বাস্তবতার আলোকে ভাববাদের উদ্ভাব ও প্রচার প্রসারের ধারা লক্ষ্য করলে আমরা দেখতে পাই দুটি অঞ্চল। একটি হচ্ছে ভারত বর্ষ ও ২য়টি আরব্য মরুভুমি অঞ্চল। লক্ষ্যণীয় ভারত বর্ষে সৃষ্ট ভাববাদ ক্রমান্নয়ে সংশোধিত হয়ে মুল ধারাকে প্রাধান্য দিয়ে চালানো হয়েছে। সনাতনধর্মে ১০ অবতার রুপে ঈশ্বরের আবির্ভাবকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। যেমন শ্রী কৃষ্ণ,শ্রী রাম চন্দ্র ইত্যাদি। শুধু মাত্র ভারত বর্ষে ঈশ্বরের অবতারের প্রয়োজন হলো? পৃথিবীর অন্যান্য অঞ্চলে অবতারের প্রয়োজন কি ছিল না? সনাতন ভাববাদে ঈশ্বরের ক্ষমতার অংশিদার রুপে একাধিক দেবদেবীকে মেনে নেওয়া হয়েছে। সনাতন পন্থিদের বার মাসে তের পার্বন দেখা যায়।বারো মাসে তের পার্বনের আয়োজনে বিশেষ বিশেষ দেবতাদের প্রাধান্য দিয়ে সকল দেবতাদের পূজা অর্চনা করা হয় ঈশ্বরের প্রতিনিধি রুপে। সনাতন পন্থিরা শ্রী রাম চন্দ্রকে ভগবান রুপে দেখান কিন্তু রামায়ন পাঠে দেখা যায় শ্রী রাম চন্দ্র তার প্রিয়তমা স্ত্রী সীতা দেবীকে লংকান রাজ রাবনের কু-দৃষ্টি হতে রক্ষায় ব্যর্থ হন। শ্রী কৃষ্ণের নারী প্রীতি সকলের জানা। ভারত বর্ষে সনাতন পন্থিদের মধ্য হতে গৌতমবুদ্ধ নামে এক রাজপুত্র তার ব্যক্তিগত মতামতের ভিত্তিতে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করেন। তার জন্ম ভারতের কপিলা বস্ত নামক স্থানে। তিনি নিজেকে অবতার হিসাবে অনুসারীগনকে আশ্বস্থ করেন নাই। বুদ্ধদেবের মতবাদের মুল ভিত্তি হচ্ছে অহিংসা পরম ধর্ম আর জীব হত্যা মহাপাপ। এর ভিত্তিতে প্রচারিত মতবাদের উপর নির্ভর করে তার অনুসারীগন এখন পৃথিবীতে ৪র্থ স্থানে অধিষ্টিত। তাঁহাদের মতবাদে ঈশ্বরের স্থান নাই। বুদ্ধরা নিরীশ্বরবাদী। যাকে অন্যান্য ভাব বাদের অনুসারীরা নাস্তিকতা হিসাবে আখ্যায়িত করে। বুদ্ধদেব যদিও তাঁর মতবাদ ভারত বর্ষে প্রচার করেন কিন্তু তাঁর মতবাদ পার্শ্ববর্তী দেশ চীনে ব্যাপক হারে জনগন গ্রহণ করেন এবং প্রাধান্য পায়। ইহা ছাড়াও উত্তর ও দক্ষিন কোরিয়া জাপান, থাইল্যান্ড মিয়ানমার ও শ্রীলংকায় বৌদ্ধদের একক সংখ্যা গরিষ্ঠতা লক্ষনীয়। ইহা ছাড়াও ভারত বাংলাদেশ নেপাল, ভুটান, ইত্যাদি দেশে বুদ্ধদেবের অনুসারীর সংখ্যা কম নয়।
নিরীশ্বরবাদী বৌদ্ধরা সমাজ জীবনে খুবই সুশৃঙ্খল। মানবতা তাদের মুল বিষয়। বুদ্ধদেব তাঁর মতবাদ প্রচারে কোন প্রকার প্রতিবন্ধকতার সম্মুখিন হননি। তাঁর মতবাদ প্রচারে কোন প্রকার রক্তপাত ঘটেনি। অহিংসা পরম ধর্ম বাক্যটি মানবতাবাদী। এই অমোঘ বানির উপর তাদের জীবন বিধান প্রতিষ্টিত।
শাস্তির ভয় আর পুরুস্কারের আশ্বাস ছাড়াই বৌদ্ধগন বুদ্ধদেবের উপদেশ বানীর উপর ভিত্তি করে সুশৃখংল ভাবে সমাজ জীবন তথা রাষ্ট্রীয় কর্তব্য প্রতি পালনে একান্ত নিষ্ঠাবান। বুদ্ধদেব তার প্রচারতি মতবাদে ভয় দেখিয়ে ভক্তি আদায় করেন নি, বা মহা-পুরস্কারের লোভে ফেলে কাউকে দলে ভিড়াননি। তিনি প্রেরিত অবতার হিসাবে নিজেকে দাবী করেন নি। তার উপদেশ বানী গুলিকে তার নিজস্ব হিসাবে দাবী করেন। পৃথিবীতে প্রচলিত ভাববাদ গুলি প্রচারে কমবেশী অনেক রক্ত ঝরে কিন্তু বুদ্ধদেবকে কোন রক্ত ঝরাতে হয়নি। তাঁর প্রচারিত মতবাদকে তিনি অক্ষরে অক্ষরে প্রতি পালন করে গেছেন। অহিংসা যার মুল মন্ত্র সেখানে হিংসার স্থান কোথায়?
এই পৃথিবীতে ভাব বাদের আজব প্রবক্তরা মানুষকে প্রতারনার ফাঁদে ফেলে নিজদের স্বার্থ হাসিল করেছেন, বুদ্ধদেব সে ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। বৌদ্ধরা জনসংখ্যার দিক থেকে পৃথিবীতে দ্বিতীয় বৃহত্তম। আর এই বৃহৎ জনগোষ্ঠী কল্পিত ঈশ্বরের বিশ্বাসী নয়। বুদ্ধদেব তার অনুসারীগনকে এই শিক্ষাই দিয়ে গেছেন। ঈশ্বরবাদী ভাববাদের দুর্বত্তায়ন লক্ষ্যনীয়। এখানে ভাববাদের প্রচার প্রসারে অন্যায় অবিচার হত্যা ধর্ষণ লুটতরাজ মানবতা বিরোধী কার্যকলাপের আশ্রয় গ্রহন করা হয়েছে। মানবতা বিরোধী কার্যকলাপ ইসলাম প্রচারে অতি মাত্রায় দেখা যায়। ইসলামে মানুষের স্বাধীন মতামত উত্থাপনের সুযোগ দেওয়া হয়নি। জোর করে ইসলামী মতবাদ চেপে দেওয়া হয়েছে তরবারীর জোরে। জীবনটা মানুষের কাছে সবচেয়ে প্রিয়, তাই নিজের জীবন রক্ষার্থে বাধ্য হয়ে অনেকে জীবন, ধন সম্পদ, স্ত্রী কন্যাদের সম্ব্রম বাঁচানোর জন্য ইসলাম গ্রহন করেন। ইসলামে দুর্বিত্তায়ন এবং তরবারির ব্যবহার না হলে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হওয়া সম্ভব ছিল না। ইসলাম প্রচারের ইতিহাস তা প্রমান করে।
ইসলামে মানুষকে উজ্জ্বীবিত করা হয়েছে ‘ইহা মুক্তির এক মাত্র পথ’দেখিয়ে । তবে দেখুনঃ
আল কোরানের সূরা আল ইমরান আয়াত (৮৫) যদি কেউ ইসলাম ছাড়া ( নিজের জন্য) অন্য কোন জীবন বিধান অনুসন্ধান করে তবে তার কাছ থেকে সে (উদ্ভাবিত) কখন গ্রহন করা হবে না , পর কালে সে চরম ব্যর্থ হবে।
আল্লাহ ইসলামকে জীবন বিধান মনোনীত করেছে। আর তাতে পরকালের ফাঁদ পাতানো হয়েছে। উক্ত ফাঁদ হতে মুক্তি পেতে ইসলামকে এক মাত্র পথ হিসবে দেখানো হয়েছে। ইসলাম ছাড়া অন্য কোন জীবন বিধান আল্লাহ মেনে নেবেন না । মোট কথা ইসলাম আল্লাহর মনোনিত জীবন বিধান । তাই ইসলামের অনুসারিগন জোর গলায় প্রচার করেন যে,অন্যান্য ধর্মালম্বী গন পরকালে নরক বাসি হবে। আর মুসলমান গন অনাদি অনন্ত কাল স্বর্গে বসবাস করবে। অন্যান্য মতাবলম্বীকে চিহ্নিত করা হয়েছে দোজখের অধিবাসী হিসাবে। তাই পরোক্ষ ভাবে অনুমেয় যে,ইহা বিপক্ষকে দলে ভিড়ানোর একটি অপকৌশল।
ইসলামি জীবন বিধানের বিধানের অনুসারিগন বলেন যে, আল্লাহ হও বললে সবকিছু মূহূর্তের মধ্যে তা হয়ে যায়। তাহলে তার মনোনিত প্রার্থী পরাজিত হয় কেমন করে?
আল্লাহর সাধের সৃষ্টি যদি এতকিছু এবং তার মনোনীত ধর্ম যদি ইসলাম হয়ে থাকে তবে পৃথিবীতে ইসলাম পন্থিদের সংখ্যা কত ভাগ? কতভাগ ইসলামের অনুসারী। পৃথিবীর সিংহ ভাগ মানুষ আল্লাহ মনোনীত ইসলামের বাহিরে। আল্লাহর মিশন ব্যর্থ কেন? মুসলমাদের দাবীর প্রেক্ষিতে বলতে হয় কার বাড়ী কার ঘর কার চলে কারবার। পৃথিবীর বৃহত্তম জনগোষ্ঠি আল কোরআন মানে না আল্লাহ তায়লা যাহাকে মনোনায়ন দান করেছেন। সেই মনোনীত বিষয় সংখ্যা গরিষ্ঠ না হয়ে বিপুল ব্যবধানে পিছয়ে থাকার কারন কি? আবার আল কোরানের ভাষ্যমতে বুঝা যায় মুহাম্মদ আল্লাহর প্রেরিত সর্বশেষ নবী। ইসলাম আল্লাহর মনোনীত ধর্ম আর ইসলামের মনুসারীগন হলো মুসলমান। মুসলমান হবে বেহেস্তের বাসিন্দা।
ইতিহাস প্রমান করে ইসলাম প্রচারে অনেক বেশী শক্তি প্রয়োগ ও প্রতারনার আশ্রয় নেয়া হয়েছে। হযরত মোহাম্মদ তার নিজস্ব মতে চলতে গিয়ে তার স্বাপক্ষে যে কথা গুলি প্রচার করেছেন তাহা আল্লাহর বানী রুপে চালিয়ে গেছেন। যাহাতে অনুসারীগন কোন রুপ বিরুপ মনোভাব পোষন করতে না পারেন। আর করবেই বা কি করে। আল কোরানের বিভিন্ন আয়াতে যে ভাবে ভয় দেখানো হয়েছে তাহাতে মুখ খোলার পথ বন্ধ। যারা সাজানো বানীর বিরুদ্ধাচারন করেছেন তাদেরকে নাস্তিক, নাফরমান অথবা কাফের আখ্যায়িত করে অনন্ত কাল নরকের আগুন জ্বলতে হবে মর্মে হুশিয়ার করেছেন। ঐ সকল হুমকি ধামকি যে তার নিজস্ব কম্পিত তাহা তৎকালীন মানুষ বুঝতে পারে নি। অথবা বুঝলেও তার বিরুদ্ধাচারন করা তাদের পক্ষে সম্ভব হয়নি । তাঁরা হযরত মুহাম্মদের গুন্ডা বাহীনির তরবারীর কাছে একেবারে অসহায় ছিল। অসহায় মানুষ হেরে যায় প্রানের মায়ার কাছে, পুত্র পরিজনের কাছে, অর্জিত ধন সম্পদের কাছে।
কালের শুরু ও শেষ নাই এ অবস্থায় ঈশ্বরের ধারনা একেবারে অবাস্তব। কালের শুরু না থাকলে ঈশ্বর কখন এসেছেন? আর ঈশ্বর যদি সত্যি থেকে থাকে এবং তিনি যদি নিদের্শনা প্রেরন করে থাকেন তবে প্রেরিত তথ্যগুলি অবাস্তব কেন?
প্রথমত দেখুন, কাফেররা কি ভেবে দেখেনা যে, আকাশ মন্ডলী ও পৃথীবির মুখ বন্ধ ছিল। অতঃপর আমি উভয় কে খুলে দিলাম। এবং প্রানবন্ত সব কিছু আমি পানি থেকে সৃষ্টি করলাম। এর পর কি তারা বিশ্বাস স্থাপন করবে না । ২১:৩০।
আমি পৃথিবীতে ভারী বোঝা রেখে দিয়েছি। যাতে তাদের কে নিয়ে পৃথিবী ঝুকে না পরে । এবং তাতে প্রসস্থ পথ রেখেছি,যাতে তারা পথ প্রাপ্ত হয়।২১:৩১
আমি আকাশ কে সুরক্ষিত ছাদ করেছি। অথচ তারা আমার নির্দেশাবলি থেকে মুখ ফিরিয়ে রাখে। ২১:৩২
উপরোক্ত আয়াতে দেখা যাচ্ছে আল্লাহ আশমানকে পৃথিবীর ছাদ বানিয়েছেন। বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে আসমান বলে কোন বস্তু নাই। আমরা যাহা নীল ক্ষেত দেখতে পাই তাহা মহাবিশ্ব যাহা গ্রহ-নক্ষত্ররাজিতে ভরপুর। এর কোন সীমা পরিসীমা নাই। মহাবিশ্বের তুলনায় পৃথিবী একটি অতি ক্ষদ্র বিন্দু মাত্র। আর এই পৃথিবী হতে আলাদা করে আসমানকে ছাদ রুপে বানিয়েছেন ইহা অবাস্তব নয় কি? কারন আমরা মহাশুন্য যে নক্ষত্ররাজী দেখি তার সংখ্যা কোটি কোটি এবং নক্ষত্র গুলি পৃথিবী হতে লক্ষলক্ষ গুণবড়।
এই আয়াতে অনুমেয় যে, আয়াত রচনাকারী পৃথিবীকে সর্ববৃহৎ দেখেছেন আর অন্যান্য গ্রহ নক্ষত্র কে নেহায়েত ক্ষুদ্রাকৃতির বস্তু রুপে গন্য করে ঐ কাল্পনিক কথা গুলি বলেছেন। এই আয়াতে দেখা যায় যে, আল্লাহ তায়ালা বলেছেন আমি (প্রানবান) সব কিছুই পানি থেকে সৃষ্টি করেছি। প্রানবান সব কিছুই যদি পানি হতে সৃষ্টি হয়ে থাকে তবে আদম কে যে, মাটি হতে সৃষ্টি করা হয়েছে বলা হয়ে থাকে বক্তব্য দুটি বিভ্রান্তিকর নয় কি? ২১:৩০।
উক্ত আয়াতটি মুল বক্তব্যের মধ্যে আরো ভিন্ন প্রশ্ন করা যেতে পারে যে, মহাবিশ্বের পরিধি অসীম আর পৃথিবীর পরিধি সসীম। অসীমের মধ্যে পৃথিবীর অবস্থান বিন্দু সমানও কি ধরা যায় ? নক্ষত্রাদীর সংখ্যা কোটিকোটি এবং নক্ষত্রগুলি পৃথিবী হতে লক্ষলক্ষ গুনে বড়। পৃথিবী থেকে সৃষ্ট কল্পিত অসীম মহা-আকাশের চিন্তা করা অবাস্তব বক্তব্যের শামিল। যারা এইরুপ বক্তব্যকে সমর্থন করে তাদের কে কি বলা যাবে?।
উক্ত সুরা ৩১ নং আয়াতে আর একটি হাস্যকর বিষয় এখানে আলোচনা করা যায়। আয়াতে “আমি জমিনের উপর সমুদয় পাহাড় রেখে দিয়েছি যেন তা ওদের নিয়ে (এদিক সেদিক নড়াচড়া) করতে না পারে। এছাড়াও আমি ওতে প্রশস্ত রাস্তা তৈরী করে দিয়েছি, যাতে করে তারা (তা দিয়ে নিজ নিজ গন্তব্য স্থলে) পৌছাতে পারে।“
উক্ত আয়াতের রচনাকারীকে মনে হয় তিনি আরব্য উপন্যাস রচনাকারী হতে শিক্ষা গ্রহন করেছেন। তা না হলে কিভাবে পৃথিবীর এত জ্ঞানী মাণুষকে মন্ত্র মুগ্ধ করে বোকা বানিয়েছেন।
আচ্ছা পৃথিবীটা কি একটা হাল্কা বস্তু যে, একটু বাতাসে নড়চড় করবে আর তাকে সুরক্ষার জন্য পাহাড় দিয়ে পেরেক এটে দিতে হবে? পৃথিবীর ভর সর্ম্পকে যার ধারনা নাই, তার পক্ষেই এই রুপ অবাস্তব বক্তব্য সাজে। আয়াতটি আরব্য উপন্যাসের কল্প কাহিনীকে ও হার মানায়। উক্ত আয়াত দুটির রচনাকারী ভাওতা বাজীর মধ্যে দিয়ে মানুষকে প্রতারনা করেছেন। পৃথিবীর উপরীভাগের অংশ হতে ছাদ হিসাবে আসমান তৈরী করা শ্রেফ বোকাকে ধোকা দেওয়া। মহাশুন্যের পরিধি সম্পর্কে সামান্য জ্ঞান থাকলে তিনি এইরুপ আজগুবি বর্ননা করতেন না। মহাশুন্যর মাঝে যে, গ্রহ নক্ষত্র বিরাজমান তার আয়তন যদি জানতো তবে এই ক্ষুদ্র পৃথিবীর উপরী ভাগের অংশ নিয়ে মহাশুন্যে ছাদ হিসাবে আসমান তৈরীর অবাস্তব কথা বলতে লজ্জা পেতেন। এইরুপ ভাওতাবাজী শুধুমাত্র ক্ষমতা লোভীর পক্ষে সম্ভব। ক্ষমতার জন্য তার কর্মকান্ড অকল্পনীয়।
তৎকালিন সময়ে আরবের বিত্তবান ও সমাজ সচেতন মানুষেরা সংগঠিত হতে পরেনি, তার বিরুদ্ধে। তিনি লুঠেরা বাহীনি হিসাবে গরীব মানুষকে সংগঠিত করে ধনীদের তথা বুদ্ধিজীবিদের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়েছিলেন। যুব সমাজকে তিনি উজ্জিবীত করেন গনিমতের মাল দিয়ে আর বিধর্মী স্ত্রী কন্যাদের সম্ভ্রম ভোগের সুবিধা দিয়ে। নারী আর অর্থের লোভে যুব সমাজ ও গরীব মানুষেরা অতি মাত্রায় উজ্জীবিত হয়েছিল যার ফলে গোটা আরব অঞ্চলের বিত্তমান মানুষেরা অসহায় হয়ে পড়ে। তাহারা নিজের জীবন আর পরিবার পরিজনের ভবিষ্যৎ পরিনতির কথা ভেবে অনেক ক্ষেত্রে বাধ্য হয়ে ধমান্তরিত হয়।
ইসলামে নারী সমাজ একান্ত অসহায়। তাহাদের চলন বলনের স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছে তদুপরী নারীদেরকে পুরুষের ভোগের সামগ্রী হিসাবেও ব্যবহার করা হয়। একজন পুরুষ এক সাথে ৪ জন নারীকে স্ত্রী হিসাবে রাখতে পারে। যদিও মুহম্মদ নিজে এগার-জন স্ত্রী সহ কিছু দাসী-বাদী ভোগের জন্য রেখেছিলে। আরও হাতে ছিল যুদ্ধক্ষেত্রে পাওয়া নিহত অথবা পরাজিত যোদ্ধাদের স্ত্রী কন্যাগন যাহা গনিমতে মাল হিসাবে ইসলামের স্বীকৃত।
আল কোরানে নারী ভোগের আর একটি বিশেষ পদ্ধতি দেখা যায়, পদ্ধতি হলো “মুথা বিবাহ” এই পদ্ধতিতে একজন পুরুষ তার পছন্দের নারীকে ভোগের নিমিত্তে সম্ভ্রমের মুল্য দিয়ে যৌনচারে রাজি করতে পারে।দেখুন মুহম্মদ কি বলে-
আব্দুল্লাহ মাসুদ থেকে বর্নিত,
“আমরা একবার আল্লাহর নবীর সাথে অভিযানে বের হয়েছিলাম ও আমাদের সাথে কোন নারী ছিল না। তখন আমরা বললাম- আমাদের কি খোজা (নপুংষক) হয়ে যাওয়া উচিৎ নয় ? তখন তিনি আমাদের তা করতে নিষেধ করলেন ও স্বল্প সময়ের জন্য কোন মেয়েকে কিছু উপহারের বিনিময়ের মাধ্যমে বিযে করার জন্য অনুমতি দিলেন”। সহী মুসলিম, বই-৮, হাদিস-৩২৪৩

অথাৎ পুরুষটিকে অল্প সময়ের জন্য অর্থের বিনিময়ে যৌন মিলনের সুযোগ দিতে হতে হয়। এই পদ্ধতিটি গনিকা বৃত্তির সামিল? গনিকারাও তো অর্থের বিনিময়ের যৌনচারে রাজী থাকে। ইসলামে দাস দাসীদের সহিত যৌন মিলনে অনুমতি আছে মুথা বিবাহ আর দাসীদের সহিত যৌন মিলন কি সমাজ বিরোধী অপরাধ নয় ?
আমি এখানে নারী দ্বারা সংগঠিত ইসলামের একটি বিশেষ পর্ব নিয়ে সামান্য একটু আলোচনা করবো। আর এই পর্বটি হচ্ছে মুহরম যাহা মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষেরা দিনটিকে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করেন।
ঘটনার বিবরন এই যে, ইসলামের ৪র্থ খলিফা হযরত আলীর দুই পুত্র হযরত ঈমাম হাসান ও ইমাম হুসেন। হযরত মোহাম্মদের দৌহিত্র। তারা একাধিক বিবাহে আবদ্ধ হন। আর কালক্রমে নারী কেলেংকারীতেও জড়িয়ে পরেন। নারী কেলেংকারী শুরু হয় ইসলামী সম্রাজ্যের এক প্রদেশের শাসনকর্তা মাবিয়ার পুত্র ইয়াজিদের সাথে তাদের যুদ্ধ বাধে। কারবালা প্রান্তরে সেই যুদ্ধে নবী দৌহিত্রের স্ব-সৈন্যে পরাজয় ঘটে ও নিহিত হন। নারী কেলেংকারী দিয়ে শুরু হয় যুদ্ধ। প্রান যায় অনেক মানুষের। হাত ছাড়া হয় খেলাফত আর এই দিনটি হয় মুসলিম সম্প্রদায়ের কাছে শোকাবহ ৩ পবিত্র পূর্ন। নারীকে ভোগ্যপন্য হিসাবে ব্যবহারের পরিনতি এই মহরম। এই গেলো ইসলামের নারীর সামাজিক অবস্থান।
সনাতনে নারীদের অবস্থান আরো খারাপ। কোন বিবাহিত নারী বিধবা হলে তাদের ২য় স্বামী গ্রহণে অনুমতি ছিল না তবে বিদ্যাসাগরের মহৎ প্রচেষ্টায় বিধবা বিবাহ চালু হলেও ইহা এখনও তেমন জনপ্রিয়তা অর্জন পায়নি। এর অর্থ এই যে সনাতনপন্থীরা এখনও বিধবা বিবাহ মেনে নিতে পারেনি।
ইসলাম এবং সনাতনে নারীদেরকে অনেক ক্ষেত্রে সম্মান এবং অবমুল্যায়ন করা হয়েছে এবং যেমন সনাতনে বড় ভাইয়ের স্ত্রীকে মাতৃতুল্য এবং ছোট ভাইয়ের স্ত্রীকে পত্রবধু তুল্য দেখানো হয়েছে। আবার দেখা যায় যে, বড় ভাই ও ছোট ভাইয়ের মৃত্যু হলে মৃত্যে পত্নীর সাথে যৌন ক্রিড়া সম্পাদনের রীতি ও অনুমোদিত(মনু সংহিতা) কিন্তু বিধবা বিবাহ অনুমোদিত নয়।এ কেমন নারী ভোগের ব্যবস্থা। মাতৃতুল্য ভাতৃবধু, পুত্রবধু তুল্য, ছোট ভাইয়ের বিধবা স্ত্রীর সাথে যৌনচারের একি রীতি। এইরুপ রীতি ইসলামেও ব্যাতিক্রম নয়। যেমনঃ- হযরত মোহাম্মদ তার পালিত পুত্রের স্ত্রীকেও বিবাহ করেন কথিত আল্লাহ নির্দেশরুপে। মোহাম্মদের যে চরিত্র,এ যেন মহা-ভারতের মত মহা আরবের আর এক কৃষ্ণ চরিত ! ভাববাদী ঈশ্বর কি খেলা দেখাইলি! আর কত কাল ? (চলবে)
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ বাংলা কীর্তিমান দার্শনিক আরজ আলী মাতুব্বর