সুরবেক বিশ্বাসের ‘বর্ণময় জীবনে ঝোঁকই ছিল নিত্যনতুনে’ (আনন্দবাজার পত্রিকা, ১৩ দিসেম্বর, ২০১২) প্রসঙ্গে এই লেখা বা সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া। রবিশঙ্করের জীবনে বহু নারীর আনাগোনা নিয়ে আনন্দবাজার পত্রিকার লেখায় চারটি নারীর কথা বলা হয়েছে, আরও কত নারীতে অনুরক্ত ছিলেন তা অনুক্ত রয়েছে । নিবন্ধটিকে প্রায় একটি সফট পর্নগ্রাফী বলা চলে । যে জীবনযাত্রার বর্ণনা করা হয়েছে তা সাধারন বাঙালীর সামাজিক আচার, বিচার, মূল্যবোধের নিরিখে সহজ বাংলা ভাষায় একটি দুশ্চরিত্র লম্পটের জীবন । অনেকে বলতেই পারেন যে আমাদের সামাজিক মূল্যবোধ গোঁড়া, অতিনৈতিক, পুরনো পন্থী বা যুগোপযোগী নয় । সে এক অন্য আলোচনা । কিন্তু যুগোপযোগী হোক বা না হোক এই সামাজিক অনুশাসন সবার ক্ষেত্রে সমান ভাবে প্রযোজ্য ঠিক যেমন আইন সবার ক্ষেত্রে সমান । বিশ্বব্যাপী খ্যাতি, অর্থ, বহু গুনমুগ্ধ শ্রদ্ধাবনত ভক্তকুল, অনেক নারীর সান্নিধ্যের সুযোগ, ইত্যাদির প্রভাবে রবিশঙ্করের মনে হতেই পারে যে তিনি ভগবানের সমকক্ষ এবং বাঙালীর সংকীর্ণ সামাজিক মূল্যবোধের বেড়ায় আটকে থাকার দায় তাঁর নেই । প্রশ্ন সেটা নয় । প্রশ্ন যেভাবে আনন্দবাজার এই জীবনযাত্রাকে মোলায়েম প্রলেপ লাগিয়ে, গরিমান্বিত বৈধতা দেওয়া হয়েছে । বর্ণময় জীবনসাগরে ঢেউ, উনি তো সাধারন মানুষ নন, সুরসৃষ্টির মতই সিরিয়াস সম্পর্ক ছিল, ওঁর জীবনসংগী হতে গেলে উদার হতে হয়, অন্যদের সাথে ভাগ করে নিতে হয়, ইত্যাদি উক্তির মাধ্যমে পাঠককে সম্মোহিত ( নোম চমস্কি্র ভাষায়ে ‘manufacturing consent’) করা হয়েছে যে এইরকম বিখ্যাত ব্যাক্তির ক্ষেত্রে বহুগামীতা হতেই পারে । প্রথমেই হুসেনের উক্তির খোঁচায়ে বোঝানো হয়েছে যে এটা সুর-মুরছনার প্রেরনাও হতে পারে । এটা জানা যায় নি যে এই সৃষ্টিশীল মানুষটি যদি মহিলা হতেন, তাঁর জীবনসঙ্গী কি একইরকম উদার হতেন বহুগামীতায় । আনন্দবাজার কিভাবে পেশ করতেন সেই বর্ণময় চরিত্র? সেও এক অন্য আলোচনা ।
একটি নিম্নগামী, হীনমন্যতায় ভোগা জাতি হিসেবে আপামর বাঙালীর মধ্যে অতি বীরপূজা বা নায়ক-বন্দনার (hero-worship) প্রবনতা থাকতেই পারে (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার প্রমান। রবীন্দ্রনাথের কোন সমালোচনা বা নিরপেক্ষ বিশ্লেষণ এখন কার্যত অসম্ভব । চারিদিকে হা হা রব উঠবে) । কিন্তু তথাকথিত একটি প্রথম শ্রেনীর সংবাদমাধ্যমের কাছে এটা প্রত্যাশিত নয় । আরও একটু নিরপেক্ষতা, সৎসাহস আশা করা যায় । সাদাকে সাদা বলা এবং কালোকে কালো বলার সাহস তো সংবাদমাধ্যমেরই থাকার কথা। “ভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীতের প্রসারে, একনিষ্ঠ সাধনায়, পরীক্ষামুলক সৃষ্টিতে, বিশ্বব্যাপী বিস্তারে রবিশঙ্করের অবদান অনস্বীকার্য এবং আমাদের গর্বের আধার । কিন্তু ব্যাক্তিগত জীবনে তিনি দুশ্চরিত্র, লম্পট ছিলেন, যা আমাদের সামাজিক অনুশাসনে ক্ষমার অযোগ্য”, এই কথাগুলি আনন্দবাজারেরই লেখার কথা। কারো মৃত্যুর পরে তার সন্মন্ধে কটু কথা বলা প্রথা নয়। তাই যদি হয় তো এই প্রসঙ্গের অবতারনা এখন করার দরকার ছিল না, তাঁর সঙ্গীত নিয়েই অনেক আলোচনা করা যেত। নাকি লোভ সংবরন করা যায় নি। রসালো গল্প বাজারে কাটে ভাল। বিখ্যাত ব্যাক্তির হলে তার বিনোদন মুল্য, টি আর পি আরও বেশি। যদি মানুষটাকে জানা বা জানানো উদ্দেশ্য থাকে তাহলে দোষগুণ নির্বিশেষে অকপটে তা পেশ করা উচিত। বিশ্বের সঙ্গীত জগতে তাঁর অবদানের জন্য যেমন আমাদের গর্ব হয়, তেমনই তাঁর অসংযমী চরিত্রের (সাংগীতিক অবদানকে খাটো না করে) দায় ও লজ্জাও আমাদেরই।
আমার অভিযোগ দুটি। এক, প্রকারান্তরে মিথ্যাভাষণ। দ্বিতীয়টি আরও গুরুতর, এক ধরনের elitist শ্রেনীবিভাগ। ধরা যাক বসিরহাটের বাস ড্রাইভার মদন মান্না যদি এই ধরনের একই সাথে বহুনারীতে জীবনযাপন করত তাহলে কি আনন্দবাজার একই ভাবে তার বর্ণময় জীবন বর্ণনা করত? যারা নিয়মিত সংবাদমাধ্যমের সাথে পরিচিত এবং বাস্তবের জমিতে বাস করেন, তাঁরা জানেন যে মদন মান্নাকে সমাজ এবং আনন্দবাজার দুশ্চরিত্র আখ্যাই দিত খুব সম্ভবত তার হাজতবাসও ঘটত। তাহলে রবিশঙ্করের ক্ষেত্রে এই দ্বিচারিতা কেন? তাঁর বিশ্বব্যাপী খ্যাতি বলে, তিনি অসাধারন শিল্পী বলে? এলিট শ্রেনীর জন্য একরকম নিয়ম, বিচার – তাদের কোন দোষই দোষ নয়, বরং ভক্তিতে গদগদ। অন্য সবার জন্য আর এক নিয়ম। এই দোষে বাঙালী সমাজও দোষী। অতীতেও আনন্দবাজার যখন কোন বিখ্যাত ব্যাক্তির জীবন নিয়ে রচনা লিখেছে, তখনি যুক্তির চেয়ে আবেগ বেশী, বিশ্লেষণের চেয়ে বন্দনা বেশী, এবং অতিরঞ্জিত রোম্যান্টিক বিবরন পাওয়া গেছে ।
একটি উদাহরন, একটি কারন, কোন বিষয়বস্তুর উপর সম্পূর্ণ আলোকপাত করে না। একটি জাতির গত দুশো বছরের ইতিহাসে সমাজের নানা বিভাগে বহু মনীষীর জন্ম হয়েছে যারা নিজ নিজ ক্ষেত্রে উৎকর্ষের শীর্ষে ছিলেন – যে ভাগ্য সব জাতি, প্রদেশ বা দেশেরও সব সময় হয় না। তা সত্ত্বেও কেন সাধারন মানুষের জীবনযাত্রায় তাঁদের ছাপ অকিঞ্চিৎকর, কেন সেই জাতির সামগ্রিক সমাজ জীবন আপেক্ষিক ভাবে নিম্নগামী, এটা বাঙালীর ভাবা দরকার। কারণগুলো চারপাশে ছড়ানো রয়েছে।
__________________________________________________________________
পার্থসারথি বন্দ্যোপাধ্যায় নিউ জার্সিতে বসবাস করেন। তাঁর ইমেইল ঠিকানা – [email protected]
আমি গত একমাস অপেক্ষার পর আমার লেখার সম্মন্ধে বিভিন্ন মন্তব্যের উত্তরে কিছু বলতে ছাই। কিছু মন্তব্যের উত্তর অন্যেরাই দিয়ে দিয়েছেন।
আমি লেখাটি আনন্দবাযারে দুবার পাথাই। কোন উত্তর পাই নি।
আমার লেখার বিষয় উপরের উক্তিতেই রএছে। রবিশাঙ্করের যৌন জীবন বা বহুগামিতা বা আমাদের সামাজিক মূল্যবোধ সঠিক কিনা তা আমার বিষয় ন। দুর্ভাগ্যবশত অনেকে সেইদিকেই গেছেন।
‘শিল্পীর জন্য অন্য নিওম’ – এ এক পিছল ঢালু পথ। বাঙালির এই প্রবণতা, বীরপূজা এবং সমাজ জীবনে তার প্রভাব এটাই আলোচনার বিষয় হওয়া উছিত।
আমার প্রধান বক্তব্য সংবাদমাধ্যমের অনৈতিক বা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বীরপুজা বা উল্টোভাবে নির্দোষ ব্যাক্তিকে কালিমালিপ্ত করা। পাঠকরা যদি সংবাদমাধ্যমের এই প্রবনতাটা ধরতে পারেন এবং আরো সাবধান হন তাহলেই আমার লেখা সারথক।
লেখক পার্থসারথি বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বেশিরভাগ মন্তব্যকারীই বোধয় লেখার এবং মন্ত্যব্যর মাধ্যমে এক আদিম বিনোদন গ্ররণ করতে সচেষ্ট ছিলেন!!!!! আনন্দ বাজার পত্রিকা যে খুব একটা ভুল কিছু করেছে এই লেখা এবং মন্তব্য গুলো দেখে মনে হচ্ছেনা বলতে বাধ্য হচ্ছি!!!!!!!!!
প্রতিটি মানুষেরই আলুর দোষ কিংবা বাদামের দোষ থাকতেই পারে – প্রকাশ্য কিংবা গোপনে। বিখ্যাত ব্যাক্তিদের নিয়ে আলোচনায় এটা আসতেই পারে যদি আসতে পারে তাঁদের অন্যান্য ব্যাক্তিগত ভাবনা চিন্তাগুলো – দোষের কিছু দেখছিনা! এসব আসলে আপেক্ষিক – কার কাছে কোনটি কতটুকু গ্রহনযোগ্য।
ইরানি ছবিতে নরনারী কুশীলব পরস্পরে চুমো খান না – আবার অনেক ভারতীয় ছবিতে পাত্রপাত্রী অভিনয়ের স্বার্থে একটু কাছা কাছি আসেন এবং “বাণিজ্যিক” দৃশ্যে অভিনয় করেন। যদিও এই “অভিনয়ের” স্বার্থে সাইফ আলী খান এবং সোহা আলী খান পরস্পরে নায়ক-নায়িকা হিসেবে অভিনয় কক্ষনো করবেননা – কেননা ওটা ওনাদের গ্রহণ যোগ্যতার লেভেলের বাহিরে।
আপেক্ষিক ভাবে, লেখকের হয়ত খারাপ লেগেছে – তবে আমার অতো লাগেনি, হয়ত ওটা “গার্ডিয়ান” লেভেলের লেখা না হয়ে “ডেইলি মেইল” লেভেলের লেখা হয়েছে। যা যুগ পড়েছে – পাঠককে একটু ব্যাতিক্রম লেখা দিতেই হয়। আর আন্দবাজারের বর্তমানে যে লেজে গোবরে অবস্থা – তাদের একটু “ডেইলি মেইল” মত হতেই হচ্ছে।
এই ইন্টারনেটের যুগে রবিশঙ্কর সম্পর্কে তথ্য বের করতে এক সেকেন্ডের বেশি লাগেনা।
ব্যাক্তি = ব্যক্তি (টাইপো)
মুক্তমনায় স্বাগতম। আনন্দ বাজারের লেখাটি নিচুমানের হয়েছে এটা সত্যি। তবে যে কোনো মানুষেরই জীবনের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জনের প্রতি আসক্তিতে আমি দোষের কিছু দেখি না, যদি না সে তার বর্তমান সঙ্গীর সাথে প্রতারণা করে।
আশা করি নিয়মিত লিখবেন।
আনন্দবাজারের লেখাটি অত্যন্ত খেলো তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই| আনন্দবাজার চিরকাল ধর্মেও ছিল এবং জিরাফেও| গুরুত্ত্বপূর্ণ, বিশ্লেষণধর্মী, বিবিধ বিষয়বস্তুর সাথে তারা সুরসুরি দেওয়া চুলকানিমূলক লেখা চিরকালই বার করে এসেছে| যাঁরা নিয়মিত আনন্দবাজার পরেন, তাঁরা এই বাজারী দিকটার সাথে সম্যকভাবে পরিচিত| এই নিয়ে খুব বেশি মাথা ঘামান না| শুধু আনন্দবাজারকে দোষ দিয়ে লাভ নেই| বহু বহুল প্রচলিত সংবাদমাধ্যম, বাংলা সংবাদপত্রের আদি যুগ থেকেই আদিরসকে ভরসা করে কাটতি বাড়িয়েছে| তফাতের মধ্যে আনন্দবাজার এই পুরনো মদ্যটিকে অনেক ঝকঝকে মোড়কে উপস্থাপন করতে সক্ষম|
এই অবধি ব্লগ লেখক ঠিক ছিলেন| আনন্দবাজারের সংবাদিতিকতার মানের সমালোচনা অবশ্যই গুরুত্ত্বপূর্ণ|কিন্তু তিনি কেন অযথা জ্যাঠামশায়ের মতন পন্ডিত রবিশঙ্করের যৌন জীবন নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন তা বোঝা গেলনা! রবিশংকর কোন আইন ভঙ্গ করেছেন তা স্পষ্ট নয়| তিনি একগামী হবেন না কি বহুগামী হবেন সেটা, একান্তই তাঁর ব্যক্তিগত ব্যাপার| এর জন্যে সমগ্র বাঙালি জাতি দুরে থাক, তিনি বেঁচে থাকলে, তিনিই বা লজ্জিত কেন হতেন, সেইটা বোধগম্য হলো না| দুই বা দুইয়ের অধিক ব্যক্তি অন্যের ক্ষতি না করে, পরস্পরের সম্মতিতে যেমন খুশী যৌনজীবন যাপন করতে পারেন| তাতে কারো পিতৃদেবের কোনো ক্ষতি সাধন হয়না| এইটা রবিশংকর থেকে রিক্সাওয়ালা রবি মন্ডল, সবার ক্ষেত্রেই সমান ভাবে প্রযোজ্য|
এইখানে আকাশ মালিক মন্তব্য করেছেন:
জানিয়ে রাখি, একগামী হওয়া যেমন সর্বদা ‘হালাল’ নয়, তেমন বহুগামী হওয়া ‘হারাম’ নয়!
বহু একগামী বীরপুরুষ আমাদের চতুর্দিকে ঘোরাফেরা করছে যারা বউ পেটানো থেকে শুরু করে বৌকে ধর্ষণ অবধি করে|তারা বছর বছর বাচ্চা পয়দা করে যে বৌকে ছিবড়ে করে, সেইটা কি বৌদের সম্মতিতে? নারীদের তারা গরু ছাগলের থেকে কিছু মাত্র উন্নত জীব বলে মনে করেনা|
অন্যদিকে রবিশংকর যদি একসাথে একাধিক নারীকে খোলাখুলিভাবে শারীরিক ও মানসিকভাবে ভালোবেসে থাকেন তাদের সম্মতি নিয়ে, কোন অন্যায় তিনি করেছেন বোঝা গেলনা| তিনি যুদ্ধবাজ কোনো ধর্মীয় নেতার সাথেও কিভাবে তুলনীয়? রবিশংকর না কোনো বালিকাকে বিবাহ করেছিলেন, না কোনো মেয়ের বাপ দাদা জ্ঞাতি গুষ্টিকে ঠেঙিয়ে তারপর তাকে নিজের তাঁবুতে জোর করে পুরে প্রেমালাপ চালিয়েছেন! নাকি নিজের পুত্রবধুকে পেতে, পালিত পুত্রকে চাপ দিয়েছিলেন বিবাহবিচ্ছেদের জন্যে?
@অনামী,
ভাল কিছু পয়েন্ট উল্লেখ করেছেন, আর এরকম প্রশ্ন জাগাই স্বাভাবিক। উত্তরটা বোধ হয় লেখক দিয়েই রেখেছেন এভাবে-
অসাধারণ বাঙ্গালী বা অবাঙ্গালী সমাজের কথা উল্লেখ হয়নি।
এর পরপর যে প্রশ্নটা আসে তা হলো- যে কাজ একজনের বেলা স্বাভাবিক বা গ্রহনযোগ্য, একই কাজের জন্যে অন্যকে পাথর মারা কেন?
ঠিক, রবির বেলায় যদি অন্যায় না হয়, অপরের বেলায় কেন হবে? আর এটা যে অন্যায় নয় সেটা প্রমাণ করার তাগিদ আসে কেন?
অধিকাংশ শিল্পীর জীবনে সৃষ্টির জন্য সৃজনশীল যৌনতা অতিঅপরিহার্য্য। তিনি গায়কই হৌন বা পেন্টারই হোন! নিজের বদ্ধ সত্ত্বাকে ধ্বংস করতে না পারলে শৈল্পিক অনুপ্রেরণা পাবেন কোথা থেকে? শিল্পী, গায়ক, লেখকদের যৌন জীবন সাধারন মানুষদের সাথে না মাপায় শ্রেয়! যৌনতা, নারী তাদের সৃজনশীলতা অনুপ্রেরণার অবিচ্ছেদ্য অংশ। মুক্তমনাতে স্বাগতম।
@বিপ্লব পাল,
কথাটি কি মহিলা আঁতেলদের জন্যও প্রযোজ্য?
আপনার কথা শুনলে মনে হয় এরশাদ সাহেব সবচেয়ে খুশী হবে। আমাদের লেজেহোমো এরশাদ সাহেব যখন ক্ষমতাচ্যূত হয়ে আদালতে নাকানি চোবানি খাচ্ছিলেন তখন তার বাড়ি থেকে উদ্ধারকৃত সেক্স টয় প্রসংগ আদালতে উঠেছিল। তখন ওনার আইনজীবি অনেকতা আপনার কথাই আদালতে বলেছিলেন।
অমর্ত্য সেন মহাশয়েরও নাকি যৌবন কালে একটু আধটু ইয়ে অভ্যাস ছিল শোনা যায়।
@আদিল মাহমুদ,
এরশাদ সাহেব সৃজনশীল বই কি। এমন উৎকৃষ্ট বেহায়াপনা এবং কবিত্বের উচ্চমানের অভিনয় নিখাদ সৃজনশীল মানুষের পরিচয়। আমাদের এক কাকু ছিলেন- সাহিত্য প্রেমী, বাঙালী জাতিয়তাবাদি। বি টি ভি দেখা যেত আমাদের বাসায়। বাংলাদেশ জলে ভাসছে, আর তার ওপর এরশাদের কবিতাগুলি বি টি ভিতে দেখাচ্ছে। এরশাদের মাথায় এত বুদ্ধি। একবার দমদম এয়ারপোর্টের ট্রানজিটে বসেই কবিতা লিখে ফেললেন-সেটা কোলকাতার সাংবাদিকদের পড়ে শোনালেন ও :lotpot: আনন্দবাজারে কবি ও কবিতা ছাপা হল। তিনি পশ্চিম বঙ্গের সাহিত্যপ্রেমী, আঁতেলুকচুয়ালদের হৃদয় জয় করলেন। আমার সেই কাকু বল্লেন- দেখেছ-আমাদের জ্যোতিবাবু বাংলাটা লিখতেই পারেন না। সেটা সত্য। উনি বিলেত ফেরত ব্যারিস্টার-বাংলাতে দখল তার কোন কালেই ভাল ছিল না।
পরে জানলাম, লোকটা অন্য কাউকে দিয়ে লেখাত। ওর কোলকাতায় লেখা বিখ্যাত কবিতাটাও প্রিপ্লয়ান্ড। এহেন মানুষকে সৃজনশীল না বলাটা মহাপাপ 😉
@বিপ্লব পাল,
সৃজনশীল যৌনতা এর মানেটা কী বুঝি নাই। আমাদের গ্রামাঞ্চলে লোকে বলেন- গায়ক হতে হলে, গলা থেকে সুর বের করাতে হলে গাঁজা সেবন আর মদ পান করা লাগে। আরেকদল আছেন তারা বলেন হৃদয়ে ভাব বা সাধন-ভক্তি জাগানোর জন্যে গাঁজা সেবন অপরিহার্য।
দাদা, আপনার কথাগুলো কি জীববিজ্ঞান সমর্থিত? বহুগামিতা যদি পুরুষের জৈবিক স্বাভাবিক চরিত্র বা ধর্ম হয় তাহলে তা শুধু এক প্রকারের বা বিশিষ্ট ব্যক্তিজনের বেলায় কেন হবে?
@বিপ্লব পাল,
কথাটা বোধগম্য হল না!! 😕
সাধারণ আর অসাধারনের সংজ্ঞা কি ভাবে দেবেন?
মানে কি? মেয়ে শিল্পী, লেখিকাদের লেসবিয়ান হবার পরামর্শ দিলেন নাকি? :-s
পাঠকের জন্যে সুরবেক বিশ্বাসের সেই লেখাটার লিংক দিলে ভাল হতো। লেখক বোধ হয় বারবার খুব কৌশলে অন্যের উক্তি টেনে এনেছেন, নিজের ভাবনা বা বিশ্বাসকে লুকিয়ে রাখার প্রয়াসে। যেমন-
স্পষ্টতই লেখক এখানে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের জন্যে বহুগামিতা হালাল বলারই চেষ্টা করেছেন।
এ তো শুধু পয়গাম্বরদেরই মানায়। লেখক বোধ হয় রবিকে তা’ই মনে করেন।
@আকাশ মালিক,
একমত।
নেতিবাচক মন্তব্যের জন্য আগে থেকে দুঃখপ্রকাশ করেই বলছি। এজন্য প্রসঙ্গ: রবিশঙ্কর লেখাটি আমার কাছে অসম্পূর্ণ মনে হচ্ছে। আনন্দবাজার পত্রিকা এটি চিঠি আকারেও ছাপাতে দিতে পারতেন। অথবা ওখান অনেক কোটেশন দিয়ে লেখাটি দিলে পাঠক বুঝতে পারত।
মুক্তমনায় স্বাগতম। আনন্দবাজারের লেখাটা খুবই নীচুমানের মনে হয়েছে, কেবল বিষয়বস্তুর জন্য নয়, লিখনরীতির কারণেও। আসলে এ ধরণের লেখা আনন্দবাজারে দেখেই বরং অবাক হয়েছি। পড়ে মনে হয়েছে কাঁচা হাতের নবীন কোন লেখকের ‘চুলকানি মূলক’ ব্লগ পড়ছি।
তবে যৌনতা নিয়ে আলোচনায় আমার কোন ছুতমার্গ নেই। কিন্তু আনন্দবাজারের এই লেখাটার উপস্থাপনাটা খুবই বাজে ছিল।
আপনার লেখায় বেশ কিছু বাক্য এত বেশি সত্য যে বলার নয়। যেমন –
একদম ঠিক। এই অধমই তার জলজ্যান্ত ভুক্তভোগী।
(Y)
মুক্তমনায় স্বাগতম।
লেখার বিষয়টাতে বাঙলাদেশের পাঠকরা নিজেদের হয়ত কিছুটা দূরবর্তী বলে মনে করবে যেহেতু লেখাটা ফোকাস করে আছে ভারতীয় একটি পত্রিকার লেখাকে কেন্দ্র করে। তারপরেও রবিশংকর যেহেতু সবারই সম্পদ সেক্ষেত্রে হয়ত কিছুটা জায়গা করে নিতে অসুবিধা হবে না।
ব্যক্তিগতভাবে আমার মনে হয় এখানে রবিশংকরের “লাম্পট্ট”র বিষয়ে বিবেচনায় “যৌনতা”র বিষয়টা সম্পর্কিত থেকে যায়। যৌনতা দিয়ে লাম্পট্ট বা ব্যক্তি চারিত্র নির্নয় করা হলে আগে হয়ত আমরা ঠিক করে নিতে পারি যৌনতা ব্যাক্তি চারিত্র নির্ণয়ের মাপকাঠি হতে পারে কী না। অথবা শুদ্ধ নির্মল চরিত্র বলতে কোন কোন বিষয়ের সম্যক উপস্থিতিকে একজন ব্যাক্তির মধ্যে দেখতে চাচ্ছি বা আমাদের সমাজ দেখতে চাইতে দাবী করছে এবং দেখতে চাইছে। এভাবেও এ আলোচনায় ঢোকা যায় বলে আমার মনে হয়।
লেখার জন্য ধন্যবাদ। আরো লিখবেন আশা করি।