ছোট বেলায় মাঝে মাঝে দেখতাম আমার কিছু কাজিন, কাকা ও পাড়া-প্রতিবেশী এয়ার-গান কাঁধে নিয়ে শিকারি বেশে চোখেমুখে যথাসম্ভব বীরের মত অভিব্যক্তি ফুটিয়ে তুলে শিকারে বের হত। এবং দিনান্তে কয়েকটা গুলিবিদ্ধ, আহত ও নিহত কাক হাতে নিয়ে দোলাতে দোলাতে বিশ্বজয়ের গৌরবের মত সম গৌরবান্বিত হাসি হাসতে হাসতে বাড়ি ফিরত। আশেপাশের বাড়ি বাড়ি ঘুরে সবাইকে তাদের স্বহস্তে গুলি ক’রে মারা কাকগুলো দেখিয়ে অনাবিল তৃপ্তি , আনন্দ ও বীরত্ব অনুভব করত। কোন এঙ্গেল থেকে বোকা কাককে তীক্ষ্ণবুদ্ধি খাটিয়ে গুলি করেছে, কীভাবে পায়ের আঙুল চুপিসারে টিপে টিপে নিঃশব্দে এক’পা আধ’পা ক’রে এগিয়ে গেছে গুলি ছোঁড়ার যথোপযুক্ত দূরত্বে আর বেকুব কাকটি বুঝতেই পারেনি! এক গুলিতেই কুপোকাত করল কাক ব্যাটাকে , এ-কি সোজা বুদ্ধির খেলা! কীভাবে গর্ধব কাকটির গোবরভর্তি মস্তিষ্কে বা হৃৎপিণ্ডে বা পাখায় তাক ক’রে নিশানা ছোঁড়া হয়েছিল, নির্ভুল নিশানায় কাকটি বিদ্ধ হয়ে অতি কর্কশ-কণ্ঠে অহেতুক বিশ্রীভাবে চিৎকার করতে করতে ইহলোক ত্যাগ করেছে সেসব বীরত্বপূর্ণ কাক-মারা ইতিহাস বর্ণনায় নিজেরাই কয়েকদিন বেশ মুখরিত থাকত।
দর্শক-শ্রোতাগণও বীর কাক-শিকারিদের বীরত্বের কাহিনী নিজকানে শুনে এবং তাজা রক্তমাখা কালো কুৎসিত মরা কাকগুলোর মৃতদেহ স্বচক্ষে প্রত্যক্ষ ক’রে বারে বারে অভিভূত হত। আরে বাহ এরা তো প্রকৃত বীর! এ তো হাতে নাতে চাক্ষুষ প্রমাণ! তারা শিকারিদের উদ্দেশ্যে কিছু প্রশংসাবাক্য এবং আশীর্বাদবাক্যও উচ্চারণ করত। যেমন; ছেলের নিশানা কী দারুণ! এই ছেলে তো যেনতেন ছেলে নয়, একদিন অনেক বড় হবে। ইত্যাদি। কাক শিকার ও মরা কাক দেখে আমিও যে উল্লসিত হতাম না , তা কিন্তু নয়! ছোট ছিলাম বুদ্ধি-বিবেচনা তো ছিলনা। এখন মনে পড়লে মনে হয় কত নিষ্ঠুরই না ছিল সে উৎসব! ঠিক যেন ক্ষুদ্র জলাশয়ে ঢিল ছুঁড়ে ব্যাঙাচি হত্যা করার মত।
কারো উল্লাস, আর কারো জীবননাশ!
আমার পরিচিতদের মধ্যে কেউ কাকের মাংস খায়না। তবে কেন ওরা কাকগুলোকে শুধু শুধু খেলাচ্ছলে মেরে ফেলে দিত! কারণ হচ্ছে কাক মেরে মেরে ওরা ওদের হাত ও নিশানা পাকা করত। শিকারে আত্মবিশ্বাস এবং সাহস বাড়াত। এভাবে কাক মারতে মারতে পোক্ত শিকারি হয়ে ওরা ক্রমে ক্রমে শিকার করতে শুরু করত বক, ময়না, টিয়া, বুলবুলি প্রভৃতি। একেকদিন একেকটা নতুন নতুন ধরনের পাখি মেরে ওরা রাজ্যজয়ের উল্লাসে আত্মহারা হত। সবার বাহবা পেয়ে আরো বেশি বেশি উৎসাহী হয়ে উঠত আরো আরো শিকারে। বিপুল পরিমাণে বাহবা, আত্মবিশ্বাস ও সাহস সঞ্চয় ক’রে ওরা একদিন সমুদ্র-উপকূলে চ’লে যেত ঝাঁকে ঝাঁকে শীতের অতিথি পাখি শিকার করার জন্যে। সৌভাগ্যের জোরে দুই একজনের ভাগ্যে এয়ার-গানের স্থলাভিষিক্ত করেছিল সত্যিকারের বন্দুক । অবশ্য বন্দুকগুলো লাইসেন্স করান ছিল।
শিকারের নেশা ওদেরকে পেয়ে বসত। শীতের মৌসুমে এটাকে মৌলিক চাহিদার মত মনে হত ওদের। একদিক থেকে বিবেচনা করলে অবশ্য মৌলিক চাহিদাই বটে! খাদ্যের যোগাড়! প্রাকৃতিক ইকো-সিস্টেমের আওতাভুক্ত সবার তো খাদ্য-খাদক সম্পর্ক! কেউ খাদ্য, কেউ বা খাদক। কনকনে শীতের চিনচিনে কুয়াশাভরা রাতে সারা রাত চলত আড্ডা, জল্পনা-কল্পনা, পরিকল্পনা। সাথে চলত শীতের মজাদার পিঠে-পায়েস, গরুর দুধের চা, খেজুরের গুড়ের মোয়া, আরো কত কি! পরিকল্পনা হত কাল কোন জায়গায় শিকারে যাবে, ক’জন যাবে, কে সামনে থাকবে, কে পেছনে থাকবে ইত্যাদি। নিদ্রিত, নিস্তব্ধ নিশি-ভোরে কয়েকটা মোটরবাইকে একযোগে মারাত্মক আওয়াজ তুলে ওরা ছুটত শিকারের উদ্দেশ্যে। একেকটা বাইকে কমপক্ষে তিনজন বসত। অভিযাত্রীদের মধ্যে মাত্র ক’জন ছিল শিকারি। বাকিরা কেউ দর্শক, কেউ সহায়ক, কেউ উৎসাহদাতা। কেউ বা শিকারকরা পাখিগুলো বাইকের পেছনে ব’সে দু’হাতে ধরে দেশবাসীদেরকে নেড়েচেড়ে দেখাতে দেখাতে বাড়িতে বহন করে আনার দায়িত্ব পালন করতে যেত। সকাল ৯-১০টার মধ্যে ভোম ভোম শব্দে মোটর-বহর এসে হাজির হত বাড়িতে। উঠোনে পড়ত বিভিন্ন প্রজাতির, বিভিন্ন আকারের, বিভিন্ন বর্ণের আহত-নিহত পাখির স্তূপ। চারদিক থেকে সে দৃশ্য দেখতে হাজির হত অনেক দর্শনার্থী। সৌভাগ্যবানদের ভাগে দু’একটা মরা পাখি প’ড়েও যেত। এই রকম দৃশ্যের অবতারণা অনেক বাড়িতেই হত। বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চলেও হয়। কোনো কোনো অঞ্চলে পশুও শিকার করা হয়। যেমন; হরিণ, ভালুক ইত্যাদি। পক্ষীমাংস-ভোজ উৎসব চলত কয়েকদিন ব্যাপী, খুব ধুমধাম ক’রে। বিশেষ বিশেষ আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িও পাঠান হত আস্ত পাখি বা রান্না করা পক্ষীমাংস।
আজকাল টিভি দেখতে বসলে ছোট্ট বেলার এইসব স্মৃতিগুলো মনে প’ড়ে যায়। প্রায়শই টিভিতে খবরে দেখতে পাই যে পাখির মত ক’রে কিছু প্রাণীকে গুলি ক’রে মেরে ফেলা হচ্ছে; গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত গণতান্ত্রিক সরকারের গণতান্ত্রিক নির্দেশে। এই প্রাণীগুলো অবশ্য পাখাবিশিষ্ট নয়, হাত-পা বিশিষ্ট; দেখতে মানুষের মত। এদের গুলিবিদ্ধ মৃতদেহও স্যাটেলাইটের মাধ্যমে বিশ্ববাসীকে দেখান হয়। এদের পাখির মত বা জীবাণুর মত মৃত্যুতে অনেক শান্তিপ্রিয় মানুষ বেশ শান্তি ও স্বস্তির নিঃশ্বাসও ফেলে থাকে। অনেকেই উল্লসিত হয়। এই মানুষগুলোর পাখি-মৃত্যুতে বিশ্বের দরবারে সব সময় একই সংবাদ পেশ করা হয়। যেমন;মরা অমুক বিরাট দাগী আসামী ছিল, সে খুনী-চোর-ডাকাতও ছিল। এলাকাবাসীরা তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ ছিল, পুলিশ অনেকদিন ধরে তার পিছু নিয়েও তার কোনো হদিস পাচ্ছিল না। পরিশেষে র্যা বের সাথে ভয়ানক ক্রসফায়ারিং হয়। প্রথমে সে গুলি ছোঁড়ে, শেষে প্রাণ বাঁচাতে র্যা বও পাল্টা গুলি ছোঁড়ে। দু’পক্ষের বন্দুকযুদ্ধ চলতেই থাকে, চলতেই থাকে। এক পর্যায়ে র্যা বের নিষ্ঠা এবং আল্লা ও সরকারের রহমতে র্যা ব সক্ষম হয় দাগী আসামীর ইহলীলার অবসান ঘটিয়ে দিতে। মারহাবা র্যা ব, মারহাবা, বাহবা। মৃত দাগীটির মৃতদেহের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে লুকান অবস্থায় পাওয়া যায় কাটা রাইফেল, তালি-দেয়া রাইফেল, পিস্তল, বন্দুক, এ কে ৪৭, আরো নাম না জানা অনেক অনেক মরণাস্ত্র। এবং সে অস্ত্রগুলো সাজিয়ে গুছিয়ে বিশ্ববাসীকে প্রদর্শন করান হয়। এতসব তথ্য-উপাত্ত দেখে ঈমান আনতে অনেকেই বাধ্য হয় যে এ-তো আসলেই মহাসন্ত্রাসী ছিল! মানবজাতি ও মানবসভ্যতার তরে বিশাল হুমকি স্বরূপ ছিল। কিন্তু সবচেয়ে আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে আসামীর সাথে এতগুলো অস্ত্র থাকা সত্ত্বেও আজ পর্যন্ত ক্রসফায়ারিঙে কোনো র্যা ব আহত বা নিহত হয়নি! র্যা বের উপরে আল্লার বিশেষ রহমত আছে , এ বিষয়ে ঈমান আনতেই হয় ।
কোনো মানুষ অপরাধী হলেই তাকে কীট-পতঙ্গের মত মেরে ফেলে দিতে হবে! তাহলে দেশে সরকার বা আইনের কী দরকার! আইনি প্রক্রিয়ায় বিচার করতে যদি সরকার ব্যর্থ বা অক্ষম হয় সেটা কার অক্ষমতা বা ব্যর্থতা? “অপচয়কারী শয়তানের ভ্রাতা” তাই হয়ত এই স্বল্প খরচের আইন প্রবর্তন করা হয়েছে অনেক বিবেক-বুদ্ধি খরচ ক’রে। আসামীদের খাওয়ানো, পরানো , তাদেরকে প্রহরী দ্বারা পাহারা দেওয়ানো ইত্যাদি ইত্যাদি জিনিস অনেক খরচান্ত ব্যাপার। তাছাড়া জেল-হাজতে জায়গারও সংকুলান হচ্ছেনা। দেশেও জনসংখ্যার বিস্ফোরণ ঘটেছে। অল্প খরচে সব জটিল সমস্যার আশু সমাধান! এক গুলিতে অনেক সমাধান। একটা গুলি ছুঁড়লে একটা দাগী শেষ। মামলা খতম। এত কম খরচ ও কম ঝামেলায় এমন সুবিচারের সুব্যবস্থা পৃথিবীর আর কোন দেশে আছে? দেশের এতসব বড় বড় সমস্যার কথা ভেবেই মনে হচ্ছে এমন একটি মহান আইন চালু করা হয়েছে। এই মহান আইন যারা পরিকল্পনা করেছেন ও তা বাস্তবে প্রবর্তন করেছেন তাদের বুদ্ধিমত্তা প্রশংসার দাবীদার।
@আকাশ মালিক,
গলার হারে দোলাও তারে গাঁথা তোমার ক’রে সারা। ( আমার সকল রসের ধারা)
সমীরণ ব’হে যারে ফুলে ফুলে ঢলি ঢলি (আয় তবে সহচরী)
দাদা, যেমন বলা হলো;
রিনা কাজ করে।
আবার; রিনা, কাজটি শেষ ক’রে (কোরে) এদিকে এসো।
পাংচুয়েশান মার্ক না দিলে বলে উচ্চারিত হবে না ব’লে( বোলে)উচ্চারিত হবে সেটা নিয়ে একটা দ্বিধা থেকে যায়। লেখাটি ভাল পাইছেন সেজন্য ধন্যবাদ দাদা।
অসাধারন আপনার গদ্যের হাত।ভাল লাগল খুব।নিচের লাইনগুলোতে তো আমার মনের কথা চলে এসেছে।
তবে ফরিদ আহমেদের সাথে একমত হতে পারলাম না।আমি আপনার গদ্যের চেয়ে পদ্যেরই বড় ফ্যান।গদ্য লিখতে থাকুন।তবে, আশা করি আমার মত যারা আপনার কবিতার ভক্ত তাদেরও ভবিষ্যতে নিরাশ করবেন না।
@অভ্র ব্যানার্জী,ধন্যবাদ। গদ্য, পদ্য দুটোই লিখতে চেষ্টা করব।
অসাধারণ! উল্লাসভরা পাখি শিকারের কাহিনি পড়তে পড়তে ঘুরেফিরে যে কথাগুলি মাথায় আসছিল, তাই আপনি শেষের প্যারাগুলোতে প্যারালালি তুলে ধরলেন, তাও অতি দক্ষতার সাথে! পাখি শিকার আর দাগী শিকার। শিকারির আদিম উল্লাস আর গুলিবিদ্ধ মৃতদেহ প্রদর্শনের তৃপ্তি, অহংকার! সত্যি অসাধারন সাযুজ্য! মানুষ আর প্রানী বহে সমান্তরাল!
আপনার লেখা আরও নিয়মিত পড়তে চাই। গদ্য, পদ্য – দুটোই! পোস্টের জন্য (F) (F) (F)
@কাজি মামুন, আমাদের দেশে ত কাকের অভাব নেই। কিছু মেরে ফেললে শিকারির হাতও যেমন পোক্ত হয় তেমনি কয়েকটি কাকের কাকা থেকে অন্তত রেহাই পাওয়া যায়। মানুষেরও অভাব নেই। কিছু কিছু মেরে ফেললে জনসংখ্যার চাপ কিছুটা কমে আবার শিকারিরাও উল্লাস অনুভব করে। আপনার লেখাও নিয়মিত পড়তে চাই। আপনার গল্পগুলো খুব অর্থবহ।
সময়ের অভাবে অনেক ভাল লেখা পড়েও; আমরা, ভাল লেগেছে বলে, কেটে পড়ি। আপনার লেখা পড়ে, সময়ের অভাবে বলছি, চমৎকার!
চমৎকার বলছি আধেয়-র জন্য, চমৎকার বলছি আধারের জন্য।
আমাদের অহম নিয়ে বিদ্রুপ, আমাদের অন্ধত্ব বারবার মনিয়ে করিয়ে দে’য়ার আরো আরো লেখা চাই।
ভাল থাকুন।
@স্বপন মাঝি,সময়ের অভাবের পরেও যে লেখাটি পড়েছেন এবং কিছু গুরুত্বপূর্ণ, সুন্দর কথা বলেছেন সেজন্যে ধন্যবাদ। জাতি হিসেবে আমরা কোন দিকে তলিয়ে যাচ্ছি জানিনা। যত দিন যাচ্ছে, আমাদের একটা বৃহৎ অংশ; যতবেশি অপকর্ম করতে পারছে ততবেশি আনন্দ ও গৌরব উপভোগ করছে।
বাঙ্গালী সৌখিন জাতি কে বলে ! আমরা খালি খেতে জানি। একজনকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, সে পাখি মারে কেন ? উত্তরে বলেছিল- সেকি, খাওয়ার জিনিস, খাব না ? বোঝেন অবস্থা। লেখাটি বেশ দরকারি।
@মোজাফফর হোসেন, বোকা পাখিগুলো এতদূর থেকে উড়ে এসে আমাদের ধরা দেয়। আর আমরা তাদের খবনা! আমরা কি এতই বোকা?
পশু-পাখির উপর অত্যাচার নিয়ে লেখা তেমন দেখিনা,ধন্যবাদ এটা নিয়ে লেখার জন্য। পশুপাখির প্রতি আমার মায়া আছে,আগে রাতের বেলা হাটতে বের হলে ২টা কুকুর পাশে ঘুরঘুর করতো,ভালো জাতের কুকুর কারা যেনো ফেলে রেখে গেছিলো,বেশ ভালো লাগতো ওগুলাকে নিয়ে হাটতে।
আমি জানিনা কিভাবে মানুষ অযথা শিকার করে পাখি মারতে পারে,কুকর-বিড়ালকে ঢিল মেরে মজা পেতে পারে। এগুলো থেকেই ধীরে ধীরে নিষ্ঠুর একটা মন তৈরি হতে পারে যা হয়তো মানুষ খুনের দিকে নিয়ে যায়, এ ব্যাপারগুলো নিয়ে গবেষণার প্রয়োজন।
আবারো ধন্যবাদ গুরুত্বপূর্ণ লেখাটির জন্য, হয়তো এক-দুইজন হলেও সচেতন হবে লেখাটি পড়ে।
@রামগড়ুড়ের ছানা,আমাদের দেশে পশু-পাখিদের যারপর নেই দুরাবস্থা। গৃহপালিত গরু, ছাগলকেও মানুষে মারধোর করে থাকে। কিন্তু পাশ্চাত্যে তাদের আদর-কদর মানুষের চেয়ে বেশি। পোষা কুকুর, বেড়ালেরা রাজকীয় জীবন যাপন করে।
পশ্চিমের পাখিগুলো শীতের কাছ থেকে প্রাণ বাঁচাতে পুবে গিয়ে, মানুষের হাতে প্রাণ হারায়। ধন্যবাদ আপনার মতামত প্রকাশের জন্যে।
@তামান্না ঝুমু,
তামান্না, আপনি অকারণে apostrophe ( ’ ) বা punctuation mark কেন দেন, ইচ্ছে করে না টাইপের ভুলে? যেমন-
পাখি প’ড়েও যেত।
ব’সে দু’হাতে ধরে-
মনে প’ড়ে যায়।
প্রত্যক্ষ ক’রে বারে বারে
লেখা ভালা পাইছি কিন্তু (Y)
আসলেই ঝুমু একজন মানুষ আরেকজন মানুষ কে হত্যা করে বাসায় যেয়ে কি নিশ্চিন্ত তার শিশু কে আদর করে বউ কে ভালোবাসে আর নিদ্রা যায় এও কি সম্ভব? আমার পিতা ও সদ্য র্যাবে বদলি হইছে আমি তাকে প্রতিদিন খুব খুটিয়ে খুটিয়ে দেখি আমার পিতার শরিরে কোন মানুষের রক্তের দাগ নাই তো!এই হাসি খুশি সদা প্রফুল্ল মানুষটা কাউকে খুন করতে কি পারবে?
আসলে এই মানুষের অরন্যে গাছেদের অনেক সামাজিক মনে হয়
ধন্যবাদ চমত্কার গদ্যের জন্য তবে আমিও আর সবার মত বলতে চাই কবিতার চেয়ে আপনার গদ্যের হাতটাই কিন্তু ভালো আশাকরি আরো বেশি বেশি লিখবেন
@মামুন আব্দুল্লাহ,
সম্ভবই ত মনে হয়। কারণ অনেক পেশাদার খুনীরই পরিবার আছে।
শিকার নিয়ে আমার মনের কথা গুলো যেন শৈল্পিক রূপে ফুটে উঠেছে আপনার লেখায়। তবে পশুপাখি হত্যা নিয়ে লেখাটা আরো একটু দীর্ঘ হলে আরো ভালো হত।
@রাজেশ তালুকদার, চেষ্টা থাকবে আরেকটু দীর্ঘ আকারে লেখার। ধন্যবাদ।
পাখি শিকারের সাথে মানুষ শিকারের তুলনা করে লেখাটি ভাল লাগল। ফরিদের সাথে একমত। আপনার গদ্য অনেক প্রাঞ্জল।
আর গদ্য লিখতে তো শুধু সময় নয় পরিশ্রমও বেশি হয়। তবুও চালাতে চেষ্টা করলে পাঠক উপকৃত হবে।
@গীতা দাস, ধন্যবাদ দিদি। চেষ্টা করব লিখতে।
বাংলাদেশে প্রায় সব মানুষই কিন্তু গরু জবাই দিতে পারে, মুরগীর গলা কাঁটতে পারে, জ্যান্ত মাছের চামড়া ছিলতে পারে। (যদিও আমি তেলাপোকা স্যান্ডেল চাপা দেবার পক্ষে!) কেউ কেউ আবার এক ডিগ্রি উপরে, রাস্তার নেড়ি কুকুর বিড়ালের গায়ে গরম মাড় ঢালতে পারে। এধরনের মানুষরাই মনে হয় এক সময় উপলব্ধি করে অন্য মানুষরাও এক ধরনের পশুই। না হলে কি করে কাউকে পিটিয়ে পিটিয়ে খুন করে, আট বছরের কাজের মেয়ে ছেলেকে ছ্যাকা দেয়, হাত কেঁটে দেয়, কান কামড়ে নেয়। অনেকের মত আমি দোজখে বিশ্বাস করি না, কারমা তে বিশ্বাস করি না। কিন্তু আমার মনে হয় না আমি তেলাপোকা ছাড়া আর কোন প্রান হত্যা করতে পারব! সবাইকে শিশুকাল থেকেই এই সব অকারণ শিকার থেকে অনুৎসাহিত করা উচিৎ বলে মনে করি। কারণ চর্চা করলে আমাদের মধ্যে অসুরটা বের হয়ে আসবেই।
তামান্না আপু, এই লেখাটা খুব ভাল হয়েছে। এরকম লেখা আরো চাই।
@নির্মিতব্য, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সবল, দুর্বলের উপর জোর খাটাতে চায়। অন্য কোন প্রজাতির দুর্বল প্রাণী হলে ত কথাই নেই। স্বজাতীয় ক্ষেত্রেও লক্ষণীয়। ধন্যবাদ পাঠ-প্রত্রিক্রিয়ার জন্য।
@নির্মিতব্য,
আমি এক ধাপ আগায় আছি,তেলাপোকা মারতেও খারাপ লাগে,তবে মশা মারতে ভালোই লাগে কারণ ঘুমানোর সময় কানের কাছে প্যান প্যান করে।
পুরোপুরি একমত। এইসব আপাত ছোটখাট ব্যাপারগুলোর আমরা পরোয়া করিনা বলেই এত ভুগতে হচ্ছে।
@নির্মিতব্য,
দারুন একটা কথা বলেছেন। স্কুল জীবনে আমার কিছু বন্ধু ছিল,কুকুর দেখলে যাদের মাথা খারাপ হয়ে যেত লাথি গুতা ইটা কিছু একটা মারতেই হবে। কোন কারণ ছাড়াই। মারবার পর কুকুর কেউ কেউ করলে দারুন উৎসাহে এরাও কেউ কেউ শব্দ করে উল্লাস প্রকাশ করত। আমি বহুদিন চেষ্টা করেও এই বিদ্বেষের কারণ খুজে বের করতে পারিনি।
তবে তেলাপোকা,মশা এবং ছারপোকার ক্ষেত্রে আমার জিরো টলারেন্স। জীবন তামা তামা করে দিল।
এই নিষ্ঠুরতার মাত্রা পশু-পাখির চেয়ে মানুষের প্রতি মানুষের আরও বেশি সীমাহীন।
আমাদের দেশে মানুষ খুন করলেও জেলে যেতে হয়না। আর কেউকে আকারণেই যেতে হয়, আকারণেই মরতে হয়।
গদ্য লিখতে সময় বেশি লাগে ত, এজন্য একটু পাশ কাটিয়ে চলতে চাই।:))
পশু-পাখির প্রতি আমাদের দেশের অনেক মানুষের নিষ্ঠুরতা সীমাহীন। পশ্চিমা দেশে হলে এদের মোটামুটি সবাইকেই জেলের ঘানি টানতে হতো। বাংলাদেশে বলেই কিছু হয় না। বরং সোল্লাসে তারা সেই নিষ্ঠুরতাকে প্রদর্শন করে বাহবা পাবার লোভে।
আপনার গদ্যের হাত দারুণ। আপনার জায়গায় আমি হলে পদ্যের চেয়ে গদ্যতেই বেশি সময় দিতাম। 🙂
@ফরিদ আহমেদ,
সহমত 🙂 (G)
@সেপ্টেম্বর অন যশোর রোড, (F) (F) 🙂
@ফরিদ আহমেদ,
এ ক ম ত। একদম আমার মনের কথাই বলেছেন।
@ তামান্না ঝুমু, সহজ কথায় কি সাবলীল লেখা! এমন লেখাই চাই। (Y)
@বিপ্লব রহমান,ধন্যবাদ দাদা(F) (F)