বাঙলাদেশে প্রথম এসিড নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে ১৯৬৭ সালে। তখনও সমাজে এসিড সন্ত্রাস ততটা মারাত্বক হয়ে উঠে নি। এর পর আবার এসিড সন্ত্রাস আলোচায় আসে ১৯৯৬ সালের ১৪ সেপ্টেম্বরে। শামিমার নামক এক নারীর ওপর এসিড হামলা চালায় এক নরপশু। তখন তার বয়স মাত্র ১৪ বছর। শামিমা বলেন, ‘আমি এখন আর আয়না দেখি না। কিন্তু যখনই আমি আমার নাক অথবা কান স্পর্শ করি, তখনই মনের আয়নায় ওই দৃশ্য ভেসে ওঠে।’ এর পর থেকে বিভিন্ন সময় এসিড সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটে। এসিড সারভাইভাল ফাউন্ডেশনের হিসাবে, ১৯৯৯ সাল থেকে বাংলাদেশে ৩ হাজারেরও বেশি এসিড হামলার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ ছিল ২০০২ সাল। ওই বছর ৫০০ এসিড হামলার ঘটনা ঘটে। এরপর থেকেই হামলার ঘটনা কমতে থাকে। ২০১১ সালে ৯১টি ও ২০১২ সালে ৭১টি হামলা হয়েছে। ২০০২ সালে বাংলাদেশ সরকার এসিড সন্ত্রাস দমনে কঠোর আইন প্রণয়ন করে। অভিযুক্তদের দ্রুত বিচারের পাশাপাশি এসিডের ব্যবহার, মজুত ও বিক্রির ওপর কড়াকড়ি আরোপ করা হয়। এসিড নিক্ষেপকারীর জামিন নামঞ্জুর ও এক বছরের মধ্যে তাদের বিচার শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়, আগে যেখানে বছরের পর বছর লেগে যেত। অভিযোগ প্রমাণিত হলে কঠোর শাস্তি দেয়ায় বিধান করা হয়েছে। বাংলাদেশের দণ্ডবিধি অনুযায়ী এসিড ছোড়ার শাস্তি হিসেবে রয়েছে সর্বনিন্ম ৭-১২বছরের জেল বা সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। এই আইন বিদ্যমান থাকলেও অনেক সময় আইনের অপর্যাপ্ততা ও প্রয়োগ না করার কারনে এসিড নিক্ষেপকারী দিব্যি ঘুরে বেড়ায়। পরিসংখ্যানে দেখা যায়, শতকরা ৩০ভাগ এসিড নিক্ষেপকারী দোষী স্বাব্যস্ত হলেও উচ্চাদালতে তাদের আপিলের কারনে দণ্ড স্থগিত হয়ে যায়। বর্তমানে প্রায় ৩০০ টি মামলা নিন্ম আদালতে প্রক্রিয়াধীন আছে। পুলিশ সদস্যদের দুর্নীতি ও তথ্যের অপর্যাপ্ততার কারনে অধিকাংশ মামলা যথাযথ ভাবে তদন্ত করা সম্ভব হয় না। ফলে এসিড নিক্ষেপকারী ছাড় পেয়ে যায় ও বাদী উপযুক্ত বিচার পায় না।
নিচে ২০০০ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত প্রকাশিত এসিড সন্ত্রাসের প্রকাশিত ঘটনার তালিকা
পরিসংখ্যানে দেখা যায় বাংলাদেশের অধিকাংশ এসিড নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে থাকে প্রেমঘটিত কারনে। আবার অনেক সময় যৌতুকের কারনেও এসিড ছোড়া হয়। বাংলাদেশের আর্থ সামাজিক প্রেক্ষাপটে লক্ষণীয় একটি বিষয় হলো এসিড নিক্ষেপের ঘটনা সাধারণত নিম্নবিত্ত বা নিন্ম মধ্যবিত্ত পরিবারের মধ্যে বেশি হয়ে থাকে এবং নগরাঞ্চলে গ্রামাঞ্চলের চেয়ে এর প্রভাব খুব কম। সাধারণত ১৮ বছর বয়সের নারীরা এ সন্ত্রাসের শিকার হয় সবচেয়ে বেশি। এসিডের সারভাইভরস ফাউন্ডেশনের এক সমীক্ষায় দেখা যায় যে, বাংলাদেশে এসিডের শিকার জনগোষ্ঠির মধ্যে শতকরা ৪৭ ভাগ নারী, ২৬ভাগ পুরুষ ও ২৭ ভাগ শিশু। ইদানিং পারিবারিক দ্বন্দ্বের কারনে গৃহপালিত পশুও এসিডের শিকার হচ্ছে ।
আজকেও প্রথম আলোতে দেখলাম অ্যাসিড দিয়ে ছাত্রীর গায়ে নাম লিখেছে বখাটে!
কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায় এক যুবক চতুর্থ শ্রেণীর মাদ্রাসাছাত্রীকে ধরে নিয়ে অ্যাসিড দিয়ে তার বুকে নিজের নাম লিখে দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ৬ জুন এ ঘটনা ঘটে। এলাকাবাসী জানান, সাইফুল ইসলাম ওরফে শিপু (২২) নামের এক যুবক দু-তিন মাস ধরে চতুর্থ শ্রেণীর ওই ছাত্রীকে মাদ্রাসায় আসা-যাওয়ার পথে উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন। এতে মেয়েটির অসহায় বাবা বাধ্য হয়ে তার মাদ্রাসায় যাওয়া বন্ধ করে দেন।
ওই ছাত্রীর মা বলেন, ৬ জুন বিকেলে তাঁর মেয়ে বাড়ির পাশের খালে গোসল করতে গেলে সাইফুল তাকে ধরে পাশের জঙ্গলে নিয়ে যান। পরে তাঁর মেয়েকে ছোরার ভয় দেখিয়ে তার বুকে অ্যাসিড দিয়ে সাইফুল নিজের নাম লিখে দেন। এ সময় তাঁর মেয়ে অজ্ঞান হয়ে যায়। তিনি বলেন, স্থানীয় লোকজন তাঁর মেয়েকে জঙ্গলে পড়ে থাকতে দেখে খবর দিলে তাঁরা তাকে উদ্ধার করেন। সেদিনই সাইফুলের বাবা উপযুক্ত বিচারের আশ্বাস দিয়ে চিকিৎসার জন্য তাঁর মেয়েকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করান। কিন্তু তাঁর মেয়ে একটু সুস্থ হয়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে তিনি টালবাহানা শুরু করেন।
এখানে লক্ষণীয় বিষয় হল –সাইফুলের বাবা উপযুক্ত বিচারের আশ্বাস দিয়ে চিকিৎসার জন্য তাঁর মেয়েকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করান।
এটা একটা জখন্যতম হামলা। রাষ্ট্র তার জন্য কঠোর শাস্তির বিধান রেখেছে অথচ সাইফুলের বাবা উপযুক্ত বিচারের আশ্বাস দিয়েছেন!!! এর মাধ্যমে প্রমাণিত হয় এসিড সন্ত্রাস নিয়ে আমাদের সমাজের লোকরা ততটা সচেতন নয় এবং ক্ষমতার দাপটে অনেক বড় একটি অপরাধের লঘু শাস্তি হয় আমাদের সমাজে। হয়তো দেখা যাবে অর্থ নিয়ে ক্ষতিপূরণ দেওয়ারপর হামলাকারী বীরের মতনই সামাজে দাপটের সহিত হেঁটে বেড়াচ্ছে। আমাদের মিডিয়া ও সামাজিক সংস্থাগুলো এসিড সন্ত্রাসের প্রতিবাদে খুন একটা জোরালো ভূমিকা পালন করতে পারে নি। ফলে এসিড সন্ত্রাস আমাদের সমাজে ঠিক কী ভীত করে নিয়েছে। মিডিয়া, সামাজিক সচেতনার ও আইনের কঠোর প্রয়োগ-ই পারে সমাজ থেকে এসিড সন্ত্রাস দূর করতে।
তথ্য সূত্র- আমার হেলথ
পরিসংখ্যানটা ২০০৮ এ এসে থেমে গেছে। এমন তো নয় যে এখন এসিড নিক্ষেপের কেউ শিকার হন না। তাহলে আমাদের মিডিয়া নীরব কেন? আমাদের মিডিয়া নিয়ে এই এক মুস্কিল । তারা অল্প কিছু দিনের মধ্যেই ভুলে যায়/ যেতে চায়। ক্রমাগত তারা নতুন কাহিনীর দিকে ভেড়ে । মিডিয়ায় ক্রমাগত লেখা হতে থাকলে তার একটা বাড়তি চাপ থাকে সেটা না থাকাটাও একটা কারন । লোকে ভাবছে এসব কমে গেছে তাই শান্তিতে আছি আর এই ফাকে এই বর্বর কাজ গুলো বেড়ে যাচ্ছে।
@প্রদীপ্ত, আমাদের মিডিয়া এসিড নিয়ে কোন সচেতনতা বিষয়ক কোন কিছুই করে না। কারণ এসব তাদের ফায়দা নেই।
স্যালুট সুব্রত,তুমি অনেক কঠিন পথ পাড়ি দিয়েছো,তোমার কর্ম আমাদের সাহসী করেছে! অনেক দিন পর ব্লগে তোমার লেখা পড়ে খুশি হলাম।
—–
মুক্তচিন্তার জয় হোক॥
সুব্রত শুভকে মুক্ত জীবনে স্বাগতম। মুক্তমন বন্দীজীবনে কেমন ছিল লিখে জানাবেন।
বের হয়েই এসিড আক্রমণের শিকারদের নিয়ে লিখার জন্য ধন্যবাদ। নিজেই যখন লেখাটিকে জগা্খিচুরি বলেছেন তখন আমি এ নিয়ে আর কিছু বলতে পারছি না।চাচ্ছিও না।
তবে এসিড আক্রমণের শিকার নারীদের নিয়ে আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিল নাসরীন হক। নারীপক্ষ ও নারীপক্ষর’র নাসরীন হক। বাংলাদেশে এসিড সন্ত্রাস প্রতিরোধের বিভিন্ন প্রচেষ্টার সাথে নারীপক্ষ ও নাসরীন হকের নাম উচ্চারিত হওয়া উচিত বলে আমি এ প্রসঙ্গে মনে করিয়ে দিচ্ছি বা জানান দিচ্ছি।
যাহোক সুব্রত শুভের কলমের কালি অব্যাহত রাখুন।
@গীতা দাস, মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
আরে আরে সুব্রত শুভ যে
ফিরে এসেছেন দেখে খুব ভালো লাগছে। শুভেচ্ছা (C)
……….. ও আর এসিড সন্ত্রাস; দেশের মানুষ তার ভাবনা না পাল্টালে আইন ফাইন করে আর কদ্দুর? তবে এই যে কথা হচ্ছে, এই বা কম কিসে? আলোচনা কথাবার্তা যত হবে তত জন সচেতনতা বাড়বে। এইটুকু মন্দ নয়।
নিরাপদ থাকুন।
@কাজী রহমান, ধন্যবাদ 🙂
আপনার লেখা পড়ে ভালো লাগলো আর কলম যেন থেমে না যায় …… (Y)
শুভ,
আপনাকে এখানে দেখে ভালো লাগছে। কেমন আছেন?
@তামান্না ঝুমু, …………… ভাল আছি। আপনারা সবাই সাথে ছিলেন ভাল না থেকে পারি কী করে। 🙂
আদিল ভাই, এসিড এর সহজপ্রাপ্যতা কি এই সমস্যার মূলে রয়েছে? আমি ঠিক জানি না আমেরিকা-ইউরোপে এসিড কেনা কতটা সহজ কারন কখনো কিনতে যাই নি। তবে এখানে বাড়ীঘর, বাথরুম, পাইপ পরিষ্কার করার জন্যে যেরকম কড়া কেমিক্যাল অনায়াসে কিনতে পাওয়া যায় এতে মনে হয় না যে এসিড কেনা কঠিন কিছু হবে। এসিডের সহজলভ্যতা নিয়ে একটা গুগল করতে চেয়েছিলাম কিন্তু সম্প্রতি NSA এর মনিটরিং এর যে ব্যাপকতা প্রকাশ পেয়েছে এতে গুগল করতে সাহস হলো না। কি জানি, এসিডের খোজ করতে গেলে আবার সন্দেহভাজনের লিস্টে চলে যাই কিনা?
তবে পয়েন্ট হলো এসিডের সহজলভ্যতা সম্ভবত বেশী দোষ নেই। এমনকি ইসলামী সমাজকে এর জন্যে দায়ী করা ঠিক হবে না। অদ্ভুতভাবে এই এসিড সন্ত্রাস এই দক্ষিন এশিয়ার এক বিশেষ ট্রেডমার্ক। উইকিমতে These attacks are most common in Cambodia, Afghanistan, India, Bangladesh, Pakistan and other nearby countries (https://en.wikipedia.org/wiki/Acid_throwing#Regulation_of_acid_sales)।
এই অন্চলেই কেনো এই বিকৃত অপরাধটি এতো প্রচলিতে এব্যাপারে বিস্তারিত সামাজিক-মনস্তাত্বিক গবেষণার দরকার রয়েছে।
@সফিক,
অবশ্যই না। শুধু এসিডের সহজলভ্যতা একমাত্র বা মূল কারন না, যদিও কন্ট্রিবিউটিং ফ্যাকটর বলতেই হবে। এসিড আদৌ হাতে না পেলে কিভাবে কুকর্মটি করবে? অবশ্য সামান্য ঘিলু মাথায় থাকলেই আরো সহজ বিকল্প আছে যা এখানে বলছি না। ইসলামী সমাজেরও ব্যাপার নয়, যদিও ধর্ম শাসিত দেশগুলিতে নারী নির্যাতন জাতীয় অপরাধের সাজা অনেক ক্ষেত্রেই লঘু।
ইন্টারেষ্টিং পার্ট অবশ্যই এখানে যে এই ভারতীয় উপমহাদেশেই এই অতি নারকীয় বর্বর ধরনের কাজটি মনে হয় ঘটে। এতে সাধারন নারী নির্যাতনেরও বেশ কয়েক ডিগ্রী ওপরে চিন্তা করার আছে। নারী স্বাধীনতা ফতা যাইই থাক, আমেরিকা ইউরোপেও নারী নির্যাতন একেবারে কমে ঘটে না। রাগের মাথায় মারধোর, হত্যা কিংবা ঠান্ডা মাথায় ক্যালকুলেটিভ হত্যা তো আকছারই ঘটে। তবে সেসব দেশে এসিড মেরে এভাবে কুতসিতভাবে প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার ঘটনা বিরলই হবে।
কারন মনে হয় কয়কটি। অবশ্যই আমাদের অঞ্চলে নারীদের ধরা হয় নীচ্য স্তরের প্রানী বলে। যে নারীয় কোন সে থাকতে নেই সে প্রেমের প্রস্তাবে সাড়া দেবে না এটা কি সহ্য করা যায় নাকি? তাকে মূল্য দিতে হবে না? বিদেশে প্রেমের প্রস্তাবে সাড়া না দেওয়ায় সাধারনত ষ্টকিং এর স্বীকার বা উড়ো ফোন চিঠি এ জাতীয় হ্যারসমেন্টে মহিলারা পড়ে। এসিড মেরে কোন ব্যার্থ প্রেমিক তার নিজের দাবীকৃত প্রানেশ্বরীকে এমন ভয়াবহ শাস্তি দেবার কথা চিন্তা করে না।
এর সাথে মনে হয় কাজ করে আমাদের অঞ্চলে শারীরিক শাস্তির ব্যাপক জনপ্রিয়তার পয়েন্ট। সাথে তোকে কিছু করতে না পারলে কি তোর পেপে গাছ তো ছিড়েছি মানসিকতাও মনে হয় কাজ করে। আর কাউকে পিটিয়ে তার যন্ত্রনাকাতর চেহারা দেখা বা আর্ত চীতকার শোনা আমার মনে হয় আমাদের সমাজে যে কোন কারনেই হোক এক বড় সংখ্যক লোকে পছন্দ করে।
এটা ঠিক এসিড নির্যাতনের কেস নয়, তবে আজ প্রথম আলোয় পড়লাম কলেজ ছাত্রী মেয়েকে এক বড় লোকের বখাটে ছেলে বিয়ে করে বাড়ি আনার পর বাড়িতে ঢোকার আগে সেই মেয়েকে শ্বশুর, শ্বাশুড়ী, ননন, ননদ, ননদের জামাই…এ জাতীয় আরো বেস কিছু আত্মীয় স্বজন মিলে স্রেফ পিটিয়ে বহু লোকের সামনে মেরে ফেলেছে। ঘটনাটি ঢাকা শহরের। আলোচিত চরিত্ররা ধনী এবং প্রভাবশালী বলে কেউ কিছু বলেনি। ঘটনার বর্ননা পড়ার সময় মনে হচ্ছিল সোমালিয়া ইথিওঁপিয়ার মত দেশেও মনে হয় এমন বর্বরতা প্রকাশ্যে হয় না।
মনস্ত্ববিদরা অবশ্যই ভাল বলতে পারবেন।
এদেশে সামাজিক ন্যায় বিচারের বিশাল ঘাটতি আছে। সমাজের ওপর তলায় জঘন্য সব অপরাধের বিচার না হওয়ার ঘটনাগুলো আমাদের যেমন বিস্মিত করে তেমনি সমাজ অভ্যন্তরেও একই ধরনের ঘটনা নিয়মিত ঘটে যা হয়ত সবসময় প্রচারের আলোয় আসতে পারে না। এসব অপরাধীরা আইনগতভাবে যেমন কোনো শাস্তি পায় না তেমনি সামাজিকভাবেও কোনো ধরনের ক্ষতির মুখোমুখি হয় না। তাই এদেশের কেন্দ্র থেকে প্রান্ত পর্যন্ত অপরাধীরা অবাধে ঘোরা ফেরা করতে পারে।
এ বিষয়টি অত্যন্ত ঘনিষ্ঠভাবে সামাজিক মূল্যবোধের সঙ্গে জড়িত। নাগরিক সমাজে যতটা গুরুত্বের সাথে বিষটিকে দেখা হয়, সমাজের প্রান্তিক স্তরে বিষয়টিকে অতটা গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা হয় না।
প্রসঙ্গত ঝালকাঠীর লিমনের কথা উল্লেখ করব। নাগরিক সমাজে যে প্রতিরোধ প্রতিবাদ হচ্ছে সে তুলনায় স্থানীয়ভাবে তেমন কিছুই হচ্ছে না।
@আলসে কুড়ে, সহমত
এইমাত্র প্রথম আলোয় দেখিঃ
পাকিস্তানে অভিনেত্রীর গায়ে অ্যাসিড
@আদিল মাহমুদ, :-O 😛 :-[
এই লেখাটি অতি সাম্প্রতিক?! নাকি আর্কাইভ থেকে প্রকাশ?
@সুষুপ্ত পাঠক, এসিড নিক্ষেপ এর ঘটনা প্রথম আলোতে প্রকাশের পর নেট ঘেটে ঘুটে কিছু তথ্য সংগ্রহ করি। তা মিলিয়ে জগাখিচুরি প্রকাশ এই ব্লগটি।……
@সুব্রত শুভ, আপনি সরাসরি উত্তর দিয়েছেন, আমি আমার উত্তর পেয়ে গেছি! আশা করি বুঝতে পেরেছেন আমার উচ্ছ্বাসের কারণটা কি? আমি ভেবেছিলাম এটা আপনার পুরোনো একটা লেখা মুক্তমনা ফের প্রকাশ করেছে। এখন বুঝলাম এটা আপনার টাটকা একটা লেখা! :rotfl:
@সুষুপ্ত পাঠক, (F)
অনেক ধন্যবাদ ভাই
তথ্যটি এসিড সন্ত্রাস গবেষণা সাইটেই পেলাম।
@সুব্রত শুভ,
সেটা ঠিকই আছে, মানে ‘৬৭ সালের রেফারেন্স। আমিও আইনের বিবর্তন একটু ঘাটাঘাটি করতে গিয়ে সেটা দেখেছি। তবে গণসচেতনার শীর্ষে এই বিষয়টি ‘৯৬ সালের আগেও এসেছিল সেটাই বলতে চাইছি। ‘৯৬ সাল তো এই মোটে সেদিনের কথা। আমার পরিষ্কার মনে আছে ফজলে লোহানীর সেই অনুষ্ঠানের পর সে সময় কি আলোড়ন এই সামাজিক সমস্যাটি তুলেছিল। আমি নিজেও সেই অনুষ্ঠানটি দেখার মত সৌভাগ্যবান যদিও বয়সের হিশেবে আমি তখন পিচ্চি, ছোটদের দেখার বিধি নিষেধ অমান্য করেই দেখেছিলাম। ‘৬৭ সালে প্রথম রিপোর্ট হলেও মনে হয় না এর তেমন কোন ইম্প্যাক্ট জনমনে পড়েছিল বলে।
@আদিল মাহমুদ, এমন আইনেও কাজ হচ্ছে না তাহলে বোঝাই যাচ্ছে আমার পুলিশ বিভাগকে পবিত্র না করলে কোন আইনেই আসলে তেমন কাজ হয় না………….আপনি যেটা বলছেন তা সত্যি; এই দেশে ৫০ টাকা দিলেই এসিড পাওয়া যায়।
@সুব্রত শুভ,
পুলিশে একা কি করবে? আমাদের ব্যাবস্থার অনেক কিছু ওতপ্রোতভাবে এর সাথে জড়িত……যেমন লাইসেন্স ছাড়া এসিড বিক্রি কেন করা যাবে – মূল কারণ আমরা কাগুজে আইন পত্রের গুরুত্ব দেওয়ার শিক্ষা পাই না…… এ রকম বহু কিছু চিন্তা করতে হবে। একা পুলিশকে দুষে লাভ নাই।
@সুব্রত শুভ,
শুধু কঠোর আইন প্রয়োগই নয়, অ্যাসিডের সহজলভ্যতা বন্ধ করাটা খুবই জরুরি।
আবার আপনাকে মুক্তমনায় দেখে খুব ভালো লাগছে। আরো লিখুন।
জয় হোক মুক্তচিন্তা, শুভ বুদ্ধির। হ্যাপি ব্লগিং।। (Y)
বহুদিন পর শুভর লেখা দেখে ভাল লাগল।
– বোল্ড করা অংশটুকু তথ্য হিসেবে খুব সঠিক নয়। এসিড সন্ত্রাস আমাদের মিডিয়ায় এর আগেও ব্যাপক আলোড়ন তুলেছে। ২০০২ সালের আগেই কঠোর আইন করা হয়েছে (সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড)।
খুব সম্ভব ‘৮০/৮১ সালে মরহুম ফজলে লোহানি সাহেব সে আমলে বিপুল জনপ্রিয় “যদি কিছু মনে না করেন” অনুষ্ঠানে এই সমস্যার ভয়াবহতা খুবই সফল ভাবে তার নিজস্ব ষ্টাইলে তুলে ধরেন যা সে সময় প্রবল আলোড়ন তুলে। যতটা মনে পড়ে এরই প্রতিক্রিয়ায় ততকালীন সরকার সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ডের বিধান আনে। এতে বেস কিছুটা কাজও হয়েছিল বলে জানা যায়।
দেশে এসিড শুনেছি অত্যন্ত সহজলভ্য। মাত্র ৪০ টাকাতেই আধা লিটার খানেক পাওয়া যায় যা একজন মানুষের জীবন চিরতরে শেষ করে দিতে যথেষ্ট। লাইসেন্স ফাইসেন্স এসবই আমাদের সংস্কৃতিতে তামাশার মত।
আইনমন্ত্রী আজই প্রথম আলোতে দেখলাম বলছেন যে দেশের ৮০% নারী নির্যাতন মামলা আসলে ভূয়া। হলেও হতে পারে, একদম অসম্ভব কিছু নয়। আমাদের দেশে ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে জানি যে অপরকে ফাঁসানোর লক্ষ্যে যে হারে মিথ্যা মামলা করা হয় তা সম্ভবত বিশ্বের অন্যতম সর্বোচ্চ হার হতে পারে। আইনমন্ত্রীর দেওয়া উপাত্ত সত্য হলে খুবই উদ্বেগজনক ব্যাপার। থানা পুলিশ আদালত আগে থেকেই মামলা মিথ্যা হবার সম্ভাবনা বেশী মাথায় রাখলে তদন্ত/রায় সবই প্রভাবান্বিত হতে পারে। নারী নির্যাতন কথাটিই গুরুত্ব হারাবে।
@আদিল মাহমুদ, আমার হেলথ সাইটটি এই তথ্যগুলো পেলাম।