লেখার শুরুতেই ডিসক্লেইমার দিয়ে দরকার, এটি হুমায়ূন আহমেদের সাহিত্য সমালোচনা নয় বরং তার সাক্ষাৎকার, আত্মজীবনী ও তার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা বলে দাবি করা বিভিন্ন লেখাতে কিছু চোখে পড়ার মত তথ্যগত ভুল এবং অপবিজ্ঞান তুলে ধরছি শুধুমাত্র।
এক।
ম্যাজিক নিয়ে উনি তার “ম্যাজিক মুনশী” বইতে লিখেছেন,
অনেকদিন পর মুনশী বিষয়ে আমি নিজেও উৎসাহী হলাম। বিশেষ কিছু ক্ষমতা তার অবশ্যই আছে। এই ক্ষমতার উৎস কি?
তিনি যা দেখাচ্ছেন তা হল আসল ম্যাজিক। এই ম্যাজিক অন্যভূবনের বাসিন্দাদের সাহায্যে করা হয়। পৃথিবীর কোন ম্যাজিসিয়ানই তা স্বীকার করবেন না। বিজ্ঞান তো কখনোই না। আমরা কিন্তু শৈশব থেকেই ব্ল্যাক ম্যাজিকের ভিতর বাস করি। শিশুর প্রথম যখন দাঁত পরে তখন এ দাঁত ফেলা হয় ইঁদুরের গর্তে, যেন তার ইঁদুরের মত দাঁত হয়। এখান থেকেই ম্যাজিকের শুরু। নজর কাটানোর জন্য শিশুর মাথায় কালো টিপ দেওয়া হয়। এটাও ম্যাজিক।
“বিশেষ কিছু ক্ষমতা” আর “আসল ম্যাজিক” এই শব্দগুলো পরিষ্কারভাবেই বিভ্রান্তিমূলক। উনি উল্লেখ করেছেন বিজ্ঞান স্বীকার করবে না, হ্যাঁ, বিজ্ঞান স্বীকার করবে না। কারণ কি? কারণ এইসব অলৌকিক সব ঘটনা শুধু মানুষের মুখেই শোনা যায় অথবা অসচেতন চোখেই ধরা পড়ে। যখনই পর্যবেক্ষণের নিচে রেখে দেখাতে বলা হয় তখনই জারিজুরি বের হয়ে আসে। শুধু ছোট্ট একটা চিন্তা থেকেই এইসব ভাজুং ভুজুং এর সত্যতা বুঝতে পারা যায়, মুনশী যদি অলৌকিক ক্ষমতাধর হয়েই থাকে তাহলে নিশ্চয়ই উনিই ওয়ান অ্যান্ড অনলী নন। সেক্ষেত্রে দুই-একজনকেও কি পাওয়া যেত না যারা বিভিন্ন পরীক্ষাতে প্রমাণ করে দিতে পারতেন অলৌকিক ক্ষমতা বলে সত্যি কিছু আছে? কিন্তু না কোন এক অদ্ভুত কারণে এই অলৌকিক ক্ষমতাধর লোকেরা শুধু বিভিন্ন গালগল্পের নায়ক হতেই পছন্দ করেন, সকল বুদ্ধু যুক্তিবাদীদের মুণ্ডু ঘুরিয়ে দিতে তাদের মোটেও আগ্রহ নেই। আগ্রহ পাবার জন্য লক্ষ লক্ষ টাকা পুরস্কারেরও ব্যবস্থা আছে যদিও।[১] [২]
যারা বইখানি পড়েননি বা পড়লেও খেয়াল করেননি ঠিকমত তারা হয়তো ভাববেন, যেমনটা আমিই প্রথমে ভাবছিলাম যে উনি সচেতন মস্তিষ্কে ইঁদুরের গর্তে দাঁত ফেলাকে কুসংস্কার না বলে ম্যাজিক বা ব্ল্যাক ম্যাজিক বলতে পারেন? এই ভেবে আমি ধরেই নিয়েছিলাম বইটির উদ্দেশ্য আসলে মহৎ, বিভিন্ন পরিচিত কুসংস্কার যেমন ইঁদুরের গর্তে দাঁত ফেলা, নজর কাটানোর জন্য টিপ দেয়া ইত্যাদির সাথে উনি ব্ল্যাক ম্যাজিকের তুলনা করে আসলে অতিচাতুরতার সাথে ঐসব তথাকথিত অলৌকিক ব্যাপার স্যাপারকে কটাক্ষ করেছেন। কিন্তু তার বইয়ের ভূমিকাতে পরিষ্কার লিখা আছে,
এই লেখায় আমি কাউকে বিভ্রান্ত করতে চাচ্ছি না। আমি নিজে বিভ্রান্ত মানুষ কোনোকালেই ছিলাম না, কাজেই নিজের বিভ্রান্তি ছড়িয়ে দেয়ার প্রশ্ন আসে না। তবে আমি সচেতনভাবেই জগতের রহস্যময়তার প্রতি ইঙ্গিত করেছি। এই অধিকার আমার আছে।
হায়রে জগতের রহস্যময়তা! অবশ্যই উনার অধিকার আছে এবং অবশ্যই অমারও অধিকার আছে একে সম্পূর্ণই কুসংস্কারে ভরা একটা লেখা বলে উল্লেখ করার। তবে আমি এখনো যেই অংশটুকুই বুঝিনি তাহলো, বিজ্ঞানের ঊর্ধ্বে, ম্যাজিশিয়ানরা যা মানেন না সেই সব রহস্যময়তা বর্ণনা করে লেখা কীভাবে পাঠকদের বিভ্রান্ত করছে না?
মুনশী আর অন্যজগতের বাসিন্দাদের সাহায্যে সত্যিকারের ম্যাজিক দেখানোর ব্যাপারে কারো বিভ্রান্ত না হওয়া একটাই রাস্তা খোলা আছে, উনার কথা সোজা সাপ্টা বিশ্বাস করে নেয়া কেননা তাছাড়া উনার বক্তব্য যুক্তিতে টিকবে না, বিজ্ঞান যে স্বীকার করবে না উনি নিজেই লিখে দিয়েছেন। তবে এখনো বিভ্রান্ত না হয়ে থাকলে আরেকটু রসদ যোগান দেয়া যাক।
আমার ছোটভাই জাফর ইকবাল (লেখক, বিজ্ঞানী এবং আরও অনেক কিছু)। সে থাকে ফজলুল হক হলে। পড়ে Physics. প্রায়ই শুনি সে বন্ধুদের সাথে চক্রে বসছে। ভূত-প্রেত নামাচ্ছে। এক রাতে ঘটনা তাদের হাতছাড়া হয়ে গেল। (কি হয়েছিল পরিষ্কার না) তারা বাধ্য হল হলের মাওলানা সাহেবকে ডেকে আনতে। মাওলানা তাদের ঘরে পা দিয়েই আঁতকে উঠে বললেন, কি সর্বনাশ! আপনারা তো জ্বিন নামিয়ে ফেলেছেন! কীভাবে নামালেন?
…………………………
এখন আমি বিশেষ এক চক্রের পূর্ণ বিবরণ দিচ্ছি, তবে কেউ যেন এই ঝামেলায় না জড়ান তার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করছি। ভূত-প্রেত নামুক বা না-নামুক, এই পদ্ধতি এক ধরনের হিপনোটিক অবস্থার সৃষ্টি করবে। দৃষ্টি-ভ্রান্তি (Hallocination) ঘটার সমূহ সম্ভাবনা
হুমায়ূন আহমেদের এই লাইনগুলো পড়ে খুঁজে বের করে জাফর ইকবালের বইখানি আবার পড়তে বসলাম, দেখুন উনি কি লিখেছেন,
ইমাম সাহেব আসবেন আমি আশা করি নি কিন্তু সেই রাতদুপুরে তিনি হাজির হলেন। পুরো ব্যাপার দেখে তিনি অসম্ভব ঘাবড়ে গেলেন, জিজ্ঞেস করলেন, “কি হয়েছে?”
“জীনে ধরেছে”
অর্থাৎ ইমামকে জাফর ইকবাল জানাল যে জীনে ধরেছে, আর হুমায়ূন আহমেদ লিখেছেন “মাওলানা তাদের ঘরে পা দিয়েই আঁতকে উঠে বললেন, কি সর্বনাশ! আপনারা তো জ্বিন নামিয়ে ফেলেছেন!” :))
আর জাফর ইকবাল এর ব্যাখ্যাটাও মোটামুটি ভালই দিয়েছেন, উনি লিখেছেন,
যতদিন একটা ছোট শিশির ভেতরে ভূত বা জীনকে ভরে ফেলে হাই ভোল্টেজ দিয়ে ডিসচার্জ করিয়ে তার স্পেকট্রাম দেখে এটা কি কি মৌল দিয়ে তৈরি বের করার সুযোগ না পাচ্ছি আমি ধরে নিচ্ছি এটা এক ধরণের স্বেচ্ছা-সম্মোহন।
কিন্তু হুমায়ূন আহমেদ এই কথাগুলো পরিষ্কার করে বলেন নি। বরং উনি তার ভাইয়ের লেখা খানিক বিকৃতভাবে বর্ণনা করে তারপর বলেছেন, এটা স্বেচ্ছা-সম্মোহন কিন্তু মাঝে মধ্যে প্রেত-জীনও নেমে পড়ে। এখানেই আমার আপত্তি কারণ উনি সাইকোলজিক্যাল ব্যাখ্যার সাথে কুসংস্কারটুকুও মিশিয়ে দিয়েছেন অত্যন্ত যত্নের সাথে।
দুই
উনি তার কাঠপেন্সিল বইতে কসমোলজিক্যাল ফাইন-টিউনিং সমর্থন করে লিখেছেন,
Sir Martin Rees হচ্ছে ইংল্যান্ডের Astronomer Royal .পৃথিবীর সেরা জ্যোতির্বিদদের একজন। তিনি বলেছেন , প্রাণের সৃষ্টি কোন accident না। বিশ্বব্রহ্মাণ্ড এবং তাঁর নিয়মকানুন এমনভাবে করা হয়েছে যেন প্রাণের উদ্ভব হয় ।
তিনি তাঁর যুক্তি দেন Epsilon এর উদাহরণ দিয়ে । Epsilon হচ্ছে হাইড্রোজেন এবং ফিউসনএর মাধ্যমে পাওয়া হাইড্রোজেন থেকে হিলিয়ামের অনুপাত । epsilon এর ম্যান হচ্ছে ..007 . এর মান যদি .007 না হয়ে .006 হতো, তাহলে নিউক্লিয়ার আকর্ষণ দুর্বল হয়ে যেত । প্রোটন এবং নিউট্রন একসাথে থাকতে পারতো না। ফিউসন হতো না। তারার (যেমন সূর্য ) কখনো ভারী অণু সৃষ্টি হতো না । প্রাণের জন্ম হতো না।“
যদি Epsilon .007 না হয়ে .008 হতো, সামান্য বেশী হতো , তাহলে ফিউসন প্রক্রিয়া হতো অতিদ্রুত । big bang এর পর কোন হাইড্রোজেন থাকতো না । বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে কোন তারার সৃষ্টি হতো না। প্রাণের উদ্ভবও হতো না।
Epsilon এর পর আসছে ধ্রুবক N, N হোল ইলেকট্রিক বল এবং মাধ্যাকর্ষণ বলের অনুপাত । N এর মান হোল N^36, এই মান দেখাচ্ছে মাধ্যাকর্ষণ বল কতো দুর্বল। মাধ্যাকর্ষণ বল যদি আরেকটু কম হতো, তাহলে fusion হতো না। আমরা কোন তারা পেতাম না। জগত এবং বিশ্বব্রহ্মাণ্ড ডুবে যেত চির অন্ধকারে ।মাধ্যাকর্ষণ বল যদি যা আছে তার চেয়ে সামান্য বেশী হতো , তাহলে কি দাঁড়াত ? তারারা অতিদ্রুত জ্বলে শেষ হয়ে যেত । কোথাও প্রাণ সৃষ্টি হতো না
সাদামাটা উদাহরণ ( যা সহজবোধ্য) দেয়া যেতে পারে। পৃথিবী নিয়ে উদাহরণ । পৃথিবী যদি সূর্যের আরেকটু হতো ? প্রচণ্ড উত্তাপে প্রাণ সৃষ্টি হতো না। এখন যেখানে আছে, তারচেয়ে একটু দূরে হতো ? প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় প্রাণের উদ্ভব হতো না । পৃথিবী এখন যে জায়গায় আছে সেই জায়গাটিও যেন সুরক্ষিত । বৃহস্পতি নামক একটা প্রকাণ্ড গ্রহকে রাখা হয়েছে যেন পৃথিবীর ওপর যেসব উল্কাপাত হবে টা সে নিজের বুকে টেনে নেয় । পৃথিবীকে যেন ভয়াবহ বিপর্যয়ের ভেতর দিয়ে যেতে না দেয়া হয় ।পৃথিবীর ঘূর্ণন ঠিক রাখার জন্যে চাঁদকে ঠিক জায়গা মতো বসানো হয়েছে । সব দেখে শুনে মনে হয়, অদৃশ্য কোন শক্তির কঠিন নজরদারিতে আমরা আছি ।
সেই পুরাতন বস্তাপচা যুক্তি। এর বিরুদ্ধে, অনেক যুক্তি দেয়া হয়েছে, অনেক আর্টিকেল-বই লেখা হয়েছে। তবে সবকিছুর প্রথমে আমি সত্যটা উপস্থাপন করতে চাই তাহলো, স্যার মার্টিন রেস নিজে একজন নাস্তিক![৩] উনি মিলিট্যান্ট নাস্তিক নন এবং বিশ্বাস করেন সায়েন্সের, ধর্মের সাথে কোন লেনাদেনা নেই বরং তিনি হকিং এর মন্তব্যের সমালোচনা করে বলেছিলেন উনি বিজ্ঞানী, ধর্মীয় বিষয়ে বিজ্ঞান ঢোকানোর প্রয়োজনই নেই। অথচ অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, তারই লেখা সায়েন্টিফিক বইয়ের কিছু তথ্য তারই মতাদর্শের বিরুদ্ধে ব্যবহার করে সৃষ্টিবাদীরা প্রমাণ করে বেড়াচ্ছেন সায়েন্টিফিক তথ্যের মাঝে কোন এক অদৃশ্য শক্তির নিদর্শন পাওয়া যায়।
হুমায়ূন আহমেদের তথ্যগুলো বিশ্লেষণের উদ্দেশ্যে মার্টিন রেসের “Just Six Numbers” পুস্তকখানা পড়া শুরু করলাম। এবং আরেকটা মজার তথ্য উল্লেখ করার লোভ সামলাতে পারছি না, মার্টিন রেস রহস্য ঘনিয়ে রাখেননি এবং তিনি ভাল করেই জানতেন তার এইসব তথ্য সৃষ্টিবাদীরা তাদের পক্ষের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করবে, তাই তিনি স্পষ্ট করে, পুরো একটা অধ্যায়ে এইসব নিয়ে আলোচনা করেছেন। পুরো অধ্যায়টুকু তুলে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না তবে কিছু লাইন তুলে দিচ্ছি,
I’m impressed by a metaphor given by the Canadian philosopher John Leslie. Suppose you are facing a firing squad. Fifty marksmen take aim, but they all miss. If they hadn’t all missed, you wouldn’t have survived to ponder the matter. But you wouldn’t just leave it at that – you’d still be baffled, and would seek some further reason for your good fortune
উনি নিজের মতামতটাও পরিষ্কারভাবেই লিখেছেন,
It is that our Big Bang may not have been the only one. Separete universes has cooled down differently, ending up governed by different laws , and defined by different numbers[৪]
অথচ তার বইয়ের এই অংশটুকু সবাই গোপন রেখে শুধু আংশিক কিছু তথ্য তুলে দিয়ে সৃষ্টিবাদ এর পক্ষে ব্যবহার করেন।
এই ফ্যালাসীকে খণ্ডন করে অভিজিৎ রায়ের একটি তথ্যবহুল লেখা আছে মুক্তমনায় সেটি পড়তে পারেন আগ্রহীরা।
আমি নিজের যুক্তিটা সংক্ষেপে উপস্থাপন করে এই ফাইন টিউনড ইউনিভার্সের প্যাচাল শেষ করবো। তবে আগেই বলেছি, নতুন লেখার মত কিছু নেই তাই আমার চিন্তাটাও হয়তো মৌলিক নয়। আসলে ফাইন টিউনিং এর যতই প্রমাণ দেখাক আসলে কোনই প্রমাণ নেই। ব্যাখ্যা করছি, “ক” এর কারণে “খ” হয় তাতেই প্রমাণ হয়ে যায়না “ক” কে ফাইন টিউন করা হয়েছে। “ক” কে কীভাবে ফাইন টিউন করা হয়েছে তার পর্যবেক্ষণ নির্ভর প্রমাণ প্রয়োজন। একটা পাথর আমার পকেটে ঠিকমত সেট হচ্ছে মানেই এই না পাথরটা বিশেষ কিছু। এটাকে ফাইন টিউন করা হয়েছে তার প্রমাণ হবে “কীভাবে” করা হয়েছে সেই ডাটাগুলো, এটা আমার পকেটে সেট হচ্ছে এটা কোনপ্রকার প্রমাণই নয়!!
তিন।
তিনি আবার কাঠপেন্সিলের ১১৪ পৃষ্ঠায় বললেন,
আচ্ছা এমন কি হতে পারে যে , উন্নত প্রাণী শুধু পৃথিবীতেই সৃষ্টি হয়েছে ? আর কোথাও কেউ নেই । বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে আমরা একা ঘটনা কি ভয়াবহ না ?
এই সম্ভাবনা কিন্তু আছে । আস্তিক ভাবধারার একজন বিজ্ঞানী বলছেন, পৃথিবীতে প্রাণ সৃষ্টির ধারা দেখে মনে হয় একজন ডিজাইনার তাঁর সমস্ত সৃষ্টি এমনভাবে পরিকল্পনা করেছেন যেন পৃথিবী নামক গ্রহে অতি উন্নত বোধ এবং চেতনার প্রাণী জন্মগ্রহণ করেন। তাদের ভাষায় a designer’s great design. সেই ডিজাইনার কে ? god. বিজ্ঞানীরা God কে কীভাবে দেখেন ? অতি জটিল আলোচনা । এই আলোচনা এক পর্যায়ে বিজ্ঞানের বাইরে চলে যায় । তখন চলে আসে দর্শন । সেই দর্শন অতি জটিল
তিনি বিবর্তনের বিরুদ্ধে আরও পরিষ্কার করে বলেছেন,
আমি ওল্ড ফুলস ক্লাবের আড্ডায় প্রায়ই ঈশ্বর-বিষয়ক একটি গল্প বলি। পাঠকদের গল্পটি জানাচ্ছি। ধরা যাক এক কঠিন নাস্তিক মঙ্গল গ্রহে গিয়েছেন। সেখানকার প্রাণহীন প্রস্তরসংকুল ভূমি দেখে তিনি বলতে পারেন-একে কেউ সৃষ্টি করেনি। অনাদিকাল থেকে এটা ছিল। তার এই বক্তব্যে কেউ তেমন বাধা দেবে না। কিন্তু তিনি যদি মঙ্গল গ্রহে হাঁটতে হাঁটতে একটা ডিজিটাল নাইকন ক্যামেরা পেয়ে যান, তাহলে তাঁকে বলতেই হবে এই ক্যামেরা আপনা-আপনি হয়নি। এর একজন সৃষ্টিকর্তা আছে। মনে করা যাক ক্যামেরা হাতে তিনি আরও কিছুদূর গেলেন, এমন সময় গর্ত থেকে একটা খরগোশ বের হয়ে এল। যে খরগোশের চোখ নাইকন ক্যামেরার চেয়েও হাজার গুণ জটিল। তখন কি তিনি স্বীকার করবেন যে এই খরগোশের একজন সৃষ্টিকর্তা আছে?[৫]
সেই প্যালের ঘড়ি! সেই ইন্টেলিজেন্ট ডিজাইন! এক খণ্ডন করেও বহু লেখাই লেখা হয়েছে। আগ্রহীরা পড়তে পারেন, এখানে,এখানে,এখানে,এখানে,এখানে
তবে আমি দৃষ্টি আকর্ষণ করবো অন্য যায়গায়,
সেই ডিজাইনার কে ? god. বিজ্ঞানীরা God কে কীভাবে দেখেন ? অতি জটিল আলোচনা ।এই আলোচনা এক পর্যায়ে বিজ্ঞানের বাইরে চলে যায়।
আহা! কি সুন্দরই না কথা, বিজ্ঞানেও আজকাল প্রাণের উদ্ভব ব্যাখ্যা করতে গড এর প্রয়োজন পড়ছে? আমি একটা কথা স্পষ্ট করে বলতে চাইছি, জীববিজ্ঞানে কোন ডিজাইনার, ফাইন টিউনার বলে কিছু নেই। এটি অপবিজ্ঞান এবং সায়েন্টিফিক কম্যুনিটিতে এর কানাকড়িও দাম নেই। [৬][৭][৮][৯][১০][১১]
সুতরাং এই তথাকথিত ডিজাইনারকে বিজ্ঞানীরা কীভাবে দেখেন? উত্তর খুব সোজা, এই ডিজাইনার কখনোই বিজ্ঞানীদের কাছে দামই পাই নি, একে নিয়ে আলোচনা তো দূরের কথা! পপারীর মতবাদ অনুসারে এটি বিজ্ঞানের টপিক হিসেবেই গ্রহণযোগ্যতা পায়নি, সুতরাং একে বিজ্ঞানীরা ডাস্টবিনে নিক্ষেপ করেছেন তাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই।
খানিক অফ-টপিক।
উনি বিজ্ঞানের এই সহজ বিষয়গুলো আসলেই বুঝেননা নাকি ইচ্ছেকৃতভাবে করেন তার প্রমাণ করার খুব উপায় নেই। তবে আমি ছোট্ট একটা উদাহরণ দিতে পারি, উনার লেখা সায়েন্স ফিকশন “শূন্য” থেকে,
মোট পাঁচটা কাজ। পাঁচ সংখ্যাটা ইন্টারেস্টিং। মৌলিক সংখ্যা। প্রাইম নাম্বার। সংখ্যার জগতে চতুর্থ প্রাইম নাম্বার। প্রথমটা হল ১, তারপর ২, তারপর ৩, তারপরেই ৫…
লেখকের অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে, ১ প্রাইম নাম্বার নয়। [১২] [১৩]। এবং তাই অন্যান্য লাইনগুলোতেও অসঙ্গতি ফুটে উঠে, কারণ ১কে বাদ দিলে ৫ ৪র্থ প্রাইম নাম্বার হয়না।
উনি আবার কয়েক পরিসটা গিয়েই লিখলেন
ফিবোনাক্কি রাশিমালা হল__১,১,২,৩,৫,৮,১৩,২১,৩৪,৫৫,৮৯…
ভুল! ফিবোনাক্কি রাশিমালার প্রথম সদস্য হবে ০। তারপর ১। তারপরের প্রতিটি সদস্য, প্রথম দু’টি সংখ্যার যোগফল।[১৪]
তিনি আরও লিখেছেন,
এই রাশিমালার ১১ নম্বর সংখ্যা হল ৮৯। রাশিমালার প্রথম সংখ্যা এককে যদি তুমি ৮৯ দিয়ে ভাগ দাও তাহলে আবার এই রাশিমালা দিয়ে আসে যেমন…
১/৮৯=.০১১২৩৫৮১৩২১…
প্রতিটি লাইনই ভুল। ১১ নম্বর সংখ্যা হবে ৫৫, প্রথম সংখ্যা হবে ০। শুধু কি তাই? এক কে ৮৯ দিয়ে ভাগ করলে যে ভাগফলটি উনি বসিয়েছেন সেখানেও ভুল, আসলে ভাগফল হবে ০.০১১২৩৫৯৫৫১…(প্রায়)।[১৫] তবে মজার ব্যাপার হলো এবার ভাগফল বসানোর সময় শুন্যকে প্রথমেই রেখেছেন! এগুলোও লেখকের উর্বর মস্তিষ্কের কল্পনা নাকি ইচ্ছেকৃতভাবে চতুরতার সাথে কিছু তথ্য গোপন ও কিছু তথ্য পালটিয়ে দেয়া হয়েছে? বিচারের ভার আপনার হাতে।
ফিকশন সাহিত্যের অবাধ স্বাধীনতা নিয়ে যারা বলছেন, তাঁদের উদ্দেশে, শ্রীব্রজেন্দ্রচন্দ্র ভট্টাচার্যের বই “সাহিত্য ও পাঠক” থেকে কিছু লাইন উদ্ধৃত করছি।
সাহিত্য শুধুমাত্র হৃদয়বৃত্তির ব্যাপার , তাহাতে ইন্দ্রিয় বা বুদ্ধিবৃত্তির কোন স্থান নাই এ ধারণা কিন্তু নিতান্তই অমূলক । ইন্দ্রিয়ের মধ্য দিয়াই হৃদয়ে পৌঁছাইতে হয় ।ইন্দ্রয়ই হৃদয়ের দ্বার । সাহিত্যিক বস্তু- জগতের বিভিন্ন ঘটনা প্রত্যক্ষ করেন এবং তাহা রসাশ্রিত করিয়া আমাদের সম্মুখে উপস্থাপিত করেন । তাহা পাঠ করিয়া আমাদের মনশ্চক্ষে যে চিত্র ভাসিয়া উঠে তাহা হৃদয়গ্রাহ্য সন্দেহ নাই । কিন্তু মনের চক্ষুও তো ইন্দ্রিয় । আসল কথা হতেছে এই বস্তু-জগতকেই আশ্রয় করিয়া সাহিত্যিক চিরন্তন সত্য প্রকাশ করিয়া থাকেন।
এই বিচারটা এখন পাঠকদের হাতেই ছেড়ে দিলাম যে , বৈজ্ঞানিক তথ্যগত ভুল ফিকশন সাহিত্যেও কতোখানি গ্রহণযোগ্য –সেটাও পুনর্বিবেচনা-যোগ্য ।
কোন আদর্শই শাশ্বত ও সর্বজনীন হওয়ার যোগ্যতা রাখে না । কাল ও স্থানভেদে সবকিছুর উপযোগিতা যাচাই করাকেই বলতে পারি প্রগতিশীলতার চর্চা । এবং সেই আদর্শিক দ্বন্দ্বই লাগামছাড়া স্বাধীনতার আপত্তির প্রধান কারণ হিসেবে প্রতীয়মান হচ্ছে ।
গোলাম মুরশিদের একটা উদ্ধৃতি এখানে উল্লেখযোগ্য ,
বাক প্রকাশের স্বাধীনতা অবশ্যই আছে । সভ্যতার , মানবতার একটা আবশ্যিক শর্ত । কিন্তু বাক প্রকাশের স্বাধীনতা কি অ্যাবসোলুট ? চরম ? অন্য কোন বিবেচনা যার কাছে ঠাই পাবে না ? তা হলে যে- বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে মারণাস্ত্র আবিষ্কার করেন , তাদের কেন নিন্দা করবো ? পর্ণোগ্রাফি তৈরি করে যারা অনেকের অনুভূতিকে উস্কে দেন , তাঁদের কেন নিন্দা করবো ? আমার মনে হয় , বাক স্বাধীনতার সাথে মানব-কল্যাণের ধারণাটাও জড়িয়ে আছে অঙ্গাঙ্গীভাবে । অধিকারের সাথে দায়িত্বের যোগাযোগও অস্বীকার করা যায় না।
পরিষ্কারভাবে তাই বলতে গেলে , ঠিক অধিকারের সাথে এই দায়িত্বের যোগাযোগ ঘটানোর জন্যেই আমাদের হুমায়ূনের লিখার বিরুদ্ধে কলম তুলে নিতে হচ্ছে ।
কেউ চাইলেই আমাদের মুক্তিযুদ্ধকে হেয় করে উপন্যাস, সিনেমা লিখতে পারেন কিন্তু তার জন্য তাকে সমালোচিত হতে হয়। কেন? উপরে শ্রীব্রজেন্দ্রচন্দ্র তা ভালই বুঝিয়েছেন! কেউ চাইলেই সুডোসায়েন্স /কুসংস্কারকে সত্য ঘটনা, নিজের দেখা ঘটনা বলে চালিয়ে দিতে পারেন, চাইলেই ভাগফল পালটে দিয়ে ফিবোনাক্কি রাশিমালা দিয়ে ভেলকি দেখাতে পারেন, চাইলেই বিগ-ব্যাং স্পেশাল রিলেটিভিটি ভায়োলেট করছে বলে ফেলতে পারেন, চাইলেই কোয়ান্টাম মেকানিক্সের মত পরীক্ষণ নির্ভর র-সায়েন্সের সাথে আধ্যাত্মিকতার সম্পর্কের কথা বলতে পারেন কিন্তু, একটা কিন্তু থেকে যাবে। এই কিন্তু শুধু আমরাই উত্থাপন করছি তা নয়। কিন্তুটা কি? উপরে উদ্ধৃতিগুলো পড়ুন।
যারা এরপরও হুমায়ূন আহমেদের যা ইচ্ছা লেখার স্বাধীনতা নিয়ে বলছেন, তাঁদের জন্যে সমরেশ মজুমদারের বই “খোলাখুলি বলছি” থেকে কয়েকটা লাইন তুলে দিচ্ছি।
আমি লক্ষ্য করতাম বাংলাদেশের বেশীরভাগ লেখকদের লেখায় সময় চিহ্নিত হয় না । অর্থাৎ কাহিনী কোন সময়ের তা সযত্নে এড়িয়ে যাওয়া হয় ।কাহিনীর কোন চরিত্ররা রাস্তায় কোন মিছিলে যান না বা আটকে থাকেন না । বেশীরভাগ লেখায় সরকার বা বিরোধীদলের বিরুদ্ধে একটা বাক্যও ব্যয় করা হয় না ।আজ থেকে পঞ্চাশ বছর পরে এই উপন্যাসগুলো পড়লে বোঝাই যাবে না সরকার বিএনপি নাকি আওয়ামী লীগ ছিল। হুমায়ূন আজাদ অথবা আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের লেখায় ক্ষোভ আছে , বাকিরা সযত্নে এড়িয়ে গেছেন । গত মাসে হুমায়ূন আহমেদের বাড়িতে আড্ডা মারতে মারতে প্রশ্নটা করেছিলাম । একটু চুপ থেকে হুমায়ূন বলেছিলেন , ” অসুবিধা আছে । এখানকার রাজনৈতিক পরিবেশ আপনাদের মতো নয়”
অসুবিধা ? স্বাধীনতা সৃষ্টির প্রথাগত নাম যেখানে বলা হয় শিল্পকলা ,শিল্পী যেখানে নিজেই সৃষ্টি করবেন অসামান্য স্বাধীনতা , সেখানে তিনি কেন “অসুবিধা” বলে নিজেকে গুটিয়ে নিচ্ছেন? আর আমি মামুলী এক তরুণ-ছাত্র তার সামান্য কিছু ভুল/বিকৃতি/অপবিজ্ঞান তুলে ধরাতে হই-হই করে তেড়ে আসছে সেই লেখকের বাক-স্বাধীনতা নিয়ে যিনি নিজেই বলেন, অসুবিধা আছে। বাক-স্বাধীনতা আর গলার জোর কেবল অপবিজ্ঞান বলার বেলাতে?
এই কথাগুলো বলতে আমার ইচ্ছা হচ্ছে না, কিন্তু বলতে বাধ্য হলাম কিছু অন্ধ হুমায়ূন ভক্তের জন্য।
যাইহোক, এই লেখাটি কাউকে হেয় করার উদ্দেশ্যে নয়। সাহিত্যের ক্ষেত্রে আমাদের জাতি বরাবরই পুতুলপূজারি । বুদ্ধদেব বসু একবার বলেছিলেন –
আমরা বাঙালিরা বঙ্কিম , বিবেকানন্দ ,রবীন্দ্রনাথ নামের যে-কয়টি পুতুল আছে , তাঁদের প্রাণপণে ফুল দেবো , ঘি ঢালবো, তাঁদের কাছাকাছি আর কেউ আসবার চেষ্টা করলে তেড়ে মারতে আসবো।
বর্তমান সময়ের সেই পুতুলগুলোর মধ্যে নতুন একটা পুতুলের সার্বজনিক সংযুক্তি হয়েছে , আর তা হচ্ছে হুমায়ূন আহমেদ।“ এভাবে চলবে কেন? তার গৌরীপুর জংশন নিয়ে প্রশংসা করতে পারলে তার ভুল নিয়েও কথা বলার অধিকার আমার আছে। । তা না হলে বুদ্ধদেবের মতোই বলতে হবে দুঃখ করে ,
মাত্রাজ্ঞান যদি সম্পূর্ণ বিসর্জন দিতে না পারলেন তাহলে আর আপনি বাঙালি কিসের ।
উনার ক্যান্সারের নিউজটা পড়ে আমি তার সুস্থতা কামনা করে ফেসবুকে শেয়ার করার পর সেখানে তার একটা সাক্ষাৎকার নিয়ে কয়েকজনের সাথে কিছু আলাপ হয় যা থেকেই এই সিরিজটির জন্ম। উনি সুস্থ হয়ে ফিরে আসুক আমাদের মাঝে! উনি কথাশিল্পী, কথামালা সাজিয়ে সাজিয়ে বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করুক এই কামনা করি, শুধু তার খামাখা বিজ্ঞান বিকৃতি আর অপবিজ্ঞান ঢুকানোটাকে আমি সমর্থন করতে পারিনা। এই ছোট্ট অভিযোগ ছাড়া আর অন্য কোন উদ্দেশ্যে এই লেখাটি নয়। আমি ব্যক্তি হুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে কথা বলছিনা, আমি তার লেখার প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করছিনা। তাই আমার কোন পয়েন্টে ভুল থাকলে সেটা নিয়ে যৌক্তিক সমালোচনা করলে খুশি হব, খামাখা আমাকে হুমায়ূন বিদ্বেষী বলে ধরে নিয়ে আমার লেখা বাদ দিয়ে, আমাকে নিয়ে টানাহেঁচড়া করার দরকার নেই।
তথ্যসূত্র:
[১] http://www.randi.org/site/index.php/1m-challenge.html
[২] http://www.srai.org/challenge-to-all-supernatural-and-paranormal-power-holders-astrologers-etc/
[৩] http://www.independent.co.uk/news/people/profiles/martin-rees-we-shouldnt-attach-any-weight-to-what-hawking-says-about-god-2090421.html
[৪] Just Six Numbers: The Deep Forces That Shape the Universe by Martin Rees, 2000, ISBN 0-465-03673-2. Page number:148,149,150
[৫] http://www.kalerkantho.com/?view=details&type=gold&data=Hotel&pub_no=554&cat_id=1&menu_id=13&news_type_id=1&news_id=163359&archiev=yes&arch_date=17-06-2011
[৬] http://www.kuro5hin.org/story/2005/4/27/03541/2520
[৭] http://www.today.ucla.edu/portal/ut/050927voices_pseudoscience.aspx
[৮] http://theviewspaper.net/intelligent-design-science-or-pseudoscience/
[৯] http://www.lhup.edu/~dsimanek/philosop/creation.htm
[১০] http://scientiareview.org/pdfs/38.pdf
[১১] http://en.wikipedia.org/wiki/Intelligent_design#Creating_and_teaching_the_controversy
[১২] http://primes.utm.edu/notes/faq/one.html
[১৩] http://mathforum.org/library/drmath/view/57058.html
[১৪] http://en.wikipedia.org/wiki/Fibonacci_number
[১৫] http://www.google.com/search?hl=en&source=hp&biw=&bih=&q=1%2F89&btnG=Google+Search
***** এইচএসসির প্রিপারেশনের জন্য আমি (টেকি সাফি) নেট থেকে বিদায় নিচ্ছি কাল থেকে। তাই অনেকেরই মন্তব্যের উত্তর আমি দিতে পারবো না হয়তো। ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
মুক্তমনাকে মিস করবো :)) আর মুক্তমনা এগিয়ে যাক! *****
প্যারালাল ইউনিভার্স যার প্রিয় বিষয় সে আবার I.D(Intelligent design) তত্ত্ব সমর্থন করে? :lotpot: :lotpot: কাঠপেন্সিল আমি পড়িনি এখন পড়ে মনে হচ্ছে যেন কোন আবালের যুক্তি শুনছি। :guli:
লেখা টা অনেক ভাল লাগলো,অনেক তথ্যবহুল।ধন্যবাদ,এ ধরনের লেখাকে উপস্থাপন করার জন্য 🙂
😀 😀 😀
মঙ্গলগ্রহে নাইকন ক্যামেরা আর খরগোশ পাবার সম্ভাবনা শূন্য। তাই আমরা ধরে নেই যে নাস্তিক লোকটির মহাকাশযান সাত আসমানের উপরে একটা অদ্ভূতগ্রহে বিধ্বস্ত হয়। ভাগ্যক্রমে নাস্তিকলোকটি বেচে যান।
সেই গ্রহে তিনি প্রথমে ডিজিটাল নাইকন ক্যামেরা আর পরে খরগোশের দেখা পান।
নাস্তিক পথে যেতে যেতে ভাবতে লাগলেন নাইকন ক্যামেরার একজন সৃষ্টিকর্তা থাকলে অবশ্যই খরগোশেরও আছে(হঠাৎ করেই যেন আস্তিক্য চিন্তাভাবনা তার মাথায় চলে আসল)।
তারপর আরো কিছুদূর যাবার পরে তিনি দেখলেন একটা বৃদ্ধলোক শুধু হও বলছেন আর খরগোশ, নাইকন ক্যামেরা,মানুষ, গাড়ি, কম্পিউটার, গাছপালা সবকিছু তৈরী হয়ে যাচ্ছে। তিনি এই গ্রহে নাইকন ক্যামেরা আর খরগোশ পাবার রহস্যটা বুঝলেন।
নাস্তিক লোকটা বুঝতে পারলেন যে এই বেটাই হচ্ছে এ সবের সৃষ্টিকর্তা আর নাইকন ক্যামেরা ও খরগোশের থেকে কোটিগুনে জটিল এর ক্ষমতা। নাস্তিক লোকটা ভেবে পাননা এরকম একজন বৃদ্ধের সৃষ্টিকর্তা কিরকম জটিল হতে পারেন আর সেই সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টিকর্তা তার সৃষ্টিকর্তা, আবার সেই সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টিকর্তা……………………….
নাস্তিক লোকটার মাথা হ্যাং হয়ে গেল।
পরে একটু ধাতস্থ হয়ে নাস্তিক লোকটা ভাবল যে সামান্য একটু আস্তিক্য চিন্তা আমার মস্তিস্ককে হ্যাং করে দিয়েছে আর যারা সারাজীবন আস্তিক থাকে তাদের মস্তিস্ক কেমন করে ঠিক থাকে? কি দিয়ে গড়া তাদের মস্তিস্ক?
স্বাদু হয়েছে। আর সেই সঙ্গে আল্লাচালাইনা’র মন্তব্য যেন টপিংস। :))
এই পর্বটা অনেক পরিণত হয়েছে। ভালো লাগল।
প্রথমে হুমায়ুন আহমেদ ছিলেন প্রতিভাবান ও মেধাবী, আর এখন হয়েছেন বুদ্ধিমান ও চালাক! এই লেখাটা আগেরটার চেয়ে অনেক গোছানো হইছে বলে ডাবল প্লাস। পরীক্ষা ভাল হোক এই কামনা রইল। দুই লেখককেই শুভেচ্ছা।
@লীনা রহমান, সম্পূর্ণ একমত।
আমি আরেকটু যোগ করতে চাই, আমরা সবাই হয়তো সাফল্যের পথে এভাবেই এগোই।
পুকুর জিনিটি খুবই পছন্দের, মধুর স্মৃতির কারনে। কিন্তু সময়ের এ পর্যায়ে এসে ভয় হচ্ছে আমরা এত দ্রুত লয়ে পিছু হটছি, খুব শীঘ্রই সেই বদ্ধ জলাশয়ের আদিম পুকুরের কাছাকাছি পৌঁছে যাব।
আপাত ভাল মন্দের বিরোধ না থাকলে, বদ্ধ জলাশয়ের সেই আদিম পুকুরে পড়ে থাকতে হতো আমাদের। ভাল মন্দের সাথে অর্থনৈতিক সম্পর্কটা নিবিড়। এটা কারো চোখে পড়ে, কারো চোখে পড়ে না।
মানুষ ও মানুষের মধ্যকার সম্পর্ক ও সমষ্টির এই সমাজে দুই বিপরীতমুখী বল কার্যকর ছিল, এখনো আছে। সাহিত্যিক বা শিল্পী বা দার্শনিক হলে, পার পেয়ে যাবেন আর যদু মধু হলে ছিঃ, তো এই ছিঃ এর বিপরীতে আর একটি ছিঃ-র উপর দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য টেকি সাফি এবং শফিউল জয়কে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
বাক প্রকাশের স্বাধীনতা যে কোন উচ্চতর সমাজেই অবশ্যই থাকবে, থাকতে হবেই কেননা এইটা ২০১১ সাল! এর কারণটা হচ্ছে গিয়ে কথার কখনই ক্ষমতা নেই কোন একচুয়াল হার্ম করার, কথা মানুষকে উষ্কে দিতে পারে, কোন অগ্রহনযোগ্যরকমের বিষাক্ত মতাদর্শকে প্রমোট করতে পারে, কিন্তু কারো হাত-পা ভেঙ্গে দিতে পারেনা কথা, কথা কাওকে রাস্তায় ল্যাং মেরে ফেলে দিতে পারে না। উপরন্তু একটা এপারেন্টলি বিষাক্ত মতাদর্শ ফ্রিডম অফ স্পিচের ঘাড়ে পা রেখে যদি প্রচারিত হয়ে জনমানুষের সমবেদনা লাভ করতে পারে তাহলে বিষাক্ত হওয়া স্বত্বেও সেইটাই মানুষের গনতান্ত্রিক ইচ্ছা বলে প্রতিষ্ঠিত হয়।
তাত্বিকভাবে আমার পজিশন এইটা হলেও আমার একান্ত ব্যক্তিগত মত হচ্ছে- সায়েন্স কোন ছাগ্লামির জিনিষ না, সো বাকস্বাধীনতা, লেখকের স্বাধীনতা বা ইত্যাদি যে কোন ফ্যান্সি নেইমের ছুড়ি চালিয়ে সায়েন্সের উপর পিস টেইকিং করাটা কোনভাবেই গ্রহনযোগ্য না; অন্তত এই ধরণের কথা কেউ বললে আমি সেটার প্রতিবাদ করবো। অন্য সবকিছুর উপরে সায়েন্সের জন্য আমি এই স্পেশাল পজিশনটা এসাইন করতে চাই কেননা আমি কোন দৃষ্টিহীন পোস্টমডার্নিস্ট নই, এইটা আমি ভালো করেই বুঝি যে- সায়েন্স জীবন বাঁচায়, এইটা মানবো কর্মকান্ডের সকল ফ্যাসেটের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ণ, এইটা ছাড়া আমরা ডাউন অচল! সো প্রিন্টেড মিডিয়াতে তোমার কোন প্রভাব থাকলে, তোমার কথা একশোজনের কর্ণকুহরে প্রবেশ করলে, এইটা তোমার উপর দায়িত্ব হিসেবেই বর্তায় যে তুমি কোন করোসিভ কথা বলবে না, ফ্রিডম অফ স্পিচ তোমাকে করোসিভ কথা বলার স্বাধীনতা নিশ্চিত করলেও এমনকি! তোমার কথার আন্ডারটোনের কোনধরণের বিজ্ঞানবিরোধীতা প্রকাশ পেলে তোমাকে মানবসমাজ ছেড়ে জঙ্গলে বসবাস করতে হবে আশুনিকতার কোন সুবিধা গ্রহন না করে, এবং আমাদেরকে প্রদর্শন করতে হবে কতোটা সার্ভাইবেবল তুমি সেখানে!
হুমায়ুন আহমেদের রয়েছে ‘বিজ্ঞানশিক্ষিত’ ছাট্টিফিকেট, যদিও তার বিগত কয়েক দশকের কাজকর্মের সাথে বিজ্ঞানের ‘ব’ এরও কোন সম্পর্ক নেই ছিটেফোঁটা। ভদ্রলোক তার একটি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক লেখায় বিজ্ঞানবিরোধীতা প্রকাশ করে এবং প্রচার করে। এইখানে লক্ষ্যণীয়, বর্তমান সমাজে সরাসরি বিজ্ঞানবিরোধী কথা বলে কেউ পার পেতে যাচ্ছে না, জনমানসে সে একটা জার্ক হিসেবেই উপস্থাপিত হতে যাচ্ছে, সেই কারনে ক্রিয়েশনিস্টরাও এমনকি সরাসরি বিজ্ঞান বিরোধিতা করে না, তারা বলে- ওয়েল ‘সত্যিকারে বিজ্ঞান’ সেইটা বলে সেইটা সলে ছহি বিজ্ঞান না, আমারটা ছহি বিজ্ঞান, তাই আমারটা গ্রহন করো!! ফলে কারও আচরনে বিজ্ঞানবিরোধিতা খুঁজতে হলে তার টোনে সেটার খোঁজ করলে হবে না, খোঁজ করতে হবে তার কথার আন্ডারটোনে। ইন লাইট অফ অদিস আর্গুমেন্ট, এই কনসেনসাসে আমরা রিজনেব্লি পৌছতে পারি যে- হুমায়ুন আহমেদের কথাবার্তার আন্ডারটোনও ঠিক এই রকমের বিজ্ঞানবিরোধীতাপুর্ণ! এই ব্যক্তি নিজের লেখায় তার এই মনোভাবটা মোটেও গোপন করতে পারেন না যে- কঠোর শীতল অবজেক্টিভ বাস্তবতা যেটা বয়েছে এটা অধ্যয়নযোগ্য, এটাকে অনুধাবন করার একমাত্র উপায় সায়েন্স, এবং এটাকে অনুধাবন করার মধ্যেই নিহত রয়েছে মানব সমাজের সর্বোচ্চ কল্যান! তার কথাবার্তায় বরং প্রকাশ পায় এই মনোভাব যে- স্টাডিয়েবল বাস্তবতার বাইরেও একটা কিছু রয়েছে, যেইটা জানে এবং বোঝে খালি হুমায়ুন আহমেদ, এবং এইটার স্বরূপ বুঝতে হলে তোমাকে হুমায়ুন আহমেদের সঙ্গে মতানৈক্যে পৌছতে হবে… 😀 …!!! এবং কে বলে ভদ্রলোকের সেন্স অফ অহিউমার নেই!!
এখন প্রশ্ন হচ্ছে এই কাজটা কেনো করে হুমায়ুন আহমেদ এবং অন্যরা? ওয়েল কারণটা আমার মনে হয়- ধর্মীয়। আমাদের প্রত্যেকের মনের গহীনেই রয়েছে নানা ধরণের ভোগাবাজী পন্য যেগুলা কিনা আমরা অন্যকে বেঁচতে চাই। সফলভাবে এইগুলা বিক্রি করতে পারলে অন্যের উপর আমাদের প্রতিপত্তি প্রতিষ্ঠিত হয় সেই সাথে আত্নসন্তুষ্টিও লাভ হয় একটা, কাউকে ইনসেমিনেট করে দিতে পারলে প্রত্যেকটি পুরুষেরও সম্ভবত এই ধরণের একটা সুপারফিশিয়াল আত্নসন্তুষ্টির বোধ হয়!! হাওএভার আমার আমাদের এই বিক্রয় কার্কক্রমের পথে ১০০% বাধ সাধে এই নোশনটা যে- ‘বাস্তবতা বলে একটা জিনিষ আছে’; বাস্তবতার সাথে সংঘর্ষপুর্ণ পন্য বাজার লাভ করতে যাচ্ছে না কোনভাবেই একটা ওয়েল ইনফর্মড সোসাইটিতে। ফলে বাস্তবতার কঠোরতা, শীতলতা ও রিজিডিটিকে প্রশ্নের সম্মুখীন করানোর মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের অবচেতনের সাপের তেলরুপী পন্যগুলোর স্মুথ বিক্রয় নিশ্চিত করি! কইষা গদাম এদেরকে। হুমায়ুন আহমেদ একটিভলি ক্রিয়েশনিজম প্রমোট করে ডেমন্সস্ট্রেব্লি যেই পজিশনটার একফোঁটা সায়েন্টিফিক গ্রহনযোগ্যতাও নেই। ভদ্রলোকের কোলোরেক্টাল ক্যান্সার হয়েছে এখন এবং গেস হোয়াট ভদ্রলোক ছুটেছে বিদেশে উন্নত চিকিতসা গ্রহন করার জন্য; কোন মিরাকল হিলারের কাছে যায় নাই ভদ্রলোক, কিংবা বিরস বদনে বসে বসে দুই সিডি হাসন রাজার আধ্যাত্নবাদী গান শুনে ফেললে তার ক্যান্সার ভালো হয়ে যাবে- এইধরণের কোন উপসঙ্ঘারেও উপনীত হয়নি। আমি চাই উড়োজাহাজে চড়ে যেতে যেতে ভদ্রলোক ভাবুক- কি করে এই দানবসম উড়োজাহাজটা কমনসেন্সে এপারেন্ট প্রকৃতির সকল আইনকে মধ্যাঙ্গুলী প্রদর্শনপুর্বক বাতাসে ভেষে রয়েছে; এই বিশাল উড়োজাহাজটার বাতাসে ভেসে থাকাটাই তো একটা অতিপ্রাকৃত ঘটনা, তাই না? এইযে ভদ্রলোকের ক্যান্সার হয়েছে, তার ট্রিটমেন্ট কি হবে এখন আমি কিছুটা জানি এবং বলতে পারি; তার জীবন বাঁচানোর ক্ষেত্রে একটা বড়ো ভুমিকা রাখবে ইভলিউশনারি ফেনোমেনা সম্পর্কে আমাদের বিশদ আন্ডারস্ট্যান্ডিং। বস্তুত ক্যান্সার কি এবং কিভাবে হয় এই প্রশ্নটার আন্সার অবধারিতভাবে জড়িত করে ইভলিশনারি মডেল; এবং এর প্রগ্নসিসও, যেমন- কি করে একটা ক্যান্সার ড্রাগ রেসিস্টেন্স অর্জন করে, মেটাস্টেসিসের মেকানিজম, এই একটা প্রশ্নের উত্তরও ইভোলিউশনারি মডেলকে ইনভোক না করে দেওয়া সম্ভব নোয়। অথচ ভদ্রলোক প্রকাশ করছে তার প্রগাড় ডিসডেইন এই ইভলিউশনারি মডেলের প্রতি; কিংবা কে জানে হয়তোবা এইটা তার সুতীক্ষ্ণ হিউমার সেন্সেরই একটা বহিঃপ্রকাশ, দাঁত কেলিয়ে শেষে ‘sorry I was joking’ বলে আমাদের একচোট হাসিয়েই দিবে কিনা কে জানে! :))
টেকি সাফি এবং শাফিউল জয়কে সুন্দর লেখার জন্য ধন্যবাদ।।
@আল্লাচালাইনা,
আমরা ঘুরে ফিরে দায়িত্বেই ফিরে যাই, তাই ভাল লাগে। একজন লেখক হিসেবে, মানুষ হিসেবে, বা জঙ্গলে বসবাস না করে আর দশজন মানুষের সাথে একই সমাজে আছি বলে।
@আল্লাচালাইনা, ” তোমার কথার আন্ডারটোনের কোনধরণের বিজ্ঞানবিরোধীতা প্রকাশ পেলে তোমাকে মানবসমাজ ছেড়ে জঙ্গলে বসবাস করতে হবে — ”
কোন কথাটি বিজ্ঞানবিরোধী তা বিচার করবে কে? আপনি, নাকি কোন গ্র্যান্ড ইনকুইজিটোরিয়াল পরিষদ? বিজ্ঞানবিরোধীতার কোন ডিগ্রী আছে নাকি সামান্যতম বিজ্ঞানবিরোধী হলেই ঘ্যাচাৎ? কোন জংগলে মানুষকে পাঠাবেন আপনি? যেসকল (কমসংখ্যক হলেও)বিজ্ঞানী বিবর্তনের বিরোধীতা করেছেন অথবা গ্লোবাল ওয়ার্মিং এ বিশ্বাস করে না তাদেরকেও কি সামারি এক্সাইলে পাঠানো হবে। শিল্পী-সাহিত্যিক-রাজনীতিবিদ কেউই আপনার সুইফট ভেরসো পল্লিস (গ্ল্যাডিয়েটরদের জন্যে থাম্বস ডাউন) থেকে রেহাই পাবে না?
@shafiq, এইটা সম্ভবত আপনি ভালোকরেই জানেন যে বিজ্ঞানবিরোধীতা কোন অপরাধ নয় যেইটার জন্য কিনা কোন একচুয়াল শাস্তির দরকার আছে। অপরাধ যদি হয়েও থাকে এইটার সর্বোচ্চ শাস্তি হতে যাচ্ছে গনলাঞ্ছনা। জঙ্গলে পাঠানোর ব্যাপারটাও খুব সম্ভবত বুঝেছেন।
নাহঃ ডিগ্রিধারী জার্ক যেই কয়টা রয়েছে, সেগুলার টেইক কেয়ার করার জন্য সায়েন্টিফিক কমিউনিটিই যথেষ্ট এবং এইসকল জার্কদের প্রতি নির্দয় হবার ব্যাপারে প্রচ্চন্ড প্রচ্চন্ড অগনতান্ত্রিক এবং মেরিটোক্রেটিক সায়েন্টিফিক কমিউনিটির দুর্নামই আছে। মাইকেল বিহির কয়টা পেপার আপনি খুঁজে পাবেন, স্পেশালি মাইকেল বিহি রুপে সে আবির্ভুত হবার পরে? উত্তর হচ্ছে একটাও না। কোন গ্রান্ট কি সে পায়? আবারও উত্তর হচ্ছে না, কোন গ্রান্টের জন্য এপ্লাই সে করলে প্রথম দর্শনেই হবে রিফিউসড! কনফারেন্সে জায়া আর চার্চে বক্তৃতা দিতে জায়া ছাড়া তার আর কোন কাজ নেই! সে একজন টেনিয়োর ট্রাক প্রফেসর, বরখাস্ত তাকে হয়তোবা করা যাবে না, কিন্তু হয়রানি কিন্তু যথেষ্টই করা হচ্ছে, এবং একজন সায়েন্টিস্ট হয়ে সায়েন্স নিয়ে ছাগ্লামি করলে ঠিক এইটাই করা উচিত!
কিংবা যেইসকল ফিজিসিস্ট কোল্ড ফিউশন রিপোর্ট করেছিলো এবং এইটা নিয়ে দাপাদাপি করেছিলো, তাদের পরবর্তী সায়েন্টিফিক ক্যারিয়ার কিরকম হয়েছে, জানতে দেখুন http://www.youtube.com/watch?v=vrs01XsmpLI
যেই এপিডিমিয়োলজিস্ট এমএমআর ভ্যাক্সিনের সাথে অটিসমের কোরিলেশন রিপোর্ট করেছিলো তার কি অবস্থা হয়েছে? ওয়েল তার হেলথ সার্ভিস প্রফেশনাল লাইসেন্স সিজ হয়ে, চাকরীচুত্য হয়ে সে এখন বেকার!
সো সায়েন্স নিয়ে ছাগ্লামি সায়েন্টিস্টরা কিন্তু অনেক অনেক বড়ো দাম দিচ্ছে তাদের কৃতকর্মের বিপরীতে। হুমায়ুন আহমেদ কোন সায়েন্টিস্ট না তাই সেই দাম তাকে দিতে হবে না; কিন্তু তারপরও দুর্ভাগ্যজনকভাবে তার মুখনিসৃত বাণীগুলোর রয়েছে আরও কয়েকহাজার সাধারণ কর্ণকুহরে প্রবেশ করার ক্ষমতা, সেই সাথে একটা সায়েন্স ডিগ্রি সেই ক্ষমতাকে করেছে আরো এম্পলিফায়েড। তার কাছ থেকে আরেকটু রেস্পন্সিব্লিটি আশা করাটা কোন উচ্চাশা না। তোমার অতিপ্রাকৃত গল্প লিখতে মঞ্চায় তুমি এডগার এলান পো এর মতো দা ব্ল্যাক কাট লিখো, কে আপত্তি করেছে। কিন্তু গায়ে পড়ে ছাগ্লামি কি তোমার না করলেই নয়??? ছাগ্লামিও করবা আবার কোলোরেক্টাল ক্যান্সার হইলে ঢকঢকায়া একগ্লাস বেরিয়াম সালফেট সলিউশন খেয়ে কিংবা পশ্চাতদেশ দিয়ে নিয়ে (এইটা জোক করছি না, সিরিয়াসলি http://en.wikipedia.org/wiki/Lower_gastrointestinal_series ) নিশ্চিন্তমনে গিয়ে শোবা এক্সরে মেশিনের নীচে, আবার নিজের এই চরম চরম হিপোক্রিটিক অবস্থান-কার্যকলাপের জন্য একটু জনলাঞ্ছনাও খাবা না, এইটা আবার কেমনতর আবদার???
@আল্লাচালাইনা,
সম্পূর্ণ মন্তব্যটার মধ্যে অনেক অনেকগুলো চুম্বক জায়গা থাকলেও কেন যেন খাপছাড়া খাপছাড়া লাগছিল। শেষে এই লাইন
দেখে নিশ্চিন্ত হলা না এটা আল্লাচালাইনারই বক্তব্য। :lotpot: :lotpot: :guru: :guru:
@আল্লাচালাইনা,
অতি মচৎকার(!) বাংলিশ। বাপমাখেদাইনা আল্লাচালাইনা” অতিবিজ্ঞানির দুরম দারুম ইংরাজি আর বিজ্ঞানের কস্লানি দেখিয়া আপনাকে আল্লাহর প্রেরিত রাসুল-এ-বিজ্ঞান ছাড়া আর কিছু মনে করিবার সাহস পাইতেছিনা! :guru:
হুমায়ুন সাহেবের নিজের একটা থিওরি আছে যখানে বলা হয়েছে মিথ্যা ডাইরেক্ট বলতে হয় না, সত্যের সাথে মেশাতে হয়। এই কথা উনার বেশ কিছু বইতেও উনি লিখেছেন। মজার ব্যাপার হল একই কথা নিজের লেখার ক্ষেত্রেও ফলো করেন ভদ্রলোক। কতজন একনিষ্ঠ হুমায়ুন পাঠক শওকত ওসমান বা আখতারুজ্জামান ইলিয়াস বা আহমদ শরীফ বা মানিক বন্দোপ্যাধ্যায় পড়ে দেখেছে আমি ঠিক জানি না, তবে সংখ্যাটা সম্ভবত খুবই অল্প।
হুমায়ুন আহমেদ এর কল্প বিজ্ঞান নিয়ে এবং জাফর ইকাবেলের ও সম্পর্কে হুমায়ুন আজাদ বলেছিলেন এরা দু ভাই সায়েন্স ফিকশন এর নামে শিশুদের ঠকাচ্ছে। আমি জানি না তারা আসলেই ঠকাচ্ছেন কিনা!!! হুমায়ুন আহমেদ কে নিয়ে কিন্তু আমাদের অনেক সমস্যা আছে। জনপ্রিয় লেখক,এজন্য হিংসা বশত হুমায়ুন আহমেদের সমালোচনা করা হয় এটা অনেকে বলেন । আসলে কিন্তু ব্যাপারটা টা নয়। হুমায়ুন আহমেদ এমন একসময় লেখা শুরু করেছিলেন যখন কি না আমাদের গদ্য সাহিত্যে সত্যি সত্যি খরা চলছিল,তা অবশ্য এখনো আছে। তার প্রথম দিক কার লিখা নন্দিত নরকে এবং শঙ্খনীল কারাগার ভাল মানের লেখা হিসেবে সমাদর পেয়েছে। কিন্তু হুমায়ুনের এমন অনেক না শুধু অসংখ্য লেখা আছে যার কোন সাহিত্য মূল্যই নেই ,যেমন হিমু অ্যান্ড গং। আমি হুমায়ুন আহমেদের লেখা বেশ কয়েকবার পড়া ছেড়ে দিয়ে আবারো পড়েছি। তবে জোসনা ও জননীর গল্প পড়ার পর আর হুমায়ুন পড়িনি। আর কোনদিন পড়ব ও না, কারণ হুমায়ুন আহমেদের এক সাক্ষাৎকার এ পড়েছিলাম উনি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দুই বছরের ছুটি নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের উপর উপন্যাস লিখবেন,সেই উপন্যাস ই জোসনা ও জননীর গল্প। বইটা আমার কাছে মনে হয়েছে পর্বতের মূষিক প্রসব। এখানে অবশ্য সায়েন্স ফিকশন নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। কিন্তু আমাদের বাংলাদেশে হুমায়ুন আহমেদ এর পরিসর অনেক বড়,ফেলে দেয়া যাবে না,আমরা তাকে ফেলবও না। হুমায়ুন নিজেই বিভিন্ন সময় স্বীকার করেছেন অনেক লিখাই উনি লিখেছেন শুধুমাত্র টাকার জন্য,যেমন টেলিভিশনের ধারাবাহিক নাটক এই সব দিন রাত্রি নাকি উনি একটি রঙ্গিন টেলিভিশন কেনার জন্য লিখেছিলেন,টেলিভিশনের টাকা ওঠার সাথে সাথে তিনি নাটক টির একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র টুনির মৃত্যু ঘটিয়ে ধারাবাহিকের সমাপ্তি টানেন। অর্থাৎ উনি নিজেও তার সব সৃষ্টি কর্মের জন্য মনে হয় কৃতিত্ব দাবী করেন না। সায়েন্স ফিকশন এ ভুল তথ্য দেয়া যায় কিনা আমি জানি না, তবে সাধারণ জ্ঞান বলে দেয়া অনুচিত, ভুল শিক্ষা পাবে সবাই,শুধু শিশুরাই নয় বড় রাও সায়েন্স ফিকশন পড়েন বলেই জানি। সবসময় ই জনপ্রিয় লেখক থাকেন যারা কালোত্তীর্ণ হন না। নিজ সময় এ আবার কালোত্তীর্ণ লেখক রা ভাত পান না যেমন মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়। হুমায়ুন রিস্ক নেন নাই। লেখক হিসাবে নয় আমি তাকে পছন্দ করি ব্যক্তি হুমায়ুন কে। এ জন্যে যে উনি তার জীবনে বহুমাত্রিক। আমাদের সবার মাঝে ই একটা বোহেমিয়ান ধারা আছে , কিন্তু আমরা পারি না। হুমায়ুন পেরেছেন। নাটক,সিনেমা,গল্প,উপন্যাস সব ই। সেন্টমারটিন দ্বিপে বাড়ী বানিয়েছেন। বুড়ো বয়সে বিয়েটাও :lotpot: ,কজনে পারে এমন?। হুমায়ুন আহমেদের ভাল মন্দ সব মিলিয়ে হুমায়ুন আহমেদ। এমন এক সময় তার আগমন যখন সাদা কাল টিভি ছাড়া কোন বিনোদন আমাদের ছিল না যেখানে বস্তাপচা অনুষ্ঠান এর অত্যাচারে আমরা ছিলাম অতিষ্ঠ,এ থেকে আমাদের অন্তত দশ বছরের জন্য হুমায়ুন আমাদের উদ্ধার করেছিলেন। তার ধারাবাহিক নাটক যেদিন প্রচার হবার কথা থাকত এবং তা হত রাত নয়টা এ, ঢাকা শহর এর রাস্তা ফাকা হয়ে যেত। তার নাটকের চরিত্র কে ফাঁশির হাত থেকে বাঁচানোর জন্য তার বাসায় বোমাও মারা হয়েছিলো। তাকে অপন্নাসিক আখ্যা দিয়ে উন্নাসিকতা দেখান আমাদের সাজে না।সাহিত্য তার স্থান কি হবে তা ভবিষ্যৎ ই বলে দেবে। উনি সুস্থ হয়ে উঠুন এটাই মনে প্রানে কামনা করি।
@সপ্তক,
বইটা আমার কাছে মনে হয়েছে পর্বতের মূষিক প্রসব।
:guli:
অনেকখানি একমত
মনেই হয়না, আপনি কেবল কলেজ এ পড়ছেন।
কি হাস্যকর! গোলাম মুরশিদ দেখি বাক-স্বাধীনতার বিষয়টাই বোঝেননি। আরে, “নিন্দা” করাটাও তো বাক-স্বাধীনতা, করে যান সেটা! বাক-স্বাধীনতা মানে নিন্দা থেকে রক্ষা পাবার গ্যারান্টি, এই অদ্ভুত ধারণার কারণ?
@রৌরব,
এজন্য বলেছিলাম কিছু কিছু মানুষের না দেখার ও না শোনার অধিকার থাকাটাও জরুরি। নাহলে তারা মহান সামাজিক দায়িত্বের ডাকে বাকস্বাধীনতাকে নিন্দাচ্ছলে লিমিট করে দিতে নামেন। গল্পে ভুল বললে বিজ্ঞান একদিন কানে ধরেও উঠবস করাবে। লোকে যেভাবে শেখে, সেভাবেই শেখায়। :lotpot:
@রূপম (ধ্রুব),
না দেখা ও না শোনার অধিকার হয়তো সম্ভব যদি তারা মানুষ ও মানুষের মধ্যকার সম্পর্ক ও সমষ্টির বাইরে অবস্থান করতে সক্ষমতা অর্জন করতে পারে।
@স্বপন মাঝি,
তার আগে কি এই অধিকার আপনি দিতে নারাজ?
@রূপম (ধ্রুব),
বলার অধিকার বঞ্ছিত মানুষের সামনে, আপনি না শোনার অধিকার নিয়ে উপস্থিত। আপনার এই না শোনা এবং না দেখার কাজটা যথাযথ পালন করে যাচ্ছে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের সরকার।
বলার স্বাধীনতা এতটাই প্রবল যে মুক্তমনাতেও আমাদেরকে ছদ্মনামে লেখতে হয়।
@স্বপন মাঝি,
হাইপোথেটিকাল আলাপে বক্তা বা শ্রোতার অবস্থান তো অবান্তর। সকলের সাধারণ অধিকার হিসেবে নাশোনার অধিকার আছে, নাকি কিছু কিছু মানুষ পৃথিবীতে আছে, যাদের বাছাই করার অধিকার নেই যো তারা কী শুনবে আর কী শুনবে না? এটা হাইপোথিটিকাল প্রশ্ন। বাকস্বাধীনতার সাথে কি এটা কন্ফ্লিকটিং?
@রূপম (ধ্রুব),
নিয়ামক শক্তিকে উহ্য রেখে কি এ প্রশ্নের মীমাংসা হবে?
জনপ্রিয়তার পেছনে না ঘুরে তিনি যদি জ্ঞানের পেছনে ঘুরতেন তবে বড় ভাল হত। কুসংস্কারের বদলে তার বইয়ে মানুষ সত্যের সন্ধান পেত।
হুমায়ুন আহমেদের সুস্বাস্থ্য কামনা করি এবং তিনি যেন রহস্যানুসন্ধানের পরিবর্তে জ্ঞানানুসন্ধান (রহস্য উন্মোচনের) সুযোগ পান সে আশা করি।
আপনাদেরকে ধন্যবাদ।
যদিও তোমার নিজের বক্তব্য না, কিন্তু ভয়ঙ্কর ফ্লড কথাবার্তা। মারনাস্ত্র তৈরি করা বা পর্নোগ্রাফি তৈরি করা কি বাক স্বাধীনতার চর্চা? কোন জিনিসটা আদৌ অ্যাবসলিউট? পর্নোগ্রাফি তৈরি করাটা মানব কল্যাণের বিপরীত, সেটা কি অ্যাবসলিউট? মানব কল্যাণ জিনিসটাই কি অ্যাবসলিউট? সভ্যতার কোন লগ্নে এসে মানুষ মানব কল্যাণের একটা সংজ্ঞায় স্থির থেকেছিলো? এসবকটা জিনিসই প্রশ্নাসীন। এর মধ্যে বাকস্বাধীনতাটা আমার মতে সবচেয়ে সুবিধাজনক অবস্থানে আছে। বাক স্বাধীনতাটাই সবচেয়ে কম সমস্যাকর। মানুষের অধিকার পূরণ হচ্ছে কিনা, সেটা দেখাটা চমৎকার একটা কাজ। তার বিপরীতে, মানুষ তার ঐচ্ছিক সামাজিক দায়িত্ব পালন করছে কিনা, এই পোলিসিংটা আমার কাছে চোখে লাগে। লোকে ভুল বললে সেই ভুল ধরিয়ে দেয়াটা ভুলের খাতিরেই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু সেটার সাথে ‘মানুষকে সামাজিক দায়িত্ব নিতে হবে’ হেনতেন কর্তৃত্বভাবাপন্ন নীতিকথা কেনো অবধারিতভাবে ঢুকে যেতে বাধ্য, এটা আমার বোধগম্য না।
@রূপম (ধ্রুব),
একটা উদ্ধৃতি বা একটা কর্মকান্ড ভুল সেটা আমরা মাপব কী দিয়ে? মানে আমি বলতে চাচ্ছি, আপনি যখন বলছেন, ভুল শুধরে দেয়াটা ভুলের খাতিরেই গুরুত্বপূর্ণ, তখন আপনি কী ভুলটাকে(মানে সেই বিশেষ কাজটাকে) কোন কিছুর সাথে তুলনা করে ভুল বলছেন না? আমি জানতে চাচ্ছি সেই তুলনা করার বিষয়টা কী।
সেটা কি পরম কোন আদর্শ বস্তু মানে সে কি মঙ্গল গ্রহে গেলেও ভুলই থাকবে, নাকি সমাজে মানুষের ভালো বা মন্দ বিবেচনা করে তারপরে তাকে ভুল বলা?
@সাইফুল ইসলাম,
ভালো বলেছেন। তথ্যগত ভুলের কথা বলছি। বিজ্ঞান নিয়ে ভুল বলার কথা বলছি। সমাজের ভালো মন্দ বিষয়ে অভিভাবকীপনার কথা বলছি না।
@রূপম (ধ্রুব),
আমি মনে হয় ধরতে পারছি না। বিজ্ঞান বলি, সাহিত্য বলি অথবা যেকোন ব্যাপারই বলি না কেন, সেটা যদি কোনভাবে মানুষের সাথে সম্পর্কিত না হয় তাহলে সেটা ভুল হলেই কী আর সঠিক হলেই বা কী বুঝতে পারলাম না। আমি বললাম, চিকিৎসা বিজ্ঞান ভুল অথবা সঠিক। আমার এই উদ্ধৃতির কোন মূল্য কি আছে যদি সেটা মানুষের কল্যান বা সমাজের কল্যান কিংবা মানুষের ক্ষতি বা সমাজের ক্ষতির সাথে সম্পর্কিত না হয়?
@সাইফুল ইসলাম,
বড়ই সত্য কথা। তাই বড়ই সুন্দর।
****দুনিয়ার সবই আপক্ষিক হয়ে যাচ্ছে। ভাল, মন্দ, দায়িত্বজ্ঞান, ভুল, ত্রুটি সবই আপেক্ষিক। কেউ এসে একজন মানুষকে ঠাস করে গালে একটা চড় দিলে সেটাও আপেক্ষিক। এত উদাসীমনার মাঝে মানব কল্যান আর সমাজ কল্যানের কথা পড়লে ভাল লাগে।****
@সাইফুল ইসলাম,
তবে আমি এক্ষণে আপনার কথা বুঝলাম। 🙂 এমন সব ক্ষেত্রে যেখানে বিষয়টা মানুষের সাথে সম্পর্কিত না হয়, সেটার ভুল নিয়ে আলাপ কেবলই আর্গুমেন্টে খাতিরে। যেকোনো স্টেটমেন্টের মতো। না করলেও কিছুই আসে যায় না। বিজ্ঞানের অনেক গবেষণাই মানুষের সাথে নেরেসারি সংশ্লিষ্টতা ছাড়াই তো করা হয়, তাই না? সেটার পেছনে যেই প্রেরণা, শুদ্ধতার প্রেরণাও সেখান থেকে সঞ্জাত। তথ্যগত ভুল ঠিকের তর্ক করার জন্য যে সামাজিক দায়িত্বের ঝাণ্ডা নিয়ে ঘুরে বেড়াতে হয় না, সেটা বোঝাচ্ছিলাম। তাহলে বিজ্ঞান চর্চা করতে হলেও সামাজিক দায়িত্বের ঝাণ্ডা বহন করে বিজ্ঞান চর্চা করার কথা। কিন্তু বিজ্ঞান চর্চা, সাহিত্য চর্চা, দর্শন চর্চা তো মূলত সামাজিক দায়িত্ব না। তাই ভুল ঠিকের তর্ক অ্যাকাডেমিক ইন্টারেস্টে হতে পারে। ভুল ঠিক ধরার প্রেরণার জন্যে অ্যাবসলিউটিস্ট হতে হয় না। মানব কল্যাণের মহান ঝাণ্ডাবাহী হতে হয় না। তবে সে পথেও অনেকে ভুল ঠিকের তর্কে অবতীর্ণ হোন। অনেক তার্কিকেরই প্রেরণা দেখা যায় অন্যকে দায়িত্ববোধের শিক্ষা দেয়া। অ্যাকাডেমিক ইন্টারেস্টের মধ্যে সাধারণভাবে এই ধরনের প্রেরণা অনুপস্থিত।
@রূপম (ধ্রুব),
*নেসেসারি
শুরু হতেই আমার বক্তব্যও তাই ছিল। হুমায়ুন আহমেদের লিখা মানুষের হ্রদয়কে ছুঁয়ে যায়, মধ্যবিত্ত বাঙ্গালীর সংসারের অসামান্য চিত্র উনি অসামান্য ভাবেই তুলে ধরতে পারেন (আসলে এক কালে পারতেন) কিন্তু মানুষকে ভাল কিছু করতে, শেখাতে তার বই ব্যর্থ (তবে তার বই পড়ে ছোটবড় সবাই চমৎকার তর্ক আর কথার পিঠে কথা শিখতে পারে)। মানুষ আর লেখক হিসেবে উনি ভীষণ প্রভাবশালী। এই প্রভাবটাকে শুধু নিজের একাউন্ট বৃদ্ধির কাজে না লাগিয়ে উনি যদি এ মুহুর্তে তার কলমে লাগাতেন আমাদের সমাজের কতটুকু পরিবর্তন হত জানিনা, তবে সমাজের হাজার হাজার নতুন প্রজন্মের, তরুন সমাজের মানসিক জগতে বিশাল পরিবর্তন আসত। পুরুষ মাত্রই ভবঘুরে, উদাস হয়ে ঘুরে বেড়াবে আর নারী হবে চির রহস্যময়ী, চির মাদার তেরেসা এইসব উদ্ভট ভাবনা হতে অনেক নর নারী বের হয়ে আসতে পারত তার একটু ইশারায়।
উনি যদি এ মুহুর্তে যে কোন একটি বাংলাদেশ টেলিভিশন চ্যানেলের পর্দায় গিয়ে শুধু একটিবার বলেন যে আজ ছ’টার পর হতে আমাদের দেশে কেউ ধুমপান করবে না, তাহলে তার হাজারো ভক্ত সাথে সাথেই কিন্তু ধুমপান ছেড়ে দেবে। উনি যদি একটিবার বলেন আজ হতে হুমায়ুন আজাদ আর তসলিমা নাসরিনের বই না পড়ে কেউ মন্তব্য করবেন না, আগে পড়ুন, তারপর আপনার মতামত জানান, এটাই একটি রুচিশীল জাতির প্রকাশ…শত শত তরুন কি ঝাঁপিয়ে পড়বেনা হুমায়ুন আজাদ পড়তে? যারা আজ অব্দি কখনোই কোন নাস্তিকের বই পড়েনি, তবে তাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে ছাড়েনি।
হুমায়ুন আহমেদ তা করবেন কেন? উনি ধার্মিকদের নারাজ করতে ভয় পান। দেশে এত এত মেয়েদের মুখে এসিড নিক্ষেপ হচ্ছে, এত এত ধর্ষন, ওনার মতন একজন মানুষ ও লেখক যদি এসবের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতেন, তাকে অনুসরন করবার জন্য জন্য লক্ষ মানুষ ছিল সেটা তার পাঠক সংখ্যা দেখেই অনুমান করা যায়।
দায়িত্বের কথা হতে এত কথা বলা। সমাজের প্রতি কোন দায়িত্বটি উনি পালন করছেন? যেহেতু উনি আমাদের মতন সাধারন মানুষ নন, তার দায়িত্ববোধের ব্যাপারটিও অসাধারন হওয়া দরকার ছিল। পশ্চিবঙ্গের অধিকাংশ শিক্ষিত, রুচিশীল, সুস্থ সমাজ দেখার আশাবাদী শিল্পীরা তাদের শিল্পের মাধ্যমেই দায়িত্ব পালন করে যান (লোপামুদ্রা মিত্র- গান, অপর্না সেন- চলচ্চিত্র, সমরেশ মজুমদার, বিভুতিভুষন বন্দোপাধ্যায়, মহাশ্বেতা দেবী, – প্রবন্ধ, বই, ইত্যাদি এবং আরো অনেক অনেক শিল্পী)।
কিন্তু দেখা যাচ্ছে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার উৎসাহ, নিয়ম ভাঙ্গার সাহস, জাতিকে সার্বিকভাবে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবার আহবান এর কিছুই হুমায়ুন আহমদে করার চেষ্টা না করে উঠে পড়ে লেগেছেন জীন পরি, কুসংস্কার এসব জিইয়ে রাখতে।
****বিজ্ঞান বুঝিনা তাই বিজ্ঞানের ব্যাপারে কিছু না বলে যেটুকু কিছুটা বুঝি তাই নিয়েই মন্তব্য করলাম। প্রথম পর্বের চাইতে এ পর্বটি কেন যেন বেশি ভাল লাগল। ধন্যবাদ****
@ছিন্ন পাতা,
(Y) (Y) 🙂
@ছিন্ন পাতা,
@অঅসাধারন,
ভাল লাগার পরও বন্দুক!! খারাপ লাগলে কি অস্ত্র ব্যবহার হত সে প্রশ্ন আর করলাম না।
আপনার লেখাটা খুব ভাল লাগল। বিজ্ঞান চলবে বিজ্ঞানের নিয়মে, সেটাকে বিকৃত করাটা ঠিক নয়। না জানার কারনে ভুল হলে পরে তা শুধরে নিতে হয়। কল্পবিজ্ঞানের বেলায়ও এ নিয়ম মেনে চলা উচিত।
@শাখা নির্ভানা,
ধন্যবাদ পড়ার জন্য 🙂
প্রথমেই টেকি সাফি(সার্টিফিকেট নেম নাকি? :)) ) এবং শফিউল জয়কে অভিনন্দন জানাব এই সিরিজটির জন্য। এই লেখাটার আসলেই প্রয়োজন ছিল। আমি আমার চারপাশে দু ধরনের লোক দেখছি গত কয়েক দিন ধরে। এক দলে কাছে উনি অনেকটা দেবতা, উনার কোনো কাজেই ভুল ত্রুটি নেই। আর যদি বের করে দেখাই তাহলে বলা হবে- আসলে পরিপ্রেক্ষিত বুঝতে হবে! আরেকদল আছে যারা হুমায়ূন আহমেদের নাম শুনলেই নাক শিটকে বলে- ওহ! সেই অপন্যাসিক! তাদের কাছে হুমায়ূন আহমেদের সব কিছুই ফালতু।
এই সিরিজে হু আ এর যে লেখাগুলোর রেফারেন্স দেয়া হয়েছে সেগুলো পড়াই ছিল। বেশ কিছু লেখা পড়ে বিরক্ত হয়েছি। পাঠককে মুগ্ধ করার চেষ্টা সব গল্পকারই করেন। কিন্তু ইদানিং দেখছি তিনি তথ্য দিয়ে মানুষের মন ভোলানোর চেষ্টায় আছেন। কিন্তু তাঁর তো এটাও জানা উচিত ছিল যে,এই ইন্টারনেটের সহজলভ্যতার যুগে এ চেষ্টা কী হাস্যকর। তিনি অসাধারণ সব গল্প বলে আমাদেরকে মুগ্ধ করেছেন, হঠাৎ এ লাইনে কেন হাঁঠতে গেলেন সেটাই বুঝে উঠতে পারছি না।
এ পোস্টের আলোচনায় আসি। মৌলিক সংখ্যা কিংবা ফিবোনাচ্চি নিয়ে ভুলকে ওভারলুক করতে রাজী আছি। কিন্তু তিনি তাঁর বিভিন্ন লেখায় ফাইন টিউনিং আর ইন্টেলিজেন্ট ডিজাইন যেভাবে ঢুকিয়ে দিয়েছেন সেটা অবশ্যই আপত্তিকর। অনেক বইয়ে বিজ্ঞান আর সাইকোলজির নামে অনেক অপবিজ্ঞান আর কুসংস্কার প্রমোট করেছেন। তাই বলে তাঁর বই থেকে আনন্দ কম পাচ্ছি তা না, কিন্তু বিজ্ঞানের লেবেল লাগিয়ে কুসংস্কার বিক্রি করছেন দেখতে পেলে অবশ্যই আপত্তি জানাবো।
আশা করি হুমায়ূন-ভক্তরা উনার লেখাকে নির্মোহ চোখে দেখতে চেষ্টা করবে।
@নিটোল,
(Y) (Y)
@নিটোল,
সাফি আমার শর্টনেইম আর টেকি উপাধি পাইসিলাম একটা কন্টেন্ট রাইটিং সাইট থেকে। প্রায় ২/৩ বছর আগের কথা! তখন বাংলার মানুষ টেকি কথাটাই বুঝতো না…ঘন্টাখানেক ধরে বুঝাইতে হইতো, আর এখন পোলাপাইন ব্লগে নামটারে পচাইতে পচাইতে গন্ধ কইর্যা ফালাইসে 🙁
(Y)
আমিও ফিবোনাচ্চি নাম্বার ১ থেকেই জানতাম। যেহেতু তিনি একটি সংখ্যা পরে শুরো করেছে তাই ১১ তম সংখ্যাটা ঠিক থাকবেনা এটা তো সহজ কথাই।
@আসরাফ,
আমি উইকিকে রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করে তবেই বলেছি। মুক্তমনাতে গণিত বিশেষজ্ঞ আছেন যারা তারা এটা কনফার্ম করবেন আশা করছি। অথবা উনারা যদি দেখান যে আসলেই ১ থেকে হবে, তাহলে সংশোধন করে নিব।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ 🙂
@আসরাফ, ০ আর ১ দিয়েই বাকি সব সংখ্যাগুলো তৈরী হয়। এজন্য ফিবোনাচ্চি সিরিজে এ দুটো সংখ্যাকে ভিত্তি ধরা হয়েছে।
@নিটোল,
অবশ্যই ০,১ দিয়ে শুরো হবে।আমি উইকির লিংকটা দেখেই বলেছি ” জানতাম”। এটা আমার জানার গন্ডির মধ্যেই পরে। কিন্তু কবে যে ভুলে গেছি সেটাও ভুলে গেছি।
@এডমিন কো-অথার যোগ করবো কীভাবে? কো অথার সেট করার স্থানে কোন কিছুই খুজে পাচ্ছি না কো-অথার যোগ করার জন্য। স্ক্রীনশট দেখুন, সবকিছু ঠিকঠাক আছে নাকি কিছু একটা কাজ করছে না? http://awesomescreenshot.com/01flhy516
@টেকি সাফি,
সার্চের জায়গায় বাংলায় শফিউল টাইপ করতে থাকলেই দেখবা শফিউলের নাম চলে আসছে কো অথরের লিস্টে। সেখান থেকে সিলেক্ট করবা। চেষ্টা করে দেখো। না হলে আমি করে দিব নে। 🙂
তবে কো অথরের কোডে একটু সমস্যা আছে। শফিউলের প্রফাইলে তোমার ছবি চলে আসবে। কোন এক বিচিত্র কারণে এটা ঘটছে, সেটা সেটা এখনো ধরতে পারিনি আমি। তবে টেম্পরারি সলিউশন হল – শফিউল জয় যদি নিজের নামে কোন পোস্ট দেয় এমনিতেই সেটা ঠিক হয়ে যাবে। এটা অবইশ্য ভালই একদিক থেকে, জয়ের কাছ থেকে লেখা আসার তাগদা থাকবেপ্রোফাইল ঠিক করার জন্যই, কি বল।
দেখো লেখায় কো অথর সিলেক্ট করতে পার কিনা।
@অভিজিৎ,
কোন এক বিচিত্র কারণে ঘন্টাখানেক ওয়েট করেও কিছুই হচ্ছেনা। গুতাগুতি কম করিনি :-Y :-Y
একটু হেল্প করে এযাত্রা উদ্ধার করুন। শফিউল ফটাফট লিখতে পারবে, অন্তত একটা কবিতা ছেড়ে দিবে তাই ছবি নিয়ে ঝামেলা নাই। :)) আর ওর সাথে কথা হচ্ছিলো কাল, আধ্যাত্মবাদের ইতিহাস পাতিহাস নিয়ে কী যেন লেখার ইচ্ছা জানাইলো। আমি ইয়ার্কি করে কইলাম, আধ্যাত্ববাদ প্রচার করো যাও 😉 …ও সাথে সাথে বলে, গাধা পাইসো? বাকিসব বাদ, খালি আল্লাচালাইনার গদাম খাইতে খাইতে জানটাই শেষ হইয়া যাইবে!! :lotpot: :lotpot: :lotpot:
@টেকি সাফি,
করে দিছি, দুইটাতেই। দেখো, টাইটেলের নীচে –
লিখেছেন: টেকি সাফি এবং শফিউল জয়
শফিউলরে লেখা দিতে বলা জরুরী এখন।
@অভিজিৎ,
নিজের প্রোফাইলে সাফির ছবি দেখে কেমন পিকিউলিয়ার লাগছে ।:-( এখন নিজের গরজেই লেখা দিতে হবে ।
অভিজিৎ দা কে ধন্যবাদ কো-অথারের ব্যাপারটা ঠিক করে দেয়ার জন্যে । 🙂