হেঁটে যাই অনাগত মৃত্যুর দিকে

অনাঘ্রাত কৌমার্যের প্রাথমিক সময়ে
আত্নসৃষ্ট বর্ণসমষ্টির দিকে চাইলে
নরম বৃষ্টিবিন্দুর আলিঙ্গনাবদ্ধ এক
ভয়ার্ত কবুতরের কথা, তার শোকাহত
নিবেদনে সৃষ্ট উজ্জ্বল চিত্রকল্পের
কথা মনে হয়। একের পর এক
দেহজ পাঠ শেষ করেও কী চমৎকার
অজর, চিরযৌবনা।

যে বর্ণসমষ্টি সৃষ্টিতে কেটে যায়
আমাদের মধ্যবিত্ত দুপুর, রাত, সূর্যোদয়
থেকে গোধূলী থেকে সূর্যাস্ত, জনমন্ডলীর
নির্জন কোলাহলে আগমনমাত্র তার
কৌমার্য আহত হয়। তার সতীত্বের
ঐতিহাসিক গল্প হত্যার নিমিত্তে
তৎক্ষনাত আবির্ভুত হয় মহাকালের
দন্ড হাতে অনাদি, অকৃত্তিম মৃত্যুদূত।

আর সে শব্দশবের পৌরাণিক মিছিলে
আমরা হেঁটে যাই।সেখানে উচ্চারিত হয় না
প্রতিশোধের বীজমন্ত্র। গ্রহনকালের শবধূলো উড়িয়ে,
আমরা হেঁটে যাই অনাগত মৃত্যুর উপাখ্যানে।



আত্নহত্যা

একটু লক্ষ করলেই দেখবে
আত্নহনন থেকে আমি আমাদের
মধ্যবিত্ত এক দুপুর দূরে
অবস্থান করছি। যাপিত জীবনের
সেই সামাজিক দুপুরের ভগ্নাংশেই
আমাদের ঢাকা হতে পারে হিরোশিমা।

বিকেলের নগ্ন ঘাড়ে সূর্যের তপ্ত, ক্লান্তশ্বাস
বিকেলকে নিমেষেই গোধূলীতে পৌছে দেয়,
আর আমি হেঁটে যাই
বিষাদের বিবর্ণ বারান্দা ধরে।
একহাতে সূর্যাস্ত আমার, একহাতে সূর্যোদয়,
সজাগ শিরদাঁড়ায় জোছনা থাকে
চাঁদের সচেতন নজরে।

একট লক্ষ করলেই দেখবে
আত্নহনন থেকে আমার দূরত্ব
তোমাদের বিলাসী সকালে
এক চুমুক চা
আর,
আমার একটি জ্বলন্ত সিগারেট।



শহরের মৃত্যু আর মেঘের চলচ্চিত্র

সহসাই মৃত্যু আক্রান্ত করল শহর
কোন প্রকার পূর্বাভাস ছাড়াই।
প্রস্থানজনিত কারনে ভেঙে গেল
জমে ওঠা হাট, আপ্লুত শিৎকার
এবং অসম্পূর্ণ সঙ্গম।
শিক্ষানবিস দেবদূতেরা বিদ্যালয় খালি করে
অনুপস্থিতি প্রকাশ করল,
এমনভাবে বন্ধ হল সমস্ত কর্মঠ কবজি ও কোমর
যাকে নিঃসন্দেহে স্থির বলা চলে
উপোস দিল সবগুলো রেস্তোরা
আর চর্বিসর্বস্ব ভুড়ি।

শহরের সবগুলো পাখি নিহত হওয়া সত্বেও
আমার প্রাচীন জানালায় বসে আমি
দেখে চলেছি মেঘের চলচ্চিত্র। নির্বিকার।

প্রথম কবিতাটা একসময় সচলায়তনে প্রকাশিত হয়েছিল। আমি সাধারনত মুক্তমনায় লেখি বলেই এখানে রাখার জন্য আবার দিলাম।