রসের সঞ্চার ঘটায় যে বিদ্যা তাকে রসায়ন বললে খুব বেশী ক্ষতি হবে বলে মনে হয় না। কারন এই শাস্ত্র অধ্যায়ন করে কেউ রসাতলে গেছে এমনটা শোনা যায়নি। কিশোর বয়সে সেই রসায়ন থেকে জেনেছিলাম- সব ক্ষারই ক্ষারক কিন্তু সব ক্ষারক ক্ষার নয়। অতি মোক্ষম জিনিস, না জেনে উপায় নেই। ঐ বয়সেই আরো পেয়েছিলাম একজন ওস্তাদজীকে, যে আমাদের ধর্ম শেখাতেন- ইসলাম ধর্ম। তার বেলায়ও ঐ ক্ষার-ক্ষারকের তুলনাটা খেটে যায়। একই সুরে সুর মিলিয়ে বলা যায়- ইচ্ছে করলে সব বিজ্ঞানমনস্করাই হুজুর হতে পারে, কিন্তু সব হুজুর বিজ্ঞানমনস্ক নাও হতে পারে। আমাদের হুজুর বিজ্ঞানমনস্ক ছিলেন। তাই তাকে আমরা আড়ালে সাইন্টিফিক হুজুর বলতাম। শ্রেনীকক্ষে ধর্মে তালিম দেবার ফাঁকে ফাঁকে তিনি নানান বিষয়ে কথা বলতেন। সেখানে থাকতো ধর্মের থেকে বিজ্ঞানের পক্ষপাত বেশী। তিনি বলতেন- ধর, এই যে পানির গ্লাসটা, এতে তুই শরাবও খেতে পারিস আবার সরবতও খেতে পারিস। তুই যা করাবি সে তাই করবে। তার নিজস্ব কোন রা নেই। সে হুকুম বর্দার। ফেরেশতাও তাই। এই গ্লাস হলো এক ধরনের ফেরেশতা। তারপরে এই পশুপাখীর কথাই ধর। ওদের মাথায় আল্লাহ যেভাবে প্রগ্রাম করে দিয়েছে ওরা তার বাইরে যেতে পারবে না। এই পশুপাখীর মাথার প্রগ্রামের নাম হলো সহজাত প্রবৃত্তি। এরাও এক রকমের ফেরেশতা, কিন্তু মানুষ তা না- সে শয়তানও হতে পারে আবার ফেরেশতাও হতে পারে, এইটা তার নিজের পছন্দ। ঐ বয়সে হুজুরের কথা শুধু কানেই ঢুকতো, শুনতে ভালো লাগতো, কিন্তু বুঝতাম সামান্যই। কিন্তু এখন বুঝি- এইসব নিস্পাপ ফেরেশতারুপী পশুপাখীদের আমরা কতটা নির্যাতন, দলন আর দুষন করে থাকি।
সে যাই হোক, পশুদের আমরা দুষন করে থাকি এব্যপারে কোন সন্দেহ নেই। দুই ভাবে আমরা এই গর্হিত কাজটা করি- পশু-গমন আর পশু-গীবতের মাধ্যমে। মানুষ পশু-গমন করে তার বিবর্তনীয় প্রানী-প্রবৃত্তির উপর নিয়ন্ত্রন হারিয়ে ফেলার কারনে, বিকৃতির শিকার হয়ে। যৌনতা নামক মহা আশির্বাদ তখন ফণা তোলে অভিশাপ হয়ে। তাদের জন্য করুনা। তাদের সুচিকিতসা এবং সুবিচার প্রয়োজন। আজকাল শিবির-কর্মীও পশু-গমন করে সংবাদের শীরনাম হয়। কথাটা বলার জন্যেই বলা। এই ব্যাপারটাকে আমি রাজনীতি করনের দোষ থেকে মুক্ত রাখতে চাই। কারন এই মনঃবিকৃতির শিকার শিবির অশিবির নির্বিশেষে যে কেউ হতে পারে। ব্যপারটাকে বরং বিচারক আর মনঃচিকিতসকের উপর ছেড়ে দিয়ে নিজেকে দায়মুক্ত করা যেতে পারে। আমরা সাধারন মানুষেরা যারা সাতে-পাঁচে নেই, মনে মনে তাদের ক্ষমাও করে দিতে পারি। কিন্তু যারা পশু-গীবত করে? তারা আসলে ক্ষমার অযোগ্য। ঠান্ডা মাথার খুনি আর হঠাতকরে ক্রোধের উপর নিয়ন্ত্রন হারিয়ে যারা খুনি হয়, এই দুয়ের মাঝে বিস্তর ফারাক। যারা পশু-গীবত করে তারা ঠান্ডা মাথায় জেনে-শুনে কাজটা করে। এই দুষনকারীরা সত্যিই ক্ষমার অযোগ্য অপরাধী। তাদের জন্য করুনা নয়, ঘৃনা হয় আমার।
পশু-গীবতকারী আসলে কারা? কি তাদের সামাজিক পরিচয়? উত্তর হচ্ছে- আমরা সবাই পশুগীবতকারী, কারন এই নামে সমাজে কাউকে চিহ্নিত করতে গেলে বাদ যাবে না কেউ- লোম বাছতে গিয়ে কম্বল উজাড়। একবার বুকে হাত দিয়ে বলুন তো, কুকুর, শিয়াল, শকুন, শুয়োর, কাক, সাপ এই প্রানীদের আমরা কি চোখে দেখি! আমার সাইন্টিফিক হুজুরের যুক্তিকে কেউ খাটো করে দেখাতে পারেন কি? এরাও কি নিস্পাপ ফেরেশতা নয়! এরা কি করতে পারে বা করে থাকে তা আমরা জানি। কি করতে পারে না তার ফিরস্তি দিলে আমার হুজুরই সঠিক প্রমানিত হবেন। এরা শুধুই ভিন্ন মত আর বিশ্বাসের কারনে লক্ষ লক্ষ স্বজাতিকে গ্যাসচেম্বারে ঢুকিয়ে মেরে ফেলতে পারে না, মৃগয়া আর পুণ্যের কারনে প্রানী নিধন করতে জানে না, রাজা-রানী হওয়ার জন্যে তথা ক্ষমতার তখতে বসার জন্যে স্বজাতির ভাগ্য নিয়ে সাপ লুডু খেলতে পারে না, হরতালের নামে জ্যন্ত মানুষ পুড়িয়ে মারতে পারে না, ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং করতে জানে না, অকারনে ক্ষমতা দেখানোর জন্যে খুন-গুম করতে পারে না, পিতার বদলে তার অপ্রাপ্ত বয়স্ক নিস্পাপ মেধাবী পূত্রকে অন্ডকোষ থেতলে নির্যাতনে হত্যা করতে পারে না, রগ কাটতে পারে না, ব্যংক-ব্রীজ নিয়ে দুর্নীতির পাহাড়ও বানাতে পারে না। আরো কত কি যে তারা পারে না তার শেষ নেই। এগুলো সব মানুষ পারে, মানুষ করে। অথচ নিজেদের ভয়াবহ দুস্কর্মের গুরুত্বকে বোঝাবার জন্যে মানুষ নিস্পাপ ঐসব পশুপাখীদের টেনে আনে। কেন আনে? আনে কারন, নিজেদের অপকর্মের দোসর চিহ্নিত করার মাধ্যমে স্বীয় পাপসমূহের গুরুত্ব ছোট করে দেখাবার জন্যে। ক্লাসের অকৃতকার্য ছেলেটি পিতামাতার কাছে নিজের অধঃপতনকে অল্পগুরুত্বপূর্ণ করে তোলার জন্যে অপরাপর অকৃতকার্য ছাত্রদের প্রসঙ্গও তুলে ধরে। এটা মানুষের অসংখ্য ঋণাত্বক গুণাবলীর একটা। এটা তার অর্জিত দোষ। ইচ্ছে করলে মানুষ এই দোষের থেকে বেরিয়ে আসতে পারে। যে কর্ম মানুষের ইচ্ছার অধীন তাকে আর যাই হোক সহজাত প্রবৃত্তি বলা যাবে না। কাজেই এইসব দোষ বর্জন ব্যতিরেকে মানুষ ফেরেশতা হতে পারবে না। তাই পশুপাখীদের যুক্তি তর্কের তুলাদন্ডে বিচার করে ফেরেশতা বললেও বলা যেতে পারে। নিজেদের পাপ ঢাকার জন্যে এইভাবে জেনে শুনে ঠান্ডা মাথায় পশু দলন আর পশু দুষন? এ যে অতি বড় ভ্রষ্টাচার!
নিজেদের অপরাধকে লঘু করে দেখাবার জন্যে, ব্যর্থতাকে ঢাকার জন্যে মানুষ যে শুধু মাসুম পশুপাখীদের ছোট করে তাই নয়, নিজের স্বজাতিকেও পশুতুল্য করে নিজেদের অক্ষমতাকে অন্যের ঘাড়ে চাপিয়ে হালকা হতে চায়। উদাহরন সরূপ ষড়যন্ত্র তত্ত্বের কথা বলা যেতে পারে। এই তত্ত্বের উপর ভর করে আমাদের তথাকথিত নেতা-নেতৃরা যখন তখন সাম্রাজ্যবাদী, সি-আই-এ এজেন্ট, পুজীবাদী, উপনিবেশবাদী ইত্যাদি বাস্তব ও কল্পিত গোষ্ঠিসমূহকে টেনে নামিয়ে আনে। পিঠের উপর চাপানো নিজের অপকর্মের কফিনটাকে কিঞ্চিত হালকা করার মানষে তারা এইসব বলে থাকে। আমার প্রশ্ন হচ্ছে- তাদের যদি তুমি ষড়যন্ত্রকারী হিসাবে চিনে থাকো, তাহলে কেন গেলে তাদের কোলে চড়তে? তোমারও তো ঘাড়ের উপরে মাথা নামের একটা গোলাকার পিন্ড আছে। তার ভিতরে আজব হলুদ পদার্থও আছে। তাদের যা আছে তোমাদেরও তাই আছে। তাহলে অভাবটা কিসের? তোমাকে তো তারা জোর জবর্দস্তি করে কোলে তোলে নাই। জোরাজুরির দিন শেষ। নিশ্চই তোমার কোন অবৈধ স্বার্থ ছিল, যা উদ্ধারের জন্যে তুমি তাদের কোলে চড়েছিলে। বদনাম দাও পরের। এটাও এক ধরনের দুষন। পশুর নামে স্বজাতির দুষন, পরোক্ষ পশু দুষন।
পশুগীবতের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে পশু দুষন করে চলেছে। নিজেরদের ভন্ডামী, মুর্খতা, অক্ষমতা আর অসম্পুর্ণতাকে ঢাকার জন্যে তারা জেনে শুনে এই সব করে। এই ঢাকাঢাকিতে আমরা জাতীয়ভাবে জড়িয়ে পড়ছি মুর্খতার কঠিন জালে। না ঢেকে এগুলোর উন্মোচন সম্ভব হলে সংশোধনেরও সুযোগ ছিল। কিন্তু তা করা সম্ভব হচ্ছে কি? এই অসম্ভাব্যতার পিছনে বঙ্গদেশের রাজনীতির অবদান সবচেয়ে বেশী। নিজেদের ব্যর্থতার গবাক্ষে কুলুপ এটে আমরা কারনে অকারনে পশ্চিমাদের দুষি। কেন দুষি? কারন ঐ একটাই। এই ব্যাপারে শেষ কথাটা বলে গেছেন শ্রদ্ধাভাজন হুমায়ুন আজাদ সাহেব। তিনি কোন জাতের মানুষ- আস্তিক না নাস্তিক, তার বিচার না করেই, তার উপরে আমার পক্ষপাত ষোল আনা, তার সত্যবাদীতা আর সাহসীকতার কারনে। পরোক্ষ পশু দুষন সম্পর্কে তিনি বলে গেছেন- “বাঙলার প্রধান ও গৌণ লেখকদের মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে প্রধানেরা পশ্চিম থেকে প্রচুর ঋণ করেন, আর গৌণরা আবর্তিত হন নিজেদের মৌলিক মূর্খতার মধ্যে”। সময় নেই অসময় নেই, কারনে অকারনে নিজেদের মৌলিক ব্যর্থতার কারনে আমরা পশ্চিমাদের ভর্তসনা করতে ভুল করি না। প্রফেসর আজাদের কথা ধরেই বলি- পশ্চিমাদের ষড়যন্ত্রের জালে আমরা ধরা দেব, নাকি জ্ঞানের জালে ধরা দেব সেটা আমাদের নিজস্ব পছন্দ। এর জন্যে আমাদের ইচ্ছাশক্তিই যথেষ্ট। এই পছন্দ করার কাজটাকে আর যাই হোক সহজাত প্রবৃত্তি বলা যাবে না। পশ্চিমাদের ষড়যন্ত্রের জালকেই যদি মানুষ বেছে নেয়, তাহলে সে ফেরেশতা হবে কোন পথে?
পশ্চিমে না আসলে হয়তো বুঝতেই পারতাম না, পশুরা কোন জাতের ফেরেশতা। বনের পশু তো আছেই, গৃহপালিত পশুদের যত্নও এখানে তুঙ্গে। পোষা কুকুরটার জন্যে মালিকের সহায়-সম্পত্তি উইল করে রেখে যাবার উদাহরন পশ্চিমে একেবারে কম নয়। মানুষের বেচে থাকার জন্যে ফেরাশতাদের সেবা অপরিহার্য। তাই তাদের বাচিয়ে রাখতে হবে। কারন মানুষ নির্ভেজাল ফেরেশতা নয়। তাকে কষ্ট করে ফেরেশতা হতে হয়। অন্যদিকে পশুরা নিজের থেকেই ফেরেশতা। তাদের জোর করে কিছু হতে হয় না। কথায় কথায় রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে ঐভাবে শুয়োরের বাচ্চা, কুত্তার বাচ্চা গাল পাড়লে নিস্পাপ পশুপাখীদের উপরে সহিংসতা বাড়বেই। তাতে আমাদের অস্তিত্বও যে হুমকির মুখে পড়বে, একথা সূর্য্যের উদয়-অস্তের মতো সত্য। কেন শুধু শুধু মানুষের নিজস্ব হীনচেতা আর কলুষের ভিতরে পশুপাখীদের নামিয়ে আনতে হবে? মানুষ তো নিজেই একটা উতকট গালাগাল হতে পারে। সে তো একাই এক’শ। রাজনীতির দলবাজদের উন্নয়নের চার বর্ষ আর পালাবদলের পঞ্চম বর্ষের কর্মততপরতা দেখে তা কি বুঝে ফেলা যায় না? গাণিতিক হিসাবে বিয়াল্লিশ ভাগ পাঁচ সমান সমান আট, অর্থাত প্রায় আটবার এই ভুলোমনা জাতির একই কিছিমের এই পঞ্চবার্ষিক নাটকের মঞ্চায়ন দেখার অভিজ্ঞতা হবার কথা বা হয়েছে। তারা স্মৃতিভ্রমে গোল্ডফিশকেও হার মানায়। প্রতি পঞ্চম বর্ষে তারা সবভুলে আবার হয়ে ওঠে নাটকের গুনমুগ্ধ শ্রোতা। মঞ্চের সামনে বসে তারা হাজারে হাজারে ওয়ান মোর ওয়ান মোর বলে চিতকার করে ওঠে। অমনি শুরু হয়ে যায় নাটক। কুশিলবেরা শুরু করে তাদের মঞ্চ ততপরতা। এসব অনেক বড় শিল্পকর্ম। যাই হোক সবকিছুর রাজনীতি করন ভালো না। কথা হচ্ছিল পশু-গীবত সম্পর্কে। সেকথায় আসা যাক। আমদের বঙ্গ সমাজে পশু-গীবত পশুর মর্যাদা ও নিরাপত্তাকে ভুলুন্ঠিত করছে একথা হলফ করে বলতে পারি। কিশোর বেলায় না বুঝলেও এখন বুঝতে পারি আমার ওস্তাদজীই ঠিক ছিলেন। ক্ষার-ক্ষারকের উপমার সাথে তিনি মিশে যেতে পেরেছিলেন। কিন্তু আমি নিতে চাই শুধুই ক্ষারের ধর্ম। শুধু পানিতে দ্রবিভুত হয়ে যাবার মতো একটা ধর্ম ধারন করতে চাই এই দেহে। ক্ষার যেমন পানিতে গলে আয়ন বিলায় আমিও তেমনি প্রতিবাদের সুরে থোকা থোকা ধিক্কারের কোয়ান্টা ছুড়ে মারতে চাই সেই সমস্ত মানুষের দিকে যারা নিজেদের ভন্ডামী লুকাবার জন্যে পশু-গীবতের মাধ্যমে পশু দুষন করে রাজনৈতিক ফায়দা লুটছে।
আমাদের পশ্চাদমুখী রাজনীতির নোংরা বাস্তবতা অত্যান্ত সুন্দর ভাবে, আয়রনির মাধ্যমে তুলে ধরার জন্যে অনেক ধন্যবাদ।
এই অংশটা ভালো লেগেছে। আমাদের নোংরা রাজনীতির চেহারা এমনই।
@মোঃ খায়রুল আলম,
আমি কিন্তু গালি দেই নাই, মানুষ শুনেছি এইভাবে দেয়। পশু নেই তো আমরাও নেই, ইকো সম্পর্ক। ধন্যবাদ।
প্রচুর প্রভার্ব, মেটাফোর, মিথ ব্যবহার করেছেন। প্রবন্ধের মূল বক্তব্য আয়রনিকালি উপস্থাপন করায় লেখাটা ভীষন শক্তিশালি হয়েছে। খুবই সমসাময়িক এবং প্রাসঙ্গিক বক্তব্য। অনেক ধন্যবাদ লেখাটার জন্য।
@জেসমিন সারাহ,
কখনো কখনও ব্যাঙ্গও খুব শক্তিধর হয়। ধন্যবাদ পড়ার জন্যে।
অসাধারন বিশ্লেষন। একেবারে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়া হয়েছে।
আর সময় নেই বসে থাকার, সেই ইঙ্গিত রয়েছে এখানে। বিশেষ করে ব্যঙ্গাত্বক উপস্থাপনা লেখাটাকে ভাব-গাম্ভির্য্যের দিক দিয়ে অনন্য করেছে। আরো লিখুন। ধন্যবাদ।
@রোমানা সৈয়দ,
কিছুই হবে না, কারন বাঙালী রেভুলুশন নয়, এভুলুশনে বিশ্বাসী।ধন্যবাদ।
আমার মনে হয় পশু দূষণ নামের আড়াল নেয়ার কোন প্রয়োজন ছিল না। আপনার মূল বক্তব্যটা রাজনৈতিক। পশুর নামে গালাগালি করার বরাত দিয়ে আপনার মূল বক্তব্যকে সাইড লাইনে নিয়ে চুপি চুপি উচ্চারনের রাজনীতি করার কারনটা বুঝতে চেষ্টা করছি আপাতত। এটা কি আপনার অভিযোগ করার পেছনে যে বস্তুগত কারন লাগে সেই কারন খুজতে যে হোমওয়ার্ক করতে হয় সেটা করে উঠতে না পারার প্রভাব? নাকি আপনি এমনই যে, আসল বক্তব্য সাহস করে উচ্চারন করতে পারেন না? কোনটা?
পশ্চিমা সমাজের, বিশেষ করে আম্রিকার, পুঁজির বিকাশের সর্বোচ্চ স্বাভাবিক পরিণতি হিসাবে সাম্রাজ্যবাদী দেশ হিসেবে গড়ে ওঠার যে সুবিশাল ইতিহাস, সে ইতিহাসকে কি আপনি অস্বীকার করছেন? আবার যদি আরেকভাবে বলি, আপনি কি এই ইতিহাস সম্পর্কে অবগত আছেন?
আপনি যে “ষড়যন্ত্র তত্ত্ব” বলে আরেকটি তত্ত্ব প্রচার করছেন বা পশু দূষণ নামের আড়ালে করার চেষ্টা করছেন, সেই চেষ্টার পেছনে অনুপ্রেরনাকারী কারা? ধর্মতাত্ত্বিক ন্যারেটিভের বরাতে যে বক্তব্য বর্তমানে জারি আছে তারা, নাকি পুঁজির একটা মেথডিক্যাল, বৈজ্ঞানিক ব্যাবচ্ছেদের ফলাফল হিসাবে উঠে আসা সিদ্ধান্তের মালিকরা? আপনি হয়ত জানেন, আমরা তাদের কমিউনিস্ট বলি।
ব্যাক্তিগতভাবে আমি মনে করি, আপনার বক্তব্য যাই হোক না কেন, সেটাকে পরিষ্কার করে বলতে হবে। হ্যাংকি প্যাংকি বয়ানের বোরকা পরিধান করে যদি আপনি কথা বলার চেষ্টা করেন সেই বক্তব্যটাই তখন “ষড়যন্ত্র তত্ত্ব” হয়ে যায় এটা আপনার বুঝতে হবে। “ষড়যন্ত্র তত্ত্ব”র অভিযোগ যদি “ষড়যন্ত্র তত্ত্ব” তত্ত্ব দিয়েই করতে হয় তখন সেটাকে “ষড়যন্ত্র তত্ত্ব” দিয়েই খারিজ করে দেয়া যায়। এটা যুক্তির অ আ ক খ। আমি নিশ্চিত এটা আপনি জানেন। তবে অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে সচেতন নন।
@সাইফুল ইসলাম,
আপনার কথাটা সঠিক নয়, কারণ আমি কিন্তু ষড়যন্ত্রের অস্তিত্বকে অস্বীকার করিনি কোথাও।
ধন্যবাদ।
ভাল লাগল বর্ণনা, ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ।
@গীতা দাস,
পরে আরো একটা প্যারা এবং ছড়া যোগ করেছি। ধন্যবাদ পড়বার জন্যে।
কিছু কিছু জায়গায় এডিট করেছেন দেখছি, তারপরও অনেকটা (টাইপো হবে বোধ হয়) রয়ে গেছে কিন্তু। আপনার প্রায় সবগুলো লেখার সাবজেক্টা থাকে খুবই চিন্তা জাগানিয়ার, তাই বানান দোষে সে দোষী হউক তা মোটেই কাম্য নয়।
‘কি’ আর ‘কী’ এর মধ্যে বিস্তর পার্থক্য আছে। একটা উদাহরণ দিই-
আপনি কি খেয়েছেন?
আপনি কী খেয়েছেন?
এ ভাবেই আমি এই মুক্তমনা থেকে শিখেছি, এখনও শিখছি।
দূষণ সঠিক বানান। একটু কষ্ট করে ঠিক করে দিয়েন।