২০০৫ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি যখন প্রথম আন্তর্জাতিক টি২০ তে অস্ট্রেলিয়া নিউজিল্যান্ডকে হারালো, কেউই তখন চিন্তা করতে পারেনাই এই ফরম্যাটই এক সময় ক্রিকেটের অন্যতম শক্তিশালী ফরম্যাট হবে। প্রথম টি২০ খেলাও হয়েছিল খুব হালকা চালে, অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড দুই দলই আশির দশকের খেলোয়াড়দের মত করে পোশাক এবং চেহারা বানিয়ে মাঠে নেমেছিল।এমনকি খেলার শেষের দিকে যখন এইটা স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল অস্ট্রেলিয়াই জিততে যাচ্ছে, তখন গ্লেন ম্যাকগ্রা মজা করে ট্রেভর চ্যাপেল এর সেই কুখ্যাত ‘আন্ডারআরম’ বা গড়িয়ে গড়িয়ে বল করেছিল। আর বিলি বাউডেন তো আরেক কাঠি সরেস, এই কাজ করার জন্য ম্যাকগ্রাকে লাল কার্ড দিয়ে বসল। কিন্তু এখন আর ঠিক কেউই হালকা চালে টি২০ খেলেনা, মিলিয়ন মিলিয়ন ডলারের ছড়াছড়ি যে খেলাতে সেই খেলা সিরিয়াসলি না খেলার প্রশ্নই আসেনা।
কেরি প্যাকারের সুবাদে যখন প্রথম ওয়ান ডে ক্রিকেটে রঙ্গিন পোশাক এবং এরকম আরও কিছু পরিবর্তন আসলো, ক্রিকেটের শুদ্ধবাদিরা তখন থেকেই ভয় পেয়েছিল যে ওয়ান ডে ক্রিকেট এক সময় টেস্ট ক্রিকেটের জন্য হবে হুমকিস্বরূপ। সময়ের সাথে সাথে আজ এই ভয় মুলত টি২০ কে নিয়ে। অনেকে তো টি২০ কে ক্রিকেট হিসেবে মানতেই নারাজ। এলোমেলো শটে চার-ছয় আর বোলারদের যত্রতত্র মার খাবার দৃশ্য অনেক শুদ্ধবাদিদেরই গাত্রদাহের কারণ হিসেবে দেখা দিয়েছে। কিন্তু আসলেই কি টি২০ ক্রিকেট নয়?
আপনি যদি বর্তমানের সেরা ফাস্ট বোলার ডেল স্টেইনকে অনেকক্ষণ তার রুদ্রমূর্তিতে দেখতে চান, আপনার সামনে টেস্ট ক্রিকেটের কোনই বিকল্প আসলে নেই। কিন্তু ভেবে দেখুন তো, বর্তমানে কোন ব্যাটসম্যানই কিন্তু টেস্ট ক্রিকেটে স্টেইন এর উপর চড়াও হয়না বললেই চলে। কোনমতে তার স্পেলটা শেষ হলেই বিপক্ষ দল বাঁচে। কিন্তু টি২০ তে অধিকাংশ সময়ই আসলে কোন বিশেষ বোলারকে সম্মান দেখানোর মত অবস্থা থাকেনা। তখন এই স্টেইনও দেখা যায় ওভার প্রতি দশ রান করে দিচ্ছে। আমার কাছে মনে হয় এইটাও তো একটা দেখার মত ব্যাপার যে স্টেইন এর মত মহীরুহ বেধড়ক পিটুনি খাচ্ছে। এই রকম কোণঠাসা অবস্থায় তার মত গ্রেট কিভাবে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করে এইটা দেখতেও ভালো লাগে। আর এই ছার-ছয়ের ক্রিকেটের মধ্যেও কিন্তু স্টেইনের মত ক্লাস ঠিকই নিজের জাত চিনিয়ে দেয়। এই কয়দিন আগেও সদ্য শেষ হওয়া আইপিএল এ বিপক্ষ ব্যাঙ্গালোর এর মহাগুরুত্তপূর্ণ ম্যাচে ৪ ওভারে মাত্র ৮ রান দিয়ে ৩ উইকেট তুলে নিয়েছে স্টেইন। আবার এই একই প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে এর আগের ম্যাচে স্টেইনই ডুবিয়েছিল তার দলকে, সেইটা অবশ্য যত না তার ব্যর্থতা, তার চাইতে বেশি কৃতিত্ব দিতে হবে ব্যাটসম্যান দক্ষিন আফ্রিকারই অধিনায়ক এবি ডি ভিলিয়ারস এর। একটা ইয়রকার লেংথ এর বল অবিশ্বাস্য ভাবে ছয় মেরে হতভম্ব করে দিয়েছিল সবাইকে।
অনেকেই বলেন খুব বেশি চার-ছয় দেখতে ভালো লাগেনা। এই কথাটা আসলে সত্যি। মাঝে মাঝে যেমন খুব ব্যাটিং উইকেটে খেলা হতে পারে, ঠিক তেমনি মাঝে মাঝে খুব ব্যাটিংবন্ধুর উইকেটেও খেলা হয়। মাঝে মাঝে এরকম উইকেটে খেলা হলে ব্যাপারটা বিরক্তির পর্যায়ে যায়না কিন্তু ক্রিকেটের স্বার্থেই আসলে এমন পীচে খেলা উচিত যেখানে ব্যাট আর বলের একটা ভারসাম্য থাকে। টি২০ তে ১৩০-১৬০ রান আর টেস্ট ম্যাচে ১১০০-১২০০(চার ইনিংস মিলিয়ে) রানের পীচ গুলোই আসলে দর্শকদের জন্য সবচেয়ে আনন্দদায়ক। সবার কথা জানিনা কিন্তু আমার ক্যালিস এর কভার ড্রাইভ যেমন দর্শনীয় মনে হয়, ঠিক তেমনি গেইল এর ১০০ মিটার বা তার বেশি অতিক্রম করা দানবীয় ছক্কা দেখতেও ভালো লাগে। টি২০ এর পারফরমান্স যে ফ্লুক না, এইটা এই গেইল কে দেখলেই বুঝা যায়। গত ২ বছরে বিশ্বের যেখানেই টি২০ খেলতে গিয়েছে গেইল, সেখানেই পেয়েছে অবিস্মরণীয় সাফল্য। এমনকি হালের অস্ট্রেলিয়ার ডেভিড ওয়ারনার এর উত্থানও কিন্তু এই টি২০ এর হাত ধরেই। টি২০ তে অসাধারণ সব ইনিংস খেলে ওয়ান ডে দলে জায়গা করে নেবার পর এখন সে টেস্ট দলেও নিয়মিত এবং টেস্ট দলে এসেই নিউজিল্যান্ড এর বিপক্ষে অসাধারণ এক ইনিংস খেলে তার প্রতিভা বুঝিয়ে দিয়েছে। এই টি২০ আসার পরই কিন্তু আজকাল হরেক রকমের শট ব্যাটসম্যানদের খেলতে দেখা যায়। আগে হাতেগোনা কিছু ব্যাটসম্যান কে দেখেছি রিভার্স সুইপ বা স্কুপের মত ঝুঁকিপূর্ণ কিছু শট খেলতে। এখন প্রায় সব ব্যাটসম্যানই হরহামেশাই এই ধরনের শট খেলছে তো বটেই, পিটারসেন এর মত ব্যাটসম্যান সুইচ হিট এর মত অস্বাভাবিক শটও সৃষ্টি করেছে। শুধুই টেস্ট ক্রিকেট থাকলে এত ঝুঁকিপূর্ণ শট আমরা আদৌ দেখতে পারতাম কিনা সন্দেহ।
তবে সবচেয়ে যে কারণে আমার মনে হয় টি২০ বেশি জনপ্রিয়তা লাভ করেছে তা হলো খেলাটির জমজমাট অনিশ্চয়তা। অনেক টেস্ট ম্যাচই ৩ দিনের মধ্যে শেষ হয়ে যায়, এক দল আরেক দলকে ইনিংস ব্যবধানে হারায়। ওয়ান ডে ক্রিকেটেও অনেক ম্যাচই খেলা শেষ হবার অনেক আগেই ফলাফল নিশ্চিত টের পাওয়া যায়। এইটা দর্শকদের জন্য যেমন বিরক্তিকর, ঠিক তেমনি ব্যবসায়িক দৃষ্টিকোন থেকেও খুবই অলাভজনক। কিন্তু টি২০ এ ক্ষেত্রে একদমই ব্যতিক্রম। অনেক খেলাই শেষ ওভার পর্যন্ত তো যাচ্ছেই, এমনকি শেষ বল পর্যন্ত উত্তেজনা জমিয়ে রাখছে টি২০। এক ওভারের মধ্যে খেলার গতি-প্রকৃতি বদলে যাচ্ছে। সারা খেলা আধিপত্য বিস্তার করেও দেখা যায় শেষ ২ ওভার খুব বাজে করার জন্য ম্যাচ হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে।
বিশ্বায়নের এই যুগে ক্রিকেট যদি ১০ দেশের খেলার খোলস থেকে বের হতে চায়, তাহলে আসলে টি২০ এর কোন বিকল্প নেই। যদি কোন ফরম্যাট বাদ দিতেই হয়, সেইটা ওয়ান ডে ক্রিকেট। টেস্ট ক্রিকেট এক ধরনের স্কিলের পরীক্ষা নেয়, টি২০ আর এক ধরনের। এর মাঝে এখন ওয়ান ডে ক্রিকেটটাই আমার কাছে অপাংতেয় লাগে। এইটা মনে হয় আইসিসির লোকজনও টের পাচ্ছে, তাই ওয়ান ডে ক্রিকেট নিয়ে তারা গিনিপিগের মত পরীক্ষা নিরীক্ষা করছে, এত এত নিয়মনীতি এরা ২ দিন পর পর পরিবর্তন করছে যে ক্রিকেটের একনিষ্ঠ ভক্তের পক্ষেও এগুলো অনুসরণ করা কষ্টকর হয়ে পড়েছে। দুঃখের সাথে লক্ষ্য করছি প্রায় সব দেশের ক্রিকেট প্রশাসনই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ওয়ান ডে ক্রিকেটকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। ৫ টা/৭ টা অর্থহীন ওয়ান ডে খেলে কার কি লাভ হয় কে জানে। ৩ টার বেশি ওয়ান ডে রাখার কোন যুক্তিই আমি বুঝিনা, ওয়ান ডে কমিয়ে আন্তর্জাতিক টি২০ বেশি বেশি খেলা উচিত।
সব চাইতে বড় সমালোচনা টি২০ কে নিয়ে বোধ হয় আইপিএল এর উত্থান। এইটাকে ঠিক টি২০ এর সমালোচনা বলা যায়না, কিন্তু আইপিএল এর দেখাদেখি বিশ্বের সব প্রান্তেই এখন এমন ব্যাঙের ছাতার মত টি২০ লীগ গড়ে উঠছে যে এইটা নিয়ে কথা না বললে আসলে আলোচনাই অসমাপ্ত থেকে যায়। ব্যক্তিগত ভাবে আমার মনে হয় দূর ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কমে যাবে, এই টি২০ লীগ গুলোই আধিপত্য বিস্তার করবে সব খানে। খেলোয়াড়দের দোষ দিয়ে তো আর লাভ নেই। আপনি এখন যে চাকরি করছেন অন্য এক জায়গায় তার চাইতে কম পরিশ্রমে যদি কয়েক গুন বেশি টাকা পান, তাইলে ঠিক কয়জন বর্তমান চাকরিই করবে বলুন তো? তবে হ্যাঁ, কিছু কিছু ব্যাপার আসলেই বিরক্তিকর। ক্রিকেট খেলা তো বটেই, কোন খেলার মধ্যেই চিয়ার লিডার দের ঠিক কি দরকার পড়ল আমি আজ পর্যন্ত বুঝে উঠতে পারলাম না। এই সমস্যা অবশ্য আন্তর্জাতিক টি২০ তেও আছে। আর আইপিএল বা বিপিএল দুই লীগেই দেখা গেছে চরম অব্যবস্থপনা, উঠেছে দুর্নীতির অভিযোগ। এইসব অভিযোগ আর ভুল অবশ্য আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও দেখা যায়। ম্যাচ পাতানো, স্পট ফিক্সিং এর মত ঘটনার সূত্রপাত আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকেই, আবার ২০০৭ বিশ্বকাপ ফাইনাল অন্ধকারের মধ্যে শেষ করার মত বোকামিও আমরা দেখেছি। খেলোয়াড়দের চাইতে তাই বেশি দোষ আসলে ভয়াবহ রকমের অপরিণামদর্শী ক্রিকেট প্রশাসকদের। এরা ক্রিকেটকে মনে করছে সেই ইশপের গল্পের সোনার রাজহাঁস। সব দিক দিয়েই লাভবান হবার এই উদগ্র বাসনা থেকেই আজ এত সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে ক্রিকেটে। এরা আইপিএল, বিপিএল, পিপিএল চালিয়ে দু’হাত ভরে টাকা কামাবে, আবার খেলোয়াড়দের সারা বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটও খেলাবে। কারো ভালো লাগুক আর নাই লাগুক, যে পরিমাণ টাকার ছড়াছড়ি এই টি২০ লীগ গুলোতে, এরা ঠিকই টিকে থাকবে। তাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের অহেতুক ৫/৭ টা ওয়ান ডে খেলা বন্ধ করতে হবে। আমার তো মনে হয় হয়ত এক সময় আন্তর্জাতিক টি২০ কিংবা ওয়ান ডে দুটোর একটাও থাকবেনা।
টিকে থাকবে এই টি২০ লীগ আর টেস্ট ক্রিকেট।
তোমার প্রায় সব কথার সাথে আমি একমত। টি২০ লীগগুলো ঠিকে থাকবে কোন সন্দেহ নাই। কিন্তু আমার ভয় আসলে মেইনস্ট্রীম ক্রিকেটকে নষ্ট করে দিচ্ছে কিনা এসব লীগ সেটা তো ভাবার বিষয়। ক্রিকেটে অনেক পরিবর্তন এসেছে। সত্তরের দশকের ক্রিকেট আর এখনকার ক্রিকেটে ব্যাপক ফারাক। কিন্তু মূল ক্রিকেট যা টেস্টের আদলে আমরা পাই, সেটা কি টি২০ এর সুবাদে নষ্ট হওয়ার রিস্ক আছে কিনা? যেমন টি২০ লীগ ছাতার মত গজে উঠতে থাকলে একসময় পুরো মেইনস্ট্রিম ক্রিকেট কি ক্ষতিগ্রস্থ হবে না? এটা তো লং রানে ভাবার বিষয়!
ব্যাপারটা আমার কাছে দুটানার মত। টি২০ লীগ দেখতে ভালো লাগে, আবার পুরনো ক্রিকেটীয় সংস্কার থেকে বের হয়ে আসাটাও সম্ভব না।
অফ টপিক: সেপ্টেম্বরে শ্রীলংকায় অনুষ্ঠেয় টি২০ কাপের জন্য বাংলাদেশ ভালোই প্রস্তুত হবে বুঝা যায়। কারণ জুন, জুলাই আর আগস্ট মিলিয়ে প্রায় ১২টার মত টি২০ ম্যাচ খেলতে পারে বাংলাদেশ ৪টা সিরিজে।
ধন্যবাদ রিজওয়ান মন্তব্যের জবাব দেবার জন্য। ইনজুরীর ব্যাপারটা একটু পরিস্কার করে বলি। একজন প্লেয়ার হয় ইনজুরীতে আছেন, নাহয় পড়বেন। খেলাটাতেই যে ফিটনেসের পরীক্ষা। ইনজুরীর ভয়ে কোনো প্লেয়ার ক্রিকেট খেলতে চাইবেননা তা মেনে নেওয়া আসলে কষ্টকর। কিছু বর্তমান এবং সাবেক প্লেয়ার সবসময় নাকিকান্না কেঁদে যান যে খেলোয়াড়দের যথেষ্ট বিশ্রাম হচ্ছেনা। ব্যাপারটা আসলে ঠিক নয়। প্লেয়ার যদি তার ফিটনেস ধরে রাখতে পারে সে খেলবেই, প্রয়োজনে ইঞ্জুরী লুকিয়ে। এমন ঘটনাও আমাদের অজানা নয়।
লীগের জন্য জাতীয় দল ছেড়ে দেয়াটা আসলে মেনে নিতে পারিনা। নিশ্চিত জীবন বলতে যদি কাড়িকাড়ি টাকা হয় তবে ঠিক আছে। একজন খেলোয়াড়ের সে ব্যাপারে পূর্ণ স্বাধীনতা থাকা উচিত বলে মনে করি। বোর্ডের হস্তক্ষেপও মাঝে মাঝে বাড়াবাড়ি ঠেকে। কিন্তু চিন্তা করুনতো সাকিব এবং তামিম যদি কাল ২০/২০ জন্য জাতীয় দল ছেড়ে দেয়, আমাদের কেমন লাগবে। সত্যিই কি পারবো খেলোয়াড়ের স্বাধীনতা ভেবে ভুলে যেতে।
@বিপ্লবপাল, শিল্পের কদর আসলে সবাই আজকাল বুঝতে চায়না। হোল্ডিং,মার্শাল,হ্যাডলিদের বোলিং আমি পুরো দেখিনি। শুধু উইজডেনের কিছু ক্লাসিক ভিডিও ছাড়া। কিন্তু টেষ্টে ম্যাকগ্রা,ওয়ার্ন,এমব্রোস,ওয়ালশ, দু’ওয়াকার যেভাবে ব্যাটসম্যানদেরকে ওভারের পর ওভার ধরে বল খেলিয়ে সেটাপ করতেন আউট করার জন্যে তা আসলেই শিল্প। জানি অনেকের কথা বাদ পড়ে গেলো। যেদিন থেকে মরা পিচে টেষ্ট খেলা শুরু হয়েছে সেদিন থেকেই আসলে টেষ্টের শিল্পমান কমে যেতে শুরু করেছে। সব বোর্ডগুলির উচিত আইসিসির সাথে একসঙ্গে বসে টেষ্টপিচের জন্য এক্টি মানদন্ড দাড় করানো। অসি, সাঃআঃ, ইংল্যান্ড নিউজিল্যান্ডে হওয়া টেষ্টগুলি কিন্তু বিরক্তিকর হয়না।
@পাগলা লোচা,
(মন্তব্যগুলোর নিচে দেখবেন “[[মন্তব্যটির জবাব দিন]]” একটি বাটন আছে,এই বাটনে চেপে মন্তব্য করলে যাকে উত্তর দিচ্ছেন সে একটা নোটিফিকেশন মেইল পেয়ে যাবে,সাথে পাঠকদের আলোচনা অনুসরণ করতে সুবিধা হবে।)
ইনজুরীকে কিন্তু খুব ছোটো করে দেখার উপায় নেই। আমাদের মাশরাফীকে দেখেন,ইনজুরির জন্য ক্যারিয়ারটা ঠিকমত গড়তে পারছেনা,নিউজিল্যান্ডের শেন বন্ডতো শেষই হয়ে গেলো। ফাস্ট বোলাররা যত বেশি খেলবে তত ইনজুরির চান্স বেড়ে যাবে,এতে অকালে ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যেতে পারে,ব্যাটসম্যান বা স্পিনারদের এই সমস্যা কম। অ্যাশেজ বা এধরণের বড় ট্যুরন্যামেন্টের আগে টি২০ লীগ গুলো থেকে খেলোয়াড়দের দূরে থাকাই ভালো।
লীগের জন্য কখনোই জাতীয় দল ছাড়া উচিত না,জাতীয় দলে খেলেই লীগে খেলা সম্ভব। ক্রিস গেইলকে আমি দেখতে পারিনা এসব কারণে।
@রামগড়ুড়ের ছানা, ধন্যবাদ মন্তব্য এবং সাহায্যের জন্য। দ্রুতগতির বোলাররা বেশী খেললে ইনজুরীতে পড়ার ঝুকি আর অন্যদের বুঝি তা নেই ??? যদি ফিটনেস না থাকে ইনজুরীতে যেকোনো খেলোয়াড় পড়তে পারেন। কালকের ক্রিকইনফোতেই আছে, জেমস এন্ডারসন খুশী নন, তাঁকে তৃতীয় টেষ্টে বিশ্রাম দেওয়ায়। মাশরাফি প্রথমে ইনজুরী লুকিয়ে খেলেছেন, প্রথম দু’বারের পূনর্বাসনের সময় যথেষ্ট সময় ফিট হবার জন্য ব্যয় করেননি, বোলিং একশন নিয়েও কাজ করা উচিত ছিলো বোলিং কোচের। যা বলতে চাই তাহলো, একজন খেলোয়াড় খেলতে চাইবেনই। সেটাই তার বৈশিষ্ঠ্য।
আর একটু সাহা্য্য চাই। মুক্তমনার বাংলাদেশের লেখক লেখিকাদেরকে কি কোনো সংগঠন আছে? অথবা এমন কোন জায়গা যেখানে তারা একসাথে মিলিত হোন আড্ডা এবং আলোচনার জন্যে। খুব ইচ্ছে আছে আপনাদের সাথে পরিচিত হবার। সবাইকে আগাম ধন্যবাদ।
@পাগলা লোচা, এইতো আমরা আড্ডা দিচ্ছি, আলোচনা করছি। 🙂
যাই হোক, আমি আপনার কথা আসলেই ফেলে দিতে পারছিনা। শখের বশে যখন ক্রিকেট খেলতাম, আমার নিজেরও কোনদিন মনে হয়নি যে আজ খেলতে ভালো লাগছেনা। এখনও ডিপার্টমেন্টের খেলার পর অনেক ক্লান্ত হয়ে গেলেও কখনোই মনে হয়না পরের ম্যাচ খেলব না। কিন্তু আসলে এই সব পাড়ার ক্রিকেট দিয়ে কোন সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায়না। ব্লগে দুই-একজন প্রফেশনাল ক্রিকেটার থাকলে বেশ হত। 🙂
@রিজওয়ান, প্রফেশনাল খেলোয়াড়দের কি ব্লগ লেখার সময় আছে। তবে আমার বেশকিছু বন্ধু আছেন যারা এখনো প্রফেশনালি ক্রিকেটের সাথে আছেন। প্রায়ই আড্ডা হয়। সবারই অনেক অভিযোগ রয়েছে জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের কমিটমেন্ট নিয়ে। পাড়ার খেলোয়াড়রাই কিন্তু ধীরে ধীরে উন্নতি করে পরের পর্বের জন্য নিজেকে উজাড় করে দেবার শিক্ষা নেন।আসলে তৃণমূল পর্যায় থেকে যত্ন না নিলে আমাদের ক্রিকেটের ভবিষ্যত খুব সুবিধের নয়, এ সহজ ব্যাপারটা আমাদের কর্তাব্যক্তিরা কেনোযে বোঝেননা কে জানে? আর বাংলাদেশের ক্লাব ক্রিকেটের পলিটিক্স যে কি জিনিস !!! আবারো ধন্যবাদ রিজওয়ান, এই চমৎকার আলাপের সুযোগ করে দেবার জন্য।
টেস্ট ক্রিকেট ছারা ক্রিকেটে উত্তম শিল্প দেখা অসম্ভব। একমাত্র টেস্ট ক্রিকেটেই বোলাররা আক্রমনাত্বক বোলিং করতে পারে-রানের তোয়াক্কা না করে। ওয়ানডে এবং টি-২০ তে অনেক বেশী ডিফেন্সিভ বোলিং করতে হয়। আর মনে রাখতে হবে, ক্রিকেটটা শুরু হচ্ছে বোলিং থেকে-সেখানে যদি আক্রমন কমে, খেলাটার মান কমে যায়।
টি-২০ উত্তেজক-এবার আই পিলের কিছু খেলা দেখলাম। কিন্ত সেখানে হ্যাডলি,বথাম, ইমরান বা হোল্ডিং দের মত শৈল্পিক বোলিং কই? আর করবেটাই বা কে? একমাত্র নারাইন ছেলেটা কিছু কামাল বোলিং উপহার দিল। তাতেই শচীন সৌরভ পর্যন্ত গুটিয়ে গেল।
বোলিং উচ্চমানের না হলে-ক্রিকেট উত্তেজক হতে পারে, কিন্ত উচ্চমানের হয় না। টেস্ট ক্রিকেট ছারা উচ্চমানের বোলিং করা অসম্ভব।
ক্রিকেটের দুটো এলিমেন্ট- উত্তেজনা আর শিল্প। উত্তেজনার জন্যে টি ২০ দারুন। কিন্ত শিল্পের জন্যে টেস্ট ক্রিকেটের বিকল্প নেই।
@বিপ্লব পাল,
আপনার মন্তব্যের সাথে একমত। টি২০তে দেখবেন বোলাররা বাউন্সার,স্লো বল আর ইয়োর্কারের উপর ভরসা করছে রান বাচাতে,সেখানে পাবেননা ওয়াসিম আকরামের রিভার্স সুইং(বল পুরোনই হতে পারেনা), ম্যাকগ্রা-পোলকের ওভারের ওভারের পর ওভার একই জায়গায় বোলিং করে ব্যাটসম্যানকে ধৈর্য্যের চরম পরীক্ষা নেয়া, মুরালী-ওয়ার্নের স্পিন জাদু দেখানোরও তেমন সুযোগ নেই, সাম্প্রতিক কালের স্টেইনের আগুন ঝড়ানো ১৪৫+ কিমি গতির আউটসুইঙ্গারও নেই(স্টেইনকে গ্রেট ফাস্ট বোলারদের তালিকায় অবশ্যই রাখতে হবে)।
সাধারণ দর্শকরা খালি ব্যাটিং দেখতে চায় কিন্তু বোলিং এর শিল্পটা তারা ধরতে পারেনা। টেস্টে একজন ব্যাটসম্যানকে আউট করতে বোলাররা অনেক ওভার ধরে পরিকল্পনামাফিক বোলিং করে ফাদে ফেলার জন্য,এ ব্যাপারগুলো দেখতে দারুণ লাগে।
তবে ৫০০-৬০০ রানের টেস্ট গুলো খুবই জঘন্য,এগুলাই টেস্টের জনপ্রিয়তা কমিয়ে দিচ্ছে। তবে টেস্ট ম্যাচ শেষ পর্যন্ত টিকে যাবে আমার ধারণা,এটা না টিকলে ক্রিকেট টিকবেনা।
@বিপ্লব পাল, ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। আপনি বেশ ভালো একটা পয়েন্ট উল্লেখ করেছেন। টি২০ যেখানে উত্তেজনার যোগান দিচ্ছে, টেস্ট ক্রিকেট দিচ্ছে শিল্পের স্বাদ। বিধ্বংসী বোলিং কি জিনিস এইটা আসলে টেস্ট ক্রিকেট না থাকলে অনুধাবন করা মুশকিল। আমার এখনও চোখে ভাসে কলম্বোতে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে শোয়েব আখতারের সেই বিধ্বংসী স্পেলের কথা।
আর এখন টেস্টে যখন স্টেইন বল করে, টিভিতে খেলা দেখতে থাকলে তখন উঠা আসলেই মুশকিল। 🙂
@রিজওয়ান,
দুইবারই একই লিংক দিয়েছেন,স্টেইনের বোলিং এর টা দেন।
@রামগড়ুড়ের ছানা, এখানে 🙂
অনেকেই টি২০ এর বিরোধিতা করেন এরে অর্থের ছড়াছড়ির জন্য!!! বাস্তবতা হচ্ছে অর্থের ছড়াছড়ি ছাড়া তো এই যুগে জনপ্রিয়তা ধরে রাখা সম্ভব না। আর আগে শুধু একটা দেশের ১১ জন খেলোয়াড়ই বিপুল অর্থ আয়ের সুযোগ পেত,আইপিএল বা বিপিএলের মধ্য দিয়ে উঠতি তরুণরাও ক্রিকেটকে পেশা হিসেবে নেয়ার একটা নিরাপদ ক্ষেত্র মনে করার সুযোগ পাবে। এতে আমি নেতিবাচক কিছু দেখি না।
লেখকের বক্তব্যের সাথে একমত,তবে আমি মনে করি ওয়ানডে ক্রিকেটও টিকে থাকবে।তিন ধরণের ক্রিকেটই স্ব স্ব ফ্লাবার নিয়ে টিকে থাকবে বলে মনে করি
@আমি কোন অভ্যাগত নই, ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। আমরা যারা পুরনো দর্শক, তারা হয়ত সব ফরম্যাটই, বিশেষ করে টেস্ট ম্যাচের জন্য ভালোবাসা থাকবে। কিন্তু যারা নতুন দর্শক, আমি আসলে তাদের ব্যাপারেই সন্দিহান। টি২০ এর মারমার কাটকাট খেলা ছেড়ে টেস্ট ক্রিকেটের মত ক্লাসিক্যাল জিনিস সবার পেটে আসলে নাও সইতে পারে। আর এই যে টেস্ট ক্রিকেট টেস্ট ক্রিকেট করছি, আমি নিজেও কিন্তু টেস্ট ম্যাচ হলেই টিভির সামনে বসে যাই না। শুধু মাত্র ভালো জমজমাট টেস্ট হলেই টিভির সামনে হয়ত বসি। কিন্তু যারা টি২০র ভক্ত, তারা কিন্তু নিয়মিতই খেলা দেখছে, পুরোপুরি ব্যাটিং উইকেট হলে চার-ছয় দেখে মজা পাচ্ছে, আবার খুব বেশি রান না হলেও অধিকাংশ সময়ই দেখা যায় বেশ ক্লোজ ম্যাচ হচ্ছে। টি২০ এর আবেদন তাই নতুন দর্শকদের কাছে একটু বেশিই।
লেখাটি ভালো লেগেছে। ক্রিকেটের প্রতি ভালোলাগা সেই ১৯৯২ বিশ্বকাপ থেকে। এরপর কখনোই এই ভালোবাসার সাথে মনোমালিন্য হয়নি। ২০/২০ কিন্তু এমনি এমনি আসেনি। যতোদূর মনে পড়ে, ইংল্যান্ডের সব ক্লাবগুলির গ্যালারি থেকে আয় ব্যাপক হ্রাস পাওয়ায় তারা একটা জরিপ চালায় প্রায় হাফ মিলিয়ন পাউন্ড খরচ করে। তাতে দর্শকরা মাঠে কি দেখতে ভালোবাসেন, এবং কখন থেকে কখন খেলা হলে দেখতে সুবিধে হবে এই ব্যাপারগুলি প্রাধাণ্য পেয়েছিলো। তারই ফলশ্রুতি আজকের ২০/২০। স্বীকার করুন বা না করুন, ২০/২০ আসার পর ওয়ানডের জনপ্রিয়তায় কিন্তু ধ্বস নেমেছে। তাই বোধহয় বারবার ওয়ানডের নিয়মগুলো বিভিন্নভাবে বদল করে দর্শকপ্রিয় করার কাজ চলছে। অনেকে বলেন ওয়ান ডে ম্যাচ উপভোগ করার জ ন্য বেকার হওয়া খুব জরুরী, টেষ্টের বেলায়ও একি কথা প্রযোজ্য।
২০/২০ সবচেয়ে ভালো দিক মনে হয় সার্বক্ষনিক উত্তেজনা। দুটো ডট বল গেলেই তেড়ে এসে চার ছয় মারার ঘটনা বোধহয় ২০/২০ আসার আগে দেখিনি। আর ব্যাটে বলের উদ্ভাবনী কোউশলতো আছেই। পিটারসনের সেই বামহাতি হয়ে মারা ছয় আশাকরি করি ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে আছে। আমি নিজে ভালো ফিল্ডার ছিলাম স্কুল,কলেজে এবং ইউনিভার্সিটিতে, আমি শপথ করে বলছি এখন ২০/২০ তে যেসব ফিল্ডিং টেকনিক দেখা যায় ৫ বছর আগেও কোন ফিল্ডিং কোচ এভাবে কোচিং করাতেন না। যা বলতে চাই তাহলো ২০/২০ দর্শকের চোখের এবং মনের জন্য অবিরাম বিনোদন। দূর্ণীতি,চিয়ারলীডার,টাকার ছড়াছড়ি আসলে যেকোনো খেলার অতি জনপ্রিয়তার ফসল। তাই ক্রিকেটপ্রেমীরা চিয়ারলিডারদের উদ্দাম নৃত্য,বোর্ডগুলোর নির্লজ্জ আচরণ এবং জুয়াড়ীদের কূটনীতি বাচিয়ে ক্রিকেটকেই উপভোগ করে।
টেস্ট ক্রিকেট যে ধ্রুপদী এ নিয়ে কিন্তু কারো সন্দেহ থাকা উচিত নয়। ১৫ সেশন ধরে প্রতিপক্ষকে ধরাশায়ী করার যে চেষ্টা চালানো হয় তা বড়োই উপভোগ্য। কিন্তু যখনই ব্যাটিংস্বর্গ জাতীয় পিচগুলোতে টেষ্ট খেলা আরম্ভ হলো তখনই কিন্তু টেষ্টের জনপ্রিয়তা কমতে শুরু করে। টেষ্টে পরিকল্পনা,প্রতিআক্রমন এবং আক্রমন বাস্তবায়নের জন্য দু’দলই সময় পায়। তাই শ্রেষ্ঠত্ব নির্ধারণে টেষ্ট ক্রিকেটের বিকল্প নেই। যদিও বর্তমান রেটিং সিস্টেমের যোওক্তিকতা নিয়ে আমার নিজেরই সন্দেহ আছে। তবু মন্দের ভালো আরকি।
আর যারা খেলোয়াররা এখন অতিরিক্ত ক্রিকেট খেলে বলে অভিযোগ করেন তাঁদের বলছি, দুনিয়াতে লোকজন অনেক কষ্টকর কাজ করে বেঁচে আছেন। ক্রিকেট খেলোয়ারদের এনিয়ে অভিযোগ আমার কাছে বাড়াবাড়ি লাগে। আপনি বোর্ডের কাছ থেকে যেকোনো সময় ছুটি চাইতে পারেন। এরকম নজির ভুরিভুরি আছে। তবে টাকার ব্যাপারটা থাকবেই। জাতীয়দলকে পাশ কাটানোর জন্য অবসর নেয়াকে ভালো চোখে দেখতে পারিনা। ভালো জীবনযাপনের জন্য এদের আর কতো প্রয়োজন বলুনতো ??????
@পাগলা লোচা।, ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। আপনার প্রায় সব কথার সাথেই একমত হলেও কিছু দ্বিমতও আছে। আপনি ক্রিকেটারদের অভিযোগকে বাড়াবাড়ি বলছেন। আমার কিন্তু তা মনে হয়না। ঘন ঘন ইনজুরিতে পড়া কিন্তু এই বেশি খেলার ফল বলেই অনেকে বলছেন। উঠতি খেলোয়াড়দের পক্ষে ঘন ঘন বিশ্রাম নেয়া চাওয়াও আসলে সম্ভব না, এই বিলাসিতা হয়ত টেন্ডুল্কার এর মত গ্রেটরা করতে পারেন। আর সব কিছু আসলে দেশপ্রেমের কাছে ছেড়ে দিলে হয়না। পিটারসেন তো জন্মসূত্রে সাউথ আফ্রিকান, ইংল্যান্ডের প্রতি তার ভালোবাসা তাই কর্মসূত্রে পাওয়া বলেই মনে হয়। আর যাদের হয়ত ভবিষ্যৎ আছে কিংবা মাঝারি মানের ক্রিকেটার, তারা জাতীয় দলে অনিশ্চয়তার জীবন কাটানোর চাইতে টি২০ লীগ খেলে একটু নিশ্চিত জীবন চাইতেই পারে।
ভালো থাকবেন।
বছর খানেক আগে শিল্পকলায় গিয়েছিলাম পন্ডিত জসরাজের ক্লাসিক্যাল শুনতে। একটু দেরী করেই গিয়েছিলাম, ভাবছিলাম যে কয়টা মানুষই বা আর যাবে। গিয়ে দেখি হল ভরা লোক, আর বেশির ভাগই তরুন! শেষে ওপরের ব্যালকনির সিড়িতে বসে অনুষ্ঠান দেখতে হলো। সেদিনই উপলব্ধি করলাম যে এই রিমিক্সের যুগেও তরুন প্রজন্মের একটা বড় অংশ ভালই ক্লাসিক্যাল শোনে। এর পর আর এই ধরনের অনুষ্ঠানে দেরী করে যাই নি।
আমার মা একটা প্রচলিত কথা খুব বলেন, “চিড়া বলো মুড়ি বলো, ভাতের সমান না। মাসী বলো পিসী বলো মায়ের সমান না।”
টেস্ট আর T20 নিয়েও একই ধরনের আবেদন হচ্ছে বলে মনে হয়।
@থাবা, ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। আপনি যেমনটি বুঝাতে চেয়েছেন, সেরকম হলে আসলে বেশ হত। বাস্তবতা কিন্তু তা না। এই ধরুন ইন্ডিয়ার কথা। ক্রিকেট বিশ্বের প্রবল প্রতাবশালি এই দেশ যখন দেশের মাটিতে টেস্ট খেলে, একটু টিভি খুলে দেখলেই বুঝবেন, সে দেশের মানুষের টেস্টে এত আগ্রহ নেই। ওয়ানডে বা টি২০, এমনকি আইপিএল এর ম্যাচগুলোতেই আমি টেস্ট ম্যাচের চাইতে বেশি দর্শক দেখেছি। এমনকি বাংলাদেশেও টেস্ট ম্যাচ হলে স্টেডিয়াম ভরেনা, আর ওয়ানডে কিংবা টি২০ তে টিকেট খুঁজেও পাওয়া যায়না। অবশ্য অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ডের কথা একটু আলাদা, সেখানে সব ফরম্যাটের খেলাতেই মোটামুটি স্টেডিয়াম ভরে যায়। কিন্তু ক্রিকেটের আসল মার্কেট তো আসলে এশিয়া, তাই এদিকের মানুষ যত দিন টেস্ট ক্রিকেট উপভোগ করতে শিখবেনা, ততদিন এই আলোচনা চলতেই থাকবে।
ভালো থাকবেন।
আমি মধ্যপন্থি। ওয়ান ডেই ভাল লাগে। অনেকের কাছে টেস্টের গুরুত্ব যেমন আছে, তেমনি আবার অনেকের কাছে টি20 তে চার ছক্কার বিনোদনও আছে। কিন্তু আমার মনে হয় ওয়ানডেই ডেলিকেট ব্যালেন্স। এখানে টেস্টের মত পাঁচ দিন ধরে খেলা দেখতে হয় না, আবার কেবল চার ছক্কার ক্যারিকেচারও না। এখানে প্লেয়ারের ক্লাস যেমন চেনা যায়, ঠিক তেমনি আস্কিং রেট যখন ৮/৯ এর কাছাকাছি থাকে তখন চার ছক্কার বন্যাও দেখা যায়। আর বোলারদের চোখ ধাঁধানো ডেলিভারি তো আছেই।
@অভিজিৎ দা, ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। ওয়ান ডে নিয়ে যা বলেছেন আমি একমত। এইটা অনেকটাই টেস্ট আর টি২০ এই দুই ধরনের ফরম্যাট এর জগাখিচুড়ি। তবে একসাথে তিন ফরম্যাট চালানোই কিছুটা মুশকিল হয়ে গিয়েছে। শুদ্ধবাদিরা বলছে বেশি বেশি টেস্ট খেলো, কিন্তু ব্যবসায়ীক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে বেশি বেশি ওয়ান ডে খেললেই লাভ হয়, আর ক্রিকেটের নতুন বাজার ধরতে টি২০ এরও চাহিদা আছে। এই গোলকধাঁধায় পড়ে বেচারা ক্রিকেটাররা বলতে গেলে সারা বছরই ক্রিকেট খেলে। আমাদের বাংলাদেশের কথা অবশ্য আলাদা, সেই ডিসেম্বরে টেস্ট খেলল, আবার কবে খেলবে কে জানে!
ভালো থাকবেন। 🙂
@অভিজিৎদা,
একদম একমত। আমারও একদিনের ক্রিকেটই সবচেয়ে প্রিয়। ক্রিকেট শুধু ব্যাটসম্যানদের খেলা নয়; বোলিং কৌশলে ব্যাটসম্যানকে বোকা বানানোর মধ্যে লুকিয়ে আছে ক্রিকেটের ধ্রুপদী সৌন্দর্য। যা ছয়-চারের চেয়ে কম নয়নসুখকর নয়! অথচ টি-টুয়েন্টি একজন ক্রিকেট দর্শককে এই সুখ থেকে প্রায় সম্পূর্ণই বঞ্চিত করে! আর টেস্ট ক্রিকেটের কথা কি বলব! শুধু পঞ্চমদিনটিই আমার দেখার সাধ জাগে, আবার তাও যদি সেদিন পর্যন্ত খেলাটি হেলে না থাকে মরিবার তরে। সে অর্থে, আমার টেস্ট ক্রিকেট দর্শনকে ওয়ানডে দর্শনই বলা যেতে পারে। 🙂
@রিজওয়ান ভাই,
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ সিরিয়াস লেখার ভিড়ে এক চিলতে মাঠ উপহার দেয়ার জন্য।
ওয়ানডের মৃত্যুঘন্টা আমিও শুনতে পাচ্ছি, কিন্তু আন্তর্জাতিক টি২০ থাকবে। একটা আন্তর্জাতিক বিশ্বকাপ না হলে ইন্ডিয়া, অস্ট্রেলিয়া বা পাকিস্তানের শ্রেষ্ঠত্ব নিরূপিত হবে কি করে? তাই, ক্রিকেটের এইসব রথী-মহারথীরা নিজেদের স্বার্থেই বিশ্বকাপ টিকিয়ে রাখবে অন্তত টি-২০ এর আদলে! 🙂
@কাজি মামুন, অনেক ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য। ঠিকই বলেছেন, অন্তত একটা ফরম্যাটের বিশ্বকাপ লাগবেই। আমি আসলে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলাম ২০১৩ সালের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য, কেননা এখন ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া-সাউথ আফ্রিকা-পাকিস্তান-ইন্ডিয়া সবাই কিছুটা কাছাকাছি মানের, তাই খেলা বেশ ভালোই জমত বলে ধারণা করছি। চ্যাম্পিয়নস ট্রফি(বিশ্বকাপ থাকার পরও এই টুর্নামেন্টের কি দরকার এইটা বোধ হয় আইসিসি’র কর্মকর্তারাও জানেনা) খেলার জন্য এইটা এখন ২০১৭ থেকে শুরু হবে। 🙁
T20
@Adnan, আমার কাছে টেস্ট। 🙂
গুরুগম্ভীর সব লেখার মধ্যে খেলা নিয়ে একটা লেখা দেখে ভালোই লাগলো,অস্বীকার করারতো উপায় নাই যে ক্রিকেট বাংলাদেশিদের জীবনের সাথে মিশে গেছে,দল-মত-ধর্ম সব কিছুর উপরে সাকিব-মাশরাফিরা আমাদের হিরো(কিছু পাকিপ্রেমিকদের কথা আলাদা)।
তবে আমি ক্রিকেটের ব্যাপারে একটু পুরানপন্থী,টি২০ কে এখনো ভালোভাবে নিতে পারিনি। আমার কাছে টি২০ হলো ফাস্টফুড খাবারের মতো,মাঝে-মধ্যে ১-২টা ভালো লাগে,এরপর রুচি নষ্ট হয়ে যায়। আর ম্যাচগুলোতে উত্তেজনা থাকলেও বেশিভাগ ম্যাচ আমার একিরকম লাগে।
টেস্ট ম্যাচের উপর কোনো ফরমেট নাই সেটা আমি জানি আপনিও মানেন :)। খুব কম ওয়ানডে বা টি২০ ম্যাচই অনেকদিন মনে রাখার মতো হয়,কিন্তু আমি প্রচুর মনে রাখার মতো টেস্ট ম্যাচের কথা বলতে পারবে, ৫দিনে যে উত্তেজনাটা তৈরি হয় তার তুলনা নাই। কে ভুলতে পারবে শচীন-স্টেইনের সেই লড়াইয়ের কথা? ২০০৫ অ্যাশেজের কথা? ভাঙা হাত নিয়ে স্মিথের মাঠে নামার কথা? মুলতানে বাংলাদেশের লড়াইয়ের কথা?লক্ষণের অতিমানবীয় ২৮১ রানের কথা? অনেকেই জানি বলবে টেস্ট ম্যাচ বোরিং,ঘুম এসে যায়,এতক্ষণ খেলা দেখার টাইম নাই আরো অনেক কিছু, এর মধ্যে খালি টাইম বের করা কঠিন এটা মেনে নেয়া যায়,ভালো পিচে টপক্লাস প্লেয়ারদের টেস্ট ম্যাচ খুব কমই বোরিং হয়, ৪-৫ ওভার বা আরো বেশি সময় ধরে নির্দিষ্ট জায়গায় বোলিং করে আর দারুণ ফিল্ডিং পজিশন তৈরি করে ব্যাটসম্যানদের আউট করা,ঘন্টার পর ঘন্টা কঠিন পিচে বোলারদের সামলে সেঞ্চুরি করা এসবের স্বাদ অন্য কোনো ফরমেটে পাওয়া যায়না,ক্রিকেট সম্পর্কে ভালো জ্ঞান না থাকলে এসব বুঝাও যায়না।
অনেক লম্বা কমেন্ট হয়ে গেলো,ক্রিকেট নিয়ে আলোচনা করতে আমার সবসময়ই অনেক ভালো লাগে :)। আমি সাধারণত চেষ্টা করি নিজের কাজে ফাকি কম দিতে কিন্তু ক্রিকেট ম্যাচ সামনে পেলে সব ভূলে যাই।
@রামগড়ুড়ের ছানা, ধন্যবাদ তোমার মন্তব্যের জন্য। তুমি ঠিকই বলেছ যে আমার কাছেও টেস্ট ক্রিকেটই সেরা ফরম্যাট। কিন্তু কেউ যদি বলে তার টি২০ই বেশি প্রিয়, আমি তার দিকে আর নাক শিটকাইনা। টেস্ট ক্রিকেট মাঝে মাঝে এমন পীচে খেলা হয় যে দুই দলই ৫০০-৬০০ রান করে বসে। এর চাইতে বিরক্তিকর খেলা আসলে নাই। ব্যাট-বলের ভারসাম্য যদি টি২০ বা ওয়ানডে তে নাও থাকে, সেইটা তোমাকে একদিন সহ্য করতে হবে। কিন্তু টেস্ট ক্রিকেট হলে এই অসম সার্কাস ৫ দিন ধরে সহ্য করতে হবে। আর ব্যাট বলের ভারসাম্য না থাকলেও টি২০ বা ওয়ানডে দেখতে এত খারাপ লাগেনা যত টা বিরক্ত লাগে অসম টেস্ট ক্রিকেট দেখলে।
আর ক্রিকইনফো আমার বাজে অভ্যাস করে দিছে, এখন সব সময় খালি লাইভ স্কোর খুলে বসে থাকি। খুব গুরুত্বপূর্ণ বা বাংলাদেশের খেলা না হলে আর টিভি তে দেখিনা।
@রিজওয়ান,
৫০০-৬০০ রানের টেস্টগুলা মহা বিরক্তিকর। টেস্টের আসল সমস্যা মনে হয় পিচে। অস্ট্রেলিয়া-আফ্রিকা-ইংল্যান্ডের পিচগুলোতে সাধারণত ব্যাটবলের ভালো ব্যালেন্স থাকে তাই এদের টেস্টগুলো খুবই উপভোগ্য হয়। পিচ নিয়ে কিছু স্ট্যান্ডার্ড নিয়ম করা দরকার। ডে-নাইট টেস্টের কথা অনেকদিন ধরে শুনছি,এটা একবার চেষ্টা করে দেখলে মন্দ হয়না।
আমি নিজেও বাংলাদেশ আর দক্ষিণ আফ্রিকার খেলা ছাড়া সাধারণত দেখিনা। টেস্ট দেখতে ভালো লাগলেও সময় বের করা আসলেই একটা কঠিন, আমি নাহয় ক্লাস ফাকি দিতে পারি যারা চাকুরীজীবি তাদের জন্যেতো টেস্ট দেখা প্রায় অসম্ভব,ক্রিকইনফোই ভরসা,এটাই টেস্টের একটা বড় সমস্যা।
@রামগড়ুড়ের ছানা, পীচের মান যদি স্ট্যান্ডার্ডাইজ করা যেত, খুবই ভালো হত, কিন্তু এইটা বলা যত সহজ, করা ঠিক ততটাই কঠিন। কোন টেস্টই যদি নিষ্প্রাণ ড্র হয়, তাইলে সেই পীচ কিউরেটর এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থার বিধান রাখা উচিত।
আর চিন্তা করো, তোমার-আমার মত ক্রিকেট পাগল মানুষই টিভির সামনে বসে টেস্ট ম্যাচ দেখার সময়-সুযোগ পাচ্ছেনা। সেই তুলনায় অনেক মানুষই ওয়ানডে আর টি২০ দেখছে। আবার দেখছি, কোন কোন দল একই দলের বিপক্ষে একটু বেশিই খেলছে। ২০১৩ থেকে ২০১৫ তিন বছরই নাকি ইংল্যান্ড অস্ট্রেলিয়ার সাথে টেস্ট খেলবে। এতে কি আর সেই আগ্রহ নিয়ে কেউ অপেক্ষা করবে এই খেলার জন্য?
@রামগড়ুড়ের ছানা,
সত্যি বলতে কি, ক্রিকেটের মূল দর্শনটা সবাই বোঝে না। মাঠের ন্যাড়া একটা অংশের এক পাশ থেকে ছুড়ে মারা বল আরেক পাশ হতে ব্যাট দিয়ে মেরে বাউন্ডারি পার করাকেই ক্রিকেট মনে করা মানুষের কাছে টি২০ এর চাইতে ভালো বিনোদন-মাধ্যম আর নেই। ৫ দিন ধরে অসীম ধৈর্য ও দক্ষতার পরীক্ষা দিয়ে খেলে যাওয়া একটা খেলা যে কতখানি উত্তেজনাপূর্ণ হতে পারে সেটা কেবল খেলোয়াড়েরাই অনুভব করতে পারে। তার ছিটেফোঁটা কিছু পায় ক্রিকেটবোদ্ধা দর্শকেরা যেটা বোঝা সাধারণ আম-জনতার কম্য নয়। কিন্তু দিনের শেষে ক্রিকেট আজ একটা বিনোদনের মাধ্যম। সংখ্যাগরিষ্ঠকে যেটা বেশি আমোদ দিতে পারবে, ওটাই টিকে যাবে। আনলিমিটেড থেকে পাঁচ দিন, সেখান থেকে ৫০ ওভার হয়ে টি২০, সিক্স এ সাইড পর্যন্ত সবই হয়েছে জনগণের বিনোদনের খোরাক যোগাতে। যেদিন থেকে ক্রিকেট আর দশটা খেলার মতো জনতার বিনোদনের উপকরণে পরিণত হয়েছে, আসলে ওদিন থেকেই ক্রিকেটের ধ্বংস শুরু হয়েছে। পাবলিককে সত্যিকারের ক্রিকেট কি সেটা শেখাতে না পারলে বিশুদ্ধবাদীদের কোন উপায় নেই এ ধ্বংসকে ঠেকানোর।
@অভিষেক, ধন্যবাদ তোমার মন্তব্যের জন্য। একটা বিষয় বুঝলাম না, তুমি টি২০ কে বিনোদন বলে উপহাস করছ কেন বোধগম্য হলনা। যে কোন খেলাই তো বিনোদনই, তাই না? টেস্ট ক্রিকেটে কি তুমি কখনও স্টেইন কে ওইরকম ইয়রকার লেংথ এর বলে ছয় খেতে দেখবা? এরকম কোণঠাসা অবস্থায় কিভাবে গ্রেট প্লেয়াররা কামব্যাক করে এইটাও কেউ দেখতে চাইতেও পারে। কে কোন মাধ্যম থেকে বিনোদন পাবে সেইটা কি আমরা ঠিক করে দিতে পারি? আমার কাছে টেস্ট ক্রিকেট সেরা বলেই কি যে কোন প্রকৃত ক্রিকেটপ্রেমির কাছেই টেস্ট ক্রিকেট সেরা হতে হবে? টেস্ট ক্রিকেট এর বিপক্ষে যায় এমন অনেক যুক্তিই আছে। ক্রিকেটের মূল সমস্যা শুরু হয়েছে তখনই যখন সব ফরম্যাটই সমান তালে চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ক্রিকেটাররা আর কত খেলবে, বলো?
মূল লেখাতে যেমন বলেছি, টি২০ লীগ আর টেস্ট ক্রিকেটই আসলে ভবিষ্যৎ, আমি নিজেও আসলে এমনটিই চাই। লেখাতে যে জিনিসটি বাদ পড়েছে তা হলো টেস্ট ক্রিকেটে ক্রিকেটারদের বেতন বাড়ানো, খেয়াল রাখা উচিত যাতে শেষমেষ টেস্ট ক্রিকেট খেলেই যাতে ক্রিকেটাররা বেশি আয় উপার্জন করতে পারে। টেস্ট ক্রিকেট সেরা বলে বলছিনা, টেস্ট ক্রিকেটাররাই বেশি উপার্জন করা উচিত কারণ এই ফরম্যাট এ তাদের পরিশ্রম বেশি।
@রিজওয়ান,
আমার পয়েন্টটা বোধহয় ধরতে পারেন নি। ক্রিকেট আমাদের কাছে নিছক একটা খেলা (সবার কাছে নয় যদিও)। অন্য সব খেলার মতো এটার উদ্দেশ্যও বিনোদন, আর কে কীভাবে বিনোদন পাবে সেটা আমরা ঠিক করে দিতে পারি না। ওদিকে এখনকার খেলোয়াড়দের কাছে ক্রিকেট একটা পেশা, আর যে পেশায় পয়সা বেশি, খেলোয়াড়রা সেদিকেই ঝুঁকবে। এ ব্যাপারে দর্শক-খেলোয়াড় কাউকেই দোষারোপ করছি না, তবে বিশুদ্ধবাদীর ৃষ্টিকোণ থেকে বলছি, ক্রিকেটকে টিকিয়ে রাখতে হলে টেস্টকে মূল্য দিতে হবে বেশি, যদি পারা যায় টি২০ পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়ে। টি২০ তে খেলোয়াড়ি দক্ষতার ভালো-খারাপের ব্যবধান কমে আসে। ক্রিকেটারদের কার মান কেমন, সেটা স্পষ্ট হয় টেস্ট ক্রিকেটে। ক্রিকেটাররা যদি টেস্ট থেকে সরে আসে তাহলে নিশ্চিত থাকেন, ভবিষ্যতে আমরা আর কোন ব্রায়ান লারাকে পাব না, টেন্ডুলকারদের অবসর শেষ করে দেবে ক্রিকেটের একটা সোনালি অধ্যায়। মাঠের বাইরে উড়বে টাকা, আর মাঠে আমরা দেখব সার্কাস।
টেস্টে টাকা বিনিয়োগের সমস্যা হচ্ছে, টাকাটা আসতেও হবে কোন এক জায়গা থেকে। ক্রিকেট বোর্ডগুলোর এখনকার নীতি হচ্ছে টি২০ থেকে টাকা কামিয়ে সেটা টেস্টে বিনিয়োগ করা। এটা ফলপ্রসূ হবে না এই কারণে যে, টি২০ যতদিন চালু থাকছে, ততদিন দর্শক টেস্ট দেখতে মাঠে যাচ্ছে না। ফলে টাকা হয়ত আয় হবে, কিন্তু তাতে টেস্টের কোন উপকার হবে না। আর শেষমেষ এতে ক্রিকেটেরই ক্ষতি।
@অভিষেক, টি২০ বন্ধের সুপারিশ গ্রহণ হওয়ার কোনই সম্ভাবনা আমি দেখিনা। আন্তর্জাতিক টি২০ বড়জোর বন্ধ হতে পারে, কিন্তু টি২০ লীগ বন্ধ হবার সম্ভাবনা খুব ক্ষীণ। টাকার জোর সব খানেই আছে, বিশুদ্ধুবাদিদের হা-হুতাশ তাই কারো কানে না ঢুকারই কথা। তবে তোমার সাথে একমত, টি২০ই ধ্যান জ্ঞান হলে আমরা লারা-টেন্ডুল্কার-ক্যালিস-দ্রাবিড় এর মত ক্রিকেটার হয়ত পাবনা। তবে হয়ত গেইল আর ওয়ারনার এর মত কাওকে পাবো। আমার কাছে মনে হয় ভালো-খারাপ বিবেচনা না করে আমাদের বাস্তবতা মেনে নিতে হবে। এত টি২০ এর ভিড়ে টেস্ট ক্রিকেটকে কিভাবে কিভাবে আরও জনপ্রিয় করে তোলা যায় সেইটা নিয়ে চিন্তা করতে হবে। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ খুব ভালো একটা উদ্দ্যেগ হতে পারে। চ্যাম্পিয়নস ট্রফির মত অত্যন্ত অপ্রয়োজনীয় একটা টুর্নামেন্ট খেলার জন্য যেইটা ২০১৩ থেকে পিছিয়ে ২০১৭ থেকে শুরু করার উদ্দ্যেগ নেয়া হয়েছে।
@রামগড়ুড়ের ছানা, দারুন বলেছেন। আমি ও এখনো ২০-২০ কে ভালো মতো নিতে পারি নাই। test আর odi এর সাথে ২০-২০ এর তুলনা হয় না।
আমার কাছে টি২০ হলো ফাস্টফুড খাবারের মতো,মাঝে-মধ্যে ১-২টা ভালো লাগে,এরপর রুচি নষ্ট হয়ে যায়। আর ম্যাচগুলোতে উত্তেজনা থাকলেও বেশিভাগ ম্যাচ আমার একিরকম লাগে। (Y)