড়িয়ে গেছেন।
এরপর মিডিয়ায় ঝড় তোলে হেফাজতের শীর্ষ নেতা আলেমে দ্বীন আল্লামা শফি সাহেবকে কেন্দ্র করে তেতূল তত্ত্ব বিষয়ক বিতর্ক। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপির সেলিব্রিটি এমপি বেগম আশরাফি পাপিয়াও আল্লামা শফি সাহেবের সমর্থনে দেওয়া বক্তব্যে ১৩ দফা সম্পর্কে অনেকটা সাদেক হোসেন খোকার মতই বক্তব্য দেন, মেঠো কথার কথা নয়, খোদ সংসদে দাঁড়িয়ে (সম্ভবত জুন মাসের শেষের কোন দিনে)। এই মাননীয়া সাংসদের মতে আল্লামা শাফি সাহেবরা ১৩ দফা সম্পর্কে প্রেস কনফারেন্সের মাধ্যমে ষ্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা দিয়েছেন এবং সেই ব্যাখ্যায় ষ্পষ্টতই উনি সন্তুষ্ট। ১৩ দফার কোন দফায় উনি বা দলের কোন সমস্যা আছে জানাননি। এ থেকেও আন্দাজ করা যেতে পারে যে ওনারা ক্ষমতায় আসলে হেফাজতের ১৩ দফা বাস্তবায়ন করবেন। বোনাস হিসেবে ওনার বক্তব্য থেকে আমরা আরো জানতে পারি যে শাহবাগে মোমবাতি জ্বালানোর (ভাষান্তরে মংগল প্রদীপ) হেফাজতি ইন্টারপ্রেটেশন; অর্থাৎ পৌত্তলিকতার ভয়াবহ অপরাধ সে বিষয়েও বিএনপি একমত।
এরপর বিএনপির মহাসচির মির্জা ফখরুল অগাষ্টের ২৫ তারিখ ঠাকুরগাঁয়ে এক সভায় আবারো ধোঁয়াশা মার্কা বক্তব্য দেন। ওনার কথা, “BNP Acting Secretary General Mirza Fakrul Islam Alamgir says his party agreed with only a few of Hefazat-e-Islami’s demands. আবারো সেই একই প্রশ্ন এসে যায়, “only a few” বলতে ওনারা ঠিক কোন কোন দাবী মানার কথা বলছেন? আরো বড় প্রশ্ন, কেনই বা বার বার এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে ওনারা এভাবে এড়িয়ে যান? পরিষ্কার জবাব দেন না? ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের পক্ষ থেকে তাদের অবস্থান পরিষ্কার করার আহবান জানানো হয়েছে, এমনকি সরকারী দলের পক্ষ থেকেও তাদের এ ব্যাপারে অবস্থান পরিষ্কার করার আহবান জানানো হয়েছিল, বলাই বাহুল্য কোন লাভ হয়নি। মির্জা সাহেব এখানে আরো মজার কথা বলেছেন। “but we do not agree with their views on women’s rights”. মজার ব্যাপার হল যে ওনার নিজ দলের সেলিব্রিটি এমপি পাপিয়া সংসদে জ্বালাময়ী ভাষায় হেফাজতের দাবীনামায় নারী অধিকার হরনের মিথ্যা অভিযোগ তোলা হয়েছে বলে সরকারী দল এবং মানবাধিকার কর্মী্দের তূলোধূনো করেছেন আমরা আগেই দেখলাম। তাহলে মির্জা সাহেব আবার কোথা থেকে হেফাজতের দাবীনামায় নারী অধিকার পরিপন্থী কিছু খুঁজে পান? পাপিয়া এমপি আশা করি মির্জা সাহেবকেও মিথ্যাচার, হেফাজত বিদ্বেষের কারনে সহসা এক হাত দেখে নেবেন। মির্জা সাহেবের এই বক্তব্যের পর আর বিএনপির কোন উল্লেখযোগ্য নেতার ভাষ্য এখনো আমার চোখে পড়েনি।
এখানে পয়েন্ট হতে পারে যে কারো দাবী প্রকাশের গনতান্ত্রিক অধিকারে সংহতি জানানো গনতান্ত্রিক সংস্কৃতি, তার মানেই এই নয় যে সেসব দাবীতে সংহতি প্রকাশকারীকেও একমত হতে হবে। সে ক্ষেত্রে প্রথমেই স্বাভাবিক প্রশ্ন আসে যে হেফাজতের ঠিক কোন কোন দফা বিএনপি মানে এবং কোনগুলি মানে না? সেটা তারা কেন বারংবার জিজ্ঞাসা সত্ত্বেও বলেন না? কেন তাদের নিজেদের কথাবার্তাই স্ববিরোধী? দ্বিতীয়তঃ, তাদের নেতারা হেফাজতের সমাবেশে উপস্থিত হয়ে কিন্তু কোনদিন বলেন না যে আপনাদের সব দাবী আমরাও সরকারী দলের মতই মানি না, কেবল আপনাদের দাবী পেশ করার অধিকারে সমর্থন জানাই। এমন কোন কথা কি ওনারা বলেছেন? ওনারা সোজা সাপ্টা হেফাজতের মঞ্চে উঠে তাদের দাবীর সাথে সংহতি জানান, যার সরল মানে কেবল মত প্রকাশের স্বাধীনতাই নয়, হেফাজতের সব দাবী দাওয়ার প্রতিই ওনাদের সরাসরি সমর্থন আছে।
সাদেক হোসেন খোকাকে অবশ্য এ ব্যাপারে ধন্যবাদ দিতে হয়, উনি সোজা সাপ্টাই দলের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন। ওনারা ক্ষমতায় গেলে হেফাজতকে ডেকে এনে সব দাবী দাওয়া পূরন করে দেবেন। তার এ বক্তব্যর ৬ মাস পরেও যখন বিএনপি থেকে কোন প্রতিবাদ আসেনি তখন ধরে নেওয়া মোটেই অসমীচিন নয় যে এটাই বিএনপির দলীয় অবস্থান। দৃশ্যটা চিন্তা করতে বেশ ভালই লাগে; হেফাজতের সব দাবী মানা হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে মূর্তির নামে স্থাপিত ভাষ্কর্য সরানোর কাজ চলছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলা ভাংগা হচ্ছে, হাসিমূখে ভাংগার কাজ তদারক করছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা সাদেক হোসেন খোকা, পাশেই আছেন হেফাজত সম্মত শালীন পোষাক পরিহিতা বেগম পাপিয়া এমপি। এক্ষেত্রে নারী পুরুষের এক সাথে বিচরনও নিশ্চয়ই নিশ্চয়ই হেফাজত সম্মত কোন উপায়েই হবে, কারন হেফাজতের সব দাবীই তো মানা হয়েছে।
পাঠকরা আশা করি এরই মধ্যে বুঝে নিয়েছেন হেফাজতের ১৩ দফা বিষয়ে বিএনপির অবস্থান কি। তারা একদিকে হেফাজতকে বোঝাচ্ছেন যে তারা হেফাজতিদের দাবী দাওয়ার ব্যাপারে তারা পূর্ন সহানুভূতিশীল। আরেক দিকে নিজেদের মৌলবাদী শক্তি নয়, আধুনিক ভাবাপন্ন সেটা প্রমান করার জন্য সরাসরি জিজ্ঞাসা করা হলে সব দাবীতে একমত নই, কিছুতে একমত জাতীয় ধোঁয়াশা বক্তব্য দিয়ে এড়িয়ে যাচ্ছেন। আরো মজার হল কোন কোন দাবীতে একমত এবং কোন কোন দাবীতে একমত নন তাও তারা কিছুতেই বলেন না। এ অবস্থান থেকে দুটি সিদ্ধান্তে আসা যায়, এক বিএনপির এই অতি গুরুত্বপূর্ন ১৩ দফা সম্পর্কে কোনই চিন্তাভাবনা নেই, সম্পূর্ন বিভ্রান্তিকর অবস্থায় আছে। নইলে তাদের অবস্থান পুরোপুরি প্রতারনা মূলক; তারা ভোটাদের হেফাজতের ১৩ দফা সম্পর্কে দলীয় অবস্থা সম্পর্কে ভুল ধারনা দিচ্ছেন হেফাজতি আবেগ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যাবহার করার জন্য এবং একই সাথে হেফাজতিদের সাথেও প্রতারনা করছেন (যদি না ১৩ দফার পুরো ব্যাপারটাই আসলে পাতানো খেলা না হয়)। কোনটা সঠিক সেটা তারাই ভাল জানেন। আগেই বলেছি যে ১৩ দফা কিংবা ১৩ দফার কিছু দফায় একমত হওয়া দোষের কিছু নয়, সেটা মৌলিক অধিকার। কিন্তু চরম দায়িত্বহীন অবস্থান কিংবা প্রতারনাপূর্ন দ্বি-মূখী অবস্থান অবশ্যই নিন্দনীয়। নানান সূত্রে জানা যায় যে হেফাজতের ১৩ দফায় সম্মত না হওয়ায় হেফাজত কর্মী সমর্থক বহু লোক আওয়ামী লীগকে শুধু ভোটই দেবে না পন করেছে তাই নয়, তারা সরাসরি স্থানীয় নির্বাচনে আওয়ামী প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজে করেছে। তাদের নিশ্চয়ই জানার অধিকার আছে যে যাদের তারা বিকল্প হিসেবে পছন্দ করছে ১৩ দফা সম্পর্কে তাদের ভাবনা আসলে কি।
এখানে আরো লক্ষ্যনীয় যে হেফাজত প্রথম থেকেই বলে আসছে যে তাদের ১৩ দফার একটি কোনও দফার সাথেও আপোষ তারা কোন ভাবেই মেনে নেবে না। যে দলই ক্ষমতায় থাকুক বা ক্ষমতায় আসতে চায় ১৩ দফার সব দফাই মেনে নিতে হবে। এর সরল মানে হল বিএনপি সামনের বার সরকার গঠন করলে ১৩ দফার সব দফাই মেনে নিতে হবে। বিএনপি তাতে ভোটের আগেই সম্মতি জানালে আপত্তির কিছু নেই। (ততপরবর্তী একটি সম্ভাব্য চিত্র আমরা ওপরে দেখার চেষ্টা করেছি)। আর যদি তারা ১৩ দফার যে কোন একটিও দাবী না মানে (যেটা মনে হয় বাস্তব ভিত্তিক সম্ভাব্য চিত্র) তাহলে আবার নিঃসন্দেহে হেফাজত ঢাকা শহর ঘেরাও, দাবী না মানা পর্যন্ত অবরোধ, সরকার পতনের হুমকি এসব কর্মসূচী চালাতে থাকবে নিজেদের কথার মান রাখতেই। হেফাজতি নেতারা মাননীয় আলেম মানুষ, ওনারা নিশ্চয়ই মোনাফিক নন। কথা দিয়ে কথা রাখেন না বা দুই দলের জন্য দুই নিয়ম এমন নিশ্চয়ই হতে পারে না। যে সরকারই ক্ষমতায় থাকতে চায় ওনারা তাদেরই ১৩ দফার সব দফা মানাতে একই গতিতে তীব্র আন্দোলন চালিয়ে যাবেন এটা হেফাজতের কথাতেই ধরে নেওয়াই যায়। এ মুহুর্তে বিএনপির দ্বি-মূখী অবস্থানের ব্যাপারে হেফাজতের অবস্থান কি সে নিয়েও চিন্তাভাবনা আপাতত স্থগিত থাকুক। আর ১৩ দফার কোন একটি দফা না মানার পরেও যদি হেফাজত যদি বিএনপি সরকারের বিরুদ্ধে একই কায়দায় ব্যাপক আন্দোলন শুরু না করে তাহলে বুঝতে হবে যে ১৩ দফার পেছনে আসলেই কোন ঘটনা আছে, সেটা নিছকই সরল ধর্মীয় দাবী দাওয়া নয়।
আমাদের সংস্কৃতিতে দায় স্বীকার করার তেমন ব্যাপার নেই। দিনে দিনে এই কুপ্রবনতা আরো বাড়ছে। কিছুদিন আগে একজন জাতীয়তাবাদী কোন এক টিভি টকশোতে বংগবন্ধুর পাকিস্তান সফরের সময় তার পাশে রাজাকার শাহ আজিজের ছবি প্রদর্শন করে হাতেনাতে ধরা খেয়ে যান (কথিত শাহ আজিজ আসলে পাকিস্তান সরকারের অফিসার)। ভদ্রলোক এহেন ধরা খাওয়ায় তেমন লজ্জিত হয়েছেন বলে মোটেই মনে হয়নি। আজ এক কথা মিডিয়ায় বলে পরে আবার আমি তেমন কথা বলিনি, মিডিয়াই আমার মুখ দিয়ে বলিয়েছে, হলুদ সাংবাদিকতা, বিকৃত করা হয়েছে…ইত্যাদী নানা বিধ ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলে পুরোপুরি অস্বীকার করা ডালভাত। এ তালিকায় রাজনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবি, এমনকি ধর্মীয় নেতা কেউই কম যান না। হেফাজতের ১৩ দফা সম্পর্কে বিএনপির অবস্থান সম্পর্কে নির্বাচনের আগে অবশ্যই উচিত পরিষ্কার অবস্থান জেনে নেওয়া যাতে ভবিষ্যতে তেমন উকিলী কায়দায় দায় অস্বীকার করা না যায়। তাদের নির্বাচনের আগে অবশ্যই নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করতে হবে; ১৩ দফার ঠিক কোনগুলি তারা নির্বাচিত হয়ে সরকারে এলে কায়েম করবে এবং কোনগুলি তারা মেনে নেবে না বলতে হবে। এমন স্বচ্ছ অবস্থান সাধারন ভোটার, হেফাজত সকলের জন্যই দরকার। হেফাজত ১৩ দফা বাস্তবায়নের দাবীতে আবারো ২৪শে ডিসেম্বর ঢাকায় সমাবেশ করবে বলে ঘোষনা দিয়েছে। আশা করি বিএনপি তার আগেই অবস্থান পরিষ্কার করবে।
হেফাজতের সাথে সাবেক (?) বন ও পরিবেশ মন্ত্রীর সম্পর্ক এবং সাবেক ( ?) স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হেফাজত নিয়ে উক্তি তুলে ধরা প্রয়োজন ছিল। আমি লিংক দিতে পারছি না বলে দুঃখিত।
@গীতা দাস,
ধন্যবাদ পড়ার জন্য।
আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে হেফাজতের সাথে সমঝোতার জন্য চট্টগ্রামের বনমন্ত্রী (উনি নিজে হাটাজারির আল্লামা শফির দরগায় যাতায়াত করেন বলেই মনে হয় কিছুটা ঘনিষ্ঠতা আছে) সহ কয়েক জনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল প্রথম দিকে। কাজ হয়নি সকলেই জানি।
হেফাজতের উত্থান কেন্দ্রিক বিভিন্ন রকম বিশ্লেষন করা যায়। আমার এ লেখায় খুব বেশী দিক যেতে চাইনি, কেবল মাত্র বিএনপি রাজনৈতিক স্বার্থে কিভাবে ১৩ দফা ব্যাবহার করছে রীতিমত প্রতারনা মূলক ভাবে সেটাই দেখাতে চেয়েছি।
@আদিল মাহমুদ, আপনার লেখাটাই শুধু পড়েছি, কারুর মন্তব্য পড়ে দেখিনি। আমার নিজের মনে হয়, বিএনপি ক্ষমতায় আসলে হেফাজত তার ১৩ দফা আর তুলবে না। এটা ছিল শুধু আওয়ামী লীগের জন্য। তাকে বেকায়দায় ফেলার জন্য। এই ১৩ দফা আওয়ামী লীগকে কতটা বেকায়দায় ফেলেছে সেটা তো দেখতেই পেয়েছি। এটা সামাল দিতে গিয়ে মদিনা সনদ পর্যন্ত উঠে এসেছে। বিএনপি ক্ষমতায় আসলে সরকারীভাবে নাইট ক্লাব খোলা হলেও হুজুররা চোখ বন্ধ করে রাখবে। অতীত ইতিহাস আপনি তো জানেন। কাজেই ১৩ দফা রাজনৈতিক ধান্দাবাজী বলেই এখন আমার মনে হচ্ছে। আওয়ামী কোনভাবে এবার ক্ষমতায় আসলে ১৩ দফা ফের নতুন জোশে রাস্তায় নেমে আসবে।
@সুষুপ্ত পাঠক,
আমিও তাতে গনক ঠাকুরের মতই অনেকটাই নিশ্চিত। সে কারনেই চাই যে পরে যেন কোন পক্ষই ধানাই পানাই করে এড়িয়ে যেতে না পারে। বিএনপি যেন বলতে না পারে যে তারা ১৩ দফা মেনে নেবে এমন কোন ওয়াদা করেনি, আর হেফাজতও যেন দাবী করতে না পারে যে বিএনপি যে মেনে নেবে না এমন তারা আগে বুঝতে পারেনি।
হেফাজতি ১৩ দফার মাঝে যারা ইসলামী পূণঃজাগরনের জিগিরে নব উদ্যম খুঁজে পেয়েছেন, লীগ সরকার এসব দাবী মানবে না বলে আচ্ছাসে আওয়ামী লীগকে তূলোধূনো করেছেন তাদের তখনকার অবস্থান কি হতে পারে সেটাও আমার বড় আগ্রহের বিষয়। তারা ইসলাম প্রিয় বিএনপি জামাত সরকারকে কিভাবে মূল্যায়ন করেন জানার ইচ্ছে আমার প্রবল। সাথে সে সময় হেফাজত ঘেরাও অবরোধ এসব কর্মসূচীতে না নামলে কিভাবে তারা হেফাজতিদের ঈমানের মূল্যায়ন করেন তাও হবে কৌতূককর বিষয়। ধর্মের নামে, নবী প্রেম ইসলাম প্রেমের নামে পাতানো আন্দোলন আন্দোলন খেলা এবং প্রতারনা ধর্মসিদ্ধ কিনা তা নিশ্চয়ই তারা সহি সূত্র সমেত আমাদের জানাবেন।
@আদিল মাহমুদ ভাই , এবার অবরোধ নিয়ে কিছু বলেন। শুক্রবার ছাড়া যে আর গতি নাই কোথাও যাবার। সারা সপ্তাহ যুড়েই অবরোধ চলছে। গত সপ্তাহে পুরা ৬ দিন ছিল, এই সপ্তাহেও ৬ দিন, ইনশাল্লাহ আগামী সপ্তাহেও ৬ দিন হবে বলেই মনে হয় :-Y
@দারুচিনি দ্বীপ,
এ নিয়ে আমি কি বলতে পারি রে ভাই? যারা অবরোধ ডাকেন আর সমর্থন করেন তারাই ভাল বলতে পারেন।
আমাদের সময় এরশাদ আমলে আমরা উন্মুখ হয়ে থাকতাম কবে হরতাল ফরতাল এসবের ডাক পড়ে। হরতাল ছুটি দারুন এঞ্জয় করতাম। স্কুল যেতে হত না, সারা দিন খেলা…মুরুব্বীরাও নাম খাওয়াস্তে অফিস গিয়ে কোন্মতে হাজিরা সই করে বাড়ি চলে আসতেন। বোনাস হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার কাছে বাসা হওয়াতে গাড়ি পোড়ানোর লাইভ দৃশ্য, ছাত্র-জনতা বনাম পুলিশের ইঁটাইটি স্বচক্ষে দেখতাম। রাতের বেলা চলত পাড়ার লোকে মিলে বিবিসি এবং ভোয়ার সংবাদ শোনা…সাথে বিটিভির সংবাদের তূলনা করে হাসাহাসি। সে এক দারুন সময় কেটেছে।
কাজেই হতাশ হবার কিছু নেই…উপভোগ করেন। বলাই বাহুল্য সে সময় গাড়ি পোড়ানোর চল থাকলেও জ্যান্ত মানুষ পোড়ানোর মত গনতান্ত্রিক অধিকার হরতালকারীরা প্রয়োগ শুরু করেনি।
@আদিল মাহমুদ,
খুবই ন্যায্য দাবী আপনার। কিন্তু এখানে একটা সমস্যা আছে। ধরেন যে যারা হরতাল অবরোধ ডাকেন তাঁদের জিজ্ঞেস না করতে পারলেও সমর্থকদেরও কিন্তু আমরা জিজ্ঞেস করতে পারি। আমাদের সামনে কিন্তু মুক্ত মনা একজন মহারথী আছেন জিনি এটাকে সমর্থন করেন, আর তিনি হলেন সফিক ভাই।
তাঁর কাছে এগুলো হল যুদ্ধ, ইলেকশন ঠিক করার জন্যে যুদ্ধ। কাজেই এর বিরুদ্ধে প্রশ্ন করতে গেলে হয়ত উনি আবার কোন এক লেখা ধরিয়ে দেবেন পড়ার জন্য ( দেখেন আমাকে দিয়েছেন 🙂 ), আর সাথে কিছু মিষ্টি স্বরে তিতা কথাও শুনিয়ে দিতে ছাড়বেন না। সবচেয়েও বড় কথা হল যে এতে মুজিব কাল্টের ভাইরাসে আক্রান্ত জিলোট খেতাব জুটে যেতে পারে প্রত্যক্ষ ভাবে ( পরোক্ষ ভাবে অবশ্যই পেয়ে গেছি) , সেক্ষেত্রে মনে হয় না সফিক ভাইয়ের বিরুদ্ধে ডিফেন্স করে সুবিধা করতে পারব আমি, কারন জানাশোনা আমার খুব বেশি নেই, খালি নিজের সময়ে ঘটে যাওয়া জিনিস নিয়ে কিছু বলার অপরাধে ছিচকাঁদুনে খেতাব জুটে গেছে । দেখেন
সফিক ভাইয়ের উক্তি
কাজেই ও পথ মাড়াতে ভরসা হয় না, সেক্ষেত্রে আপনারাই ভরসা, যাদের কে সফিক ভাই অন্তত মানুষ বলে মনে করে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন, আমাদের কপালে ওইসব নাই।
প্রথমদিকে উপভোগই করতাম আর এখন বেশি খাওয়া হতে হতে বদ হজম হচ্ছে। বিয়ে বাড়িতে যা হয়। আচ্ছা বাংলাদেশে কি গনতন্ত্রের বিয়েশাদী (?) অথবা শ্রাদ্ধ সংক্রান্ত কোন উৎসব আছে নাকি সামনে?
এইটাই তো সমস্যা রে ভাই। সফিক ভাইকে এইটা বলতে গিয়েই ধরা খেয়েছি, কাজেই মুখ বুঝে আছি, আর এছাড়া আর উপায় কি? মুখ খুললেও মনে হয় না উনি আলাপ করতে রাজী হবেন আমাদের মত অপরিনত বুদ্ধির ছেলে ছোকড়া দের সাথে 😀
কাজেই আদিল ভাই, আমাদের মত অপরিপক্ক ছেলে ছোকড়ারা আপনাদের কাছেই তো আসবে, যেখানে সফিক ভাই আমাদের দিকে ফিরেও তাকান না, আর তাকালেও তাঁর দৃষ্টিতে ঝরে পড়ে……. বুঝে নেন 😉
@দারুচিনি দ্বীপ,
যে এখানে সশরীরে নেই তার সম্পর্কে আলোচনা বাদ দেওয়াই মনে হয় ভাল। তাই না?
সংক্ষেপে শুধু বলি যে গনতন্ত্রে বিশ্বাসী হলে সফিক সাহেবের কথাবার্তা মনোযোগ দিয়ে শুনতেই হবে। ওনার ব্লগার হিসেবে কিছু সীমাবদ্ধতার কারনে সহজে ধৈর্য্যহারা হয়ে যান, অনেক সময় চাঁচাছোলা ভাষায় বেরসিকের মত সরাসরি তীব্র আক্রমনে নামেন…ওনার সাথে কথা বলার মত যোগ্য লোক পান না সরাসরি বলে দেন। এ সমস্যা ছাড়া সফিক সাহেব ব্লগার হিসেবে একজন সম্পদ বলেই আমি মনে করি।
@আদিল মাহমুদ,
হুম সঠিক কথা। 🙂
ও রসুনের গোড়া সব এক জায়গায়।যত কায়দা কসরত কোরেই ছিলার চেষ্টা করেন না কেন…রসুনের গোড়া বলে কথা।
আর এখন বাংলাদেশের খালে বিলে ব্যান/বাইন মাছের আকাল পড়লেও ডাঙ্গায় এদের বাড়বাড়ন্ত।তাও আবার পাকা ব্যান।
ধূর মিয়া! এইটা কী সুশীল লেখা লিখলেন? আপনার বয়স চল্লিশের উপরে। বিএনপিকে জন্মলগ্ন থেকেই দেখছেন। সেই বিএনপির কাছে স্পষ্টতা আশা করেন আপনি। জিয়াউর রহমান নামের এক র্যাম্বো ফ্রিডম ফাইটার স্বাধীনতার ঘোষক, খালি এই একটা ছাড়া আর কোন বিষয়ে আজ পর্যন্ত বিএনপি স্পষ্ট বয়ান দিছে বলেন আপনি? স্পষ্ট বয়ান ছাড়াই যদি রাজনীতি করা যায়, ক্ষমতায় যাওয়া যায়, কে যায় স্পষ্ট কথা বলে বিপদে পড়তে? যতদিন আওয়ামী লীগ আছে, ততদিন বিএনপি টিকে থাকবেই। বিএনপিতো বিএনপি না, এন্টি আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের বিরোধী যারা, তারা অটোমেটিক্যালিই বিএনপিতে ভোট দেবে। এর জন্য বিএনপির স্পষ্ট অবস্থান, আদর্শিক রোমান্টিকতা, এই সব তাদের জানার কোনো প্রয়োজন নেই।
@ফরিদ আহমেদ,
এই ট্রেন্ডের বদল হওয়া দরকার না ফরিদ ভাই?
বিশেষ করে ধর্মপ্রান একটা দল, খোদ ধর্মজনিত ইস্যু নিয়ে কিভাবে প্রতারনা করতে পারে? আর ধার্মিক গ্রুপই বা কিভাবে এই প্রতারনা দেখার পরেও এদের উত্তম মনে করে?
– সেটা ঠিক। সব নির্বাচনেই এন্টি-দল কাজ করে। তবে এবার এই ইস্যু নিয়ে মোল্লা গ্রুপ মাঠে নামবে। তাই এই ইস্যু নিয়ে মোল্লা গ্রুপ যাদের পক্ষে কাজ করবে তাদের অবস্থান মানুষের জানা দরকার।
@আদিল মাহমুদ,
বিএনপি ধর্মপ্রাণ দল? আপনার মাথামুথা গ্যাছে গা মিয়া। ধর্ম নিয়ে প্রতারণাতো সেই জন্মলগ্ন থেকেই করছে এরা। ধর্ম প্রতারণা খেলায় বিএনপি হচ্ছে বাহাদুর নওজোয়ান, ব্রাজিলের নেইমার। আওয়ামী লীগকে মাঠ থেকে সরিয়ে দিয়েছে তারা এই খেলার পাক্কা দান মেরে। আজকে যে আওয়ামী লীগ মাথায় টুপি আর পকেটে তসবীহ নিয়ে ঘোরে, সেটাও কিন্তু বিএনপিরই কারণেই। বিএনপির নীতিই হচ্ছে রাজনীতিতে নীতি বলে কিছু নেই, সবকিছুই প্রতারণা। প্রতারণাতেই মিলায় রাজপাট, নীতিতে বন্ধ কপাট।
@ফরিদ আহমেদ,
এই মোল্লা গ্রুপটা আওয়ামী ভুল রাজনীতির ফসল। প্রগতিশীলদেরকে একটু সাইজে রাখার জন্য আওয়ামী লীগ এদের মাঠে নামিয়েছিল, কিন্তু বোঝে নি যে, এরা আদর্শিক কারণে যতটা না আওয়ামী লীগের কাছাকাছি, তার চেয়ে অনেক বেশি কাছাকাছি বিএনপি জামাতের। হালুয়া-রুটি দিয়ে এদেরকে কাজে লাগাতে চেয়েছিল আওয়ামী লীগ এদের, কিন্তু বিএনপি-জামাতের উস্কানিতে এরা মাংস-রুটি দাবি করে বসে। কিন্তু আওয়ামী লীগ হালুয়ার বেশি দিতে রাজি হয় নি। বরং একরকম ঘাড়ে ধাক্কা দিয়ে অপমানই করেছে তাদের। বাড়িতে ডেকে এনে মেহমানকে অপমান করলে, সেই অপমান বুকে বাজে বহুগুণ। হেফাজতের হয়েছে তাই। এই তীব্র অপমানের প্রতিশোধ তারা নেবে এই ইলেকশনে। তাই জানবাজি রেখে বিএনপির পিছনে এসে দাঁড়িয়েছে তারা। বিএনপি এদের সমর্থন চায়, কিন্তু এদের দ্বারা ভবিষ্যতে নিয়ন্ত্রিত হতে চায় না তারা। সোজা কথায় ভবিষ্যতে যাতে মাথায় উঠতে না পারে। তাই এই ধরি মাছ না ছুঁই ধরণের নানান অস্পষ্ট বক্তব্য। হেফাজতও খুশি থাকলো, ভবিষ্যতের বিপদ থেকেও উদ্ধার পাওয়া গেলো।
@ফরিদ ভাই,
মোটের উপর মারাত্মক বিশ্লেষন। বুলস্ আইকে ঠিকই হিট করতে সক্ষম হয়েছে, আমার মতে।
তবে,
হয়ত চায় না, কিন্তু হতে হবে, আমার মতে। বিনিময়টা বড় অদ্ভুত হবে অদূর ভবিষ্যতে। অনেকটা অস্তিত্ব-বিনিময় ক্ষমতার স্বার্থে। সাম্প্রদায়িকতার জয় রথ একাত্তর ঠেকাবে পারবে না মনে হয়। প্রয়োজন পড়বে নতুন একাত্তরের।
@ফরিদ আহমেদ,
আওয়ামী লীগ ভুল রাজনীতিতে কট এতে কোন সন্দেহ নেই, তবে আমার মতে সেটা কেয়ার টেকার ইস্যুতে বর্তমান অবস্থানগত কারনে।
হেফাজত ইস্যুতে ঘটনা অন্য রকম।
– কিছুটা বিভ্রান্ত হলাম। প্রগতিশীলদেরকে সাইজ করতে আওয়ামী লীগ মাঠে নামিয়েছিল কাকে বলেন? হেফাজতিদের আওয়ামী লীগই আসলে মাঠে নামিয়েছিল? এটা আমার জন্য বড় খবর যদি তাই বোঝান। সূত্র কি? নাকি অন্য কিছু বুঝিয়েছেন?
পরের অংশ সম্পূর্ন একমত। এবং আমার ধারনা এই ব্যাপারটা অনেকেই বোঝে না, অনেকে আবার বুঝলেও সযত্নে চেপে রাখতে চায়। অবাক হয়ে মাঝে মাঝে শুনি ঘোর আওয়ামী সমর্থকদেরও অনেকদের ধারনা যে কওমী ধারার মোল্লা গ্রুপ যেহেতু মওদূদীবাদী জামাত বিরোধী তাই বাই ডিফল্ট এনারা নাকি আওয়ামীপন্থী। হাঁসবো না কাঁদবো ভেবে পাই না। কওমী হোক আর যাইই হোক, প্রান্তিক প্রশ্ন আসলে সব ধরনের মোল্লা গ্রুপ ধর্মনিরপেক্ষ ধারার আওয়ামী লীগ থেকে বিএনপিকেই বেছে নেবে। আর ইসলাম কায়েম জাতীয় ইস্যু উষ্কে দিতে পারলে এরা জামাতের সাথেও অত্যন্ত সাময়িক সময়ের জন্য হলেও ঐক্যবদ্ধ হবে। ‘৭১ এর ইতিহাসও তাই বলে। নৃশংসতায় জামাতীদের কাছে না আসতে পারলেও আদর্শিকভাবে সাধারনভাবে মোল্লা গ্রুপ ছিল স্বাধীনতা বিরোধী। সেই আদর্শ বদলের কোন সম্ভাবনা নেই। তাই আজকের দিনেও এরা ধর্ম ধর্ম করা বিএনপি বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগ বেছে নেবে এমন মনে করার কোন কারন নেই। যুদ্ধপরাধী ইস্যু নিয়েও আমি নিজে কোনদিন আশাবাদী হইনি এ কারনেই। ভাল করেই জানতাম যে এই মোল্লা বাহিনী যুদ্ধপরাধীদের পশ্চাত বাঁচাতে এগিয়ে আসবেই। যেহেতু আমাদের সমাজে এদের ব্যাপক প্রভাব আছে তাই সমূহ গোলযোগের সম্ভাবনা নিশ্চিত। হয়েছেও তাই।
এসব কথা কম বয়সী আবেগময় ব্লগাররা না বুঝলেও লীগের মত পোড় খাওয়া দল বুঝবে না আমার ধারনা ছিল না। আওয়ামী লীগ কিভাবে এদের নিয়ন্ত্রন করে দেখার আগ্রহ্ ছিল। পরে বুঝেছি যে তাদের গ্রাউন্ড ওয়ার্ক বলতে কিছুই ছিল না। হেফাজতের কাছে নাকাল হওয়া আসলে আমি সামগ্রিভাবে লীগের দোষ দেব না, ধর্মানুভূতির জিগির যেভাবে দেশে উপচে পড়ছে তাতে এটাকে অবশ্যম্ভাবীই বলব। লীগ আশা করেছিল হাটাজারির দরগায় নিয়মিত তশরিক রাখা তাদের কিছু নেতা পাতি নেতার সাহায্যে হেফাজত ম্যানেজ করে ফেলবে। বোকার স্বর্গে থাকা যাকে বলে, এই আশায় প্রথম দিকে শক্ত অবস্থানে যায়নি। যখন আসল ঘটনা বুঝেছে তখন অনেক দেরী হয়ে গেছে।
– অবশ্যই তাই। সম্ভবত উভয়েই ভাবছে যে আমরা অপরকে সফলভাবে ব্যাবহার করতে পারছি। বিএনপি হেফাজত লেলিয়ে মেঠো আন্দোলন, ইসলাম বিদ্বেষী জিগির তুলে ভোটার ভোলানো পাবে, আর হেফাজত বিএনপির ঘাঁড়ে ভর করে ইসলাম কায়েমের পথে কয়েক ধাপ এগিয়ে যাবে। বিএনপির ধারনা সোজা সরল মোল্লাদের ক্ষমতায় আসলে মাথায় হাত বুলিয়ে, কিছু রাস্তাঘাটের নাম আরবী করে, দেশের সংবিধান নামে কিছু ইসলামী শব্দ ঢুকিয়েই তাদের বুঝ দিতে পারবে। তারাও ১৩ দফা ফফা ভুলে খুশী হয়ে নিজ নিজ আবাসস্থলে ঢুকে যাবে। সেটা হতে পারে, কিন্তু হেফাজতের যেই মাসল পাওয়ার এবার দেখা গেল তাতে বোঝা যায় যে ভবিষ্যতে এরা বার বারই এভাবে রংগমঞ্চে আসবে এবং কৃত্রিম ইস্যু নিয়ে জল দূষিত করতে থাকবে।
@আদিল মাহমুদ,
হু, বিভ্রান্ত হবারই কথা। আমি তারিককে একই বিষয়ে একটা উত্তর দিয়েছি। ওটা একটু কষ্ট করে দেখে নিয়েন প্লিজ। আপনার জন্যও প্রযোজ্য ওটি।
@ফরিদ ভাই,
গনজাগরন মঞ্চ চট্টগ্রামে সমাবেশের ঘোষনা দেওয়ার পর হেফাজত ম্যাৎকার দিয়ে প্রতিবাদ জানায়, তখন আওয়ামী লীগের প্রথম সারির কয়েকজন নেতা হেফাজত দলে টানতে চট্টগ্রামে যায় । কিন্তু জামাতের পৃষ্ঠপোষকতায় লালিত-পালিত হেফাজত আওয়ামী লীগের কোন কথা/চুক্তি মানতে চায় না, কারন জামাত/যুদ্ধাপরাধীদের থেকে খাওয়া টাকা তারা হালাল করতে চেয়ে ছিল। অন্যদিকে বিএনপিও জামাত/যুদ্ধাপরাধীদের কে বাচাঁতে ও আন্দোলন করে সরকারকে হটাতে চাচ্ছিল আর ইসলামের মোড়কে আন্দোলনেও তাদের কোন সমস্যা নাই ! তাই সুযোগসন্ধানী বিএনপি যায় শফির দরবারে আর তাদের আৰ্জি পেশ করে যার ফলশ্রুতিতে তৈরি হয় হেফাজতের সাথে বিএনপি’র সেই ঐতিহাসিক বন্ধুত্ব !!
এতটুকুই আমি জানি এর বাহিরে “আওয়ামী লীগ এদের মাঠে নামিয়েছিল” এই বিষয়ে কোন তথ্য আপনার কাছে আছে ?
সহমত।
@তারিক,
গতকাল খুব তাড়াহুড়োর মধ্যে মন্তব্য করেছি। সেই সাথে অনেকদিন ধরেই আওয়ামী লীগের উপর নানা কারণে ক্ষোভ জমে আছে। তার ফলশ্রুতিতেই এই ভুল বক্তব্য আমার। আমি আমার এই বক্তব্য প্রত্যাহার করে নিচ্ছি। নাহ, আওয়ামী লিগ হেফাজতকে মাঠে নামায় নি। তবে, হেফাজত যখন ৬ এপ্রিল শাহবাগের বিরুদ্ধে লং মার্চের ডাক দেয়, সেটিকে হুমকি হিসাবেও আওয়ামী লীগ নেয় নি। কারণ, আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের বন্ধু হচ্ছে কওমি মাদ্রাসার লোকজনেরা। এরাই মূলত হেফাজত তৈরি করেছে। শুধু একটা জায়গাতেই আওয়ামী লীগের উৎকণ্ঠা দেখা গিয়েছিল তখন। তা হচ্ছে বাহ্যিক সদৃশ্যতার সুযোগ নিয়ে এখানে জামাত শিবিরের অনুপ্রবেশ ঘটতে পারে। ৬ এপ্রিলের লং মার্চ যে বন্ধুত্বপূর্ণ আন্দোলন ছিল, তা একটু পরেই বিস্তারিতভাবে দেখাবো আমি।
বিএনপি-জামাতের সাথে টাকার এই বন্ধুত্বটা শুরু হয়েছে আরো পরে। ৬ এপ্রিলের আগ পর্যন্ত হেফাজতের বিনিময় মূল্য খুব বেশি ছিল না। ওই দিনের শাপলা চত্বরের বিশাল সমাবেশের আগে হেফাজতের নিজেরও নিজের শক্তি সম্পর্কে ধারণা ছিল না। শুধু অন্যেরা নয়, হেফাজতিরাও চমকে গিয়েছিল তাদের সম্মিলিত শক্তির বিশালত্ব দেখে।
আমি আগেই উল্লেখ করেছি যে, কওমি মাদ্রাসাগুলো সবসময়ই আওয়ামী লীগের বন্ধু হিসাবে থেকেছে। এরা মৌলবাদী, এতে কোনো দ্বিধা নেই, কিন্তু জামাত শিবিরের মত আক্রমণাত্মক এবং ক্ষমতালোলুপ এরা নয়। বরং, ঐতিহ্যগতভাবে এরা মওদুদীবাদের বিরুদ্ধে। ফলে এদের অবস্থান সবসময়ই জামাত-শিবিরের বিপক্ষে। যারা শাহবাগকে প্রতিদিন অনুসরণ করেছেন, তারা জানেন যে শাহবাগের আন্দোলনে উদ্দীপ্ত হয়ে মাদ্রাসার ছাত্ররাও রাস্তায় নেমে এসেছিল যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে। আমি নব্বই এর দশকের শেষের দিকে ঢাকার নায়েমে শিক্ষা বিষয়ক একটা দুই সপ্তাহের আবাসিক ট্রেনিং এ অংশ নিয়েছি। ওই ট্রেনিং এ বেশ কয়েকজন কওমি মাদ্রাসার প্রিন্সিপ্যালও ছিলেন। উনাদের চেয়ে বয়সে অনেক ছোট হবার পরেও দারুণ বন্ধুত্ব হয়ে যায় আমার তাঁদের সাথে। খুব কাছে থেকে মেশার কারণে উনাদের রাজনৈতিক চিন্তা-চেতনার একটা ধারণা পেয়ে যাই আমি সেই সময়। সেই অভিজ্ঞতার ফলে খুব প্রত্যয়ের সাথেই বলতে পারি যে, তাঁদের কাউকেই আমি জামাতের প্রতি সামান্যতমও কোমল মনোভাব পোষণ করতে দেখি নি।
হেফাজতের লং মার্চের মাত্র দুদিন আগে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে বসেন কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক শীর্ষস্থানীয় আলেম-ওলামারা। তাঁরা জামাত নিষিদ্ধের জন্য প্রধানমন্ত্রির কাছে দাবি জানান। শেখ হাসিনা তাঁদের জানান যে, উচ্চ আদালতে রিট মামলা থাকার কারণে জামায়াত নিষিদ্ধ এখনই সম্ভব নয়।
লং মার্চে কোনো অঘটন ঘটে যেন তাঁরা এবং সরকার মুখোমুখি দাঁড় না হয় সেজন্যও তাঁদের দুশ্চিন্তা দেখা যায় তখনই। এমদাদুল্লাহ কাসেমি বলেন, লক্ষ রাখতে হবে, লংমার্চে যাতে কোন দুষ্কৃতকারী ঢুকে আলেম সমাজকে সরকার ও জনগণের মুখোমুখি দাঁড় না করায়।
বাংলাদেশের যে কোনো প্রগতিশীল আন্দোলনের, যে কোনো মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকেন্দ্রিক কর্মকাণ্ডের অটোমেটিক বেনেফিসিয়ারি আওয়ামী লীগ। শাহবাগের আন্দোলন শুরু হয়েছিল সরকার বিরোধী প্রতিবাদ থেকে। অথচ, বিরোধী দল বিএনপি নয়, বরং এর সুফল ঘরে উঠতে থাকে আওয়ামী লীগের। বিএনপিও এটা জানে। সে কারণে শাহবাগ নিয়ে দোদুল্যমনতায় ভুগেছে সে সারাক্ষণ। একদিন সমর্থন করেতো, পরের দিন সমর্থন করে না। একদিন বলে সাথে আছি, অন্যদিন বলে এরা নাস্তিক। অন্যদিকে, আওয়ামী লীগ ঠিকই বুঝে ফেলে তার সুবিধাটা। ফলে, এখানে আসার জন্য আওয়ামী নেতাদের শুরু হয় তোড়জোড়। এমন কি শেখ হাসিনা পর্যন্ত সংসদে বলেন যে, আমার মন পড়ে আছে শাহবাগে।
শাহবাগ নিয়ে আওয়ামী লীগের এই প্রেম ভালবাসায় ভাটা পড়লো তাহলে কখন? সাদামাঠা চোখে আমার কাছে, শাহবাগ দীর্ঘায়িত হওয়াটা। দীর্ঘায়িত হবার কারণে এর আবেদন ও তাৎপর্য হারিয়েছে এক পর্যায়ে গিয়ে। একটা কারণ হচ্ছে, সরকার প্রাথমিক সুবিধা আদায় করার পরে আর এটার কোনো প্রয়োজনীয়তা দেখে নি। দ্বিতীয় কারণ হচ্ছে, শাহবাগের কিছু নেতার ঔদ্ধত্য। যে সব নাবালকেরা জীবনে কোনোদিন কোথাও পাত্তা পায় নি, তারাই হঠাৎ করে স্বতস্ফূর্ত এক বিশাল জন অরণ্যের নেতা বনে গিয়ে মাথা ঠিক রাখতে পারে নি। আমি টেলিভিশনে ইমরান, আরিফ, পিয়ালদের উদ্ধত আচরণ দেখেছি। এই ঔদ্ধত্য ক্ষমতাসীন পোড় খাওয়া রাজনীতিবিদদের একেবারেই পছন্দ হয় নি। কাজেই তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে এটিকে বন্ধ করার।
এটা টের পাওয়া যায় এপ্রিলের শুরুতেই। মার্চের একত্রিশ তারিখে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের এক সভা হয় শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে। সেখানে এই মঞ্চ গুটিয়ে ফেলার পরামর্শ দেওয়া হয়। প্রথম আলোর ২ এপ্রিল সংখ্যা থেকে।
শাহবাগের বিরুদ্ধে হেফাজত যখন লং মার্চের ঘোষণা দেয়, তখন সরকার দফায় দফায় আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেয়। খুবই ভালো উদ্যোগ বলা চলে। কিন্তু, সমস্যা বাধে অন্য জায়গায়। সরকার হেফাজতের বেশ কিছু দাবি নীতিগতভাবে মেনে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এই দাবিগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চসহ ইসলামবিরোধী ব্লগ বন্ধ এবং তদন্ত সাপেক্ষে ধর্ম অবমাননাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টিও বিবেচনায় নেয়। আর এর পরিপ্রেক্ষিতে চারজন নাস্তিক(!) ব্লগারকে গ্রেফতার করে সরকার। তারপরেও হেফাজত বুঝ দিতে অক্ষম হয় সরকার। ফলে, তারা যাতে শান্তিপুর্ণভাবে সমাবেশ করতে পারে, তার জন্য যথাযথ ব্যবস্থাই নেয় তারা। মনের সুখেই হেফাজতিরা ঢাকায় এসে ভিড় করে শাহবাগের নাস্তিকদের খেদানোর জন্য। এ পর্যন্তও হেফাজতের কারো মুখেই সরকারের বিরুদ্ধে কোনো সমালোচনা হয় নি। বিএনপি অনেক টোপ ফেলেছিল হেফাজতের জন্য। কিন্তু সেগুলোকে তারা সযত্নে সরিয়ে রাখে একপাশে। ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যানকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন যে, ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে হেফাজতের অবস্থান। সেই অনুযায়ী তারা কর্মসূচি দিয়েছেন। রাজনৈতিক কোনো বিষয় সেখানে নেই। এ বিষয়টা আরো বোঝা যায় সমাবেশের সময়ে। সমাবেশ চলাকালীন সময়ে দিগন্ত টিভি সহ আরো দুই একটি টিভি চ্যানেল বন্ধ করে দেয় সরকার। এতে হেফাজতিরা উত্তেজিত হয়ে সরকারবিরোধী শ্লোগান দিতে শুরু করলে নেতারা দ্রুত সেই পরিস্থিতি সামাল দেন।
পরের দিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও হেফাজতকে ধন্যবাদ দিতে ভুল করেন না। সেই সাথে তাদের দাবিগুলোকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করবেন বলে জানান।
আমার দীর্ঘ বক্তব্যের সারসংক্ষেপ হচ্ছে যে, সরটুকু খাওয়া শেষ হয়ে যাবার পরে শাহবাগ একটা সময়ে সরকারের জন্য স্বাদবিহীন পানসে দুধে পরিণত হয়ে গিয়েছিল। একে ছুড়ে ফেলে দেবার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল সরকার। ঠিক সেই সুবর্ণ সময়ে রঙ্গমঞ্চে আবির্ভাব ঘটে হেফাজতের। শাহবাগকে সৎ ছেলে ঘোষণা করে, হেফাজতকে আপন ছেলে হিসাবে বুকে টেনে নেয় সরকার। বাৎসল্য রসে ব্যাকুল সরকার আদর সোহাগে রাজ্যের উদ্ভট দাবিদাওয়া যতখানি সম্ভব মেনে নিতে শুরু করে। তারপরেও লং মার্চের সিদ্ধান্ত থেকে সরাতে ব্যর্থ হয় তাদের। শেষে তারা যাতে নিরাপদে এবং নিশ্চিন্তে তাদের কর্মসূচী সফল করতে পারে তার জন্য সব ধরণের সহযোগিতা শুরু করে সরকার। ভাবখানা এমন যে, ঘরের ছেলে একটু গোস্যা করেছে, এতে আর সমস্যা কী? এই সুযোগে শাহবাগের অবাধ্য ছেলেগুলোকেও একটু শায়েস্তা করা গেলো। শাপলা চত্বরে হেফাজতের বিশাল সমাবেশ, সরকারি আদর বঞ্চিত শাহবাগের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেয়। কিন্তু, একটা জিনিস আওয়ামী লীগ মাথায় আনে নি তখন। বিভীষণের জন্ম কিন্তু নিজের ঘরেই হয়। হেফাজতের এই বিশাল শক্তির অভূতপূর্ব প্রদর্শনী রাজনীতির সব হিসাব নিকাশ, শত্রু-মিত্র সম্পর্ক, বিশ্বাস-অবিশ্বাসকে দুমড়ে মুচড়ে দেয়। লোভ-লালসা, কামনা-বাসনাগুলো ফণা তোলে হিংস্র কেউটে সাপের মতো। আর সেই কেউটের ছোবলের বিষেই এখন জর্জরিত আমরা সবাই।
ছোট্ট একটা জিজ্ঞাসা সকলের কাছে। কেউ কি জানেন এপ্রিলের ৬ তারিখের লং মার্চে শাপলা চত্বরে আলাম্মা শফি হাটহাজারি থেকে কীভাবে এসেছিলেন? আমি হালকা পাতলা একটু জানি। কিন্তু বলা যাবে না। কারণ, আমার কাছে কোনো প্রমাণ নেই। এই প্রশ্নের উত্তর জানলেই বহু অমিমাংসিত সমীকরণের সমাধান হয়ে যায় বলেই আমার বিশ্বাস।
@ফরিদ আহমেদ,
ইন্টারেষ্টিং তত্ত্ব। পরে বিস্তারিত মন্তব্য করব।
– যতটা মনে পড়ে আওয়ামী পরিবারের একজন বন্ধু কাম বর্তমান দিনে শেয়ার বাজার কেলেংকারি মানেই বাই ডিফল্ট নাম আসে এমন একজনের সৌজন্যে বিমানে।
ইন জেনারেল এটা বোঝা যায় যে এপ্রিলের লং মার্চ সরকার একেবারেই হুমকি হিসেবে নেয়নি, আগেই বলেছি। কারন আমি যতটা বুঝি তখনো সরকার নিশ্চিন্ত ছিল যে আলোচনার মাধ্যমে কিছু দাবী মেনে নেবার ছলে এদের বুঝ মানানো যাবে। তার অংশ ছিল ৪ জন নাস্তিক গ্রেফতার করে পাবলিক ডিসপ্লে। এমনকি প্রধানমন্ত্রী ব্লাসফেমি আইনের ব্যাপারেও বিবেচনার কথা বলেছিলেন মনে পড়ে। যদিও হিসেবটা পুরো ভুল ছিল। আমি ভেতরের খবর যতটা জানি তাতে শুনেছি যে লেনদেন এপ্রিলের লং মার্চের আগেই হয়, অন্তত চট্টগ্রামে যখন শাগবাগিরা সমাবেশ করতে গিয়ে ব্যার্থ হয় তার আগ থেকে। সরকার এই লেনদেনের নিশ্চিত খবর পায় বহু পরে, তখনই বুঝে যে এদের সাথে আপোষ মীমাংসার পথ নেই, চলে যায় হার্ড লাইনে, সাফ বলে দেয় একটি দাবীও মানা যায় না। সরকারের এই অবস্থান পরিবর্তন অনেকটাই ১৮০ ডিগ্রী ঘোরার মত। হেফাজতিরাও সরকারের এই মনোভাব টের পেয়ে মে মাসের অবরোধ সরকার পতনের আন্দোলনে পরিনত করার টার্গেট করে। বাকি টুকু সকলেরই জানা।
১৩ দফার অধিকাংশ দাবী দাওয়া পড়লেই বোঝা যায় এগুলি ঠিক কোথা থেকে এসেছে। আরো লক্ষ্য করার মত যে কিছু দাবী এমনই যে মানা না মানায় কিছু যায় আসে না। যেমন অবাধ মেলামেশা বন্ধ করা বলতে কি বোঝায় তার কোন ধরাবাধা গাইড লাইন থাকা সম্ভব? অর্থাৎ যেসব উর্বর মস্তিষ্ক এসব দাবী দাওয়ার ফর্দ করে হেফাজতিদের হাতে ধরিয়েছে তারাও চেয়েছে যে দাবী দাওয়া যেন পূরন করা না হয়, সে জন্য পূরন করা যায় না ধরনের দাবী দাওয়াই বানানো হয়েছে বেশী। পূরন করা সম্ভব এমন দাবী যেমন ব্লাসফেমি আইন, মূর্তি ভাংগা এসব আওয়ামী লীগ কেন বিএনপি জামাতও কোনদিন ক্ষমতায় এলে করবে না। দাবীও পূরন হবে না, তার মানে হল মেঠো আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে, বন্ধ করার পথ নেই। নিজেরা মাঠে না নেমেও এভাবে চমতকার ভাবে ধর্মীয় আবেগ পূঁজি করে অরাজনৈতিক ছদ্মবেশে সরকারকে চাপে রাখার চমতকার এক বন্দোবস্ত।
@ফরিদ ভাই,
নতুন কিছু জানলাম। ধন্যবাদ। :guru:
ঐ বৈঠকে যারা অংশ নিয়েছিল তারা হল কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক কয়েকটি সংগঠন আর আমার জানামতে, তারা হেফাজতের ৬ই এপ্রিলের লংমাৰ্চ / মিটিং অংশ নেয়নি।
কওমী মাদ্রাসার বিশাল অংশের আলেম-ওলামাদের সাথে আওয়ামীলীগের বন্ধুত্ব অনেক পুরানো, যারা মূলত হেফাজত ঘরানার হওয়া সত্বেও হেফাজতের ঐ সমাবেশে তারা অংশ নেয় নি(এবং ১৩ দফার সাথেও একমত না)। হেফাজতের শীৰ্ষস্থানীয় নেতাদের কয়েকজন জামাতের রাজনীতির সাথে পূৰ্বে জড়িত ছিল এটাও সবাই জানে।
মূলকথা হল আওয়ামীলীগ তার বন্ধু আলেম-ওলামাদের সাহায্যে হেফাজতকে কন্ট্রোল করার চেষ্ঠা করে, কিন্তু ব্যাৰ্থ হয় !
আদিল ভাই যা বলেছেন সেটাই আমি জানি ! 😕
@তারিক,
বেহেশতি বাহন বোরাক ছাড়া অন্য কিছুতে চড়ে আকাশ ভ্রমণ জায়েজ কি না, এ বিষয়ে তুলতুলে তেঁতুল বিশেষজ্ঞ শফি সাহেবের একটা মতামত নিতে পারলে মন্দ হতো না। 🙂
@ফরিদ আহমেদ,
ভাল বলেছেন। :-s
কিন্তু, মতামত নিতে যাবে কে ? সবার ঘাড়ে তো একটাই মাথা …. ;-(
শফি সাহেবের মত মানুষেরা সারা জীবনে কিছু পায় নাই; শেষ বয়সে একটু মৌজ-ফুৰ্তি করতে চায়, করুক সমস্যা নাই । :-$
খুব ভালো । একমত !
আমার এবং আদিলের মধ্যে এই লেখা নিয়ে ফেসবুকের আলোচনা—
Shafiqur Rahman আগে তো ইলেকশন মেকানিজম ঠিক হোক, তার পরে দেখা যাবে বিএনপি’র অবস্থান কি ১৩ দফা নিয়ে। এখনো তো ইলেকশনেরই ঠিক হয় নি। যুদ্ধ চলছে ইলেকশন ঠিক করার জন্যে। হেফাজত এই যুদ্ধের এক অত্যাবশকীয় ফুট সোলজার। বাকশালী আওয়ামী দূর্গের দেয়াল ভাংতে হেফাজতের “Barbarian Hordes” এর উপর অবলম্বন ছাড়া উপায় কি?
Shafiqur Rahman BNP election manifesto will make it clear. I doubt Hefazot’s 13 point will have prominent place in the election manifesto.
Suhag Das Partho বিএনপি কোন কিছুই ক্লীয়ার করবে না নির্বাচনের পূর্ব পর্যন্ত বরং তারা প্ল্যনা করবে কিভাবে আবার হেফাজতকে দিয়ে ঢাকার একটা অবরোধ করা যায়।
Adil Mahmood BNP election manifesto will make it clear. I doubt Hefazot’s 13 point will have prominent place in the election manifesto. – সেটা হবে পাবলিক এবং হেফাজত উভয়ের সাথেই প্রতারনা। সেই পথেই তারা যাচ্ছে প্রথম থেকেই। এর শেষ দরকার। তাদের থেকে অবশ্যই শোনা দরকার আসলেই তাদের অবস্থান কি। হেফাজতি ইস্যু কোন তুচ্ছ ইস্যু নয়।
Shafiqur Rahman প্রতারনা! You are talking about প্রতারনা of Bangladesh political parties! Did you just came back from a 20 year trip to Mars? Just look at the first line of the Vision 2021 statement of Awami league published in December 2008. They of course later scrubbed it vigorously.
The vision 2021 of Bangladesh Awami League
Here are full text of AL’s election manifesto unveiled today. Also see AL’s ‘Vision 2021’ for Bangladesh.
Bangladesh as we want to see in 2021
1. Caretaker Government, Democracy & Effective Parliament*Democracy and strong democratic institutions will be established for holding reliable election at regular intervals, accountability of government and effective Parliament. All necessary steps will be taken for making Parliament effective. http://bdfact.blogspot.com/…/vision-2021-of-bangladesh…
bdfact: The vision 2021 of Bangladesh Awami League
bdfact.blogspot.com
http://bdfact.blogspot.com/2008/12/vision-2021-of-bangladesh-awami-league.html
Adil Mahmood আওয়ামী লীগের ডার্ট দিয়ে বিএনপির ডার্ট হালাল করা সহি বলতে হবে সফিক? তাহলে আসুন সকলে এসব আলাপ আলোচনা বাদ দেই। আমার মনে হয় রিটোরিক প্রশ্ন বাদ রেখে বিষয় স্পেসিফিক আলোচনাই মংগল।
Shafiqur Rahman Adil Mahmood, really these discussions are pointless. The only things that matters are happening in the streets. I don’t know why people still talk about ideals, programs etc. THIS IS WAR. THIS IS NAKED WAR FOR POWER. This has been a ongoing war for two decades now and with every cycle the war gets hotter. Who cares about morality in the time of war? Every sane person know that BNP was utterly cynical in using Hefazot since April-May. Did BNP lose anything by its cynical war tactics? AL started this cycle of violence when it canceled CTG in 2011. Did it not think that it can defend the Fortress AL government against an enfeebled BNP and shackled Jamaat? What is the use of talking”its not cricket” in a time of war?
Adil Mahmood হ্যা, বর্তমানের ক্যাঁচালের শুরু কেয়ার টেকার বাতিল নিয়ে। আমাদের আলোচনা সেখানে না। হেফাজতের উত্থানের পেছনে কেয়ার টেকার যতটা না ইস্যু, যুদ্ধপরাধীদের বিচার বাতিলের পাঁয়তারা তার চাইতে বড় ইস্যু। আমার তো মনে হয় কেয়াত টেকার বাতিল করে লীগ ক্ষমতায় থাকার পাঁয়তারা করছে যুদ্ধপরাধী বিচার সম্পূর্ন করার জন্যই। বিএনপি রাজাকারদের ছাতা ধরা বাদ দিলেই লীগ আর এই পথে যেতে বাধ্য হত না। এই তত্ত্ব কেমন লাগে? ভাল না লাগলে বলব যে আজকে দেশে কেয়ার টেকার থাকলেও সেটা নিয়েও বিএনপি-জামাত ক্যাঁচাল করেই যেত। বিশেষ করে যুদ্ধপরাধীদের বিচার যেখানে চলছে।
Adil Mahmood দেশে গনতন্ত্রের আর সম্ভাবনা নাই এতে আমি নিশ্চিত, এখন চলতেছে গনতন্ত্রের গায়েবানা জানাযা পড়া। এরপর কিছদিন হয়ত গনতন্ত্রের মৃতদেহ নিয়ে নর্দন কুর্দন চলবে।
Shafiqur Rahman Awami League started dismantling CTG in 2010. Ofcourse BNP still would have made some ক্যাঁচাল even if the CTG were in place but that would not have gained worldwide or Bangladeshi support. As it is, only India and AL supporters are at one side vs the rest of the people. AL probably would be ahead of BNP or at least very competitive if CTG were in place. CTG is the only issue, who the hell cares for war crimes trial? Do you think a typical BNP leader cares if 5-6 old guys hang or not? If BNP gets into power it will have open access to hundreds of thousands of crore just as AL is enjoying now. If you ask any BNP leader that do you want 100 crore Taka and hanging of 5-6 old guys or do you want no money and no trial, what do you think their response is going to be?
@সফিক,
আমার এবং আপনার এসব আলোচনা আসলে মূল বিষয়ের গন্ডির বাইরে। আপনি বার বারই এই আলোচনায় কেয়ার টেকার ইস্যু, কে কত বড় অগনতান্ত্রিক এসব নিয়ে আসছেন। ব্যাপারটা একটু বিরক্তিকর। আমি আগেই স্বীকার করেছি যে কেয়ার টেকার ইস্যু নিয়ে বাড়াবাড়ি আওয়ামী লীগের ভুল হয়েছে, শুধু ভুল নয়, বড় ধরনের রাজনৈতিক ভুল হয়েছে যার মূল্য বড়ভাবেই দল এবং দেশকে দিতে হবে।
শুধু যেটা মানতে পারছি না তা হল আওয়ামী লীগ কেয়ার টেকার নিয়ে ঝামেলা করেছে তার মানেই বিএনপি যাবতীয় যুদ্ধপরাধীদের প্রকাশ্য গডফাদার হিসেবে আবির্ভূত হবে (যদিও এই ইস্যুর সাথে কেয়ার টেকারের সম্পর্ক নেই), হেফাজতের ১৩ দফা নিয়ে প্রতারনাপূর্ন অবস্থানে থাকবে……।।সবচেয়ে ভয়ংকর কথা রাস্তাঘাটে জ্যান্ত মানূষ পুড়িয়ে কাবাব বানাবে এবং সেসবই কেয়ার টেকার ইস্যুতে আওয়ামী লীগের দায় দিয়ে হালাল করা যাবে।
আমি কেয়ার টেকার ইস্যুতে আপনার কথা মানতে রাজী আছি। আপনি আলোচনা লেখার বিষয়বস্তুতে সীমাবদ্ধ রাখলে সুবিধে হয়। কালোকে কালো সাদাকে সাদা বলার ক্ষমতা আপনার অন্তত আছে বলে আমি জানি।
আর কেয়ার টেকার……২০১০…এসব থেকে শুরু করলে বলতে হয় যে এটা এন্ডলেস ডিবেট। এখন কেউ যদি দাবী করে যে আওয়ামী লীগ আসলে কেয়ার টেকারে যেতে পারছে না বিএনপি ক্ষমতায় এলে যুদ্ধপরাধীদের বিচার করবে না বলে (যে সম্ভাবনা অতি বাস্তব) কাজেই কেয়ার টেকার বিষয়ে আজকের আওয়ামী লীগের অবস্থানের জন্য মূলত বিএনপিই দায়ী তাকেই বা আমি কি বলি? আপনার কাছে হয়ত যুদ্ধপরাধীদের বিচারের গুরুত্ব নেই, তাদের ছেড়ে দিলেও কিছু মনে করবেন না তেমনি অপর কারো কাছে হয়ত কেয়ার টেকারের গুরুত্ব নেই, যুদ্ধপরাধীদের বিচারই বড়। এই দলের লোকে সিচুয়েশন সেভাবেই মূল্যায়ন করবে।
আপনাকে আগেও প্রশ্ন করেছিলাম। আগেই মেনেছি যে আওয়ামী লীগ কেয়ার টেকার ইস্যু নিয়ে গোয়ার্তূমি করে বড় ভুল করেছে। আপনার সমালোচনা সেক্ষেত্রে যথার্থ। এটা বার বার স্বীকার করা সত্বেও আপনি এই লেখার মূল বক্তব্য পাশ কাটিয়ে সেই কেয়ার টেকারেই কেবল চলে যাচ্ছেন। সকলেই প্রতারক, সকলেই অগতান্ত্রিক এমন সাবজেক্টিভ আর্গুমেন্টে গিয়ে মূল আলোচনার কোনই গুরুত্ব দিচ্ছেন না। কেয়ার টেকার নিয়ে ফাউ ত্যাঁনা প্যাঁচালে বহু ত্যাঁনা প্যাঁচানো যায়। কেয়ার টেকারও যে কঙ্ক্রীট কিছু নয়, এটাকেও যে সফল ভাবে ম্যানিপুলেট করে জালিয়াতির ব্যাবস্থা করা যায় সেটা প্রথম দেখিয়ে গেছে আপনার চোখে অপেক্ষাকৃত গনতান্ত্রিক দল বিএনপি গত টার্মে, তার পথ ধরে ২ বছরের ওপর দেশ চলেছে বায়বীয় সরকার ব্যাবস্থায়। সেটা অস্বীকার করতে পারেন? সে উদাহরন মাথায় রেখে কেউ যদি লীগ সরকারের বর্তমানের কেয়ার টেকারের বিকল্প সর্বদলীয় সরকার পরীক্ষা করতে চায় তবে আমি তাকে গাল দেব ঠিক কোন ভিত্তিতে? তাহলে কি কেয়ার টেকার বদল করে আপনার ভাষায় আওয়ামী লীগ যে অপরাধ করেছে তার দায় আসলে আপনার লাইনে চিন্তা করলে বিএনপির ঘাড়েই যাওয়া উচিত নয়? যুদ্ধপরাধীদের সমর্থন, হেফাজতিদের দফা নিয়ে প্রতারনা এসবই যদি কেয়ার টেকার ইস্যুর কারনে হালাল হয় তবে খোদ কেয়ার টেকার ইস্যু পরিবর্তনের দায় বিএনপির ওপরেই কোন যুক্তিতে যায় না?
বিএনপির যুদ্ধপরাধী ইস্যু নিয়ে অবস্থান আপনি কিভাবে মূল্যায়ন করেন? আপনার কি মনে হয় না যে আওয়ামী লীগের এখনো যেই অবস্থান আছে তার পেছনে এই ইস্যু কাজ করছে?
আপনি আওয়ামী লীগের সমালোচনা করছেন কেয়ার টেকার ইস্যুতে, ভাল কথা। যুদ্ধপরাধী ইস্যু নিয়ে কেন বিএনপির সমালোচনা সেভাবে করেন না (অন্তত আমি দেখি না)?
অতীত অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি যে এই ইস্যু উঠে আসলে আপনি ইতিহাস থেকে আওয়ামী লীগ কত বড় ফ্যাসিষ্ট দল থেকে শুরু করে কেয়ার টেকার নিয়ে তাদের বর্তমান গোয়ার্তূমিতে চলে আসেন। আপনার এমন দৃষ্টিভংগী দেখে মনে হওয়া খুবই স্বাভাবিক যে আওয়ামী লীগ ফ্যাসিষ্ট দল, তারা কেয়ার টেকার কারচুপি করার পাঁয়তারা করার চেষ্টা করছে এই দূঃখে গনতন্ত্রের ধারক বাহক বিএনপি বাধ্য হয়ে যুদ্ধপরাধীদের ছত্রছায়া প্রদানে বাধ্য হয়েছে। বাস্তব কি আসলে এমন? যুদ্ধপরাধীদের সাথে গাঁটছাড়া বাধা বিএনপির আদর্শগত অবস্থান (’৭৫ এর পর জামাতের উত্থান…খোদ তারেক সাহেবের মত নেতার বিএনপি জামাত ভাই ভাই জাতীয় বানী, এ ছাড়া বিএনপির মন্ত্রী পর্যায়ের একাধিক নেতার জামাত ৭১ সালে পাকিস্তান সমর্থনে অস্ত্র ধরে কোন অপরাধ করেনি জাতীয় বানী……)। তার চাইতেও বড় কথা, আওয়ামী লীগ কেয়ার টেকার ম্যানিপুলেশন দূরে থাক, ২০০৮ সালের সরকার গঠনের বহু আগ থেকেই বিএনপি জামাত অচ্ছেদ্য জোটবদ্ধ অবস্থায় আছে। বিএনপির যুদ্ধপরাধীদের সাথে অবস্থান কিভাবে কেয়ার টেকার ইস্যু দিয়ে তাহলে হালাল করা যায়? নাকি আপনার মতে বিএনপি জামাত ২০১০ সালের পর (আওয়ামী লীগ কেয়ার টেকার কারচুপি শুরু করার পর) থেকে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে, তার আগে তাদের সম্পর্ক ছিল না?
কেয়ার টেকার বদলে কোন বিকল্প প্রস্তাবনা মানেই ১০০% জালিয়াতির প্রচেষ্টা এমন নয়, এটা ব্যাক্তিগত ইন্টারপ্রেটেশনের ওপর নির্ভর করে। তার বিপরীতে চিহ্নিত যুদ্ধপরাধীদের সমর্থন দেওয়া নিশ্চিত ভাবেই অন্তত মোরাল ক্রাইম। এটা কি মানেন?
বর্তমানে বিএনপি জোটের আন্দোলন যা দেখছি তাতে এখনো মনে হয়নি তাদের আন্দোলনে দেশের গণমানুষ সেভাবে অংশগ্রহন করছে। (এর সাথে অধিকাংশই কেয়ার টেকার চায় তার সম্পর্ক নেই)। জনতা স্বেচ্ছায় আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করলে সম্পূর্ন সন্ত্রাসী কায়দায় বোমা মেয়ে পেট্রোল ঢেলে মানুষ পুড়িয়ে সন্ত্রাস সৃষ্টি করতে হত না। এখনো লীগের পক্ষে জনসমর্থন বড় মাত্রাতেই আছে। আপনার কি মনে হয় না যে বিএনপি রাজাকার বদরদের সংসর্গ ত্যাগ করলে, তাদের কেয়ার টেকার ইস্যুর আন্দোলনও অনেক বেশী বেগবান হত? আমি অন্তত মনেপ্রানে তাই বিশ্বাস করি। আপনাকে তো বিএনপির শুভাকাংখী হিসেবে বিএনপির উদ্দেশ্যে এমন কিছু লিখতে দেখি না। আমি নিজেও সত্য বলতে তখন সে ইস্যুতে বিএনপির অতীত যাইই বলুক বিএনপির পক্ষেই সরাসরি কথা বলতাম। আপনি ব্লগ জগতে গত কয়েক বছর ঘোরাঘুরি করেন, ভালই জানেন যে লীগের জিলোট সাপোর্টারদের অন্ধ লীগ ভক্তির কারন কোন অর্থনীতি রাষ্ট্রনীতি কিছুই না, শুধু মাত্র যুদ্ধপরাধীদের বিচার। লীগের সাপোর্ট বেজ এখনো বড় ধরনের নাড়া খায়নি সম্ভবত শুধুমাত্র এ কারনেই। সামনের নির্বাচনে যাইই হোক, এখনো বিএনপি জামাতের আন্দোলন ২০০৬/৭ সালের মত গণআন্দোলনে পরিনত হয়েছে এমন প্রতীয়মান হচ্ছে না।
জাষ্ট কিউরিয়াস, ধরেন একটা কল্পিত চিত্রে সামনের নির্বাচনে বিএনপি ব্যাপক কারচুপি গুন্ডামি করে ক্ষমতায় এলো (শুধুই উদাহরনের জন্য কল্পনা মাত্র)। তখনো কি আপনি তাদের অপকর্ম দেশে এমন নুতন কিছু নয়, লীগও অতীতে কারচুপি করেছে……সর্বোপরি কেয়ার টেকার নিয়ে গোয়ার্তুমী করে লীগই বিএনপিকে এমন অপকর্মে বাধ্য করেছে এভাবে মূল্যায়ন করবেন? যেভাবে আপনি জামাত হেফাজত ইস্যু দেখেন?
@আদিল মাহমুদ, অনেক অনেক প্রশ্ন করে ফেলেছেন আপনি, এক এক করে উত্তর দিতেও সময় লাগবে। শেষ থেকেই শুরু করি।
১ আমি আগে বলেছিলাম যে ১৯৯৬ এবং ২০০৮ এই দুই নির্বাচনেই আমি বিএনপি পূন:নির্বাচিত হোক এটা চাই নি। বিশেষ করে ২০০৫-৮ সালে আমি মনে মনে খালেদা-তারেককে যতটা অভিশাপ দিয়েছি, তার একশতাংশও তাদের ভাগ্যে জুটে নি। এটা আমি লিটারেলী বলছি। আমি আবার বলছি ২০০১-০৬ এর শাসন আমল এবং ২০০৬ এর নির্বাচন নিয়ে ম্যানিপুলেশনের কারনে আমি খালেদা-তারেকের যে পরিনতি কল্পনা করেছি, তার চেয়ে অনেক কম তাদের ভাগ্যে হয়েছে। এখন হাসিনার জন্যে সেইরকম পরিনতি আশা করছি। আমি কিন্তু সবসময়েই মাইনাস টুর বড়ো সমর্থক ছিলাম। সকল বৈধ অবৈধতার বিচার ছাড়িয়ে আমার একটা মজ্জাগত বিশ্বাস যে একজন দুজন মানুষ যখন নিজেদের কোটি কোটি মানুষের চেয়ে বড়ো মনে করা শুরু করে, তখন তাদেরকে দ্রুত সরিয়ে ফেলতে হয়। এই সরানোটা যেভাবেই আসুক না কেনো।
২ আমার একটা কোর ভ্যালু হলো যে আমি মনে করি এই যুগে কোনো মানুষের অধিকার নেই নিজেকে অন্যের চেয়ে বড়ো মনে করে সাধারনের মতামতের অধিকার খর্ব করা। গনতন্ত্রকে কেউ পদদলিত করলে তার জীবনের অধিকার সেই মূহুর্ত থেকেই বাতিল হয়ে যায়। গনতন্ত্রে একজন পিএইচডি ওয়ালা বিদগ্ধজনের ভোট, পিরোজপুরের কলিমউদ্দীনের চেয়ে বেশী গুরুত্বপূর্ন নয়। যুদ্ধাপরাধী, অর্থনীতি, উন্নতি এই সবকিছু নিয়েই কোন দলের ভূমিকা কতটুকু, কারা এই সুবাদে ক্ষমতায় থাকতে পারে না পারে, এটি বিচার করার দায়িত্ব জনগনের। এই বিচারপ্রক্রিয়া যেই হাইজ্যাক করতে চায়, তার উপযুক্ত প্রাপ্য হলো সর্বোনিকৃষ্ট পরিনতি।
৩ আজকে এতো কিছুর পরে যদি কেউ কথার কথা হিসেবেও বলতে আসে যে হাসিনা গনতন্ত্র সমুন্নত রাখতেই কেয়ারটেকার বাদ দিয়ে সর্বদলীয় ব্যবস্থা করছে, তবুও এই ধরনের মরোনিক কথার কোনো উত্তর দেবার জন্যে সময় নষ্ট করা উচিৎ নয়। নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন, পুলিশ, জাতীয় পার্টির সাথে বন্টন এই সব সহ হাসিনা নির্বাচন নিয়ে কি করছে এবং কি প্ল্যান ছিলো, এটা সবার কাছেই স্পষ্ট। চোখের সামনে ঘটা জিনিষকে যদি কেউ ব্যাক্তিগত ইন্টারপ্রটেশন করতে পারে, তবে ৮০ বছরের আগের ঘটনা নিয়ে ব্যাক্তিগত ইন্টারপ্রটেশন তো খুবই গ্রহনযোগ্য ব্যপার।
৪ লীগের জিলোট সাপর্টারদের সমর্থনের মূল কারন যুদ্ধাপরাধী নয়, মুজিব কাল্ট। এরা মুজিব কাল্টের ভাইরাসে আক্রান্ত। আজকে যদি শেখ হাসিনা মুজাহিদ, নিজামিকে মুক্তি দিয়ে জামাতকে সর্বদলীয় কোয়ালিশনে নেয়, তবু পিয়াল, আইজুর মতো ভাইরাসে আক্রান্তরা শেষে আওয়ামীর পক্ষেই দাড়াবে। এই যে আওয়ামী লীগ এখন বেশ কয়েকটা চিহ্নিত জামাতী, রাজাকারকে সরাসরি নৌকায় নমিনেশন দিলো। কোনো তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখছেন নৌকামহলে? বেলের কাটা কি বলছেন যে তিনি নৌকা মার্কায় ভোট চাওয়া বন্ধ করবেন?
৫ বিএনপি অবশ্যই কৌশলগত কারন সহ আদর্শগত কারনেও জামাতের অনেক কাছে আওয়ামী লীগের চেয়ে। কিন্তু নির্বাচনটা যদি মোটামুটি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড হতো, তবে বিএনপি’র সমর্থন মানুষের কাছে স্পষ্ট হয়ে উঠতো আদর্শগত কারন হিসেবে। তখন মানুষই সিদ্ধান্ত নিতে পারতো কোন দলের স্বাধীনতার পক্ষে-বিপক্ষে। আজকে আওয়ামী সমর্থকরা ছাড়া সবাই বলছে যে আওয়ামী লীগই বিএনপিকে জামাতকে অবলম্বনের পথে ঠেলে দিচ্ছে। বিএনপি একটি সুবিধাবাদী, নীতিবিহীন দল। আওয়ামী লীগের মতো এর ডেডিকেটেড ফেদাইন বাহিনী নেই। কিন্তু গনতন্ত্রে সুবিধাবাদী দলেরও ভোটপ্রাপ্তির অধিকার আছে ফ্যাসীবাদীদের মতোই। এই ভোটপ্রাপ্তিকে বাধা দিলে, সুবিধাবাদীরা অন্যফ্যাসীবাদীদের উপরে আন্দোলন আউটসোর্স করতেই পারে।
৬ তত্বাবধায়ক নিয়ে আওয়ামী গোয়ার্তুমীর একটি অবশ্যাম্ভী ফল হলো যে জামাত অবশেষে রাজনীতিতে নৈতিক বৈধতা পেতে যাচ্ছে। বেশ কয়েকটিতে জরীপে দেখা গেছে যে ৬০-৮০% লোক যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চায়, কিন্তু ৬০% এর বেশী লোক মনে করে বিচার সঠিকভাবে হচ্ছে না এবং ৬০-৭০% এর বেশী লোক মনে করে জামাতকে নিষিদ্ধ করা উচিৎ নয়। আওয়ামী লীগ সরকারের সাথে যুদ্ধ করে জামাত অবশেষে এই দেশে তার নৈতিক ভিত্তি অর্জন করছে। কোন জিনিষের ফলআউট কি হবে তা আগে থেকে বোঝা খুবই মুশকিল।
৭ যুদ্ধাপরাধ নিয়ে আমার অবস্থান? আমি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাই, এই বিচার সুষ্ঠু-অসুষ্ঠু নিয়েও আমার বেশী মাথাব্যাথা নেই। এই দেশে কোন জিনিষটা সুষ্ঠু হয়? দ্রুত বিচার শেষ হয়ে এই দেশ চেতনার ঘোর থেকে মুক্ত হোক এটা প্রথম থেকেই আমার একান্ত কাম্য। কিন্তু বিচার বনাম গনতন্ত্র যখন মুখোমুখি দাড়ায়, তখন আমি নির্দ্বিধায় গনতন্ত্রকে বেছে নিবো। কারনে আগেই বলেছি, যুদ্ধাপরাধ এবং আর সবকিছু নিয়ে আমার, আপনার মতামত, যশোরের কলীমুদ্দীনের চেয়ে বেশী গুরুত্বপূর্ন নয়। বিচারের অজুহাতে কলীমউদ্দীনের ভোট যখন কেউ কেড়ে নিতে চায়, আমার তখন শত্রু চিহ্নিত করতে একটুও কনফিউশন হয় না।
আপনি সম্ভবত আরো অনেক প্রশ্ন করেছেন। যদি আলাদা আলাদা করে প্রশ্ন করেন তবে উত্তর দিতে সুবিধা হয়।
@সফিক,
শুধু মাত্র আপনার জন্য এই লেখা : “আসুন মাতৃদায় শোধ করি”। 😛
@সফিক,
মুক্তমনা দেখি আজকাল বড় কমেন্ট সহ্য করতে পারে না। তাই দুই অংশে ভেঙ্গে দিচ্ছি।
@সফিক,
আপনার সাথে কথাবার্তা নেহায়েত কম দিন নয়। আপনার মাইন্ডসেট বোঝার মত পর্যায় আমার অনেক আগেই হয়েছে। আপনার রাজনৈতিক দর্শন আমি জানি, যে যাইই বলুক যুদ্ধপরাধী ইস্যু নিয়েও আপনার ইনক্লাইনেশনে আমার অন্তত সংশয় নেই। আপনি অতীতে কোন বার কোন দলকে ভোট দিয়েছেন আমি আগে থেকেই জানি, যদিও সেগুলির কোন গুরুত্ব এখানে নেই।
আপনাকে যেসব প্রশ্ন আমি করেছিলাম, সেগুলির উদ্দেশ্য ছিল আপনি ছাগু কিনা এই জাতীয় ছেলেমানুষী টেষ্ট বা প্রমান করা নয়, আমার উদ্দেশ্য ছিল আপনি সব সময় যেভাবে বিএনপি জামাতের নেক্সাস, হেফাজতকে বিএনপির ব্যাবহার এসব ইস্যুর জন্য শুধু আওয়ামী লীগ কর্তৃক কেয়ার টেকার তুলে দেওয়া কারন হিসেবে সাব্যস্ত করেন সে বিষয়ে আলোকপাত করা। আমার একদম শেষ প্রশ্নটা এ কারনেই কিছুটা শ্লেষের সাথেই করেছিলাম।
আমার এই লেখায় বর্তমান অচলাবস্থা, চরম সন্ত্রাস এসব সম্পর্কে মূলত কোন কথাই নেই। হেফাজতকে ব্যাবহার করে বিএনপি মহান্যায় করে ফেলেছে এমন কোন আর্গুমেন্টও নেই। এমনকি হেফাজতের বা ১৩ দফারও সমালোচনা নেই। আছে শুধুই হেফাজত ইস্যুতে বিএনপির ডবল গেম খেলার আলোচনা। আলোচনায় মূল ইস্যু থাকার কথা এখানে। আপনি শুরুই করলেন “বাকশালী আওয়ামী দূর্গের দেয়াল ভাংতে হেফাজতের “Barbarian Hordes” এর উপর অবলম্বন ছাড়া উপায় কি?”। বিএনপির হেফাজতের সাথে জোট বাধায় সমস্যা আছে এমন কোন কথাই আমি বলিনি, নিন্দা জানানোর প্রশ্ন আসে না। উলটো একাধিকবার বলেছি যে হেফাজত সমর্থনের রাইট যে কারো মতই তাদেরো আছে। তারা যদি হেফাজতের সাথে জোটবদ্ধও হয়ে যায় তাতেই বা কে আপত্তি করতে পারে? আমার লেখার দাবী ছিল বিএনপি হেফাজত থেকে দূরে সরে যেতে হবে এমন কিছু নয়। দাবী ছিল তারা ক্ষমতায় গেলে হেফাজতের ঠিক কোন দফাগুলি মানবে এবং কোন দফাগুলি মানবে না তা পরিষ্কার করে বলার।
এটা বিএনপির সমর্থক, হেফাজতি, সাধারন ভোটার সকলেরই জানা দরকার নয় কি? সপ্তাহ তিনেক আগ পর্যন্ত তো আপনার নিজেরও ধারনা ছিল যে বিএনপি নাকি ক্ষমতায় গেলে ১৩ দফা মানবে না বলে দিয়েছে। সোজা বাংলায় বিএনপির কূটনৈতিক চালে আপনার মত সচেতন নাগরিক পর্যন্ত সফল ভাবে ধোঁকা খেয়েছিল। তারপরেও আপনার কাছে বিষয়টার গুরুত্ব বড় মনে হচ্ছে না? মাদ্রাসায় পড়া বা শিক্ষিত কেউ যদি সাদেক হোসেন খোকার কথায় আশ্বস্ত হয়ে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ভাষ্কর্যের নামক মূর্তি অপসারন করা হবে এই আশায় বিএনপি জোটে ভোট দেয় এবং বিএনপি ক্ষমতায় গিয়ে আদৌ তেমন কিছু না করে (যেটা অবশ্যম্ভাবী) তবে কি এই লোকের সাথে বিএনপি প্রতারনা করল না? অন্যদিকে কেউ আবার ব্লাসফেমি জাতীয় কোন আইন করা হবে না জাতীয় এম কে আনোয়ার বা জেনারেল মাহবুবের ঘোষনায় আশ্বস্ত হয়ে বিএনপিতে ভোট দিয়ে পরে দেখে যে বিএনপি ক্ষমতায় গিয়ে তেমন আইন করে বসল তবে এটাও কি প্রতারনা হল না?
আপনি রাজনৈতিক মতদর্শের ভিত্তিতে বিএনপির রাজনীতির প্রতি কিছুটা ইনক্লাইন্ড হলেও আমি জানি এবং বিশ্বাস করি যে আপনি সংস্কারবাদী, কোন ব্যাক্তি পূজারী বা দল বিদ্বেষী এ ধরনের আবেগের বশে জেনেশুনে অন্যায় সমর্থনের নীতিতে আপনি চলেন না। আপনার মত ব্যাক্তিত্বের কাছ থেকে মুরগীর বিষ্ঠা প্রদর্শনের পর তার দূর্গন্ধের ব্যাপারে খোলা প্রতিক্রিয়া আশা করি, গরুর বিষ্ঠা থেকে মুরগীর বিষ্ঠা উত্তম তাই মুরগীর বিষ্ঠার পক্ষে যুক্তি দাঁড় করাতে দেখলে হতাশ হই। ইন দ্যাট সেন্স যাদের আপনি আওয়ামী কাল্ট বলেন তাদের অবস্থাও একই। বেসিক ডিফারেন্স নাই।
আমার মতে আপনার এই তত্ত্ব (কেয়ার টেকার তুলে ফেলাই বিএনপি জামাত অটুট ঐক্য এবং হেফাজত লেলিয়ে দেওয়ার) কারন খুবই ত্রুটিপূর্ন। আপনি একাধিকবার এই আর্গুমেন্ট করেছেন, এখনো এখানে করছেন। এ যুক্তিতেই এখানেও মুল বক্তব্যের আশেপাশে না গিয়ে হেফাজতকে ব্যাবহার জাষ্টিফাই করছেন, যা এমনকি এই লেখার বিষয়ও নয়।
@আদিল,এখন সময় বেশী নেই তাই ডিটেল উত্তর দিতে পারছি না। আশাকরি সপ্তাহ দুয়েক পরে গুছিয়ে জামাত, হেফাজত, বিএনপি, আওয়ামী লীগ, নির্বাচন এই সব নিয়ে লিখতে পারবো। মুক্তমনা কতৃপক্ষ রাজী হলে আমরা একটা শুধুমাত্র ডিসকাশন পোস্টই শুরু করতে পারি তখন, যেখানে বর্তমান রাজনীতি নিয়ে সবাই নি:সংকোচে মন্তব্য, প্রশ্ন উত্তর করবে।
আমি এখন শুধু একটা জিনিষই বলবো। আমি জানি যে কেয়ারটেকার ব্যবস্থা থাকলেও খুব সম্ভব বিএনপি, জামাত জোটগত ভাবে নির্বাচন করতো, ভোটের রাজনীতির ক্যালকুলেশন তাই বলে। একটা মোটামুটি ভোট ঠিক থাকলেও হয়তো বিএনপি জামাতের সাথে গাটছড়া বাধতো, হেফাজতকে লেলিয়ে দেবার চেষ্টা করতো। কিন্তু সেটা তখন জনতার সামনে পরিষ্কার হতো। এখন মানুষ দেখছে যে আওয়ামী সরকারকে হটাতে হলে বিএনপি’র জামাত-হেফাজত ছাড়া উপায় নেই।
আমার শুধু একটাই কথা কে কার সাথে জোট করে পাপ করছে, কে কার বিচার করে দেশের প্রায়শ্চিত্ত করছে, কার হাতে দেশ নিরাপদ, এসবই বিচারের চূড়ান্ত দায়িত্ব জনগনের। আওয়ামী লীগ কেয়ারটেকার তুলে দিয়ে বাংলাদেশের জনগনের অবশিষ্ট একটিমাত্র ক্ষমতাকেই নসাৎ করে দিয়েছে। আমি বার বার বলছি, আমার মতামত, আপনার মতামত, পিরোজপুরের কলিমুদ্দীনের মতামতের চেয়ে বেশী গুরুত্বপূর্ন নয়। সেই কলিমুদ্দীনের ভোটাধিকার কেড়ে নেয়ার তুলনায় বাকী সবকিছু আমার কাছে গৌণ।
আপনি নিশ্চই আওয়ামীদের বুলিতে বিশ্বাস করেন না যে বিএনপির কাছে ক্ষমতায় যাওয়া মুখ্য নয়, যুদ্ধাপরাধীদের বাচানোই আসল উদ্দ্যেশ্য? বিএনপি’র বড়ো বড়ো নেতাদের এক হাজার কোটি করে আর ছোট নেতাদের একশো কোটি করে সাদা টাকা অফার করে বলা হোক যে তাদের ক্ষমতারও দরকার নেই, জামাতও ছাড়তে হবে, তাহলে কজন রাজী হবে না বলে আপনি মনে করেন? ক্ষমতায় যেতে পারলে এই সুযোগটিই তারা পাবে এবং এজন্যেই তাদের এতো আন্দোলন।
হেফাজতকে নিয়ে বিএনপি’র উদ্দ্যেশ্য কি, বিএনপি নিজেকে খোলাসা করবে কি না, এটা ফরিদ ভাইই স্পষ্ট করে বলেছেন। তার মতের সাথে এবিষয়ে আমার মত অভিন্ন।
যাই হোক পরে বিস্তারিত কথা হবে।
@সফিক,
– আপনার কথায় মনে হওয়া খুবই স্বাভাবিক যে বিএনপি জামাত মিত্রতা হয়েছে ২০১০ সাল থেকে লীগ কেয়ার টেকার ম্যানিপুলেট শুরু করার পর থেকে। নইলে বিএনপি জামাতের মিত্রতার কোন ব্যাপার বাংলায় দেখা যায়নি, ভবিষ্যতেও হত না। কোন সবাই কি মনে করে না করে তার চাইতে তথ্যগত সূত্র অনেক পরিষ্কার কথা বলে। আবারো বলছি যে বিএনপি জামাত আদর্শিক জোট, এর রুট অনেক পুরনো। আওয়ামী কেয়ার টেকার কারচুপির চেষ্টার সাথে এর কোন সম্পর্ক নেই। কেয়ার টেকার ইস্যুর সাথে এর কোন সম্পর্ক বার করার চেষ্টা খুব দুরুহ। একমাত্র সম্ভব হতে পারে যদি কোন নির্ভরযোগ্য সূত্র দিতে পারেন যাতে দেখি বিএনপি থেকে দাবী করা হয়েছে যে কেয়ার টেকারে ফিরে গেলেই তারা যুদ্ধপরাধীদের ছাতা ধরা বন্ধ করে দেবেন। আপনি কি সিরিয়াসলি বিশ্বাস করেন যে আওয়ামী লীগ কেয়ার টেকারে হাত না দিলে আজ বিএনপি-জামাত জোট থাকতো না? আমার কথা হল কেয়ার টেকার নিয়ে এই সর্বনেশা খেলা লীগের জন্য অবশ্যই বড় ধরনের রাজনৈতিক ভুল হয়েছে, কিন্তু বিএনপি-জামাত মৌতাতের সংগে এর কোন সম্পর্ক নেই।
– কেয়ার টেকার সরকারই থাকল, সে ব্যাবস্থায় বিএনপি জামাত জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করলে তখনই কেবল দেখা যেত বিএনপি যুদ্ধপরাধীদের আদর্শিক মিত্র আর অন্য কোন ব্যাবস্থায় বিএনপি-জামাত জোটকে যুদ্ধপরাধীদের সাহায্যকারী বলা যায় না – এই তত্ত্ব আমি একদমই বুঝছি না। বড় কথা হল বিএনপি ঠিক কি ব্যাবস্থায় জামাতি সংসর্গ ত্যাগ করবে তা আপনার জানা থাকলে জানান। ত্যাগ না করলে কিভাবে আমি বলতে পারি যে তারা যুদ্ধপরাধীদের প্রকাশ্য মিত্র নয়? আমি যতটা বুঝি যে কোন অবস্থাতেই ত্যাগ করবে না। ২০০১, ২০০৮ তো আওয়ামী প্রভাবমুক্ত কেয়ার টেকারের অধীনেই হয়েছিল, তখন কে বিএনপিকে জামাতের কোলে ঠেলে দিয়েছিল?
আমি ব্যাক্তিগতভাবে দৃঢ়ভাবেই মনে করি যে বিএনপি শাহবাগ আন্দোলনের সময়টায় সুযোগ বুঝে জামাত সংসর্গ ত্যাগ করতে পারলে হেফাজতি ক্যাঁচালও বেগ পেত না, যেসব লোক আজ যুদ্ধপরাধীদের বিচার কেবল আওয়ামী সরকারের পক্ষেই সম্ভব বলে প্রচার চালাচ্ছেন তাদেরও এই প্রচারনা চালানো সম্ভব হত না। কেয়ার টেকার নিয়ে গোয়ার্তূমি করার মত মানসিক শক্তি আওয়ামী লীগের একেবারেই থাকতো না। আমি নিজেও জানি না আওয়ামী ঠিক কিসের ভরসায় এই সর্বনাশা পথ আঁকড়ে বসে আছে। আম ছালা সবই যাওয়া ছাড়া চুড়ান্তভাবে আর কিছু জুটবে না। একমাত্র যুদ্ধপরাধী ইস্যু ছাড়া আর কিছু খুজে পাই না। সম্ভবত তাদের হিসেব যুদ্ধপরাধী ইস্যুতে যেহেতু অধিকাংশ লোকে বিচার চায় তাই মাস সাপোর্ট এই প্রান্তিক বিচারে তাদের দিকেই চুড়ান্তভাবে হেলবে। বিএনপি যদি দেখাতে পারতো যে অতীতে যাইই হোক, অন্তত এখন তারাও এ ইস্যুতে লীগেরই সমতূল্য তবে এই ইস্যু আর টিকতো না।
আপনি বিএনপি সমর্থকদের মাঝে ব্যাতিক্রম। বিএনপির সম্ভবত ৯০% সমর্থক নীতিগতভাবে জামাতের সাথে জোট বাঁধা কোন ইস্যু বিবেচনা করে না। এবং এর কারন শুধু নির্বাচনগত নয়, আদর্শিক। এখন এরা ছূতা হিসেবে বলতেই পারে যে কেয়ার টেকার ইস্যুর কারনেই বিএনপি বাধ্য হয়েছে……যা ডাহা মিথ্যা কথা।
– খুবই ভাল কথা। এতে দ্বি-মতের কিছু নেই।
– আমি ব্যাক্তিগত এ কারনে বলেছি যে সর্বদলীয় ব্যাবস্থাতে বিএনপি যোগদান করলে আওয়ামী লীগের ভোট কারচুপির প্লট কার্যকর করা এতটা সহজ হত না। বিএনপিকে তো যে মন্ত্রনালয় চায় তাই দেবার আহবানও জানানো হয়েছিল। বিএনপি নিশ্চয়ই জাতীয় পার্টির মত গৃহপালিত বিরোধী দলের ভূমিকায় কটা আসনের বিনিময়ে যেত না। যেসব আলামতের কথা বললেন, ভোট কারচুপির পাঁয়তারা দেখলে তাদের মন্ত্রীদের পদত্যাগের পথ সব সময়ই খোলা থাকতো। গতবার ইয়াজউদ্দিনের কেয়ার টেকার থেকে কয়েক জন উপদেষ্টা এভাবে পদত্যাগ করেননি? তাদের পদত্যাগ করার মধ্য দিয়ে বরং গতবার সুষ্ঠু নির্বাচনের পথ দেরীতে হলেও খুলেছিল বলা চলে। এই সম্ভাবনাকে খুব একটা মরোনিক বলা চলে মনে করি না। ভেতরের খবর যতটা বুঝি বিএনপি সর্বদলীয়তে সম্মত আছে, কেবল প্রধানমন্ত্রী নিয়ে কড়া অবস্থানে আছে। সর্বদলীয় সরকারের জয়েন করা মানেই পাতানো ইলেকশন হয়েই যাওয়া নয়। অন্যদিকে শয়তানির মতলব থাকলে কেয়ার টেকার ব্যাবস্থাতেও আগে থেকেই আটঘাঁট বেধে গুটি সাজানো খুব অসম্ভব কিছু না (যেমটা গত জোট সরকার দেখিয়ে গেছিল)। এর তুলনায় যুদ্ধপরাধীদের প্রকাশ্যে সহায়তা প্রদান অনেক ক্লিয়ার কাট মোরাল ক্রাইম।
– আমি জিলট সাপোর্টার বলতে ব্লগ সেলিব্রিটিদের কথা শুধু বুঝাইনি। ব্লগের রথি মহারথীদের গুরুত্ব জাতীয় জীবনে তেমন নেই। দেশের কয়ভাগ লোকে নেট ব্যাবহার করে আর বাংলা ব্লগে রাজনীতি শিখে। মুজিব কাল্ট হতে পারে, কিন্তু মুজিব কাল্ট হঠাত করে তরুন জেনারেশনে জনপ্রিয় হবার কারন সেই মুক্তিযুদ্ধ এবং ভিটামিন হল যুদ্ধপরাধীদের বিচারের সম্ভাবনা। মুক্তিযুদ্ধের ছাড়া বংগবন্ধুর ভক্ত বনে যাওয়ারও আর কারন নেই। আগেই যেমন বলেছি, লীগ সম্ভবত আশায় আছে যে যুদ্ধপরাধী ইস্যুর কারনেই তাদের ভোট ব্যাংক টিকে থাকবে যেহেতু প্রকাশ্যে প্রো-যুদ্ধপরাধী সেই ইস্যু থাকত না যদি দুই দলই যুদ্ধপরাধী ইস্যুতে একই লেভেলে আসতে পারতো। যমি লিখে দিতে পারি যে বিএনপি জামাত সংসর্গ ত্যাগ করলে লীগের পায়ের তলায় মাটি বলতে আর কিছুই থাকতো না। মুজিব কাল্ট কোন কাজে আসতো না।
সামনের বার ইলেকশন যেভাবেই হোক আর যেইই জিতুক, দূঃখের কথা হচ্ছে যে যুদ্ধপরাধী ইস্যু সামনের অনেক বছরই দেশকে পোড়াবে, অনেক নিরীহ লোকের জীবনও তছনছ হবে। আরো দূঃখের কথা হচ্ছে, কেয়ার টেকার, সর্বদলীয় এসবও কিছুতেই কিছু হবে না। আসল সমস্যা তো সিষ্টেমে নয়, সমস্যা আমাদের নিজেদের মাঝে। আমরা সব কিছুই নিজ স্বার্থে সফলভাবে ব্যাবহারের কায়দা অবশ্যই বার করতে পারবো।
@আদিল মাহমুদ, কি সাংঘাতিক বিশ্লেষণ রে ভাই। আচ্ছা আপনি কি পেশায় আইনজীবী ( খুব সফল!) নাকি? মানে আমি বলতে চাচ্ছি যে এই রকম নিশ্ছিদ্র মন্তব্য কি ভাবে করেন? আপনার মন্তব্যগুলির চুল পরিমান ফাঁক খোঁজার চেষ্টায় আছি আমি। কিন্তু সেই সুযোগ দিচ্ছেন কই? নাহ এই রকম পারফেকশন ভাল জিনিস না, অন্যদের কেও একটু চান্স দেন :-))
@দারুচিনি দ্বীপ,
:))
এই পেশাটিকে বড়ই ভয় করি। কখনো বেছে নেবার প্রশ্ন আসলে সম্ভবত এই পেশার কথা সবচেয়ে শেষে চিন্তা করতাম।
@সফিক,
তবে এর বিপরিত কাল্টও বাংলাদেশে আছে, যার কারনে কেউ কেউ মুজিবের নামটাও সহ্য করতে পারে না।
আর আপনি সম্ভবত এর বিপরীত কাল্ট ভাইরাসে আক্রান্ত! (Y)
আদিল সাহেব, বি এন পি হেফাজতের ১৩ দফা নিয়ে কতটুকু চিন্তিত – এ প্রশ্নের উত্তর তারা সরকার গঠন ( যদি!) করার আগে পাবেন না নিশ্চিত। চাপ দিলেও এ মুহূর্তে উত্তর তারা দেবে না। তাদের প্রশ্ন করা উচিৎ হবে না। বরং হেফাজতে ইসলাম বিষয়ে কিছু তথ্য পাঠকদের জানান। আপনার মতে, হেফাজত স্বয়ং কৃষ্ণ না কৃষ্ণের অবতার ?
@সংশপ্তক,
:))
আমার হাতে ক্ষমতা থাকলে আমি তাদের হাতেই সামনের ১০ বছর রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব দিয়ে দিতাম। বেহুদা এত ক্যাঁচাল অশান্তি, প্রতিদিন জ্যান্ত মানুষ পোড়ার ছবি এসবের চাইতে হেফাজতি শাসন উত্তম।
@আদিল মাহমুদ,
আপনার কথা মানলে , আমাদের হিটলার ওরফে ‘সিরামিক ইঞ্জিনিয়ার’ সাহেবের তো তাহলে পোয়া বারো ! উনিই হবেন আমাদের নতুন ফূরার (Führer) । আমাদের ‘দূর্বার ভাইদের’ আশ্বাস ঠিক হয়ে থাকলে আমার অবশ্য সন্দেহ আছে যে , সওদাগর বাবাজীরা এবার সদলবলে ঢাকায় ঢুকতে পারে কি না ।
@আদিল মাহমুদ,
উপরে যেমন বলেছিলাম , সওদাগরেরা ঢাকায় প্রবেশ করতে পারবে না। তারা পারেনি। হেফাজতের ক্ষমতা বাস্তবিকই কৃত্রিম। সরকার সায় দিলে এবং শত কোটি টাকার বাজেট থাকলে শাপলা চত্বর কিংবা শাহবাগে শুধু হেফাজত কেন , এমনকি লক্ষ বৃহন্নলার সমাবেশ করাও কঠিন নয়। 🙂
পুলিশ থামিয়ে দিল শফী ও বাবুনগরীকে
ঢাকায় হেফাজতের মহাসমাবেশ স্থগিত
@সংশপ্তক,
এরা এবার কিছু করতে পারবে না জানতাম। জোর করে না আটকালেও গত দু’বারের তূলনায় এবার সুপার ফ্লপ হত বলেই ধারনা করেছিলাম।
বিএনপি বাংলাদেশের মানুষের সাথে হেফাজত নিয়ে লুকচুরি খেলায় ব্যাস্ত !! :-O
নিৰ্বাচনের আগে বিএনপি হেফাজতের সামনে ১৩ দফা নিয়ে “মূলা” ঝুলিয়ে হেফাজতকে মাঠ গরম করতে উষ্কে দিয়ে ৰ্ধমপ্রান বাঙ্গালিদের ভোট আদায় করতে চায়!! 😛
=> ১৩ দফা বাস্তবায়নের দাবীতে হেফাজতের আগামী সমাবেশে গিয়ে তাদের সৰ্মথন জানানোর পূৰ্বে বিএনপিকে বাংলার মানুষের কাছে হেফাজতের ১৩ দফা সৰ্ম্পকে অবশ্যই নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করতে হবে !! :guli:
আগে তো ইলেকশন মেকানিজম ঠিক হোক, তার পরে দেখা যাবে বিএনপি’র অবস্থান কি ১৩ দফা নিয়ে। এখনো তো ইলেকশনেরই ঠিক হয় নি। যুদ্ধ চলছে ইলেকশন ঠিক করার জন্যে। হেফাজত এই যুদ্ধের এক অত্যাবশকীয় ফুট সোলজার। বাকশালী আওয়ামী দূর্গের দেয়াল ভাংতে হেফাজতের “Barbarian Hordes” এর উপর অবলম্বন ছাড়া উপায় কি?
@সফিক,
– তাতে তো আমার আপত্তি নাই। আমি কি এমন আর্গুমেন্টে দিয়েছি যে হেফাজতের ১৩ দফা বিএনপি মানতে পারবে না……১৩ দফা মেনে নিলে মহা অন্যায় হয়ে যাবে? তারা ১৩ দফা বা ১৩ দফার নির্দিষ্ট কিছু দফা সমর্থন করতেই পারে, সরকারে গেলে সেসব দফা আইন আকারে পাস করাতে পারে। মোষ্ট ওয়েলকাম। গনতন্ত্র মানলে এতে আপত্তির কিছু নেই।
আমার কথা খুবই সরল, ১৩ দফা সম্পর্কে তারা অবস্থান পরিষ্কার করুক। “তাদের নির্বাচনের আগে অবশ্যই নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করতে হবে; ১৩ দফার ঠিক কোনগুলি তারা নির্বাচিত হয়ে সরকারে এলে কায়েম করবে এবং কোনগুলি তারা মেনে নেবে না বলতে হবে। এমন স্বচ্ছ অবস্থান সাধারন ভোটার, হেফাজত সকলের জন্যই দরকার।” – এতে কি যে কোন দৃষ্টিভংগীতেই খুব আপত্তি করার কিছু আছে?
@সফিক,
ঠিক। যেমন ৭৫ সালে করা হয়েছিল? এখন কি সেটা পুর্নতা প্রাপ্তির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে? আর আপনি “Barbarian Hordes”কেন বলছেন? গণতন্ত্রে তো সবই সিদ্ধ নাকি?
আপনিই না হিটলারের ছবি নিয়ে র্যালী করা, বা ব্রেইভিকের মেনিফেস্টো প্রকাশের অধিকারকেও স্বীকার করে থাকেন! যেখানে হেফাজতের দাবীকে গণতান্ত্রিক বলতে আপত্তি কিসের? এদের কিন্তু আমি গণতান্ত্রিক দল বলব ( আপনার কাছ থেকে শেখা)
কিসের জন্য ইলেকশন সফিক? কাদের জন্য ইলেকশন? বনের পশুদের জন্য, নাকি আমেরিকা প্রবাসী সৌখিন, আর ভোগী মানবদরদীদের জন্য? নাহ বাংলাদেশের খেঁটে খাওয়া সাধারন মানুষের জন্য এই ইলেকশন নয়। সেটা হলে, হরতাল আর অবরোধের ( দয়া করে আওয়ামী লীগও একই কাজ করত এই ধুয়া তুলবেন না, কারন এতেও আমার বক্তব্য একই থাকতো) নামে মানুষকে পুড়ে মরতে হত না। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের যে দোকান বন্ধ রাখতে রাখতে ভাতে মরার দশা হয়েছে, সেই খবর আপনি রাখেন কি?
এতই যদি সরকার বিরোধী আন্দোলন, তবে গন ভবন ঘেরাও না করে সাধারণ মানুষের উপর এই হামলা কেন? আপনার উদার গণতান্ত্রিক মনোভাব কি এটাকেও গণতান্ত্রিক অধিকার হিসাবে স্বীকৃতি দেবে? পিছলে না গিয়ে জবাব টা দেবেন তো? অবশ্য না দিলেও ক্ষতি নাই, কারন মনে হয়, আপনার জবাব টা কি হতে পারে তা সহজেই অনুমান করে নেয়া যায়।
@দারুচিনি দ্বীপ,আপনার মতো নিস্পাপ, সরল মন গুলোর লেখা পড়লে ভালোই লাগে। যুদ্ধের মধ্যে বসে কান্নাকাটি করছেন ওরা গোলাগুলী করে কেনো? যদি সময় থাকে তবে আমার এই লেখাটা পড়ে দেখতে পারেন, ওখানেই আমার বিস্তারিত উত্তর আছে।
href=”http://alalodulal.org/2013/11/11/atrocity-of-war/”>
http://alalodulal.org/2013/11/11/atrocity-of-war/
@সফিক ভাই,
এত নিশ্চিত হচ্ছেন কি করে?? কে কার উপর ভর করছে, তা দেখার জন্য বছর কয়েক অপেক্ষা করুন না!
এখন যাকে অনন্যোপায় বলছেন, তার জন্য না একদিন আপনার চিন্তাশীল মস্তিষ্কের কেশ ছিঁড়তে হয়!!!
@কাজি মামুন, আপনার রাজনীতি বিশ্লেষনে আমার অগাধ আস্থা রয়েছে। এই বছরের শুরু থেকেই সম্ভাব্য রাজনীতি কোনদিকে যাচ্ছে, সেবিষয়ে আপনার একের পর এক নিখুত ভবিষৎবাণীগুলি আমাকে দারুন বিস্মিত করেছে।