কালকেই জানতে পারি বিসিএস পরীক্ষার কোটা পদ্ধতি নিয়ে অনেকের অসন্তোষ থাকার কারণে শাহবাগ প্রাঙ্গণে অনুত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীরা আন্দোলন করছে। পরীক্ষা বিষয়ক অসন্তোষ, দুর্নীতি, হতাশা বাংলাদেশে খুবই পরিচিত ব্যাপার, তাই খুব একটা গা করিনি প্রথমে। আজ বিশ্ববিদ্যালয় যাবার সময় নীলক্ষেতের মোড়ে অসংখ্য পুলিশ দেখে প্রথম টের পেলাম ব্যাপার বেশ ভালোই সিরিয়াস। বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও একটু ভিতরে ঢুকে চোখ জ্বালা করা শুরু করলো, বুঝলাম পুলিশ টিয়ার শেল নিক্ষেপ করেছে। যাই হোক, এহেন পরিস্থিতিতে স্বাভাবিক ভাবেই ক্লাস ক্যান্সেল হয়ে গেল।
বাসায় এসে দেখলাম ফেসবুকে এখন ট্রেন্ডিং- বিসিএস কোটা। এবং অবধারিত ভাবেই মানুষ দুইভাগে বিভক্ত। নিজের উপর যথেষ্ট ভরসা আছে, তাই ভাবলাম একটু ঘাটাঘাটি করেই দেখি আসলে ব্যাপারটা কী!
বিসিএস পরীক্ষায় কোটার ব্যবচ্ছেদ
স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে কোটা সিস্টেম বাংলাদেশে চালু হয়। প্রথমে মাত্র ২০% মেরিট অনুযায়ী সিভিল অফিসার নেওয়া হলেও ১৯৭৬ সালে সেটি ৪০% এ উন্নীত করা হয়। ১৯৮৫ সালে এটি আরও বেড়ে ৪৫% মেরিট অনুযায়ী নেওয়া হলেও এরপর আর কোন পরিবর্তন আসেনি।
৫ম আদমশুমারির ডাটা অনুসারে কোটা ব্যবস্থাকে এক নজরে নীচের টেবিলে দেখুনঃ
এছাড়াও জেলা ভিত্তিক ১০% কোটা বরাদ্দ আছে। সুতরাং কোটা ব্যতীত মেরিট অনুযায়ী ৪৪% বরাদ্দ থাকবে বিসিএস পরীক্ষার্থীদের জন্য।
এখন একটু খতিয়ে দেখা যাক এই কোটা ব্যবস্থা কতটুকু যুক্তিযুক্ত। প্রথমেই আসি শারীরিকভাবে চ্যালেঞ্জড এবং আদিবাসী প্রসঙ্গে। শারীরিক ভাবে চ্যালেঞ্জড এবং আদিবাসী যে আমাদের দেশে সমাজের অনগ্রসর অংশ, এইটা নিয়ে দ্বিমতের সুযোগ দেখিনা। কোটা সিস্টেমের উদ্দেশ্যই তো আসলে সমাজের অনগ্রসর জনগোষ্ঠীকে সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য সহায়তা করা। পুরো জিনিসটা আরও ভালো ভাবে বুঝতে হলে নীচের ছবিটা দেখতে পারেনঃ
এরপরও যদি আপনার আদিবাসী আর শারীরিকভাবে চ্যালেঞ্জডদের জন্য বরাদ্দ কোটা নিয়ে আপত্তি থাকে, আপনি দয়া করে আমার বন্ধু ‘অন্যরকম ধ্রুব’-এর স্ট্যাটাসটা পড়ে নিতে পারেনঃ
‘আপনার বাড়ির গ্যাস-পানি-কারেন্টের কানেকশান কাইটা দিই, যাতায়াতের রাস্তাঘাট সব গুড়ায়া দিই, তারপর বাপ-দাদার ভিটা দখল কইরা চিড়িয়াখানা বানাই, তারপর ফিরিঙ্গি কোন ভাষায় পড়ালেখা করানোর পরে বুঝবেন আদিবাসিদের কোটা দাওয়ার কী দরকার।
দুইটা হাত, পা, চউক্ষু কিংবা কানের কুনডা কাইট্টা ফালায়া দ্যান, তারপর সকাল-বিকালে ক্যাম্নে দৌড়ায়া দৌড়ায় দুনিয়া জয় কইরা ফালান দেখব; আর তারপর আইসেন ভিন্নভাবে সক্ষম প্রতিবন্ধীদের কোটা নিয়া কথা বলতে।
পেছন থেকে শুরু করা একদল মানুষ সামনে আগায়ে আসতেছে এইটা সহ্য হইতেছে না।’
সুতরাং আপনি যদি দাবি করেন, কোটা ব্যবস্থা একেবারে নির্মূল করে ফেলতে হবে, তাহলে অবশ্যই কোনভাবেই আমি আপনার সাথে একমত নই। এমনকি আমি শারীরিকভাবে চ্যালেঞ্জডদের জন্য কোটাতে আরও বরাদ্দ বাড়ানোর পক্ষপাতী। মোট জনসংখ্যার ১.৩২% হওয়া সত্ত্বেও তাদের জন্য ১% কোটা আসলেই যথেষ্ট না, নিদেনপক্ষে ৩%-৫% করার ব্যাপারেই আমি মত দিবো।
এবার আসা যাক, নারীদের কোটার ক্ষেত্রে। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও সমসাময়িক ডাটা পেলাম না। ২০০৫ সালের ইউএনডিপি’র এক রিপোর্টে দেখলাম বাংলাদেশে সিভিল সার্ভিসে মাত্র ৮.৫% নারীর অংশগ্রহণ। মোট জনসংখ্যার ৫০% হওয়া সত্ত্বেও নারীদের এই নগণ্য অংশগ্রহণ অবশ্যই আমাদের চিন্তায় ফেলার কথা। তাই তাদের জন্য বরাদ্দ ১০% কোটাতে আমার আপত্তি না থাকলেও একটা কিন্তু আছে। আদিবাসী এবং নারীদের ক্ষেত্রে বর্তমান কোটা ব্যবস্থার ক্ষেত্রে আমার আপত্তি না থাকলেও সরকারের উচিত একটা সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নেওয়া। নিশ্চয়ই আগামী একশ বছর ধরে আমরা উপজাতি আর নারীদের কোটার মধ্যে আবদ্ধ রাখতে চাইনা। প্রত্যেকটা সমাজের লক্ষ্য হওয়া উচিত শেষমেশ পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে মেরিটোক্র্যাসি নিশ্চিত করা। সেজন্য চাই একেবারে নির্দিষ্ট কিছু পরিকল্পনা। ৫ বছর, ১০ বছর বা ১৫ বছরে আমরা ঠিক কতটুকু নারী এবং আদিবাসী অংশগ্রহণ দেখতে চাই সেইটা আগে থেকেই ঘোষণা করে সেজন্য একেবারে তৃণমূল পর্যায় থেকে কাজ করা। কোটা সিস্টেম যাতে আর প্রয়োজন না পড়ে সে লক্ষেই ধীরে ধীরে ফেজ আউট করা’টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে কোন পরিকল্পনা ছাড়া শুধু কোটা ঘোষণা করে বসে থাকলে অগ্রগতি শামুকের গতিতে চলবে।
এখন আসা যাক, জেলা কোটা প্রসঙ্গে। জেলা কোটা যখন চালু হয় তখন বাংলাদেশে জেলা ছিল মাত্র ১৭টি। জেলার সংখ্যা বেড়ে এখন ৬৪ হলেও এই কোটা এখনও চালু আছে। কোন ধরনের সংস্কার ছাড়াই বছরের পর বছর জেলা ভিত্তিক এই কোটার কোন যৌক্তিক কারণ আমি দেখিনা। কিছু বিশেষ জেলা চিহ্নিত করা যেতে পারে যেখানকার অধিবাসী তুলামূলকভাবে অনেক পিছিয়ে আছে। কিন্তু এরকম কোন গবেষণা ছাড়াই একেবারে ৬৪ জেলাতেই কোটা রাখার কোন কারণ কেউ খুঁজে পেলে অবশ্যই জানাবেন।
শেষমেশ কথা বলি মুক্তিযোদ্ধা কোটা নিয়ে, মূল বিতর্কও আসলে এই কোটা নিয়েই এবং সেইটাই স্বাভাবিক কারণ অন্যান্য কোটার তুলনায় অনেক বেশি মুক্তিযোদ্ধা কোটায় (৩০%) বরাদ্দ আছে।
মুক্তিযোদ্ধারা বাংলাদেশের অবিসংবাদিতভাবেই দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান। দেশের জন্য যে ত্যাগ তাঁরা স্বীকার করেছেন, কোন পুরস্কারের আশায় তা না করলেও স্টেট অবশ্যই সেই দায়িত্ব নিতে পারে। যাই হোক, প্রথমেই দেখা যাক আমাদের সংবিধান কী বলে। সংবিধানে সবার ইমপ্লয়মেন্টের ব্যাপারে সমান অধিকারের কথা বলা হলেও একটি ব্যতিক্রমের কথা উল্লেখ আছে। শুধুমাত্র পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্যই স্পেশাল প্রভিশন সংবিধানে রাখা আছে। দেশের টানে মুক্তিযুদ্ধে অনেক অবস্থাসম্পন্ন লোক যেমন যোগ দিয়েছিল, ঠিক তেমনি গ্রামের খেটে খাওয়া কৃষকও অংশগ্রহণ করেছিল। যুদ্ধাপরবর্তী অবস্থায় অনেকেই আহত থাকার কারণে স্টেটের দায়িত্ব ছিল তাদের দেখাশোনা করা। প্রশ্ন হচ্ছে, মুক্তিযোদ্ধা কোটার মধ্যে ১৯৯৭ সালে অন্তর্ভুক্ত মুক্তিযুদ্ধের সন্তানেরা কি ওভারঅল পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর মধ্যে পড়ে? যেহেতু সংবিধান অনুসারে শুধুমাত্র পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্যই ব্যতিক্রম নিয়ম আছে, তাই আমি ধরেই নিচ্ছি সরকার তাই মনে করে যদিও এরকম কোন স্টাডি বা রিসার্চ আমার চোখে পড়লো না কোথাও, থাকলে অবশ্যই জানাবেন। আমি যদি ধরেও নিই, তাঁরা পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর অংশ, মনে রাখতে হবে তাঁরা পুরো দেশের ১% ও না, আপনি তাদের জন্য বড় জোর ১০% কোটা রাখার কথা বলতে পারেন, ৩০% এর যৌক্তিকতা আমি কোন ভাবেই দেখছিনা।
যুক্তি যে আসলেই নেই, তাঁর কারণ হিসেবে আপনাকে জানতে হবে এবার ঠিক কেন প্রিলি’র রেজাল্টের সময়ই কোটার কথা মাথায় রেখে ফল ঘোষণা করা হলো। প্রথম আলোতে প্রকাশিত এক রিপোর্টে বলা হচ্ছে, “ পিএসসির আরেকজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, প্রতিবছরই কোটার কারণে অনেক পদ শূন্য থেকে যায়। কারণ মুক্তিযোদ্ধাসহ বিভিন্ন কোটায় শেষ পর্যায়ে গিয়ে প্রার্থী পাওয়া যায় না… হুট করে এবার প্রিলিমিনারি থেকেই কেন এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো জানতে চাইলে ওই সদস্য বলেন, কোটায় প্রার্থী না পাওয়ায় বারবার পদ শূন্য থাকে।” অর্থাৎ মুক্তিযোদ্ধা কোটার ৩০% পূরণ করার মত লোকই খুঁজে পাওয়া যায় না, আর তাই এই সমস্যা এড়ানোর জন্য শুরুতেই কোটার কথা মাথায় রেখেই এবার এই ব্যবস্থা করা হয়েছে, তাঁর উপর মনে রাখতে হবে প্রিলি’তে কারও স্কোরও প্রকাশ করা হয়না, এমনকি কাট অফ স্কোর কত তাও বলা হয় না, সুতরাং সন্দেহ, অবিশ্বাস দানা না বেঁধে উঠাটাই অস্বাভাবিক।
সবকিছু মিলিয়ে বলা যায়, শাহবাগে বিসিএস কোটা নিয়ে যে আন্দোলন হচ্ছে সেইটা যথেষ্টই যৌক্তিক। এখন এই আন্দোলন নিয়ে আমার দুই-চারটা কথা আছে।
আন্দোলন যেহেতু সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হচ্ছে এবং সরকারকে চাপ প্রয়োগের জন্য হচ্ছে, এইটা খুবই স্বাভাবিক যে সেখানে এই আন্দোলন থেকে ফায়দা লুটার জন্য এবং সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য হরেক রকম লোকের আমদানি হবে। সেখানে মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে অনেক ধরনের কথা বলা হচ্ছে এরকমও শোনা যাচ্ছে। যারা আন্দোলন করছেন, তাদের মনে রাখা উচিত যে আপনাদের আন্দোলন খুবই যৌক্তিক। দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের নিয়ে কটু কথা বলে যারা তাদের ব্যাপারে আপনাদেরই সতর্ক থাকা উচিত এবং অন্য কেউ কিছু বলার আগে আপনাদেরই উচিত তাদের সোজা করা। সোজা করতে না পারলে দেখবেন এরা ভাস্কর্য পোড়াবে, ভাঙবে, মাঝখান থেকে আপনাদের যৌক্তিক আন্দোলন মাঠে মারা যাবে।
যাই হোক, কোটা সিস্টেম কেন শেষমেশ তুলে দেওয়া উচিত সেইটা বুঝাইতে একটা গল্প বলেই শেষ করি। কিছুদিন ধরে টিম হারফোর্ডের লজিক অফ লাইফ বইটি পড়ছিলাম। সেখানেই বলা হয়েছিল যে দেখা গেছে অ্যাফার্মেটিভ অ্যাকশন(কোটা সিস্টেমের সাথে গুনগত পার্থক্য থাকলেও স্পিরিট একই) আমেরিকাতে রেসিজম কমাতে বিভিন্ন কোম্পানি ব্যবহার করলেও অনেক স্টাডিতে দেখা গেছে যে এটি আসলে কখনো কখনো রেসিজম বাড়াতে ভূমিকা রাখে। ধরুন, ১০ জন প্রার্থী আবেদন করেছে একটি চাকরির জন্য। একজন কৃষ্ণাঙ্গ আর নয়জন শ্বেতাঙ্গ। ধরুন, কৃষ্ণাঙ্গ মানুষটি এমনিতেই খুব ভালো প্রার্থী, বাকি নয়জন শেতাঙ্গ প্রার্থীদের মধ্যে ধরুন শুধু একজন তাঁর সমকক্ষ। যেহেতু ঐ কোম্পানি অ্যাফার্মেটিভ অ্যাকশন অনুসরণ করে, তাই শেষমেশ শ্বেতাঙ্গ প্রার্থীকে বাদ দিয়ে কৃষ্ণাঙ্গকে নেয়ারই সিদ্ধান্ত নেয়া হল। সমস্যা হচ্ছে হয়ত একজন শ্বেতাঙ্গর ক্রুব্ধ হবার একটা ভিত্তি থাকলেও বাকি নয়জন কোন ভিত্তি ছাড়াই ঐ কৃষ্ণাঙ্গর উপর ক্রুব্ধ হয়, মনে মনে ভাবে অ্যাফার্মেটিভ অ্যাকশন নামক জিনিস না থাকলে সে-ই হয়ত চাকরিখানা বগলদাবা করত।
শাহবাগে যারা আন্দোলন করছে, আমি নিশ্চিত তাদের ৬০-৭০% এমনিতেও টিকত না, কিন্তু কোন ধরনের ট্রান্সপারেন্সি না থাকার কারণে সবাই নিজেদের বঞ্চিত ভাবার সুযোগ পাচ্ছে। সরকারের তাই উচিত হবে কোটার উপর নির্ভরতা কমিয়ে তৃণমূল পর্যায়ে কাজ করার, কীভাবে ঢাকার একটি স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে দেশের অন্যান্য অঞ্চলের ব্যবধান কমিয়ে আনা যায়, পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে কীভাবে শুরু থেকে ঠেলা দেয়া যায়, সেইটা নিয়ে কাজ করা উচিত।
পুনশ্চঃ ডক্টর আকবর আলী খান এবং কাজী রাকিবুদ্দিন আহমেদ সিভিল সার্ভিসে কোটা সিস্টেম নিয়ে একটি স্টাডি করেছিলেন। সেই স্টাডিতেও তাঁরা কোটা সিস্টেমকে ‘আনজাস্ট’ বলেই অভিহিত করেছেন।
বিশ্লেষণটি নিয়ে দ্বিমত পোষণ করার কোন যোক্তিকতার সুযোগ নেই বলে মনে করি। আমাকে হয়ত অনেকে মনে করতে পারে বিশ্লেষণটি আদিবাসী কোটার পক্ষে হওয়ায় সমর্থন দিচ্ছি। তবে আমি তাদের উদ্দেশ্য বলব, আপনারা নিশ্চত থাকুন। সময় এলে কোটা বিরোধীদের মত আদিবাসীরা ও হাতে প্লেকার্ড মুখে শ্লোগান দিয়ে শাহবাগ মোড়ে জড়ো হবে।
অসাধারণ!লেখাটি পড়ে আমি অনেক কিছু জানতে পারলাম।
সময়ের সাথে সাথে ক্রমান্বয়ে উপযুক্ত পরিবর্তনগুলো খুবই দরকার। সমকালীন সমস্যা ও বিষয়ে লিখেছেন দেখে ভালো লাগলো। দু একটা ব্যাপারে আর একটু সরল উপস্হাপনা আশা করেছিলাম।
আপনি লিখেছেন:
কিঞ্চিৎ জটিল বিষয় সরলীকরণে একটামাত্র শব্দ ‘শেষমেশ‘? আর একটু সহজ করে বলা যেত মনে হয়, তাই না?
একটি মজার বিষয় লক্ষ্য করলাম, কোটা বাতিলের বিরুদ্ধে আন্দোলন হচ্ছে, পুলিশের মার খাচ্ছে, আবার কর্মসূচি দেয়া হচ্ছে, ফেসবুকে চিৎকার করা হচ্ছে, কোটার পক্ষের লোকদের গালাগাল করা হচ্ছে, অবরোধের চেষ্টা হচ্ছে, কিন্তু এই আন্দোলনকারীরা বা আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে কেউ আদালতে একটি রিট করছেন না। কোটা পদ্ধতি বাতিল চেয়ে একটি রিট তো করাই যায়। কিন্তু কেউ করছেন না। কিছু ছেলেমেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুলের বাণী শোনাচ্ছেন। কিন্তু সেই অধ্যাপক ছেলেমেয়ের রিট করার পরামর্শ দিচ্ছেন না কেন? এই সহজ কাজটি করা হচ্ছে না কেন? মোটরসাইকেল যাতে ফুটপাত দিয়ে না যায় সেজন্য রিট করা হয় আর এই বিষয়টি নিয়ে রিটের দিকে এগুচ্ছে না আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। বড়ই রহস্যময়।
@এম এস নিলয়, রিট করা হয়েছেন দেখলাম
http://www.prothom-alo.com/detail/date/2013-07-14/news/367803
আরেকটি সমাধানহীন সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়েছে। কোটার দরকার আছে; সন্দেহ নেই, তবে কোটার নামে মেধাবীরা বঞ্চিত হবে সেটাও বাঞ্চনীয় নয়।
আমার নিজ অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে যেটা মনে হয় তা হল কোটা ব্যাবস্থা আসলে সমস্যা নয়, সমস্যাটা তৈরী হয়েছে কোটা ব্যাবস্থার নামে নানান জাল জালিয়াতি স্বজন প্রীতি……সোজা কথায় ঢালাও অপব্যাবহারের কারনে। সব সমস্যারই তলে গেলে চুড়ান্তভাবে সেই ব্যাক্তি আমরাতে যেতে হয়। ৩০% মুক্তিযোদ্ধা কোটা আমার কাছেও বেশীই মনে হয়, বিশেষ করে যখন দেখি এর অপব্যাবহার হয়েছে প্রচুর।
যথারীতি একে কেন্দ্র করেও গড়ে উঠছে একটা অস্থিতিশীল অবস্থা, সুযোগ নিচ্ছে নানান অপশক্তি……অপশক্তিকে গালিগালাজও করা যাবে, কোটা ব্যাবস্থাকে কিছুটা সংস্কারও হয়ত করা যাবে, কিন্তু তাতেই কি চুড়ান্ত সমাধা হবে? খুব সোজা ভাষায় নিজেরা একটি ন্যূনতম পর্যায়ে ভাল নাহলে কোটা অকোটা……স্বাধীনতা……গনতন্ত্র……কেয়ারটেকার কোন কিছুই কাজে দেবে না। সবকিছুতেই ফাঁক ঠিকই বার করা যাবে। আজকে যারা কোটা বাতিলের দাবীতে আন্দোলন করছে তারাও কোন কোটার ফাঁকে ভাল চাকরি বাগাতে পারলে কোটা বাতিলের আন্দোলনে নিশ্চয়ই নামতো না।
পত্রপত্রিকা আর ফেসবুকে কোটা নিয়ে অনেকের অনেক মত অনেক যুক্তির কথা শুনলাম।
আমি নিজে কোটার পক্ষে।
আসলেই সবসময় “equality is not justice”।
আজ আপনার লেখা পড়তে পড়তে একটা মুভির কথা মনে পড়ে গেল। আমি মনে করি যারা কোটা প্রথার পক্ষে অথবা বিপক্ষে সবার ছবিটা দেখা উচিৎ। অমিতাভ, সাইফ আলি আর দীপিকার অভিনীত মুভিটির নাম Aarakshan
মুভিটি থেকে যা শিখেছিলাম তার মধ্যে একটা জিনিস হলঃ
গ্রামের ছেলেটাকে একটু শান্তিতে পড়তে দিলে আর ভালো সুযোগ সুবিধা দিলে সেটা কি ভুল হবে ???
আমি মনে করি চাকরীতেও তাকেই অগ্রাধিকার দেয়া উচিৎ যে সংগ্রাম করে এই চাকরীর জন্য তৈরি করেছে নিজেকে।
আমি বুঝি কম; তাও আমার ক্ষুদ্র বুদ্ধিতে এটাই উত্তর।
@এম এস নিলয়, (Y)
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম বলেছেন, “—–পিছিয়ে পড়া ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্য কোটা রাখা যেতে পারে। দীর্ঘদিন ধরেই তাদের উপর অনেক অত্যাচার করা হয়েছে—–।”
আমি বলছি অত্যাচার বন্ধ হয় নাই, চলছেই। আর সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম স্যার শুধুই অত্যাচারের কথা বলেছেন। ভাষাগত প্রতিবন্ধকতার কথা উল্লেখ করেন নি। আর বলেন নি, সেখানে সরকারি চাকরিজীবীদের পানিশমেন্ট ট্রান্সফার বন্ধ করার কথা। পানিশমেন্ট ট্রান্সফারের জন্য ওখানকার ছাত্রছাত্রীরা যোগ্য/উপযুক্ত শিক্ষকের কাছে শিক্ষা না পেলে যোগ্য/উপযুক্ত হয়ে আসবেন কেমন করে? আর বলেননি দুর্গম এলাকায় পর্যাপ্ত স্কুল, কলেজের অভাবের কথা। সব বিষয় বিবেচনায় আনলে উপজাতি/আদিবাসী কোটা বাতিল করার কোন যৌক্তিকতা নাই।
কোটা কোথায় নেই! রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশও কোটা সুবিধা ভোগ করে। আমেরিকা জিএসপি সুবিধা স্থগিত করেছে বলে হই হল্লা শুরু হয়েছে, খোদ মন্ত্রী থেকে প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত।মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চৌদ্দগুষ্ঠি উদ্ধার করা হচ্ছে। ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতির জন্যে ভারতের চৌদ্দগুষ্ঠি উদ্ধার করা হয়।কারণটা কী? এখানেও কোটা অর্থাৎ বাংলাদেশ ভারতের কাছ থেকে সুবিধা চায়। বিশ্বের বিভিন্ন শিল্পোন্নত রাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশ কোটা সুবিধা চায়।বাংলাদেশও তো স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র, তাহলে তার জন্যে কেন জিএসপি সুবিধা, কেন বিশেষ প্রবেশাধিকারের সুবিধা? অন্য দেশের সাথে বাংলাদেশ কেন তাহলে প্রতিযোগিতা করতে পারে না?
@তপন বিকাশ তঞ্চঙ্গ্যা, আবারও সহমত জানাচ্ছি।
সরকারি চাকুরিতে উপজাতি/আদিবাসী কোটার ৫% প্রয়োজনীয়তা প্রসঙ্গে ১০ টি কারণ:
——————————————————————————-
র্তমানে দেশে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে কোটা পদ্ধতিতে নিয়োগে বিরোধিতা করে তুমুল আলোচনা, বির্তক, আন্দোলন হচ্ছে। সেখানে মাঝে মধ্যে উপজাতি/আদিবাসী কোটা বিরোধী কিছু কিছু লেখা চোখে পড়ে। যেহেতু আমি একজন আদিবাসী/উপজাতি সেজন্য এখানে শুধু আদিবাসী/উপজাতি কোটা বিষয়ে কিছু লিখব। অন্য কোন কোটা নিয়ে আমি মন্তব্য করবো না। প্রথমেই ক্ষমা চাইব লেখাটা অতিরিক্ত পরিমাণ দীর্ঘায়িত হওয়ায় জন্য। আমি আমার মত প্রকাশ করার লোভ সংবরণ করতে পারছি না।
অনেকেই বিসিএস কর্মকর্তা হতে চান কিন্তু তারা পার্বত্য চট্টগ্রাম সম্পর্কে, আদিবাসী/উপজাতি সম্পর্কে ঠিকমতিই জানেন না। একজন বিসিএস অফিসার হতে হলে শুধু দেশের খবর নয় এমনকি বর্হিবিশ্বের খবরাখবর ভালো করে জানতে হয়। পার্বত্য চট্টগ্রাম তো দেশেরই অংশ আর উপজাতি/আদিবাসীরা তো আপনারই আশেপাশের মানুষ। জেনে নিন উপজাতি/আদিবাসীদের কোটা কেন প্রয়োজন।
১। বিসিএস পরীক্ষার্থী মাত্রই কোটা (Quota)র সংজ্ঞা এবং কোটা কেন জানা উচিত। জানে কয়জন? সমস্যাটা হলো কোটা কেন এই বিষয়টাও অধিকাংশ লোকে বুঝে না। মূল আলোচনায় যাওয়ার আগে তাই সংক্ষেপে কোটা শব্দটা নিয়ে দুটি কথা বলব—
(ক) কোটা একটা বিশেষ ব্যবস্থা যেটাকে আইনের ভাষায় বলা হয়- affirmative action / positive discrimination.
(খ) সমাজ বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয়, ন্যায্যতা। ন্যায্যতা নিশ্চিত করার জন্যে এরকম কোটা বা positive discrimination রাখতেই হবে।
(গ) আর ভাষা বিজ্ঞানে ইংরেজি Quota কে বাংলা পারিভাষিক শব্দ হিসেবে ‘যথাংশ’ বলা হয়েছে (সূত্র-‘বিষয় বাংলা’ লেখক: ড. সৌমিত্র শেখর, পৃষ্ঠা নং ১৬৮)। অভিধান বা ভাষা বিজ্ঞানের ভাষায় তাই কোটা যথযথভাবে প্রাপ্য অংশ।
কোটা কারও করুণা নয়, আবার অধিকারও নয়। অধিকার নয় এ অর্থে- কেউ তার প্রাপ্য অধিকার বঞ্চিত হলে আদালতের দারস্থ হওয়া যায়, কিন্তু কোটা বঞ্চিত হলে আইনের আশ্রয় নেওয়া যায় না। আবার এটাও মনে রাখা উচিত কোটা প্রথা তুলে দেওয়ার জন্য আদালত (বিচার বিভাগ) নির্বাহী বিভাগকে কোন নির্দেশনাও দিতে পারে না, সংস্কারের জন্য হয়তো নির্দেশনা দিতে পারে। যদি সেটা সম্ভব হতো তাহলে কেউ না কেউ রিট করে আদালত কর্তৃক নির্দেশনা আদায় করে নিতে পারত। শুধু বিচার বিভাগ আর নির্বাহী বিভাগ বলে কথা না, বিষয়টা অনেকটা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জিএসপি কোটা অথবা DV লটারিতে বাংলাদেশের জন্য বরাদ্দ নাগরিকত্ব সুবিধা-যেগুলো বাতিল হওয়ায় বাংলাদেশের কোন আদালতে গিয়ে আদায় করার সুযোগ নাই। দেশে সেনাবাহিণীতে কর্মকর্তা নিয়োগে কোন কোটা নাই। তাই বলে কি আমরা এটা দাবি করতে পারি? আবার অনেক দেশে সামরিক বাহিণীতে যোগদান বাধ্যতামূলক-সেটা নিশ্চয় অনেকেই জানেন না। পৃথিবীর সব দেশে সিভিল প্রশাসনে নিয়োগে কোটা আছে তাই আমরাও দাবি করতে পারি-তবে অধিকার বা করুণা হিসেবে নয়-ন্যায্যতার ভিত্তিতে। পৃথিবীর সব দেশে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য কোটা সুবিধা রয়েছে, আমাদের দেশেও এই সুবিধা থাকবে, এটাতো অস্বাভাবিক কিছু না। এখানে ন্যায্যতার ভিত্তিতেই উপজাতি/আদিবাসী কোটা প্রচলিত আছে। বাংলাদেশ সমুদ্রসীমা জয় করেছে কিসের ভিত্তিতে জানেন তো? ন্যায্যতার ভিত্তিতে।
২। যারা সরকারি চাকুরিজীবী যারা তাদেরকে পানিশমেন্ট ট্রান্সফার হিসেবে পার্বত্য তিন জেলাকেই কর্মস্থল হিসেবে বেছে নেওয়া হয়। পানিশমেন্ট ট্রান্সফারে-এমনও হয় ২৪ ঘন্টার মধ্যে বান্দরবান/রাঙ্গামাটি/খাগড়াছড়ি যোগদান। এই কাতারে সরকারি স্কুল, কলেজের শিক্ষকরাও থাকেন। চিন্তা করে দেখুন, পার্বত্য তিন জেলায় পানিশমেন্ট ট্রান্সফার প্রাপ্ত টিচার-রা কেমন হয়ে থাকতে পারে? পুলিশ প্রশাসন, সিভিল প্রশাসন কেমন হতে পারে? অবশ্য নিয়মিত বদলি হিসেবে অনেকেই ওখানে পেশাগত দায়িত্ব পালন করেন।
৩। আপনারা হয়তো এটাও জানেন যারা আদিবাসী/উপজাতি তাদের প্রত্যেকের নিজস্ব মাতৃভাষা আছে। এই ভাষাগত প্রতিবন্ধকতাও উপজাতি/আদিবাসীদের অনেকখানি পিছিয়ে রাখে। মাতৃভাষা বাংলার বাঙ্গালী ছেলেমেয়েরা যখন আরামে অ আ শুরু করে, তখন ’উপজাতি/আদিবাসী’ ছেলেমেয়েরা হাতড়ে বেড়ায় অ আ জিনিসটা কী? বাঙ্গালী ছেলেমেয়েদের কম্পিটেন্সি লেবেল যখন ৮০%-৯০%, তখনই উপজাতি/আদিবাসী ছেলেমেয়েদের কম্পিটেন্সি লেবেল বাড়তে শুরু হয়। অর্থাৎ ওদের হলো সারা, আমাদের হলো শুরু। অধিকাংশ বাংলা ভাষাভাষী বাঙ্গালী এই সত্যটুকু বুঝে না বা বুঝতে চায় না।
৪। উপজাতিদের জন্য কোন বিসিএস-এ ৫% কোটা তো নয়ই ১%-পূরণ হয়নি। সর্বশেষ ৩১তম বিসিএস-এর কথাই ধরুন, মোট ১৪ জন উপজাতি নিয়োগ পেয়েছেন (সূত্র- প্রথম আলো, ৭ এপ্রিল, ২০১৩, স্বপ্ন নিয়ে)। এটা কোনভাবেই ১%-এর বেশি না, বরং কম। টেকনিক্যাল/পফেশনাল ক্যাডার পদগুলো ছাড়া শূন্য সব পদ মেধা থেকে পূরণ করা হয়েছে। আবার জেলা কোটা গেল কই? সব কোটা ঠিকমতো পূর্ণ করতে পারে না- এতেই ধরে নিবেন আদিবাসী/উপজাতিরা পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী। এজন্যই তাদের কোটা দরকার।
৫। অনেকেই মন খারাপ করতে পারেন-অপ্রিয় হলেও সত্য, ভারতীয় উপমহাদেশে কোটা ব্যবস্থার প্রবর্তন মূলতঃ মুসলমানদের দিয়েই। তৎকালীন ভারতীয় উপমহাদেশে মোট জনসংখ্যার প্রায় ৩০ শতাংশ মুসলমান। তবু তারা শিক্ষা-দীক্ষায় চাকরিতে পিছিযে পড়া ছিল বলে তাদের জন্য শুধু স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেনি, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। এমনকি কিছু কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মুসলমান ছাত্রদের খুব অল্প বেতনে পড়ার সুযোগ দেয়া হত। যে সুযোগটা হিন্দু ছাত্ররা পেত না। এজন্য হিন্দু ছাত্ররা প্রতিবাদ করেছিল বলে কখনো শুনিনি। তখন মুসলমানদের জন্য এতকিছু সুযোগ সুবিধা সত্বেও বিশেষ বিবেচনায় সরকারি চাকুরিতে নিয়োগ দেওয়া হতো। তখন সেটা-কে কোটায় চাকরি না বলে বলা হত নমিনেশনে চাকরি। নমিনেশনে চাকরি হলো প্রতিযোগীতামূলক পরীক্ষা ছাড়া মনোনয়নের মাধ্যমে চাকরি। আজ সেই মুসলমানেরা জ্ঞান, বিজ্ঞান, শিক্ষা-দীক্ষায়, সভ্যতায় অনেক উন্নত। এই বিশাল মুসলমান জনগোষ্ঠীও সেকালে কোটা/নমিনেশন ছাড়াই চাকরি পড়াশোনার চেষ্টা চালালে আজ এতদূর উন্নত হতো না। যারা ব্রিটিশদের কাছ থেকে প্যান্ট, শার্ট আর টাই পরা শিখেছে তাদের অনেকই (সবাই নয়) নিজেদের অতীত ইতিহাস না জেনে বা জেনেও ভুলে পিছিয়ে পড়া সংখ্যালঘুর পিছে লেগে পড়েছে। কি আজব!
৬। আরেকটা অপ্রিয় সত্য, আমাদের দেশের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়’ প্রতিষ্ঠাকালীনও মুসলমান ছাত্র সংখ্যায় কম ছিলে বলে বিশেষ ব্যবস্থায় ভর্তির ব্যবস্থা করা হত, এতে হিন্দু বা অন্য-রা আপত্তি করেছিল বলে শুনি নাই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম মুসলিম ভাইস চ্যান্সেলর যার নামে- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি হলও আছে, তিনিও কিন্তু মুসলমান হিসেবে বিশেষ বিবেচনায় সেসময় শিক্ষকতার চাকরি পেয়েছিলেন (জাতীয় অধ্যাপক সরদার ফজলুল করিমের-একটা লেখায় এটা উল্লেখ আছে)। তিনি কি সফল ভিসি ছিলেন না?
৭। আদিবাসী/উপজাতিরা নানাভাবে নিগৃহীত আর নিপীড়িত হয়েছে এবং হচ্ছে। অনেকবার উদ্বাস্তু হয়েছে। ঊনবিংশ শতকের শেষ দিকে পার্বত্য চট্টগ্রামে রির্জাভ ফরেস্ট সৃষ্টির সময় প্রথম বার উদ্বাস্ত, ১৯৬০ সালে কাপ্তাই বাধেঁর কারণে ৫৪ হাজার একর প্রথম শ্রেণীর আবাদী জমি (৬টা উপজেলা) তলিয়ে যায় যখন তখন দ্বিতীয়বার। স্বাধীনতার পর হতে বিশেষ করে জিয়া এবং এরশাদের আমলে রাজনৈতিকভাবে বাঙ্গালী শরণার্থী পাঠিয়ে ভূমি সংক্রান্ত সমস্যা বাড়িয়ে তৃতীয়বার এবং এখনো এই সমস্যার সমাধান মিটে নাই। পাশাপাশি চলছে অঘোষিত সেনা শাসন। পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রতি ৪০ জনে একজন সেনা নিয়োজিত। দেশের অন্যান্য এরাকায় প্রতি ১৭৫০ জন লোকের বিপরীতে একজন সেনা। কোন যুদ্ধাবস্থা বিরাজমান দেশেও এমন হারে সেনা মোতায়েন হয় না। ভূমি সমস্যা নিরসনে গঠিত হয়েছে ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন’ সেই ২০০১ সালে । কমিশনের আইনও হয়েছে তখন, কোজ কাজ হয়নি। ১২ বছর পর সংশোধনী হলো এবছর। এখনো ভুমি সমস্যা নিরসনের উদ্যো্গী লক্ষণ দেখছি না। জাতীয় সংসদে সংশোধনী আইনটা পাশ হয়নি এখনো। মনে রাখবেন- ভূমি কিন্তু উপজাতি/আদিবাসীরাই হারিয়েছে বারবার। উদ্ভাস্তু হয়েছে বারবার। তাই কোন বিষয়ে উপজাতি/আদিবাসীদের দোষ দেওয়ার আগে ভেবে দেখবেন শুরুটা কিভাবে হয়েছিল? তাদের মধ্যে ক্ষোভ, উত্তেজনা বিরাজ করার দায়ী কারা সেটাও খতিয়ে দেখা দরকার।
৮। আদিবাসী/উপজাতিদের অনেকেই বলে থাকেন সেখানে শরণার্থী (Settler) না গেলে সবাই কম বেশি স্বাবলম্বী হতে পারতেন। আদিবাসী/উপজাতি কোটার প্রয়োজন হতো না। বক্তব্যটার মূল সুরটা অনুধাবনের চেষ্টা করুন। উনি এটাই হয়তো বুঝাতে চেয়েছেন যে শরণার্থী যারা তারা যদি ওখানে গিয়ে বিরোধ সৃষ্টি না করতো আর আদিবাসী/উপজাতিরা বার বার উদ্ভাস্তু না হতো তাহলে এতটা পিছিয়ে পড়া অনগ্রসর হয়ে থাকতো না। সরকারি চাকরি, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনায় কোটার প্রয়োজন পড়ত না। তারপরও ভাষাগত প্রতিবন্ধকতাসহ আরো অনেক বিষয় থেকে যায় আদিবাসী/উপজাতি কোটা বহাল রাখার পক্ষে।
৯। কেউ কেউ পার্বত্য অঞ্চলের বাঙ্গালীদেরও কোটা প্রথার মধ্যে আনার কথা বলেন। তাদের উদ্দেশ্যে বলছি—কোটার নাম ’উপজাতি কোটা’- এই কোটায় শুধু পাহাড়ের উপজাতিরা নয় সমতেল অঞ্চলের উপজাতিরাও অন্তৃভূক্ত। সেখানকার বাঙ্গালি মায়ের সন্তানরা বঞ্চিত হচ্ছেন-এর মানে কি তাদেরও কোটা দরকার? মানে বিসিএস-এ ‘পার্বত্য কোটা’ নামে কোটা চালুর কথা বলছেন? পরিণাম কি হবে জানেন? দেশের অন্যন্য এলাকার সাধারণ আর অসাধারন বাঙ্গালীরা হুরমুড় করে পাহাড়ে পাড়ি জমাতো চারিতে ওই কোটা সুবিধা পাওয়ার জন্য। এমনিতেই পাহাড়ে অনেক সমস্যা। সমস্যা বাড়ানোর আয়োজন করা কোন কারণ দেখছি না।
১০। ইউরোপ আমেরিকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এশিয়া মহদেশের ছাত্রছাত্রীদের জন্য কোটা ভিত্তিক পিএইচডি করার সুযোগ দেওয়া হয়। তখন আমরা সেটা লুফে নেই। তাদের কি দরকার ছিলো এশিয়ার ছাত্রছাতীদের কে মেধাবী হওয়ার সুযোগ করে দিয়ে? এখানেও ন্যায্যতার বিষয়টি উঠে আসে। আসলে সারা পৃথিবীর সবখানে সবকিছুতেই কোটা ভিত্তিক ব্যবস্থা চালু আছে। কারণ পৃথিবীর সবখানে সমভাবে উন্নয়ন হয়নি, সব মানুষ সম অধিকার পায় না। পৃথিবীতে সুষম উন্নয়ন যতদিন হবে না, ততদিনই অনগ্রসরদেরকে মূলস্রোতের সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্য উঠিয়ে নিয়ে আসতে এই ব্যবস্থা চালু থাকবে। তাই কোন মানবতাবাদী স্বার্থহীন মানুষ অনগ্রসর উপজাতি/আদিবাসী কোটার বিপক্ষে যেতে পারে না। আশা করি সবাই একমত হবেন।
@তপন বিকাশ তঞ্চঙ্গ্যা,
মুক্তমনায় আপনাকে স্বাগতম। আপনার ৭, ৮ ও ৯ নং বিষয়ে একমত। এর সঙ্গে আরো খানিকটা যোগ করে বলতে চাই:
লক্ষ্যণীয়, গত ৪১ বছরে মুক্তিযোদ্ধা কোটা সত্যিকার অর্থে পূরণ হলে সরকারি চাকরি করে না এমন মুক্তিযোদ্ধা খুঁজে পাওয়া মুশকিল হতো। কিন্তু বাস্তবতা বলছে, এখনো ভিক্ষে করে, বিনা চিকিৎসায় মরে সংবাদ শিরোনাম হন মুক্তিযোদ্ধারা। কেন?
অন্যদিকে, এখন বিসিএস পরীক্ষায় অকৃতকার্য “মেধাবী”রা জড়ো হয়েছেন শাহবাগে। জামায়াত-হেফাজত ছাগু কোং চাইছে তাদের উস্কে দিতে। যথেচ্ছ তাণ্ডব চালানোর পাশাপাশি তারা মুক্তিযোদ্ধা ও আদিবাসীদের হেয় করে অশোভন সব শ্লোগান দিয়েছে।
এ পরিস্থিতিতে মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম ও আদিবাসী মহলে দেখা দিয়েছে প্রচণ্ড ক্ষোভ। দুস্থ মুক্তিযোদ্ধার জন্য বরাদ্দ এই কোটা উঠিয়ে দেওয়ার দাবি কতোটুকু যৌক্তিক? দেশের পশ্চতপদ জনগোষ্ঠি ক্ষুদ্র জাতি/আদিবাসীদের মূলধারায় যুক্ত করার জন্য প্রচলিত কোটা পদ্ধতি তুলে দেওয়ার দাবিই বা কেন?
সহব্লগার, মণিপুরী লেখক কুঙ্গ থ্যাঙের ভাষায়, “আদিবাসী কোটার জন্য যাদের গাত্রদাহ শুরু হয়েছে তাদেরকে জানাই, ৫% সংখ্যাটি একটি সংখ্যা মাত্র, এর সাথে বাস্তবের বিন্দুমাত্র সম্পর্ক নাই। শতকরা আশিভাগ সরকারি চাকুরিতে আদিবাসীদের জন্য এই কোটাবন্টন মানা হয় না। সরকারি স্কুলগুলোতে প্রতিবছর যত শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয় তার কয়জন আদিবাসী কোটায় নিয়োগ পায়? প্রতিবছর পুলিশ, বিজিবি, সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনীতে এত নিয়োগ হয় সেখানে কয়জন কোটায় সুযোগ পায়? ৩৩তম বিসিএস চার হাজার পদের বিপরীতে কয়জন আদিবাসী নিয়োগ পেয়েছে? শতাংশ হিসাবে যেখানে ২০ জনে ১ জন নিয়োগ পাওয়ার কথা সেখানে ১০০০ জনে ১ জনও নিয়োগ পায় না। যারা চাকরি পায় তারা দু’নম্বরি রাস্তা দিয়েই পায়। ঘুষের টাকা যোগাড় করতে কতজনকে ভিটাবাড়ি বিক্রি দিতে হয়েছে তার হিসাব নাই।”
কাজেই বিসিএস-এ চাকরি ক্ষেত্রে সব কোটাই খুব বড় সমস্যা, এমন নয়। বরং প্রত্যেকেরই উচিত হবে একে শ্রদ্ধার সঙ্গে দেখা। কাজেই রাতারাতি কোটা পদ্ধতির বিলুপ্ত না ঘটিয়ে বড়োজোর এর খানিকটা সংস্কার করা যেতে পারে। আর প্রকৃত মেধাবীরা প্রতিযোগিতার বাজারে যোগ্যতা দিয়েই বিসিএস-এ মেধার স্বাক্ষর রাখবেন এটিই কাম্য। নইলে এর নেপথ্যের ছুপা রুস্তমবাজীর মুখোশ জনগণই টেনে ছিঁড়ে ফেলবে।
ভাবনাটিকে উস্কে দেওয়ার জন্য আপনাকে সাধুবাদ। চলুক। (Y)
@তপন বিকাশ তঞ্চঙ্গ্যা, আদিবাসী কোটার পক্ষেই ছিলাম সবসময়। তারপরও আপনার মন্তব্য থেকে বেশ কিছু জিনিস জানলাম। ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য। 🙂
@রিজওয়ান,
তথ্য সমৃদ্ধ ও সময়োচিত লেখার জন্য আপনাকে বিশেষ ধন্যবাদ। আরো লিখুন। (Y)
@তপন বিকাশ তঞ্চঙ্গ্যা,
আপনাকে খুবই আনন্দের সাথে জানাচ্ছি – সংখ্যায় ক্ষুদ্র নৃ জাতি / গোষ্ঠীর জন্য বরাদ্দকৃত কোটার ব্যাপারে আসলে কেউই কোন প্রশ্ন তোলেনি- না তোলেনি অন্য দুটির ব্যাপারে। এখানে মুক্তিযোদ্ধা ৩০ % কোটার ব্যাপারেই প্রশ্ন তুলছে। যেটার সুফল প্রকৃত প্রত্যাশী কয়জন ভোগ করছেন এটাও প্রশ্নের সম্মুখীন। সবাই এটা নিয়েই প্রশ্ন তুলছে।
কোটা জিনিশটা প্রয়োজন বটে। তবে অপব্যাবহারে জর্জরিত । যে বেক্তি কোটাতে স্কুলে চাকরি পেল তার ভাল হল কিন্তু ছাত্রদের ক্ষতি হয়ে গেলো। ছাত্ররা আরও ভাল শিক্ষক থেকে বঞ্চিত হল নাকি?
@অনিন্দ্য পাল,
আমারও একই মত ।
@অনিন্দ্য পাল, ভালোই বলেছেন। এজন্যই কোটা কোন লং টার্ম সমাধান না এবং আমি ব্যক্তিগতভাবে কোটার চাইতে চাই সরকার যাতে তৃণমূল পর্যায়েই বেশি কাজ করে। ঢাকার একটি স্কুলের সাথে প্রত্তন্ত অঞ্চলের একটি স্কুলের ব্যবধান যাতে কমে আসে সেসবের দিকেই নজর বেশি দেয়া উচিত।
এই আন্দোলনটা এখন মুক্তিযোদ্ধাদের বাপন্ত তোলার একটা সুযোগ করে দিয়েছে। মনের সুখ মিটিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের খিস্তি খেউর করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। রীতিমত মুক্তিযুদ্ধাদের নিয়ে ঠাট্টা-মশকরা শুরু হয়েছে। বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে, এই কোঠা বিরোধী আন্দোলনকারীদের জন্য যারা মুক্তিযোদ্ধাদের ছেলেমেয়ে তারা এখন তাদের বাবা মুক্তিযোদ্ধা এটা স্বীকার করতেই বিব্রত বোধ করছে। বাহ্, এটাই তো চেয়েছিল ওরা! একদিন যারা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিল তাদের বংশধরদের একদিন অনুশোচনা করতে হবে এর জন্য। আমার বাবা মুক্তিযোদ্ধা এটা বললে চারপাশে এখন সবাই হাসিহাসি করবে। একদল সরকারী চাকরীলোভী `মেধাবী’ মুক্তিযোদ্ধাদের ছেলেমেয়েদের জন্য সরকারী পদে বসে আমাদের পিছনটা মারার চান্স পাচ্ছে না। তাই মুখে যা আসে তাই বলে মুক্তিযোদ্ধাদের মা-বাপকে নানা জনের সঙ্গে বিয়ে দিয়ে মুখের ঝাল মিটিয়ে নিচ্ছে। পহেলা বৈশাখের ভাস্কর্যে আগুন লাগাচ্ছে। আন্দোলনকারীরা ঠাট্টা করে বলা শুরু করছে, ইস্, আমার বাপে যদি একটা বন্দুক লইয়া খালি একটা ফটো তুলতো তাইলে হালার পুতেও একখান চাকরী পাইতো। আমিও পাইতাম। আমার পুতেও পাইতো…! (সমবেত সকলেরই অট্টহাসি)
সেইদিন এসে গেছে যেদিন মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লোকে কথা বলতে বিব্রত বোধ করবে। আর ওরা বুক ঠুকে গবর্ভরে বলবে, শান্তিবাহিনিতে আমার ওমুকের নাম ছিল…। বি
@সুষুপ্ত পাঠক, আমি শাহবাগে কোটাবিরোধী আন্দোলনের সময় সেখানে যাইনি, কিন্তু বাস্তবতা যদি এরকম হয় সেইটা বেশ দুঃখজনকই হবে। তবে যাই বলুন, সাধারণ মানুষের মধ্যে এক ধরনের বঞ্চনাভুতি আছে, আর এর মূলে আছে এই অন্যায্য কোটা ব্যবস্থা। তাই কাঁদা ছুঁড়াছুঁড়ি না করে কোটা সংস্কার দ্রুত কাম্য।
১. এখানে প্রথমেই একটা ব্যপার খুবই গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া উচিত- অনেক মুক্তিযোদ্ধা ইচ্ছে করেই কোন সার্টিফিকেট নেননি আবার অনেক প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা সার্টিফিকেট পাননি মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহন করে। অপর দিকে মুক্তিযুদ্ধের ভুয়া সার্টিফিকেট যে কিভাবে ছড়িয়ে গেছে এটা বলা বাহুল্য!!! এমন অনেক ভুয়া সার্টিফিকেটধারী আছে যাদের মুক্তি যুদ্ধের সময় বয়সও ১০ এর নিচে ছিল!!! সেই ৭০ এর দশকে এমন ভুয়া মুক্তিযুদ্ধের সার্টিফিকেট বানিয়ে (টাকার বিনিময়) তারা নিজেদের স্বার্থ উদ্ধার করেছে এবং এই ৯০ এর দশকেও তাদের পোষ্যরা বাপের ভুয়া সার্টিফিকেট ব্যবহার করে অন্যায্য সুবিধা ভোগ করছে এবং ঐ ভুয়া সার্টিফিকেট ধারীরা চাকুরীতে প্রমোশনে এগিয়ে থাকছে।
২. প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য অবশ্যই কোটা থাকতে হবে। কিন্তু এখানেও দেখতে হবে যে একই পরিবারে কয়জন এই সুবিধা ভোগ করছে। আবার অর্থনৈতিক সচ্ছল মুক্তিযোদ্ধার পরিবার এবং অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধার পরিবারকে এক কাঠিতে ফেললেও এটা অন্যায্য আচরণ। আবার যুদ্ধে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে অন্যদের পরিবার একই সমতলে আনাও অন্যায্য।
৩. সমাজের অনগ্রসর ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, নারী কিংবা প্রতিবন্ধী এসব কোটাও জরুরী। তবে অবশ্যই এটা নিয়ে নিয়মিত রিভিও করতে হবে।
৪. এটাও মনে রাখতে হবে- গ্রামের খেটে খাওয়া কৃষকের সন্তান যেন বঞ্চিত না হয় অনেক বেশি নাম্বার পেয়ে- অনেক বেশি কষ্ট করে মন্ত্রী-বড় ব্যবসায়ী-সচিব কন্যা কিংবা সার্কেল রাজার কিংবা হ্যাডম্যানের সন্তান থেকে- কোটার কারণে।
৫. আমাদের দেশের সামরিক বাহিনী যেহেতু নিয়মিত যুদ্ধ করছেনা এজন্য এই ব্যপারটা নিয়ে চিন্তা চলছেনা। তবে ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে এই কোটা নিয়েও ভাবতে হতে পারে।
পুনশ্চঃ
(ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মানবিক ফ্যাকাল্টি এবং সামাজিক বিজ্ঞানের অনেক বিভাগের প্রায় সকল ছাত্রদের গোলই থাকে বিসিএস- তারা একেবারে অনার্স প্ররথম বর্ষ থেকেই বিসিএস প্রস্তুতি – যারা নিজের চোখে দেখেনি তারা বিশ্বাসই করতে পারবেনা পড়ার মাত্রা কত ব্যপক- GRE-GMAT এর পড়া এর তুলান্য নস্যি )
@সংবাদিকা,
১. মুক্তিযুদ্ধের সংখ্যা সরকার বদল হবার সাথে সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। কমন সেন্স দিয়ে চিন্তা করলেই বুঝা যায় এই সার্টিফিকেট নিয়ে দুর্নীতি হচ্ছে। তবে সরকার সদিচ্ছা দেখিয়ে ভুয়া সার্টিফিকেটধারীদের ধরে একটা ব্যবস্থা নিবে এই চিন্তাটাও আমার কাছে আষাঢ়ে গল্পর মতই।
২. আপনি যা প্রস্তাব করছেন তার একটা ইন্টুইটিভ আপিল অবশ্যই আছে, কিন্তু বাংলাদেশের কোটা সিস্টেম এমনিতেই অত্যন্ত জটিল, অনেককেই কোটা সিস্টেমের সিমপ্লিফিকেশনের কথা বলেছেন। কিন্তু আমার মনে হচ্ছে আপনার প্রস্তাবিত দাবিটি কোটা সিস্টেমকে আরও জটিল করে তুলতে পারে।
৩. একমত।
৪. এগুলো তো কমন সেন্স রে ভাই, কিন্তু বাংলাদেশে বসে থেকে এসব প্রত্যাশা বাড়াবাড়িই মনে হয়। অবশ্য আমার যে বাড়াবাড়ি মনে হচ্ছে এইটাই চরম হতাশার কথা যে আমরা দুর্নীতির সাথে অভ্যস্ত হয়ে পড়ছি দিনদিন।
৫. বুঝিনাই কী বলতে চেয়েছেন।
হাহাহা, সেই, আমরা কোটা নিয়ে কথা বলছি কিন্তু তারপরও বলতে বাধ্য হচ্ছি যে বিসিএস-এ যে প্রশ্নের মাধ্যমে পরীক্ষা নেওয়া হয়, সেটাকে আমার মেধা যাচাইয়ের প্রহসন বলেই মনে হয়। ভালো থাকবেন। 🙂
@রিজওয়ান,
দেশের কোথাও যদি দীর্ঘ মেয়াদী জরুরী অবস্থা যদি কিংবা যুদ্ধাবস্থায় থাকে তখন সামরিক বাহিনীতে বেশি পরিমাণ জনবল লাগে- এমত অবস্থায় শর্ট রিটয়ার্ড / ডিসচার্জড সার্ভিস পারসনদের জন্যও কোটা / বিশেষ সুবিধা ব্যবস্থা করতে হয় – যুদ্ধকালীন দায়ীত্ব পালনের প্রতিদান সরূপ – যেমন ভাবে মুক্তিযোদ্ধারা পেয়ে থাকেন। তবে যেহেতু দেশ এখন শান্তিকালীন অবস্থায় আছে- এটার চিন্তা না করলেও চলে।
ধন্যবাদ 🙂
নির্মোহ বিশ্লেষণ। যুক্তির বুননে সুবিন্যস্ত নির্মাণ। মুক্তমনাতে এরকম লেখাই আকাঙ্ক্ষিত।
চূড়ান্ত বিচারে, কোটা থাকা অনুচিত বলেই মনে হয়। সুবিধা-বঞ্চিতদের জন্য সুবিধা প্রদানে সমাজের একটা দায়বদ্ধতা থাকে বটে এবং রাষ্ট্র কর্তৃক তা স্বীকৃত ও কার্যকর হওয়ার নজিরও খুব কম নেই। তথাপি, কোটা কিন্তু ভয়াবহ মোরাল হ্যাজার্ড তৈরি করতে পারে। দেখুন তো, মহিলাদের আইন প্রণয়ন, রাষ্ট্রীয় কার্যে অংশগ্রহণ বা সমক্ষমতায়ন নিশ্চিতের জন্য সংসদে নারীদের জন্য সংরক্ষিত কোটার বর্ধন হয়েছে, কিন্তু নারীর ক্ষমতায়-ন তাতে কি বিন্দুমাত্র বেড়েছে? বরং, এই সুযোগে দলগুলো এমন অনেক নারীকে সংসদে ঢুকিয়েছে, যাদের দিয়ে ইচ্ছামত অশালীন কথা বলানো যায় বলে মনে হয়।
সুতরাং, কোটার ব্যাপারে আমাদের সত্যি ভাবতে হবে।
আর শাহবাগের আন্দোলনের ব্যাপারে বলা যায়, এটি এখন পুরোই ছাগুদের দখলে। নইলে, চারুকলার ভাস্কর্য ধ্বংস হবে কেন বা মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে অসম্মানজনক শ্লোগান দেয়া হবে কেন?
@কাজি মামুন, ধন্যবাদ আপনাকে। যাই হোক, ”এটি এখন পুরোই ছাগুদের দখলে”-এই অংশের সাথে আমি কিছুটা আপত্তি জানাবো। আমার পরিচিত দুই-একজন যারা কিনা শাহবাগে যুদ্ধাপরাধীর বিচার চাইতেও নিয়মিত অবস্থান করেছিল, তাদেরকেও যেতে দেখেছি। আর এ ধরনের আন্দোলনে আপনি তো কোন ব্যারিয়ার রাখতে পারবেন না, ছাগু-টাগু সবাই এসে ভিড় করলে কী করার আছে! কিন্তু আন্দোলনের প্রাণভোমরা যদি ছাগুদের হাতে যায় সেইটা এই আন্দোলনের জন্যই অশনিসংকেত হবে।
@কাজি মামুন,
মামুন, আপত্তি করছি। সংসদে শুধু নারীরা নয়, পুরুষ সাংসদদের মুখ দিয়েও কিন্তু খিস্তি খেঊর ছুটে। এটা কোটার দোষ নয়। কোটা পদ্ধতি না থাকলে আমরা নারী স্পীকার পেতাম না।
@গীতাদি,
এটা কি বললেন, দিদি??
প্রথমত, কোটা না থাকলে সেক্ষেত্রে সরাসরি নির্বাচিত মহিলা সাংসদদের থেকে নারী স্পীকার করা যেত। সুতরাং, পেতাম না কি করে বলা যায়? তবে তারও চেয়ে বড় প্রশ্ন, পেতেই হবে কেন?
দ্বিতীয়ত, কোটা থেকে হোক বা কোটার বাইরে হোক, যেভাবে প্রধানমন্ত্রীর একক ইচ্ছায় ইতিহাস গড়ার অভিপ্রায়ে নারী স্পীকার নিয়োগ হয়েছে, তা কি নারী ক্ষমতায়নের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য পূরণ করে? এমন যদি হত, আমাদের নারী স্পিকার তার স্বীয় যোগ্যতাবলে নিজের নিয়োগকে অনস্বীকার্য করে তুলেছিলেন, তাহলে খুব ভাল লাগত না, দিদি? এমন নয় যে, আমাদের স্পীকার অযোগ্য, কিন্তু তার নিয়োগটি কিন্তু একান্তই প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছায়।
তৃতীয়ত, নারী স্পিকার আমরা পেতে চাই কেন? কি হয় নারী স্পিকার দিয়ে? আমরা কেন বলতে পারি না যে, আমরা একজন যোগ্য স্পীকার চাই, হোক সে নারী বা পুরুষ? নারীরা চাইব নারী স্পীকার, পুরুষরা চাইব পুরুষ স্পীকার, সেক্ষেত্রে শিশুরা চাইতে পারে শিশু স্পীকার বা তস্করেরা চাইতে পারে তস্কর স্পীকার! যেনতেন ভাবেই হোক, একটা নারী স্পীকার চাওয়ার বিপদ বুঝতে পারছেন, দিদি?
চতুর্থত, একজন নারী প্রধানমন্ত্রি, নারী বিরোধী দলীয় নেত্রী, নারী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, নারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী বা নারী সংসদ উপনেতা দিয়ে যে নারী ক্ষমতায়ন হয় না, তা বুঝতে আর কত নারী শাসনকাল অবলোকন করতে হবে, বলতে পারেন, দিদি?
নারীকে ক্ষমতায় দেখতে চান, দিদি? তাহলে সমাজ বিবর্তনের আরো কিছু চাকা ঘুরতে হবে যে, দিদি! তবে সামনের দিকে নয়, পেছনের দিকে! ‘গঙ্গা থেকে ভোলগা’য় যে নারীকে দেখেছি, তেমন ক্ষমতাবান নারীকে দেখতে হলে, সভ্যতার চাকা ঘুরাতে হবে পেছনেই! নইলে নারীরা যে তিমিরে আছে, থাকবে সেই তিমিরেই!
@কাজি মামুন,
গুণে এবং মানে মহিলা সাংসদ মানেই স্পীকার হবার যোগ্যতা রাখে না।
স্পীকার হবার যোগ্যতা আছে, তবে পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় পেশিশক্তি প্রভাবিত রাজনীতিতে একজন নারীর সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হয়ে আসা কঠিন।কাজেই কোটার মত Positive discrimination চাই।
শিশু আর তস্করের সাথে নারী তুলনীয় নয়। নারীরা নারী চায় সামাজিক বলয়কে ভাঙ্গতে। প্রথাগত ধ্যান ধারণাকে ভেঙ্গে বেরিয়ে আসতে।
Biologically নারী হলেও তারা যে পুরুষতান্ত্রিক চেতনায় প্রভাবিত । কাজেই একে নারী শাসনকাল না বলাই শ্রেয় নয় কি, মামুন?
রিজওয়ান সাহেবকে ধন্যবাদ তার কোটা নিয়ে লেখাটির জন্য।
পিছিয়ে পরা জনগষ্ঠিকে, সুনির্দিষ্টভাবে বাংলাদেশের জাতিগত সংখ্যালঘু আর নারীদের বেলায় আমি কোটা পদ্ধতি চাই।
আমি লেখককে একটা প্রশ্ন করতে চাই , আপনি কী মনে করেন যে কোটা সবক্ষেত্রে হওয়া উচিত?
আপনি লিখেছেন যে শেষমেশ কোটা থাকা উচিত নয় । তারপরও এ প্রশ্ন করলাম কারণ আপনি মনে করেন আপাতত বাংলাদেশ এ কোটা থাকা উচিত ।
@অপূর্ব, আমি ঠিক নিশ্চিত নই আপনার প্রশ্নটি আমি বুঝেছি কিনা। যাই হোক, আপনি যদি জিজ্ঞেস করেন যে বিসিএস-এর সব ক্যাডারের ক্ষেত্রেই কোটা থাকা উচিত কিনা তাহলে আমি বলবো আমি মনে হয় যথেষ্ট জ্ঞান রাখিনা এ বিষয়ে মন্তব্য করতে, তাই এ বিষয়ে মতামত দেওয়া থেকে বিরত থাকবো।
লেখকের সাথে একমত। কয়েকটি বিষয় আলোচনা করতে চাই।
১)কোটার হার অবিশ্বাস্য রকমের বেশি। কোটা পদ্ধতির তাই সংস্কার অবশ্য কর্তব্য।কিন্তু এই সুযোগে কিন্তু এক্সট্রিমিস্টের আবির্ভার ঘটেছে যারা সংস্কার নয়,পুরোপুরি বাতিল চায়। এটা irrational দাবি
২)আন্দোলনটা যৌক্তিক ছিল,কিন্তু এখানে দৃশ্যতই জামাত শিবিরের অনুপ্রবেশ ঘটেছে। নাহলে ”মেধাবীরা” বিসিএসএর সাথে সম্পর্কবিহীন ঢাবির উপাচার্যের আবাসিক ভবনের হামলা করতো না কিংবা চারুকলার ভাস্কর্য ভাংতো না।কিন্তু এদেরকে দমন করতে ছাত্রলীগের আবির্ভাব হিতে বিপরীত করে ফেললো। সরকারকে এটা বুঝতে হবে “ছাত্রলীগ কোন কাজে বাধা দিচ্ছে তার মানে অবশ্যই কাজটি ভালো ছিল”-এমন একটা পারসেপশন দেশে তৈরি হয়ে গেছে!!! :p :p
আর তার চেয়েও বড় কথা,বিশৃংখলাকারীদের দমন করার দায়িত্ব পুলিশ-র্যাবের। এটা ছাত্রলীগের কাজ নয়।এখানে ছাত্রলীগের আবির্ভাবই বেআইনী।
৩) এই সরকারের সময় সরকারের যেকোন অগণতান্ত্রিক আচরণের বিরুদ্ধে সামান্য প্রতিবাদকেও মুক্তিযুদ্ধের অনলাইন গবেষক ও ব্লগাররা ঢালাওভাবে জামাত-শিবিরের কর্মকান্ড বলে অভিহিত করেছে। যেমন কোন ধরণের ভাংচুর বা অগ্নিসংযোগ ছাড়াই বুয়েট শিক্ষার্থীদের যুক্তিসঙ্গত আন্দোলনকে ঢালাওভাবে জামাত শিবিরের ষড়যন্ত্র বলে অভিহিত করেছে।এইসব অনলাইন একটিভিস্টরা এতোই উন্মাদ যে আন্দোলনরত হিন্দু শিক্ষার্থীদেরকেও হিন্দু জামাতি,মালাউন হেফাজতি এইসব লিখে ব্লগ পোস্ট করেছে। এইসব দলকানারা বুদ্ধিহীন দাস ব্যতীত আর কিছুই নয়। এর ফলে খুব সহজেই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির মধ্যে ভাঙ্গন জন্মাচ্ছে যার খেসারত দিতে হচ্ছে সবাইকে,আর এই অপকর্মের পিছনের নাবিকগুলো হচ্ছে ঐ সব দলকানা বুদ্ধিহীন অনলাইন একটিভিস্টরা।
৪)মেধার বহিঃপ্রকাশ দেখলাম আমরা! সংঘর্ষ, ভাংচুর, আগুন! আন্দোলন সম্ভবত প্রথমে কোটা বাতিলের পথে থাকবে, পরে মারামারি ও সাংঘর্ষিক রূপ নিয়ে সরকারবিরোধী আন্দোলনে রূপ নেবে! টাকা আর রাজনৈতিক ব্যবহারের দুরভিসন্ধিতে একটা যৌক্তিক আন্দোলন অযৌক্তিক জেদের পথে চলে গেল, বিক্রি হয়ে গেল!!
@আমি কোন অভ্যাগত নই, ধন্যবাদ আপনার বিশ্লেষণধর্মী মন্তব্যের জন্য। একে একেই আসছি।
১. যারা কোটা পুরোপুরি উঠিয়ে দিতে বলছে, হয় তারা না বুঝেই বলছে অথবা তাদের এই দাবির পিছনে কোন দুরভিসন্ধি আছে।
২. আমার মনে হয় আন্দোলনের নেতৃস্থানীয় যারা আছেন, তাদের খুব দ্রুত সংবাদ সম্মেলন টাইপ কিছু করে খুব স্পষ্ট করে সব কিছু খুলে বলা উচিত। আসলে জামাত-শিবিরকে হেটিয়ে বিদায় করা আন্দোলনকারীদেরই ইন্টেরেস্ট হওয়া উচিত। এরকম ব্লান্ডার করলে আন্দোলনের প্রাণ খুব দ্রুতই চুপসে যেতে পারে। সেই সাথে ছাত্র লীগ নাক গলিয়ে উল্টো ঝামেলা না পাকালেই সবার জন্য মঙ্গল।
৩. এদের প্রোপাগান্ডা দেখতে দেখতে আমি বিরক্ত, এদের নিয়ে দুই লাইন ব্যয় করতেও আমি রাজি না।
৪. ফেসবুকে আমার এক বন্ধু মন্তব্য করলো, দেশের সিভিল সার্ভিস জয়েন করতে ইচ্ছুক লোকগুলো যদি প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে লুটতরাজকে বেছে নিতে চায়, ব্যাপারটা বেশ আয়রনিক। যাই হোক, আন্দোলনকে আমার মোরালি জাস্টিফাইড মনে হয়েছে, কিন্তু ভায়োলেন্সের ভাষাকে জাস্টিফাইড ভাবার কোন কারণ এখন পর্যন্ত দেখছি না।
লেখাটির সাথে সামান্যতম দ্বিমত নেই। যেসব ব্লগাররা বৈষম্যমূলক কোটা বন্টন এর বিরোধিতাকারীদের উপরে খড়গহস্ত হয়ে অন্ধভাবে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন তারা নিজ দলের কতো বড়ো ক্ষতি করছেন এটা বুঝতে পারছেন না।
@সফিক, ধন্যবাদ আপনাকে।
(Y) চরমভাবে একমত। ভাল বিশ্লেষণ। ব্যাপারটা নিয়ে কনফিউজড ছিলাম। একদল কেন কোটা ব্যবস্থা একেবারে নির্মূল করে ফেলতে চাইছেন বুঝিনা। এবার বুঝলাম-
আমি বলি- If you are not against affirmative action then you are not against qouta system.
Quota system বা affirmative program কিংবা equal opportunity system পৃথিবীর প্রায় সকল দেশেই আছে। অপেক্ষাকৃত দরিদ্র বা অশিক্ষিত বা সুবিধা বঞ্চিত এলাকা নির্ধারন করে শিক্ষা ও কর্মস্থানে সমতা আনা Quota system এর লক্ষ্য। এটা তুলে দেয়া যায় যখন সর্বস্থরে সমতা আসবে। জাতি বৈষম্য, বর্ণবাদ, স্বজনপ্রীতি, সাম্প্রদায়ীকতা তখনই আসে যখন সিষ্টেমকে এবিউজড করা হয়। বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে যা বিশ্বাস না করাটাই অস্বাভাবিক। আসল প্রয়োজন ভাল সুষ্ট পরিকল্পনা আর সাময়ীক এই সিষ্টেমের প্রয়োজনীয়তা, উপকারীতা সমাজের সামনে ব্যাখ্যা করা বা তুলে ধরা।
@আকাশ মালিক, হ্যাঁ, লেখাতেও কিন্তু বলেছি বাংলাদেশে এখনই অবশ্যই কোটা সিস্টেমের মূলোৎপাটন করা একদমই যৌক্তিক না। কিন্তু সরকারের উচিত একটা টার্গেট ঠিক করে টাইমলাইন তৈরি করা। অনগ্রসর জনগোষ্ঠী কতদিন ধরে এই সুযোগ পাবে বা তৃণমূল পর্যায়ে ঠিক কী কী কার্যক্রম হাতে নেয়া হবে সে বিষয়েও পরিকল্পনা নেবার দরকার আছে।
ভালো থাকবেন। 🙂
(Y)
চমৎকার বিশ্লেষণ!
@সৈকত চৌধুরী, ধন্যবাদ। 🙂