১.
বিশিষ্ট নাগরিক: ইতিহাস কখনো আওয়ামীলীগকে ক্ষমা করবে না। এমন একটা সুযোগ তারা হেলায় হারাল? নির্বাচকমণ্ডলীর সাথে এমন বিশ্বাসঘাতকতা করল?
টক শো উপস্থাপক: কিন্তু রাষ্ট্রধর্ম যেহেতু একটি সেন্সেটিভ ইস্যু, আ’লীগ সরকার চাইলেই কি এটি তুলে দিতে পারত? দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ ধর্মপ্রাণ মুসলিম কি তা মেনে নিত?
বিশিষ্ট নাগরিক: কেন মেনে নেবে না? ভেবে দেখুন, ৩০০ সিটের মধ্যে ২৬৩টিই আওয়ামিলীগ ও তার সহযোগীদের দখলে। অর্থাৎ, তিন-চতুর্থাংশ আসনেরও বেশি। এতে কি প্রমাণ হয় না যে, দেশের তিন-চতুর্থাংশ মানুষ বাহাত্তরের সংবিধান ফিরিয়ে আনার পক্ষে ম্যান্ডেট দিয়েছে? স্বাধীনতা পরবর্তীকালে এত বিপুল ম্যান্ডেট নিয়ে ক্ষমতায় আসার নজির আছে আর? অথচ আ’লীগের কাছ থেকে জনগণ এবার প্রতারণা ছাড়া আর কিছুই পায়নি। সুতরাং, সিটি নির্বাচনে এই দলের ভরাডুবি হবে না তো, কার হবে?
টক শো উপস্থাপক: কিন্তু তিন-চতুর্থাংশ ভোটার যে বাহাত্তরের সংবিধান পুনঃ-প্রতিষ্ঠার পক্ষেই ভোট দিয়েছে, তা নিশ্চিত হচ্ছেন কি করে?
বিশিষ্ট নাগরিক: ভোটের প্যাটার্নটা দেখেন। আগেরবার মাত্র সামান্য কটি আসনের ব্যবধানে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছিল আ’লীগ। তখনকার দুর্বল সরকারের পক্ষে আসলেই ৭২ এর সংবিধান ফিরিয়ে দেয়া সম্ভব ছিল না। এমনকি রাজাকারের বিচারকার্যটাও তারা সংগত কারণেই শুরু করতে পারেনি। আ’লীগের সেই অসহায়ত্ব ঠিকই মনে রেখেছিল ভোটারগণ। তাই ২০০৮ এ ভোট-বাক্স উপচে ভোট দিয়েছে তারা আ’লীগকে, আসলে দলটিকে আর কোন অজুহাত খাড়া করার সুযোগ দিতে চায়নি ভোটাররা, ৭২ এর সংবিধান পুনরুদ্ধারে তারা ছিল বদ্ধপরিকর। লক্ষ্য করলে দেখতে পাবেন, বিগত নির্বাচনে আ’লীগ একাই পেয়েছে ২৩০ টা সিট। এটাও বলতে পারেন… ভোটাররা সচেতনভাবেই করেছে। উদ্দেশ্য, সহযোগীরা বিট্রে করলেও যেন আ’লীগ একা একাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পুনঃ-প্রতিষ্ঠিত করতে পারে। অথচ জাতির দুর্ভাগ্য, সহযোগীরা নয়, বরং আ’লীগ নিজেই বেইমানি করল জাতির সঙ্গে, মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের মানুষদের দীর্ঘদিনের একটা স্বপ্নকে ধুলোয় মিশিয়ে দিল!
২.
রতনপুর থানা-আ’লীগ কমিটির সভাপতির ছেলের স্কুলবন্ধুঃ হ্যাঁরে, তোগো দলরে তো সবাই নাস্তিক কইতাছে। হুজুররা যেভাবে মাঠে নামছে, তাতে তোগো তো আর কোন চান্স দেহি না!
ছেলে: হুজুরগো আর কি দোষ, ক? কতগুলান বাম আঁতেল অহন পুরা দলডারে নিয়ন্ত্রণ করতাছে। আ’লীগরে আস্ত কমুনিস্ট পার্টি বানাইয়া ছাড়ব এই আতেলগুলি!
বন্ধু: কি কস? তা কেমনে হয়? আ’লীগ আর বামফ্রন্টের লগে তো চিরকাল দা-কুমড়ার সম্পর্ক দেইখা আইতেছি! কেউ কারে দেখতে পারে না!
ছেলে: আরে কুতুব, আ’লীগের কোলে বইসা মুড়ি খাওয়া বাম নাস্তিকগুলার কথা কইতেছি আমি! দেখ, বঙ্গবন্ধুরে নিয়া সামান্য কটু কতা কইলে, লগে লগে গ্রেপ্তার করে। কিন্তু নবীর বিরুদ্ধে কতা কইলে কোন অ্যাকশান নেয় না। এগুলি বাম আপদগুলার প্লান মোতাবেকই হইতাছে। আজ যদি নবীকে নিয়ে কটুক্তিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিত, তাইলে হেফাজত এত উজাইতে পারত? মন্ত্রীগো হেফাজতের বিরুদ্ধে কতা কওয়ার কি দরকার আছিল, ক ত দেহি? শাহবাগরে যেখানে মাসের পর মাস রাখতে পারছে, সেইখানে হুজুরগো একটি রাইত থাকতে দিলে কি মাথার উপর আসমান ভাইঙ্গা পড়ত? তাছাড়া হেফাজতের ১৩ দফার বিরুদ্ধে কতা কওনের কোন দরকার আছিল? আচ্ছা, তুই আমারে ক, হেফাজতের কোন দাবিডা অযৌক্তিক? কোন মুসলমানের কি এগুলোর বিরুদ্ধে কথা বলা জায়েয? এই ১৩ দফা মাইনা নিলে আ’লীগের ভোট কি পরিমাণ বাড়ত, চিন্তা কর? হুজুরগো আর কি দোষ দিমু, আমারই তো মাঝে-মইদ্যে মনে হয়, আ’লীগ দলডা আস্তে আস্তে হিন্দু লীগে পরিণত হইতেছে! দেখ, হিন্দুরা বুক ফুলাইয়া হাটতে পারে এই দেশে, কিন্তু টুপি-দাড়িওয়ালারা ভয়ে ঘর থাইকাই বাইর হইতে পারে না।
বন্ধু: বুঝলাম। কিন্তু হিন্দু লীগ ক, আর কমুনিস্ট লিগই ক, তোদের বাণিজ্য ত অটুট আছে, হাট-ঘাট-মহাল সবগুলা থেকেই তো নিয়মিত কড়ি আসে! উহ! কাঁচা পয়সার গন্ধই আলাদা! আচ্ছা, তোদের তো এহন পোয়াবারো… তরা আমলীগের উপর এত ক্ষেপা ক্যান?
ছেলে: দ্যাখ, দলের সমালোচনা করাই দলের বিরুদ্ধে যাওয়া না। দলরে ভালবাসি বইলাই ত সমালোচনা করি। দলের আসল শুভাকাঙ্খি আমরাই।
বন্ধু: হা হা, তুই তো তাইলে অনেক মহৎ! মহৎ না হইলে কেউ নিজের দলের সমালোচনা করতে পারে! যাই হোক, আমলীগ দলডার উন্নতির লাইগা কি করা উচিত বইলা মনে হয় তর?
ছেলে: কিছু বিষয় বদলাইতে হইব। সর্বপ্রথম বামগুলিরে ধাক্কা দিয়া বাইর করতে হইব। শাহবাগের নাস্তিক মঞ্চ এই বাম নেতাগুলার প্লান। তাছাড়া, আরও কিছু কাজ করতে পারলে মন্দ হইব না। যেমন: নজরুলের গান জাতীয় সংগীত করা উচিত। হিন্দু তোষণ বাদ দেয়া উচিত। আমলীগের বুঝা উচিত, হিন্দু তোষণ বন্ধ করলেও হিন্দুগো ভোট হাতছাড়া হইব না। বরং, হিন্দুগো নিয়া বেশি আদিখ্যেতা করলে মুসলিম ভোট হারাইতে হইব। তবে আ’লীগ যদি সাহস কইরা বাঙালি জাতীয়তাবাদ বাদ দিতে পারে, তাইলে সবচেয়ে ভাল হয়। দেখ, বাঙালি জাতীয়তাবাদে কেমন যেন ভারত, ভারত আর হিন্দু, হিন্দু গন্ধ! আমরা বাংলাদেশের মানুষ। আমাগো পরিচয় বাংলাদেশীই হওয়া উচিত।
বন্ধু: কি কইলি??? তুই বাঙালি জাতীয়তাবাদে বিশ্বাস করস না?? আইচ্ছা, দোস্ত, ভাল কইরা ক ত, তোরা নেক্সট ইলেকশানে আবার পোলটি দিবি না তো?
ছেলে: পাগলের মত কথা বলিস না। বিএনপিতে যাওয়ার প্রশ্নই উঠে না। আর বাংলাদেশী জাতিয়তাবাদও জিয়ার ব্যক্তিগত সম্পত্তি না। জিয়া কউক আর যেই কওক, যেটা সত্য, সেটা একদিন প্রকাশ পাইবই। বরং আজ আমলীগ যদি এই বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ গ্রহণ করতে পারে, তাইলে দেখবি বিনপির সত্তর ভাগ ভোট আমাগো বাক্সে ভরতে পারমু।
বন্ধু: মন্দ কস নাই। তয় বিএনপির ভোট ভরতে যাইয়া, নিজেরাই বিএনপির ভিতর ভইরা যাইস না আবার!
ছেলে: তুই চিরকালই বেকুব রইয়া গেলি, নইলে বুজতি, এইডা কহনও হওয়া সম্ভব না। আমরা কয়েক পুরুষ ধইরা আমলীগ করি। আমলীগ ছাইড়া আমরা যামু কই? আমলীগের জন্য আমাদের অনেক ত্যাগ আছে, অনেক নির্যাতন ভোগ করতে হইছে, জেল-জরিমানা গুনতে হইছে। আমাগো যত নাম-ডাক, তা তো আ’লীগ করি বইলাই। এতদিনের অর্জন কি আমরা পানিতে ফালায় দিমু?
৩.
রিকশাওয়ালার বউঃ নাউজুবিল্লাহ্! নাউজুবিল্লাহ্! কি ভাইবা যে নৌকায় ভোট দিছিলাম! কি জবাব দিমু হাশরের ময়দানে!
রিকশাওয়ালা: কই থাইকা কি হাবিজাবি শুইনা মাতারির মাতামুতা দেহি সব গেছে!
রিকশাওয়ালার বউ: কি কইলা, তুমি? আমাগো মুর্শিদা ভাবি কি হাবিজাবি কওনের মানুষ? হের মত পরহেজগার আমাগো পাড়ায় আর কেডায় আছে? হেই ত আইজ সকালে কইল, আমাগো নেত্রী নবীরাসুলরে নিয়া টিটকারি করছে! তওবা! তওবা! এমুন কতা ত মুখে আনাও পাপ!
রিকশাওয়ালা: আরে থোও তোমার মুর্শিদি ভাবি! হেই ত দাঁড়িপাল্লা করে, ক্যান তুমি জান না? একটা জিনিস সবসোময় মাতায় রাখবা, আম্লিগের ভিতর আর বাইরে কুনো ফারাক নাই। অন্য দলের নেতারা মুখে ইসলামের কতা কয় ঠিকই, কিন্তু হারা দিন মাতাল থাকে। মজিবরই ইসলামের সব থাইকা বেশি খেদমত করছে। মজিবরই ত মদ, জুয়া নিষিদ্ধ করছিল, রেসকোর্স উঠাইয়া দিছিল। ভালমত শুইনা রাখ, মজিবরের মত পরহেজগার নেতা বাংলাদেশে আর দ্বিতীয়ডা আসে নাই, আর মাইয়াডাও পাইছে বাপের স্বভাব, ধর্মকর্মে কহনও অবহেলা করতে দেহি নাই! নেত্রীর মাথা থনে কহনো ঘোমটা সরতে দেকছ? হুনছি, নেত্রী পরতেক দিন সকালে নিয়ম কইরা কোরআন তেলোয়ত করে।
৪.
চাকুরিজীবীঃ কোন বদখেয়ালে যে আ’লিগরে ভোট দেয়ার কথা মাথায় আইছিল, আল্লাহ্ জানে!
সহচাকুরিজীবিঃ কি কন? আপনি নৌকায় ভোট দিছিলেন গেলবারের ইলেকশানে? আজব ব্যাপার! আপনারে তো কহনও আ’লীগপন্থী মনে হয় নাই!
চাকুরিজীবীঃ সত্য কথা কি জানেন, আমি ভোটটারে নষ্ট করতে চাই না। গতবার তো একটা নাবালক শিশুও বইলা দিতে পারত, আ’লীগ জিতব।
সহচাকুরিজীবীঃ শুধু এই কারণেই নৌকায় ভোট দিচ্ছিলেন?
চাকুরিজীবীঃ না, শুধু এই কারণেই না। আসলে বিএনপিরেও ভোট দিতে ইচ্ছা করতেছিল না। ভাবছিলাম, তারেইক্কার হাতে পড়লে দেশটা শ্যাষ হইয়া যাইব! আপনি জানলে অবাক হইবেন, হাওয়া ভবন আমার নিকট আত্মীয়ের কাছ থেকেও টাকা খাইছে। অন্যদিকে, আমলীগ যা বড় বড় খোয়াব দেখাইছিল, সহজে ভুইলা গেলাম! ক্যান, আপনার মনে নাই? ঘরে ঘরে চাকরী। দশ টাকা কেজিতে চাইল।
সহচাকুরিজীবিঃ তাইলে এইজন্যই আপনের ক্ষোভ! ঘরে ঘরে চাকরি দিলে বা জিনিসপত্তের দাম এক টাকাও না বাড়লে আপনি আমলীগের প্রতি সন্তুষ্ট থাকতেন?
চাকুরিজীবীঃ থোন ঘরে ঘরে চাকরি! গেলবারের আমলিগ তাও কিছু রাস্তা-ঘাটের কাজ করছিল, এবার তো কোন কাজই হয়নাই। উলটা এমন আইন করছে, আমাগো পেটে লাথি মারে। আমার এক দূর সম্পর্কের শ্যালকরে একটা ৪র্থ শ্রেণীর সরকারি চাকরীতে ঢুকাইয়া দেয়ার জন্য এলাকার আম্লিগ এমপির কাছে গেছিলাম। জানেন, কত টাকা চায়? দশ লাখ। শেয়ার মার্কেটে আমার কিছু সঞ্চয় ছেল, এবারকার আমলীগ আমলে তাও গ্যাছে। তারপরও জিগাইবেন, আমলিগের প্রতি আমরা সন্তুষ্ট না ক্যান?
সহচাকুরিজীবিঃ খুবই দুঃখজনক। কিন্তু আপনি যেইসব দুর্নীতি-ফুর্নিতির কথা কইলেন, এগুলান তো কম-বেশী বিএনপি আমলেও হইছে।
চাকুরিজীবীঃ দেখেন, বিএনপি দুর্নীতি করলেও ধর্ম নিয়া টান দেয় নাই। সবার উপর ধর্ম। বিনপিরে ভোট দিলেও না খাইয়া থাকতে হইব হয়ত, কিন্তু আমলিগরে ভোট দিলে সাক্ষাৎ দোযখে যাইতে হইব! মাঝে মইদ্যে মনে হয়, আমরা মুসলমানরাই এই দ্যাশে মাইনরিটি, আর হিন্দুরাই মেজরিটি!
৫.
স্কুল মাস্টারের ছেলে: বাবা, সবাই যা কওয়াকওয়ি করতাছে, তা কি সত্য?
স্কুল মাস্টার: কি কওয়াকওয়ি করতাছে?
ছেলে: আ’লীগ সরকার নাকি পয়গম্বরের অবমাননা করছে?
স্কুল মাস্টার: না বাবা, এইটা একটা অপপ্রচার। স্বাধীনতা বিরোধীদের পুরনো কৌশল। মুক্তিযুদ্ধের সময়ও তারা মুক্তিযোদ্ধাদের নাস্তিক আর বিধর্মী বলত। আজ যখন রাজাকারদের বিচার চলতাছে, সেই বিচার ঠেকানোর জন্য তারা আবার মাঠে নামছে পুরনো কৌশল নিয়া।
ছেলে: কিন্তু আমার কয়েকজন বন্ধু কয়, আ’লীগ নাকি সবসময় ধর্মের বিরুদ্ধে কথা বলে?
স্কুল মাস্টার: দেখ বাবা, আ’লীগ ধর্ম নিরপেক্ষতার আদর্শ মানে, আর ধর্মনিরপেক্ষতা মানে কিন্তু ধর্মহীনতা না, ধর্মনিরেপেক্ষতা মানে হল, আ’লীগ সব ধর্মের মানুষকে সমান সুযোগ-সুবিধা দেয়ার কথা বলে, সবাই যাতে নিজ নিজ ধর্ম স্বাধীনভাবে পালন করতে পারে, সেই নিশ্চয়তা বিধান করার কথা বলে।
ছেলেঃ তাইলে, বাবা, সবাই আ’লিগের এত বদনাম করে কেন?
স্কুল মাস্টার: এই বদনামের জন্য, বাবা, আ’লীগই কিছুটা দায়ী। আসলে আ’লীগ আর আগের মত নাই। আস্তে আস্তে বদলায় যাইতেছে। আ’লিগের মইদ্যে অনেক স্বাধীনতা বিরোধী ঢুইকা পড়ছে। তবে আ’লীগ আপোষ করলেও অন্তত মেনিফেস্টোতে ধর্মনিরপেক্ষতা, মুক্তিযুদ্ধ, বাঙালি জাতীয়তাবাদ – এইসব আদর্শ বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দেয়, রাজাকারদের বিচার করার প্রতিশ্রুতি দেয়। আর পুরোপুরি না পারলেও অন্তত কিছু কিছু বাস্তবায়নের চেষ্টা করে। আসলে যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করে, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের ভিত্তিতে দেশ গড়তে চায়, তাদের কাছে, বাবা, এখনো আ’লীগের বিকল্প নাই।
লিখে যান। চালিয়ে যান। সুস্থ আলোচনার জন্য উন্মুক্ত থাকুন।
শুভেচ্ছা
@কাজি মামুন, যদিও আপনি বারবার বলেছেন চরিত্রগুলো আপনার নিজের চোখে দেখা, সাহিত্যের কঠিন জায়গাটি কি জানেন, বাস্তবে যা মানুষ সহজে বিশ্বাস করে গল্পে সেটাই বিশ্বাস করাতে নানা কৌশল নিতে হয়। রাজনৈতিক বিষেশত সমসাময়িক রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে লিখতে গেলে সমস্যা আরো বেশি হয়। আপনার যে সাবজেক্ট, সমাজে আওয়ামী লীগকে লোকে কেমন করে দেখছে বা আওয়ামী লীগের সমর্থকরা আওয়ামী লীগকে আসলে কিভাবে দেখে- এই বিষয়টা নিয়ে গল্প লিখা আসলে খুব কঠিন। রবীন্দ্রনাথ স্বদেশীদের নিয়ে উপন্যাস লিখেছেন “ঘরে বাইরে”, তাতে প্রেম ঢুকিয়ে, পরকিয়া প্রেম ঢুকিয়ে দিয়েছেন, এই গল্পটায় এইরকম অন্য একটা কিছু ঢুকিয়ে দিতেন, পাঠক মনোযোগ থাকতো সেই দিকে, আর আপনি কৌশলে আপনার কার্যটা হাসিল করতেন। দেখাতেন দেশের ধর্ম নিরপেক্ষতাবাদী একটা দলের সমর্থকদের বাস্তব চিত্র। গল্পও হয়ে উঠতো বাস্তব সম্মত। ভাই আপনি আবার আমি জ্ঞান দিচ্ছি এটা ভাববেন না প্লিজ! মুক্তমনায় গল্প আমার দারুন পছন্দ। এইজন্য মন্তব্য করলাম। আওয়ামী লীগ-বিএনপি নিয়ে আমার কিছু বলার নেই, গল্পটা নিয়ে আমার কথা।
@সুষুপ্ত পাঠক,
ভাই, এইটা তো গল্প নয়। ট্যাগে গল্প লিখতে হয়েছে আসলে। কেন তা নিজেই বুঝে নিন।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
বেশ বাস্তবধর্মী লেখা হয়েছে বলেই মনে হয়।
শেষ প্যারাটায় যুগপত হতাশা এবং নিরুপায় আশাবাদের সংমিশ্রন আবারো কঠিন বাস্তবের জগতে ফিরিয়ে দেয়।
@আদিল ভাই,
যদি আমাকে কখনো জিজ্ঞাসা করা হয়, সত্যিকারের মুক্তমনার সাক্ষাৎ আমি পেয়েছি কিনা, তাহলে যে গুটি কয়েক লোকের নাম আমি চিন্তা ছাড়াই বলে দিতে পারব, তার ভিতরে আপনার নাম সম্ভবত উপরেই থাকবে।
ব্লগ জগতে বিচরণ বেশিদিন নয়, দু’বছর নিশ্চয়ই খুব বেশিদিনের মধ্যে পড়ে না, কিন্তু এরই মাঝে দেখেছি, কি তীব্র কাদা ছোড়াছুড়ি হয় এখানে। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই বলছি, সত্যিকারের মুক্তমনা এখনো বিরল (আমি কিন্তু নিজেকেও এ দলের বাইরে রাখছি)।
সেই বিরলদের একজন আপনি। যারা মুক্তমনা হতে চায়, তারা আমার মতে, আপনাকে আরও অনেকের মধ্য থেকে আপনাকে অনুসরণ করতে পারে।
@কাজি মামুন,
হেঃ হেঃ হেঃ। মাঝে মাঝে এই রকম কথাবার্তা দেখা যায় বলেই ব্লগের লোভ ছাড়তে পারি না।
শত ব্যাস্ততার মাঝে সংক্ষিপ্ত কমেন্টটা করে মনে হয়েছিল যে আপনার গল্পতে আসলে এ সম্পর্কিত আরেকটি অতি বাস্তব দিক বাদ পড়ে গেছে।
সেই বাদ পড়া এপিসোডটি হতে পারে অনেকটা এই রকমঃ
আমরা ৫ বছর পর পর ভোটের মাধ্যমে কারা আমাদের শোষন করবে তা নির্ধারন করি। অভিজ্ঞতা থেকে দেখা যায় যে প্রথম বছর দুয়েক নির্বাচিত শোষকের দল কিছুটা হলেও সংগত আচরন করে, এরপর দিনে দিনে বাড়তে থাকে অত্যাচার নীপিড়নের মাত্রা। কাজেই একই দলকে আবারো নির্বাচিত শোষকের ভূমিকায় আনার চিন্তা বেস বিপদজনক। তার চাইতে অপর শোষকদের আনাই ভাল, অন্তত প্রথম দুই বছর কিছুটা হলেও ছাড় পাওয়া যেতে পারে।
@আদিল মাহমুদ,
(Y) (Y)
আপ্নার সাথে নিজের চিন্তা-ভাবনার এত মিল খুঁজে পাই যে ………….কি বলব!
পাচঁটি ছোট ঘটনার মাধ্যমে সুশীল থেকে সাধারন মানুষের আগামী নিৰ্বাচনকে ঘিরে মনোভাব লেখক সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। (Y)
ঐ স্কুল মাস্টারের মত আমিও মানি যে,
@তারিক,
প্রথমেই ধন্যবাদ জানাই আপনার স্পষ্টবাদীতার জন্য। আপনি যদি আ’লীগকে নিয়ে এমনই ভাবেন, তাতে কোন দোষ নেই, কারণ ভাবনাটা একান্তই আপনার, যদিও আপনার ভাবনার সাথে অনেকের ভাবনারই সংঘর্ষ হবে, তবে প্রকৃত মুক্তমনারা তা ভাবনার জগতেই প্রকাশ করবে, লিপ্ত হবে না কুরুচিপূর্ণ বাদানুবাদে……….
আপনি নিজেকে আড়াল করেন না, আপনার বিশ্বাসের সাথে একমত না হলেও আপনার ভাবার ও বিশ্বাস করার অধিকারের প্রতি অবশ্যই সন্মান থাকবে মুক্তমনাদের। না হলে মুক্তমনা কিসের???
একজন মুক্তমনা আপনার সাথে একমত না হলে বলবে কেন সে একমত নয়। কিন্তু ‘তুমি নিম্নমানের যুক্তি দিয়েছ, কিন্তু কেন নিম্নমানের, তা আমি বলতে বাধ্য নই, কারণ তোমার মত নির্বোধের সাথে যুক্তি-তর্কে নামলে, আমার মান থাকবে?’ – এ ধরণের কথা বলা লোকেরাও কিনা মুক্তমনা দাবী করে নিজেদের!
পাঠ ও মন্তব্যের জন্য অশেষ ধন্যবাদ। আপনার জন্য (C)
@কাজি মামুন,
ভাইরে এটাকেই মনে হয় সভ্যতার সংকট বলা হয়।
@অর্ফিউস,
ঠিক বুঝলুম না, অর্ফিয়াসদা! সভ্যতার সংকট আবার কি জিনিস?? কাকে বলে?
@কাজি মামুন,
আমিও বুঝিনারে ভাই ।তবে এইসব তথাকথিত শিক্ষিত আর সুশীলদের জন্য যে দুনিয়া রসাতলে যাচ্ছে, আর গণতন্ত্রের নাম দিয়ে যেভাবে অগণতান্ত্রিকরা দেশে দেশে ক্ষমতায় আসছে, আর সুশীলরা তবু এই গণতন্ত্রের সাফল্যের জয়গান গাইছে, এতেই দেখবেন বর্তমান সুসভ্য অতি উদার, সভ্যতা আবার আদিম যুগে ফিরে যাবে ইনশাল্লাহ। 🙂
@অর্ফিউস, দেখবেন মামুন ভাই, অচিরেই বাংলাদেশ ইরান আর তালেবান আফগানিস্তানে পরিনত হবে যদি না সুশীলরা একটু সংযত না হন।এনাদের এই উদারতার সুযোগেই মৌলবাদীরা ক্ষমতায় আসে, আর সেই মৌলবাদীদের এই গনতন্ত্রের দরকার হয় মাত্র একবারই, যেমনটা খোমেনীর হয়েছিল।
আর এখন তুরস্কের হতে যাচ্ছে হয়ত। তবে তুরস্কের সরকারকে বেশ কৌসুলি বলেই মনে হয়।
এখানে পরিবর্তন হচ্ছে খুব ধীরে ধীরে। ইনারা বুঝেন যে ফল দেরীতে পাকলে সেটা মিষ্টি হয় বেশি।
বাউল আব্দুল করিম বলে বুঝে উঠা দায়,
কোথা হতে আসে নৌকা, কোথায় চলে যায়?
করিম সাহেব শাহ জালাল মাজারের পাশে এক কোণে বসে প্রতি বৃহষ্পতিবার গান গেতেন। ৮০/৮১ সালে প্রায় রাতেই তার সাথে দেখা হতো। ভোর রাত পর্যন্ত তার পাশে বসে গান শুনতাম। এ জন্যে কত গাল-বকা শুনেছি ভাবীর কাছ থেকে। মাটির মানুষ, প্রকৃতির সাথে মিশে থাকা একজন নিরহংকারী ভাল মানুষ ছিলেন শাহ আব্দুল করিম। একই সুরে গাওয়া তার আরেকটি গান শুনুন।
জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু ধ্বনি শুনা যায়-
ধন্যবাদ মামুনকে পাঁচটি পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামীলীগের অবস্থা ও অবস্থান বিশ্লেষণ করার জন্য। আমার মনে হয় আগামী নির্বাচনে যদি বি এন পি আসে তবে তা আওয়ামিলীগের কর্মকান্ড বা নির্বাচনী অঙ্গীকার পূরণে ব্যর্থতার জন্য যতটা না তত বেশি বাংলাদেশের জনগনের পরিবর্তনে বিশ্বাসী মনোভাব। তাছাড়া বিকল্প তো নেই। একবার একে আরেকবার ওকে।
অন্যদিকে,এবার তো নির্বাচনই অনিশ্চিত।
@গীতা দাস,
আমার মনে হয় না, দিদি, কোন রকম অনিশ্চয়তা আছে। দুটি দলই শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে যাবে, কারণ নির্বাচন ছাড়া তাদের গতি নেই। নির্বাচন না হলে, তারা জনগণকে শোসন করবে কি করে?
উৎসাহদান অব্যাহত রাখার জন্য অশেষ ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞ!
সামনের জাতীয় নির্বাচনের আমেজে সমাজের কিছু বাস্তব চিত্র তুলে ধরার জন্য ধন্যবাদ।লেখাটা ভালো লেগেছে।
আমার মনে হয় এ দেশের মানুষ ভোটের সময় কাকে ক্ষমতায় আনছে তা বিচার করেনা বরং কাকে ক্ষমতা থেকে ঝেটিয়ে বিদায় করছে তা ভেবে তৃপ্তির ঢেকুর তোলে। আমাদের মত সস্তা সেন্তিমেন্টে ভেসে যাওয়া জাতীর জন্য গণতন্ত্র কতটুকু মানান্সই তা অবশ্যই ভেবে দেখার বিষয়।আবার দূর্নিতির অসুস্থ প্রতিযোগিতায় একনায়েকতন্ত্র অপেক্ষা হয়তো এরকম খুড়িয়ে চলা গনতন্ত্রই ভালো। :-X
@ছন্নছাড়া,
এইরকম গণতন্ত্র নামের পারিবারিক উত্তরাধিকার তন্ত্রের চেয়ে, একনায়কতন্ত্রও বুঝি ভাল।একনায়ক তন্ত্রের সাফাই গাইছি না ( আর গেলেই বা ক্ষতি কি? যেখানে জামাতের সাফাই গাওয়া গণতান্ত্রিক অধিকার হতে পারে সেখানে হিটলারকে সমর্থন করাও গণতন্ত্র) ,তবে কামাল পাশার তুরস্ক আর বর্তমান তুরস্কের দিকে তাকান বুঝে যাবেন। মালয়শিয়া তেও মাহাথির মহাম্মদ এইসব ভেক ধারী গণতন্ত্রীদের চেয়ে ঢের ভাল ছিলেন।
:hahahee: :hahahee: :hahahee: পুরা লেখাটাই ভাল লেগেছে তবে এই অংশটাই সবচেয়ে মারাত্বক।
খাই বা না খাই, দোযখে যেতে রাজি নই কেউ।বড়ই চিন্তার বিষয়।:-s
@অর্ফিউস,
আমার চরিত্র চিত্রনে/মেকিংয়ে গলদ থাকতেই পারে, কিন্তু বিশ্বাস করুন, সবগুলো চরিত্র নিজের চোখে দেখা, সবগুলো ডায়ালগ নিজের কানে শোনা।
সুশীলরা আ’লীগের হাতে যে ‘গোল্ডেন অপরচুনিটি’ দেখতে পায়, তা যে কত ফাঁপা, তাই এই লেখার চরিত্রগুলো থেকেই অনুমেয়! আ’লীগের তিন-চতুর্থাংশ আসন কি বাহাত্তরের সংবিধান প্রবর্তনের পক্ষে রায়? আমাদের দেশের তিন-চতুর্থাংশ মানুষ ধর্ম নিরেপেক্ষতা ও মুক্তিযুদ্ধের উচ্চ আদর্শের পক্ষে রায় দিয়েছে? মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কি ৪০ বছরের নিরবচ্ছিন্ন পাইক্কা আবাদে আঘাতপ্রাপ্ত হয়নি? আ’লীগের বিপদ/সীমাবদ্ধতা কি একেবারেই নেই????
@কাজি মামুন,
আমি তো বিশ্বাস করলাম।অন্যরা অনেকেই করবে না। ওইযে আগের মন্তব্যে বললাম না যে আপনি যদি স্বর্গ থেকে অমৃতও নামিয়ে আনেন তবু সেটা আপনার বিতর্কের প্রতিপক্ষের কাছে গরল মনে হবে।দেখতেইতো পাচ্ছেন নিজের চোখে( আপনার পোষ্টে এবং জামাত প্রেমের আরেক পোষ্টে)।
ঠিক বলেছেন তবে এই সুশীল দের আমি প্রকৃত সুশীল না বলে ভেক ধারী সুশীল বলতেই বেশি পছন্দ করব;যারা আসলে তলে তলে প্রতিক্রিয়াশীল এবং সুশীলের ভং ধরে থাকে।
কখনই না। কিন্তু এই জিনিস আপনি কি তাদের বুঝাতে পারবেন, যারা তলে তলে বি এন পির অন্ধ ভক্ত, কিন্তু উপরে উপরে ধর্ম নিরপেক্ষ তথা সুশীলের ভং ধরে থাকে?
আমি বলছিলা যে আওয়ামী সমর্থক সবাই সুশীল।কিন্তু ভাল করে লক্ষ্য করে দেখুন যারা লীগকে ধুয়ে দিতে সদা প্রস্তুত, এইসব কিছু সুশীল নামধারী অশীল লোকজনরাই আজকাল বেশি। এটাকে আপনি এলিট শ্রেনির নব্য ফ্যাশন বলতে পারেন। ক্ষুধা কি, দারিদ্র কি, এইসব না বুঝে অনেক উঁচুতলায় থেকে এইসব নাক উঁচু মন্তব্য করে সহজেই লীগ কে এনারা ধুয়ে ফেলেন, এটুকুও স্বীকার করতে চান না যে, যদি দেশে ধর্ম নিরপেক্ষ না হলেও অন্তত যদি ধর্মীয় সংখ্যা লঘুদের কিছুটা নিরাপত্তা দিতে পারে তবে এই লীগই পারবে।
কাজেই প্রগতিশীল ভং ধারী প্রতিক্রিয়াশীল দের ধনুকের তীরটি যে লীগের দিকেই তাক করা থাকবে এটাই তো স্বাভাবিক!
প্রায় নষ্টই হয়ে গেছে। দেখেন এখন রাজাকারদের বিচারের কথা শুনলে অনেক মানুষকে নিজ কানে বলতে শুনেছি যে ৪০ বছর পর আর এইসব নিয়ে চিল্লাফাল্লা কেন আসল কাজ ফেলে রেখে?
শোনা কথা নাকি বিশ্বাস করতে নেই, তবে নিজের কানে শোনা কথা কি করে অবিশ্বাস করি বলেন?
কাজেই শুধু মুক্তি যুদ্ধের চেতনাবিরোধী কার্যকলাপ আর ৭১ এ জামাতের ভুমিকার ভিত্তিতে জামাত কে নিষিদ্ধ করতে গেলে, উলটা জামাতই লাভবান হবে অন্তত এমন চান্সটিই বেশি।
সেক্ষেত্রে বি এন পি ক্ষমতায় গেলে একই ছুতা ( তথাকথিত গন হত্যা সুত্র) দিয়ে আওয়ামী লীগ কেও যে নিষিদ্ধ করার পাঁয়তারা করবে না এইটা কি এই ভংধারী সুশীল সমাজ বুঝে না, নাকি বুঝেও না বুঝার ভান করে জানি না।
সীমাবদ্ধতা সবারই থাকে, তবে লীগের ক্ষেত্রে সেটা ভয়ানক ভাবে বেশি।বি এন পি যদি ধর্মীয় রাজনীতির বিরুদ্ধে স্ট্যান্ড নেয়, জনতা সেটাকে তেমন কড়া ভাবে নেবে না( যেহেতু বি এন পি এদের প্রতি পালক), কিন্তু লীগের খবর আছে।
আর বিপদ তো লীগের ক্ষেত্রে সব খানেও। এরা ধার্মিক আর সুশীল(!?) সবার গালি খাচ্ছে।
@অর্ফিউস,
মানে বি এন পি হল ধর্মের ধ্বজাধারী দের প্রতিপালক।
@কাজি মামুন,
একদম আধুনিক শিক্ষায় উচ্চ ডিগ্রিদারী একজন চুশীলের মত কথা বলেছে ছেলেটা। ভারতের হিন্দু মালাউনদের দালাল আওয়ামী লীগ শুধু নবি প্রেমী আলেম ওলামা মাশায়েখদেরই মারতে জানে। মারতে মারতে দেশটারে আলীম শুন্য করে দিতাছে। না পাক পুলিশ দিয়ে তাল্লাশী করে কওমি মাদ্রাসায়, যেখানে পবিত্র কোরান-হাদিস শিক্ষা দেয়া হয়। কত্ত বড় সাহস নাস্তিক সরকারের। দেওবন্দ থেকে মদীনা ইউনিভার্সিটি পর্যন্ত যার শিক্ষা এলেম, শিক্ষকতা বিস্তৃত, তাকে এই না ফরমান আওয়ামী সরকার গ্রেফতার করেছে। এদের কাছে কলা সাঈদীও ভাল না, তেঁতুল শাফিও ভাল না, মুফতি আমিনী, মুফতি হান্নান, মুফতি জসিম রাহমানীও ভাল না। তো ভাল ক্যাডা? নবির কোরান আর হাদিস এরা ছাড়া বুঝে কারা আপনারাই কন। হাসিনা, মতিয়া? দেইখেন কইলাম, আগামী ইলেকশনে নবির গজব পড়বে আওয়ামী লীগের উপর।
[img]http://i1088.photobucket.com/albums/i332/malik1956/answerullah_zps3c30e988.jpg[/img]
ইসলামকে ধ্বংস করার নিয়ত করছে এই সরকার।
@আকাশ মালিক,
এইটা এমনিতেই পড়ত।লীগ যদি বাড়িতে বাড়িতে মসজিদও বানিয়ে দিত তবু পরপর ২বার ক্ষমতায় আসতে পারতো না।
এইটা এই দেশের রীতি হয়ে গেছে।এই সরকার আর যাই করুক সত্যি বিদ্যুৎ সমস্যা অনেকটা নিয়ন্ত্রণে এনেছে এই কথাটাও আমাদের দেশের কিছু সুশীল স্বীকার করেন না।
শুধুই ইনারা তর্কের খাতিরেই তর্ক করেন যেমন দেশের মানুষ ভোট দানের খাতিরেই একবার ওকে তো আরেকবার একে ভোট দিয়ে থাকেন।
ভাল কথা, ছোট বেলাতে দাড়িওয়ালা দেখলেই মনটা ভরে যেত আনন্দে। তাদের ব্যবহারও ভাল ছিল। এখন দাড়ি, টুপি আর পাঞ্জাবী দেখলেই ভয় করে।যদি না বোমা মেরে দেয়!
@আকাশ,
কেউ বিশ্বাস করবে কিনা জানি না, কিন্তু অনেক আ’লীগ নেতা-কর্মিকে দেখেছি, সাঈদির বিচারকার্যে ক্ষোভ প্রকাশ করতে, হেফাজতের প্রতি তীব্র ভালবাসা প্রদর্শন করতে, এমনকি বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের প্রতি অনুরাগ দেখাতে এবং বাঙালি জাতীয়াতাবাদকে হিন্দুয়ানি মনে করে ঘেন্না করতে! ভাবা যায়?
আশ্চর্য হল, আ’লীগের এমন নেতা-কর্মি গুটিকয়েক নয়, ভুরি ভুরি। এই আ’লীগাররা আ’লীগের পোশাকে একটি বিএনপি চায়, এরা আ’লীগের আ’ও বিশ্বাস করে না, তবু একে ছেড়েও যায় না, কারণ এরা একদিনের আ’লীগার না, যুগ-যুগান্তর ধইরা এরা আ’লীগ কইরা আইতেছে আর আখের গোছাইতেছে। আ’লীগের আখ খাওনের সুদীর্ঘ ঐতিহ্য তাদের দেহটাকে রেখে দেয় আ’লীগের পাতেই, যদিও আত্মাডা সবসময় লুটোপুটি খায় বিএনপির পাক পবিত্র বিছানায়!
@কাজি মামুন,
হেফাজতের প্রতি অনেক আওয়ামী সমর্থকের ভালবাসা আছে জানি কিন্তু সাঈদির বিচারে ক্ষোভ প্রকাশ? বলেন কি???
কয়জন রিকশা চালককে চেনেন???? অবশ্য ছাপোষা বুর্জোয়া মার্কা biased prejudiced চিন্তা ভাবনা করলে এমন ভাবনা প্রসব হওয়া আশ্চর্যের কিছু নাই !!!!! যাদের চিন্তায় মনে হয়– সমাজের খেটে খাওয়া সব মানুষই তাদের বৌকে গালি পেরে সম্বোধন করে :-Y
@সংবাদিকা, আহা উনি তো একটা রুপক লেখা লিখেছেন।আপনার মাথা ঠোকার দরকার হল কেন সেটাই তো বুঝলাম না!!:-?
@অর্ফিউস,
ভাই, এত বুঝে কি লাভ…… আমার তো নিজেরই মাঝে মাঝে অনেক কিছু বুঝে আসেনা। যারা দেশের নাট তাদের বল্টু হবার জন্য কত জন যে কত রকম কায়দা করে…… এটা আসলেই বিস্ময়কর- বোঝা দুষ্কর 😉
@সংবাদিকা,
খুব বেশী চিনি না, তবে মনে হয় আপনার থেকে কিছুটা হলেও বেশী চিনি। আপনি মনে হয় উচুতলার মানুষ, নইলে বুঝতেন, নীচুতলার কোন কোন গালি ঠিক গালি নয়, গালির মত শোনালেও তা অনেকটা মৃদু ভৎর্সনামূলক পারিবারিক স্নেহ-সম্পর্কেরই একটা প্রতিরূপ।
সব মানুষ? কই পেলেন? এখানে তো সমাজের খেটে খাওয়া মাত্র একজন মানুষের কথা বলা হয়েছে।
সে ত আপনি করলেন, একজন রিকশাওয়ালার খুব স্বাভাবিক একটি ডায়ালগ থেকে কি সব হাতি-ঘোড়া বের করলেন। খেটে-খাওয়াদের নিয়ে রাজনীতি করা, তাদের দুঃখ-কষ্টকে চড়া দামে বিক্রি, সে সব তো আপনাদেরই সাজে, তাই না?
দেখুন, এই লেখার প্রতিটি চরিত্র/ডায়ালগ বাস্তব থেকে নেয়া (যেহেতু ইলিয়াস নই, তাই নির্মাণে গলদ থাকতেই পারে)। শুধু নাম-পরিচয়-সেটিং বদলে দিতে হয়েছে। যেসকল সুশীল আ’লীগের তিন-চতুর্থাংশ আসন পাওয়াকে বাহাত্তরের সংবিধান পুনঃ-প্রতিষ্ঠা, জামাত নিষিদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার জাগরণ, মৌলবাদের বিষদাঁত ভেঙ্গে ফেলা—- ইত্যাদির পক্ষে সুবিশাল ও পরিষ্কার ম্যান্ডেট বলে সুবিশাল বিভ্রান্তিতে রয়েছেন, তাদের জন্যই এই লেখা……..একেবারেই বাস্তব থেকে নেয়া এই লেখার চরিত্রগুলো থেকে কিন্তু একটা ধারণা লাভ করা যায় যে, ঠিক কত শতাংশ লোক আ’লীগের অসাম্প্রদায়িক চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ভোট দিয়েছে, আর কত শতাংশ লোক আ’লীগকে সাম্প্রদায়িক চরিত্রে দেখতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে, আর বাহাত্তরের সংবিধান/মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পুনরুদ্ধারে আ’লীগের বিপদটাই বা কোথায় বা তথাকথিত গোল্ডেন অপরচুনিটির স্বরূপ কি?
এই লেখাটা আ’লীগের কোন সাফাইগীত না, এতে আ’লীগকে নিয়ে সুশীলদের মহাবিভ্রান্তি/দিবাস্বপ্নের বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে একেবারে বাস্তব থেকে চরিত্র তুলে নিয়ে। আশা করি, ভুল বুঝবেন না কেউ।
@কাজি মামুন,
শুনেন ভাই, যাদের ভুল বোঝার ইচ্ছা আছে, তারা ভুল বুঝতেই থাকবে। এটা তাদের মজ্জাগত।
যদি স্বর্গ থেকে অমৃতও নামিয়ে আনেন, তবু তাদের মতের বিরুদ্ধে গেলে সেটাকে তারা গরল বলতেই থাকবে।
আপনি মুক্ত মনার অনেক পুরাতন লেখক, এখনও কি ব্যাপারটি বুঝতে পারেননি?
@অর্ফিউস,
আসলে হয়েছি কি ভাই, যাদের ‘মজ্জা’ গত হয়েছে তাদের ত্যানা পেঁচানোটাই মজ্জাগত হয়ে পরেছে! আমার কাছে সবকটি চিত্রকল্পই বাস্তবধর্মী মনে হয়েছে!!
তবে গালিকে এইভাবে পাঠক না নিলেও চলত কেননা রিকশাওয়ালাদের এমন বুলিতে অনেকে আঘাতপ্রাপ্ত তারা কি তাদের ‘WTF’ টাইপ সুশীলবাজ গালিবাজ বুলি ভুলে গেছেন… যেহেতু এইটা বিষয়বস্তুর সাথে সংগতপূর্ণ না তাই এইসবকে কেউ অবলীলায় এড়িয়ে যেতে বলতে পারেন কিন্তু এমন বিদ্বেষমুলক মন্তব্য প্রত্যাশিত নয় আমার কাছে… কেননা তাহলে আপনি অশিক্ষিত-অর্ধশিক্ষিত-স্বশিক্ষিত (!! 😉 ) -দের কাছে কি প্রত্যাশা করবেন? এমনই যদি আমাদের মত মুক্তমনাদের আলোচনার স্টাইল হয় তবে গরীব-দিনমজুরেরটা শুনে এত আঁতকে উঠাতো অমূলক জ্ঞান হচ্ছে!!
@কাজি মামুন,
আমি মোটেও উপরতলার মানুষ নই। আপনি যেসব রিক্সা চালকদের চেনেন তারা সবাই মনে হয় এমন…. এজন্য তাদের থেকেই ইন্ডাক্টিভ রিজনিং করে জেনারেলাইজেশন করলেন। তবে কি…… আমিও দুজন সুশীলকে তাদের নিজ বউকে bitch ডাকতে শুনেছি ঝগড়ার সময়- ওটাও বোধয় মৃদু ভৎর্সনা আপনার থিউরি অনুযায়ী।
হুম, আসলেই চরম একটা ইন্ডাক্টিভ রিজনিং……..।
হুম…… Last Best Hope for the Bangladesh and Bengali nation :clap যেন, সবকিছু মানি কিন্তু তালগাছটা আমার 😛 তবেকিনা, হাজার হোক এসব তো ডায়ালগ, হয়ত, কুশীলবদের সবাই পদ্মা নদীর দক্ষিণের কোন ল্যান্ডলকড জেলার বাসিন্দা 😉
@সংবাদিকা,
বউকে( প্রেমিকা কাম বউ) তুই বলা( রাগের মাথায়),আর গালিগালাজ করা এইসব একটা ফ্যাশনে পরিনত হয়ে গেছে কিছু নব্য সুশীলের জন্য। no more nice guy এই তত্বকে অনুসরন করার জন্যেই হয়ত অনেকে এমনটা করে থাকে। অদ্ভুত ব্যাপারটা।নিজেদের আইডিয়া বাদ দিয়ে আরেক থিয়োরি অনুসরন করে bad boy হবার এটা একটা প্রচেষ্টা বলতে পারেন, যা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কাজ করে না 🙂
@সংবাদিকা,
আপনি আবারো বুঝতে ব্যর্থ হয়েছেন যথারীতি। মানছি, লেখাটা খুবই কাঁচা হয়েছে, কিন্তু তারপরও তো একজন মনোযোগী পাঠকের বুঝতে ভুল হওয়ার কথা না যে, এই গল্পের ৫ টি চিত্র আ’লীগের পাঁচ শ্রেণীর নির্বাচকমণ্ডলীর প্রতিনিধিত্ব করে। আর ৫ম চিত্রটা হল, আ’লীগের সত্যিকারের নির্বাচক, যারা সত্যি দলকে ভালবাসে, দলের আদর্শিক জায়গাগুলো (যে কারণে তারা এই দলটিকে ভালবাসে) নিয়ে ভীষণ আবেগপ্রবণ! আর ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র যে বুদ্ধিজীবীর দল আ’লীগকে পিষে ফেলে গোল্ডেন অপরচুনিটি মিস করার জন্য, তাদের বিভ্রান্তি দেখাতেই বাকি তিনটি নির্বাচকমণ্ডলীকে একেবারে বাস্তব থেকে (বিশ্বাস করুন) তুলে আনা হয়েছে!
এরপরও বলবেন, শেষ লাইনের মাধ্যমে আ’লীগের সাফাই-গীত গাওয়া হয়েছে? যখন প্রমাণ করতে চাইছি, আ’লীগের বেশিরভাগ নির্বাচকমণ্ডলীই সাম্প্রদায়িক মনোভাবসম্পন্ন, তখন আ’লীগের আদর্শের প্রতি প্রবলভাবে অনুরক্ত ও আবেগপ্রবণ একটি ক্রমহ্রাসমান নির্বাচকমণ্ডলীর প্রতিনিধিত্ব রাখা কি জরুরি ছিল না?
জানতাম, আপনিও একটি দলের প্রতি ভীষণ অনুরক্ত, কিন্তু তাই বলে একটা সাদামাটা লেখার সাদামাটা মেসেজটুকু ধরতে পারলেন না? এই মেসেজ নিয়ে আপনার আপত্তি থাকলে বলুন, কিন্তু দুঃখ হল, আপনি মেসেজটুকুই বুঝলেন না!
@কাজি মামুন,
জরুরি ছিল। আমাকে বাদ দিবেন কিভাবে? আমি তো সেই দলের মানুষ।
@কাজি মামুন,
প্রথমত, আমি কোন দলের প্রতিই বিশেষ অনুরক্ত নই 🙂 আর, আমি জীবনের প্রথম ভোট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ কেই দেই (ট্যাকনিক্যালি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ কে দিতে হয়, কেননা ন্যাশনাল স্ট্রেটেজি মোতাবেক এই আসনে আওয়ামীলীগ কোন প্রার্থীই দেয়নাই এবং ঘোষণা দিয়েছিল জাতীয় পার্টিকে দেওয়া মানে আওয়ামীলীগ কে দেওয়া – ঐ মহাজোট বলে নাকি একটা ব্যাপার ছিল 😛 :)) )
আপনি যা বলতে চেয়েছেন – ওটা ধরাটা মোটেও খুব কষ্টকর নয় – কিন্তু আপনার রচনার ধারাটি ভালো ভাবে দেখলেই বোঝা যায় এটা পার্টির আভ্যন্তরীণ “সেন্টার-রাইট” দৃষ্টিভঙ্গি থেকে রচনা- যারা আসলেই দলের “ভালো চায়”…… পূর্ন নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি থেকে নয় – আমার আর্গুমেন্ট আসলে সেখানেই।
আপনাকে ধন্যবাদ 🙂