[দীপায়ন খীসার ’ঐক্যের ফেরিওয়ালাদের কাছে কিছু বিনীত নিবেদন’ লেখাটি এর আগে CHTBD গ্রুপের ব্লগে প্রকাশিত হয়েছিলো। এর প্রেক্ষিতে আমিও একটি লেখা দিয়েছিলাম। আজকে দেখলাম, দীপায়ন খীসা তার ঐ লেখাটা এই মুক্তমনাতেও নিয়ে এসেছেন। তার লেখার জবাবে আমার লেখাটাও পাঠকদের জন্যে হুবহু তুলে ধরলাম।]
আজকে সকালে ফেসবুকে ঢুকে চোখে পড়ল CHTBD গ্রুপে দীপায়ন খীসার একটি লেখার লিংক (http://www.news.chtbd.net/?p=605)।লেখার শিরোনাম ছিলো “ঐক্যের ফেরিওয়ালাদের কাছে কিছু বিনীত নিবেদন”।নিঃসন্দেহে আকর্ষণীয়, তবে বাংলা ব্লগীয় শিরোনাম।সহজে পাঠকের চোখ আকৃষ্ট করতে পারে।আমার চোখও আকৃষ্ট হলো। অনলাইন ভার্সনে পত্রিকা পড়া বাদ দিয়ে দীপায়ন বাবুর লেখাটা আগে পড়ে নিলাম। ইচ্ছা হলো সঙ্গে সঙ্গে আমার প্রতিক্রিয়া লেখার জন্যে। কিন্তু কাজের ব্যস্ততা আমাকে তা করতে সময় দেয়নি। তাই তৎক্ষণাত ছোট্ট একটা মন্তব্য লিখে বিদায় নিলাম।
বিকেলে কাজের শেষে বাড়ী ফিরে একটু সতেজ হয়ে নেওয়ার পর দীপায়ন খীসার লেখার প্রতি উত্তরে আমার প্রতিক্রিয়া লিখতে বসলাম। লিখতে বসে ভাবছিলাম, রাজনৈতিক কর্মী দীপায়ন বাবু কত মধুর ভাষায় লেখা লিখেন, আর কত উপদেশ দান করেন! যাহোক, কোন রাজনৈতিক দলের কর্মী নই বলে নির্মোহভাবে তার লেখাটা বেশ কয়েকবার পড়ে নিতে পারলাম।চেষ্টা করতে লাগলাম তার লেখার মূল বক্তব্যগুলো পাঠোদ্ধার করতে তিনি কী বলতে চাচ্ছিলেন। দীপায়ন বাবুর লেখাতে বুঝা গেলো, যারা জেএসএস-ইউপিডিএফ-এর ঐক্যের পক্ষে কথা বলছেন তাদের উপর তিনি ক্ষুব্ধ এবং তাদের সবাইকে ইউপিডিএফর সাথে এক করে ফেলেছেন। তাই “ঐক্যের প্রবক্তাদের” কিছু বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণের উদ্দেশ্যেই তার “ঐক্যের ফেরিওয়ালাদের কাছে কিছু বিনীত নিবেদন” শীর্ষক লেখার অবতারণা। যারা ঐক্যের পক্ষে কথা বলছেন তাদেরকে তিনি বিভিন্ন অভিধা দিয়েছেন, এসবের মধ্যে অন্যতম হলো “ঐক্যের ফেরিওয়ালা”, “স্ব-ঘোষিত” অহিংসবাদী।দীপায়ন বাবুর লেখাতে আমার নাম রেফারেন্স না থাকলেও মনে হলো তিনি আমাকেও “স্ব-ঘোষিত” অহিংসবাদী বলে কটাক্ষ করেছেন। কেননা, ইতিপূর্বে আমার একটি লেখাতে বৌদ্ধ দর্শনের অহিংস নীতির আলোকে জেএসএস-ইউপিডিএফ-এর ঐক্য খুঁজে পাওয়া যেতে পারে মন্তব্য করেছিলাম। এছাড়া আরো অনেক বন্ধু আছেন যেমন অমিত হিল ও সানু জুম্ম যারা সমাজতত্ত্ব ও বৌদ্ধ দর্শনের আলোকে দু’ই দলের সমস্যাকে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছেন। এ কারণে দীপায়ন বাবুর কথিত “ফেরিওয়ালা” হিসেবে তার লেখার উপর কিছু না বললে আমার মনে একটু অস্বস্তি কাজ করবে।
দীপায়ন বাবু “ঐক্যের ফেরিওয়ালাদের” যে “কিছু বিষয়ে” দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চেয়েছিলেন সেসব বিষয় সারসংক্ষেপে বুঝার জন্যে তার লেখাটা বেশ কয়েকবার মনোযোগ দিয়ে পড়ে নিয়েছিলাম। মোটাদাগে তার বক্তব্য ছিলো দু’গ্রুপের উদ্দেশ্য – ইউপিডিএফ আর তথাকথিত ঐক্যের ফেরিওয়ালা বা স্ব-ঘোষিত অহিংসবাদীরা।যেহেতু আমি দ্বিতীয় বর্গের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত, সেহেতু ফেরিওয়ালা হিসেবে দীপায়নবাবুর কাছে আমার বক্তব্য উপস্থাপন করতে চাই। তবে পয়েন্ট বাই পয়েন্ট ধরে আলোচনায় যাওয়ার আগে দীপায়ন বাবুর সদয় অবগতির জন্যে দু’টো বিষয় স্পষ্ট করতে চাইঃ ক) আমি কখনো জেএসএস কিংবা ইউপিডিএফ-র কর্মী ছিলাম না এবং এখনো নেই; খ) দীপায়ন বাবুর বক্তব্যকে জেএসএস-র বক্তব্য হিসেবে পাঠ করবো না, বরং ইউপিডিএফ-চ্যূত ও জেএসএস-এর উপর ভর করা এক পরাগাছা রাজনৈতিক কর্মীর এলোমেলো ভাবনা হিসেবে তার লেখাকে পাঠ করবো (দীপায়ন বাবু, আমার ভাষার জন্যে দুঃখিত)।
দীপায়ন বাবুর কিছু বিষয়ঃ কী সেসব বিষয়?
দীপায়ন বাবু এলোমেলোভাবে অনেক কথা বলেছেন। ইউপিডিএফ আর “ঐক্যের ফেরিওয়ালা”দের দিকে অনেক আঙুল নির্দেশ করেছেন। উভয়কে এক করে ফেলেছেন। সে যা হোক। অত্যন্ত নির্মোহভাবে দীপায়ন বাবুর লেখাটা পড়ে সারসংক্ষেপে তার কথিত “কিছু বিষয়”সমূহ নিম্নোক্তভাবে তুলে ধরা যায়ঃ
১) ইউপিডিএফ-এর বাইরে যারা ইউপিডিএফ-জেএসএস-র রাজনীতি হতে নিরপেক্ষ বা ‘সুশীল সমাজের’ লোক, যারা উভয় দলের ঐক্যের ব্যাপারে কথা বলছেন, তাদেরকে দীপায়ন বাবু অনেক অভিধা দিয়েছেন। যেমন, “ঐক্যের ফেরিওয়ালা”, “নতুন শান্তিবাদী”, “স্ব-ঘোষিত” অহিংসবাদী, “হিপোক্রিট” ইত্যাদি।
২) দীপায়নবাবুর অভিযোগ, ইউপিডিএফ যখনই আক্রান্ত হয়, তখনই “ঐক্যের ফেরিওয়ালারা”/“কথিত শান্তিবাদীরা” জাতীয় ঐক্যের বিষয়টি সামনে নিয়ে আসে।এর মাধ্যমে জেএসএসকে এক ফ্রন্টে ব্যস্ত রেখে ইউপিডিএফকে পুনরায় সংগঠিত হতে সুযোগ করে দেওয়া হয়। তিনি অভিযোগ করেছেন এবারেও একইভাবে ইউপিডিএফ নেতা অনিমেষ চাকমাসহ ৪ নেতা নিহত হওয়ার প্রেক্ষিতে “ঐক্যের ফেরিওয়ালারা” জোরেসোরে ঐক্যের জন্যে হাঁকডাক শুরু করে দিয়েছেন।
৩) বর্তমান জুম্ম সমাজে যে অনৈক্য, সেই অনৈক্যের বীজ জেএসএস বপন করেনি। বরং ইউপিডিএফ তার নাবালকসুলভ কাজের মাধ্যমে এই সংকট সৃষ্টি করেছে।
৪) সংকটের সমাধান সন্তু লারমার রাজী হওয়া না হওয়ার বিষয় নয়। বরং দায়িত্বশীল এবং সাবালক হয়ে পরিপূর্ণ মানুষের মত আচরণের মধ্যে সমাধান খুঁজতে হবে। এদিকে জেএসএস প্রধান সন্তু লারমা দায়িত্বশীলতার সাথে জুম্ম জনগণের মুক্তির সংগ্রামকে এগিয়ে নিয়ে চলেছে।
৫)সন্তু লারমার নেতৃত্বের প্রতি দীপায়ন খীসার স্তুতি এবং জেএসএস-এর প্রতি একটি সাবধান বাণী
এখন দীপায়ন খীসার লেখার বিষযবস্তুর উপর বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা যাক।
১) “ঐক্যের ফেরিওয়ালা”, “নতুন শান্তিবাদী”, “স্ব-ঘোষিত” অহিংসবাদী, “হিপোক্রিট”: কোন অভিধায় দীপায়নবাবু অভিহিত হওয়ার যোগ্য?
দীপায়ন বাবু যদি আমাকে ঐক্যের ফেরিওয়ালা বলে গালি দেন তাতে আমার কোন আপত্তি নেই। আমরা ঐক্যের কথা বলি, ঐক্যের বাণী ফেরি করে বেড়াই। আপনার মত জেএসএস কর্মী কিংবা ইউপিডিএফ কর্মীরা আমাদের জিনিস গ্রহণ করবেন কী করবেন না, সেটা আপনাদের ব্যাপার। আমাদের কথা আমরাই বলবো। অবশ্য ইউপিডিএফও ঐক্যের ঝুড়ি নিয়ে ফেরি করে বেড়াচ্ছে। তবে ক্রেতা হিসেবে আপনি আমাদেরকে ইউপিডিএফ-এর সাথে এক করে গুলিয়ে ফেলবেন না।
দীপায়ন বাবু, আপনি আরো দু’টো উপাধি নিয়ে এসেছেন,“নতুন শান্তিবাদী” ও “স্ব-ঘোষিত” অহিংসবাদী। আমরা কেউই এসব উপাধি দাবী করিনি।আমরা আপনাদেরকে দায়িত্বশীল দল হিসেবে পরমত সহিঞ্চু হতে বলছি। সহিংসতা পরিহার করতে বলছি।নতুন কিংবা পুরনো করে বলছি না। যখন থেকে মারামারি শুরু করেছেন তখন থেকে অন্য সাধারণ মানুষের সাথে আমরাও সহিংসতা বন্ধে আপনাদেরকে অনুরোধ করে আসছি বিভিন্ন মাধ্যমে। এখন ফেসবুক আর ব্লগ সেটা আরো বেশি করে সুযোগ করে দিয়েছে।
আপনি ইউপিডিএফকে হিপোক্রিট বলেছেন। তাদের হিপোক্রেসির নমুনাও দিয়েছেন। যেমন, ইউপিডিএফ ঐক্যের কথা বললেও আনুষ্ঠানিকভাবে জেএসএসকে প্রস্তাব পাঠায়নি; চুক্তি মানে না, অথচ চুক্তি বাস্তবায়নে জেএসএসকে সমর্থন দেওয়ার কথা বলে; সন্তু লারমাকে সকল আক্রমণের টার্গেট করে জেএসএস-র সাথে ঐক্য চায় এবং পূর্ণস্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠা করতে চায় ইত্যাদি। যেহেতু আমি ইউপিডিএফর কেউ নই, এসব অভিযোগের ব্যাপারে আমার কোন কিছু বলা ঠিক হবে না।আশা করি, ইউপিডিএফ-র কোন দায়িত্বশীল ব্যক্তি এ ব্যাপারে জবাব দেবেন।
অন্যদিকে ইউপিডিএফ-এর সাথে আমরা যারা দুই দলের বৃত্তের বাইরে থেকে কথা বলছি তাদেরকেও আপনি “হিপোক্রেট” বলে গালি দিয়েছেন। আপনি লিখেছেন,
“অথচ দলটির প্রধান প্রসিত খীসার সাথে সেনাকর্তাদের বৈঠকের অন্তরঙ্গ ছবির বিষয়টিও মানুষের কাছে গোপন থাকেনা। এই রকম এক হিপোক্রেট দলের সাথে সুর মিলিয়ে যারা অহিংসবাদ প্রচার করেন, নিরপেক্ষতার ভাব ধরেন তারাও হিপোক্রেট হবেন তাতে সন্দেহ থাকতে পারেনা। এই অহিংসবাদীদের প্রচারণা প্রোপাগাণ্ডার জবাবে বলতে হয় যদি সত্যিই পার্বত্য অঞ্চলের রাজনীতিতে ঐক্য চান তা হলে হিপোক্রেসী পরিত্যাগ করুন”।
কারা কারা ইউপিডিএফ-এর মত হিপোক্রিট দলের সাথে সুর মেলাচ্ছে তাদের নামগুলো স্পষ্ট করেননি। শুণ্যে গুলি মেরে সবাই এক কাতারে নিয়ে যেতে যাচ্ছেন। সেকথা থাক। দীপায়ন বাবু, হিপোক্রেসী তত্ত নিয়ে আপনি যখন বলেন বেড়ান, “ব্যক্তিগত হিপোক্রেসির চেয়ে রাজনৈতিক হিপোক্রেসি খুবই বিপদজনক, তা সমাজ জীবনকে বিপর্যস্ত করে ফেলে, জন জীবনকে দুর্বিষহ করে”, তখন আপনার অতীত কীভাবে ভুলে যান? (দু:খিত ব্যক্তিগত আক্রমণ হিসেবে নেবেন না। প্রসঙ্গ এসেছে বলে বলতে হচ্ছে)।আমি তো জানি, আপনি হলেন সেই রাজনৈতিক হিপোক্রিটদের একজন।এখন যাকে (ইউপিডিএফ) গালি দিচ্ছেন, তার অন্যতম জন্মদাতা ছিলেন আপনি। চুক্তি হওয়ার আগে গোটা জুম্মসমাজ ও ছাত্রসমাজ চুক্তির পক্ষে কথা বলছিলেন, তখন তো আপনি এবং আপনারাই তো সেই প্রসিতের সাথে সুর মিলিয়ে ‘পূর্ণস্বায়ত্তশাসনের’ ঝুড়ি নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ফেরি করে বেরিয়েছিলেন। মনে পড়ে কী, আপনার মত হিপোক্রেটদের র্মুহুর্মুহু করতালির মধ্যে প্রসিত-সঞ্চয়রা ঢাকার প্রেসক্লাবের সামনে ‘পূর্ণস্বায়ত্তশাসনের’ ঝুড়ি প্রথম উন্মোচন করেছিলেন? দীপায়নবাবু, মনে পড়ে কী আপনারা কয়জন ‘পূর্ণস্বায়ত্তশাসনের’ ফেরিওয়ালা ছিলেন? মনে পড়ে কী সেই নামগুলো – প্রসিত, রবিশংকর, সঞ্চয়, দীপ্তিশংকর, চম্পানন, কবিতা, সমারি, ক্যহ্লাচিং আরো অনেকের নাম? মনে পড়ে কী সেই দিনের কথা যখন আপনি জগন্নাথ হলের দক্ষিণবাড়ীর টিভি রুমে সারারাত জেগেছিলেন পিসিপি ঢাকা মহানগর শাখার কাউন্সিলে আপনার অনুগত ‘পূর্ণস্বায়ত্তশাসনের’ ফেরিওয়ালারাদের জিতিয়ে আনতে? মনে পড়ে কী সেদিন রাতে কোন ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছিলেন? সেই ‘পূর্ণস্বায়ত্তশাসনের’ ফেরিওয়ালারা এখন কোথায়? আর আপনি কোথায়?আপনি ‘পূর্ণস্বায়ত্তশাসনের’ ঝুড়ি ফেলে দিয়ে কেন “চুক্তি বাস্তবায়নের ঝুড়ি” মাথায় নিয়ে ফেরি করে বেড়াচ্ছেন? এটা কী আপনার ব্যক্তিগত হিপোক্রেসি নাকি রাজনৈতিক হিপোক্রেসি?
দীপায়নবাবু, আমি দৃঢ়ভাবে বলতে চাই, আমরা ফেরিওয়ালা হিসেবে ঝুড়ি বদলায়নি। আমি আরো দৃঢ়ভাবে বলতে চাই, আপনার মত কোন দলের লেজুরবৃত্তি করিনি। আপনার মত ‘পূর্ণস্বায়ত্তশাসনের’ ঝুড়ি ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে “চুক্তি বাস্তবায়নের ঝুড়ি” মাথায় নিয়ে ফেরিওয়ালা হইনি। আমরা সাধারণ নাগরিক হিসেবে জুম্ম জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জেএসএস-ইউপিডিএফ-এর মধ্যেকার খুনোখুনি বন্ধ করতে উভয় দলকে আহবান জানাচ্ছি। সেজন্যে আমরা একতার কথা বারবার বলছি, ভবিষ্যতেও বলে যাবো। আপনার মত ভন্ড রাজনৈতিক কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলছি, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ভন্ডামি পরিহার করুন, আর জাতিকে চরমভাবে বিপদগ্রস্ত হওয়া থেকে মুক্তি দিন।
২) ইউপিডিএফ যখনই আক্রান্ত হয়, তখনই “ঐক্যের ফেরিওয়ালারা”/“কথিত শান্তিবাদীরা” জাতীয় ঐক্যের বিষয়টি সামনে নিয়ে আসেঃ দীপায়ন বাবু কাকে কী বলেন?
দীপায়নবাবুর অভিযোগ করেছেন, ইউপিডিএফ যখনই আক্রান্ত হয়, তখনই “ঐক্যের ফেরিওয়ালারা”/“কথিত শান্তিবাদীরা” জাতীয় ঐক্যের বিষয়টি সামনে নিয়ে আসে।এর মাধ্যমে জেএসএসকে এক ফ্রন্টে ব্যস্ত রেখে ইউপিডিএফকে পুনরায় সংগঠিত হতে সুযোগ করে দেওয়া হয়।উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেছেন, এবারও একইভাবে ইউপিডিএফ নেতা অনিমেষ চাকমাসহ ৪ নেতা নিহত হওয়ার প্রেক্ষিতে “ঐক্যের ফেরিওয়ালারা” জোরেসোরে ঐক্যের জন্যে হাঁকডাক শুরু করে দিয়েছেন। তিনি আরও প্রশ্ন রেখেছেন, অভিলাষকে রাতের অন্ধকারে স্ত্রী-কন্যার সামনে হত্যা করা হয়, তখন কথিত শান্তিবাদীরা কোথায় ছিলেন? আমার জানা মতে, তখনও ফেসবুকে অনেক আলোচনা হয়েছিলো। ফেসবুক বন্ধুরা (অবশ্য ইউপিডিএফ সমথর্করা বাদে) তাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলো ফেসবুকের দেয়ালে দেয়ালে। তখন দীপায়ন বাবু কোথায় ছিলেন? দীপায়ন বাবু, আপনার কাছেও একটি প্রশ্ন, নববর্ষের দিনে বাঘাইছড়িতে চিজিমণি চাকমা (৩২) ও তার দুই বছরের শিশুকন্যা অর্কিমণিকে গুলি করে হত্যা করেছিলো জেএসএস (সন্ত লারমা)-এর সশস্ত্র গ্রুপ। কী দোষ ছিলো শিশু অর্কিমণির? শিশু হত্যা ও নারী অপহরণের (সম্প্রতি রাঙামাটিতে ১১ নারীকে জেএসএস কর্মীরা অপহরণ করেছিল)বিরুদ্ধে কথা বললেও একই যুক্তি খাঁড়া করবেন?
জনান্তিকে শুনেছিলাম, দীপায়ন বাবু আপনিও তো শান্তিবাদী। রাজা দেবাশীষ রায় একবার উদ্যোগ নিয়েছিলেন জেএসএস-ইউপিডিএফ-র মধ্যে আলোচনা শুরু করতে। সন্তু লারমা দীপায়ন বাবুকে অন্যতম প্রতিনিধি হিসেবে পাঠিয়েছিলেন ইউপিডিএফ-র সাথে শান্তি আলোচনায় অংশ নিতে (যদিও শেষ পর্যায়ে আলোচনা হতে পারেনি)।দীপায়ন বাবু, আমাদের মাননীয় রাজাবাবুকেও একই অভিযোগে অভিযুক্ত করবেন?
৩) অনৈক্যের বীজ কে বপন করেছে জেএসএস না ইউপিডিএফ? দীপায়ন বাবুর কী দায় নেই?
দীপায়ন বাবুর নিজের অজান্তে অনেক সত্য কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, বর্তমান জুম্ম সমাজে যে অনৈক্য, সেই অনৈক্যের বীজ জেএসএস বপন করেনি। বরং ইউপিডিএফ তার বিভিন্ন নাবালকসুলভ কাজের মাধ্যমে এই সংকট সৃষ্টি করেছে।আপাতত দীপায়ন বাবুর কথাটা সত্য বলে ধরে নিচ্ছি।
দীপায়ন বাবু তার বক্তব্যের সপক্ষে অনেক তথ্য দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ইউপিডিএফ-র নাবালকসুলভ কাজগুলো হলো: ক) প্রসিত খীসা চুক্তি মানেননি। তিনি জেএসএস-সরকারের মধ্যেকার সম্পাদিত চুক্তিকে “আত্মসমর্পন” এবং “জুম্ম জনগণের সাথে বেঈমানী” হিসেবে অভিহিত করেছিলেন; খ) প্রকাশ্যস্থানে প্রতীকি চিতা ও শশ্মান তৈরী করে সন্তু লারমা ও জেএসএসকে মৃত বলে ঘোষণা করেন; গ)অস্ত্র জমাদানের সময় কালো পতাকা প্রদর্শন; ঘ) ট্রানজিট ক্যাম্পে ঢিল ছোঁড়া; ঙ) জেএসএস সদস্যদের পিনোন প্রদর্শন করা, যা চাকমা রীতি অনুযায়ী চরম অবমাননা। দীপায়নবাবু, জোর দিয়ে বলেছেন, এসব নাবালকসুলভ কার্যক্রমের মাধ্যমে ইউপিডিএফ জেএসএস-র সাথে বৈরী পরিবেশ সৃষ্টি করেছিলো। অর্থাৎ অনৈক্য বা খুনোখুনির পরিবেশ সৃষ্টি করেছিলো।
কিন্তু প্রশ্ন হলো, দীপায়ন বাবু কী তখন নাবালক ছিলেন? তিনি তো তখন ইউপিডিএফ-র বড় নেতা। তিনি কী নাবালক কর্মীদের জেএসএসর বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেননি? ইউপিডিএফ-এর এসব নাবালকসুলভ কাজে দীপায়ন বাবুর কোন হাত ছিলো না? ইউপিডিএফ-র উপর দোষ চাপিয়ে তিনি নিজের দায়ভার এড়াতে চাচ্ছেন? তিনি সৎ সাহস নিয়ে কেন নিজের দোষ স্বীকার করছেন না?
৪) জেএসএস-ইউপিডিএফ-এর মধ্যেকার সংকট সমাধানে দীপায়ন বাবুর ফর্মুলা
সন্তু বাবুর কাছে ইউপিডিএফ কেন ঐক্যের আহবান জানায়, এবং কেন “ঐক্যের ফেরিওয়ালারা”ও তা করে থাকেন সেজন্যে দীপায়ন বাবু নাখোশ হয়েছেন। অর্থাৎ তার মতে ঐক্যের টার্গেট কেবল সন্তু লারমা হতে পারেন না। তিনি ইউপিডিএফ ও “ঐক্যের ফেরিওয়ালারা”দের উদ্দেশ্যে বলেছেন,
“সংকটের সমাধান সন্তু লারমার রাজী হওয়া না হওয়ার মধ্যে নয়, বরং দায়িত্বশীল আচরণের মধ্যে এবং সাবালক হয়ে পরিপূর্ণ মানুষের মত আচরণের মধ্যে সমাধান খুঁজতে হবে”।
বটেই তো।আমরাও তো সেকথাই বলতে চাচ্ছিলাম। এক ফেসবুক বন্ধু Sanu Jummo তো খোলসা করেই বলে ফেলেছিলেন – সন্তু-প্রসিত হলেন গুরু-শিষ্য।গুরু-শিষ্য মিলে জুম্মজাতিকে বিপদগ্রস্ত করে ফেলেছেন। তাই কেবল শিষ্যের কাছ থেকে “দায়িত্বশীল আচরণ” আশা করলে হবে না। গুরুর কাছ থেকেও আমরা “দায়িত্বশীল আচরণ” আসতে হবে। আমরা সাধারণ নাগরিকরা কেবল “গুরুকে” বলছি না, শিষ্যকেও আহবান জানিয়ে আসছি জাতির প্রতি দায়িত্বশীল আচরণ করার জন্যে।
দীপায়ন বাবুর কাছে প্রশ্ন, “দায়িত্বশীল আচরণের” সূচকগুলো কী কী? কীভাবে বুঝবো দু’দলই দায়িত্বশীল? আমরা তো দেখে আসছি, দু’দলই একে অপরকে নির্মূল করার হুমকি দিচ্ছে এবং খুনোখুনি করছে প্রতিনিয়ত। সংঘাতের জন্যে দু’দলই পরস্পরকে দোষারোপ করে আসছে। তাহলে সমাধানের পথ কী হতে পারে?
আপনার মত করে, দু’দলের সংকট সমাধানের জন্যে আমরা রাজনৈতিক ফর্মুলা দিতে পারি না এবং সে রাজনৈতিক যোগ্যতা বোধয় আমাদের নেই। সেজন্যে আমরা বৌদ্ধ দর্শনের অহিংস নীতির আলোকে দুদলকে দায়িত্বশীল হতে বলছি (যদিও অহিংসার কথা বলাতে আপনি আমাদের কড়া ভাষায় গালি দিয়েছিলেন। তবে এ লেখার মাধ্যমে সে উপহার আপনাকে ফেরত দিলাম।)। অহিংস নীতি অনুশীলন করতে গিয়ে পরস্পরকে দোষারোপ করার প্রয়োজন নেই। কেবল স্বনিয়ন্ত্রিত আচরণের মাধ্যমে জেএসএস-ইউপিডিএফ জাতির প্রতি দায়িত্বশীল হতে পারে। বুদ্ধের বাণী অনুসারে, তিন প্রকারের অকুশল কর্ম হতে বিরত থাকলে হবেঃ কাজে (deeds), বাক্যে (words) ও চিন্তায় (thoughts)।কাজের মাধ্যমে অর্থাৎ কায়িকভাবে আপনারা দু’দলই পরস্পরের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারন হতে বিরত থাকুন, পরস্পরকে অপহরণ করা হতে বিরত থাকুন। বাক্যে বা কথাবার্তায় আপনারা সংযত থাকুন, উস্কানিমূলক বক্তব্য হতে বিরত থাকুন, ও অশ্রদ্ধামূলক বাক্য বিনিময় হতে বিরত থাকুন। আর চিন্তায় (thoughts)সৎ থাকুন, একে অপরকে নির্মূলের আয়োজন হতে বিরত থাকুন।এককথায়, আপনাদের দু’দলের রাজনৈতিক চিন্তা থেকে ভন্ডামি পরিহার করন। তাই আমরা মনে করি, জেএসএস-ইউপিডিএফ, অন্যভাষায় বললে সন্তু-প্রসিত যদি এই তিন উপায়ে অকুশল কর্ম থেকে বিরত থাকতে পারেন, তাহলে তারা জাতির প্রতি দায়িত্বশীল বলে বিবেচিত হবেন।
৫)সন্তু লারমার নেতৃত্বের প্রতি দীপায়ন খীসার স্তুতি এবং একটি সাবধান বাণী
প্রাক্তন পূর্ণস্বায়ত্তশাসনের ফেরিওয়ালা নব্য জেএসএস কর্মী দীপায়ন খীসা সন্তু লারমার নেতৃত্বের যেভাবে স্তুতি শুরু করেছেন তাতে আমার খুবই আশংকা হয়। সন্তু লারমার জন্যে দীপায়ন খীসারা কতটুক নির্ভরযোগ্য। জেএসএস নেতারা জানেন কী এরেন্ডাগাছে কাঠাল ধরে না? দীপায়ন খীসা ঐক্যের ফেরিওয়ালাদের গালি দিয়ে সন্তু লারমা বা জেএসএস নেতাকর্মীদের দৃষ্টি আকর্ষণের উদ্দেশ্যে লিখেন,
“[১]…নতুন শান্তিবাদীরা যারা অনিমেষ চাকমার মৃত্যূর পর থেকে জাতীয় ঐক্য – জাতীয় ঐক্য বলে বাজারে হাঁক-ডাক ছাড়ছেন, তাদেরকে বলছি আপনাদের প্রিয় ভাইদের যেন আর রক্ত না ঝরে, যেন আপনারা শান্তিতে ঘুমাতে পারেন তার জন্য ইউপিডিএফ-কে বালখিল্যতা পরিহার করে সঠিক কক্ষপথে নিয়ে আসুন। [২] জনসংহতি সমিতি বহু আগে থেকেই জাতীয় ঐক্যের ভিত্তি তৈরী করে রেখেছে।কাজেই আপনাদের কথিত যে প্রচারণা তার সম্পূর্ণ অসার এবং রাজনৈতিক বিদ্বেষপ্রসূত। [৩] জনসংহতি সমিতি এবং দলটির নেতা সন্তু লারমা দায়িত্বশীলতার সাথে জুম্ম জনগণের মুক্তির সংগ্রামকে এগিয়ে নিয়ে চলেছে।”
উপরের অনুচ্ছেদে দীপায়ন খীসা তিনটি বিষয়ের কথা বলেছেন। প্রথম দু’টো পয়েন্টে বেশি বলার নেই। কারণ সেই বিষয়গুলো ইতোমধ্যে আলোচনা করা হয়েছে। তারপরও একটা মন্তব্য করতে হয়, যারা বন বাদারে মারা যাচ্ছে তাদেরকে দীপায়ন খীসারা নিজেদের ভাই বলে মনে করেন না। অর্থাৎ “হিপোক্রিট ইউপিডিএফ” আর “ফেরিওয়ালাদের” ভাইবোনেরা মারা গেলে তার বা জেএসএস-এর করার কিছুই নেই। তখন তিনি বা তারা নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারেন। এত সরল স্বীকারোক্তির পরও কী দীপায়ন বাবুর মত ভন্ড জেএসএস নেতাদের কাছ থেকে ভাল কিছু আশা করতে পারি?
দীপায়ন খীসা দ্বিতীয় পয়েন্টে বলেছেন জেএসএস বহু আগে থেকেই জাতীয় ঐক্যের ভিত্তি তৈরী করে রেখেছে।এ মুহুর্তে বিস্তারিত ব্যাখ্যায় যাওয়ার দরকার নেই।শুধু কয়েকটি প্রশ্ন রাখবো দীপায়ন বাবুর কাছে। জাতীয় ঐক্যের ভিত্তি যদি বহু আগে তৈরী হয়ে থাকে তাহলে কেন এত সংঘাত? কেন জেএসএস ভেঙে হয়ে গেলো – জেএসএস (সন্তু লারমা) আর জেএসএস (এম এন লারমা)? তখন কী যুক্তি দিবেন জেএসএস (এম এন লারমা) গ্রুপ ষড়যন্ত্রকারী? সরকারের দালাল ইত্যাদি? কেন সন্তু লারমার এক সময়ের তরুণ তগবগে নেতারা যেমন, থোয়াইঅং, পলাশ, ব্রজ, তনয়, বোধিসত্ত্ব, মৃগাঙ্গ, ও উজ্জ্লরা হারিয়ে গেলেন? এই তরুণ নেতারা তো এক সময় প্রসিত-সঞ্চয়-দীপায়ন খীসার মত পূর্ণস্বায়ত্তশাসনের ফেরিওয়ালাদের বিরুদ্ধে জোরালো ভূমিকা রেখেছিলেন।এদের ঠাঁই না হয়ে কেন আপনার মত নীতিহীন ফেরিওয়ালারা সন্তু লারমার কোলে আশ্রয় জুটে? দীপায়ন বাবু, এটাকে ব্যক্তিগত আক্রমণ হিসেবে নেবেন না, চরম সত্য হিসেবে মেনে নেবেন।তা না তাহলে অন্যের বিরুদ্ধে যে ভন্ডামির অভিযোগ আনেন সেটার কোন মূল্য থাকবেনা।
আপনি আরো সন্তু লারমার নেতৃত্বকে দায়িত্বশীল বলেছেন। যেহেতু সন্তু লারমার আশেপাশে থাকার সুযোগ হয়নি, সেহেতু তার নেতৃত্বের ব্যাপারে অযথা মন্তব্য করলে আপনারা রেগে যাবেন, গালমন্দ শুরু করবেন। শুধু অনুরোধ করবো নীচের ছবিগুলো দেখুন, তারপর নিজেকে প্রশ্ন করুন সত্যিই কী সন্তু লারমা দায়িত্বশীলতার সাথে নেতৃত্ব দিচ্ছেন? ছবির সাহায্যে ব্যাখ্যা করতে চাচ্ছি।
ছবি ১
(Happy Moments! Flanked by Goutam and Rupayan, two PCJSS pillars, one has now been a parallel leadership recognised by the Dighinala Special Workers Conference 2010, while the other is a mentally distant star. Photo: Michael Heyn, former UNDP-CHTDF Director (Source: CHT Voice).
দীপায়ন বাবু, বুঝার চেষ্টা করুন তো ছবির ক্যাপশনের ভাষা। আপনার বাংলা অনুবাদ লাগবে কী? ছবি কথা বলে, “আহা!সেই সুখের মুহুর্তোগুলো! সন্তু লারমা দু’টো স্তম্ভের মাঝখানে হাস্যোজ্জ্বল মুখে দাঁড়িয়ে আছেন। এখন একটি স্তম্ভ (তার ডান পাশেরটা) সমান্তরালে সরে গেছে, আরো একটি স্তম্ভ (তার বাম পাশেরটা) মনের আকাশে দূর তারা হয়ে আছে। সন্তু লারমার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে প্রশ্ন করতে চাই, সেই হাসি, সেই সুখের মুহুর্তোগুলো কী এখনো অম্লান আছে?
ছবি ২
(PCJSS Peace Mission: Should there be peace for them? At Dhudukchara hideout, flanked by Sudhasindhu, Goutam, Rupayan and Raktotpal, prior to catching chopper for attending to the peace dialogue with GoB delegation, led by Abul Hasnat Abdullah on 21 Dec 1996. Raktotpal Tripura (central committee member and CHT Regional Council member) has recently left politics for PCJSS internal crisis. Photo: Information and Publicity Department, PCJSS. Source: CHT Voice).
ছবি প্রশ্ন করে, “জেএসএস-এর শান্তি মিশনঃ তাদের জন্যে শান্তি আসবে কী? দুধুকছড়াতে সন্তু লারমার দু’পাশে দাঁড়িয়ে আছেন চার মহারথী সুধাসিন্ধু, গৌতম, রূপায়ন, আর রক্তোৎপল। কোথায় এবং কেন হারিয়ে গেলেন সন্তু লারমার সেসব চারি মহারথী? একসময়ে পরম বিশ্বস্ত মহারথী সুধাসিন্ধু খীসা (সর্ব বামের জন) ও রূপায়ন দেওয়ান (ডান দিকে থেকে দ্বিতীয়) সন্তু লারমার নেতৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করে গঠন করেছেন জেএসএস (এমএন লারমা)। রাজনৈতিক ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ যাই হোক, তারা সন্তু লারমা থেকে দূরে সরে গেছেন। দীপায়নবাবু, এরপরও কী বলবেন, “জনসংহতি সমিতি এবং দলটির নেতা সন্তু লারমা দায়িত্বশীলতার সাথে জুম্ম জনগণের মুক্তির সংগ্রামকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন?”
কথা যেন শেষ হতে চায় না। সবশেষে জেএসএস তথা সন্তু লারমার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই, দীপায়ন খীসাদের মত ভন্ড পূর্ণস্বায়ত্তশাসনের ফেরিওয়ালাদের দিয়ে শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন হতে পারে না। আগে ভাগে দীপায়ন খীসাদের মত লোকদের কাছ থেকে সাবধানে না থাকলে তারা আপনার সাথে বেঈমানি করবেন না এমন কোন গ্যারান্টি কেউ কী দিতে পারবেন?
অতএব সাধু সাবধান।
——————-
অডঙ চাকমা, ১৯ জুন ২০১১
কৃতজ্ঞতা স্বীকার
দীপায়ন বাবুকে ধন্যবাদ জানাই তার খোলামেলা লেখার জন্যে।
সেই ফেসবুকের অগণিত বন্ধুদের ধন্যবাদ জানাই যারা কোন দলের ভাবাদর্শে প্রভাবিত না হয়ে নিরপেক্ষভাবে আলোচনায় অংশ নিচ্ছেন। এ প্রসঙ্গে এক রসিক ফেসবন্ধুর কথাও উল্লেখ না করে পারছি না। কিছুদিন আগে ঐ রসিকবন্ধু ফেসবুকে জেএসএস-ইউপিডিএফ-এর কর্মী, সমর্থক ও রাজনীতি নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের আলোচনা-সমালোচনার ঝড় দেখে তার স্ট্যাটাসে মন্তব্য করেছিলেন,
“ভালই লাগছে, আমরা জঙ্গল দাবড়াচ্ছি বলে এখন অনেক হরিণ, শুকর, গুইসাপ, বেঙ, সাপ বের হয়ে আসছে…..একসময় হয়তো বড় বড় বাঘও বের হয়ে আসবে”(অবশ্য স্ট্যাটাসটা চাকমা ভাষায় ছিলো)।
ঐ রসিক বন্ধু কী বুঝাতে চেয়েছিলেন সেটা স্পষ্ট। এতদিন ফেসবুকে ও ব্লগে উভয় দলের আন্ডানেতা ও সমর্থকরা বিতর্কে অংশ নিচ্ছিলেন। সেসব আন্ডানেতা ও সমর্থকের বাইরেও বড় নেতারা আসছেন। যেমন ইউপিডিএফ-র কেন্দ্রীয় নেতা নিরন চাকমা আমার লেখার (http://www.somewhereinblog.net/blog/odong/29386907) প্রেক্ষিতে বিতর্কে অংশ নিয়েছিলেন। আজকে দীপায়ন খীসাও লেখা দিয়ে বিতর্কে নেমে আসলেন। আশা করবো, এ বিতর্ক গঠনমূলকভাবে চলবে।সাধারণ বন্ধুরাও বির্তকে অংশ নেবেন অত্যন্ত খোলামেলামনে এবং আন্তরিকভাবে।
ইউডিএফ এর পক্ষ থেকে কেউ কি তাদের পার্টির আদর্শ কি, কি তাদের লক্ষ্য এইগুলোকে সল্প পরিসরে মুক্তমনার পাঠকদের জন্যে তুলে ধরতে পারবেন? একই কথা প্রযোজ্য জনসংহতি সমিতি এর জন্যেও। দীপায়ন বাবু যেহেতু এখানে আছেন তিনি জনসংহতি সমিতি এর লক্ষ্যগুলো তুলে ধরতে পারেন। আমার উদ্দেশ্য আসলে এই দু’দলের মাঝে আদর্শের পার্থক্যটুকু কতটুকু সেটা জানার। লেখার মাঝে অন্য দলের বিরুদ্ধে কোন বক্তব্য না থাকলেই ভালো হয়। অগ্রীম ধন্যবাদ জানিয়ে রাখলাম।
ফেসবুক গ্রুপ ‘পাহাড়ের রূদ্ধকণ্ঠ CHT Voice’ [লিংক] এ ইউপিডিএফ-এর দলছুট নেতা (এখন প্রবাসী) সঞ্চয় চাকমার একটি প্রাসঙ্গিক পোস্ট এখানে সংযুক্ত করা হচ্ছে:
সবাইকে ধন্যবাদ। (Y)
বিশ্বাসীরা মনে করে ভগবান ভুল করেনা । আপনার কাছে জাফর উল্লাহর বক্তব্য হলো বেদবাক্য । তাই ভুল হতে পারে না এবং প্রমান দেয়ারও প্রয়োজন হয় না । অতএব আপনি আপনার বেদবাক্য নিয়ে মানুষের কুৎসা প্রচার করতে থাকুন ।
“না জেনেই সেতারা হাশেমকে আমি যথার্থ সম্ভাষণেই ভূষিত করেছি।” এই বাক্যটির দ্বারা আপনার মনমানসিকতা প্রকাশ পেয়ে গেছে ।
যুক্তিহীন মানুষই ব্যক্তি কুৎসা প্রচারে উদ্বুদ্ধ হয় । ব্যক্তি কুৎসা প্রচারে আপনার উৎসাহ থকতে পারে, কিন্তু আমি কুৎসা প্রচারকে ঘৃণা করি ।
আমি রাজনৈতিক কর্মী, ফুলের মালা যেমন নেই, তেমনি জুতার মালা নিতেও প্রস্তুত । ব্যক্তিগত আলোচনার ইতি এখানেই টানতে চাই । তবে মুল বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্য প্রস্তুত আছি ।
হা হা হা। বিপ্লব আর মেহুলকে ঘেউঘেউ করা ভারতীয় কুত্তা যেন কে বলেছিল? অভির বাপ তুলে কে যেন গালি দিয়েছিল? ও হ্যাঁ সেটাতো আর আপনি নন। সেই গালাগালগুলো করেছি্ল জনাবা সেতারা হাশেম। 🙂
গুড। শুভ বুদ্ধি উদয়ের জন্য ধন্যবাদ। মূল বিষয়ে আলোচনার জন্য মুক্তমনার সকলেই প্রস্তুত। ‘মুক্তমনার সবজান্তা’ ধরনের তীর্যক এবং উস্কানিমূলক পরিভাষা যেন আর দেখতে না পাই আপনার লেখায়।
@ফরিদ আহমেদ,
একমত। আমি সাধারণতঃ এই ব্যক্তিগত রেষারেষি এড়িয়ে চলি। অথচ এই আ হা মহিউদ্দীন মহীউদ্দিন সাহেবের পদার্পন ঘটলেই কেন যেন সব কিছু নষ্ট হয়ে যায়। শুধু সেতারা হাসেম নামেই তো নয়, তিনি চালাকমাইয়া নামেও মন্তব্য করেছেন। সেটা তিনি তখন স্বীকারও করেছিলেন। বার বারই তিনি অপদস্থ হন, কিছু সময়ের জন্য অন্তর্নিহিত হন, আবার দেখা যায় কিছুদিন পরে ফিরে আসেন। কারণ উনি জানেন, মুক্তমনায় আলোচনার জন্য ক্ষেত্র তিনি পান, অন্য কোথাও তিনি পান না। অথচ যারা এত কষ্ট করে এমন একটা প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছে, সেই প্ল্যাটফর্মের প্রতি কোন সহানুভূতি বা ভাললাগা কোনটাই তার নেই। তার কমেন্ট থেকেই বোঝা যায় তিনি মুক্তমনাকে কি চোখে দেখেন।
মুক্তমনা উনার পছন্দ নয়, ধর্মের সমালোচনা করে সংশয়বাদী লেখা কেউ পোস্ট করলেই উনার পিত্তি জ্বলে যায়, পোস্টের লেখককে তিনি বামপন্থী কায়দায় জ্ঞান দিতে আসেন – “দেশের নব্বই ভাগ লোক অধার্মিক নয়, মুক্তমনারা কিছু বোঝে না”- ইত্যাদি ইত্যাদি। একই যুক্তি যদি কেউ দেয় পৃথিবীর নব্বই ভাগ লোক তো কমিউনিস্ট নন, তাও কেন তিনি কমিউনিজম আর মার্ক্সবাদ প্রমোট করেন? উনি বলবেন, উনি একটি উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করেন। উনি যেরকম মনে করেন, আমরাও আমাদের মতো উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করতে পারি (অথচ সেটা তার পছন্দ নয়)। মুক্তমনা লেখকেরা মনে করে ধর্মগুলো প্রতিষ্ঠিত হয়েছে মিথ্যার উপর, ধর্মগ্রন্থগুলোকে ঈশ্বরের গ্রন্থ নাম দিয়ে মিথ্যে এবং অবৈজ্ঞানিক ব্যাপার যুগের পর যুগ ধরে শেখানো হয়েছে, মহাবিশ্ব সৃষ্টি আর প্রাণের অস্তিত্ব নিয়ে ভুল ধারণা দেয়া হয়েছে, নবী রসুলকে ঈশ্বরের দূত হিসেবে আখ্যায়িত করে প্রতারণা করা হয়েছে, নারীদের অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে, অথচ সেগুলো নিয়ে কেউ লিখলেই সেতারা হাসেমের পিত্তি জ্বলে যায়, ইনিয়ে বিনিয়ে উস্কানি দিতে শুরু করেন উনি।
উনার মুক্তমনা পছন্দ না হলে এখানে না লিখলেই পারেন। সাফ কথা। নেটে আরো বহু ব্লগ আছে, উনার উদ্দেশ্যের সাথে যেখানে মেলে সেখানে উনি লিখতে পারেন, কেউ মানা করছে না। এখানে লিখতে হলে উস্কানি দেওয়া চলবে না।
@ফরিদ আহমেদ
আমাকে উস্কানিমূলক তীর্যক মন্তব্য না করার উপদেশ দিয়ে নিজেই আমার সম্পর্কে উস্কানিমূলক তীর্যক মন্তব্য করে বসলেন । মুক্তমনার মডারেশন সম্পর্কে আমার সন্দহটা যে অমূলক ছিল না তার প্রমান আপনার আলোচ্য পোষ্ট ।
আমি পূর্বেও বলেছি এবং আজও বলছি আ হা মহিউদ্দীন ও সেতারা হাশেম এক ব্যক্তি নয় । এবার চ্যালেঞ্জ করছি, আপনি প্রমান করুন তারা এক ব্যক্তি ।
তাছাড়া নাম পরিবর্তন ও লিঙ্গ পরিবর্তন এক জিনিষ নয় । লিঙ্গ পরিবর্তন করতে হলে মেডিক্যাল প্রক্রিয়ার মধ্যে যেতে হয় । অতএব নাম পরিবর্তনের প্রমান অথবা লিঙ্গ পরিবর্তনের সার্টিফিকেট উপস্থাপন করুন ।
আমাকে আপনি বামপন্থী ইসলামিষ্ট আখ্যায়িত করেছেন । আমি যে বামপন্থী তা ব্যক্তিগত ভাবে আমাকে যারা চিনে তারা সকলেই জানে । যুক্তরাষ্ট্র এ বাংগালি রাজিনীতির কেন্দ্রবিন্দু নিউ ইয়র্কের জ্যাকসন হাইট, আমার বাড়ী নিউ জার্জসি থেকে ট্রেনে এক ঘন্টার পথ । মৌলবাদ বা সরকারের বিরুদ্ধে প্রোটেষ্টে আমি সব সময় নিমন্ত্রিত হই । যেমন সরকারের মৌলবাদি তোষন, সংবিধানে রাষ্ট্র ধর্ম সংযোজন এবং আদি বাসীদের সংবিধান স্বীকৃতি না দেওয়ার বিরুদ্ধে গতকাল ১০ই জুলাই, জুম্মা পরিষদ, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খৃষ্টান ঐক্য পরিষদ, ৭২এর চেতনা বাস্তবায়ন কমিটি, ঘাতক দালাল নির্মুল কমিটি, উদীচী, আওয়ামি লীগের একাংশ, প্রগ্রেসিভ ফোরাম প্রভৃতি সংগঠন কর্তৃক আয়োজিত সভায় আমিও নিমন্ত্রিত ছিলাম । এই সংগঠনগুলি ধর্মকে ব্যক্তিগত বিষয় বলে মনে করে এবং সমালোচনার উর্ধে রাখে । এমতাবস্থায় আমি কি করে ইসলামিষ্ট হলাম তা যদি ব্যাখ্যা করে বলেন তা হলে অধম উপকৃত হয় ।
মুক্তমনার উদারতার জন্য আমি কৃতজ্ঞ । কিন্তু উদারতার নামে যে ভাবে আক্রমন করা হয় তাকি উচিত ? এটাই আমার প্রশ্ন ।
আমাকে আপনি “জনাবা” সেতারা হাশেম নামে উল্লেখ করেছেন । “জনাব” ও “জনাবা” শব্দ দু’টি ফার্সি । ব্যাকরণ অনুযায়ী বিদেশী শব্দ অর্থসহ গ্রহন করতে হয় । ফার্সি “জনাব” শব্দটির অর্থ সম্মান সূচক । কিন্তু ফার্সি ” জনাবা” শব্দটির বাংলা অর্থ হল “বেশ্যা” । তাই কোন মহিলাকে বেশ্যা বলা কি উচিত? সেতারা হাশেম ও আ হা মহিউদ্দীন যে এক ব্যক্তি নয় তা আগেই উল্লেখ করেছি ।
ব্যক্তি বিশেষের ধারণা দিয়ে বা স্বৈরাচারি আচরন করে পৃথিবী চলে না । পৃথিবী তার নিজ নিয়মে চলে । কেউ যদি তীর্যক মন্তব্য করে, তার প্রতি উত্তর তীর্যকই হয় । এটাই হলো মত প্রকাশের স্বাধীনতা ।
আশা করি এই প্রতি উত্তরটা পোষ্ট হবে ।
@আ হা মহিউদ্দীন,
জনাবা শব্দের সঠিক অর্থ জেনে কৃতার্থ হলাম। সেই সাথে তৃপ্তি পেলাম এই ভেবে যে, না জেনেই সেতারা হাশেমকে আমি যথার্থ সম্ভাষণেই ভূষিত করেছি। জ্বী, সেতারা হাশেম আমার কাছে একজন দুর্মুখ কলমবাজ জনাবা-ই।
প্রমাণিত জিনিসকে প্রমাণ করার কিছু নেই। আপনি বরং চক্ষুলজ্জা বলে যে একটা বিষয় আছে, সেটা কী তা বোঝার চেষ্টা করুন।
ছোট্ট একটা কাজ দিচ্ছি আপনাকে। জনাবা সেতারা হাশেম আর জনাব আহা মহিউদ্দীনকে নিয়ে একটা বিশেষ পাতা বরাদ্দ করা আছে মুক্তমনায়। এটা পড়ে দেখতে পারেন। কথা দিচ্ছি, দারুণ মজা পাবেন।
@ফরিদ আহমেদ,
আমার উপরের মন্তব্যটি আপনার এই মন্তব্যের আগে করা। আপনার বিশেষ পাতা পড়ে বুঝতে পারছি লিঙ্গ পরিবর্তনকারি বলতে আপনি কি বুঝিয়েছেন। আমি প্রথমে ভাবছিলাম আপনি আক্ষরিক অর্থেই লিঙ্গ পরিবর্তন বুঝিয়েছেন।
সেতারা হোসেন এবং আ হা মহিউদ্দীন যেহেতু প্রমাণিত, সে ক্ষেত্রে মহিউদ্দীনকে মুক্তমনায় ধারণ করার উদারতা দেখানোর কি কোন বিশেষ প্রয়োজন আছে কি?
@স্বাধীন,
না, বিশেষ কোনো প্রয়োজন নেই। এটা উদারতাই আসলে। আমি ব্যক্তিগতভাবে মুক্তমনায় সকল মতকে ধারণ করতে ইচ্ছুক এবং প্রস্তুত। একজন প্রকৃত মুক্তমনার জন্য অন্যের মতকে শ্রদ্ধা জানানোটাই সবচেয়ে বেশি জরুরী। দ্বিমত থাকতে পারে, সেই দ্বিমত দ্বিধাহীন চিত্তে বলে দেওয়াতেও কোনো আপত্তি দেখি না। কিন্তু, ভিন্নমতকে দমন করার মোটেও পক্ষপাতী নই আমি। এই ধরনের দমননীতি চালালে একদিন মুক্তমনা সমমনা ব্যক্তিদের একটি আবদ্ধ গ্রুপে পরিণত হয়ে যাবার সম্ভাবনা রয়েছে। এই মনোভাব যে শুধু আমার একার, তা নয়। মুক্তমনা মডারেশনের সাথে জড়িত সবাই-ই এই ধরনের একটা উদারনৈতিক মনোভাব পোষণ করে থাকেন।
সমস্যা হচ্ছে আমাদের এই উদারতাটাকে বুঝতে অক্ষম আস্তিকদের মধ্যে অনেকেই। এঁদের মধ্যে কেউ কেউ মুক্তমনায় আসেন মনের মধ্যে সুপ্ত ঘৃণা আর বিদ্বেষের বিষবাষ্প নিয়ে। ফলে, এখানে যাঁরা আছেন, তাঁদেরকে শ্রদ্ধা প্রদর্শনের বা যথাযথ সম্মান দেখানোর যে প্রয়োজনীয়তাটুকু আছে সেটিকে ভুলে যান তাঁরা। এই সমস্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে আমাদের সহনশীলতার মাত্রাটা হয়তো ধীরে ধীরে কমিয়ে দিতে হবে বাধ্য হয়েই।
@ফরিদ আহমেদ,
তাই নাকি ? :)) আমি জানতাম না তো ! কিন্তু মানুষের মনের খবর আপনি কিভাবে জানলেন ?
@ফুয়াদ,
মনের খবর জানি না, তবে তাঁদের কর্মকাণ্ডের খবর অনেকখানি জানি। মুক্তমনায় আস্তিকদের যে পরিমাণ মন্তব্য আমি বা আমরা অনুমোদন দেই, তারচেয়ে বহুগুণে মুছে দিতে হয় শুধুমাত্র গালিগালাজ, পেশী শক্তি প্রদর্শনের হুমকি আর ঘৃণার বিষবাষ্প থাকার কারণে। আমার ধারণা ওই কুৎসিত গালিগালাজগুলো আর ঘৃণার বিপুলতা দেখলে আপনি নিজেও আস্তিকদের পক্ষ ত্যাগ করে নাস্তিক হয়ে যেতেন। 🙂
@ফরিদ আহমেদ,
আমারও তা’ই মনে হয়।
@ফুয়াদ,
উনি অন্তর্যামী তো তাই। আপনি এবার তাঁর উক্তিটার বোল্ড করা শব্দগুলো লক্ষ্য করুন-
এবার আপনি নিজেকে প্রশ্ন করুন আপনি কি তাদের একজন।
@জ্ঞানমিত্র চাকমা, @বিপ্লব রহমান, @অডঙ চাকমা ও @অমিত হিল
জ্ঞানমিত্র চাকমা
আপনার বক্তব্য “ইউপিডিএফ-এর গঠনতন্ত্রের ২নং ধারায় সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে যে, “পার্টির লক্ষ্য হইল শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক পন্থায় পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের ন্যায্য অধিকার পূর্ণস্বায়ত্তশাসন অর্জনের মাধ্যমে অত্র অঞ্চলে শোষণ-নিপীড়নমুক্ত প্রকৃত গণতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করা।” কাজেই ইউপিডিএফ সম্পর্কে আপনার আরো স্বচ্ছ ধারণা থাকা দরকার বলে আমি মনে করি। ধন্যবাদ।” অনুযায়ী ইউপিডিএফ শান্তিপূর্ণ ও গ্ণতান্ত্রিক পন্থায় পার্বত্য চট্টগ্রামের জন্য পূর্ণস্বায়ত্তশাসন চায় ।
দেখা যাচ্ছে উভয় আঞ্ছলিক দলই শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক পন্থায় স্বস্ব প্রোগ্রাম বাস্তবায়ন করতে চায় । কিন্তু তারপরও সেখানে অশান্তি বিরাজ করছে । তা হলে এই অশান্তি কেন ? এবং পূর্ণ স্বায়ত্তশাসনের সংজ্ঞা কি ? এব্যাপারে আলোকপাত করলে আপনার সাথে আলোচনা করা যেতে পারে ।
বিপ্লব রহমান
বস্তুবাদের বিধি অনুযায়ী শ্রেনী সংগ্রাম বিরাজমান । আলাপ-আলোচনা ও আঞ্ছলিক দলগুলির মধ্যে মারা-মারি, কাটাকাটি এই শ্রেনী সংগ্রামের অংশ । ভুল রাজনৈতিক কর্মকান্ডের জন্য রাজনৈতিক দলের বিল্বতি ঘটে, আলাদা করে কোন রাজনৈতিক দলকে বিল্পতি করতে হয় না । রাজনৈতিক দলের ভুল সিদ্ধান্তের জন্য শ্রেনী সংগ্রাম দীর্ঘায়িত হতে পারে ।
অডঙ চাকমা
বিদ্যার দৌড় দেখা যাচ্ছে Google Search পর্যন্ত । আমাদের আলোচনার বিষয় বস্তু ছিল স্বায়ত্তশাসন ও বিকেন্দ্রিকরণ । কিন্তু ঐ তিনটি ইংরাজী শব্দের সাথে বিষয়বস্তুর সম্পর্ক কি তা পরিষ্কার করা হয়নি । তবে deconcentration শব্দটিকে decentralization ধরে নিলে অর্থ দাঁড়ায় বিকেন্দ্রিকরণ । অন্য দু’টি ইংরাজী শব্দের সাথে বিষয়বস্তুর কি সম্পর্ক তা এখনও বুঝি নাই । কারণ আমার বিদ্যাবুদ্ধি একটু কম । মুক্তমনার অনেক সবজান্তা মানুষ আমাকে অজ্ঞ বলে আখ্যায়িত করেছেন । তারপরেও তারা আমার সাথে আলোচনা করে ধন্য হতে চান । এখন দেখলাম পার্বত্য চট্টগ্রামেও একজন সবজান্তা আছেন, যিনি বিষয়বস্তুর উপর আমার মত অজ্ঞের সাথে একাডেমিক আলোচনা করতে চান । বেশ ভাল কথা, তবে আলোচনার পূর্বে স্বায়ত্তশাসন ও বিকেন্দ্রিকরণের আপনার সংজ্ঞা জানা প্রয়োজন ।
অমিত হিল
প্রথমত স্বায়ত্তশাসনের সংজ্ঞা আপনাদের কাছে পরিষ্কার নয় । দ্বিতীয়ত আমার মানা বা না-মানার সাথে পার্বত্য চট্টগ্রামের আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসন নির্ভরশীল নয় । আমি যে বক্তব্যগুলি উপস্থাপন করেছি সেগুলি হলো সামাজিক ও রাজনৈতিক বিধি-বিধান । এগুলি অতিক্রম করেই আপনাদেরকে গন্তব্যে পৌছতে হবে । কিন্রু দূর্গম পথ অতিক্রম করতে আপনাদের অনীহা । আপনারা চান শাসকগোষ্ঠির মানসিকতার পরিবর্তন । তাই তাদের কাছে মানবতার আবেদন করেন । মানসিকতা ও মানবতা শব্দ দু’টি রাজনীতির অভিধানে নাই ।
@আ হা মহিউদ্দীন
আপনার সাথে আলোচনা করার ইচ্ছা ছিলো না। তারপরে দু’এক কথা বলতে হচ্ছে আপনার পাল্টা মন্তব্যের কারণে। আপনার সাথে আলোচনা করতে গিয়ে দেখতে পাচ্ছি আপনার attitude বা মনোভঙ্গিগত সমস্যা আছে। কেবল নিজের মতকে প্রাধান্য দিচ্ছেন আর অন্যের মতামতকে অশ্রদ্ধার সাথে বাতিল করতে চাচ্ছেন। তেমনি একটি বিষয় স্বায়ত্তশাসন নিয়ে। আমার একটি মন্তব্যে বলেছিলাম স্বায়ত্তশাসন ধারনাটি প্রশাসনিক /রাজনৈতিক ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণের সাথে সম্পর্কিত। আমার মন্তব্য ছিলো,
এই কথার প্রেক্ষিতে আপনি অবজ্ঞাভরে যা বললেন
সে কারণে আপনাকে আহবান জানিয়েছিলাম, স্বায়ত্তশাসন সম্পর্কে আপনার ‘বোঝা’টা কী তা জানাতে। তা না করে আপনি একটার পর একটা খোঁচা মেরে যাচ্ছিলেন।
দেখুন, আমি বলেছিলাম স্বায়ত্তশাসন ধারনার মধ্যে এমন একটা প্রলেপ লাগানো উচিত নয়, যা দিয়ে মানুষকে ধোঁকা দেওয়া যায়, মানুষের অধিকার পদদলিত করা হয়। আমি বলেছিলাম, স্বায়ত্তশাসন ধারনাটি ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ ছাড়া আর কিছুই নয়। স্বায়ত্তশাসন বলি বা ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ বলি, উভয় ধারনা কার্যকর করতে গেলে কেন্দ্র হতে প্রান্তের (periphery) বা স্থানীয় সরকার/প্রশাসনের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করার ব্যাপারটি রয়েছে। এখন প্রশ্ন হলো, কেন্দ্র কোন মাত্রা পর্যন্ত প্রান্তের বা স্থানীয় সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবে? এই ক্ষমতা হস্তান্তরের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বা জনপ্রশাসন বিজ্ঞানে তিনটি ধারনা (concepts) আছে – deconcentration, delegation ও devolution (দুঃখিত, এ শব্দগুলোর সঠিক বাংলা অনুবাদ কী হবে জানি না)।
আর আপনি এই তিনটি শব্দ দেখে যা বললেন,
এটা স্পষ্ট আপনার এসব concepts-এর সাথে পরিচয় নেই; অথচ নিজের অজ্ঞতা স্বীকার করছেন না। আর বললেন, “deconcentration বলে ইংরাজী অভিধানে কোন শব্দ নাই”। ‘ইংরাজী’ অভিধানে deconcentration শব্দটি খুঁজে পাননি বলে আপনাকে পরামর্শ দিয়েছি Google সার্চ করেন। কেননা, আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির কল্যাণে অনেক কিছু খোঁজার জন্যে Google বেশ কাজের।
সবেশেষে বলতে চাই, সুষ্ঠু বুদ্ধিবৃত্তিক বিতর্কের জন্যে ইতিবাচক attitude দরকার। তাই হাসির খোরাক হিসেবে বলতে যাবেন না, “বিদ্যার দৌড় দেখা যাচ্ছে Google Search পর্যন্ত”। আপনার কাছ থেকেও প্রত্যাশা করছি, Google Search-এর বাইরে থেকেও জ্ঞান নিয়ে আসতে। নিয়ে আসুন না, আপনার স্বায়ত্তশাসনের ধারণাটিও। আলোচনায় অংশগ্রহণ করতে পারবো।
@অডঙ চাকমা,
এ ক ম ত । (Y)
@আ হা মহিউদ্দীন,
উস্কানিমূলক তীর্যক মন্তব্য না করার জন্য আপনাকে বিশেষভাবে অনুরোধ করছি। এর আগেও আপনি মুক্তমনার মডারেশন নিয়ে সন্দেহবাতিকগ্রস্ত বাঁকা মন্তব্য করেছেন।
আপনার মত লিঙ্গ পরিবর্তনকারী একজন বামপন্থী ইসলামিস্টকে মুক্তমনায় ধারণ করা হচ্ছে, এটা মুক্তমনার উদারতা। আপনার সাথে আলোচনা করে ধন্য হবার জন্য নয়, এ ব্যাপারে আপনি নিশ্চিত থাকুন জনাবা সেতারা হাশেম।
মুক্তমনা এবং এর সদস্যদের প্রতি যদি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করতে না পারেন, তবে মুক্তমনায় আপনার পদধূলি না পড়লেও চলবে। নিজের সাথে নিজেই জ্ঞানগর্ভ আলোচনা করে ধন্য হোন আপনি।
আমার ধারণা ছিল যে, মুক্তমনায় নতুন রূপে আপনার আগমনটা নতুন ধরনের হবে। কিন্তু দুঃখের সাথে লক্ষ্য করছি যে, লিঙ্গটাই শুধু পরিবর্তন হয়েছে আপনার, স্বভাবটা নয়।
ফরিদ ভাই,
আপনার মন্তব্যটি আপত্তিকর আমার মতে।
এক। কারো লিঙ্গ পরিবর্তনের মতো ব্যক্তিগত বিষয় অহেতুক টেনে আনা অপ্রয়োজনীয়।
দুই। লিঙ্গ পরিবর্তন করাটা কোন অপরাধ নিশ্চয় নয়। আপনার মন্তব্যে সেটিকে তির্যক ভাবে প্রকাশ করা হচ্ছে।
@স্বাধীন,
আপনি কি সেতারা হাশেম থেকে আহা মহিউদ্দীনের রূপান্তরের সব ঘটনা জানেন? আক্ষরিক অর্থে লিঙ্গ পরিবর্তনকে না দেখে, সেতারা হাশেমের ইতিহাসটা পড়ে দেখুন আগে। তারপর আমার মন্তব্য তীর্যক না সরলরৈখিক সেটার রায় দিয়েন। নীচে লিঙ্ক দিয়েছি, দেখে নিন প্লিজ।
@ফরিদ আহমেদ,
নীচে মন্তব্য দিয়েছি। আপনি আপানার প্রথম মন্তব্যে লিঙ্গ পরিবর্তনকারী এই শব্দটাতে বিশেষ পাতার লিঙ্কটি দিয়ে দিলে এই কনফিউশন হতো না 🙁 ।
দীপায়র খীসার ‘ঐক্যের ফেরিওয়ালাদের কাছে কিছু বিনীত নিবেদন’ [লিংক] এর একটি পাঠ প্রতিক্রিয়া লিখেছিলেন রাঙামাটির সাংবাদিক হরি কিশোর চাকমা। পাঠ প্রতিক্রিয়াটির নাম — রাজনৈতিক হিপোক্রেসি, ঐক্য ও আমার কিছু কথা [লিংক]।
সেখানে শান্তিচুক্তি বিরোধী ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট — ইউপিডিএফ’র শীর্ষ নেতা নিরন চাকমার মন্তব্যটি লক্ষ্যনীয়:
[লিংক]
এবং ইউপিডিএফ-এর দলীয় ঘোষণা:
[লিংক]
মন্তব্য নিস্প্রয়োজন। 😛
@অডঙ চাকমা ও @অমিত হিল
আপনাদের লেখা পড়ে মনে হচ্ছে আপনাদের দেশ বাংলাদেশ সংবিধান বহির্ভূত একটি দেশ ও তার প্রশাসনিক কাঠামো বহির্ভূত একটি অঞ্চল । তাই আপনারা বাংলাদেশ ও আপনাদের দেশের মধ্যে অনেক পার্থক্য দেখতে পান । কিন্তু আমরা যারা বাংলাদেশের সংবিধানের আওতাভুক্ত নাগরিক, তা পাহাড়ী বা সমতলী, আদিবাসী বা বাংগালি অথবা ধর্মীয় সংখ্যালঘু বা সংখ্যা গরিষ্ঠ যাই হই, আমাদের জন্য আলাদা কোন আইন নাই, কেবলমাত্র ধর্মীয় উৎসব ও বিয়ে-শাদী ছাড়া । আলাদা মন্ত্রনালয় থাকলেই সব কিছু আলাদা হয়ে যায় না । বাংলাদেশের বর্তমান প্রশাসনিক কাঠামোয় অনেক আইন আছে, যা বৃটিশ ও পাকিস্তান আমলে প্রণয়ণকৃত । এর মধ্যে দৃশ্যমান হলো ভূমি ব্যবস্থাপনা ও ভূমি আইন, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর আইন । বাংলাদেশের সংবিধানের আওতায় আলোচ্য আইনগুলির সংষ্কারের চেষ্টা চলছে ।
সংবিধান অনুযায়ী ইউনিটরিয়াল সরকার ব্যবস্থা বাংলাদেশে বিদ্যমান । কিন্তু ভারতের সংবিধান অনুযায়ী কেন্দ্রিয় সরকার হলো ফেডারেল টাইপ, তাই সেখানে অনেকগুলি রাজ্য বিদ্যমান । তাই পার্বত্য চট্টগ্রামের আয়তনের সাথে ভারত ও মায়নমারের রাজ্যগুলির আয়তন তুলনা করে ইউনিটরিয়াল সরকার ব্যবস্থা থেকে ফেডারেল সরকার ব্যবস্থায় আসা যায় না । বিষয়টি রাজনৈতিক, যা সমগ্র বাংলাদেশে প্রভাব ফেলবে ।
“পরিভাষায় deconcentration, নাকি delegation নাকি devolution?” এর সাথে স্বায়ত্বশাসন ও প্রশাসন বিকেন্দ্রিকরনের সম্পর্ক বোধগম্য নয় । তাছাড়া deconcentration বলে ইংরাজী অভিধানে কোন শব্দ নাই ।
তেল ও পানির গুণাগুণ ও বৈশিষ্ট ভিন্ন । তাই কেউ তেলের সাথে পানির তুলনা করে না । অনুরূপ ভাবে কমিউনিষ্ট ও মোল্লার গুনাগুন ও বৈশিষ্ট ভিন্ন । তাই তারা তুলনাযোগ্য নয় । মৌলবাদী তাকেই বলে যারা বস্তুকে স্থির ভাবে এবং স্থান, কাল ও পাত্রকে বিবেচনায় নেয় না । কমিউনিষ্ট, তিনি বাংলাদেশী বা অন্য কোথারই হউন, সম্পর্কে আপনাদের কোন ধারণা নাই । স্বায়ত্বশাসন, বিকেন্দ্রিকরণ, ইউনিটরিয়াল ও ফেডারেল টাইপ সরকার, আঞ্চলিক রাজনীতি ও জাতিয় রাজনীতি প্রভৃতির সাথে আপনারা তালগোল পাকিয়ে ফেলেছেন ।
@আ হা মহিউদ্দীন,
আপনার উত্তর দেখে এখন বড়ই আফশোস হচ্ছে আমি কার সাথে কোন মুক্তবুদ্ধিবৃত্তিক চর্চা করতে চাচ্ছি? যিনি স্বায়ত্তশাসন ও বিকেন্দ্রীকরণের মধ্যে পার্থক্য না বুঝার জন্যে আমাকে খোঁচা মারেন তিনিই deconcentration শব্দটি ইংরেজী অভিধানে খুঁজে পান না; অর্থ বুঝা তো দূরের কথা। আপনার নিজের যখন deconcentration, delegation ও devolution সম্পর্কে জ্ঞান নেই, সেখানে স্বায়ত্তশাসন ও বিকেন্দ্রীকরণ নিয়ে অন্যকে খোঁচা মারতে যান কেন? সহজসরলভাবে নিজের অজ্ঞতার কথা স্বীকার করলে তো পারতেন। সেখানে তো লজ্জার কিছু নেই।
ভাই, অনুরোধ থাকবে। যদি সত্যি সত্যি স্বায়ত্তশাসন ও বিকেন্দ্রীকরণ নিয়ে আলোচনা করতে চান তাহলে অ্যাকাডেমিক তত্ত হাজির করে আলোচনা করতে আসেন। সুষ্ঠু বিতর্কের জন্যে সুষ্ঠু মনোভঙ্গি দারকার।
অভিধানে যখন deconcentration খুঁজে পাচ্ছেন না, Google দিয়ে খুঁজে দেখুন। পাইলেও পাইতে পারেন deconcentration-এর ভান্ডার।
@আ হা মহিউদ্দীন, @আ হা মহিউদ্দীন,
আপনার লেখা পড়ে আমার ও মনে হচ্ছে আপনার কথাগুলো বিএনপি-জামাতের সাথে হুবহু না হলে ও বেশির ভাগই মিলে যাচ্ছে । একদিকে আপনি ‘পার্বত্য চুক্তি’ বাস্তবায়নের আশ্বাস দেন আর অন্যদিকে পার্বত্য চট্রগ্রামের জন্য আলাদা শাসন পদ্ধতি মানেন না । আওয়ামিলীগের আশ্বাস থেকে আপনি বেশি উপড়ে যেতে পারেননি । এভাবে যদি বামদলরা নিজেদের দর্শন অনুসরণ করে থাকেন তাহলে দাদা বিপ্লব পালের কথামতো বলতে হয় তাহলে কমিউনিস্টরা ও মোল্লা টাইপের । পার্বত্য চুক্তিতে পরিষ্কারভাবে আঞ্চলিক শাসনব্যবস্থা কথা উল্লেখ আছে, যেমনভাবে ১৯০০ সালের শাসনবিধিতে বিশেষ নিয়ম-কানুনের ব্যবস্থা পার্বত্য চট্রগ্রামের জন্য বিদ্যমান । আপনার মতামতের ভিত্তিতে পার্বত্য চট্রগ্রামে বিদ্যমান সমস্যা সমাধান করাতো দূরের কথা বরং প্রবলভাবে সহিংসতা বৃদ্ধি পাবে । আপনার কথামতো বাংলাদেশ সরকারের সাথে পার্বত্য অঞ্চলের কোন আলাদা আইন ব্যবস্থার চুক্তি করা সংবিধান বিরোধী !! সেহিসেবে বুঝা যাচ্ছে আপনি ‘পার্বত্য চুক্তিতে’ বিদ্যমান আঞ্চলিক স্বায়ত্বশাসনকে মানতে পারেন না ?
হ্যাঁ, সংবিধানের প্রনয়ন চলছে যাতে সকল সংখ্যালঘুদের ‘বাঙালী’ বানানো হয়েছে ।
@অডঙ চাকমা
‘কেবল পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলাকে স্বায়ত্তশাসন দেওয়া সম্ভব নয় -এই কথার মানেটা কী?” এই কথাটির মানে হলো, পার্বত্য চট্টগ্রাম বাংলাদেশেরই একটি জেলা ।তাই অন্য জেলায় যা হবে, পার্বত্য চট্টগ্রামেও তা হবে । পার্বত্য চট্টগ্রামে আলাদা করে কিছু হবে না ।
আপনি মোল্লা ও কমিউনিষ্ট এর মধ্যে যেমন পার্থক্য বুঝেন না, তেমনি ক্ষমতা বিকেন্দ্রিকরণ ও স্বায়ত্তশাসনের মধ্যে পার্থক্য বুঝেন না । কিন্তু আবেগবসে রাজনীতি আলোচনা করতে চান ।
সংবিধান মোতাবেক ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা ও জেলার দায়ীত্ব চিহ্নিত, অর্থ্যাৎ বিকেন্দ্রিকরণ করা আছে । কিন্তু বাস্তব চিত্র ভিন্ন । সংসদ সদস্যদের দায়ীত্ব হলো আইন পাশ করা । কিন্তু সংসদ সদস্য ও তদীয় ক্যাডারদের দাপটে ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ স্বাধীন ভাবে কাজ করতে পাড়ছে না ও জেলা পরিষদ গঠন করা সম্ভব হচ্ছে না । নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যানেরা নিজ দায়ীত্ব বুঝে না পেয়ে কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন । কেবলমাত্র বামপ্রগতিশীল দলগুলো ছাড়া শাসক দলের আভ্যন্তরে গণতন্ত্র আছে বলে মনে হয় না । শাসক দলের একটি চলে ম্যাডামের কথায়, অন্যটি চলে আপার কথায় ও তৃতীয়টি চলে এরশাদের কথায় । বৃটিশ ও পাকিস্তানের কলোনীয়াল প্রশাসনিক কাঠোমায় প্রশাসন চলে । আলোচ্য এই অবস্থার উত্তরণ না ঘটিয়ে, যা বলা হবে তা হবে অবাস্তব । আপনি এই অবাস্তবতার মধ্যে বাস করছেন ।
@আ হা মহিউদ্দীন,
ভাই, দেখছি আপনিও আবেগের বশে অনেক কথা বলছেন। বলেছেন,
আপনার কথা ভ্রান্ত। পার্বত্য চট্টগ্রামের জন্যে আলাদা করে কিছু হয়নি সেটা নয়। সেই স্মরণাতীত কাল থেকে আলাদা ব্যবস্থা ছিলো। এখনো আছে। তবে যেসব আলাদা ব্যবস্থা আছে সেগুলো চট্টগ্রামের মানুষের বিশেষ করে আদিবাসী জনগণের আশা আকাংখা বা অধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে যথেষ্ট নয়। সেজন্যে এত সংগ্রাম, এত আন্দোলন। দেখুন, আলাদা কী কী ব্যবস্থা আছে। কয়েকটা উদাহরণ দিই। পার্বত্য চট্টগ্রামের জন্যে আলাদা আইন আছে। যেমন ১৯০০ সালের শাসনবিধি, যা সমতলে নেই। তিন পার্বত্য জেলার জন্যে আ্ইন আছে, যে আইনগুলো সমতলের জেলা পরিষদেসমূহের সাথে মিল নেই। আপনারা সমতলে নির্দিষ্ট আয়ের উপরে গেলে আপনাকে আয়কর দিতে হয়, কিন্তু পাহাড়ীদের পার্বত্য চট্টগ্রামে দিতে হয় না। ভূমি ব্যবস্থাপনার জন্যে বিশেষ ব্যবস্থা আছে যা সমতলে নেই। প্রথাগত শাসনব্যবস্থা আছে যা সমতলে নেই। র্পাবত্য চট্টগ্রামের জন্যে বিশেষ মন্ত্রণালয় আছে, বাংলাদেশের যা অন্যকোন অঞ্চলের জন্যে নেই। আরো অনেক আলাদা জিনিস আছে। আগেই বলেছি, এসব আলাদা ব্যবস্থা আদিবাসী জনগণের অধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে যথেষ্ট নয় বলে আন্দোলন সংগ্রাম করতে হচ্ছে।
আমি আপনাকে বলিনি যে আমি ‘মোল্লা’ ও ’কমিউনিষ্ট’ এর মধ্যে পার্থক্য বুঝি না। আমার বুঝা আমার মধ্যে। আপনার বুঝার সাথে মিল হবে এমন কোন কথা নেই। আমার দেখা বাংলাদেশের অনেক কমিউনিস্ট মোল্লাদের চেয়েও মৌলবাদী। তাই “কমিউনিষ্ট মোল্লা” ও “আসল মোল্লাদের” মধ্যে পার্থক্য নেই – বিপ্লব পালের এই কথার সাথে যদি সহমত পোষণ করি তাতে আপনার এত অস্থির হওয়ার কারণ দেখি না।
“…তেমনি ক্ষমতা বিকেন্দ্রিকরণ ও স্বায়ত্তশাসনের মধ্যে পার্থক্য বুঝেন না । কিন্তু আবেগবসে রাজনীতি আলোচনা করতে চান।”
@আ হা মহিউদ্দীন,
ভাই, দেখছি আপনিও আবেগের বশে অনেক কথা বলছেন। বলেছেন,
আপনার কথা ভ্রান্ত। পার্বত্য চট্টগ্রামের জন্যে আলাদা করে কিছু হয়নি সেটা নয়। সেই স্মরণাতীত কাল থেকে আলাদা ব্যবস্থা ছিলো। এখনো আছে। তবে যেসব আলাদা ব্যবস্থা আছে সেগুলো চট্টগ্রামের মানুষের বিশেষ করে আদিবাসী জনগণের আশা আকাংখা বা অধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে যথেষ্ট নয়। সেজন্যে এত সংগ্রাম, এত আন্দোলন। দেখুন, আলাদা কী কী ব্যবস্থা আছে। কয়েকটা উদাহরণ দিই। পার্বত্য চট্টগ্রামের জন্যে আলাদা আইন আছে। যেমন ১৯০০ সালের শাসনবিধি, যা সমতলে নেই। তিন পার্বত্য জেলার জন্যে আ্ইন আছে, যে আইনগুলো সমতলের জেলা পরিষদেসমূহের সাথে মিল নেই। আপনারা সমতলে নির্দিষ্ট আয়ের উপরে গেলে আপনাকে আয়কর দিতে হয়, কিন্তু পাহাড়ীদের পার্বত্য চট্টগ্রামে দিতে হয় না। ভূমি ব্যবস্থাপনার জন্যে বিশেষ ব্যবস্থা আছে যা সমতলে নেই। প্রথাগত শাসনব্যবস্থা আছে যা সমতলে নেই। র্পাবত্য চট্টগ্রামের জন্যে বিশেষ মন্ত্রণালয় আছে, বাংলাদেশের যা অন্যকোন অঞ্চলের জন্যে নেই। আরো অনেক আলাদা জিনিস আছে। আগেই বলেছি, এসব আলাদা ব্যবস্থা আদিবাসী জনগণের অধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে যথেষ্ট নয় বলে আন্দোলন সংগ্রাম করতে হচ্ছে।
আমি আপনাকে বলিনি যে আমি ‘মোল্লা’ ও ’কমিউনিষ্ট’ এর মধ্যে পার্থক্য বুঝি না। আমার বুঝা আমার মধ্যে। আপনার বুঝার সাথে মিল হবে এমন কোন কথা নেই। আমার দেখা বাংলাদেশের অনেক কমিউনিস্ট মোল্লাদের চেয়েও মৌলবাদী। তাই “কমিউনিষ্ট মোল্লা” ও “আসল মোল্লাদের” মধ্যে পার্থক্য নেই – বিপ্লব পালের এই কথার সাথে যদি সহমত পোষণ করি তাতে আপনার এত অস্থির হওয়ার কারণ দেখি না।
“…তেমনি ক্ষমতা বিকেন্দ্রিকরণ ও স্বায়ত্তশাসনের মধ্যে পার্থক্য বুঝেন না । কিন্তু আবেগবসে রাজনীতি আলোচনা করতে চান।”
কথায় বলে, অন্ধজনে দেহ আলো। আমি না হয় বুঝি না। “বিকেন্দ্রিকরণ ও স্বায়ত্তশাসন”- রাষ্ট্রবিজ্ঞানের এই দু’টো ধারনা সম্পর্কে এই অজ্ঞ লোককে না হয় জ্ঞান দিতেন তাহলে খুবই উপকৃত হতাম। স্বায়ত্তশাসন বলতে আপনি কী বুঝেন সে ব্যাপারে আলোচনা নিয়ে আসলে আমি আপনার সাথে আলোচনায় অংশগ্রহণ করতে অত্যন্ত আগ্রহী।
বিকেন্দ্রিকরণ বিষয়ে বলেছেন,
স্বায়ত্তশাসন নিয়ে যেমন, বিকেন্দ্রিকরণ নিয়েও বিতর্কের শেষ নেই। সে যাক। সংসদ ও ক্যাডারদের দাপটে যদি ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে না। কথাটা সত্য। কিন্তু সমস্যাটা বিকেন্দ্রীকরণের প্রক্রিয়ার মধ্যে অন্তর্নিহিত আছে। সরকার কতটুকু ক্ষমতা স্থানীয় পরিষদে ছেড়ে দিচ্ছে? কোন প্রক্রিয়ায় বিকেন্দ্রীকরণ করা হচ্ছে? হাল আমলের পরিভাষায় deconcentration, নাকি delegation নাকি devolution?
আমি খুব খুশী হবো আপনি যদি ‘স্বায়ত্তশাসন’ ও ’বিবেন্দ্রীকরণ’ এ দু’টো ধারনাকে নিয়ে এসে আলোচনা করেন। এই অজ্ঞও চেষ্টা করবে আপনার আলোয় আলোকিত হতে।
ধন্যবাদ।
@আ হা মহিউদ্দীন, ভৌগলিকতা, অনুন্নত এবং ছোট রাষ্ট্রের দোহায় দিয়ে পার্বত্য চট্রগ্রামকে স্বায়ত্বশাসন দেয়ার বিপক্ষে অনেকে মত পোষণ করে থাকেন । আসলে ছোট বড় বলতে কিছুই নেই, মানসিকতা হচ্ছে মূল বিষয় । আন্তরিকতা না থাকলে কোনকিছু সম্ভব নয় । পার্বত্য চট্রগ্রাম তিনটি জেলা নিয়ে গঠিত এক আলাদা প্রশাসনিক কেন্দ্র যেখানে ১১ ভাষাভাষি সংখ্যালঘুর জাতিস্বত্তার বসবাস । ব্রিটিশ শাসনামল হতে “পার্বত্য চট্রগ্রামকে” আলাদা আইনের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা এখনো রয়েছে । ভৌগলিকভাবে পার্বত্য চট্রগ্রামের আয়তন ১৩, ১৮০ বর্গ কিলোমিটার এবং ভারত -মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় সীমানা দ্বারা বেষ্টিত । ভারতের ১৪ টির ও বেশি প্রদেশের আয়তন পার্বত্য চট্রগ্রাম থেকে ছোট হওয়া স্বত্ত্বেও তাদের নিজস্ব প্রাদেশিক স্বায়ত্বশাসন বিদ্যমান, যার মাধ্যমে গণতন্ত্রকে সমুন্নত রাখা সহজ হয় । আর মালয়েশিয়ার ১৬ টি প্রদেশ থেকে ১০টির আয়তন পার্বত্য চট্রগ্রাম থেকে ছোট । অতএব, ভৌগলিক এবং আয়তনের চিন্তায় যারা নিমগ্ন তাদের দ্বারা পার্বত্য সমস্যা সমাধান কখনো সম্ভব হবে না ।
ভারত
4,048.7 (Tripura)
8,659.9 (Meghalaya)
8,620.5 (Manipur)
6,401.2 (Nagaland)
1,429.4 (Goa)
8,139.4 (Mizoram)
2,739.8 (Sikkim)
572.6 (Delhi)
84.9 (Puducherry)
44.0 (Chandigarh)
3,185.0 (Andaman and Nicobar Islands)
189.6 (Dadra and Nagar Haveli)
43.2 (Daman and Diu)
2.4 (Lakshadweep)
মালয়শিয়া
243 (Kuala Lumpur)
91 (Labuan)
49 (Putrajaya)
9,500 (Kedah)
1,664 (Malacca)
6,686 (Negeri Sembilan)
821 (Perlis)
1,048 (Penang)
8, 104 (Selangor)
13, 035 (Terengganu)
@আ হা মহিউদ্দীন,
ওহ! তাই নাকী? তাহলে পার্বত্য সমস্যা নিয়ে এতো আলাপ-আলোচনার আর কী আছে? পার্বত্যবাসীর উচিৎ হবে, মহান দ্বন্দ্ববাদের আদর্শে উজ্জবিত হয়ে (এবং আঞ্চলিক দলের বিলুপ্ত ঘটিয়ে) রাষ্ট্র বিপ্লব, তথা শ্রেণী সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়া, দ্বন্দ্ববাদের নিয়মে তখন ‘ফলটি পাকলে তা আপনা খেকেই টপ করে খসে পড়বে’, অর্থাৎ পার্বত্য সমস্যার সমাধানও হয়ে যাবে, তাই তো? :lotpot:
(F)
দুইটা লেখাই পড়লাম।
অনেক কিছু জানা হলো।
পাহাড়িদের রাজনীতি ব্যপারে আমার অনেক কৌতুহল।
শন্তুলারমার একটা সাক্ষাতকার প্রথম আলোতে ছাপা হয়েছিল।
চাকমা রাজা নিয়েও একটা ফিচার পড়েছি।
এত অল্প জেনে পাহাড়ি রাজনীতি নিয়ে কোন কমেন্ট করতে চাইনা।
@আসরাফ,
ধন্যবাদ লেখাটা পড়ার জন্যে। আর আপনার কৌতুহলকেও সাধুবাদ জানাই।
কিছু দিন থেকে পাহাড়ী শিক্ষিত মধ্যবিত্তের পোষ্টিং পড়ে জানলাম ইউপিডিএফ ও জন সংহতি সমিতির মধ্যকার বিরোধ হল রাজনৈতিক ।পার্বত্য চট্টগ্রামের পূর্ণ স্বায়ত্তশাসনের জন্য ইউপিডিএফ সশস্ত্র আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে । বিপরীতে জন সংহতি সমিতি চায় শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন করতে । আঞ্ছলিক সশস্ত্র দল দু’টির এই রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তি বিঘ্নিত হচ্ছে এবং বহু মানব প্রানের ক্ষয় হচ্ছে, যা দেখে পাহাড়ী সুশীল সমাজ মানবতার দোহাই দিয়ে সংঘর্ষ বন্ধের জন্য ঐক্য প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ।
ইতিহাস শিক্ষা দেয় রাজনীতিতে মানবতার কোন স্থান নাই । রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের সমাধান হয় রাজনৈতিক ভাবে । তাই সুশীল সমাজের কাজ হবে বিবাদমান কোন পক্ষকে দোষারোপ না করে এবং নিজেদের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ সৃষ্টি না করে নিরপেক্ষ ভাবে শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রচার চালিয়ে যাওয়া । তাছাড়া বাংলাদেশসহ উত্তর-পূর্ব ভারতের বিরাজমান রাজনৈতিক অবস্থাও তাদেরকে চিন্তার মধ্যে নিয়া আসতে হবে । সব জেলাকে স্বায়ত্তশাসন দেয়া ছাড়া কেবলমাত্র পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলাকে স্বায়ত্তশাসন দেয়া সম্ভব নয় । তাই জেলাগুলিকে স্বায়ত্তশাসন দেয়ার মত রাজনৈতিক অবস্থা বাংলাদেশে বিরাজ করছে কিনা, তাও চিন্তার মধ্যে নিয়ে আসতে হবে ।
@আ হা মহিউদ্দীন,
ইউপিডিএফ-এর বিভিন্ন লিটারেচার পড়ার সুযোগ হয়েছে এবং বিভিন্ন সমাবেশে ইউপিডিএফ-এর নেতা-কর্মীদের বক্তব্য শুনেছি এবং পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত বক্তব্য বিবৃতি দেখেছি। কিন্তু ইউপিডিএফ কখনো সশস্ত্র আন্দোলনের কথা বলেছে আমার মনে হয় না। বরং জেএসএস-এর প্রধান সন্তু লারমার হার হামেশাই আবার পুরোনো কমূসূচিতে ফিরে যাবো, রক্ত দোবা, আবার অস্ত্র ধরবো- এ ধরনের হুমকি দিতে আমরা শুনেছি। অন্যদিকে জেএসএস গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে চুক্তি বাস্তবায়নের কথা বললেও দীর্ঘ ১৪ বছরে জেএসএস কি আদতে এ ধরনের কোন আন্দোলন গড়ে তুলতে পেরেছে? আপনি অযথা “পার্বত্য চট্টগ্রামের পূর্ণ স্বায়ত্তশাসনের জন্য ইউপিডিএফ সশস্ত্র আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে ।” এ কথাটি লিখে ইউপিডিএফ সম্পর্কে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে চাচ্ছেন।
ইউপিডিএফ-এর গঠনতন্ত্রের ২নং ধারায় সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে যে, “পার্টির লক্ষ্য হইল শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক পন্থায় পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের ন্যায্য অধিকার পূর্ণস্বায়ত্তশাসন অর্জনের মাধ্যমে অত্র অঞ্চলে শোষণ-নিপীড়নমুক্ত প্রকৃত গণতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করা।” কাজেই ইউপিডিএফ সম্পর্কে আপনার আরো স্বচ্ছ ধারণা থাকা দরকার বলে আমি মনে করি। ধন্যবাদ।
@আ হা মহিউদ্দীন,
ধন্যবাদ আলোচনায় অংশ নেওয়ার জন্যে। আপনার স্বায়ত্তশাসন ধারনা নিয়ে দু’এক কথা বলতে চাচ্ছি। আপনার উদ্ধৃতি
কেবল পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলাকে স্বায়ত্তশাসন দেওয়া সম্ভব নয় -এই কথার মানেটা কী? জানিনা, স্বায়ত্তশাসন বলতে আপনি কী বুঝাতে চাচ্ছেন। আমার মনে হচ্ছে, আপনি ‘স্বায়ত্তশাসন’ শব্দটার মধ্যে এমন একটা ধারনা নিয়ে আসতে চাচ্ছেন যেটা বাস্তবে সম্ভব নয়। ‘স্বায়ত্তশাসন’ ধারনাকে কে কীভাবে ব্যাখ্যা করেন জানি না। তবে আমার সাধারণ জ্ঞান অনুসারে, স্বায়ত্তশাসন প্রশাসনিক /রাজনৈতিক ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ ছাড়া কিছুই নয়। সেই প্রশাসনিক বা রাজনৈতিক ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ কিভাবে হবে সেটা রাষ্ট্রকে সংলাপের মাধ্যমে ঠিক করতে হবে। এক অর্থে উপজেলা পরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদগুলো স্বায়ত্বশাসিত। তাদের নিজস্ব আইন দ্বারা পরিচালিত হয়। সেখানে ইচ্ছা করলে প্রধানমন্ত্রীও ইউনিয়ন পরিষদের আইনসংগত কোন সিদ্ধান্ত বাতিল করতে পারবেন না। নৃতাত্তিক, সাংস্কৃতিক, ভৌগলিক ও অর্থনৈতিকভাবে অনন্য বৈশিষ্ট্যের অধিকারী অঞ্চল হিসেবে পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ী আদিবাসী জনগণের অধিকারকে রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিতে হবে। আমরা যদি অন্তর্ভুক্তিমূলক গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি, তাহলে স্বায়ত্তশাসন নিয়ে আতংকিত হওয়ার কোন কারণ নেই। এখানে বাঙালি রাষ্ট্রব্যবস্থাপকদের মনোভঙ্গি বা দৃষ্টিভঙ্গিগত সমস্যাই বড় বাধা হিসেবে কাজ করছে। আপনাদের মত প্রগতিশীল লোকদের জোরালো ভূমিকা দরকার।
@আ হা মহিউদ্দীন,
দ্বন্দ্ববাদের নানা জ্ঞানতাত্বিক আলোচনার জন্য আপনাকে সাধুবাদ জানাই। আশাকরি ভবিষ্যতেও এ বিষয়ে মুক্তমনার পাঠকদের আলোকিত করে চলবেন।
কিছু মনে করবেন না, কিন্তু আপনার পার্বত্য আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল ও স্বায়ত্বশাসন নিয়ে ধারণা শুধু সীমিতই নয়–অনেকটা উগ্র দক্ষিণপন্থী মৌলবাদী ঘরনার বলেই মনে হচ্ছে।
অডঙ চাকমার এর আগের পোস্টে আপনি মন্তব্য করেছেন:
এর এখন বলছেন:
ভাইরে, দোয়াও চাই, মাফও চাই! 😛
দীপায়ন খীসা থেকে যৌক্তিক সমালোচনা কামনা করছি ।
@সমরেশ চাকমা,
হ্যাঁ, আমিও তাই কামনা করি। ধন্যবাদ।
লুকিয়ে ঢিল ছৌঁড়ে অন্যকে আঘাত করে যারা তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলেন তাদেরকে আমরা কিবা বলতে পারি। কারণ এটাইটো তাদের শিষ্ঠাচার।