ইংরেজিতে human শব্দটির অর্থ ডিকশনারিতে লেখা হয়েছে, মনুষ্য-সম্বন্ধীয়, মানবীয়, মানবজাতি সম্পর্কিত। আমি যদি বলি, I am a human being . বা We are human being. তবে কি ব্যাকরণগত দিক থেকে তা শুদ্ধ হবে? প্রচলিত অর্থে হবে। কিন্তু কেন? আমি কি একজন man বা পুরুষ? না তো! তবে আমি human হবো কেন? পৃথিবীর সমস্ত মানুষ কি man? কোনও woman কি নেই পৃথিবীতে? সমস্ত মানুষকে man কেন বলা হবে? তবে কি আমি ও জগতের তামাম স্ত্রীজাতি huwoman? এই শব্দটি কি কোনও পুরুষ মেনে নেবেন? এর চেয়ে huperson শব্দটি লিঙ্গ-নিরপেক্ষভাবে নর-নারী সবার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হতে পারে না কি? Human being অর্থ লেখা হয়েছে, মনুষ্যজাতি। শুধু পুরুষদের নিয়েই কি পৃথিবীর মনুষ্যজাতি? নারীজাতি মনুষ্যের পর্যায়েও কি পড়ে না? নাকি এই পুরুষবাচক শব্দটির আওতায় তামাম নারীজাতিকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে?
এ রকম আরও শব্দ রয়েছে, humanism, humanist, humanitarianism, mankind, humankind, humanity ইত্যাদি। এই ধরণী কি একেবারেই নারীশূন্য হয়ে গেল? ইংরেজিতে বলা হয়,Man is mortal. Womanকুল কি তবে immortal? Humanity শব্দের অর্থ বাংলায় বলা হয় মানবতা। মানব শব্দটিও কিন্তু লিঙ্গনিরপেক্ষ নয়। মনুষ্যত্ববাদ থেকে মানবীকুল কি বাদ? বাংলায় এ রকম অনেক শব্দ রয়েছে যেমন, মনবপ্রীতি, মানব-সমাজ, মানবধর্ম, মানবজীবন ইত্যাদি। সবগুলোই একচেটিয়াভাবে পুরুষবাচক শব্দ। নারী বা লিঙ্গনিরপেক্ষতার কোনও গন্ধও নেই।
কোনও প্রিয় মানুষের অপরিপক্ক আচরণকে আমরা আদুরে ভাষায় ‘ছেলেমানুষি’ বলে থাকি। সেটা নর কিংবা নারী উভয়ের ক্ষেত্রেই। যেমন, প্রীতি যদি অপরিপক্ক আচরণ করে আমরা বলি, প্রীতিটা বড্ড ছেলেমানুষ। তেমনি কবীরের অপরিপক্ক আচরণের জন্য আমরা কেন বলি না, কবীর একটা মেয়েমানুষ! মেয়েমানুষকে যদি ছেলেমানুষ বলা যায় তবে ছেলেমানুষকে কেন মেয়েমানুষ বলা যাবে না?
বাংলা ব্যাকরণে ‘পুরুষ’ বলে একটা ব্যাপার আছে। উত্তমপুরুষ, মধ্যমপুরুষ, নামপুরুষ। যেমন আমি লিপিকে বলছি, লিপি, রিনা একটি চমৎকার মেয়ে। এখানে ব্যাকরণ অনুযায়ী আমি উত্তমপুরুষ, লিপি মধ্যমপুরুষ, রিনা নামপুরুষ! আমরা তিনজনই নারী হয়েও ব্যাকরণের ভাষায় পুরুষ! কী ভয়াবহ হাস্যকর পুরুষতান্ত্রিকতা! আমি উত্তমনারী, লিপি মধ্যমনারী, রিনা নামনারী। এটাই ত সত্যি। অথবা উত্তমব্যক্তি, মধ্যমব্যক্তি, নামব্যক্তি যদি হতো তাহলে তা লিঙ্গনিরপেক্ষ হতো না কি?
নারীদের জ্ঞান-বুদ্ধিকে হিংসাবশত স্ত্রীবুদ্ধি বলে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করে থাকেন পুরুষগণ। আমরা জানি যে, যুদ্ধ-বিগ্রহ সহ জগতের সমূহ ধ্বংসাত্মক ব্যাপারগুলি পুরুষের বুদ্ধিতেই ঘটে থাকে। কিন্তু তাকে স্বামীবুদ্ধি বা পুরুষবুদ্ধি কেন বলা হয় না?
ছোটবেলায় স্কুলজীবনে রাত জেগে মুখস্থ করে পরীক্ষার খাতায় লিখেছি ছাত্রজীবন রচনা। ছাত্রজীবন উৎকৃষ্ট জীবন, জীবন গড়ার জীবন। একবার তো উৎকৃষ্ট লিখতে গিয়ে হতক্রিস্ট লিখে ফেলেছিলাম। হতক্রিস্টভাবে মারও খেয়েছিলাম অবশ্য সেজন্য। ছাত্রী হয়েও আমাকে ছাত্রজীবন রচনা মুখস্থ করতে হয়েছে, পরীক্ষার খাতায় ছাত্রজীবনে গুণগান করতে হয়েছে। ছাত্রীজীবন নামে কোনো রচনা বা কোনো শব্দ জীবনে চোখে পড়ে নি। ছাত্রীদের কি জীবন নেই? নাকি ছাত্রীজীবন উৎকৃষ্ট বা হতক্রিস্ট নয়? ছাত্র শব্দটি যেহেতু লিঙ্গনিরপেক্ষ নয়, ছাত্রীদেরকেও কেন এই পুরুষবাচক শব্দের আওতাধীন ভেবে নেওয়া হয়? ছাত্রজীবন না হয়ে শব্দটি শিক্ষাজীবন বা শিক্ষার্থীজীবন হতে পারে কি?
বেশ কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশের সরকার প্রধান ও বিরোধীদলীয় প্রধান দুজনই নারী। এটা আমাদের জন্য অতি গর্বের বিষয়। বর্তমান সরকার প্রধান শেখ হাসিনাকে বলা হয় রাষ্ট্রনায়ক, খালেদা জিয়াকে বলা হয় বিরোধীদলীয় নেতা। নায়ক ও নেতা দুটিই খাঁটি পুরুষবাচক শব্দ। শেখ হাসিনা যদি রাষ্ট্রনায়ক হন তবে শাবানা, ববিতা, কবরী প্রমুখ এঁরাও তো নায়ক। চিত্রনায়ক। চিত্রনায়ক শাবানা, চিত্রনায়ক ববিতা, চিত্রনায়ক কবরী। পুরুষ দলপ্রধান বা রাষ্ট্রপ্রধান বা অভিনেতাদেরকে এই যুক্তিতে নায়িকা বলা যায় না কি? যেমন, রাষ্ট্রনায়িকা জিয়াউর রহমান, রাষ্ট্রনায়িকা এরশাদ, নায়িকা আলমগীর, নায়িকা রাজ্জাক, নায়িকা জাফর ইকবাল! রোকেয়া লিখেছিলেন, আমাদিগকে সকল দিক হইতেই পুরুষের সমকক্ষতা অর্জন করিতে হইবে। এ জন্যই কি আমাদের বিপুল ক্ষমতার আধার নারীরাও পুরুষবাচক শব্দে নিজেদের পদ ও পরিচয় দিতে আনন্দিত ও গর্বিত বোধ করেন?
আজকাল নারীদেরকে সভাপতি, সমাজপতি, দলপতি ইত্যাদি পতি হতে দেখা যায়। কোনো নারী কী করে কারুর পতি হয়? কোনো পুরুষ কি কখনও হবে কারুর পত্নী? পুরুষকুল নারীনেতৃত্ব মেনে নিয়েছে। এটা ভাল লক্ষণ। কিন্তু কোনো পুরুষ কি সভাপত্নী, রাষ্ট্রপত্নী, রাষ্ট্রনায়িকা, নায়িকা, দলনেত্রী ইত্যাদি নারীবাচক শব্দগুলি সজ্ঞানে গ্রহণ করবে বা নিজের পরিচয় দেবে এই সকল শব্দে?
৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে সমবেত জনতা ও দেশবাসীর উদ্দেশ্যে মুজিব কয়েকবার বলেছিলেন, ভায়েরা আমার, ভাইরা আমার। সেই সমাবেশে অনেক নারীও উপস্থিত ছিলেন। পুরো বাঙালি জাতিতে ত ছিলেনই। মুজিব একবারও বোনেরা আমার বা ভাই ও বোনেরা বলেন নি। কেন?
রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন, মরিতে চাহি না আমি এই সুন্দর ভুবনে/ মানবের মাঝে আমি বাঁচিবারে চাই।
মানব শব্দটিই যে পুরুষবাচক! রবি কি শুধু পুরুষের মাঝে বাঁচতে চেয়েছেন? নারী ও পুরুষ সমগ্র মনুষ্যজাতির মাঝে কি নয়?
চণ্ডীদাস লিখেছেন, সবার উপরে মানুষ সত্য। সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত লিখেছেন, জগত জুড়িয়া এক জাতি আছে/ সেই জাতির নাম মানুষ জাতি। অন্যদিকে জীবনান্দ লিখেছেন, মানুষের –মানুষীর ভিড়/ তোমারে ডাকিয়া লয় দূরে বহু দূরে।
মানুষ শব্দটিও কি তবে পুরুষবাচক। হায়রে পুরুষের আধিপত্য, সর্বগ্রাসী হাসি উদ্রেককারী সাম্রাজ্যবাদ! সমাজ, সংসার, আইন-কানুন সবই দখল করেছিল তারা। ভাষাকে ছাড়বে কেন?
কোনো কট্টর পুরুষতান্ত্রিক, জুলুমবাদী মানসিকতার পুরুষেরাই এই সকল একচেটিয়া স্বৈরাচারী শব্দগুলি আবিষ্কার করেছিলেন। নারীকে সবকিছু থেকে বাদ দিয়েছিলেন তারা সেই বর্বর আমলে। আজ সকল মানুষের সম অধিকারের কথা বলা হচ্ছে, অনেক কাজও হচ্ছে সেই অনুযায়ী।আজকের পৃথিবীর বিদগ্ধ ভাষাবিদেরা এই সকল হাস্যকর পুরুষতান্ত্রিক শব্দের পরিবর্তে লিঙ্গনিরপেক্ষ শব্দ কেন সৃষ্টি করছেন না?
প্রাচীনকালে বৈয়াকরণগণ এই সকল পুরুষবাচক শব্দের মধ্যে নারীজাতিকে দয়া করে উহ্যভাবে অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন, নাকি নারীকে একেবারে পৃথিবীর প্রাণী প্রজাতি থেকে বাদই দিয়ে দিয়েছিলেন জানি না।
অনেকেই বলে থাকেন, এই শব্দগুলি কোনও ব্যাপার না। এগুলো কারুর কোনও ক্ষতি ত করছে না। সবাই সমান অধিকার ভোগ করতে পারলেই হলো। আমি বলি, না। মানুষের জীবনে ভাষার গুরুত্ব অপরিসীম। সেই ভাষার কাছে নারী কেন হেয়, অকিঞ্চিৎকর কিংবা উহ্য হয়ে থাকবে?
ব্যাকরন জিনিসটা সারা জীবন যমের মত ভয় করে এসেছি, তাই এ লেখার প্রথম লাইন কয়েক পড়েই স্কুল কলেজ জীবনের ভয়াবহ সব স্মৃতির তেড়ে আসা শুরু হতে আতংকে পেজই বন্ধ করে দিয়েছিলাম।
সময়ও আজকাল তেমন পাই না নেটে ঘোরাঘুরি করার। আজ একটু উকি মারতে গিয়ে দেখি এখানে তো আবারো ধুনধুনমার কান্ড ঘটে গেছে মুক্তমনার পুরনো দুই সদস্য ফরিদ ভাই আর আকাশ মালিকের ভেতর। দু’জন প্রাপ্ত বয়ষ্ক ব্যাক্তির ব্যাক্তিত্বের সঙ্ঘাতে উপযাচক হয়ে কথা বলা অর্থহীন। দুই হেভিওয়েটের লড়াইতে মনে হয় আর কেউই তেমন কথা বলতে চাচ্ছেন না। দুজনাই বিদায় হবার চাইতে অন্তত একজনা হলেও থেকে যাক এভাবেও হয়ত চিন্তা করছেন।
দু’জনেই অতীতে মুক্তমনা ত্যাগ করেছিলেন আবার সকলকে স্বস্থি দিয়ে ফিরেও এসেছিলেন। যদিও ফরিদ ভাই এর এর আগে মুক্তমনা ত্যাগের কারন আমি নিশ্চিত নই। দুজনার ভেতর সমস্যা হলে কাউকে ব্লগ ত্যাগ করতে হবে কেন এটাও আমি বুঝি না। এই দ্বন্দ্ব অনেক পুরনো, পুরোপুরি সারার আশা করা যায় না। তবে অন্তত একে অপরকে এড়িয়ে চললে হয়ত সহাবস্থান সম্ভব হত। মুক্তমনার মত ম্যাচিওর ফোরামে এ ধরনের ব্যাক্তিগত দ্বন্দ্ব, ঘোষনা দিয়ে ব্লগ ত্যাগ করা, ভক্তদের অনুরোধে আবারো ফিরে আসা এসব একেবারেই ভাল লাগে না। বিশেষ করে দুজনকেই যখন প্রয়োযনীয় বলে মনে হয়। কোন সদস্যই এমন কারনে ব্লগ ত্যাগ করুক নিশ্চয়ই আমরা কেউই চাই না।
যাক, মন্দের ভাল অন্তত কমেন্টগুলি থেকে লেখাটার মর্মার্থ কিছুটা ধরতে পারলাম। এভাবে কোনদিন খুব বেশী চিন্তা করিনি। এবার থেকে ভাষার বিবর্তন লক্ষ্য করার চেষ্টা করব।
@আদিল মাহমুদ,
আমি মুক্তমনা ত্যাগ করি নি কখনো, মডারেশন টিম এবং উপদেষ্টা পরিষদ থেকে সরে এসেছি শুধু। এর ব্যবস্থাপনার বিষয়ে আমার আর কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই এখন।
@ফরিদ আহমেদ,
আপনার ব্যাপার নিশ্চিত না আগে বলছি। মডারেশন থেকে সরে গেছেন নিশ্চিত, তবে যতটা মনে পড়ে ব্লগ একেবারেই ছেড়ে দিবেন এই রকম দুয়েকবার বলেছিলেন। মাঝখানে অনেকদিন মনে হয় বাইরেও ছিলেন। সেটার কারন আকাশ ঘটিত সমস্যা কিনা জানি না।
@আদিল মাহমুদ,
সত্যিই আশ্চর্য হই – এমন একটি হালকা চালের লেখা (যদিও বিষয়টি অনেক গুরুত্বপূর্ন) যেটা লেখার আগে লেখক ভুলভাল শুধরোবার জন্য কোন কিছু ঘাঁটাঘাঁটি করার ন্যূনতা চিন্তাও গ্রাহ্য করেননি – পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষার স্ত্রী-পুং লিঙ্গের ব্যবহার সম্পর্কে কিছু বলা দূরে থাক এমনকি মাতৃভাষা এবং লিঙ্গুয়া ফ্রাঙ্কার কতগুলো শব্দের হাস্যকর ভুলভাল ব্যাখ্যা দিয়ে মনের মাধুরী মিশেয়ে একটি ব্লগ লিখেছেন আবার এটাতেই ব্লগের অনেক সিনিয়র দুই ব্লগারের এমন কথা বিনিময় :guru: :guru:
মুক্তমনার মাতৃগর্ভ এবার বিজ্ঞানের মুঠোয়…… শীর্ষক একটা লেখা বিশেষ কারনে বুকমার্ক করে রেখেছিলাম। আজকে ঐ টা সরিয়ে তার জায়গায় উত্তম-ব্যক্তি ও হিউপার্সনদের কথা শীর্ষক লেখাটি বুকমার্ক করে রাখলাম 😉
@সংবাদিকা,
আমার লেখাটি হালকা চালের এবং এই বিষয়ে কোনো রিসার্চ না করে লেখা, এটা আমি মেনে নেবার পরেও আপনি সেই একই যিকির করেই যাচ্ছেন।
পুরুষতান্ত্রিক শব্দগুলি আমার কাছে হাস্যকরভাবে পুরুষতান্ত্রিক মনে হয়, তাই আমি এদের হাস্যকর ব্যাখ্যা দিয়েছি। আর অন্য ব্যপারটির চেয়ে আমাকে নিয়ে কীভাবে বিদ্রূপ করবেন সেটি নিয়েই আপনাকে বেশি চিন্তামগ্ন দেখা যাচ্ছে।
সব ক্ষেত্রেই নারীরা নির্যাতিত হয়ে আসেছে পুরুষের মাধ্যমে। ভাষার ক্ষেত্রেও। অনেক ভাষায় লিঙ্গনিরপেক্ষ শব্দ তৈরি করা হয়েছে এবং হচ্ছে এই পূর্বে সৃষ্ট অবিচার বা ব্যবধান নিরসনে। আর এটা আপনার বৃথা মনে হলেও আমার কাছে নয়।
আপনি একবার বলেছেন, এই বিষয়ে আরো পড়ালেখা করলে আমি এই ব্লগই লিখতাম না। আরেকবার বলেছেন,লেখাটির জন্য আমি কোনো ঘাঁটাঘাঁটি করিনি। লেখাটি হালকা ধাচের, ঘাঁটাঘাঁটিহীন ইত্যাদি যিকিরে আপনি এতই মশগুল যে, নিজের অজান্তে বা জেনে শুনেই স্ববিরোধিতা করছেন নিজের মতামতের সাথে।
@তামান্না ঝুমু,
(C) (D) :thanks:
@সংবাদিকা,
মিঞা কফির লগে টাল , বিতলামি করেন?
@তামান্না ঝুমু,
আমি এসব আসলে আপনাকে বলিনি – এই থ্রেডে নিশ্চয়ই আমার মন্তব্যর শুরুতে “@তামান্না ঝুমু” ছিলনা – আমি আসলে দুই সিনিয়র ব্লগারের খামছা-খামছি প্রসঙ্গে বলেছিলাম :))
আপনাকে ধন্যবাদ (C) :thanks:
@আদিল মাহমুদ,কেমন আছেন? আপনাকে প্রায় দেখাই যায় না যে 🙂 !
আসলে মুক্ত মনাতেও যে এইরকম ঘোষণা দিয়ে ব্লগ ত্যাগ করা হইয় এটা আমার কোন্দিন মাথায় আসে নি। এখানে একটা লেখা আমারো হজম হয়নি ( জামাত সম্পর্কিত) , কাজেই আমি প্রায় মাস তিনেক এখানে আসিনি কোন ঘোষনা ছাড়াই। পরে নিজের সাথে এই বলে বোঝা পড়া করেছি যে এটা একটা মুক্ত চিন্তার প্ল্যাটফর্ম তাই এখানে হয়ত সব কিছুরই স্বাধীনতা থাকা উচিত।
এছাড়াও এর কিছুদিন আগে শুধুই ইসলাম ধর্মকে সিঙ্গেল অউট করছিলেন একজন ব্লগার তার ২০ পর্বের মহাকাব্য লিখতে হবে শুধুই মুহাম্মদ সাঃ কে পচানোর জন্য।
সেখানেও ফরিদ আহমেদ, সহ অনেক ব্লগার কেই প্রতিবাদ করতে দেখেছি ( সবার নাম মনে করতে পারছি না)। এখানে আমার কথা হল, ধর্ম নিয়ে সমালচনা করা হোক, কোন সমস্যা নেই, বরং এটা ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে একটা লড়াই ( যেমন আপনার একটা লেখা দেখলাম, ৫ পর্ব পর্যন্ত লিখেছেন, খুব ভাল লেগেছে বাস্তব ধর্মী এই লেখাটি) কিন্তু ক্রমাগত মুহাম্মদ নামের একজন মাত্র লোককে নিয়েই কেন এত ব্যবচ্ছেদ হবে?
কেন কিছু মানুষ খাওয়াদাওয়া ঘুম সব বাদ দিয়ে এই লোকটিকেই একক ভাবে পচাতে সচেষ্ট হবে, এমনকি হিটলারের মত একটা বর্বর শয়তানকেও কেন মুহাম্মাদ সাঃ এর চেয়ে ভাল বলা হবে এটাই আমার হজম হত না।
আমার নিজের ধর্ম ইসলামেও আমি নানা অসঙ্গতি খুজে পাই, কিন্তু তার মানে এই না যে একটা মাত্র মানুষকে ক্রমাগত কপি পেস্টের মাধ্যমে চাবকাতে হবে, যেখানে তিনি মারা গেছেন ১৪০০ বছর আগেই?
আর সেই সাথে দেড় বিলিওন মুসলিমের সামনে যখন অপশন রাখা হয় হয় ইসলাম ত্যাগ করো না হয় উড়িয়ে দেয়া হবে, সেখানে আমি তালেবানী স্টাইলের হুমকি ছাড়া আর কিছুই দেখিনি।
এইগুলা বদহজম শুধু মধ্যপন্থী না, আমার মত উদার পন্ধী মুসলিমেরও হবে। আসলে সব মানুষেরই হবে যেমন এখানে অনেক সম্মানিত ব্লগার নাস্তিক হয়েও এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন। আর এর ফলেই আবার মুক্ত মনার লেখা পড়া শুরু করি আবার।
যদিও জামাত সম্পর্কে সফিক সাহেবের লেখাটা হজম করতে মাসতিনেক লেগেছে আমার।হয়ত ওটা একটা উন্নত মানের লেখাই ছিল, কিন্তু লেখকের বুঝা উচিত ছিল যে আমেরিকা আর বাংলাদেশ এক না, কাজেই ওখানকার জিনিস এখানে চালালে বদহজম হবেই নেহায়েত ছাগ সম্প্রদায় ছাড়া( আপনিও মনে হয় এই কথাই বলেছিলেন যেটা আমি বললাম এখন)।
যাহোক ধান ভানতে আসলে আমি শীবের গীত গেয়ে চলেছি। কিন্তু সত্যি মুক্ত মনাতে এমনসব ব্যাপার ঘটছে যা আমি আশাও করি নি ( দুজনের দন্দ্বে একজনের ব্লগ ছেড়ে যাওয়া!), এইসব তো ফেসবুকের গ্রুপ গুলিতে হয়!!এটা সত্যি অদ্ভুত লাগছে আমার।
আচ্ছা ভাই, আমরা বাঙ্গালীরা কি কোনদিনই আবেগের মাত্রা কমিয়ে আনতে পারব না? আপনার কি মনে হয়? আশা করি মতামত দেবেন এই ব্যাপারে। আপনার, ফরিদ আহমেদের, অভিজিৎ রায়ের মতামত গুলো কে আমি খুব গুরত্বের সাথে নিয়ে থাকি সততার সাথেই বলছি। সম্প্রতি সংশপ্তকও এই শর্ট লিস্টে চলে এসেছেন। অসাধারন এবং যৌক্তিক কথাবার্তা বলেন তিনিও ধন্যবাদ।
@দারুচিনি দ্বীপ,
সফিকের লেখা সংক্রান্ত আপনার ক্ষোভের কথা আগেই জেনেছিলাম। সে লেখা সম্পর্কে কিছু বলার থাকলে সে লেখাতেই বলা যুক্তিসংগত। ব্লগ জগত বা যে কোন বিতার্কিক অংগনে ঘোরাঘুরি করতে হলে প্রথম শিক্ষাই হল লড়াকু মনোভাব রাখতে হবে প্রফেশনাল পর্যায়ের। সফিকের লেখা পড়ে আপনার মত সকলে মাসের পর মাস ব্লগ ত্যাগ করে বসে থাকলে কেমন হবে? আপনি কেন তার লেখায় আপত্তি করেন সেটা যুক্তিপূর্ন ভাবে ব্যাখ্যা করা ব্লগার হিসেবে আপনার দায়িত্ব, রাগ করে ব্লগ ত্যাগ করা কোন কাজের কথা নয়। তেমন কাজ (তীব্র সমালোচনা) কিন্তু অনেকে করেছেন, ভাল আলোচনা হয়েছিল, সে থেকে শেখার অনেক কিছু আছে। এটাই ব্লগের ভাল দিক, অনেক সময় মূল লেখার চাইতেও হয়ত উত্তপ্ত আলোচনা থেকে আরো কিছু শেখা যায়। সফিকের সেই লেখা হজম করার মত বাস্তবতা আসলে আমাদের দেশে নেই, কোন কালে ছিল বলেও মনে হয় না। এখানে তেমন বলার অবকাশ নেই, শুধু বলি যে আমাদের মাঝে প্রকৃত গনতান্ত্রিক মানসিকতা থাকলে আজ জামাত শিবির কোন ফ্যাক্টর হত না, এ দলের সমর্থকদের মাঝে নেতাদের নিজ পরিবারের সদস্য ছাড়া আর কাউকে হয়ত পাওয়া যেত না।
নবী মোহাম্মদকে এক তরফা পঁচানো সংক্রান্ত যে অভিযোগ করেছেন সেটাও কিছুটা ওপরের সাথে সম্পর্কিত।
– মূল অভিযোগ সত্য। সেই ব্লগার আসলেই তেমন লেখা সিরিজাকারে লিখেছিলেন। তার সেই সিরিজে ছিল শুধুমাত্র ইসলাম এবং নবী মোহাম্মদ সমালোচনা।
কথা হল যে ধরেন উলটো কাজ যদি কেউ করে সে সম্পর্কেও কি একই রকমের মূল্যায়ন করবেন? মানে কেউ যদি নবী মোহাম্মদকে সর্বকালের শ্রেষ্ঠ মহাপুরুষ বানানোর লক্ষ্য নিয়ে বিশাল মহাকাব্য রচনা করে কেবল মাত্র ইসলাম এবং নবী মোহাম্মদ সম্পর্কে ভাল দিকগুলি আলোচনা করে? আপনি এতে যদি আপত্তির কিছু না দেখেন তাহলে কি সেই ২০ খন্ডের নবী পঁচানো মহাকাব্যতে আপত্তি করা খুব যুক্তিসংগত শোনায়?
আপনি কিভাবে ব্যাপারটা দেখবেন তা আপনার ব্যাক্তিগত দৃষ্টিভংগী, তবে আমি মনে করি যে দুই তরফের লেখকেরই স্বাধীনতা আছে উভয়ভাবে লেখার, যতক্ষন না তারা তাদের বক্তব্য প্রমানে অসততার আশ্রয় না নেয়; যেমন মিথ্যা কথা বলা, রেফারেন্স/অনুবাদ জালিয়াতি করা, জেনেশুনে সত্য গোপন করে যাওয়া এসব। আমি কেউ ২০ খন্ডের ইসলাম বা নবী বন্দনার লেখায় কোন আপত্তি করব না যতক্ষন না সে ভাবের আতিশায্যে তেমন কিছু করে, একইভাবে ইসলাম বা নবী সমালোচনাতেও আপত্তির কিছু দেখবো না যতক্ষন না একই ধরনের আলামত দেখতে পাই। অভিজ্ঞতা থেকে জানি যে উভয় পক্ষেই লোকজন এই কাজটি সচেতন ভাবেই করে থাকে। হ্যা, এদের কোন পক্ষ যদি দাবী করে যে তারা নিরপেক্ষ মূল্যায়ন করেছে তাহলে বলব যে তারা অন্ধবিশ্বাসী আর নয়ত ভন্ড মিথ্যাবাদী।
১৪০০ বছর আগে বিগত একজন মানুষের পেছনে লেগে থাকার আসলেই তেমন মানে হয় না। আমি নিজে ধর্মের প্রায়োগিক দিক সম্পর্কে বেশী আগ্রহ বোধ করি। ধর্মীয় সূত্রগুলিতে যাইই লেখা থাক, চুড়ান্তভাবে কৃতিত্ব কিংবা দায় আমি দেব ফলোয়ারদের ওপরেই, ধর্মের ওপর নয়। মানুষ ধর্মকে যেভাবে প্রয়োগ করে ধর্ম সেভাবেই প্রতিভাত হয়, ধর্ম আসলেই কতটা ভাল খারাপ তার গুরুত্ব তেমন নেই। যেমন ইসলাম ধর্মে তত্ত্বীয়ভাবে সনাতন ধর্মের মত জাতপাত নেই। অথচ বর্তমান যুগে সনাতন ধর্মের লোকেরা নয়, ইসলাম ফলোয়ার দাবীদাররাই শিয়া সুন্নী এমন জাত্যাভিমানের বশে নির্বিকার ভাবে একে অপরকে এমনকি মসজিদের ভেতরেও হত্যা করতে দ্বিধা করে না। নিরপেক্ষ মূল্যায়ন হল সনাতন ধর্মের লোকে তাদের ধর্মের এ বাজে দিক যেমন অনেকটাই ত্যাগ করতে পেরেছে তেমনি মুসলমান দাবীদাররা দিনে দিনে নিজেদের ধর্মে নেই এমন ভয়াবহ প্র্যাক্টিস শুরু করেছে।
তবে প্রায়োগিক দিক আলোচনা করতে হলেও অনেক সময় সরাসরি ধর্মগ্রন্থ কিংবা মহাপুরুষদের জীবনী আলোচনা করতেই হয়, উপায় থাকে না। কেউ ব্যাক্তিগতভাবে তার মহাপুরুষকে যা ইচ্ছে ভাবতে পারে আমার কোন অসুবিধে নেই, মুশকিল হয় সে যদি দাবী করে তার মহাপুরুষের যাবতীয় সব নির্দেশাবলী সকল সময়ে বিনা প্রশ্নে মেনে চলতে হবে তখন। তখন বাধ্য হয়েই আমাকে মহাপুরুষের দূর্বলতাও আলোচনা করতেই হবে।
মুক্তমনা বাংলা ব্লগ জগতে ইউনিক অবস্থান শুরু থেকেই পেয়েছিল প্রচলিত ধর্মীয় বিশ্বাসের বিরুদ্ধে লেখালেখির প্ল্যাটফর্ম হিসেবে। আমাদের সমাজে ধর্ম সম্পর্কে ভিন্নমত (সব ধর্ম সম্পর্কে নয় অবশ্যই) প্রকাশ কতটা কঠিন তা নিশ্চয়ই নিজেই জানেন। কাজেই যারা ভিন্নমত পোষন করে তারা এমন সুযোগ পেলে তা প্রকাশ করবেই। মুক্তমনায় ধর্মের সমালোচনা মূলক লেখাই বেশী আসবে এটাই স্বাভাবিক। এ কারনে ধর্ম সমালোচনামূলক লেখার ঢালাও সমালোচনা আমার কাছে মাঝে মাঝে একটু বাড়াবাড়িই মনে হয়। শুধু ধর্ম সমালোচনা করেছে বলে কেন গাল দিতে হবে? লেখায় কি ভুল বলেছে, মিথ্যা বলেছে সেটা ধরে যত খুশী গাল দেন।
বাংগালী মাত্রই অতি অবেগ প্রবন। আবেগ নিয়ন্ত্রনের ক্ষমতা আমাদের বেশ কম। এখানে আলোচিত দুজনার মাঝে যা হয়েছে তা এখানেই হঠাত হয়নি, ইতিহাস বেশ দীর্ঘ, আমি নিজেও পুরো জানি না। আর কিছু বলাটাও উচিত হবে না কারন আলোচিত একজন অন্তত অফিশিয়ালী আর এখানে নেই। আমি যতটা জেনেছি তাতে মনে হয়েছে যে সহজেই এটা এড়ানো যেত। শুধু এইটুকুই বলতে পারি যে এটা মুক্তমনার জন্য একটি দূঃখজনক কালো অধ্যায়।
@আদিল মাহমুদ,
ধন্যবাদ উত্তর দেবার জন্য। হ্যাঁ আসলে ঠিকই বলেছেন, তবে এই মনোভাব অর্জনের চেষ্টায় আছি। কিছুটা সময় লাগবে যেহেতু ব্লগ জগতে আমি একেবারেই নতুন। যদিও মুক্ত মনাতে লেখা পড়তাম মাঝে মাঝে, তবে অংশগ্রহণ করেছি অনেক পরে।
আসলে কি জানেন, আমি সফিক সাহেবের কথাবার্তার ধরনেই বিব্রত বোধ করি। আপনার হয়ত মনে আছে যে উনার ওই লেখাতে উনি প্রায় কাউকেই উনার সাথে আলোচনার যোগ্য বলে মনে করেন নি। অনেকেই ওখানে মতামত দিয়েছেন, কিন্তু বেশিরভাগ মানুষের তীব্র প্রতিক্রিয়াকেই উনি এড়িয়ে গেছেন, এবং তাদের প্রায় সবার সাথেই নাকি আলোচনা করে কোন ফল পাবেন না তিনি। মানুষকে তুচ্ছ্য তাচ্ছিল্য করাটা মোটেও উদার বা মুক্ত মনের মানুষের কাজ হবে পারে না, পারে কি ? 🙂
আমি কি একবারো সেটা বলেছি? মুহাম্মদ সাঃ কে মোটেই আমি সর্বশ্রেষ্ঠ মহাপুরুষ বলে মনে করি না। অন্তত পক্ষে কোরানের বেশ কিছু অসঙ্গতি, আর গাণিতিক ভুল, যা আমাকে রীতিমত অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছে। কাজেই এ নিয়ে স্টাডি করছি আস্তে আস্তে। তবে নিজের ধর্ম সরাসরি অস্বীকার করার সাহসটাও এখনও পুরোপুরি অর্জন করে উঠতে পারিনি। ওইযে শিশুকাল থেকে যেটা মাথায় ঢুকে গেছে, সেটা কি করে এত সহজে বের হবে বলেন! বর্তমানে মুসলিম জাতি মুহাম্মদ সাঃ কে মানুষ থেকে অতিমানব পর্যায়ে নিয়ে গেছে, আর এমনই ঝামেলা যে এর বাইরে চিন্তা করতে বা কোন কথা বলাটাই মুশকিল।তবু ইসলামের নানা কড়া বিষয় আর কিছু নিয়ম কানুন যা কিনা বর্তমানে কতটা চালানো যাবে আমার সন্দেহ আছে,। তবে একই কথা সব ধর্মের নিয়মের ক্ষেত্রেই খাটে।
আর তাছাড়া নবীজির ১৩ বিয়ে নিয়ে, বিশেষ করে আয়শার মত শিশুকে বিয়ে করা নিয়ে আমার প্রথম থেকেই ঘোরতর আপত্তি ছিল। এরকম অনেক কথা আছে যা বলতে গেলে অনেক সময় লাগবে।
কাজেই ইসলাম তথা মুহাম্মদের ইতিবাচক আর নেতিবাচক দিক, সবকিছু সম্পর্কেই গঠন মুলক আলোচনার প্রয়োজনীয়তা আমি কোনদিন অস্বীকার করি নি।সত্যি বলতে কি এসব নিয়ে আমি ভাবতে বসি প্রথমে আকাশ মালিকের একটা লেখা পড়ে ( মেলাদিন আগে) যেটার নাম “ইসলামের জন্ম বিকাশ ও প্রাসাদ ষড়যন্ত্র” ।
এছাড়াও নাস্তিকের ধর্ম কথা নামের এক ব্লগারের লেখা পড়েছিলাম, ইসলাম ও মুহাম্মদ কে নিয়ে, এবং যাকির নায়েক ও নারী মনে হয় এই টাইপ কিছু। দেখেন কোন লেখাতেই কিন্তু আমি তীব্র ব্যক্তিগত আক্রোশ পাইনি, পেয়েছি গঠন মুলক সমালোচনা। যা আমাকে অনেক কিছু ভাবতে বাধ্য করেছে। উদারপন্থী হিসাবে আমার যাত্রা শুরু হয় প্রথমে আমার বিবেক কে প্রশ্ন করে। আর তারপর আমার স্বপক্ষে আরো কিছু মতামত আশা করার জন্যেই গুগল সার্চ দিতাম ইসলামের ভুল ত্রুটি এসব নিয়ে। স্বপক্ষের মতামত খুজছিলাম এক্টাই কারনে যে, আমার চারপাশ কে মোকাবেলা করতে হলে আমার এমন কিছু দরকার ছিল। একে তো একা একা, দুইয়ে সীমিত জ্ঞান নিয়ে কোন আলাপ আলোচনা করা যায় না কেউ চ্যালেঞ্জ করে বসলে।
তাই আমি আসলেই একটা বাংলা ব্লগ খুজছিলাম ( কারন কথাবার্তা চালাবার মত ইংরেজী জানলেও আমি ইংরেজীতে এতটা ভাল নই যে বাংলার মত করে ইংরেজী আর্টিকেল বুঝব) , তারই ফলে আমি মুক্ত মনার খোঁজ পাই কয়েক বছর আগে।
তবে পরবর্তিতে যখন সমালোচনার পরিবর্তে শুরু হয় কাদাছোঁড়াছুঁড়ি আর একটা মাত্র ধর্মকে আক্রমন, আর যাবতীয় সন্ত্রাসের আখড়া বলে প্রচার করা, আর কেউ চ্যালেঞ্জ করলে এড়িয়ে যাওয়া, আর মোটামুটি কপি পেস্ট করে সাথে নিজের অল্প কথাকেই যোগ করতেন ওই ব্লগার। অনেকেই এমন অভিযোগটা তুলেছেন বলেই মনে হচ্ছে, কিন্তু মনে হয় না কেউ চ্যালেঞ্জ করে জবাব পেয়েছেন। সেই মহাকবি চান যেন তাঁর লেখাকে বিনা প্রশ্নে মেনে নেয়া হয় ( আমার এমনই মনে হয়েছিল), আর এতেই আমার আপত্তি। কোরান, বাইবেল, বেদ কোন কিছুকেই যদি বিনা প্রশ্নে মেনে না নেই, তবে একজন ব্লগারের লেখাকে কেন মেনে নিতে হবে বলতে পারেন?
এগুলোই আমার আপত্তির কারন ছিল। কিন্তু বুঝতে পারছিলাম না যে কি বলব, তাই সেইসব বিতর্কে অংশ নেয়া থেকে বিরত ছিলাম 🙂 । আবুল কাশেম নামের এক ব্লগারের লেখাতেও মুহাম্মদ বিদ্রুপ আর মুহাম্মদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ দেখেছিলাম, সেটাও মোটামুটি এক তরফাই ছিল, তবে ভদ্রলোক ব্যাপারটাকে অন্ধ ব্যক্তি বা জাতি বিদ্বেষের পর্যায়ে নিয়ে যান নি, এবং কেই চ্যালেঞ্জ করলে উত্তর দেয়ার চেষ্টা অন্তত করতেন, না পারলে পরে দেবেন বলে জানাতেন, এবং অনেক ক্ষেত্রে দিতেন বলেও মনে পড়ে। উনাকে অনেকদিন দেখি না এখানে।
ভবঘুরের ব্যাপারটা ছিল পুরাপুরি ভিন্ন ( আমার তাই মনে হয়েছে), ভদ্রলোক নিজেকে নির্ভুল ভাবতে ভালবাসতেন বলেই ওই দাবড়ানী টা খেয়েছিলেন বলেই মনে হয়। আর আগেই যেমন বললাম যে উনাকে করা প্রশ্ন উনার মনপুত না হলে জবাব দেয়ার দরকার মনে করতেন না। এই উন্নাসিক মনোভাবের জন্য আমি উনাকে দোষ যতটা না দেই, তার চেয়ে দশদেই তাঁর কিছু রেজিস্টার্ড সমর্থক বা মোসাহেব কে, যারা ভবঘুরের প্রশংসা করতে করতেই তার এই অবস্থা করেছিলেন বলে মনে হয়। এই শিশ্য দের মধ্যে একজনের নাম বিশেষ ভাবে মনে পড়ে বলেই লিখেছিলাম।
আমি শতভাগ একমত। এবং এটা উত্তরোত্তর বেড়েই চলেছে। আজ থেকে ২০ বছর আগেও মুসলিমদের ধর্মান্ধতা এত ভয়াবহ ছিল বলে মনে হয় না। আমার কেন জানি মনে হয় যে তারো আগে আরো কম ছিল।
বেগম রোকেয়ার যুগটাই ধরেন না কেন। আপনার কি মনে হয় না যে যদি এই যুগে রোকেয়া তাঁর লেখাগুলি লিখতেন তবে তার পরিনতি অতি ভয়াবহ হতে পারত? সামান্য একটা কৌতুক “মুহাম্মদ বিড়াল” নিয়ে যে কি লঙ্কাকান্ড হয়ে গেছে, আমরা কেউ সেটা ভুলি নি!
আমি মনে করি যার ধর্মবোধ যত ঠুনকো, তারটাই আহত হয় সবচেয়ে বেশি। মুসলিমদের মধ্যে বেশিরভাগের মধ্যে ধর্মান্ধতা যে প্লেগের মত ছড়াচ্ছে এর কারন বোধহয় এটাই যে মুসলিমরা এক ধরনের হীনমন্যতায় ভুগছে। অথচ এই ধর্মান্ধদের বিরাট একটা অংশের মধ্যেই কিন্তু নামাজ রোজা করার কোন প্রবনতাই নেই। দিন দিন, মুসলিমদের বৃহত্তর অংশ ধর্ম কর্মে বাদ দিয়ে, অন্য ধর্মের লোকদের নিগ্রহ করার কাজেই মন দিয়েছে বেশি, যা কিনা মোটেও শুভ লক্ষন নয়।
কিন্তু আমার আপত্তি শুধু এক জায়গাতেই আর সেটা হল যে ইসলাম তথা মুসলিম চাবকানো কেন যেন মাঝখানে একটু বেশিই হচ্ছিল, এবং একতরফা সিঙ্গেল আউট করা হচ্ছিল ইসলামকে।
কেউ যদি কাউকে ভাল পথে আনতে চায়, তবে কি তাকে এই অমুকের বাচ্চা তুই খারাপ রাস্তায় আছিস, ভাল হয়ে যায়, এই টাইপ কথাবার্তা বলে যে কাউকেই ভাল না করে আরো খারাপ করে দেয়া হয়, সেটা আপনি অবশ্যই জানেন। আর তাই আপনাদের মত কিছু লেখক যেভাবে মানুষ কে কোন কিছু নিয়ে চিন্তা করাতে পারবেন, মনে হয় না হেইটফুল ব্যক্তি রা সেটা পারবে।
তামান্না ঝুমু,
আপনার লেখাটায় বেশ ক’দিন ধরে মন্তব্য করব করব করেও করা হয়নি। আজ করছি। অবশ্য আমি মন্তব্য করার আগে অনেকেই মন্তব্য করেছেন এবং এ নিয়ে ভাল একটি আলোচনার সূত্রপাত ঘটিয়েছেন। এধরণের আলোচনা প্রয়োজন। আমাদের এগুনোর স্বার্থেই।
বাংলাভাষা আসলে ভয়াবহভাবেই পুরুষতান্ত্রিক। আমরা পুরুষেরা খুব স্বাভাবিকভাবেই নেই, কোন ধরণের প্রশ্ন ছাড়া। প্রথম ধাক্কা খেয়েছিলাম তসলিমা নাসরিনের বই ‘আমার মেয়েবেলা’ দেখে। সত্যই তো সবসময়ই কেবল ‘ছেলেবেলা’ শুনে এসেছি নারী পুরুষ নির্বিশেষে। কিন্তু মেয়েদের জন্য ‘মেয়েবেলা’ হওয়াটাই তো সমীচীন।
অবশ্য এ ধরণের ব্যাপার সব ভাষাতেই আছে। কিছু কিছু শব্দের শিকড় এতোটাই গভীরে প্রোথিত যে, উপড়ানো মুশকিলই হয়ে যাবে। যেমন, ইতিহাসের ইংরেজি শব্দটি – History। কেন এটা his story হল কে জানে। হয়তো প্রাচীন যুগে বর বড় রাজ রাজাদের তুষ্ট করতেই এই ‘ইতিহাসের বিকৃতি’। কিন্তু এটাকে Herstory তে রূপান্তর করা যাবে বলে মনে হয় না। 🙂 কিন্তু যেটা করা যায় নতুন জেন্ডার নিরপেক্ষ শব্দ তৈরি করে প্রচলন ঘটানো, যা আপনি করছেন।
তৃতীয় লিঙ্গের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি নিয়ে লিখতে গিয়ে (আমার শেষ পোস্টটি দেখতে পারেন) বাংলা ভাষার জেন্ডার নিরপেক্ষ শব্দের দীনতা আরো স্পষ্ট করে চোখে পড়ল। কিন্তু তারপরেও চেষ্টা করে যেতে হবে। সেই সদিচ্ছাটা বজায় থাকুক।
@অভিজিৎ,
আপনি এই আলোচনায় যোগ দেয়ায় খুবই খুশী হয়েছি। এখানে কিছু গুরুত্বপূ্র্ন বিষয়ে যদি আলোকপাত না করা যায় তাহলে একটি বৈজ্ঞানিক এবং যুক্তিবাদী ফোরাম হিসেবে মুক্তমনার প্রতি অবিচারই করা হবে । মুক্তমনা সব সময়ই পলিটিক্যাল কারেক্টনেসের চেয়ে , লজিক্যাল এবং সাইন্টিফিক কারেক্টনেসকে গুরুত্ব দিয়ে এসেছে ।
নারীবাদের মত সামাজিক-রাজনৈতিক মতবাদ দিয়ে যেমন প্রাণের বিবর্তনের মত অত্যন্ত জটিল জৈব প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা করা সম্ভব নয় , তেমনি সম্ভব নয় প্রাণীদের আচরণ সমূহকে ব্যাখ্যা করা , বিশেষ করে আধুনিক জীব বিজ্ঞানের এই যুগে। আপনার বহুল আলোচিত সমকামিতা থেকে শুরু করে প্রাণীদের সমস্ত আচরণ কিন্তু আসলে প্রকৃতিতে তাদের অভিযোজন এবং সেসব অভিযোজনের নিরিখে প্রাকৃতিক নির্বাচনের ফলাফল !
ভাষা কিন্তু প্রাণীদের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অভিযোজন , এমনকি এই অভিযোজন কোন কোন প্রাণীর বিশেষ করে প্রকৃতিতে টিকে যাওয়ার বা না যাওয়ার ক্ষেত্রে মুখ্য ভুমিকা পালন করে আসছে। ভাষা প্রাণী জগতে মানুষের একক সম্পত্তি নয় যেহেতু বিজ্ঞান আমাদের দেখিয়েছে যা অন্যান্য প্রাণীদের মধ্যেও ভাষার প্রচলন আছে। এসব জানতে এবং বুঝতে হলে আমাদের নির্মোহ হতে হবে , রাজনৈতিক প্রপাগান্ডা পরিত্যাগ করে history চর্চা করতে হবে যার উৎপত্তি গ্রীক শব্দ historia ( ইস্তোরিয়া) যার আভিধানিক অর্থ অনুসন্ধান থেকে অর্জিত জ্ঞান। :))
আমরা আশা করি যে , মুক্তমনার চেতনা সমুন্নত রাখার স্বার্থে এখানে রাজনৈতিক মতবাদের চাইতে বস্তুনিষ্ট, নির্মোহ যৌক্তিক জ্ঞানের চর্চাকে উৎসাহিত করা হোক। এটা না করা মুক্তমনা বিভিন্ন মৌলবাদী মতবাদের কাঁদা ছোড়াছুড়ির জায়গায় পরিনত হবে যা অগনিত শুভাকাঙ্ক্ষীরা কামনা করেন না।
@অভিজিৎ,
ছেলেবেলা ও মেয়েবেলা এই দুটি শব্দের জন্য “ছোটবেলা” শব্দটি লিঙ্গনিরপেক্ষ শব্দ হিসেবে ব্যবহার করা যায় কি? আমি সাধারণত ছোটবেলাই বলে থাকি।
ইংরেজি ভাষায় অনেক লিঙ্গনিরপেক্ষ শব্দ তৈরি করা হয়েছে, এবং ব্যবহৃত হচ্ছে কোনো সমস্যা ছাড়াই। বাংলা ভাষায় এ রকম শব্দ তৈরি করা হলেও ব্যবহারে কোনো সমস্যা হবে বলে মনে হয় না। এ জন্য ভাষাবিজ্ঞানীদের সদিচ্ছার সাথে সাথে আমাদের মতন সাধারণ মানুষেরও দরকার এর দাবী উত্থাপনের। তৃতীয় লিঙ্গের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি আমারা অর্জন করেছি। অনেক পরে হলেও এটা একটা বিরাট অর্জন। তাই আমাদের এমন লিঙ্গনিরপেক্ষ শব্দ প্রয়োজন যা সকল লিঙ্গের ক্ষেত্রেই ব্যবহৃত হতে পারে।
@ তামান্না ঝুমু,
একটু ভুল হয়েছে ” আয়েশী” নয় শব্দ টা “আয়াসী “
@ তামান্না ঝুমু,
আপনার অভিযোগ গুলি ঠিক। তবে সময়ের সাথে সাথে অনেক শব্দের অর্থ বদলে যায়। যেমন গন্ডগ্রাম বলতে আমরা বুঝি অনুন্নত গ্রাম। কিন্তু এর আসল মানে হলো বর্ধিষ্ণু গ্রাম। আয়েশী শব্দ বলতে আমরা বুঝি যে আরাম প্রিয়। আসল মানে কিন্তু যে কষ্ট সহিষ্ণু। আবার স্বামী কথাটার মানে হলো মালিক ( ভূস্বামী , গোস্বামী ইত্যাদি ) । কিন্তু যখন কোনো মহিলা কাউকে নিজের স্বামী বলে পরিচয় দেয় তখন সে আসলে বলতে চায় ‘এই বাক্তি আমার জীবন সাথী, বন্ধু অথবা অন্য কিছু’। কিন্তু কখনই মালিক নয় ।এইভাবে আপনার উল্লেখিত সব সব্দেরই অর্থ বদলে গেছে অথবা আসল অর্থের প্রাসঙ্গিকতা হারিয়েছে। পুরনো দিনে অনেক কিছুই হয়ে ছিল। আজ আর সে কথা ভেবে কষ্ট পাবেন না।
@Anindya Pal,
ঠিকই বলেছেন। অভিযোগ অনুযোগ করে তো ক্ষতের বেদনা বাড়িয়ে আর লাভ নাই বরং ওষুধ-পথ্যের সন্ধান করাই উত্তম। সারা বিশ্বজুড়েই সকল ভাষায় আমার মনে হয় এই চেষ্টা চলছে। খুবই সতর্কতা অবলম্বন করা হয় বিশেষ করে কর্মক্ষেত্রে। পরিবর্তন আসবে সর্বত্রই সব দেশেই। কিছুটা হচ্ছে একবচনের জায়গায় বহুবচন শব্দ দিয়ে আর অনেক জায়গায় হচ্ছে পেশার পূর্বে মহিলা বা নারী শব্দ ত্যাগ করে। ‘নারী ডাক্তার’ বা ‘মহিলা শিক্ষক’ এ রকম শব্দ একসময় আর ব্যবহার হবেনা। ছেলেবেলার জায়গায় ছোটবেলা বা ছোটকালে ব্যবহার হবে। শুনা যায়, নিল আর্মষ্ট্রং ১৯৬৯ সালে চাঁদে প্রথম পা রেখে বলেছিলেনঃ
“That’s one small step for man, one giant leap for mankind.”.
তিনি যদি এখন বা এই সময়ে চাঁদে যেতেন আশা করা যায় তিনি বলতেনঃ
“That’s one small step for a person, one giant leap for humanity.”
@আকাশ মালিক,
Hupersonality হবে তো শব্দটি!
@তামান্না ঝুমু,
এত আলোচনা উদাহরণ উপমা আসার পরেও আপনি এখনও হিউপার্সন শব্দতে আছেন? human শব্দের hu থেকে man কে আলাদা করে hu-man হিসেবে দেখছেন বলেই কি আপনি কনফিউজড? coward শব্দে (cow+ ard) আপনি কি গাভী দেখেন কিংবা person শব্দে (per+son) পুত্র ? তাহলে চেয়ারম্যানকে চেয়ারপার্সন, হিউম্যানকে হিউপার্সন করে লাভটা হল কী? পুত্র তো রয়েই গেল। সময়ের পরিবর্তনে কিছু কিছু শব্দ কীভাবে তার অর্থের প্রাসঙ্গীকতা হারিয়েছে, আর কিছু শব্দ কীভাবে এখন উভয়লিংগ বুঝায় তা উপরের কিছু মন্তব্যে আপনি নিশ্চয়ই ধরতে পেরেছেন।
আপনি চণ্ডীদাস, সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত, জীবনান্দ, রবি ঠাকুর কাউকেই ছাড় দেন নি ভাল কথা। ভাষা আবিষ্কারকদেরকে ধিক্কার দিয়ে বলেছেন –
বর্বর আমল শব্দটা ব্যবহার করা কি সমীচীন হলো? আচ্ছা, লৈঙ্গীক ভাষা ব্যবহারের জন্যে আপনি রবীন্দ্রনাথকে দায়ী করেছেন। ‘মরিতে চাহি না আমি এই সুন্দর ভুবনে/ মানবের মাঝে আমি বাঁচিবারে চাই’। আমি তো ধরে নিয়েছি তিনি এখানে নারী-পুরুষের মাঝেই বেঁচে থাকতে বুঝায়েছেন। রবি যদি লিখতেন- ‘মরিতে চাহি না আমি এই সুন্দর ভুবনে/ মানবীর মাঝে আমি বাঁচিবারে চাই’। আপনার ভাল লাগতো? আপনিই সাজেসন করুন না রবি এখানে কী শব্দ ব্যবহার করলে লিঙ্গবৈষম্য থাকতোনা। আর মানবপ্রীতি, মানব-সমাজ, মানবধর্ম, মানবজীবন ইত্যাদি শব্দগুলোর লিঙ্গনিরপেক্ষ শব্দ কী হতে পারে?
@তামান্না ঝুমু,
আপনি নিজেও মনে হয় ভাল করে লক্ষ করেননি যে woman এর ভিতর man শব্দটি খুব দৃষ্টিকটু!human এর man এর চেয়েও অনেক অনেক বেশি পুরুষতান্ত্রিক! সেক্ষেত্রে সবচেয়ে আগে তো এটার ব্যবস্থা করা দরকার!!
@দারুচিনি দ্বীপ,
এটা ভালো বলেছেন। সে জন্যই ত আমি বলেছিলাম শব্দটি huperson হলে ভালো হতো।
@দারুচিনি দ্বীপ,
নারীবাদীরা বহু আগে থেকেই Woman-Women এর বিকল্প বানান প্রস্তাব করেছেন। Woman এর জন্য তাঁদের পছন্দের বানান হচ্ছে Womon আর Women এর জন্য Womyn.
Woman শব্দটি এসেছে পুরোনো ইংরেজি শব্দ Wifmann থেকে। এর মূল শব্দ Mann বা Monn. এই Mann বা Monn human বোঝাতে ব্যবহৃত হতো। সেই সময় এই Mann বা Monn শব্দ দুটো লিঙ্গ-নিরপেক্ষে ছিল। wifmann মানে হচ্ছে Female Human. পুরুষদের জন্য Wer ব্যবহৃত হতো। Man শব্দটি পুরুষবাচক কর্তৃত্বপরায়ন শব্দে রূপ নিয়েছে অনেক পরে। নীচে দেখুন অনিন্দ্য পাল উল্লেখ করেছেন যে সময়ের সাথে সাথে একই শব্দের অর্থ ভিন্নতর হয়ে যায়। এখন যেমন কবি, লেখক, পাঠক এই শব্দগুলো পুরুষবাচক হওয়া সত্ত্বেও লিঙ্গ-নিরপেক্ষ চরিত্র ধারণ করে ফেলেছে।
@ফরিদ আহমেদ,
আসলে আমিও বলতে চেয়েছিলাম যে অনেক শব্দই সময়ের সাথে লিঙ্গ নিরপেক্ষ চরিত্র ধারন করেছে, অথচ লেখক সেই ব্যাপারে কোনপ্রকার আমল দিতে চেয়েছেন বা এখনো চাইছেন বলে মনে হচ্ছে না। আর এই কথাটাকেই আমি সহজ করে বলতে না পেরে, সাথে একটু মজা করতে গিয়েই ঝামেলাটা বাধিয়েছিলাম 🙂 ! তবে আপনার এই মন্তব্যের পর ( যেমন যেসব বিকল্প বানান আপনি তুলে ধরেছেন) লেখক নিজেও হয়ত পরে উপকৃত হয়ে এবং আরো কিছু রিসার্চ করে একই চেতনার, কিন্তু শক্তিশালী লেখা উপহার দিতে পারবেন আমাদের পাঠক কুল কে, সে প্রত্যাশা রইল লেখকের প্রতি।
যাহোক, কায়সার ইমরান সাহেবের কথা আমি তেমনটা আমলে নেইনি,যেমনটা আপনার কথা কে নিয়েছি, কারন কেন জানি আমার মনে হয়েছে যে ইমরান সাহেব আমাকে শুধুই ওই কথা ( পুরুষ তন্ত্রের প্রতিভু) বলেছেন নিজের দিকে আমার কথাটি চলে যাবার কারনে , আমার এটাই মনে হয়েছে যে আমার প্রতি উনার প্রতি মন্তব্যের কারন এটাই নিজের দিকে অন্যের মন্তব্য ছুটে যাওয়াতে উনি ব্যক্তিগত ভাবেই আমাকে এই অপবাদ দিয়েছেন; পুরুষবাদ, নারীবাদ বা মানবতা বাদ নিয়ে তাঁর মনে হয় কোন মাথা ব্যাথাই নেই।
( অবশ্য আমার ভুলও হতে পারে ইমরান সম্পর্কে ধারনা, যেহেতু তার কোন লেখা বা মন্তব্যের সাথে আমি পরিচিত নই)।
তবে আপনার কথা ভিন্ন ফরিদ সাহেব। কারন আগেই বলেছি যে, কেন আমি আপনার বা আপনাদের মত কিছু মানুষকে বিশেষ ভাবে শ্রদ্ধা করে থাকি।
আর তাই নিজের কথাগুলি নিয়ে আবার ভাবতে বসি, এবং নাড়াচাড়া করি, ফলে নিজের ভুলত্রুটি গুলো সহজেই শুধরে নেবার একটা অসাধারন অনুপ্রেরনা হিসাবে যেটা কাজ করে :-)।
আবার আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ আমার ভুল ধরিয়ে দিয়ে নিজেকে গঠন করার পথে এগিয়ে নিতে সাহায্য করার জন্য (F) !
@তামান্না ঝুমু,
আমি অভিভূত! সত্যি খুবই হাস্যকর ভয়াবহ পুরুষতান্ত্রিকতা;ভাল জিনিসের পাশাপাশি মন্দ জিনিসেও। যেমন ধরেন “কাপুরুষ”! এখানে মেয়েদের কি দাবী করা উচিত?শুধুই ভীতু লিখতে হবে, নাকি কা মহিলা বা কা=নারী টাইপ কিছু আসতে পারে বলে মনে করেন আপনি? পুরুষের পাশাপাশি নারীর নামেও বিশেষণ দাবী করছি আমি।
অবশ্যই পারে, আর পারতেই হবে! যেমন coward এর পাশাপাশি bullard শব্দ টি হতে হবে, আমি কি নারী যে cow হব? human যদি huperson হতে পারে, তবে coward কেন bullard হবে না? উপরে দেখেন সংশপ্তক সুন্দর একটা মন্তব্য করেছেন! আপনার দাবি অনুসারে Human যদি Huperson হয় তবে coward অবশ্যই bullard হতে বাধ্য;শব্দ না থাকলে আমরা বানিয়ে নেব!
নাহ খুবই যন্ত্রনার মধ্যে ফেলে দিলেন দেখছি, উপরে কিছু উত্তর দিয়েছি, আর পারছি না। সেক্ষেত্রে আপনি বিকল্প কিছু সাজেস্ট করেন না কেন?
আচ্ছা আপনাকে কি বলব ম্যাডাম নাকি স্যার ( জনাবা বলা যাবে না জানি, কারন ওটি যে জনাবেরই নেতিবাচক পুরুষতান্ত্রিক শব্দ :-Y ) , সেটা দয়া করে জানিয়ে বাধিত করবেন, ভয় হয় পাছে পুরুষতান্ত্রিক শব্দ প্রয়োগ করে আপনার কাছে বিতৃষ্ণার পাত্র হয়ে পড়ি কিনা!!
বিশ্বাস করেন আপনি নিজেই রবীন্দ্রনাথের ২য় শ্রাদ্ধ করে ছেড়ে দিতেন, যদি তিনি মানবীর মাঝে বাচিবারে চাইতেন। মহা যন্ত্রণা দেখছি, ডাইনে গেলেও বিপদ বাঁয়ে গেলেও, এইবার উপরের দিকে চাই, সেইদিকেও দেখির বাঁশের লাঠি, ঠিক যেন কবরে ঢুকেছি!! বেরুবার পথ নাই হায়রে মানব জাতি! আচ্ছা এখানে কি মানুষ বললে আপনি খুশি হবেন? কিন্তু সেকি সেটাও যে পুরুষ বাচক
সেক্ষেত্রে হোমো স্যাপিয়েন্স জাতি?আপনি মানবেন কি?
@দারুচিনি দ্বীপ,
হোমো স্যাপিয়েন্স শব্দটি আমাদের বৈজ্ঞানিক নাম। এটা কি আমরা যে কোনো ভাষাতেই সাধারণত ব্যবহার করি? পুরুষবাচক শব্দেই সমগ্র হোমো স্যাপিয়েন্স জাতির পরিচয় কেন?
@তামান্না ঝুমু, কি আর করা বলেন? শব্দতো পেতে হবে!! আমি যেটাই লিখব সেটার সাথেই কিছু না কিছু যোগ করে স্ত্রী বাচক শব্দ করা সম্ভব। যেমন দারুচিনি দ্বীপ এর স্ত্রী লিঙ্গ হতে পারে দারুচিনি দ্বীপা:-O
সেজন্যই তো পরিবর্তনের কথা বললাম! কিন্তু শব্দ না পেলে বৈজ্ঞানিক নাম ব্যাবহার ছাড়া তো আর উপায় দেখছি না আমি। এখানেও লিং পরিবর্তন করা যায়, human যেমন huwoman হতে পারে, তেমনি Homo sapiens কেও পুরুষ ধরে Homo sapiensa বা Homa sapiens করতে বাধা কিসের?তাহলে? লিঙ্গ নিরপেক্ষ কিভাবে হবে, যেখানে human লিঙ্গ নিরপেক্ষ নয় আপনার ভাষায়,সেখানে Homo sapiens ও নিরাপদ নয় আর, কাজেই সাবধান!
@দারুচিনি দ্বীপ,
দ্বীপ কিন্তু স্ত্রীলিঙ্গ! যেমন পৃথিবী, চন্দ্র, নদী ইত্যাদি স্ত্রীলিঙ্গ। আপনার বলার ধরন দেখে আপনাকে পুরুষ মনে হচ্ছে।অবশ্য আমার ধারণা ভুলও হতে পারে। যদি পুরুষ হয়ে থাকেন তবে একজন পুরুষ হয়েও আপনি স্ত্রীবাচক নাম নিলেন যে! এটা খুব ‘ইঁচড়ে কাঁচামী’ হয়ে গেল না! :-s :-s
আবারও একটু ইঁচড়ে পাকামো করে ফেললুম আর কি!
@তামান্না ঝুমু,
তাতে কি? এটা কোন লিঙ্গের সেটা আমি না ভেবেই নিয়েছি। আচ্ছা একটা উপন্যাসও কি স্ত্রী লিঙ্গ হতে পারে? মনে হয় না! আপনি কি এই লিঙ্গ অবসেসন থেকে বের হতে পারবেন না, নাকি বের হতে চাইছেন না? বের হতে না চাইলে তো আর কিছুই বলার থাকে না। একই ধুয়া যে বার বার তুলছেন বুঝতে পারছেন কি? আমি তো পরিষ্কার ভাষায় জানিয়ে দিয়েছি যে এইসব টুকিটাকি বিষয় নিয়ে ভাবি না আমি ( আপনি ভাবুন তাতে সমস্যা কি আমার?), আর তাই নাম নেয়ার আগে ভাবি নি যে এটা স্ত্রী না পুরুষবাচক ধন্যবাদ!
এইভাবে আবেগপ্রবন হয়ে পড়ছেন কেন? এতে তো নারী অধিকার আন্দোলন শুরুতেই মার খেয়ে যাবে! আবেগটা কমিয়ে বাস্তববাদী হয়েই কি কাজটা করা সহজ হবে না মেয়েদের জন্য?
@দারুচিনি দ্বীপ,
এই লেখাটিই যে ভাষায় পুরুষাধিপত্য বিষয়ক! কাজেই এই পোস্টে তো লিঙ্গ অবসেসন থেকে বের হতে চাওয়ার প্রশ্নই অবান্তর! একই ধুয়া বার বার তুলবোই তো। শুধু একটা বিষয়েই এই পোস্টিটি লেখা কিনা।
ইঁচড়ে পাকামোতে আপনি আবার আবেগ কোথায় দেখলেন? একেবারে বাস্তববাদী ইঁচড়ে পাকা হয়ে পড়ছি।
@তামান্না ঝুমু,
শুনুন, নিজের ডিফেন্সে একজন মহীরুহকে (ফরিদ আহমেদ) পেয়েছেন আর তাই আমাকে ব্যাকফুটে বাট করতে হচ্ছে, এতে দয়া করে আপনিও ফরিদের মত বাউন্সার দিতে যাবেন না দয়া করে, কারন বাউন্সার দিতে আপনি মোটেই পারদর্শী না, সেটা আপনার উন্নত চেতনা সম্বলিত অসম্ভব দুর্বল লেখাটি দেখেই বুঝেছি। সেক্ষেত্রে আপনাকে আমি ফ্রন্টফুটে এসেই খেলবো; যদিও ব্যাকফুটেই বাউন্সার খেলা হয়, তবে আপনি বাউন্সার দিতে চেষ্টা করে ব্যার্থ হয়েছেন, তাই এটাকে ব্যাকফুটে যেয়ে মোকাবিলা করার দরকার নেই।
ধুয়া আপনি তুলতে চান তোলেন। তবে যথেষ্ট রিসার্চ না করে লিখেছেন, এবং সাথে যদি একই ধুয়া বারবার তোলেন, তবে সেটা আরো হাসির খোরাক যোগাবে।
ঠিক বিষয়টির চেতনার ব্যাপারটি আপাতত উহ্য রাখছি। এর পরে যেটা বলা যায় সেটা হল, যদি একটা বিষয় নিয়ে লিখতে চান, তবে সেটা সম্পর্কে পুরাপুরি না হলেও কিছুটা জ্ঞান বিয়ে তার পরে লিখুন, না হলে হাসির পাত্রই হবেন।অন্য ভাষা শেখার দরকার নেই, আপনি ইংরেজী ভাষাকেই যেভাবে কাটা ছেঁড়া করেছেন সেটা যে কতখানি কাঁচা কাজ হয়েছে বুঝেন না? Human কে Huperson, Woman এর পাশাপাশি Huwoperson, অথচ woman এর man আপনার চোখে পড়েন নি।
তেমনি আপনার পুরা লেখাতেই অনেক হাস্যরসের উপাদান আছে, যা নিয়ে ঠাট্টা বিদ্রুপ সবই করা যায়। কাজেই পোষ্টের বডিটা যখন স্থুল ভুলে ভরা থাকে, সেখানে পোষ্টের বিষয় নিয়ে এত গৌরব করার কারন দেখি না। আম, জাম, কলা, কাঠাল নিয়েও এরকম মেলা লেখা ছাড়া যায়। আপনি তো কবি। কবিতার ভাব আনতে গিয়ে হাতিকে যদি আকাশ দিয়ে উড়ান তাহলেই হয়েছে। অবশ্য কবিতার ভাব আনতে গিয়ে এটা করতেও পারেন।
আপনার লেখাটা হয়েছে এমন এক রচনার মত,যেখানে চেতনাটা খুবই উচু মানের, কিন্তু যেটা নিয়ে রচনা লেখার জন্য আপনার যোগ্যতার মাপকাঠি নিয়ে প্রশ্ন করার অবকাশ আপনি নিজেই অনেক বেশি মাত্রায় রেখে দিয়েছেন।
@দারুচিনি দ্বীপ,
নারীকে নারী, এবং পুরুষকে পুরুষ বলতে হবে, অথবা লিঙ্গনিরপেক্ষ শব্দে বলতে হবে সেটা যে কোনো ক্ষেত্রেই হোক না কেন। কা, খা, গা, ঘা, ঙা ইত্যাদি সকল বিষয়েই নারী নারীই, পুরুষ পুরুষই অথবা উভয়েই লিঙ্গনিরপেক্ষ। তবে লিঙ্গনিরপেক্ষতাই বেশি গ্রহণযোগ্য ও কাঙ্ক্ষিত।
জি না। আমি তাতে বরং আহ্লাদিতই হতাম বেশি। কারণ আমিও যে মানবী জাতির অন্তর্ভুক্ত। রবীন্দ্রনাথ নিজেও অসংখ্য শব্দ তৈরি করে বাংলা ভাষাকে সমৃদ্ধ করেছেন। তিনি মানুষ বা মানব’ এর কোনো লিঙ্গনিরপেক্ষ শব্দ চাইলেই তৈরি করতে পারতেন।
@তামান্না ঝুমু,
সেটা তো মনে হয় না। কবি হিসাবে ইতিমধ্যেই কবিগুরু লম্পট আখ্যা পেয়ে গেছেন, নারী প্রীতির কারনে। নজরুল ও ব্যতিক্রম নন। কবিরা হয়ত এমনই হয়! সেখানে জীবনে যেহেতু অনেক মানবীর সংস্পর্শে এসেছিলেন কবিগুরু, সেখানে যদি মরার পরেও রমণীদের মধ্যেই বাঁচতে চাইতেন তবে পুরুষ জাত তো বটেই, নারীবাদিরাও তাকে ছেরে দিতেন না, যেমন হুমায়ুন আজাদ দেন নি! ধন্যবাদ!
ভালো কথা…… তবে কি নারীবাদ এবং নারী অধিকার জিনিষটা একটা সার্বজনীন বৈশ্বিক ব্যাপার – শুধু বাংলা-ইংরেজির মধ্য সীমাবদ্ধ নয়। এমন একটি সার্বজনীন ব্যাপারে লেখার আগে অন্তত ২০-৩০ টা বৃহৎ, মাঝারি এবং ক্ষুদ্র ভাষা থেকে একটু উদাহরন দিলে ভালো হত। একটু কষ্ট হত বৈকি – একটু সময় লাগতো; তবে তার জন্য নিম্নোক্ত প্যারাটির
মত অপরিপক্ব চেতনার বহিঃপ্রকাশ ঘটত না।
লেখকের মূল ভাবনার সাথে অনেক ক্ষেত্রেই একমত (Y)
@সংবাদিকা,
আপনি যৌক্তিক কথা বলেছেন। সে রকম করতে পারলে লেখাটি অনেক সমৃদ্ধ হতো, বক্তব্য আরো জোরালো হতো। তবে বাংলা ইংরেজি ছাড়া আর কোনো ভাষা আমি পড়তে পারি না।
এই চেতনা আপনার কাছে অপরিপক্ব কেন মনে হলো বুঝতে পারলাম না। তবে কোনো সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী নারীকে যখন রাষ্ট্রনায়ক নামে ডাকা তখন আমার কাছে ব্যাপারটা খুব অপরিপক্ব ও সাহ্যকর লাগে। শেখ হাসিনাকে রাষ্ট্রনায়ক ও খালেদা জিয়াকে বিরোধী দলের নেতা লিখা হয় অনেক জায়গায়; আমি নিজে পড়েছি। আপনার মতামতের জন্য ধন্যবাদ।
@তামান্না ঝুমু,
কিছু মনে করবেন না, আমি আরেকটা কথা বলতে চাই, আর তা হলযে এই লেখাটি সংবাদিকার কাছে অপরিপক্ক মনে হলেও আমার কাছে তা মনে হয়নি। আমার কাছে এই চেতনাটা ইঁচড়ে পাকামী মনে হয়েছে!!
@দারুচিনি দ্বীপ,
আপনার কাছে ইঁচড়ে পাকামি কেনো মনে হলো? লৈঙ্গিক ভাষা যে নারীর জন্য বৈষম্যমূলক, সেটা বোঝার মতো জ্ঞান কি আপনার নেই? না থাকলে এই সব ইতরামি করতে আসেন কেনো?
বাংলা ভাষার মত বেশিরভাগ ভাষাই এসেছে প্রবল পুরুষতান্ত্রিক সমাজ কাঠামো থেকে। ফলে, এখানে লৈঙ্গিক বৈষম্য তীব্রভাবে দৃশ্যমান। স্বাভাবিকভাবেই এটা আজকের যুগের শিক্ষিত স্বাধীনচেতা নারীদের কাছে অসহ্য মনে হবে। যার প্রতিবাদেই তসলিমা তাঁর আত্মজীবনীর শিরোনাম ‘আমার ছেলেবেলা’ না করে করেছেন ‘আমার মেয়েবেলা’।
পৃথিবীর সব ভাষায় এই বৈষম্য দূর করার জন্য পদক্ষেপ নিয়েছে। ইংরেজিতে এখন আর ফায়ারম্যান নেই, হয়ে গেছে ফায়ারফাইটার, চেয়ারম্যান নেই, হয়ে গেছে চেয়ারপারসন, ম্যানপাওয়ার নেই, আছে ওয়ার্কফোর্স। বাংলা ভাষাও পাল্টাচ্ছে, আরো পাল্টাবে। মেয়েদের গুঁতো আরেকটু জোরে লাগলেই সব পাল্টাবে। আর মেয়েরা যে গুঁতোবে ভালো করেই, সেটা বেশ ভালোই টের পাওয়া যাচ্ছে এখন। ঝুমুর মতো এরকম ইঁচড়ে পাকামি আরো দেখার জন্য অপেক্ষায় থাকুন।
আপনি বাধনের লেখা নারীর উপর ভাষিক আধিপত্য: প্রান্তে তাঁর পাল্টা-ভাষা প্রবন্ধটা আপাতত পড়ে ফেলতে পারেন। ইঁচড়ে পাকামি আরো বেশি আছে এখানে।
এখানে আপনার সবগুলো মন্তব্য দেখলাম। আপনার ব্যঙ্গ-বিদ্রুপগুলোও দেখলাম। এগুলো সবই প্রত্যাশিত আচরণ পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতার একজন মানুষের কাছ থেকে। আপনার আগেও নারীরা যখনই শিক্ষিত হতে চেয়েছে, ঘরের মায়াজাল ছিন্ন করে বাইরে বের হতে চেয়েছে, গলা উঁচিয়ে নিজেদের অধিকারের কথা বলতে চেয়েছে, বেশিরভাগ পুরুষেরা ঠিক এ কাজটাই করেছে আপনার মতো করে। আপনাকে আমি নিজে কিছু বলছি না এ বিষয়ে। হুমায়ুন আজাদকে উদ্ধৃত করেই শেষ করি।
@ফরিদ আহমেদ,
ওয়েল ফরিদ সাহেব, আপনার সাথে কথা শুরু করার আগে একটা বিষয় পরিষ্কার না করলে, অন্যায় হবে, আর তা হল মুক্ত মনাতে কিছু মানুষকে আমি বিশেষ ভাবে সমীহ করে থাকি তাদের মধ্যে আপনি একজন। আপনার কিছু লেখা আর মন্তব্য পড়ার সৌভাগ্য আমার হয়েছে আগে। অনেক যায়গাতে আপনার অনেক নির্মোহ বিশ্লেষণ মুক্ত মনা বিমুখী অনেক পাঠক কে মুক্ত মনা মুখী করেছে, আমিও তাদের একজন! এই কথাগুলি আমি কিন্তু ইতরামি বা আপনার নির্লজ্ব স্তুতি করার জন্য বলছিনা, বলছি এজন্যেই যে আপনার সম্পর্কে আমার ধারনা কি সেটা পরিষ্কার করে দেয়ার জন্য।
আর সেই প্রেক্ষিতেই বলছি যে আপনার কাছ থেকে আমি “ইতরামি” র মত একটি শব্দ আশা করিনি। যাহোক আমি এই লেখাতে আমার আপত্তি ঠিক কোথায় হয়ত সেটাই বুঝাতে ব্যার্থ হয়েছি বলেই আমার কপালে ইতর খেতাবটি জুটল, এবং সেটা আপনার কাছ থেকে। আবারো বলছি যে এটা আমি আশাও করিনি সত্যি!
এবার আসি মুল কথায়। লৈঙ্গিক ভাষার বিষয়টিতে! আচ্ছা বলেনতো Human কি সত্যি এটার অন্তর্ভুক্ত? আপনি নিজে কি মনে করেন? সত্যি যদি এটাই হয় তবে এটার বিকল্প কি আসলেই Huperson হতে পারে? Hu এর মানে কি? শব্দটিকে কি আসলেই ভাঙ্গা সম্ভব?
আমিও জানি এটা!কিন্তু এখানেও যদি কেউ লিঙ্গ নিরপেক্ষতা না দেখে তবে?লেখিকা এখানে Human কথাটিতে প্রচন্ড আপত্তি করেছেন, আর উপমা হিসাবে ব্যবহার করেছেন যে Huwomen শব্দ টি মেনে নেয়া যায় কিনা!খুব আজব তাই না?woman এর ভেতরেও যে man আছে আর এটা যে প্রচন্ড পুরুষবাদী শব্দ সেটা কি লেখিকা ধরতে পারেন নি? নর এর নেতিবাচক হিসাবেই কি নারীর আবির্ভাব নয়?হুমায়ুন আজাদের নারী বইতে এমনই পড়েছিলাম। আমার কিছু মন্তব্য ছিল লেখিকার কিছু আজব কথাবার্তার সাথে, যেমন সভাপত্নি এইসব আরো কিছু! যাক আর কথা বাড়িয়ে লাভ নেই, লেখিকা হয়ত আপনার কাছে বন্ধু বা কেউ হবেন, তাই আপনার কাছ থেকে ইতরামি শব্দটা আমার শুনতে হল, যদিও এখানে কেউ ইতরামি করেনি।
আশা রাখি আমার আপত্তির জায়গাটা আপনাকে বুঝাতে সমর্থ হয়েছি। আর তাছাড়াও নারী যেখানে অনুন্নত দেশগুলিতে নানা ভাবে নির্যাতিত, সেখানে কিছু ভাষার ব্যবহার যেগুলো প্রথা হয়ে গেছে এবং সেগুলো কেউ কিছু মনে না করেই বলে, সেটা নিয়ে আগেই লাফালাফির চেয়ে মনে হয় মুল বিষয় গুলি নিয়েই বেশি করে ভাবা দরকার, আর তারচেয়েও দরকার হল, এর বাস্তবায়ন! সত্যি ছেলেমানুষী বললে কি নারীর জন্য মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যাবার মত মহা পাপ হয়ে যায়? হতে পারে হয়ত অনেকের কাছে, কিন্তু বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে মনে হয় এসব নিয়ে ভাবার সময় এখনও আসেনি!
হতে পারে, তবে যারা নারীবাদী পুরুষ তারাও কি সবাই প্রকৃত নারীবাদী? কয়জন আছে হাতে গুনে দেখা দরকার! দিন শেষে বেশিরভাগ নারীবাদী পুরুষ কিন্তু পুরুষই থেকে যায়!
হুমায়ুন আজাদের উদ্ধৃতকে আপনি নিশ্চয়ই বেদবাক্য বলে মনে করেন না তাই না? করলে তো যারা কোরানে বিজ্ঞান খুজে বেড়ায়,তাদের সাথে মিলে যায়।কাজেই ধরেই নিচ্ছি যে আপনি হুমায়ুন আজাদ কে আদর্শ মানুষ ভেবে কথাটা বলেন নি। তবে আপনাকে সবিনয়ে বলতে চাই যে, এখানে আমি কোন অশ্লীল অস্ত্র প্রয়োগ করি নি কোনরুপ লৈঙ্গিক রাজনীতির হাতিয়ার হিসাবে! আমি যদি আমার আপত্তির কারনগুলো ইতিমধ্যেই স্পষ্ট করতে সক্ষম হয়ে থাকি, তবে আশা করি ব্যাপারটা আপনাকে বুঝাতে সক্ষম হয়েছি, যদি না হই তবে এ ব্যর্থতা সত্যি আমার। ধন্যবাদ ভাল থাকবেন!
@দারুচিনি দ্বীপ, ইতরামি শব্দটি আপনার ক্লাসিকেল মনে বেশ সজোরে আঘাত করেছে বুঝতে পারছি। তবে ইঁচড়ে পাকামী শব্দটি খুবই উচ্চমার্গের ক্লাসিকেল শব্দ, তাই না?
@তামান্না ঝুমু,
সবাই করলে করত না, ফরিদ আহমেদ , অভিজিৎ রায় , আদিল মাহমুদ দের মত মানুষ রা করলে লাগতেই পারে। কেন জানেন? কারনটা আমি ফরিদ সাহেব কে ব্যখ্যা করেছি। পড়ে নেবেন।
ফরিদ সাহেবকে নিচে উত্তর দিয়েছি, আর এর বেশি আমার আপাতত কিছু বলার নেই আপনাকে। না আপনি একটা মেয়ে সে জন্য না, আসল কারণটা হল যে, আমি আগেই উত্তরটা দিয়ে ফেলেছি একজন কে। সেখান থেকে পড়ে নেবেন। আবার বলছি, আপনার চেতনাকে নিয়ে আমারও তেমন সমস্যা নেই, সমস্যা হল গুলিয়ে লেখাটা অসম্ভব দুর্বল হয়েছে বলেই মনে করি ( একজন পাঠক হিসাবে অবশ্যই, কারন আমি লেখক না), আর তাই একটু চিন্তা করলে বুঝবেন যে আপনার চেতনাটার ক্ষতি আমার চেয়ে আপনি নিজেই বেশি করেছেন। আরেকটু রিসার্চ করে লিখলে সেটা হতে পারত অসাধারন একটা চেতনার চমৎকার একটা লেখা, যেখানে আপনার চেতনা নিয়ে কেউ খোঁচা খুঁচি করার অবকাশ পেত না। ধন্যবাদ!
@দারুচিনি দ্বীপ,
আপনার সার্বিক টোনটা পাল্টেছে দেখে খুশি হলাম। অন্তত ব্যঙ্গ-বিদ্রুপের সুরে উত্তর দেন নি। অবশ্য আমি মেয়ে নই বলেও হতে পারে এটা। পুরুষতান্ত্রিক পুরুষেরা ওটা হয়তো সীমাবদ্ধ রাখে শুধু নারীদের জন্যই।
আপনার কাছ থেকেও ইঁচড়ে পাকামি-র মত শব্দ প্রত্যাশিত ছিলো না। এই লেখাটা খুব সুসংবদ্ধ এবং শক্তিশালী কোনো লেখা নয়। লেখায় তাড়াহুড়োর ছাপ সুস্পষ্ট। কিন্তু, এই লেখার অন্তর্নিহিত চেতনাটা অনেক বেশি শক্তিশালী, লেখকের লেখা ছাপিয়ে সেই চেতনাটিই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সেই চেতনাটাকে ইঁচড়ে পাকামি বলাটা, আপনার আচরণকে ইতরামি বলার চেয়ে বেশি সুশোভনই মনে হয়। আপনি এখন হয়তো ইঁচড়ে পাকার আভিধানিক অর্থ বের করে শোনাবেন। আমি আগে ভাগেই ইতরামির আভিধানিক অর্থটাও বলে রাখি। এর মানে হচ্ছে হীন আচরণ করা।
পুরুষতো পুরুষই থাকবে। তাতে কোনো অসুবিধা নেই, কিন্তু পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতাটা বড় ভয়ানক জিনিস। দীর্ঘকাল অর্ধেক মানুষকে মানুষ হিসাবে স্বীকৃতি দেয় নি এই তন্ত্র, বৈষম্যের শিকার করে রেখেছে তাঁদের, বঞ্চনায় ভুগিয়েছে, ঠকিয়েছে আপাদমস্তক। সেই অর্ধেক সংখ্যক মানুষ যখন তাঁদের বৈষম্যের বিরুদ্ধে কণ্ঠ্টা একটু উঁচু করে, তখন সেটা নিয়ে ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করাটা ইতিরামির চেয়েও ভয়ানক কাজ।
মেয়েরা যেহেতু বঞ্চিত, বৈষম্যের শিকার, কাজেই কোনটা মূল বিষয় আর কোনটা গৌণ বিষয়, সেটা তাঁদেরকেই ঠিক করতে দিন না। গৌণ হলেও বৈষম্যতো। বৈষম্যের বিরুদ্ধে কথা বলাটা মানুষের মৌলিক অধিকার। মূল বিষয়-গৌণ বিষয়ের ধুয়া তুলে সেটাকে করতে না দেওয়াটা অপরাধেরই সামিল।
@ফরিদ আহমেদ,
আসলে আপনি যদি আপনার মুল্যবান সময়ের কিছুটা ব্যয় করে আমার কিছু মন্তব্য ( খুব অল্পই করেছি) একটু ঘেটে দেখতেন তবে দেখবেন যে আমি এর আগে মাত্র একজনকেই আমি ব্যঙ্গ বিদ্রুপের সুরে উত্তর দিয়েছি, নাম ফজলুল করিম, সামু ব্লগের; তার দেয়া ওয়েবসাইট ফলো করেই এটা জেনেছি। তাও এটা করেছি যখন ভদ্রলোক ইসলামের স্কলার সেজে মানুষের এক প্রশ্নের আরেক জবাব দিচ্ছিলেন, আর ক্রমাগত ধরা খাচ্ছিলেন নাস্তিক প্রতিপক্ষদের কাছে। আমি একজন মুসলিম। নিজের ধর্ম গ্রন্থ পড়তে গিয়ে অস্বস্তির সাথে কিছু অসঙ্গতি লক্ষ করেছি, আর তাই স্টাডী করছি! কিন্তু ফজলুল সাহেব অনর্থক জাকির নায়েকের কিছু গার্বেজের উদাহরন দিয়ে প্রতিপক্ষ কে আরো সুযোগ করে দিচ্ছিলেন ইসলাম কে চাবুক মারার, যেটা আমার ভাল লাগেনি, আর তাই আমি উনাকে অনুরোধ করেছিলাম একটু ভেবে চিনতে কথা বলতে। উনি কান না দিয়ে উলটা আমাকেই খোঁচাচ্ছিলেন, ফলে বাধ্য হয়ে ওটা আমাকে করতে হয়েছিল!
পরে ওখানে মন্তব্য অপশন অফ করে দেয়া হয়।
ফজলুও কিন্তু মেয়ে ছিলেন না!
ধন্যবাদ, আমি অর্থটা জানতাম, কিন্তু ইঁচড়ে পাকামি বলে আমি হয়ত হীন আচরন করে ফেলেছি, আর যেহেতু, আমি পুরুষ তন্ত্রের পুরোহিত না, হয়ত প্রথাগত ভাবে কিছুটা ডমিন্যান্ট! আর আপনি জানেন যে প্রথা ভাঙ্গা অনেক কষ্টের। আপনি যদি আমার মত কাউকে সঠিক রাস্তা দেখানে চান তবে কি আমার ভুলত্রুটির জন্য পালটা আরেক বিশেষণ প্রয়োগ করে, আমাকে সংশোধন করতে পারবেন বলে আশা করেন? নাহ আমি নিশ্চিত যে আপনি সেটা মনে করেন না, মনে করলে এখানকার একজন হার্ডকোর ইসলাম তথা মুসলিম বিদ্বেষী ব্লগারের সাথে যুদ্ধ করতেন না, যে যুদ্ধটা আমি দেখেছি, মন্তব্য করিনি, কিন্তু দেখেছি আপনার যুদ্ধ, আপনার কিছু সহযোদ্ধা নিয়ে। সেখানে প্রতিপক্ষের ভুল আপনারা ধরিয়ে দিয়েছেন,সেখানে মনে হয় আমার ভুল্টা ধরিয়ে দিলেই আরো বেশি ভাল হত, সেক্ষেত্রে আমি হয়ত আমার কথাটা ফিরিয়ে নিয়ে ঝুমুর কাছে দুখ প্রকাশ করতাম! আমাদের ছোট বেলাতে মুরুব্বিরা বলতেন ইঁচড়ে পাকা, আমি ভেবেছিলাম যে ঝুমু টিনএজার, তাই ওটা বলেছিলাম। যাক তবু যদি আমি অফেন্ড করে থাকি তবে আমি আমার কথাটা ফিরিয়ে নিয়ে আন্তরিক ভাবেই দুঃখ প্রকাশ করছি।
এখন আমি কি আশা করতে পারিনা যে এমন কিছু আমি আপনার কাছ থেকেও পাব? বিশয়টি আমি আপনার হাতেই ছেড়ে দিলাম, যেটা আপনার ভাল মনে হয় করবেন।
আসলে আমি এটাই বলতে চেয়েছিলাম, আমি নিজেও লেখিকার এই চেতনাটার সাথে দ্বিমত করি না, এবং এটা অনেক শক্তিশালী এতাও মানি। কিন্তু দুর্ভাগ্য হলেও সত্যি যে এটা সুসংবদ্ধ এবং শক্তিশালী কোনো লেখা নয়। অথচ এই অসাধারন চেতনা সমৃদ্ধ লেখাটা যদি উনি আরো কিছু রিসার্চ করে দিতেন তাহলেই কি এটা একটা অন্যতম সেরা প্রবন্ধ হতে পারতো না এই ব্লগে?
এইযে চেতনার সাথে লেখা সাজানোর যে বৈপরীত্য, একেই আমি ইঁচড়ে পাকামী বলেছি; টিনএজার রা অনেক সময় উচু চেতনা ধারন করে, কিন্তু এটার সপক্ষে সুসংবদ্ধ এবং শক্তিশালী কোন যুক্তির অবতারনা করতে পারে না বলেই এর আবেদন প্রায় নষ্ট হয়ে যায়, আর যে লেখাটা বা চিন্তা চেতনা মাস্টারপিস হতে পারত, সেটা ব্যার্থতায় পর্যবসিত হয়। এতে কি সেই চেতনাটারই মারাত্তক আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে ডিফেন্সলেসস হয়ে পড়ে না? আমি এখানে ইঁচড়ে পাকামী বলতে এটাই মিন করেছি।, পুরোপুরি প্রস্তুতি না নিয়ে এইভাবে খেলতে নামাটাকে, কোন আভিধানিক রুড অর্থ করার ইচ্ছা আমার সত্যি ছিল না
তবু আমার এটা ভুল হতে পারে, সিমাবদ্ধতা থাকতে পারে, যেহেতু আমি নবীন। আর নবীন হিসাবে একজন প্রবীন লেখকের কাছ থেকে আমি কি আরেকটু সফট ট্রিটমেন্ট আশা করার কোন মতেই যোগ্য ছিলাম না?
এবারও কি আমাকে দৃঢ়ভাবে পুরুষতান্ত্রিক পুরুষই বলবেন আপনি?হয়ত বলবেন, কারন পুরুষবাদী না হলেও নারীবাদিও আমি না। আসলে নারীবাদিরা কি চায় সেটা আমার বোধগম্য নয়। সেখানে আমি নর নারী নির্বিশেষে কিন্তু একটা শব্দই বিশ্বাস করি আর সেটা হল মানবাধিকার, যেটাকে আমি এতদিন লিঙ্গ নিরপেক্ষ বলেই জানতাম। এখন এতেও কেউ যদি পুরুষবাদ দেখে ( যেমন লেখিকা দেখেছেন), সেখানে কি আমার চুপ করে থাকাটা উচিত? আর তাই আমি ওইসব মন্তব্য করেছি। হয়ত এতেই আপনার মনে হয়েছে যে আমি পুরুষতান্ত্রিক পুরুষ, তবে এখন যদি অনুগ্রহ করে আমার এই মন্তব্যটা (বর্তমান) আপনি পড়েন এবং আমি আমার বক্তব্য পরিষ্কার করে থাকি, তবে আপনার ধারনা আশা রাখি পাল্টাবে, অন্তত আমি আপনার কাছে এটাই আশা করি। তবে না পাল্টালে দয়া করে জানাবেন, আমি আমার সীমিত সামর্থ দিয়ে আবার নিজেকে এক্সপ্রেস করার যথাসাধ্য চেষ্টা করব।
হ্যাঁ সেটা তাঁরাই ঠিক করুন আমার সমস্যা নেই, তবে যদি এটা করতে গিয়ে তারা যথেষ্ট রসদ ছাড়াই যুদ্ধে নামেন তবে কি আমরা পুরুষ বলে এমনকি শুভাকাঙ্ক্ষী হিসাবেও কিছু কথা বলার অধিকার রাখি না? আমি সেটাই করতে চেয়েছি, যদিও কিছুটা ফাজলামী করে ফেলেছি, আর দুর্ভাগ্য জনক ভাবে সেতাকেই বিদ্রুপ ভাবা হয়েছে। হ্যাঁ খোঁচা মেরেছি ঠিক আছে, কিন্তু ব্যঙ্গবিদ্রুপ আমি করতে চাই নি, তবু যদি নিজের অজান্তে কাউকে অফেন্ড করি তবে আবার মাফ চাইছি।
আসলে আমি জোরদিতে চেয়েছিলাম মুখ্য বিষয়ের দিকেই। সেটা অপরাধের শামিল হলে আমি আমার পুর্বের কথাটা আগেই ফিরিয়ে নিয়েছি! ধন্যবাদ। তবে পুরুষের একেবারে সাহায্য না নিয়ে নারীরা কতটা সফল হবেন, সেটা নিয়ে আমার ঘোরতর সন্দেহ আছে, যেহেতু পুরুষরাই দুর্ভাগ্য জনক হলেই Ruthless Dominant করে চলেছে।
রোকেয়ারও কিন্তু তাঁর ভাই আর স্বামীর সাহায্য লেগেছে;যদিও হুমায়ুন আজাদ সেটাকে নাকি রোকেয়া স্বামী আর ভাইকে করুনা করে তাদের অবদান স্বিকার করেছেন বলে দাবী করেছেন নারী বইতে ( ভুল হলে ঠিক করে দেবেন প্লিজ, অনেক দিন আগে পড়েছি বইটা), সেখানে কারো পাশে বন্ধু হিসাবে দাঁড়ানর প্রতিদান যদি হয় করুনা প্রাপ্তি, তবে কি কেউ বন্ধু হিসাবে দাঁড়াতে চাইবে? আপনি হলেও কি চাইতেন সেটা?
আমার তো মনে হয় না। আর দেখুন বিধবা বিবাহে কিন্তু বিদ্যাসাগর ধর্মকে ব্যবহার করেছেন। বিদ্যাসাগরের অবদান কি তবে করুণার যোগ্য? নিশ্চয়ই নয় ! তবে রোকেয়ার স্বামী আর ভাই কেন করুনা পাবেন? কারন তাঁরা বিদ্যাসাগর নন বলেই কি? ধন্যবাদ ফরিদ আহমেদ সাহেব, এটুকুই আমার শুধু বলার ছিল। ভাল থাকবেন, শুভেচ্ছা রইল!
@দারুচিনি দ্বীপ,
আমি আপনার যে মন্তব্যটা প্রথম পড়ি, সেটাতেই ওই ইঁচড়ে পাকামির বিষয়টা ছিলো। ওটার পরেই কৌতুহলবশে আপনার সবগুলো মন্তব্য আমি পড়ে ফেলি। এবং সেই পড়ার শেষ সিদ্ধান্ত হয় যে, আপনি একজন পুরোদস্তর পুরুষতন্ত্রের প্রতিভূ। কারণ, এরকম একজন ব্যক্তি ছাড়া এ ধরণের রঙ্গ-ব্যঙ্গ, বিদ্রুপ, ঠাট্টা-তামাশা, লেখককে অপমান করা, কেউ-ই করবে না। পুরুষতন্ত্র আমার কাছে ধর্মান্ধতার চেয়েও খারাপ জিনিস। ফলে স্বাভাবিকভাবেই আপনার প্রতি আমার প্রতিক্রিয়াটাও হয় কঠোর। মুক্তমনা এমন একটা প্লাটফর্ম, এখানে যাঁরা আসেন তাঁদের মধ্যে ধর্মান্ধতা, কুসংস্কারাচ্ছনা, জাতিবিদ্বেষিতা, পুরুষতান্ত্রিকতা এগুলো দেখলে সহনশীলতার পারদ কী করে যেনো শূন্যের কাছাকাছি নেমে আসে। আমি অবশ্য একাই আপনাকে পুরুষতান্ত্রিকতার প্রতিভূ বলি নি, কায়সার ইমরান সাহেবও একই কথা বলেছেন। দুজন অসম্পর্কিত মানুষ যখন একই সিদ্ধান্তে পৌছাচ্ছি আপনার বিষয়ে, তখন আপনার মনে হয় নিজেকে নিয়ে পূনর্চিন্তার সময় এসেছে। আপনি যদি মনে করেন যে, আপনার প্রকাশভঙ্গির ব্যর্থতার কারণ এমন হচ্ছে, তবে সেটি সংশোধনের উদ্যোগ নিন। আপনাকে আমি যে শব্দটা বলেছি ,সেটি একজন পুরুষতান্ত্রিক মানুষের জন্য প্রযোজ্য। আপনি যদি মনে করেন যে, আপনি সেরকম না, তাহলে এই শব্দটি এমনিতে বাতিল হয়ে গিয়েছে। তারপরেও যদি দুঃখপ্রকাশ করতে বলেন, আমার তাতেও কোনো আপত্তি নেই।
এই জায়গাটাতে এখনো সংশয়গ্রস্ত আমি। আপনি ঠিক কতখানি এই চেতনার সাথে আছেন, বলাটা মুশকিল। কারণ, আপনার বক্তব্যগুলো স্ববিরোধিতায় পরিপূর্ণ। আমি আসার আগে আপনি সম্পূর্ণ ভিন্ন ফর্মে ছিলেন, আমি আসার পরে আপনার বক্তব্য বেশ কিছুটা পাল্টেছে, কিন্তু লেখকের প্রতি আপনার আক্রোশটা কিন্ত এখনও যায় নি দেখেছি। এর কারণটা ঠিক বুঝতে পারছি না আমি। চেতনার জায়গাটায় যদি একমতই হবেন, তবে আক্রোশ কেনো? বরং ঠাণ্ডা মাথায় তাঁর ভুলের জায়গাগুলো চিহ্নিত করে দিন। তিনি উপকৃত হবেন, এবং আমার ধারণা তিনি এ কারণে আপনাকে ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানাবেন।
আমি সাধারণত নবীন লেখকদের সাথে কোমল ব্যবহারই করি। আপনার সাথেও করতে কোনো আপত্তি ছিলো না। কিন্তু মুশকিল হচ্ছে যে, আপনি নিজে যে প্রিভিলেজটা আশা করছেন, নিজেই সেই প্রিভিলেজটা অন্যকে দিচ্ছেন না। এই লেখার লেখককে আপনি নাকি টিনএজার ভেবেছিলেন। অথচ দেখুন আপনি তাঁকে কিন্তু সফট ট্রিটমেন্ট দেন নি বাচ্চা হওয়া সত্ত্বেও। রঙ্গ-ব্যাঙ্গ, ঠাট্টা-তামাশা, অপমান-অবমাননা সবই করেছেন তাঁকে আপনি। অথচ উচিত ছিলো কোমল স্বরে তাঁর ভুলের জায়গাগুলো ধরিয়ে দেওয়া। এখনো কেউ আপনাকে বলে নি যে, এই লেখার লেখকের বয়স কতো। অথচ দেখুন আপনি তাঁর অসফল বাউন্সারগুলোকে ফ্রন্টফুটে এসে খেলবেন বলে হুমকি দিয়ে রেখেছেন। আমাকে কোনো টিন এজার বাউন্সার দিলে আমি হুক করে সেটাকে মাঠের বাইরে পাঠানোর চেয়ে ডাক করে উইকেটকিপারের হাতে চলে যেতেই সাহায্য করতাম।
@ফরিদ আহমেদ,
আসলে আমি পরে বুঝেছি যে তিনি টিনএজার নন।
পরবর্তি সময়ে ঝুমুর প্রোফাইল চেক করে দেখলাম যে উনি ৭৯ টা মত লেখা দিয়েছেন। কাজেই তাঁকে অভিজ্ঞ ব্লগার বলেই মনে হয়েছে।
আমি সততার সাথেই বলছি যে আমি লিখতে চেয়েছিলাম লেখাটার ইঁচড়ে পাকামী, ভুলে চেতনাটা ইঁচড়ে পাকামী লিখে ফেলেছিলাম।
তবু বুঝতে পারছি কাজটা ভাল হয়নি ( এমনকি লেখাটাকে ইঁচড়ে পাকামী বলেও ), আমার বরং অপরিপক্ব শব্দটাই ব্যবহার করা উচিত ছিল লেখাটার ক্ষেত্রে।
কাজেই আক্রোশ থাকার প্রশ্ন আসে না।
অনেক ধন্যবাদ, আমি শুধু এটুকুই ( বোল্ড) চেয়েছিলাম। চেয়েছিলাম যে ভুল বুঝাবুঝির অবসান হোক।ভাল থাকবেন 🙂
@দারুচিনি দ্বীপ,
আমারো তাই মনে হয়। আমরা এমন একটা জায়গায় এসে পৌঁছেছি যে অনায়াসে হাসিমুখে উষ্ণ করমর্দন করা সম্ভব।
আমার কঠিন কথার জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। জন্মের সময় মনে হয় মুখে কেউ মধু দেয় নি, সে কারণেই শুধু তিতা তিতা কথা বের হয়ে যায়, ইচ্ছে না থাকা সত্ত্বেও। আপনিও ভালো থাকবেন। (F)
@ফরিদ আহমেদ,
অবশ্যই কেন নয়, সেটার সাথে উষ্ণ আলিঙ্গন করতেও বাধা থাকার কথা নয় 🙂 । আমি বিশ্বাস করি আমরা মুক্ত মনাতে লেখক পাঠক, নবীন প্রবীন সবাই একসাথে বন্ধুত্ব পুর্ন আবহাওয়ায় থাকতে পারব, আপনাদের মত কিছু সুন্দর মনের মানুষদের কারনেই;সততার সাথেই বলছি।
ও বিষয়ে কোন চিন্তা করবেন না ভাই, ব্যাপারটা আমি ভুলে গেছি 🙂 । আসলে আপনার দুঃখ প্রকাশের আন্তরিকতাকে আমি সত্যি খুব সম্মান জানাই, এবং অসম্ভব প্রশংসা (appreciate) করি ।
জীবনে চলার পথে সবার সাথেই ,বন্ধু বান্ধব, আত্মীয় স্বজন, শুভাকাঙ্খী সবার সাথে, এমনকি নিজের পরিবারের মানুষদের সাথেও ভুলবুঝাবুঝি বা মনোমালিন্য হতে পারে।
তবে ভুল বুঝাবুঝির অবসানের পর পুরাতন কোন ঘটনা মনে না রেখে পরস্পরের হাতে হাত ধরে সামনে এগিয়ে যাওয়াটাই আমি যৌক্তিক মনে করি। ঠিক এজন্যেই আপনার জন্য আন্তরিক ভালবাসা রইল (L) ভালো থাকবেন।
আরে নাহ কি যে বলেন ভাই 😀 ! আপনাকেও ফুলের শুভেচ্ছা (F) 🙂
বাধা আছে ৷ ব্যাটাছেলেদের সাথে কোনো বাধাবাধিতে আমি নেই ৷ উষ্ণ আলিঙ্গন শুধু অপ্সরাদের সাথেই করতে আগ্রহী আমি ৷ 🙂
@ফরিদ আহমেদ,
হাহাহা ভালই বলেছেন :)) ! দারুন লাগলো আপনার সুন্দর রসবোধ ( sense of humor )। পরে বিভিন্ন ব্যাপারে আরো কথা হবে আশা করি। ভাল থাকবেন। :thanks:
@তামান্না ঝুমু,
সমৃদ্ধ হত কিনা জানিনা – তবে আপনি শব্দ এবং শব্দ উচ্চারণের ভেতর নারীর উপর নির্যাতন এবং অপমানের ব্যাপারটি বৃথা খুঁজতে যেয়ে এই আর্টিকেল/ব্লগ আর লিখতেননা এটা আমি বলতে পারি। কোন ভাষা সম্পর্কে জানতে হলে ঐ ভাষা পড়তে জানতে হবে এমন কোনই কথা নেই।
ভালো থাকবেন 🙂
অনেক আগে থেকে চলে আসা মিথ্যা ধারনাকে আমরাই তো লালন-পালন করে এসেছি এতদিন.অনেকে এটা বোঝা সত্বেও বোকা সাজার ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করিনি কোনদিন…
এটাকে এখন শত চেষ্টা করেও বদলানো সম্ভব নয়
যেহেতু লালন -পালন করার ক্ষমতা আমরাই সৃষ্টি করেছি সেহেতু মুখ বুজে সহ্য করা ছাড়া আর কোন উপায় নেই……… (Y)
@অমিত দাস,
বদলানো সম্ভব। ইংরেজি ভাষায় অনেক শব্দ ইতোমধ্যে বদলানো হয়েছে, এবং সেগুলো ব্যবহৃত হচ্ছে। তাতে কোনো অসুবিধে হচ্ছে না সেই ভাষার বা ভাষীদের।যেমন, মেইলম্যান থেকে মেইলক্যারিয়ার, মেকাপম্যান থেকে বিউটিশিয়ান, ক্যামেরাম্যান থেকে ফটোগ্রাফার ইত্যাদি। বাংলা ভাষায়ও তা সম্ভব। উদ্যোগ দরকার। ভাষাবিদদের সদিচ্ছা দরকার।
@তামান্না ঝুমু, ইংরেজী ভাষাতে He এবং She কি বদলানো হয়েছে এখনো? না হলে তো সমস্যাটা থেকেই গেল বেশ ভাল ভাবে! বাংলা কিন্তু এখানে লিঙ্গ বৈষম্য করেনি, “সে” দিয়ে কাজ সেরেছে!
@তামান্না ঝুমু,
আপনার এই কথার সুত্র ধরেই বিষয়টাকে আমার মত করে একটু বিশ্লেষণ করি। আপনি বোধ হয় বিশ্বাস করেন, ভাষাবিদরা নারীকে নির্যাতন ও অপমান করার উদ্দেশ্য মাথায় রেখে লিঙ্গভিত্তিক শব্দাবলি আবিষ্কার করেছেন। আমি এই কথাটা সমর্থন করিনা। আর যদি অন্যান্য ভাষার সাথে তুলনামূলক ভাবে আমাদের বাংলা ভাষাকে অধিক লিঙ্গবৈষম্যের অপবাদ দেন, সেটাও মানতে পারছিনা। বাংলা ভাষায় নারীবাচক বা নারীকেন্দ্রীক গালির সাথে খুব একটা পরিচয় নেই তবে পুরুষবাচক গালির ছড়াছড়ি তো সর্বদাই কানে আসে। কথায় কথায় কুত্তার বাচ্চা, শুয়রের বাচ্চা। শুওরনী বা কুত্তি নেই কেনো? বাচ্চা কি শুধু পুরুষের? তারপর আছে চোর-ডাকাত, লম্পট-লুল, বদমায়েশ, শান্ডা, গুন্ডা, পান্ডা ইত্যাদি। এদের বিপরীত নারীবাচক গালি নেই কেন? কারণ আছে। আমি মনে করি সমাজবিবর্তনে অন্যান্য বিষয়াদীর মত ভাষাবিবর্তনও অর্থ-ক্যাপিট্যাল, উৎপাদন, পেশা, কর্ম তথা ক্রীয়ার সাথে সম্পর্কিত। নারী যে দিন গর্বিত পুরুষের গালি উপার্জনের উজ্জ্বল কর্মক্ষেত্রে স্থান করে নিতে পারবেন, সেদিন থেকেই তাদের জন্যে চোরনী- ডাকাতনী, লম্পটনী-লুলী, বদমায়েশনী, শান্ডী, গুন্ডী, পান্ডী ইত্যাদি শব্দাবলির জন্ম হবে। এই মুহুর্তে চোরকে লিঙ্গনিরপেক্ষ করে বা এর বিপরীতে কোন শব্দ সৃষ্টি করলে তো নারীদের প্রতি অন্যায় করা হবে। কারণ তারা এই পেশায় এখনও পা্রদর্শী হতে পারেন নি। একজনের অপরাধের দা্যে খামোখা দুইজন গালি শুনবে কেন? যেদিন আমাদের রমণীগন নায়ের গলুই পুরোদমে দখল করে নিতে পারবেন, প্রকৃতি নিজের খায়েশেই মাঝির বিপরীতে মাঝিনীর মত কোন শব্দ বা মাঝির লিঙ্গনিরপেক্ষ কোন শব্দ আবিষ্কার করে নিতে পারবে। এবার আপনার উল্লেখিত মেইলম্যান থেকে মেইলক্যারিয়ার, মেকাপম্যান থেকে বিউটিশিয়ান, ক্যামেরাম্যান থেকে ফটোগ্রাফার ইত্যাদি শদগুলোর দিকে তাকান। স্পষ্টই সবগুলো শব্দ পরিস্থিতি বা সময় ও ক্রীয়ার সাথে সম্পর্কিত এবং যে কর্ম বা পেশায় অতীতে বা একসময় নারীদের উপস্থিতি ছিলনা।
জীবন নাটকের কোন একটি দৃশ্যে, যদি কোন নারীর উপস্থিতি না থাকে সেখানে নায়িকা শব্দ না থাকাটাই তো স্বাভাবিক। নাট্যমঞ্চের যতটুকু জায়গা তাদের দখলে থাকবে ততবারই নায়িকা শব্দ ব্যবহৃত হবে কি না?
এবার আমরা কি এই উপসংহারে পৌছুতে পারি যে, শব্দের জন্ম-মৃত্যু সময়ের প্রয়োজন ও ক্রীয়া-কর্মের উপর নির্ভরশীল নারী নির্যাতন,বা অপমান করা তার লক্ষ্য নয়?
@আকাশ মালিক,
আরে বাপরে বাপ!! ভাষার উপর আকাশ মালিকের এই মহাপণ্ডিতি দেখলে পণ্ডিতপ্রবর পাণিনিও পুষ্কলাবতীর কোনো পচা পুকুরে ডুবে প্রাণপাত করতেন!!!
ভাষা নিয়ে এরকম প্রতিক্রিয়াশীল মন্তব্য আকাশ মালিকের কাছ থেকে আসাতে অবশ্য আমি তেমন একটা বিস্মিত হই নি। বহুদিন থেকেই আমি বলে আসছি যে, এই লোকটা একটা ধর্মান্ধ, প্রতিক্রিয়াশীল লোক। সারাদিন ধর্মের লেবাস পরে, ব্যক্তিগত জীবনে প্রতিক্রিয়াশীলতার চর্চা করে বেড়ায়, আর রাতের বেলা এসে প্রগতিশীল মুক্তমনা সাজে। তাঁর অবস্থা হয়েছে গল্পকথার সেই শেয়ালের মতো। যে ধোপার নীলের চাড়িতে পড়ে গিয়ে আসল চেহারা পালটে ফেলেছিল। তবে, গায়ে যতই নীল মেখে শেয়ালরূপ পাল্টাক না কেনো, সময় মত হুক্কা হুক্কা রব ঠিকই বের হয়ে গিয়েছিলো তার গলা দিয়ে। আকাশ মালিকের দশাও সেই নীলে চোবানো শেয়ালের মতোই। প্রগতিশীলতার চাদর গায়ে দিয়ে চলার বহু চেষ্টা করেন বেচারা, কিন্তু মাঝে মাঝে দুষ্টু দমকা বাতাস এসে সেই চাদরটাকে উড়িয়ে দিয়ে তাঁর প্রতিক্রিয়াশীল রূপটাকে আমাদের সামনে উন্মোচন করে দেয়। এই যেমন আজকেও সেটা হয়েছে।
ভাষা হচ্ছে যোগাযোগের সবচেয়ে শক্তিশালী মাধ্যম। আবার এই ভাষাই হচ্ছে ক্ষমতা রাজনীতির মূল হাতিয়ার। ভাষা হচ্ছে এমন একটা জিনিস, যেখানে প্রতিফলিত হয় পুরুষের ক্ষমতা আর সামাজিক সুবিধাভোগিতা, অন্যদিকে এতেই প্রতিফলিত হয় নারীর ক্ষমতাহীনতা আর তাঁদের সামাজিক প্রান্তিকতা ও প্রতিকূলতা।
ভাষার উপর পুরুষের আধিপত্য ছিলো সকল সময়ে, সকল যুগে। এর ফলে এর সম্পুর্ণ সদব্যবহার করেছে তাঁরা। ভাষার অপরিসীম ক্ষমতাকে তাঁরা কাজে লাগিয়েছে পূর্ণভাবে। পুরুষ অধিকর্তা আর নারী তাঁর অধীন, এই আদর্শের প্রচারণা করেছে তাঁরা প্রবল এবং সাফল্যজনকভাবে। ভাষার উপর পুরুষের আধিপত্য শুরু হয়েছে বাবা আদমের সময় থেকেই (হায় ঈশ্বর!)। ঈশ্বর আদমকে ক্ষমতা দিয়েছিলেন তাঁর সব সৃষ্টির নামকরণের। ঈভের কোনো নীরব ভূমিকা থাকাতো দুরের কথা, তাঁর উপস্থিতিও ছিলো না সেখানে। বাবা আদমের এই ভূমিকার কারনেই কিনা কে জানে, ভাষার বিকাশ এবং এর নিয়ন্ত্রণ সবসময়ই থেকে গেছে সম্পূর্ণরূপে পুরুষের হাতে। পুরুষ লেখকেরা লিখিত ভাষার রাজ্যকে অত্যন্ত সতর্কতার সাথে পাহারা দিয়ে রেখেছেন, কুক্ষিগত করে রেখেছেন। নারী লেখকদের কোনো পদচারণা করতে দেওয়া হয় নি সেখানে। পুরুষ ঐতিহ্যে নারী-কেন্দ্রিক বিষয়গুলোকে উপেক্ষা করা হয়েছে সচেতনভাবে। নারী লেখকেরাও প্রবল পুরুষ-পক্ষপাতী এই ভাষায় নিজেদের অস্তিত্বকে জানান দিতে ব্যর্থ হয়েছেন পলে পলে।
নারীবাদী ভাষা গবেষকরা অনেক আগেই প্রতিষ্ঠিত করেছেনে যে, ভাষার মধ্যে পুরুষের ক্ষমতা প্রদর্শিত হয় অনেকগুলো জটিল উপায়ে। ডেল স্পেনডার নামের একজন নারীবাদী ভাষা গবেষক এর মধ্যে একটাকে তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন যে, অতীতে ভাষার উপর পুরোপুরি দখল ছিলো পুরুষদের। সব দার্শনিক, বর্ণনাকারক, রাজনীতিবিদ, ব্যাকরণবিদ, ভাষাতত্ত্ববিদ, সকলেই ছিলেন পুরুষ। কাজেই স্বাভাবিকভাবে এই সকল পুরুষেরা ভাষার মধ্যে লৈঙ্গিক বৈষম্য ঢুকিয়ে দিয়েছে পুরুষের আধিপত্য নিশ্চিত করতে।
পুরুষতান্ত্রিক সংস্কৃতিতে পৌরুষত্ব নারীত্বের চেয়ে শ্রেষ্ঠতর। নারী-পুরুষের এই বৈষম্যমূলক অবস্থান দীর্ঘদিন ধরে এমনভাবে নানা প্রতিষ্ঠান, চিন্তা-ভাবনা এবং কর্মকাণ্ডের মধ্যে জেঁকে বসেছে যে, এই অসমতাকেই মনে হয় স্বাভাবিক। এর বিপরীত চিন্তা করার মত মানসিক অবস্থা আর থাকে না।
ভাষার মধ্য দিয়ে পুরুষেরা পুরুষতন্ত্রের আদর্শকে বাস্তবায়ন করতে চেয়েছে, সসুংহত করতে চেয়েছে, করতে চেয়েছে চিরস্থায়ী। সব পুরুষতন্ত্র নারী-পুরুষের মধ্যকার ক্ষমতার সম্পর্ককে তুলে ধরার চেষ্টা করেছে। পুরুষতন্ত্র এক ভাষার মাধ্যমে তৈরি করে এক বিশাল জালিক কাঠামো, আর এই জালিক কাঠামোই পুরুষের শ্রেষ্ঠত্ব এবং আধিপত্যকে বাড়তি শক্তি যোগায় আর ন্যায়সম্মত করে তোলে।
নারীর জন্য এই রকম একটা বৈরী পরিস্থিতিতে, বৈষম্যমূলক সমাজ কাঠামোতে, কর্তৃত্বপরায়ন প্রভুর হাত দিয়ে যে ভাষার বিকাশ ঘটবে, সেই ভাষা যে নিপীড়নমূলক হবে, তাঁদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক হবে, সেটাই বলা বাহুল্য। যে সমাজ কাঠামোতে তাঁদেরকে মানুষ বলেই স্বীকার করা হয় না, দাসী-বান্দী হিসাবে বিবেচনা করা হয়, গবাদি পশুর মতো অনাদর-অবহেলায় রাখা হয়, সেই সমাজ কাঠামো যে তাঁদের জন্য সমতামূলক সমমর্যাদার ভাষা চালু করবে, সেই আশাটা দূরাশাই মাত্র। বরং নিবর্তনমূলক ভাষার ব্যবহারটাই অতি স্বাভাবিক সেখানে। আর এই স্বাভাবিক ব্যাপারটাই ঘটেছে আসলে প্রায় সব ভাষাতেই। পুরুষতান্ত্রিক সমাজ থেকে বিকশিত ভাষাগুলোতে হয় নারী অনুপস্থিত, অথবা উপস্থিত থাকলেও তা অত্যন্ত অমর্যাদাকর।
শব্দের জন্ম- মৃত্যু সময়ের প্রয়োজনে হয় নি, হয়েছে পুরুষের অনৈতিক এবং অন্যায় লোভের অনল থেকে। প্রদীপের আলোয় আলোকিত হয়েছে আদম, আর সেই প্রদীপের পাদদেশের কালো ঘেরে কুপিত হয়ে থাকার কালো ইতিহাসে ঢেকে গেছে নারীর ভাষিক এবং অন্য সব অধিকার।
@ফরিদ আহমেদ,
আরেকবার বলেছিলেন-
আরো নানান বিশেষণে আমাকে ডেকেছেন আমার বিষোদাগার করেছেন নোংরা ভাষায়। অপমান করেছেন একতরফা ক্রমাগতভাবে একটি বছর ধরে কখনো আমার ব্লগে এসে আর কখনও অন্যের ব্লগে ঢুকে। মইনুল রাজুর ডাকে ফিরে এসেছিলাম আজ তাকে জিজ্ঞেস না করেই মুক্তমনার দুয়ার আমার জন্যে নিজের হাতে চিরতরে বন্ধ করে দিলাম। রাজু ভাই, আমি আপনার কথা রক্ষা করতে পারলামনা, আমাকে ক্ষমা করে দিবেন।
@আকাশ মালিক,
আপনাকে ক্ষমা করবো না আসলেই।
@আফরোজা আলম,
😕 আপনার আবার কি হল। :-Y
@আকাশ মালিক, এখানে কি হচ্ছে বুঝতে পারছি না! ফরিদ সাহেবের মন্তব্যটাও আজ পড়লাম;কেন জানি আগে চোখে পড়েনি!এখানে ভবঘুরে নামের একজনের সাথে ফরিদ সাহেব আর তার সহযোদ্ধাদের লড়াই দেখেছিলাম। কিন্তু এখন আপনাদের দুজনের মন্তব্য পড়ে আমি দারুন কনফিউজড! পুর্বের কোন দ্বন্দের গন্ধ পাচ্ছি আমি।
সত্যি কি তাই? কিছু লিঙ্ক দিতে পারবেন? মানে খুবই স্পর্শকাতর ব্যাপারতো তাই পড়ে দেখতাম যে আসলে কি হয়েছিল, অবশ্য আপনি না চাইলে দিতে হবে না, আপনার মন্তব্য দেখেই বুঝতে পারছি যে আপনি অভিমান ভরা কথা বলছেন, আর আমি মানুষের আবেগের জায়গা নিয়ে কথাবার্তা বলি না। নিছক কৌতূহল থেকেই জানতে চাইছি যে এমন কি হয়েছে যে আপনাদের মত দুজন স্বনামধন্য ব্লগার একে অপরের সাথে যুদ্ধ করছেন( যদিও আপনি পুরোপুরি ডিফেন্সিভ।
কিন্তু কাকে যেন করা মন্তব্যে একবার পড়েছিলাম যে আপনি মুক্ত মনাকে নিজের পরিবার বলে মনে করেন, তবে এই সিদ্ধান্ত কেন ভাই! :-O । আর তাছাড়াও কেউ যদি আপনার বিরুদ্ধে অপবাদ দেয় তবে আপনার কি ফাইট করার পরিবর্তে চলে যাবার চিন্তাটা কেন করছেন? কিছু মনে করবেন না , নাক গলাবার জন্য দুঃখিত।
তবে আপনাদের লেখা পড়তে ভাল লাগে তাই এখানে আমরা পাঠকরা আসি। হ্যাঁ হয়ত লেখার মানের কমবেশি আছে, কিন্তু জানি যে হাতের পাঁচ আঙ্গুল সমান হয় না, তাই ভাল লাগলে লেখা পড়ে ফেলি!!
ভবঘুরে সাহেবের সাথে অবশ্য আরো অনেকেই ছিল, কিন্তু সবাই অতিথি বলেই মনে হয়।এদের মধ্যে একজনের নাম সম্ভবত আবদুল হাকিম চাকলাদার।
তবে আপনার সাথে শুধু একজনের দ্বন্দই দেখেছিলাম আর তিনি হলেন সফিক( যার একটা বিশেষ লেখা আমার হজম হয়নি;বুঝতেই পারছেন কোনলেখাটা। জামাতে রাজনীতি নিয়ে প্রবন্ধ ছিল সেটা)।কিন্তু আর কারো সাথে আপনার কোন দ্বন্দ আমার চোখে পরেনি। তাই আজ ফরিদ এবং আপনার এই সমস্যাটা আমাকে বেশ ভ্যাবাচাকা খাইয়ে দিয়েছে, তাই এতগুলো কথা বলে জানতে চাচ্ছিলাম যে আগে কি হয়েছিল, ধন্যবাদ ভাল থাকেন আর যাবার দরকার কি?লিখতে থাকুন, আপনার লেখাগুলো তো যথেষ্ট ভাল, অন্তত আমি উপভোগ করছি আপনার নতুন লেখাগুলো। পুরোনো গুলোর সব কয়টাতে হাত দেয়া হয়নি এখনো।
@আকাশ মালিক,
আবারো সেই একই কৌশল নিয়েছেন আপনি। লোকজনের সমবেদনা পাবার জন্য যে এই মন্তব্যটা লিখেছেন, সেটা বুঝতে খুব একটা কষ্ট হচ্ছে না। এর আগেও একবার কান্নাকাটি করে শেষ চিঠি লিখে মুক্তমনা থেকে বিদায় নিয়ে, দুই দিনের মাথাতেই ফিরে এসেছিলেন। এবারও কেউ যদি এসে আমাকে একটু বকা দিয়ে দেয়, আর আপনার হাতে লেবেঞ্চুশ ধরিয়ে দেয়, তাহলেই আপনি ধেই ধেই করে নাচতে নাচতে থেকে যাবেন মুক্তমনায়। অনেক পুরোন কৌশল এটা। কেউ সত্যি সত্যি যেতে চাইলে, এই ধরণের শোডাউন সে করবে না।
উঁহু, একতরফা নয়। আপনি খুব ভালো করেই জানেন বিষয়টা। অনেকগুলো কারণের মধ্যে অন্যতম একটা কারণ হচ্ছে আমাকে জামাত বলা। এই নিয়ে বহু জল ঘোলা হয়েছে। বহু লোকে আপনাকে এ বিষয়ে বলেছে। কিন্তু, আপনি আপনার এই মিথ্যাচারের জন্য আজ পর্যন্ত স্যরি বলেন নি, এপোলজি চান নি।
এর বাইরে সবচেয় বড় সমস্যা হচ্ছে যে, আপনি একজন ভয়ংকর রকমের ভণ্ড মানুষ। আমি নিশ্চিত যে, যদি কোনোদিন মুক্তমনার সদস্যদের সুযোগ হতো আপনাকে দেখার তবে তাঁদের মধ্যে অনেকেরই হার্ট ফেল করে যেতো। এ যেনো গোলাম আজমের ছদ্ম পরিচয় নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ব্লগ লেখার মতো। আপনি অনেক চেষ্টা করেন প্রগতিশীল, মুক্তমনা সাজতে, কিন্তু মাঝেই মধ্যেই আপনার মধ্যে বিরাজমান প্রতিক্রিয়াশীলতাগুলো খুব দৃষ্টিকটুভাবে দৃশ্যমান হয়ে উঠে।
আগে আপনাকে আমি অনেক ছাড় দিয়েছি। মডারেটর ছিলাম বলে নৈতিকভাবে আমার হাত-পা বাঁধা ছিলো। এখন আর সেটা নেই। এখন যতবারই আপনি প্রতিক্রিয়াশীল আচরণ করবেন, ততবারই আমি আপনার উপরে ঝাপিয়ে পড়বো প্রবলভাবে।
@ফরিদ আহমেদ,
কি শর্বনাস ভাই, আপনি নাস্তিক না ( আপনার এক লেখায় আমার এক মন্তব্যের জবাবে বলেছিলেন যে আপনি কৈশোরেই ইসলাম ত্যাগ করেছিলেন)? নাস্তিক আবার জামাত হয় কি করে? আমি তো মোটেও নাস্তিক না, উদারপন্থী মুসলিম। আমার পরিবার মধ্য পন্থী মুসলিম পরিবার। আর আমরা সবাই জামাত কে ঘৃণা করি!!
সেখানে নাস্তিককে যদি কেউ জামাত সমর্থক বলে থাকে, তবে হিন্দুদের কেও জামাত বলতে বাধা কি? :-Y কলিকাল দেখি সত্যি শুরু হয়ে গেছে!!
ভাল কথা সত্যি কি আপনাকে সরাসরি জামাত বলা হয়েছিল :-O ? আপনার কাছেও লিঙ্ক চাচ্ছি ( দয়া করে দেবেন) আপনার আর আকাশ মালিক সাহেবের মনোমালিন্যের কথা নিজের চোখে পড়ে দেখতে চাই! একটু পড়ে দেখি যে কেন আপনাদের মত দুই প্রবীন ব্লগারের বনিবনা হচ্ছে না!!
@দারুচিনি দ্বীপ,
কলিকালে সবই হয়। কয়েক বছর আগে জামাতের সেক্রেটারি মুজাহিদ বলেছিলো যে জামাতে বিশ হাজার হিন্দু সদস্য আছে। কারণে কিংবা অকারণে সেই সময় আমার কথা বলতে ভুলে গিয়েছিলো বা আমার বিষয়ে তথ্য গোপন করেছিলো মুজাহিদ। আমি-ই জামাতের একমাত্র নাস্তিক সদস্য। 🙂
@ফরিদ আহমেদ,
শাব্বাস! । এই রাজাকার গুলো যে আর কত মিথ্যাচার করবে কে জানে। ভাষা সৈনিক(!) গো আজম তো জেলে বসে জামাই আদর পাচ্ছেন। বেচারার কষ্ট যে আর ৯০ বছর সে বাচবে না।না হলে ৯০ বছর ধরে এমন আদর যত্ন পেত।এখন সে মনে হয় আফসোস করছে যে কেন আগেই জেলে ঢুকলাম না 😀 ।
আচ্ছা এই ব্যাটাকে কি জামাত ইসলামী ভাষা সৈনিকের পাশাপাশি ৭১ সালের মুক্তি যোদ্ধার খেতাব দিয়ে দিয়েছে? আপনি কি এমন কিছু জানেন?জানলে দয়া করে জানাবেন।
:hahahee: আপনি পারেনও ভাই 😀
@ফরিদ আহমেদ,
গ্যারান্টি চাইছেন তাইনা? ভেবেছিলাম একজন মানুষ যখন বলছে সে আর আসবেনা, আপনি চুপ হয়ে যাবেন, না হয় অন্তত অপেক্ষা করবেন দেখতে সে ফিরে আসে কি না। কিন্তু আপনার তর সইলোনা। তখন মইনুল রাজুর ডাকে ফিরে আসায় যে প্রচুর পাঠক খুশী হয়েছিলেন, তাদেরও যে মন বলতে একটা জিনিষ আছে তার বোধ হয় আপনি কেয়ার করেন না। আমি আপনাকে নিশ্চয়তা দিচ্ছি আর কোনদিন এখানে কোন লেখা দিচ্ছিনা, কারো ব্লগে ঢুকে মন্তব্য করবোনা। সাতক্ষীরার হিন্দুদের কান্নার কথা, রামুর বৌদ্ধদের হাহাকার, শাপলা চত্বরে তেঁতুল শাফির সৈ্নিকদের ধ্বংসযজ্ঞের কথা আর সর্বোপরি রাজনৈ্তিক ইসলামের সমালোচনা করে এখানে আর কোনদিন কারো বিরক্তি ঘটাবো না।
তো পাঠিয়ে দেন না মানুষকে এখানে, দেখে যান তারা আমি কেমন মানুষ। ইংল্যান্ড তো আর পৃথিবীর বাইরে কোন গ্রহে হয়। তথ্য ঠিকানা সব আপনার তো জানাই আছে। ঠিকানা পেলে সদালাপী, জামাতি, হিজু, হুজি, হেফাজতিরা আপনাকে বড় অংকের একটা পুরুষ্কারও দিতে পারে। কারণ আমার সারা জীবনের কলমযুদ্ধটাই ছিল এদের আদর্শের বিরোদ্ধে। তা অবশ্য ততদিন অব্যাহত থাকবে যতদিন এ দেহে শেষ রক্তবিন্দুটুকু আছে।
@আকাশ মালিক,
গ্যারান্টি চাওয়ার কী আছে? আপনি যে যাবেন না সেটা বোঝার জন্য রকেট সায়েন্টিস্ট হবার কোনো প্রয়োজন নেই। যাই বলেও দরজার কাছে দাঁড়িয়ে ছিলেন দেখার জন্য যে কে কে আপনাকে ঠেকায়। এই যে এই মন্তব্য করেছেন, এটা থেকেই তো বোঝা গেলো যে যান নি। নিজের কথাই নিজে রাখতে পারেন না। হাস্যকর একটা ব্যক্তিত্ব আপনি। আমার বাচ্চা ছেলেটার ব্যক্তিত্বও এর থেকে প্রবল। এই মন্তব্যই শুধু না, আরো মন্তব্য করবেন আপনি, এটাও জানি আমি। খামোখাই বিদায় নেন বার বার। নিজেকে যে খেলো করে ফেলছেন বোঝেন না সেটা।
এক কাজ করুন। একটা লেখা রেডি করে ফেলুন। যে উদ্দেশ্যে মুক্তমনার পাঠকদের ইমোশনাল ব্লাক মেইলিং করছেন, সেটা সফল হবেই। কেউ না কেউ ভাববেই যে আপনি ভিক্টিম, আর আমি অত্যাচারী। ফলে, আমাকে একটু বকে দেবে কেউ, আপনার কান্না থামানোর জন্য আপনার মুখে লেবেনচুসও তুলে দেবে কেউ না কেউ। ফিরে আসার ভূমিকাটাও লিখে রাখতে পারেন। খালি নামের জায়গাটাতে ডট ডট দিয়ে রাখুন।
জনাব আকাশ মালিক, আপনি মুক্তমনা ছেড়ে কোনোদিনই যাবেন না। যে বিষ আপনার ঢালা লাগে, সেটার জন্য মুক্তমনা ছাড়া সেরা জায়গা আর নেই। অন্য কোথাও গেলে মার খাওয়া লাগে, এখানে লাগে না। কোনো কারণে আকাশ মালিক নামে থাকতে না পারলেও ভিন্ন পরিচয়ে ফিরে আসবেন আপনি। এক ভৌতিক ছদ্মবেশ নিয়ে দশ বছর কাটিয়েছেন, অন্য ভৌতিক ছদ্মবেশ ধরতে বেশি সময় লাগবে না আপনার। তবে, আপনাকে একটা ছোট্ট জিনিস বলে দেই। আমি শব্দের অলিতে গলিতে হাঁটা লোক। শব্দের গন্ধ শুকে বলে দিতে পারি তার স্রষ্টার রূপ। যেখানে যে নামেই পাবো আপনাকে আমি, অপকর্ম করলে, নির্দ্বিধায় ধোলাই দেবো, প্রমিজ।
আমাদের সমাজ কাঠামো যা, ভাষাও তাই। প্রবলভাবে পুরুষতান্ত্রিক। বাংলা ভাষার গালিগুলোর দিকে তাকালেই, তা পরিষ্কারভাবে দৃশ্যমান। এটাকে পালটে লিঙ্গ-নিরপেক্ষ করাটা আসলেই জরুরী, সময়ের বিশেষ প্রয়োজন।
@ফরিদ আহমেদ,
বাংলা ভাষার অধিকাংশ গালিই বৌ’র দিকের আত্মীয়-স্বজনবৃন্দ। যেমন, শালা, শালী ইত্যাদি। বৌ’এর দিকের আত্মীয়রা মনে হচ্ছে সবার খুবই আদরণীয়। প্রবল রাগে, ক্রোধেও তাদের স্মরণ না করে পারেন না পুরুষ আত্মীয়গণ। বরের দিকের আত্মীয়দের এত অনাদর দেখে খুব মায়া লাগে বেচারা আত্মীয়দের জন্য। তাদের স্মরণ করার ব্যবস্থাও করা দরকার। গালি-সংস্কৃতিতে, গালি-শব্দে তাদেরও স্থান দেওয়া উচিত। এ জন্য কিছু গালি হতে পারে এমন; দেবর, ননদ, ভাসুর, জা ইত্যাদি।
@তামান্না ঝুমু, আরেকটি ভাল বুদ্ধি দেই। এত ঝামেলার দরকার কি? বরপক্ষের আত্মীয়দেরকে শালা, শালী আর কনে পক্ষের আত্মীয়দের কে ননদ, দেবর, ভাসুর এইসব নামে ডাকা হোক, তাহলেই কষ্ট করে আর ভাষা বদলাবার দরকার নেই।মেয়ে কে পুরুষ আর পুরুষ কে মেয়ে বলা হোক, এবং এই দাবী মানতে বাধ্য করা হোক। ভাষার আমুল পরিবর্তনের চেয়ে মনে হয় এই কাজটা সহজতর হতে পারে, কি বলেন আপনি? :-s
@তামান্না ঝুমু,
হাহাহা! এগুলো আবার গালি নাকি? এতো সব মধুর সম্ভাষণ।
বাংলায় বেশির ভাগ চরম গালিগুলোই চ বর্গীয়। কীবোর্ডে আনা যাবে না। ওগুলোর কথা বলেছি আমি। ওই অশ্লীল গালিগুলো সব নারীকেন্দ্রিক, অত্যন্ত অবমাননাকর তাঁদের জন্য।
@ফরিদ আহমেদ,
ওসব আমি তাই এড়িয়ে গিয়েছি দাদা।
কোনো পুরুষকে গালি দেয়ার সময়ও কেন যে তার নারী আত্মীয়কে অনিবার্যভাবে টেনে আনা ইয়হ তা-ই বোধগন্য নয়।
Human শব্দটা ইংরেজীতে ব্যবহৃত হলেও শব্দটি আদতে ইংরেজী নয় এবং Human একটি সম্পুর্ন শব্দ যা ভাঙা যাবে না। লাতিন Humanus ( উমানুস) বা মানুষ থেকে নর্মান শব্দ Humain ( উমেঁ) এবং সেখান থেকে Human > উমান > হিউম্যান। উল্লেখ্য , মধ্য যুগে ফরাসী ছিল ইংল্যান্ডের সরকারী ভাষা এবং সেহেতু সেসময় H পড়ার সময় উহ্য রাখা হত , উচ্চারিত হত না।
ইতালী এবং স্পেনে Humano ( উমানো) বলা হয়। জার্মানে die Mensch বা মানুষ একটি স্ত্রী বাচক শব্দ , ডাচেও ( de mens) তাই ।
@সংশপ্তক, human শব্দটি কোথা হতে এসেছে তা অবশ্য আমার জানা ছিল না। তবে আমাদের ভাষায় নারী-পুরুষ উভয়কে বোঝাতে ব্যবহৃত প্রায় সকল শব্দই পুরুষবাচক। ধন্যবাদ আপনাকে।
@তামান্না ঝুমু,
স্বাধীনতা ভিক্ষে করার জিনিষ নয় যা ভিক্ষার থালিতে পাওয়া যায় । নিজ যোগ্যতায় স্বাধীনতা অর্জন করতে হয়। পরাধীন ব্যক্তি পরাধীন থাকবে যতক্ষণ না সে নিজেকে মুক্ত করার যোগ্যতা অর্জন করে। প্রকৃতির নিয়মই যে , শক্তিশালী সব সময় রাজ করবে। আজকের দুনিয়ায় জ্ঞানই শক্তি । ইয়াহুর মারিসা মায়ারকে দেখুন । এই নারী ডক্টরেট ওয়ালা কয়েক হাজার পুরুষকে প্রতিদিন পরিচালন করছেন। বাংলাদেশের নারী তো দুরের কথা , কোন বাংলাদেশী পুরুষ এই পর্যায়ে পৌছুতে পারেনি। কারণ , জাতি হিসেবে বাংলাদেশ এখনও জ্ঞানের জগতে অনেক পেছনে । বাংলাদেশীরা আমেরিকায় এসে যেখানে জেলা সমিতির নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত থাকে , সেখানে কয়েকজন ইহুদি একত্র হয়ে ওয়াল স্ট্রীটে হাই টেক ব্যবসা খোলে। জ্ঞানের সন্ধানেই মুক্তি সম্ভব , কান্না কাটি করে নয় ।
@সংশপ্তক,
এই জ্ঞান অর্জনের প্রধান মাধ্যম হচ্ছে ভাষা। ভাষা কেবলমাত্র মনের ভাব প্রকাশেরই মাধ্যম নয়। ভাষাতে পুরুষের তৈরি পুরুষাধিপত্যের কথা ও তা নিরসনের মাধ্যমে ভাষা তথা ভাব প্রকাশ ও জ্ঞানার্জনের প্রধান মাধ্যমকে লিঙ্গনিরপেক্ষ করার বিষয়ে আমি কিছু বলার চেষ্টা করেছি এই পোস্টে। আপনি মারিসা মায়ারের কথা বলেছেন। শুধু তিনি কেন। নারী পুরুষ নির্বিশেষে সকলেই বিভিন্ন বিষয়ে, বিভিন্ন ক্ষেত্রে জ্ঞান যোগ্যতা ও সাফল্য অর্জন করুন এটাই কাম্য। আমি ত এসবের বিরুদ্ধে কোনো কথা বলিনি বা কারুকে নিরুৎসাহিত করিনি।
আপনি কান্নাকাটি কোথায় দেখলেন?
পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায় পুরুষ কর্তৃক উদ্ভাবিত শব্দাবলীতেও রয়েছে পুরুষতান্ত্রিকতার ছাপ। খুবই সত্যি এবং বাস্তব। পুরুষতন্ত্র থেকে মানবতন্ত্রে উত্তরণ সময়সাপেক্ষ। যদিও বক্ষমান রচনায় মানব-মানবী অথবা মানুষ-মানুষীর মাধ্যমে লিঙ্গবৈষম্য দেখানো হয়েছে। তবে মানব বা মানুষ শব্দগুলো প্রায় সর্বক্ষেত্রেই নারী-পুরুষ নির্বিশেষেই ব্যবহৃত হয় বলে মনে হয়। বাংলায় এরচে ভাল শব্দ পাওয়া কঠিন হয়ত। অন্যান্য পুরুষতান্ত্রিক শব্দ থেকে বেরিয়ে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে এসব শব্দের ব্যাপক ব্যবহারের মাধ্যমে এদের সামান্য লিঙ্গবৈষম্য দূর করা সম্ভব। নুতবা নতুন শব্দ ব্যবহার করতে হবে। সেটা দূরূহ ব্যাপার হবে বটে।
সুন্দর রচনার জন্য ধন্যবাদ।
@কায়সার ইমরান,
কিছু মনে করবেন না মহাত্মা ( এটির সম্ভভবত নেতিবাচক মানে স্ত্রী বাচক নেই, তাই একটু চেষ্টা করা আরকি ) , আপনি কি লেখাটা পড়েছেন?নাকি স্টেডিয়ামের যেসব দর্শকের কাজই হাততালি দেয়া, আপনি সেই দলে পড়েন? সেটা হলে বলার কিছুই নেই। সেটা না হলে শুধু এটুকুই বলব যে আগে কোন লেখা পরে বোঝার ক্ষমতা অর্জন করেন, তারপর মতামত দিন, না হলে এটা শুধুই মানুষের বিরক্তির কারন হয়ে দাঁড়ায়!
@দারুচিনি দ্বীপ,
আপনার মন্তব্যগুলোর ধরণ দেখে এটা স্পষ্ট হয়ে গেছে যে আপনি কোন তন্ত্রের প্রতিভূ। আপনি যে লেখাটা পড়েছেন এবং আপনার মাঝে প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে এবং আপনি তা ব্যক্ত করেছেন – এভাবেই প্রতিক্রিয়াশীলগণ নিজেদের ব্যক্ত করে থাকেন সবসময়।
ভাষা মানুষের প্রতিক্রিয়ার প্রকাশ। আর তাই প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠীর ব্যবহৃত শব্দাবলীই ভাষাকে শাসন করেছে যুগ যুগ ধরে।
“বোঝার ক্ষমতা অর্জন করেই মন্তব্য করুন”- এ কামনা রইলো। ধন্যবাদ।। :-s
@কায়সার ইমরান,
পুরুষতন্ত্রের প্রতিভু। এটাই বলতে চেয়েছিলেন না? যদি কোন কিছু বলতে চান তবে ফরিদ সাহেবের মত সোজাসুজি বলে দেবেন, এতে আলোচনা করতে সুবিধা হয়, ভুলবুঝাবুঝি কম হয়, হলেই সেটার অবসানের অপেক্ষাকৃত ভাল সুযোগ থাকে! অযথা আপনার মত ডিপ্লোম্যাটিক হবার দরকার পড়ে না বলেই আমার বিশ্বাস, এতে খোচাখুচিটা আরো দূরে চলে যেতে পারে, কোন সমাধান ছাড়াই।
আমার কথা না আউড়ে নিজে নতুন কিছু বলতে পারতেন কামনা করার সময়, এতে আবেদনটাও অনেকটাই বেড়ে যেত। ধন্যবাদ!