অনেক হ্যাপী দেওয়ালী মেসেজ পেলাম। কয়েক বছর আগে আমার এক শহর-দাদার কাছ থেকে ইমেল পেয়েছিলাম। ক্যালিফোর্নিয়ার স্কুলে কোমলমতি বাচ্চাদেরকে হিন্দু ধর্মের বিকৃত রূপ দেখানো হচ্ছে। কী সেই বিকৃত রূপ? মাকালীর ছবি দেখিয়ে বলা হচ্ছে মাকালী যেন পৃথিবী ধ্বংস করতে উদ্ধত। কাজেই আমাদের প্রতিবাদ করতে হবে। ইমেইলে দেওয়া সাইটে যেয়ে প্রতিবাদ লিপিতে স্বাক্ষর করতে হবে।
আমি বললাম –আমাকে একটু দম নিতে দিন। আপনার দেওয়ালে রক্ষিত কালি মূর্তির দিকে তাকান। আপনার সাথে একটু আলাপ করি। কালীর একহাতে খড়গ, এক হাতে সদ্যকর্তিত মাথা। এক ক্কারী মানুষ হত্যা করে তিনি তা দিয়ে মালা গেথে মালাটি গলায় ধারণ করেছেন। কাটা হাত দিয়ে তিনি তার যোনী প্রদেশ লুকিয়ে রেখেছেন। এই দৃশ্য যদি ভয়াল না হয় তবে কোন দৃশ্য ভয়াল? দেবতারা আদর্শের শিরোমনি। আপনি কি পারবেন খড়্গ হাতে রাস্তায় নেমে যাকে ইচ্ছে কোতল করে তার মাথার মালা বানিয়ে গলায় ঝুলাতে। আপনি একাজটি আগে করুন। তারপর আমি প্রতিবাদ লিপিতে স্বাক্ষর করব।
কালী মূর্তিটির দিকে আবার তাকান। সোনার গহনায় গা ভর্তি কিন্তু গায়ে কোন কাপড় চোপড় নেই। সুঊচ্চ স্তন, ইত্যাদি, ইত্যাদি। আপনি আপনার স্ত্রীকে দেবীর পোশাকে রাস্তায় ছেড়ে দিন। আমি স্বাক্ষর করব। অথবা এই ন্যাংটা কালীটির স্বামী মহাদেবের মত শিবলিং প্রদর্শন করতে রাস্তায় বেড়িয়ে পড়ুন। আমি আর কিছু করতে পারব না। কিন্তু স্বাক্ষর করব সেই প্রতিশ্রুতি দিতে পারব।
দাদাটি কষ্ট পেলেন। কিছু দেখালেন না। আমারও স্বাক্ষর করা হল না।
দরিদ্র অশিক্ষিত হিন্দুরা এই সব বীভৎস দেব-দেবীর পূজা করে থাকে। এটা একটা যুক্তি বটে। আমেরিকাতে যত ভারতীয় হিন্দু আছে তার সিংহ ভাগই শিক্ষিত। প্রচুর ডাক্তার, ইঞ্জিনীয়ার, পিএইচড, এবং অধ্যাপক আছে। এরা সবাই কালীকে দেবী জ্ঞানে পূজো করছে। উপরে কালীর যে সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দিলাম, কেউ তা তাকিয়ে দেখে না। জিজ্ঞাসা করুন – কালীর পড়নে শাড়ীর রং কী? বলতে পারবে না। ধর্ম মানুষের মগজ কীভাবে ধোলাই করে এটি তার একটি নমূনা। এটি শুধুমাত্র হিন্দু ধর্মের জন্য প্রযোজ্য নয়। সবই একই জিনিষ। বিভিন্ন ভাবে, বিভিন্ন আবেশে।
কিছুদিন আগে রাজেশ তালুকদার হিন্দু দেব-দেবীর বিবর্তন নিয়ে সুন্দর একটি লেখা দিয়েছিলেন। হিন্দু ধর্মের অন্তঃসার শূন্যতার উপর এমন দ্বিতীয় কোন লেখা পড়েছি বলে মনে হয় না। মুক্তমনায় ইসলাম ধর্মের উপরও কিছু বিশ্লেষন ধর্মী কিছু লেখা এসেছে। এরকম স্বল্প কিছু মূল্যবান লেখার একটা ডাইরেকটরী থাকলে ভাল হয়।
হ্যাপি দেওয়ালী বার্তার উত্তরে এটাই আমার প্রস্তাব।
২৭ শে অক্টোবর ২০১১, টেক্সাস
লেখকের কাছে এটা আবেদন…ৃশ্যটি ভয়াল হলেও এটি হয়াল হবার পিছনের কারন,ব্যাখা এবং এ থেকে প্রৃতপক্ষে মানুশের শিক্ষালাভের দি্কটি না দেখে একচোখাভাবে ফটকা আধুনিকতা দেখাতে গিয়ে এধরনের কথা ববেন না। ধর্মের সমালোচনা করুন…দেখে শুনে বু্ঝে করুন,জেনে করুন,দয়া করে না জেনে করবেন না।
:-X
মা কালী, শুধু পুরুষদের মাথা কাটলেন কেন ? তিনি কী পুরুষ বিদ্বেষী ছিলেন ? মুক্ত-মনা মডু, আমার মন্তব্য ছাপানো বন্ধ করেছেন কেন ? আমি কী কাউকে গালি দেই ? না মিথ্যা প্রচার করি ?
@মোহিত,
আপনার পরিমিতবোধের চরম অভাবই এর জন্য দায়ী। যেখানে একটা মন্তব্যেই সবকিছু বলে দেওয়া সম্ভব, সেখানে আপনি অসংখ্য মন্তব্য করেন। কাউকে প্রতিমন্তব্য করতে গিয়ে নতুন থ্রেড খোলেন, একাধিক মন্তব্য করেন। এই লেখাতেও আপনি পাঁচটা সাধারণ মন্তব্য করেছেন। অথচ ওগুলোকে একসাথে করে একটা মন্তব্য হিসাবে করাটাই যুক্তিসঙ্গত ছিল। এই ধরনের মন্তব্যের প্লাবন মুক্তমনায় কাম্য নয়। আপনি যদি একই কাজ আবারও করেন, তবে ভবিষ্যতে আপনার কোনো মন্তব্যই আর প্রকাশ করা হবে না।
@মুক্তমনা এডমিন, (Y)
দীপাবলি ও কালিপূজা এক নয়। দীপাবলি হল উত্তর ভারতীয় দশহেরা। আর্যকূল চূড়ামণি রামচন্দ্র কর্তৃক রাক্ষসরাজ রাবণ বধ হল দীপাবলি। আলোর দ্বারা অন্ধকারের উপর বিজয়। শুনতে ভালোই লাগে, কিন্তু আর্যদের অনার্য বিজয় আসলে। ব্রাহ্মণ্য ধর্মের ধ্বজাধারি আর্য গুন্ডাদের সর্দার রামচন্দ্র কাকে যেন একটা অব্রাহ্মণ হয়ে বেদপাঠ করার জন্যে আচ্ছা করে শায়েস্তা করেছিল। আর প্রজাদের খুশী করতে হামেশাই সীতার অগ্নীপরিক্ষা করে নিজের “scientific acumen”-এর পরিচয় রেখেছেন।
অন্যদিকে কালিপূজা মুলত হিন্দু বাঙালীদের উৎসব।
প্রফেসর রিচার্ড ডকিন্সের মত অনুযায়ি শিশুদের ধার্মিক শিক্ষা দেওয়া বিপদজনক। ধর্ম সম্পর্কে জানা ভালো এবং জরুরী, কিন্তু ধর্ম দিয়ে শিশুদের মগজধোলাই ভয়াবহ। নিজের অভিঞ্জতা থেকে বলতে পারি এই মতটি আমার কেন সঠীক মনে হয়! দুটো উদাহরণ দিই।
একঃ আমার পরিবার বেশ কালিভক্ত। শাক্ত ভাবধারায় অনুপ্রাণিত কালিপূজা দেখে আসছি ছোটবেলা থেকে।প্রচ্ছন্নভাবে ছোট থেকেই মনের মধ্যে ঢুকে গেছে ভয় ও ভক্তি। একটা গল্প শুনেছিলাম খুব ছোটবেলায়, এখনো মনে আছে।একজন ডুবুরি নাকি গঙ্গায় ডুব দিয়ে ধ্যানমগ্ন শিব-কালিকে দেখে।শিব-কালি তাকে মানা করে এইকথা কারুকে জানাতে।পাড়ে উঠে, সে কি দখেছে, তা বলতেই, রক্তবমি করে মারা যায়।একদম রদ্দি গল্প। বড় হয়ে যখন যুক্তিবাদী মন তৈরি হল, ভক্তি চলে গেলেও ছোটবেলাতে যে অযৌক্তিক ভয় কালিকে নিয়ে ছিল, তা মনের গভীরে রয়ে গেল।আজো গঙ্গার ধার দিয়ে গেলে আমার চোখে ভেসে ওঠে হাওড়া ব্রিজের তলায় ঘোলা জলের নিচে ধ্যানমগ্ন শিব-কালি বসে আছে। একদম-ই rational নয়, কিন্তু বেশ বুঝতে পারি আমার প্রস্তর যুগের মস্তিষ্ক এই ভয়টা পুষে রেখেছে কোন এক অন্ধকার কোনে।
দুইঃ আমার এক ইংরেজ বন্ধু কলকাতায় এসে, কালিপূজার ঘটা দেখে চমকে যায়।তার ছোটবেলায় দেখা Indiana Jones and the Temple of Doom চলচ্চিত্রটি দেখে ধারণা ছিল যে, কালি হল খুনে ডাকাত আর ভয়ঙ্কর মওলা রামের মতন ঠগীদের দেবী মাত্র। আমার ভাই তার ভুল ভাঙতে সাড়ম্বরে শাক্ত দর্শণের মহিমা ব্যাখান করা শুরু করে। তাতে আমার বন্ধু জেমস্ কি বুঝেছিল, মা কালি-ই জানেন, কিন্তু Indian Statistical Institute থেকে পাশ করা আমার ভাইয়ের অন্ধবিশ্বাসের উপর দৃঢ়বিশ্বাস ও ভক্তি গদগদভাবে হাসি পেয়েছিল।প্রসংগত সংখ্যা ত্বত্ত ও উচ্চগনিতে পারদর্শী আমার কনিষ্ঠ ভ্রাতা কলকাতা এলে, যুক্তিবুদ্ধি জলাঞ্জলি দিয়ে প্রতি শনিবার কালিঘাট বা নিদেন পক্ষে লেক কালিবাড়ি নিয়ম করে যায়। এই নিয়ে তর্ক বিতর্ক, ঠাট্টা ইয়ার্কি একদম পছন্দ করেনা।
এইসব থেকেই আমার মনে হয়েছে, শিশুদের উপর ধর্মের প্রভাব মোটেই ভালো নয়। পাঁচ বছরের বাচ্চার পক্ষে শাক্ত দর্শণ অনুধাবন করা অসম্ভব।তার মধ্যে যেটা ঢুকে যায়, তা হল, এইটা কোরোনা, ওইটা কোরোনা, নয়ত মা কালি ঝাড়ে বংশে নির্বংশ করে দেবে।
অপরদিকে কালি আরাধনার একটা সামাজিক আর ঐতিহাসিক দিক আছে যা রামকৃষ্ন বিবেকানন্দ দ্বারা প্রভাবিত।আমাদের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংগ।এছাড়া ভক্তিবাদের কালি।রামপ্রসাদি কালি কিন্তু করালবদনা ভয়াবহ নয়।অনার্য কালির হিন্দু ধর্মভূক্তিও বেশ চমকপ্রদ।
আমার চোখে কালি হল কলকাতার unofficial patron goddess। এথেন্সবাসীদের যেমন ছিল এথেনা, রোমান দের রোমা, আমাদের তেমন কালি!
উপরের মন্তব্যে একটা ভুল করেছি। দীপাবলি আর দশহেরা এক নয়।দশহেরা হল বিজয়া দশমী।বীরপুঙ্গব রামচন্দ্র ওই দিন রাবণ বধ করে। দীপাবলির সূত্র হল কৃষ্ন ও সত্যভামার নরকাসুর বধ কাহিনি।
@অনামী, সত্যি কি রামচন্দ্র আর্য ছিল?ইন্দ্র কিন্তু তা পোষা কুকুরের মত ছিল, আর সে শারদীয় দুর্গা পুজা করেছিল। ঋগ্বেদে আমি কিন্তু ইন্দ্র, অগ্নি, বরুন, সু
@অনামী, সংশোধন করছি আগের মন্তব্য। অনামী, সত্যি কি রামচন্দ্র আর্য ছিল?ইন্দ্র কিন্তু তার পোষা কুকুরের মত ছিল, আর সে শারদীয় দুর্গা পুজা করেছিল। ঋগ্বেদে আমি কিন্তু ইন্দ্র, অগ্নি, বরুন, সুর্য এদেরকেই প্রধান দেবতা হিসাবে পেয়েছি। আর পুরানে এরা পৌরাণিক দেব দেবীর হাতে চূড়ান্ত ভাবে লাঞ্ছিত।এমনকি ঋষিদের হাতেও। তবে বেদ কিভাবে হিন্দুদের সবথেকে পবিত্র গ্রন্থ হয়, এতাই আমার মাথায়্ আসেনা। আপনি বা আর কেউ জানলে কি বুঝিয়ে বলবেন প্লিজ? আমি ত মনে করি যে রাম ছিল ব্রাহ্মণ্য বাদি গুন্ডা, কিন্তু আর্য না, কারন আর্যরা দুর্গা পুজা অথবা শিবের পুজা কেন করবে?
@অচেনা,
আর্য ব্যাপারটা খুবই গোলমেলে।উত্তর ভারতীয় বর্ণ হিন্দুরা নিজেদেরকে সবাই আর্য ভাবতে ভালবাসে।যেন আর্য হলেই নিৎসের ubermansch গোছের কিছু হয়ে যাবে।এইটা সাম্প্রতিক নয়, বহুকাল ধরেই চলে আসছে।
বেদ যারা লিখেছিল আর পুরাণ বা মহাভারত যারা লেখে তারা সবাই নিজেদের আর্য বল্লেও, স্থান, কাল, আচার-আচরণে, বিশ্বাসে, দর্শণে তাদের বিস্তর ফারাক।
ইন্দ্র-অগ্নি-বরুণ এরা ঋগ্বেদের দেবতা।প্রাচীন অর্ধ যাযাবর আর্যদের টোটেম। এরাই পরে নগর সভ্যতায় প্রবেশ করলে জটিলতর দেব-দেবী আমদানি করে।বির্বতনের নিয়মানুসারে প্রাচীন টোটেমরা অপাঙ্তেয় হয়ে যায়।নতুন দেব-দেবী ঢুকে পড়ে শূণ্যস্থান পূর্ণ করতে। যেমন অনার্য পশুপতি হয়ে যায় মহাদেব, আর্য ঊমা-দূর্গা আর অনার্য কালি এক হয়ে যায়।
দেবতাদের বিবর্তন তো হামেশাই ঘটে চলেছে।
নিজেদের সময় যাদের নিন্দা গালাগাল জোটে, তারাই অনেকে কালে-কালে দেবতা হয়ে যায়।যেমন নাস্তিক বুদ্ধদেব হয়ে যান বিষ্ণুর নবম অবতার। রবীন্দ্রনাথ আর বিবেকানন্দ হয়ে গেছেন বাঙালীদের demi-gods.
নতুন-নতুন দেবতা আমদানী করা পুরোহিত কুলের কাছে ক্ষমতাশীল গোষ্ঠিকে উল্টে ক্ষমতা দখলের একটা প্রকৃষ্ট পন্থা।নিজেকে সেই নতুন দেবতার একমাত্র প্রতিনিধি প্রমান করতে পারলেই কেল্লাফতে। নবী মোহাম্মদ আল্লাহকে হাতিয়ার করে যেটা করে দেখিয়েছিল!
copyright থাকাকালীন বিশ্বভারতী-ও এক-ই কাজ করত তাদের উপাস্য রবি ঠাকুরকে নিয়ে।
@অনামী, হা আমি ব্যাপারটা বুঝলাম, এটাই আমার কাছে একটা বিরাট ধাঁধা। আমি এটা বুঝিনা যে আজ তো ব্রাহ্মণরাই পুজা করায়।তবে তারা বৈদিক দেবতা বাদ দিয়ে পৌরাণিক দেবতা নিয়ে ব্যস্ত।
যদি তারাই আর্য হবে তবে তাদের ত বৈদিক দেবতাদের পুজা করা উচিত তাই না ?( ব্রাহ্মন রাই নিজেদের আর্য দাবি করে এতা আমি রাজেশ দার একটা লেখাতে পড়লাম)।
একদিকে বেদ কে শ্রেষ্ঠ বলছে তারাই, আরেক দিকে বেদের দেবতারা লাঞ্ছিত হচ্ছে পৌরাণিক দেবতা আর তাদের পূজারী বর্তমান ব্রাহ্মন দের হাতে।
আবার সেই বেদ কেই বলা হচ্ছে প্রধান আর পরম পবিত্রতম গ্রন্থ ।অথচ দেখুন ঋগ্বেদের অর্ধেকের বেশি শ্লোক ইন্দ্র আর অগ্নি কে নিয়ে করা।সত্যি আমি হিন্দু ধর্মের এই ধাঁধার কোন কুল কিনারা পাই না।
কিন্তু আমার একটাই প্রশ্ন যে বিবর্তনের ধারায় ঋগ্বেদের দেবতারা অপাঙ্তেয় হয়ে গেল সেটা ঠিক আছে, কিন্তু সেই সাথে ঋগ্বেদও কেন অপাঙ্তেয় হল না?ঋগ্বেদরেও ত অপাঙ্তেয় হবার কথা ছিল এর দেবতা দের সাথে সাথে, তাই না?
আমি গত প্রায় ৩ বছর ধরে চিন্তা করছি, হা ৩ বছর।কিন্তু এই ধাঁধাটাই আমি আজ পর্যন্ত সমাধান করতে পারিনি। আপনি কি একটু বুঝিয়ে বলতে পারবেন? খুব ভাল লাগতো তাহলে, কারন সত্যি আমি কনফিউজড!
@অচেনা,
ভয় পাবেননা। আমরা সব্বাই কনফিউজড! :-X
আসলে আমার যেটা মনে হয়, ব্রাহ্মণ পুরুতগুলো অতশত বুঝে কিছু করেনা।তাদের শেখানো হয় বেদ দৈব ও অভ্রান্ত তাই বেদ পাঠ করে।তা বাতিল না প্রযোজ্য কি যায় আসে?
যতক্ষণ আগডুম বাগডুম মন্ত্র পড়ে কিছু চালকলা আর প্রণামি জোটে, ততক্ষণ বেদ পড়লাম না পুরাণ, ইন্দ্র আগে না বিষ্ণু, কেউ মাথা ঘামায় না।
মুসলমান-রা যে আরবি ভাষায় কোরান পড়ে, তারা তো বেশিরভাগই না বুঝে মুখস্থ করে।ভারতের হিন্দু ব্রাহ্মণরাও সমগোত্রিয়।
@অনামী,
“যতক্ষণ আগডুম বাগডুম মন্ত্র পড়ে কিছু চালকলা আর প্রণামি জোটে, ততক্ষণ বেদ পড়লাম না পুরাণ, ইন্দ্র আগে না বিষ্ণু, কেউ মাথা ঘামায় না।
মুসলমান-রা যে আরবি ভাষায় কোরান পড়ে, তারা তো বেশিরভাগই না বুঝে মুখস্থ করে।ভারতের হিন্দু ব্রাহ্মণরাও সমগোত্রিয়।”
ভাল বলেছেন। তাইত দেখা যাচ্ছে আসলে 😀
প্রসঙ্গত একটা ঘটনা মনে পড়ে গেল। একবার এক মন্ডপে কালীঠাকুরকে শাড়ি পরাতে দেখেছিলাম, যদিও কালীর নগ্নরূপ হিন্দুসমাজে সর্বজনবিদিত। সভ্যতার বিকাশে হিন্দুরাও এখন তাদের দেবীকে নগ্ন দেখতে ও দেখাতে সহজবোধ করে না । সত্যিই, চরম মজা পেয়েছিলাম সেদিন। 😀
শ্রদ্ধেয় নৃপেন্দ্র দাদা সম্ভবত আপনি আমার “শিবঠাকুর ও দূর্গা দেবীর উত্থান” লেখা প্রসঙ্গে মন্তব্যটা করেছেন। যদি আমার অনুমান সঠিক হয়ে থাকে তাহলে “রাজীব” না হয়ে নামটা হবে “রাজেশ”। 🙂
ধন্যবাদ।
@রাজেশ তালুকদার,
ভুল নাম ব্যবহারের জন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য।
হ্যা, আমি এই লেখাটার কথাই বলেছি।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
দাদা, যত খুশি মা কালিকে নিয়ে লিখুন। তবে নারীদের খোঁচা দেওয়া কেন!
স্ত্রীদের এভাবে রাস্তায় ছাড়ার অধিকার স্বামীদের কে দিল?
আর নামটি শুধুমাত্র প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য। না দিলেও হত।
@গীতা দাস,
বদলিয়ে দিচ্ছে। তার আগে শিরোনামটি ব্যবহারের পেছনের আর একটি কারণ (ঘটনা)সংক্ষেপে বলি
কয়েক বছর আগে আমার এক পাড়াত দাদা তার ছেলের বিয়ের ভিডিও পাঠিয়েছেন। খন্ড খন্ড চিত্র একত্র করা ভিডিও।
একটা দৃশ্য – সুসজ্জিত মহিলাদের ছবি। সাথে অবশ্যই নববধুর ছবি।
পরবর্তী দৃশ্য – প্রথমেই এক মহিলার খোলা বুকের উপর জুম করা ছবি। কার ছবি – কোন মহিলার? প্রথম দুই সেকেন্ডে আমি কিছুই বুঝতে পারিনি। জুম আউট হলেই বুঝলাম মাকালীর ছবি।
এ ধরনের ভিডিও সপরিবারে দেখা বিপজ্জনক। এখানে একটা সতর্কবাণী থাকলে ভাল হত। অন্তত, “এখন আপনাদেরকে কালি মন্দিরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে” এ জাতীয়।
আমি যেমনটি ধাক্কা খেয়েছিলাম – আমার বিশ্বাস প্রতিটি মানুষই খেয়েছে। কিন্তু কেউ কাউকে কিছু বলেনি।
স্বচ্ছ চোখে দেখা যুক্তির কথা। এরকম যুক্তি দেখালে মজা পাই।
এই লেখাটার শিরোনামের কারনেই অনেকে এখানে ক্লিক করবে। যাহোক যাদের অন্ধত্ব জ্যোতিতে, আলো ভয় পায় যারা তারা আলোকিত হোক।
নৃতত্ত্বের দিক থেকে দেখলে কালীর নগ্নিকা হওয়াই উচিত।
হিন্দু ধর্মের এই পূজার ব্যপারটা প্যাগানিজম। প্যাগানধর্মে সর্বত্র নগ্ন দেব দেবী প্রকৃতি ইত্যাদি থাকে। যেমন যে হিন্দুরা স্বরস্বতীকে শিক্ষার দেবী বলে পূজো দেয়, সেই দেবী আসলেই দেবীকূলে গণিকা বা রক্ষিতা- গানে পারদর্শী। এবং দুশো বছর আগেও স্বরস্বতী পূজো স্কুলে না- বেশ্যালয়ে হত :-X
কালিকা- প্রকৃতি স্বরূপিনী। সব প্যাগান ধর্মেই প্রকৃতি নারী। তার কালো রূপ প্রকৃতির জন্যেই। এবং হিংসাটাও প্র্রকৃতির হিংসার ( যেমন ঝড়, ভূমিকম্পের) প্রতীক যা প্রাণনাশী।
আর হিন্দুরা ধর্মের ব্যপারে এত মাথামোটা কেন? কোন স্পেশাল কেস কিছু না- সব ধার্মিকই কম বেশী শক্ত বাদাম মানে নাটি। এটা একটা ধর্মীয় পরিচিতি ছারা কিছু না। সামাজিকতা রাখতে এখানেও আমাকে সব পূজোতে যেতে হয় – আমি অবশ্য সানন্দে বাঙালী সাজে সজ্জিত মেয়েদের দেখতেই যায়। কারন এদেশে পুজোতেই শুধু মেয়েরা বাঙালী সাজ সজ্জা করে :kiss: :kiss:
@বিপ্লব পাল,
মনে পড়ে গেলো। ছোটবেলায় বন্ধুদের সঙ্গে আশেপাশের সব পূজোমন্ডপগুলো ঘূরে বেড়াতাম। মেয়েদের দিকে তাকিয়ে থাকবার সময় ধরা পড়ে গেলে কানটান লাল হয়ে যেত। কিন্তু, প্রধান আকর্ষণ ছিলো উদ্ভিন্ন যৌবনা দেবী ও তাদের দেহ সম্ভার। যতক্ষন খুশী মন প্রান ভরে দেখে নিতাম। কান লাল হবার বা ধরা পড়বার কোন চান্স নাই, রিস্ক ফ্রী। আহা কি আনন্দ আকাশে বাতাসে………………… :))
@বিপ্লব পাল,
সরস্বতীর ব্যাপারটা জানা ছিলনা। চমৎকৃৎ হলাম। :-s
মনে পড়ে গেলো একবার পাড়ার সরস্বতী পুজোতে আমরা ছেলে ছোকরার দল এক সুগঠিতা, গুরুনিতম্বিনী, পীনপয়োধরা ও কিঞ্ছিৎ স্বল্পবসনা দেবীমুর্তি আমদানী করি।সেই মূর্তিতে কুমোরটুলির থেকে বেশী খাজুরাহোর প্রভাব থাকায় পাড়ার নীতিবাগীশ কাকা জ্যাঠারা খুব আপত্তি করেন।শেষমেষ দেবী মূর্তিতে প্রচুর মাল্যদান করে, সন্ধি রচিত হয় নব্য আর প্রাচীনপন্থীদের।
সরস্বতী দেবকুলে গণিকা এই তথ্য তখন জানা থাকলে আরেকটু প্রগতিশীল হয়ে সেই কাকা-জ্যাঠাদের চমকে দেওয়া যেত! :lotpot:
@বিপ্লব পাল, কিন্তু দাদা ইউরোপে আমেরিকাতে নিও প্যাগান রা অথবা, প্রাচীন কালের প্যাগান রা ত দেবীদের জননী বলত না।ব্যাবিলনিয় অথবা সুমেরিয় প্যাগান রাও না।কিন্তু হিন্দু রা এটা কেন করছে?প্লিজ তথ্যটা আমাকে একটু বাখ্যা করবেন কি?আমি অনেক ভেবেও এটা বুঝতে পারিনি।উভয়ই ত প্যাগান,কিন্তু এই পার্থক্য কেন?
একটা ব্যাপার বুঝি না। মা কালির জিহবা বেরিয়ে এসেছে কি কারণে?
আমার আঁক হিদ্দু বন্ধু বলেছিল–মা কালি মানুষ (মানে পুরুষ) কাটতে কাটতে কেমন করে দেখল সে তার স্বামী মহাদেবের বুকে পা দিয়ে ফেলেছে–তাই সে অনুতাপে জিহবা বের করে ফেলে–অনেকটা ইসলামী তওবা করার মত।
এই তত্ত্ব কি সত্যি?
আর একটা ব্যাপার—মা কালির গলায় যে সব মুণ্ডু ঝুলছে–সবই কিন্তু পুরুষদের–কোন নারীর মুণ্ডু নাই। তা’হলে মা কালি কি পুরুষ বিদ্বেশী ছিলেন?
মা কালির এই বিভৎস রূপের পেছনকার কাহিনি কি প্রকার?
@আবুল কাশেম,
কোন ব্যাপারটা বুঝার মত, বলেন?
তবে কথিত আছে উন্মাদিনী কালি সারা পৃথিবীর মানুষ কেটে ফেলতে চেয়েছিলন। কখন কাপড় খুলে গেছে বুঝতেও পারেনি। ওদিকে স্বামী দেবতা মহাদেব সারারাত চিপা গলিতে আদি রস শেষে টলতে টলতে রাস্তায় পড়েছিলেন। স্বামীর গায়ে পাড়া পড়তেই হূঁস হয় – লজ্জা হয়, স্বামীর সামনে ন্যাংটা! একি কারবার! তাই জিভ বেরিয়ে এসেছে। এর নানা ভার্সন আছে।
কালী নামে কেঊ পৃথিবীতে ছিল না। তাই কী গল্প বা কাহিনী তাতে কী যায় আসে? যেমন, মোহাম্মদের সমালোচনা হতে পারে, কারণ তিনি ছিলেন। কালীর মত আল্লাহর কাহিনীর সত্যতা নিয়ে মজা ছাড়া সময় নষ্ট করার কোন মানে নাই।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
পৃথিবীর সব মানুষকে তিনি কেন কেটে ফেলতে চেয়েছিলেন? তার ক্ষোভের কারণ কি?
@তামান্না ঝুমু,
পৃথিবীতে পাপের বোঝা বেড়ে গিয়েছিল।ঈশ্বর যেকারণে সোডোম ও গোমোরাহ্-তে ঝামা পাথর বর্ষন করেছিলেন (সোডোম-এর লোকেরা সোডোমি করিত ও গোমোরাহ্-র লোকেরা গোমড়া হওইয়া থাকিত।ঈশ্বর কহিলেন আলোকহীন অগ্নিতে প্রজ্জ্বলিত হও,ঝামা পাথরে নিমজ্জিত হও, তবে ঠেলা বুঝিবে!), বা মহাপ্লাবন ঘটিয়েছিলেন সেই কারণে।
ব্যাপার হল অগণিত মানুষকে ভয় পাইয়ে বশবর্তী করে রাখতে এইসব গপ্পের জূড়ি মেলা ভার।
তবে হিন্দু দেব-দেবীরা মেঘের আড়াল থেকে লুকিয়ে বিশেষ কিছু করে না। তারা direct action-এ বিশ্বাসী।সে পরশুরামের একুশবার ক্ষত্রিয় নিধন হক বা কালি বা রুদ্রের প্রলয় নাচন।
এখনো কথিত আছে কল্কি(বিষ্ণুর দশম অবতার) আসবে। এলেই কলিযুগ খতম।
জর্জ বুশ সাহেব-কে ভেবেছিলাম কল্কি অবতার।এটাই কলির শেষপদ তা মুক্তমনাদের মতন নাস্তিকদের বাড়বাড়ন্ত দেখে মোটামুটি নিশ্চিত ছিলাম। কিন্তু মহামতি জাকির নায়েক ভুল ভাঙলেন। “অকাট্য” প্রমাণ দিয়ে দেখিয়ে দিলেন নবী মোহাম্মদ-ই হল কল্কি অবতার। ভুল ভেঙে গেল। কিন্তু ঘোর কলিকাল আরো ঘোরোতর কি করে হয়ে গেল বুঝতে পারলাম না!
@অনামী,
কলি যুগের অবসান হলে তো পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবার কথা।হিন্দু ধর্ম তো এটাই তাই বলে,তাই না?তার পর আবার নতুন করে সত্য যুগের এবং পুরনো চক্রের শুরু নুতন করে।
তা এইটা হজরত জাকির নায়েক আলাইহিসালাম ( উনি এখন মুসলিমদের আন অফিসিয়াল্ নবী, জানেন নিশ্চয়) বুঝলেন না কেন কে জানে!!এখন তো তাহলে কেয়ামত হবার কথা ছিল মহাম্মদের মৃত্যুর পর।
@অচেনা,
বলেই তো! কিন্তু জাকির নায়েক তো আর মাথামোটা নয়, তাই এই দিকটা চেপে গেছে।
আর ভন্ড বিড়াল তপ্বসীদের মতন লোকটা সেইটুকুই quote করে, যতটুকু ওর কাজে লাগে।
@অনামী,
হাহাহা ঠিক হলেছেন।কিন্তু আমার তো মনে হয় যে জাকির নায়েক নিজেই কল্কি সাজবার চেষ্টা করছেন। যাহোক,ইমাম মাহদি যখন আসবেন তিনি নাকি নিজেকে লুকিয়ে রাখতে চাইবেন।( যে নিজেকে মাহদি দাবি করবে সে নাকি ভণ্ড মাহদি, মাহদিকে মুসলিম ওলামা রাই নাকি খুজে পাবেন।তাইত মির্যা গোলাম আহমাদ হলেন মুসলিম দের মহা শত্রু)। যে হারে জাকির নায়েক মুহাম্মদের গুনগান করে চলেছে, শেষ কালে মুসলিম রা আবার তার ভেতর ইমাম মাহদিকে আবিষ্কার না করে ফেললেই হয়। আমার তো মনে হয় একদিন করেই ফেলবে, কারন দিন দিন অর পুজারির সংখ্যা মুসলিমদের মধ্যে আশংকাজনক ভাবে বেড়ে চলেছে। 😉
কালীর পিতার নাম কি ?
@আবুল কাশেম, ও আপনি শুধু ইসলাম নিয়ে গবেষণা করেন ? তো এবার ভারত বর্ষের এই প্রাচীনতম ধর্ম টি নিয়ে গবেষণা শুরু করে দিন। এটা তো আরও ইন্টারেস্টিং মনে হচ্ছে।
@মোহিত,
আমি হিন্দু ধর্ম নিয়ে মাথা ঘামাবার কোন প্রয়োজন দেখিনা। হিন্দু ধর্ম আজকের বিশ্বে কোন সমস্যাই নয়। কোন হিন্দু জিহাদি সাধারণ লোকজন হত্যা করতে পেটে বোমা বেঁধে ঝাঁপিয়ে পড়ছে না।
তাছাড়াও হিন্দু ধর্মের সমালোচনা মুর্তাদ হিন্দুদের করলে তার প্রভাব হবে অনেক ফলপ্রসু–যেমন নৃপেন্দ্র সরকার করেছেন।
একজন মুসলিম মুর্তাদ ইসলামের সমালোচনা করলে তার প্রভাব অনেক সুদুরপ্রসারী। চিন্তা করুন এক হিন্দু ইসলামের সমালোচনা করছে–কোন মুসলিম কি সেই সমালোচনা পড়বে না গ্রাহ্য করবে?
আশা করি এখন বুখবেন কি কারণে আমরা হিন্দু বা অন্য ধর্মের সমালোচনা থেকে বিরত থাকছি।
@আবুল কাশেম, ভাইয়া (F) (Y)
এখানেই তো যত গন্ডগোল লুকিয়ে আছে।এরাই কিন্তু একটি রাষ্ট্রের তাবত ক্ষমতার পিছনের সবচাইতে বড় শক্তির উৎস। এদের দেখাদেখি বা পীড়াপীড়িতে সাধারন মানুষ ধর্মের নীতি-নৈতিকতার নিয়ম-কানুন পালন করে থাকে।
প্রশ্ন হলো এতো শিক্ষিত হয়েও কেন এরা আদিম বা মধ্যযুগীয় ধর্মের বানী বিশ্বাস করে বেড়ায় ?? :-Y
অন্তস্বার শুন্য যতসব আচার অনুষ্ঠান
ঈশ্বর বা ধর্ম সত্য হোক বা না হোক, আপনার এই কথাটা অবশ্যই সত্য!
তবে হিন্দু দেব দেবীর ভাস্কর্য গুল হারিয়ে গেলে কষ্ট পাব। এদের গঠনশৈলী ধ্রুপদী। ধর্ম হিসেবে না হলেও শিল্প হিসেবে খুব উঁচু দরের!
আর প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য ধর্ম শাস্ত্র (কামাসুত্রা) এবং সুডৌল নিতম্ব, বিম্বের নেয় স্তন বিশেষিত দেবী প্রয়োজনীয়ভাবেই পূজ্য! :guru:
@অরণ্য,
চমতকার।