মার্চ মাসের ২১ তারিখে একটি সংবাদের প্রতি নিশ্চয় অনেকেরই দৃষ্টি গিয়েছে-
ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার অভিযোগ ওঠায় কয়েকটি ফেসবুক পেইজ এবং একটি ওয়েবসাইট বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। একটি রিট আবেদনে বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার ও বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকার বুধবার এই আদেশ দেয়। স্বরাষ্ট্র সচিব, তথ্য সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, র্যাবের মহাপরিচালক ও টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) এই আদেশ বাস্তবায়ন করতে হবে।
আদালত একইসঙ্গে এই পেইজ ও ওয়েবসাইট সংশ্লিষ্টদের চিহ্নিত করতে তদন্ত শুরুর নির্দেশও দিয়েছে। আদেশের পর রিট আবেদনকারীর আইনজীবী ব্যারিস্টার মুহাম্মদ নওশাদ জমির বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এই সব ফেসবুক পেইজ এবং ওয়েবসাইটে হযরত মুহাম্মদ (স.) ও ইসলাম সম্পর্কে কটূক্তি করা হয়েছে।
ফেসবুক পেইজ ও ওয়েবসাইটের ঠিকানা প্রকাশ করতে তিনি রাজি হননি। পাঁচটি ফেসবুক পেইজ এবং একটি ওয়েবসাইটের কথা তুলে ধরে বুধবার সকালে হাই কোর্টে রিট আবেদনটি করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক বাতুল সারওয়ার এবং ঢাকা সেন্টার ফর ল অ্যান্ড ইকোনোমিকসের অধ্যক্ষ এম নুরুল ইসলাম।
খবরটা দেখে প্রথমেই মনে হল, ‘চোখ নেই, কান নেই, কোনো বর্ণ নেই শৃঙ্খলিত নিশ্চল ঈশ্বর’ প্রকৃতির গালিচায় বসে যেন কাঁদছেন। হ্যাঁ, আধুনিক বিশ্বে ঈশ্বর পরিণত হয়েছেন এক নপুংসক সত্ত্বায়; তাই ঈশ্বরের অনুভূতি, ইমেজ এবং মানসম্মান তিনি নিজে রক্ষা করতে পারেন না, সেই সুমহান দায়িত্ব অর্পিত হয়েছে তার কিছু পোষা বাহিনীর উপর। নিষ্ফল প্রার্থনা আর ব্যর্থ মোনাজাতে তেমন কাজ হচ্ছিলো না তাই অদৃশ্য ঈশ্বরের ঈশ্বরানুভূতি আর ধর্মানুভূতি আক্রান্ত হওয়ায় তার কিছু প্রিয় বান্দা আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন। রাষ্ট্র-যন্ত্রকে যুক্ত করেছেন।
এটা যে হবেই তা আমরা জানতাম। রাষ্ট্র-যন্ত্র সবকিছুকেই নিয়ন্ত্রণ করতে চায়। মিডিয়া, টিভি, পত্রপত্রিকা, বইপত্র সবই। ইন্টারনেট আসার পর তাদের রাশ আলগা হয়ে যাচ্ছিলো ক্রমশ। যুৎ করতে পাচ্ছিলেন না তারা। এখন ধর্মানুভূতি রক্ষায় একাট্টা হয়েছেন। তারা নাকি ফেসবুকের পাঁচটি পেইজ আর একটি ওয়েবসাইট বন্ধ করে দেবেন। তারা আক্রান্ত বোধ করছেন। অভিযোগ পুরনো। সেই ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত। বিষয়টি নিয়ে গভীর আলোচনায় ঢুকার আগে কিছু প্রাসঙ্গিক বিষয় নিয়ে আলাপ সেরে নেয়া দরকার।
গ্যালিলিওর শিক্ষা
১৬৩৩ সাল। মানুষের মনে পৃথিবী নয়, সূর্য তখন পৃথিবীর চারিদিকে ঘুরছে। কিন্তু গ্যালিলিও তাঁর নতুন তৈরি করা টেলিস্কোপটির পর্যবেক্ষণ বর্ণনা করে, যুক্তি-তর্ক দিয়ে আস্ত একটা বই লিখে ফেললেন বাইবেলীয় মতবাদের বিরোধিতা করে। তিনি বললেন, সূর্য নয়, বরং পৃথিবীই ঘুরছে সূর্যকে কেন্দ্র করে। গ্যালিলিও তখন প্রায় অন্ধ, বয়সের ভারে ন্যুব্জ। অসুস্থ ও বৃদ্ধ বিজ্ঞানীকে জোর করে ফ্লোরেন্স থেকে রোমে নিয়ে যাওয়া হলো, হাঁটু ভেঙে সবার সামনে জোড় হাতে ক্ষমা প্রার্থনা করিয়ে বলতে বাধ্য করা হলো, এতদিন গ্যালিলিও যা প্রচার করেছিলেন তা ধর্মবিরোধী, ভুল ও মিথ্যা। বাইবেলে যা বলা হয়েছে সেটিই আসল, সঠিক। পৃথিবী স্থির-অনড়, সৌর জগতের কেন্দ্রে। গ্যালিলিও প্রাণ বাঁচাতে তাই করলেন। স্বীকারোক্তি ও প্রতিজ্ঞাপত্র স্বাক্ষর করে গ্যালিলিও বলেছিলেন-
‘…সূর্য কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত ও নিশ্চল- এরূপ মিথ্যা অভিমত যে কীরূপ শাস্ত্রবিরোধী সেসব বিষয় আমাকে অবহিত করা হয়েছিল; এ মিথ্যা মতবাদ সম্পূর্ণরূপে পরিহার করে এর সমর্থন ও শিক্ষাদান থেকে সর্বপ্রকারে নিবৃত্ত থাকতে আমি এই পবিত্র ধর্মসংস্থা কর্তৃক আদিষ্ট হয়েছিলাম। কিন্তু তৎসত্ত্বেও সে একই নিন্দিত ও পরিত্যক্ত মতবাদ আলোচনা করে ও কোনো সমাধানের চেষ্টার পরিবর্তে সেই মতবাদের সমর্থনে জোরালো যুক্তিতর্কের অবতারণা করে আমি একটি গ্রন্থ রচনা করেছি। এজন্য গভীর সন্দেহ এই যে আমি খ্রিস্ট ধর্মবিরুদ্ধ মত পোষণ করে থাকি। …. অতএব সঙ্গত কারণে আমার প্রতি আরোপিত এই অতি ঘোর সন্দেহ ধর্মাবতারদের ও ক্যাথলিক সম্প্রদায়ভুক্ত প্রত্যেকের মন হতে দূর করার উদ্দেশ্যে সরল অন্তঃকরণে ও অকপট বিশ্বাসে শপথ করে বলছি যে পূর্বোক্ত ভ্রান্ত ও ধর্মবিরুদ্ধ মত আমি ঘৃণা ভরে পরিত্যাগ করি।…’
পোপ এবং ধর্মসংস্থার সামনে গ্যালিলিও যে স্বীকারোক্তি এবং প্রতিজ্ঞাপত্র সাক্ষর করেন, তা বিজ্ঞান সাধনার ইতিহাসে ধর্মীয় মৌলবাদীদের নির্মমতার এবং জ্ঞান সাধকদের কাছে বেদনার এক ঐতিহাসিক দলিল হয়ে আছে। বিজ্ঞান ও ধর্মের সংঘাতের একটা উদাহরণ দেখাতে গিয়ে প্রাসঙ্গিক ভাবেই আমাদের লেখা অবিশ্বাসের দর্শন (শুদ্ধস্বর, ২০১১) বইটিতে টেনে আনতে হয়েছিলো গ্যালিলিওকে। বিজ্ঞান বা ধর্মের সংঘাত আমাদের আজকের লেখার বিষয়বস্তু না হওয়া সত্ত্বেও এই উদাহরণের অবতারণা করতে হল- কারণ কোপারনিকাস, ব্রুনো কিংবা হাল আমলের ডারউইনের জীবন ইতিহাসের দিকে তাকালে আমরা মানব সমাজের একটি সাধারণ বৈশিষ্ট্যের দারুণ প্রয়োগ দেখতে পাই। সে বৈশিষ্ট্যটি কী? ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় মুখ বন্ধ করে, হেনস্থা করে কাউকে দাবিয়ে রাখা যায় না। সত্য প্রকাশিত হবেই। কোপার্নিকাস, গ্যালিলিও, ব্রুনোর উপর অত্যাচারের পরেও ঈশ্বরের পুত্ররা সূর্যের চারিদিকে পৃথিবীর ঘোরা থামাতে পারে নি। পারেনি বিবর্তনকে বিজ্ঞানের মূল ধারা থেকে হটাতে।
তারপরেও কেউ কেউ নিজেদের কান বন্ধ রাখতেই ভালবাসে। তারা ধরে নেয়, সবাই চুপ করে থাকলে সব আগের মতোই থাকবে, পৃথিবীকে রাণী বানিয়ে চারপাশে ঘুরবে সূর্য, চন্দ্র, গ্রহ, তারা, তারা চায় মিথ্যার মাঝে বসবাস করতে। অথচ পাঠ্য বইয়েই তারা ছোট থেকে সত্য কথা বলার কথা শিখে। তারা দাবী করে ধর্মেই আছে সত্য কথা বলার কিংবা সত্য পথে চলার নির্দেশ। অথচ তারাই কোপারনিকাস, গ্যালিলিওর টুটি চেপে ধরে থামাতে চেয়েছে পৃথিবীর ঘূর্ণন। বিপরীত মত প্রকাশের জন্য তারাই অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদকে করেছিল রক্তাক্ত।
ধর্মের ‘ব্যাশিং’-এ আপত্তি? অন্য কিছুতে নয় কেন?
অনেকের মনেই এরকম একটা ধারণা জন্মে গেছে যে, ধর্মকে ‘ব্যাশিং’ করা যাবে না, সমালোচনা করা যাবেনা, করলেও করতে হবে বুঝে শুনে, মাথায় ফুল চন্দন দিয়ে।
ব্যাপারটা হাস্যকর। পৃথিবীতে এমন কিছু নেই যার সমালোচনা হয় না। ছাত্রদের ইতিহাস পড়াতে গিয়ে কোন ঐতিহাসিক ভয় পান না এই ভেবে যে, চেঙ্গিস খানের সমালোচনা করা যাবে না, পাছে ‘চেঙ্গিসানুভূতি’ আহত হয়! কেউ ইতিহাস চর্চা করতে গিয়ে ভাবেন না দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নাৎসিদের অত্যাচারের কথা কিংবা জাপানী বর্বরতার কথা অথবা আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাক বাহিনীর নৃশংসতার কথা বলা যাবে না। কেউ বলেন না, এতে করে কারো ইতিহাসানুভূতিতে আঘাত লাগছে, মামলা করে দেবে! প্রথম আলোর মত পত্রিকা যখন বিজ্ঞানের নামে আগডুম বাগডুম পরিবেশন করে, আমরা বলি না আমরা আদালতের শরণাপন্ন হব, আমাদের বিজ্ঞানুভূতি বিপন্ন। অথচ ধর্মের ক্ষেত্রে সব কিছু হয়ে যায় ব্যতিক্রম। ধার্মিকদের ভঙ্গুর অনুভূতি সামান্যতেই আঘাতপ্রাপ্ত হয়। ধর্মযুদ্ধের নামে বিধর্মীদের উপর কি ধরণের অত্যাচার করা হয়েছিলো তা বললে তাদের ধর্মানুভূতি আঘাতপ্রাপ্ত হয়, পয়গম্বর-নবী-রসুল আর ধর্মের দেবদূতদের অমানবিক কার্যকলাপ তুলে ধরলে ধর্মানুভূতি আঘাতপ্রাপ্ত হয়, নারীদের অন্তরিন করে তাদের অধিকার হরণ করা হয় তা বললে আঘাতপ্রাপ্ত হয়, ধর্মগ্রন্থ গুলোতে বর্ণিত অবৈজ্ঞানিক আয়াত বা শ্লোক তুলে ধরলেও তারা আহত হন। আর ব্যঙ্গ বিদ্রূপ করা হলে তো কথাই নেই; ঈশ্বর যে ‘খুঁটি ছাড়া আকাশকে ছাদ স্বরূপ ধরে রাখেন’ তা যেন চৌচির হয়ে তাদের মাথায় তৎক্ষণাৎ ভেঙ্গে পড়ে। ধর্ম সব সময়ই কৌতুকের বড় উৎস হলেও ব্যঙ্গ এবং কৌতুকবোধের ব্যাপারটা ধার্মিকদের সাথে সবসময়ই কেন যেন রেসিপ্রোকাল। অথচ, সাহিত্য, রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজনীতি চলচ্চিত্র, খেলাধুলা বা অন্যান্য যাবতীয় বিষয়কে সমালোচনা, ব্যঙ্গ বিদ্রূপ করতে তাদের বিন্দুমাত্র আপত্তি নেই। কেবল ধর্মের বেলাতেই গণেশ উল্টে যায় বরাবরই।
সমালোচনার ব্যাপারটা আরেকটু খোলসা করা যাক। আমাদের চারিদিকের সমাজ ব্যবস্থার দিকে তাকালে দেখব, আওয়ামীলীগ বিএনপির সমালোচনা করছে, বিএনপি আওয়ামীলীগের। আমেরিকায় রিপাবলিকানরা করছে ডেমোক্রেটদের দর্শনের সমালোচনা কিংবা বিরোধিতা, আবার অন্যদিকে ডেমোক্রেটরা রিপাবলিকানদের। সমাজতান্ত্রিক আর পুঁজিবাদী ঘরনার লোকেরা যে যার দৃষ্টিকোণ থেকে পরস্পরের সমালোচনা করছে। সমাজ, সাহিত্য, ইতিহাস, বিজ্ঞান, ক্রীড়াতত্ত্ব, প্রযুক্তি – কোনটাই সমালোচনার ঊর্ধ্বে নয়, কিন্তু ধর্মের বেলাতেই ধর্মবাদীরা যেন তালগাছটি বগলে নিয়ে বসে থাকার পণ করেছেন। তারা ধর্মের যে কোন প্রাসঙ্গিক সমালোচনা, ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ কিংবা সংশয়কে চিরতরে নিষিদ্ধ করতে চান, কখনো ধর্মানুভূতির দোহাই দিয়ে, কখনো জনমতের দোহাই দিয়ে, কখনোবা আবার জনশৃংখলা রক্ষার ধোয়া তুলে। তারা চান ধর্মকে ‘মোমের পুতুল’ বানিয়ে হাতের তোলায় রেখে কিংবা পোষা বিড়ালের মতো কোলে নিয়ে অবিরত মাথায় হাত বুলিয়ে যেতে। জ্ঞান-বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখার অপছন্দনীয় বিষয়ের নির্দয় সমালোচনা ধর্মবাদীরা করেন না তা নয়। খুব ভালভাবেই করেন। যেটা পছন্দ না সেটা বলে ফেলেন এক নিমেষেই। তারাও আমাদের মতোই কঠোর সমালোচনা করেন, ডারউইনের গলার সাথে বাঁদরের দেহ জুড়ে দিয়ে কার্টুন আঁকেন, মেয়েরা তাদের পছন্দসই কাপড় চোপড় না পড়লে ফতোয়া দেন, একে তাকে মুরতাদ ঘোষণা করে হত্যার হুমকি দেন, এমন কিছু নেই যে তারা বাদ রাখেন, অথচ ধর্মের বেলায় তারা হাস্যকর ভাবে সমস্ত নিয়মের ব্যতিক্রম চান।
ধর্মবাদীরা অবশ্য তাদের সবকিছুকেই নিয়মের বাইরে রাখতে চান। তারা মনে করেন তাদের মহান ঈশ্বর এই বিশ্বজগতসহ সব কিছু পরম মমতাভরে বানিয়েছেন। কিন্তু যদি উল্টে কোন দুর্মুখ প্রশ্ন করে তবে ঈশ্বরকে কে বানালো? তখনই তারা বলবেন, ঈশ্বরকে রাখতে হবে নিয়মের বাইরে। ‘ও সব প্রশ্ন কোরোনা – বোবা কালা হয়ে থাক’। একই ধারায় তারা চান পৃথিবীর সবকিছুর সমালোচনা, ব্যঙ্গ, বিদ্রূপ চলবে, কেবল ধর্মের বেলায় – নৈবচঃ নৈবচঃ । আসলে ধর্মবাদীদের এই ছেঁদো যুক্তিতে কান দিয়ে শুধু ধার্মিকেরা নন, আমরা মুক্তমনারাও অনেক সময় নিজেদের অজান্তেই তাদের পাতা ফাঁদে পা দিয়ে ফেলি এবং পরিশেষে আমাদের পতন ডেকে আনি। আসলে এমন কোন যুক্তি কারো থলিতে নেই যা মেনে ধর্মকে সমালোচনার চোখে দেখার থেকে অব্যাহতি দেওয়া যায়। অন্য সব কিছুর সমালোচনা হলেও ধর্মের বেলায় মাথায় হাত বোলাতে হবে – সেটা তো হওয়া উচিত নয়। কিন্তু মুশকিল হচ্ছে, বিশেষ করে বাংলাদেশের মত রাষ্ট্রগুলোতে ধর্ম ব্যাপারটি এতটাই সমাজের হাড়ে-মজ্জায় ঢুকে গেছে যে, ধর্মকে সমালোচনার হাত থেকে বাঁচানোকেই আমরা এখন স্বতঃসিদ্ধ বলে মনে করি।
আমরা, অবিশ্বাসের দর্শন বইয়ের দুই লেখক আমাদের বইয়ের সপ্তম অধ্যায় (ধর্মীয় নৈতিকতা)-এ আমরা বলেছিলাম, কেন ধর্মের সমালোচনাকে ব্যতিক্রম হিসবে দেখার কোন যুক্তি থাকতে পারে না। আমরা বলেছিলাম,
মানবতাবাদীরা আর যুক্তিবাদীরা কেন ধর্মগ্রন্থগুলোর সমালোচনা করেন? সমালোচনা করেন কারণ তা সমালোচনার যোগ্য, তাই। কোন কিছুই তো আসলে সমালোচনার ঊর্ধ্বে নয়- তা সে অর্থনীতি বা পদার্থবিজ্ঞানের নতুন কোন তত্ত্বই হোক, বা আল্লাহর ‘মহান’ বাণীই হোক। আসলে পুরো ধর্ম বিশ্বাসই তো দাঁড়িয়ে আছে এক জলজ্যান্ত মিথ্যার উপর ভর করে। ধর্ম মানেই আজ কিছু অবৈজ্ঞানিক চিন্তা-চেতনা, কুসংস্কার আর রীতি-নীতির সমাহার, যেগুলো কালের পরিক্রমায় উপযোগিতা হারিয়েছে। ধর্মের সমালোচনার আর একটি বড় কারণ হল, ধর্মগ্রন্থগুলোর মধ্যে বিরাজমান নিষ্ঠুরতা। ধর্মগ্রন্থগুলি তো আর গীতাঞ্জলী বা সঞ্চিতার মত নির্দোষ কাব্যসমগ্র নয় যে অবসর সময়ে শুয়ে শুয়ে কাব্য চর্চা করলাম আর তারপর আলমারির তাকে তুলে রেখে দিলাম ! ধর্মগ্রন্থগুলিতে যা লেখা আছে তা ঈশ্বরের বাণী হিসেবে পালন করা হয় আর উৎসাহের সাথে সমাজে তার প্রয়োগ ঘটান হয়। হিন্দু ধর্মগ্রন্থগুলোতে বর্ণিত সতীদাহর মাহাত্ম্যকে প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে শুধুমাত্র ১৮১৫ সাল থেকে ১৮২৬ সালের মধ্যে সতীদাহের স্বীকার হয়েছে ৮১৩৫ জন জন নারী। এই তো সেদিনও – ১৯৮৭ সালে রূপ কানোয়ার নামে একটি মেয়েকে রাজস্থানে পুড়িয়ে মারা হল ‘সতী মাতা কী জয়’ ধ্বনি দিয়ে। সারা গ্রামের মানুষ তাকিয়ে তাকিয়ে দেখল – কেউ টু শব্দটি করল না। আর করবেই বা কেন? ধর্ম রক্ষা করে হবে না? মহাভারতের কথা শুনলে যেমন পুণ্য হয়, সতী পোড়ানো দেখলেও নাকি তেমনি। ধর্ম যে কি কিরকম নেশায় বুদ করে রাখে মানুষকে, তার জলজ্যান্ত প্রমাণ এই সতীদাহ। এ জন্যই বোধ হয় প্যাস্কাল বলেছেন – ‘Men never do evil so completely and cheerfully as when they do it from religious conviction.‘ খুবই সত্যি কথা। চিন্তা করুন ব্যাপারটা – জীবন্ত নারী মাংস জ্বলছে, ছটফট করছে, অনেক সময় বেঁধে রাখতে কষ্ট হচ্ছে, মাঝে মাঝে পালাতে চেষ্টা করছে – আফিম জাতীয় জিনিস গিলিয়ে দিয়ে লাঠি দিয়ে খুঁচিয়ে আবার চিতায় তুলে দেওয়া হচ্ছে – কী চমৎকার মানবিকতা ! প্রায় প্রতিদিনই পত্র-পত্রিকায় পড়ছি যে, ইসলামী বিশ্বে শরিয়া আইনের শিকার হয়ে প্রাণ হারাচ্ছে অসহায় সাফিয়া, আমিনারা। কোরআনের আয়াত উদ্ধৃত করে কাফিরদের বিরুদ্ধে রোজই যুদ্ধের হাঁক পাড়ছে বায়তুল মোকারমের ‘বিখ্যাত’ খতিব (অধুনা মৃত)। তবুও নেশায় বুদ হয়ে ধর্ম আর ধর্মগ্রন্থের মধ্যে ‘শান্তি’, ‘প্রগতি’ আর ‘সহিষ্ণুতা’ খুঁজে চলেছেন মডারেট ধর্মবাদীরা।
সমালোচনায় যদি ধার্মিকদের এতোই আপত্তি থাকে তাহলে তাদেরকেই বলতে হবে কেন তাদের আরাধ্য ধর্মগ্রন্থগুলোতে এত হিংসা-বিদ্বেষ আর হানাহানির ছড়াছড়ি। অবিশ্বাসীদের যেখানেই পাওয়া যাক তাদের হত্যা করতে, তাদের সাথে সংঘাতে লিপ্ত হতে, কঠোর ব্যবহার করতে, গর্দানে আঘাত করতে – এই ধরণের আক্রমণাত্মক কথা তো পবিত্র ধর্মগ্রন্থতেই লিপিবদ্ধ আছে। বিধর্মীদের কিংবা সমকামীদের ঢালাওভাবে ঘৃণা করার কিংবা হত্যা করার কথাও সেসব বাণীতেই আছে। আছে নারীদের ঘোড়া, গাধা কিংবা শস্যক্ষেত্রের সাথে তুলনা করার মত রুচিহীন ইঙ্গিতসমৃদ্ধ আয়াত কিংবা শ্লোকও। সেইসব রুচিহীন হিংসা বিদ্বেষ ছড়ানো বানীগুলোকে ঈশ্বরের বাণী বানিয়ে কপালে ঠেকিয়ে, চুমু খেয়ে অবিরত ধারায় পাঠ করে যেতে তাদের আপত্তি নেই, আপত্তি কেবল যদি কোন বদমায়েশ নালায়েক কখনো সেগুলো ভুল করে ব্লগে বা সাইটে উল্লেখ করে ফেলে! শুধু ধর্মে কেন, ধর্মপ্রচারক-নবী-রসুল -পয়গম্বরদের নান পবিত্র কাজ-কর্মেও বহু সহিংসতা আর অমানবিকতার অগুনতি উপাদান ছড়িয়ে আছে। বনি কুয়ানুকা, বনি নাদির আর বনি কুরাইজার ইহুদী গোত্রকে আক্রমণ করে নিরপরাধ নারী, পুরুষ শিশুকে যেভাবে হত্যা করা হয়েছে, সেগুলোকে ক্যারেন আর্মস্ট্রং এর মত ‘ইসলামের প্রতি সহানুভূতিশীল’ লেখিকাও নাৎসি গণহত্যার সাথে তুলনা করতে বাধ্য হয়েছেন। বেদ পাঠ করার অপরাধে নিরপরাধ শম্বুককে শিরোচ্ছেদ করার কথা কিংবা ধর্ষণের জন্য কুমারী বাদে সব বৃদ্ধ নারী এবং শিশুদেরকে মেরে ফেলার নির্দেশ বিভিন্ন ধর্মের পয়গম্বরদের কাজের মধ্যেই পাওয়া যায়। মক্কা বিজয়ের পর যেভাবে কাবার সমস্ত মূর্তি ধ্বংস করা হয়েছিলো, অন্য মানুষ আজ সেটা করলে যে কোন আদালতই একে প্রতিপক্ষের ধর্মানুভূতির উপর আঘাত কিংবা জনশৃংখলা ভঙ্গের দায়ে অভিযুক্ত করতেন। কাজেই ‘ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা সংবিধানবিরোধী কাজ’ কিংবা ‘রাষ্ট্রদ্রোহী কাজ’ মনে হলে সবার আগে তাদের অভিযুক্ত করা উচিৎ মুখে শান্তির বুলি আওরানো কিন্তু কাজে সর্বদা হানাহানিতে লিপ্ত বিভিন্ন ধর্মের দূত এবং পয়গম্বরদেরই।
স্বর্গীয় দেবদূত আর পয়গম্বরদের কাজের কথা না হয় বাদ থাকুক; দেশের মানুষের কথাই ধরুন। মাননীয় আদালত কি ভুলে গেছেন, বিগত বিএনপি জামাতের আমলে – ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট দেশব্যাপী একযোগে বোমা হামলা চালানোর ঘটনা? সেদিন সারা বাংলাদেশে ৬৩টি জেলায় একনাগাড়ে বোমার মহড়া চালানো হয়। মহড়ার প্রকোপ এমনই ব্যাপক ছিল যে অনেকেই ১৭ ই আগস্ট দিনটিকে সে সময় ‘বাংলাদেশের ৯/১১’ বলে অভিহিত করেছিলেন। বোমা মহড়ার স্থানগুলোতে পাওয়া তাদের ছাপানো লিফলেটগুলোর কথা কি মনে আছে? সারা লিফলেট জুড়েই তো ছিলো কোরান আর হাদিস থেকে নানা উদ্ধৃতি আর কাফের নাফরমানদের বিরুদ্ধে জিহাদের ডাক। ছিলো না? এগুলো যদি ইসলাম ধর্মকে ভুল বোঝা একদল সন্ত্রাসীর কাজ হয়, তাহলে তো তাদের বিরুদ্ধেও ধর্মানুভূতিতে আঘাতের প্রতিবাদ করা দরকার ছিলো। তারা তো কেবল আঘাত করে ক্ষান্ত থাকেন নি, তারা তো শান্তির ধর্ম ইসলামকে বেদখল করেছেন। রুমানা মঞ্জু্রকে তার স্বামী রীতিমত অন্ধ বানিয়ে দেবার পর তাকে নিয়ে নানা কুৎসা রটনা হয়েছে ফেসবুকে, জাফর ইকবালের মেয়েকে জড়িয়ে, তার নানা ছবি দিয়ে ভরাট করে রাখা হয়েছে ইন্টারনেট। দুঃখ এটাই, আজকে ফেসবুক ভরে গেছে ‘আপা ওড়না গলায় ক্যান, বুকে দেন’ টাইপের অন্তত শ’খানেক পেইজ যেগুলোতে নারীদের প্রতিনিয়ত অপমান করা হয়, বিবস্ত্র করা হয়, বিকৃত মজা উপভোগ করা হয়- সেসব নিয়ে কারও কোনো কথা নেই। কথা থাকার অবশ্য কথাও না। তাদের কারো সমস্যা হয় না ফটোশপে ছবি রদবদল করে কুমড়া, জাম্বুরা কিংবা গাছের ছালে আল্লাপাকের নাম লিখে আর পেইজ বা গ্রুপ খুলে সেই মিথ্যে অলৌকিকতার বিস্তারে। সবগুলোতেই এক শ্রেনীর মানুষকেই বেশি দেখা যায়, প্রতিটিতেই মাঝে মাঝে ধর্ম গুনগানের পোস্ট। সওয়াব আর গুণা কাটাকাটি করার জন্যই বোধহয়। নির্বুদ্ধিতা আর অপগণ্ডামির নিরন্তর প্রচারে কারো সমস্যা নেই, যত সমস্যা হয় ‘পবিত্র’ ধর্মের নামে চলমান এই সব কুসংস্কার আর অপবিশ্বাসের বিরোধিতা করলেই।
অথচ ধার্মিকদের ধর্মানুভূতির মতো আমাদেরও ‘নাস্তিকানুভূতি’ আহত হতে পারতো। প্রতিনিয়ত হয়ও। আমাদের নাস্তিকানাভূতি প্রতিদিনই আহত হয়, যখন দেখি টিভি খুললেই কিংবা কোন রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান শুরু হলেই কোরান তেলোয়াত আর গীতা, ত্রিপিটক আউরে অদৃশ্য এবং অলীক ঈশ্বরকে খুশি করে অনুষ্ঠান শুরু করতে হয়; আমাদের অবিশ্বাসের দর্শনানুভূতি আহত হয় যখন জোর করে ধর্মশিক্ষার মত রূপকথাকে মাধ্যমিক স্তরে সবার জন্য বাধ্যতামূলক করা হয়, আমাদের বিজ্ঞানুভূতি আহত হয় যখন মেরাজ আর বোরাকের রূপকথাকে আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতত্ত্ব টেনে এনে বৈধতা দেয়ার চেষ্টা করা হয় কিংবা বিবর্তনকে পাঠ্যপুস্তক থেকে অস্পৃশ্য করার উদ্যোগ নেয়া হয়। কিন্তু এর জন্য কারো অনুভূতি ক্ষুন্ন হতে দেখি না, মামলাও হয় না, হয় কেবল এর বিপরীতটি ঘটলেই।
ধর্মানুভূতি – সমাজের এক নতুন ইন্দ্রিয় যেন
অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদ ধর্মানুভূতির উপকথা নামে একটি প্রবন্ধ লিখেছিলেন কয়েক বছর আগে। তিনি এই ধর্মানুভূতির উপকথা প্রবন্ধটি লেখার পর নিজেই মুক্তমনায় ইমেল করেছিলেন প্রকাশের জন্য। লেখাটি মুক্তমনা সাইটে রেখে দেয়া হয়েছিলো পিডিএফ আকারে । পরে অধ্যাপক আজাদ এই প্রবন্ধটিকে নিজের বইয়ে সংকলিত করেন যে বইটির শিরোনামও ছিল ‘ধর্মানুভূতির উপকথা’। ব্যতিক্রমধর্মী এ প্রবন্ধটি পরবর্তীতে মুক্তমনার সংকলন গ্রন্থ ‘স্বতন্ত্র ভাবনা’ (২০০৮) তেও প্রকাশিত হয়। তিনি লেখাটিতে কিছু তাৎপর্যময় কথা বলেছিলেন যা, আজকের সময়েও অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক –
একটি কথা প্রায়ই শোনা যায় আজকাল, কথাটি হচ্ছে ‘ধর্মানুভূতি’। কথাটি সাধারণত একলা উচ্চারিত হয় না, সাথে জড়িয়ে থাকে ‘আহত’ ও ‘আঘাত’ কথা দুটি; শোনা যায় ‘ধর্মানুভূতি আহত’ হওয়ার বা ‘ধর্মানুভূতিতে আঘাত’ লাগার কথা। আজকাল নিরন্তর আহত আর আঘাতপ্রাপ্ত হচ্ছে মানুষের একটি অসাধারণ অনুভূতি, যার নাম ধর্মানুভূতি। মানুষ খুবই কোমল স্পর্শকাতর জীব, তার রয়েছে ফুলের পাপড়ির মতো অজস্র অনুভূতি; স্বর্গ চ্যুত মানুষেরা বাস করছে নরকের থেকেও নির্মম পৃথিবীতে, যেখানে নিষ্ঠুরতা আর অপবিত্রতা সীমাহীন; তাই তার বিচিত্র ধরনের কোমল অনুভূতি যে প্রতিমুহূর্তে আহত রক্তাক্ত হচ্ছে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। যখন সুদিন আসবে, সে আবার স্বর্গে ফিরে যাবে, তখন ওই বিশুদ্ধ জগতে সে পাবে বিশুদ্ধ শান্তি; সেখানে তার কোনো অনুভূতি আহত হবেনা, ফুলের টোকাটিও লাগবে না তার কোনো শুদ্ধ অনুভূতির গায়ে। অনন্ত শান্তির মধ্যে সেখানে সে বিলাস করতে থাকবে। কিন্তু পৃথিবী অশুদ্ধ এলাকা, এখানে আহত হচ্ছে, আঘাত পাচ্ছে, রক্তাক্ত হচ্ছে তার নানা অনুভূতি- এটা খুবই বেদনার কথা; এবং সবচেয়ে আহত হচ্ছে একটি অনুভূতি, যেটি পুরোপুরি পৌরাণিক উপকথার মতো, তার নাম ধর্মানুভূতি।
মানুষ বিশ্বকে অনুভব করে পাঁচটি ইন্দ্রিয়ের সাহায্যে; ইন্দ্রিয়গুলো মানুষকে দেয় রূপ রস গন্ধ স্পর্শ শ্রুতির অনুভূতি; কিন্তু মানুষ, একমাত্র প্রতিভাবান সৃষ্টিশীল প্রাণী মহাবিশ্বে শুধু এ-পাঁচটি ইন্দ্রিয়েই সীমাবদ্ধ নয়, তার আছে অজস্র ইন্দ্রিয়াতীত ইন্দ্রিয়। তার আছে একটি ইন্দ্রিয়, যার নাম দিতে পারি সৌন্দর্যন্দ্রিয়, যা দিয়ে সে অনুভব করে সৌন্দর্য; আছে একটি ইন্দ্রিয়, নাম দিতে পারি শিল্পেন্দ্রিয়, যা দিয়ে সে উপভোগ করে শিল্পকলা; এমন অনেক ইন্দ্রিয় আছে তার, সেগুলোর মধ্যে এখন সবচেয়ে প্রখর প্রবল প্রচণ্ড হয়েছে হয়ে উঠেছে ধর্মেন্দ্রিয়, যা দিয়ে সে অনুভব করে ধর্ম, তার ভেতর বিকশিত হয় ধর্মানুভূতি, এবং আজকের অধার্মিক বিশ্বে তার স্পর্শকাতর ধর্মানুভূতি আহত হয়, আঘাতপ্রাপ্ত হয় ভোরবেলা থেকে ভোরবেলা। অন্য ইন্দ্রিয়গুলোকে পরাভূত ক’রে এখন এটিই হয়ে উঠেছে মানুষের প্রধান ইন্দ্রিয়; ধর্মেন্দ্রিয় সারাক্ষণ জেগে থাকে, তার চোখে ঘুম নেই; জেগে থেকে সে পাহারা দেয় ধর্মানুভূতিকে, মাঝেমাঝেই আহত হয়ে চিৎকার ক’রে ওঠে, বোধ করে প্রচণ্ড উত্তেজনা। এটি শিল্পানুভূতির মতো অনুভূতি নয় যে আহত হওয়ার যন্ত্রণা কেবল একলাই সহ্য করবে। এটা আহত হ’লে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। ধর্মানুভূতির উত্তেজনা ও ক্ষিপ্ততায় এখন বিশ্ব কাঁপছে।
হুমায়ুন আজাদের কথা একবর্ণ মিথ্যে নয়। ধর্মানুভূতি নামক জুজুর উত্তেজনা ও ক্ষিপ্ততায় এখন সারা বিশ্ব কাঁপছে। পাঠকদের নিশ্চয়ই মনে আছে, ২০০৬ সালে ড্যানিশ একটি পত্রিকায় মোহাম্মদ (সঃ) এর বেশ কয়েকটি কার্টুন প্রকাশের পর ধর্মানুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে কিভাবে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছিলো সারা মুসলিম বিশ্ব। যদিও ধর্মানুভূতি একটি অসংজ্ঞায়িত এবং নিরপেক্ষ দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে একটি অপরিমাপেয় ধারণা বই কিছু নয়। আদালতের উচিৎ পার্থিব বিষয় আশয়ে রুলিং দেয়া, ধর্মানুভূতির মতো অসংজ্ঞায়িত, অপরিমাপযোগ্য, বিমূর্ত বিষয়ে নয়।
ড্যানিশ পত্রিকায় ছাপা হওয়া কার্টুনগুলো পৃথিবীর প্রতিটি প্রান্তে এমনকি বাংলাদেশেও রাজনীতিবিদদের কার্টুন এর মানদণ্ডে মোটামুটি গোবেচারা ধরণের। সর্বমোট বারোটি ছবির মধ্যে, তিনটি কার্টুন ইসলাম এবং সন্ত্রাসের সম্পর্ক উদ্দেশ্য করে। আর এই কার্টুনগুলো ছাপানোর পরে পুরো পৃথিবীতে বিক্ষোভ প্রকাশে ফেটে পড়ে মুসলমানরা। সৌদি আরবের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ডেনমার্ক কর্তৃপক্ষকে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের আহবান জানান, এবং এমন ঘটনা যেনো ভবিষ্যতে কেউ করার সাহস না পায়, তার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের যথাযথ শাস্তি প্রদানের অনুরোধ করেন। এর ঠিক দুইবছর আগে ২০০৪ সালের সেপ্টেম্বরে নেদারল্যান্ডের একটি টেলিভিশন চ্যানেলে প্রথমবারের মতো সম্প্রচারিত হয় চলচ্চিত্র নির্মাতা থিও ভ্যান গগের স্বল্প-দৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘সাবমিশন’- যার মূল বিষয় ছিলো মুসলিম নারীর উপর আরোপিত ইসলামি সমাজের নির্যাতন কথা। থিও ভ্যান গগ আর তার চলচ্চিত্রের মাঝে সময়টা মোটে এক মাস। একই বছরের নভেম্বরের দুই তারিখ, ভ্যান গগ আমস্টার্ডামের রাস্তায় মুহাম্মদ বোয়েরি নামের এক ধর্মান্ধ মুসলমানের গুলিতে নিহত হন। গুলি করে মেরে ফেলেই খুনি ক্ষান্ত হয়নি, ছুরি দিয়ে তার মাথা আলাদা করে ফেলা হয়। ১৯৯২ সালে মিশরের লেখক ফারাজ ফদা ইসলামকে অপমান করার জন্য খুন হন, নোবেল পুরষ্কার পাওয়া মিশরের আরেক উপন্যাসিক নাগিব মাহফুজকে ধর্মানুভূতিতে আঘাতের উছিলায় ছুরিকাঘাত করা হয় ১৯৯৪ সালে, ২০০৪ সালের ২৭শে ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের প্রথাভাঙ্গা লেখক হুমায়ুন আজাদের উপর হামলা চালায় এদেশের একটি ইসলামী মৌলবাদী গোষ্ঠী। চাপাতি দিয়ে ক্ষত বিক্ষত করে ফেলা হয় তার দেহ,যা পরে তাকে প্রলম্বিত মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়। দেশের সরকার অবশ্য এটাকে সেক্যুলারিস্টদের কাজ বলে পার পেতে চেয়ছিলো, তৎকালীন ইসলামিস্ট মন্ত্রী এও বলেছিলেন, বাংলাভাইরা সব মিডিয়ার সৃষ্টি।
ইসলামের সাথে সন্ত্রাসের সম্পর্ক আছে কি নেই সেই চায়ের পেয়ালায় ঝড় তোলা বিতর্কে না গিয়েও বলা যায়, ডেনমার্কের পত্রিকায় প্রকাশিত কার্টুনগুলো কিছু বাস্তবতার দিকে আঙ্গুল প্রদর্শন করে যে বাস্তবতায় আছে বাংলার বাংলা ভাই, বিদেশের ওসামা বিন লাদেন, আইমান আল যাওয়াহ্রি, আবু হামজা, মোহাম্মদ আত্তা সহ হাজার হাজার জিহাদি যারা কোরআন এবং হাদিসের বানী দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে হত্যা করছে অসংখ্য নিরপরাধ মানুষকে। শান্তিপ্রিয় মুসলমানরা কার্টুনটি দেখে এই বাস্তবতাটা দেখতে পারতেন, সে বাস্তবতায় সত্যতা পেলে সেটা সমাধানে সচেষ্ট হতে পারতেন, কিন্তু আমরা মানুষেরা- যা দেখতে চাই না, তা দেখিনা, তাই মুসলমানরা ধর্মানুভূতিতে আঘাত লেগেছে বলে চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করে দিলেন। ডেনমার্কের পত্রিকার ব্যান চাইলেন, সম্পাদক পেলেন মৃত্যুর হুমকি।
তারচেয়েও মজাদার ছিলো ব্রিটেনের ফ্যানাটিক মুসলিমদের কাজকর্ম। ব্রিটেনের মুসলিমরা সন্ত্রাসের সাথে যে ইসলামের কোন সম্পর্ক নেই, কিংবা ইসলাম যে কত শান্তিপূর্ণ ধর্ম, তা ‘প্রমাণ’ করতে রাস্তায় মিছিল করেছিল ব্যানার আর প্ল্যাকার্ড নিয়ে, যেগুলোতে লেখাছিলো – ‘Slay those who insult Islam’, ‘Butcher those who mock islam’, ‘Behead those who say Islam is a violent religion’
ছবি – ড্যানিশ পত্রিকায় কার্টুন ছাপানোর পরে ব্রিটেনের মুসলিমরা সন্ত্রাসের সাথে যে ইসলামের কোন সম্পর্ক নেই, কিংবা ইসলাম যে কত শান্তিপূর্ণ ধর্ম, তা ‘প্রমাণ’ করতে রাস্তায় মিছিল করেছিল ব্যানার আর প্ল্যাকার্ড নিয়ে, যেগুলোতে লেখা ছিল ‘যারা বলে ইসলাম ভায়োলেন্ট রিলিজিয়ন, তাদের কতল করুন’, কিংবা ‘ইসলামকে ব্যঙ্গ যারা করে তাদের ম্যাসাকার করুন’।
‘যারা বলে ইসলাম ভায়োলেন্ট রিলিজিয়ন, তাদের কতল করুন’ – এর চেয়ে বড় ইসলামিক কার্টুন আর কি হতে পারে! সাধে কি আমরা বলি ধর্মই সকল বিনোদনের উৎস? তামাসা কেবল ড্যানিশ কার্টুন নিয়েই হয়নি, তামাসা হয়েছিলো বাংলাদেশে কার্টুনিস্ট আরিফের আঁকা আপাত নিরীহ ‘মুহম্মদ বিড়াল’ কার্টুন নিয়েও। বেচারা আরিফকে জেল খাটতে হয়েছিলো এর জন্য। অথচ সেই কার্টুন বহু আগেই প্রকাশ করেছিলো শিবিরের পত্রিকা কিশোর কণ্ঠ। তখন কারো ধর্মানুভূতি আহত হতে দেখা যায়নি।
কার্টুন কিংবা থিও ভ্যান গগের চলচ্চিত্র- দুটি জিনিসই মুসলমানদের প্রতি আক্রমণাত্মক সন্দেহ নেই। কিন্তু কার্টুন এঁকে কিংবা চলচ্চিত্র তৈরি করে সমাজের একটি বাস্তবতার ব্যক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গি তুলে দেওয়া কি মৃত্যু দণ্ডে দণ্ডিত হবার মতো অপরাধ? আমাদের একমাত্র জীবনটা চলে যাবে একটা সামান্য কার্টুনের জন্য- যেটা আঘাত করে একটা গোষ্ঠীর ধর্মানুভূতিতে- যে গোষ্ঠী অন্যের ধর্মানুভূতিতে আঘাত খাওয়ার মতো ব্যাপার দেখলে হাসে, নিজেরটা দেখলে কাঁদে? তারচেয়েও বড় কথা হল, ডারউইনের মাথার সাথে বানরের ছবি জুড়ে দেয়ার কেরিক্যাচার তো ধার্মিকেরাই চালু করেছেন, কই তাতে কোরে তো কারো ‘ডারউইনানুভূতি’ আহত হয়নি, কাউকে এর জন্য মেরে ফেলার হুমকি ধামকিও খেতে হয়নি। ধর্মের ক্ষেত্রে একই যাত্রায় পৃথক ফল হবে কেন?
ছবি – ডারউইনের মাথার সাথে বানরের ছবি জুড়ে দেয়ার কার্টুনীয় রীতি তো ধার্মিকেরাই চালু করেছেন, অথচ মুহম্মদকে নিয়ে একই ধরনের কোন ব্যঙ্গবিদ্রূপ করলে তারা নাঙ্গা তলোয়ার হাতে ঝাঁপিয়ে পড়েন।
ইউনিভার্সাল ডিক্লারেশন অব হিউম্যান রাইটস-এর আর্টিকেল-১৯ এ পরিস্কার বলা আছে –
“Everyone has the right to freedom of opinion and expression; this right includes freedom to hold opinions without interference and to seek, receive and impart information and ideas through any media and regardless of frontiers.”
রাষ্ট্রের কাছে থেকে তাই বাক স্বাধীনতা রক্ষার অধিকার আশা করা যুক্তিসঙ্গত। কিন্তু দুঃখের বিষয় রাষ্ট্র সেটা না দিয়ে বরঞ্চ বাক-স্বাধীনতার অধিকাররোধে বেশি সচেষ্ট থাকে; রাষ্ট্র বেফাঁস কথা বলা পছন্দ করেনা, বিরোধিতা পছন্দ করেনা। বাংলাদেশের মতো দেশগুলোতে রাষ্ট্রযন্ত্র মূলতঃ ক্ষমতার মসনদ ধরে রাখার জন্য সংখ্যাগরিষ্ঠকে ধর্মীয় আফিমে নেশাগ্রস্থ করে রাখতে অনেক আগ্রহী- তাই এ ধরণের রাষ্ট্রযন্ত্রগুলো বাক স্বাধীনতা রক্ষার অধিকার দেবার পরিবর্তে হরণে বেশি আগ্রহী। আর সেইসব রাষ্ট্রের আফিমগ্রস্থ মানুষেরা বিশ্বাস করে, আত্মঘাতী বোমা হামলা করে ত্রিশ জন মারার ঘটনা থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ সে ঘটনায় ইসলামকে জড়িয়ে খারাপ কিছু বলা হয়েছে কিনা- যদি হয়ে থাকে,তাহলে তারা আঘাত পায়। মূল ঘটনা ধামাচাপা পড়ে বড় হয়ে উঠে অন্য ঘটনা- যে ঘটনার খলনায়ক- ‘ব্যাটা তোরে লিখতে কইছে কে’।
লিখবোনা? আঁকবোনা? যেখানে সমালোচনা দেখলে সমালোচকের গলা টেপার পরিবর্তে সমালোচনার কারণ খতিয়ে দেখা ‘উচিত’- পৃথিবীর ধার্মিকেরা এতো সহজ ব্যাপারও বোঝেনা? পঞ্চাশোর্ধ বছর বয়সে ছয় বছরের বালিকাকে বিয়ে করে, কিংবা পালকপুত্রের স্ত্রীকে দেখে লালায়িত হয়েও নিজকে ‘প্রেরিত পুরুষ’ বলে দাবী করবেন কোন এক চাঁদু –এগুলো নিয়ে কার্টুন কেউ আঁকবেনা? মুখে শান্তির ধর্ম বলে ফ্যানা তুলে ফেলে সারা বিশ্বে সন্ত্রাসের চাষ করে বেড়ালে সেই দ্বিচারিতা নিয়ে কেউ ব্যঙ্গ করবে না? পৃথিবীর আলো-বাতাস-বিজ্ঞান-প্রযুক্তি সব ব্যবহার করে যারা আজও গুণগান গাইছে মধ্যযুগের হিংসা-বিদ্বেষভরা মতবাদগুলোর প্রতি, সেইসব বালুর মধ্যে মুখ গুঁজে থাকা ব্যক্তিদের নিয়ে কৌতুক করাটা দোষের? পৃথিবীতে লক্ষ লক্ষ আহাম্মক গোষ্ঠীর মধ্যে কতোগুলো গোষ্ঠী আজও বিশ্বাস করে পৃথিবী সমতল, কতোগুলো মনে করে এলভিস প্রিসলি বেঁচে আছেন এখনও- এই আহাম্মকদের নিয়ে উপহাস করা যাবেনা? কারণ তারা আঘাত পাবে?
আমাদের দেশটায় আজ ধর্মের জয়জয়কার। ধর্মান্ধতার জয়জয়কার। জয়জয়কার নির্বুদ্ধিতার। অথচ বিজ্ঞান- যে সত্যিকার অর্থে আমাদের পার করিয়েছে নদী, সেতু তৈরি করে, কোনো নবী বা ধর্মগ্রন্থের জ্ঞান নয়- সে বিজ্ঞানের চেতনা আমরা পরিহার করছি সযতনে- যদিও এইসব চেতনা বুঝতে একটু চোখ-কান খোলা রাখলেই হয়। কিন্তু এতো সহজ একটা কাজও না করে বেঁচে থাকার জন্য প্রাণান্তকর চেষ্টা করি আমরা। ধর্মানুভূতির চাপে পড়ে আজ এদেশে বিবর্তনবিদ্যা পড়ানো হয়না, স্কুল কলেজের জীববিজ্ঞান বই থেকে উঠিয়ে দেওয়া হয় জীববিজ্ঞানের মূল ভিত্তি বিবর্তন সেই বিষয়টাই। আমাদের ধর্মানুভূতির সেপাই আজও আমাদের জন্য নির্ধারণ করে দিতে চাইছেন, আমরা কী দেখবো, কী পড়বো, কী শুনবো আর কী শুনবোনা।
মূলধারায় ধর্মের সমালোচনা বন্ধ হয়ে গেছে অনেকটাই। কিন্তু ইন্টারনেট? সেখানে সমালোচনা বন্ধ করা দরকার না? ধর্মানুভূতির সেপাইরা রাষ্ট্রকে নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েন সে ব্যাপারে-
আমাদের ধর্মানুভূতির সেপাইরা রাত ভর মাইকিং করে অন্য ধর্মের মানুষদের, অন্য দেশের মানুষের আরাম করে গালাগালি করে যেতে পারেন, কিন্তু ফেসবুকে তার ধর্মের বিরুদ্ধে একটা কথা শুনলে মুখ ভার করে ফেলেন। আসলেই কী ফেলেন? না ফেলেন না, কিন্তু সংগঠন ফেলে। সংগঠন তাদের পরিচালনা করে। আর যেহেতু এদেশে তাদের সংগঠন শক্তিশালী তাই রাষ্ট্র তাদের হাত করার জন্য তাদের পক্ষ নেয়, রাষ্ট্র আমাদের বিজ্ঞানানুভূতিতে নিয়ে চিন্তিত নয়, আমাদের সৌন্দার্যানুভূতি নিয়ে চিন্তিত নয়, আমাদের সভ্যতানুভূতি নিয়ে চিন্তিত নয়- হঠাৎ করে রাষ্ট্র চিন্তিত সংখ্যাধিক্য সংগঠনের ধর্মানুভূতি নিয়ে, কারণ সংখ্যালঘুদের বেইল দিয়ে লাভ নেই। মূলধারার পর ইন্টারনেটে তাই এখন ধীরে ধীরে পড়ছে ধর্মানুভূতির রক্ষার্থে কথা সেন্সরশিপের কোপানল।
ইন্টারনেট কী এভাবে দমানো সম্ভব?
ড্যানিশ কার্টুনের ঘটনা, থিও ভ্যান গগের ঘটনার পর সাউথ পার্কও মুসলমানদের একই রোষানলে পড়ে তাদের ২০০ এবং ২০১ তম পর্বটি সেন্সর করতে বাধ্য হয়। ভয় দেখিয়ে বর্তমান সময়ে মত প্রকাশের স্বাধীনতার উপর এই নিরন্তন বাঁধার প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে ইন্টারনেটে এক অভূতপূর্ব আন্দোলনের জন্ম হয়- ‘এভরিবডি ড্র মুহাম্মদ ডে’ নামে। একটি ফেসবুক পাতাকে কেন্দ্র করে লক্ষ লক্ষ ছবি আঁকা হয়, মুহাম্মদের। এখানে একটি বিষয় মুসলমানদের বোঝা দরকার, মুহাম্মদের ছবি আঁকা তাদের জন্য নিষিদ্ধ হলেও যারা তাদের ধর্মভুক্ত নয়- তাদের জন্য কিন্তু এ নিয়ম খাটে না। ২০ মে ২০১০ সালে দিনটি পালনের আগের দিন পাকিস্তানের আদালত ফেসবুক ব্লক করে। কী লাভ হলো তাতে? এখানে বলে নেয়া উচিত, মন্দিরের ঘণ্টাধ্বনি শুনেও একজন মুসলিমের ধর্মানুভূতি আহত হওয়ার কথা, সেটার বিরুদ্ধেও সোচ্চার হওয়ার কথা। কিন্তু হচ্ছে না, কেন? কারণ হিসেবে বলা যায়, কোন দেশের আইন বা মানুষের নৈতিকতার ভিত্তিটা গড়ে ওঠে পারিপার্শ্বিক অবস্থার সাথে খাপ খাইয়ে। আমাদের সাংস্কৃতিক ইতিহাস বলে, ইসলাম ধর্ম এদেশে প্রবেশ করার পূর্বে আমরা ছিলাম জাতিগতভাবে সনাতন অথবা বৌদ্ধ ধর্মানুসারী- সুতরাং আমাদের যে মিশ্র ধর্মীয় সংস্কৃতি এবং সহনশীলতার ইতিহাস আছে, মূল্যবোধ আছে- সেটা মধ্যপ্রাচ্যের প্রধান ধর্মের মূল্যবোধে নেই। ক্ষেত্র বিশেষে ব্যতিক্রম হলেও, আমাদের দেশে ইসলাম প্রচারে এসেছিলো প্রধানত সূফী সাধকেরা, যাদের প্রেমের বাণী এদেশের মানুষের হৃদয় জয় করে নিয়েছিল। কিন্তু একবিংশ শতাব্দীর প্রেক্ষাপটে আমাদের দেশে মৌলবাদ মাথা চাড়া দিয়ে উঠলেও আমরা কিন্তু সৌদি আরব কিংবা ইরানের মতো ইসলামিক রাষ্ট্র হিসেবে নিজেদের ঘোষণা করি নি হাতে কলমে, আমাদের সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ সেটা বলে না। তাহলে কেন সেই মধ্যযুগীয় অন্ধ মূল্যবোধের দোহাই দিয়ে আমাদের রাষ্ট্র বলপ্রয়োগ করবে? ধর্মানুভূতি বলে কোন সুনির্দিষ্ট অনুভূতি চিহ্নিত করে কী কোন আইন প্রণয়ন করা সম্ভব? কারণ ধর্মানুভূতির ব্যাপারটাই বিমূর্ত এবং প্রত্যেক ধর্মের সাথে একে অপরের সঙ্ঘাতপূর্ণ। কোন সনাতন ধর্মাবলম্বী গিয়ে যদি আদালতে আবেদন করে গরু কোরবানির জন্যে তার ধর্মানুভূতি রক্তাক্ত- তাহলে রাষ্ট্র কী তার ধর্মানুভূতি রক্ষার জন্যে পদক্ষেপ গ্রহণ করবে? যেহেতু রাষ্ট্রের চোখে সবাই সমান- প্রত্যেক ধর্মানুসারীই, না কি তখন আইন প্রণয়ন করা হবে সংখ্যাগুরু মানুষের মূল্যবোধের ওপর ভিত্তি করে? পরোক্ষভাবে কি এখনো সেই ব্যাপারটাই হচ্ছে না? ভয়-ভীতি দেখিয়ে বই, পত্র-পত্রিকা বন্ধ করলেও এখন কী আর আদতে মুখ চেপে ধরা সম্ভব হয়?
কাহিনি ঘটানোর পুরাতন টেকনিক আর কাজ করছে না, রাষ্ট্র- আর আমাদের সেন্সরকারীরা ঝাঁপিয়ে পড়ছে নতুন এই ক্ষেত্র ইন্টারনেট আটকে ফেলার উপায় বের করতে। উইকিলিক্স আমেরিকার আফগানিস্তান ও ইরাক যুদ্ধের গোপনীয় বিশাল নথি, গুয়ানতানামু কারাগার এবং আমেরিকার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অসংখ্য নথি সংগ্রহ করে ইন্টারনেটে ছেড়ে দিয়ে সাংবাদিকতার এক নতুন দিগন্ত প্রতিষ্ঠা করে। আমরা দেখলাম, খুব আগ্রহ নিয়েই দেখলাম – পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী রাষ্ট্র আমেরিকাও তাদের গলা টিপে ধরার প্রচেষ্টায় সফল হতে পারলো না। ২০১০-১১ সাল জুড়ে চলা মধ্যপ্রাচ্যের দেশ গুলোতে ঘনীভূত হয়ে উঠা সংগঠিত চলমান আন্দোলনের পেছনে ইন্টারনেটের এবং সামাজিক যোগাযোগ সাইটগুলোর প্রভাব আমরা সবাই দেখেছি। সিরিয়ার মতো একটি বদ্ধ দেশে থাকা মানুষেরা তাদের কথা, তাদের অবস্থা সারাবিশ্বকে জানাতে পেরেছে ইন্টারনেটের মাধ্যমে। তিউনিসিয়ায় চাকুরিবিহীন বেকার যুবকদের আগুনে আত্মাহুতি দেবার ঘটনাকে কেন্দ্র করে তিউনিসিয়ার সরকারের প্রতি যে বিক্ষোভ দানা বেঁধে উঠেছিলো তাকে ঠেকাতে ইন্টারনেটের সংযোগ বন্ধ করে দিয়েছিলো সরকার। লাভ হয়নি, বরং তিউনিসিয়ার সফল বিপ্লবকে চিহ্নিত করা হয়েছে ‘The Story of the First Successful Internet Revolution’ হিসেবে। মিশরের বিপ্লবীরাও যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করেছে ইন্টারনেট। মিশরের সরকার গদি বাঁচাতে ফেসবুক ইউটিউব টুইটার বন্ধ করে দিয়েছিলো, লাভ হয়নি সেখানেও। বাংলাদেশে এই আওয়ামীলীগ সরকারের আমলেও কদিন আগে যখন ধর্মানুভূতি এবং রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীর ইমেজানুভূতিতে আঘাত করার জন্য ফেসবুক বন্ধ করার পায়তারা নেয়া হয়েছিলো তখন জনমানসে কি ভয়ঙ্কর প্রতিক্রিয়া হয়েছিলো, কিভাবে সরকার আবার নিজেদের হাস্যাস্পদ করে অবশেষে ফেসবুককে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছিলো, রাষ্ট্রের কর্ণধারেরা নিশ্চয় তা ভুলে যায় নি। কিন্তু দুঃখের বিষয়, ভুল থেকে শিক্ষা নিতে তাদের খুব কমই দেখা গেছে।
রাষ্ট্রের কর্নধারেরা এখন তাই আবার নড়ে চড়ে বসেছে, আরেকটি মহাভুল আবারো করার জন্যই বোধ হয়। আবারো ইন্টারনেটের মুখ চেপে ধরতে তারা বদ্ধপরিকর। দিকে দিকে ব্লগ, ফেসবুক, টুইটারের নামে মামলা, কনটেন্ট মোছার আবেদন, ব্লক আরও কতো কি। যখন এগুলোতে ফায়দা হয় না, তখন হয় শারীরিক আক্রমণ। কিন্তু তারা ভুলে যান, হুমায়ুন আজাদকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়েও মুক্তবুদ্ধির অগ্রযাত্রা স্তিমিত করা যায়নি; বরং আমরা বেড়েছি, চারা গাছ হিসেবে জন্ম নিয়ে মহীরুহ আকারে ছড়িয়ে পড়েছি এখানে ওখানে সর্বত্র। কয়জনকে হেনস্থা করবে, কয়টা সাইট বন্ধ করবে? আজকে যে কোন ব্লগে গেলেই, কিংবা ফেসবুক, টুইটারের যে কোন জায়গাতেই মুক্তবুদ্ধির স্বপক্ষে হাজারো আলোচনা চোখে পড়ে। কেবল পাঁচ ছয়টি সাইট বন্ধ করে দিলেই সব শেষ হয়ে যাবে? আর, ধর্মানুভূতির জিগির তুলে ফেসবুকের পাঁচটি পেজ আর একটি সাইট বন্ধের বিরুদ্ধেও লেখা শুরু হয়েছে বিভিন্ন ব্লগে (দেখুন, এখানে, এখানে, এখানে কিংবা এখানে), অজস্র প্রতিবাদ হয়েছে ফেসবুকেও (দেখুন এখানে কিংবা এখানে)। কাজেই মুখ বন্ধ করার জন্য স্কচ-টেপ নিয়ে ঘুরে বেড়ালেই সবার মুখ বন্ধ হবে তা ভাবা বাতুলদের ‘বাতুলতা’। মুক্তমনারা আজ আর একটি সাইটে নয়, মুক্তমনা একটি সফল আন্দোলনের নাম যা ছড়িয়ে আছে অসংখ্য সাইটে, ফেসবুক পেইজে, মানুষের মনে, চিন্তা-চেতনায়। প্রতিক্রিয়াশীলদের প্রতিক্রিয়ায় এ আন্দোলন রাতারাতি বন্ধ হয়ে যাবে -সেটা ভাবার কোনো কারণ নেই।
তবে আবহাওয়া খারাপ বলার জন্য রেডিও জকিদের উপর মামলা-হামলা কতোদিন চলবে সেটাই এখন দেখার বিষয়।
রায়হান ভাই আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ আর শুভেচ্ছা (F) । এটা যে আপনার আর অভিদার যৌথ লেখা ব্যাপারটা আমার চোখ এড়িয়ে গেছে।
এটাই হল সভ্য আর অসভ্য মানুষের পার্থক্য।
অভি দা পুরো লেখাই পড়েছি। এমনিতেই আপনার বেশিরভাগ লেখাই আমার ভাল লাগে কিন্তু এই লেখাটি কে আমার স্বল্প জ্ঞানে ১০০ তে ১০০ দিলাম। মন্তব্য করার ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না। একেই বলে সজোরে চপেটাঘাত আদালতের ওই প্রহসনের বিরুদ্ধে।
যদিও জানিনা ওই বিবেকহীন পশুগুলোর মনে কোন আঁচড় কাটতে সক্ষম হবে নাকি এর বিরুদ্ধেও আবার মামলা হবে অথবা আপনি নিজেই হুমকির সম্মুখীন হবেন। এই বদলে যাওয়া বাংলাদেশ যেটা আসলে মানসিকভাবে পাকিস্তানের অঙ্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে, সেখানে কেউ নিরাপদ না।
@অচেনা,
প্রশংসা বাক্য খুব বেশি হয়ে গেছে অচেনা। রায়হান বা আমি কেউই এর যোগ্য নই। তবে, লেখাটি যে আপনার ভাল লেগেছে তাতেই আমি খুশি। তার চেয়েও বড় ব্যাপার হল মানুষ জাগছে, আদালতের হাস্যকর রুলিং এর বিরুদ্ধে অভিমত প্রকাশ করছে জোরালো কন্ঠে, যা ইন্টারনেট আসার পূর্বে এভাবে সম্ভব ছিলো না কখনোই। এটাই আমাদের আশাবাদী করে, নতুন আলো দেখায় সামনে।
@অভিজিৎ,
এটা খুবই আশার কথা দাদা যদি মানুষ সত্যই জেগে ওঠে। তবু ভরসা পাইনা।আমি ছোটবেলাতে দেখেছি যে অন্তত গ্রামের লোক গুলো সাদাসিধা ছিল। আজ তারাও সালাফিস্ট দের দারা পুরো ব্রেইন ওয়াশড হয়ে গেছে। শহুরে তথাকথিত শিক্ষিত মধ্যবিত্তের তো কথাই নেই। এখানে কোন মন্তব্য করাই মুশকিল।এমনকি কেউ শুনতেও চায় না পড়তেও চায়না যে মুক্ত মনা বা আর কিছু ধর্ম নিরপেক্ষ সাইট গুলো কি বলতে চায়। খালি একি ভাঙ্গা রেকর্ড বাজায় যে সব শুনবে শুধুমাত্র ধর্ম সংক্রান্ত কোন আলাপ না, কারন যেহেতু ইসলাম প্রমানিত সত্য তাই এ নিয়ে কোন কথা নয়। কি যে একটা বিশ্রী আর অসুস্থ অবস্থা! ১০-১২ বছর আগেও মানুষ এতটা তেলে বেগুনে জলে উঠত না। যাক তবু যদি মানুষ জাগে তাহলে সেটি খুব সুখের বিষয়।আলো যদি সামনে থেকেই থাকে তবে তো সত্যি সেটা খুব আশার কথা যদি দিন দিন আমার চারপাশ কেমন জানি আঁধার হয়ে যাচ্ছে। সারা বাংলাদেশের অবস্থাও মনে হয় না ভিন্ন কিছু। তবু যদি একটু আলো দেখা যায় তবে এটাকে শুভ সুচনা বলেই ধরে নেব। ভাল থাকবেন দাদা।
জানি ধর্মান্ধতার স্বরূপ সর্বদা একই। তা হলো অন্যের স্বাধীনতা-হরণ এবং সমালোচকদের মুখবন্ধ করে সত্যের গলা টিপে ধরা। সেই আদি যুগ থেকে বর্তমান। পৃথিবীর সর্বত্র এর একই চেহারা। আদালতের এ সিদ্ধান্তের পর আজ আর ধর্মান্ধতায় পাকিস্তানের সাথে বাংলাদেশের মৌলিক কোন পার্থক্য থাকলো না। কোথায় চলেছে বাংলাদেশ!
@অভিজিৎ দা এবং রায়হান আবীর,
আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। অসাধারণ এবং খুবই সময়োপযোগী লিখা। (F) (F)
@গোলাপ,
মুক্তমনায় বিচরণ, মন্তব্য এবং লেখার হার বাড়ালে আরো বড় একটা ধন্যবাদ দেয়া যেত, তা যখন হচ্ছে না, কী আর করা – আমাদের এই সামান্য লেখা ধৈর্য ধরে পড়ার এবং মন্তব্য করার জন্যই ক্ষুদ্র একটা ধন্যবাদ জানাচ্ছি। 🙂
🙂
আমি তো এই খবর প্রথম দেখার পর মনে মনে ইন্নালিল্লাহে ওয়া মুক্তমনা রাজেউন পড়ে ফেলেছিলাম। যে অন্য কেউ যে আপনাদের থেকেও ধর্মানুভূতিতে আরো জোরে আঘাত করতে পারে তা জানতে পেরে যুগপত বিস্মিত ও দূঃখিত হয়েছি।
এই দূঃখবোধ মনে হয় না বেশীদিন থাকবে বলে। পটপরিবর্তন হয়ে আবারো মৌলবাদী সরকার আসলেই ঘন্টা বেজে যাবে।
অনুভূতি ফূতি বাদ দেন। একটি দেশের আইন ব্যাবস্থা তো গনতন্ত্র মানলে সে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ লোকেই ঠিক করে। সংখ্যাগরিষ্ঠ লোকে যদি একচোখা নীতিতে গ্রহন করে তো কি করা যাবে? আমার ধর্মের বা ধর্মের নামে প্রচলিত রীতিনীতির সামান্যতম সমালোচনা করা যাবে না, প্রিয় মহাপুরুষদের বিষয়ে নিজেদের ধর্মীয় সূত্রেরই কিছু বর্ননা যা আমরা পছন্দ করি না প্রকাশ করা যাবে না এমন ধরনের নীতি আইনাকারে প্রকাশ করলে কি করা যাবে?
@আদিল মাহমুদ,
আগেই কইছিলাম শকুনের দোয়ায় গরু মরে না, শুনলেন না তো । 🙂
হাঃ হাঃ, আমার অবশ্য প্রথম থেকেই খুব একটা চিন্তা হয়নি। পত্রিকার রিপোর্ট থেকে যা বুঝেছি, অশ্লীলতা, কার্টুন, ব্যঙ্গ ইত্যাদিকে টার্গেট করে এগুনো হয়েছিলো। আপনি হয়তো লক্ষ্য করেছেন, মুক্তমনায় সবসময়ই যৌক্তিক সমালোচনাকে প্রাধান্য দেয়া হয়। অশ্লীল ব্যঙ্গ বিদ্রুপ বরং অনুৎসাহিতই করা হয় আমাদের সাইটে। মুক্তমনার বহু সমালোচনাকারীও স্বীকার করবেন যে, এটি একটি পরিচ্ছন্ন সাইট। তাই এটা ব্যান করা নিয়ে আমাদের চিন্তা ছিলো না তেমন।
তবে আপনার কথা ঠিক। এখন না হলেও পরে কোনদিন হতে পারে। ভবিষ্যতে মৌলবাদী সরকার আসলে কী হবে তা নিয়ে তো ভাবনা আছেই। তবে ভাবনা থাকলে সমাধানও আসবে।
যে সাইটটিকে ব্যান করল, তারা তো দিব্যি আরেকটা মিরর সাইট আপলোড করে দিলো কয়েক ঘন্টার মধ্যেই। খুব একটা লাভ হল কি? এই একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে কোন কিছু ব্লক করে আর বেশিদিন টেকা যায় না।
ঐ যে হুমায়ুন আহমদের নাটকে ডায়লোগ ছিলো না … পাবলিকের মুখ তো আর বন্ধ রাখতে পারবেন না দুলাভাই… 🙂
@অভিজিৎ,
ব্যান করনে ওয়ালারা মনে হয় না ব্যান করার মহাত্ম্য ঠিকমতন বোঝেন বলে। ব্যান করে যে উলটা পাবলিসিটি বাড়াতে দারুন ভাবে সাহায্য করা হয় এটা তাদের কে বোঝায়। ধর্মগ্রন্থে এ সম্পর্কে আয়াত ভার্স লেখা থাকলে হয়তবা বুঝতে পারতেন।
হুমায়ুন আজাদ আমার শ্বশুড়ের কলেজের বন্ধু ছিলেন। উনি খুব আশায় আশায় থাকতেন সরকার কবে তার কোন বই ব্যান করে, কারন তাহলে সেই বই এর বিক্রি রাতারাতি কয়েকগুন বেড়ে যায়।
সত্যের সেনানীরা আপনাদের এত সহজে ছেড়ে দেবে মনে করার কোন কারন নেই। আপনাদের সাহচর্যে কিছুদিন থেকে আমার ওপরেই যেই গজব নেমে এসেছিল তাতেই বোঝা যায়। ভয়ে তো আপনাদের থেকে এখন নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখি :)) ।
@অভিজিৎ, দাদা সাইট টা ধর্মকারী না? আমি ত ওপেন করতে পারছিনা। গুগল এ সার্চ দিলে যেটা আসে ওটাতে ঢোকা যায় না। নতুন লিঙ্ক টা দিবেন প্লিজ? জেন আমি আবার অই সাইট টি পড়তে পারি।
খুবই সময়োপযোগী অভিজিৎ রায়হানীয় দুর্দান্ত লেখা। বাংলাদেশের আদালতের কান্ডকারখানা দেখে মনে হচ্ছে সেখানে তেমন কোন কাজ জমে নেই আর। যেন দেশের সবগুলো জাল টানা হয়ে গেছে – এবার অন্তর্জালের হাত থেকে ঈশ্বরকে রক্ষা করতে হবে।
@প্রদীপ দেব,
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ প্রদীপ!
ধর্মানুভুতির নামে কোর্টের অমানবিক রায় খুবই মারাত্মক। আপনার লেখা সব সময় খুবই তথ্য বহুল এবং মটিভেটিভ হয়। পড়ে অনেক উপকৃত হলাম। যাদের পরিবর্তন হওয়া খুব দরকার তাদের হাজার উদাহরন সামনে হাজির করলেও তারা হেদায়েত হবে না। কারন তাদের হেদায়েত এক মাত্র তাদের আল্লার হাতে। ধন্যবাদ।
@শাখা নির্ভানা,
ইয়ে লেখাটা আমার আর রায়হানের। ইনফ্যাক্ট রায়হানই স্ট্রাকচার করছে। মাঝকান থিকা আমি পার্ট নিছি এক্টু 🙂
@অভিজিৎ দা/রায়হান ভাই, অসংখ্য ধন্যবাদ এই সময়োপযোগী লেখাটার জন্য। যতদিন ধর্মের প্রভাব না কমবে, আমাদের এইসব কীর্তিকলাপ দেখতে হবে। তবে এটা সত্যি যে আপনাদের ক্ষুরধার লিখুনি একদিন আমাদের ধর্ম প্রভাবমুক্ত সেই ভোর দেখাবেই। (B) (B) (B)
করতোয়া কে কি একটু দিবেন নাকি? উনি তো মনে হয় বীয়ার/মদের গন্ধের উপর পরীক্ষা চালাচ্ছে!!!!
@আমি আমার,
না না উনি এই পার্থিব মদ মনে হয় পছন্দ করেন না। ইসলামী বুজুর্গ আফটার অল। মনে হয় বীয়ার/মদের চেয়ে শরাবন তহুরা প্রেফার করবেন, আছে নাকি আপনার স্টকে ? 🙂
@অভিজিৎ দা, ঐসব লোকদের সেবার্থে দরকার হইলে আশ্চর্য জমজম কুয়ার পানি দিয়ে শরাবন তহুরা বানিয়ে দিব। হালাল বলে একটা ব্যাপার আছে না!!!! কোন অসুবিধা নাই। :))
@আমি আমার, করতোয়া কে ভাত পচা মদ চুয়ানি দেয়া যেতে পারে। জিনিসটা কি জানি না তবে শুনেছি যে গন্ধটা খুব বাঝে মনে হয় মুহাম্মদের মুত্র মোবারকের থেকেও খারাপ গন্ধ। আচ্ছা জান্নাতের সুরা আবার হুজুরের মুত্র মোবারক হবে না তো?
কৌতুকেরও মাত্রা থাকে, কিন্তু এইটা যেদিন দেখলাম, এরপর থেইকা আর অন্য কৌতুক ভাল্লাগেনা। যাই হোক, অত্র পোস্টের মোমিন মুসলমান জিহাদি ভাই বেরাদারদের ধর্মানুভুতি আহত করার জন্য “রুকুতে দাঁড়াও” গানটি শোনার পরামর্শ দেয়া গেলো :))
@শুভজিৎ ভৌমিক,
:))
প্রিয় অভিজিৎ ও রায়হান আবীর,
এমন একটি অনন্য-সাধারণ লিখা উপহার দেবার জন্য আপনাদের দুজনকে আমার প্রাণঢালা অভিনন্দন ! মানবতার জয় হোক আর জয় হোক বিজ্ঞান আর যুক্তিবাদের ! মানবজাতির মুক্তি ঘটুক অন্ধ ধর্মীয়বিশ্বাস থেকে! জানিনা সেই দিন আসবে কবে ? এই প্রসঙ্গে Bertrand Russell – এর সেই বিখ্যাত উক্তিটি উদ্ধৃত করতে ইচ্ছে করছে “Religion is something left over from the infancy of our intelligence, it will fade away as we adopt reason and science as our guidelines”.
—
শ্রদ্ধান্তে !
অমল
@অমল রায়,
আপনাকেও ধন্যবাদ লেখাটি পড়ার এবং মন্তব্য করার জন্য।
আদালত কিসের ভিত্তিতে এই রায় দিল? আর ধর্মীয় অনুভূতির সংজ্ঞা কি? আজ আমার ধর্মীয় অনুভূতির সাথে আরেকজনের ধর্মীয় অনুভূতির যদি কনফ্লিক্ট ঘটে তাহলে আদালত কার পক্ষে রায় দেবে?আমরা কি ক্রমেই গাধা হয়ে যাচ্ছি?
@আমি কোন অভ্যাগত নই,
সেইটাতো ভাই আমাদেরও প্রশ্ন!
লেখাটা অতি অবশ্যই শেয়ার দিচ্ছি, কিন্তু আমি সাধারণত এ ধরণের লেখা শেয়ার দিয়ে অনেক বেদনাবোধ করি যখন দেখি আমার পরিচিতদের মাঝে অধিকাংশেরই লেখা পড়ার বা সংস্কারমুক্ত মন নিয়ে পড়ার ও মন্তব্য করার আগ্রহ নেই। আমি খুবই হতাশ আমার আশেপাশের মানুষজনের উপর। ইদানীং কথাবার্তা বলাই কমিয়ে দিয়েছি পার্শিয়ালি এই কারণে 🙁
@লীনা রহমান,
এত অল্পতেই হতাশ হয়ে গেলে কীভাবে চলবে? এত হাজার বছরের অন্ধবিশ্বাসের শিকল নিশ্চয় একটানেই খুলে ফেলা যাবে না।
@প্রদীপ দেব,
ঠিক! (Y)
@প্রদীপ দেব, হতাশার কারণ হল, আমি দিন দিন একা হয়ে পড়ছি নিজের ভাবনার, নিজের কথাবার্তার কারণে। খুব খারাপ ব্যবহার ও উপাধিও পেয়েছি পরিবার ও বন্ধু বান্ধবদের কাছ থেকে। মাঝে মাঝে তাই ভেঙে পড়ি আর হতাশা ঠিকরে পড়ে। আপনি ঠিকই বলেছেন
🙂 (Y)
@লীনা রহমান,
আমার একি অবস্থা। আপনার কিছু লেখা পরেছি আমি। আমি লিখতে পারি না। কিন্তু রেফেরেন্সে হিসাবে ব্যবহার করতে বাধা নেই। আর আজকাল আমাকে এই হুমকিও শুনতে হয় যে সাবধান হয়ে যাও আমরা বলেই কিছু বলছি না তোমাকে।অন্য জায়গায় হলে কতল করে ফেলত।বাড়ীতে বাবা অনেক আগেই কথা বার্তা বলা বন্ধ করে দিয়েছে। আত্মীয়সজনরাও পছন্দ করে না একেবারেই। সবথেকে খারাপ লাগে এটাই যখন মেয়েরাই বেশি চেঁচায় যে ইসলাম যেহেতু নারী কে সবথেকে বেশি মর্যাদা দিয়েছে, তাই এটার সমালচনা করা মানে মেয়েদের সমালচনা। হুমায়ুন আযাদের নারী বপি দেখালে বলেছে যে তোর পীর হুমায়ুন আজাদ ও বাড়ি ফিরলে যদি সময় মত খেতে না পেত তবে বউ কে ঝাঁটা ধরে বলত যে শ্যালিকা( ভদ্র ভাষাই লিখলাম বুঝে নিন আসল কথাটা) ভাত দে।রাগের মাথায় তথাকথিত শিক্ষিত মহিলারাও যে কি ভাষা ব্যাবহার করতে পারে না শুনলে বিশ্বাস হয় না। সেই জন্যই আমাকে সবার সাথে কথা বার্তা বলা কমিয়ে দিতে হয়েছে। এক ঘরে হয়ে পড়লে যা হয় আর কি।জানিনা আর এমন কত লোক সত্য কথা বলার অপরাধে সাফার করছে।
কয়েকটি বিষয়ের দিক লক্ষ করা যেতে পারে:
১। মিঃ লাদেন ইহুদী নাছারাদের দেশ নিউ ইয়র্কে যে বিশ্ব কাপানো ৯/১১ হত্যাযজ্ঞটা ঘটালেন,এই ঘটনাটি যদি বাংলাদেশে সংসদ ভবনের উপর কোন হিন্দু ঘটাইতো,তাহলে পরের দিন ইমানদার মুসলমানেরা ইমানের জোসে বাংলাদেশের সমস্ত হিন্দুদের গলা কাটিয়া ফেলিতো।
কিন্তু নিউ ইয়র্কে এই হারামী ইহুদী নাছারারাই মুসলমানদের মসজিদ মাদ্রাসারই নিরাপত্তা দিয়েছে। কত বড় পার্থক্য!!
২।এরপর সারা বিশ্বের মসজিদের ইমামগন,মাদাসার শিক্ষকগন একযোগে রায় দিলেন মিঃ লাদেনই নবিজীর এবং কোরানের নির্দেশ যথাযথ ভাবে পালন করেছেন।
৩। এরপর আমেরিকা যখন নবিজীর এই সুযোগ্য ঊত্তরাধিকারীকে ধরতে আফগানিস্থান রওয়ানা দিল, তখন বিশ্বের সমস্ত মসজিদের ইমামগন ও মাদ্রাসার আলেমগন আল্লাহর নিকট একযোগে কান্নাকাটি করিয়া প্রার্থনা জানাইল নবীর সুযোগ্য গোষ্ঠি “আল-কায়েদা” এর জয়ী হওয়ার জন্য।
কিন্তু ধর্মের লেবাসে এই অধার্মিকদের শঠতা আল্লাহ ঠিকই বুঝিয়া ফেলিলেন এবং তাদের প্রার্থনা কবুল না করিয়া চরম ভাবে পরাজিত করিলেন।
এর দ্বারা কী প্রমান হয়?
৪। এর পর মিঃ লাদেন পালিয়ে পালিয়ে বেড়াতে থাকেন। সারা বিশ্বের ইমানদার মুসলমানগন এই মুসলিম জাহানের ইমামের (আমি কোন কোন মসজিদের ইমামকে বলতে শুনেছি “লাদেন সাধারন মুসলমান নয়, বরং লাদেন হলেন প্রকৃত পক্ষে ইমাম মেহেদী”) প্রান রক্ষার জন্য আল্লাহর নিকট একযোগে আন্তরিক ভাবে প্রার্থনা করতে থকলেন।
কিন্ত আল্লাহ বোধ হয় সারা বিশ্বে এমন একজনও ইমান্দার বান্দা পাইলেননা যার প্রার্থনা মঞ্জুর করতে পারেন।
তাই মিং লাদেনকে শত নিরাপত্তার ভিতর থেকেও অপদস্ত হয়ে ধংস হতে হল।
এ ঘটনা গুলী তো আমাদের চোখের সামনেই ঘটল।
এর দ্বারা কী প্রমান হয়? একটু ভেবে দেখার দরকার আছে।
@আঃ হাকিম চাকলাদার, ভাইজান, আল্লাহফাক হুজুরদের দোয়া ঠিকি কবুল করেছিলেন। সমস্যা হল নেভী সিল নিয়ে। ওরা আবার আল্লাহ ফাকের থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী তাই আল্লাহর আদেশ কার্যকর হয় নি।ব্যাবিলুনিয়ান পুরানে পড়েছেন না যে দেবতা ইয়ার মন্ত্র শক্তির আদেশ ড্রাগন তিয়ামত এর কাছে ব্যর্থ হয়ে গেছিল? পরেতো মার্ডুক দেবরাজের দায়িত্যের বিনিময় সেই ড্রাগন কে পরাজিত করে। তারপর থেকেই মার্দুক হয়ে যায় দেবরাজ। আমার মনে হয় আল্লাহ ফাক কে রিপ্লেস করার সময় এসে গেছে কারন তার উদ্দেশে দয়া ব্যর্থ হয়েছে, তার হয়ে যাও বললেই হয়ে যায় এই শক্তি আমেরিকান নেভী সিল ব্যর্থ করে দিয়েছে।
এই বিচারকগুলা আসলে বিচারক হওয়ার অযোগ্য। খোঁজ নিলে দেখা যাবে এরা বাক স্বাধীনতা কিংবা মানবাধিকারের সংজ্ঞাটাও হয়ত ঠিকমত জানেনা। সম্ভাবনা প্রবল যে ছাত্র জীবলে নকল করে পরীক্ষা পাশ করেছে। এই রে আবার কোন অনুভূতিতে আঘাত দিলাম কে জানে!!!
@হোরাস,
আপনে বিচারকদের বিচারানুভূতিতে আঘাত কর্ছেন!
@হোরাস,
একটি অভিজ্ঞতার কথা বলি। কলেজ জীবনে এক বন্ধুর সাথে দেখা।হন্তদন্ত হয়ে কোথায় চলেছে।বন্ধুটি তখন আইন পড়ছে।বল্লাম, ‘কোথায় চল্লি?’
বন্ধু- কাল পরীক্ষা, এই দেখ সাজেশান পেয়েছি।অনেক বড়।এত প্রশ্নের উত্তর নিয়ে তো আর হলে ঢোকা যাবে না।গোটা লাইব্রেরি নিয়ে ঢুকতে হবে যে।হু হু বাওয়া, আইনের ঢাউস বই বলে কথা।খবর পেয়েছি কে প্রশ্নপত্র সাজিয়েছে।সোজা তাকে ধরতে চলেছি।দাগ দিইয়ে নেব কোনগুলো আসবে সাজেশান থেকে।তাহলে কাল কম বই বইতে হবে।পরীক্ষা দিতে হাল্কা-পুল্কা চোথা নিয়ে সুট করে ঢুকে যাব।
আমি- হে হে আমাদের future আইন রক্ষক স্বরূপ দেখে চোখ যে জুড়িয়ে গেল।এখন থেকেই law and order-এর ইয়ে মেরে দিলি।শালা সাজেশানেও হয়না, তারও আবার সাজেশান!
বন্ধু- শালা জ্ঞান দিসনা, সারা বছর পড়াশোনা করলে, ছাত্র রাজনীতি কে করবে, তোর বাপ! আর আইন কেউ কলেজে শেখেনা, আদালতে কাজ করে এমনি শিখে যাব।
আমি-তো তোর party-র বাপদের বলনা, এমনি পাশ করিয়ে দিতে।পরীক্ষা দেবার প্রয়োজনটা কি?
বন্ধু-সেইটা ভালো দেখায়না।এই বাজে ইয়ে না মারিয়ে, একটা সিগারেট খাওয়া।অনেক কাজ বাকি।এরপর জুনিয়ার ছানাপোনাদের দিয়ে চোথা লেখাব।ওরা বুঝুক, এগুলোও party-র কাজ!
@হোরাস,
এখানে বোধ হয় আমাদের একটা জিনিস বুঝতে হবে। বিচারকদের কাজ কন্সটিটিউশানকে ব্যাখ্যা করে রায় দেওয়া (আমাদের বিচারকরা তা সব সময় করে তা বলছি না)। আমাদের কন্সটিটিউশানে যদি ধর্মকে রাষ্ট্র থেকে আলাদা করার কথা না থাকে এবং ধর্মকে এবং বিশেষ করে একটি নির্দিষ্ট ধর্মকে রক্ষা করার কথা উল্লেখ করা থাকে তাহলে বিচারকেরা সেই অনুযায়ী রায় দিতে বাধ্য। এখানে সমস্যাটা শুধু বিচার বিভাগের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই এখানে রাষ্ট্রের আধুনিকতা, ধর্ম এবং রাষ্ট্রকে আলাদা করার পূর্বশর্ত, বাক স্বাধীনতা, ব্যক্তি স্বাধীনতার মত আধুনিক পুজিবাঁদী বিশ্বের অধিকারগুলোর নিশ্চয়তা বিধানের প্রশ্ন চলে আসছে যেটা আমাদের মত দেশগুলো নিশ্চিত করতে অক্ষম।
আর এটা কি কোন রায় ছিল নাকি কারণ দর্শানোর নোটিশ ছিল? আমি সেটা নিয়ে একটু কনফিউসড।
@বন্যা আহমেদ,
কথাটা ঠিক, আমাদের কন্সটিটিউশানেই গন্ডগোল, সর্ষেতে ভূতের মতো। সংশোধনীর মাধ্যমে কন্সটিটিউশানে ‘বিসমিল্লাহ’ যোগ করা হয়েছে, ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম ঘোষণা করা হয়েছে, অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের অনুভূতিতে আঘাত হেনে। ধর্মানুভূতি যেন শুধু একটা বিশেষ ধর্মের অনুসারীদের একচেটিয়া। আদালত যদি ধর্মানুভূতির ব্যাপারে ভূমিকা রাখতে চান, তাঁদের উচিৎ হবে সব ধর্মের অনুসারীদের ধর্মানুভূতির প্রতি সম্মান দেখানো এবং সংবিধান থেকে – একটা সভ্য দেশের জন্য লজ্জাকর – উপোরক্ত সংশোধনীগুলো বাতিল করার নির্দেশ দেয়া।
@বন্যা আহমেদ,
শুধু কন্সটিটিউশানের উপর ছেড়ে দেওয়া যায়!ভারতের কন্সটিটিউশানে তো কোন রাষ্ট্রধর্ম-র কথা বলা নেই।কিন্তু রুশদির আসা নিয়ে কয়েকদিন আগে একই রকম অলীক কুনাট্য রংগ হল তাই না? তখন কি আর মহামান্য বিচারপতিরা এক কন্ঠে বল্লেন যে ধর্মনিরপেক্ষ ভারতে রুশদির প্রবেশ সুনিশ্চিত করা আমাদের সাংবিধানিক দ্বায়িত্ব! অন্য সময় উচ্চ আদালতের বিচারপতিরা নানান বিষয়ে আগ বাড়িয়ে সরকারকে হুকুম দিতে দ্বিধা করেনা তো!
সেনেকা দ্য ইয়াংগার বলেছিলেন ধর্ম সাধারন অজ্ঞ মানুষের জন্যে সত্য, বিচক্ষণ ব্যক্তির জন্যে মিথ্যা এবং ক্ষমতাশীলদের ব্যবহার করার বস্তু। এর চেয়ে সঠিক ব্যাখা দেওয়া সম্ভব নয়।শুধু ভারত-বাংলাদেশের মতন গরীব রাষ্ট্রগুলোকে গালি দিয়ে কি হবে? আমেরিকার মতন উন্নত দেশের বাইবেল বেল্টেও তো ধর্ম নামক আফিম টেনে সব্বাই মজাসে মৌতাত করছে!
সর্বশক্তিমান আল্লা শেষ পর্যন্ত তার বীর বান্দাদের কাছে ওহী পাঠিয়েছেন যে, তিনি সামান্য ফেসবুকে ও ওয়েবসাইটের ভয়ে ভীষণ ভীত। তার অস্তিত্ব রক্ষার্থে এগুলো বন্ধ করে দেয়া দরকার।
শেষ লাইনটা পড়ে হাসতে হাসতে শেষ!!! রেডিও জকি টার্মটা আজকাল বেশি এপিক হয়ে গেছে। বাংলিশ বললে আদালত কান ধরে নাকি উঠাবসা করাবে, আদালত নাকি কোনো এক ন্যাকা রেডিও জকির বাংলিশ শুনে রেগে গিয়ে একটা “কারণ দর্শাও” বলে হুংকার করেছেন। আমাদের ভাষানুভূতিতে খারাপ লাগতেই পারে, বিশেষ করে শ্রবণানুভূতিতে ব্যাং ব্যাং ব্যাংলিশ অনেক আঘাত হানে। কিন্তু আদালতে গিয়ে কান্নাকাটি করার কি আছে!! আমাদের বাক স্বাধীনতা নাই বুঝলাম, কিন্তু স্বাধীন ভাবে ব্যাং ব্যাং ব্যাংলিশও বলতে পারবো না!! আর সপ্তাখানিক ধরে, রাজনৈতিক ভাবেও কাউকে কাউকে রেডিও জকি ডেকে আমাদের ব্যাপক বিনোদন দেওয়া হয়েছে। আপনারা দুইজন মিলে আবার রেডিও জকিদের সামনে আনলেন!!! ভাবছি সব ছেড়েছুড়ে রেডিও জকি হয়ে যাব!!
নতুন বোতলে পুরান মদ।
@করতোয়া,
মদ তো দেহি ভালই চিনেন। তা অবশ্য আপনার মতো ইসলামী বান্দার হেইডা চেনারই কথা। বেহেস্তের লাইগ্যা প্রিপারেশন লাগবো না? মদ, হুরি, গেলমান সবই ভাল কইরা চিনা লন…
@অভিজিৎ,
মদ চেনার সাথে ইসলামী টানেন ক্যান। ঘ্রানেই কইয়া দেয় কোনডা মদ আর কোনডা পানি। মদের সাথে ইসলামের কুন সম্পক্ক নাইকা।
@করতোয়া,
ঘ্রাণে যে চিনবার পারছেন সেইটাও কিন্তু কম না। হগগলতে পারে না। দেইখেন, বেশি ঘ্রাণ লইতে গিয়া ঘ্রাণে না আবার অর্ধভোজন হইয়া যায়। তখন আমাগো মতই আগুনে ঝামা ঝামা হইবেন।
@করতোয়া,
কত বছরের পুরাতন মদ ভাইজান? ১৪০০ বছরের পুরাতন মদ তো আপনারা এখন নতুন বোতলে প্রচার করে বিক্রি করেন। পুরাতন মদের টেস্টটা নাকি বেশি।কিন্তু মুসলিম রা তো হাস্যকর ভাবে দাবি করে যে আঙ্গুর পচিয়ে মদ বানানো হয়। অথচ মদ বানান হচ্ছে আঙ্গুর বা অন্য বস্তু গাঁজানোর মাধ্যমে। অবশ্য কিছু ট্রাক ড্রাইভার এক প্রকার মদ খায় ওটার নাম নাকি চুয়ানি। ওটা পান্তাভাত পচিয়েই নাকি বানানো হয়। আর ওরা ওটা নাকি নাক চেপে ধরে গেলে। পচা জিনিসের দুরগন্ধ ত হবেই। কাজেই ঐ পচা জিনিস ত যত পুরাতন হবে ততই দুর্গন্ধই ছড়াবে।কাজেই ১৪০০ বছরের পচা জিনিস আপনারা এ যুগে প্রচারের নামে নির্যাতন করছেন দুর্গন্ধ ছড়ানর মাধ্যমে।সুতরাং আগে নিজেদের বিচার টা করুন যারা পুরনো কাসুন্দি ঘেঁটে ঘেঁটে শুধু দুর্গন্ধই ছড়াচ্ছেন।
এই থিও ভ্যান গগ সেই থিও ভ্যান গগ নন বোধহয়।
এনার আর এনার মধ্যে গুলিয়ে ফেলেননি তো?
@অনামী,
পরিচয়ে গুলিয়ে ফেলিনি, গুলিয়ে ফেলেছি লিখতে গিয়ে। এই থিও ভ্যান গগ ভিনসেন্ট ভ্যানগগেরই আত্মীয়। ভিনসেন্ট ভ্যানগগ চলচ্চিত্রকার থিওর গ্রেট গ্র্যান্ড ফাদারের ভাই।
যাই হোক, ভিনসেন্স ভ্যান গগগে টেনে আনার কোনো কারণ নাই। বাদ দিয়ে দিলাম।
ধন্যবাদ ভুলটা ধরিয়ে দেবার জন্য।
@রায়হান আবীর,
আমার-ও তাই মনে হয়েছে। টাইপো। যাকগে, লেখাটি দারুণ হয়েছে।
পুনশ্চঃ আগে এইখানে মাউস ক্লিক করে বাংলা লেখার উপায় ছিল। সারভার আপগ্রেডের পরে সেইটা আর আসছেনা! মুক্তমনা এডমিনদের অনুরোধ ফিচারটা চালু করুন।অভ্র সব জায়গায় থাকেনা বা install করার অনুমতি থাকেনা।বাংলা লেআউট তখন খুবই সুবিধাজনক!
@অনামী,
আমার কাছে ব্যাপারটা খুব অদ্ভুত মনে হচ্ছে। অভ্র বাটন তো আছেই মন্তব্য করার টেক্সট বক্সটির নীচেই (অভ্র ডাউনলোড করার যে লিঙ্কটি সবুজ ঘরে দেখা যাচ্ছে, তার নীচেই)। এর আগে তামান্না ঝুমুও বলেছিলেন, তিনি অভ্র বাটনটি দেখতে পাচ্ছেন না, যদিও আকাশ মালিক সহ সবাই কিন্তু বলেছিলেন তারা দেখতে পাচ্ছেন।
আমি আইই, ফায়ারফক্স এবং ক্রোমে দেখেছি, সবগুলোতেই কিন্তু অভ্র বাটনটি দেখতে পাচ্ছি। আপনি কোন ব্রাউজার ব্যবহার করছেন? ব্রাউজার পাল্টিয়ে কি পরীক্ষাটি করেছেন?
@অভিজিৎ,
হ্যা, অভ্র বোতাম টিপে লেখা বাংলা যাচ্ছে তো। কিন্তু আগে মাউস ক্লিক করে লেখা যেত।একটা পপ আপ দেখাত যাতে সমস্ত বাংলা অক্ষরগুলো থাকত।ক্লিক করলে তাতে, অক্ষরগুলো সরাসরি মন্তব্য বাক্সে আসত। সেইটা এখন আর আসছেনা।
আমি যথাক্রমে, আই-ঈ, মোজিলা আর ক্রোমে চেষ্টা করলাম, পেলাম না।
অভ্র ডাউনলোড অবশ্য-ই করা যায়।ব্যক্তিগত ল্যাপটপে অভ্র আছে।এইটা আপিস থেকে দেওয়া ল্যাপটপ, অভ্র লাগানোর অনুমতি বা এডমিন রাইটস নেই।কাজেই কামের মধ্যে মধ্যে টুকটাক মন্তব্য করতে কিঞ্ছিত অসুবিধা হচ্ছে!
:))
@অনামী,
ওহ সরি, আপনি মাউস ক্লিক করে বাংলা লেখার কথা বলছিলেন। হ্যা ওতা সরিয়ে দেয়া হয়েছে। অযথা অনেক মেমোরি নষ্ট হয়, কমেন্ট লোড হতে সময় লাগে।
কিন্তু আসলেই কি কেউ মাউস টিপে টিপে বাংলা লিখে বা লিখত? যাদের অফিসে অভ্র ইন্সটল করতে দেয়া হয় না, তারা অভ্র বাটন ব্যবহার করেই কিন্তু লিখতে পারেন। আর সেটা খুব কম সময়সাপেক্ষ। মাউস টিপে বাংলা লিখতে গেলে ত দিন পার হয়ে যাবার কথা!
@অভি-দা,
না, টিপে টিপে লিখিনা অবশ্যি।তবে মাঝে মাঝে কাজে লাগে।যেমন, রেফ, হসন্ত, কিছু বেয়াড়া যুক্তাক্ষর লাগাতে।থিন ক্লায়েন্ট অভ্র অনেক সময় বাদরামো করে। একটু আগে ষ-য়ে য-ফলা লাগছিলনা। :-X কেন বুঝলাম না!
আর আমাকে আপনি-আজ্ঞে করবেননা, দয়া করে! লজা লাগে। বয়সে আপনার থেকে অনেক ছোট।আর জ্ঞানে তো আপনার কাছে নগণ্য।
@অনামী,
আপনি অভ্র পোর্টেবল ডাউনলোড করে নিন আপনার ল্যাপটপে। তারপর ব্যবহার করুন। এডমিনকে ডিগবাজী দিয়ে অভ্র ব্যবহার করতে পারবেন। আমি আগে অফিসের কম্পুটারে অভ্র ব্যবহার করতে পারতাম না–এডমিনের জন্য। কিন্তু এখন অভ্র পোর্টেবল দিব্যি ব্যবহার করেছি–এডমিনকে বাদ দিয়ে।
শুধু ব্যপার হল যখনই কম্পূটার সক্রিয় করবেন তখন অভ্র পোর্টেবল চালু করতে হবে।
আমি এই মন্তব্য লিখলাম অফিসের কম্পুটার থেকে অভ্র্ পর্টেবল ব্যবহার করে।
আপনিও সুফল পাবেন–অভ্র পর্টেবল দিয়ে। চেষ্টা করুন।
বলা হচ্ছে লেখাটি ২৫৯ বার পঠিত হয়েছে, কিন্তু ২৭৭ বার শেয়ার হয়েছে, সেইটা কিভাবে সম্ভব? না পড়েই শেয়ার দেয়া কি সম্ভব নাকি? 😛 যাই হোক, তুখোড় লেখা, খুবই সমসাময়িক এবং গুরুত্বপূর্ণ লেখা।খুব খারাপ লাগে যখন দেখি এই ‘ধরমানুভুতি’ মামলা আর কেউ না, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ই করেছে। 🙁
@রিজওয়ান,
সার্ভার আপগ্রেডের পর হয়তো হিট কাউন্ট ফিচারটা কাজ করছেনা।
@রিজওয়ান,
হ্যা, আসলে সার্ভার আপগ্রেডের পর নতুন একটা ক্যাশিং সিস্টেম বসানো হয়েছে আমাদের সার্ভার হোস্টের পীড়াপীড়িতে। এখন দেখা যাচ্ছে ক্যাশিংটা ভাল করলেও পেইজভিউ-এর কাউণ্টারটা সঠিক ফল দিচ্ছে না। পেইজ ক্যাশ করে রাখলে এটা একটা সমস্যা, গতি বাড়ে, কিন্তু পুরোনো জিনিস একই বস্তা থেকে বার করলে যা হয় আর কি … 🙂
দেখি কি করা যায়!
@রিজওয়ান, ডিগ্রি থাকলেই কেউ শিক্ষিত হয়ে যায় না ।
খুবই ভালো লাগলো। মক্তমনারা পিছিয়ে আছে এই কারণে যে , আমজনতা মুক্তমনাদের রাস্তায় দেখতে পায় না, মুক্তমনাদের জগত শুধু এই ইন্টারনেটে, কিন্তু রক্ষণশীলরা শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা সর্ব্দাই পথে ,ঘাটে, মাঠে।এই জন্যই মধ্যপ্রাচ্যে পরিবর্তনের হাওয়া হত মুক্তমনারাই দিয়েছে কিন্তু সেই হাওয়ায় পাল ভাসিয়ে লক্ষ্যে পৌছেছে সব হায়েনার দল। মুক্তমনাদের ইন্টারনেট তো বটেই সক্রেটিসের মতো ঘরের সামনে বসে থাকতে হবে আর সামনে দিয়ে যাওয়া প্রত্যেকটা মানুষের মনে প্রশ্নের আকারে সন্দেহের আর সত্যের বীজ বুনে দিতে হবে।দরকার হলে চাদা তুলে টিভিতে লাইভ শো করতে হবে ওপেন চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে হবে, প্রমাণ দিতে হবে কোনটা সত্য আর কোনটা মিথ্যা।
সত্যের জয় হোক।
@অগ্নি,
আপনাকেও পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
এটা যে একেবারে শুরু হয়নি তা নয়। রাষ্ট্রীয় মিডিয়ায় না হলেও ব্লগে, ফেসবুকে এবং অলটারনেটিভ মিডিয়ায় তো শুরু হয়েছে …
আমরা কেন সংগঠিত হতে পারতেছি না ?
আমাদের কি সংগঠিত হওয়া উচিত নয় ?
যারা মুক্তমনা আছে , মুক্তমনা হওয়ার চেষ্টায় আছে আর যারা হতে চায় তাদের জন্যে কি সংগঠিত হওয়া দরকার না ? বিভিন্ন জনের বিভিন্ন মতবাদ থাকতে পারে ,তাই বলে সংগঠিত কি হওয়া যায় না ?
লেখাটার জন্যে দাদা কে (F) (F) (F) (F)
@ঢাকা ঢাকা,
আপনার প্রশ্নগুলো হয়তো আমাদেরকে একটুখানি হলেও ভাবাবে, তাড়িত করবে; উত্তর খুঁজে পেতে।
চমৎকার বলেছেন।
এক কথায় অসাধারন একটা লেখা। এইরকম একটা লেখার খুব দরকার ছিল এই মুহুর্তে। আমার মতে কোর্ট এইসব নিয়ে মাথা ঘামায় দুই দিন পর নিজেই বিপদে পড়বে। বলা যায় না,ধর্মগ্রন্থে যে বলা হয়েছে ধর্ম ত্যাগ করার জন্য বিধর্মীদের মেরে ফেলতে হবে এই জন্য কোন নাস্তিক যদি পরবর্তিতে ঐসকল ধর্মগ্রন্থের প্রকাশনা নিষিদ্ধ করার দাবী তুলে তখন আমাদের মহামান্য আদালত কি করবে। ধর্মীয় অনুভূতি রক্ষায় এগিয়ে আসা আদালত হত্যা হুমকির বিপক্ষে তখন কি অবস্থান নিবে?
@শোয়েব আমিন,
চমৎকার মন্তব্য এবং খুব যৌক্তিক একটি প্রশ্ন করেছেন। আমার মনে হয় আপনার প্রশ্নের উত্তর বুঝতে কারো বাকি নেই। এই সব পরস্পরবিরোধিতা নিয়েই দেশ চলছে !
@শোয়েব আমিন,
রাজনৈতিক দলগুলো বিশেষ করে ইসলামী দলগুলো যা বলবে মহামান্য আদালত তাই মেনে নিবেন। চাকরি হারানর হয় আছে না? দেশে ত শাশন বিভাগটাই আসল আর শাসক রা আসেন তৌহিদই জনতার ভোট নিয়ে।তা ত খালেদা জিয়া প্রত্যক্ষ ধর্মীয় রাজনীতির সাথে দোস্তি করেন আর ভোটের আগে হাসিনা হজ করে এসে বোরকা পড়ে তসবিহ টিপেন।সুবহানাল্লাহ। আবার জামাতশিবিরের পত্রিকাগুলো ১৫ কোটি তৌহীদী জনতাকে জেগে উঠার ডাক দেয়। শিবির কি মুসলিমদের পাশাপাশি আজকাল হিন্দুদের তৌহিদী জনতা ভাবে নাকি বাংলাদেশে যে কোন হিন্দু আছে এতা স্বীকার করতেই চায় না? বলতে পারেন ভাই? তবে আদালত যাই হোক তৌহীদি জনতার পক্ষেই রায় দিতে বাধ্য হবেন কারন না হলে যে রাজনৈতিক নেতা নেত্রিরা ভোট পাবেন না।
বিশ্বাস আর অবিশ্বাসীতে বিভাজিত হয়ে যাচ্ছে পৃথিবীর সমাজ। আমেরিকার মতো দেশের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীরা যখন চার্চ ছাড়া কোন গতি দেখেন না সেখানে আমাদের মতো দেশে এই সব ঠেকানোর চিন্তা কিছুটা অপাংতেয় বলা যায়। দীর্ঘপথ পাড়ি দিতে হবে আমাদের …মাঝে মাঝে মনে হয় সেই মধ্যযুগীয় বর্বরতা আবার ফিরে আসছে!
@গরীব মানুষ,
একদম ঠিক কথা।
এইডা লইয়া মাতামাতি করার কি আছে, এই ধর্ম লইয়া ইট পাটকেল ছুরাছুরি বন্ধ করলে হয় না? চুলকানি বেশি হয়লে যা হয় আর কি,
@বেয়াদপ পোলা,
খালি “ধর্ম লইয়া” ইট পাটকেল ছুরাছুরি বন্ধকরবার চান, বাকি আর কিছু লইয়া ইটপাটকেল ক্যান, কামান বন্দুক চাপাতি দিয়া কোপাইলেও মনে হয় ঠিকাছে, তাই না?
হ ঠিকই ধর্ছেন, চুলকানি বেশি হইয়া গেছে। চুলকানি পাতা গায়ে বেশি লাগলে চুলকাইবো না? চুলকায় ক্যান, সেইটার চেয়ে এত চুলকানি পাতার চাষ হইতাছে ক্যান – সেইটা বরং বেশি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন।
@অভিজিৎ,
অভিজিৎ দা, যে স্বল্প সময়ের জন্যে দেশে ছিলেন, কী দেখলেন দেশের অবস্থা? যদিও এক এলাকা থেকে সারা বাংলাদেশ যাছাই করা যায়না, তবু গড়পরতা পিকচারটা কেমন জানতে মন চায়। বেয়াদপ পোলার মতো নতুন প্রজন্মের সবাই বেয়াদপ হয়ে যাচ্ছে, না কি টেকি সাফি, রায়হান আবীরদের সংখ্যা বাড়ছে?
@আকাশ মালিক,
পুনশ্চঃ-
এদের অবস্থা তো মনে হয় বেশ ভাল, তাদের ধুতরা (ছুতরা) পাতা চাষে কেউ ইটপাটকেল ছুঁড়েনা? ভিডিওটি সম্পূর্ণ দেখে আমি বোঝতে সক্ষম হইনি কী ভাবে এরা জেলের বাহিরে থাকে, কেন এদের বক্তব্য দেশদ্রোহী আখ্যায়ীত হবেনা।
httpv://www.youtube.com/watch?v=4UnQN5wqxdQ&feature=related
@আকাশ মালিক,কিছু ঘেউ ঘেউ শোনা গেল।
@আকাশ মালিক,
একমত নই। বরং মনে হল আন্তর্জালের বুলেটের আঘাতটি বিষধর অজগরের হৃদপিন্ডে আঘাতের চোটে ছটফট করছে। একটু ভাল করে লক্ষ করে দেখুন।
@আকাশ মালিক,
আমি তো দেখি দুই টাইপই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। কেউ কারো চেয়ে কম না। তবে এতদিন রাষ্ট্র জোর করে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করত, একপেশে ভাবে একপক্ষে অবস্থান নিয়ে অন্য পক্ষের মুখ বন্ধ রাখত, এখন আর বোধ হয় সেভাবে সম্ভব হচ্ছে না, এই আর কি!
তবে রায়হান টেকিসাফি, পৃথ্বী, সাইফুল, রামগড়ুড়ের ছানা, লীনা – এদের মত তরুণদের প্রাণচাঞ্চল্য দেশে ভরসা পাই – দেশের ভবিষ্যত অন্ধকার নয় মোটেই।
@অভিজিৎদা,
খুব অল্প কিছু দিন আগে দেশ থেকে এসেছি! আমার কাছে মনে হয়েছে তরুনরা কেমন জানি খাপছাড়া, দামি মোবাইল চাই, সুন্দরী গার্লফ্রেন্ড চাই- চাইতেই পারে, তাতে আমার আপত্তি নেই। কিন্তু কিছু পড়ার কথা কইলেই ঘ্যাচড়ামি শুরু হয়। তাদের সময় নাই। আমার সাথে যেসব তরুনদের কথা হয়েছে তারা ধর্মের কথা শুনলেই পিছলাইয়া গেছে। তবে আশার কথা হল, ওরা প্রতে্যকেই রেগে না গিয়ে, আমাকে হুমকি ধামকি না দিয়ে বরং বলেছে, এই সব কথা যেন আমি কারো সাথে শেয়ার না করি, আমার বিপদ হতে পারে! আমি বলতে চাচ্ছি তরুন প্রজন্মের মধে্য সহনশীলতা বেড়েছে। তবে সবচেয়ে আশাপ্রদ যেটা সেটা হল অন্তর্জালে তরুনদের ধর্মীয় ছাগুদের ছেব্লামীর বিরুদ্ধে যুক্তিপুর্ন ও শক্ত অবস্থান। অনেকের কাছে ধর্মের ব্যাপারের আর্গুমেন্টগুলো পৌছাচ্ছে, কিছু তরুন কনফিউজড হচ্ছে। আমি মনে করি এটা অগ্র্রগতি, যেটার পুরভাগে রয়েছে মুক্তমনা এবং সচলায়তনের মত সে্যকুলার সাইটগুলো। আমার মধে্য এইটুকু আস্থা জন্মেছে পরিবর্তনের পালে হাওয়া লেগে গেছে অলরেডি এখন এটাকে যার যার অবস্থান থেকে শক্ত হাতে এগিয়ে নিতে হবে। আমি আপাতত ব্যস্ত এক পাকিস্তানি বন্ধুকে কনফিউজড করতে। জয় আমাদের একদিন হবেই, এই জীবনেই আমি দেখে যেতে চাই ধর্মমুক্ত পৃথিবী, সেইজনে্য লড়ে যাচ্ছি প্রানপন। অভিজিতদা এবং রায়হান আবীরকে ধন্যবাদ লড়াই চালিয়ে যাবার জনে্য।
@সুমন,
(Y)
@আকাশ মালিক, ভাইয়া,আমারতো মনে হয় বেশি প্রতিক্রিয়াশীল ছেলেমেয়েরাই আসছে বর্তমানে। আগে কেউ সমালচনা শুনলে তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠেনি এখন সেটাই হচ্ছে,আর মাঝে মাঝে শুনতে হয় ঋষভ কণ্ঠের চেঁচানি। ভদ্র ভাষায়, {বরাহ নন্দন চুপ থাক। আল্লাহ আর রসুলের নামে কিছু বলেছিস তো তোর জন্ম দাত্রী মা আর বোনের সাথে সঙ্গম করি} এইগুলা শুনতে হয়। আশা করি অশিষ্ট বাংলায় কি হতে পারে সেটা কাউকে বুঝিয়ে বলার দরকার নেই।
@অভিজিৎ, @টেকি সাফি, পারেন ও বটে, হুদায় গেজাইতে…মানে চুলকানি রোগ হয়লে যা হয় আর কি, আপনি,
একজন হিন্দু/বৌদ্ধ/খৃষ্টান,
আপনি আপনার ধর্মে বিশ্বাসী,
হোক সেটা অন্ধবিশ্বাস কিংবা ভুল,
আপনার ধর্ম আপনার কাছে। হতে পারেন আপনি একজন হিন্দু কিন্তু আমি একজন মুসলিম হয়ে একজন অন্য ধর্মালম্বীর পোস্টে গিয়ে ৩৩ কোটি দেবতা নিয়ে হাসিঠাট্টা বা কটাক্ষ করি না। সেটা উচিতও নয়। অথবা আপনি নাস্তিক, আপনাকে কে দায়িত্ব দিয়েছে অন্যদের অন্ধবিশ্বাস দূর করার,
এইসব করলে কি হবে ?
তারা আপনাকে কটু কথা বলব, গালি দিব।
আপনি তার উত্তরে আরও গালাগাল করবেন।
তাহলে শুরুটা করল কে?
ঢিল মারবেন পাটকেল খাবেন না?
যা ইচ্ছা করেন তবে ফলাফল ঘোড়ার ডিম ।
@বেয়াদপ পোলা,
নিঃসন্দেহে আমার ‘অভিজিৎ রায়’ নাম থেকে আমারে হিন্দু বানাইছেন। হ, আমি একসময় হিন্দু ঘরে জন্মাইছিলাম, সেইটা তো চল্লিশ বছর আগে- যেটার লগে সম্পর্ক ত্যাগ করছি বহুতদিন হইলো, আর আমার এই লেখার সহলেখক রায়হান আবীর, সে তো আর আমার লাহান হিন্দু ঘরে জন্মায় নাই কখনোই। আপনেরে যে উত্তর দিছে সেই টেকি সাফিও হিন্দু না, আছিলোও না। খামাখা তেত্রিশ কোটি দেবতা লইয়া জল ঘোলা করতাছেন ক্যান? তেত্রিশ কোটি দেবতা ক্যান, পঞ্চাশ কোটি দেবতা নিয়া মস্করা করলেও আমার কিছু যায় আসে না। যেটা মস্করার জিনিস সেটা নিয়া মস্করা করেন, বিনিময়ে আমগোও করতে দেন। তয় আদালতের ভয় দেখাইয়েন না, কল্লাটাও ফালায়েন না, এইটুকুই যা দাবী।
আপনেরেই বা কেডা দায়িত্ব দিছে মুক্তমনায় আইসা নাকি-কান্না কান্দনের? শুরু থিকাই আপনের যা অপছন্দের, যেটা অবিশ্বাসের সেইটা নিয়া গুতাগুতি করছেন, মস্করা করছেন – বিবর্তন থিকা শুরু কইরা সব কিছুই। একই ভাবে আপনেরেও তো কইতে পারি আপনেরে তো দায়িত্ব দেয়া হয় নাই অবিশ্বাসীদের হেদায়েত করনের, তাই না?
ঠিক। তোরায় বান্ধা ঘোড়ার ডিমের মালা গলায় ঝুলাইয়া বইসা থাকেন। আমি ফুটি …
@বেয়াদপ পোলা,খুবই আল্প সংখ্যক মানুষ এমন হয় যারা নিজে খেয়ে বনের মহিষ তড়ায় ।আমরা তাহাদের শ্রদ্ধা করি এখন থেকেই,আপনার কপাল খারাপ তা আপনি পরেননা ।কিন্তু আপনার সন্তান ভগ্যবান হবে আশা করি ।
@বেয়াদপ পোলা,
ইট মারলে শুনেছি পাটকেল খাইতে হয়, আপনারা গ্রেনেডও মারতে পারেন দেখি। আপনাদের আবার ঘিলু খুব ভাল তো তাই না বুঝায়া কইলে বুঝার ক্ষ্যামতা কম…আমি সোজাসুজি কইতে চাইতেসি, এই ইট-পাটকেল ছুড়া বলতে কী বুঝাইতেছেন? ব্লগিং আর ফেসবুকিং আর খুব বেশী হলে দু’চার খানা বই লেখা আপনাদের ধর্মানুনুভূতিকে লক্ষ্য করে নাকি? আর আপনারা পাটকেল ছুড়েন কীভাবে? দে কল্লা ফালায়া দিয়া…খালি তাই? ইসলামরে ইনসাল্ট করে? সালার বইন, প্রেমিকা, মাকেও ধইর্যা লাগা… অসসাম!!!
মুক্তমনের সাইটে এসে ধর্মীয় ছ্যাবলামির দরুন আমার মুক্তমনানুভূতিতে লাগছে এখন এইজন্য আপনার ফিজিক্যাল লোকেশন ট্র্যাক করে জায়গামত চাইরটা দেয়া হয় তাইলে এই জাস্টিস ক্যামন লাগবে মিস্টার বেয়াদপ পুলা?
@টেকি সাফি, (Y)
তবে এই বেয়াদপ পোলারে বানরের শলা লাগাইয়া যদি রিএকশন টা দেখা যাইত…উনার চুলকানি টা কেমন হয়?
@টেকি সাফি,
সমস্ত মুসলিমের বিচির তেজ মনে হয় মহাম্মদী তরিকায় বেড়ে গেছে। তাই এদের এই দশা। একদিনে আল্লাহপাক হয়ে পড়েছেন নপুংসক, আর আল্লাহার মাফিয়া বাহিনী, তাদের নবীজির বির্য মোবারকে বলিয়ান হয়েই দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। এদের বির্য মোবারক সরিয়ে ফেলতে খাসি করা যেতে পারে। যদিও কাজটা কিভাবে সম্ভব বা কে করবে আমার জানা নাই। তবে উপদেশ আর যুক্তি দিয়ে মুসলিম দের কাত করা যাবে না এ নিয়ে আমি মাথা বাজি রাখতে রাজি আছি।সুতরাং খাসি করে বির্য মোবারক নিষ্ক্রিয় করে দিলেই কেবল দুনিয়া রক্ষা পাবে, নতুবা কেয়ামত আস্তে সময় লাগবে না।আগে ইরান কে পারমানবিক অস্ত্র বানাতে দেন, পরে দেখবেন যে মুসলিমদের বির্য্য মোবারক আর কত বেশি বলিয়ান হয়ে ওঠে।
@বেয়াদপ পোলা, @বেয়াদপ পোলা,
চুলকানিটা আপনাদেরই বেশি। অন্যের ধর্মকে শয়তানের ধর্ম বলার ক্ষেত্রে আপ্নারা সিদ্ধহস্ত। সেতা ওয়াজ মাহফিলে তো রীতিমত মাইক দিয়ে ঘোষণা করা হয় তখন অন্যের কেমন লাগে একবার ভেবে দেখেছেন? নাকি বলবেন যে ওরা কাফের, সুতরাং ওদেরকে গালিগালাজ করা পুন্যের কাজ? হাঁ তা আপনি বলতেই পারেন। আপনাদের পেডোফাইল নবীজি ত সূরা ফাতিহা, সুরা লাহাব সহ অনেক সুরাতেই অই কাজ করে গেছেন। কিন্তু সমালোচনা তারই করা সাজে, যে সমালচনা সহ্য করতে পারে।সত্যি কি মনে করেন হোলি ওয়ার যদি শুরু হয়, মুসলিম রা পারবে? না পরমানু অস্ত্র লাগবে না। সব কাফের দেশ গুলো এক হয় মুসলিম দের আক্রমন করলে গোটা মুসলিম সমাজ নির্মুল হয়ে যাবে, আর আপনার আল্লাহ ফাক ( নিষিদ্ধ ওয়েবসাইট এই আল্লাহফাক কথাটি পেয়েছি, যা আমি গর্বের সাথেই লিখব) তার সর্ব শক্তি প্রয়োগ করে, অথবা হুজুরে পাক পেডোফাইল সাঃ এর ৩০ জন মরদের বির্যের শক্তিও মুসলিম জাতিকে রক্ষা করতে পারবে না। কিন্তু সমস্যা হল কাফির রা মুসলিমদের মত অমানুষ না কারন তারা গনহত্যা পছন্দ করে না। করলে বুঝতেন যে আপনাদের চুলকানি, অশিষ্ট বাংলায় কুটকুটানি অনেক আগেই সেরে যেত।আরও কিছু অশিষ্ট ভাষা বলি কারন আপ্নারা ওগুলোরই যোগ্য।
আপনার ধর্মের পোঁদে কষে লাথি মারা হবে এখন।যেমন টা খ্রিষ্টান ধর্মের পোঁদে মারা হয়েছিল ।
ইউরোপে।ইসলাম ধর্মের গুহ্যদারেও বাঁশ ঢোকার সময় এসে গেছে বোঝেন কি? কামড়াকামড়ি আপনারাই বেশি করেন, আর আপনার নিক নেম দেখলেই, আপনার অসংস্কৃত চরিত্রের প্রমান পাওয়া যায়।
খুবই ধারালো ও শকিশালী লেখা। এক নাগাঢ়ে পড়ে নিলাম।
তবে আমার মনে হচ্ছে আল্লাহর কুদরত আছে ইন্টারনেটের উপর। কারণ এই ইন্টারনেট, ফেসবুক, টুইটার, ব্লগ…ইত্যাদির কারণেই ইসলামিস্টারা ক্ষমতায় যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যে। এর পর কী হবে? এরাই ধর্মনিরপক্ষতার গলায় ছুরি চালাবে, দুনিয়া ব্যাপী না হলেও সমগ্র মধ্যপ্রাচ্যে শরীয়া চালু হবে। তার ঢেঊ এখনই শোনা যাচ্ছে বাঙলাদেশে। এর সবই হবে ইন্টারনেটের বদৌলতে।
সেকুলারস্টরা যেদিকেই যায় সাগরও শুকিয়ে যায়।
@আবুল কাশেম,
কারণ ওরা সংগঠিত, এবং ইন্টারনেটকে ব্যবহার করছে সংগঠক হিসাবে। আর মুক্তমনারা বিচ্ছিন্ন-ভিন্ন দ্বীপ বাসী; একটিমাত্র শব্দের অর্থ উদ্ধার করতে গিয়ে, শব্দের ভেতর থেকে বেরিয়ে এসে – আলোক-উজ্জ্বল নক্ষত্র হয়ে বেঁচে থাকতে এবং অন্যকেও উৎসাহিত করতে আনন্দ-বোধ করেন।
সেই যাওয়াটা যদি বৌদ্ধিক আঙ্গিনায় আটকে যায়, তো সমুদ্র শুকাবে। গান-বাজনা-নাটকের একটা দল ছিল, তো এসব কাজের পাশাপাশি বিপন্ন মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়াতাম, তাতেই অনেকটা বেঁচে গিয়েছিলাম। হামলাটা আসার আগে ওই মানুষগুলো সামনে চলে এলো। যে মানুষের জন্য এত কথা; আমরা কি সেই মানুষের আশেপাশে আছি বা যারা আছে তাদেরকে নিয়েও কিছু বলছি?
রাষ্ট্র নামক সমাজের সর্বোচ্চ শক্তিশালী সংগঠনটি কি সংগঠিত অশুভ শক্তির পাশে না দাঁড়িয়ে – অসংগঠিত অগ্রসর চিন্তকদের পাশে দাঁড়াবে?
অগ্রসর চিন্তক হুমায়ুন আজাদ কোন সংগঠিত তৎপরতার ধারে-কাছে থাকতেন না, তসলিমা নাসরিন এখনো জীবিত, তিনিও সংগঠিত তৎপরতাগুলো থেকে অনেক দূরে থাকতেন। আহমদ শরীফ কিন্ত এক্ষেত্রে একেবারে ব্যতিক্রম, শুধু আহবাণে সাড়া দিতেন না, ‘স্বদেশ চিন্তা সংঘ’ নামে একটা সংগঠনও করেছিলেন। তো শরীফ স্যারের ফাঁসি দাবি করেও কিছু করা যায় নি। সময় খুব কম বলে এ ব্যাপারে আরো বিস্তারিত বলা গেল না। দুঃখিত।
@স্বপন মাঝি,
সত্যি কথা। আমাদের কোন সম্মিলিত ভাষা নাই। যদিও ইদানিং কিছু শক্তিশালী লেখকের দেখা পাওয়া যাচ্ছে তা সত্ত্বেও আমরা সবাই একা একা কলম পিষে যাচ্ছি। এর ফলাফল কী কিছু হবে?
ব্যাপারটা পরিষ্কার হল না। একটু খোলাসা করে বলবেন কী?
এই সগঠন কি এখনও জীবিত? না মৃত।
@আবুল কাশেম,
প্রশ্ন কাকে করব বুঝতে পারছিনা,তাই আপনাকেই আপনার উদ্ধৃতি তুলে বলছি,
সেকুলারিস্টদের মাঝে মিল নেই। কথাটা অপ্রিয় হলেও সত্য। অনেক কারণ বের করতে চেয়েছি মনে মনে
খুঁজে পাইনি। কেন এই বিভেদ? কেন সবার মাঝে ছাড়া ছাড়া এক গাছাড়া ভাব। নিজেদের মাঝেই যদি মিল না থাকে, নিজেরাই যদি সংগঠিত না থাকা হয়, তবে তার আলো দিকে দিকে ছড়াবে কী করে?
এই প্রশ্ন আমার মনে নেই কেবল, অনেকের মনেই আছে। কেউ প্রকাশ করে কেউ করেনা। সেকুলার একজন কে দেখা যায় অপরজনই বিদ্রুপ করে, তাকে নানান ভাবে নাজেহাল করে। বিভিন্ন জায়গায় দেখেছি।
যদি এমন হয়। তবে একটা সংগঠন দাঁড়াবে কী করে?
অভিজিতের লেখা আমাকে সত্যি মুগ্ধ করেছে বরাবরের মত। @ অভিজিত ধন্যবাদ সময়োপযোগি লেখাটা আমাদের দেবার জন্য- (Y)
@আফরোজা আলম,
এখানে প্রচন্ডভাবে দ্বিমত। আমি ঘাড়ে এক হাত রেখে আরেক হাতে মারামারি করি। মানবতা, বাক-স্বাধীনতার প্রশ্নে আমি, আপনি, অভিজিৎ, শফিউল ভাই ভাই আবার যখন নিজেদের দর্শন নিয়ে আলোচনা তখন একজন আরেকজনের সাথে মারামারি কাটাকাটিতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা হবে না। তবে এইটা আবার ব্যক্তিগত বিদ্বেষের পর্যায়ে চলে গেছে অবশ্যই ঝামেলা যেটা ফেসবুকে আম্লীগ আর বামপন্থী দুই গ্রুপ প্রগতিশীলদের মাঝে দেখি। এইখানে সীমানাটা নিয়েই যত ঝামেলা…তবে এ থেকে উত্তরণের পথ নেই, ওটা নিয়ে দু’একজনের একটু আধটু ঝামেলা থাকলেও চালিয়ে নেয়াই যায়।
@টেকি সাফি,
(Y) ঠিক বলেছেন। আর পরের টুকুও খুব সঠিক। এগুলো কোনদিনই ব্যক্তিগত বিদ্বেষের পর্যায়ে টেনে নিয়ে যাওয়াটা বুদ্ধিমানের কাজ না।ওইসব করে থাকে ধার্মিকরা। মনে মিল না হলেই ব্যক্তিগত বিদ্বেষের পর্যায়ে জিনিসটাকে টেনে নিয়ে যাওয়া।মুক্ত মনা দের এটা সাজে না।
@আবুল কাশেম,
সোমবার দিবাগত রাতে মন্তব্য টাইপ করে, পোস্ট করতে গিয়ে দেখলাম; উচ্চ-প্রযুক্তি, মন্তব্য প্রকাশে অপারগতা প্রকাশ করছে। কি আর করা, হাল ছেড়ে নিদ্রার পাল তুলে দিলাম। মনেও নেই কি বলেছিলাম।
আমিও জানি না; এর ফলাফল।
খুব বলতে ইচ্ছে করে; সময়ের অভাবে বলা হয়ে ওঠে না। তবে ইচ্ছে আছে কোন একদিন বলবো।
এখনো প্রাণ আছে, মরেনি বলেই শুনেছি।
ভাল থাকুন। ধন্যবাদ।
@আবুল কাশেম, ২৪ফেব্রুয়ারি২০১২বিজনেস স্টাডিজ কনফারেন্স (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়)হলে স্বদেশ চিন্তাসঙ্ঘ আয়োজন করেছিল ড.আহমদ শরীফ স্বারক বক্তিতা ও স্বারক পুরস্কার২০১২ অনুস্ঠানের ।
@স্বপন মাঝি,সুন্দর জবাব ৷
চমৎকার সময় উপযোগী লেখা।
পৃথিবীতে বিশেষ করে নেটের কল্যাণেই ধর্মের ক্রান্তিকাল শুরু হয়েছে, ধর্মের লুকানো অনেক অন্ধকার বিষয় ক্রমশ ফাঁস হচ্ছে। যুক্তিবাদীরা প্রতিনিয়ত যেভাবে নানা বিব্রতকর প্রশ্নের করে গিট খুলতে শুরু করেছে ধর্মীয় লুঙ্গির, তাতে ধার্মিকেরা নিতান্তই হতাশ বিপর্যস্ত ও উত্তেজিত বোধ করছে নিজেদের। বিনা রক্তপাতে এত কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি আগে তারা কখনো হয়নি, এই চ্যালেঞ্জে হত্যার হুমকি নেই, নেই কোন মন্দির- মসজিদ -গীর্জা দখল, নেই কোন মত চাপানোর সমাবেশ , নেই কোন সেনাপতির অস্ত্রের ঝংকার, নেই কোন সশস্ত্র সংগঠনের গোপন অভিযান, নেই জবর দখল, নেই কোন আত্মঘাতি দলের শহীদি বোমা বিস্ফোরণ, নেই বিজয় উল্লাস। এদের একমাত্র অস্ত্র বিজ্ঞান, সুশিক্ষা, সত্য প্রকাশে অবিচলতা। অথচ এদের কিনা ধার্মিকদের এত ভয়!
@রাজেশ তালুকদার, চমৎকার মন্তব্য !
@রাজেশ তালুকদার,
আসলেই খুব সুন্দর মন্তব্য রাজেশদা!
ধর্মটা এতোই ভঙ্গুর যে তা তুলো দিয়ে তুনু তুনু করে রাখতে হয় । পাছে যদি ভেঙ্গে যায়। ভেঙ্গে যাওয়ার এাতা ভয় !!!! তাহলে যারা এতো ভয় পায় তারা নিশ্চয়ই জানে যে এটা অন্তসারর্র্শূণ্য লেখাটি খুবই যুক্তিযুক্ত হয়েছে।
অবিশ্বাসের দর্শনের পর এই প্রথম রায়হান আর আমার লেখা। গুরুত্বপূর্ণ এই বিষয়টা নিয়ে লেখাটা ডিউ ছিলো অনেকদিন ধরেই … 🙂
@অভিজিৎ, ধন্যবাদ অভিজিৎ এবং রায়হান ভাই। চমৎকার সময়োপযোগী লেখা। (F)
@ইমরানহক সজীব,
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ।