জ্যোতিষ-ওঝা গুনীন-তান্ত্রিকের ভান্ডাফোঁড় করা, এদিকে সভা সেমিনার আয়োজন, পত্র পত্রিকা প্রকাশ এসবের ফাঁকে মুক্তমনাতে কিছু লেখা হয়ে ওঠেনি। আমার আবার টাইপ করতেও প্রচুর সময় লাগে। হঠাৎ কি মনে হল, দিনকয়েক আগের আমাদের দুটো ঘটনা তুলে ধরতে ইচ্ছে হল। তাই লিখলাম।
আর পাঁচটা মফঃস্বল শহরের মত বাঁকুড়া শহরের রাস্তা-ঘাটে, ফুটপাতে, বাসস্ট্যান্ড, রেল স্টেশন, হাসপাতাল, কোর্ট চত্বরে আগাছার মত জ্যোতিষির, গ্রহ-রত্ন বিক্রির দোকান কোনো দিনই সেরকম ব্যাপক ভাবে ছিলনা। যেহেতু বাঁকুড়া জেলা আদিবাসী ভিত্তিক এবং আদিবাসীদের মধ্যে জ্যোতিষ বিশ্বাস খুব কম সেটাও এর একটি অন্যতম কারণ আবার যুক্তিবাদী সমিতির দাপটে তারা একটু বাঁকুড়া শহরকে এড়িয়ে চলে এটিও ঠিক। তবুও লক্ষ্য করছিলাম গত কয়েকমাসের মধ্যে শহরের কোর্টকম্পাউন্ড অঞ্চলে একটি দুটি করে বেশ কয়েকটি দোকান খুলছিল যারা কেউ তাবিজ-কবচ বিক্রি করে, কেউ জ্যোতিষের পসরা সাজিয়ে বসেছে। আমরা ছেলেবেলা স্কুল যাবার সময় যে মাদারির খেলাটি দেখতাম, সেই একজনকে শুইয়ে কালো কাপড় ঢাকা দিয়ে অন্য জন দর্শকদের কার জামার রঙ কি, হাতে কি আছে, কি পোশাক পরে আছে ইত্যাদি প্রশ্ন করছে আর কালো চাদর ঢেকে থাকা লোকটি একদম সঠিক উত্তর দিচ্ছে এবং এই অলৌকিক ঘটনাটি দেখিয়ে বিক্রি করছে তাগা তাবিজ মাদুলি, সেই খেলাটিও ইদানীং মাঝে মধ্যেই দেখা যাচ্ছিল। অথচ আমরা প্রতিটি কুসংস্কার বিরোধী অনুষ্ঠাণে মাদারির খেলা টেলিপ্যাথি ইত্যাদি হাতে কলমে দর্শকদের দেখিয়ে দেওয়ায় কয়েকবছর এসব বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।
আমাদের শহরের যুক্তিবাদী সমিতির সদস্যরা প্রতি রবিবার সকালে স্টাডিক্লাশে মিলিত হন। শহরের অনেকেই তাদের কাছে বিভিন্ন সময়ে প্রশ্ন করেছেন হঠাৎ করে কিছুদিনের মধ্যে কুসংস্কারের কারবারীদের রমরমার কারন কি? টালমাটাল রাজনৈতিক অবস্থা হেতু দুর্বল প্রশাসনিক কাঠামো নাকি ক্রমবর্ধমান সামাজিক অস্থিরতার কারনে দুর্বলচিত্ত মানুষের চিত্ত আরোও দুর্বল হয়ে যাওয়া এই বাড়বাড়ন্তের অন্যতম কারণ তার চুলচেরা বিচারে বসেছি আমরা। সাথে সাথে কর্মসূচি নিয়েছি এই সব ভন্ড প্রতারকদের ভন্ডামি কিভাবে ফাঁস করব। এই কর্মসূচিরই অঙ্গ হিসেবে আমরা বাঁকুড়া শহরের কোর্টকম্পাউন্ড চত্বরে গত ১৪ মার্চ সুব্রত দে নামক এক ব্যক্তিকে ধরি হয় যে দাবি করছিল রত্নের অলৌকিক ক্ষমতাবলে চুন জলের সাদা রঙ বেগুনি হয়ে যায়। তার কাছে খদ্দের এলে খদ্দেরের হাতের রেখা দেখে প্রথমে কিছু ভবিষ্যত বাণী করে। তারপর কোন্ পাথর বা রত্নটি ওই লোকটির ভাগ্য ফেরানোর জন্য উপযুক্ত হবে সেটি দেখিয়ে দেয় এক অলৌকিক উপায়ে। খদ্দেরের হাতের তালু ওপরে পাথর রেখে তাতে চামচে করে সামান্য সাদা চুন জল দেয়। যদি পাথরটি সত্যিই উপযুক্ত হয় তবে চুন জলের সাদা রঙ বদলে বেগুনি হয়ে যাবে। যদি রঙ বদল না হয় আর একটি পাথর নিয়ে পরীক্ষাটি করা হবে। যে পাথরেরে সংস্পর্শে রঙ বদলে যাচ্ছে সেটিই হচ্ছে ওই খদ্দেরের জন্য সঠিক এবং উপযুক্ত পাথর। এরকম করে সে ১০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকায় প্রতিটি পাথর বিক্রি করছে এবং দিন কয়েক নজর রেখে দেখেছি তার মাসিক আয় ১ লক্ষ টাকার কম হবে না। ঠিক এরকম করেই কোলকাতার শিয়ালদহ স্টেশনের কাছে একজন প্রতারনা করত যাকে যুক্তিবাদী সমিতির কেন্দ্রিয় কমিটি বছর কয়েক আগে ধরেছিল। ফলে আমরা, সমিতির সদস্যরা জানি যে চুন জলের রঙ পরিবর্তন কোনো অলৌকিক ক্ষমতাবলে হয় না, হয় ফেনলপথ্যালিন নামে একটি রাসায়নিকের প্রভাবে যার সংস্পর্শে এলেই চুন জল বেগুনি হয়ে যায়।
জ্যোতিষী সুব্রত দে তার পসরা সাজিয়ে
ওই দিন সকাল এগারোটা থেকে এক এক করে সুব্রত দের আশে পাশে আমরা ভিঁড করতে থাকি। ততক্ষনে বহু মানুষ সুব্রতর কাছে এসে হাত পরীক্ষা করাচ্ছেন বা চুন জলের অলৌকিক ঘটনা দেখছেন। আমাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন তখন ক্রেতা সেজে আছে। সুব্রতও ঘোড়েল। কিছুক্ষনের মধ্যেই বুঝল ফাঁদে পড়ে গেছি। কিন্তু তাকে আর সুযোগ দিলাম না। চেপে ধরলাম সকলে। বহু মানুষের সামনে বার বার করে দেখিয়ে দিতে থাকলাম কিভাবে চুন জলের রঙ রাসায়নিকের প্রভাবে পরিবর্তিত হয়। ব্যস। আর যায় কোথায়। স্থানীয় মানুষ-পাশাপাশি দোকান-পথচলতি মানুষ-অফিস চত্বরে কাজে আসা মানুষ সকলে মিলে ধোলায় দেয় আর কি। যাই হোক, তাকে সেদিনই বাঁকুড়া সদর থানার পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এর আগে আরও দুবার জেল খেটে বেরিয়ে আসা আসামী সুব্রত দের চোখে মুখে তখন আমাদের প্রতি তীব্র রাগ।
১৫ মার্চ ওই অঞ্চলেই আতিকুর রহমান নামের আরেকজনের প্রতারনা ফাঁস করি যে রীতিমত মাইক সহযোগে হেঁকে ডেকে ‘মেটাল ট্যাবলেট’ নামে একটি তাবিজ বিভিন্ন রোগ সারানোর জন্য বিক্রি করছিল। বিক্রির সময় মেটাল ট্যাবলেটের বিভিন্ন অলৌকিক ক্ষমতা প্রদর্শন করছিল যার রহস্য আমরা জনসমক্ষে ফাঁস করে দিই। তার বক্তব্য “পৃথিবীর সবচেয়ে ভারী ধাতু হল পারদ। এই পারদ কে যদি শরীরে ধারন করা যায় তাহলে বহু রোগ যেমন- বাতের ব্যথা, বন্ধাত্ব্য, অর্শ, হাঁপানি, পেটের রোগ প্রভৃতি সেরে যাবে। অথচ আমরা জানি যে পারদকে সহজে ধরা যায় না। ধরতে গেলেই পারদের ফোঁটা পিছলে যায়। এজন্য একমাত্র উপায় হল পারদকে আমার অষ্টধাতুর তাবিজে ধরে রেখে ওই অষ্টধাতুর তাবিজ অর্থাৎ ‘মেটাল ট্যাবলেট’ টি শরীরে বেঁধে রাখা। ঐ মেটাল ট্যাবলেটের সত্যিই কোনো অলৌকিক ক্ষমতা আছে কিনা তার প্রমান দেখুন এখনি”। এই বলে আতিকুর বের করে একটি সিগারেট প্যাকেটের রাংতা। রাংতার ওপরে পারদ ভর্তি তাবিজটি ঘষে দিলেই রাংতা হয়ে উঠছে গরম। অর্থাৎ তাবিজের মধ্যে ক্ষমতা এসে গেছে। এরকম একএকটি তাবিজ সে বিক্রি করছে পঞ্চাশ টাকা থেকে দুশো টাকায়। এরও মাসিক আয় সত্তর আশি হাজারের কম নয় যেখানে ঐ চত্বরের চা বিক্রেতা বা ব্যাগ-টুপি বিক্রেতার মাসিক আয় পাঁচ হাজারের মতো। যুক্তিবাদী সমিতি সদস্যরা যখন তাবিজ ছাড়াই পারদকে রাংতায় ঘষে দেখিয়ে জনসমক্ষে বললো রাংতা গরম হয় পারদের সাথে রাংতার দস্তার রাসায়নিক বিক্রিয়ায়, তাবিজের গুণে নয়। তখন জনগন ওই প্রতারককে এই মারে তো সেই মারে। পরে জনগনের চাপে একেও পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। বাঁকুড়া সদর থানা দুজনের বিরুদ্ধেই আইপিসি ৪২০ ধারায় মামলা রুজু করে। পরদিন সংবাদপত্রগুলি খবরে কভার করলে এই দুটি ঘটনাই শহরে তুমুল আলোড়ন তোলে।
আতিকুর রহমান জনগনের চাপে মুচলেকা দিচ্ছে
আমরা ১৬ মার্চ বাঁকুড়া শহরের ডেপুটি ড্রাগ কন্ট্রোলারকে ‘দ্য ড্রাগ এন্ড কসমেটিক অ্যাক্ট-১৯৪০’ অনুযায়ী আতিকুর যে মারাত্মক অপরাধ করছে এবং সমাজের প্রভুত ক্ষতিসাধন করছে সেটি জানিয়ে চিঠি দিই। সাথে দিই থানাতে করা আমাদের অভিযোগপত্র। এর পর বাঁকুড়ার অ্যাসিস্ট্যান্ট ড্রাগ কন্ট্রোলারের সাথে আলোচনায় বসি। অথচ আলোচনায় সে রকম আশাব্যঞ্জক কোনো ফলাফল পাইনি বরং বেশ নিরাশ হয়েছি। ডেপুটির অকর্মণ্যতার কথা জানিয়ে কোলকাতায় বসা ওপরঅলা কে অভিযোগ জানিয়েছি। এখানে একটি বিষয় মনে রাখতে হবে যে, গ্রেপ্তার হওয়া প্রতারক যথেষ্ট প্রভাবশালী। তাই কিছুদিনের মধ্যেই ওরা ছাড়া পাবে জানিই। এও জানি কাস্টমস, ইনকাম ট্যাক্স, এক্সসাইজ দপ্তরের মতো ড্রাগ কন্ট্রোলের কর্তারাও কাজ করার জন্য নয়, চুপ থেকে সবচেয়ে বেশি রোজগার করেন। আমরা জানি দু পাঁচটা প্রতারককে ধরে নর্দমা পরিস্কার করা যায় না কিন্তু নর্দমা পরিস্কার করার কৌশল সবাইকে শিখিয়ে দেওয়া যায়, উৎসাহিত করা যায়। তাই মাঝে মাঝে এরকম দৃষ্টান্তের প্রয়োজন সাধারন মানুষের চেতনায় কিছু ধারণা পৌঁছে দিতে। জনসাধারণও যখন প্রথম কোনো অলৌকিক কিছু দেখবে প্রথমেই অন্ধের মত বিশ্বাস করবে না অন্তত দুবার ভাববে।
এতো গেল মার্চের মাঝামাঝির ঘটনা। এগুলোর থানা পুলিশ কোর্ট কাছারির ঝামেলা কাটতে না কাটতে বাঁকুড়া জেলায় এসে গেল ছ বছর আগে পশ্চিমবংগ কাঁপানো কোটি টাকার মালিক মেমরিম্যান তার স্মৃতি বৃ্দ্ধির দাওয়ায় নিয়ে শো করতে। মার্চের শেষে সেও কুপোকাৎ। আজ আর সময় নেই। অন্য দিন লেখা যাবে।
বাংলাদেশ যুক্তিবাদী সমিতির ঠিকানাটা জানি না। রাজশাহী থেকে যোগাযোগের কোন উপায় কি আছে?
@বিপ্লব দাস, ইদানীং আমি মুক্তমনায় নিয়ম করে ঢুকছি। আপনাদের মত কয়েকজনের লেখা আমাকে উজ্জীবিত ক’রে তোলে। বাংলা বোতাম টেপায় আর একটু ধাতস্থ হয়ে বারান্তরে এক তান্ত্রিকের বুজরুকির কাহিনী আপনাদের জানাব। নমস্কার।
ভারতীয় যুক্তিবাদী সমিতির কোন ওয়েবসাইট আছে কি?।গুগলে অনেক সার্চ করে পেলাম না।
@ইললু ঝিললু,
http://www.srai.org
@বিপ্লব দাস,ধন্যবাদ।
মেমরিম্যানের ঘটনাটাও জানতে আগ্রহী বিপ্লব দা। অলৌকিক নয় লৌকিক জাতীয় বইগুলো তো আছেই, তবু অন্তর্জাল মেমরিতে রাখা আপনার এ ধরনের ঘটনাসম্বলিত পোস্টগুলোও যথেষ্ট অবদান রাখবে বলে মনে করি।
অতএব লেখা আরো চাই…নিয়মিত…অবশ্যই !!
@রণদীপম বসু,
অবশ্যই চেষ্টা করব।
আমারো তাই মনে হয়। যুক্তিবাদী সমিতির কাজের জন্য অভিনন্দন আর সাধুবাদ রইল। শেয়ার দিলাম লেখাটা
আচ্ছা, মুক্তমনা থেকে প্রতি বছর এ রকম কুসংস্কার দূরীকরণে অবদানের জন্য ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে কি পুরস্কার দেয়ার ব্যবস্থা করা যায় না? দেশের আনাচে-কানাচে হয়তো বহু ব্যক্তি বা বহু ছোট ছোট প্রতিষ্ঠান রয়েছে যাদের কোন মূল্যায়ন হয়না।
কর্তৃপক্ষ ভেবে দেখবেন কি?
বিপ্লব দাসকে (Y) (F)
@হেলাল,
পুরস্কার দিয়ে আসলে সত্যিকারের মুল্যায়ন হয় না , বরং নাব্যতা হ্রাস পায়। Awards are merely the badges of mediocrity.
সবচাইতে বড় বুজরুকি চলছে যে আমাদের নাকের ডগায়–যথা মক্তব, মাদ্রাসা, মসজিদ, রওজা মোবারক, যায়নামাজ, তসবীহ, দাড়ি, আলখাল্লা, হিজাব, বোরখা, রোজা, নামায, যাকাত, হজ্জ্ব, দোয়া, সালাম—আর কত কি লিখব।
আর সরকারী পৃষ্ঠপোষকতায়, সরকারী জায়গায় এই সব বুজরুকি দিন কে দিন বলিষ্ঠ হয়ে চলছে। দেশের বৃহত্তম বুজরুকি হয় প্রতিবছর টঙ্গির তুরাগ নদীর তীরে। অনেকদিন ধরেই চলে এই বুজরুকি। এই বুজরুকিতে নির্লজ্জে সদলবলে যোগদান করেন আমাদেরই ভোটে নির্বাচিত আমাদের সব প্রতিনিধিগণ—প্রধাণমন্ত্রী, রাস্ট্রপতি, আর সব সেনাপতিরা। লজ্জাহীন ভাবে এই সব নেতারা মাথা নত করে মেনে নেন আলেম, মওলান, খাদেম, মোল্লা, মুরিদ—এদের বুজরুকি।
এর বিরুদ্ধে কাউকেই আমি দেখিনা কোন উচবাচ্চ করতে। অনেকদিন আগে –মনে হয় সাত আট বছর আগে, আমি একটা প্রবন্ধ লিখেছিলাম এই বাৎসরিক সার্কাস ও কুম্ভ মেলা নিয়ে। প্রবন্ধটা খুঁজতে সময় লাগবে। এই প্রবন্ধ পড়ে সমস্ত ‘মোডারেট’ মুসলিম আমার উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। আর মোল্লা, মওলানা, মুরীদ, পীরদের ত কথায় নাই–হাতের কাছে পেলে ঐ মুহুর্তেই উনারা চেয়েছিলেন আমাকে কতল করতে।
ঐ প্রবন্ধের পড় আর আমি তেমন কোন রচনা পড়ি নাই বাংলদেশের সর্ববৃহত বুজরুকি সমাবেশের উপর।
আপনি এই সব চুনোপুঁটি বুজরুকিদের সম্পর্কে লিখেছেন–তা প্রশংসনীয়। এবার কলম ধরুন প্রতিষ্ঠানিক বুজরুকিদের মুখোশ উদ্ঘাটন করে।
@আবুল কাশেম,
দারুন বলেছেন। একদম ঠিক কথা।
প্রবন্ধটি পড়তে পেলে ভালো হতো।
(Y)
@আবুল কাশেম,
আমরা ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতির পক্ষ থেকে প্রতিনিয়ত প্রচুর প্রচুর অলৌকিক বাবা মাতা দের মুখোমুখি হচ্ছি। গত পঁচিশ বছরে এই সংখ্যা টি মোটেও কয়েক হাজারের কম নয়। সত্যি বলতে কি কোনো হিসেবই নেই। এদের মধ্যে ইন্টারেস্টিং গুলি হাজির হয় আমাদের ‘আমরা যুক্তিবাদী’ পত্রিকা কিম্বা প্রবীর ঘোষের ‘অলৌকিক নয় লৌকিক’ বই, ‘যুক্তিবাদীর চ্যালেঞ্জাররা’ বইতে। সেখানে আমেরিকার গডম্যান মরিস সেরুলো থেকে বাংলাদেশের হুজুর সাইদাবাদী সব আছে। আর প্রাতিষ্ঠানিক বুজরুকেদের বিরুদ্ধে আমাদের জেহাদ বোধহয় আরো জোরালো। আমাদের ওয়েবসাইট http://www.srai,org দেখলেই বোঝা যাবে।
তবে হ্যাঁ, আমরা কখনই আত্মসন্তুষ্টি তে ভুগি না। কেননা আমরা জানি এই জগদ্দল পাথরটিকে সরানোর দীর্ঘদিনের সংগ্রামে আমরা কেবল মাত্র একটি পুঁচকে সৈন্য মাত্র। আরও কাজ করে জেতে হবে। আরও। মাঝে মাঝে মনে হয় দিনটা যদি চব্বিশ ঘন্টার না হয়ে আরও বেশী হত………।
ভালো বলেছেন। যুক্তিবাদি সমিতি দিন দিন আরো এগিয়ে যাক,আশা করি যুক্তিবাদিদের দল দ্রুত অনেক ভারী হয়ে উঠবে। ভালো লাগল লেখাটি,শেয়ার করলাম অন্যদের সাথে।
জ্যোতিষীর এরকম কাহিনী প্রবীর ঘোষের একটা বইতে পড়েছিলাম। সেবার ইটিভি মনে হয় ঘটনাটা কভার করেছিল। যুক্তিবাদী সমিতির জাবাব নেই।
@ বিপ্লব দাস,
ধন্যবাদ আপনার যুক্তিবাদী অভিজ্ঞতা বিনিময়ের জন্য।
বাংলাদেশেও পত্র পত্রিকায় এরকম দুয়েকটি ঘটনার খবর পড়ে থাকি। তবে এর কৃতিত্ব পুরোটাই সাংবাদিকদের। যুক্তিবাদী লোকের অস্তিত্ব আমাদের দেশে সরব নয়। হ্যাঁ, এক অর্থে ঐ সাংবাদিকরাও পেশাগত স্বার্থে নিঃসন্দেহে যুক্তিবাদী । তবে ব্যক্তিগত উদ্যোগ শুধু নয়, প্রয়োজন দলবদ্ধ অভিযান।
@সাইফুল ইসলাম,
হ্যাঁ, সেটা কলকাতার শিয়ালদহ স্টেশন ছিল।
@বিপ্লব দাস,
যুক্তিবাদী সমিতির জয় হোক! (Y)
—
লেখায় কিছু ছোটখাট বানান ভুল আছে; শুধরে নেওয়ার বিনীত অনুরোধ। 🙂
আমি একবার এরকম কিছু একটা দেখেছিলাম। বিক্রেতা একটি কালো পাথর নিয়ে দুধে ঘসছে আর কিছুক্ষণ বাদে দুধটা ঘন হয়ে যাচ্ছে। লোকটি বলে বেরাচ্ছে যে এই ঘন দুধ যে নিয়মিত খাবে সে বেশী সময় সহবাস করতে পারবে। আমার চোখের সামনেই অনেকে কিনল পাথরটা।
@শেসাদ্রি শেখর বাগচী,
সহবাস আর দীর্ঘ সময় যৌবন ধরে রাখতে গিয়ে আসামের জংগল থেকে গন্ডার গুলো উধাও হয়ে গেল।
দারুন তো?
মৌলভীবাজারে যুক্তিবাদী সমিতির সাথে কিভাবে যোগাযোগ করা যাবে?
@আসরাফ,
বাংলাদেশ যুক্তিবাদী সমিতির অনেকে মুক্তমনা সাইটে লেখেন। তারা এর উত্তর দিতে পারবেন বলে মনে হয়।
ভাবছি আপনাদের বুজরুক ধরার ঘটনাগুলো ভিডিও করে রিয়েলিটি শোর মতো কোন টিভি চ্যানেলে প্রচার করলে বেশ হতো।
@মনজুর মুরশেদ,
আমরা এখানে কি ভাবে কাজ করি জানেন দাদা? আমাদের বেশীর ভাগ শাখার একটা ক্যামেরা পর্যন্ত নেই। এই যে ছবিগুলো দেখতে পাচ্ছেন এগুলো কারোর কারোর মোবাইলে তোলা। মাঝে মাঝে এদিক সেদিক ম্যানেজ করে একটা ক্যামেরা জোগাড় করে এসব কাজে বেরোই। যখন ক্যামেরা থাকে না তার কোনো ডকুমেন্টসও থাকেনা।
হ্যাঁ।এটাই বাস্তব। আমরা শুধু কাজ করে যাই। কোন টিভি এলো,কোন নিউজপেপার এলো ভাবিইনা।