লিখেছেন – স্ট্যানলী অয়ন
প্রতিবার লেখা শুরু করার সময়ই টেবিলের দিকে মাথা নিচু করে বেশ কিছুক্ষণ ধরে ভাবি, কিভাবে শুরু করা যায়। আজও ভেবেছি। শেষ পর্যন্ত আর বিশেষ কিছু খুঁজে পেলাম না। সবসময় খুঁজে পাওয়াটা আবশ্যকও নয়। কারণ কিছু কিছু আনন্দ কে প্রকাশ করার জন্য সহজ, সাবলীল পন্থাই উত্তম।
ছোটবেলায়(বেশি বড় যদিও এখনো হই নাই 😛 ) এদিক-সেদিক থেকে বইমেলার কথা যখন শুনতাম, টেলিভিশনে বাংলা একাডেমী চত্বরে নাম না জানা লেখক-পাঠক দের সাক্ষাৎকার দেখতাম তখন তেমন বিশেষ কিছুই অনুভব করতাম না। ভাবতাম ” ধুরর, বইমেলায় আবার মানুষে কী করে…!!! এর থেইকা বাসায় বইসা টম এন্ড জেরি দেখাই মজা!!” শৈশবের সেই হাস্যকর ভাবনাগুলো এখন অতীত। তবে “টম এন্ড জেরি”র প্রতি ভালবাসা-আকর্ষণ এখনো আছে, চিরকাল থাকবে। সেই সাথে ভালবাসার নতুন জায়গা হিসেবে ধরা দিয়েছে বইমেলা। এ মেলা যেন এখন প্রানের সাথে মিশে গিয়েছে। সেই প্রাণের টানে আবারো ছুটে গিয়েছিলাম মেলা প্রাঙ্গনে।
কিন্তু এবারের বইমেলা ভ্রমনে নিজ প্রাণের উত্তেজনা টা ছিল যেন একটু বেশিই। কারণটা একটু খোলাসা করা যাক। সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে এমন কিছু মহৎ মানুষের সাথে পরিচিত হতে পেরেছি যাদের কথা দুই-এক লাইনে বলে শেষ করা হবে অন্যায়। তাদেরকে জেনে বুঝতে পেরেছি দুর্নীতিতে পাঁচ বার চ্যাম্পিয়ন হওয়া এই দেশে এখনো কত মুখোশহীন ভাল মানুষেরা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছেন। অনেকে যখন বলে-” ভাই, এই হারা দুনিয়ায় ভাল মানুষ কই পাবেন? সব গেসে গোল্লায়। ভাই ভাইরে, মা তার সন্তানরে খুন করে। কারে বিশ্বাস করবেন?” তখন তাদের সামনে বেশি কিছু বলতাম না; মনের গহীনে কোথায় যেন একটু আশার আলো দেখতাম কারণ আমার জানা মহৎ মানুষ গুলোর দেখা বাস্তবে না পেলেও তাদের কথা ত শুনেছি। এবারের পহেলা ফাল্গুনে বইমেলা ভ্রমণটা ছিল সেই শোনা গুলোকে বাস্তবে রুপ দেবার দিন।
অতিপ্রিয় রতন দাদা বরিশালে job করেন। পারিবারিক, পেশাগত নানা ব্যস্ততার মাঝেও চলে এসেছেন কাজের ফাঁকে। আমি যখন সবেমাত্র ফাল্গুনের পড়ন্ত বিকেলে “লাল-কমলা রঙের” অগ্নিময় তরুণ-তরুণীর মধ্যে দিয়ে হেঁটে যেতে যেতে শাহবাগ যাদুঘরের সামনে তখন তার কল-” হ্যাঁ অয়ন, কোথায়?” ফোনটা পেয়ে ভিতরে ভিতরে সত্যিই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়লাম। ছোট জীবন পরিসরে কত বন্ধু এল-গেল, ঘনিষ্ঠতাও হয়েছে কমবেশি কিছু জনের সাথে, কিন্তু রতন দার সাথে ত আমার সেরকম কিছু নেই। মাত্র কিছু দিনের পরিচয়, বয়সেও আমার থেকে অনেকটা বড়, দেখাও হবে ওই প্রথম, এত আপন মনে হল কেন! বুঝতে পারলাম একেই বলে সহমর্মিতা, ভাতৃত্ববোধ, মানুষের প্রতি মানুষের অকৃত্রিম সৌহার্দ্য। মেলার প্রবেশ দ্বারে তাকে পেয়ে গেলাম। সত্যিই খুব ভাল লাগল তখন। মেলায় ঢুকে দুইজন কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরি করলাম। হঠাৎ কালো ফ্রেমের চশমা পরিহিত, গাদাখানি মেকআপ সজ্জিত, বাঙ্গালিয়ানা শাড়ির ভাঁজে মডেল ও অভিনেত্রী নওশিন কে এক ঝলক দেখলাম। রতন দা’র সাথে কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরি শেষে দেখা হয়ে গেল বহুল প্রত্যাশিত মানুষ শ্রদ্ধেয়, সুপ্রিয় লেখক অভিজিৎ রায় দাদার সাথে। ভার্চুয়াল জগতে তাঁর সাথে কথা হলেও সামনাসামনি যে ওই প্রথম। দাদাকে নিয়ে যদিও নতুন করে বলার কিছুই নেই। তারপরও একটু না বললেই নয়।
বিজ্ঞান লেখক হিসেবে ডঃ অভিজিৎ রায়ের নাম আজ প্রথম সারিতে। বাংলাদেশে হাতে গোনা মুষ্টিমেয় যে সমস্ত লেখকেরা আধুনিক বিজ্ঞানের সর্বশেষ জ্ঞান এবং তথ্যের নিরিখে সুসংবদ্ধ বিশ্লেষণ সাধারণ পাঠকদের দুয়ারে নিত্য পৌঁছে দিচ্ছেন, অভিজিৎ রায় নিঃসন্দেহে তাদের শীর্ষস্থানীয় কাণ্ডারি। বিজ্ঞান ও দর্শনের জগতে অবাধ বিচরণ তাঁর গুনমুগ্ধ পাঠকেরা তাঁকে অভিহিত করেছেন “বাংলাদেশের রিচার্ড ডকিন্স” হিসেবে। কেউ বা তাঁকে আখ্যায়িত করেছেন শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞান লেখক হিসেবে। বিজ্ঞানের জটিল অথচ রোমাঞ্চকর বিষয়গুলোকে কথাশিল্পের মনোমুগ্ধকর ভঙ্গিতে প্রকাশ করার কঠিন কাজটি খুব সহজেই নিবিষ্ট মনে করে চলেছেন তিনি। তাঁর দুটি গ্রন্থ পেয়েছে “বিজ্ঞানের ক্লাসিক” হিসেবে মর্যাদা। বিজ্ঞানমনস্কতার পাশাপাশি সমাজ সচেতন, যুক্তবাদী, মানবতাবাদী, সত্য সন্ধানে আপোষহীন, নির্ভীক এই মানুষটির প্রতিষ্ঠিত ব্লগসাইট দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্লগসাইট হিসেবে দেশে-বিদেশে ব্যাপক পরিচিতির পাশাপাশি অর্জন করে নিয়েছে শহীদ জননী জাহানারা ইমাম স্মৃতি পদক। তাঁর পিতা সর্বজন শ্রদ্ধেয় ডঃ অজয় রায় এবার শিক্ষা ক্ষেত্রে অবদানের জন্য রাষ্ট্রীয় সম্মাননা একুশে পদক পেতে যাচ্ছেন।
এই অসামান্য, অসাধারণ মানুষটির জ্ঞান, প্রজ্ঞা, অভিজ্ঞতাকে যদি হাতির সাথে তুলনা করি তবে আমি বোধহয় সেখানে এক পিঁপড়ার সমতুল্য। তা হওয়া সত্ত্বেও যখন আমি তাঁকে আমার নাম বললাম তিনি ঠিকই আমাকে চিন্তে পেরেছেন। তাঁর হাসিমাখা একটা মুখ নিয়ে আমাকে জিজ্ঞেস করলেন ভাল আছি কিনা। তাঁর বিনয়ে সত্যি মুগ্ধ হলাম। ঢাবি তে পড়ুয়া আরেক মেধাবি ভাইয়ার সাথেও পরিচিত হলাম। দাদা আমাদের চটপটি আর cold drinks খাওয়ালেন। খানিক্ষন গল্পবাজি করার পর তাঁর সাথে চলে গেলাম অঙ্কুর প্রকাশনীর স্টলে। স্টলের ভিতর বসে কফি খেতে খেতে তিনি ২০০৫ এ তাঁর প্রথম লেখা বই টা আমাকে উপহার দিলেন তাঁর সাক্ষর সহ। সে এক অবর্ণনীয় অনুভূতি। তাঁর সাথে আরও বেশ কিছুক্ষণ ঘুরে ঘুরে তাঁর লেখা আরও ২-৩ টা অসাধারণ বই কিনে ফেললাম। ইতোমধ্যে তাড়া ছিল বলে রতন দা চলে গেলেন। অভিজিৎ দা’র সাথে থাকার প্রতিটা মুহূর্তেই অবাক হতে বাধ্য হয়েছি। বড় মাপের ব্যক্তিত্বদের অনেককেই দেখেছি দাম্ভিক প্রকৃতির হতে। সস্তা জনপ্রিয়তার ভার বইতে বইতে একসময় অনেকেই আর অন্যকে মানুষ মনে করেন না। কিন্তু তিনি যেন এক্ষেত্রে হাতেগোনা কয়েকজনের মত ব্যতিক্রমী একজন। বিনয়ী, প্রাণোচ্ছল, রসিকতায় পরিপূর্ণ এই মানুষটিকে দেখলে শেখা যায় জীবনে বড় হতে হলে ছোট হবার সাধনাটাই করতে হবে সবার আগে।
বিদায়বেলায় সাভাবিকভাবেই খুব খারাপ লাগছিল। কি আর করার! যাবার সময় হাসি মুখে বললেন-” অনেক ভাল লাগল সময়টা” দাদার বিনয়ের পরিচয় যেন আরও একবার স্পষ্ট হয়ে উঠল। এরকম মানুষদেরই সম্মান করতে, ভালবাসতে, স্মৃতিতে ধরে রাখতে পারা যায়। চাইলেও তাদেরকে ভোলা যায় না। ফেরার সময় অন্য লেখক দের আরও কয়েকটা বই কিনে বের হলাম। টিএসসির কোলাহলপূর্ণ পারিপার্শ্বিকতার মাঝে হাঁটতে হাঁটতে জীবনের অন্যতম শ্রেষ্ঠ দিনটাকে রোমন্থন করেছি বারবার। আর মনে করেছি- একজন অভিজিৎ রায়, একজন আব্দুল্লাহ আবু সাইদ, একজন পলান সরকার, একজন সুলতানা কামাল, একজন জাফর ইকবাল এদেশটার জন্য কত প্রয়োজন, যারা সকল ভেদাভেদ ভুলে মানুষের কথা বলবে, সুন্দরের কথা বলবে, সৃষ্টির কথা বলবে, পুরনো অন্ধকারকে সরিয়ে নতুন আলোয় পৃথিবীটাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে; যে স্বপ্ন প্রতিটি সচেতন আধুনিক মানুষ তাঁর অন্তরে লালন করেন।
ইচ্ছে ছিল বড় না করার, তাও লিখতে লিখতে অনেক দূর চলে এলাম। প্রয়াত বিখ্যাত গায়ক ভুপেন হাজারিকার গাওয়া সেই গানটার লাইন দুটো দিয়েই শেষ করি আজ
” মানুষ মানুষের জন্যে
জীবন জীবনের জন্যে”
সত্যিই তো তাই………… :)) 🙂 :))
আমিও অনেক আশা নিয়ে গিয়েছিলাম , দেখাও হয়েছিলো কিন্তু সময় স্বল্পতার কারণে আমার প্রিয় লেখকের সাথে আড্ডা দিতে পারলাম না। আরেকদিন অফিস শেষে অনেক কষ্ট করে গেলাম কিন্তু সেদিন অভিজিত জ্বরের জন্যে এলো না মেলায়…যাক দেখা তো হলো , ভবিষ্যতে আড্ডার প্রত্যাশা রইলো …
লোকে এই বলে অপবাদ দেয় যায় আমার মুখে নাকি কিছু আটকায় না!! 😉
সেইইইইই আমি অভিজিতদার সামনে বড় বিনয়ী হয়ে কেনা বইটাতে অটোগ্রাফ নিয়া গম্ভীর-মুচকি হাসতে হাসতে চইলা আইলাম। :-O
“অবিশ্বাসের দর্শন” বইটা পড়ে সত্যি ভালো লাগল।
@অগ্নি,
🙂 🙂 আসলেই অবিশ্বাসের দর্শন একখান বই বটে
সংশোধন-
আমার মন্তব্যে (অভিজ্ঞতাকে) শব্দের জায়গায় হবে- (অভিজিৎ দাকে) যদি হাতির সাথে তুলনা করি তবে আমি বোধহয় সেখানে এক পিঁপড়ার সমতুল্য”।
”অভিজ্ঞতাকে যদি হাতির সাথে তুলনা করি তবে আমি বোধহয় সেখানে এক পিঁপড়ার সমতুল্য”।
আসলেই তার লম্বা সাইজ দেখে কিছুটা ডরাইছি। কোনদিন যদি বই মেলায় যাই আর তিনিও সেখানে থাকেন, তখন তাকে আর ফটো দেখে চিনতে হবেনা। যিনি সব চেয়ে বেশী লম্বা তিনিই অভিজিৎ।
মুক্তমনাকে এই ভুতুড়ে দশা যারা করেছেন, তাদের উপর আল্লাহর গজব পড়ুক। আমিন।
অয়ন@ তোমার লেখাটা সম্পূর্ণতা আছে অভিজিৎ দা কে নিয়ে।
@রঞ্জন বর্মন,
দাদা কে নিয়ে আরও অনেক কিছুই বলা যায়। কিন্তু বেশি বড় হয়ে যাবে বলে আর সবাই কমবেশি উনার সম্বন্ধে জানি বলে আর বেশি লিখি নি। আর বেশি লিখলে আবার “তেল মারা” সদৃশ হয়ে যায় কিনা। :)) :))
অনেক কষ্টে কালকে (২৫।০২।২০১২ ) বই মেলায় গেছিলাম। উদ্দেশ্য “অভিজিৎ দার” সংগে দেখা করব! বউ, পোলাপান নিয়াই গেছিলাম। কিন্তু শুদ্ধস্বর থেকে বল্লো “ঊনি তো অসুস্থ, পেটের অসুক’ তারপরে আবার আজকে রাতের প্লেনেই উনি আমেরিকা ফিরে যাবেন, আসবেন না”। শুইনা একটু কষ্টই পাইলাম। ভাবছিলাম ভালবাসা কারে কয় বইটা কিনা অভিদা রে কমু “আমার বউ রে গিফট করমু তো কিছু যদি লিখা দিতেন”। বইটা অবশ্য কিনছি। কিন্তু বউ এর সাথে ভাবটা মারতে পারলাম না। অভিদা রে পাইলে ভাবটা ১০০% তে ১০০% হইতো । রায়হান ভাইকেও খুঁজলাম শুদ্ধস্বর থেকে বল্লো উনি আরও পরে আসবেন। পোলাপান নিয়া গেছিতো বেশিক্ষন থাকতে পারিনাই ।
আসলে আমি কাউকেও চিনি না । ওয়েব সাইডে মুক্তমনা পড়তে পড়তে সবাইকে খুব চেনা চেনা মনে হয়। মুক্তমনার সবাইকে শুভেছা ও শুভকামনা। ভাল থাকবেন।
ভাই কার প্রশস্তি গাইছেন ! ইনি কি ? যে ক্যামেরা দেখলেই ভয়ে মুখ লুকিয়ে ফেলেন !!
.
[img]http://inlinethumb45.webshots.com/49900/2309782190106997511S500x500Q85.jpg[/img]
@রণদীপম বসু, :)) :)) :clap :clap
@রণদীপম বসু,
হা হা হা ।
@রণদীপম বসু, অসাধারণ ক্যামেরাম্যান।
কি যে অভিমত ব্যক্ত করব বুজছি না, মুক্ত মনা ব্লগে আসার আগে অভিজিৎ বলে কারও নাম জানতাম না। উনি যে কত বড় বিদগ্ধজন তা এখনও বুঝে উঠতে পারিনি, যখন বুঝব তখন অভিমত ব্যক্ত করব।
@ভবঘুরে,
আমি কি তাইলে একটু বেশি আগেই বুইঝা ফালাইলাম নাকি ভুল বুঝলাম ? 😛 :)) 😛
ইহুদি, মোসাদ, সিয়াইএ, র, ডিবিপুলিশ সহ পৃথিবীর তাবদ গোয়েন্দা সংস্থার গুপ্ত এজেন্ট মাসুদ রানা, থুক্কু অভিজিৎ রায় সম্পর্কে এতো ভালো ভালো কথা বলায় স্ট্যানলী অয়নকে ‘মুক্তমনার ব্লগার অফ দ্য ইয়ার’ ঘোষণা করার দাবী জানাইলাম, কী বলেন ফরিদ ভাই 😀
@রায়হান আবীর,
(Y) (Y)
@রায়হান আবীর,
😀 খুব মজা লাগছে এরকম মজার মজার মানুষদের মজার মজার কমেন্ট গুলো পড়ে।
ভাইয়া, আপনার সাথে দেখা করার ইচ্ছা ছিল বইমেলায়। কিন্তু দুর্ভাগ্য ক্রমে হয়ে উঠল না। আপনার আর অভিজিৎ দা’র লেখা বই টা পড়া হয়ে গেছে। কিছুই বলার নেই। সিমপ্লি অছাম 🙂
লেখকের বক্তব্যের সাথে একমত (Y)
@আফরোজা আলম,
ধন্যবাদ 🙂 🙂
””””আমি অভিজিতের “আলো হাতে চলিয়াছে আধারের যাত্রি” পড়ে এমন টাস্কি খেয়েছিলাম যে ধরেই নিয়েছিলাম ভারতের কোন সুব্রামানিয়াম চন্দ্রশেখর তুল্য কোন পন্ডিতের লেখা ওটা।””””’
সপ্তক ভাই, আমার অভিজ্ঞতাও একই রকম। আমিও ধরে নিয়েছিল ভারতের কোন নামজাদা লেখকের লেখা (পথিক গুহু বলে একজন লেখেন দেশ পত্রিকায়, যার লেখাও আমার খুব পছন্দের)। পরে যখন জানলাম, লেখক বাংলাদেশের, বাস করেছেন ঢাকায়, আমি প্রচন্ড বিস্মিত হলাম; সঙ্গে অহংকারও হল এই ভেবে, তাহলে আমাদের দেশেও পথিক গুহুর মত লেখক আছেন! অভিজিৎদার “আলো হাতে চলিয়াছে আধারের যাত্রি” বাংলা ভাষার একটা ক্লাসিক (আমার মতে); বাংলাদেশের প্রতিটি কিশোরের হাতে যদি তুলে দেয়া যায় এই বই, তাহলে বাংলাদেশকে বিজ্ঞানের ভয়াবহ খরায় ভুগতে হবে না দীর্ঘদিন!
@কাজি মামুন,
সদা সত্য 🙂
আমি অনেক আগে স্টিফেন হকিং এর ‘ব্লাক হোল” এর বাঙলা অনুবাদ পড়েছিলাম নাম “কৃষ্ণ গহ্বর” কোলকাতার বই। ইংরেজীর চেয়ে কঠিন মনে হয়েছিল সেই অনুবাদ। বাংলায় বিজ্ঞান নিয়ে লেখার যা একটু চেষ্টা তা করেছিলেন আব্দুল্লাহ আল মুতি শরফুদ্দিন। আর এই অভিজিৎ। আমি অভিজিতের “আলো হাতে চলিয়াছে আধারের যাত্রি” পড়ে এমন টাস্কি খেয়েছিলাম যে ধরেই নিয়েছিলাম ভারতের কোন সুব্রামানিয়াম চন্দ্রশেখর তুল্য কোন পন্ডিতের লেখা ওটা। এমন সহজ ভাবে বাংলায় এমন জটিল বিষয় লেখা সম্ভব এটা আগে আমার মনে হয়নি।কারন বিজ্ঞানের অনেক পরিভাষাই ত নেই বাঙ্গলায়,লিখতে গেলে ভাষাও তৈরী করতে হয়।
তবে ডকিন্স এর সাথে তুলনার দরকার কি?,ছোট বেলায় ট্রান্সলেশান পড়তাম” নজরুল বাংলার মিল্টন” ভালো লাগত না।
আবার ইয়ে মানে মুক্তমনায় স্তুতি(প্রশংসা) নিষেধ!! তাই প্রশংসা করতে ভয় ই লাগে।
@সপ্তক,
🙂 🙂 🙂 মুক্তমনার স্তুতি করা নিষেধ ? তারপর ও বলতেই হয়- মুক্তমনার স্তুতি না করে সচেতন মানুষ যাবে কোথায়? 🙂
@সপ্তক,
(Y) ১০০% সহমত।
আমি তো শুরু থিকাই ভাবতাছিলাম দাদা বুঝি ঐ পাড়ের । ভুল ভাঙতে একটু সময় লাইগা গেলো আরকি 😛 । যাক্ গা তাতে কি হইছে, ব্যাপার নাহ্ ।
@স্ট্যানলী অয়ন
আপনি যে অভিজিত রায়কে ‘হাতিসম’ বললেন শুধু একারনেই আপনাকে ‘মুক্তমনার ব্লগার অফ দ্য ইয়ার’ পুরষ্কারটা দেওয়ার জন্য ভুট দিলাম আমি।
ফরিদ ভাই কি বলেন?
@বন্যা আহমেদ,
ভুটের পাশাপাশি হাতিকে ভুট্টা দিতে ভুলবেন না।
@রৌরব, যাক আপনি যে আমার এই নিরেট ফাজলামিটা বুঝলেন তাতেই আমি কৃতার্থ। সবাই যে হারে গদ্গদ হয়ে স্তুতি করে যাচ্ছে তাতে করে ‘ভুট’টা না দিয়ে আর থাকতে পারলাম না :-Y ।
@বন্যা আহমেদ,
প্রথম লেখাতেই “ব্লগার অফ দ্যা ইয়ার” … :rotfl: :rotfl: ধন্য হইয়া গেলুম। :)) :))
আপু, আপনার লেখা, মন্তব্য অনেক পরেছি, দেখেছি। আজ সরাসরি ব্লগে কথা বলতে পেরে খুবই ভাল লাগছে। আপনার লেখা বই টা পড়ছি এখন। দারুণ লাগছে। 🙂 🙂 🙂
(quote)বিজ্ঞান ও দর্শনের জগতে অবাধ বিচরণ তাঁর গুনমুগ্ধ পাঠকেরা তাঁকে অভিহিত করেছেন “বাংলাদেশের রিচার্ড ডকিন্স” হিসেবে।(/quote)
বিবর্তনীয় মনোবিজ্ঞান বিষয়ক লেখাগুলোর জন্য অভিজিৎদা অবশ্যই ”বাংলাদেশের ডকিন্স”। কিন্তু মহাকাশ বিজ্ঞানের লেখাগুলির জন্য অভিজিৎদার আমার কাছে ”বাংলাদেশের স্টিফেন হকিং”। হকিংয়ের বইগুলো নাকি সব বেস্টসেলার হয় তার লেখনী গুনে; কিন্তু আমার মত বিজ্ঞানের অ না জানা মানুষদের পক্ষে হকিংয়ের বই বোঝা সম্ভব হয়নি; তাই অজ্ঞানতার অন্ধকারে হাবুডুবু খাচ্ছিলাম; অভিজিৎদা এগিয়ে এলেন; জানিয়ে দিলেন আধুনিক বিজ্ঞানের খবরাখবর; এমনভাবে লিখলেন যে, আমার মত নির্বোধ মানুষদের পক্ষেও বোঝা সম্ভব হল মহাকাশ বিজ্ঞানের জটিল তত্ত্ব ; তার লেখা পড়েই জানলাম শূন্য থেকেও কিভাবে সৃষ্টি হতে পারে মহাবিশ্ব!
লেখকের কথাগুলির সাথে সম্পূর্ণ একমত। কারণ এগুলো আমারও মনের কথা! লেখককে অনেক ধন্যবাদ!
@কাজি মামুন,
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ। অভিজিৎ দাদা সম্পর্কে বলা কথা গুলো ভাল লাগলো 🙂 🙂
অভিজত্ রায়
এ অবধি বিভিন্ন লেখকের লেখাই পড়ে গেছি কিন্ত্ত কখন্ও লেখকদের সাথে দেখা করার ইচ্ছা জাগে নি, আবার কখন্ও মনে হয়েছে অতো বড় মাপের, মানের লেখক কী না কী মনে করে-তেমনি বড় কিছুতে ধারে কাটার ব্যথা, ভাড়েতে থেতলানোর ভয়তোও আছেই। দাদা, তবুও আপনার সাথে দেখা করতে চাই, করবেন কি?
গত ব্ই মেলাতে আপনার ‘সমকমিতা’ ব্ইটি কিনেছিলাম,এমন একটি পূর্ণাঙ্গ ব্ই -ই খুঁজছিলাম, পরে সাহিত্য পত্রিকা “কালি ও কলম” পত্রিকায় পেয়ে গেলাম, এবং সেখান থেকে মুক্তমনা ব্লগের ঠিকানা। ভালো থাকুন, ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ অয়ন। আমারো খুব ভাল সময় কেটেছে এবারের বইমেলায় আপনাদের সবাইকে একসাথে পেয়ে। তবে আমি গ্রেট ফেট কিছু নারে ভাই। আপনাদের মতোই একজন।
@অভিজিৎ দাদা, পিসি তে বসতে পারি নি বলে কমেন্ট করতে দেরি হয়ে গেল।
” আমি গ্রেট ফেট কিছু নারে ভাই। আপনাদের মতোই একজন।”
বিনয় প্রকাশের জন্য আবারো ধন্যবাদ। :)) :)) সত্যিই খুব ভাল লাগছে এত জ্ঞানী গুণী দের মাঝে নিজেকে পেয়ে।