আবুল কাশেম
সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১১
ইসলামি ক্রীতদাসত্ব, খণ্ড ১
[রচনাটি লেখক এম, এ, খানের ইংরেজি বই থেকে অনুবাদিত “জিহাদঃ জবরদস্তিমূলক ধর্মান্তরকরণ, সাম্রাজ্যবাদ ও ক্রীতদাসত্বের উত্তরাধিকার” গ্রন্থের ‘ইসলামি ক্রীতদাসত্ব’ অধ্যায়ের প্রথম অংশ এবং লেখক ও ব-দ্বীপ প্রকাশনের অনুমতিক্রমে প্রকাশিত হলো। এ পর্বে আলোচিত হয়েছেঃ ১) সূচনা, ২) দাসপ্রথাকে কোরানের অনুমোদন, ৩) নবির চর্চাকৃত দাসপ্রথার আদর্শ।]
লেখক এম, এ, খান
‘আল্লাহ দুই ব্যক্তির মাঝে আরেকটি কাহিনীর অবতারণা করেছেন: তাদের একজন ক্ষমতাহীন ও বোবা, যে তার প্রভুর উপর এক ক্লান্তিকর বোঝা; যেভাবেই তাকে চালনা করা হোক না কেনো, সে কোনোই কাজে আসে না: এরূপ মানুষ কি তার মতোই, যিনি ন্যায়বান ও সঠিক পথের অনুসারী?’ — (আল্লাহ, কোরান ১৬:৭৬)
‘(আল্লাহ) যেসব গ্রন্থভুক্ত লোককে ধরে এনেছেন…. এবং তাদের অন্তরে আতঙ্ক ঢুকিয়ে দিয়েছেন, তার কিছু (সাবালক পুরুষ) লোককে তোমরা হত্যা করেছো, কিছুকে (নারী ও শিশু) করেছো বন্দি।’ — (আল্লাহ, কোরান ৩৩:২৬-২৭)
‘কোরানে লেখা রয়েছে যে, মুসলিমদের কর্তৃত্ব অস্বীকারকারী সকল জাতিই পাপী; এ রকম লোকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা ও যুদ্ধে বন্দিদেরকে কৃতদাস বানানো মুসলিমদের ধর্মীয় অধিকার ও দায়িত্ব। এবং এরূপ যুদ্ধে নিহত প্রত্যেক মুসলমানই নিশ্চিত স্বর্গে প্রবেশ করবে।’ — (কী অধিকারে বার্বার মুসলিম রাষ্ট্রগুলো আমেরিকার নাবিকদেরকে ক্রীতদাস বানাচ্ছে, সে প্রশ্নের উত্তরে টমাস জেফারসন ও জন অ্যাডামস্কে বলেন লন্ডনস্থ ত্রিপোলির রাষ্ট্রদূত আবদ আল-রহমান, ১৭৮৬।)
সূচনা
ক্রীতদাসত্ব হলো একটি সামাজিক-অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান, যাতে ক্রীতদাস নামে কিছু মানুষ প্রভু বা মালিক হিসেবে পরিচিত অপর মানুষের সম্পদে পরিণত হয়। নিজস্ব স্বাধীনতা ও ইচ্ছা বিবর্জিত ক্রীতদাসরা তাদের মালিকের সুবিধা, আরাম-আয়েশ ও অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য অনুগত থেকে নিরলস কাজ করতে বাধ্য। সকল মানবাধিকার বঞ্চিত ক্রীতদাসরা তাদের প্রভুদের শর্তহীন সম্পত্তি। তারা মালিকের অস্থাবর সম্পত্তি মাত্র; তাদের মালিককে ছেড়ে চলে যাবার কোনো অধিকার নেই, কাজ করতে অস্বীকার করার উপায় নেই, নেই শ্রমের জন্য পারিশ্রমিক দাবির অধিকার। সমাজে ক্রীতদাসদের অবস্থান অনেকটা গৃহপালিত পশুর মতো: গরু, ঘোড়া ও অন্যান্য ভারবাহী পশুগুলোকে অর্থনৈতিক সুবিধা, যেমন গাড়ি-টানা ও হালচাষের জন্য যেরূপ কাজে লাগানো হয়, ক্রীতদাসদেরকেও তেমনিভাবে তাদের প্রভুদের লাভ, আরাম-আয়েশ ও অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য কাজে লাগানো হয়। দাস-ব্যবসা অন্যান্য বাণিজ্যিক লেনদেনের মতোই ক্রীতদাসকৃত মানুষকে পণ্যরূপে বেচাকেনার একটা আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থা বা রীতি। সংক্ষেপে: ক্রীতদাসত্ব হলো সবল কর্তৃক দুর্বলকে শোষণের একটি প্রথা, যার সুদীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে।
ইউরোপীয় শক্তি কর্তৃক আটলান্টিকের পারাপারের দাস-ব্যবসা এবং আমেরিকা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজে ক্রীতদাসদের অমানবিক শোষণ ও তাদের উপর অমর্যাদাকর আচরণের জন্য পশ্চিমারা সবার দ্বারাই বড় সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছে, বিশেষত মুসলিমদের দ্বারা। মুসলিমরা কথায় কথায় ইউরোপীয় দাস-ব্যবসার দিকে আঙ্গুল তোলে। তারা ঘন ঘন দাবি করে যে, ক্রীতদাসদেরকে শোষণ করেই আমেরিকার মতো দেশগুলো বিপুল সম্পদ-ভাণ্ডার গড়ে তুলেছিল, যা আজ তারা ভোগ করে চলছে। আমেরিকায় জন্ম হওয়া এক তরুণ মুসলিম লিখেছে:
‘জানেন কি, কীভাবে আমেরিকার দাস-শিকারিরা আফ্রিকায় গিয়ে কালো মানুষগুলোকে ধরে ক্রীতদাসরূপে আমেরিকায় নিয়ে আসে? আমেরিকার অর্থনৈতিক শক্তি ওসব ক্রীতদাসদের শ্রমের কাছে ব্যাপকভাবে ঋণী’ (ব্যক্তিগত যোগাযোগ)।
আটলান্টিক পারাপারের ৩৫০ বছরের দাস-বাণিজ্যকে ইতিহাসের সবচেয়ে খারাপ ও নিষ্ঠুরতম ক্রীতদাস ব্যবস্থা বলে আখ্যায়িত করে আমেরিকার ‘নেশন অব ইসলাম’-এর মিনিস্টার লুইস ফারাহ খান দাবি করেন:
‘অনেক শ্বেতাঙ্গ আমেরিকান জানে না যে, অতীতে আমাদের (কৃষ্ণাঙ্গ) উপর যা কিছু ঘটানো হয়েছিল, তার উপর ভিত্তি করেই আজ তারা সুবিধাজনক অবস্থানে আছে।’[১]
অধিকাংশ মুসলিম ভাবে যে, ইসলামের ইতিহাসে ক্রীতদাসত্বের কোনো চিহ্নই ছিল না। ইসলামে ধর্মান্তরিত এক অস্ট্রেলীয় আদিবাসী রকি ডেভিস বা শহীদ মালিক এ. বি. সি. রেডিও’কে বলেন:
‘ইসলাম নয়, খ্রিষ্টান ধর্মই ক্রীতদাসত্বের প্রতিষ্ঠাতা।’[২]
ভারতীয় মুসলিমরা যখন এ উপমহাদেশে প্রচলিত দাসপ্রথা সম্পর্কে আলোচনা করে, তারা কেবলই কীভাবে পর্তুগিজরা গোয়া, কেরালা ও বাংলার সমুদ্রোপকূলীয় অঞ্চল থেকে ভয়াবহ অবস্থায় দাস পরিবহন করতো সেসব লোমহর্ষক কাহিনীর কথা বলে। ইতিমধ্যে উল্লেখ করা হয়েছে যে, পাকিস্তানের ইতিহাস বইয়ে শেখানো হয়: ইসলামের আগে ছিল দাসপ্রথা ও শোষণ, যা ইসলাম আসার সঙ্গে সঙ্গে নিঃশেষ হয়ে যায়। তারা ভারতে মুসলিম হানাদার ও শাসক কর্তৃক ব্যাপকভাবে দাসপ্রথাচর্চার কথা কখনোই বলবে না।
ইসলামি শাসনের অধীনে ব্যাপকভাবে চর্চাকৃত দাসপ্রথা (যেমন ভারতে) সম্পর্কে মুসলিমদের এ নীরবতা সম্ভবত তাদের ঐতিহাসিক সত্য সম্বন্ধে অজ্ঞতার ফলশ্রুতি। ভারতের আধুনিক ইতিহাস লেখায় মুসলিম আক্রমণ ও শাসনকালে সংঘটিত নিষ্ঠুরতাকে ব্যাপকভাবে ঢাকা দেওয়া হয়। ইসলামের ইতিহাসের সঠিক চিত্রটির এরূপ বিকৃতিকরণ মুসলিমদের দ্বারা পরিচালিত ব্যাপক ক্রীতদাসত্ব ও দাস-ব্যবসা সম্পর্কে তাদের অজ্ঞতাকে জোরদার করে ও ভুল ধারণা সৃষ্টি করে। এ পুস্তকের আগাগোড়া বর্ণনায়, দুঃখজনকভাবে হলেও ইসলামের কর্তৃত্বের গোটা ইতিহাসে সর্বত্রই যে দাসপ্রথা একটা বিশিষ্ট প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেয়েছিল তা দেখানো হয়েছে। এর কিছু অনন্য বা বিশেষ বৈশিষ্ট্যও ছিল, যেমন ব্যাপকহারে উপপত্নীকরণ, খোজাকরণ ও ‘গিলমান’ চর্চা (নিচে বর্ণিত)।
দাসপ্রথাকে কোরানের অনুমোদন
দাসপ্রথাকে ইসলামে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছে নিম্নোক্ত কোরানের আয়াতটি, যার মাধ্যমে আল্লাহ ন্যায়বান ও সত্যপন্থী মুক্ত মানুষ বা প্রভুদেরকে বোবা, অকেজো ও বোঝাস্বরূপ ক্রীতদাসদের থেকে পৃথক করেছেন:
‘আল্লাহ দুই ব্যক্তির মাঝে আরেকটি কাহিনীর অবতারণা করেছেন: তাদের একজন ক্ষমতাহীন ও বোবা, যে তার প্রভুর উপর এক ক্লান্তিকর বোঝা; যেভাবেই তাকে চালনা করা হোক না কেনো, সে কোনোই কাজে আসে না: এরূপ মানুষ কি তার মতোই, যিনি ন্যায়বান ও সঠিক পথের অনুসারী? (কোরান ১৬:৭৬)
আল্লাহ ক্রীতদাসদেরকে মর্যাদায় সমঅংশীদার ও তাদের সম্পদের ভাগীদার করে নেয়ার ক্ষেত্রে বিশ্বাসীদের সতর্ক করে দেন, পাছে অন্যদের মত ক্রীতদাসদেরকেও একইভাবে ভয় করতে হয়:
তোমরা কি তোমাদের দক্ষিণ হস্তের মালিকানাধীন লোকদেরকে (অর্থাৎ ক্রীতদাস বা বন্দি) আমাদের প্রদত্ত সম্পদের সমঅংশীদারী করবে? তোমরা কি তাদেরকেও সেরূপ ভয় করবে, যেমন ভয় করো পরস্পরকে? (কোরান ৩০:২৮)
এ আয়াতটির ব্যাখ্যায় মওলানা আবুল আলা মওদুদি ক্রীতদাসদেরকে সম্মান ও ধনসম্পদে সমান গণ্য করাকে ইসলামে সবচেয়ে ঘৃণ্য শিরক বা অংশীদারিত্বের মতো কাজ বলে মনে করেন।[৩] অন্যত্র আল্লাহ স্বয়ং তার স্বর্গীয় পরিকল্পনার অংশরূপেই কম আনুকূল্যপ্রাপ্ত ক্রীতদাসদের চেয়ে কিছু মানুষকে, অর্থাৎ প্রভু বা দাসমালিকদেরকে, বেশি আশীর্বাদপুষ্ট করেছেন বলে দাবি করেন। তিনি মুসলিমদেরকে সতর্ক করে দিয়েছেন যাতে তারা ক্রীতদাসদেরকে তাঁর দেওয়া উপহার বা প্রতিদানে সমান অংশীদার না করে। যারা ক্রীতদাসদেরকে নিজেদের সমান মর্যাদার ভাববে, আল্লাহ তাদেরকে সাবধান করে দেন এটা বলে যে, সেরকম ভাবলে আল্লাহকে অস্বীকার করা হবে:
জীবনধারনের নিমিত্তে আল্লাহ তোমাদের কারো কারো উপর অন্যদের তুলনায় অধিক মুক্তহস্তে তাঁর উপহার বা প্রতিদান বর্ষণ করেছেন। অধিক আনুকূল্যপ্রাপ্তরা তাদেরকে দেওয়া সে উপহার তাদের দক্ষিণ হস্তে ধারণকৃতদের (দাসদের) উপর বর্ষণ করবেনা, যাতে তারা এক্ষেত্রে সমপর্যায়ের হতে পারে। তারা কি আল্লাহর আনুকূল্য অস্বীকার করবে? (কোরান ১৬:৭১)
আল্লাহ শুধু দাসপ্রথাকে অনুমোদনই দেননি, তিনি নারী-দাস বা দাসীদেরকে যৌনসম্ভোগ হিসেবে ব্যবহারের জন্য দাস-মালিকদেরকে স্বর্গীয়ভাবে আশীর্বাদপুষ্টও করেছেন (মুসলিম পুরুষরাই কেবল দাস-মালিক হতে পারে):
তারা তাদের গোপনাঙ্গকে রক্ষা করবে, তবে তাদের স্ত্রীদের ও দক্ষিণ হস্তের মালিকানাধীনদের (ক্রীতদাসীদের) বাদ দিয়ে−এদের সাথে (যৌন-সহবাসে) দোষের কিছু নেই। (কোরান ২৩:৫-৬)
সুতরাং বন্দি ও ক্রীতদাসদের মধ্যে নারীরা থাকলে মুসলিম পুরুষরা তাদের স্ত্রীদের সঙ্গে যেরূপে যৌনক্রিয়া করে, তাদেরকেও সেরূপে ভোগ করার স্বর্গীয়ভাবে অনুমোদিত অধিকার পেয়েছে। আল্লাহর এ রায় ইসলামে যৌনদাসীত্ব বা উপপত্নী প্রথা প্রতিষ্ঠা করে, যা উপনিবেশ-পূর্ব মুসলিম বিশ্বে ব্যাপক রূপ লাভ করেছিল এবং বিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগ পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। যদিও বৈধ বিবাহের ক্ষেত্রে একজন পুরুষের জন্য একই সময়ে চারজন স্ত্রী রাখার বিধান রয়েছে (কোরান ৪:৩), কিন্তু যৌনদাসী রাখার বেলায় সংখ্যাগত এরূপ কোনো সীমাবদ্ধতা নেই।
আল্লাহ মুসলিমদেরকে যৌনকর্মে ব্যবহারের জন্য অবিশ্বাসীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে নারী ক্রীতদাস সংগ্রহের স্বর্গীয় অনুমোদনও দিয়েছেন এভাবে:
হে নবি! অবশ্যই আমরা তোমাদের জন্য তোমাদের স্ত্রীদের বৈধ করেছি, যাদেরকে তোমরা যৌতুক প্রদান করেছো। এবং যাদেরকে তোমাদের দক্ষিণ হস্ত দখল করে রেখেছে, তাদের মধ্য থেকে আল্লাহ যাদেরকে যুদ্ধবন্দিরূপে তোমাদেরকে প্রদান করেছেন। (কোরান ৩৩:৫০)
মুসলিমরা আটককৃত ক্রীতদাস নারীদের সঙ্গে যৌনকর্মে লিপ্ত হতে পারে, যদি তারা বিবাহিতও হয়; কিন্তু কোনো বিবাহিত মুক্ত মুসলিম নারীর সঙ্গে নয়:
তোমাদের দক্ষিণ হস্তের মালিকানাধীন নারীরা ব্যতীত যারা ইতিমধ্যে বিবাহিতা, তারা অবশ্যই নিষিদ্ধ… (কোরান ৪:২৪)
কোরানে আরো অনেক আয়াত রয়েছে যাতে ক্রীতদাসের কথা বলা হয়েছে এবং তাদেরকে যুদ্ধের মাধ্যমে আটক বা সংগ্রহ করার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এরূপে পবিত্র কোরানে উপস্থাপিত ইসলামি ঈশ্বরের স্বর্গীয় আদেশ অনুযায়ী মুসলিমরা ক্রীতদাস রাখার অনুমোদন প্রাপ্ত। যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে তারা ক্রীতদাস যোগাড় করতে পারে, ক্রীতদাসীদের সঙ্গে যৌন-সংসর্গে লিপ্ত হতে পারে ও অবশ্যই তাদেরকে নিজেদের খুশি মতো কাজে লাগাতে পারে। মুসলিমদের জন্য নারী ক্রীতদাসদের সঙ্গে যৌনকর্মে লিপ্ত হওয়া তাদের বিবাহিতা স্ত্রীর সঙ্গে যৌনকর্মের মতই বৈধ। প্রকৃতপক্ষে দাসপ্রথা ইসলামে অতি আকাক্সিক্ষত একটি স্বর্গীয় প্রথা, কেননা আল্লাহ বহু আয়াতে বারংবার এ ‘স্বর্গীয় অধিকার’ সম্পর্কে মুসলিমদেরকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন।
নবির চর্চাকৃত দাসপ্রথার আদর্শ
দাসপ্রথায় লিপ্ত হতে মুসলিমদেরকে বারংবার স্মরণ করিয়ে দিতে আল্লাহ শুধু প্রাণান্তই হননি, কীভাবে অবিশ্বাসীদেরকে দাস করতে হবে সে ব্যাপারে নবি মুহাম্মদকে পরিচালনারও উদ্যোগ নিয়েছেন। যেমন নিচের আয়াতে আল্লাহ বলেন:
এবং তিনি (আল্লাহ) ধর্মগ্রন্থের সেসব লোকদেরকে (বানু কোরাইজা ইহুদি) বের করে এনেছেন, যারা তাদের ঘাঁটিতে বসে থেকে তাদেরকে (কোরাইশ) সহায়তা করেছিল, এবং আতঙ্ক ঢুকিয়ে দিয়েছেন তাদের প্রাণে। (তাদের) কিছু সংখ্যককে (বয়স্ক পুরুষ) তোমরা বধ করেছো, কিছু সংখ্যককে (নারী ও শিশু) করেছো বন্দি… (কোরান ৩৩:২৬-২৭)
এ আয়াতটিতে আল্লাহ বানু কোরাইজা ইহুদিদেরকে নিজস্ব বস্তির মধ্যে বসে থেকেই মুসলিমদের বিরুদ্ধে মক্কার কোরাইশদেরকে সমর্থন করার অভিযোগে অভিযুক্ত করেছেন। এ অবান্তর অভিযোগের ভিত্তিতে আল্লাহ অনুমোদন দেন: ইহুদি গোত্রটির বয়স্ক পুরুষদেরকে হত্যা করতে হবে এবং অবশিষ্ট নারী ও শিশুদের ক্রীতদাস বানাতে হবে। নবি যথাযথরূপে সে আদেশ পালন করেন এবং তাঁর অনুসারীদের মাঝে ক্রীতদাসকৃত নারী ও শিশুদেরকে বিতরণ করে দেন ও এক-পঞ্চমাংশ নিজের ভাগ হিসেবে রাখেন। বন্দি নারীদের মধ্যে যারা তরুণী ও সুন্দরী তাদেরকে যৌনদাসী করা হয়। নবি নিজে যৌনদাসী হিসেবে ১৭-বছর-বয়স্কা সুন্দরী রায়হানাকে গ্রহণ করেন, যার স্বামী ও পরিবারের সদস্যরা সে হত্যাকাণ্ডে নিহত হয়েছিল, এবং সে রাতেই তিনি তাকে বিছানায় নেন যৌন-সহবাসে লিপ্ত হতে।[৪]
ঐ বছরই খাইবার ও বানু মুস্তালিকের ইহুদিদেরকে আক্রমণ ও পরাজিত করার পর মুহাম্মদ তাদের নারী ও শিশুদেরকে ক্রীতদাসরূপে উঠিয়ে নিয়ে যান। অন্যান্য অনেক আক্রমণে নবি ও তাঁর অনুসারীরা পরাজিতদের নারী ও শিশুদেরকে একইভাবে ক্রীতদাসরূপে কব্জা করেছিল। সুতরাং অবিশ্বাসীদের উপর নিষ্ঠুর আক্রমণ চালিয়ে পরাজিত করার পর তাদের নারী ও শিশুদেরকে ক্রীতদাসকরণ মুহাম্মদের যুদ্ধের মডেল বা আদর্শ কর্মকাণ্ডে পরিণত হয়, যা উপরোক্ত আল্লাহর নির্দেশের বাস্তবায়ন মাত্র। নবি কিছু ক্রীতদাসকে বিক্রি করেছিলেন এবং তাদের কিছু সংখ্যককে মুক্তিপণ আদায়ের জন্য জিম্মি হিসেবে ব্যবহার করতেন। নারী বন্দিদের মধ্যে সুন্দরী যুবতীরা যৌনদাসী হতো।
ইসলামি চিন্তা-চেতনায় খাঁটি মুসলিম জীবনের কেন্দ্রীয় বিষয় যেহেতু তাদের কর্ম ও কৃতিত্বে মুহাম্মদের সমকক্ষ হওয়ার প্রয়াস, সে কারণে মুসলিমরা যথার্থরূপেই তাঁর দাসপ্রথা চর্চার এ মডেলকে (ক্রীতদাসকরণ, দাস-বাণিজ্য ও দাস-উপপত্নীকরণ) আঁকড়ে ধরে থেকেছে; এবং এ প্রক্রিয়া পরবর্তী শতাব্দীগুলোত ইসলামিক শাসনাধীনে চিরন্তনরূপে বহাল থাকে। খাইবার বা বানু কুরাইজার সঙ্গে যুদ্ধে মুহাম্মদের আচরণ ক্রীতদাস আটককরণের মানদণ্ডে পরিণত হয়। এবং সেটাই মধ্যযুগের ইসলামি রাজত্বে ক্রীতদাসকরণ, যৌনদাসীত্ব ও দাস-বাণিজ্যের ব্যাপক প্রসারের জন্য দায়ী। মুহাম্মদের মৃত্যুর পর মুসলিমরা কোরান ও সুন্নতের অনুমোদন-অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ইসলামের প্রসার ও শাসন সম্প্রসারণে বিশ্বজয়ের নিমিত্তে পবিত্র ধর্মযুদ্ধের এক লাগামহীন কর্মকাণ্ড শুরু করে। আরবাঞ্চলে ইসলামের বিস্ফোরণ ঘটার সাথে সাথে মুসলিম হানাদাররা পরাজিত অবিশ্বাসীদের নারী ও শিশুদেরকে ব্যাপক সংখ্যায় ক্রীতদাসরূপে আটক করণে দক্ষ হয়ে উঠে।
ইসলামি চিন্তাধারায় (ইতিমধ্যেই উল্লেখিত) ইসলাম-অতীত ও ইসলাম-বহির্ভূত সভ্যতা হলো ‘জাহিলিয়া’ বা ভ্রান্ত প্রকৃতির, যা ইসলামের আগমনে অকার্যকর ও বাতিল হয়ে গেছে। ইসলাম একমাত্র সত্যধর্ম হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে কেবলমাত্র মুসলিমরাই প্রকৃত সত্যের অধিকারী। তাদের চিন্তায়, বার্নার্ড লুইস উল্লেখ করেছেন,
‘ইসলামের সীমানা ও ধর্মের বাইরের জগতে কেবল বিধর্মী ও বর্বররাই বসবাস করতো। তাদের কেউ কেউ কোনো প্রকারের ধর্ম ও সভ্যতার একটি আভার অধিকারী ছিল; অবশিষ্ট বহু-ঈশ্বরবাদী ও পৌত্তলিকদেরকে প্রধানত ক্রীতদাসের উৎসরূপে দেখা হয়।’[৫]
মুসলিমরা এত বেশি পরিমাণে মানুষকে ক্রীতদাস বানিয়েছে যে, দাস-ব্যবসা একটা বিস্ফোরিত ব্যবসায়িক উদ্যোগে পরিণত হয়: মুসলিম বিশ্বের সর্বত্র বাজারগুলো দাসে ভরে উঠে। সুতরাং, লিখেছেন অধ্যাপক লাল:
‘ব্যাপকহারে দাস-বাণিজ্যের সৃষ্টি ও মুনাফার উদ্দেশ্যে অন্যান্য ব্যবসার মতো দাস-ব্যবসা চালিত করার কৃতিত্ব ইসলামেরই।’[৬]
[আগামী পর্বে আলোচিত হবেঃ প্রাচীন বিশ্বে দাসপ্রথার চর্চা]
সুত্রঃ
1. Farra khan L, What does America and Europe Owe? Final Call, 2 June 2008
2. ABC Radio, Aboriginal Da’wah- “Call to Islam”, 22 March 2006; http://www.abc.net.au/rn/talks/8.30/relrpt/stories/s1597410.htm
3. Famous scholar Abu Ala Maududi in his interpretation of this verse notes: “When you do not make your own slaves partners in your wealth, how do you think and believe that Allah will make His creatures partner in His Godhead?” (Maududi AA, Towards Understanding the Quran, Markazi Muktaba Islami Publishers, New Delhi, Vol. VIII). In other words, associating partners with Allah, which is the most abhorrent thing to do in Islam, is tantamount for a man to take his slaves as equal partner.
4. Ibn Ishaq, The Life of Muhammad, Oxford University Press, Karachi, p. 461-70
5. Lewis B (1966), The Arabs in History, Oxford University Press, New York p. 42
6. Lal K S (1994), Muslim Slave System in Medieval India, Aditya Prakashan, New Delhi, p. 6
—-
দাদা, একটা কথা কইেত চাই- আিম যতটুকু পড়িছ- ইসলােমর যতটুকু উন্নিত আমরা েচােখ েদিখ তার েমন অংশ েবাধহয় ইরােনর তথা পারেস্্যর দান। ইরান একসময় জরাথূিষ্ট্রয়ান িছল যা একটা diverted form of Aryan culture. ওেদর ধর্ম অেনক উন্নত িছল। Maximum people was bound to take the Islam. They are basically converted Zorastrians. May be that’s why Shia sect of Islam developed from there. After 1000 A.D. first time in Iran’s history Zorastrian became minority. Their culture was so rich that we can compare them with Greek, Roman, Chinese and Ancient Indian culture only. Farsi or Parsi was their own language and the official language Mughal Samrat of Delhi . In that way Farsi speaking people used to get good job in Govt. In the same way English speaking /knowing people were getting good job during the British Raj in India.
In that way Farsi got some long lasting impression in Indian language. Whatever the discovery, architecture done by the Muslims are maximum came from the brain of so called দাস in Islam.
Again sorry for my post, if I have done something wrong.
Thanks.
লেখাটি ভালো লেগেছে। লেখকে ধন্যবাদ। তবে যারা ইসলামের ইতিহাসের কথা বলছেন তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলছি। ইসলামের ইতিহাস তো জঘন্য ইতিহাস, কেবল যুদ্ধ আর যুদ্ধ। যতোদূর জানি, মোহাম্মদ ২৭টি যুদ্ধ করেছে। আর এ যুদ্ধগুলোই তো ইসলামের ইতিহাসের মূল বিষয়। যা পড়ে মুসলমানেরা পিএইডি ডিগ্রি লাভ করে। যতোদূর জানা যায়, বাবরি মসজিদের স্থানে তো একসময় হিন্দুদের মন্দির ছিলো, যেখানে বাবর মসজিদ নির্মাণ করেছিলো। ভারতবর্ষে মুসলমান শাসনের সময় কি মন অত্যাচার করেছে এর শাসকরা? সম্রাট আওরঙ্গজেব নাকি হিন্দু-ব্রাহ্মণদের পৈতা মেপে সমপরিমাণ নাস্তা করতো (পৈতা দেখে বুঝতো তার সৈন্যরা কতো লোককে হত্যার ভয় দেখিয়ে মুসমান করেছে)। মুসলমান শাসকরা ভারতে আসার সাথে সাথে যে অত্যাচার হিন্দু-বৌদ্ধদের উপর চলছিলো তার সত্যতা পাওয়া যায় আলডাস হাক্সলির লেখায়। তিনি বলেছেন, “সতের শতকের প্রথমার্ধে চীনা পরিব্রাজক হিউয়েন সাঙ তাঁর ভারতে চৌদ্দ বছর অবস্থানের একটা তথ্যমূলক বিবরণ লিপিবদ্ধ করে গেছেন। তাঁর লেখা থেকে পরিষ্কার ধারণা করা যায় যে, কোন রকম হিংসাত্মক কার্যকলাপ না ঘটিয়েই হিন্দু ও বৌদ্ধরা পাশাপাশি বসবাস করেছে। উভয় সম্প্রদায়ই একে অপরকে ধর্মান্তরিত করবার চেষ্টা করেছে। কিন্তু তা করেছে যুক্তি প্রদর্শন ও অনুরোধের মাধ্যমে, শক্তি প্রয়োগের সাহায্যে নয়। ইনকুইজিশনের মতো কোন ব্যাপারে হিন্দুধর্ম ও বৌদ্ধধর্ম কোনটাই অভিশপ্ত নয়, আলবিজেনসীয় ধর্মযুদ্ধের দু®কৃতিসমূহের মত বা ষোঢ়শ ও সপ্তদশ শতকের ধর্মযুদ্ধের অপরাধমূলক উম্মাদনাসমূহের অনুরূপ ব্যাপারে দোষী সাব্যস্তও হয়নি। ভারত অভিযানকারী মুসলমানেরা এমন এক আল্লাহ্র ধারণা সাথে নিয়ে এসেছিলেন যিনি কোন সামরিক বাহিনীভুক্ত ব্যক্তির মত নন বরং বাহিনীর প্রধান সেনাপতির মত। বৌদ্ধ ও হিন্দুদের সার্বিক ধ্বংসযজ্ঞের সাথে এই সার্বভৌম সত্তার প্রতি ভক্তি বিজড়িত। অনুরূপভাবে খ্রীস্টান ধর্মের ব্যক্তগত ঈশ্বরের প্রতি ‘ভক্তি’র সাথে সংশ্লিষ্ট হয়ে আছে এ ধর্মের সমগ্র ইতিহাসের প্রোপটে সংঘটিত পৌত্তলিকদের সার্বিক নিধন এবং ধর্মদ্রোহীদের উপরে নিষ্ঠুর নিপীড়ন ও হত্যার ঘটনাবলী।”
@কফিল কাঙ্গাল,
ধন্যবাদ স্বল্প পরিসরে এতগুলো তথ্য সুন্দরভাবে তুলে ধরার জন্য। এম, এ, খানের ও জওহেরলাল নেহরুর বই পড়ে আমারও ঠিক আপনার মত ধারনা হয়েছে ভারতবর্ষে হিন্দু-বৌদ্ধ ধর্মের দ্বন্দ্ব সম্পর্কে। দু’টো ধর্মের একে অপরকে ধর্মান্তরিত করার প্রতিযোগিতায় বর্বর শক্তি অনুপস্থিত ছিল। অথচ আমি কিছু মার্ক্সিস্ট/পোস্ট-মডার্নিস্ট বাঙ্গালী নাস্তিককে দেখেছি, যারা বলেঃ হিন্দুরা ক্ষমতা পুনর্দখলের পর বৌদ্ধদের উপর অন্যায়-অত্যাচারে রেলগাড়ী চালায়, যায় কারণে মুসলিমরা ভারতবর্ষে আসতেই বৌদ্ধরা প্রতিযোগিতায় নেমে পড়ে ইসলামের শান্তির পতাকাতলে আশ্রয় নিতে।
@অবিশ্বাসী,
ইসলামপূর্ব যুগে ভারতে হিন্দু বৌদ্ধদের মধ্যে কোন ভায়লেন্স হয়নি এটা ঠিক না। বৌদ্ধ সম্রাট অশোক একবার একদিনে ১৬০০০ জৈন ধর্মাবলম্বীকে হত্যা করেছিলেন। হিন্দু রাজা শশাঙ্ক গয়ার বোধিবৃক্ষ কেটে ফেলেছিলেন। বাংলার সেন রাজারা বৈদিক বর্ণপ্রথাকে আবার শক্তিশালী করে তুলেছিলেন ও বৌদ্ধদেরকে সামাজিকভাবে হেয় করে তুলেছিলেন। এসব তথ্য প্রখ্যাত ঐতিহাসিক রমেশ চন্দ্র মজুমদার রচিত “বাংলাদেশের ইতিহাস(প্রাচীন যুগ)” গ্রন্থে বিস্তারিত আছে যদিও তিনি শশাঙ্কের ব্যাপারটা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।
আপনার এ অভিযোগটি সত্যি। মার্ক্সিস্ট ঐতিহাসিকরা ভারতে ইসলাম ও মুসলিম শাসকদের অপকীর্তির কথা চেপে গেছেন ও তাদের মহিমান্বিত করার চেষ্টা করেছেন। বৈদিক জাতিভেদ ভারতে ইসলামের প্রসারের জন্য দায়ী হলেও এটা মুদ্রার একপিঠ মাত্র। বাংলায় বৌদ্ধধর্ম প্রায় সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় ইসলামি আগ্রাসনের ফলে। বাঙালি মুসলমানের হিরো বখতিয়ার খিলজি বাংলা ও বিহারের প্রায় সবকটি বৌদ্ধ মঠ ধ্বংস করেন যার মধ্যে নালন্দা,তক্ষশীলা,অদন্তপুরির মত বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়ও ছিল। তিনি নিরীহ ভিক্ষু ও ছাত্রদের গণহারে হত্যা করেন ও লাইব্রেরিগুলো ধ্বংস করেন। বখতিয়ার একজন বর্বর ও ঠাণ্ডা মাথার খুনি ছিলেন। ভারতের অন্যান্য মুসলিম শাসকদের অপকীর্তির বর্ণনা দিতে গেলে আলাদা লেখা হয়ে যাবে। ইসলাম ভারতের সভ্যতা ও সংস্কৃতির ওপর বড় আঘাত হেনেছিল।
@আলোকের অভিযাত্রী, ধন্যবাদ বেশকিছু ভাল তথ্য হাজির করার জন্য। বৌদ্ধ-হিন্দুদের মাঝে সহিংসতা হয়নি এমনটি কেউ বলে না। বাংলার বৌদ্ধ পাল রাজারা যখন সমগ্র ভারতবর্ষ সহ আফগানিস্তান পর্যন্ত সাম্রাজ্য বিস্তার করে, তা সহিংসতা ও শক্তির প্রয়োগ ছাড়া হয়েছে কি? তেমনিভাবে পরে বৌদ্ধদের হাত থেকে হিন্দুদের ক্ষমতা দখলেও সহিংসতা হয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছেঃ ইসলামের মত তলোয়ারের ডগায় ধর্মান্তর করা হয়েছে কিনা, এবং হয়ে থাকলে কতটা হয়েছে। আরেকটা ব্যাপার লক্ষ্য করতে হবে যে, বৌদ্ধ ধর্ম প্রচারকরা বা ভিক্ষুরা রাষ্ট্রযন্ত্রের সাথে হাত মিলিয়ে কাজ করত। কাজেই, হিন্দুরা ক্ষমতা দখলের পর ভিক্ষুরা রাষ্ট্রিয় অনুগ্রহ থেকে বঞ্চিত হয়। সে কারণে হিন্দু শাসকদের সাথে ভিক্ষুদের একটা ধর্মীয়-রাজনৈতিক প্রকৃতির দ্বন্দ্ব হয়ে থাকা স্বাভাবিক — বিশেষত তারা যখন ধর্মান্তরে খুবই তৎপর ছিল; বৌদ্ধ মঠগুলো নতুন হিন্দু শাসকদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী আন্দোলনের কেন্দ্র হয়ে উঠার সম্ভাবনা রয়েছে। সেসব দ্বন্দ্ব যে কেবলই হিন্দুত্ববাদ দ্বারা উৎসাহিত হয়েছিল এমনটি ভাবার অবকাশ কতটা আছে, সেটাও আমাদেরকে বিবেচনা করতে। হিন্দু-বৌদ্ধ দ্বন্দ্ব বা সংঘাতের পীছনে কি motive কাজ করেছিল — সে সম্পর্কে বিস্তারিত ঐতিহাসিক তথ্য আছে কি? অশোক একদিনে ১৬০০০ জৈন ধর্মাবলম্বীকে হত্যা করেছিলেন তারা হিন্দু ধর্মগ্রহণে অস্বীকৃতি জানানোর কারণে কি? রমেশ চন্দ্র মজুমদারের “বাংলাদেশের ইতিহাস(প্রাচীন যুগ)” বইটি আমার পড়া হয়নি। যোগাড় করার চেষ্টা করব। আমার উপরোক্ত প্রশ্নগুলোর জবাব হয়ত পাওয়া যাবে বইটিতে।
@অবিশ্বাসী,
আপনি বোধয় আমার মন্তব্যটি ভালভাবে পড়েননি। আমি বলেছি “বৌদ্ধ সম্রাট অশোক”। অশোক যে বৌদ্ধধর্মে কনভার্ট হয়েছিলেন এটা তো জানা থাকার কথা। বৌদ্ধ অশোক অন্যকে হিন্দু না হওয়ার অপরাধে মারবেন কেন? ঘটনাটি হচ্ছে অশোক শুনতে পান যে ওই শহরের জৈনরা একটি ছবি একেছে যাতে ছিল যে বুদ্ধ মহাবীরের চরণে পতিত। এজন্য তিনি ওই হত্যাকাণ্ডের নির্দেশ দেন।
এই দ্বন্দ্বের জন্য মূলত ব্রাহ্মণ্যবাদই দায়ী কারণ বুদ্ধ বেদের বর্ণাশ্রম ধর্ম ও জাতিভেদ অস্বীকার করেছিলেন। ফলে বৌদ্ধধর্মে কোন জাতি প্রথা নেই ও তারা ব্রাহ্মণের শ্রেষ্ঠত্বও স্বীকার করেনা। এজন্য হিন্দু রাজারা ক্ষমতায় থাকলে ব্রাহ্মণরা নিম্নবর্ণের হিন্দু যারা বৌদ্ধ হয়েছিল তাদের সামাজিকভাবে একঘরে করে রাখত।
“বাংলাদেশের ইতিহাস” বইটি তিন খণ্ডে বিভক্ত। প্রাচীন, মধ্য ও আধুনিক যুগ। আমার কাছে বইগুলোকে যথেষ্ট তথ্যবহুল ও নিরপেক্ষ লেগেছে। ভদ্রলোক অনেক নিরপেক্ষভাবে প্রত্যেক শাসনের ভাল-মন্দ দিকগুলি তুলে ধরেছেন। পড়ে দেখতে পারেন। আশা করি ভাল লাগবে।
@আলোকের অভিযাত্রী, আমি ধারনা করেছিলাম অশোক বৌদ্ধ হওয়ার আগে হত্যাকাণ্ডটা ঘটিয়েছিলেন — বিশেষত সহিংসতা থেকে সরে দাড়াতেই তিনি মূলত বৌদ্ধ ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। তার মানে বৌদ্ধরাও তুলশী পাতা ছিলেন। আপনার বাকী তথ্যগুলো আমার ধারনার framework-এর মধ্যেই পড়ে। বুঝা যাচ্ছে হিন্দু শাসকদের সাথে বৌদ্ধদের একটা রাজনৈতিক-ধর্মীয় মিশ্র ধরনের একটা দ্বন্দ্ব হয়েছিল — যার কারণে হিন্দু রাজারা বৌদ্ধদেরকে কোণঠাসা করার চেষ্টা করেছে। সে সমাজের পরিপ্রেক্ষিতে সেটা অবিশ্বাস্য বা পুরোপুরি অনাকাংখিত নয়।
@আলোকের অভিযাত্রী,
এই বইটি কোথায় পাওয়া যেতে পারে অথবা অন লাইনে কোথায় পড়া যেতে পারে জানাবেন কী?
আমি এই বইটি কেনা এবং পড়ার ব্যাপারে অতিশয় আগ্রহী। প্রকাশকের নাম জানালে বাধিত হব।
@আবুল কাশেম,
বইয়ের প্রকাশকের নাম শ্রীসুরজিতচন্দ্র দাস। জেনারেল প্রিন্টার্স অ্যান্ড পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড। ঠিকানা- ১১৯,লেনিন সরণী, কলকাতা -৭০০০১৩। আমি বইগুলো কিনিনি। বইগুলো second hand। একজনের কাছ থেকে বেশ আগে পেয়েছিলাম। বইটি সম্ভবত নেটে পাওয়া যাবে না। নীলক্ষেতে পুরনো বইয়ের দোকানে খোঁজ করলে হয়ত মিলতে পারে।
@আলোকের অভিযাত্রী,
অশোকের এই ব্যাপারটা প্রথম শুনলাম। রেফারেন্স দেবেন একটা?
@রৌরব,
আমি বাংলাদেশের ইতিহাস(প্রাচীন যুগ) বইটির সপ্তম সংস্করণের ২৩ পৃষ্ঠা থেকে নিচের অংশটুকু তুলে দিচ্ছি।
হুমায়ুন আহমেদ কে নিয়ে মাতামাতি করতে গিয়ে এই লেখাটায় কিছু বলা হয়নি।
অনেক দিন পরে একটা ইন্টারেস্টিং লেখা পড়লাম।
দুই দিন NAYAGRA FALLS ভ্রমন শেষে গত সন্ধায় আমরা (পরিবার সদস্য ও বাংলাদেশ হতে VISITING VISA য় আগত কিছু আত্মীয়)বাসায় ফিরলাম। এখান থেকে দুরত্ব ৪০০ মাইলের উর্ধে ও ৮ ঘন্টার উর্ধে যাত্রা পথ। আমাদের কিছু কিছু পরিবার সদস্য CUSTOMS OFFICE এর অনুমতি লয়ে FALLS এর কানাডার অংশ টুকু ও দেখে আসেন। এখানকার প্যাকেজের সবগুলি অংশ দর্শন করি।
DISCOVERY অংশ দর্শন করতে গেলে জানতে পারি এই জল প্রপাতে প্রতি সেকন্ডে ৩৬০০ মিলিয়ন গ্যালন প্রচন্ড গতিতে পতি হইতেছে। এভাবে প্রায় ১৩০০০ বৎসর পূর্ব থেকে সৃষ্টি হয়ে অনবরত চলতেছে।
ক্যানাডা সাইটে, ক্যানাডা সরকার মুল জলরাসির ২০% এর পচন্ড স্রোত ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করিয়া জল বিদ্যুৎ উৎপাদন করিয়া দেশের চাহিদা পুরন করে।
ঠিক একই ভাবে একই পরিমান জল দ্বারা আমেরিকা সরকার ও করতেছে।
এখানে কখনো বিদ্যুৎ ঘাটতি অনুভব করা যায়না।
আমাদের দেশে বিদ্যুৎ এর প্রচন্ড অভাব। এর জন্য সমস্ত অগ্রগতি স্তব্ধ হয়ে যাচ্ছে। আমাদের পরিস্থিতির সংগে খাপ খাইয়ে বিদ্যুৎ এর চাহিদা পুরনের জন্য বিজ্ঞানের উন্নতির প্যয়োজন।
কোরান সর্ব কালের সর্ব জাতির জন্য একমাত্র পুর্নাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা। আর শুধু তাই ই নয়। এটা মহা বিজ্ঞান গ্রন্থ্য ও বটে। এ পর্যন্ত যত বৈজ্ঞ্যানিক সুত্র আবিস্ক্রিত হয়েছে সব ই এর মধ্যে রয়েছে এবং এর থেকে লওয়া হয়েছে।
এটা না হলে কি সর্ব কালের সর্ব জাতির জন্য পুর্নাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা হতে পারে ?
তাই আমার মনে হয় কোরান গবেষক গন কোরান হতে কোন একটি উপযুক্ত সুত্র বের করে আমাদের দেশের বিদ্যুৎ সমস্যা টাও দুর করতে পারেন।
আমার কাছে এর প্রমান আছে।
কোরান,সুরা আল ওয়াকেয়া,নং৫৬ বাক্য নং৭৫,৭৬।
দেখুন। এখানেই ১৪০০ বছর পূর্বেই BLACK HOLE এর বর্ননা দেওয়া হয়েছে (কোন একজন বিশিষ্ট আলেম ও মসজিদের ইমাম জুমার নামাজের সময় মসজিদে দাড়াইয়া খুৎবার পূর্বে বক্তৃতা দেওয়ার কালে সংগৃহিত)
And I swear by the stars’ positions-and that is a mighty oath if you only knew. (Qur’an, 56:75-76)
অবশ্য আমি এখানে BLACK HOLE এর নাম গন্ধ টুকু ও পাইলামনা।
খোদ আল্লাহর ঘর মসজিদে দাড়াইয়া ধোকাবাজী কাকে বলে!!!
ল্লাহর প্রতি কি একটু ও ভয় ডর নাই!!!
ধন্যবাদান্তে,
আঃ হাকিম চাকলাদার
নিউ ইয়র্ক
লেখককে অনেক অনেক ধন্যবাদ এই তথ্যবহুল লেখাটির জন্য। এম এ খানের বইটির বাংলা অনুবাদ মুক্তমনাতে প্রকাশ করে কৃতজ্ঞ করলেন।
“ইসলাম দাস প্রথা সমর্থন করে না” এই বলে মুসলিমেরা যে ভান বা প্রতারণামূলক আচরণ করে এই লেখাটিই তার উপযুক্ত জবাব। ইসলামে ধর্মান্তরের পরে মুসলিমেরা সবার আগে যা করে তা হল ঐ ব্যক্তির স্মৃতি অপহরণ। তার নাম বদলে ইসলামী নাম রাখা, এবং প্রজন্মান্তরে কোন কালে অন্য ধর্মের সাথে সংশ্লিষ্ট থাকার স্মৃতিই মুছে দেওয়া। কোন রাজ্যকে দখল করে তার মিথ্যা ইতিহাস লেখা হত যে তাতে ইসলাম পূর্ববর্তী সময়ে অরাজকতা চলছিল। কিছুদিন আগে ফেইসবুকে এক দ্বিতীয় প্রজন্মের রাজাকারের ভিডিও দেখলাম যাতে সে দাবি করছে, বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য সব বিশ্ববিদ্যালয়, রেল স্টেশন ও অবকাঠামোগুলো রাজাকারদেরই অবদান।
যৌনদাসী রাখার ব্যাপারে ইসলাম অদ্বিতীয়। এতটা সরাসরি এতে আর কোন ধর্মের সমর্থন বোধহয় ছিল না।
বাংলাদেশের উপর আধিপত্যের সময় পাকিস্তানও একই কাজ করতে চেয়েছিল। চিরন্তন বাংলা সংস্কৃতিকে কোণঠাসা করার চেষ্টা, অনৈস্লামিক আখ্যা দেওয়া, এবং স্বাধীনতার কাছাকাছি সময়ে এসে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা সবই স্মৃতি অপহরণ কার্যক্রমেরই অংশ।
আপনার পরবর্তী লেখার আশায় রইলাম। ধন্যবাদ এবং শুভ কামনা।
আমি ব্যক্তিগত ভাবে আরবী ভাসার কোরান হাদিছ বুঝিনা।
এখানে দেখা যাচ্ছে,স্বয়ং কোরান মুসলমানদেরকে কাফের মুশরিক সম্প্রদায়ের উপর আক্রমন চালিয়ে,দাস-দাসী প্রথাকে উৎসাহিত করছে।
কিন্তু বর্তমান যুগে আমরা তেমন একটা শুনতে পারিনা কোন মুসলমান জাতি পরাজিত কাফের মুশরেকদেরকে দাস- দাসী হিসাবে ব্যবহার করতেছেন।
তাহলে তারা প্রকান্তরে কোরান কে অবহেলা করছেন অথবা কোরানের এই বাক্যগুলীর নির্দেশ মান্য করতে বিশ্বাশী নয়।
আর আমি আলেমদের মুখে শুনিয়াছি কেহ কোরানের সামান্য একটা.জের (এ- কার)যবর (আ-কার)বা একটা নোকতার উপরও অবিশ্বাষ আনলে সে আর মুসলমান থাকেনা।
তাহলে কি বর্তমানে কি কেউ ই প্রকৃত মুসলমান নয়?
ধন্যবাদান্তে,
আঃ হাকিম চাকলাদার
নিউ ইয়র্ক
লেখাটা খুব ভাল লেগেছে। আমেরিকার দাস প্রথার চেয়ে মধ্যযুগে ইসলামী দাস প্রথা কোন অংশে কম নয়। খানের লেখা বইটি ঢাকাতে খুব খুজেছি, পাইনি। ধন্যবাদ।
হিন্দু ধর্মেও সুদ্র সম্প্রদায়কে দাসই বলা চলে তবে এটাকে পুর্বজন্মের কর্মফল হিসাবে বুঝানো হয়। কাশেম ভাইয়ের কাছে একটা তথ্য জানতে চাইব যা আমি ঠিক মনে করতে পারছি না “মুতাহ্” বিবাহ কি কোরানে বৈধ ?
@আস্তরিন,
হাঁ, পড়ুন আয়াত ৪.২৪
৪:২৪ এবং নারীদের মধ্যে তাদের ছাড়া সকল সধবা স্ত্রীলোক তোমাদের জন্যে নিষিদ্ধ; তোমাদের দক্ষিণ হস্ত যাদের মালিক হয়ে যায়—এটা তোমাদের জন্য আল্লাহ্র হুকুম। এদেরকে ছাড়া তোমাদের জন্যে সবনারী হালাল করা হয়েছে, শর্ত এই যে, তাদের স্বীয় অর্থের বিনিময়ে তলব করবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করার জন্য—ব্যাভিচারের জন্যে নয়। অনন্তর তাদের মধ্যে যাকে তোমরা ভোগ করবে, তাকে তার নির্ধারিত হক দান কর। তোমাদের কোন গোনাহ্ হবে না। যদি নির্ধারণের পর তোমরা পরস্পরে সম্মত হও। নিশ্চয় আল্লাহ্ সুবিজ্ঞ, রহস্যবিদ।
ইংরাজি দেখুন:
004.024
YUSUFALI: Also (prohibited are) women already married, except those whom your right hands possess: Thus hath Allah ordained (Prohibitions) against you: Except for these, all others are lawful, provided ye seek (them in marriage) with gifts from your property,- desiring chastity, not lust, seeing that ye derive benefit from them, give them their dowers (at least) as prescribed; but if, after a dower is prescribed, agree Mutually (to vary it), there is no blame on you, and Allah is All-knowing, All-wise.
এ ছাড়াও দেখুন আয়াত
৫:৭২, ৭:৩১, ১৭:২৯, ১৯:৭২, ২৫:৬৭
মুতার ব্যাপারে অনেক হাদিস আছে।
দেখতে পারেন বুখারি শরীফ
6.60. 139; 7.62.130; 6.60.139
সময়ের অভাবে দীর্ঘ কিছু লিখা গেল না। তবে পড়তে পারেন মুক্তমনায় রাখা ‘ইসলামে বর্বরতা–নারী অধ্যায়’
ইতিহাস হলো বিজিতের হাতে লেখা তাদের “শৈর্য্য-বীর্য আর পরাজিতদেরর হেয়-কালিমাযুক্ত করা” প্রয়াসের লিখিত দলিল।হাজার বছরের অধিক সময় ধরে আমা্দের উপমহাদেশে মুসলীম শাসন। তার ফলশ্রতিতে আমাদের ( মুসলীম ও মুসলীম যাঁতাকলে পৃষ্ঠ উত্তরাধীকারী অমুসলীম ) চিন্তা ভাবনা ও মন-মানসিকতার যে প্রভাব (Dhiminitude) তা অস্বীকার করার কোন অবকাশ নেই। মুসলীমদের নীরবতা ও প্রত্যাখান (Denial) শুধুমাত্র তাদের “ঐতিহাসিক সত্য সম্বন্ধে অজ্ঞতার ফলশ্রুতি” হিসেবে ব্যাখা করা যায় না। পৃথিবীর সকল মুসলমানের একটা সাধারন উপলব্ধি (Perception) হলো এই, যে তারা বিশ্বাস করে যে তাদের পূর্ব-পুরুষরা “ইসলামের আদর্শ ও শান্তির বানী” তে মুগ্ধ হয়ে উনাদের বাপ-দাদাদের “বর্বর ও মিথ্যা” ধর্ম ত্যাগ করে আল্লাহর মনোনিত একমাত্র “শান্তি ও সত্য ধর্ম” দলে দলে যোগদান করেছিল। তারা সপ্নেও চিন্তা করতে পারে না যে কি ‘বিভৎস ও নিষ্ঠুর’ প্রকিৃয়ার যাঁতাকলে পিষ্ঠ হয়ে তাদের পূর্ব পুরুষরা একদিন মুসলমান হয়েছিল। সে ইতিহাস বড়ই করুন! ইসলামের সবচেয়ে “বড় কৃতিত্ব” হলোঃ “সে পিছনের সমস্ত সত্যকে(ইতিহাস) সমূলে উৎপাটন করে বিশ্বাসীদেরকে “ভ্রান্ত ধারনার” বেড়াজালে আবদ্ধ করে।”
দাস প্রথার প্রচলন ছিল সামাজিক ও রাষ্টীয় ভাবে অনেক প্রাচীন। কিন্তু একে ‘ঐশরিক বৈধতা (Divine approval)’ ইসলাম ছাড়া অন্য কোন প্রচলিত ধর্মে দেয়া হয়েছে কিনা তা আমার জানা নাই (জানতে আগ্রহী।
ইসলামে প্রতিষ্ঠার পিছনে ‘এই স্ট্যাটিজি” টাই মুখ্য। “ব্যক্তি ও রাষ্টীয়” পর্যায়ে” এই লাভজনক স্ট্যাটিজি
নব্য মুসলামানদের বিপুলভাবে আকৃষ্ট করে। “মরলে শহীদ, বাঁচলে ধনী/যুবতী নারী” = জিরো লস (loss).
১২-১৩ বছরের (৬১০-৬২২) মক্কা-জীবনে মুহাম্মাদের অর্জন সমাজের নিম্ন-শ্রেনীর ১০০-১৫০ জন মানুষ। আর মদীনার দশ বছরে (৬২২-৬৩২) ইসলামের ‘পদতলে’ সামিল করার পিছনের সত্যিকারের “মন্ত্র” ছিল এই স্ট্যাটিজি”। মুহাম্মাদ নিজেও তা স্বীকার করেছে (I have been made victorious by terror- Bukhari Volume 4, Book 52, Number 220) এবং মহিলা ও শিশুদের আক্রান্ত করে হলেও অমুস্লীমদের অতর্কিত হামলার অনুমতি দিয়েছে (Volume 4, Book 52, Number 256).
@আবুল কাশেম ভাই,
আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ এম এ খানের এই বইটি মুক্তমনা পাঠকদের সামনে তুলে ধরার জন্য।
১১০০ বছরের ও বেশী সময় ধরে রাষ্টীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থাকার পরও আজ মুসলীমরা “জ্ঞানে-গরীমায়” পৃথিবীর সর্ব-নিম্ন। “জ্ঞানে-বিজ্ঞানে” আমারা এতটায় পিছনে যে আজ এই একুবিংশ শতাব্দীতে বাস করেও মুহাম্মাদ তার “আংগুলি হেলনে চাঁদ দ্বিখন্ডিত এবং স্ব-শরীরে সপ্ত আসমান(?)’ ভ্রমন” করেছিল কিনা তা নিয়ে ইন্টারনেটে আধুনিক বিজ্ঞান ব্যবহারকারী বিদ্বান (কোন নিরক্ষর/অশিক্ষিত নয়) বিশ্বাসীদের সাথে বিতন্ডায় যেতে হয়। এর চেয়ে বড় দূর্ভাগ্য আর কি হতে পারে! পাঠকরা আপনার এই অক্লান্ত ও শ্রম-সাধ্য লিখাটি পড়ে ইসলাম ও মুসলীম শাসনের অনেক আজানা “অধ্যায়” জানতে পারবেন।
ভাল থাকুন।
Correction:
আর মদীনার দশ বছরে (৬২২-৬৩২) ‘হাজারো মানুষকে” ইসলামের —–
@গোলাপ,
আপনাকেও প্রচুর ধন্যবাদ। আপনার সব মন্তব্য আমি অধির আগ্রহ নিয়ে পড়ি–কয়েকবার। আপনি সম্পুর্ণ রচনা লিখুন–এই আমার অনুরোধ।
আমার ইচ্ছে আছে আরও অনেক পর্ব যোগ করব ‘ইসলামে বর্বরতা’ প্রবন্ধে–যাতে বাঙ্গালিরা যারা মনে করে ইসলাম তাদেরকে করেছে মূক্ত–তারা যেন তাদের ঘুমন্ত অবস্থা থেকে জাগে। আরবরা আমাদেরকে তাদের ক্রীতদাস করে রেখেছি অতি সস্তায়–আর তা হচ্ছে ইসলাম দিয়ে। ইসলাম হচ্ছে আরব-তুর্কি-পারস্য সাম্রাজ্যবাদের সব চাইতে বড় এবং মোক্ষম হাতিয়ার। ইতিহাসে এত অল্প মূল্যে কোন সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ক্রীতদাস কিনে নি।
শুধু দাসপ্রথা কেন, এমন কোন বর্বরতা পৃথিবীতে আছে নাকি যা কোরান তথা ইসলামে নেই?
বিপ্লব পালকে কখনো দেখি মার্ক্সিস্টদের সমালোচনা করতে। আবার এখানে মার্ক্সিস্টদের ইসলাম-প্রীতিমূলক উদ্ধৃতি/বাণী প্রচার করে বেড়াচ্ছেন। আবার যেন এম, এন, রায়ের মত মুহাম্মদের মহানুভবতার জারি গান গাওয়া শুরু করে না দেন। আমার মনে পড়ে দাসদেরকে সেনানায়ক বানানোর ব্যাপার টেনে মার্ক্সিস্ট ঐতিহাসিকদের গদগদ ইসলামপ্রীতিমূলক প্রচারনা আলোচনা করেছেন এম, এ, খান — যা পড়লে আপনার হৃদয় উৎফুল্ল না হয়ে বিদারিত হতে পারে।
ইসলামের বিচার কোরান-হাদিসের ভিত্তিতেই বিচার করতে হবে। পরবর্তি ইতিহাস যদি মুহাম্মদের ইসলামের তুলনায় ভালতর হয়ে থাকে, সেটার মানুষের মানবতা তার দাবীদার, ইসলাম নয়।
@অবিশ্বাসী,
সম্পূর্ন একমত।
ইসলাম সম্মন্ধে অত্যন্ত সীমিত ধারনা যাদের তারাই শুধু মুসলমানদের ভাল কাজগুলোকে প্রকৃত “ইসলামের শিক্ষা” বলে ভূল করেন। একইভাবে তালেবানদের পকৃত ‘ইসলামী কর্ম-কান্ড” কে অ-ইসলামী বলে জাহির করেন। ‘কুরান- হাদিসের’ শিক্ষাই হলো প্রকৃত ইসলাম। মুসলীম শাসকদের শাসন আমলের ইতিহাস পর্যালোচনা দিয়ে ইসলাম শিক্ষা যায় না।
@অবিশ্বাসী,
একেবারেই সত্যি কথা।
কোরান, হাদিস, সীরা, শরিয়াতে যা আছে তাই-ই ইসলাম। নবী যে ভাবে ইসলাম প্রচার করেছেন, যেভাবে যুদ্ধ করেছেন, যেভাবে ক্রীতদাস প্রথা বজায় রেখেছেন, যে ভাবে যৌনদাসীদের উপভোগ করেছেন— সে সবই ত ইসলাম। এর বাইরে কী ইসলাম আছে? নবিজীকে যারা সম্পূর্ণভাবে অনুকরণ করে, যাঁর জন্য বুকে বোমা বেঁধে আত্মাহুতি দেয় তারাই ত খাঁটি মুসলিম। আর যারা করে না তারা হচ্ছে মুনাফেক, ধুর্ত, শুবিধাবাদী—ভণ্ড মুসলিম।
@অবিশ্বাসী,
একই ঘটনাকে অন্য ভাবে দেখা যায়, একই ধর্মের হাজার হাজার রূপ হতে পারে। শুধু বর্ণবাদ এর সমালোচনা করে কেও যদি বলে সেটাই হিন্দুধর্ম, সেটা যেমন বিরাট ভুল, ঠিক তেমনই, শুধু কিছু ইসলামিক টেক্সট ধরে ইসলামের বিচার করলে, তা বিশ্বাসযোগ্য হয় না। সামাজিক ঐতিহাসিক ঘটনার কোনটাই কালো সাদা সিনেমা না-তা কালার ফিল্ম। সমস্ত এঙ্গল থেকে দেখতে শিখতে হয় ।
নইলে কমিনিউস্ট, ইসলামিস্ট, হিন্দুইস্টদের সাথে মুক্তমনার পার্থক্য কি?
@বিপ্লব পাল,
মুক্তমনারা পৃথক হবে তাদের সততায়, যুক্তিতে। তারা হবে objective।
@আবুল কােশম,
এ অবান্তর অভিযোগের ভিত্তিতে আল্লাহ অনুমোদন দেন: ইহুদি গোত্রটির বয়স্ক পুরুষদেরকে হত্যা করতে হবে এবং অবশিষ্ট নারী ও শিশুদের ক্রীতদাস বানাতে হবে। নবি যথাযথরূপে সে আদেশ পালন করেন এবং তাঁর অনুসারীদের মাঝে ক্রীতদাসকৃত নারী ও শিশুদেরকে বিতরণ করে দেন ও এক-পঞ্চমাংশ নিজের ভাগ হিসেবে রাখেন।
এই িক্চ্ছা বলে েতামার নানী েতামাের ঘুম পারাইত…….
@Masud,
একটু ব্যাখা করবেন কি?
@Masud,
এই িক্চ্ছা বলে েতামার নানী েতামাের ঘুম পারাইত…….
এই সব কী আবোলতাবোল লিখলেন। পরিস্কার ভাষায় লিখুন–পরিস্কার জবাব পাবেন।
আমার নানী ইসলামের কিছুই জানতেন না–যা জানতেন তা শুধু নামায, রোজা, যাকাত, জায়নামাজ, অজু, কুল্লি, মাথায় কাপড়, আজান, এই সব।
ইসলামের আসল রূপ জানলে ত উনি আমাকে ঘুম পাড়াইতেন না–ঘুম থেকে জাগিয়া তুলতেন। কী বলেন?
কুরানের আল্লাহ একইসাথে অমানবিক এবং পক্ষপাতদুষ্ট ।একইসাথে তিনি মানুষকে আশ্রাফুল মাখলুকাত বলেন আবার তার প্রিয় বান্দাদের জন্য দাস এর বেবস্থা করে দেন।লেখাটা খুব ভাল লাগল কারন একই সাথে ধর্ম আর ইতিহাস আ লোচনা।শুধু ইতিহাস আ লোচনা করলে অনেকেই বল্বেন এটা ইসলামের ভুল না শাষকের ভুল।
@শাকিলা শবনম,
ঠিক লিখেছেন। আমরা ইসলামের ইতিহাস থেকে ইসলামের বর্বরতা তুলে ধরলে ইসলামিরা বলে এই সব ব্যাপার ইসলাম নয়, কোরান হাদিসে এসব কিছু লিখা নাই।
তাই শুরু করতে হবে কোরান হাদিস দিয়ে–তারপর উদাহরণ দেখাতে হবে ইসলামের ইতিহাস থেকে–যা কি না কোরান হাদিসের বাস্তবায়ন।
এত সত্যেও বলা হয় আমরা ইসলাম বুঝিনা, কোরান ভালমত পড়ি নাই। সব সহি হাদিস সহিহ নয়, ইসলামের ইতিহাস হারামি ইহুদি এবং কুত্তা নাছারাদের দ্বারা কলুষিত–আরও কত কী।
এই মুক্তমনাতেই এক ইসলামি পণ্ডিত কী অপূর্ব যুক্তিই না দেখিয়ে যাচ্ছেন। আমি এই ধরণের ইসলামি পণ্ডিতদের আমত্রণ জানাচ্ছি এই রচনার বিরুদ্ধে লিখার জন্য—জানাচ্ছি বিতর্কের আহবান।
একমাত্র বৌদ্ধ ধর্ম বাদ দিয়ে দাস প্রথা পৃথিবীর সব ধর্ম এবং সংস্কৃতিতেই এসেছে নানান রূপে।
ইসলাম ত আর মঙ্গল গ্রহ থেকে আসে নি-সুতরাং তা ইতিহাস এবং ভূগোল বহির্ভূত কিছু হতে পারে না। তবে লেখাটা কিছুটা ক্রিটিক্যাল দৃষ্টিভংগী থেকে লিখলে ভাল হবে,
(১) ইসলামে যাই লেখা থাকুক না কেন, ইতিহাস বলছে একমাত্র ইসলামিক ইতিহাসেই দাসেরা অনেক নিজগুনে ওপরে উঠেছে। মিশরের মামলুক রাজত্ব, অটোমান দের জিনাসারি, ভারতের দাস সুলতানরা এটাই প্রমান করে, দাসেরা যখন ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছে , ওপরে ওঠাটা বাধা হয় নি
(২) গবেষণা থেকে এটা পরিস্কার ইসলামিক দাসত্বর সাথে অন্য দাসত্বের কোন পার্থক্য নেই। সবাই নিষ্ঠুর। কিন্ত ইসলামিক ইতিহাসে এটা দেখা যাবে সুলতানের রক্ষিতারা পর্দার আড়ালে রাজনৈতিক ক্ষমতার অধিকারি হয়েছে, মামলুক দের মধ্যে মিলিটারি জেনারেলদের অনেকেই প্রাত্তন দাস ছিল।
(৩) রোমানদের মধ্যেও দাশেদের উচ্চপদে উত্থান হত-তবে এতটা না।
আমার মনে হয় শুধু কোরান দিয়ে ইসলামকে বিচার করা উচিত না। ইসলামের ইতিহাসটা দেখা উচিত।
@বিপ্লব পাল,
আপনি সঠিক বলেছেন। আসছে পর্বগুলি ভাল করে পড়বেন–ইসলামের অনেক অজানা ইতিহাস জানবেন। আপাততঃ এই সিরিজটা অনেক পর্বে হবে–ধৈর্য ধরতে হবে। অনেক বিস্ময়কর তথ্য জানা যাবে।
@বিপ্লব পাল,
“আমার মনে হয় শুধু কোরান দিয়ে ইসলামকে বিচার করা উচিত না। ইসলামের ইতিহাসটা দেখা উচিত।”
একমত (Y) ।
অন্তত মুক্তমনা, মুক্তচিন্তাকারীরা মুক্তভাবে বিশ্লেষণ করার জন্য তথ্য হিসেবে শুধুমাত্র কোরান, (হাদিস) এর উপর নির্ভর করলে মনে হয় তা সীমাবদ্ধই রয়ে যাবে। তাই আমার মনে হয়, ইতিহাসের বিভিন্ন দিকে নজর দেয়া উচিৎ।
@ডিজিটাল আসলাম,
কোরান দিয়ে শুরু। ইসলামের ইতিহাস অবশ্যয় আসবে। অনেক পর্ব আছে ইতিহাস নিয়ে–ধৈর্য্য ধরতে হবে।
পুরো লেখাটা সময় নিয়ে পরে পড়ব, এখন একটা জিনিস চোখে পড়ল বলে যাই – লুইস ফারাহ খান না, ‘ফারাকান’ উচ্চারণে একসাথে লেখে। তবে ব্যুৎপত্তিটা ওভাবে হতে পারে, আরবী তো জানিনা।
@কৌস্তুভ,
আমার যতটুকু জ্ঞান–তাতে মনে হচ্ছে আপনার অনুমান সত্যি। ওটা হওয়া উচিৎ ছিল লুইস ফারক্কান।
আমি ব্যাপারাটা লক্ষ্য করেছি–হয়ত অনুবাদে পরিবর্তন হয়ে গেছে।
যাই হোক আমি লেখকের মূল লেখার কোন পরিবর্তন করতে চাই নি।
আপনাকে ধন্যবাদ–এই সংশোধনের জন্য। আমি এম, এ খানকে জানাব।
@ আবুল কাশেম,
মওলানা আবুল আলা মওদুদি ক্রীতদাসদেরকে সম্মান ও ধনসম্পদে সমান গণ্য করাকে ইসলামে সবচেয়ে ঘৃণ্য শিরক বা অংশীদারিত্বের মতো কাজ বলে মনে করেন।[৩] অন্যত্র আল্লাহ স্বয়ং তার স্বর্গীয় পরিকল্পনার অংশরূপেই কম আনুকূল্যপ্রাপ্ত ক্রীতদাসদের চেয়ে কিছু মানুষকে, অর্থাৎ প্রভু বা দাসমালিকদেরকে, বেশি আশীর্বাদপুষ্ট করেছেন বলে দাবি করেন। তিনি মুসলিমদেরকে সতর্ক করে দিয়েছেন যাতে তারা ক্রীতদাসদেরকে তাঁর দেওয়া উপহার বা প্রতিদানে সমান অংশীদার না করে। যারা ক্রীতদাসদেরকে নিজেদের সমান মর্যাদার ভাববে, আল্লাহ তাদেরকে সাবধান করে দেন এটা বলে যে, সেরকম ভাবলে আল্লাহকে অস্বীকার করা হবে
মানবতার বিরুদ্ধে ঘৃণা, বিবাদ সৃষ্টিকারী ধর্মটি এখনও বাংলাদেশে কিভাবে এত জয়জয়কার তা সত্যিই বিস্ময়।
মধ্য প্রাচ্যে শুনেছি বাংলাদেশীদের মিসকিন ডাকে, তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে। আল্লার প্রিয় ভাষার, প্রিয় বান্দারা কি তাহলে আল্লাহর নির্দেশই পালন করছে?
@হেলাল,
মধ্যপ্রাচ্যে বাঙালিদের সাথে যা ব্যবহার করা হয় তা ক্রীতদাসদের চাইতে ভাল কিছু নয়। আমি সৌদি টেলিকমে চাকুরীর ইন্টারভিউ দিতে গিয়ে হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছি–আরবরা আমাদেরকে কী দৃষ্টিতে দেখে। আমার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কিছু আরবি ছাত্রী আছে। তাদের সাথে কথা বললে বুঝা যায় তাদের কী ধরনের ধারণা উপমহাদেশের লোকজনের উপর।
আর বলবেই না বা কেন–যে দেশের প্রধাণমন্ত্রী পর্যন্ত আরব বাদশাদের কদমবুছি দেবার জন্য ঘনঘন আরব ভূখণ্ডে যান ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে—সে দেশের নাগরিককে ত ক্রীতদাস ভাবাই স্বাভাবিক। আমরা বাঙ্গালিরা পারলে আরবদের পা চাটতে রাজী আছি সামাণ্য দু কড়ি দান খয়রাত পাবার জন্য।
এর পরে কী বলা যায়? আমরা এখনও ক্রীতদাস রয়েছি–আরব ও ইসলামের কাছে। এই দাসত্বের থেকে মুক্তির কী কোন উপায় আছে?
@আবুল কাশেম,
আধুনিক মধ্যপ্রাচ্যে বিশেষ করে ইসলামের সূতিকাগার সৌদি আরবে এখনো দাস প্রথা সগৌরবে টিকে আছে, শরীয়া ও শাসকের সক্রিয় পৃষ্ঠপোষকতায়।
Sponsorship বা কফালা কথাটার সাথে সবাই এখানে পরিচিত। যে কোন ভিনদেশী কর্মীকে কফিলের অধীনে থাকতে হয়।সরকারী কর্মীদের কফিল হচ্ছে সরকার, বিভিন্ন সংস্থার অধীনস্থ কর্মীদের কফিল হচ্ছে সংশ্লিষ্ট সংস্থা।কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠ দুর্ভাগা ভিনদেশীদের কফিল হচ্ছেন সৌদি নাগরিকগণ। কফিল বস্তুত: তাঁর আমেলের প্রভু-ত্রাতা-বিধাতা।লক্ষ লক্ষ ভিনদেশী এখানে ব্যবসা করছেন। ফুটপাথে বসে মেসওয়াক বিক্রি থেকে শুরু করে কোটি রিয়ালের পণ্য বাণিজ্য পর্যন্ত সব কিছুর জন্যই ধার্যকৃত কফালা নিয়মিত দিতে হবে কফিলকে। সৌদি কফিলের আমেল (?দাস) যত বেশী তিনি তত সৌভাগ্যবান। বেশীরভাগ ক্ষেত্রে আমেল এর যাবতীয় ব্যবসা-বাণিজ্যরও আইনগত মালিক হচ্ছেন কফিল। যে কোন সময় কফিল যদি মনে করেন তাঁর আমলেকে দেশে পাঠিয়ে সব ব্যবসা-বাণিজ্য অধিকার করে নেবেন, বাধা দেওয়ার কারো ক্ষমতা নেই। লক্ষ রিয়াল অর্জনকারী আমেল কফিলের লোভের শিকার হয়ে পথে বসছেন এমন নজির এর অভাব নেই। সরকারীভাবে বলা হয় আমেলদের থেকে কফালা (কফিলকে মাসে মাসে দেয় অর্থ) তোলার ব্যাপারটা আইনসম্মত নয়, কিন্তু সারা সৌদি আরব জুড়ে এমনই চলছে।
মাহররামার ব্যাপারে শরিয়া নির্ধারিত আইন এখানে কার্যকর।তারমানে সুনির্দিষ্টভাবে আত্মীয়তার বন্ধন নেই এমন দুজন প্রাপ্তবয়স্ক মহিলা-পুরুষ একসাথে চলাফেরা মেলামেশা করতে পারবেন না।শুধু মাত্র দাসীদের বেলা শরীয়া এধরণের মেলামেশা অনুমোদন করে।তাই নারী গৃহকর্মী (প্রকৃত পক্ষে দাসী বা যৌনদাসী) সর্বত্র তাঁর পুরুষ কফিলের সঙ্গী হতে পারবেন।কফিলের অনুমোদন ছাড়া এমনকি মৃত্যু-পথযাত্রী খাদেমা-শোগালা বা নারী গৃহকর্মীর চিকিতসা সেবা পাওয়ার অধিকার নেই। অপারেশন এর প্রয়োজন হলে সম্মতি দেবেন কফিল, রোগিনীর মত-অমত এখানে অর্থহীন। সবচেয়ে বেশী যে দেশটি থেকে নারী গৃহকর্মী সৌদি আরবে আসে তা’ হচ্ছে ইন্দোনেশিয়া। ইন্দোনেশিয়ার সকল নারী গৃহকমীকে এখানে পাঠানোর সময় তিন বছর মেয়াদী গর্ভরোধী ইন্জেকশন দিয়ে দেয়া হয়। কারণ মুসলিম দেশটি ভাল করেই জানে সৌদি আরবে গৃহকর্মীদের প্রকৃত অবস্থা কী ।সাময়িক বিরতির পর শিগগীরই আবার চালু হতে যাচ্ছে ইন্দোনেশিায়র নারী কর্মী রপ্তানী।
সন্দহে নেই, ইসলামরে আসলরুপটি সৌদি আরবে সবসময়ই বিদ্যমান।
@সফ্টডক,
আপনার এইসব মূল্যবান তথ্যের জন্য প্রচুর ধন্যবাদ। সৌদি আরবে দুইবার চাকুরীর সুযোগ পেয়েও সেখানে যাই নি। বন্ধুদের কাছ থেকে আরবদেশে উপমহাদেশের শ্রমিকদের উপর কী নির্মম ব্যবহার করা হয় তা জেনে হতবাক হয়ে গেছি। তাও ত বাঙলাদেশের সব শ্রমিকই হচ্ছে মুসলিম। তাই আমি চিন্তা করতে পারি অমুসলিম শ্রমিকদের উপর কী রকম নির্যাতন চালান হয়।
এরপর নারী গৃহশ্রমিকদের কথাও এসে যায়। আমি অনেক ফিলিপিনা নারীদের কাছে প্রচুর কাহিনি শুনেছি–যা ভাষায় ব্যক্ত করা যায় না। আর ইন্দোনেশিয়ার নারী কর্মীরা ত প্রায় সবাই মূসলিম–তা সত্বেও তাদেরকে যৌনদাসী হিসাবেই রাখা হয়।
আরও শুনেছি বিভিন্ন দেশের বিমান বালাদেরকে কেমন করে বিলাশবহুল প্রাসাদে রেখে নিয়মিত যৌন কর্মে বাধ্য করে ধনী সৌদিরা বিশেষতঃ সৌদি বাদশার বংশধরেরা। এই ব্যাপারে সংবাদপত্রেও অনেক খবর ছাপানো হয়েছিল।
এক ঘটনা বলি।
আমি একবার ট্রেনে বাড়ী ফিরছিলাম। আমার পাশে বসল আমার এক বয়স্ক ছাত্র। সে আরব–লেবানন থেকে আগত। আমার নাম সে আগেই জানত–তাই সে আমাকে মুসলিম ব্রাদার বলেই সম্বোধন করল। সে হঠাৎ প্রশ্ন করল আমি কোন সাদা অমুসলিম মেয়ের সাথে শোয়া শুয়ী করি কি না। আমি তার প্রশ্ন শুনে আশ্চর্য হয়ে গেলাম। বললাম আমি বিবাহিত–আমি এই সব কাজ করতে যাব কেন–এতো পাপের পর্যায়ে পড়ে।
তার উত্তর শুনে আমি হতভম্ব হয়ে গেলাম। সে বলল আস্ট্রেলিয়ার সমস্ত অমুসলিম মেয়েরা আমাদের (অর্থাৎ মুসলিমদের) জন্য হালাল। সে এও বলল এই সব নারীরা আমাদের যৌন দাসী ছাড়া আর কিছু নয়। হাসতে হাসতে সে বলল ‘আমরা (মুসলিম আরবেরা) এদেশে এসছি এদের মেয়েদেরকে উপভোগ করতে আর এদের সম্পত্তি কুক্ষিগত করতে’। অবাক হয়ে যখন তাকে জিজ্ঞাসা করলাম এই সব ধারণা সে কোথায় পেল। তার উত্তর হল কোরান এবং হাদিস। তারপর সে আমাকে জিজ্ঞাসা করল–আমি নিয়মিত মসজিদে যাই কি না। আমার না উত্তর শুনে সে বলল–আমার উচিত হবে তাদের মসজিদে প্রত্যেক রবিবারে যাওয়া। সেখানে এই সব ব্যাপার নিয়ে অনেক আলোচনা হয় যা জানলে আমিও তার মত কর্মে নিয়োজিত হব।
এরপর সে আমাকে যা জানাল তা জেনে আমি আকাশ থেকে পড়লাম। সে বলল–সে বিবাহিত (আরব মহিলা অবশ্যয়) এবং দুই সন্তানের পিতা। এতদসত্যেও তার আছে তিনটি সাদা আস্ট্রেলিয়ান যৌনদাসী। সে তাদের সাথে নিয়মিত ‘এনজয়’ করে যাচ্ছে। তারপর সে বলল এই সব কুত্তীরা (বিচ) খুবই ভাগ্যবতী যে তারা আরব পুরুষ্ণগের (পেনিস) স্বাদ পাচ্ছে।
আমি আর কী উত্তর দিব। এরপর আমি অনেক পড়াশোনা করলাম ইসলাম নিয়ে। মসজিদেও অনেক বার গেলাম। আশ্চর্য হয়ে গেলাম—যখন জানলাম ঐ বয়স্ক ছাত্র আমাকে যা জানিয়েছিল তা সম্পূর্ণ সত্যি।
@সফ্টডক,
লিখতে ভুলে গেছিলাম–
প্রিন্সেস বইটাতে সুন্দর ভাবে বর্ণনা করা আছে সৌদিরা কেমন করে বিদেশি মহিলাদেরকে গৃহকর্মির ভান দেখিয়ে তাদেরকে যৌনদাসী হিসেবে ব্যবহার করে।
@আবুল কাশেম,
হ্যাঁ, আপনি ঠিকই বলেছেন।
সৌদি সমাজ চিত্রের চমৎকার বর্ণনা রয়েছে জাঁ সেশন এর অনবদ্য পুস্তক-ত্রয়ী’র (Trilogy) মধ্যে। বই তিনটি হচ্ছে, Princess, Princess Sultana’s Daughters, Princess Sultana’s Circle. এ মার্কিন মহিলা সৌদি আরবের রিয়াধে কাজ করার সময় প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে বইগুলো লিখেছেন। জনপ্রিয় বইগুলো লেখিকাকে দিয়েছে আন্তর্জাতিক খ্যাতি।
সম্প্রতি তিনি, বিন লাদেনের প্রথম স্ত্রী নাজওয়া আর পুত্র ওমর এর সাক্ষাৎকার এর ভিত্তিতে লিখেছেন Growing Up Bin Laden.
মনে হয়, এ অসাধারণ বইগুলোর বাংলা রূপান্তর এখনো হয়নি।
অনেক দিন নীরব থাকার পর আবুল কাশেম ভাই আবার স্বরূপে উদিত হয়েছেন। এবারে মলাট উন্মোচন করলেন শান্তির ধর্ম ইসলামে দীর্ঘ দিন অঙ্গে রঙ্গে উপভোগ করা বর্বর দাসত্ব প্রথা লালন পালনের মাটি চাপা দেয়া ইতিহাসের। আবহাওয়ার খবরে বলা হচ্ছে যুক্তিতর্কের প্রবল বর্ষণের সাথে বজ্র পাতের কারনে আবহাওয়া চরম ভাবাপন্ন হয়ে উঠতে পারে মুক্তমনার মুক্তমঞ্চ। বইতে পারে গালাগালির মহা বন্যা। অবশ্য মডু সাহেবদের বিশেষ সর্তকতায় এই বন্যায় কারো ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নাই।
এই বিরাজমান আবহাওয়ায় কম্পুতে চোখ রেখে উপভোগ করুন এক কাপ গরম (C)
@রাজেশ তালুকদার,
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। এই রচনার সম্পূর্ণ কৃতিত্ব হচ্ছে এম এ খানের। কী অমানুষিক পরিশ্রম এবং দীর্ঘ গবেষণা করেই না তিনি এই পর্বটি রচনা করেছেন। কত অজানা অবিশ্বাস্য তথ্য তিনি বের করেছেন–ভাবলেও আশ্চর্য হতে হয়।
তাই এই অনন্য, অসাধারণ, এবং কালজ্বয়ী রচনাটা উনার অনুমতিতে আমি ‘ইসলামে বর্বরতা’ সিরিজে যোগ করে নিজেকে কত সৌভাগ্যবান মনে করছি।
এই পর্বটা অনেকদিন চলবে। কাজেই একটু ধৈর্য্য ধরতে হবে–সব কিছু জানার জন্য।
আরও অনেক বিষয় এই সিরিজে অন্তর্গত করার ইচ্ছে আছি—সময় পেলে।
@আবুল কাশেম,
ইসলামী নেতা বা শাসকদের লুচ্চামির ইতিহাস প্রচার পাওয়া খুবই দরকার। হুইন্না মুসলমানদেরও জানানো যাবে সেই সব কাহিনি। দেখা যাক। আবার এসেছেন কাশেম ভাই, অনেক দিন বিরতির পর, ওয়েলকাম ব্যাক। অপেক্ষায় থাকলাম।
@কাজী রহমান,
হাঁ, সব জানবেন।
অবাক হবেন কেমন করে আমাদের পুর্ব-পুরুষেরা ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন–কী পরিস্থিতিতে, কী অমানুষিক অত্যাচারের সম্মুখীন হয়ে। এই সব অজানা তথ্য জানলে চাইবেন ইসলামকে ছুড়ে ফেলতে–চাইবেন নিজের হারানো পরিচয় পেতে–
@আবুল কাশেম,
সত্যি কথাই বলেছেন। আমি ত প্রতি মুহুরতেই চাইছি আমাদের হারানো পরিচয় খুজে পেতে।