ভাকাট্টা, ভা-কা-টা, ভা গা ডা লোট ধরনের উল্লসিত চিৎকারে সরগরম থাকে পুরানো ঢাকার যেই দিনটি, সেই দিনটাই সাকরাইন, পৌষ সংক্রান্তি বা ঘুড়ি উৎসব। জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহের শেষ দিকটা। পৌষের শেষ দিন, সংক্রান্তির সময়। পিঠে পুলি, উৎসব, উৎসর্গ, নিবেদন সব ছাপিয়ে যা উঠে আসে তা হল আনন্দ। পুরনো ঢাকার ছোট বড় সবাই একসাথে ঘুড়ি ওড়ানোর আনন্দে মেতে থাকে এই দিনটা। সারাদিন ঘুড়ি কাটাকাটি খেলে আবার সন্ধ্যায় বাজি পটকা ফুটিয়ে ফানুস উড়িয়ে উৎসবের সমাপ্তি। অনেককাল ধরে হয়ে আসছে এই ঘুড়ি উৎসব। সময়ের ব্যাপ্তিতে শত শত বছরে পৌষ সংক্রান্তির আয়োজনে উপাদান যোগ বিয়োগ যাই হোক, আনন্দের কমতি নেই মোটেও।
এ দিন পুরনো ঢাকা, মানে বুড়িগঙ্গার পাড় ঘেষা সব এলাকা, নতুন ঢাকার কিছু অংশ ছাড়াও জুরাইন, পোস্তগোলা, ফরিদাবাদ, গেন্ডারিয়া, দয়াগঞ্জ, নারিন্দা, উয়ারী, লক্ষীবাজার, আরমানিটোলা, বংশাল, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, সদরঘাট, তাঁতীবাজার, চকবাজার, লালবাগ, সূত্রাপুর, বাংলাবাজার, শাখারিপট্টি সহ আশেপাশের এলাকার আকাশে সারাদিন ঘুড়ি উড়ে। এ সময় অবশ্য ঢাকার অন্যান্য অঞ্চল, সারা দেশসহ পুরো বাংলাতেও কম ওড়েনা ঘুড়ি।
আজকের সময়ে বাড়ির ছাদে হাইটেক সাউন্ড, প্রবল হইচই আনন্দ উল্লাসকে বড়দের কেউ কেউ শব্দদুষণ বললেও এসবে ওদের গম্ভীর মৌন সম্মতি কিন্তু থাকে ঠিকই। মনে পড়ে তাদের ছোটবেলার কথা। সে সময়টাতে হয়ত তিরিশ চল্লিশটা বাড়ি পরপর বাজতো মাইক। ধুমধাড়াক্কা গানের ফাঁকে ফাঁকে হঠাৎ হঠাৎ ভেসে আসতো ধিরি ধিরি আর ভাকাট্টা, ভা-কা-টা, ভা গা ডা লোট চিৎকার। চানাচুর গরম মার্কা চোঙ্গাও ব্যবহার হত সেইসব চিৎকার কর্মে। আসল কাজ ছিল বেশ সকাল সকাল ছাদে উঠে পড়ে ঘুড়ি ভাসানো। ছাদ ছাড়াও খোলা মাঠ আর রেললাইন নদীর পাড়; এসব জায়গা থেকেও উড়তো রংবেরঙের ঘুড়ি। বাহারী সব নাম ঘুড়ির। চোখ্দার, মালা, বলদার, বাহার, নাক-পানদার, সেতার, লাল্লা, নীলা,রুমালদার, দেবাজ, গাহেল আরো কত কি। ঘুড়িগুলো দিনভর ফরফর করে রাজ করে বেড়াত আকাশে।
সংক্রান্তির দিনের দু একদিন আগেই শুরু হয়ে যেত নানান ঘুড়ি কিনে ফেলা আর সূতায় মাঞ্জা দেওয়া। পাতলা কাগজে আঠা মারা আড়া আর খাড়া বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরী হয় ঘুড়ি বা ঘুড্ডি। আড়া খাড়া কঞ্চির সংযোগস্থলে আর খাড়া কঞ্চির নিচের দিকে যে সুতা বাঁধা হয় সেটাকে বলে দানতারা। এই দানতারায় কেন্দ্রে বাঁধা হয় আসল ধারালো সুতার একপ্রান্ত। ধারালো মাঞ্জা দেওয়া বাকি সুতা থাকে হাতে ধরা নাটাইতে গুটানো। বাতাসে বুক পেতে ঘুড়ি যখন উড়ে পড়ে আকাশে, হাত বা নাটাইয়ের কারিগরিতে শুরু হয় তখন কাটাকাটি খেলা। একজনের ঘুড্ডি কাটা গেলে অন্য বিজয়ী পক্ষ থেকে উল্লাস ধ্বনি ভেসে আসতো, ভা-কা-টা, ভা গা ডা লোট। আবার যুদ্ধ শুরু, আমন্ত্রন দামামা বাজত আজাধিরি ধিরি শব্দে। আয়োজনে দেরী করত যারা, তারা পড়ে যেত পেছনে, উত্তেজনা আর কাটাকাটি খেলার দিনে দোকান থেকে ঘুড্ডি কেনা বা মাঞ্জা দেবার সময় কই? সুতরাং প্রস্তুতি শেষ; আগেভাগেই, কাটাকাটির দিন শুধুই কাটাকাটি।
কাটাকুটি খেলার খুব গুরুত্বপূর্ন ধারালো সুতা। নাটাই ভরা মাঞ্জা দেওয়া ধারালো সুতা না হলে শুধু ভাকাট্টা হয়েই দিন কাটবে, ভাকাট্টা করা হয়ে উঠবে না। মাঞ্জা দেবার সবচেয়ে চালু পদ্ধতিটা বলার আগে ঘুড্ডি সংক্রান্ত মজার মজার আরো কয়েকটা কথা বলে রাখি:
ঘুড্ডি কান্নি খায় = মানে আড়া কঞ্চি ভারসাম্যহীন, সমতা আনতে কঞ্চিতে ছোট কাগজের টুকরা প্যাঁচাতে হবে, তা না হলে ঘুড্ডি আকাশে লাট্টুর মত ঘুরতে থাকবে।
লোটে = মানে ঘুড্ডি তার নাটাইওয়ালার ইচ্ছেমত পাঁক খায়, এটা কাটাকাটিতে জেতার জন্য জরুরী।
তলদাবানি বা দাবানি = মানে লোটে এবং গোত্তা খায়।
খাড়াটান = মানে, লোটে এবং খাড়া উপরে যায়।
ঢিল = মানে ঢিল আর, অর্থাৎ সুতোয় ঢিল দেওয়া।
টান = মানে সুতো টানটান রাখা। টান বজায় রাখলে ঘুড়ি একেবারে তীরের মত খাড়া ভাবে উপর দিকে উঠতে থাকবে।
ম্যান্দা = মানে, ঘুড্ডির দানতারায় সমস্যা, তেজ নেই। ওষুধ: দানতারার উপরের প্রান্তে আরো দু’একটা গিঁঠ লাগবে।
ঘ্যারা = মানে, ভাকাট্টা হয়ে গেলে নাটাইওয়ালা বা পাইলট দ্রুত যখন তার বাকি সুতা নাটাইতে ফেরায়, মানে ঘ্যারা মারে।
টান্নি = মানে, ভাকাট্টা হয়ে গেলে নাটাইওয়ালা বা ঘুড্ডির পাইলট দ্রুত যখন তার বাকি সুতা নাটাইতে ফেরায়, মানে ঘ্যারা মারে সে সময় অন্য ছাদ থেকে কেউ ওই সুতা ধরে ফেললে দু পক্ষের টানাটানিই হল টান্নি। যুদ্ধচলাকালীন এই কোল্যাটারাল ক্ষতি কম কিছু নয়। ভাকাট্টা হওয়া ঘুড্ডি বা টান্নির সুতা যে পায় সে ই হয়ে যায় তার মালিক।
এবার মাঞ্জা প্রসঙ্গ:
ঘুড়ির সুতাকে ধারালো করার প্রক্রিয়া। প্রধান উপাদানগুলো হচ্ছে মাটির হাঁড়ি, শিরিষ আঠা, রং, পানি, সাগুদানা অথবা এরারুট পাউডার, হামনদিস্তায় গুড়া করা কাপড়ে ছাঁকা কাঁচের গুড়া বা চুর, আগুন, খবরের কাগজ, সুতা, নাটাই এবং আরো লাগবে সাহায্যকারী দু জন বন্ধু, নিদেনপক্ষে দুটো খুঁটি বা গাছ এবং রৌদ্র। দৈ’এর হাঁড়ির মত মাটির হাড়িতে সামান্য পানি দিয়ে শিরিষ এবং সাগুদানা / এরারুট দিয়ে জ্বাল দিতে হবে গলে ঘন তরল না হওয়া পর্যন্ত। গলে গেলে দিতে হবে রং, নাড়তে নাড়তে আগুন বন্ধ করে দিতে হবে। হাঁড়ি পুরোপুরি ঠান্ডা হবার আগেই সুতার প্রান্ত বাইরে রেখে সেই মাঞ্জা দ্রবণে ছেড়ে দিতে হবে সুতা’র রিল। বাইরে রাখা সুতার প্রান্তের গিঁঠ লাগবে নাটাই তে। হাঁড়ি আর নাটাইয়ের দুরত্ব হতে পারে সাত আট ফুট। এবার প্রথম বন্ধু বসবে মাঞ্জা মশলার হাঁড়ির কাছে, দ্বিতীয় বন্ধু কাঁচের চুর নিয়ে বসবে হাঁড়ি আর নাটাইয়ের প্রায় মাঝামাঝি জায়গায় আর নাটাইওয়ালা দাঁড়াবে শেষে। শুরু হল মাঞ্জা দেওয়া। মশলা বন্ধু খেয়াল রাখবে সূতা হাঁড়িতে ডুবিয়ে রাখায় আর বেশি রং যাতে না যায় সেদিকে, চুর বন্ধু সূতা পার করবে তার মুঠোভরা চুরের ভেতর দিয়ে আর নাটাইবন্ধু মারবে ধীরে ধীরে ঘ্যারা মানে সেই রঙে ভেজা আঠা আর চুর লাগা সুতা প্যাঁচাবে নাটাইতে। সূতা প্যাঁচানো হয়ে গেলে দেরী না করে দু চারটা খুঁটি বা গাছে ঘুরিয়ে সুতা শুকিয়ে নিতে হবে। শুকিয়ে গেলে আবার তা নাটাইতে পেঁচিয়ে নিলেই হয়ে গেল কাটাকাটি খেলার সূতা।
ঘুড়ি উৎসব, সংক্রান্তি বা অন্যান্য যে কোন সংক্রান্তি বা আনন্দ উৎসব এতকাল টিকে থাকার মানেই হল এগুলো আদর পায়। গ্রহণ করা হয় আর আদর পায় বলেই সেগুলো চর্চা হয়। চর্চা হয়, তাই টিকেও থাকে বহুদিন আমাদের সংস্কৃতিতে।
হিজলঘটা গাছের ছাল , সাগু , শিরিষের আঠা পানিতে জ্বাল দিয়ে লাটাই -এর সূতোয় জীবনের প্রথম মাঞ্জা লাগিয়েছিলাম ছয় বছর বয়সে। হামা দস্তা দিয়ে কাঁচের গুড়ো বানিয়েছিলাম সেই সূতোকে ধারালো করতে। জীবনের প্রথম ঘুড়িটা অবশ্য কাটাকাটি খেলায় কাটা পড়েছিল । 🙂
@সংশপ্তক,
আগে বলেন রাজেশ তালুকদারের লাল বোতলের চুর দিয়েছিলেন কি না? :))
হিজল ছালের কথা বলা হয়নি। অনেক আইটেম অবশ্য ঐচ্ছিক; দিলে ভালো না দিলে খুব একটা ক্ষতি নেই। তবে প্রথম বারেই ভাকাট্টা, এই ক্ষতি জীবনে ভোলা যায় না কি বলেন?
তিনবছর আগে পর্যন্ত আমি আর আমার ভাই ঘুড়ি উড়ানোর ব্যাপক চেষ্টা করতাম।কত ঘুড়ি কেনা হত,কাগজ কেটে বানানো হত,জেদ করে কাঠের লাটাইও বানায়ে নেওয়া হত।কিন্তু একটা ঘুড়িও দুজনের কেউ উড়াতে পারি নি 😀
@সাদিয়া মাশারুফ,
বলেন কি। দানতারায় সমস্যা ছিল হয়ত। ওটার ঠিক কেন্দ্র বিন্দুতে সূতা বাধলে ঘুড্ডি ভ্যান্দা হয়ে যাবে। দানতারার উপর অংশের সূতা নীচেরটা থেকে খুব সামান্য হলেও ছোট হতে হয়। তেমনি না হলে ঘুড়ি বাবাজী উপরে আকাশে উঠবে না, শুধু কাঁপাকাঁপি করেই সারা হবে। অন্য কোন সমস্যা না থাকলে, আশা করছি পরের বার পেরে যাবেন :))
ঘুড়ি উড়াবার সুখের সাথে পরিচিত না হলেও, লেখাটা সংগ্রহে রাখার মত। তাই করবো।
@স্বপন মাঝি,
ধন্যবাদ
বাল্যকালের ঘুড়ী উড়াবার স্মৃতিটা স্মরন করে দিয়ে মনে বেশ আনন্দ প্রদান করলেন কাজী সাহেব।
ধন্যবাদ
@আঃ হাকিম চাকলাদার,
মজার স্মৃতি তাই না? সুযোগ পেলে এখনো উড়াই তবে আনুসঙ্গিক মজাটা এখন বদলে গেছে। যা পাওয়া যায় তাই বা কম কিসে, কি বলেন?
যা ব্বাবা বংলার বুকে অন্ততঃ দুজন ‘রিটায়ার্ড পাইলটের’ সন্ধানতো মিললো! শুভেচ্ছা রইলো দু’জনের প্রতিই আসন্ন সংক্রান্তির উৎসবের! (F) (F)
@কেশব অধিকারী,
আসলেই, উপর দিকে তাকিয়ে ঘুড্ডির পেছন পেছন ছোটার যে কি আনন্দ, আহা। আছাড় খেতে খেতে যার তার সাথে ধাক্কা খেয়ে খেয়ে সেই ঘুড্ডি নিজের করে পেতে যে কি সূখ, যে না পেয়েছে সে বুঝবে না।
হা হা হা হা হা হা এই রকম আরো যে কত মিথ আছে তার কোন শেষ নাই। লাল বোতল, হা হা হা হা, দারুন। আর শোনেন, আপনার তালগাছ মন্তব্যে দেখেই বুঝতে পারছি যে আপনিও পুরানো পাপী :))
দিলেন যখন ঘুড়ি ভাকাটার কথা মনে করিয়ে মাঞ্জা নিয়ে সে সুযোগে আরো কিছু কথা বলে না হয় নিজের বুকটা একটু হালকা করি। ঘুড়ি কাটা খেলে যে নিজের নাকও কাটা পড়ে তা ঘুড়ি উড়ানো অভিজ্ঞ ব্যক্তিরাই শুধু বোঝে। ঘুড়ি কাটাকাটিতে ভাল ঘুড়ির সাথে ভাল করে মাঞ্জা দেয়া ধারালো সূতা সমন্বয় থাকা চাই, সাথে ঘুড়ি নিয়ন্ত্রের কৌশল ও সমান গুরুত্বপূর্ণ।
যা বলছিলাম মাঞ্জা প্রসঙ্গে, প্রচলিত কান কথা ছিল লাল বোতলের কাঁচের গুড়িতে নাকি ধার বেশী থাকে, তাই কাঁচের গুড়া তৈরী করতে লাল বোতল বেছে নিতাম অধিকাংশ সময়, পুরানো বাল্বও ব্যবহার করতাম মাঝে সাঝে। আমি কখনো হামান দিস্তায় কাঁচের টুকরা ছাতু করিনি( হামান দিস্তা না থাকায়)। হা মুঠো করে ধরতে পারি এমন শিলা পাথার ব্যবহার করতাম সব সময়। প্রথমে বোতল বা বাল্বকে কাপড়ে জড়িয়ে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে কাঁচের টুকরা গুলো সুবিধা মত ছোট করে নিতাম তারপর সেই কাঁচের গুড়ো পাকা মেঝেতে ফেলে শীল পাথর দিয়ে ঘষে ঘষে পাউডারে রূপান্তরিত করতাম।
এর পরের ধাপ ছিল আঠা তৈরী করা। বলা বাহুল্য সাগু ছিল প্রধান উপাদান সাথে আঠা ঘন করতে শিরি্ষ আঠা, তোমকা, ইসাবগুলার ভূসি মিশিয়ে নিতাম। লাক্ষ মাছে চট্টগ্রামের ভাষায় শুদ্ধ ভাষায় কী মাছ বলে জানা নেই। মাছটা সাগরে হয় আকারেও হয় বিশাল। সেই মাছের পোতনা( বেলুনের মত মাছের পেটে থাকে) ব্যবহার করেছি বেশ কবার। প্রচলিত বিশ্বাস ছিল এটা ব্যবহার করলে নাকি মাঞ্জা ভাল হয় আসলে কোন উপকারই নেই। আঠা তৈরী হলে সেই আঠায় প্রস্তুতকৃত কাঁচের পাউডার ভাল ভাবে মিশিয়ে নিতাম।
এই ধাপে এসে তক্কে থাকতাম কোন একজন সাহায্য কারী মন গলাতে। কারন এই পর্যায়ে সাহায্যকারীর ভূমিকা অনেকটা অবশ্যম্ভাবী হয়ে পড়ে। আমি সূতার প্রান্তটি নাটাইয়ে গিট দিয়ে সামান্য দূরে দাঁড়িয়ে দুহাতে নাটাই ঘুড়িয়ে সূতা পেঁচিয়ে নিতাম। আর সেই সাহায্যকারীর কাজ ছিল বাম হাতে সূতার বাণ্ডিলটা ধরে কাঁচের পাউডার মিশ্রিত সাগুর সেই আঠা ডান হাতে মুঠোয় নিয়ে ধরে থাকা। সূতাগুলো বান্ডিল থেকে মুঠোকরা হাতের মাঝ দিয়ে নাটাইয়ে চালান হয়ে আসত। উত্তেজনাকর মাঞ্জা দেয়ার অনিরাপদ এই কাজ গুলো করতাম সব সময় বাবা মায়ের চোখ ফাঁকি দিয়ে।
শেষ ধাপ ছিল সূতা শুকানো। ছাদে লোহার এক রড থেকে দূরবর্তী অন্য রডের সাথে পেচিয়ে সূতাগুলো শুকিয়ে নিতাম। এই ভাবে প্রস্তুতি চলত আকাশ যুদ্ধের। যদি ঘন ঘন ভাকাটা খাই সূতা কিনে পুনরায় চলত মাঞ্জা দেয়ার জটিল ধাপ।
ব্যয় বহুল এই কর্মটি চলত টিফিনের বাঁচানো পয়সাতে, সেটাতে না পোষালে চলত বাবার পকেট কাটা না হয় মায়ের ব্যাগ হাতিয়ে। লাজ লজ্জার মাথা খেয়ে আয় বাড়াতে মামা চাচাদের কাছ থেকে টাকা চেয়ে নিয়েছি বহুবার ।