রাজনৈতিক দল নিরপেক্ষ এই আন্দোলনে পক্ষে বিপক্ষে ট্যাগ দিবার প্রতিযোগিতা অব্যহত আছে। দেশের বড় দুটি দলই এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে তাদের রাজনৈতিক ফায়দা লোটার জন্য অস্থির হয়ে আছে। খালি চোখে দেখলে মনে হবে আওয়ামীলীগ ই মনে হয় এর ফল ভোগ করবে। আসলে তা নয়। দুইটি দলই এই নিয়ে তাদের স্বার্থ বাজ পরিকল্পনা চালিয়ে যাচ্ছে।
আন্দোলন যতদিন চলবে,মানুষের দৃষ্টি এই দিকেই থাকবে। এতে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামীলীগের লাভ অনেক। মিডিয়া থেকে জনগন এই ইস্যু নিয়ে থাকার কারনে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্য বৃদ্ধি,তেল,বিদ্যুত,গ্যাস,গাড়ি ভাড়া,বাসা ভাড়া এই বিষয় গুলাতে আন্দোলন নেই বললেই চলে। ভোট ব্যাংকে এই ছোট আন্দোলন গুলোর প্রভাব কম নয়। তাই সরকার কোন ভাবেই চায় না, তার সরকারের বিরুদ্ধে মানুষ এই নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস,বাজার নিয়ে আন্দোলনে নামুক। পদ্মাসেতু ইস্যুটা সরকারকে বেকায়দায় ফেলেছিল,হলমার্ক কেলেঙ্কারি,ডেসটিনি দুর্নীতি,শেয়ার বাজারের খবর এখন আন্দোলনে চাপা পড়ে আছে।
আন্দোলনের প্রভাব ব্যপারে এখন সন্দেহ করার কোন সুযোগ নাই। দেশে ক্রিকেটের একটা বানিজ্যিক আসর এবার এই আন্দোলনের কারনে জনপ্রিয় হয়নি। প্রায় সব দিনই গ্যালারি ফাঁকা ছিল। যারা গ্যালারিতে ছিল তাদের মাঝেও এই আন্দোলনের আভাস পাওয়া যা। গত খেলায় দেখলাম ভিআইপি গ্যালারি থেকে একজন মাঠে নেমে গেছে, তার হাতে ধরা
“hang war criminals”
এই ধরনের পোস্টার । তাই মানুষের মুল আকাঙ্খার জায়গা এখন রাজাকারের ফাঁসি। এই ইস্যুটির চেয়ে কোন ইস্যু মানুষকে আকর্ষণ করতে পারছেনা। এটা সরকারের পক্ষে অবশ্যই যাচ্ছে।
এবং যাচ্ছে যে তার আর একটা বড় প্রমাণ সরকার প্রথম থেকেই আন্দোলনকে সমর্থন দিয়ে আসছে। আন্দোলনের নিরাপত্তার দিকেও তার সজাগ দৃষ্টি আছে। এখানে মজার একটা বিষয় আছে, সরকার এই আন্দোলনকে সহযোগিতা করার বড় কারন হলো লাখ জনতাকে ভয় পাওয়া। প্রজন্ম চত্তরের প্রতিটা কর্মসূচি সারা দেশে এক সাথে পালিত হচ্ছে। একটা স্বাধীন রাষ্ট্রের সরকার থাকার পরেও এই ভাবে যুবক,তরুনরা এটা করতে পারবে ব্যপারটা বিষ্ময়কর নয় মহা বিষ্ময়কর।এই দাবানল ছড়িয়ে পড়লে তারাও বিপদে পড়বে।সরকারী বুঝতে পেরেছে, বাধা পেলে তার রুপ যে কোন মূহুর্তে পরিবর্তিত হতে পারে।
আন্তর্জাতিক ভাবে একটা চাপ অবশ্যই সরকারের উপর আছে। গাঁয়ে আগুন লাগলে দেবালয় এড়ায় না। সব কিছুই পড়ু ছাড়খার করে দিতে পারে। নিজেদের বাঁচানোর জন্যই আওয়ামীলীগের এই সহযোগিতা করার ছাড়া অন্য কোন পথ খোলা ছিলনা। সহজ ভাষায় আওয়ামীলীগ বাধ্য হয়েছে সহযোগিতা করতে।যে কোন দেশের বিপ্লব,বা জাগরণকে ই পাশের রাষ্ট্র ভয় পায়। এই জাগরণ যদি তার দেশে ছড়িয়ে পরে তখন তাকে সামাল দেয়ার রিক্স কোন ভাবেই নিতে চায়না। একাত্তুরে আমাদের মুক্তি যুদ্ধ দ্রুত নিষ্পত্তি করা ভারতের জন্য এই জন্য অপরিহার্য ছিল। আর তরুণদের আন্দোলন তো কোন একটা আদর্শের ভিত্তিতে হয় নাই। হয়েছে জনমনের দাবীর প্রেক্ষিতে। অন্তত আমেরিকার মতো দেশ যারা একাত্তুরে আমাদের রাষ্ট্রের বিরোধিতা করেছে, এখনো যুদ্ধপরাধীদের কৌশলে পক্ষ নিচ্ছে। তাদের একটা বড় চাপ থাকবে এটাই স্বাভাবিক।
এই আন্দোলনে আর বড় একটা সুবিধা আওয়ামীলীগ পাচ্ছে। সেটা হলো বিরোধী দল এখন আন্দোলন করতে পারছেনা। যত দিন প্রজন্ম চত্তর জ্বলতে থাকবে বিএনপি মাঠে নামার সাহস করবে না। কারন এই চত্তরে তারও লোকজন রয়েছে তাই কৌশলে মোকাবিলা করার চেষ্টা করছে। বিএনপিকে কোন ঠাসা করার এমন সুযোগ আওয়ামীলীগ কেন ছাড়বে?
দাবার শেষ চালের আগে কিছু প্রস্তুতি পর্ব থাকে। এসব নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছে বিএনপি। তারাও জানে তাদের গন্তব্য কোথায় হবে। প্রতিদিনই কৌশলে সমর্থন এবং বিরোধিতা দুটাই করতে চেষ্টা করেছে। দুই নৌকায় পা দেয়ার বিপদ তারা হয়তো টের পাবে। কিন্তু যতদিন বিপদ না হয় ততদিনে কিছু আদায় করার লোভও সামলাতে পারছে না। তাদের এক নেতা পজেটিভ ভাবে বলেন জামাতের মতো কিছু দল জোট থেকে চলে গেলে কোন ক্ষতি হবে না। আবার রাতেই সুর পরিবর্তন করে বলেন, জোট আরো শক্ত হচ্ছে। প্রতিদিন এই বিবৃত্তি দেখে আমাদের এক বড় ভাই বলছে। বিএনপি জোট অটুট আছে যত জোড়ে যতবার বলবে। বুঝতে হবে জোটের ফাটল তব বড় হচ্ছে। কথাটা আমার মনে ধরেছে।
বিএনপির যে প্রধান আন্দোলনের ইস্যু তা হচ্ছে তত্ত্বাবধায়কের অধীনে নির্বাচন করা। বিষয়টা আমার কাছে খুব খেলো মনে হয়। এটা যে কোন মুহূর্তে বিএনপি এই ইস্যু ত্যাগ করতে পারে এবং লীগ এই ইস্যুতে বিএনপিকে সমর্থন দিতে পারে। এটা তাদের রাজনীতিতে বড় কোন সমস্যা বলে মনে হয় না। কিন্তু এই সুযোগে অনেক দিন বিপদে থাকা বিএনপি জামাতকে এক হাত দেখার সুযোগ পেয়েছে।
যদি ঘটনা এমন হয়, প্রতিদিন একবার জামাতের কর্মসূচিতে বিএনপি সমর্থন দেবার জন্য দশ কোটি টাক দেয়া হবে। আমি অবাক হবো না। বিএনপির সম্প্রতি কিছু কর্মসূচিতে দেখা যাচ্ছে জামাতকে নিয়ে আন্দোলনে নামার ঝুঁকি নিচ্ছে না। কিসের ঝুঁকি? প্রজন্ম চত্তর তাদের উপর হামলা চালাবে এই ঝুঁকি? অবশ্যই না। ঝুঁকিটা নিজেদের ভেতরে। এখন জামাতকে নিয়ে মাঠে নামলে নিজেদের মধ্যে বিভেদটা স্পষ্ট হয়ে উঠতে পারে। বিএনপি জেনে বুঝে এই কাজ করতে পারেনা। কিন্তু তবু কেন জুটের ব্যাপারে কথা বলছে। তাদের তো কেউ জানতে চাইছে না যে তারা জোট রাখবে কি রাখবে না। এই বলার পেছনে বড় টাকার অংক কাজ করে বলে আমার বিশ্বাস।
জামাত এতদিন জোট ছেড়ে দিয়ে বিএনপিকে বিপদে ফেলে দেবার যে হুমকি দিয়ে আসছিল। বিএনপির সকল কর্মসূচিতে জামাত তাদের ব্যানার নিয়ে উপস্থিতি বুঝাতে চেষ্টা করেছে। এবং বিএনপির কর্মসূচিতে সক্রিয় লাঠি হাতে উপস্থিত থেকে নিজেদের অবস্থানকে অনেক মজবুত করে ফেলেছে। বিএনপি তাদের নিজেদের টাকা, এবং জনবল ছাড়া নানা কর্মসূচি সম্পন্ন করে জামাতের উপর নির্ভর করেছে। এক সময় তার তাকিয়ে দেখল জামাত ছাড়া তাদের এখন চলা সম্ভব নয়। অন্যের কাধে ভড় দিয়ে এবার নিজেই হাঁটার পদ্ধতি ভুলে গেল। কিন্তু এইবার সুযোগ এসেছে ,তাই জামাতকে সুধে আসলে একটু ঝাঁকিয়ে নিতে চায়।
জামাত নিষিদ্ধ হলে বিএনপির লাভ ছাড়া ক্ষতি কিছু হবেনা। এই ভোট তো বিএনপিই পাবে।
বিবিসি সংলাপে, জয়নাল আবেদীন ফারুককে প্রশ্ন করা হয়েছিল। জামাত নিষিদ্ধ হলে তাদের কি দলে নেবেন? ফারুক উত্তরে বলেছিলেন, তারা তো আওয়ামী লীগেও যেতে পারে।
আমার ধারনা বিএনপি মোটামুটি ভাবে প্রস্তুতি নিয়েই নিয়েছে যে জামাত নিষিদ্ধ হবে। তাই ভেতরে ভেতরে বিএনপি কিছুটা খুশিই বলতে গেলে। কিন্তু তবু জামাতকে বাতিল করেছে না কেন? তার প্রধান কারন আওয়ামীলীগের সরকার যতদিন ক্ষমতায় আছে ততদিন আন্দোলন করার এত সহজ একটা হাতিয়ার কি করে ফেলে দেয়। একটু না হয় ময়লা হাতে লেগেছে তাতে কি? আর আওয়ামীলীগের সাথে আন্দোলন করলে ধর্ম একটা বড় হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে চায়। জামাতকে সাথে রাখলে হাতিয়ারে সাথে একটা ভাল গ্লাভসও পাওয়া গেল। বিএনপির নেতারা দাঁড়ি টুপি রাখার ঝামেলায় জড়াল না, মসজিদে মসজিদে দৌড়াতে হল না। এই কাজটা তো জামাতই করবে। তাদের সমর্থন এই জন্য বিএনপির কিছুটা দরকার। কিন্তু এই সব কাজ সিদ্ধি হয়ে গেলে জামাতকে ও তাদের দরকার নাই।
বিএনপি একটা নির্বাচনমুখী দল। তারা নির্বাচনে যাবে এটা বাস্তব। তাই তারা হিসাব করে ভোটের। ৯১এর পর থেকে কোন সরকারই দুইবার ক্ষমতায় আসতে পারেনা। একটা দল ক্ষমতায় এসে এতই দূর্নীতি শুরু করে যে মানুষ বাধ্য হয় তাদের বয়কট করতে। কিন্তু সরকার দলকে বয়কট করে বিকল্প কিছু পায়না। আবার সেই বিরোধী দল ক্ষমতায় আসে। এই সমীকরণে পরের নির্বাচনে বিএনপি ক্ষমতায় আসবে। মানুষ যেহেতু বাধ্য তাদের ভোট দিতে তাই তারা দুই দিকেই রক্ষা করে বক্তৃতা দিয়ে যাচ্ছে।
বিএনপি ভাল করেই জানে আন্তর্জাতিক চাপ আছে জামাতের মতো উগ্র ধর্মীয় দলের সাথে সম্পর্ক রাখার ক্ষেত্রে। বিশেষ করে পাশের দেশ ভারতের একটা চাপ থাকাই স্বাভাবিক। সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের সফর,এবং ভারতের পররাষ্টমন্ত্রী খালেদার বাস ভবনে সৌজন্য সাক্ষাত করা ইত্যাদি থেকে এটা অনুমান করা যায়। কিছু একটা চাপ তার উপর আছে। মাঠে যখন জামাত বিরোধী আন্দোলন তখন বিএনপি যে চাপে আছে তা সহজেই বুঝা যায়।
জামাত নিষিদ্ধ করার ব্যপারে আওয়ামীলীগের যেমন চাপ নেই। তেমনই জামাত নিষিদ্ধ করার ব্যপারে বিএনপিও সরাসরি কিছু বলছে না। ২২ ফ্রেব্রুয়ারির জামাত ছদ্দবেশে দেশে যে তাণ্ডব করেছে। জাতীয় পতাকা ছিড়ে,আগুন দিয়ে পুড়িয়েছে। শহীদ মিনার ভেঙ্গেছে। এর পরে কি জামাত নিষিদ্ধ করতে আরো কোন অযুহাতে দরকার পরে? আমরা চাই ভূত যেন সর্ষের ভেতরে না থাকে।
আমরা রাজনীতি বুঝিনা,দেশ প্রেম বুঝি। ক্ষমতা বুঝি না শান্তি বুঝি। আমাদের মতো সাধারণ মানুষের জন্য এবার আপনারা ক্ষমতার রাজনীতি বন্ধ করেন। এই দেশে একাত্তরের ঘাতক দালালদের দেখতে চাইনা। এটা কোন দলের দাবী নয় জনগনের প্রাণের দাবী। অবিলম্বে জামাত শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করেন।
রাজাকারের ফাঁসি চাই।
জামাত শিবির নিষিদ্ধ করতে হবে।
জয় বাংলা।
খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে এত কিছু বলতে পারেন – কিন্ত দেশের গনতন্ত্রের জন্য কি কিছু বলতে পারেন না, ১৮০/১৯০ জন মানুষ মরেছে প্রতিবাদ কি করেছেন, বিশ্বজিৎ, হলমার্ক শেয়ার বাজার নিয়ে কি কিছু বলেছেন, তত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে কিছু বলুন !!!!!!!!! বিএনপির ১৫৪ জন নেতাকে জেলে নেয়া হয়েছে !!!!! ৮ দিনের রিমান্ডে আছেন তারা
” বিএনপির যে প্রধান আন্দোলনের ইস্যু তা হচ্ছে তত্ত্বাবধায়কের অধীনে নির্বাচন করা। বিষয়টা আমার কাছে খুব খেলো মনে হয়। এটা যে কোন মুহূর্তে বিএনপি এই ইস্যু ত্যাগ করতে পারে এবং লীগ এই ইস্যুতে বিএনপিকে সমর্থন দিতে পারে। এটা তাদের রাজনীতিতে বড় কোন সমস্যা বলে মনে হয় না।”
এটাকে আপনার খেলো মনে করার কারন কি? বিএনপি’র মূল লক্ষ্য ক্ষমতায় যাওয়া, আওয়ামী লীগের মূল লক্ষ্য ক্ষমতায় থাকা। এর একমাত্র কারন ক্ষমতায় আসা মানেই বছরে লক্ষ কোটি টাকার উপার্জন। ক্ষমতার বাইরে থাকা মানে ভিটে থেকে উচ্ছেদ, রাস্তায় লাঠির বাড়ি, জেল-জামিন ইত্যাদি। ১৯৯০ থেকে এদেশ সকল বড়ো বড়ো রাজনোৈতিক সংকটের মূলেই ছিলো নির্বাচন কেমন করে হবে অর্থাৎ তত্বাবধায়ক সরকার। ২০০৬-৭ এই দু
এই ইস্যু যেকোনো সময়ে বিএনপি ত্যাগ করবে কিংবা আওয়ামী লীগ ছাড় দেবে, এই ধরনের চিন্তার সূত্রটি কি?
@সফিক,
তত্বাবধায়ক দিলেই যে খালেদা জিয়া ক্ষমতায় আসবে। আর না দিলে হাসিনা ক্ষমতায় আসবে এই সমীকরণের সূত্র কি?
আমার মনে হয় বিএনপির একটা ইস্যু দরকার। এইটা তাদের একটা ইস্যু। আদালতের রায়টা ও নিশ্চয় মনে আছে? চাইলে আরো দুই বার তত্ত্বাবধায়কের অধীনে নির্বাচন করতে পারে। তো লীগের হাতে এখন দুইটা অপশানই খোলা আছে?
এবং বিএনপি নির্বাচনে যাবে এটা আমার বিশ্বাস।
আর এই এই লেখায় এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবেও আসে নাই। তাই এই নিয়ে এই ব্লগে দীর্ঘ আলোচনার কিছু দেখি না।
@ডাইনোসর,বাংলাদেশের রাজনীতির মূল লক্ষ ক্ষমতায় যাওয়া, ক্ষমতায় থাকা এটা বার বার বলেছি। এটা আপনিও জানেন, আজকে আপনার দল ক্ষমতার বাইরে থাকলে তত্বাবদঃায়ক সরকারই হতো আপনার একমাত্র পলিটিক্যাল ধ্যানজ্ঞান কারন বাংলাদেশে এই পর্যন্ত তত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নিয়মতান্ত্রিক ক্ষমতার রদবদল হয় নি। আপনি শাহবাগ নিয়ে নানা রকম রাজনীতির কথা বলবেন, রকমারি বিভিন্ন জিনিষ নিয়ে স্পেকুলেট করবেন আবার তত্বাবধায়ক সরকার প্রসংগ নিজে এনে সেটাকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেবেন, এটা তো ঠিক শোনাচ্ছে না।
@সফিক, সহমত।তত্বাবধায়ক সরকার অবশ্যই দরকার আছে।পরে কি হবে জানি না, তবে বর্তমানে বাংলাদেশে দলীয় সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন আশা করা, আর গাধার শিং গজানোর আশায় থাকা একই কথা।
@সফিক,
মেনে নিলাম তত্বাবধায়ক সরকার খুবই গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু।
এবার শাহবাগ আন্দোলন নিয়ে আপনার মতামত জানতে পারি কি?
@ডাইনোসর,
আমার চাওয়া, কাদের মোল্লা, নিজামী, সাকা চৌধুরী, গোলাম আজমের ফাসি। জামাতে ইসলামী নিষিদ্ধ করা।
@সফিক,
এইটাই তো আমিও চাই।কাজেই এইখানে আমাদের মতের বেশ ভাল মিল আছে কি বলেন?
তবে সব বিষয়েই আমরা একমত নাও হতে পারি, তবে সেটা নিয়ে কটাক্ষ করা মনে হয় ঠিক না।
@অর্ফিউস,
একমত না হওয়াটাই স্বাভাবিক। এই টুকু স্বাধীনতা মুক্ত মনাদের অবশ্যই আছে।
@সফিক,
আপাতত এই ইস্যুতে একমত থাকি। তর্ক ঝগড়া করার সময় আমরা অনেক পাব।
@ডাইনোসর,
@ডাইনোসর, (Y)
@সফিক,
তক্ত্বাবধয়ক সরকার ইস্যু খুব গুরুত্বপূর্ন হলেও এটা কেন্দ্র করে গনজোয়ার সৃষ্টিকারি আন্দোলন গড়ার মত সাংগঠনিক ক্ষমতা বিএনপির আছে বলে মনে হয় না। এ মুহুর্তে তো নয়ই, শাহবাগ আন্দোলনের আগেও ছিল না। পাবলিকে সাধারন ভাবে নানান কারনে লীগ সরকারের ওপর যথারীতি বিরক্ত ছিল, কিন্তু হরতাল ঘেরাও ইত্যাদী জাতীয় কর্মসূচির প্রতিও তেমন সমর্থন ছিল মনে হয়নি।
তক্ত্বাবধয়ক সরকার ইস্যু নিয়েও বিএনপির বাইরে সাধারনের মাঝে তেমন উত্তাপ আলোড়ন মনে হয়নি হয়েছে বলে। এর মূল কারন মনে হয় বিএনপির মিডিয়া সাপোর্ট ও বুদ্ধিজীবি সাপোর্ট এমনিতেই বেশ দূর্বল, আরো গত চার দলীয় সরকারের নানান কর্মকান্ডে এই সাপোর্ট হয়ে গেছে আরো ক্ষীন।
তবে দেশে সরকারের ওপর লোকে যে পরিমান বিরক্ত ছিল তাতে বড় কোন গনজোয়ার সৃষ্টিকারি আন্দোলন ছাড়াই বিএনপির ক্ষমতায় আসা বিচিত্র কিছু না, ২০০১ এ যেমনটা হয়েছে, সব হিসাব কিতাব ফেল।
আমার ধারনা বিএনপি যুদ্ধপরাধী ইস্যুতে এক বড় সংখ্যক বিএনপি বিমূখ ভোটার যারা বিএনপিকে যে কোন পরিস্থিতিতেই ভোট দেবে না তাদের সহানুভূতি পাবার শেষ সুযোগ হারিয়েছে শাহবাগ আন্দোলনের বিরোধিতা করে। নুতন প্রজন্মের এক বড় অংশের কাছে অন্য আর সব ইস্যু গুরুত্বহীন, যুদ্ধপরাধী ইস্যুটাই মূখ্য।
খুব সম্ভবত বিএনপির থিংক ট্যাঙ্কের হিসেবে প্রো জামাত অবস্থান ধরে রেখে মৌলবাদী ধরনের ভোটারদের খুশী রাখা নুতন প্রজন্ম থেকে বেশী ফলদায়ক? আমি ঠিক বুঝছি না শাহবাগ আন্দোলন বিএনপি ক্যাপিটালাইজ করার সুযোগ কেন হারালো। আরেক কারন হতে পারে এ আন্দোলনের বর্তমান পরিনতি জামাতের কল্যানে আগে থেকেই জানা ছিল।
@আদিল মাহমুদ,আমার যতদূর মনে হয় বিএনপি’র মূল লক্ষ্য ২০০৬-৭ এর মতো সংঘাতময় পরিস্থিতি সৃষ্টি করে তৃতীয় পক্ষের ইন্টারভেনশন। কিন্তু আওয়ামী লীগের মতো বিএনপি’র ডেডিকেটেড কর্মীবাহিনী নেই যে তারা নিজেরা সেরকম পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে। একারনে জামাতই তাদের মূল ভরসা। এজন্যেই তারা কোনোভাবেই জামাতকে দূরে সরাতে চাচ্ছে না।
২০০৬ এ শেখ হাসিনা স্পষ্ট করেই বলেছিলেন যে বিএনপি ক্ষমতায় থাকার বদলে আর্মী ক্ষমতায় আসা অনেক ভালো। কিবরিয়া হত্যাকান্ড, ২১ শে আগস্ট গ্রেনেড হামলার পরে এই ধরনের ইচ্ছাটা আসা একান্তই স্বাভাবিক। বিএনপি বর্তমান আওয়ামী সরকারের কাছে এখন পর্যন্ত সেরকম পীড়ন, দমনের মুখোমুখি হয় নি, তবে আওয়ামী সরকার কন্টিনিউ করলে খালেদা এবং তারেকের রাজনৈতিক প্রত্যাবর্তন এর সম্ভাবনা যে একেবারে শুন্যের কোঠায় নেমে যাবে এটা তারা ভালো ভাবেই জানে।
আমার, আপনার কাছে যুদ্ধাপরাধের বিচার এবং উপযুক্ত শাস্তি হওয়া একটা endgame, ‘৭১ এর unfinished business একটা সমাধান। কিন্তু আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি এদের কাছে এই ঘটনা ক্ষমতা দখল, ক্ষমতা ধরে রাখার পথে একটা জটিল পদক্ষেপ মাত্র। তারা সব রকমের হিসাব কিতাবই করছে। তবে পরিস্থিতি কারোই নিয়ন্ত্রনে নেই।
আন্দোলনের কি পরিনতি হবে এটা মনে হয় আগে থেকে কেউই নিশ্চিৎ করে বলতে পারে না। অনেক বিএনপি, জামাতের সমর্থক মনে করে এই শাহবাগ আন্দোলন পুরোটাই আওয়ামী লীগের চাল। আমি সেটা মোটেই মনে করি না। আওয়ামী লীগ নিজেই আশ্চর্য হয়েছিলো আন্দোলনের স্বতস্ফুর্ত বিস্তারে। তারা এটা এখন নিয়ন্ত্রন করার যথাসম্ভব চেষ্টা করছে।
তবে একটা কথা কি সাধারন জনগনের সেন্টিমেন্ট আণ্দোলনের জয় বিজয় এর দ্বারা অনেক প্রভাবিত হয়। যেকোনো গেমের জয়ীরা নতুন কনফিডেন্স পায় আর পরাজিতরা কনফিউজড হয়ে যায়। ফ্লোটিং সেন্টিমেন্ট জয়ীদের পক্ষে অনেকটা ঝুকে পড়ে। সুতরাং এই বিচারের আন্দোলনে দৃশ্যত জয়ী-বিজয়ীর উপরে অনেক কিছু নির্ভর করছে।
তবে বিএনপি আপাতত এই গেমে এখন বেন্চের রিজার্ভ খেলোয়াড়। গেম হচ্ছে আওয়ামী লীগ আর জামাতের মধ্যেই।
আমি জানি না আপনাদের ওখানে, কানাডায়, জামাত সমর্থকদের আধিপত্য কেমন। তবে আমার মনে হয়েছে আমেরিকায়, বিশেষ করে বুয়েট ইন্জিনিয়ার, ডাক্তার কমিউনিটির অধিকাংশের সহানূভুতি মনে হয় বিচার-শাস্তির বিপক্ষে। মজার কথা হলো শাহবাগ আন্দোলনের শুরুতে, যখন সারা বিশ্বজুড়ে প্রবাসী কমিউনিটিতে শাহবাগের প্রতি সহমর্মিতার জোয়ার বয়ে গিয়েছিলো, তখন এদের অনেকেই ছাত্রদের সাথে সুর মিলিয়ে একাত্মতা দেখিয়েছিলো। এখন ধীরে ধীরে অনেকেই সুর পাল্টাচ্ছে।
@সফিক,
আমারো বিন্দুমাত্র বিশ্বাস হয়নি বর্তমান আন্দোলন সরকার করাচ্ছে জাতীয় ষড়যন্ত্র তত্ত্ব। রাজীব ইস্যুর আগে এই আন্দোলন ছিল অনেক বেগবান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের বাইরে যে কোন সময় যেতে পারত। সে রকম পরিস্থিতির ঝুকি কোন পাগলে জেনে শুনে নিতে চাইবে? বিশেষ করে সরকারের শেষ সময়। শেষ সময়ে সব সরকারই থাকে কুত্তা পাগল অবস্থায়। সরকার নীতিগতভাবে আন্দোলনকারীদের পক্ষে ছিল তাই নানান প্রটেকশন দিয়েছে তার বেশী কিছু নয়। এই রকম হাজারো জনতার ভিড় দিনের পর দিন কোন অঘটন ঘটাবে না এটা মনে করা খুবই স্বাভাবিক নয়। কোন সরকার ক্ষমতায় থাকতে চায় নাকি এ রকম পরিস্থিতির কোন রকম সম্ভাবনা দেখা দিক? যে কোন সরকারই মাঠে ঘাটের সমাবেশ আন্দোলন ভয় পায়।
সঙ্ঘাতমত পরিস্থিতি হলে সেটা কুক্ষিগত করার মত গ্রাউন্ড ওয়ার্ক মনে হয় না বিএনপির আছে বলে। জামাতের যে রকম ইমেজ তাতে জামাতকে মাঠে নামালে ফল মন্দ ছাড়া ভাল হবে না। আর্মি যতদুর জানি সহসা সরাসরি ক্ষমতা নিতে এখনো চায় না।
– এটাই সাধারন হিসেব। আওয়ামী লীগ এভাবেই ‘৯৬, ২০০৮ এ দারুনভাবে পরিপক্ক রাজনৈতিক দল হিসেবে গণজোয়ার সৃষ্টি করে সফলতা পেয়েছে। বিএনপি কিন্তু এ ব্যাপারে চিরকালই আনাড়ি, কারন এ দল ঠিক মাঠে ঘাটে আন্দোলন করার দল নয়, একনিষ্ঠ কর্মীর অভাব, মিডিয়া/সুশীল সাপোর্ট কম। তাই এ দল বর্তমানেও এমন কোন আশার ভরসায় বসে থাকলে বলতে হয় বোকামি। ২০০১ সালে কিন্তু আন্দোলনফন কিছুই করতে হয়নি, লোকে লীগের ওপর বিরক্ত হয়েই ব্রুট মেজরিটি দিয়েছিল, জামাতের ভোট ব্যাংক মার যায়নি।
– বিচার শাস্তির বিপক্ষের সবাইকে গনহারে জামাতি সাব্যস্ত করাটা মোটা দাগের ভুল। জামাতিদের সুর পাল্টানোর প্রশ্ন আসে না। এরা সব সময়ই একই ষ্ট্যান্ডে ছিল, শুধু হয়ত প্রকাশ ভংগী ছিল ভিন্ন।
শিক্ষিত কম্যুনিটি সম্পর্কে আপনার অবজার্ভেশন এখানেও একই। আপনি যে সুর পালটানো দলের কথা বললেন এরা মূলত অজামাতি কিন্তু যুদ্ধপরাধীদের বিচারের ব্যাপারে হার্ডকোর নয়। অনেকটা হলে ভাল, নইলে নেই, এমন কোন ব্যাপার নয়, ৪০ বছরে হয়নি আর বুড়াদের ফাঁসী দেওয়ার জন্য এত হ্যাপা করার কি আছে এই ধরনের। গনজোয়ারের নানান সংবাদ শুনে এরাও সপক্ষে সরব হচ্ছিলেন, যাদের তেমন সিরিয়াস ভাবনা থাকে না, আদর্শবাদ ফাদ খুব শক্ত থাকে না তেমন লোকে সব সময় বিজয়ী পক্ষেই থাকতে চায়। এ দলেই সব সময় অধিকাংশ লোক থাকে।
আমার দেখামতে এই রকম দোদূল্যমনতার অন্যতম বড় কারন ধর্মের প্রতি আসক্তির সাথে সমানুপাতিক। যেমন এই আন্দোলনে বিচারপ্রার্থীদেরই অনেকে বড় ধরনের কনফিউশনে পড়ে গেছে নাস্তিক তত্ত্বের ফেরে পড়ে। নাস্তিকদের আন্দোলনে সমর্থন দিয়ে পরকালে কোন বিপদে পড়ে এই ভয় থাকবে না? যাদের ধর্মের প্রতি আসক্তি যত প্রবল তাদের কাছে এখন জামাত বা আমার দেশ কি করেছে বা কত খারাপ সেটা গুরুত্বহীন, তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ন হল রাজীব কত বড় শয়তান নাস্তিক, অমি পিয়াল আরিফ জেবতিকের মত নেতা ব্লগারগন নাস্তিকের দোসর, এরা কত বড় মিথ্যাবাদী প্রতারন এসব গবেষনা। এদের সবাইকে কিন্তু জামাতি এমনকি প্রো-রাজাকার ভাবাটা ভুল হবে আবারো বলছি।
@আদিল মাহমুদ,
আসলেই আমার ভুল হয়েছিলো, এ ধরনের সমর্থকদের জামাতপন্থী বলার কোনো স্কোপ নেই। তবে ‘হালাকা পার্টি’ বলা যায়। কিন্তু দেখা যাচ্ছে when push comes to shove, এই হালাকা পার্টির মতামত পরোক্ষভাবে জামাতের পক্ষেই যাচ্ছে দেখা যায়।
এদিকে আজকের খবরে তো মনে হচ্ছে, আন্দোলনের প্রথম রাউন্ডে জামাত জয়ী না হলেও এট লিস্ট ড্র করতে সক্ষম হয়েছে। খবর দেখুন,
http://www.prothom-alo.com/detail/date/2013-02-26/news/332139
খবরের চুম্বক অংশগুলি,
সরকার আদালতের নির্দেশনার বাইরে কিছু করবে না
ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করার চিন্তা সরকারের নেই
কোনো ধর্মীয় সংগঠন বা ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করার চিন্তাভাবনা সরকারের নেই। বরং ধর্মভিত্তিক দলগুলোর সঙ্গে সরকার আলোচনা করবে।
বৈঠকে তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতি নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা নিয়ে কয়েকজন মন্ত্রীর বক্তব্যের সূত্র ধরে প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে বলেন, সময়ই বলে দেবে কী করতে হবে। জনমত পর্যবেক্ষণ করুন, বাস্তবতা দেখুন।
ধর্মভিত্তিক দলগুলোকে আন্দোলনের উসকানি দেওয়ায় তিনটি পত্রিকার বিরুদ্ধে প্রেস কাউন্সিল আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে তথ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। জবাবে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, এসব পত্রিকার বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান আইনে নেই। এ ক্ষেত্রে প্রেস কাউন্সিল আইনকে যুগোপযোগী করতে হবে।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবকিছু আইনের দৃষ্টিতে দেখতে হবে। কোনো ব্যক্তি বা সংবাদপত্র অপরাধ করে থাকলে তার আইনগত দিক দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে নির্দেশ দেন। তবে প্রধানমন্ত্রী এ কথাও বলেন যে কিছু বিষয় আছে, যা রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে হবে।
শেষ পর্যন্ত সবকিছুই হলো রাজনীতি। Game of Thrones।
@সফিক,
এই মাত্রই খবরটা পড়ছিলাম, আমার কাছে আশ্চর্যকর কিছু মনে হয়নি। সরকার জামাত নিষিদ্ধকরন (ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করার কথা তো বাদই দিলাম, সে দাবী জানালে এখন মনে হয় আন্দোলনকারীরাও ধমক দেবে) করবে এমন আশা আমি এখনই করিনি। আদতে আমার কাছে সেটা খুব কার্যকর কিছু মনে হয় না। এক জামাত নিষিদ্ধ করে উল্লাস করবেন, ২/১ বছর হয়ত শান্তি পাবেন, এরপর শুধু সাইনবোর্ড বদল করে আরো তুমুল বিক্রমে হাজির হয়ে যাবে। মিশরে নাসেরের সময় ব্রাদারহুডকে নিষিদ্ধ করেও যে পরিমান সরকারী দমন নীতির মুখোমুখি হতে হয়েছিল তা বাংলাদেশে সম্ভব নয়, তারপরেও তাদের উত্থান হয়েছে ঠিকই। ভারতের বিজেপির উত্থানও বলা যায়, উগ্রবাদী RSS যাদের বহুবার নিষিদ্ধ ঘোষনা করা হয়েছিল তাদেরই লোকে সাইনবোর্ড বদলে বিজেপি বানিয়েছিল। এসব ধর্মীয় মৌলবাদী দল আইন করে নিষিদ্ধ করা আর কাউকে বেত মেরে ভালবাসতে নির্দেশ দেওয়া সমার্থক।
আর আইনী লড়াই এর কথা তো বাদই দিলাম।
সরকারের এ পরিষ্কার সিদ্ধান্ত মনে হয় আন্দোলনে নুতন মাত্রা আনবে।
@আদিল মাহমুদ,
জামাত নিষিদ্ধ করাটা লং টার্মে তেমন ফলপ্রদ কিছু হবে না এটা সত্যিই/ আমি কিন্তু জামাত নিষিদ্ধ আর যুদ্ধাপারধীদের শাস্তির আশা করি অন্য একটি কারনে।
শুনতে খারাপ লাগলেও, এই চাওয়ার পিছনে আমার প্রধান র্যাশনাল হলো বাংলাদেশের রাজনীতি ও সামাজিক চিন্তা থেকে ‘৭১ এর ছায়া আপসারন। আমরা সবকিছুতেই ‘৭১ কে টেনে আনি, ‘৭১ ই হলো আমাদের সবকিছু দেখার প্রিজম।
সেকুলারিজম কেনো রাষ্ট্রনীতির মূল ভিত্তি হওয়া উচিৎ, সেই বিতর্কে কেউ বলে না যে একটি সভ্য গনতান্ত্রিক রাষ্ট্র কোনো বিশেষ গোষ্ঠী স্পেশাল ফেভার পেতে পারে না, সেই গোষ্ঠী যত মেজরিটিই হোক না কেনো। কেউ বলে না যে স্বয়ং আল্লাহ তার দুনিয়াকে সেকুলার বানিয়েছেন, কেউ দেখাতে পারবে না যে আল্লাহর প্রকৃতি মুসলমানদের কোনো উপায়ে পক্ষপাতিত্ব করে। কেউ বলে না রাষ্ট্র কতৃক ধর্মকে পৃষ্ঠপোষকতা গনতন্ত্র, এনলাইটেনমেন্ট আর বিজ্ঞানচেতনার পরিপন্থী। সবাই যুক্তি দেখায় আমরা সেকুলারিজমের জন্যে পাকিস্তান থেকে আলাদা হয়েছি, ৭২ এর সংবিধানে সেকুলারিজম আছে।
আমরা রাজনৈতিক ইসলামকে এই বলে মোকাবেলা করি না যে আধুনিক রাস্ট্র ও সমাজ পরিচালনার জন্যে ইসলাম বারে বারে প্রমানিত ব্যর্থ একটি দর্শন। পায়ের নীচে অঢেল তেল-গ্যাস থাকলে ইসলামী রাষ্ট্র হবে সৌদী আরব অথবা ইরান, তেলগ্যাস না থাকলে দেশ হবে তালেবানী আফগানিস্তান। ইসলামী পথে কোনদিন কোরিয়া-চীন তো দূরের কথা, মালয়েশিয়াও হওয়া হবে না। কিন্তু এসব না বলে আমরা বলি ‘৭১ এ রাজনৈতিক ইসলাম কি ভিলেনগিরি করেছিলো। আমরা কি আদর্শে মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম। বাংলাদেশের পত্রপত্রিকায় এমনকি ব্লগগুলোতেও ‘৭১ এ ইসলামী দলগুলোর বিতর্কিত ভূমিকার কথা দেখা যায়। কিন্তু কখনো কি দেখেছেন আধুনিক বিশ্বে ইসলামী অর্থনীতির সফলতা-ব্যর্থতা নিয়ে কোনো আলোচনা? অর্থনীতি তো দূরের কথা, এমনকি ইসলাম মানবিকতার সাথে কতটা সংগতিপূর্ন এই বিতর্ক দুই একটা ব্লগের বাইরে আর কোথায় দেখা যায়?
ইসলাম ছাড়াও সমাজতন্ত্র-ধনতন্ত্র, পররাষ্ট্রনীতি, ভারত-মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ, আমাদের জাতীয়তা পরিচয় এই সবকিছুর পেছনে বড়ো ছায়া হয়ে আছে ‘৭১।
এসব নিয়ে নিরাবেগ আলোচনা সাধারন লোকের মধ্যে তো দূরের কথা, অতি বিদগ্ধ মহলেও হয় না।
আপনি বলতে পারেন ‘৭১ এ রাজনৈতিক ইসলামের বিতর্কিত ভূমিকাই আমাদের রক্ষাকবচ হয়ে আছে, নইলে অনেক আগেই আমরা পাকিস্তানের পথে পা বাড়াতাম। সেই সম্ভাবনা আসলেই অনেক। কিন্তু আমার মনে হয় আমাদের লোকজনের মধ্যে ইসলামী একনায়কতন্ত্র বেশীদিন টিকে থাকার সম্ভাবনা কম। সংষ্কৃতিগতভাবেই হয়তো আমরা ততটা বাধ্য জনগোষ্ঠী নই। আসলে দেশের বৃহৎ মেজরিটি চাইলে এদেশকে ইসলামী রাষ্ট্র হওয়া কেউ ঠেকাতে পারবে না। হয়ত একসময়ে বিএনপি, আওয়ামী লীগই ইসলামী দল হয়ে যাবে।
‘৭১ এর যুদ্ধাপরাধীদের শাস্তি, জামাতের মতো অপরাধী সংগঠন গুলোর শাস্তি নিয়ে আন্দোলন যেনো আর না করতে হয়। ৪০ বছর পরে এই দাবীতে আমাদের ছাত্রজনতাকে রাস্তায় নামতে হচ্ছে, আরও ১০ বছর পরে যেনো এই দাবীর আন্দোলনের দরকার না পরে।
অধিকাংশ স্বাভাবিক গনতন্ত্রের দেশগুলোতে রাজনৈতিক মহল, সচেতন ব্লগজগতে বিতর্ক চলে দেশের অর্থনৈতিক, পাররাষ্ট্রনীতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক পলিসি নিয়ে। ইতিহাসের বিতর্কে সবচেয়ে সচেতন অংশের সিংহভাগ এনার্জি নিয়োজিত নয়। বাংলাদেশের এরকম স্বাভাবিক অবস্থায় পদার্পনের দরকার। এরজন্যে এই সময়ে এস্পার-ওস্পার কিছু একটা হয়ে যাওয়া দরকার।
@সফিক,
‘৭১ এর চিহ্নিত যুদ্ধপরাধীদের বিচার এত বছর ঝুলে থাকাটা হয়েছে মূলত আমাদের সভ্যতার একটি চরম ব্যার্থ দিক যার সামগ্রিক ক্ষতি অচিন্তনীয়। সব দিক থেকেই এটা জাতিকে পিছিয়ে রেখেছে, বিস্ময়কর সত্য হল আজ ৪২ বছর পর স্বাধীনতা বিরোধীদের ভাগ আরো বেড়েছে, আরো বিস্ময়কর হল স্বাধীনতার পক্ষের শক্তির মাঝেই এ ইস্যু নিয়ে বিভাজণ দেখা যাচ্ছে।
আপনি যেসব পয়েন্ট বললেন সেগুলি ছাড়াও এই ইস্যু এক উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নাগরিককে অন্য কোন ইস্যু নিয়ে মাথা ঘামাবার অবকাশ দিচ্ছে না। এ জাতীয় আরো ইস্যু আছে স্বাধীনতার ঘোষক বিতর্ক, ৭৫ এর ঘটনাবলী যেগুলির বিচার হয়নি। এ ইস্যুগুলি হয়ে গেছে ধর্মবিশ্বাসের মত।
মাঝে মাঝে ভাবি যে বিদেশী কেউ আমাকে এ নিয়ে প্রশ্ন করলে কিভাবে এই ব্যার্থতা ব্যাখ্যা করব।
প্রশ্নঃ তুমি কি যাদের বিচারে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে তাদের অপরাধী মনে কর? বিচার নিয়ে তো অনেক বিতর্ক হচ্ছে…
উত্তরঃ অবশ্যই অপরাধী…এত এত তথ্য প্রমান…এদের নিজেদের ‘৭১ সালের বক্তব্য…ভিক্টিমদের আত্মীয় স্বজনদের ভাষ্য…বেঁচে যাওয়া ভিক্টিম…
প্রশ্নঃ বিচারে এত বছর লাগল কেন? এত নৃশংস অপরাধীদের বিরুদ্ধে এত বড় বড় সব প্রমান থাকতে ৪২ বছর…????
উত্তরঃ তাও জান না? ‘৭৫ পরবর্তি সরকারগুলির জন্য…
প্রশ্নঃ সেসব সরকার কি সবাই মংগল গ্রহ থেকে এসেছিল? নাকি বিদেশী জবরদখল কারি ছিল?
উত্তরঃ ইয়ে…মানে…না…এরাও জনগনের ভোটেই নির্বাচিত হয়েই ক্ষমতায় বসে বহাল তবিয়তে যুদ্ধপরাধীদেরই মন্ত্রী বানিয়ে বছরের পর বছর দেশ শাসন করেছে, জনগন এদের নামেই জয়ধ্বনি দিয়েছে। অন্য কেউ হয়ত এতটা না করলেও ক্ষমতায় যাবার দরকার পড়লেই এদের সাথে হাত মিলিয়েছে।
জনগনের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত সরকার এসব ভয়ংকর ক্রিমিনালদের রাজা উজির বানিয়েছে আর তোমরা জনগন ঘুমাচ্ছিলে??? এ কেমন ধারা গনতন্ত্র তোমাদের??
যুদ্ধপরাধীদের বিচারটা আমরা এখনো বলতে গেলে ৯৯%ই প্রতিহিংসার দৃষ্টিতে দেখি, শাহবাগের জমায়েত শুরু হয়েছিল মূলতঃ ফাঁসির দাবী থেকে। বিচার মানেই শুধু প্রতিহিংসা চরিতার্থ করা এই ধারনা বদল করা দরকার। এই ধারনা থেকেই মূলত জামাতে ইসলামী নিষিদ্ধ করার দাবী করা হয়। নিষিদ্ধ করার কারন হল জামাতের ‘৭১ এর ভূমিকা।
এটা কেউ চিন্তা করে যে জামাত নিষিদ্ধ করার দাবীর জন্য শুধু ‘৭১ এর ভূমিকা কতটা যুক্তিপূর্ন? বর্তমান জামাতের ৯০% এর ওপর সদস্যের মনে হয় না ‘৭১ এ কোন ভূমিকা ছিল বলে, নীতিগতভাবে তারা রাজাকারি মানসিকতার সেটা ঠিক। তারচেয়ে বড় কথা, জামাত যদি আজ চাল চেলে বলে যে ‘৭১ এর রাজাকারদের দল থেকে বের করে দেওয়া হল, ব্যাস তাহলেই জামাত নিষিদ্ধকরনের দাবী তুলে নেওয়া হবে? কিংবা ১০/১৫ বছরের মধ্যে রাজাকারগুলি স্বাভাবিকভাবে পটল তুললে নিষিদ্ধকরনের আর প্রয়োযন পড়বে না?
অন্য কারো কথা জানি না, আমি সেক্যুলারিজমের জন্য ‘৭১ এর কথা বিশেষভাবে টানি এ জন্য যে সেক্যুলাজিরম কায়েম হলেই ধর্ম ধ্বংস হয়ে যাবে এমন প্রচারনার অসারতা প্রমান করতে। আমাদের দেশ দিয়েই উদাহরন দেওয়া গেলে বিদেশ টানার কি দরকার। ‘৭১ এ ইসলামী দলগুলির ভূমিকা ইসলামী ব্যাবস্থার দূর্বলতা প্রমানের জন্যই টানা হয় এমন নাও হতে পারে। সঠিক ইতিহাস চর্চার জন্যও সেটা টানা হতে পারে। আমার মতে ‘৭১ এর পরিপূর্ন ইতিহাস লিখতে গেলে ধর্মীয় ভূমিকা জেনেশুনে এড়িয়ে যাওয়াটাও এক ধরনের ইতিহাস বিকৃতি। এই দিকটা ইচ্ছেকৃতভাবে এড়িয়ে যাওয়া হয় বলেই বেশীরভাগ লোকের ধারনা যে জামাতে ইসলামী আর বড়জোর সমমনা কিছু চটি দল বাদে রাজাকারি মানসিকতার লোক ‘৭১ সালে ছিল না, এখনো নেই। জামাত নিষিদ্ধ করে কয়টা বুড়া শকুনকে লটকে দিলেই কেল্লা ফতে, দেশ চিরজীবনের জন্য রাজাকারমুক্ত।
– এভাবে ধর্মওয়ালাদের সাথে পারবেন না 😀 । ওনাদের খেলার নিয়ম হল শেয়াল ও কুমিরের কায়দার, রসালো দিক সব সময়ই ওনাদের। ধর্মীয় রাষ্ট্রের যত মন্দ দিক বার করে দেখাবেন সেগুলি সব মানুষেরই দোষ…কাঠমোল্লা, ধর্মব্যাবসায়ী, ধর্ম সম্পর্কে জ্ঞানের অভাব। ধর্মকে কোনভাবেই দায়ী করা চলবে না, মানুষের দোষে ধর্ম দোষী। আবার ভাল কিছু পাওয়া গেলে সেটা কিন্তু ধর্মের বিশেষ গুন, অলৌকিকতার নিদর্শন, অন্য কোন ধর্মের ব্যাবস্থায় অতীত বর্তমানে তেমন ভাল কিছু পাওয়া যাবে না।
@আদিল মাহমুদ,
আপনারা আলোচনা করছেন শাহবাগ থেকে কে সুবিধা নিচ্ছে? বি এন পি হলো একটা জোক (Leeches) আর জয় বাংলা হলো চুন। ব্যস, ব্যাখ্যা ফিনিশ। আওয়ামী লীগ মানুষ কিন্তু ইডিয়ট (ফারমার দ্রষ্টব্য) কিন্তু তার সাপোর্টার আছেন কিছু ভাল মানুষ।
জামাত যদি ডায়াবিটিস হয়, এই মডারেট মুসলমানরা হলো ক্যান্সার। এরা আওয়ামী লীগের ভিতরেও আছে। এই ক্যান্সার লালন পালনে আওয়ামী লীগের অবদান কম না। এই সপ্তাহে আওয়ামী লীগ কর্তৃক আয়োজিত আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানে সকল বক্তাদের মুখ থেকে ভাষা দিবসের তাৎপর্য ছাড়িয়ে যে সার কথাটা বেরিয়ে এলো, তা হলো – আমি একজন খাটি মুসলমান, আমার প্রীয় নবী মুহাম্মদ মোস্তফা সল্লাহু আলাইহি অয়া সাল্লামের (এখানে উচ্চারণে অনেকের গড়মিল হয়েছে গলার সুর আটকেও গেছে) উপর কোন বদনাম, কটুক্তি আমি কী ভাবে সহ্য করতে পারবো? আমি যদি জানতে পারি রাজিব এ রকম কিছু লিখেছে, আমি নিজে আগে তাকে হত্যা করবো, কিন্তু আমরা জানি সে তা করে নাই। জামাত শিবির মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে। বুঝুন এবার ধর্মাসক্তির ঠেলা।
সকল বক্তাই প্রথমে যতদুর সম্ভব শুদ্ধভাবে জিয়ার ষ্টাইলে ভঙ্গীতে বিসমিল্লাহির রাহমা নিররাহিম উচ্চারণ করার চেষ্টা করেছেন। একজন প্রস্তাব দিয়েছেন, আওয়ামী লীগের যত অনুষ্ঠান হবে কোরান তেলাওত দিয়ে শুরু করতে হবে, বক্তৃতায় বিসমিল্লাহ বলতে হবে, দোয়া দিয়ে সভা সমাপ্তি করতে হবে। রাজিব খুনের পর থেকে ৯০ পার্সেন্ট মুসলমান শব্দ শুনতে শুনতে কান জালাপালা। অবাক হয়ে গেছি আমার বুবুজানের বক্তব্যে, তিনিও প্রায় এক্সেকলি একই সুরে একই কথা বললেন। আমার বুবুকেও আমি একজন মুসলমান বলে মানুষকে পরিচয় দিতে হয়। আমার প্রীয় নবী মুহাম্মদ মোস্তফা সল্লাহু আলাইহি অয়া সাল্লাম বলে তার নবীকেও পরিচয় করে দিতে হয়। তিনি ভুলে যান, তিনি যে শুধু মুসলমানের মন্ত্রী নন। অবশ্য তার একটা কথা ভাল লেগেছে তিনি বলেছেন- যারা এই কটুক্তি মানুষের কাছে প্রচারের জন্যে পত্রিকায় প্রকাশের ব্যবস্থা করেছেন তাদেরও বিচার হবে। আমি বলি ও বুবুজান, কী দরকার ছিল এতো লাফালাফি করার, শাহবাগের জয় বাংলা ধ্বনি থেকে কোন মেসেইজ পান নি? কেন রাস্তায় বেরিয়ে সমর্থন জানালেন, কেন ভোদাই মন্ত্রীরা শাহবাগে যেতে উদ্যোত হয়, হায়া শরমের মাথা খেয়েছেন নাকি বুঝের গলতি? মারাত্বক ভুল করেছেন। আপনাদের এই আচরণ শাহবাগকে বিপদে ফেলেছে। এতো কথা কেন বলে আপনার বাচাল মন্ত্রীরা আমি বুঝিনা। বুবুজান এদেরকে বলুন কথা কম কাম বেশী, অন্যতায় গেটআউট। শাহবাগের সকল দাবী মেনে নিন, সংসদে আলোচনা করে তা তাড়াতাড়ি বাস্তবায়ন করুন। বাহিরে এসে তর্জন গর্জন শুনানি, হাত নাচানাচি করার দরকার নাই। শাহবাগ নিয়ে মুখ বন্ধ, কোন কথা নাই, শুধু কাজ শুধু দাবী বাস্তবায়ন। ব্যস, আল্লাহর কসম বুবু, এক শো পঞ্চাশটা দল মিলেও আগামী ইলেকশনে আওয়ামী লীগকে হারাতে পারবেনা।
@আকাশ মালিক,
আপনার বুবুজানের কথা বাদ দেন, ওনার প্রতি দেখি আপনার আশা ভরসা এখনো অটুট।
ঢাকা শহরে শুনছি সরকারী দলে নেতারা এখন বিপুল উদ্যমে পাড়া মহল্লায় ওয়াজ মাহফিলে হাজিরা দিচ্ছেন। একটা ছবি দেখলাম বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের ধারক বাহক হাসানুল হক ইনু মসজিদে বক্তব্য দিচ্ছেন (ক্যাপশন মতে ইমাম), আরেক চীনপন্থী বাম বিপ্লবের বাঁশীওয়ালা রাশেদ খান মেনন ভক্তিভরে সে ওয়াজ শুনছেন। না না, আমি বাঁকা সুরে কিছু বলছি না। এনাদের জন্য অবশেষে রহমতের দরজা খুলে গেছে এটাই হয়েছে নিশ্চিত, এনারা অবশেষে সঠিক পথের নিশানা পেয়েছেন।
দিনকাল ভাল না, ভাল হয়ে যাওয়াই উত্তম। আমার আজকাল বাংলাদেশ নামটা কেমন হিন্দুয়ানী হিন্দুয়ানী লাগে। ৯০% মুসলমানের দেশের এমন মালাউন মার্কা নাম ইজ্জত কি বাত হ্যায়। একটা বিকল্প সহি নাম বার করা দরকার। নবজাতকের সুন্দর নাম যেমন হয় সবই আরবী দেশ আর বাদ থাকবে কেন। অন্তত বংগাল মুলুক নাম তো রাখা যায়? এর সাথে তো আর তথাকথিত মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের সমস্যা নাই।
@আদিল মাহমুদ,
এইটা তো শুনি নাই। তবে ফেবুতে কিছু নমুনা দেখছি।
আর একটা ব্যপারও আছে, জামাত-শিবিরের তান্ডবের প্রেক্ষিতেই মনে হচ্ছে এখন অনেকেই ধর্ম ভিত্তিক রাজনীতির বিলোপের কথাটা খানিক লুকিয়ে ছাপিয়ে রাখতে চাইছে! যদি এইটেই হয়, তাহলে তা অনিবার্য পরাজয়, কোন সন্দেহ নেই। এই জামাতীরাই কাল নতুন নামে মাঠে আসবে। ‘স্বভাব যায়না ম’লে’ জানেনতো? তাই শাসনতন্ত্রের ললাট লিখনটাও এখন-ই বদলাতে হবে। অন্য ধর্মাবলম্বী ও ক্ষুদ্র জাতি সত্ত্বাধিকারীদের নিজ দেশে পরবাসী ভাবনায় ঠেলে দেওয়াকি গনতন্ত্র সম্মত? আর তাই ‘৭২ এর সংবিধানের মতো নিশ্চিত করতে হবে দেশে যেনো ধর্ম নিয়ে কোন রাজনীতি না হয়। যা পবিত্র বলে আমরা জানি, তার পবিত্রতার স্বার্থেই এটি দরকার। আমাদের উপমহাদেশ ছাড়া আর কোন গনতান্ত্রিক দেশে সম্ভবতঃ এর নজির নেই।
@কেশব অধিকারী,
খানিকটা কোথায় পুরটাইতো লুকানো। আজ টাকলু মাথা উপমন্ত্রী বলছে এই সরকারের আমলেই নিষিদ্ধ হবে জামাত শিবির। এর মানেটা কি আমাদের অপেক্ষা করতে হবে আরো এক বছর? আমাদের নিয়ে সরকার খেলা করতে চাইছে।
@কেশব অধিকারী,
একশত ভাগ একমত। (Y)
শুধু জামাত নিষিদ্ধ করলে হবেনা সব ধরনের ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে। তা নাহলে কয়েকদিন পরেই হয়তো অন্য নামে জামাত আত্মপ্রকাশ করবে।
তাছাড়া এখুনি হয়তো গোপনে কোন ধর্মভিত্তিক দলের সাথে লেগে গেছে কিনা কে জানে। তাছাড়া জামাতের টাকাই কোন কোন দল চলে তার কে জানে। তাই সব ধরনের ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধের বিকল্প নাই।
পড়েরে ভাই দরকার পড়ে।সামনে ভোট আছে না?আপনি আমি নাদান রা না বুঝলাম, এইটা সরকার বুঝে।এদের ক্যালকুলেশন মারাত্বক। :-Y
@অর্ফিউস,
আহমদ ছফার কথাটা মনে আছে নিশ্চয়।” আওয়ামীলীগ জিতলে তাদের দলের নেতারা জিতে, কিন্তু হারলে বাংলাদেশ হারে” । এই সময় এই কথাটা প্রতিমুহূর্তে উপলব্ধি করছি।
@ডাইনোসর, জি সেটা আছে কিন্তু তবু জামাত শিবির কে নিষিদ্ধ না করে কি তারা জিতবে? আমারতো মনে হয় না যে প্রগতিশীলদের ভোট এবার তারা পাবে, যদিনা রাজাকারদের ফাঁসির ব্যবস্থা আর অন্তত পক্ষে রাজাকারদের আস্তানা জামাত কে নিষিদ্ধ না করে।
অন্য ইসলামিক দলগুলো কে এখনই নিষিদ্ধ করা কতটা জরুরি তা নিয়ে প্রশ্ন থাকতে পারে। তাদের নিয়ে রয়ে সয়ে ধীরে ধীরে, কৌশলে কাজ করা যেতে পারে,কিন্তু জামাত কে ছাড় দিলে অন্তত আমার ভোটটি তারা পাবে না। আর বিএনপি কে তো ভোট দেবার প্রশ্নই আসে না ( আমার কথা বললাম শুধু), কারন তারা রাজাকার দের দুধকলা দিয়ে পুষেছে এবং নির্লজ্জের মত এই গনজাগরনের সময়েও হয় চুপ আছে, না হয় জামাতের সাফাই গাইছে।
@অর্ফিউস,
এবার আপনি এবং আমি হয়তো লীগকে ভোট দিতে বাধ্য থাকব। কারন পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে বিকল্প আর কিছু করার থাকবে না। আমরা তো আর চাইতে পারিনা যে জামাত ক্ষমতায় আসুক। লীগ এইটা ভালই বুঝে। তাই নির্বাচন পর্যন্ত এই রায়কে ঝুলিয়ে রাখবে বলে মনে হচ্ছে।
@ডাইনোসর, সেটাও হতে পারে, কিন্তু আপনি আমি এবং ভোট দিলেই যে লীগ জিতবে এর কি নিশ্চয়তা আছে?দেখেন না, বাংলাদেশে তো একবার বি এন পি, আরেকবার লীগ ক্ষমতায় আসে। ৯১ সাল থেকেই দেখে আসছি।
কাজেই ভোট এলে এই জনতা( আমরা সবাই) আজ যারা রাজাকার দের ফাঁসীর দাবী করছে তাদের মধ্যে একটি অংশ যদি মনে করে বসে যে লীগ রাজাকার দের ফাঁসীকে শুধুই ভোটের একটা ইস্যু হিসাবে দেখে, আর সেক্ষেত্রে হতাশ হয়ে , আমাদের আর কিছু হবে না এই মনোভাব নিয়ে আবার সেই প্রচলিত ধারায় ফিরে যায়? তবেই তো বিএনপির হাত ধরে জামাত এসে যাবে।
কাজেই নির্বাচনের আগেই, সোজা কথায় এই টার্মেই লীগ সরকার কে এটা করতে হবে, এতে করে একটা বিশাল কাজ করে দেখানো হল, আর এতেই কিন্তু কথা আর কাজে মিল থাকার ( যেটা আমাদের রাজনৈতিক দল গুলোর থাকে না) পুরষ্কার হিসাবে জনগণ আবার তাদের নির্বাচিত করতে পারে, কি মনে করেন আপনি?
বিশ্লেষণটি বেশ চোখা। পাশাপাশি সংবাদপত্রের এই তথ্য-বিশ্লেষণটিতে নজর দেওয়ার বিনীত অনুরোধ জানাই।
[লিংক]
চলুক। (Y)
@বিপ্লব ভাই,
কালের কণ্ঠের এই খবরটি আজকে দেখেছি। হতাশ হওয়া ছাড়া আর কিছু করার নাই। এই সময়ে আওয়ামীলীগের সমালোচনা করলে প্রজন্ম চত্ত্বরের বিপক্ষ ভাবে। আন্দোলনের স্বার্থে আমি অনেক বিষয়ে ছাড় দেয়ার পক্ষে।
যৌক্তিক বিশ্লেষণ, পরে ভালো লাগলো। বিএনপির বর্তমান দুনোউকায় পা দেওয়াটা বুঝলাম কিন্তু জাতীয় পতাকা পোড়ানোর পরও আওয়ামেলীগের অদ্ভুত নীরবতাটা মোটা মাথায় ঢুকে নাইরে ভাই :-Y । সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময়তো চলে যাচ্ছে, মনে রাখবেন আজ না হলে কিন্তু কখনই হবেনা, কারন দেশের ইতিহাসে এমন সুবর্ন সময় কবে আসবে তাতো আমরা জানিনা।
@ছন্নছাড়া,
এটাতো খুবই সোজা কথা। একেই বলা হয় মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের ধর্ম নিরপেক্ষ দল। :guli:
@অর্ফিউস,
বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাঙ্গলে মামলা হয়। শেখের বেটির নামে ফেসবুকে স্টাটাস আসলে জেল হয়। কিন্তু জাতীয় পতাকা পুড়লে, শহীদ মিনার ভাঙ্গলে দেশ প্রেমিক দল নিরব থাকে।
@ডাইনোসর,
এটাই আমাদের ব্যার্থতা। 🙁
@ডাইনোসর, শহীদ মিনার ভাঙ্গার অপরাধে যুবলীগের নেতাকে সাধারন জনগন হাতে নাতে ধরে ফেলে, প্রেফতারের পর কেন তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়?
@ছন্নছাড়া,
পানিতে না পড়লে বিএনপির বোধ উদয় হবে না। অনেক বিভাজনের পরে এখন মস্তিস্ক সংকট বিএনপিতে তীব্র। রিজবি,ফকরুল এবং মাথা মোটা হান্নান শাহই শেষ ভরসা। এদের কাছ থেকে আশাই কতটুকু করতে পারি!!