১.
‘’চাচী, আর কয়ডা টাকা দেন। সংসার চালাইতে বড় কস্ট। ঘরে জিরাতপাতি কিচ্ছু নাই।‘’- মনু ব্যাপারীর এই কাতর আবেদনে জাহান আরা বেগম প্রমাদ গুনলেন। ইতিমধ্যে নার্গিসের অগ্রিম বেতন, যাওয়া-আসার খরচ ছাড়াও অতিরিক্ত ৫০০ টাকা লোকটার হাতে গুঁজে দিয়েছেন। কিন্তু মনু যে হাতির পাঁচ পা দেখতে শুরু করেছে! নিজের প্রতিই বিরক্ত হন জাহান আরা। আসলে লোকটার লোভ উনিই বাড়িয়ে দিয়েছেন দিন দিন। মেয়েটাকে যাতে হারাতে না হয়, সেজন্য প্রায় প্রতিবছরই বেতনের পরিমাণ বৃদ্ধি করেছেন। সাথে অন্যান্য আনুষঙ্গিক সুবিধাদি তো রয়েছেই। বেতন, যাকাত, সদকা বাবদ বেশ মোটা অংকের অর্থ খুব যত্ন করে জমিয়ে রাখেন জাহান আরা। আর ছ মাস পর পর তা মনু ব্যাপারীর হাতে তুলে দেন। কিন্তু এত করেও তো লোকটার খাই মেটানো যাচ্ছে না! মনু আগে থেকেই ভবঘুরে স্বভাবের ছিল, আর এখন জাহান আরার টাকা পেয়ে পেয়ে পুরোই বনের মোষ হয়ে উঠেছে!
মনুর সেজ মেয়েটা সেই ছোটবেলা থেকে আছে জাহান আরার বাসায়। অন্য মেয়েদের মত ফাঁকিবাজ নয়, যখন যেটা বলা হয় করে মন দিয়ে। ওর মত মেয়েরা কতই না দুষ্টুমি-চুরি-বদমায়েশি করে! দোকানদার-ফেরিওয়ালার সাথে সুযোগ পেলেই ফষ্টি-নস্টি করে! কেউ কেউ তো ভেগেও যায়! কিন্তু না, আজ পর্যন্ত নার্গিসের এরকম কিছু দেখা যায়নি। মেয়েটির সবচেয়ে বড় গুন হল, ওর মুখে কোন রা নেই। ওর মুখ থেকে কথা শুনতে হলে যে কারো ধৈর্যের বাঁধ ভেঙ্গে যাবে নিশ্চিত। তবে ওর চোখের পানি দেখতে কাউকেই খুব বেশী অপেক্ষা করতে হবে না। নার্গিস সময় পেলেই কাঁদে। কোন অভাব নেই, অভিযোগ নেই, বাদানুবাদ নেই, শুধু আপন মনে কাঁদে। সত্যি আজকাল এরকম মেয়ে পাওয়াই যায় না। খরচটা একটু বেশী হয়ে যাচ্ছে বটে। কিন্তু এই ঠগবাজদের যুগে বেশী দাম দিলেই কি উত্তম জিনিস মেলে? নিজের অজান্তেই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন জাহান আরা।
অথচ মাস খানেক আগে মেয়েটিকে হারিয়েই ফেলেছিলেন প্রায়। একদিন জাহান আরা বেগমের বড় ছেলে হারুনের টাকা হারানো গেল বাসা থেকে। প্রায় হাজার দশেক টাকা। টাকাটা সে তার স্ত্রী শোভাকে দিয়েছিল এক বন্ধুর মেয়ের জন্মদিনের গিফট কেনার জন্য। শোভা আলমারির এক জায়গায় টাকাটা আলাদা করে রেখেছিল। কিন্তু মার্কেটে যাওয়ার সময় টাকাটা জায়গামত পাওয়া গেল না। বুদ্ধিমতী শোভা মুহূর্তেই মাথা খাটিয়ে আসামী বের করে ফেলল। সে যখন গোসল করতে ঢুকেছিল, আলমারির চাবি তখনো আলমারিতেই লাগানো ছিল। প্রতিদিনের মত সে ওটা লুকানো জায়গায় রাখতে ভুলে গিয়েছিল। ঐ সময়টাতে তার শাশুড়ি জাহান আরা বেগমও ছিলেন নামাযে। ফাঁকা ঘরে তখন নার্গিস ছাড়া আর কোন প্রাণীর হানা দেয়ার সুযোগ ছিল না। তাছাড়া, আর দুই মাস বাদেই তো নার্গিসের বড় বোনের বিয়ে। সুতরাং, গোয়েন্দা বইয়ের বিশাল পোকা শোভার পক্ষে দুইয়ে দুইয়ে চার মেলাতে কষ্ট হয় না মোটেই। শাশুড়ির নামায শেষ হওয়া মাত্রই তাকে জরুরি ভিত্তিতে ঘটনা অবহিত করে শোভা। কিন্তু জাহান আরাকে বোঝাতে যথেষ্টই বেগ পেতে হয়! জাহান আরার বারবার সেই এক কথা: ‘’না, না, নার্গিস এই কাজ করতে পারে না। আজ ছয় বছর ও আমার বাসায়। টাকা-পয়সা তো দূরের কথা কখনো নিজ হাতে এক টুকরা খাবারও মুখে তুলে নাই আমার হুকুম ছাড়া।‘’ শোভা তখন শক্তিশালী এলিবাই হাজির করে, ‘’মা, আপনি ভুলে গেলেন, দুমাস পরে ওর বোনের বিয়ে?‘’ মা এই কথায় কিছুটা নরম হলেও শোভার অভিযোগপত্র মেনে নেন না পুরোপুরি । শোভাকে জিজ্ঞেস করেন, ”কিন্তু এত সাহস ওর হবে?’’ শোভার যুক্তির বান প্রস্তুত করাই থাকে, ‘’দেখেন মা, ওর যে এত সাহস হওয়ার কথা না, সেটা আমার মনেও এসেছিল। কিন্তু ওর বাড়ির লোকেরা ওকে বুদ্ধি দিয়ে এ কাজ করাতে পারে। গত মাসে ওর বাবা যখন এসেছিল, তখনই হয়ত এই মন্ত্র দিয়ে গেছে। লোকটা যা লোভী! আর বাবা-মার জন্য নার্গিসের দরদ তো একেবারে উথলে উঠে। দেখেন না, সারাদিন কেমন ফ্যাচ ফ্যাচ করে কাঁদে।‘’ জাহান আরা আর কথা বাড়ান না, ‘’ঠিক আছে, ওকে জিজ্ঞেস করে দেখ।“
নার্গিসকে হাজির করা হয় ড্রয়িংরুমের সাময়িক আদালতে। জাহান আরা ভয়ানক টেনশনে আছেন; নার্গিস যে ওনার কত বড় কাজের লোক, তা উনিই ভাল জানেন। ঘরোয়া হলেও আদালতের পরিবেশ যথেষ্টই থমথমে। শোভাই নীরবতা ভাঙ্গে, ‘’দেখ নার্গিস, তুই অনেকদিন আমাদের বাসায় আছিস। তাই তোকে আমরা বেশী কিছু বলব না। শুধু টাকাটা দিয়ে দে।‘’ নার্গিস প্রথমে কিছুই বুঝতে পারে না। শুধু চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে থাকে। শোভা বিরক্ত হয়, ‘’কি ব্যাপার, কথা কানে ঢুকছে না? টাকাটা ফেরত দে।’’ নার্গিস ভাঙ্গা ভাঙ্গা স্বরে বলে, ‘’কিসের টাকা?” শোভার গলার স্বর এবার অনেকটাই চড়ে যায়, ‘’দেখ, আমি তোকে শেষবারের মত বলছি, আর অভিনয় করবি না। আজ দুপুরে আমার আলমারি থেকে যে টাকাটা সরিয়েছিস, তা এক্ষুনি বের কর।‘’ নার্গিস এরপর আর কোন কথা বলে না। তার একমাত্র পারদর্শিতা প্রয়োগ করতে শুরু করতে থাকে। চোখ দিয়ে গল গল করে ব্যাপক গতিতে নামতে থাকে নীরব জলধারা। গোয়েন্দা বই পড়ে ব্যাপক জ্ঞান অর্জনকারী শোভা আগেই জানত, অভিযুক্ত নিজেকে বাঁচাতে তার শেষ অস্ত্রটি প্রয়োগ করে সিমপ্যাথি আদায়ের প্রচেষ্টা চালাবে। তবে শোভাও প্রস্তুত। আসামিকে আর জেরা নয়, সরাসরি রিমান্ডে নিয়ে নেয়া হয়। কয়েক দফা চড়-থাপ্পড়-লাথি-চুল টানাটানির কড়া ডোজ প্রয়োগ করা হয়; কিন্তু কোন তথ্য উদ্ধার হয় না। নার্গিসের ব্যগ-জামা-কাপড়ে ব্যাপক তল্লাসি চালানো হয়। কিন্তু কিছুই পাওয়া যায় না। এত সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়াতে শোভার রাগ যেন সপ্তমে উঠে। সে এখন নিশ্চিত টাকাটা নার্গিস ঘরেও রাখে নাই। সোজা বাইরে চালান করে দিয়েছে। দোকানে তো দিনে একবার হলেও যায়। কি সাংঘাতিক চোররে বাবা! নাহ, এমন মেয়েকে আর একদিনও ঘরে রাখা যায় না। সে শ্বাশুড়িকে পরিষ্কার জানিয়ে দেয়, নার্গিসকে বিদায় না করলে তার পক্ষে এই বাড়িতে আর থাকা সম্ভব না।
জাহান আরা চোখে অন্ধকার দেখতে শুরু করেন। নার্গিসকে ছাড়ার কথা শুনেই তার হাত-পা যেন অবশ হয়ে আসে। তবু সংসার তো টিকিয়ে রাখতে হবে! মনু ব্যাপারীকে জরুরি তলব করেন। সব শুনে মনু তো মহা উত্তপ্ত। সবার সামনেই চলে মেয়েটার উপর আরেক দফা রিমান্ড। তবে এবার রিমান্ডকারী স্বয়ং বাবা। কিন্তু ফলাফল সেই একই! নার্গিস এত মার খেয়েও চুরির কথা স্বীকার করে না। শেষে আশা ছেড়ে দেয় মনু। আর হাউমাউ করে কাঁদতে থাকে, ‘’তুই এইভাবে আমার মান-সন্মান ডুবাইলি! চাচী আমারে এত ভাল জানত!’’ মনুর কান্না বিন্দুমাত্র স্পর্শ করে না জাহান আরাকে। নার্গিসকে ছাড়া কিভাবে চলবেন, সেই চিন্তায় অস্থির হয়ে আছেন তিনি। তাই শেষ একটা চেষ্টা চালান তিনি। মেয়ে নিয়ে বিদায় নেয়ার সময় মনুকে গোপনে বলেন, ”তোমার মেয়েকে বাড়ি নিয়ে ভাল করে বোঝাও! টাকাটা ফেরত দিলে ওকেও ফেরত আনব আমি।‘’
মনু ব্যাপারীর কাছ থেকে টাকা আর উদ্ধার হয় না। বরং তা একসময় খুঁজে পাওয়া যায় শোভার ঘরেই। তবে আলমারিতে নয়, শোকেজে। সবসময় আলমারিতে টাকা রাখতে অভ্যস্ত শোভা ভুলেই গিয়েছিল যে, টাকাটা সেদিন সে শোকেজে রেখেছিল। যাই হোক, এই ঘটনায় খুশিতে উদ্বেল হয়ে উঠে জাহান আরা বেগমের মন-প্রাণ। অনেকদিন পর হাত-পা ছাড়া-ছাড়া লাগে তার। নার্গিসের উপর ঘরের কাজকর্ম ছেড়ে দিয়ে তিনি নিশ্চিন্তে দিনানিপাত করতেন। সেই নার্গিস চলে যাওয়ার পর তাকে বাধ্য হয়ে ছুটা বুয়া রাখতে হয়, যাদেরকে কোন কথা বললেই খ্যাঁক খ্যাঁক করে উঠে। দুয়েকটা উপদেশ দিলে উল্টো দু’চার কথা শুনিয়ে দেয় এই ব্যাপক চাহিদাসম্পন্ন বুয়ারা। এখন নার্গিস নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় জাহান আরা আর শোভার মতের অপেক্ষায় থাকলেন না; সঙ্গে সঙ্গে মনু ব্যাপারীকে ফোন করলেন। মেয়েকে অতি স্বত্বর নিয়ে আসতে বলেন। মনু আমতা আমতা করে, ‘’চাচি, আপনার দয়ার শরীর! চুরি করা মাইয়ারেও ফেরত নিতে চান। তয় এইহানে একটা ঝামেলা হইছে। নার্গিসের মায় নার্গিসের বিয়া দিতে চায়। মাইয়া তো ডাঙ্গর কম হয় নাই। হে মনে হয় মাইয়ারে আর আইতে দিব না।‘’ জাহান আরা ভাল করেই জানেন, মনুর সংসারে মনুর সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত, তার বউয়ের কোন ক্ষমতাই নেই মেয়েকে আটকে রাখার। এটা অতিরিক্ত কিছু কামানোর ধান্দা মাত্র। বড়শিতে মাছ ধরতে সিদ্ধহস্ত জাহান আরাও ভাল টোপ ফেলেন, ‘’তোমার মেয়ের বিয়ে আমি দেব। বয়স হলেই আমি ওকে খুব ভাল জায়গায় ভাল ছেলে দেখে বিয়ে দেব। আর গ্রামের একটা জমি আমি অনেক আগেই ঠিক করে রাখছি নার্গিসের জন্য; বিয়ের পর স্বামী-ছেলেপুলে নিয়ে ওখানেই থাকবে। তুমি আর দেরী করো না। নার্গিসকে আজই দিয়ে যাও।‘’
মনু ব্যাপারী সত্যি সত্যি সেদিনই মেয়েকে নিয়ে হাজির হয়। আর এসেই শুরু করে একের পর এক বায়না। ‘’জমিডা এখনই লেইখা দিলে হয় না? বেতনডা একটু বাড়াই দেওন যায় না? পোলাপাইনগো জন্য কিছু কাপড়-চোপড় দিবেন নি?’’ এমনি আরো অনেক আবাদারের ঝুড়ি ভর্তি করে নিয়ে এসেছে সে আজ। যাই হোক, জাহান আরাও মোটামুটি সামাল দিয়েছেন। তার হাতে যা ছিল তার প্রায়ই সবই ঢেলে দিয়েছেন মনু ব্যাপারীর ঝুড়িতে। তারপরো যাওয়ার মুহূর্তে আরও কিছু টাকা চাই মনু ব্যাপারীর। আকাশ-পাতাল ভাবনা থেকে বাস্তবে ফিরে এলেন জাহান আরা বেগম। ভাবলেন, এখন যে করে হোক সবার আগে আপদ বিদায় করতে হবে চোখের সামনে থেকে! কিন্তু তার হাতে এই মুহূর্তে আর একটা টাকাও নাই। বাধ্য হয়ে স্বামীর শরণাপন্ন হলেন। জমির সাহেব তখন বেহুঁশ হয়ে প্রবাসী বাংলাদেশী শ্রমিকদের দুঃখ-যন্ত্রণার উপর একটা ডকুমেন্টারি দেখছিলেন। এই শ্রমিকদের উপর বিদেশী মালিকদের অবর্ণনীয় নির্যাতনে তার অন্তরটা ক্ষণে ক্ষণে দ্বিখণ্ডিত হচ্ছিল! জাহান আরার ডাকেও তার পুরো হুঁশ ফিরে এলো না। চোখ না ফিরিয়ে শুধু বললেন, ‘’দেখ টেবিলের ড্রয়ারে কিছু পাও কিনা!’’ ড্রয়ারে ৩০০ টাকার বেশী ছিল না। নাছোড়বান্দা মনু ব্যাপারী হাতে সেই টাকাই গুঁজে দিলেন জাহান আরা!
২.
কয়েক দিন পরের ঘটনা। জাহান আরা বেগমের মোবাইল বাজতে থাকে। পর্দায় মনু ব্যাপারীর নাম দেখেই বিরক্তিতে ভ্রু কুচকে যায় তার। এই তো কিছুদিন আগেই মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে গেল। এখন আবার কি চায় ব্যাটা কে জানে। জাহান আরা ফোন ধরলেন, ‘’কি ব্যাপার, বল মনু?’’ ‘’চাচি, আপনেরে একটা সুখবর দেওনের আছে।‘’ মনুর উত্তেজিত কন্ঠ ভেসে আসে। জাহান আরা আঁতকে উঠেন। মেয়ের বিয়ে ঠিক করে ফেলেনিতো আবার? ‘কি সুখবর, তাড়াতাড়ি বল?’ জাহান আরার উদ্বিগ্ন প্রশ্ন! ‘’চাচি, নার্গিসের যমজ ভাই হইছে। আমি কালই মিষ্টি নিয়া আইতাছি।‘’ জাহান আরা হাঁপ ছেড়ে বাঁচেন। সঙ্গে সঙ্গে কিছুটা বিরক্তও হন মনুর উপর। ব্যাটার শখ কত! ছেলে-মেয়ে পালতে পারে না, অথচ যমজ ছেলে বিয়ানোতে যেন খুশির তুফান ছুটছে! আবার বলছে মিষ্টি নিয়ে আসবে! নতুন করে কিছু হাতানোর মতলব আরকি! দেরী না করে নার্গিসকে তার বাবা-মায়ের মহা-কৃতিত্ব জানানোর জন্য ডাক দিলেন জাহান আরা; এই খবরে মেয়েটা যদি বাড়ির টান ভুলতে পারে, তাহলেই শান্তি! নার্গিস নিশ্চয় স্বার্থপর বাবা-মার উপর খুব অখুশি হবে, ভাবেন জাহান-আরা। কিন্তু খবরটা শুনে নার্গিসের চোখে-মুখে বরং এক ভয়ানক আনন্দ-দীপ্তি খেলে যায়; জাহান আরাকে অবাক করে দিয়ে কাতর আর্জি জানায় সে, ‘’আমারে দুইদিনের লাইগা বাড়ি যাইতে দিবেন দাদি? আতুর ভাই দুইডারে কোলে নিতে বড় ইচ্ছা করে!’’
মনে-মগজে কোথাওতো মেয়ের প্রতি সামান্য সহানুভুতির কলঙ্কমাত্র নেই,
কী নিস্তাপ, অথচ পুজি হিসেবে সেই মেয়েই উত্তম, উত্তমতর।
মনু মিয়াদের তাই ছেলেই সম্বল,
যেন, মরার পরও বাপের গোষ্ঠি উদ্ধার করার কেউ থাকে।
লেখককে ধন্যবাদ……..
@শাহ মাইদুল ইসলাম,
ভাই, ভাষা ছিল নড়বড়ে, সংগঠন ছিল অগোছালো; তবু আমি যা বলতে চেয়েছিলাম, তার সবটাই উঠে এসেছে এখানে। এই দরিদ্র লেখাটির এর চেয়ে উত্তম বিশ্লেষণ হয়ত সম্ভব নয়!
আমি খুবই আনন্দিত আপনার এমন প্রখর বিশ্লেষণী মন্তব্যের জন্য। ভাল থাকবেন এবং আশীর্বাদ করবেন!
সুন্দর গল্প। (F) (F)
@তামান্না ঝুমু,
আপু, অনেক ধন্যবাদ! (F) (F) (F)
আমি একটা বার্তা দিতে চাই; এ জন্যই চালাই গল্প প্রচেষ্টা। গল্পটির গাঠনিক ও ভাষিক দুর্বলতা সত্বেও আপনি যে বার্তাটুকু ধরে ফেলেছেন, তার সব কৃতিত্ব আপনারই! আপনি যেভাবে ধারাবাহিক উৎসাহ যুগিয়ে যাচ্ছেন, তাতে ভবিষ্যতে ভাল লেখা হয়ত বেরুতেও পারে! তবে সেক্ষেত্রেও সব কৃতিত্ব থাকবে আপনাদের! ভাল থাকবেন গীতাদি!
হুম। নিজের ঘরে আন্তঃজেলা নারী গৃহ শ্রমিকের উপর নির্যাতনের প্রতিকারের চেষ্টা নেই জমির সাহেবদের। আর এ ব্যবসায় বাবারাই আদম বেপারী।
ভাল লেগেছে, তবে শোভার নার্গিসকে অত্যাচার গতানুগতিক দৃশ্য। ” যা কিছু হারায় গিন্নি বলেন কেষ্টা বেটাই চোর।”
গল্প লেখা অব্যাহত থাকুক।
আস্কারা পেয়েই কিন্তু মাথাই উঠার সূত্রপাত হয়। আস্কারা পেয়ে পেয়ে তুমি মাথাই উঠে গেছো এই কথাটার সাথে আমরা খুব এ পরিচিত।
আপনার লেখা সুন্দর হয়েছে অনেক।
গল্প পড়ি অল্প। গল্পটা লিখেছেন ভিন্ন তাই লাগল অনন্য। (F)
@রাজেশদা,
অনেক ধন্যবাদ! আপনি মুক্তমনার বৎসারান্তের মূল্যায়নে এই অধমকে শুধু ঠাঁই দেননি, সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন ‘গল্প লেখক’ (শব্দটির ওজন কত তাইতো জানি না এখনো!) হিসাবে; তো কিছুটা আস্কারা পেয়েই আবার লিখতে বসলাম। কিন্তু এখন দেখছি, গোড়াতেই গলদ হয়ে গেছে; শিরোনামটি মানুষকে ”মধ্যপ্রাচ্যের আদম ব্যবসা” বিষয়ক ভুল বার্তা দিচ্ছে। অথচ আমিতো ”বাসা-বাড়ির আদম ব্যবসা” নিয়ে লিখেছি। এই টাইটেল পরিবর্তনের কোন উপায় আছে?
ভিন্নতার কারনে হলেও ‘অনন্য’ হয়েছে নাকি? এমনটা নিয়ে কি আগে কেউ লেখেনি? তবে দাদা, কবে যে ”সৌন্দর্যের কারনে অনন্য” একটা লেখা লিখতে পারব কে জানে! সেদিন হয়ত এই অধম নিয়ে আপনার বৎসারান্তের মূল্যায়ন কিছুটা হলেও সার্থক হবে!
ভাল থাকবেন।
@কাজি মামুন,
অবশ্যই আছে। আপনি লগইন করে আপনার লেখায় ঢুকুন। একদম নীচের দিকে দেখুন এডিট বা সম্পাদনা লেখা আছে। সেই বাটনে ক্লিক করলে আপনার মূল লেখাটা চলে আসবে। তারপর ইচ্ছেমত পরিবর্তন করুন।
@কাজি মামুন,
”
এখানেই আপনার গল্পের সার্থকতা। আদম ব্যবসা যে মধ্যপ্রাচ্যে আদম যাওয়ার মাধ্যমে শুরু হয়নি সেটাই ত আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়েছেন। নাম পরিবর্তন করলে ত গেল…।
@সপ্তক,
একবার মনে হয়েছিল, নাম পরিবর্তন করব। কিন্তু এখন আপনার বিশ্লেষন পড়ে মনে হচ্ছে, নাম পরিবর্তন না করে ভালই করেছি। অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া!
গল্পের শিরোনাম দেখে ভেবেছিলাম মধ্যপ্রাচ্যে আদম পাচার এর ব্যপার।কিন্তু জাতীয় আদম ব্যবসা ভাবি নাই, হাঁ ছেলে হলে আমাদের দেশের মানুষ আদম প্রাপ্তিতে খুশী হয়। এখানেই আদমের সারথকতা,যে হাওয়ার শরীরের রক্ত পান করে নয় মাস এই আদমগুলো বাঁচে সেই হাওয়ারা নার্গিস ই থেকে যায়। খুব ভালো লিখেছেন ভাই। (F)
@সপ্তক,
ভাই, আপনার উৎসাহের কোন আদি নেই, অন্ত নেই, ক্লান্তি নেই, বিরতি নেই। ভাবি পৃথিবীতে যদি আপনার মত লোক বেশী বেশী থাকত, তাহলে দারুন খরার দাবানলে পুড়তো না কোন মানুষ।
দারুন! এটাই হতে পারে লেখাটার এক কথায় প্রকাশ।
ভাল থাকবেন!
ভাল লাগলো গল্পটা! 🙂
@অভিজিৎদা,
প্রিয় লেখকের উৎসাহে আমি পুরাই আওলা! কি লিখিব আমি, ভেবে হই আকুল…..
ভাল থাকবেন, অভিজিৎদা!
গল্পটা ভাল হয়েছে, ভাই। এই অবহেলিত মানুষদের নিয়ে আপনার লেখনী চলতে থাকুক। হঠাত করে থেমে যেন না যায়। বিদেশের প্রলোভন দেখিয়ে মানুষ কে প্রতারনা যেন বন্ধ হয়, এই আশা।
@শাখা নির্ভানা,
আপু, অনেক ধন্যবাদ! আপনার উৎসাহ আমার পাথেয় হয়ে থাকবে!
আমি আসলে ভিন্ন এক আদম ব্যবসার স্বরূপ উন্মোচন করতে চেয়েছি এই লেখায়! আমাদের দেশের অনেক গরীব বাবা-মাই তাদের বাচ্চাকে বাসাবাড়ির কাজে দেয়! চরম দারিদ্রতার কারনে তারা নিজ সন্তানকে লালন-পালন করতে পারে না- এইটুকু মানা যায়; কিন্তু তাদের অনেকেই বাচ্চাকে বেতনের বিনিময়ে অন্য লোকের হাতে তুলে দেয় এবং সেই বেতনের অর্থ নিজেরা ভোগ করে; শুধু তাই নয়, আরও অনেক নতুন বাচ্চার জন্মও দেয়। আসলে ঐটুকুন ছোট ছোট বাচ্চারা সব লাঞ্ছনা-গঞ্চনা সহ্য করে যে আয় করে তা দিয়ে ঐ গরীব বাবা-মায়ের সংসারখানা এত্ত ভাল চলে যে, তারা পুনরাৎপাদনেরও ব্যাপক সুযোগ পায়। তো এই পুরো বিষয়টাকে আমার কাছে এক ধরনের আদম ব্যবসাই মনে হয়েছে!
সুন্দর লিখেছেন। এমন করে লিখতে থাকুন।
@আফরোজা আলম,
অনেক ধন্যবাদ উৎসাহ দেয়ার জন্য!