সহব্লগার ও অন লাইন অ্যাক্টিভিস্ট আসিফ মহিউদ্দীন অবশেষে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। এ জন্য তাকে জানাই আন্তরিক অভিনন্দন। আবারো আসিফ মুক্তচিন্তা ও শুভবুদ্ধির পক্ষে অবিরাম লিখে যাবেন; নিঃশঙ্ক চিত্তে ফিরে আসবেন ব্লগিং জগতে এটিই কাম্য।
তার অনেক লেখাই হয়তো অনেকে পছন্দ না-ও করতে পারেন, কিংবা তার অনেক লেখার সঙ্গে হয়তো দ্বিমত পোষণ করার সুযোগও রয়েছে। কিন্তু লেখার জবাব লেখা দিয়েই হতে হবে, কারাবন্দিত্ব কখনোই লেখনির জবাব হতে পারে না। তাছাড়া কোনও সভ্যদেশের আদালত নির্ধারণ করে দেবে, অমুকে আস্তিক বা তমুকে নাস্তিক, কোনমতেই এটি মেনে নেওয়া যায় না।
সব রকম শাররীক ও মানসিক ক্ষতি কাটিয়ে আসিফের লেখনি আগের মতোই সব ভয়-ভীতি উপেক্ষা করার সাহস রাখবে, আমরা এটিই চাই। রাষ্ট্রের উচিত হবে আমাদের সহব্লগারকে সব রকম নিরাপত্তা প্রদান করা।
আসিফের মুক্তির বিষয়ে কিছুক্ষণ আগের এক খবরে বলা হয়:
অবশেষে জামিন পেলেন ব্লগার আসিফ মহীউদ্দিন।
বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক জহুরুল হক তার জামিন মঞ্জুর করেন।
ধর্ম অবমাননার অভিযোগে গত ৩ এপ্রিল তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।একই সাথে গ্রেপ্তার করা হয় মশিউর রহমান বিপ্লব, রাসেল পারভেজ, ও সুব্রত শুভ নামের তিনজন ব্লগারকে।
গ্রেপ্তারের পর ১৭ মে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক সাজ্জাদ হোসেন ও মাইনুল ইসলাম ঢাকার মূখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে দুটি মামলার প্রতিবেদন দাখিল করেন।প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, “ব্লগার আসিফ নিজেকে আল্লাহ দাবি করে ইসলাম ও হযরত মোহাম্মদ (সা.) কে ব্যঙ্গ করে অশ্লীল মন্তব্য করেছেন। যা মুসলিম সমাজ তথা সমগ্র মুসলমান জাতির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে। এছাড়া আসিফ প্রধানমন্ত্রীকে কটূক্তি করে এবং নারীদের সম্পর্কে চরম অশ্লীল ভাষায় মন্তব্য করেন।”
সন্দেহ হয়, ডিবি পুলিশের ওই প্রতিবেদনটি কপ্টার শফির মক্তবে লিখিত কি না, যারা “ইন্টারনেট দিয়া বলগ লেখা” আসিফের একটি লেখাও হয়তো পড়ে দেখেননি বা পড়ে দেখলেও এগুলোর বিন্দু- বিসর্গ গলধকরণের ক্ষমতাই আসলে যাদের নেই।
স্মরণ করা ভালো, শাহবাগের গণজাগরণ বিস্ফোরণের বিপরীতে বিপরীতে বিএনপি-জামাত-হেফাজত যখন মতিঝিল কাঁপিয়ে “নারায়ে তাকবির” ধ্বণীতে ঢাকা নগরীতে দেদার তাণ্ডব চালায়, তখন আমাদের লিজেন্ড ব্লগাররা সে সময় টিভি টক শো, প্রিন্ট মিডিয়া, অন লাইন নিউজ মিডিয়া, ফেবু ও ব্লগে মহা মহা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে অনর্গল জ্ঞানের ঝাঁকরেপি উজাড় করে দিতে থাকেন। সরকারও হেফাজতিদের হেফাজতে নেওয়ার হীন কৌশল হিসেবে মোল্লাতন্ত্রের কাছে নিঃশর্ত আত্ন সমর্পন । মুর্খ ডিবি পুলিশের ওই প্রতিবেদনে গ্রেফতার হয় আসিফ মহিউদ্দীন, মশিউর রহমান বিপ্লব, রাসেল পারভেজ, ও সুব্রত শুভ নামের চারজন সহ-ব্লগার।
আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সে সময় বাণীতে বলেছিলেন, দেশ নাকি মদিনা সনদে চলবে! এর আগে অবশ্য খুন হওয়া ব্লগার রাজিবের বাস ভবনে ছুটে গিয়েছিলেন তিনি। নিহত রাজিবকে “শহীদ” উল্লেখ করে খুনীদের কোনও ছাড় দেওয়া হবে না বলেও অঙ্গিকার করেছিলেন। আর তিনি সে সময় সংসদে এ-ও বলেছিলেন, মন ছুটে যায় শাহবাগে! … [লিংক]
কিন্তু ডিজিটাল সরকারের এনলাগ বিটিআরসি এখন উল্টোগীত গাইছে। ইন্টারনেট ফিল্টারিং-এর পাশাপাশি তারা এখন গলা টিপে ধরতে চাইছে বাংলা ব্লগের নিঃশঙ্ক চিত্ত। [লিংক]
তো পাশার দান উল্টে গেলে রাতারাতি মুখোশ নামিয়ে ফেলেন আমাদের সেলিব্রেটি ব্লগার কোম্পানি। নাস্তিক ব্লগার প্রশ্নে আইজু+ইমরান+পিয়াল+জেবতিক কোং সব সমান হয়ে যায় তখন। এরা তখন গ্যাং ব্যাং গ্রুপ খুলে মডারেট ধর্মীয় চ্যাং (পড়ুন ঈমানদণ্ড) দেখিয়ে ফেসবুক থেকে ‘উগ্র নাস্তিক’ তাড়াতে উঠে-পড়ে লাগে । “নাস্তিক” আসিফ এদের কাছে হারাম। হারাম তারাও যারা ফেসবুকে আসিফের মুক্তির কথা বলে। আসিফকে বাদ দিয়েই এরা ব্লগারদের মুক্তি চায়; স্বাধীন বাংলা ব্লগের খোয়াব দেখে।
এসব আর কিছুই নয়, অন্ধত্ব বিচারে মোল্লাদের সঙ্গে এদের তফাৎ লেবাসের মাত্র।…অথবা হেফাজতের সঙ্গে আওয়ামী মুসলিম লীগের যতখানি, ঠিক ততোখানিই। এই তালেবর মুজিব বাহিনী জামাত- হেফাজতের চেয়েও ভয়ংকর। এরা হচ্ছে সিরাজুস সালেহীন, অন লাইন রগকাটা গ্রুপ; ভেতর থেকে ছুরি মারা চক্র।
আসিফের মুক্তির শুভ ক্ষণে, কামনা করি সব কুপমণ্ডুকতার অবসান। জয় হোক মুক্তচিন্তা, শুভ বুদ্ধির। হ্যাপি ব্লগিং। (Y)
—
ছবি: মুক্তমনা ডটকম-এর ব্যানার এবং হেফাজতি লিফলেট, মে ২০১৩।
সংযুক্ত: আসিফ মহিউদ্দীনের ফেবু নোট:
[লিংক]
আপডেট:
ওপারের অনলাইনপত্র গুরুচণ্ডালি ডটকম-এ আসিফের এই নোটটি প্রকাশিত হয়েছে। বাংলাদেশের ব্লগারদের দুর্দিনে তথা মুক্তচিন্তার স্বপক্ষে দাঁড়ানোর জন্য গুচ’কে জানাই সাধুবাদ। চলুক। (Y)
আসিফের মুক্তির শুভ ক্ষণে, কামনা করি সব কুপমণ্ডুকতার অবসান। জয় হোক মুক্তচিন্তা, শুভ বুদ্ধির। হ্যাপি ব্লগিং। (Y)
@এম এস নিলয়,
আপনাকে ধন্যবাদ।
আপডেট-০২:
[img]https://fbcdn-sphotos-b-a.akamaihd.net/hphotos-ak-ash4/484684_10151552952268165_1193287495_n.jpg[/img]
আবারো স্বরূপে আবির্ভূত ডিজিটাল রক্ষীবাহিনী, তথা ইমরান+পিয়াল+জেবতিক+আইজু কোং। অনলাইনের পর এবার অফলাইনে অ্যাকশনে নেমেছে তারা। উপলক্ষ সেই পুরনো শত্রু, লক্ষ্য ক্ষমতার মসনদ, আগামী নির্বাচন। তাই জামাত-হেফাজত নয়; চিনাবাদাম নিধনই তাদের আপাত মূলমন্ত্র। মুক্তিযুদ্ধ এদের পৈত্রিক সম্পত্তি। জয় বাংলা শ্লোগানও।
পড়ুন, সংবাদিক ও ব্লগার আরিফুজ্জামান তুহিনের ফেবু নোট। [লিংক]
_________________
আপডেট-০১:
[লিংক]
যখনই রাষ্ট্র চালকদের ইচ্ছের বিরুদ্ধে কিছু বলা হয়েছে তখনই তারা স্বার্থপর ভাবে মামলা হামলা শাস্তির ভয় দেখিয়েছে। যা সত্যি সেটা বেরিয়ে আসবেই। ওটা চাপা দেওয়া আর আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখ চেপে রাখা একই ব্যপার। আসিফ সহ সকল ব্লগারদের বিরুদ্ধে মামলা বাতিল করে দেওয়া হোক। মুক্ত চিন্তার লেখনীর জবাব লেখা দিয়েই দিতে হবে, নির্যাতন দিয়ে নয়। বিচার ব্যবস্থা সম্পুর্ন স্বাধীন করে দেওয়া হোক, যাতে করে নাগরিকও নিজেকে রক্ষার জন্য; সুবিচারের জন্য নির্ভয়ে আদালতের আশ্রয় নিতে পারে।
@কাজী রহমান,
খুব ভালো বলেছেন। জানি একদিন ভোর হবেই। (Y)
স্বাধীন দেশে মানুষ স্বাধীন ভাবে মত প্রকাশের অধিকার রাখে।তার মতামত কারও ভাল লাগবে,কার ও লাগবে না।জাতি হিসেবে আমাদের আজ এই অবস্থার জন্য যে জিনিসটি সব থেকে বেশি দায়ী তা হল,আমারা কখনও কাউকে ছাড় দিতে চাই না এবং অন্য কাউকে সম্মান দেয়ার বেলায়ও আমাদের মাঝে যথেষ্ট কার্পণ্য লক্ষ্য করা যায়…………….. 🙁
@আসিফ আব্দুল্লাহ,
এ ক ম ত। (Y)
আসিফ জামিনে মুক্ত । আনন্দের খবর নিশ্চয়-কিন্ত এইভাবে ব্লগ লেখার জন্য দমননীতি বাংলাদেশের গণতন্ত্রের সব থেকে লজ্জাজনক অধ্যায়। চিন্তার স্বাধীনতা না থাকলে কোন সভ্যতা এগোবে না। রাশিয়ার প্রমিমিয়ার পুটিনের মতন পরিস্কার ভাষায় বলার সময় এসেছে, উটের দুধ খাওয়ার ইচ্ছা, শরিয়াআইনে থাকার ইচ্ছা হলে, আরবে গিয়ে থাকুন-রাশিয়াতে গন্ডোগোল পাকানোর কি দরকার?
@বিপ্লব পাল,
যথার্থই বলেছেন। অনেক ধন্যবাদ। (Y)
আসিফের জন্য শুভকামনা।
@অতীত,
(Y)
@বিপ্লব রহমান,
অনেকদিন পরে এসে আপনার এই লেখা পড়ে খুব আনন্দিত হলাম। আসিফের মুক্তি অবশ্যই দিতে হোত।
আপনাকে- (F)
@আফরোজা আলম,
হুমম।… অনেকদিন আপনার লেখা পড়ি না। আবারো এখানে নিয়মিত লিখুন। বিনীত অনুরোধ রইলো।
অনেক ধন্যবাদ। 🙂
@বিপ্লব রহমান,
শাহবাগকে সমর্থন করে মোমবাতি জ্বালানোর কর্মসূচিতেও তিনি অংশগ্রহণ করেছিলেন বলে টিভিতে এরকম একটা খবর দেখেছি বলে মনে হচ্ছে।
এসবই কি রাজনৈতিক খেলা ? নাকি হাসিনা যা করতে চান তা রাজনৈতিক কারণে বা ক্ষমতাকে ধরে রাখার প্রয়োজনে করতে পারেন না বলে লাইনচ্যুত হন!!
যাহোক, আসিফ মহিউদ্দীনকে মুক্ত জীবনে স্বাগতম। মুক্ত আলোর মুক্ত ভাবনায় আবারও তার কলম মুক্ত চিন্তার রেখা ছড়াক সে প্রত্যাশা রইল।
@গীতা দাস,
একমত।
@গীতা দাস,
দিদি, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় কার্যকর করাসহ আরো নানা প্রতিশ্রুতি পূরণে সীমাহীন ব্যর্থতার পাশাপাশি শাহবাগ–হেফাজতে সরকারের দোদুল্যমানতার কারণে আগামী সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ভরাডুবি হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা দেখি। আওয়ামী বিরোধী নেতিবাচক ভোটই হয়তো বিএনপি-জামাতকে জিতিয়ে দেবে।
অন্যদিকে, তুমুল রাজনৈতিক সংঘাত হলে উত্তরপারার মামুরাও কিন্তু চুপ করে বসে থাকবে না। …
এসবই আমার নিজস্ব অভিমত। সাংবাদিক মহলে এ নিয়ে এখন জোর আলোচনা চলছে।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
ব্লগারেরা জামিনে মুক্তি পেলেও তাদের বিরুদ্ধে এখনও মামলা রয়েছে। সরকার এই মামলা প্রত্যাহার করবে কি? তাছাড়া প্রতি মুহূর্তেই এদের জীবন এখন মৃত্যুর মুখে। এদের নিরাপত্তা কে দেবে? বাংলাদেশের কোনো সরকারই কখনওই কোনো নাস্তিকের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করবে না। আমাদের জান-মালের নিরাপত্তার কথা আমাদেরকেই ভাবতে হবে।
@তামান্না ঝুমু, খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তুলেছেন। ওরা মুক্তি পেয়েছে এটা খুশির সঙ্গে সঙ্গে আশংকার কথা হচ্ছে এরপর ওদের নিরাপত্তা দিবে কে? বাংলাদেশে আসিফসহ বাকী তিনজনের যে পরিচিত তুলে ধরেছে মাহমুদুর তাতে ওদের নিরাপত্তা নিয়ে ভয় না করার কোনই কারণ নেই। যেখানে আমরাই মাঝে মাঝে নিরাপত্তার ভয়ে থাকি। অন্তত আমরা যারা দেশে থেকে মুক্তচিন্তার কথাবার্তা বলি। অবস্থা কতটা ভয়াবহ বলি, বাইতুল মোকারামের সামনে শুধু বলেছিলাম, তাসলিমা যাই লিখুক, দেশে আসতে দিবে না কেন? সে এই দেশের মেয়ে না! অন্যায় করলে দেশের আইনে বিচার করুক। ব্যস্, বাসের জন্য যারা লাইনে দাঁড়িয়ে ছিল, তারা কি কি বলতে বলতে এগিয়ে আসলো। তারা কেউ হুজুর না। সব সাধারণ মানুষ শার্ট-প্যান্ট পরা। বেশির ভাগই ছাপোষা চাকুরে। এরা একসঙ্গে বিশ-ত্রিশজন হলেই হুজুগে মানুষ পর্যন্ত খুন করে ফেলতে পারে। আমার সঙ্গের বন্ধু কথা ঘুরিয়ে জনতাকে বুঝিয়েছিল কথা আসলে কথা তা না…।
যাই হোক, সরকার ব্লগারদের নিরাপত্তা দিবে এটা বিশ্বাস করা আর মরুভূমিতে পাট চাষ করা একই কথা।
আমি ভাবছি না জানি দাউদ হায়দার বা তাসলিমা হতে হয় ওদের। আর সেরকম কিছু হলে সেটা হবে মুক্তবুদ্ধির চর্চার ক্ষেত্রে আরো একটি পিছিয়ে পড়ার অধ্যায়।
@সুষুপ্ত পাঠক,
নিরাপত্তা দান অবশ্যই প্রথম প্রশ্ন।
কিন্তু “নাস্তিক” ব্লগারের ফাঁসির দাঁবিতে মোল্লাতন্ত্র দেশ কাঁপিয়ে ফেলার পরিস্থিতিতে অভিযুক্ত ব্লগার গ্রেফতার+মিডিয়ায় সচিত্র নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশ+ চোর, ডাকাত, খুনি, ধর্ষক, ভয়ংকর খুনি বা দাগি অপরাধীদের সঙ্গে কারাবরণ+ইত্যাদি শেষে জামিনে মুক্ত হওয়ার পর কেমন হতে পারে তার ব্যক্তিগত জীবন? কেমন হতে পারে তার পারিবারিক জীবন? তার সামাজিক পরিবেশই বা কি হতে পারে? … :-Y
@তামান্না ঝুমু,
ওপরে পিনাকী ভট্টাচার্য’র উদ্ধৃত ফেবু নোটে প্রায় একই কথা বলা আছে। এ নিয়ে ফেবুতে তাকে বেশ নাজেহাল হতে হচ্ছে দেখছি। আগেই বলেছি, বাঙালি মুসলমানের মন!
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
অনেকদিন পর নেট ব্যবহারের সুযোগ পেলাম। নেটে ঢুকেই আমার প্রিয় ব্লগার আসিফ -এর সংবাদ একটু হলেও জানতে পারলাম। এজন্য আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করি। আল্লাহ পাক তার হায়াত দারাজ করুন। যেদিন তাকে গ্রেফতার করা হয়, সেদিন থেকেই তার জন্য দোয়া করছি মুক্তির জন্য। আল্লাহ আমার দুআ কবুল করছেন, সেজন্য আজ দুই রাকাত শুকরানা নামাজ পড়ব, ইনশাল্লাহ।
@মাহফুজ, আপনার কথায় দারুণ মজা পেয়েছি!
@মাহফুজ,
ইয়া হাবিবি! 😉
@মাহফুজ, শুধু শুকরানা নামাজে কাজ হবে না, এলাকাভিত্তিক জামাতী মোল্লদের অফিস(মসজিদ)-এ দান-খয়রাতও করতে হবে। 😉
@Rashid Sarkar,
কস্কী মমিন? :))
গাধা সবসময়ই পানি খায়, কিন্তু একটু ঘোলা করে।
আসিফ মহিউদ্দীনের জামিনের খবরটা শুনে এটাই মনে পড়ল প্রথমে। গত পয়লা এপ্রিল জামাতি আর হেফাজতি মোল্লাদের তোষামোদ করতে গিয়ে যেভাবে সরকারের পক্ষ থেকে প্রগতিশীল ব্লগারদের হাতকড়া পরিয়ে পাকড়াও করা হয়েছিল, তা ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক অধ্যায়। এর পর থেকেই আমরা চেষ্টা করেছি ব্লগারদের মুক্ত করতে। শুধু বাংলাদেশে নয়, সারা বিশ্বব্যাপী। আমাদের সে আহবানে সাড়া দিয়ে সারা বিশ্বের মুক্তচিন্তক আর মানবতাবাদীরা রাস্তায় নেমেছেন প্ল্যাকার্ড হাতে। অ্যামেনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, সিএফআই, রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস সহ বহু সংগঠনই বিবৃতি দিয়েছিল সরকারের বাক স্বাধীনতার উপর এই আগ্রাসনের প্রতিবাদে। আমি নিজেও বেশ কিছু প্রবন্ধ লিখেছিলাম আন্তর্জাতিক মিডিয়ায়। আর বাংলাদেশে ব্লগার এবং অ্যাক্টিভিস্টরা তো কয়েক দফা করে পথে নেমেছেন। কৃতজ্ঞতা জানাই সবাইকে যারা আসিফের এই কঠিন সময়গুলোতে পাশে ছিলেন, আশার খোরাক যুগিয়েছিলেন।
তবে বিপরীত দৃশ্যও যে দেখিনি তা নয়। অনেকে আবার চেয়েছিলেন সাড়া জীবনই আসিফ জেলে থাকুন। রাস্তায় ফেলে আরেকদফা কোপালে কিংবা ফাঁসি দিয়ে দিলে তো আরো ভাল। কেবল ‘কাঁঠাল পাতা চিবানো’ ছাগুরা নয়, ছাগু তাড়ানো সেলেব্রিটি ব্লগার, আম্বালিগার, পর্নস্টার সবাই ছিলেন আসিফের এই কল্লা ফেলার মিশনে অগ্রণী শরিক। ছাগুবাহিনী আর মুজিব বাহিনী গ্যাং ব্যাং গ্রুপ করে মিশনে নেমেছিলেন; আসিফের মুক্তি চেয়ে কেউ স্ট্যাটাস দিলেই মুছে দিতে শুরু করেছিল তারা। আমি অবাক হয়ে ভাবতাম – এরাই নাকি শাহবাগ আন্দোলনের পুরোধা, এরাই নাকি দেবে জাতিকে মুক্তি!
আমি অনেক দিন ধরেই দাঁতে দাঁত চেপে আজকের এই দিনটির জন্য অপেক্ষা করছিলাম। জানতাম, এক মাঘে শীত যায় না। আসিফ একদিন মুক্তি পাবেন, লেখালিখি শুরু করবেন, শুধু জামিন নয়, সামগ্রিকভাবে মামলা থেকেও মুক্তি পাবেন তিনি। তিনি এখন স্বনামেই পরিচিত দেশে, বহির্বিশ্বে – হয়তো দেশের বাইরেও চলে আসতে পারবেন, চাইলেই, কিন্তু কারাগারে বন্দি অবস্থায় যে বৈমাত্রেয় সুলভ আচরণ তিনি পেয়েছেন সেলিব্রিটি নামধারী কিছু সহব্লগারদের কাছ থেকে সেটা ইতিহাসে লেখা থাকবে।
অভিনন্দন আসিফ মহিউদ্দীন। অভিনন্দন মুক্তচিন্তার বিজয়ে। আমরা পাশে আছি।
ধন্যবাদ বিপ্লবকেও সময়োপযোগী লেখাটির জন্য।
@অভি দা,
আসিফের কারাবন্দিত্ব শাহবাগ-সমীকরণের অনেক জটই খুলে দিয়েছে। এই তো দেখুন, এতোসব বিষয়-আশায় নিয়ে প্রতিদিন বাংলা ব্লগে শত শত পোস্ট লেখা হয়, এক মুক্তমনাবাদে শীর্ষ ব্লগগুলো কেউ-ই আসিফের মুক্তির বিষয়ে তেমন গা করেননি। এরা কবির মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে ব্যানার প্রকাশ করে, সহ ব্লগার দুর্ঘটনায় আহত হলে তাদের অশ্রু জলে ব্লগ বারান্দায় বন্যায় ভেসে যায়। কিন্তু আসিফের মুক্তির প্রশ্নে এবার তারা স্পিকটি নট! না অন লাইনে, না অফ লাইনে। ব্লগ ব্যানার তো দূরের কথা।
চার সিটি নির্বাচনে হেফাজতি “গদাম” এর পর এখন আবার চলছে গাজীপুর-নির্বাচনে মুখ রক্ষার করুণ চেষ্টা। ”জয় বাংলা” যেন এদের পৈত্রিক সম্পত্তি! এ নিয়ে রথি-মহারথিদের নিশিদিন একাকার যাচ্ছে। তাদের সময় কোথায় আসিফের মতো এক “নাস্তিক”কে নিয়ে মাথা ঘামানোর?
অথচ প্রথম দফায় আসিফ ডিবি পুলিশের কাছে আটক হলে, হেভি ওয়েট ব্লগ সাইটগুলো সর্বত্র সোচ্চার ছিল। পোস্টের পর পোস্ট, স্টিকি পোস্ট, মন্তব্য-বাদানুবাদ, মিছিলের পর মিছিল এবং মানববন্ধন-সমাবেশ — এসব কোনটাই বাদ যায় নি। আসিফ ছুরিকাঘাত হলে তারাই তাকে সে সময় চিকিৎসা করান। সব সময় তার পাশে থেকে তারা সমবেদনা জানান। কিন্তু এবার তা ঘটেনি কেন?
এর কারণ আর কিছুই নয়। তখন আর যাই হোক, “ইন্টারনেট দিয়া বলগ” লেখিয়েদের আড়কাঠি দিতে মোল্লাতন্ত্র তো সোচ্চার হয়নি। ক্ষমতায় চাপটিও সে সময় প্রবল হয়নি। তাই সে সময় যেসব ব্লগার আসিফের পাশেপাশে থেকেছেন, এখন বদলে যাওয়া প্রেক্ষাপটে তারাই রাতারাতি ভোল পাল্টে ফেলেছেন। নিঝুম মজুমদার, ওরফে গোলাম মারুফ নামক সাইকো ব্লগারের মেলাবন ট্রেনিং-এরও দফারফা হয়েছে।
কিন্তু দ্বিতীয় দফায় এবার আসিফের আটক হওয়ার প্রেক্ষাপটটি ভিন্ন। উল্লেখিত বৈরি পরিবেশে ধান্দাবাজি এবার প্রবলভাবে সক্রিয়। তাই এবার ”টপ রেঙ্কের” ব্লগ সাইট এবং সেলিব্রেটি ব্লগারদের বিপরীত মেরুতে অবস্থান। উপরন্তু আছে তৌহিদী জনতার “ধর্মানুভূতিতের আঘাতের” [ইয়া হয় কি বস্তু?] প্রশ্ন। আর কে না জানেন, বিষয়টি অতিব স্পর্শকাতর!
দিনের শেষে সুদ-আসলের অঙ্ক কষলে ফলাফল একদম হাতে হাতে। আহা রে, বাঙালি মুসলমানের মন! (W)
@বিপ্লব রহমান, আস্তিক লীগের একটা অঙ্গসংগঠন হলো ব্লগার লীগ, তারা তো আসিফকে সহ্য করতে পারবেই না। কিন্তু মুক্তি চাইবে না কেন? মাহমুদুরের মত একটা দাঙ্গাবাজ শুধুমাত্র সম্পাদক পরিচয়ের কারণে তার মুক্তির জন্য সাংবাদিক সমাজ বিবৃতি প্রদান করে। দেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের, প্রগতিশীল সম্পাদকরা তাকে মুক্তি দিতে সরকারকে অনুরোধ জানায়। কিন্তু ব্লগার আসিফ গ্রেফতার হলেও ব্লগার লীগরা মুক্তি দাবী করে তো নাই উল্টো দাবী করে ওর যেন মুক্তি না হয়। এখানেই ব্যবধানটা। আর এসবের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠিত হলো দলবাজ ব্লগার আর মুক্তিচিন্তার ব্লগার নামে দুই ধারা । আসিফ সেই মুক্তিচিন্তার অগ্রদূর্ত। ও হতে পারে আমাদের সবার অনুপ্রেরণা। ওর মুক্তির এই ক্ষণে ব্যক্তিগতভাবে কতটা আনন্দ লাগছে সেকথা না বলে শুধু ওকে জানাই শুভেচ্ছা। আবার জ্বলে উঠুক ওর কলম। আসিফ আবার নুতন নতুন লেখায় ভরে তুলুক ব্লগাঙ্গন।
আসিফের মুক্তির ক্ষণে বিপ্লব রহমান, চমৎকার এই লেখাটা লেখার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। তাসলিমা নাসরিনকে নিয়ে একটা লেখায় আপনার সম্পর্কে আমার একটা ব্যক্তিগত ভুল ধারনার সৃষ্টি হয়েছিল। আসিফকে নিয়ে লেখার পর সেটা দূর হয়ে গেলো। আপনাকে (F)
@সুষুপ্ত পাঠক,
আপনাকে ধন্যবাদ।
** টাইপো:
মেলাবন= মেলাদহ।
এছাড়া আরো কিছু ছোটখাট টাইপো রয়েছে বলে দুঃখিত।
@বিপ্লব রহমান,
অসময়ে দাউদ হায়দার, হুমায়ুন আযাদ, তাসলিমাদের পাশে অনেকেই থাকেনি, রাজিব, আসিফের পাশেও থাকেনি, বিপদে আমার পাশেও থাকবেনা। কিন্তু তারপরেও কিছু মানুষ, কেউ না কেউ থাকে। আর এদের মাঝে সবাই নাস্তিক বা অবাঙ্গালী মুসলমান হবে এমনটা ভাবতে পারিনা। লেখায় আপনি নিজেও স্বীকার করেছেন, এক সময় কিছু মানুষ পাশে ছিল। তাহলে-
কথাটা একাধিকবার বললেন। জানতে ইচ্ছে করে, অবাঙ্গালী মুসলমানের মনটা জানি কেমন হয়?
@আকাশ মালিক,
বক্তব্যটি একদম পরিস্কার। না বোঝার কোনও কারণ দেখি না। অনুগ্রহ করে আরেকবার দেখুন:
এরপরেও কোনও প্রশ্ন থাকলে নির্দ্বিধায় করতে পারেন। তবে যান্ত্রিক বস্তুবাদী/শাব্দিক/এঁড়ে তর্কে আমার আগ্রহ নেই, আগেই জানিয়ে রাখছি। 🙂
@বিপ্লব রহমান,
সো কল্ড মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের অনলাইন একটিভিস্টরা বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ব্যতীত কিছু নয়। এই সব আওয়ামী ব্লগারগুলা আসলেই ফ্যাসিবাদী। এরা নাকি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী,অথচ গতবছর বুয়েটের ছাত্র আন্দোলনের একজন সক্রিয় কর্মী ছিলাম-এই ‘অপরাধে’ মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বর্গাধারী ব্লগারগণ নিয়মিত আমার পোস্টে ‘মালুর ব্যাটা’, ‘হিন্দু জামাতি’, ‘ডান্ডির বাচ্চা’ গালি দেয়,ইনবক্স করে। self proclaimed মুক্তিযুদ্ধের গবেষক তার ওয়ালে বুয়েটের আন্দোলনরত মেয়েদের ছবি পোস্ট করে সেখানে অশ্লীলতা চর্চা করেন। এইসব সেলিব্রেটি ব্লগারগণ যে কত বড় হিপোক্রেট সেটার চাক্ষুষ প্রমাণ পেয়েছি। আর উনারা দাবি করেন উনারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসি,তাহলে মালাউন,ডান্ডি-এইসব সাম্প্রদায়িক,জামাতি গালি কেন ব্যবহার করেন? জামাত-শিবিরের সাথে তাহলে শুধুমাত্র খোসলগত পার্থক্য ছাড়া গুণগত পার্থক্য কোথায় এদের? আমি ভুক্তভোগী বলেই বলছি কথাগুলো।
@আমি কোন অভ্যাগত নই,
দুঃখিত। আপনার মন্তব্যটি খানিকটা দেরীতে চোখে পড়লো।
আপনার সব বক্তব্যের সঙ্গে একমত, শুধু বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী কথাটির অপব্যবহার ছাড়া। আমাদের কোনো মতেই প্রতিবন্ধীদের খাটো করে দেখা উচিত নয়। তবে উগ্র গোষ্ঠির চিন্তার প্রতিবন্ধকতা অবশ্যই আছে। আর উগ্রতার বিচারে ডিজিটাল রক্ষী বাহিনীর সঙ্গে জামাতি রগকাটা বাহিনী “সিরাজুস সালেহিন” এর তেমন কোনো পার্থক্য নেই।
আপনাকে ধন্যবাদ।
@বিপ্লব রহমান, ok. বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী শব্দটা প্রত্যাহার করলাম। 🙂
@আমি কোন অভ্যাগত নই,
আপনাকে ধন্যবাদ।
লেখার জবাব লেখা দিয়েই হতে হবে, কারাবন্দিত্ব কখনোই লেখনির জবাব হতে পারে না।
সহমত। (Y)
নিহত রাজিবকে “শহীদ” উল্লেখ করে খুনীদের কোনও ছাড় দেওয়া হবে না বলেও অঙ্গিকার করেছিলেন।
ঐ হত্যাকান্ডের মূল পরিকল্পনাকারী এখনো ধরা পরেনি !!!
@তারিক,
এবং শেষ পর্যন্ত হয়তো পুলিশ ফাইল এভাবেই একবাক্যে সমাপ্ত হবে:
😛
এত দিন পর
অপরাধ প্রমান না হলে কি ফালতু ঈমানদণ্ডের কারনে এ ধরনের ভোগান্তির ক্ষতিপূরণের কোনো ব্যাবস্থা আছে? আমাদের আইনে?
@মহন,
আপনাকে ধন্যবাদ।
একটি ফেবু বার্তা দেখুন:
(Y)
@মহন,
না নাই। তাই আগামীতে এই সরকারওয়ালাদের বয়কট করার সিদ্ধান্ত আমার ব্যক্তিগত। এরা মুখোশধারী। চেনা শয়তান থেকে সাবধান থাকা যায় কিন্তু মুখোশধারী শয়তান ভয়ঙ্কর! অন্ততঃ বিশ্বাস যোগ্য নয় কোন ভাবেই। যেখানে যুক্তিগ্রাহ্য বক্তব্যে কারো আঘাত লাগে সেখানে আর যাই হোক আইন আদালত অচল। কাজেই পিনাকী ভট্টাচার্য্যের মতোই বলতে হয়,
@কেশব অধিকারী,
আপনার সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলছি, স্থানীয় নির্বাচনের পর জাতীয় নির্বাচনেও বিএনপি-জামাত জোট হেফাজতকে লেজে খেলাতে চাইবে। তখন দান উল্টে যেতে পারে অনায়াসেই। অথবা এক-এগারো’র শক্তির উত্থানও অসম্ভব কিছু নয়। সব মিলিয়ে জাতীয় জীবনে হয়তো সংকট আরো ঘনিভূত হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা। 😕