সংসদে ৩০০ বিধিতে দেয়া বিবৃতিতে বাংলাদেশের পররাষ্টমন্ত্রী দীপু মনি সদ্য বলেছেন,

রোহিঙ্গাদের শরণার্থী হিসেবে গ্রহণ করার জন্য বাংলাদেশ সীমান্ত খুলে দিতে বাধ্য নয়। কারণ, বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক শরণার্থী-বিষয়ক কোনো আইন বা কনভেনশনে অনুস্বাক্ষরকারী রাষ্ট্র নয়। এ বিষয়ে বাংলাদেশের কোনো দায়বদ্ধতাও নেই।

সমুদ্রজয়ী মন্ত্রী দীপু মনি যখন খুব জোরালোভাবে বলেন যে বাংলাদেশ শরণার্থী কনভেনশনে স্বাক্ষর করা কোন দেশ নয় এবং সে জন্যই বাংলাদেশের কোন দায় নেই, তখন কিছুটা লজ্জা পেতে হয় বৈকি! আর অবধারিতভাবে একটি প্রশ্নটি উঠে আসে, তা হল, মানবিক আহবানে সাড়া দেয়ার জন্য কি কোন আইনে স্বাক্ষর করার দরকার পড়ে? মানবিক দায় মানবিক বোধ থেকেই উৎসারিত নয় কি? ভারত কি শরণার্থী কনভেনশনে স্বাক্ষর করা দেশ ছিল ১৯৭১ এ? তো ভারত যদি বলত, তাদের কোন দায় নেই, তা হলে বাংলাদেশী শরণার্থীদের কি অবস্থা হত, তা ভেবে দেখেছেন কি আমাদের অপেক্ষাকৃত তরুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী?

পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য থেকে প্রতীয়মান হয়, আমাদের পুশব্যাকের দায়বদ্ধতা আছে বোধহয়! এবং বিশ্বাস করুন, পররাষ্টমন্ত্রীর এ বক্তব্যকে সমর্থন করার মত লোকেরও অভাব নেই বাংলাদেশে! এমনিতে বাংলাদেশের মানুষ খুব বেশী প্রতিবাদ-মুখর; কাশ্মির, ইরাক, আফগানিস্তান, বসনিয়া, চেচনিয়া, কসোভো প্রভৃতি দেশের মুসলিম ভাইদের উপর বিধর্মীদের অত্যাচারের কারণে তারা গগনবিদারী ক্ষোভে ফেটে পড়েন! ইমাম সাহেবদের (যাদের অনেকের প্রশিক্ষণ আবার শুধু গুটিকয়েক মুসলিম অঞ্চলের নামেই সীমাবদ্ধ) জ্বালাময়ী ভাষণে অনেক সময় এদেশের সমব্যথী ও সচেতন মুসলিম সমাজ কাতারে কাতারে মাঠে নেমে পড়েন, ঢাকার রাজপথ প্রকম্পিত করে তোলেন শ্লোগানে-প্ল্যাকার্ডে! কিন্তু মায়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিমদের ব্যাপারে এদের মনোভাব সম্পূর্ণই ভিন্ন। এখানে ধর্মীয় ঐক্যকে ছাপিয়ে উঠে রোহিঙ্গাদের দুশ্চরিত্র, নষ্টামি, অভব্যতা-অসভ্যতা ইত্যাদি। কিন্তু সামান্য চিন্তা করলেই উপলব্ধি করা এমন কঠিন কিছু নয় যে, ধর্মীয় ঐক্যকে আসলে ছাপিয়ে যায় রোহিঙ্গা চরিত্র নয়, বরং স্বার্থের দ্বন্দ্ব। কাশ্মিরের মুসলমানদের জন্য রাস্তায় নেমে কিছু স্লোগান-আস্ফালন করলেই চলে এবং বেশ বাহবাও কুড়ানো যায় বটে; কিন্তু রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়াতে হলে তাদের যে জন্য সামান্য জায়গা ছেড়ে দিতে হবে, ঘরে এনে বসাতে হবে; সেই দায় নেয়ার মত গাধামো করার মানে হয়!
পুশ ব্যাক

মাননীয় পররাষ্টমন্ত্রী আরও বলেছেন,

আমাদের নিজেদেরই সমস্যা অনেক। নতুন করে সমস্যা তৈরি করতে চাই না। আমাদের প্রতি আপনাদের অনুরোধ সংগত নয়। আমরাও সীমান্ত খুলে দিতে বাধ্য নই। কিছুতেই আমরা জাতীয় স্বার্থ জলাঞ্জলি দেব না।

অনেক দিন আগে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন এক ভারতীয় পত্রিকার কলাম পড়েছিলাম। কলামটির বিষয়বস্তু ছিল বাংলাদেশের শরণার্থী সমস্যা নিয়ে। কলামটিতে তীব্র ভাষায় ভারত সরকারের সমালোচনা করা হয়েছিল এই যুক্তি দেখিয়ে যে, ভারত সরকার পাকিস্তানের কৌশলের কাছে পুরো মার খেয়েছে। পাকিস্তান কৌশলে পূর্ব পাকিস্তানে বসবাসরত একটি বিরাট জনগোষ্ঠী, বিশেষত হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ভারতের কাঁধে চাপিয়ে দিয়ে ভারতের অর্থনীতিকে পঙ্গু করার নীল নকশা সাফল্যে সাথে বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। কলামটির মূল বক্তব্য ছিল, পাকিস্তানের অত্যাচারে লক্ষ লক্ষ শরণার্থী ভারতে যাচ্ছে তা নয়, বরং পাকিস্তানের কৌশলের ফাঁদে পড়ে তারা ভারত যাচ্ছে। পররাষ্টমন্ত্রী দীপু মনির বক্তব্য পড়ে এই কলামটির কথা মনে পড়ে গেল। কলামটিতে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীকে পাকিস্তানের আভ্যন্তরীণ ব্যাপারে নাক না গলানোর কথা বলা হয়েছিল এবং শরণার্থীদের ফেরত পাঠানোর আহবান জানানো হয়েছিল।
কিন্তু ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী এই আহবানে সাড়া দেননি। বরং তিনি মুক্তিযুদ্ধের শুরুতেই তার সামরিক বাহিনীকে বাঙালি শরণার্থীদের জন্য বর্ডার খুলে দিতে বলেন। প্রায় এক কোটির উপর বাংলাদেশী শরণার্থীকে তিনি বোঝা বা ভারতের অর্থনীতির উপর চাপ মনে করেননি।

কিন্তু কথা হচ্ছে, এ কথা কি মিথ্যা যে, বাংলাদেশের অতিরিক্ত জনসংখ্যার উপর একটা চাপ সৃষ্টি করছে রোহিঙ্গারা? মানছি, এ কথায় কোন অসত্যতা নেই। কিন্তু বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীই বলেছেন, উনি অধিক জনসংখ্যাকে কোন সমস্যা মনে করেন না। তাহলে উনার পররাষ্টমন্ত্রীর ভিন্নমতের ব্যাখ্যা কি? তাছাড়া, রোহিঙ্গা জনসংখ্যাজনিত এই চাপের হার কতটুকু? বাংলাদেশ কি ইতিমধ্যেই জনসংখ্যার চাপে ন্যুজ নয়? এমন অনেক সময় দেখেছি, মানুষের ভীড়ে গাদাগাদি একটি বাসে, অতিরিক্ত দুজন লোককে উঠিয়ে নেয়ার জন্য প্যাসেঞ্জাররাই আহবান জানাচ্ছে বাসের ড্রাইভারকে, যখন বাইরে বিশাল ঝড় বইছে। রোহিঙ্গাদের জীবনে দশ নম্বর মহাবিপদসংকেত, ধেয়ে আসছে মহাসাইক্লোন, সামান্য কস্ট করে হলেও কি আমরা তাদের আশ্রয় দেব না? আমাদের ঘরদোর হয়ত কিঞ্চিৎ নস্ট হবে, ভীড় বাড়বে, কিন্তু ‘মানুষ মানুষের জন্য’ এগিয়ে আসবো না? হাত গুটিয়ে রাখব যখন তারা হাত বাড়িয়ে দিয়েছে আমাদের দিকে অথৈ নদী পার হবে বলে?

গভীর সমুদ্র বিজয়ী পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন,

বাংলাদেশে অবস্থানরত কয়েকটি রোহিঙ্গা সংগঠনকে সশস্ত্র-ভাবে মদদ জোগাচ্ছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। তারা মিয়ানমারের সাম্প্রতিক জাতিগত দাঙ্গাকে উসকে দিচ্ছে।মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ তাদের দেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের কাছে এ অভিযোগ করেছে।

বাংলাদেশের একটি মৌলবাদী দলের উস্কানি যে থাকতে পারে না, তা নয়। কিন্তু পররাষ্টমন্ত্রীর উপরিউক্ত বক্তব্যে রোহিঙ্গাদের সমস্যাকে অগভীর দৃষ্টিতে দেখার প্রচ্ছন্ন ইঙ্গিত নেই কি? রোহিঙ্গাদের জাতিগত সমস্যার শিকড় অনেক গভীরে প্রথিত, যা বাংলাদেশের একটি মাঝারি দলের নিয়ন্ত্রণে থাকার কথা চিন্তা করাটাই একটা মারাত্মক ভ্রম নয়কি?

নবম শতকে যে মুসলিম জনগোষ্ঠী বার্মার উত্তর পশ্চিমে বঙ্গোপসাগরের উপকূলে অবস্থিত আরাকানে বসতি গড়ে, পরে তারাই রোহিঙ্গা নামে পরিচিত হয়। কিন্তু বহু জাতিগোষ্ঠীতে ( বর্মী, চীন, কাচিন, লোলোমুশো, আরাকানী, থাই, মন-খেমার, ইন্দো-বর্মী ইত্যাদি) বিভক্ত হলেও বর্মী বৌদ্ধরা রোহিঙ্গাদের সহ্য করতে পারত না। আরাকানীদের মুল জনগোষ্ঠি সর্বদাই মধ্য-বার্মা ও আরাকান উপকূলভাগে পার্বত্য অঞ্চলের দ্বারা বিচ্ছিন্ন ছিল মূল বার্মা থেকে। তাছাড়া, ১৭৮৪ সালে বার্মার রাজা বোদপেয়া কনবাউং আরাকান দখল করার পরে বর্মী কর্তৃপক্ষের নির্যাতনে হাজার হাজার আরাকানী শরণার্থী আরাকান থেকে চট্টগ্রাম ইস্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানির ভূখণ্ডে আশ্রয় গ্রহণ করে। বর্মীদের আরাকান দখল, পূর্ব বাংলার উপর তাদের দাবী প্রতিষ্ঠা, বা ইংরেজদের দ্বিতীয় শ্রেণীর প্রতিপক্ষ হিসাবে গণ্য করার কারণে প্রথম ইঙ্গ-বর্মী যুদ্ধ অনিবার্য হয়ে উঠে ১৮২৪-২৬ সালে যা ব্রিটিশরা জয় করে নেয় এবং অজেয় বর্মী রাজ্যের ধারনা মুছে যায়। বৃটিশ উপনিবেশকারীদের প্রতি স্বভাবতই অনুগত রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠীর উপর বার্মিজ জাতির অত্যাচারের মাত্রা আগের চেয়ে বেড়ে যায় এবং হাজার হাজার রোহিঙ্গা নিহত হয় ১৯৪৮ সালে বৃটিশ বিতাড়নের অব্যবহিত আগে এবং পরে। অসংখ্য রোহিঙ্গা গ্রাম ধ্বংস হয়। পরে স্বাধীন বার্মায় ১৯৮২ সনে একটা আইন করা হয় যে, সংখ্যালঘুদের সরকারী স্বীকৃতি পেতে হলে তাদের অবশ্যই প্রমাণ করতে হবে যে তারা ১৮২৪-২৬ সনের আগে থেকেই মায়ানমারে বসবাস করত, যখন প্রথম ইঙ্গ-বর্মী যুদ্ধ অনুষ্ঠিত হয়। যদিও রোহিঙ্গারা বলছে, তারা ১৮২৪ নয়, বরং তারও অনেক আগে থেকেই বার্মায় বসবাস করত এবং কালা-দান নদীর পূর্ব তীরে তারাই ছিল সংখ্যাগরিষ্ঠ; কিন্তু মায়ানমার সরকার উপরিউক্ত আইনকে ব্যবহার করে রোহিঙ্গাদের পরিণত করে দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিকে। শুধু তাই নয়, তাদেরকে দমানোর জন্য দুই সন্তান বাধ্যতামূলক আইন করা হয়েছে। ভাষা-গত ও ধর্মগত মিল থাকার কারণে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশের অবৈধ অভিবাসী হিসাবে দেখার প্রবণতাও রয়েছে।
রোহিঙ্গা অভিবাসী শিশুর কান্না

এই যখন প্রেক্ষাপট , যখন সর্বত্র বারুদের স্তূপ, তখন একটি সামান্য ম্যাচের কাঠিই জ্বালিয়ে দিতে পারে পুরো জনপদ, উস্কানি দিতে পারে জাতিগত দাঙ্গায় (সাম্প্রতিক সময়ে কিছু রোহিঙ্গা মুসলিম কর্তৃক এক বর্মী মহিলাকে ধর্ষণের অভিযোগ থেকে যার সূত্রপাত), সেখানে উস্কানি-দাতার ভূমিকাকেই বড় করে দেখেছেন আমাদের মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী। অথচ কি সীমাহীন অত্যাচার আর গুলির মুখে পড়ে বিক্ষুব্ধ বিপদসংকুল নাফ নদী পাড়ি দিয়ে রোহিঙ্গাদের আসতে হয় বাংলাদেশে, তা বোধহয় তিনি ভেবে দেখার সময় পাননি!
বছর দুয়েক আগে কক্সবাজার ঘুরতে গিয়ে দেখেছি কি অবর্ণনীয় জীবন যাপন করছে রোহিঙ্গারা। প্রসঙ্গত, ১৯৭৮ ও ১৯৯১-৯২ সনে প্রায় পাঁচ-লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করে। সত্যিকার অর্থেই পোকামাকড়ের ঘনবসতি তাদের। দেখেছি হাড়জিরজিরে শিশু ও মা। স্থানীয় লোকজনের সাথে আলাপ করতেই বেরিয়ে এলো দুনিয়া জোড়া বদনামভরা কাহিনী। রোহিঙ্গারা নাকি বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বের এ জেলাটিকে দুষিত করে ফেলছে। চুরি, চোরাচালান, মাদক, যৌন-বৃত্তি – কি নেই যে এরা করে না! বেশ বোঝা গেল, রোহিঙ্গারা বাংলাদেশেও বন্ধুহীন।

এটা সত্যি যে রোহিঙ্গারা অনেক অপরাধমূলক কাজের সাথে জড়িত, এবং অনেক প্রমাণও রয়েছে। কিন্তু পেছনের কারণটি খুঁজে বের করা দরকার নেইকি? রোহিঙ্গারা যে পরিবেশে বসবাস করছে, সেখান থেকে এমন পেটি-অপরাধগুলো করিয়ে নেয়া সমাজের সুবিধাবাদী গোষ্ঠীর পক্ষে একান্তই অসম্ভব? ঢাকার বস্তিগুলোকে বলা হয় অপরাধের স্বর্গরাজ্য! কিন্তু বস্তিবাসী এই লোকগুলো কি সমাজের উচ্চবিত্তদের সহজ প্রলোভনের শিকার নয়? ঢাকার বস্তিবাসী বা রোহিঙ্গারা কি স্বপ্রনোদিত অপরাধ করে, নাকি এদের দিয়ে মর্জিমাফিক অপরাধ করিয়ে নেয় সমাজের তথাকথিত উঁচুতলার ভদ্রজনেরা?
রোহিঙ্গারা জীবন বাঁচাতে বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা করে নৌকায় চড়ে আর বিপদসংকুল সমুদ্র পাড়ি দিয়ে। কিন্তু বাংলাদেশ পুশ ব্যাক করাতে, এখন তারা আরো বিপদসংকুল সমুদ্র পাড়ি দিয়ে থাইল্যান্ড বা মালয়শিয়ায় পাড়ি জমাতে চেষ্টা করছে। কিন্তু সেখানার নৌকর্মকর্তারা নাকি অসহায় লোকগুলিকে মাঝপথেই ফিরিয়ে দেয়। কখনো কখনো সমুদ্রেই ছিটকে পড়ে তাদের দেহ ও নৌকা!

আমাদের পররাষ্টমন্ত্রীর বক্তব্যে তারা নিশ্চয়ই বাংলাদেশ থেকেও এখন এভাবে প্রত্যাখ্যাত হবে! কিন্তু রোহিঙ্গারা যাবে কোথায়? মায়ানমারে? কিন্তু সেখানেও তো সরকারী ছত্রছায়ায় অহিংস নীতির ধ্বজাধারী বর্মিজ বৌদ্ধরা অস্ত্র তাক করে রয়েছে তাদের দিকে! তাহলে? একটা উপায় অবশ্য আছে, যার ইঙ্গিত আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কথাতেই আছেঃ

বাংলাদেশ কখনোই তাদের প্রতি অমানবিক আচরণ করেনি এবং করবে না। জলপথে যেসব রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা করছে তাদের খাবার, ওষুধ এবং প্রয়োজনীয় জ্বালানি বিজিবি সরবরাহ করছে।

রোহিঙ্গারা এখন মাঝ সমুদ্রে অবস্থান করলেই পারে! তাদের জন্য রয়েছে বাংলাদেশ সরকার, বিজিবি, মানবাধিকার সংস্থা, ইউএনএইচসিআর! তারা মাঝ সমুদ্রে রোহিঙ্গাদের বোটে তুলে দেবে খাবার, ঔষধ আর প্রয়োজনীয় জ্বালানি! যেখানে রোহিঙ্গাদের কোন বন্ধু নেই, রাষ্ট্র নেই, ভূখণ্ড নেই, সেখানে সমুদ্রই তো তাদের ঠিকানা হওয়া উচিত! সুতরাং, সমুদ্র বিজয়ী মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে সামান্য কিছু সমুদ্র জল ছাড় দিতে হবে কেবল, যাতে অন্তত রোহিঙ্গাদের নৌকাগুলো ভেসে থাকতে পারে!
নৌকায় অসহায় নারী-শিশু

সত্যি বলতে কি, আমরা পুশে বিশ্বাসী, পুলে নই। আমরা ১৯৭১ এ পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর নির্যাতনের মুখে নিজেদের পুশ করে দিয়েছি ভারতে, স্বাধীন দেশে পেটের দায়ে সশরীরে পুশড হয়েছি মিডল ইস্টে লাখে লাখে, নিজেদের অমূল্য জমিন বাঁচাতে এখন আবার রোহিঙ্গাদের পুশ ব্যাক করে ঠেলে-ফেলে দিচ্ছি মাঝ সমুদ্রে। আমাদের পুশের ব্যাপক ক্ষমতা ও দক্ষতা থাকলেও পুলের যেন একদমই নেই! কারণ অন্যদের কাছে টানার জন্য যে উদারতা দরকার, তা হয়ত আমাদের সত্তায় নেই! পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যে অন্তত তাই মনে হয়!