কোন জাতি সেই ছোট হোক আর বড় হোক কোনরকম অন্যায়-অবিচারকে নিশ্চুপভাবে মেনে নিতে পারে না । ৫২’র ভাষা আন্দোলন বাঙালী জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিল, ছাত্রসমাজকে শেখিয়েছিল ভাষার প্রতি মানুষের কতটা মমত্ববোধ-ভালোবাসা থাকলে সালাম- বরকত রা বুলেটের বুকে ঝাঁপিয়ে পড়তে পারে ! শক্তি সঞ্চার হয়েছিল সেদিন ৫২’তে । ৭২’র সালে মানবেন্দ্র নারায়ন লারমা মেনে নেননি বাঙালী জাতীয়তাবাদ, গঠন করেছিলেন শান্তিবাহিনী‘ । সেই পুরানো ৭২’র পুনরাবৃত্তি ঘটালেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা মাননীয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা । বাঙালী জাতীয়তাবাদকে চাপিয়ে দেয়া হলো সকল সংখ্যালঘুদের উপর । ভিন্ন ভাষা-ভাষি, আলাদা সংষ্কৃতিসম্পন্ন সংখ্যালঘু জাতিস্বত্তাদের বানানো হলো বাঙালী । এই যেন চেঙ্গী-মাইনি-শংক নদীর পানি মিশে গিয়েছে বঙ্গোপসাগরে, যেন চেঙ্গী-মাইনি-শংক নদীগুলো নিজেদের অস্তিত্ব হারালো মহাসমুদ্রে । আজ সরকারের দালালেরা সই করলো বাংলাদেশের সবাই বাঙালী শ্লোগানে । ভিন্ন ভাষাভাষি জাতিস্বত্তাদের উপর এহেন অবিচার কি মানা সম্ভব ? না ! কখনো সম্ভব নয় । শূণ্য মস্তিস্কের মানুষ ও মানবে না তাকে মাতৃভালোবাসাকে ভুলে যেতে বাধ্য করালে । তাই পাহাড়ে আজ বইছে প্রতিবাদী শ্লোগান । ফিরছে মরার -বাঁচারের লড়াই । ভবিষ্যতে আরেক শান্তিবাহিনীর মতো সশস্ত্র দল হলে কি সন্ত্রাসী টকমা লাগানো হবে তখন ?
আজ ছোট্র-ছোট্র ছেলে মেয়েরা ও মানতে নারাজ । নিজেদের জাতিস্বত্তার পরিচয় কোনমতে পদদলিত করা যাবে না । বাঙালী জাতীয়তাবাদকে মেনে নিতে অপ্রস্তুত সেই অধিকার বঞ্চিত শিশু-কিশোররা । তাই প্রতিবাদের শ্লোগানে আজ পাহাড় যেন সেই ৮৯-৯০’র ছাত্র আন্দোলনের দিনগুলো খুঁজে পেতে চলেছে । ‘খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি এবং বান্দরবন‘ মিলে যে পার্বত্য চট্রগ্রাম; সেই পার্বত্য চট্রগ্রামে আজ অসন্তোষের দাবানল । অহিংসা বাণী আর মানাই না; যখন অমানবিকভাবে অধিকারহারা মানুষদের আরো বেশি করা হচ্ছে অধিকার বঞ্চিত । করা হচ্ছে বিতাড়িত-লাঞ্জিত । এই লাঞ্জনা- বঞ্চনার পরিণতিতে পাহাড় জ্বলে উঠবে আরেকবার । ৯ বছরের ছোট হিমেল চাকমা ও আজ আন্দোলনের পথে যখন সে শুনেছে তাকে বাঙালী হিসেবে আখ্যায়িত করা হচ্ছে । সাংবিধানিক স্বীকৃতি আদায়ে খাগড়াছড়িতে পাহাড়ীদের গণ-মানববন্ধনঃ
দীর্ঘ মানবন্ধন কর্মসূচিতে শামিল হয়েছেন ৯ বছর বয়সের হিমেল চাকমা। সাপমারা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এই শিক্ষার্থী বাংলানিউজকে জানান, পত্রিকায় দেখেছি-সরকার আমাদেরকে সংবিধানে অস্বীকার করেছে, আমাদের বাঙ্গালী হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। এজন্যই আমি এই মানবন্ধনে দাঁড়িয়েছি।
এই ছেলেদের কাছ থেকে যদি বাঙালী জাতির প্রতি প্রত্যাশাময়ী -আশাবাদী হতে আশাকরা হয়, তা কি খুব সহজ হবে ? মানুষের মনন আছে । মানুষ পাথর সদৃশ মূর্তিমীয় প্রতিকৃতি হতে পারে না । মনষ্তাত্তিকভাবে কোন শিশুকে অত্যাচার করলে তার ভবিষ্যত নির্ভর করে বেড়ে উঠার পারিপার্শ্বিকতার উপর । নিজের মা-বাবার আদর ভুলে কোন অপরাধে তাদেরকে বাঙালী পরিচয় দিতে হবে ? বাঙালী জাতিয়তাবাদকে মেনে নেয়া মানে কি নিজের মায়ের ভালোবাসাকে অস্বীকার করা নয় ? মহাকবি মাইকেল মধুসুদন দত্তও ভুলতে চেয়েছিলেন কিন্তু পারেন নি । মহাকবি চেয়েছিলেন নিজের ইচ্ছায়, কিন্তু বাংলাদেশ সরকার চাপাতে চাচ্ছে জোড়ের উপর’ অন্যের অনিচ্ছায় । ভবিষ্যত কোনদিকে ?
হ্যাঁ, জাতিগত পরিচয়কে কেড়ে নেয়ার সাধ্য কারোর নেই ! ইতিহাস তাই শিক্ষা দেই । মাতৃ ভালোবাসার প্রতি শ্রদ্ধাশীল ব্যক্তির জয় হয়েছে, এবং হবে । যে মানুষ মা’কে ভালোবাসতে জানে সে কোনদিন অমানুষ হতে পারে না । এরশাদ শিকদারের মতো কুখ্যাত সন্ত্রাসী জন্মানোর পিছনে সমাজকে দ্বায়ী করা চলে । শিশু বয়সে তাকে তার মায়ের অপদস্ত হওয়ার অনেক ঘটনা স্বচক্ষে দেখতে হয়েছিল । সেই থেকে আস্তে-আস্তে ক্ষোপের সঞ্চার হয়েছিল; যার পরিণতিতে তাকে কুখ্যাত সন্ত্রাসী হতে বাধ্য করা হয় । কিন্তু আমরা এসব ঘটনাগুলো থেকে ভালো কিছু শিখতে পারি না, বরং আরো বেশি এরশাদ শিকদার হতে বাধ্য করি ।
রাঙামাটিতে জেএসএস মহা সমাবেশ করে পরিচয় দিয়েছিল জাতির প্রতি ভালোবাসার টান তাদেরও কমতি নেই, যেমন করে ইউপিডিএফ প্রমাণ করলো গণ-মানব বন্ধনের আয়োজনে । হাজার-হাজার মানুষ সামিল হয়েছিল এই গণ-সমাবেশ এবং গণ -মানব বন্ধনে । দলমত নির্বিশেষে ঝাঁপিয়ে পড়তে দ্বিধা করে না সেই পাহাড়ের বীর কন্যা-সন্তানেরা । বীরদর্পে তাদের আওয়াজে পাহাড় আজো নড়তে বাধ্য । শক্তির সঞ্চার হচ্ছে, হবে । অন্যায় -অবিচারের বিরুদ্ধে তাদের হাত মুষ্ঠিবদ্ধ এবং সংগ্রামী । তবু ও “বাঙালীর জাতীয়তাবাদ” কোনভাবেই মানা যাবে না যতদিন জটিল শরীরে রক্ত সঞ্চালন বইবে ।
একজন বাঙালী যেভাবে কখনো কোনভাবে একজন পাকিস্তানি হতে পারে না, ঠিক একইভাবে এক চাকমা কখনো এক বাঙালী হতে পারে না । কোন ত্রিপুরা কখনো চাকমা যেভাবে হতে পারে না, ঠিক সেভাবে কোন মারমা, তঞ্চগ্যা, চাক, ম্রো, খিয়াং, খুমী, লুসাই ও কোন বাঙালী অথবা চাকমা হতে পারে না । মানুষের নিজস্ব পরিচয় নিজের দ্বারা নির্ধারিত । সরকারের এহেন অবিচার কখনো মানা সম্ভব নয় ।
একজন চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা….কখনো একজন বাঙালী হতে পারে না ।
ছবি কৃতজ্ঞতাঃ
খ্যা প্রু চিং মারমা
করিসটুফার সজিব বিজাস
জুনো পহর
হরিকিশোর চাকমা
আমাদের আঞ্চলিক রাজনীতিকবিদদের শুভবুদ্ধির উদয় হউক; যাতে করে আর যেন ভ্রাতৃঘাতে একবিন্দু রক্ত ও মাটিতে ঝরে না পড়ে । অধিকারের জন্য যেন ঐক্যবদ্ধ হয়ে সবাই ঝাঁপিয়ে পড়ে । তখনিই অধিকার নিশ্চিত হবে ।
অভ্র একবার ডাউনলোড করেছিলাম, কিন্তু কী-বোর্ড-এর সমস্যায় ব্যবহার করতে পারিনি; এবার দেশ থেকে আসবার সময় একটা বিজয় এনেছি- তাইতে যেটুক ছটফটানি/ অভ্র কী-বোর্ড কি কিনতে পাওয়া যায়? না হলে ডাউনলোডকৃত অভ্র কী-বোর্ড ব্যবহারের তরিকা জানতে চাই
এ বিষযে আমার বিস্তারিত বক্তব্য জানানোর জন্য আমার বাংলা লেখার (টাইপিংয়ের) উন্নতি চাই এবিষয়ে কেউ সাজেশান দিয়ে সাহায্য করলে কৃতার্থ হব(দাঁড়ি দিতে পারি না)
@একেএম আবদুল করিম, আশাকরি খুব শ্রীঘ্রই উন্নতি করতে পারবেন । সেই প্রত্যাশায় । মন্তব্য ঘরের নিচে অভ্র ডাউনলোড করে নিন আর অনুশীলন করুন । অবশ্যই পারবেন ।
লেখার মূল সুরের সাথে সহমত (Y)
@স্বাধীন, সহমত পোষন করার জন্য ভালোবাসা । (Y)
[লিংক]
লেখার মূল সুরের সঙ্গে একমত। চলুক। (Y)
@বিপ্লব রহমান, একমত হওয়ার জন্য ধন্যবাদ (Y) । এখন আওয়ামিলীগের আসল উদ্দেশ্য অবশ্যই জানা হয়ে গেছে ?
জাতীয়তাবাদের ধারাটি বদলাতে হলে বড় বড় জাতিগুলোর কাছে জোড় দাবী করা উচিত । ছোট জাতিস্বত্তাদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়ে নূন্যতম জাতিবাদেরবোধ থাকতে হয় । এমন না থাকলে দুই তিন যুগের পর তাদের অনেক কিছু পৃথিবী থেকে হারিয়ে যেতে বাধ্য । তাছাড়া মনুষ্যত্বের অধিকার থেকে তাদেরকে বঞ্চিত করা উচিত নয় । অমিত ভাই, লেখাটির সাথে সম্পূর্ণ একমত । (Y)
@সমরেশ চাকমা, সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ । তা ঠিক কিন্তু জাতে করে উগ্রতা গ্রাস না করে ।
এই সরকার কি ম্যান্ডেট নিয়ে এসেছিল আর এখন কি করছে, বোঝা মুশকিল! ধর্ম নিয়েও কিছু হল না, এখন আবার জাতির definition!
কোন জাতীয়তাবাদেই বিশ্বাসী হবার দরকার নেই। একটা দেশ শেষাবধি নানান কাকতালীয় ঘটনার ফসল। সেই দেশের সীমারেখায় বসবাসকারী সব নাগরিকের অধিকারের নিশ্চয়তা থাকলেই হল। সংবিধানে জাতীয়তাবাদের ধারাটির সময় হয়তো এককালে ছিল, কিন্তু এখন তাকে ইতিহাসের পাতায় নিক্ষেপ করার সময় এসেছে।
@দীপেন ভট্টাচার্য, সম্পূর্ণ একমত । সকল নাগরিকের সমান অধিকারের নিশ্চয়তা থাকা বাঞ্চনীয় । ভালো থাকুন । (F)
অবশ্যই আমরা বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদীতে বিশ্বাসী। এখানে যে যার ধর্ম কর্ম এবং জাতিসত্বা নিয়েই বেচে থাকবে স্বাধীনভাবে। তবে মনে রাখতে হবে স্বাধীনতা মানে এইনা একে অন্যের ক্ষতিকর কিছু করা। অবশ্যই সমতা বা সমজোতার ভিত্তিতেই সকল কর্ম সাধন করা।
@MD JAMAL HOSSEN, ভারতীয়রা ভারতীয় জাতিয়তাবাদের বিশ্বাসী কিন্তু ঐখানকার সংখ্যালঘু জাতিস্বত্তাদের ভাষাসহ রাজনীতিক অধিকার দেয়া আছে, যা বাংলাদেশে নেই । শুধু বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের জন্য বিএনপি’র সাপোর্ট দেয়া যায় না ।
মনে পড়ে – আমি যখন ছোট ছিলাম, টু-থ্রীতে পড়ি, তখন ২১শে ফেব্রিয়ারি কিংবা ১৬ই ডিসেম্বরের মতো জাতীয় দিবসে পাকিস্তানের প্রতি তীব্র ঘৃণা অনুভব করতাম। সেই ছোট্টবেলাতেই এমন ঘৃণা ছিল। এ ঘৃণা হয়তো পাঠ্যপুস্তকের ইতিহাস, আশেপাশের মানুষগুলোর ঘৃণামিশ্রিত আচরণের মিশ্রিত ফলাফল, তবে সেই ছোট্ট মনের অনুভূতিটুকু কিন্তু এক্কেবারেই নিাচ্রচ র্ভেজাল। ছবির বাচ্চাদের মনেও এমন অনুভূতি থাকা খুব অস্বাভাবিক নয়। তাদের সেই অনুভূতিকে শ্রদ্ধা জানাই।
তবে যৌক্তিকভাবে দেখলে- তাদের গলায় ঝুলানো শ্লোগানগুলো তারা কতটুকু বুঝে আর তারা কতটুকু আন্দোলনরত বড় মানুষদের চাপিয়ে দেয়া – এই দুইয়ের বিচারে হয়তো ২য় টাই এগিয়ে থাকবে। কেবল লোক বাড়ানোর জন্য এমন কাজ করার উদাহরণ ভূড়ি-ভূড়ি (যদিও আমি দাবি করছি না যে এখানে তেমনটিই ঘটেছে); তাই এরকম পোস্টে পূর্ণবয়স্ক মানুষদের ছবির সংখ্যা বেশি থাকলে গ্রহণযোগ্যতা আরো বাড়তো।
যাই হোক, মূল কথা ভিন্ন – আপন জাতিসত্তার প্রতি সম্মান জানিয়ে আপনার পোস্টের প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করছি।
@প্রতিফলন,
প্রথম শিশু অধিকার সনদের জন্য নিশ্চয় শিশুরা উচ্চস্বরে দাবী তুলেনি ? শিশুদের অধিকারের জন্য আন্দোলনরত অনেক ছবি ইন্টারনেটে পাওয়া যাবে । কে বাধ্য করাচ্ছে ? আর কে এসবের সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছে ? আমি পাঁচ বছর হতে জানতে পেরেছিলাম “বাঙালীরা” পাহাড়ী হত্যা করে যেমনটা সমতলে এর বিপরীতে মিথ্যা প্রচার করে বলা হতো পাহাড়ীরা বাঙালী হত্যা করে । পরিবেশের বাধ্যবাধকতায় এক পাঁচ বছরের শিশুও পূর্ণতা লাভ করতে সক্ষম (যদিও আমি বলছি না লেখাগুলো শিশুরা লিখেছে )। এই ছোট ছেলেদের ছবিগুলো প্রথম আলোর সাংবাদিক হরিকিশোর চাকমা ধারণ করেছেন, হয়ত ছবি তোলার জন্য তাদের হাতে প্লে কার্ডগুলো দেয়া হয়েছিল । এখানে যৌক্তকতা বলতে আমি বুঝি মানসিক পীড়ন । একদিন এই শিশুরা যদি অস্ত্র কাঁধে নিয়ে সংগ্রামের ডাক দেই, তখন দ্বায়ভার কার উপর বত্তাবে ?
জাতিস্বতার প্রতি একাত্মতা জানানোর জন্য ধন্যবাদ ।
সংখ্যালঘু হওয়ার মত মানসিক ও শারীরিক বিড়ম্বনা সংখ্যা লঘু ছাড়া কারো কারো পক্ষে বুঝা সম্ভব নয়। যদি সেখানে বিষ ফোড়া হয়ে যুক্ত হয় ধর্মীয় উন্মাদনা তাহলে- শান্তি ও ঐক্যের সম্ভাবনা সেখান থেকে প্রাণ নিয়ে পালায় বহুদূরে।
পার্বত্য সমস্যা এক দিনে তৈরী হয়নি। সমস্যা তৈরীর পেছনে কাজ করেছে অজ্ঞ,অদূরদর্শী ও প্রতিহিংসার রাজনীতি। সংখ্যা গুরু বাঙ্গালী জাতি গোষ্ঠী হয়ে আমাদেরও দায় এড়ানোর সুযোগ তাতে খুবি কম।
এক দল ঘোষনা দিচ্ছে বাঙালী জাতীয়তাবাদের আর এক দল হুংকার ছাড়ে বাংলাদেশী জাতিয়তাবাদের। এই সব হীন মাথা মোটা রাজনীতি বিদ থেকে সুস্থ, সুন্দর, গ্রহনযোগ্য কোন কিছু আশা করাই বৃথা।
গন জাগরন তৈরীতে চেষ্টা করার জন্য আপনাকে অভিনন্দন।
@রাজেশ তালুকদার, আপনাকে ও অশেষ ধন্যবাদ ক্ষতের গভীরতাকে বুঝে উঠার জন্য ।
আমি মনে করি আমাদের জাতীয় পরিচয় বাংলাদেশী ৷ এখন বাংলাদেশী হওয়ার সাথেই আমি বাঙ্গালী হতে পারি, চাকমা বা মারমা বা সাও৺তাল হতে পারি ৷ বাঙ্গালী সংস্কৃতি ও আাদিবাসী সংস্কৃতি নিয়েইকি বাংলাদেশের সংস্কৃতি গড়ে উঠতে পারেনা ? যদি কেউ বলে কেবল বাঙ্গালী সংস্কৃতিই বাংলাদেশের সংস্কৃতি, আদিবাসীদের সংস্কৃতি এর মধ্যে পড়বেনা তাহলে বলবো এটা সেই পাকিস্তানী শাসকদের ভুলেরই পুনরাবৃত্তি হয়ে যায় ৷ আদিবাসীদের জীবনবোধ ও সংস্কৃতি বাংলাদেশের সংস্কৃতিকে আরো বৈচিত্র ও পূর্ণতা দেবে বলেই আমি মনে করি ৷ আর যদি আদিবাসী বা উপজাতির সবাই সংস্কৃতির সঙ্গে সঙ্গে পৃথক রাজনৈতিক পরিচয় দাবী করতে চান তাহলে সেটা একটু সমস্যা হয়েই দেখা দেবে ৷ এইটুকুন একটা দেশকে টুকরো করতে শুরু করলে কয়েকজন নেতার হয়তো পোয়াবারোর সম্ভাবনা কিন্ত সাধারন মানুষের সর্বনাশ হতে বাকী থাকবেনা ৷ রাজনীতি বুঝি কম, শুধু আমার ভাবনাটা লেখকের সাথে শেয়ার করলাম ৷
@শুভ্র, আমি জাতি পরিচয় বাংলাদেশি বলি নাই । বলেছি নাগরিকত্ব, যা জাতীয়তা । আপনার মূল সুরকে ধরতে পেরেছি । সেই শহীদ জিয়ার চল- চাতুরি । তাই দূঃখিত । (W)
একটা ভূ-খন্ডে বহু জাতি বসবাস করতে পারে। একটা রষ্ট্রের বহু জাতের
নাগরিক থাকতে পারে। নাগরিকত্ত্ব ও জাতীয়তার ফারাক বোঝার মত বুদ্ধি
আমাদের নীতি নির্ধারকদের কবে হবে কে জানে?
মাঝখান থেকে পারস্পরিক অবিশ্বাস ও ঘৃ্নার উর্বরতা বৃ্দ্ধির কাজ আমাদের
নেতারা করে যাচ্ছেন। তারা যা করছেন তা হচ্ছে অকাজ। কিন্তু এর ফল
ভোগ করতে হবে সবাইকে।
আমাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম হচ্ছে অস্ট্রিক আর মঙ্গলীয় জনগোষ্ঠির বর্ডার।
চীনের সাম্প্রতিক উত্থান, মায়ান্মারের সাথে চীনের সম্পর্ক বিবেচনায় নিয়ে
সীমান্তে উত্তেজনা তৈ্রীর মত কিছু করা হবে আত্মঘাতী।
“তোরা সবাই বাঙ্গালী হইয়া যা” এই এক বাক্যে রয়েছে অজ্ঞতা ও অশান্তির
বীজ। আমাদেরকে তা অনুধাবন করতে হবে। অবিবেচকের মত কিছু করা
হলে তার ফল ভোগ করব এই ভূ-খন্ডের সবাই।
অফ টপিকঃ লগ ইন করে দেখি বার্তা অপেক্ষা করছে কিন্তু ঢুকতে গেলে বলছে অনুমোদন নেই।
@আতিক রাঢ়ী, বহুজাতির রাষ্ট্র হিসেবে পরিচয়ে বাংলাদেশ গর্বিত হয় । সুপ্রিম কোর্টের সুপারিশে, বিদেশে বসবাসরত বাংলাদেশি নাগরিকদের কথা চিন্তা করে নাকি নাগরিকত্ব “বাংলাদেশী” রাখা হয়েছে । আর বাংলাদেশের সবাই জাতিতে বাঙালী ? আজব ! আমাদের নীতিনির্ধারকদের কখনো শুভ বুদ্ধি হবে কিনা জানি না । তাই প্রতিবাদ করে যাবো যতদিন সেইদিন বুদ্ধির উদয় না হয় ।
@আতিক রাঢ়ী,
(Y)
সহমত।
রাষ্ট্র সবার। বাংলাদেশ নামক ভূখন্ডে যারা বাস করে সবাই বাংলাদেশী।
লেখকের সাথে একমত। (Y)
@আসরাফ, বাংলাদেশ নামক ভূখন্ডে যারা বাস করে সবাই বাংলাদেশী কিন্তু সবাই বাঙালী নন । ধন্যবাদ একমত হওয়ার জন্য । (Y)
বঙ্গ ভূমিতে বসবাসকারী প্রতিটি মানুষই বাঙ্গালী, বর্ণ, গোত্র, ধর্ম, ভাষা গত পার্থক্য থাকতে পারে যা তাদের স্বকীয়তার প্রতিনিধিত্ব করে, তারমনে এই নয় যে আপনি বঙ্গভূমিতে বাসকরবেন অথচ নিজেকে বাঙ্গালী বলে স্বীকার করবেন না। অবশ্যই আপনার অধীকার রয়েছে আপনার ভাষা, ধর্ম, গোত্র কে সমুন্নত্ব রাখার, কিন্তু বাঙ্গালী বাংলাদেশী জাতীয়তা বাদকে অস্বীকার করে নয়।
@সীমান্ত ঈগল,
বঙ্গ ভূমি জায়গাটা জানি কোথায় ? ঐ খানে কি তাল গাছ আছে ? নাকি ঈগলের পিঠে চড়লে দেখা যায় ?:-s
@সীমান্ত ঈগল, আপনার বোধকে শ্রদ্ধা জানাই । দুজনের কেউ একজন ভুল জায়গায় এসেছি । অবশ্যই জাতিতে আমি বাঙালী নই, আমি জাতিতে চাকমা এবং নাগরিকত্বে “বাংলাদেশি” । এবার নিশ্চয় আমার বোধকে ও সম্মান করবেন ।
@অমিত হিল,
আমি শুধু আপনার বোধকেই সম্মান জানাচ্ছিনা আপনার এই বক্তব্যের প্রতিও সমর্থন জানাচ্ছি ৷ জাতিতে চাকমা কিংবা মারমা হয়েও নাগরিকত্বে বাংলাদেশী ৷
@শুভ্র,
সমর্থনের জন্য শুভ কামনা, যেন এই মনুষ্য জাগরণ সবার ঘটে । ভালো থাকুন ।
পোস্টের কিছু ছবি মার্জিনের বাইরে চলে যাওয়াতে রিসাইজ করে দেয়া হলো। লেখকরা লেখা পোস্টের সময় এ ব্যাপারে কিছুটা সতর্ক থাকলে খুব ভালো হয়,ছবির সাইজ ঠিক করা সহজ কাজ :-)।
@রামগড়ুড়ের ছানা, আপনাকে কষ্ট দেয়ার জন্য দূঃখবোধ করছি । নতুন বিদায় অনেক কিছু একটু একটু করে শিখতে হচ্ছে । অভিজ্ঞতা হলো যেহেতু পরে চেষ্টা করবো । ধন্যবাদ রইল ।
আপনাদের সংগ্রামের প্রতি নৈতিক সমর্থন জানাচ্ছি। আর ব্লগ জগতের সুবাদে এখন বাংলাদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা জাতি গোষ্ঠীদের চিন্তাভাবনাগুলো জানা যাচ্ছে এটাও বেশ ভাল একটা ব্যপার হচ্ছে।
@রিয়াজ উদ্দীন, একাত্মতার জন্য আপনাকে অনেক ভালোবাসা । শুভ কামনা (F) ।
হেঃহেঃহেঃ এটা হাস্যকর হয়ে গেলো। জানি একদিন এরাই বড় হয়ে প্রতিবাদ করবে, কিন্তু এখানে বড়দের ছবি দিলেই আরো যুক্তিসঙ্গত হতো।
@টেকি সাফি,
টেকি ভাই, আপনার মন্তব্যগুলো আমার দারুণ ভালো লাগে । আমি ও আদৌ শিশুদের দলে আছি । বয়সে শিশুর মনমানসিকতার অভিজ্ঞতা, অভিজ্ঞতা নেই বিদায় বড়দের নিয়ে তেমন চিন্তা করি না । এক ছোট শিশুর জন্য আমার চাওয়া । বড়রা নিজেদেরটা নিজেরা গোছাতে পারে । উপরে রাজু ভাইকে করা মন্তব্যটি পড়তে পারেন ।
হ্যাঁ, এরশাদ শিকদার জন্মায় না, বানানো হয়; সৃষ্টি করা হয় । পরিবার, সমাজ, ধর্ম এবং রাষ্ট্র তেমন মানুষ সৃষ্টি করাই । এতে ছোট ছেলেদের দোষ দেয়া যায় না । শিশুর ও বাঁচার জন্য মৌলিক অধিকার আছে, সেসব আমাদের ভুলে গেলে চলবে না ।
ভাষা আন্দোলনের কথা যদি বলেন সেটা বাংলাভাষার জন্য হয়েছে পরোক্ষভাবে। প্রত্যক্ষভাবে সেটা ছিল মাতৃভাষার জন্য আন্দোলন। অতএব, বলতে আপত্তি নেই যে বাঙালি জাতীয়তাবাদের কথা বলে অন্যদের অনুভূতিতে আঘাত দেয়া হয়।
তবে, ছোট্ট ছোট্ট ছেলেমেয়েদের কথা যে লিখেছেন, সেটা মানতে পারছিনা। আপনার দেয়া ছবি থেকে ওদের বয়স অনুমান করে বলছি, ওরা জাতীয়তাবাদ বুঝার কথা নয়। ওদেরকে এইসবের মধ্যে আনা একেবারেই অনুচিৎ। ওদেরকে ওদের মত করে থাকতে দেয়া উচিৎ।
@মইনুল রাজু, আলোচনায় অংশগ্রহণের জন্য ধন্যবাদ ।
কবে চাকমা ভাষাতে গাইবে চাকমা ছেলেটি সুজলা-সুফলা আমার বাংলাদেশের সুর ? লিখবে নিজের মাতৃভাষাতে ?
আপনার অনুভুতি বুঝছি । কিন্তু করার কি আছে ? ১৯৯২ সালে তৃতীয় শ্রেণীতে পড়তাম । অধীর আগ্রহে আমাদের সামাজিক উৎসব “বিজু” দিনটির জন্য অপেক্ষা করছিলাম । একদিন দেখি বাড়ির উত্তরকোণে আকাশের মেঘ ডাকা গিয়েছে কালো ঘোয়া আর আকাশ ধারণ করেছে রক্তিম বর্ণ । খবর আছে লোগাং-এ হত্যাকান্ড হয়েছে । বিজুদিনটি বর্জনের জন্য আহ্বান করা হয় । এরপর বয়সে কি বাঁধা মানে ? ১২-ই এপ্রিল (খুব সম্ভব) যেদিন ছিল ফুল বিজুর দিন হাজার হাজার মানুষে ঢল নামে লং মার্চে । রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকি পরিচিত কেউ যদি আমাকে ডাকতো; চল । কিন্তু কেউই ডাকেনি সেদিন । ব্যথা ছিল বুকে লং মার্চে যোগ দিতে না পেরে । বাড়ির লোকরা বলেছিলেন যেন না যাই । এটাই হচ্ছে বাস্তবতা । রাষ্ট্র বাধ্য করছে এমনটা । কালকে ফেসবুকে কলেজের ছেলে মেয়েদের স্ট্যাটাসগুলো দেখেছি -ক্ষোভ দেখেছি; দেখেছি রক্ত । এই শিশুগুলোকে এমনটা ভাবতে বাধ্য করাচ্ছে কে ?
আমরা বড়রা এক শিশুর মৌলিক অধিকারকে মনে রাখি না সময়ের আবর্তে । শিশুগুলোর কাঁধে অস্ত্র তুলে দিলে আমার দ্বিমত এবং তীব্র প্রতিবাদ ছিল কিন্তু যে অধিকারের জন্য শিশুরা মাঠে নেমেছে তা এক শিশুর মৌলিক অধিকার । তাছাড়া ৯ বছরের হিমেলের সাক্ষাৎকারটি দ্রবষ্ট্য ।
লেখাটির মূল সুরের সাথে দ্বিমত নেই। :thanks:
আসলেই তাই। তবে সবচেয়ে ভালো হত বোধ করি মানুষ যদি তার অন্য সকল পরিচয়কে ভুলে শুধুমাত্র মানুষ পরিচয় নিয়ে এগোতে পারতো! তবে, সেদিন হয়তো এখনো অনেক দূরে… 🙁
এ ব্যাপারে আমার নিজস্ব কিছু ধারনা শেয়ার করছি এখানে। আমার মনে একটি রাষ্ট্রের জাতীয়তাবাদ থাকতে পারে না, পারে রাষ্ট্রের জনগণের। সেক্ষেত্রে রাষ্ট্রের প্রতিটি জাতির জাতীয়তাকে স্বীকৃতি দেওয়া রাষ্ট্রের অসাম্প্রদায়িক চরিত্র নির্ধারণে একটি মৌলিক কাজ। এখন জাতীয়তাবাদী চিন্তাধারাতে যে সমস্যাটি হয় তা হলো, রাজনৈতিক স্বার্থ অথবা জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করার প্রচেষ্টা, যার দরুণই হোক, রাষ্ট্রের সকল মানুষের জন্য, আপামর জনগণের জন্য একটি সাধারনীকৃত ”জাতীয়তাবাদ” রাষ্ট্র নির্ধারণ করে থাকে/ করার চেষ্টা করে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে বর্তমানে এটি একটি প্রকট সমস্যা হিসেবে দাঁড়িয়েছে। তবে এক্ষেত্রে আমার মত, বর্তমান পরিস্থিতিতে ‘ভাষাভিত্তিক জাতীয়তাবাদের’ থেকে আধুনিক রাষ্ট্রকেন্দ্রিক ‘উদারনৈতিক জাতীয়তাবাদ’ অধিকতর গ্রহনযোগ্য। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জাতীয়তাবাদ ‘বাংলাদেশি’ হওয়া উচিৎ বলে মনে করি এখন। এ প্রসঙ্গে যুক্তিসঙ্গত আলোচনার জন্য নিচের লিঙ্কটি একটু ঢু মারতে পারেন-
http://www.choturmatrik.com/blogs/%E0%A6%A8%E0%A7%87%E0%A6%9F%E0%A6%AA%E0%A7%8B%E0%A6%95%E0%A6%BE/%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%99%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A6%BF-%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%95%E0%A6%BF-%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%82%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B6%E0%A6%BF%E0%A6%83-%E0%A6%95%E0%A7%8B%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E2%80%8C%E0%A6%9F%E0%A6%BF-%E0%A6%86%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%86%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%AE%E0%A6%AA%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%9A%E0%A7%9F
শেষবিচারে, আমি একজন জাতীয়তাবাদীর চাইতে একজন আন্তর্জাতিকতাবাদী হতেই বেশি পছন্দ করবো, কিন্তু বর্তমান সংকটটিকে তো আর অস্বীকার করতে পারছি না!
@নিঃসঙ্গ বায়স,
মানুষ ভুলে যেতো যদি সেই পরিবেশ সৃষ্টি করা যেতো । উগ্র জাতিবাদ আসলেই ভয়ংকর । তবে বড়মাছ যেভাবে ছোটমাছকে গিলে খাই সেভাবে নিয়ম বদলানো খুবই কঠিন । আপনার দেয়া লিংকটি পড়েছি । দারুণ বিশ্লেষন । ভালোবাসা (F) ।
@নিঃসঙ্গ বায়স, FYI, There is around 2 millions of Bengalis who live in Pakistan and speaks Bengali and call themselves Bengali Pakistani. Dr. Qaisar Bengali is a minister in current government. The ex president pervez Musharraf gave away thousands of luxury bungalows worth crore of rupees to thousands of Bengalis to move away from a slum area on lyari expressway.
Tausif
@তাউসেফ, সবদেশে সংখ্যালঘুদের যেন একইভাবে মূল্যায়ন করা হয় ।
@অমিত হিল, রাজা ত্রিদভ রয় আজকে ও একজন পাকিস্তান এর নাগরিক । তার ছেলে ব্তমানে চাকমাদের রাজা এবং বাংলাদেশে থাকেন ।
@তাউসিফ, ত্রিদিব রয় পাকিস্তানকে সাপোর্ট দিয়েছিলেন বলে তিনি আর বাংলাদেশে আসেননি । তাছাড়া তিনি কখনো বাংলাদেশের নাগরিক ছিলেন না । দেবাশিষ রয় মার সাথে দেশের মানুষের টানে বাংলাদেশেই থেকে জান । তিনি নামে রাজা হলেও ক্ষমতাহীন ।